Ajker Patrika

থিংক পজেটিভ, স্প্রেড পজেটিভিটি

ইমরান খান
আপডেট : ১৫ জুলাই ২০২১, ১৭: ৫৪
থিংক পজেটিভ, স্প্রেড পজেটিভিটি

১৮ হাজার বাড়ির মধ্যে কয়েকটি না হয় ভেঙেছে। এতেই এত শোরগোল! একটু পজেটিভ কি হওয়া যায় না? কেউ বাড়ির পিলার ধরে নাড়াচাড়া না করতেই কেন ভেঙে পড়ল, এই নিয়ে তো আপত্তি? দেখেন ভাই, বিল্ডিং তো আর কাকলি ফার্নিচার না!

সবকিছুর বাজার দর বাড়তি তা তো জানেনই। এখানে একটা পর্দার দাম ৩৭ লাখ, সুইয়ের দাম ২৫ হাজার, একটা কাঁচি সাড়ে ১০ হাজার, বালিশ ৬ হাজার টাকা। তো এই বাজারে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকায় কী হয়? এত অল্প টাকায় ম্যানেজ করে ইট, বালু, সিমেন্ট, রড দিয়ে ঘর বানিয়ে দিলাম; আর কি চান? বলিহারি আপনাদের চাহিদা!

ঘরে লোক ওঠার আগেই ঘর ভেঙে পড়া নিয়ে আপনারা কষ্ট পাচ্ছেন। কিন্তু একবার ভাবুন, লোক ওঠার পর ভাঙলে তো বাসিন্দাদের জান-মালেরও ক্ষতি হতে পারত। এই ক্ষতিটা যে হয়নি, তা ভেবে তো অন্তত একটু আনন্দিত হতে পারেন। ভালো মানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করলে তো গরিবেরা এই সুবিধাটা পেতেন না। আর বাড়িতে ওঠার পর দেয়াল ধসের দুশ্চিন্তায় এখন যারা ঘুমাতে পারছেন না, তাঁরা তো এরই মধ্যে পৌঁছে গেছেন সাফল্যের দ্বারপ্রান্তে। নিশ্চিত থাকুন আপনাদের উদ্দেশ্যেই এ পি জে আবুল কালাম বলেছেন, ‘স্বপ্ন হলো সেটাই—যা মানুষকে ঘুমাতে দেয় না।’ স্বপ্ন তো দেখছেনই, এবার সাফল্যের জন্য অপেক্ষা করুন। এর মাঝেও ঘুম পেলে, নাক ডাকার শব্দে ভূমিকম্পের আশঙ্কা থাকলে হেলমেট তো আছেই।

ভাবেন, এভাবে দালান পেয়ে যাওয়ার চিন্তা এই গৃহহীনেরা কখনো করেছে? না চাইতেই তাঁদের শোয়ার ঘর, রান্না ঘর, স্নানের ঘর দেওয়া হলো। ব্যবস্থা করা হলো সুপেয় পানিরও। এ তো বিরাট খুশির খবর! এই খুশিতে বাদ্য বাজান, ফুর্তি করেন! আর, ঘর পেতে কে কত টাকা উৎকোচ দিয়েছেন, তা নিয়ে আপনারা ‘আবার অন্য কিছু মনে কইরেন না’। ‘নট ফর মাইন্ড’, ঘরের কাজে লাগানোর কথা বলেই ওইটা নেওয়া হয়েছিল। এত কিছুর মধ্যেও ‘জনগণের টাকা’ ফোঁড়নটা কি না কাটলেই নয়?

আরও সময় নিয়ে হলেও বাজেট বাড়িয়ে অল্প লোককে হলেও মানসম্পন্ন বাড়ি দেওয়ার তালিম কেন দিচ্ছেন, ভাই? খুশি যত দ্রুত, যত বেশি লোকের মধ্যে ছড়ানো যায় ততই তো ভালো। আপনাদের খুশির নন্দনতত্ত্ব বোঝাতে আর কত ঘাম ঝরাতে হবে? আমরা কত খাটলে আপনাদের মনের কোপা কাপটা জয় করতে পারব?

বোঝানোয় তো কম বোঝালাম না। এরপরও কেন নির্মাণের দুই মাসের মধ্যে গৃহায়ণের ঘর ভেঙে পড়াকে ইতিবাচকভাবে দেখতে পারছেন না? এ নিয়ে ফের দুষ্টুমি করলে কিন্তু কর্তাদের দিয়ে হালকা করে শাসিয়ে দেব—‘আগে গৃহহীনদের ঘর উপহার দিয়ে তারপর সমালোচনা করুন।’ এতেও না হলে যন্তর-মন্তর ঘরে দাওয়াতের অপশন তো আছেই। আর যদি বুঝেই যান, পাশের লোককেও বোঝান। তাঁদের বলুন—‘থিংক পজেটিভ, স্প্রেড পজেটিভিটি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

অস্ট্রেলিয়ায় সমুদ্রসৈকতে ইহুদিদের হানুক্কা উৎসবে গুলি, নিহত অন্তত ১০

এলাকার খবর
Loading...