বিভাস রায় চৌধুরী

সামরিক অভিযানের মাধ্যমে ইতিহাসের গতিপথ পরিবর্তন করতে ‘অস্ত্রের ধার’ আর ‘অর্থের ভার’ দুই–ই লাগে। আগেও লাগত, এখনো লাগে।
কিছু ধারালো ব্লেড বা অস্ত্র আছে, যা পৃথিবীর বুক চিরে ইতিহাস লিখেছে। এই ধারালো ব্লেডগুলো দুর্বল মানুষের মনে ভয় আর সবল জাতির ক্ষমতার মোহকে অনুপ্রাণিত করে এসেছে কয়েক হাজার বছর ধরে। তার কিছু উদাহরণ তুলে ধরা যাক।
প্রাচীনকাল থেকেই সেনা অভিযানে ধারালো তরোয়াল, ছুরি ও ছুরির মতো কিছু অস্ত্র বিশ্বজুড়ে যোদ্ধাদের খুব পছন্দের। অস্ত্র, ক্ষমতা আর অর্থ এক সুতোয় বাঁধা, যার এক একপ্রান্তে থাকে নির্ভীক সাধারণ একজন সৈনিক, আর অন্য প্রান্তে থাকে শিল্পী। যুগে যুগে দেশে দেশান্তরে কামারশালার শিল্পীদের বানানো এ সমস্ত ক্ষুরধার ব্লেড বীর যোদ্ধা, রাজা, সেনাপতিদের মনে স্বপ্ন ও অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।
খোপেশ
ব্রোঞ্জ যুগে আবিষ্কৃত প্রথম দিকের তরোয়ালগুলোর মধ্যে অন্যতম এটি। প্রাচীন মিসরীয় কাস্তে আকৃতির অস্ত্র খোপেশ, যার বাইরের প্রান্ত ধারালো থাকত। এ অস্ত্র মিসরে জন্ম নিয়ে মধ্যপ্রাচ্য পর্যন্ত পৌঁছায়। অবশ্য ভারত ভূখণ্ডে এর দেখা মেলেনি। সাম্রাজ্যবাদী শক্তি যখন বিশ্বজুড়ে মাথা চাড়া দিচ্ছে, তখন এই ধারালো অস্ত্র ফারাওদের সেনাবাহিনীকে সুসজ্জিত করে।
শিল্পীরা খোপেশে সুন্দর কারুকার্য করে ফারাওদের পিরামিড সাজাত। তুতেন খামেনের পিরামিডে দুটো দুই আকারের খোপেশ পাওয়া গেছে। এগুলো ‘সিঙ্গল পিস’ ব্রোঞ্জ দিয়ে তৈরি। এর প্রথম অংশ বা হাতলের অংশটি কালো রঙের, আর দ্বিতীয় অংশটি হাতলের ওপরে—তাতে একটা পদ্মফুল খোদাই করা। তৃতীয় অংশ কাস্তের আকারে বাঁকানো। পরবর্তীতে আরও ভালো ধাতুবিদ্যা আর অস্ত্র তৈরির কৌশল আবিষ্কার হলে খোপেশকে স্বাভাবিকভাবেই রাস্তা ছেড়ে দিতে হয়। তবুও ইতিহাস একে মনে রেখেছে সভ্যতার শুরুর দিনে তার অনবদ্য অবদানের জন্য।
খুকরি
কয়েক শতাব্দী ধরে যুদ্ধের ইতিহাসে নেপালের এই ছোট্ট, একটু বাঁকা ছুরি এক ঐতিহ্যবাহী গোর্খা সেনা হাতিয়ার। অষ্টাদশ শতকের গোড়ার দিকে ইউরোপীয়রা প্রথম খুকরির প্রেমে পড়ে। এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে নেপালি গোর্খা যোদ্ধাদের সঙ্গে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সৈন্য বাহিনী সংঘর্ষে লিপ্ত হলে নেপালিদের খুকরি চালানোর দক্ষতা দেখে ব্রিটিশ কমান্ডার অকটারলোনি গোর্খাদের ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী শক্তির অন্যতম শক্তিশালী সামরিক ইউনিটে পরিণত করেন।
খুকরি বর্তমান ব্রিটিশ ও ভারতীয় আর্মিতে ‘স্ট্যান্ডার্ড ইস্যু’ অস্ত্র হিসেবে গোর্খাদের দেওয়া হয়। রয়্যাল গোর্খা বা ভারতীয় গোর্খা রেজিমেন্টের লোগো এই খুকরি। আর এই ব্লেডের স্বাদ সবচেয়ে ভালো পেয়েছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মান আফ্রিকা কোর এবং পাকিস্তান সেনাবাহিনী—বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ ও কারগিল যুদ্ধে।
ফালকাটা
ফালকাটা দুই ফুট লম্বা তরোয়াল, যা প্রাচীন স্পেনে সেল্টবেরিয়ান যোদ্ধারা ব্যবহার করত। ধাতুবিদ্যা উন্নত হওয়ার ফলে স্টিল বা লোহা নিয়ে চলতে থাকা নিরীক্ষার প্রাথমিক ফল এই অস্ত্র। হাতলের কাছে একদিকে ধার, কিন্তু মাথার দিকে দুদিকে ধারালো হয়ে থাকে ফালকাটা। একটু বাঁকা এই তরোয়াল একসঙ্গে কুঠারের চিরে দেওয়া, আর ধারালো তরোয়ালের কেটে ফেলার কাজ করত।
ফালকাটা ছিল কার্থেজের সেনাপতি হ্যানিবলের প্রিয় অস্ত্র। তিনি রোমের বিরুদ্ধে পিউনিক যুদ্ধ চলাকালে আফ্রিকান সেনাদের এই অস্ত্রে সজ্জিত করেছিলেন। কিছু ঐতিহাসিকের মতে, হাতাহাতি যুদ্ধে তরোয়ালটির কার্যকারিতা হানিবল সেনার রোমানদের বিরুদ্ধে জয়ের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে।
উলফবার্ট
এটি ভাইকিং তরোয়াল। অষ্টম শতাব্দীর শুরু থেকে ভাইকিং নৌ-যোদ্ধারা ইউরোপের সমুদ্র উপকূলীয় জনবসতিতে তাদের বর্বর আক্রমণ চালিয়ে সমগ্র এলাকায় আতঙ্ক ছড়ায়।
মোট ১৭০টি প্রাচীন উলফবার্ট তরোয়াল পাওয়া গেছে। এগুলোর মধ্যে চুয়াল্লিশটি নরওয়ে, আর একত্রিশটি ফিনল্যান্ড থেকে পাওয়া গেছে। পাগান সভ্যতার রীতি অনুযায়ী এগুলো বেশির ভাগ কবরস্থান থেকে পাওয়া। এ ছাড়া কিছু ইংল্যান্ডের মরা নদীর বুঁজে যাওয়া খাত থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
উদ্ধার করা প্রতিটি তরোয়ালে উলফবার্ট বা (+VLFBERHT+) খোদাই করা থাকত। হাতলে লেড বা দস্তার কাজ করা, আর এর ধারালো ব্লেডের অংশ হাই কার্বন স্টিল দিয়ে তৈরি। ইউরোপে শিল্প বিপ্লবের আগে কীভাবে এই উন্নত স্টিল এল, সেটাও একটা জিজ্ঞাসার বিষয়। অবশ্য কেউ বলেন, জার্মানির এক খনি থেকে; আবার কেউ বলেন আরব-পারস্য থেকে রপ্তানি করা হয়েছিল এই উন্নত স্টিল। তবে যেখান থেকেই আসুক, এই তরোয়াল কয়েক শ বছর পৃথিবীর একটা বিশাল অংশের মেরুদণ্ড দিয়ে শিরশিরে হাওয়া বইয়ে দিয়েছিল।
বোলো ছুরি
‘বোলো’ মূলত ঘাস, বাঁশ বা ফসল কাটার কাজে ব্যবহৃত ফিলিপাইনের একটি ‘মাল্টিপারপাস’ অস্ত্র। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিপ্লবীদের হাতে এটি যুদ্ধের এক দুর্দান্ত অস্ত্রে পরিণত হয়।
১৮৯৬ সালে ফিলিপাইন বিপ্লব, স্প্যানিশ-আমেরিকান যুদ্ধ, আর ফিলিপাইন-আমেরিকান যুদ্ধে ফিলিপাইনের দেশীয় গেরিলারা মূল অস্ত্র হিসেবে এ বোলোকে ব্যবহার করে। গেরিলা যুদ্ধে রাইফেল-গুলি ফুরিয়ে গেলেও এই ‘বোলোমেন’ প্রায়ই তাদের ছুরি নিয়ে যুদ্ধের মাঠে হারজিতের লড়াইয়ে মারাত্মক প্রভাব ফেলত।
এক আমেরিকান সেনা লিখেছেন, ‘তারা মানুষের জীবন নেওয়ার ক্ষেত্রে দক্ষ এবং গর্বিত। তাদের গর্বের কারণ হলো এক কোপে শরীর থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করা!’ এই ভয়ংকর ব্লেড পরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আবার অ্যাকশনে এসেছিল। বর্তমানে ফিলিপিনো মার্শাল আর্টে এটি একটি সাধারণ অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার হয়।
কাতানা
জাপানের মধ্যযুগীয় ইতিহাসের আইকোনিক অস্ত্র এটি। কয়েক শতাব্দী ধরে এই বাঁকা, এক ধারযুক্ত ব্লেডগুলো সামুরাই যোদ্ধাদের পছন্দের অস্ত্র ছিল। জাপানের বীর যোদ্ধারা তাদের রাজাদের দেশ জয়ের স্বপ্ন পূরণ করেছিল এই তরোয়াল দিয়ে। ৮০০ বছর আগে সেরা সামুরাই তার কাতানা তরোয়ালের হালকা-ক্ষিপ্র আঘাতে শত্রুর মুণ্ডু ধড় থেকে আলাদা করার দক্ষতাকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিল।
কিংবদন্তি ‘হোনজো মাসামুনে’কে শ্রেষ্ঠ কাতানা তরোয়াল বলে মনে করা হয়। সম্ভবত তেরো শতকে এর সৃষ্টি। তারপর অনেক বীরের হাত ঘুরে এই তরোয়াল ষোলো শতকে বীর যোদ্ধা হনজো শিগেনাগার হাতে আসে। পরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষে অদৃশ্য হয়ে যায়। সম্ভবত কোনো আমেরিকান সেনা অফিসার সেটাকে চুরি করে নিয়ে যায় বা নষ্ট করে ফেলে। প্রচুর অনুসন্ধান করেও জাপানের এই মূল্যবান জাতীয় নিদর্শনটি আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।
বুয়ি নাইফ
জিম বুয়ি এক আমেরিকান-ইউরোপিয়ান দাস ব্যবসায়ী এবং মারপিটের জন্য বিখ্যাত মানুষ। তাঁর নামে এই চাকুও বিখ্যাত। জিম বুয়ি এ ধরনের একটা চাকু দিয়েই ডুয়েল বা হাতাহাতি লড়াইয় জেতেন।
‘বুয়ি নাইফ’ খবরের কাগজ আর বিজ্ঞাপনের দৌলতে বিশ্ববিখ্যাত হয়ে ওঠে। আসলে এটা ‘বুচার নাইফ’ বা আমাদের কসাইদের হাতে যেমন ছুরি দেখি, সেই জিনিস। তবে এর একটি ‘স্পেশাল ডিজাইন’ বুয়ি নিজে এক কামারশালায় অর্ডার দিয়ে বানিয়েছিলেন। ধারণা করা হয়, সেখান থেকেই এই নাম।
টেক্সাস দখল করতে আমেরিকানরা যে যুদ্ধ করে, তাতে এই চাকুর বহুল ব্যবহার হয়। বুয়ি নিজেও টেক্সাস রেভ্যুলিউশনে যোগ দেন এবং নিহত হন। তারপরও ম্যাক্সিকান যুদ্ধ, ক্যালিফোর্নিয়ার সোনার খোঁজে ‘গোল্ডরাশ’, কানসাসে জনযুদ্ধ, পরে আমেরিকান রেড ইন্ডিয়ানদের সঙ্গে ঝামেলা—এসবেও বুয়ি নাইফ কাজে লাগে। মজার ব্যাপার হলো, আব্রাহাম লিঙ্কনকে হত্যা করার সময় হত্যাকারী জন উইলকিস বুথ পালানোর সময় একটা বুয়ি নাইফ ফেলে পালিয়েছিল। পিস্তল বা রিভলবার সহজলভ্য হওয়ার আগ পর্যন্ত আমেরিকান হাতাহাতি বা সাহিত্য সবখানেই এর উপস্থিতি একে কল্পনার জগতে নিয়ে গেছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আমেরিকান মেরিন কোরের ‘কা-বার’ ছুরি এ বুয়ি নাইফের বংশধর। আমেরিকান অস্ত্র কোম্পানি আর্নেস্ট এমারশন বুয়ি নাইফের ছবি তাদের লোগোতে ব্যবহার করে। এই কোম্পানি নাসার মহাকাশ যাত্রীদের জন্য চাকু বানায়! আমেরিকান আর্মির ৩৯ নম্বর ইনফ্যান্ট্রি ব্রিগেড টিমের লোগো এই বুয়ি নাইফ! ভারতের এয়ার ফোর্স পাইলটদের সার্ভাইভাল কিটের মধ্যেও এই বুয়ি নাইফ থাকে।
জাইফোস (ক্ষিপোস)
এটি দুদিকে ধারালো গ্রিক তরোয়াল। দৈর্ঘ্য দেড় থেকে দুই ফুট, সোজা, ওজন এক কেজির কম। আলেক্সান্ডার তাঁর ম্যাসিডনের আর্মি নিয়ে সারা মধ্যপ্রাচ্য লুট করে ভারত পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছিলেন এই তরোয়াল হাতে নিয়েই।
আসলে গ্রিকদের কাছে এটা ছিল সাহায্যকারী অস্ত্র। স্পিয়ার বা বল্লম ওদের প্রধান অস্ত্র ছিল। কিন্তু কোনোভাবে বল্লম ভেঙে গেলে বা হাত থেকে ছিটকে গেলে, তখন কোমরে ঝোলানো জাইফোস বের করে, হা রে! রে! রে! করে শত্রুর ঘাড়ে লাফিয়ে পড়ত তারা।
শব্দটা যেমন মিসরের খোপেশের কাছাকাছি, তেমনি টেকনোলজিও। এই অস্ত্র ব্রোঞ্জ যুগের ডিজাইন। মাঝখানটা মোটা আর দুই ধার সরু। ব্লেড বেশি লম্বা নয়। কারণ ব্রোঞ্জের শক্তি কম। ভারতীয় যুদ্ধ শাস্ত্রে এ ধরনের অস্ত্র দেখা যায় না। এর কারণ হয়তো ভারতবর্ষের উন্নত ধাতুবিদ্যা। অবশ্য এখানকার খড়্গ বা খাঁড়া দেখতে অনেকটা এর কাছাকাছি।
স্পার্টার যোদ্ধারা যে গ্লডিয়াস ব্যবহার করত, সেটা এরই চাচাতো ভাই! যে কয়েকখানা জাইফোস উদ্ধার হয়েছে, তা প্রায় সবই কবরখানা থেকে। তার মানে যোদ্ধাদের সমাধিতে জাইফোস রাখা হতো। অর্থাৎ, গ্রিকদেরও ভূতের ভয় ছিল!

সামরিক অভিযানের মাধ্যমে ইতিহাসের গতিপথ পরিবর্তন করতে ‘অস্ত্রের ধার’ আর ‘অর্থের ভার’ দুই–ই লাগে। আগেও লাগত, এখনো লাগে।
কিছু ধারালো ব্লেড বা অস্ত্র আছে, যা পৃথিবীর বুক চিরে ইতিহাস লিখেছে। এই ধারালো ব্লেডগুলো দুর্বল মানুষের মনে ভয় আর সবল জাতির ক্ষমতার মোহকে অনুপ্রাণিত করে এসেছে কয়েক হাজার বছর ধরে। তার কিছু উদাহরণ তুলে ধরা যাক।
প্রাচীনকাল থেকেই সেনা অভিযানে ধারালো তরোয়াল, ছুরি ও ছুরির মতো কিছু অস্ত্র বিশ্বজুড়ে যোদ্ধাদের খুব পছন্দের। অস্ত্র, ক্ষমতা আর অর্থ এক সুতোয় বাঁধা, যার এক একপ্রান্তে থাকে নির্ভীক সাধারণ একজন সৈনিক, আর অন্য প্রান্তে থাকে শিল্পী। যুগে যুগে দেশে দেশান্তরে কামারশালার শিল্পীদের বানানো এ সমস্ত ক্ষুরধার ব্লেড বীর যোদ্ধা, রাজা, সেনাপতিদের মনে স্বপ্ন ও অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।
খোপেশ
ব্রোঞ্জ যুগে আবিষ্কৃত প্রথম দিকের তরোয়ালগুলোর মধ্যে অন্যতম এটি। প্রাচীন মিসরীয় কাস্তে আকৃতির অস্ত্র খোপেশ, যার বাইরের প্রান্ত ধারালো থাকত। এ অস্ত্র মিসরে জন্ম নিয়ে মধ্যপ্রাচ্য পর্যন্ত পৌঁছায়। অবশ্য ভারত ভূখণ্ডে এর দেখা মেলেনি। সাম্রাজ্যবাদী শক্তি যখন বিশ্বজুড়ে মাথা চাড়া দিচ্ছে, তখন এই ধারালো অস্ত্র ফারাওদের সেনাবাহিনীকে সুসজ্জিত করে।
শিল্পীরা খোপেশে সুন্দর কারুকার্য করে ফারাওদের পিরামিড সাজাত। তুতেন খামেনের পিরামিডে দুটো দুই আকারের খোপেশ পাওয়া গেছে। এগুলো ‘সিঙ্গল পিস’ ব্রোঞ্জ দিয়ে তৈরি। এর প্রথম অংশ বা হাতলের অংশটি কালো রঙের, আর দ্বিতীয় অংশটি হাতলের ওপরে—তাতে একটা পদ্মফুল খোদাই করা। তৃতীয় অংশ কাস্তের আকারে বাঁকানো। পরবর্তীতে আরও ভালো ধাতুবিদ্যা আর অস্ত্র তৈরির কৌশল আবিষ্কার হলে খোপেশকে স্বাভাবিকভাবেই রাস্তা ছেড়ে দিতে হয়। তবুও ইতিহাস একে মনে রেখেছে সভ্যতার শুরুর দিনে তার অনবদ্য অবদানের জন্য।
খুকরি
কয়েক শতাব্দী ধরে যুদ্ধের ইতিহাসে নেপালের এই ছোট্ট, একটু বাঁকা ছুরি এক ঐতিহ্যবাহী গোর্খা সেনা হাতিয়ার। অষ্টাদশ শতকের গোড়ার দিকে ইউরোপীয়রা প্রথম খুকরির প্রেমে পড়ে। এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে নেপালি গোর্খা যোদ্ধাদের সঙ্গে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সৈন্য বাহিনী সংঘর্ষে লিপ্ত হলে নেপালিদের খুকরি চালানোর দক্ষতা দেখে ব্রিটিশ কমান্ডার অকটারলোনি গোর্খাদের ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী শক্তির অন্যতম শক্তিশালী সামরিক ইউনিটে পরিণত করেন।
খুকরি বর্তমান ব্রিটিশ ও ভারতীয় আর্মিতে ‘স্ট্যান্ডার্ড ইস্যু’ অস্ত্র হিসেবে গোর্খাদের দেওয়া হয়। রয়্যাল গোর্খা বা ভারতীয় গোর্খা রেজিমেন্টের লোগো এই খুকরি। আর এই ব্লেডের স্বাদ সবচেয়ে ভালো পেয়েছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মান আফ্রিকা কোর এবং পাকিস্তান সেনাবাহিনী—বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ ও কারগিল যুদ্ধে।
ফালকাটা
ফালকাটা দুই ফুট লম্বা তরোয়াল, যা প্রাচীন স্পেনে সেল্টবেরিয়ান যোদ্ধারা ব্যবহার করত। ধাতুবিদ্যা উন্নত হওয়ার ফলে স্টিল বা লোহা নিয়ে চলতে থাকা নিরীক্ষার প্রাথমিক ফল এই অস্ত্র। হাতলের কাছে একদিকে ধার, কিন্তু মাথার দিকে দুদিকে ধারালো হয়ে থাকে ফালকাটা। একটু বাঁকা এই তরোয়াল একসঙ্গে কুঠারের চিরে দেওয়া, আর ধারালো তরোয়ালের কেটে ফেলার কাজ করত।
ফালকাটা ছিল কার্থেজের সেনাপতি হ্যানিবলের প্রিয় অস্ত্র। তিনি রোমের বিরুদ্ধে পিউনিক যুদ্ধ চলাকালে আফ্রিকান সেনাদের এই অস্ত্রে সজ্জিত করেছিলেন। কিছু ঐতিহাসিকের মতে, হাতাহাতি যুদ্ধে তরোয়ালটির কার্যকারিতা হানিবল সেনার রোমানদের বিরুদ্ধে জয়ের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে।
উলফবার্ট
এটি ভাইকিং তরোয়াল। অষ্টম শতাব্দীর শুরু থেকে ভাইকিং নৌ-যোদ্ধারা ইউরোপের সমুদ্র উপকূলীয় জনবসতিতে তাদের বর্বর আক্রমণ চালিয়ে সমগ্র এলাকায় আতঙ্ক ছড়ায়।
মোট ১৭০টি প্রাচীন উলফবার্ট তরোয়াল পাওয়া গেছে। এগুলোর মধ্যে চুয়াল্লিশটি নরওয়ে, আর একত্রিশটি ফিনল্যান্ড থেকে পাওয়া গেছে। পাগান সভ্যতার রীতি অনুযায়ী এগুলো বেশির ভাগ কবরস্থান থেকে পাওয়া। এ ছাড়া কিছু ইংল্যান্ডের মরা নদীর বুঁজে যাওয়া খাত থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
উদ্ধার করা প্রতিটি তরোয়ালে উলফবার্ট বা (+VLFBERHT+) খোদাই করা থাকত। হাতলে লেড বা দস্তার কাজ করা, আর এর ধারালো ব্লেডের অংশ হাই কার্বন স্টিল দিয়ে তৈরি। ইউরোপে শিল্প বিপ্লবের আগে কীভাবে এই উন্নত স্টিল এল, সেটাও একটা জিজ্ঞাসার বিষয়। অবশ্য কেউ বলেন, জার্মানির এক খনি থেকে; আবার কেউ বলেন আরব-পারস্য থেকে রপ্তানি করা হয়েছিল এই উন্নত স্টিল। তবে যেখান থেকেই আসুক, এই তরোয়াল কয়েক শ বছর পৃথিবীর একটা বিশাল অংশের মেরুদণ্ড দিয়ে শিরশিরে হাওয়া বইয়ে দিয়েছিল।
বোলো ছুরি
‘বোলো’ মূলত ঘাস, বাঁশ বা ফসল কাটার কাজে ব্যবহৃত ফিলিপাইনের একটি ‘মাল্টিপারপাস’ অস্ত্র। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিপ্লবীদের হাতে এটি যুদ্ধের এক দুর্দান্ত অস্ত্রে পরিণত হয়।
১৮৯৬ সালে ফিলিপাইন বিপ্লব, স্প্যানিশ-আমেরিকান যুদ্ধ, আর ফিলিপাইন-আমেরিকান যুদ্ধে ফিলিপাইনের দেশীয় গেরিলারা মূল অস্ত্র হিসেবে এ বোলোকে ব্যবহার করে। গেরিলা যুদ্ধে রাইফেল-গুলি ফুরিয়ে গেলেও এই ‘বোলোমেন’ প্রায়ই তাদের ছুরি নিয়ে যুদ্ধের মাঠে হারজিতের লড়াইয়ে মারাত্মক প্রভাব ফেলত।
এক আমেরিকান সেনা লিখেছেন, ‘তারা মানুষের জীবন নেওয়ার ক্ষেত্রে দক্ষ এবং গর্বিত। তাদের গর্বের কারণ হলো এক কোপে শরীর থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করা!’ এই ভয়ংকর ব্লেড পরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আবার অ্যাকশনে এসেছিল। বর্তমানে ফিলিপিনো মার্শাল আর্টে এটি একটি সাধারণ অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার হয়।
কাতানা
জাপানের মধ্যযুগীয় ইতিহাসের আইকোনিক অস্ত্র এটি। কয়েক শতাব্দী ধরে এই বাঁকা, এক ধারযুক্ত ব্লেডগুলো সামুরাই যোদ্ধাদের পছন্দের অস্ত্র ছিল। জাপানের বীর যোদ্ধারা তাদের রাজাদের দেশ জয়ের স্বপ্ন পূরণ করেছিল এই তরোয়াল দিয়ে। ৮০০ বছর আগে সেরা সামুরাই তার কাতানা তরোয়ালের হালকা-ক্ষিপ্র আঘাতে শত্রুর মুণ্ডু ধড় থেকে আলাদা করার দক্ষতাকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিল।
কিংবদন্তি ‘হোনজো মাসামুনে’কে শ্রেষ্ঠ কাতানা তরোয়াল বলে মনে করা হয়। সম্ভবত তেরো শতকে এর সৃষ্টি। তারপর অনেক বীরের হাত ঘুরে এই তরোয়াল ষোলো শতকে বীর যোদ্ধা হনজো শিগেনাগার হাতে আসে। পরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষে অদৃশ্য হয়ে যায়। সম্ভবত কোনো আমেরিকান সেনা অফিসার সেটাকে চুরি করে নিয়ে যায় বা নষ্ট করে ফেলে। প্রচুর অনুসন্ধান করেও জাপানের এই মূল্যবান জাতীয় নিদর্শনটি আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।
বুয়ি নাইফ
জিম বুয়ি এক আমেরিকান-ইউরোপিয়ান দাস ব্যবসায়ী এবং মারপিটের জন্য বিখ্যাত মানুষ। তাঁর নামে এই চাকুও বিখ্যাত। জিম বুয়ি এ ধরনের একটা চাকু দিয়েই ডুয়েল বা হাতাহাতি লড়াইয় জেতেন।
‘বুয়ি নাইফ’ খবরের কাগজ আর বিজ্ঞাপনের দৌলতে বিশ্ববিখ্যাত হয়ে ওঠে। আসলে এটা ‘বুচার নাইফ’ বা আমাদের কসাইদের হাতে যেমন ছুরি দেখি, সেই জিনিস। তবে এর একটি ‘স্পেশাল ডিজাইন’ বুয়ি নিজে এক কামারশালায় অর্ডার দিয়ে বানিয়েছিলেন। ধারণা করা হয়, সেখান থেকেই এই নাম।
টেক্সাস দখল করতে আমেরিকানরা যে যুদ্ধ করে, তাতে এই চাকুর বহুল ব্যবহার হয়। বুয়ি নিজেও টেক্সাস রেভ্যুলিউশনে যোগ দেন এবং নিহত হন। তারপরও ম্যাক্সিকান যুদ্ধ, ক্যালিফোর্নিয়ার সোনার খোঁজে ‘গোল্ডরাশ’, কানসাসে জনযুদ্ধ, পরে আমেরিকান রেড ইন্ডিয়ানদের সঙ্গে ঝামেলা—এসবেও বুয়ি নাইফ কাজে লাগে। মজার ব্যাপার হলো, আব্রাহাম লিঙ্কনকে হত্যা করার সময় হত্যাকারী জন উইলকিস বুথ পালানোর সময় একটা বুয়ি নাইফ ফেলে পালিয়েছিল। পিস্তল বা রিভলবার সহজলভ্য হওয়ার আগ পর্যন্ত আমেরিকান হাতাহাতি বা সাহিত্য সবখানেই এর উপস্থিতি একে কল্পনার জগতে নিয়ে গেছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আমেরিকান মেরিন কোরের ‘কা-বার’ ছুরি এ বুয়ি নাইফের বংশধর। আমেরিকান অস্ত্র কোম্পানি আর্নেস্ট এমারশন বুয়ি নাইফের ছবি তাদের লোগোতে ব্যবহার করে। এই কোম্পানি নাসার মহাকাশ যাত্রীদের জন্য চাকু বানায়! আমেরিকান আর্মির ৩৯ নম্বর ইনফ্যান্ট্রি ব্রিগেড টিমের লোগো এই বুয়ি নাইফ! ভারতের এয়ার ফোর্স পাইলটদের সার্ভাইভাল কিটের মধ্যেও এই বুয়ি নাইফ থাকে।
জাইফোস (ক্ষিপোস)
এটি দুদিকে ধারালো গ্রিক তরোয়াল। দৈর্ঘ্য দেড় থেকে দুই ফুট, সোজা, ওজন এক কেজির কম। আলেক্সান্ডার তাঁর ম্যাসিডনের আর্মি নিয়ে সারা মধ্যপ্রাচ্য লুট করে ভারত পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছিলেন এই তরোয়াল হাতে নিয়েই।
আসলে গ্রিকদের কাছে এটা ছিল সাহায্যকারী অস্ত্র। স্পিয়ার বা বল্লম ওদের প্রধান অস্ত্র ছিল। কিন্তু কোনোভাবে বল্লম ভেঙে গেলে বা হাত থেকে ছিটকে গেলে, তখন কোমরে ঝোলানো জাইফোস বের করে, হা রে! রে! রে! করে শত্রুর ঘাড়ে লাফিয়ে পড়ত তারা।
শব্দটা যেমন মিসরের খোপেশের কাছাকাছি, তেমনি টেকনোলজিও। এই অস্ত্র ব্রোঞ্জ যুগের ডিজাইন। মাঝখানটা মোটা আর দুই ধার সরু। ব্লেড বেশি লম্বা নয়। কারণ ব্রোঞ্জের শক্তি কম। ভারতীয় যুদ্ধ শাস্ত্রে এ ধরনের অস্ত্র দেখা যায় না। এর কারণ হয়তো ভারতবর্ষের উন্নত ধাতুবিদ্যা। অবশ্য এখানকার খড়্গ বা খাঁড়া দেখতে অনেকটা এর কাছাকাছি।
স্পার্টার যোদ্ধারা যে গ্লডিয়াস ব্যবহার করত, সেটা এরই চাচাতো ভাই! যে কয়েকখানা জাইফোস উদ্ধার হয়েছে, তা প্রায় সবই কবরখানা থেকে। তার মানে যোদ্ধাদের সমাধিতে জাইফোস রাখা হতো। অর্থাৎ, গ্রিকদেরও ভূতের ভয় ছিল!

বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক থেকে শুরু করে স্বামী-স্ত্রীর ব্যক্তিগত ঝগড়া—সবকিছুতেই এখন থেকে গুনতে হবে মোটা অঙ্কের জরিমানা। চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইউনান প্রদেশের লিংক্যাং গ্রামের কমিটি এমন নিয়ম জারি করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘গ্রামের নিয়মাবলি: সবাই সমান’ শিরোনামের একটি নোটিশ ভাইরাল হওয়ার...
১ দিন আগে
ইতালির আব্রুজ্জো অঞ্চলের মাউন্ট জিরিফালকোর পাদদেশে অবস্থিত এক প্রাচীন গ্রাম পালিয়ারা দে মার্সি। জনশূন্য এই গ্রামে মানুষের চেয়ে বিড়ালের সংখ্যাই বেশি। গত কয়েক দশক ধরে গ্রামটি নিস্তব্ধতায় ডুবে ছিল, কিন্তু গত মার্চ মাস থেকে সেখানে বইছে খুশির জোয়ার। কারণ, দীর্ঘ ৩০ বছর পর এই গ্রামে প্রথম কোনো শিশুর জন্ম
২ দিন আগে
ক্যালিফোর্নিয়ার সুজ লোপেজ যখন তাঁর ছোট ছেলে রিউকে কোলে নিয়ে বসেন, তখন এক অলৌকিক বিস্ময়ে স্তব্ধ হয়ে যান। কারণ, ছোট্ট রিউ তাঁর মায়ের জরায়ুর ভেতরে নয়, বেড়ে উঠেছিল পেটের ভেতরে একটি বিশাল আকৃতির ওভারিয়ান সিস্টের আড়ালে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং বিরল এই ঘটনাকে ‘মিরাকল’ বা অলৌকিক বলছেন চিকিৎ
৪ দিন আগে
তুরস্কের একটি আদালত এক চাঞ্চল্যকর রায়ে জানিয়েছেন, স্ত্রী ছাড়া অন্য নারীদের অনলাইন পোস্টে স্বামীর বারবার ‘লাইক’ দেওয়া বৈবাহিক বিশ্বাস নষ্ট করতে পারে এবং তা বিবাহবিচ্ছেদের ভিত্তি হিসেবে গণ্য হতে পারে। মধ্যতুরস্কের কায়সেরি শহরের একটি মামলায় এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত এসেছে।
৪ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক থেকে শুরু করে স্বামী-স্ত্রীর ব্যক্তিগত ঝগড়া—সবকিছুতেই এখন থেকে গুনতে হবে মোটা অঙ্কের জরিমানা। চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইউনান প্রদেশের লিংক্যাং গ্রামের কমিটি এমন নিয়ম জারি করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘গ্রামের নিয়মাবলি: সবাই সমান’ শিরোনামের একটি নোটিশ ভাইরাল হওয়ার পর শুরু হয়েছে তীব্র সমালোচনা ও বিতর্ক।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গ্রামের শৃঙ্খলা বজায় রাখার নামে ব্যক্তিগত স্বাধীনতার ওপর একাধিক বিধিনিষেধ আরোপ করেছে স্থানীয় গ্রাম কমিটি। ভাইরাল হওয়া ছবির ভিত্তিতে জরিমানার তালিকাটি নিচে দেওয়া হলো:
প্রাদেশিক বৈষম্য: ইউনান প্রদেশের বাইরের কাউকে বিয়ে করলে দম্পতিকে ১ হাজার ৫০০ ইউয়ান (প্রায় ২৩,০০০ টাকা) জরিমানা দিতে হবে।
বিয়ের আগে গর্ভধারণ: কোনো নারী বিয়ের আগে গর্ভবতী হলে তাঁকে ৩ হাজার ইউয়ান জরিমানার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
লিভ ইন রিলেশন: বিয়ে ছাড়াই কোনো যুগল একত্রে বসবাস করলে প্রতিবছর ৫০০ ইউয়ান জরিমানা দিতে হবে।
সন্তান জন্মের সময়: বিয়ের মাত্র ১০ মাসের মধ্যে কোনো দম্পতি সন্তান জন্ম দিলে তাঁকে ‘অকাল গর্ভধারণ’ হিসেবে গণ্য করে ৩ হাজার ইউয়ান জরিমানা করা হবে।
পারিবারিক কলহ: স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হলে এবং তা মেটাতে গ্রাম কর্তাদের ডাকলে উভয় পক্ষকে ৫০০ ইউয়ান করে জরিমানা দিতে হবে।
সামাজিক আচরণ: মদ্যপ অবস্থায় বিশৃঙ্খলা করলে ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার ইউয়ান এবং গুজব ছড়ালে ১ হাজার ইউয়ান পর্যন্ত জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
চীনের জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘উইবো’-তে এই নোটিশ শেয়ার হওয়ার পর নেটিজেনরা ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন। অনেক ব্যবহারকারী মন্তব্য করেছেন, ‘গ্রাম কমিটি কি এখন মানুষের শোবার ঘরের পাহারাদার হতে চায়?’ কেউ কেউ এটিকে মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছেন। সমালোচকদের মতে, আধুনিক চীনের আইনি কাঠামোয় এ ধরনের নিয়মাবলি সম্পূর্ণ অবৈধ এবং মধ্যযুগীয় বর্বরতার শামিল।
বিতর্ক তুঙ্গে উঠলে স্থানীয় মেংডিং টাউন সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নেয়। ১৬ ডিসেম্বর রেড স্টার নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রশাসনের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, নোটিশটি গ্রাম কমিটির নিজস্ব উদ্যোগে টাঙানো হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘এই নিয়মগুলো অত্যন্ত অস্বাভাবিক এবং ইউনিয়ন বা টাউন সরকারের কাছ থেকে কোনো প্রকার পূর্বানুমতি নেওয়া হয়নি। আমরা ইতিমধ্যেই নোটিশটি সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছি এবং এটি এখন কার্যকর নেই।’
লিংক্যাং গ্রামটির জনসংখ্যা বা বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাওয়া না গেলেও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, চীনের অনেক প্রত্যন্ত অঞ্চলে গ্রাম কমিটিগুলো নিজেদের ছোটখাটো ‘রাজা’ মনে করে এ ধরনের অবৈধ নিয়ম জারি করে থাকে। এই ঘটনাটি চীনের গ্রামীণ স্বায়ত্তশাসনের সীমাবদ্ধতা এবং সাধারণ মানুষের আইনি অধিকার রক্ষার প্রয়োজনীয়তাকে আবারও সামনে নিয়ে এসেছে।

বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক থেকে শুরু করে স্বামী-স্ত্রীর ব্যক্তিগত ঝগড়া—সবকিছুতেই এখন থেকে গুনতে হবে মোটা অঙ্কের জরিমানা। চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইউনান প্রদেশের লিংক্যাং গ্রামের কমিটি এমন নিয়ম জারি করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘গ্রামের নিয়মাবলি: সবাই সমান’ শিরোনামের একটি নোটিশ ভাইরাল হওয়ার পর শুরু হয়েছে তীব্র সমালোচনা ও বিতর্ক।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গ্রামের শৃঙ্খলা বজায় রাখার নামে ব্যক্তিগত স্বাধীনতার ওপর একাধিক বিধিনিষেধ আরোপ করেছে স্থানীয় গ্রাম কমিটি। ভাইরাল হওয়া ছবির ভিত্তিতে জরিমানার তালিকাটি নিচে দেওয়া হলো:
প্রাদেশিক বৈষম্য: ইউনান প্রদেশের বাইরের কাউকে বিয়ে করলে দম্পতিকে ১ হাজার ৫০০ ইউয়ান (প্রায় ২৩,০০০ টাকা) জরিমানা দিতে হবে।
বিয়ের আগে গর্ভধারণ: কোনো নারী বিয়ের আগে গর্ভবতী হলে তাঁকে ৩ হাজার ইউয়ান জরিমানার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
লিভ ইন রিলেশন: বিয়ে ছাড়াই কোনো যুগল একত্রে বসবাস করলে প্রতিবছর ৫০০ ইউয়ান জরিমানা দিতে হবে।
সন্তান জন্মের সময়: বিয়ের মাত্র ১০ মাসের মধ্যে কোনো দম্পতি সন্তান জন্ম দিলে তাঁকে ‘অকাল গর্ভধারণ’ হিসেবে গণ্য করে ৩ হাজার ইউয়ান জরিমানা করা হবে।
পারিবারিক কলহ: স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হলে এবং তা মেটাতে গ্রাম কর্তাদের ডাকলে উভয় পক্ষকে ৫০০ ইউয়ান করে জরিমানা দিতে হবে।
সামাজিক আচরণ: মদ্যপ অবস্থায় বিশৃঙ্খলা করলে ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার ইউয়ান এবং গুজব ছড়ালে ১ হাজার ইউয়ান পর্যন্ত জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
চীনের জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘উইবো’-তে এই নোটিশ শেয়ার হওয়ার পর নেটিজেনরা ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন। অনেক ব্যবহারকারী মন্তব্য করেছেন, ‘গ্রাম কমিটি কি এখন মানুষের শোবার ঘরের পাহারাদার হতে চায়?’ কেউ কেউ এটিকে মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছেন। সমালোচকদের মতে, আধুনিক চীনের আইনি কাঠামোয় এ ধরনের নিয়মাবলি সম্পূর্ণ অবৈধ এবং মধ্যযুগীয় বর্বরতার শামিল।
বিতর্ক তুঙ্গে উঠলে স্থানীয় মেংডিং টাউন সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নেয়। ১৬ ডিসেম্বর রেড স্টার নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রশাসনের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, নোটিশটি গ্রাম কমিটির নিজস্ব উদ্যোগে টাঙানো হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘এই নিয়মগুলো অত্যন্ত অস্বাভাবিক এবং ইউনিয়ন বা টাউন সরকারের কাছ থেকে কোনো প্রকার পূর্বানুমতি নেওয়া হয়নি। আমরা ইতিমধ্যেই নোটিশটি সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছি এবং এটি এখন কার্যকর নেই।’
লিংক্যাং গ্রামটির জনসংখ্যা বা বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাওয়া না গেলেও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, চীনের অনেক প্রত্যন্ত অঞ্চলে গ্রাম কমিটিগুলো নিজেদের ছোটখাটো ‘রাজা’ মনে করে এ ধরনের অবৈধ নিয়ম জারি করে থাকে। এই ঘটনাটি চীনের গ্রামীণ স্বায়ত্তশাসনের সীমাবদ্ধতা এবং সাধারণ মানুষের আইনি অধিকার রক্ষার প্রয়োজনীয়তাকে আবারও সামনে নিয়ে এসেছে।

কিছু ধারালো ব্লেড বা অস্ত্র আছে, যা পৃথিবীর বুক চিরে ইতিহাস লিখেছে। এই ধারালো ব্লেডগুলো দুর্বল মানুষের মনে ভয় আর সবল জাতির ক্ষমতার মোহকে অনুপ্রাণিত করে এসেছে কয়েক হাজার বছর ধরে। তার কিছু উদাহরণ তুলে ধরা যাক।
২১ জুলাই ২০২১
ইতালির আব্রুজ্জো অঞ্চলের মাউন্ট জিরিফালকোর পাদদেশে অবস্থিত এক প্রাচীন গ্রাম পালিয়ারা দে মার্সি। জনশূন্য এই গ্রামে মানুষের চেয়ে বিড়ালের সংখ্যাই বেশি। গত কয়েক দশক ধরে গ্রামটি নিস্তব্ধতায় ডুবে ছিল, কিন্তু গত মার্চ মাস থেকে সেখানে বইছে খুশির জোয়ার। কারণ, দীর্ঘ ৩০ বছর পর এই গ্রামে প্রথম কোনো শিশুর জন্ম
২ দিন আগে
ক্যালিফোর্নিয়ার সুজ লোপেজ যখন তাঁর ছোট ছেলে রিউকে কোলে নিয়ে বসেন, তখন এক অলৌকিক বিস্ময়ে স্তব্ধ হয়ে যান। কারণ, ছোট্ট রিউ তাঁর মায়ের জরায়ুর ভেতরে নয়, বেড়ে উঠেছিল পেটের ভেতরে একটি বিশাল আকৃতির ওভারিয়ান সিস্টের আড়ালে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং বিরল এই ঘটনাকে ‘মিরাকল’ বা অলৌকিক বলছেন চিকিৎ
৪ দিন আগে
তুরস্কের একটি আদালত এক চাঞ্চল্যকর রায়ে জানিয়েছেন, স্ত্রী ছাড়া অন্য নারীদের অনলাইন পোস্টে স্বামীর বারবার ‘লাইক’ দেওয়া বৈবাহিক বিশ্বাস নষ্ট করতে পারে এবং তা বিবাহবিচ্ছেদের ভিত্তি হিসেবে গণ্য হতে পারে। মধ্যতুরস্কের কায়সেরি শহরের একটি মামলায় এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত এসেছে।
৪ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ইতালির আব্রুজ্জো অঞ্চলের মাউন্ট জিরিফালকোর পাদদেশে অবস্থিত এক প্রাচীন গ্রাম পালিয়ারা দে মার্সি। জনশূন্য এই গ্রামে মানুষের চেয়ে বিড়ালের সংখ্যাই বেশি। গত কয়েক দশক ধরে গ্রামটি নিস্তব্ধতায় ডুবে ছিল, কিন্তু গত মার্চ মাস থেকে সেখানে বইছে খুশির জোয়ার। কারণ, দীর্ঘ ৩০ বছর পর এই গ্রামে প্রথম কোনো শিশুর জন্ম হয়েছে।
লারা বুসি ত্রাবুক্কো নামের এই শিশুটির আগমনে গ্রামের জনসংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ জনে। তার খ্রিষ্টধর্মে দীক্ষাদান অনুষ্ঠানে পুরো গ্রাম ভেঙে পড়েছিল। এমনকি ৯ মাস বয়সী লারা এখন ওই অঞ্চলের প্রধান পর্যটন আকর্ষণে পরিণত হয়েছে। লারার মা সিনজিয়া ত্রাবুক্কো বলেন, ‘যারা আগে এই গ্রামের নামও জানত না, তারাও এখন লারাকে দেখতে আসছে।’
লারার জন্ম এক দিকে যেমন আশার প্রতীক, অন্য দিকে এটি ইতালির ভয়াবহ জনসংখ্যা হ্রাসের চিত্রকেও ফুটিয়ে তুলেছে।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে ইতালিতে জন্মহার সর্বকালের সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে (৩,৬৯,৯৪৪ জন)। প্রজনন হার প্রতি নারী পিছু মাত্র ১.১৮, যা ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে অন্যতম সর্বনিম্ন।
২০২৫ সালের প্রথম সাত মাসের উপাত্ত অনুযায়ী, আব্রুজ্জো অঞ্চলে জন্মহার গত বছরের তুলনায় আরও ১০.২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
বিশেষজ্ঞ ও স্থানীয় বাসিন্দারা এই পরিস্থিতির জন্য একাধিক কারণকে দায়ী করেছেন। এরমধ্যে রয়েছে—তরুণ প্রজন্মের মধ্যে কর্মসংস্থানের অভাব ও দেশত্যাগের প্রবণতা। কর্মজীবী মায়েদের জন্য ডে-কেয়ার বা নার্সারির অভাব। অনেক নারী মা হওয়ার পর আর কর্মক্ষেত্রে ফিরতে পারেন না। পুরুষদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বন্ধ্যাত্ব এবং অনেকের সন্তান না নেওয়ার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। ট্যাক্স বেশি হলেও সেই অনুযায়ী সামাজিক সেবা বা উন্নত জীবনযাত্রার অভাব।
জর্জিয়া মেলোনির সরকার এই পরিস্থিতিকে ‘জনসংখ্যার শীতকাল’ (Demographic Winter) হিসেবে অভিহিত করেছে। সংকট মোকাবিলায় ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে প্রতিটি শিশুর জন্মের পর এককালীন ১ হাজার ইউরো ‘বেবি বোনাস’ এবং প্রতি মাসে প্রায় ৩৭০ ইউরো শিশু ভাতা দেওয়ার নিয়ম চালু করা হয়েছে। তবে লারার মায়ের মতে, শুধু অর্থ দিয়ে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়; পুরো ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন প্রয়োজন।
এদিকে, জনসংখ্যা কমে যাওয়ায় অনেক শহরে প্রসূতি বিভাগ (Maternity Unit) বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। পালিয়ারা দে মার্সি থেকে এক ঘণ্টার দূরত্বে অবস্থিত সুলমোনা শহরের হাসপাতালটি এখন বন্ধের ঝুঁকিতে। নিয়ম অনুযায়ী বছরে অন্তত ৫০০ শিশুর জন্ম না হলে সেই ইউনিট চালু রাখা কঠিন। ২০২৪ সালে সেখানে মাত্র ১২০টি শিশুর জন্ম হয়েছে। এটি বন্ধ হয়ে গেলে গর্ভবতী নারীদের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে অন্য শহরে যেতে হবে, যা জরুরি অবস্থায় অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
গ্রামের মেয়র জিউসেপিনা পেরোজি আশা প্রকাশ করেন, লারার জন্ম অন্যদেরও পরিবার গঠনে অনুপ্রাণিত করবে। কিন্তু লারার ভবিষ্যৎ শিক্ষা নিয়ে দুশ্চিন্তা রয়েই গেছে। গ্রামটিতে কয়েক দশক ধরে কোনো শিক্ষক নেই, এবং পার্শ্ববর্তী গ্রামের স্কুলগুলোও শিক্ষার্থীর অভাবে বন্ধ হওয়ার পথে।

ইতালির আব্রুজ্জো অঞ্চলের মাউন্ট জিরিফালকোর পাদদেশে অবস্থিত এক প্রাচীন গ্রাম পালিয়ারা দে মার্সি। জনশূন্য এই গ্রামে মানুষের চেয়ে বিড়ালের সংখ্যাই বেশি। গত কয়েক দশক ধরে গ্রামটি নিস্তব্ধতায় ডুবে ছিল, কিন্তু গত মার্চ মাস থেকে সেখানে বইছে খুশির জোয়ার। কারণ, দীর্ঘ ৩০ বছর পর এই গ্রামে প্রথম কোনো শিশুর জন্ম হয়েছে।
লারা বুসি ত্রাবুক্কো নামের এই শিশুটির আগমনে গ্রামের জনসংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ জনে। তার খ্রিষ্টধর্মে দীক্ষাদান অনুষ্ঠানে পুরো গ্রাম ভেঙে পড়েছিল। এমনকি ৯ মাস বয়সী লারা এখন ওই অঞ্চলের প্রধান পর্যটন আকর্ষণে পরিণত হয়েছে। লারার মা সিনজিয়া ত্রাবুক্কো বলেন, ‘যারা আগে এই গ্রামের নামও জানত না, তারাও এখন লারাকে দেখতে আসছে।’
লারার জন্ম এক দিকে যেমন আশার প্রতীক, অন্য দিকে এটি ইতালির ভয়াবহ জনসংখ্যা হ্রাসের চিত্রকেও ফুটিয়ে তুলেছে।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে ইতালিতে জন্মহার সর্বকালের সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে (৩,৬৯,৯৪৪ জন)। প্রজনন হার প্রতি নারী পিছু মাত্র ১.১৮, যা ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে অন্যতম সর্বনিম্ন।
২০২৫ সালের প্রথম সাত মাসের উপাত্ত অনুযায়ী, আব্রুজ্জো অঞ্চলে জন্মহার গত বছরের তুলনায় আরও ১০.২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
বিশেষজ্ঞ ও স্থানীয় বাসিন্দারা এই পরিস্থিতির জন্য একাধিক কারণকে দায়ী করেছেন। এরমধ্যে রয়েছে—তরুণ প্রজন্মের মধ্যে কর্মসংস্থানের অভাব ও দেশত্যাগের প্রবণতা। কর্মজীবী মায়েদের জন্য ডে-কেয়ার বা নার্সারির অভাব। অনেক নারী মা হওয়ার পর আর কর্মক্ষেত্রে ফিরতে পারেন না। পুরুষদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বন্ধ্যাত্ব এবং অনেকের সন্তান না নেওয়ার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। ট্যাক্স বেশি হলেও সেই অনুযায়ী সামাজিক সেবা বা উন্নত জীবনযাত্রার অভাব।
জর্জিয়া মেলোনির সরকার এই পরিস্থিতিকে ‘জনসংখ্যার শীতকাল’ (Demographic Winter) হিসেবে অভিহিত করেছে। সংকট মোকাবিলায় ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে প্রতিটি শিশুর জন্মের পর এককালীন ১ হাজার ইউরো ‘বেবি বোনাস’ এবং প্রতি মাসে প্রায় ৩৭০ ইউরো শিশু ভাতা দেওয়ার নিয়ম চালু করা হয়েছে। তবে লারার মায়ের মতে, শুধু অর্থ দিয়ে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়; পুরো ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন প্রয়োজন।
এদিকে, জনসংখ্যা কমে যাওয়ায় অনেক শহরে প্রসূতি বিভাগ (Maternity Unit) বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। পালিয়ারা দে মার্সি থেকে এক ঘণ্টার দূরত্বে অবস্থিত সুলমোনা শহরের হাসপাতালটি এখন বন্ধের ঝুঁকিতে। নিয়ম অনুযায়ী বছরে অন্তত ৫০০ শিশুর জন্ম না হলে সেই ইউনিট চালু রাখা কঠিন। ২০২৪ সালে সেখানে মাত্র ১২০টি শিশুর জন্ম হয়েছে। এটি বন্ধ হয়ে গেলে গর্ভবতী নারীদের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে অন্য শহরে যেতে হবে, যা জরুরি অবস্থায় অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
গ্রামের মেয়র জিউসেপিনা পেরোজি আশা প্রকাশ করেন, লারার জন্ম অন্যদেরও পরিবার গঠনে অনুপ্রাণিত করবে। কিন্তু লারার ভবিষ্যৎ শিক্ষা নিয়ে দুশ্চিন্তা রয়েই গেছে। গ্রামটিতে কয়েক দশক ধরে কোনো শিক্ষক নেই, এবং পার্শ্ববর্তী গ্রামের স্কুলগুলোও শিক্ষার্থীর অভাবে বন্ধ হওয়ার পথে।

কিছু ধারালো ব্লেড বা অস্ত্র আছে, যা পৃথিবীর বুক চিরে ইতিহাস লিখেছে। এই ধারালো ব্লেডগুলো দুর্বল মানুষের মনে ভয় আর সবল জাতির ক্ষমতার মোহকে অনুপ্রাণিত করে এসেছে কয়েক হাজার বছর ধরে। তার কিছু উদাহরণ তুলে ধরা যাক।
২১ জুলাই ২০২১
বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক থেকে শুরু করে স্বামী-স্ত্রীর ব্যক্তিগত ঝগড়া—সবকিছুতেই এখন থেকে গুনতে হবে মোটা অঙ্কের জরিমানা। চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইউনান প্রদেশের লিংক্যাং গ্রামের কমিটি এমন নিয়ম জারি করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘গ্রামের নিয়মাবলি: সবাই সমান’ শিরোনামের একটি নোটিশ ভাইরাল হওয়ার...
১ দিন আগে
ক্যালিফোর্নিয়ার সুজ লোপেজ যখন তাঁর ছোট ছেলে রিউকে কোলে নিয়ে বসেন, তখন এক অলৌকিক বিস্ময়ে স্তব্ধ হয়ে যান। কারণ, ছোট্ট রিউ তাঁর মায়ের জরায়ুর ভেতরে নয়, বেড়ে উঠেছিল পেটের ভেতরে একটি বিশাল আকৃতির ওভারিয়ান সিস্টের আড়ালে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং বিরল এই ঘটনাকে ‘মিরাকল’ বা অলৌকিক বলছেন চিকিৎ
৪ দিন আগে
তুরস্কের একটি আদালত এক চাঞ্চল্যকর রায়ে জানিয়েছেন, স্ত্রী ছাড়া অন্য নারীদের অনলাইন পোস্টে স্বামীর বারবার ‘লাইক’ দেওয়া বৈবাহিক বিশ্বাস নষ্ট করতে পারে এবং তা বিবাহবিচ্ছেদের ভিত্তি হিসেবে গণ্য হতে পারে। মধ্যতুরস্কের কায়সেরি শহরের একটি মামলায় এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত এসেছে।
৪ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ক্যালিফোর্নিয়ার সুজ লোপেজ যখন তাঁর ছোট ছেলে রিউকে কোলে নিয়ে বসেন, তখন এক অলৌকিক বিস্ময়ে স্তব্ধ হয়ে যান। কারণ, ছোট্ট রিউ তাঁর মায়ের জরায়ুর ভেতরে নয়, বেড়ে উঠেছিল পেটের ভেতরে একটি বিশাল আকৃতির ওভারিয়ান সিস্টের আড়ালে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং বিরল এই ঘটনাকে ‘মিরাকল’ বা অলৌকিক বলছেন চিকিৎসকেরা।
লস অ্যাঞ্জেলেসের সিডারস-সিনাই মেডিকেল সেন্টারের প্রসূতি ও প্রসব বিভাগের মেডিকেল ডিরেক্টর ড. জন ওজিমেক এপিকে বলেন, ‘প্রতি ৩০ হাজার গর্ভাবস্থার মধ্যে মাত্র একটি জরায়ুর বাইরে পেটের ভেতরে (Abdominal Pregnancy) ঘটে। আর পূর্ণ মেয়াদে সুস্থ শিশু জন্ম দেওয়ার ঘটনা ১ কোটিতে একজনের ক্ষেত্রেও দেখা যায় না। এটি সত্যিই অবিশ্বাস্য।’
৪১ বছর বয়সী সুজ লোপেজ পেশায় একজন নার্স। আশ্চর্যের বিষয় হলো, সন্তান জন্ম দেওয়ার মাত্র কয়েক দিন আগ পর্যন্ত তিনি জানতেনই না যে তিনি অন্তঃসত্ত্বা।
সুজ দীর্ঘদিন ধরে ওভারিয়ান সিস্টের সমস্যায় ভুগছিলেন। যখন তাঁর পেট বড় হতে শুরু করে, তিনি ভেবেছিলেন, এটি ২১ পাউন্ড ওজনের সেই সিস্টেরই বৃদ্ধি।
সাধারণ গর্ভাবস্থার কোনো লক্ষণ; যেমন সকালবেলায় অসুস্থতা বোধ করা (Morning Sickness) বা শিশুর নড়াচড়া—কিছুই তিনি অনুভব করেননি। অনিয়মিত পিরিয়ডের কারণে ঋতুস্রাব বন্ধ হওয়াকেও তিনি স্বাভাবিক ধরে নিয়েছিলেন।
অবশেষে পেটে অসহ্য ব্যথা শুরু হলে তিনি সিস্ট অপসারণের জন্য চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। সেখানে সিটি স্ক্যান করার আগে বাধ্যতামূলক গর্ভাবস্থা পরীক্ষায় ফল ‘পজিটিভ’ আসে।
হাসপাতালে আলট্রাসাউন্ড এবং এমআরআই স্ক্যানে দেখা যায়, সুজের জরায়ু সম্পূর্ণ খালি। অথচ একটি পূর্ণাঙ্গ ভ্রূণ তাঁর লিভারের কাছে পেটের এক কোণে অ্যামনিওটিক থ্যাকের ভেতরে বেড়ে উঠছে। ড. ওজিমেক জানান, ভ্রূণটি লিভারের মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গকে সরাসরি আক্রান্ত করেনি, বরং পেলভিসের পাশের দেয়ালে গেঁথে ছিল। এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক হলেও লিভারের তুলনায় কিছুটা নিয়ন্ত্রণযোগ্য ছিল।
গত ১৮ আগস্ট এক জটিল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ৮ পাউন্ড (৩.৬ কেজি) ওজনের রিউকে পৃথিবীতে আনা হয়। অস্ত্রোপচারের সময় সুজের সেই বিশাল সিস্টটিও অপসারণ করা হয়। অত্যধিক রক্তক্ষরণ হলেও চিকিৎসকদের দক্ষতায় সুজ এবং তাঁর সন্তান দুজনেই সুস্থভাবে ফিরে আসেন।
সুজের স্বামী অ্যান্ড্রু লোপেজ বলেন, ‘বাইরে শান্ত থাকলেও আমি ভেতরে-ভেতরে প্রার্থনা করছিলাম। যেকোনো মুহূর্তে স্ত্রী বা সন্তানকে হারানোর ভয় আমাকে তাড়া করছিল।’
বর্তমানে রিউ সম্পূর্ণ সুস্থ এবং প্রাণচঞ্চল। নিজের ১৮ বছর বয়সী বড় বোন কাইলার সঙ্গে তার খুনসুটি লেগেই থাকে। সামনেই রিউয়ের প্রথম বড়দিন। সুজ লোপেজ আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, ‘আমি এখন অলৌকিক ঘটনায় বিশ্বাস করি। ঈশ্বর আমাদের জীবনের সেরা উপহারটি দিয়েছেন।’
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, এই কেস এতই বিরল যে তাঁরা এটি একটি মেডিকেল জার্নালে প্রকাশের পরিকল্পনা করছেন।

ক্যালিফোর্নিয়ার সুজ লোপেজ যখন তাঁর ছোট ছেলে রিউকে কোলে নিয়ে বসেন, তখন এক অলৌকিক বিস্ময়ে স্তব্ধ হয়ে যান। কারণ, ছোট্ট রিউ তাঁর মায়ের জরায়ুর ভেতরে নয়, বেড়ে উঠেছিল পেটের ভেতরে একটি বিশাল আকৃতির ওভারিয়ান সিস্টের আড়ালে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং বিরল এই ঘটনাকে ‘মিরাকল’ বা অলৌকিক বলছেন চিকিৎসকেরা।
লস অ্যাঞ্জেলেসের সিডারস-সিনাই মেডিকেল সেন্টারের প্রসূতি ও প্রসব বিভাগের মেডিকেল ডিরেক্টর ড. জন ওজিমেক এপিকে বলেন, ‘প্রতি ৩০ হাজার গর্ভাবস্থার মধ্যে মাত্র একটি জরায়ুর বাইরে পেটের ভেতরে (Abdominal Pregnancy) ঘটে। আর পূর্ণ মেয়াদে সুস্থ শিশু জন্ম দেওয়ার ঘটনা ১ কোটিতে একজনের ক্ষেত্রেও দেখা যায় না। এটি সত্যিই অবিশ্বাস্য।’
৪১ বছর বয়সী সুজ লোপেজ পেশায় একজন নার্স। আশ্চর্যের বিষয় হলো, সন্তান জন্ম দেওয়ার মাত্র কয়েক দিন আগ পর্যন্ত তিনি জানতেনই না যে তিনি অন্তঃসত্ত্বা।
সুজ দীর্ঘদিন ধরে ওভারিয়ান সিস্টের সমস্যায় ভুগছিলেন। যখন তাঁর পেট বড় হতে শুরু করে, তিনি ভেবেছিলেন, এটি ২১ পাউন্ড ওজনের সেই সিস্টেরই বৃদ্ধি।
সাধারণ গর্ভাবস্থার কোনো লক্ষণ; যেমন সকালবেলায় অসুস্থতা বোধ করা (Morning Sickness) বা শিশুর নড়াচড়া—কিছুই তিনি অনুভব করেননি। অনিয়মিত পিরিয়ডের কারণে ঋতুস্রাব বন্ধ হওয়াকেও তিনি স্বাভাবিক ধরে নিয়েছিলেন।
অবশেষে পেটে অসহ্য ব্যথা শুরু হলে তিনি সিস্ট অপসারণের জন্য চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। সেখানে সিটি স্ক্যান করার আগে বাধ্যতামূলক গর্ভাবস্থা পরীক্ষায় ফল ‘পজিটিভ’ আসে।
হাসপাতালে আলট্রাসাউন্ড এবং এমআরআই স্ক্যানে দেখা যায়, সুজের জরায়ু সম্পূর্ণ খালি। অথচ একটি পূর্ণাঙ্গ ভ্রূণ তাঁর লিভারের কাছে পেটের এক কোণে অ্যামনিওটিক থ্যাকের ভেতরে বেড়ে উঠছে। ড. ওজিমেক জানান, ভ্রূণটি লিভারের মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গকে সরাসরি আক্রান্ত করেনি, বরং পেলভিসের পাশের দেয়ালে গেঁথে ছিল। এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক হলেও লিভারের তুলনায় কিছুটা নিয়ন্ত্রণযোগ্য ছিল।
গত ১৮ আগস্ট এক জটিল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ৮ পাউন্ড (৩.৬ কেজি) ওজনের রিউকে পৃথিবীতে আনা হয়। অস্ত্রোপচারের সময় সুজের সেই বিশাল সিস্টটিও অপসারণ করা হয়। অত্যধিক রক্তক্ষরণ হলেও চিকিৎসকদের দক্ষতায় সুজ এবং তাঁর সন্তান দুজনেই সুস্থভাবে ফিরে আসেন।
সুজের স্বামী অ্যান্ড্রু লোপেজ বলেন, ‘বাইরে শান্ত থাকলেও আমি ভেতরে-ভেতরে প্রার্থনা করছিলাম। যেকোনো মুহূর্তে স্ত্রী বা সন্তানকে হারানোর ভয় আমাকে তাড়া করছিল।’
বর্তমানে রিউ সম্পূর্ণ সুস্থ এবং প্রাণচঞ্চল। নিজের ১৮ বছর বয়সী বড় বোন কাইলার সঙ্গে তার খুনসুটি লেগেই থাকে। সামনেই রিউয়ের প্রথম বড়দিন। সুজ লোপেজ আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, ‘আমি এখন অলৌকিক ঘটনায় বিশ্বাস করি। ঈশ্বর আমাদের জীবনের সেরা উপহারটি দিয়েছেন।’
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, এই কেস এতই বিরল যে তাঁরা এটি একটি মেডিকেল জার্নালে প্রকাশের পরিকল্পনা করছেন।

কিছু ধারালো ব্লেড বা অস্ত্র আছে, যা পৃথিবীর বুক চিরে ইতিহাস লিখেছে। এই ধারালো ব্লেডগুলো দুর্বল মানুষের মনে ভয় আর সবল জাতির ক্ষমতার মোহকে অনুপ্রাণিত করে এসেছে কয়েক হাজার বছর ধরে। তার কিছু উদাহরণ তুলে ধরা যাক।
২১ জুলাই ২০২১
বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক থেকে শুরু করে স্বামী-স্ত্রীর ব্যক্তিগত ঝগড়া—সবকিছুতেই এখন থেকে গুনতে হবে মোটা অঙ্কের জরিমানা। চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইউনান প্রদেশের লিংক্যাং গ্রামের কমিটি এমন নিয়ম জারি করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘গ্রামের নিয়মাবলি: সবাই সমান’ শিরোনামের একটি নোটিশ ভাইরাল হওয়ার...
১ দিন আগে
ইতালির আব্রুজ্জো অঞ্চলের মাউন্ট জিরিফালকোর পাদদেশে অবস্থিত এক প্রাচীন গ্রাম পালিয়ারা দে মার্সি। জনশূন্য এই গ্রামে মানুষের চেয়ে বিড়ালের সংখ্যাই বেশি। গত কয়েক দশক ধরে গ্রামটি নিস্তব্ধতায় ডুবে ছিল, কিন্তু গত মার্চ মাস থেকে সেখানে বইছে খুশির জোয়ার। কারণ, দীর্ঘ ৩০ বছর পর এই গ্রামে প্রথম কোনো শিশুর জন্ম
২ দিন আগে
তুরস্কের একটি আদালত এক চাঞ্চল্যকর রায়ে জানিয়েছেন, স্ত্রী ছাড়া অন্য নারীদের অনলাইন পোস্টে স্বামীর বারবার ‘লাইক’ দেওয়া বৈবাহিক বিশ্বাস নষ্ট করতে পারে এবং তা বিবাহবিচ্ছেদের ভিত্তি হিসেবে গণ্য হতে পারে। মধ্যতুরস্কের কায়সেরি শহরের একটি মামলায় এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত এসেছে।
৪ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

তুরস্কের একটি আদালত এক চাঞ্চল্যকর রায়ে জানিয়েছেন, স্ত্রী ছাড়া অন্য নারীদের অনলাইন পোস্টে স্বামীর বারবার ‘লাইক’ দেওয়া বৈবাহিক বিশ্বাস নষ্ট করতে পারে এবং তা বিবাহবিচ্ছেদের ভিত্তি হিসেবে গণ্য হতে পারে। মধ্যতুরস্কের কায়সেরি শহরের একটি মামলায় এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত এসেছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম হাবারলারের বরাত দিয়ে হংকং থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এইচবি নামে এক নারী তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে মৌখিক অপমান এবং আর্থিক ভরণপোষণ না দেওয়ার অভিযোগ আনেন। ওই নারী আরও উল্লেখ করেন, তাঁর স্বামী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচুর সময় কাটাতেন এবং সেখানে নিয়মিত অন্য নারীদের ছবিতে, এমনকি প্রলুব্ধকর ছবিতেও ‘লাইক’ দিতেন। মাঝেমধ্যে তিনি ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্যও করতেন।
এইচবি যুক্তি দেন, এই আচরণ তাঁর স্বামীর দাম্পত্য আনুগত্যের পরিপন্থী। তিনি বিবাহবিচ্ছেদের পাশাপাশি খোরপোশ ও ক্ষতিপূরণ দাবি করে মামলা করেন। স্বামী এসবি অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনিও পাল্টা বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন এবং দাবি করেন, তাঁর স্ত্রী তাঁর বাবাকে অপমান করেছেন এবং অতিরিক্ত ঈর্ষাপরায়ণ। স্ত্রীর এসব অভিযোগ তাঁর সুনাম ক্ষুণ্ন করেছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
আদালত এই মামলায় স্বামীকেই বেশি দোষী সাব্যস্ত করে রায় দেন। তাঁকে প্রতি মাসে ৭৫০ লিরা বা ২০ মার্কিন ডলার খোরপোশ এবং ৮০ হাজার লিরা ২ হাজার মার্কিন ডলার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এসবি এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে দাবি করেন, এই পরিমাণ অনেক বেশি। কিন্তু আদালত তাঁর সেই আবেদন নাকচ করে দেন।
বিচারকেরা জানান, অন্য নারীদের ছবিতে ওই ব্যক্তির ‘লাইক’ দেওয়ার বিষয়টি বৈবাহিক বিশ্বাস ভেঙে দিয়েছে। তাঁরা মন্তব্য করেন, ‘অনলাইনে এই আপাত নিরীহ মিথস্ক্রিয়াগুলো মূলত মানসিক নিরাপত্তাহীনতা বাড়িয়ে তুলতে পারে এবং সম্পর্কের ভারসাম্য নষ্ট করে দিতে পারে।’
তুর্কি আইনজীবী ইমামোগ্লু স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেন, এই রায় একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকল যে অনলাইন কর্মকাণ্ড এখন বিবাহবিচ্ছেদের মামলায় শক্তিশালী প্রমাণ হিসেবে গণ্য হবে। তিনি বলেন, ‘এখন থেকে স্ক্রিনশট, মেসেজ এবং সব ধরনের ডিজিটাল কার্যক্রম উভয় পক্ষের দোষ নির্ধারণে বিবেচনায় নেওয়া হবে। নাগরিকদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের সময় বিষয়টি মাথায় রাখার পরামর্শ দিচ্ছি।’
এই মামলা অনলাইনে ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। এক নেটিজেন লিখেছেন, ‘যদি একটি লাইক আপনার সম্পর্ক ধ্বংস করতে পারে, তবে আপনাদের বিয়ে কখনোই মজবুত ছিল না।’ অন্য একজন মন্তব্য করেছেন, ‘এখন পরিচয় লুকিয়ে লাইক দেওয়ার ফিচার চালু করার সময় এসেছে।’ তবে তৃতীয় একজন ভিন্নমত পোষণ করে বলেন, ‘যদি অনলাইনে প্রতিটি লাইক বা ভিউকে অবিশ্বস্ততা হিসেবে দেখা হয়, তবে মানুষ সারাক্ষণ ভয়ে থাকবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হওয়া উচিত মতপ্রকাশের মুক্ত জায়গা।’
তুরস্কের আদালতে অদ্ভুত কারণে বিবাহবিচ্ছেদের রায় দেওয়ার ঘটনা এটিই প্রথম নয়। এর আগে এক ব্যক্তিকে তাঁর সাবেক স্ত্রীকে ফোনের কন্টাক্ট লিস্টে ‘মোটু’ নামে সেভ করার জন্য ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, যা অসম্মানজনক হিসেবে বিবেচিত হয়।

তুরস্কের একটি আদালত এক চাঞ্চল্যকর রায়ে জানিয়েছেন, স্ত্রী ছাড়া অন্য নারীদের অনলাইন পোস্টে স্বামীর বারবার ‘লাইক’ দেওয়া বৈবাহিক বিশ্বাস নষ্ট করতে পারে এবং তা বিবাহবিচ্ছেদের ভিত্তি হিসেবে গণ্য হতে পারে। মধ্যতুরস্কের কায়সেরি শহরের একটি মামলায় এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত এসেছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম হাবারলারের বরাত দিয়ে হংকং থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এইচবি নামে এক নারী তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে মৌখিক অপমান এবং আর্থিক ভরণপোষণ না দেওয়ার অভিযোগ আনেন। ওই নারী আরও উল্লেখ করেন, তাঁর স্বামী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচুর সময় কাটাতেন এবং সেখানে নিয়মিত অন্য নারীদের ছবিতে, এমনকি প্রলুব্ধকর ছবিতেও ‘লাইক’ দিতেন। মাঝেমধ্যে তিনি ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্যও করতেন।
এইচবি যুক্তি দেন, এই আচরণ তাঁর স্বামীর দাম্পত্য আনুগত্যের পরিপন্থী। তিনি বিবাহবিচ্ছেদের পাশাপাশি খোরপোশ ও ক্ষতিপূরণ দাবি করে মামলা করেন। স্বামী এসবি অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনিও পাল্টা বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন এবং দাবি করেন, তাঁর স্ত্রী তাঁর বাবাকে অপমান করেছেন এবং অতিরিক্ত ঈর্ষাপরায়ণ। স্ত্রীর এসব অভিযোগ তাঁর সুনাম ক্ষুণ্ন করেছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
আদালত এই মামলায় স্বামীকেই বেশি দোষী সাব্যস্ত করে রায় দেন। তাঁকে প্রতি মাসে ৭৫০ লিরা বা ২০ মার্কিন ডলার খোরপোশ এবং ৮০ হাজার লিরা ২ হাজার মার্কিন ডলার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এসবি এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে দাবি করেন, এই পরিমাণ অনেক বেশি। কিন্তু আদালত তাঁর সেই আবেদন নাকচ করে দেন।
বিচারকেরা জানান, অন্য নারীদের ছবিতে ওই ব্যক্তির ‘লাইক’ দেওয়ার বিষয়টি বৈবাহিক বিশ্বাস ভেঙে দিয়েছে। তাঁরা মন্তব্য করেন, ‘অনলাইনে এই আপাত নিরীহ মিথস্ক্রিয়াগুলো মূলত মানসিক নিরাপত্তাহীনতা বাড়িয়ে তুলতে পারে এবং সম্পর্কের ভারসাম্য নষ্ট করে দিতে পারে।’
তুর্কি আইনজীবী ইমামোগ্লু স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেন, এই রায় একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকল যে অনলাইন কর্মকাণ্ড এখন বিবাহবিচ্ছেদের মামলায় শক্তিশালী প্রমাণ হিসেবে গণ্য হবে। তিনি বলেন, ‘এখন থেকে স্ক্রিনশট, মেসেজ এবং সব ধরনের ডিজিটাল কার্যক্রম উভয় পক্ষের দোষ নির্ধারণে বিবেচনায় নেওয়া হবে। নাগরিকদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের সময় বিষয়টি মাথায় রাখার পরামর্শ দিচ্ছি।’
এই মামলা অনলাইনে ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। এক নেটিজেন লিখেছেন, ‘যদি একটি লাইক আপনার সম্পর্ক ধ্বংস করতে পারে, তবে আপনাদের বিয়ে কখনোই মজবুত ছিল না।’ অন্য একজন মন্তব্য করেছেন, ‘এখন পরিচয় লুকিয়ে লাইক দেওয়ার ফিচার চালু করার সময় এসেছে।’ তবে তৃতীয় একজন ভিন্নমত পোষণ করে বলেন, ‘যদি অনলাইনে প্রতিটি লাইক বা ভিউকে অবিশ্বস্ততা হিসেবে দেখা হয়, তবে মানুষ সারাক্ষণ ভয়ে থাকবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হওয়া উচিত মতপ্রকাশের মুক্ত জায়গা।’
তুরস্কের আদালতে অদ্ভুত কারণে বিবাহবিচ্ছেদের রায় দেওয়ার ঘটনা এটিই প্রথম নয়। এর আগে এক ব্যক্তিকে তাঁর সাবেক স্ত্রীকে ফোনের কন্টাক্ট লিস্টে ‘মোটু’ নামে সেভ করার জন্য ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, যা অসম্মানজনক হিসেবে বিবেচিত হয়।

কিছু ধারালো ব্লেড বা অস্ত্র আছে, যা পৃথিবীর বুক চিরে ইতিহাস লিখেছে। এই ধারালো ব্লেডগুলো দুর্বল মানুষের মনে ভয় আর সবল জাতির ক্ষমতার মোহকে অনুপ্রাণিত করে এসেছে কয়েক হাজার বছর ধরে। তার কিছু উদাহরণ তুলে ধরা যাক।
২১ জুলাই ২০২১
বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক থেকে শুরু করে স্বামী-স্ত্রীর ব্যক্তিগত ঝগড়া—সবকিছুতেই এখন থেকে গুনতে হবে মোটা অঙ্কের জরিমানা। চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইউনান প্রদেশের লিংক্যাং গ্রামের কমিটি এমন নিয়ম জারি করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘গ্রামের নিয়মাবলি: সবাই সমান’ শিরোনামের একটি নোটিশ ভাইরাল হওয়ার...
১ দিন আগে
ইতালির আব্রুজ্জো অঞ্চলের মাউন্ট জিরিফালকোর পাদদেশে অবস্থিত এক প্রাচীন গ্রাম পালিয়ারা দে মার্সি। জনশূন্য এই গ্রামে মানুষের চেয়ে বিড়ালের সংখ্যাই বেশি। গত কয়েক দশক ধরে গ্রামটি নিস্তব্ধতায় ডুবে ছিল, কিন্তু গত মার্চ মাস থেকে সেখানে বইছে খুশির জোয়ার। কারণ, দীর্ঘ ৩০ বছর পর এই গ্রামে প্রথম কোনো শিশুর জন্ম
২ দিন আগে
ক্যালিফোর্নিয়ার সুজ লোপেজ যখন তাঁর ছোট ছেলে রিউকে কোলে নিয়ে বসেন, তখন এক অলৌকিক বিস্ময়ে স্তব্ধ হয়ে যান। কারণ, ছোট্ট রিউ তাঁর মায়ের জরায়ুর ভেতরে নয়, বেড়ে উঠেছিল পেটের ভেতরে একটি বিশাল আকৃতির ওভারিয়ান সিস্টের আড়ালে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং বিরল এই ঘটনাকে ‘মিরাকল’ বা অলৌকিক বলছেন চিকিৎ
৪ দিন আগে