আন্তর্জাতিক নারী দিবস আজ
অর্চি হক, ঢাকা

শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনের পতনের কিছুদিন পর, গত বছরের ২৯ আগস্ট রাজধানীর শ্যামলী স্কয়ারে প্রকাশ্যে মারধরের শিকার হন কয়েকজন নারী যৌনকর্মী। হামলাকারী এক যুবক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেই সেই ঘটনার ভিডিও প্রচার করেন। ঘটনাটি ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিলেও হামলাকারীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এরপর পেরিয়ে গেছে ছয় মাস। অব্যাহতভাবে নাজুক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির মধ্যে এখনো প্রায় সব শ্রেণির নারীরাই হয়রানি, হুমকি ও সহিংসতার শিকার হচ্ছেন। এতে নারীদের মধ্যে ভীতি ও নিরাপত্তাহীনতার বোধ সৃষ্টি হচ্ছে বলে মনে করছেন মানবাধিকারকর্মীরা। তাঁরা বলছেন, সরকার কঠোর ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।
হয়রানি বা সহিংসতার শিকার নারীরা নানা কারণে মামলা করতে ভয় পান। সে কারণে এ ধরনের অনেক ঘটনা আড়ালে থেকে যায়। গত ২৭ আগস্ট থেকে ৫ মার্চ পর্যন্ত নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ও হয়রানির আলোচিত ১০টি ঘটনার মধ্যে কেবল দুটির ক্ষেত্রে মামলা হয়েছে। বাকিগুলোর কয়েকটিতে পুলিশ ও প্রশাসন দুই পক্ষকে ডেকে আপস মীমাংসা করেছে।
সর্বশেষ গত ৫ মার্চ হয়রানির শিকার হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন নারী শিক্ষার্থী। তাঁর অভিযোগ, শালীনভাবে ওড়নাসহ সালোয়ার-কামিজ পরা থাকার পরও তাঁকে বেপর্দা বলে অভিযুক্ত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী এক যুবক। এ ঘটনায় মামলা করার পর অভিযুক্ত গ্রেপ্তার হন। তবে ‘তৌহিদি জনতা’ পরিচয় দেওয়া কিছু লোক তাঁকে ছাড়িয়ে নিতে রাতভর থানার সামনে অবস্থান নেন। পরদিনই অভিযুক্ত জামিনে মুক্ত হন। এরপর মামলা তুলে নিতে থানায় আবেদন করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। তিনি জানান, হত্যা-ধর্ষণের হুমকি পাওয়াই এর কারণ। ওই শিক্ষার্থী অভিযোগ করেছেন, পুলিশ তাঁর ব্যক্তিগত তথ্য ‘মব’ (উচ্ছৃঙ্খল জনতা)-এর হাতে তুলে দিয়েছে, যা তাঁর নিরাপত্তার জন্য হুমকি।
নারীদের ফুটবল ম্যাচ ঘিরেও হয়েছে সহিংসতা। উগ্রপন্থী গোষ্ঠীর বাধার কারণে গত ২৮ জানুয়ারি থেকে ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দিনাজপুর, জয়পুরহাট ও রংপুরে নারীদের তিনটি ফুটবল ম্যাচ স্থগিত হয়ে যায়। দিনাজপুরের হাকিমপুরে ম্যাচ ঘিরে হামলায় কমপক্ষে চারজন আহত হন। জয়পুরহাটে স্থানীয় মাদ্রাসাশিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা ম্যাচের আগে হামলা চালিয়ে মাঠের বেষ্টনী ভেঙে ফেলেন। রংপুরের তারাগঞ্জে কট্টরপন্থী ধর্মীয় গোষ্ঠীর বাধার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৪৪ ধারা জারি হয়। এই তিনটি ঘটনার একটিতেও মামলা হয়নি।
সহিংসতার পরেও মামলা না হওয়া প্রসঙ্গে জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুল ওয়াহাব বলেন, ‘এটা ভুল-বোঝাবুঝি থেকে ঘটেছিল। যারা ম্যাচে বাধা দিয়েছিল, তারা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে ক্ষমা চেয়েছে।’
সাম্প্রতিক কয়েক মাসে ধর্মীয় গোষ্ঠীর হয়রানির শিকার হয়েছেন কয়েকজন নারী অভিনয়শিল্পীও। গত ২ নভেম্বর চট্টগ্রামে মেহজাবীন চৌধুরী, ২৫ জানুয়ারি টাঙ্গাইলে পরীমণি এবং ২৯ জানুয়ারি ঢাকার কামরাঙ্গীরচরে অপু বিশ্বাসকে ‘তৌহিদি জনতা’র বাধার মুখে অনুষ্ঠান বাতিল করতে হয়। অনুষ্ঠানগুলো ছিল নিছক সাধারণ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের উদ্বোধন।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে চলন্ত বাসে ডাকাতির সময় শ্লীলতাহানির শিকার হন একাধিক নারী যাত্রী।
আজকের পত্রিকাকে বিভিন্ন বয়স-শ্রেণি ও পেশার বেশ কয়েকজন নারী জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক এসব ঘটনার কারণে তাঁরা এখন সন্ধ্যার পর বাড়ির বাইরে যেতে ভয় পাচ্ছেন।
এমন প্রেক্ষাপটে সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও আজ পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক নারী দিবস। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘অধিকার, সমতা, ক্ষমতায়ন: নারী ও কন্যার উন্নয়ন’।
নারী আন্দোলন, মানবাধিকার ও উন্নয়নকর্মীদের পাশাপাশি আইনজীবীরা নারীর প্রতি সহিংসতা ও হয়রানি রোধে সামাজিক ও রাজনৈতিক নেতাদের এবং সরকারকে সক্রিয় হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সারা হোসেন বলেন, ‘মাত্র কয়েক মাস আগে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নারীরা সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু এখন নারীদের সামাজিক ও দৈনন্দিন জীবন, বিশেষ করে রাস্তাঘাটে নানান ধরনের হুমকি এবং বাধার সামনে পড়তে হচ্ছে। এভাবে নারীদেরকে জনজীবন থেকে বের করার চেষ্টা যারা করছে, তাদেরকে সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে প্রতিহত করা উচিত। একই সঙ্গে প্রাতিষ্ঠানিকভাবেও ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম বলেন, ‘নারীদের স্বাভাবিক চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। এটা নিশ্চিতভাবেই নারীর সমতা, ক্ষমতায়ন ও অগ্রগতির পথে বড় বাধা। সরকার এসব ঘটনাকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে না। ফৌজদারি অপরাধেও ক্ষমা চেয়ে বা আপস করে মীমাংসা হচ্ছে। এটা অগ্রহণযোগ্য।’
মহিলা পরিষদ বলছে, গত আগস্ট থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সাত মাসে ১ হাজার ২৫৫ জন নারী নানাভাবে সহিংসতার শিকার হয়েছে বলে পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। তবে প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি মনে করা হয়। কারণ, ৫ আগস্টের পর দীর্ঘ সময় থানার কার্যক্রম বন্ধ ছিল। এ ছাড়া অসংখ্য খবরের ভিড়ে সংবাদপত্রে নারীর প্রতি সহিংসতার সব খবর জায়গা পায়নি।
বেসরকারি সংগঠন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের (এমজেএফ) নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেন, ‘কয়েক মাস ধরে আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে নাগরিকদের, বিশেষ করে নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বারবার অনুরোধ জানিয়েছি। দুর্ভাগ্যবশত, আমরা কোনো উল্লেখযোগ্য উন্নতি দেখিনি; বরং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। অনেক নারী শ্লীলতাহানির ভয়ে বাড়ি থেকে বের হতে ভয় পাচ্ছেন।’
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেন, ‘যারা নারীদের হয়রানি করছে, মব চালাচ্ছে, হয় তারা সরকারের সমর্থন পাচ্ছে, অথবা সরকার পরোক্ষভাবে তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল। এগুলো কোনো ব্যক্তিগত ও পারিবারিক বিষয় নয় যে আপসের মাধ্যমে সমাধান করা যাবে।’
আরও খবর পড়ুন:

শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনের পতনের কিছুদিন পর, গত বছরের ২৯ আগস্ট রাজধানীর শ্যামলী স্কয়ারে প্রকাশ্যে মারধরের শিকার হন কয়েকজন নারী যৌনকর্মী। হামলাকারী এক যুবক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেই সেই ঘটনার ভিডিও প্রচার করেন। ঘটনাটি ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিলেও হামলাকারীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এরপর পেরিয়ে গেছে ছয় মাস। অব্যাহতভাবে নাজুক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির মধ্যে এখনো প্রায় সব শ্রেণির নারীরাই হয়রানি, হুমকি ও সহিংসতার শিকার হচ্ছেন। এতে নারীদের মধ্যে ভীতি ও নিরাপত্তাহীনতার বোধ সৃষ্টি হচ্ছে বলে মনে করছেন মানবাধিকারকর্মীরা। তাঁরা বলছেন, সরকার কঠোর ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।
হয়রানি বা সহিংসতার শিকার নারীরা নানা কারণে মামলা করতে ভয় পান। সে কারণে এ ধরনের অনেক ঘটনা আড়ালে থেকে যায়। গত ২৭ আগস্ট থেকে ৫ মার্চ পর্যন্ত নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ও হয়রানির আলোচিত ১০টি ঘটনার মধ্যে কেবল দুটির ক্ষেত্রে মামলা হয়েছে। বাকিগুলোর কয়েকটিতে পুলিশ ও প্রশাসন দুই পক্ষকে ডেকে আপস মীমাংসা করেছে।
সর্বশেষ গত ৫ মার্চ হয়রানির শিকার হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন নারী শিক্ষার্থী। তাঁর অভিযোগ, শালীনভাবে ওড়নাসহ সালোয়ার-কামিজ পরা থাকার পরও তাঁকে বেপর্দা বলে অভিযুক্ত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী এক যুবক। এ ঘটনায় মামলা করার পর অভিযুক্ত গ্রেপ্তার হন। তবে ‘তৌহিদি জনতা’ পরিচয় দেওয়া কিছু লোক তাঁকে ছাড়িয়ে নিতে রাতভর থানার সামনে অবস্থান নেন। পরদিনই অভিযুক্ত জামিনে মুক্ত হন। এরপর মামলা তুলে নিতে থানায় আবেদন করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। তিনি জানান, হত্যা-ধর্ষণের হুমকি পাওয়াই এর কারণ। ওই শিক্ষার্থী অভিযোগ করেছেন, পুলিশ তাঁর ব্যক্তিগত তথ্য ‘মব’ (উচ্ছৃঙ্খল জনতা)-এর হাতে তুলে দিয়েছে, যা তাঁর নিরাপত্তার জন্য হুমকি।
নারীদের ফুটবল ম্যাচ ঘিরেও হয়েছে সহিংসতা। উগ্রপন্থী গোষ্ঠীর বাধার কারণে গত ২৮ জানুয়ারি থেকে ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দিনাজপুর, জয়পুরহাট ও রংপুরে নারীদের তিনটি ফুটবল ম্যাচ স্থগিত হয়ে যায়। দিনাজপুরের হাকিমপুরে ম্যাচ ঘিরে হামলায় কমপক্ষে চারজন আহত হন। জয়পুরহাটে স্থানীয় মাদ্রাসাশিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা ম্যাচের আগে হামলা চালিয়ে মাঠের বেষ্টনী ভেঙে ফেলেন। রংপুরের তারাগঞ্জে কট্টরপন্থী ধর্মীয় গোষ্ঠীর বাধার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৪৪ ধারা জারি হয়। এই তিনটি ঘটনার একটিতেও মামলা হয়নি।
সহিংসতার পরেও মামলা না হওয়া প্রসঙ্গে জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুল ওয়াহাব বলেন, ‘এটা ভুল-বোঝাবুঝি থেকে ঘটেছিল। যারা ম্যাচে বাধা দিয়েছিল, তারা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে ক্ষমা চেয়েছে।’
সাম্প্রতিক কয়েক মাসে ধর্মীয় গোষ্ঠীর হয়রানির শিকার হয়েছেন কয়েকজন নারী অভিনয়শিল্পীও। গত ২ নভেম্বর চট্টগ্রামে মেহজাবীন চৌধুরী, ২৫ জানুয়ারি টাঙ্গাইলে পরীমণি এবং ২৯ জানুয়ারি ঢাকার কামরাঙ্গীরচরে অপু বিশ্বাসকে ‘তৌহিদি জনতা’র বাধার মুখে অনুষ্ঠান বাতিল করতে হয়। অনুষ্ঠানগুলো ছিল নিছক সাধারণ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের উদ্বোধন।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে চলন্ত বাসে ডাকাতির সময় শ্লীলতাহানির শিকার হন একাধিক নারী যাত্রী।
আজকের পত্রিকাকে বিভিন্ন বয়স-শ্রেণি ও পেশার বেশ কয়েকজন নারী জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক এসব ঘটনার কারণে তাঁরা এখন সন্ধ্যার পর বাড়ির বাইরে যেতে ভয় পাচ্ছেন।
এমন প্রেক্ষাপটে সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও আজ পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক নারী দিবস। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘অধিকার, সমতা, ক্ষমতায়ন: নারী ও কন্যার উন্নয়ন’।
নারী আন্দোলন, মানবাধিকার ও উন্নয়নকর্মীদের পাশাপাশি আইনজীবীরা নারীর প্রতি সহিংসতা ও হয়রানি রোধে সামাজিক ও রাজনৈতিক নেতাদের এবং সরকারকে সক্রিয় হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সারা হোসেন বলেন, ‘মাত্র কয়েক মাস আগে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নারীরা সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু এখন নারীদের সামাজিক ও দৈনন্দিন জীবন, বিশেষ করে রাস্তাঘাটে নানান ধরনের হুমকি এবং বাধার সামনে পড়তে হচ্ছে। এভাবে নারীদেরকে জনজীবন থেকে বের করার চেষ্টা যারা করছে, তাদেরকে সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে প্রতিহত করা উচিত। একই সঙ্গে প্রাতিষ্ঠানিকভাবেও ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম বলেন, ‘নারীদের স্বাভাবিক চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। এটা নিশ্চিতভাবেই নারীর সমতা, ক্ষমতায়ন ও অগ্রগতির পথে বড় বাধা। সরকার এসব ঘটনাকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে না। ফৌজদারি অপরাধেও ক্ষমা চেয়ে বা আপস করে মীমাংসা হচ্ছে। এটা অগ্রহণযোগ্য।’
মহিলা পরিষদ বলছে, গত আগস্ট থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সাত মাসে ১ হাজার ২৫৫ জন নারী নানাভাবে সহিংসতার শিকার হয়েছে বলে পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। তবে প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি মনে করা হয়। কারণ, ৫ আগস্টের পর দীর্ঘ সময় থানার কার্যক্রম বন্ধ ছিল। এ ছাড়া অসংখ্য খবরের ভিড়ে সংবাদপত্রে নারীর প্রতি সহিংসতার সব খবর জায়গা পায়নি।
বেসরকারি সংগঠন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের (এমজেএফ) নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেন, ‘কয়েক মাস ধরে আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে নাগরিকদের, বিশেষ করে নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বারবার অনুরোধ জানিয়েছি। দুর্ভাগ্যবশত, আমরা কোনো উল্লেখযোগ্য উন্নতি দেখিনি; বরং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। অনেক নারী শ্লীলতাহানির ভয়ে বাড়ি থেকে বের হতে ভয় পাচ্ছেন।’
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেন, ‘যারা নারীদের হয়রানি করছে, মব চালাচ্ছে, হয় তারা সরকারের সমর্থন পাচ্ছে, অথবা সরকার পরোক্ষভাবে তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল। এগুলো কোনো ব্যক্তিগত ও পারিবারিক বিষয় নয় যে আপসের মাধ্যমে সমাধান করা যাবে।’
আরও খবর পড়ুন:
আন্তর্জাতিক নারী দিবস আজ
অর্চি হক, ঢাকা

শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনের পতনের কিছুদিন পর, গত বছরের ২৯ আগস্ট রাজধানীর শ্যামলী স্কয়ারে প্রকাশ্যে মারধরের শিকার হন কয়েকজন নারী যৌনকর্মী। হামলাকারী এক যুবক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেই সেই ঘটনার ভিডিও প্রচার করেন। ঘটনাটি ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিলেও হামলাকারীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এরপর পেরিয়ে গেছে ছয় মাস। অব্যাহতভাবে নাজুক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির মধ্যে এখনো প্রায় সব শ্রেণির নারীরাই হয়রানি, হুমকি ও সহিংসতার শিকার হচ্ছেন। এতে নারীদের মধ্যে ভীতি ও নিরাপত্তাহীনতার বোধ সৃষ্টি হচ্ছে বলে মনে করছেন মানবাধিকারকর্মীরা। তাঁরা বলছেন, সরকার কঠোর ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।
হয়রানি বা সহিংসতার শিকার নারীরা নানা কারণে মামলা করতে ভয় পান। সে কারণে এ ধরনের অনেক ঘটনা আড়ালে থেকে যায়। গত ২৭ আগস্ট থেকে ৫ মার্চ পর্যন্ত নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ও হয়রানির আলোচিত ১০টি ঘটনার মধ্যে কেবল দুটির ক্ষেত্রে মামলা হয়েছে। বাকিগুলোর কয়েকটিতে পুলিশ ও প্রশাসন দুই পক্ষকে ডেকে আপস মীমাংসা করেছে।
সর্বশেষ গত ৫ মার্চ হয়রানির শিকার হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন নারী শিক্ষার্থী। তাঁর অভিযোগ, শালীনভাবে ওড়নাসহ সালোয়ার-কামিজ পরা থাকার পরও তাঁকে বেপর্দা বলে অভিযুক্ত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী এক যুবক। এ ঘটনায় মামলা করার পর অভিযুক্ত গ্রেপ্তার হন। তবে ‘তৌহিদি জনতা’ পরিচয় দেওয়া কিছু লোক তাঁকে ছাড়িয়ে নিতে রাতভর থানার সামনে অবস্থান নেন। পরদিনই অভিযুক্ত জামিনে মুক্ত হন। এরপর মামলা তুলে নিতে থানায় আবেদন করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। তিনি জানান, হত্যা-ধর্ষণের হুমকি পাওয়াই এর কারণ। ওই শিক্ষার্থী অভিযোগ করেছেন, পুলিশ তাঁর ব্যক্তিগত তথ্য ‘মব’ (উচ্ছৃঙ্খল জনতা)-এর হাতে তুলে দিয়েছে, যা তাঁর নিরাপত্তার জন্য হুমকি।
নারীদের ফুটবল ম্যাচ ঘিরেও হয়েছে সহিংসতা। উগ্রপন্থী গোষ্ঠীর বাধার কারণে গত ২৮ জানুয়ারি থেকে ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দিনাজপুর, জয়পুরহাট ও রংপুরে নারীদের তিনটি ফুটবল ম্যাচ স্থগিত হয়ে যায়। দিনাজপুরের হাকিমপুরে ম্যাচ ঘিরে হামলায় কমপক্ষে চারজন আহত হন। জয়পুরহাটে স্থানীয় মাদ্রাসাশিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা ম্যাচের আগে হামলা চালিয়ে মাঠের বেষ্টনী ভেঙে ফেলেন। রংপুরের তারাগঞ্জে কট্টরপন্থী ধর্মীয় গোষ্ঠীর বাধার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৪৪ ধারা জারি হয়। এই তিনটি ঘটনার একটিতেও মামলা হয়নি।
সহিংসতার পরেও মামলা না হওয়া প্রসঙ্গে জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুল ওয়াহাব বলেন, ‘এটা ভুল-বোঝাবুঝি থেকে ঘটেছিল। যারা ম্যাচে বাধা দিয়েছিল, তারা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে ক্ষমা চেয়েছে।’
সাম্প্রতিক কয়েক মাসে ধর্মীয় গোষ্ঠীর হয়রানির শিকার হয়েছেন কয়েকজন নারী অভিনয়শিল্পীও। গত ২ নভেম্বর চট্টগ্রামে মেহজাবীন চৌধুরী, ২৫ জানুয়ারি টাঙ্গাইলে পরীমণি এবং ২৯ জানুয়ারি ঢাকার কামরাঙ্গীরচরে অপু বিশ্বাসকে ‘তৌহিদি জনতা’র বাধার মুখে অনুষ্ঠান বাতিল করতে হয়। অনুষ্ঠানগুলো ছিল নিছক সাধারণ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের উদ্বোধন।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে চলন্ত বাসে ডাকাতির সময় শ্লীলতাহানির শিকার হন একাধিক নারী যাত্রী।
আজকের পত্রিকাকে বিভিন্ন বয়স-শ্রেণি ও পেশার বেশ কয়েকজন নারী জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক এসব ঘটনার কারণে তাঁরা এখন সন্ধ্যার পর বাড়ির বাইরে যেতে ভয় পাচ্ছেন।
এমন প্রেক্ষাপটে সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও আজ পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক নারী দিবস। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘অধিকার, সমতা, ক্ষমতায়ন: নারী ও কন্যার উন্নয়ন’।
নারী আন্দোলন, মানবাধিকার ও উন্নয়নকর্মীদের পাশাপাশি আইনজীবীরা নারীর প্রতি সহিংসতা ও হয়রানি রোধে সামাজিক ও রাজনৈতিক নেতাদের এবং সরকারকে সক্রিয় হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সারা হোসেন বলেন, ‘মাত্র কয়েক মাস আগে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নারীরা সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু এখন নারীদের সামাজিক ও দৈনন্দিন জীবন, বিশেষ করে রাস্তাঘাটে নানান ধরনের হুমকি এবং বাধার সামনে পড়তে হচ্ছে। এভাবে নারীদেরকে জনজীবন থেকে বের করার চেষ্টা যারা করছে, তাদেরকে সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে প্রতিহত করা উচিত। একই সঙ্গে প্রাতিষ্ঠানিকভাবেও ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম বলেন, ‘নারীদের স্বাভাবিক চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। এটা নিশ্চিতভাবেই নারীর সমতা, ক্ষমতায়ন ও অগ্রগতির পথে বড় বাধা। সরকার এসব ঘটনাকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে না। ফৌজদারি অপরাধেও ক্ষমা চেয়ে বা আপস করে মীমাংসা হচ্ছে। এটা অগ্রহণযোগ্য।’
মহিলা পরিষদ বলছে, গত আগস্ট থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সাত মাসে ১ হাজার ২৫৫ জন নারী নানাভাবে সহিংসতার শিকার হয়েছে বলে পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। তবে প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি মনে করা হয়। কারণ, ৫ আগস্টের পর দীর্ঘ সময় থানার কার্যক্রম বন্ধ ছিল। এ ছাড়া অসংখ্য খবরের ভিড়ে সংবাদপত্রে নারীর প্রতি সহিংসতার সব খবর জায়গা পায়নি।
বেসরকারি সংগঠন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের (এমজেএফ) নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেন, ‘কয়েক মাস ধরে আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে নাগরিকদের, বিশেষ করে নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বারবার অনুরোধ জানিয়েছি। দুর্ভাগ্যবশত, আমরা কোনো উল্লেখযোগ্য উন্নতি দেখিনি; বরং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। অনেক নারী শ্লীলতাহানির ভয়ে বাড়ি থেকে বের হতে ভয় পাচ্ছেন।’
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেন, ‘যারা নারীদের হয়রানি করছে, মব চালাচ্ছে, হয় তারা সরকারের সমর্থন পাচ্ছে, অথবা সরকার পরোক্ষভাবে তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল। এগুলো কোনো ব্যক্তিগত ও পারিবারিক বিষয় নয় যে আপসের মাধ্যমে সমাধান করা যাবে।’
আরও খবর পড়ুন:

শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনের পতনের কিছুদিন পর, গত বছরের ২৯ আগস্ট রাজধানীর শ্যামলী স্কয়ারে প্রকাশ্যে মারধরের শিকার হন কয়েকজন নারী যৌনকর্মী। হামলাকারী এক যুবক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেই সেই ঘটনার ভিডিও প্রচার করেন। ঘটনাটি ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিলেও হামলাকারীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এরপর পেরিয়ে গেছে ছয় মাস। অব্যাহতভাবে নাজুক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির মধ্যে এখনো প্রায় সব শ্রেণির নারীরাই হয়রানি, হুমকি ও সহিংসতার শিকার হচ্ছেন। এতে নারীদের মধ্যে ভীতি ও নিরাপত্তাহীনতার বোধ সৃষ্টি হচ্ছে বলে মনে করছেন মানবাধিকারকর্মীরা। তাঁরা বলছেন, সরকার কঠোর ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।
হয়রানি বা সহিংসতার শিকার নারীরা নানা কারণে মামলা করতে ভয় পান। সে কারণে এ ধরনের অনেক ঘটনা আড়ালে থেকে যায়। গত ২৭ আগস্ট থেকে ৫ মার্চ পর্যন্ত নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ও হয়রানির আলোচিত ১০টি ঘটনার মধ্যে কেবল দুটির ক্ষেত্রে মামলা হয়েছে। বাকিগুলোর কয়েকটিতে পুলিশ ও প্রশাসন দুই পক্ষকে ডেকে আপস মীমাংসা করেছে।
সর্বশেষ গত ৫ মার্চ হয়রানির শিকার হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন নারী শিক্ষার্থী। তাঁর অভিযোগ, শালীনভাবে ওড়নাসহ সালোয়ার-কামিজ পরা থাকার পরও তাঁকে বেপর্দা বলে অভিযুক্ত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী এক যুবক। এ ঘটনায় মামলা করার পর অভিযুক্ত গ্রেপ্তার হন। তবে ‘তৌহিদি জনতা’ পরিচয় দেওয়া কিছু লোক তাঁকে ছাড়িয়ে নিতে রাতভর থানার সামনে অবস্থান নেন। পরদিনই অভিযুক্ত জামিনে মুক্ত হন। এরপর মামলা তুলে নিতে থানায় আবেদন করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। তিনি জানান, হত্যা-ধর্ষণের হুমকি পাওয়াই এর কারণ। ওই শিক্ষার্থী অভিযোগ করেছেন, পুলিশ তাঁর ব্যক্তিগত তথ্য ‘মব’ (উচ্ছৃঙ্খল জনতা)-এর হাতে তুলে দিয়েছে, যা তাঁর নিরাপত্তার জন্য হুমকি।
নারীদের ফুটবল ম্যাচ ঘিরেও হয়েছে সহিংসতা। উগ্রপন্থী গোষ্ঠীর বাধার কারণে গত ২৮ জানুয়ারি থেকে ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দিনাজপুর, জয়পুরহাট ও রংপুরে নারীদের তিনটি ফুটবল ম্যাচ স্থগিত হয়ে যায়। দিনাজপুরের হাকিমপুরে ম্যাচ ঘিরে হামলায় কমপক্ষে চারজন আহত হন। জয়পুরহাটে স্থানীয় মাদ্রাসাশিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা ম্যাচের আগে হামলা চালিয়ে মাঠের বেষ্টনী ভেঙে ফেলেন। রংপুরের তারাগঞ্জে কট্টরপন্থী ধর্মীয় গোষ্ঠীর বাধার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৪৪ ধারা জারি হয়। এই তিনটি ঘটনার একটিতেও মামলা হয়নি।
সহিংসতার পরেও মামলা না হওয়া প্রসঙ্গে জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুল ওয়াহাব বলেন, ‘এটা ভুল-বোঝাবুঝি থেকে ঘটেছিল। যারা ম্যাচে বাধা দিয়েছিল, তারা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে ক্ষমা চেয়েছে।’
সাম্প্রতিক কয়েক মাসে ধর্মীয় গোষ্ঠীর হয়রানির শিকার হয়েছেন কয়েকজন নারী অভিনয়শিল্পীও। গত ২ নভেম্বর চট্টগ্রামে মেহজাবীন চৌধুরী, ২৫ জানুয়ারি টাঙ্গাইলে পরীমণি এবং ২৯ জানুয়ারি ঢাকার কামরাঙ্গীরচরে অপু বিশ্বাসকে ‘তৌহিদি জনতা’র বাধার মুখে অনুষ্ঠান বাতিল করতে হয়। অনুষ্ঠানগুলো ছিল নিছক সাধারণ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের উদ্বোধন।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে চলন্ত বাসে ডাকাতির সময় শ্লীলতাহানির শিকার হন একাধিক নারী যাত্রী।
আজকের পত্রিকাকে বিভিন্ন বয়স-শ্রেণি ও পেশার বেশ কয়েকজন নারী জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক এসব ঘটনার কারণে তাঁরা এখন সন্ধ্যার পর বাড়ির বাইরে যেতে ভয় পাচ্ছেন।
এমন প্রেক্ষাপটে সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও আজ পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক নারী দিবস। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘অধিকার, সমতা, ক্ষমতায়ন: নারী ও কন্যার উন্নয়ন’।
নারী আন্দোলন, মানবাধিকার ও উন্নয়নকর্মীদের পাশাপাশি আইনজীবীরা নারীর প্রতি সহিংসতা ও হয়রানি রোধে সামাজিক ও রাজনৈতিক নেতাদের এবং সরকারকে সক্রিয় হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সারা হোসেন বলেন, ‘মাত্র কয়েক মাস আগে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নারীরা সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু এখন নারীদের সামাজিক ও দৈনন্দিন জীবন, বিশেষ করে রাস্তাঘাটে নানান ধরনের হুমকি এবং বাধার সামনে পড়তে হচ্ছে। এভাবে নারীদেরকে জনজীবন থেকে বের করার চেষ্টা যারা করছে, তাদেরকে সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে প্রতিহত করা উচিত। একই সঙ্গে প্রাতিষ্ঠানিকভাবেও ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম বলেন, ‘নারীদের স্বাভাবিক চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। এটা নিশ্চিতভাবেই নারীর সমতা, ক্ষমতায়ন ও অগ্রগতির পথে বড় বাধা। সরকার এসব ঘটনাকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে না। ফৌজদারি অপরাধেও ক্ষমা চেয়ে বা আপস করে মীমাংসা হচ্ছে। এটা অগ্রহণযোগ্য।’
মহিলা পরিষদ বলছে, গত আগস্ট থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সাত মাসে ১ হাজার ২৫৫ জন নারী নানাভাবে সহিংসতার শিকার হয়েছে বলে পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। তবে প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি মনে করা হয়। কারণ, ৫ আগস্টের পর দীর্ঘ সময় থানার কার্যক্রম বন্ধ ছিল। এ ছাড়া অসংখ্য খবরের ভিড়ে সংবাদপত্রে নারীর প্রতি সহিংসতার সব খবর জায়গা পায়নি।
বেসরকারি সংগঠন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের (এমজেএফ) নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেন, ‘কয়েক মাস ধরে আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে নাগরিকদের, বিশেষ করে নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বারবার অনুরোধ জানিয়েছি। দুর্ভাগ্যবশত, আমরা কোনো উল্লেখযোগ্য উন্নতি দেখিনি; বরং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। অনেক নারী শ্লীলতাহানির ভয়ে বাড়ি থেকে বের হতে ভয় পাচ্ছেন।’
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেন, ‘যারা নারীদের হয়রানি করছে, মব চালাচ্ছে, হয় তারা সরকারের সমর্থন পাচ্ছে, অথবা সরকার পরোক্ষভাবে তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল। এগুলো কোনো ব্যক্তিগত ও পারিবারিক বিষয় নয় যে আপসের মাধ্যমে সমাধান করা যাবে।’
আরও খবর পড়ুন:

খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের প্রধান উৎসব বড়দিনের কথা মনে হলে কিছু জনপ্রিয় গানের কথা সামনে আসে। জানেন কি, হিমেল হাওয়ার পরশ আর আলোকসজ্জার রোশনাইয়ের মধ্যে যে সুরগুলো আমাদের কানে বাজে, সেগুলো সৃষ্টির নেপথ্যে রয়েছে একদল নারী। তাঁদের লেখা, কণ্ঠ আর সুরের জাদুকরী মিশেলে বড়দিন পেয়েছে এক অনন্য রূপ।...
১ দিন আগে
ঢাকা শহরে শুধু নয়, পুরো দেশে নারীরা ক্ষুদ্র থেকে মাঝারি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সরব অবদান রেখে চলেছেন। আমরা সেই সব নারীকে ‘উদ্যোক্তা’ হিসেবে দেখছি। এই নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বছরজুড়ে অনুষ্ঠিত হতো বিভিন্ন ধরনের মেলা, সেটাও শুধু ঢাকায় নয়; বরং পুরো দেশে। সেই মেলাগুলো শুধু পণ্য বিক্রির জায়গা নয়...
৩ দিন আগে
ব্যর্থতা কখনো কখনো সাফল্যের মোড়কে ফিরে আসে। রোজাইয়া রাব্বি রোজের গল্পটা তেমনই। কম্পিউটার সায়েন্সে ডিপ্লোমা শেষ করে ২০১৭ সালে ভর্তি হন গ্রিন ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশে, কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে। তবে বাবার অসুস্থতার কারণে বেশি দিন পড়াশোনা করতে পারেননি। লেখাপড়া ছেড়ে তাঁকে বসতে হয় বিয়ের...
৩ দিন আগে
পোখারা শহরের এক বাড়ির ছাদ। রাতের নিস্তব্ধতায় আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে এক কিশোরী। সঙ্গে আছেন তার মা, যিনি পেশায় একজন শিক্ষক। কিশোরী অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে, ‘মা, ওই দুটো নক্ষত্র কি এখনই ধাক্কা খাবে?’ মা হেসে বুঝিয়ে দেন, ওরা একে অপরের থেকে কত দূরে কিংবা ওই যে ছুটন্ত বিন্দুটি দেখছ, ওটা আসলে নক্ষত্র...
৩ দিন আগেফিচার ডেস্ক, ঢাকা

খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের প্রধান উৎসব বড়দিনের কথা মনে হলে কিছু জনপ্রিয় গানের কথা সামনে আসে। জানেন কি, হিমেল হাওয়ার পরশ আর আলোকসজ্জার রোশনাইয়ের মধ্যে যে সুরগুলো আমাদের কানে বাজে, সেগুলো সৃষ্টির নেপথ্যে রয়েছে একদল নারী। তাঁদের লেখা, কণ্ঠ আর সুরের জাদুকরী মিশেলে বড়দিন পেয়েছে এক অনন্য রূপ।
কুইন অব ক্রিসমাস মারায়া
বড়দিনের গানের কথা উঠলে যে নামটি সবার আগে স্মৃতির পাতায় ভেসে ওঠে, তিনি হলেন মারায়া কেরি। ১৯৯৪ সালে প্রকাশিত হয় বড়দিনের অলিখিত অ্যানথাম, ‘অল আই ওয়ান্ট ফর ক্রিসমাস ইজ ইউ...’ গানটি। এটি যৌথভাবে লিখেছিলেন মারায়া কেরি ও ওয়াল্টার এন আফানাসিফ। এর কণ্ঠশিল্পী ছিলেন মারায়া। এই গানের প্রতিটি ছত্রে মিশে রয়েছে এক চিরন্তন আর্তি। তাঁর গানের কথায় ফুটে ওঠে সেই সত্য, ‘বড়দিনে খুব বেশি কিছু চাওয়ার নেই আমার,/ শুধু একটি জিনিসেরই বড় প্রয়োজন... বড়দিনে শুধু তোমাকেই চাই আমি!’ এর অর্থ, উৎসবের জাঁকজমক বা দামি উপহারের চেয়ে প্রিয় মানুষের সান্নিধ্যই আসল।

মারায়া কেরি ও ওয়াল্টার এ গানটি লিখতে ও সুর করতে সময় নিয়েছিলেন মাত্র ১৫ মিনিট। গান লেখা ও কণ্ঠ দেওয়াই নয়, মারায়া ছিলেন এই গানের সুরকার। প্রতিবছরের ডিসেম্বরে বিলবোর্ড চার্টের শীর্ষে ফিরে আসা এই এক গান থেকে তিনি কোটি কোটি টাকা রয়্যালটি পান, যা তাঁকে এনে দিয়েছে কুইন অব ক্রিসমাস বা বড়দিনের রানি উপাধি।
ড্রামের শব্দে ধ্রুপদি সুর

এক দরিদ্র শিশু, যার কাছে যিশুর জন্মের আনন্দ উৎসবে দেওয়ার মতো কোনো দামি উপহার ছিল না। তাই সে তার ছোট্ট ড্রামটি বাজিয়ে সম্মান জানাতে চেয়েছিল। এমনই একটি ঘটনাকে সুরে-তালে মিলিয়েছিলেন আমেরিকান সংগীত শিক্ষক ক্যাথরিন কেনিকট ডেভিস। ১৯৪১ সালের অনন্য সৃষ্টি ‘দ্য লিটিল ড্রামার বয়’ গানটি। প্রথমে এর নাম ছিল ‘দ্য ক্যারল অব দ্য ড্রাম’। গানটি একটি চেক গানের অনুকরণে তৈরি বলে ধারণা করা হয়। তবে এর সুর এবং কথা দুটোরই মূল কারিগর ছিলেন ক্যাথরিন। গানের সেই বিখ্যাত ‘পা-রাম-পাম-পাম-পাম’ সুরটি মূলত ক্যাথরিনেরই করা। আজও বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে বড়দিনের ক্যারল হিসেবে এ সুরটি মানুষের হৃদয়ে অনুরণিত হয়।
চঞ্চলতা ও শাশ্বত আবেদন
বড়দিনের উৎসবে কেবল ভক্তি বা আবেগ নয়, মিশে থাকে কিছুটা চঞ্চলতা আর কৌতুকও। ১৯৫৩ সালে মুক্তি পাওয়া ‘স্যান্টা বেবি’ গানটি তারই প্রমাণ। এর নেপথ্যে ছিলেন প্রতিভাবান গীতিকার জোয়ান জাভিটস। তিনি ছিলেন বিখ্যাত মার্কিন সিনেটর জ্যাকব জাভিটসের ভাইয়ের মেয়ে। সে সময়ে দাঁড়িয়ে এক নারীর এমন চটুল ও আধুনিক কথার গান লেখা ছিল বেশ সাহসী পদক্ষেপ। ফিল স্প্রিংগার ও টনি স্প্রিংগারের সঙ্গে মিলে জোয়ান এ গানটি লিখেছিলেন। গানটি আর্থ কিটের কণ্ঠে অমর হয়ে আছে। দশকের পর দশক পার হলেও গানটির আবেদন একটুও কমেনি। ম্যাডোনা থেকে শুরু করে কাইলি মিনোগ, টেইলর সুইফট এবং আরিয়ানা গ্রান্দের মতো বর্তমান সময়ের পপতারকারাও এ গানটি নতুন করে গেয়েছেন।

কিংবদন্তির সুর ও আধুনিকতার ছোঁয়া
কান্ট্রি মিউজিকের কিংবদন্তি ডলি পার্টন বড়দিনের উৎসবকে রাঙিয়েছেন নিজের মেধা দিয়ে। তিনি বড়দিন উপলক্ষে একাধিক সফল অ্যালবাম প্রকাশ করেছেন, যেগুলোর অধিকাংশ গানই ছিল তাঁর নিজের লেখা। তাঁর অমর সৃষ্টি ‘হার্ড ক্যান্ডি ক্রিসমাস’ ও ‘ক্রিসমাস অব মেনি কালার্স’ গানগুলো আজও শ্রোতাদের মুগ্ধ করে।
সিয়ার কণ্ঠে বড়দিনের আনন্দের স্রোত

সময়ের স্রোতে বড়দিনের গানে যোগ হয়েছে আধুনিকতার নতুন মাত্রা। তরুণ প্রজন্মের কাছে বড়দিন মানেই যেন অস্ট্রেলিয়ান সংগীতশিল্পী ও গীতিকার সিয়া। ২০১৭ সালে তিনি প্রকাশ করেন ‘এভরিডে ইজ ক্রিসমাস’ অ্যালবামটি। সিয়া প্রমাণ করেছেন, বড়দিনের গানের জন্য কেবল পুরোনো ক্ল্যাসিকের ওপর নির্ভর করার প্রয়োজন নেই। তাঁর নিজের লেখা ‘স্নো ম্যান’ ও ‘স্যান্টা ইজ কামিং ফর আস’ গানগুলো এখনকার ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক জনপ্রিয়।
বড়দিনের সুরের মূর্ছনা কেবল সুর নয়; বরং এক অদৃশ্য মিলনমেলা। পর্দার আড়ালে থাকা এই নারী কারিগরদের লেখনী আর সুরের মায়ায় বড়দিন হয়ে ওঠে আরও মধুময়, আরও প্রাণবন্ত। প্রিয়জন আর আত্মীয়স্বজনের সে মিলনমেলায় এ গানগুলোই হয়ে থাকে আত্মার খোরাক।
সূত্র: বিবিসি, ওয়েব্যাক মেশিন, কনকর্ড ফ্রি পাবলিক লাইব্রেরি, ভ্যানিটি ফেয়ার

খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের প্রধান উৎসব বড়দিনের কথা মনে হলে কিছু জনপ্রিয় গানের কথা সামনে আসে। জানেন কি, হিমেল হাওয়ার পরশ আর আলোকসজ্জার রোশনাইয়ের মধ্যে যে সুরগুলো আমাদের কানে বাজে, সেগুলো সৃষ্টির নেপথ্যে রয়েছে একদল নারী। তাঁদের লেখা, কণ্ঠ আর সুরের জাদুকরী মিশেলে বড়দিন পেয়েছে এক অনন্য রূপ।
কুইন অব ক্রিসমাস মারায়া
বড়দিনের গানের কথা উঠলে যে নামটি সবার আগে স্মৃতির পাতায় ভেসে ওঠে, তিনি হলেন মারায়া কেরি। ১৯৯৪ সালে প্রকাশিত হয় বড়দিনের অলিখিত অ্যানথাম, ‘অল আই ওয়ান্ট ফর ক্রিসমাস ইজ ইউ...’ গানটি। এটি যৌথভাবে লিখেছিলেন মারায়া কেরি ও ওয়াল্টার এন আফানাসিফ। এর কণ্ঠশিল্পী ছিলেন মারায়া। এই গানের প্রতিটি ছত্রে মিশে রয়েছে এক চিরন্তন আর্তি। তাঁর গানের কথায় ফুটে ওঠে সেই সত্য, ‘বড়দিনে খুব বেশি কিছু চাওয়ার নেই আমার,/ শুধু একটি জিনিসেরই বড় প্রয়োজন... বড়দিনে শুধু তোমাকেই চাই আমি!’ এর অর্থ, উৎসবের জাঁকজমক বা দামি উপহারের চেয়ে প্রিয় মানুষের সান্নিধ্যই আসল।

মারায়া কেরি ও ওয়াল্টার এ গানটি লিখতে ও সুর করতে সময় নিয়েছিলেন মাত্র ১৫ মিনিট। গান লেখা ও কণ্ঠ দেওয়াই নয়, মারায়া ছিলেন এই গানের সুরকার। প্রতিবছরের ডিসেম্বরে বিলবোর্ড চার্টের শীর্ষে ফিরে আসা এই এক গান থেকে তিনি কোটি কোটি টাকা রয়্যালটি পান, যা তাঁকে এনে দিয়েছে কুইন অব ক্রিসমাস বা বড়দিনের রানি উপাধি।
ড্রামের শব্দে ধ্রুপদি সুর

এক দরিদ্র শিশু, যার কাছে যিশুর জন্মের আনন্দ উৎসবে দেওয়ার মতো কোনো দামি উপহার ছিল না। তাই সে তার ছোট্ট ড্রামটি বাজিয়ে সম্মান জানাতে চেয়েছিল। এমনই একটি ঘটনাকে সুরে-তালে মিলিয়েছিলেন আমেরিকান সংগীত শিক্ষক ক্যাথরিন কেনিকট ডেভিস। ১৯৪১ সালের অনন্য সৃষ্টি ‘দ্য লিটিল ড্রামার বয়’ গানটি। প্রথমে এর নাম ছিল ‘দ্য ক্যারল অব দ্য ড্রাম’। গানটি একটি চেক গানের অনুকরণে তৈরি বলে ধারণা করা হয়। তবে এর সুর এবং কথা দুটোরই মূল কারিগর ছিলেন ক্যাথরিন। গানের সেই বিখ্যাত ‘পা-রাম-পাম-পাম-পাম’ সুরটি মূলত ক্যাথরিনেরই করা। আজও বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে বড়দিনের ক্যারল হিসেবে এ সুরটি মানুষের হৃদয়ে অনুরণিত হয়।
চঞ্চলতা ও শাশ্বত আবেদন
বড়দিনের উৎসবে কেবল ভক্তি বা আবেগ নয়, মিশে থাকে কিছুটা চঞ্চলতা আর কৌতুকও। ১৯৫৩ সালে মুক্তি পাওয়া ‘স্যান্টা বেবি’ গানটি তারই প্রমাণ। এর নেপথ্যে ছিলেন প্রতিভাবান গীতিকার জোয়ান জাভিটস। তিনি ছিলেন বিখ্যাত মার্কিন সিনেটর জ্যাকব জাভিটসের ভাইয়ের মেয়ে। সে সময়ে দাঁড়িয়ে এক নারীর এমন চটুল ও আধুনিক কথার গান লেখা ছিল বেশ সাহসী পদক্ষেপ। ফিল স্প্রিংগার ও টনি স্প্রিংগারের সঙ্গে মিলে জোয়ান এ গানটি লিখেছিলেন। গানটি আর্থ কিটের কণ্ঠে অমর হয়ে আছে। দশকের পর দশক পার হলেও গানটির আবেদন একটুও কমেনি। ম্যাডোনা থেকে শুরু করে কাইলি মিনোগ, টেইলর সুইফট এবং আরিয়ানা গ্রান্দের মতো বর্তমান সময়ের পপতারকারাও এ গানটি নতুন করে গেয়েছেন।

কিংবদন্তির সুর ও আধুনিকতার ছোঁয়া
কান্ট্রি মিউজিকের কিংবদন্তি ডলি পার্টন বড়দিনের উৎসবকে রাঙিয়েছেন নিজের মেধা দিয়ে। তিনি বড়দিন উপলক্ষে একাধিক সফল অ্যালবাম প্রকাশ করেছেন, যেগুলোর অধিকাংশ গানই ছিল তাঁর নিজের লেখা। তাঁর অমর সৃষ্টি ‘হার্ড ক্যান্ডি ক্রিসমাস’ ও ‘ক্রিসমাস অব মেনি কালার্স’ গানগুলো আজও শ্রোতাদের মুগ্ধ করে।
সিয়ার কণ্ঠে বড়দিনের আনন্দের স্রোত

সময়ের স্রোতে বড়দিনের গানে যোগ হয়েছে আধুনিকতার নতুন মাত্রা। তরুণ প্রজন্মের কাছে বড়দিন মানেই যেন অস্ট্রেলিয়ান সংগীতশিল্পী ও গীতিকার সিয়া। ২০১৭ সালে তিনি প্রকাশ করেন ‘এভরিডে ইজ ক্রিসমাস’ অ্যালবামটি। সিয়া প্রমাণ করেছেন, বড়দিনের গানের জন্য কেবল পুরোনো ক্ল্যাসিকের ওপর নির্ভর করার প্রয়োজন নেই। তাঁর নিজের লেখা ‘স্নো ম্যান’ ও ‘স্যান্টা ইজ কামিং ফর আস’ গানগুলো এখনকার ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক জনপ্রিয়।
বড়দিনের সুরের মূর্ছনা কেবল সুর নয়; বরং এক অদৃশ্য মিলনমেলা। পর্দার আড়ালে থাকা এই নারী কারিগরদের লেখনী আর সুরের মায়ায় বড়দিন হয়ে ওঠে আরও মধুময়, আরও প্রাণবন্ত। প্রিয়জন আর আত্মীয়স্বজনের সে মিলনমেলায় এ গানগুলোই হয়ে থাকে আত্মার খোরাক।
সূত্র: বিবিসি, ওয়েব্যাক মেশিন, কনকর্ড ফ্রি পাবলিক লাইব্রেরি, ভ্যানিটি ফেয়ার

শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনের পতনের কিছুদিন পর, গত বছরের ২৯ আগস্ট রাজধানীর শ্যামলী স্কয়ারে প্রকাশ্যে মারধরের শিকার হন কয়েকজন নারী যৌনকর্মী। হামলাকারী এক যুবক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেই সেই ঘটনার ভিডিও প্রচার করেন। ঘটনাটি ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিলেও হামলাকারীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
০৮ মার্চ ২০২৫
ঢাকা শহরে শুধু নয়, পুরো দেশে নারীরা ক্ষুদ্র থেকে মাঝারি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সরব অবদান রেখে চলেছেন। আমরা সেই সব নারীকে ‘উদ্যোক্তা’ হিসেবে দেখছি। এই নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বছরজুড়ে অনুষ্ঠিত হতো বিভিন্ন ধরনের মেলা, সেটাও শুধু ঢাকায় নয়; বরং পুরো দেশে। সেই মেলাগুলো শুধু পণ্য বিক্রির জায়গা নয়...
৩ দিন আগে
ব্যর্থতা কখনো কখনো সাফল্যের মোড়কে ফিরে আসে। রোজাইয়া রাব্বি রোজের গল্পটা তেমনই। কম্পিউটার সায়েন্সে ডিপ্লোমা শেষ করে ২০১৭ সালে ভর্তি হন গ্রিন ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশে, কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে। তবে বাবার অসুস্থতার কারণে বেশি দিন পড়াশোনা করতে পারেননি। লেখাপড়া ছেড়ে তাঁকে বসতে হয় বিয়ের...
৩ দিন আগে
পোখারা শহরের এক বাড়ির ছাদ। রাতের নিস্তব্ধতায় আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে এক কিশোরী। সঙ্গে আছেন তার মা, যিনি পেশায় একজন শিক্ষক। কিশোরী অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে, ‘মা, ওই দুটো নক্ষত্র কি এখনই ধাক্কা খাবে?’ মা হেসে বুঝিয়ে দেন, ওরা একে অপরের থেকে কত দূরে কিংবা ওই যে ছুটন্ত বিন্দুটি দেখছ, ওটা আসলে নক্ষত্র...
৩ দিন আগেকাশফিয়া আলম ঝিলিক, ঢাকা

ঢাকা শহরে শুধু নয়, পুরো দেশে নারীরা ক্ষুদ্র থেকে মাঝারি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সরব অবদান রেখে চলেছেন। আমরা সেই সব নারীকে ‘উদ্যোক্তা’ হিসেবে দেখছি। এই নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বছরজুড়ে অনুষ্ঠিত হতো বিভিন্ন ধরনের মেলা, সেটাও শুধু ঢাকায় নয়; বরং পুরো দেশে। সেই মেলাগুলো শুধু পণ্য বিক্রির জায়গা নয়; বরং নেটওয়ার্কিং, নতুন আইডিয়া বিনিময় এবং অভিজ্ঞতা অর্জনের বিশাল খোলা বই। তবে চলতি বছর সেই মেলাগুলোর চিত্রটা কিছুটা ভিন্ন; বিশেষ করে উদ্যোক্তা মেলার সংখ্যা কমে যাওয়া এবং এর প্রভাব নিয়ে তৈরি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
মেলার গুরুত্ব ও বর্তমান সংকট
এসএমই ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, নতুন উদ্যোক্তাদের ৬০ শতাংশ নারী। ফাউন্ডেশনটি এ পর্যন্ত ৫০ হাজারের বেশি উদ্যোক্তাকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। আর্টেমিস লাইফস্টাইলের স্বত্বাধিকারী ফায়জা আহমেদ রাফা বলেন, ‘আমরা যারা অনলাইন বিজনেসের সঙ্গে জড়িত, তারা বছরে বেশ কিছু মেলায় অংশ নেওয়ার চেষ্টা করি, যাতে সরাসরি ভোক্তাদের সঙ্গে একটা সম্পর্ক তৈরি করা যায়।
এ ছাড়া উদ্যোক্তা মেলাগুলোতে পরিচিতি পাওয়ার সুযোগ থাকে। অনলাইন উদ্যোগ নিয়ে ভোক্তাদের অনেক সময় বিশ্বাস তৈরি করতে অসুবিধা হয়। মেলা করলে তাঁরা সরাসরি এসে পণ্য যাচাই করতে পারেন। এর ফলে অনেকে নিশ্চিন্তে অনলাইনে অর্ডার করেন।’ রাফা আরও জানান, সাধারণত ঈদ, ফাল্গুন, বৈশাখ বা দুর্গাপূজার মতো উৎসবগুলোকে কেন্দ্র করে মেলার আয়োজন করা হয়। তবে তাঁর পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ‘লাস্ট দু-এক বছরে তুলনামূলক মেলার আয়োজন কিছুটা কম।’
কেন কমছে মেলার সংখ্যা
নারী উদ্যোক্তা ফোরামের সভাপতি রাফিয়া আক্তার, যিনি ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণে কাজ করছেন, তিনি এ বছর বড় কোনো মেলার আয়োজন করতে পারেননি। এর কারণ হিসেবে তিনি দেশের অস্থিতিশীল রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতিকে দায়ী করেছেন। রাফিয়া আক্তার বলেন, ‘আসলে দেশের পরিস্থিতির কারণে এ বছর মেলা আয়োজন করা হয়নি। যে কারণে অর্থনৈতিক দিকেও প্রভাব পড়েছে। এ মুহূর্তে ইনভেস্ট করে মেলায় কেউ অংশ নেবেন কি না, সেসব দিক বিবেচনা করে বড় কোনো মেলার আয়োজন করা হয়নি এবার।’
রাফিয়া আক্তার আরও যোগ করেন, ‘গত বছরের আগেও দেখা গেছে, সব সময় ফোন আসত, এখানে মেলা সেখানে মেলা। সেটা কমে গেছে। এটা আমার কাছে কম এসেছে কি না জানি না। মনে হয়, মেলার আয়োজন তুলনামূলক কমে গেছে।’
তবে এ বিষয়ে ভিন্ন মত পোষণ করেন
মাইসারার স্বত্বাধিকারী এলমা খন্দকার এষা। তিনি বলেন, ‘গত কয়েক বছর আমি মেলা করিনি। তবে চলতি বছর বেশ কিছু মেলা করেছি। সেটা যদি হিসাব করি, তাহলে আমার চোখে মেলা কম মনে হয়নি।’
অর্থনীতিতে নারীর অবদান ও আগামীর প্রত্যাশা অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০২৪ অনুযায়ী, দেশের ১ কোটি ১৮ লাখ এসএমইর মধ্যে মাত্র ৬ দশমিক ৪৭ শতাংশ নারী মালিকানাধীন হলেও উদ্যোক্তা হওয়ার হার দ্রুত বাড়ছে। বর্তমানে দেশের ৩ কোটি ৭ লাখ কর্মজীবীর মধ্যে ১৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ নারী। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) একটি চমকপ্রদ তথ্য হলো, ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে দারিদ্র্যসীমায় নতুন করে কোনো নারী যুক্ত হননি, যেখানে ১ লাখ ৬০ হাজার পুরুষ নতুন করে দরিদ্র হয়েছেন।
সৌন্দর্যশিল্প, হস্তশিল্প, বুটিক ও ব্লক প্রিন্টের মতো খাতে নারীদের জয়জয়কার। এই অগ্রযাত্রা ধরে রাখতে মেলার মতো প্ল্যাটফর্মগুলো অপরিহার্য। এতে ঢাকাসহ বড় শহরের ভোক্তাদের সঙ্গে সারা দেশের নারী উদ্যোক্তাদের সরাসরি যোগাযোগ তৈরি হয়। এতে পণ্য ও ক্রয়বৈচিত্র্য বাড়ে, ভোক্তা এবং সরবরাহকারীদের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা তৈরি
হয়। সর্বোপরি অর্থনৈতিক গতিশীলতা ঠিক থাকে। কিন্তু এ বছর দৃশ্যমানভাবে মেলার সংখ্যা কিছুটা কমে গেছে। তবু উদ্যোক্তারা অনেক আশাবাদী। এই আশাবাদ দেশের অর্থনীতির জন্যই।

ঢাকা শহরে শুধু নয়, পুরো দেশে নারীরা ক্ষুদ্র থেকে মাঝারি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সরব অবদান রেখে চলেছেন। আমরা সেই সব নারীকে ‘উদ্যোক্তা’ হিসেবে দেখছি। এই নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বছরজুড়ে অনুষ্ঠিত হতো বিভিন্ন ধরনের মেলা, সেটাও শুধু ঢাকায় নয়; বরং পুরো দেশে। সেই মেলাগুলো শুধু পণ্য বিক্রির জায়গা নয়; বরং নেটওয়ার্কিং, নতুন আইডিয়া বিনিময় এবং অভিজ্ঞতা অর্জনের বিশাল খোলা বই। তবে চলতি বছর সেই মেলাগুলোর চিত্রটা কিছুটা ভিন্ন; বিশেষ করে উদ্যোক্তা মেলার সংখ্যা কমে যাওয়া এবং এর প্রভাব নিয়ে তৈরি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
মেলার গুরুত্ব ও বর্তমান সংকট
এসএমই ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, নতুন উদ্যোক্তাদের ৬০ শতাংশ নারী। ফাউন্ডেশনটি এ পর্যন্ত ৫০ হাজারের বেশি উদ্যোক্তাকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। আর্টেমিস লাইফস্টাইলের স্বত্বাধিকারী ফায়জা আহমেদ রাফা বলেন, ‘আমরা যারা অনলাইন বিজনেসের সঙ্গে জড়িত, তারা বছরে বেশ কিছু মেলায় অংশ নেওয়ার চেষ্টা করি, যাতে সরাসরি ভোক্তাদের সঙ্গে একটা সম্পর্ক তৈরি করা যায়।
এ ছাড়া উদ্যোক্তা মেলাগুলোতে পরিচিতি পাওয়ার সুযোগ থাকে। অনলাইন উদ্যোগ নিয়ে ভোক্তাদের অনেক সময় বিশ্বাস তৈরি করতে অসুবিধা হয়। মেলা করলে তাঁরা সরাসরি এসে পণ্য যাচাই করতে পারেন। এর ফলে অনেকে নিশ্চিন্তে অনলাইনে অর্ডার করেন।’ রাফা আরও জানান, সাধারণত ঈদ, ফাল্গুন, বৈশাখ বা দুর্গাপূজার মতো উৎসবগুলোকে কেন্দ্র করে মেলার আয়োজন করা হয়। তবে তাঁর পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ‘লাস্ট দু-এক বছরে তুলনামূলক মেলার আয়োজন কিছুটা কম।’
কেন কমছে মেলার সংখ্যা
নারী উদ্যোক্তা ফোরামের সভাপতি রাফিয়া আক্তার, যিনি ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণে কাজ করছেন, তিনি এ বছর বড় কোনো মেলার আয়োজন করতে পারেননি। এর কারণ হিসেবে তিনি দেশের অস্থিতিশীল রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতিকে দায়ী করেছেন। রাফিয়া আক্তার বলেন, ‘আসলে দেশের পরিস্থিতির কারণে এ বছর মেলা আয়োজন করা হয়নি। যে কারণে অর্থনৈতিক দিকেও প্রভাব পড়েছে। এ মুহূর্তে ইনভেস্ট করে মেলায় কেউ অংশ নেবেন কি না, সেসব দিক বিবেচনা করে বড় কোনো মেলার আয়োজন করা হয়নি এবার।’
রাফিয়া আক্তার আরও যোগ করেন, ‘গত বছরের আগেও দেখা গেছে, সব সময় ফোন আসত, এখানে মেলা সেখানে মেলা। সেটা কমে গেছে। এটা আমার কাছে কম এসেছে কি না জানি না। মনে হয়, মেলার আয়োজন তুলনামূলক কমে গেছে।’
তবে এ বিষয়ে ভিন্ন মত পোষণ করেন
মাইসারার স্বত্বাধিকারী এলমা খন্দকার এষা। তিনি বলেন, ‘গত কয়েক বছর আমি মেলা করিনি। তবে চলতি বছর বেশ কিছু মেলা করেছি। সেটা যদি হিসাব করি, তাহলে আমার চোখে মেলা কম মনে হয়নি।’
অর্থনীতিতে নারীর অবদান ও আগামীর প্রত্যাশা অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০২৪ অনুযায়ী, দেশের ১ কোটি ১৮ লাখ এসএমইর মধ্যে মাত্র ৬ দশমিক ৪৭ শতাংশ নারী মালিকানাধীন হলেও উদ্যোক্তা হওয়ার হার দ্রুত বাড়ছে। বর্তমানে দেশের ৩ কোটি ৭ লাখ কর্মজীবীর মধ্যে ১৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ নারী। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) একটি চমকপ্রদ তথ্য হলো, ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে দারিদ্র্যসীমায় নতুন করে কোনো নারী যুক্ত হননি, যেখানে ১ লাখ ৬০ হাজার পুরুষ নতুন করে দরিদ্র হয়েছেন।
সৌন্দর্যশিল্প, হস্তশিল্প, বুটিক ও ব্লক প্রিন্টের মতো খাতে নারীদের জয়জয়কার। এই অগ্রযাত্রা ধরে রাখতে মেলার মতো প্ল্যাটফর্মগুলো অপরিহার্য। এতে ঢাকাসহ বড় শহরের ভোক্তাদের সঙ্গে সারা দেশের নারী উদ্যোক্তাদের সরাসরি যোগাযোগ তৈরি হয়। এতে পণ্য ও ক্রয়বৈচিত্র্য বাড়ে, ভোক্তা এবং সরবরাহকারীদের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা তৈরি
হয়। সর্বোপরি অর্থনৈতিক গতিশীলতা ঠিক থাকে। কিন্তু এ বছর দৃশ্যমানভাবে মেলার সংখ্যা কিছুটা কমে গেছে। তবু উদ্যোক্তারা অনেক আশাবাদী। এই আশাবাদ দেশের অর্থনীতির জন্যই।

শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনের পতনের কিছুদিন পর, গত বছরের ২৯ আগস্ট রাজধানীর শ্যামলী স্কয়ারে প্রকাশ্যে মারধরের শিকার হন কয়েকজন নারী যৌনকর্মী। হামলাকারী এক যুবক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেই সেই ঘটনার ভিডিও প্রচার করেন। ঘটনাটি ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিলেও হামলাকারীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
০৮ মার্চ ২০২৫
খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের প্রধান উৎসব বড়দিনের কথা মনে হলে কিছু জনপ্রিয় গানের কথা সামনে আসে। জানেন কি, হিমেল হাওয়ার পরশ আর আলোকসজ্জার রোশনাইয়ের মধ্যে যে সুরগুলো আমাদের কানে বাজে, সেগুলো সৃষ্টির নেপথ্যে রয়েছে একদল নারী। তাঁদের লেখা, কণ্ঠ আর সুরের জাদুকরী মিশেলে বড়দিন পেয়েছে এক অনন্য রূপ।...
১ দিন আগে
ব্যর্থতা কখনো কখনো সাফল্যের মোড়কে ফিরে আসে। রোজাইয়া রাব্বি রোজের গল্পটা তেমনই। কম্পিউটার সায়েন্সে ডিপ্লোমা শেষ করে ২০১৭ সালে ভর্তি হন গ্রিন ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশে, কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে। তবে বাবার অসুস্থতার কারণে বেশি দিন পড়াশোনা করতে পারেননি। লেখাপড়া ছেড়ে তাঁকে বসতে হয় বিয়ের...
৩ দিন আগে
পোখারা শহরের এক বাড়ির ছাদ। রাতের নিস্তব্ধতায় আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে এক কিশোরী। সঙ্গে আছেন তার মা, যিনি পেশায় একজন শিক্ষক। কিশোরী অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে, ‘মা, ওই দুটো নক্ষত্র কি এখনই ধাক্কা খাবে?’ মা হেসে বুঝিয়ে দেন, ওরা একে অপরের থেকে কত দূরে কিংবা ওই যে ছুটন্ত বিন্দুটি দেখছ, ওটা আসলে নক্ষত্র...
৩ দিন আগেআল আমিন

ব্যর্থতা কখনো কখনো সাফল্যের মোড়কে ফিরে আসে। রোজাইয়া রাব্বি রোজের গল্পটা তেমনই। কম্পিউটার সায়েন্সে ডিপ্লোমা শেষ করে ২০১৭ সালে ভর্তি হন গ্রিন ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশে, কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে। তবে বাবার অসুস্থতার কারণে বেশি দিন পড়াশোনা করতে পারেননি। লেখাপড়া ছেড়ে তাঁকে বসতে হয় বিয়ের পিঁড়িতে। কিন্তু নিজের চেষ্টায় তিনি আজ অন্য নারীদের কাছে হয়ে উঠেছেন আদর্শ।
২০১৯ সালে একটি সেলাই মেশিন দিয়ে শুরু করেন নিজের ভুবনে যাত্রা। কিছু গজ কাপড় কিনে পোশাক তৈরির কাজ শুরু করেন প্রথমে। সেলাই মেশিনের আওয়াজের চেয়ে তখন বেশি শোনা যেত মানুষের কটূক্তির আওয়াজ। তাই ছোটবেলার রান্না করার শখ থেকে ছোট্ট পরিসরে শুরু করলেন ক্যাটারিং সার্ভিস। সেখানেও ডেলিভারি, প্রমোশনসহ নানা সমস্যার মুখে পড়লেন তিনি। তবে দমে গেলেন না। কয়েকজন নারীকে সঙ্গে নিয়ে শুরু করলেন উদ্যোক্তা উন্নয়ন আবাসন নামে একটি ফেসবুক গ্রুপ। তাঁর নিজের তৈরি পণ্যের পাশাপাশি শহরের নারীদের উৎপাদিত পণ্য সেই ফেসবুক গ্রুপে বিক্রি করতে শুরু করেন তিনি। এরপর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে খাবার সরবরাহের কাজ শুরু করেন রোজ।
খাবার সরবরাহের ক্ষেত্রে অল্প দিনেই তাঁর সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। এখন পঞ্চগড় শহরের চাউলহাটির নিউমার্কেট এলাকায় তাঁর ‘প্রত্যাশা’ ব্র্যান্ডের নিজস্ব একটি আউটলেট আছে। সেখানে বুটিকস ও হ্যান্ডপেইন্টের বিভিন্ন পণ্য তিনি পাইকারি বিক্রি করেন। এখন তাঁর অধীনে নিয়মিত কাজ করছেন ১০ জন নারী।
উদ্যোক্তা জীবনের শুরুতে নানা প্রতিবন্ধকতা পার করে তিনি জেলা পর্যায়ে অর্থনৈতিকভাবে সফলতা অর্জনকারী নারী হিসেবে পেয়েছেন এ বছরের শ্রেষ্ঠ অদম্য নারী পুরস্কার। আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে তাঁকে অদম্য নারী পুরস্কারে ভূষিত করেন পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক কাজী মো. সায়েমুজ্জামান।
রোজাইয়া রাব্বি রোজের স্বপ্ন, তাঁর পণ্য যেন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। নারীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং তাঁদের জীবনমানের উন্নয়নে তিনি কাজ করে যেতে চান অন্য নারীদের সঙ্গে নিয়ে।

ব্যর্থতা কখনো কখনো সাফল্যের মোড়কে ফিরে আসে। রোজাইয়া রাব্বি রোজের গল্পটা তেমনই। কম্পিউটার সায়েন্সে ডিপ্লোমা শেষ করে ২০১৭ সালে ভর্তি হন গ্রিন ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশে, কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে। তবে বাবার অসুস্থতার কারণে বেশি দিন পড়াশোনা করতে পারেননি। লেখাপড়া ছেড়ে তাঁকে বসতে হয় বিয়ের পিঁড়িতে। কিন্তু নিজের চেষ্টায় তিনি আজ অন্য নারীদের কাছে হয়ে উঠেছেন আদর্শ।
২০১৯ সালে একটি সেলাই মেশিন দিয়ে শুরু করেন নিজের ভুবনে যাত্রা। কিছু গজ কাপড় কিনে পোশাক তৈরির কাজ শুরু করেন প্রথমে। সেলাই মেশিনের আওয়াজের চেয়ে তখন বেশি শোনা যেত মানুষের কটূক্তির আওয়াজ। তাই ছোটবেলার রান্না করার শখ থেকে ছোট্ট পরিসরে শুরু করলেন ক্যাটারিং সার্ভিস। সেখানেও ডেলিভারি, প্রমোশনসহ নানা সমস্যার মুখে পড়লেন তিনি। তবে দমে গেলেন না। কয়েকজন নারীকে সঙ্গে নিয়ে শুরু করলেন উদ্যোক্তা উন্নয়ন আবাসন নামে একটি ফেসবুক গ্রুপ। তাঁর নিজের তৈরি পণ্যের পাশাপাশি শহরের নারীদের উৎপাদিত পণ্য সেই ফেসবুক গ্রুপে বিক্রি করতে শুরু করেন তিনি। এরপর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে খাবার সরবরাহের কাজ শুরু করেন রোজ।
খাবার সরবরাহের ক্ষেত্রে অল্প দিনেই তাঁর সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। এখন পঞ্চগড় শহরের চাউলহাটির নিউমার্কেট এলাকায় তাঁর ‘প্রত্যাশা’ ব্র্যান্ডের নিজস্ব একটি আউটলেট আছে। সেখানে বুটিকস ও হ্যান্ডপেইন্টের বিভিন্ন পণ্য তিনি পাইকারি বিক্রি করেন। এখন তাঁর অধীনে নিয়মিত কাজ করছেন ১০ জন নারী।
উদ্যোক্তা জীবনের শুরুতে নানা প্রতিবন্ধকতা পার করে তিনি জেলা পর্যায়ে অর্থনৈতিকভাবে সফলতা অর্জনকারী নারী হিসেবে পেয়েছেন এ বছরের শ্রেষ্ঠ অদম্য নারী পুরস্কার। আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে তাঁকে অদম্য নারী পুরস্কারে ভূষিত করেন পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক কাজী মো. সায়েমুজ্জামান।
রোজাইয়া রাব্বি রোজের স্বপ্ন, তাঁর পণ্য যেন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। নারীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং তাঁদের জীবনমানের উন্নয়নে তিনি কাজ করে যেতে চান অন্য নারীদের সঙ্গে নিয়ে।

শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনের পতনের কিছুদিন পর, গত বছরের ২৯ আগস্ট রাজধানীর শ্যামলী স্কয়ারে প্রকাশ্যে মারধরের শিকার হন কয়েকজন নারী যৌনকর্মী। হামলাকারী এক যুবক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেই সেই ঘটনার ভিডিও প্রচার করেন। ঘটনাটি ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিলেও হামলাকারীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
০৮ মার্চ ২০২৫
খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের প্রধান উৎসব বড়দিনের কথা মনে হলে কিছু জনপ্রিয় গানের কথা সামনে আসে। জানেন কি, হিমেল হাওয়ার পরশ আর আলোকসজ্জার রোশনাইয়ের মধ্যে যে সুরগুলো আমাদের কানে বাজে, সেগুলো সৃষ্টির নেপথ্যে রয়েছে একদল নারী। তাঁদের লেখা, কণ্ঠ আর সুরের জাদুকরী মিশেলে বড়দিন পেয়েছে এক অনন্য রূপ।...
১ দিন আগে
ঢাকা শহরে শুধু নয়, পুরো দেশে নারীরা ক্ষুদ্র থেকে মাঝারি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সরব অবদান রেখে চলেছেন। আমরা সেই সব নারীকে ‘উদ্যোক্তা’ হিসেবে দেখছি। এই নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বছরজুড়ে অনুষ্ঠিত হতো বিভিন্ন ধরনের মেলা, সেটাও শুধু ঢাকায় নয়; বরং পুরো দেশে। সেই মেলাগুলো শুধু পণ্য বিক্রির জায়গা নয়...
৩ দিন আগে
পোখারা শহরের এক বাড়ির ছাদ। রাতের নিস্তব্ধতায় আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে এক কিশোরী। সঙ্গে আছেন তার মা, যিনি পেশায় একজন শিক্ষক। কিশোরী অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে, ‘মা, ওই দুটো নক্ষত্র কি এখনই ধাক্কা খাবে?’ মা হেসে বুঝিয়ে দেন, ওরা একে অপরের থেকে কত দূরে কিংবা ওই যে ছুটন্ত বিন্দুটি দেখছ, ওটা আসলে নক্ষত্র...
৩ দিন আগেফিচার ডেস্ক

পোখারা শহরের এক বাড়ির ছাদ। রাতের নিস্তব্ধতায় আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে এক কিশোরী। সঙ্গে আছেন তার মা, যিনি পেশায় একজন শিক্ষক। কিশোরী অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে, ‘মা, ওই দুটো নক্ষত্র কি এখনই ধাক্কা খাবে?’ মা হেসে বুঝিয়ে দেন, ওরা একে অপরের থেকে কত দূরে কিংবা ওই যে ছুটন্ত বিন্দুটি দেখছ, ওটা আসলে নক্ষত্র নয়—একটি স্যাটেলাইট। সেই কৌতূহলী কিশোরীটি আজকের মনীষা শ্রেষ্ঠা—নেপালের সফল জ্যোতির্বিজ্ঞানী, জ্যোতিঃপদার্থবিদ এবং দেশটির প্রথম নারী অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার। তিনি এখন হাই-এনার্জি অ্যাস্ট্রোফিজিকস বিষয়ে পিএইচডি করছেন।
চ্যালেঞ্জের সঙ্গে শুরু যে লড়াই
মনীষার বিজ্ঞানের পথে আসাটা ছিল অনেকটা জেদের বশে। তিনি যে কলেজে পড়তেন, সেখানে পদার্থবিজ্ঞান ক্লাসে ছিল ১২০ জন শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে মাত্র পাঁচ-ছয়জন মেয়ে। অথচ জীববিজ্ঞানের চিত্রটা ছিল ঠিক উল্টো। বন্ধুকে এর কারণ জিজ্ঞেস করলে উত্তর পান, মেয়েদের জন্য পদার্থবিজ্ঞানের চেয়ে জীববিজ্ঞান অনেক সহজ। মনীষা বিষয়টিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিলেন। তিনি ভাবলেন, তাঁকে পদার্থবিজ্ঞানই পড়তে হবে।
ক্লাসে ঢোকার পর শুরু হলো অন্য এক লড়াই। পুরুষশাসিত সেই পরিবেশে অনেক সময় মেয়েদের বসার জন্য কোনো আসনই দেওয়া হতো না; তাদের দাঁড়িয়ে ক্লাস করতে হতো। এমনকি ল্যাবরেটরিতে কাজ করার সময়ও তরুণেরা কাজ করত, আর মেয়েদের দূর থেকে দাঁড়িয়ে দেখার অনুমতি ছিল। মাস্টার্স পর্যায়ে এসে এই সংকট আরও বাড়ে। পড়াশোনার পদ্ধতি ছিল শুধু নোট নেওয়া আর মুখস্থ করা। একপর্যায়ে হতাশ হয়ে মনীষা ডিগ্রি শেষ না করেই পড়াশোনা ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
নেপাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির যাত্রা
২০১৩ সালে মনীষা নেপাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটিতে (এনএএসও) প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর হিসেবে যোগ দেন। তখন সংগঠনটির কোনো অফিস ছিল না, ছিল খুব সীমিত সুবিধা। মনীষা ও তাঁর দল মিলে বছরের পর বছর পরিশ্রম করে সেটিকে আন্তর্জাতিক উচ্চতায় নিয়ে যান।
সম্প্রতি এই সোসাইটি ইন্টারন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিয়নের সদস্যপদ পেয়েছে, যা নেপালের ১০০ বছরের ইতিহাসে প্রথম।
আজ এনএএসও শিক্ষা, গবেষণা ও প্রচার—তিনটি স্তম্ভের ওপর দাঁড়িয়ে কাজ করছে। প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে এবং শিক্ষার্থীদের জন্য সৃজনশীল চিন্তার উন্মুক্ত প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে। মনীষার দল সারা দেশে সংখ্যালঘু গোষ্ঠী এবং শিক্ষার্থীদের হাতে টেলিস্কোপ ও বই তুলে দিচ্ছে। যাতে তারাও বিজ্ঞানের আলোয় আলোকিত হতে পারে।
অলিম্পিয়াড ও বৈশ্বিক সাফল্য
মনীষা শ্রেষ্ঠা নেপালের ন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমি অলিম্পিয়াডের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। তিনি নেপালি শিক্ষার্থীদের আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার জন্য প্রস্তুত করেন। তাঁর হাত ধরে অনেক শিক্ষার্থী ফ্রান্স, আমেরিকা ও সুইজারল্যান্ডে আন্তর্জাতিক মঞ্চে লড়াই করেছেন। এমনকি এই অলিম্পিয়াডে অংশ নেওয়া তিন শিক্ষার্থী বর্তমানে বিশ্ববিখ্যাত হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন। ২০২০ সালে তাঁর কাজের স্বীকৃতি হিসেবে স্টারস শাইন ফর এভরিওয়ান সংস্থা তাঁকে বিশেষ সম্মাননা দেয়।
ডার্ক স্কাই বা অন্ধকার আকাশ রক্ষা
মনীষা শুধু বিজ্ঞানী নন, তিনি একজন দক্ষ আলোকচিত্রীও। নেপালের বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় তাঁর তোলা মহাকাশের ছবি নিয়মিত প্রকাশিত হয়। তিনি বর্তমান সময়ের বড় একটি সমস্যা আলোকদূষণ নিয়ে কাজ করছেন।
২০১৬ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ৮০ শতাংশ মানুষ শহর ও অবকাঠামোর কৃত্রিম আলোর কারণে রাতের আকাশের আসল সৌন্দর্য দেখতে পায় না। মনীষা তাদের সতর্ক করে জানান, আগামী ২০ বছরের মধ্যে পৃথিবী থেকে নক্ষত্ররাজি অদৃশ্য হয়ে যেতে পারে। তাই নেপালে ‘অ্যাস্ট্রো-ট্যুরিজম’ কিংবা জ্যোতি-পর্যটন বিকাশের মাধ্যমে আকাশ রক্ষার স্বপ্ন দেখেন মনীষা শ্রেষ্ঠা।
ভবিষ্যতের স্বপ্ন
মনীষার স্বপ্ন নেপালে একটি নিজস্ব মানমন্দির তৈরি করা, যা আন্তর্জাতিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য গবেষণাকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হবে। তিনি মনে করেন, নেপালের কাছে দামি যন্ত্রপাতি না থাকলেও বিশ্বের সবচেয়ে বড় ল্যাবরেটরি আছে। সেটা হলো, মাথার ওপরের অন্ধকার আকাশ। তিনি বিশ্বাস করেন, আকাশ আমাদের সবাইকে এক সুতোয় বাঁধে। তিনি চান তাঁর জীবনের গল্প শুনে অন্য মেয়েরাও যেন বিজ্ঞানের কঠিন পথে পা বাড়াতে পিছপা না হয়।
সূত্র: এশিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক, দ্য কাঠমান্ডু পোস্ট

পোখারা শহরের এক বাড়ির ছাদ। রাতের নিস্তব্ধতায় আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে এক কিশোরী। সঙ্গে আছেন তার মা, যিনি পেশায় একজন শিক্ষক। কিশোরী অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে, ‘মা, ওই দুটো নক্ষত্র কি এখনই ধাক্কা খাবে?’ মা হেসে বুঝিয়ে দেন, ওরা একে অপরের থেকে কত দূরে কিংবা ওই যে ছুটন্ত বিন্দুটি দেখছ, ওটা আসলে নক্ষত্র নয়—একটি স্যাটেলাইট। সেই কৌতূহলী কিশোরীটি আজকের মনীষা শ্রেষ্ঠা—নেপালের সফল জ্যোতির্বিজ্ঞানী, জ্যোতিঃপদার্থবিদ এবং দেশটির প্রথম নারী অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার। তিনি এখন হাই-এনার্জি অ্যাস্ট্রোফিজিকস বিষয়ে পিএইচডি করছেন।
চ্যালেঞ্জের সঙ্গে শুরু যে লড়াই
মনীষার বিজ্ঞানের পথে আসাটা ছিল অনেকটা জেদের বশে। তিনি যে কলেজে পড়তেন, সেখানে পদার্থবিজ্ঞান ক্লাসে ছিল ১২০ জন শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে মাত্র পাঁচ-ছয়জন মেয়ে। অথচ জীববিজ্ঞানের চিত্রটা ছিল ঠিক উল্টো। বন্ধুকে এর কারণ জিজ্ঞেস করলে উত্তর পান, মেয়েদের জন্য পদার্থবিজ্ঞানের চেয়ে জীববিজ্ঞান অনেক সহজ। মনীষা বিষয়টিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিলেন। তিনি ভাবলেন, তাঁকে পদার্থবিজ্ঞানই পড়তে হবে।
ক্লাসে ঢোকার পর শুরু হলো অন্য এক লড়াই। পুরুষশাসিত সেই পরিবেশে অনেক সময় মেয়েদের বসার জন্য কোনো আসনই দেওয়া হতো না; তাদের দাঁড়িয়ে ক্লাস করতে হতো। এমনকি ল্যাবরেটরিতে কাজ করার সময়ও তরুণেরা কাজ করত, আর মেয়েদের দূর থেকে দাঁড়িয়ে দেখার অনুমতি ছিল। মাস্টার্স পর্যায়ে এসে এই সংকট আরও বাড়ে। পড়াশোনার পদ্ধতি ছিল শুধু নোট নেওয়া আর মুখস্থ করা। একপর্যায়ে হতাশ হয়ে মনীষা ডিগ্রি শেষ না করেই পড়াশোনা ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
নেপাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির যাত্রা
২০১৩ সালে মনীষা নেপাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটিতে (এনএএসও) প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর হিসেবে যোগ দেন। তখন সংগঠনটির কোনো অফিস ছিল না, ছিল খুব সীমিত সুবিধা। মনীষা ও তাঁর দল মিলে বছরের পর বছর পরিশ্রম করে সেটিকে আন্তর্জাতিক উচ্চতায় নিয়ে যান।
সম্প্রতি এই সোসাইটি ইন্টারন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিয়নের সদস্যপদ পেয়েছে, যা নেপালের ১০০ বছরের ইতিহাসে প্রথম।
আজ এনএএসও শিক্ষা, গবেষণা ও প্রচার—তিনটি স্তম্ভের ওপর দাঁড়িয়ে কাজ করছে। প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে এবং শিক্ষার্থীদের জন্য সৃজনশীল চিন্তার উন্মুক্ত প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে। মনীষার দল সারা দেশে সংখ্যালঘু গোষ্ঠী এবং শিক্ষার্থীদের হাতে টেলিস্কোপ ও বই তুলে দিচ্ছে। যাতে তারাও বিজ্ঞানের আলোয় আলোকিত হতে পারে।
অলিম্পিয়াড ও বৈশ্বিক সাফল্য
মনীষা শ্রেষ্ঠা নেপালের ন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমি অলিম্পিয়াডের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। তিনি নেপালি শিক্ষার্থীদের আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার জন্য প্রস্তুত করেন। তাঁর হাত ধরে অনেক শিক্ষার্থী ফ্রান্স, আমেরিকা ও সুইজারল্যান্ডে আন্তর্জাতিক মঞ্চে লড়াই করেছেন। এমনকি এই অলিম্পিয়াডে অংশ নেওয়া তিন শিক্ষার্থী বর্তমানে বিশ্ববিখ্যাত হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন। ২০২০ সালে তাঁর কাজের স্বীকৃতি হিসেবে স্টারস শাইন ফর এভরিওয়ান সংস্থা তাঁকে বিশেষ সম্মাননা দেয়।
ডার্ক স্কাই বা অন্ধকার আকাশ রক্ষা
মনীষা শুধু বিজ্ঞানী নন, তিনি একজন দক্ষ আলোকচিত্রীও। নেপালের বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় তাঁর তোলা মহাকাশের ছবি নিয়মিত প্রকাশিত হয়। তিনি বর্তমান সময়ের বড় একটি সমস্যা আলোকদূষণ নিয়ে কাজ করছেন।
২০১৬ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ৮০ শতাংশ মানুষ শহর ও অবকাঠামোর কৃত্রিম আলোর কারণে রাতের আকাশের আসল সৌন্দর্য দেখতে পায় না। মনীষা তাদের সতর্ক করে জানান, আগামী ২০ বছরের মধ্যে পৃথিবী থেকে নক্ষত্ররাজি অদৃশ্য হয়ে যেতে পারে। তাই নেপালে ‘অ্যাস্ট্রো-ট্যুরিজম’ কিংবা জ্যোতি-পর্যটন বিকাশের মাধ্যমে আকাশ রক্ষার স্বপ্ন দেখেন মনীষা শ্রেষ্ঠা।
ভবিষ্যতের স্বপ্ন
মনীষার স্বপ্ন নেপালে একটি নিজস্ব মানমন্দির তৈরি করা, যা আন্তর্জাতিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য গবেষণাকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হবে। তিনি মনে করেন, নেপালের কাছে দামি যন্ত্রপাতি না থাকলেও বিশ্বের সবচেয়ে বড় ল্যাবরেটরি আছে। সেটা হলো, মাথার ওপরের অন্ধকার আকাশ। তিনি বিশ্বাস করেন, আকাশ আমাদের সবাইকে এক সুতোয় বাঁধে। তিনি চান তাঁর জীবনের গল্প শুনে অন্য মেয়েরাও যেন বিজ্ঞানের কঠিন পথে পা বাড়াতে পিছপা না হয়।
সূত্র: এশিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক, দ্য কাঠমান্ডু পোস্ট

শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনের পতনের কিছুদিন পর, গত বছরের ২৯ আগস্ট রাজধানীর শ্যামলী স্কয়ারে প্রকাশ্যে মারধরের শিকার হন কয়েকজন নারী যৌনকর্মী। হামলাকারী এক যুবক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেই সেই ঘটনার ভিডিও প্রচার করেন। ঘটনাটি ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিলেও হামলাকারীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
০৮ মার্চ ২০২৫
খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের প্রধান উৎসব বড়দিনের কথা মনে হলে কিছু জনপ্রিয় গানের কথা সামনে আসে। জানেন কি, হিমেল হাওয়ার পরশ আর আলোকসজ্জার রোশনাইয়ের মধ্যে যে সুরগুলো আমাদের কানে বাজে, সেগুলো সৃষ্টির নেপথ্যে রয়েছে একদল নারী। তাঁদের লেখা, কণ্ঠ আর সুরের জাদুকরী মিশেলে বড়দিন পেয়েছে এক অনন্য রূপ।...
১ দিন আগে
ঢাকা শহরে শুধু নয়, পুরো দেশে নারীরা ক্ষুদ্র থেকে মাঝারি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সরব অবদান রেখে চলেছেন। আমরা সেই সব নারীকে ‘উদ্যোক্তা’ হিসেবে দেখছি। এই নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বছরজুড়ে অনুষ্ঠিত হতো বিভিন্ন ধরনের মেলা, সেটাও শুধু ঢাকায় নয়; বরং পুরো দেশে। সেই মেলাগুলো শুধু পণ্য বিক্রির জায়গা নয়...
৩ দিন আগে
ব্যর্থতা কখনো কখনো সাফল্যের মোড়কে ফিরে আসে। রোজাইয়া রাব্বি রোজের গল্পটা তেমনই। কম্পিউটার সায়েন্সে ডিপ্লোমা শেষ করে ২০১৭ সালে ভর্তি হন গ্রিন ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশে, কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে। তবে বাবার অসুস্থতার কারণে বেশি দিন পড়াশোনা করতে পারেননি। লেখাপড়া ছেড়ে তাঁকে বসতে হয় বিয়ের...
৩ দিন আগে