Ajker Patrika

গা ছমছম করা এক পুতুলের গল্প

ইশতিয়াক হাসান
আপডেট : ২০ মার্চ ২০২৩, ১২: ০০
গা ছমছম করা এক পুতুলের গল্প

একসময় সে ছিল এক শিশুর খেলার পুতুল। তখন থেকেই তাকে ঘিরে জন্ম নানা ভুতুড়ে ঘটনার। এখন এক জাদুঘরে বন্দী অবস্থায়ও তাকে বিবেচনা করেন অনেকেই পৃথিবীর সবচেয়ে ভুতুড়ে পুতুল হিসেবে। গল্পটা রবার্ট দ্য ডলের।

কাঠামোটির পরনে সেইলর স্যুট, ছোটরা যেগুলো পরে। ছোট্ট মুখটায় অবশ্য একটা বালকের সঙ্গে মিল আছে কমই। সেখানে আঁচড়ের মতো কিছু দাগ বা খাঁজ আছে। চোখ পুঁতির মতো, কালো। মুখে লেগে আছে অশুভ একটি হাসি। কোলে একটা খেলনা কুকুর। এই তো গেল চেহারা। মানুষ এর সম্পর্কে অনেক কিছুই বিশ্বাস করে, তবে সেগুলোর কোনোটাই স্বাভাবিক কিছু নয়। চলুন পাঠক, তাহলে প্রবেশ করা যাক রবার্টের গা ছমছম করা জগতে।

রবার্ট দ্য ডল নামে পরিচিত পুতুল রবার্টের বর্তমান বয়স ১১৯, বাসস্থান ফ্লোরিডার কি ওয়েস্টের ইস্ট মারটেল্লো জাদুঘরে। নতুন একটি বাক্সের মধ্যে তাকে রাখা হয়েছে। জাদুঘরের কিউরেটর করি কনভেরটিটেটা জানান, যিনি এটি দিয়েছেন তিনি রবার্টের ভক্ত। তবে জলীয় বাষ্প নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা এবং ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মি শুষে নেওয়া কাচসহ নতুন এ আস্তানা রবার্টের ওপর তেমন কোনো প্রভাব বিস্তার করেছে বলে মনে হয় না। কারণ, জাদুঘরে এখনো রবার্টের নানা অশুভ কীর্তিকলাপের অভিযোগ পাওয়া যায়।

১৯৯৪ সালে জাদুঘরে আসার আগে রবার্টের মালিক ছিলেন রবার্ট ইউজিন অট্টো নামের এক খামখেয়ালি শিল্পী ও কি ওয়েস্টের এক অভিজাত পরিবারের সদস্য। অট্টোদের বাড়িটি পরিচিত ‘আর্টিস্ট হাউস’ নামে। কেউ কেউ বলেন অট্টোর দাদা বালক বয়সের অট্টোকে পুতুলটি উপহার দেন। তবে বেশির ভাগ সূত্রের দাবি, অট্টোদের গৃহপরিচারিকা তাঁকে পুতুলটি দেন।

প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পরও পুতুলটি হাতছাড়া করেননি অট্টো। বলা চলে তাঁদের এ সম্পর্কটা মোটেই স্বাভাবিক ছিল না। সঙ্গে করে সব জায়গায় নিয়ে যেতেন পুতুলটাকে। ওটার সঙ্গে এমনভাবে কথা বলতেন যেন পুতুল নয়, এর জীবন আছে। 

রবার্টের এক সময়কার বাসস্থান আর্টিস্ট হাউসজাদুঘর কর্তৃপক্ষের অনুসন্ধানে বের হয়ে আসে পুতুলটি তৈরি করে স্টেইফ কোম্পানি। কোম্পানি সূত্রে জানা যায় রবার্টকে ঠিক পুতুল হিসেবে বিক্রির জন্য তৈরি করা হয়নি। সম্ভবত উইন্ডো ডিসপ্লের জন্য ভাঁড় হিসেবে তাকে তৈরি করা হয়। 

মজার ঘটনা হলো, রবার্টের গায়ে চাপানো কোটটা প্রস্তুতকারক কোম্পানির দেওয়া নয়, বরং যতদূর জানা যায় অট্টো নিজে ছোটবেলায় এটা পরতেন। এদিকে পুতুলটিকে আনার পর একটার পর একটা অশুভ ঘটনা ঘটতে লাগল। শিশু অট্টো এর জন্য দায়ী করে রবার্টকেই। বাড়ির বড় সদস্যরা একে বালকের গালগপ্প বলে উড়িয়ে দেন গোড়ার দিকে। তবে সময় যত গড়াতে লাগল বাড়ি ও পুতুলটিকে ঘিরে নানা ধরনের অস্বাভাবিক কাণ্ড ঘটতে দেখলেন তাঁরা। 

অস্বাভাবিক ঘটনার শুরু যখন, অট্টোর তখন দশ বছর বয়স। এক রাতে ঘুম থেকে জেগে দেখেন বিছানার কিনারে বসে রবার্ট তাঁর দিকে তাকিয়ে আছে। অট্টোর চিৎকারে তাঁর মায়ের ঘুম ভেঙে গেল, অট্টোর কামরার আসবাবপত্র উল্টে পড়ার শব্দও কানে এল তাঁর। দৌড়ে এসে আবিষ্কার করলেন ছোট্ট ছেলেটা আতঙ্কে কুঁকড়ে শুয়ে আছে বিছানায়। পাশে মেঝেতে বসে আছে পুতুলটি। কিন্তু একটা পুতুল কীভাবে এমনটা করতে পারে? 

তবে বিষয়টা পরিবারের সদস্যরা ভুলে যেতে চাইলেও এতেই থেমে থাকল না অস্বাভাবিক কাণ্ডকীর্তি। অট্টোর মা-বাবা মাঝে মাঝেই ওপর তলা থেকে পুতুলটির সঙ্গে কথা বলতে শুনতেন ছেলেকে। অন্য রকম কণ্ঠে জবাবও শুনতে পেতেন। এমনকি পুতুলটির মুখের অভিব্যক্তি বদলে যেতে দেখেন তাঁরা মাঝে মাঝেই।

মা-বাবা মারা যাওয়ার পর আর্টিস্ট হাউসে স্ত্রী অ্যানের সঙ্গে থাকতে শুরু করলেন অট্টো। অ্যান গোড়া থেকেই রবার্টকে নিয়ে একটু অস্বস্তিতে ভুগতে লাগলেন। চাইলেন একে চিলেকোঠায় বন্দী করে রাখতে। অতএব সেখানে ঠাঁই হলো তার। তবে কিছুদিনের মধ্যেই বোঝা গেল রবার্ট তার এ অবস্থানে মোটেই খুশি হয়নি। বাড়িটির পাশ দিয়ে স্কুলে যাওয়া ছেলে-মেয়েরা জানাল, পুতুলটি হঠাৎ দুই তলার শোবার কামরার জানালার সামনে হাজির হয়, পরমুহূর্তে অদৃশ্য হয়ে যায়। যেন সে চলাফেরা করতে পারে। বাড়িটিকে এড়াতে অন্য পথে স্কুলে যেতে শুরু করল তারা।

ফ্লোরিডার কি ওয়েস্টের ইস্ট মারটেল্লা জাদুঘরবিষয়টি শুনে অট্টো অনুসন্ধানে নামলেন। কারণ রবার্টকে তিনি রেখেছেন চিলেকোঠায়, সে দুই তলার ওই কামরায় এল কীভাবে? কিন্তু আশ্চর্যজনক ব্যাপার, একদিন সত্যি ওটাকে শোবার ঘরে আবিষ্কার করলেন। জানালার পাশের রকিং চেয়ারটায় আরামে পুতুলটিকে বসে থাকতে দেখে চমকে উঠলেন তিনি। নিজে নিজেই রবার্ট চিলেকোঠা থেকে এখানে চলে এসেছে? তারপর কয়েকবারই তাকে চিলেকোঠায় বন্দী করলেন, প্রত্যেকবারই পরে আবার শোবার কামরার রকিং চেয়ারে আবিষ্কার করেন। 

 ১৯৭৪ সালে অট্টো মারা গেলে আর্টিস্ট হাউস কিনে নেন মার্টলে রিউটার। রবার্ট রইল তাঁর জিম্মাতেই। মার্টলেদের দশ বছরের মেয়ে শুরুতে পুতুলটিকে পেয়ে খুশিই ছিল। তবে একপর্যায়ে সে দাবি করল পুতুলটা হাঁটা-চলা করতে পারে, আর তাকে আঘাত করতে চায়। কখনো কখনো রাতে আতঙ্কে চিৎকার করে জেগে যেত সে। মা-বাবা এসে কী হয়েছে জানতে চাইলে বলত রবার্ট তার কামরায় চলে এসেছিল।

বাড়িটিতে বেড়াতে আসা লোকেরা দাবি করতে থাকলেন, চিলেকোঠায় মৃদু পদশব্দ আর ফিক ফিক করে হাসির শব্দ শোনেন তাঁরা। কেউ কেউ আবার জানালেন, রবার্টের সামনে তার আগের মালিক অট্টো সম্পর্কে কেউ কটু কথা বললে পুতুলটির চেহারায় রাগের ছাপ দেখা যায়। ২০ বছর রবার্টকে নিজের কাছে রাখার পর ফ্লোরিডার কি ওয়েস্টের ইস্ট মারটেল্লো জাদুঘরে দিয়ে দেন।

অনেকেই দাবি করেন, রবার্টের অশুভ আচরণের মূলে আছে অট্টোর বাড়ির সেই গৃহপরিচারিকা, যিনি অট্টোকে পুতুলটি উপহার দিয়েছিলেন। বলা হয়, অট্টোর মা-বাবা ওই নারীর সঙ্গে ভালো আচরণ করতেন না। এ জন্য তাঁদের শিক্ষা দিতে ভুডু আর ব্ল্যাক ম্যাজিকের সাহায্য নিয়ে পুতুলটির ওপর অশুভ প্রভাব তৈরি করেছিলেন। এতে অনেক প্রশ্নের জবাব মিললেও আরেকটি রহস্য রয়ে যায়, অট্টোর মা-বাবা, ওই গৃহপরিচারিকা এমনকি অট্টো মারা যাওয়ার পরও রবার্টের অশুভ প্রভাব রয়ে গেল কেন?

রবার্টের সঙ্গে ছবি তুলতে চান অনেকেইবলা চলে জাদুঘরে রবার্টের আগমন তার এবং জাদুঘর দুটির জন্যই নতুন মাইলফলক হয়ে দেখা দিল। রবার্টের আগমনের পর থেকে জাদুঘরে মানুষের ভিড় বেড়ে গেল। সবাই অশুভ পুতুলটিকে একটিবার দেখতে চান। টিভি শোতে দেখা গেল রবার্টকে, আলোকচিত্রীরা ছবি তুলতে হাজির হতে লাগলেন জাদুঘরে, রবার্টে অনুপ্রাণিত হয়ে হরর মুভি হতে লাগল। রবার্টের রেপ্লিকা, তার ছবিসহ টি-শার্ট বিক্রি হতে থাকল হুহু করে। রোমাঞ্চপ্রেমীদের কেউ কেউ বদ্ধ কামরায় রবার্টের সঙ্গে একা একা রাতও কাটালেন।

এমনকি রবার্টের নামে চিঠিও আসতে লাগল জাদুঘরের ঠিকানায়। তবে সাধারণ ভক্তদের কোনো চিঠি নয় সেগুলো, বেশির ভাগ ক্ষমা চেয়ে লেখা চিঠি। তাদের দাবি, জাদুঘরে এসে রবার্টের সঙ্গে অসম্মানজনক আচরণ করেছেন। তার পর থেকেই একটার পর একটা দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটছে তাঁদের জীবনে। কাজেই মাফ চেয়ে এর থেকে মুক্তি চান। এমনকি তার জন্য ক্যান্ডি আর চকোলেটও পাঠাতে লাগলেন ভক্তরা। কখনো রবার্টকে কাচের ঘেরাটোপ থেকে ফ্লোরিডার মুক্ত আবহাওয়ায় বের কর আনেন তার কেয়রটেকার কনভারটিটো।

কনভারটিটোকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, ‘আপনি কি মনে করেন রবার্ট ভুতুড়ে?’

‘আমি জানি না। সত্যি জানি না,’ উত্তর দিলেন তিনি, ‘রবার্টের সঙ্গে আমার কোনো খারাপ অভিজ্ঞতা হয়নি। আমার কখনো অস্বস্তি লাগেনি। আমি আমার কাজ করে যাই। তার মধ্যে কিছু থাকুক না থাকুক, আমার কাজে সে কখনো বাধা দেয়নি।’

তবে তাকে দেখতে জাদুঘরে আসা মানুষকে এখনো আতঙ্কিত করে চলেছে রবার্ট। জাদুঘরে যাঁরা রবার্টের ছবি তোলেন, তাঁদের অনেকে দাবি করেন ওই সময়ই ক্যামেরা উল্টাপাল্টা আচরণ শুরু করে। জাদুঘর ছেড়ে বের হয়ে গেলে আবার সব ঠিকঠাক। তার মানে রবার্টের অশুভ বা ভুতুড়ে তকমা দূর হচ্ছে না সহসাই। 

সূত্র: এটলাস অবসকিউরা, ঘোস্টস অ্যান্ড গ্রেইভস্টোনস ডট কম

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কখনো চাকরিই করেননি, সেই প্রতিষ্ঠান থেকে পেলেন বরখাস্তের চিঠি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ই-মেইল চেক করছেন একজন নারী। ছবি: পেক্সেলস
ই-মেইল চেক করছেন একজন নারী। ছবি: পেক্সেলস

একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখলেন, একটা ই-মেইল এসেছে যার ‘সাবজেক্ট’ অপশনে লেখা ‘টার্মিনেশন লেটার’। ঘুম ঘুম চোখে এই ই-মেইল দেখলে স্বাভাবিকভাবেই ঘুম তো থাক, অন্য সব ভাবনাও হারাম হয়ে যাওয়ার কথা! তখন ভাবনায় আসবে ঠিক কি কারণে চাকরি থেকে ছাঁটাই হতে হলো! ভাবতে ভাবতে মাথা খারাপ হওয়ার জোগাড় এ সময় চোখে পড়ল, যে কোম্পানি থেকে এই ই-মেইল এসেছে, সেখানে আপনি চাকরিই করেন না, কখনো করেনওনি! ভাবুন তো কেমন লাগার কথা।

এমনই ঘটনা ঘটেছে এক নারীর সঙ্গে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ সাইমন ইনগারি নামের একজন ক্যারিয়ার কাউন্সিলর তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে ঘটে যাওয়া এই ঘটনা শেয়ার করেছেন।

সাইমন ইনগারি তাঁর টুইটে জানান, তাঁর স্ত্রী এমন একটি কোম্পানি থেকে ছাঁটাইয়ের ই-মেইল পেয়েছেন, যেখানে তিনি কখনো কাজই করেননি। ইমেইল পাওয়ার পর তিনি এতটাই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন যে তিনি পুরো স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলেন।

ইনগারি বলেন, ‘আমার স্ত্রী ভাবতে শুরু করেছিল, সে কি কোনো ডেডলাইন মিস করেছিল, নাকি তাঁর বড় কোনো ভুল হয়েছিল। পরে চেক করে দেখে ই-মেইল প্রেরক কোম্পানিটি তাঁর কর্মস্থলই নয়।’

ইনগারি তাঁর পোস্টে লেখেন, ‘আমার স্ত্রী একটি টার্মিনেশন ইমেইল পেয়েছে। ইমেইলটি দেখেই তাঁর বুক ধক করে ওঠে। এক সেকেন্ডের জন্য সে থমকে যায়। কোনো ডেডলাইন মিস করেছে? কিছু ভুল বলেছে? শেষে জানা গেল, যে কোম্পানিতে সে কখনো চাকরিই করেনি, সেখান থেকেই তাঁকে “বরখাস্ত” করা হয়েছে।’

এই ঘটনার মাধ্যমে ওই কোম্পানির এইচআর বিভাগের অসতর্কতার বিষয়টি তুলে ধরে ইনগারি অনুরোধ জানান, ভবিষ্যতে ইমেইল পাঠানোর সময় যেন প্রাপকের আইডি আরও ভালোভাবে যাচাই করা হয়। তিনি লেখেন, ‘প্রিয় এইচআর, দয়া করে পরেরবার ইমেইল আইডিটা একটু ভালো করে দেখবেন। এমন ভুলে তো কারও সত্যিই হার্ট অ্যাটাক হয়ে যেতে পারে।’

এই পোস্ট নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। অনেক ব্যবহারকারী এমন ভুলের সম্ভাব্য গুরুতর পরিণতির কথা তুলে ধরেন। কেউ কেউ ঘটনাটিকে হাস্যরসের চোখে দেখলেও, অন্যরা এটিকে আধুনিক করপোরেট দুনিয়ায় বাড়তে থাকা অসতর্কতা ও চাকরির অনিশ্চয়তার প্রতিফলন বলে মন্তব্য করেন।

একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘তাঁর উচিত একটি অপ্রত্যাশিত এবং কঠোর জবাব দেওয়া। এতে করে অন্তত তাঁরা বুঝতে পারার আগেই যে ভুল ঠিকানায় ইমেইল পাঠানো হয়েছে, তিনি নিজের ক্ষোভ উগরে দেওয়ার সুযোগ পাবেন।’

আরেকজন মন্তব্য করেন, ‘এটা কোনো ছোটখাটো ভুল নয়। একটি ভুল ইমেইল কারও পুরো দিন, সপ্তাহ—এমনকি মানসিক স্বাস্থ্যের ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে। এইচআর সারাদিন সহমর্মিতার কথা বলে, অথচ স্প্যামের মতো করে বরখাস্তের ইমেইল পাঠায়।’

আরেকজন বলেন, ‘মানবিক কোনো মান যাচাই ছাড়াই যখন কোম্পানিগুলো সব অটোমেশন বা স্বয়ংক্রিয় করে ফেলে, তখনই এমনটা ঘটে। এটি অত্যন্ত নিম্নমানের পরিচালনা এবং ব্র্যান্ডের জন্য ক্ষতিকর। ভাগ্য ভালো যে এটি কেবল একটি ভুল সতর্কবার্তা ছিল।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চীনের গ্রামে লিভ টুগেদার ও গর্ভধারণ নিয়ে ‘অদ্ভুত’ আইন জারি, সমালোচনার ঝড়

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ৩৭
গ্রাম মাতবরদের এই নতুন আইন নিয়ে সারা দেশে সমালোচনার ঝড় বইছে। ছবি: সংগৃহীত
গ্রাম মাতবরদের এই নতুন আইন নিয়ে সারা দেশে সমালোচনার ঝড় বইছে। ছবি: সংগৃহীত

বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক থেকে শুরু করে স্বামী-স্ত্রীর ব্যক্তিগত ঝগড়া—সবকিছুতেই এখন থেকে গুনতে হবে মোটা অঙ্কের জরিমানা। চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইউনান প্রদেশের লিংক্যাং গ্রামের কমিটি এমন নিয়ম জারি করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘গ্রামের নিয়মাবলি: সবাই সমান’ শিরোনামের একটি নোটিশ ভাইরাল হওয়ার পর শুরু হয়েছে তীব্র সমালোচনা ও বিতর্ক।

সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গ্রামের শৃঙ্খলা বজায় রাখার নামে ব্যক্তিগত স্বাধীনতার ওপর একাধিক বিধিনিষেধ আরোপ করেছে স্থানীয় গ্রাম কমিটি। ভাইরাল হওয়া ছবির ভিত্তিতে জরিমানার তালিকাটি নিচে দেওয়া হলো:

প্রাদেশিক বৈষম্য: ইউনান প্রদেশের বাইরের কাউকে বিয়ে করলে দম্পতিকে ১ হাজার ৫০০ ইউয়ান (প্রায় ২৩,০০০ টাকা) জরিমানা দিতে হবে।

বিয়ের আগে গর্ভধারণ: কোনো নারী বিয়ের আগে গর্ভবতী হলে তাঁকে ৩ হাজার ইউয়ান জরিমানার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

লিভ ইন রিলেশন: বিয়ে ছাড়াই কোনো যুগল একত্রে বসবাস করলে প্রতিবছর ৫০০ ইউয়ান জরিমানা দিতে হবে।

সন্তান জন্মের সময়: বিয়ের মাত্র ১০ মাসের মধ্যে কোনো দম্পতি সন্তান জন্ম দিলে তাঁকে ‘অকাল গর্ভধারণ’ হিসেবে গণ্য করে ৩ হাজার ইউয়ান জরিমানা করা হবে।

পারিবারিক কলহ: স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হলে এবং তা মেটাতে গ্রাম কর্তাদের ডাকলে উভয় পক্ষকে ৫০০ ইউয়ান করে জরিমানা দিতে হবে।

সামাজিক আচরণ: মদ্যপ অবস্থায় বিশৃঙ্খলা করলে ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার ইউয়ান এবং গুজব ছড়ালে ১ হাজার ইউয়ান পর্যন্ত জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।

চীনের জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘উইবো’-তে এই নোটিশ শেয়ার হওয়ার পর নেটিজেনরা ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন। অনেক ব্যবহারকারী মন্তব্য করেছেন, ‘গ্রাম কমিটি কি এখন মানুষের শোবার ঘরের পাহারাদার হতে চায়?’ কেউ কেউ এটিকে মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছেন। সমালোচকদের মতে, আধুনিক চীনের আইনি কাঠামোয় এ ধরনের নিয়মাবলি সম্পূর্ণ অবৈধ এবং মধ্যযুগীয় বর্বরতার শামিল।

বিতর্ক তুঙ্গে উঠলে স্থানীয় মেংডিং টাউন সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নেয়। ১৬ ডিসেম্বর রেড স্টার নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রশাসনের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, নোটিশটি গ্রাম কমিটির নিজস্ব উদ্যোগে টাঙানো হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘এই নিয়মগুলো অত্যন্ত অস্বাভাবিক এবং ইউনিয়ন বা টাউন সরকারের কাছ থেকে কোনো প্রকার পূর্বানুমতি নেওয়া হয়নি। আমরা ইতিমধ্যেই নোটিশটি সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছি এবং এটি এখন কার্যকর নেই।’

লিংক্যাং গ্রামটির জনসংখ্যা বা বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাওয়া না গেলেও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, চীনের অনেক প্রত্যন্ত অঞ্চলে গ্রাম কমিটিগুলো নিজেদের ছোটখাটো ‘রাজা’ মনে করে এ ধরনের অবৈধ নিয়ম জারি করে থাকে। এই ঘটনাটি চীনের গ্রামীণ স্বায়ত্তশাসনের সীমাবদ্ধতা এবং সাধারণ মানুষের আইনি অধিকার রক্ষার প্রয়োজনীয়তাকে আবারও সামনে নিয়ে এসেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৩০ বছর পর প্রথম শিশুর জন্মে খুশিতে মাতোয়ারা ইতালির এক গ্রাম

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
মা-বাবার কোলে লারা বুসি ত্রাবুক্কো। ছবি: দ্য গার্ডিয়ানের সৌজন্যে
মা-বাবার কোলে লারা বুসি ত্রাবুক্কো। ছবি: দ্য গার্ডিয়ানের সৌজন্যে

ইতালির আব্রুজ্জো অঞ্চলের মাউন্ট জিরিফালকোর পাদদেশে অবস্থিত এক প্রাচীন গ্রাম পালিয়ারা দে মার্সি। জনশূন্য এই গ্রামে মানুষের চেয়ে বিড়ালের সংখ্যাই বেশি। গত কয়েক দশক ধরে গ্রামটি নিস্তব্ধতায় ডুবে ছিল, কিন্তু গত মার্চ মাস থেকে সেখানে বইছে খুশির জোয়ার। কারণ, দীর্ঘ ৩০ বছর পর এই গ্রামে প্রথম কোনো শিশুর জন্ম হয়েছে।

লারা বুসি ত্রাবুক্কো নামের এই শিশুটির আগমনে গ্রামের জনসংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ জনে। তার খ্রিষ্টধর্মে দীক্ষাদান অনুষ্ঠানে পুরো গ্রাম ভেঙে পড়েছিল। এমনকি ৯ মাস বয়সী লারা এখন ওই অঞ্চলের প্রধান পর্যটন আকর্ষণে পরিণত হয়েছে। লারার মা সিনজিয়া ত্রাবুক্কো বলেন, ‘যারা আগে এই গ্রামের নামও জানত না, তারাও এখন লারাকে দেখতে আসছে।’

লারার জন্ম এক দিকে যেমন আশার প্রতীক, অন্য দিকে এটি ইতালির ভয়াবহ জনসংখ্যা হ্রাসের চিত্রকেও ফুটিয়ে তুলেছে।

ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে ইতালিতে জন্মহার সর্বকালের সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে (৩,৬৯,৯৪৪ জন)। প্রজনন হার প্রতি নারী পিছু মাত্র ১.১৮, যা ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে অন্যতম সর্বনিম্ন।

২০২৫ সালের প্রথম সাত মাসের উপাত্ত অনুযায়ী, আব্রুজ্জো অঞ্চলে জন্মহার গত বছরের তুলনায় আরও ১০.২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।

বিশেষজ্ঞ ও স্থানীয় বাসিন্দারা এই পরিস্থিতির জন্য একাধিক কারণকে দায়ী করেছেন। এরমধ্যে রয়েছে—তরুণ প্রজন্মের মধ্যে কর্মসংস্থানের অভাব ও দেশত্যাগের প্রবণতা। কর্মজীবী মায়েদের জন্য ডে-কেয়ার বা নার্সারির অভাব। অনেক নারী মা হওয়ার পর আর কর্মক্ষেত্রে ফিরতে পারেন না। পুরুষদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বন্ধ্যাত্ব এবং অনেকের সন্তান না নেওয়ার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। ট্যাক্স বেশি হলেও সেই অনুযায়ী সামাজিক সেবা বা উন্নত জীবনযাত্রার অভাব।

জর্জিয়া মেলোনির সরকার এই পরিস্থিতিকে ‘জনসংখ্যার শীতকাল’ (Demographic Winter) হিসেবে অভিহিত করেছে। সংকট মোকাবিলায় ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে প্রতিটি শিশুর জন্মের পর এককালীন ১ হাজার ইউরো ‘বেবি বোনাস’ এবং প্রতি মাসে প্রায় ৩৭০ ইউরো শিশু ভাতা দেওয়ার নিয়ম চালু করা হয়েছে। তবে লারার মায়ের মতে, শুধু অর্থ দিয়ে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়; পুরো ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন প্রয়োজন।

এদিকে, জনসংখ্যা কমে যাওয়ায় অনেক শহরে প্রসূতি বিভাগ (Maternity Unit) বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। পালিয়ারা দে মার্সি থেকে এক ঘণ্টার দূরত্বে অবস্থিত সুলমোনা শহরের হাসপাতালটি এখন বন্ধের ঝুঁকিতে। নিয়ম অনুযায়ী বছরে অন্তত ৫০০ শিশুর জন্ম না হলে সেই ইউনিট চালু রাখা কঠিন। ২০২৪ সালে সেখানে মাত্র ১২০টি শিশুর জন্ম হয়েছে। এটি বন্ধ হয়ে গেলে গর্ভবতী নারীদের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে অন্য শহরে যেতে হবে, যা জরুরি অবস্থায় অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।

গ্রামের মেয়র জিউসেপিনা পেরোজি আশা প্রকাশ করেন, লারার জন্ম অন্যদেরও পরিবার গঠনে অনুপ্রাণিত করবে। কিন্তু লারার ভবিষ্যৎ শিক্ষা নিয়ে দুশ্চিন্তা রয়েই গেছে। গ্রামটিতে কয়েক দশক ধরে কোনো শিক্ষক নেই, এবং পার্শ্ববর্তী গ্রামের স্কুলগুলোও শিক্ষার্থীর অভাবে বন্ধ হওয়ার পথে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জরায়ুর বাইরে বেড়ে উঠল শিশু, অলৌকিক জন্ম দেখল ক্যালিফোর্নিয়া

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১: ১১
২০২৫ সালের আগস্টে লস অ্যাঞ্জেলেসের সিডারস-সিনাই হাসপাতালে সুজ লোপেজের মেয়ে কাইলা সুজ, তাঁর কোলে রিউ ও অ্যান্ড্রু লোপেজ (ছবিতে বাম দিক থেকে)। ছবি: এপির সৌজন্যে
২০২৫ সালের আগস্টে লস অ্যাঞ্জেলেসের সিডারস-সিনাই হাসপাতালে সুজ লোপেজের মেয়ে কাইলা সুজ, তাঁর কোলে রিউ ও অ্যান্ড্রু লোপেজ (ছবিতে বাম দিক থেকে)। ছবি: এপির সৌজন্যে

ক্যালিফোর্নিয়ার সুজ লোপেজ যখন তাঁর ছোট ছেলে রিউকে কোলে নিয়ে বসেন, তখন এক অলৌকিক বিস্ময়ে স্তব্ধ হয়ে যান। কারণ, ছোট্ট রিউ তাঁর মায়ের জরায়ুর ভেতরে নয়, বেড়ে উঠেছিল পেটের ভেতরে একটি বিশাল আকৃতির ওভারিয়ান সিস্টের আড়ালে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং বিরল এই ঘটনাকে ‘মিরাকল’ বা অলৌকিক বলছেন চিকিৎসকেরা।

লস অ্যাঞ্জেলেসের সিডারস-সিনাই মেডিকেল সেন্টারের প্রসূতি ও প্রসব বিভাগের মেডিকেল ডিরেক্টর ড. জন ওজিমেক এপিকে বলেন, ‘প্রতি ৩০ হাজার গর্ভাবস্থার মধ্যে মাত্র একটি জরায়ুর বাইরে পেটের ভেতরে (Abdominal Pregnancy) ঘটে। আর পূর্ণ মেয়াদে সুস্থ শিশু জন্ম দেওয়ার ঘটনা ১ কোটিতে একজনের ক্ষেত্রেও দেখা যায় না। এটি সত্যিই অবিশ্বাস্য।’

৪১ বছর বয়সী সুজ লোপেজ পেশায় একজন নার্স। আশ্চর্যের বিষয় হলো, সন্তান জন্ম দেওয়ার মাত্র কয়েক দিন আগ পর্যন্ত তিনি জানতেনই না যে তিনি অন্তঃসত্ত্বা।

সুজ দীর্ঘদিন ধরে ওভারিয়ান সিস্টের সমস্যায় ভুগছিলেন। যখন তাঁর পেট বড় হতে শুরু করে, তিনি ভেবেছিলেন, এটি ২১ পাউন্ড ওজনের সেই সিস্টেরই বৃদ্ধি।

সাধারণ গর্ভাবস্থার কোনো লক্ষণ; যেমন সকালবেলায় অসুস্থতা বোধ করা (Morning Sickness) বা শিশুর নড়াচড়া—কিছুই তিনি অনুভব করেননি। অনিয়মিত পিরিয়ডের কারণে ঋতুস্রাব বন্ধ হওয়াকেও তিনি স্বাভাবিক ধরে নিয়েছিলেন।

অবশেষে পেটে অসহ্য ব্যথা শুরু হলে তিনি সিস্ট অপসারণের জন্য চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। সেখানে সিটি স্ক্যান করার আগে বাধ্যতামূলক গর্ভাবস্থা পরীক্ষায় ফল ‘পজিটিভ’ আসে।

হাসপাতালে আলট্রাসাউন্ড এবং এমআরআই স্ক্যানে দেখা যায়, সুজের জরায়ু সম্পূর্ণ খালি। অথচ একটি পূর্ণাঙ্গ ভ্রূণ তাঁর লিভারের কাছে পেটের এক কোণে অ্যামনিওটিক থ্যাকের ভেতরে বেড়ে উঠছে। ড. ওজিমেক জানান, ভ্রূণটি লিভারের মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গকে সরাসরি আক্রান্ত করেনি, বরং পেলভিসের পাশের দেয়ালে গেঁথে ছিল। এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক হলেও লিভারের তুলনায় কিছুটা নিয়ন্ত্রণযোগ্য ছিল।

গত ১৮ আগস্ট এক জটিল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ৮ পাউন্ড (৩.৬ কেজি) ওজনের রিউকে পৃথিবীতে আনা হয়। অস্ত্রোপচারের সময় সুজের সেই বিশাল সিস্টটিও অপসারণ করা হয়। অত্যধিক রক্তক্ষরণ হলেও চিকিৎসকদের দক্ষতায় সুজ এবং তাঁর সন্তান দুজনেই সুস্থভাবে ফিরে আসেন।

সুজের স্বামী অ্যান্ড্রু লোপেজ বলেন, ‘বাইরে শান্ত থাকলেও আমি ভেতরে-ভেতরে প্রার্থনা করছিলাম। যেকোনো মুহূর্তে স্ত্রী বা সন্তানকে হারানোর ভয় আমাকে তাড়া করছিল।’

বর্তমানে রিউ সম্পূর্ণ সুস্থ এবং প্রাণচঞ্চল। নিজের ১৮ বছর বয়সী বড় বোন কাইলার সঙ্গে তার খুনসুটি লেগেই থাকে। সামনেই রিউয়ের প্রথম বড়দিন। সুজ লোপেজ আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, ‘আমি এখন অলৌকিক ঘটনায় বিশ্বাস করি। ঈশ্বর আমাদের জীবনের সেরা উপহারটি দিয়েছেন।’

চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, এই কেস এতই বিরল যে তাঁরা এটি একটি মেডিকেল জার্নালে প্রকাশের পরিকল্পনা করছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত