Ajker Patrika

আন্তর্জাতিক নারী দিবস আজ

নিশানায় নারী, মামলা করতে ভয়

  • সাত মাসে সহিংসতা ও হয়রানির শিকার ১,২৫৫ নারী।
  • যৌনকর্মী থেকে শুরু, আক্রান্ত সব শ্রেণির নারী।
  • মামলার বদলে মীমাংসায় আগ্রহী পুলিশ-প্রশাসন।
অর্চি হক, ঢাকা 
আপডেট : ০৮ মার্চ ২০২৫, ১৩: ৪২
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনের পতনের কিছুদিন পর, গত বছরের ২৯ আগস্ট রাজধানীর শ্যামলী স্কয়ারে প্রকাশ্যে মারধরের শিকার হন কয়েকজন নারী যৌনকর্মী। হামলাকারী এক যুবক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেই সেই ঘটনার ভিডিও প্রচার করেন। ঘটনাটি ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিলেও হামলাকারীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এরপর পেরিয়ে গেছে ছয় মাস। অব্যাহতভাবে নাজুক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির মধ্যে এখনো প্রায় সব শ্রেণির নারীরাই হয়রানি, হুমকি ও সহিংসতার শিকার হচ্ছেন। এতে নারীদের মধ্যে ভীতি ও নিরাপত্তাহীনতার বোধ সৃষ্টি হচ্ছে বলে মনে করছেন মানবাধিকারকর্মীরা। তাঁরা বলছেন, সরকার কঠোর ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।

হয়রানি বা সহিংসতার শিকার নারীরা নানা কারণে মামলা করতে ভয় পান। সে কারণে এ ধরনের অনেক ঘটনা আড়ালে থেকে যায়। গত ২৭ আগস্ট থেকে ৫ মার্চ পর্যন্ত নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ও হয়রানির আলোচিত ১০টি ঘটনার মধ্যে কেবল দুটির ক্ষেত্রে মামলা হয়েছে। বাকিগুলোর কয়েকটিতে পুলিশ ও প্রশাসন দুই পক্ষকে ডেকে আপস মীমাংসা করেছে।

সর্বশেষ গত ৫ মার্চ হয়রানির শিকার হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন নারী শিক্ষার্থী। তাঁর অভিযোগ, শালীনভাবে ওড়নাসহ সালোয়ার-কামিজ পরা থাকার পরও তাঁকে বেপর্দা বলে অভিযুক্ত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী এক যুবক। এ ঘটনায় মামলা করার পর অভিযুক্ত গ্রেপ্তার হন। তবে ‘তৌহিদি জনতা’ পরিচয় দেওয়া কিছু লোক তাঁকে ছাড়িয়ে নিতে রাতভর থানার সামনে অবস্থান নেন। পরদিনই অভিযুক্ত জামিনে মুক্ত হন। এরপর মামলা তুলে নিতে থানায় আবেদন করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। তিনি জানান, হত্যা-ধর্ষণের হুমকি পাওয়াই এর কারণ। ওই শিক্ষার্থী অভিযোগ করেছেন, পুলিশ তাঁর ব্যক্তিগত তথ্য ‘মব’ (উচ্ছৃঙ্খল জনতা)-এর হাতে তুলে দিয়েছে, যা তাঁর নিরাপত্তার জন্য হুমকি।

নারীদের ফুটবল ম্যাচ ঘিরেও হয়েছে সহিংসতা। উগ্রপন্থী গোষ্ঠীর বাধার কারণে গত ২৮ জানুয়ারি থেকে ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দিনাজপুর, জয়পুরহাট ও রংপুরে নারীদের তিনটি ফুটবল ম্যাচ স্থগিত হয়ে যায়। দিনাজপুরের হাকিমপুরে ম্যাচ ঘিরে হামলায় কমপক্ষে চারজন আহত হন। জয়পুরহাটে স্থানীয় মাদ্রাসাশিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা ম্যাচের আগে হামলা চালিয়ে মাঠের বেষ্টনী ভেঙে ফেলেন। রংপুরের তারাগঞ্জে কট্টরপন্থী ধর্মীয় গোষ্ঠীর বাধার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৪৪ ধারা জারি হয়। এই তিনটি ঘটনার একটিতেও মামলা হয়নি।

সহিংসতার পরেও মামলা না হওয়া প্রসঙ্গে জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুল ওয়াহাব বলেন, ‘এটা ভুল-বোঝাবুঝি থেকে ঘটেছিল। যারা ম্যাচে বাধা দিয়েছিল, তারা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে ক্ষমা চেয়েছে।’

সাম্প্রতিক কয়েক মাসে ধর্মীয় গোষ্ঠীর হয়রানির শিকার হয়েছেন কয়েকজন নারী অভিনয়শিল্পীও। গত ২ নভেম্বর চট্টগ্রামে মেহজাবীন চৌধুরী, ২৫ জানুয়ারি টাঙ্গাইলে পরীমণি এবং ২৯ জানুয়ারি ঢাকার কামরাঙ্গীরচরে অপু বিশ্বাসকে ‘তৌহিদি জনতা’র বাধার মুখে অনুষ্ঠান বাতিল করতে হয়। অনুষ্ঠানগুলো ছিল নিছক সাধারণ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের উদ্বোধন।

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে চলন্ত বাসে ডাকাতির সময় শ্লীলতাহানির শিকার হন একাধিক নারী যাত্রী।

আজকের পত্রিকাকে বিভিন্ন বয়স-শ্রেণি ও পেশার বেশ কয়েকজন নারী জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক এসব ঘটনার কারণে তাঁরা এখন সন্ধ্যার পর বাড়ির বাইরে যেতে ভয় পাচ্ছেন।

এমন প্রেক্ষাপটে সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও আজ পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক নারী দিবস। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘অধিকার, সমতা, ক্ষমতায়ন: নারী ও কন্যার উন্নয়ন’।

নারী আন্দোলন, মানবাধিকার ও উন্নয়নকর্মীদের পাশাপাশি আইনজীবীরা নারীর প্রতি সহিংসতা ও হয়রানি রোধে সামাজিক ও রাজনৈতিক নেতাদের এবং সরকারকে সক্রিয় হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সারা হোসেন বলেন, ‘মাত্র কয়েক মাস আগে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নারীরা সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু এখন নারীদের সামাজিক ও দৈনন্দিন জীবন, বিশেষ করে রাস্তাঘাটে নানান ধরনের হুমকি এবং বাধার সামনে পড়তে হচ্ছে। এভাবে নারীদেরকে জনজীবন থেকে বের করার চেষ্টা যারা করছে, তাদেরকে সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে প্রতিহত করা উচিত। একই সঙ্গে প্রাতিষ্ঠানিকভাবেও ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম বলেন, ‘নারীদের স্বাভাবিক চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। এটা নিশ্চিতভাবেই নারীর সমতা, ক্ষমতায়ন ও অগ্রগতির পথে বড় বাধা। সরকার এসব ঘটনাকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে না। ফৌজদারি অপরাধেও ক্ষমা চেয়ে বা আপস করে মীমাংসা হচ্ছে। এটা অগ্রহণযোগ্য।’

মহিলা পরিষদ বলছে, গত আগস্ট থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সাত মাসে ১ হাজার ২৫৫ জন নারী নানাভাবে সহিংসতার শিকার হয়েছে বলে পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। তবে প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি মনে করা হয়। কারণ, ৫ আগস্টের পর দীর্ঘ সময় থানার কার্যক্রম বন্ধ ছিল। এ ছাড়া অসংখ্য খবরের ভিড়ে সংবাদপত্রে নারীর প্রতি সহিংসতার সব খবর জায়গা পায়নি।

বেসরকারি সংগঠন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের (এমজেএফ) নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেন, ‘কয়েক মাস ধরে আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে নাগরিকদের, বিশেষ করে নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বারবার অনুরোধ জানিয়েছি। দুর্ভাগ্যবশত, আমরা কোনো উল্লেখযোগ্য উন্নতি দেখিনি; বরং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। অনেক নারী শ্লীলতাহানির ভয়ে বাড়ি থেকে বের হতে ভয় পাচ্ছেন।’

জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেন, ‘যারা নারীদের হয়রানি করছে, মব চালাচ্ছে, হয় তারা সরকারের সমর্থন পাচ্ছে, অথবা সরকার পরোক্ষভাবে তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল। এগুলো কোনো ব্যক্তিগত ও পারিবারিক বিষয় নয় যে আপসের মাধ্যমে সমাধান করা যাবে।’

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দিলরুবা হক মিলি: বনরক্ষী এক নারীর গল্প

মুহাম্মদ শফিকুর রহমান 
দিলরুবা হক মিলি। ছবি: সংগৃহীত
দিলরুবা হক মিলি। ছবি: সংগৃহীত

কর্মসংস্থানে নারীদের অংশগ্রহণের হার বাড়লেও কিছু কিছু পেশা এখনো প্রচলিতভাবে নারীদের ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে। এমনই এক চ্যালেঞ্জিং পেশায় নিজের অবস্থান শক্ত করে নিয়েছেন পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার মেয়ে দিলরুবা হক মিলি। বাংলাদেশের প্রথম নারী বনরক্ষী তিনি।

এ পেশায় তাঁর পথচলা শুধু ব্যক্তিগত সাফল্যের গল্প নয়, বরং দেশের নারীদের জন্য এক অনন্য অনুপ্রেরণার উৎস।

প্রকৃতিপ্রেম থেকে স্বপ্নের শুরু

২০১৬ সাল মিলির জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া বছর। সে বছর বনরক্ষী হিসেবে যোগ দেন তিনি। তবে এই পেশায় প্রবেশের গল্প মোটেও সহজ বা পরিকল্পিত ছিল না। ছোটবেলা থেকে মিলির মধ্যে ছিল প্রকৃতি, গাছপালা আর বনের প্রতি একধরনের টান। বরিশালের মানুষ হিসেবে শৈশব থেকে তিনি দেখেছেন নদীর তীর, ঘন সবুজ গাছ আর প্রকৃতির অনাবিল সৌন্দর্য। পিরোজপুরের কাউখালীতে স্কুল ও কলেজ পর্বের পড়াশোনা শেষ করে তিনি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেন।

আকস্মিক সুযোগ

পড়াশোনা শেষ করার পর যখন স্থায়ী একটি চাকরির ভাবনা মাথায় ঘুরছিল, তখনই চোখে পড়ে বনরক্ষী পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি। প্রকৃতির সঙ্গে কাজ করার এক সুপ্ত আকাঙ্ক্ষা মিলিকে সেই পদে আবেদন করতে উৎসাহিত করে। যদিও তখনো তিনি জানতেন না, এই পদের ইতিহাসে তিনিই হবেন প্রথম নারী।

প্রশিক্ষণেই প্রথম বাধা

লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় মিলি সফলভাবে উত্তীর্ণ হন। তবে তাঁর জন্য আসল চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছিল প্রশিক্ষণপর্বে। রাজশাহীর পুলিশ একাডেমিতে প্রশিক্ষণ নিতে গিয়ে প্রথম প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হয় তাঁকে। গেটে দাঁড়িয়ে থাকা নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁকে ক্যাম্পাসে ঢুকতে দিতে চাইছিলেন না। তাঁদের ধারণা ছিল, ‘মেয়েরা এ ধরনের চাকরি করে না’। কাগজপত্র দেখানোর পর তাঁরা অবাক হন এবং তাঁকে প্রবেশের অনুমতি দেন।

শারীরিক ও মানসিক সংগ্রাম

প্রশিক্ষণপর্বে শুরু হয় বাস্তব লড়াই। শারীরিক, মানসিক ও পরিবেশগত প্রতিটি ধাপেই তাঁকে প্রতিযোগিতা করতে হয়েছে পুরুষ সহকর্মীদের সঙ্গে। মিলি বলেন, ‘প্রথম দিকে নিজের মধ্যেও ভয় ছিল, পারব তো? তারপর বুঝলাম, প্রতিকূলতাকে পাত্তা দিলে চলবে না। একবার সাহস নিয়ে এগিয়ে গেলে অনেক কিছুই সম্ভব।’

প্রশিক্ষণপর্বে দৃঢ়তা, পরিশ্রম এবং অদম্য ইচ্ছাশক্তি তাঁকে সফলতার দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। পুরুষ সহপ্রশিক্ষণার্থীরা শুরুতে অবাক হলেও পরে তাঁকে সহায়তা করতে শুরু করেন।

আজকের এই অবস্থানে আসতে মিলিকে পাড়ি দিতে হয়েছে বহু কণ্টকাকীর্ণ পথ। কিন্তু ধৈর্য, নিষ্ঠা ও আত্মবিশ্বাস তাঁকে দেশের প্রথম নারী বনরক্ষী হিসেবে ইতিহাসে জায়গা করে দিয়েছে।

মিরপুর উদ্ভিদ উদ্যানে দায়িত্ব

২০১৬ সালে ঢাকায় বনরক্ষী হিসেবে যোগ দেওয়ার পর থেকে কর্মস্থল তাঁর দ্বিতীয়

ঘর হয়ে ওঠে। বর্তমানে তিনি কর্মরত রয়েছেন মিরপুরের জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানে; যা একদিকে দেশের সবচেয়ে বড় উদ্ভিদ সংরক্ষণাগার, অন্যদিকে ফুল, গাছ ও বিরল উদ্ভিদের দুর্লভ সংগ্রহশালা। তিনি বলেন, ‘উদ্ভিদ উদ্যানটা আমার কাছে বড় একটা জাদুঘরের মতো। প্রতিদিন এই উদ্ভিদ উদ্যানে দায়িত্ব পালন করতে এসে প্রকৃতির খুব কাছাকাছি থাকতে পারি, এটাই আমার বড় পাওয়া।’

নিরাপত্তা নিশ্চিতের কঠিন কাজ

একজন বনরক্ষীর দায়িত্ব যেমন কঠিন, তেমনি চ্যালেঞ্জিং। সকাল থেকে পুরো উদ্যানে ঘুরে ঘুরে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হয়। একসময় উদ্যানে ছিল অপরাধীদের আনাগোনা—ছিনতাই, হয়রানির মতো ঘটনা ঘটত প্রতিদিন। মিলি এবং তাঁর সহকর্মীরা দিনরাত পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে পরিবেশটা নিরাপদ করে তোলেন। ধীরে ধীরে দর্শনার্থীদের আস্থা ফিরে আসে, সংখ্যা বাড়ে; সেই সঙ্গে রাজস্বও।

সহকর্মীদের স্বীকৃতি

এ ধরনের কাজ নারীদের অনুকূলে নয় বলে সবার ধারণা। কিন্তু মিলি সেসবে কখনো গুরুত্ব দেননি; বরং নিজের কর্মদক্ষতা দিয়ে সবার মন জয় করেছেন। তাঁর সহকর্মী আমিনুল্লাহ খন্দকার বলেন, ‘মিলি আমাদের একমাত্র নারী বনরক্ষী। কিন্তু সাহস আর নেতৃত্বদানে তিনি কারও চেয়ে কম নন। যেকোনো কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন একদম নির্ভয়ে।’

সহকর্মী এখলাসুর রহমান ও মামুনুর রশীদেরাও মিলির আন্তরিকতা, সাহস ও দায়িত্ববোধের প্রশংসা করেন।

সমতার দৃঢ় বিশ্বাস

আজকের এই অবস্থানে আসতে মিলিকে পাড়ি দিতে হয়েছে বহু কণ্টকাকীর্ণ পথ। কিন্তু ধৈর্য, নিষ্ঠা ও আত্মবিশ্বাস তাঁকে দেশের প্রথম নারী বনরক্ষী হিসেবে ইতিহাসে জায়গা করে দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর সাফল্যের গল্প ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে লাখো মানুষের ভালোবাসা ও অভিনন্দন পেয়েছেন তিনি। দিলরুবা হক মিলি বিশ্বাস করেন, নারী ও পুরুষ সমান। মানুষের সামর্থ্যই আসল। তিনি বলেন, ‘যে কাজটি আনন্দ নিয়ে করা যায়, সেটিই করা উচিত। কাজের ক্ষেত্রে লৈঙ্গিকভেদে কোনো পার্থক্য হওয়া উচিত নয়।’

সাহসী নারীদের হাত ধরে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে—এমনটাই আশা করেন দিলরুবা হক মিলি। তিনি এখন কেবল একজন বনরক্ষী নন; সাহসেরও প্রতীক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বেগম রোকেয়া

অতীতের আলো, বর্তমানের অন্ধকার

নুসরাত রুষা
বেগম রোকেয়া। ছবি: সংগৃহীত
বেগম রোকেয়া। ছবি: সংগৃহীত

বাংলার নারী জাগরণের আকাশে উজ্জ্বল নক্ষত্রের নাম বেগম রোকেয়া। তিনি ছিলেন আন্দোলনকারিণী, পথপ্রদর্শিকা আর সাহসিকার আরেক নাম। যে যুগে নারীর মুখ উঁচু করে হাঁটা পর্যন্ত ‘অপমানজনক’ ভাবা হতো, সে সময় তিনি নারীর শিক্ষা, স্বাধীনতা, মর্যাদা এবং অধিকারের কথা বলে গেছেন। এখনো তাঁর লেখা পড়লে মনে হয়—এ যেন আজকের সমাজেরই কথা।

বেগম রোকেয়ার বড় শক্তি ছিল তাঁর মন। আর তাঁর বড় সহায় ছিলেন স্বামী সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেন। উনিশ শতকের শেষে—একজন পুরুষের পক্ষে নিজের স্ত্রীকে লেখালেখিতে উৎসাহিত করা, ইংরেজি শেখানো কিংবা সামাজিক কাজে যুক্ত থাকার সমর্থন দেওয়া ছিল বিরল ঘটনা। বেগম রোকেয়ার ভাষায়, ‘আমার স্বামী আমাকে ‘সহধর্মিণী’ হিসেবে বিবেচনা করতেন—দাসী হিসেবে নয়।’ এই একটি বাক্যে বোঝা যায়, বেগম রোকেয়ার পথ কতটা আলোয় ভরা ছিল, আর কতটা সম্মানের ওপর দাঁড়ানো ছিল।

হাসির বিষয়, আমরা যেটিকে ‘মডার্ন’ বলে গর্ব করি, সেই আধুনিক যুগে এসে সম্পর্কের ভিত্তি যেন সংকুচিত হয়ে গেছে। ডিগ্রি, চাকরি, প্রযুক্তিজ্ঞানসম্পন্ন দেশের হাজারো তরুণের মানসিকতা এখনো প্রাচীন। তাঁদের স্ত্রী পড়াশোনা করতে চাইলে বলেন, ‘তোমার এত পড়াশোনার কী দরকার?’ চাকরি করতে চাওয়ার বেলাতেও তাঁদের অভিব্যক্তি একই থাকে। মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট, সোশ্যাল মিডিয়া—সবই আছে, কিন্তু নারীর স্বাধীনতায় সমর্থন দেওয়ার যে মানবিকতা, তা নেই।

যে যুগে বেগম রোকেয়া বেঁচে ছিলেন, সে যুগ ছিল নারীদের জন্য অন্ধকার। সেই সময় দাঁড়িয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘শিক্ষাহীনতা হলো নারীর মূল শত্রু।’ তিনি বিশ্বাস করতেন, জ্ঞানই পারে নারীকে মুক্ত করতে। তাই সাখাওয়াত হোসেনের মৃত্যুর পর তিনি নিজের জমানো টাকা দিয়ে খুললেন সাখাওয়াত মেমোরিয়াল স্কুল। মেয়েদের পড়াশোনা শেখানোর জন্য তিনি গ্রামে গ্রামে গিয়ে অভিভাবকদের রাজি করাতেন। যাঁরা বলতেন, ‘মেয়েরা লেখাপড়া করলে নষ্ট হয়ে যাবে’, তাঁদের মুখের ওপর বেগম রোকেয়া বলতেন, ‘মেয়ে নষ্ট হয় অজ্ঞতায়, শিক্ষায় নয়।’

কিন্তু এখন? নারীরা যে যুগে মহাকাশে যাচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে তো বটেই, পড়াচ্ছেও, নেতৃত্ব দিচ্ছে বড় বড় প্রতিষ্ঠানে, সে যুগেও একদল মানুষ বেগম রোকেয়ার নামে বেষ্টনী টেনে দেয়। তাদের কাছে রোকেয়া মানে ‘ধর্মদ্রোহী’, ‘নারীবাদের বিষ’। সামাজিক অগ্রগতির দাবিতে মুখ খুললেই তারা তেড়ে আসে। যেন নারীর উন্নতি মানেই সমাজের ভাঙন, আর নারীর স্বাধীনতা মানেই পুরুষের ক্ষতি।

বস্তুত, আমাদের সামাজিক মানসিকতার এই পশ্চাৎগতি গভীরভাবে চিন্তার বিষয়। বেগম রোকেয়া যখন নারীর শিক্ষার দাবি করেছিলেন, তখন তা ছিল মাত্র কিছু মানুষের রাগের বিষয়; এখন, শত বছর পরে, সেই রাগই যেন আরও তীব্র হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় নারীর স্বাধীনতা নিয়ে কথা বললেই মন্তব্যের ঘরে নোংরা শব্দের বন্যা। যেন নারী মানুষ নয়, তার ইচ্ছা, অনুভূতি বা স্বপ্ন থাকার কোনো অধিকার নেই।

বেগম রোকেয়া যদি আজ বেঁচে থাকতেন, তবে নিশ্চয় বিস্মিত হতেন। কারণ, তিনি ভেবেছিলেন—শিক্ষা বাড়বে, সমাজ এগোবে, মানুষ পরিণত হবে আরও উন্নত চিন্তার স্তরে। কিন্তু কী ভীষণ বিপরীত ছবি আমরা দেখি। বেগম রোকেয়া যে সমাজকে আলোর দিকে এগিয়ে দিয়েছিলেন, আমরা কি আজ সেটিকে পিছিয়ে দিচ্ছি?

বেগম রোকেয়া আমাদের শেখান, নারীর অগ্রগতি কোনো ‘ফ্যাশন’ নয়, কোনো ‘বিদ্রোহ’ নয়—এটা সমাজের অগ্রগতির পূর্বশর্ত। পুরুষের সমর্থন ছাড়া নারী এগোতে পারে না, আর নারীকে দমিয়ে রেখে পুরুষও এগোতে পারে না।

বেগম রোকেয়া একা যুদ্ধ করে দেখিয়েছিলেন—একজন আলোকিত পুরুষ পাশে থাকলে নারী ভেঙে দিতে পারে অজস্র সীমাবদ্ধতা। সেই সমর্থন, সেই মানবিকতা, আমাদের আজ বেশি দরকার।

লেখক: অধিকারকর্মী

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জন্মনিবন্ধন করতে বাবার এনআইডি বা তথ্য বাধ্যতামূলক নয়

ফিচার ডেস্ক
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ৪০
জন্মনিবন্ধন করতে বাবার এনআইডি বা তথ্য বাধ্যতামূলক নয়

প্রশ্ন: সন্তানের জন্মনিবন্ধন দরকার স্কুলে ভর্তি করানোর জন্য। কিন্তু তার বাবার সঙ্গে ডিভোর্স হয়ে গেছে। এই অবস্থায় জন্মনিবন্ধন করতে গেলে শুধু মায়ের আইডি কার্ড বা জন্মনিবন্ধন দিয়ে কি সন্তানের জন্মনিবন্ধন করা যাবে।

শবনম মনিরা, কুড়িগ্রাম

উত্তর: বাংলাদেশে সন্তানের জন্মনিবন্ধন মায়ের তথ্য দিয়েই করা সম্ভব, বিশেষ করে যখন বাবা কোনো নথি দিতে অনিচ্ছুক বা যোগাযোগের বাইরে থাকেন।

জন্মনিবন্ধন আইন ও স্থানীয় সরকারের নিয়ম অনুযায়ী, সন্তান যাঁর তত্ত্বাবধানে থাকে অথবা যিনি ‘অভিভাবক’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন; তিনি জন্মনিবন্ধনের আবেদন করতে পারেন। বাবা অনুপস্থিত বা সহযোগিতা করতে অস্বীকৃতি জানালে মায়ের তথ্য দিয়েই জন্মনিবন্ধন সম্পন্ন করা যায়। এ ক্ষেত্রে বাবার তথ্য ‘আননোন’ বা ‘নট অ্যাপ্লিকেবল’ হিসেবে দেখানো যেতে পারে। এটি ইউনিয়ন পরিষদ বা পৌরসভা কিংবা সিটি করপোরেশনের জন্মনিবন্ধন কর্মকর্তার এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে।

বাবা সহযোগিতা না করলে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। আইনগতভাবে মায়ের তথ্য দিয়েই সন্তানের জন্মনিবন্ধন করা যায়। মায়ের জাতীয় পরিচয়পত্র ও সন্তানের জন্মের প্রমাণ থাকলেই নিবন্ধন সম্পন্ন হবে।

আপনার যেসব নথি লাগবে

  • মায়ের জাতীয় পরিচয়পত্র বা এনআইডি
  • সন্তানের জন্মসংক্রান্ত প্রমাণ
  • হাসপাতালে জন্ম হলে জন্মসনদ বা ডেলিভারি স্লিপ
  • বাড়িতে জন্ম হলে স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার বা কাউন্সিলরের দেওয়া প্রত্যয়নপত্র
  • মায়ের আবেদন ফরম
  • প্রয়োজনে ডিভোর্স-সংক্রান্ত কাগজ। এটি অনেক ক্ষেত্রে অপ্রয়োজনীয়। কিন্তু জটিলতা এড়ানোর জন্য সঙ্গে রাখলে ভালো।

জন্মনিবন্ধন করতে বাবার এনআইডি বা তথ্য বাধ্যতামূলক নয়, বিশেষ করে যখন মায়ের কাছে তা পাওয়া সম্ভব নয়। ভবিষ্যতে স্কুলে ভর্তি, চিকিৎসা, পাসপোর্ট ইত্যাদি করাতে সাধারণত কোনো সমস্যা হয় না। কারণ, সন্তানের অভিভাবক হিসেবে মা-ই স্বীকৃত। নিবন্ধনের সময় আপনি উল্লেখ করতে পারেন, বাবা অনুপস্থিত বা যোগাযোগের অযোগ্য। কর্মকর্তারা বিষয়টি বুঝে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেবেন।

জন্মনিবন্ধন কোথায় করাবেন

আপনার স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ বা পৌরসভা কিংবা সিটি করপোরেশনের জন্মনিবন্ধন অফিসে গিয়ে সরাসরি আবেদন করা যায়। অথবা অনলাইনেও আবেদন করা যায় এই ঠিকানায়: bdris.gov.bd

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নারী আন্তর্জাতিক পেশাদার বক্সিংয়ে হিজাব, নিরাপত্তা নাকি প্রথা

ফিচার ডেস্ক
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

বার্লিনের বসতঘরে সেদিন এক অন্য রকম পরিবেশ। ১৩ বছরের কিশোরী জেইনা নাসার বসেছে মা-বাবার মুখোমুখি। তার একটাই দাবি বা অনুরোধ—বক্সিং করতে দিতে হবে। না, তর্ক নয়। সেদিন নাসার তার অভিভাবককে বুঝিয়েছিল, বক্সিং স্কুলে তার মনোযোগ বাড়াবে, সে কেবল মেয়েদের জিমে যাবে আর খেলাটা আসলে সম্মান ও শৃঙ্খলার নামান্তর। কথা শুনে মা-বাবা মুগ্ধ হলেন, রাজিও হয়ে গেলেন। কিন্তু জেইনা জানত, এই রাজি করানোটা ছিল তার জীবনের সবচেয়ে সহজ কাজ। খেলে যাওয়াটাই বরং কঠিন।

ইউটিউবে নারী মুষ্টিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণের ভিডিও দেখেই তার প্রতি এক তীব্র আকর্ষণ জন্মেছিল জার্মানিতে জন্ম নেওয়া লেবানিজ বংশোদ্ভূত এই কিশোরীর। প্যাডের ওপর ঘুষির শব্দ, গতি আর প্রতিটি চালের মধ্যে লুকিয়ে থাকা শক্তি তাকে টানত। ২৭ বছর বয়সী জেইনা বলেন, ‘আমি ওটা দেখতাম আর দেখতাম। আমার ভেতরে এক বোধ জন্মাল, এটাই আমি চাই।’

মুসলিম হিসেবে হিজাব ছিল জেইনা নাসারের পরিচয়ের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। কিন্তু স্থানীয় জিমে যোগ দেওয়ার পর তিনি বুঝলেন, তাঁর আসল লড়াইটা অপেক্ষা করছে খেলার নিয়মের জালে। সে সময় জাতীয় কিংবা আন্তর্জাতিক কোনো নিয়মেই প্রতিযোগিতার সময় হিজাব পরে অংশ নেওয়ার অনুমতি ছিল না। বিবিসিকে জেইনা বলেন, ‘মানুষজন আমাকে স্পষ্ট বলল, হয় হিজাব ছাড়ো, নয়তো খেলা। আমি বুঝতে পারতাম না কেন আমাকে একটিকে বেছে নিতে হবে? আমি তো কাউকে আঘাত করছি না। আমি শুধু বক্সিং করতে চাই।’ এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর তাগিদই তাঁর জীবন আর ক্যারিয়ারকে নতুন দিশা দিল।

সাহস আর জেদ ছিল জেইনার বড় অস্ত্র। মাত্র ১৪ বছর বয়সেই জার্মান অপেশাদার বক্সিংয়ের নিয়ম বদলে দিতে সমর্থ হলো সে। ফলে এখন একজন নারী মুষ্টিযোদ্ধা লম্বা হাতা এবং হেড স্কার্ফ পরে রিংয়ে নামতে পারেন। তবে প্রথমবার রিংয়ে নামার সময় অ্যাড্রেনালিনে শরীর কাঁপলেও কিশোরী জেইনা অনুভব করে অজস্র মানুষের কৌতূহলী দৃষ্টি।

সেই বয়সে জেইনা কেবল পারফরম্যান্সে মনোযোগ দিতে চাইল। রিংয়ের পারদর্শিতা ধীরে ধীরে সে মনোভাবে পরিবর্তন শুরু হলো। পরের ধাপে জেইনা জিতে নিলেন একাধিক বার্লিন ও জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ। একই সঙ্গে নিজের বিশ্বাসের প্রতিও থাকেন অবিচল।

যখন আন্তর্জাতিক বক্সিং অ্যাসোসিয়েশন (আইবিএ) ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য জেইনাকে আমন্ত্রণ জানাল, তখন আবার বাধা। আন্তর্জাতিক স্তরে হিজাব তখনো নিষিদ্ধ।

তাই ১৯ বছর বয়সে জেইনা বৈশ্বিক মঞ্চে এই নিয়ম বদলের জন্য প্রচার শুরু করলেন। তাঁর অক্লান্ত সংগ্রামের ফল আসে ২০১৯ সালে। আইবিএ হিজাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়। বর্তমানে অলিম্পিক বক্সিং পরিচালনাকারী ওয়ার্ল্ড বক্সিংও হিজাবসহ পুরো শরীর ঢাকা পোশাকের অনুমতি দেয়। জেইনা নাসার একেই জীবনের সবচেয়ে বড় জয় বলে মনে করেন।

২০১৭ সালে নাইকি ব্র্যান্ড অ্যাথলেটদের জন্য যখন নতুন হিজাব বাজারে আনে, তখন জেইনা নাসার হয়ে ওঠেন তাদের প্রধান মুখ। কিন্তু পেশাদারির জগতে তাঁর পথ কি খুব সহজ ছিল?

অনেকে হিজাবের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। মাঝেমধ্যে রিংয়ে হিজাব খুলে যাওয়ার ঝুঁকি বা তার কারণে কোনো বাড়তি সুবিধা পাওয়ার বিতর্কও উঠেছিল। জার্মান বক্সিং ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট অলিভার উইটম্যান এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। জেইনা নাসার এর জবাবে তুলে ধরেন নিজের অভিজ্ঞতা। তিনি বলেন, ‘প্রায় ১০০টি অপেশাদার লড়াইয়ে এটি একবারের জন্যও সমস্যা সৃষ্টি করেনি’। এদিকে চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা জেইনার পক্ষেই দাঁড়ান।

জেইনা নাসারের পেশাদার অভিষেক হচ্ছে পাকিস্তানের লাহোরে। সেই মঞ্চে চার দিনের লড়াই হবে। ২০ হাজারের বেশি দর্শক সমাগম হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সূত্র: বিবিসি

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত