ইশতিয়াক হাসান

হাজার হাজার বছর ধরেই ভয়ানক এক প্রাণী ড্রাগনের গল্প আলোড়িত করে আসছে মানুষকে। সুমেরু অঞ্চলের কিংবদন্তি থেকে শুরু করে প্রাচীন মেসোপটেমিয়া এবং পরে চীন, মিসর, ভারত, গ্রিস এমনকি গ্রেট ব্রিটেনের মতো জায়গায় ড্রাগন নিয়ে ডালপালা মেলেছে কত হাজারও গল্প। বই, সিনেমা, টিভি শোতে নিয়মিতই ড্রাগনকে দেখি আমরা।
কিন্তু ড্রাগন কি সত্যি আছে, নাকি পুরোটা আমাদের কল্পনা। সত্যি বলতে ড্রাগন নামধারী অনেক প্রাণীই আছে পৃথিবীতে। তবে মুখ দিয়ে আগুন বের হওয়া সেই ভয়াল দর্শন ড্রাগন পুরোপুরিই কল্পনা। এমনকি ড্রাগন নামধারী বেশির ভাগ প্রাণী ততটা বিপজ্জনকও নয়। তবে কমোডো ড্রাগনের কথা যদি বলেন তবে হিসাবটা একটু আলাদা। দশ ফুটি প্রাণীটা যখন লকলকে জিব বের করে আপনার দিকে এগিয়ে আসবে, তখন আমাদের কল্পনার ওই ড্রাগনের কথাই হয়তো মনে পড়ে যাবে। উল্টো দিকে খিঁচে দৌড় দেওয়াটাই হবে তখন একমাত্র লক্ষ্য।
লিজার্ডদের মধ্যে কমোডো ড্রাগনই সবচেয়ে বড় ও ভারী। প্রাপ্তবয়স্ক একটি কমোডো ড্রাগন ১০ ফুট পর্যন্ত হয় লম্বায়। ওজনের হয় ১৪০ কেজি বা ৩০০ পাউন্ডের মতো। তবে সাধারণত এদের ওজন ৭০ কেজি বা ১৫০ পাউন্ডের আশপাশে হয়।
আনুমানিক ১৫১০ সালের হান্ট-লেনক্স গ্লোবে প্রথম সম্ভবত ‘হিক সান্ট ড্রাকোনস’ বা ‘এখানে ড্রাগন আছে’ কথাটি প্রথম ব্যবহার করা হয়। এশিয়ার পূর্ব উপকূলকে চিহ্নিত করা হয় এটা দিয়ে। চীনা নাবিকদের কয়েকটি ছোট ইন্দোনেশিয়ান দ্বীপে ড্রাগন দেখার গল্পের ভিত্তিতে সম্ভবত এটা করা হয়।
ইন্দোনেশিয়ার কমোডো দ্বীপের পাশাপাশি রিনকা, ফ্লোরস দ্বীপে দেখা মেলে তাদের। কমোডো জাতীয় উদ্যান এদের মূল আস্তানা। পার্কটিতে তিনটি বড় দ্বীপ কমোডো, পাদার এবং রিনকা ছাড়াও ছোট ২৬টি দ্বীপ আছে। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচারের (আইইউসিএন) দেওয়া তথ্য বলছে বর্তমানে ইন্দোনেশিয়ার দ্বীপগুলোতে বুনো পরিবেশে টিকে থাকা প্রাপ্তবয়স্ক কমোডো ড্রাগনের সংখ্যা ১ হাজার ৩৮৩। ছোট ও কিশোর বয়সী ড্রাগনের সংখ্যাটাও কম নয়। এ ছাড়া বিভিন্ন দেশের চিড়িয়াখানায় বেশ কিছু কমোডো ড্রাগন আছে।
যতদূর জানা যায়, ইন্দোনেশিয়ার কমোডো দ্বীপে বাস করায় আর ভয়ানক চেহারা ও লম্বা হলুদ জিভ মিলিয়ে পৌরাণিক সেই ড্রাগনের সঙ্গে কিছুটি মিল খুঁজে পাওয়াতেই এর নাম রাখা হয় ‘কমোডো ড্রাগন’।
স্থানীয়রা এদের কথা জানলেও পৃথিবীর মানুষের কাছে এরা পরিচিত হয় বিশ শতকের গোড়ার দিকে, আরও পরিষ্কারভাবে বললে ১৯১০ সালে। ওই সময় ইন্দোনেশিয়া ছিল ডাচদের কলোনি। এখানকার ডাচ প্রশাসক ছিলেন লেফটেন্যান্ট জ্যাক কেল হেনরি ভ্যান স্টেইন ভ্যান হেনসব্রুক। ডাঙায় বাস করে এমন বিশাল আকারের ‘কুমিরের’ গল্প শুনে উৎসাহিত হয়ে ওঠেন তিনি। কমোডো দ্বীপে অভিযান চালিয়ে ফেরেন আশ্চর্য এই প্রাণীদের ছবি আর একটা চামড়া নিয়ে।
যে দ্বীপগুলোয় কমোডো ড্রাগনের বাস সেখানে তারাই রাজা। মোটামুটি যা পায় তাই খায় এরা। ইতিমধ্যে মারা যাওয়া প্রাণী খেতেও তাদের আপত্তি নেই। হরিণ, মহিষ, শূকর এমনকি বাচ্চা বা কম বয়স্ক কমোডো ড্রাগনদেরও খায় এরা। তবে এসব বাচ্চা কমোডো ড্রাগনেরা খুব চটপটে। গাছে চড়ে বড়দের শিকার হওয়া থেকে রক্ষা পাওয়ার তরিকা খুব দ্রুতই শিখে নেয় তারা।
কমোডো ড্রাগনের মানুষকে আক্রমণের ঘটনাও ঘটে, যদিও সংখ্যাটা বেশি নয়। বন্য এবং চিড়িয়াখানায় বন্দী দুই ধরনের কমোডো ড্রাগনের থেকেই এমন আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। ১৯৭৪ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ৩৮ বছরে কমোডো ন্যাশনাল পার্কের তথ্য অনুসারে, মানুষের ওপর ২৪টি আক্রমণের খবর পাওয়া গেছে, যার মধ্যে পাঁচজন নিহত হন। নিহতদের বেশির ভাগই কমোডো জাতীয় উদ্যানের আশপাশে বসবাসকারী স্থানীয় গ্রামবাসী।
শিকারের সময় কমোডো ড্রাগন তাদের লুকিয়ে থাকার অসাধারণ ক্ষমতা ও ধৈর্যের প্রমাণ দেয়। ঝোপ-জঙ্গল বা লম্বা ঘাসে ঘাপটি মেরে থাকে, যতক্ষণ না কোনো শিকার পাশ দিয়ে যায়। নাগালের মধ্যে এলেই ঝাঁপিয়ে পড়ে শক্তিশালী পা এবং ধারালো নখ দিয়ে আঁকড়ে ধরে। তারপর ধারালো দাঁত ডুবিয়ে দেয় শিকারের শরীরে।
শুনে অবাক হবেন, স্ত্রী কমোডো ড্রাগন পুরুষ ড্রাগন ছাড়াই প্রজনন করতে সক্ষম। এটি পার্থেনোজেনেসিস নামে পরিচিত অযৌন প্রজননের একটি প্রক্রিয়ার কারণে হয়। ২০০৬ সালে প্রথম বিষয়টি জানা যায়, যখন ফ্লোরা নামক একটি ড্রাগন ইংল্যান্ডের চেস্টার চিড়িয়াখানায় পাঁচটি শিশু ড্রাগন জন্ম দেয়। অথচ কোনো পুরুষ কমোডো ড্রাগনের সঙ্গে কখনো তাকে রাখা হয়নি।
লন্ডন চিড়িয়াখানার জো ক্যাপনের মতে, কমোডো ড্রাগনের উদ্ভব ৯ কোটি বছর আগে। অস্ট্রেলিয়া থেকে আসা বিশালাকায় মনিটর লিজার্ড বা গুইসাপ থেকে বিবর্তনের মাধ্যমে এদের উদ্ভব। এতদিন ধরে অন্যদের থেকে বিচ্ছিন্ন থাকায় একপর্যায়ে নিজেরাই একটি প্রজাতিতে পরিণত হয়।
১৯২৬ সালে উইলিয়াম ডগলাস বার্ডেন নিউইয়র্কের ব্রঙ্কস চিড়িয়াখানার জন্য এক জোড়া ড্রাগন ধরতে কমোডো দ্বীপে যান। বার্ডেনের বন্ধু, চলচ্চিত্র পরিচালক মেরিয়ান কুপার তাঁর ১৯৩৩ সালে মুক্তি পাওয়া কিং কং ছবিতে দুঃসাহসিক সেই অভিযানের অনেক উপাদানই ব্যবহার করেন। কুপার সব সময়ই চেয়েছিলেন দৈত্যাকার একটি গরিলা বা শিম্পাঞ্জিজাতীয় প্রাণীকে ঘিরে আবর্তিত হবে কাহিনি। তবে রহস্যময় দ্বীপ এবং বিশাল আকারের প্রাচীন দানব সরীসৃপগুলোর দৃশ্য চিত্রায়িত হয় বার্ডেনের ভ্রমণে অনুপ্রাণিত হয়ে। যতদূর নানা যায় কমোডো ড্রাগনদের নামটি দেন বার্ডেনই।
এবার শক্তিশালী এ সরীসৃপদের চেহারার একটু বর্ণনা দেওয়া যাক। এদের মাথা চওড়া ও চ্যাপ্টা, নাক কিছুটা বৃত্তাকার, পা বাঁকানো এবং লেজটা বিশাল ও পেশিবহুল। তাদের হাঁটা অবশ্য খুব দ্রুতগতির নয়। ১০ মাইলের বেশি গতি তোলাটাই ওদের জন্য বেশ কঠিন। ততে এই ড্রাগনদের যে জিনিসটা আপনার নজর কাড়বে সেটি, লম্বা হলুদ জিব। ক্রমাগত এটা বাইরে বের করে আনে আবার ভেতরে ঢুকিয়ে ফেলে। এমনিতে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় সাভানা বনে বাস করে। তবে দ্বীপের বিস্তৃত সৈকত এমনকি পাহাড়েও এরা বিচরণ করে।
স্ত্রী কমোডো ড্রাগন একবারে ৩০টি ডিম পাড়তে পারে। এগুলো এরা কয়েক মাস ধরে পাহারা দেয়। শিশুদের সবুজাভ শরীরে হলুদ ও কালো বলয়ের মতো থাকে। কিন্তু বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ধূসর থেকে লালচে-বাদামি হয়ে যায় এই রং। ছোট ড্রাগনরা বড় কমোডো ড্রাগনসহ অন্য শিকারি প্রাণীদের এড়াতে আট মাস বয়স না হওয়া পর্যন্ত গাছেই থাকে।
ভয়ংকর চেহারারা এই ড্রাগনদের শিকারের বেশির ভাগ প্রচেষ্টাই ব্যর্থ হয়। তবে তাতে এদের বয়েই গেছে। একবার যদি শিকারকে কামড়াতে সক্ষম হয় তবেই হয়েছে। এদের লালায় থাকা ব্যাকটেরিয়া এবং বিষ কয়েক দিনের মধ্যে শিকারকে মেরে ফেলবে। প্রাণীটি মারা যাওয়ার পরে, যার জন্য চার দিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে, কমোডো তার শক্তিশালী ঘ্রাণশক্তি ব্যবহার করে দেহটি শনাক্ত করে। প্রায়ই কোনো একটি শিকার অনেক কমোডো ড্রাগনকে মিলেমিশে খেতে দেখা যায়। এদের দৃষ্টিশক্তিও প্রখর, তাই অনেক দূর থেকেই শিকারকে দেখতে পারে।
এই সরীসৃপদের বড়, বাঁকা ও ধারালো দাঁত এদের সবচেয়ে মারাত্মক অস্ত্র। যেগুলো মাংস ছিঁড়ে খেতে সাহায্য করে। দাঁতের ফাঁকে সাম্প্রতিক খাওয়া মাংসের কণা রয়ে যায়। এই প্রোটিন-সমৃদ্ধ পচা মাংসে প্রচুর ব্যাকটেরিয়া উপস্থিত থাকে। এদের লালায় প্রায় ৫০ ধরনের ব্যাকটেরিয়া পাওয়া গেছে, যার মধ্যে অন্তত সাতটি খুব ক্ষতিকর। গবেষকেরা ড্রাগনের নিচের চোয়ালে একটি বিষ গ্রন্থিরও সন্ধান পেয়েছেন। এ বিষ রক্তকে জমাট বাঁধতে বাধা দেয়, যা ব্যাপক রক্তক্ষরণ ঘটিয়ে শিকারকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়।
তবে কমোডোর কামড় কিন্তু অন্য কমোডো ড্রাগনের জন্য মারাত্মক নয়। একে অপরের সঙ্গে ঝগড়া করার সময় আহত ড্রাগনেরা ব্যাকটেরিয়া এবং বিষে আক্রান্ত হয়েছে এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বিজ্ঞানীরা কমোডো ড্রাগনের রক্তে এর বিষ বা ব্যাকটেরিয়ার প্রতিষেধক খুঁজছেন। এদের গলা এবং ঘাড়ের পেশি দ্রুত মাংসের বিশাল খণ্ড গিলে ফেলতে সাহায্য করে। একটি প্রাপ্তবয়স্ক প্রাণী একবারে নিজের শরীরের ওজনের ৮০ শতাংশ খাবার গ্রহণ করতে সক্ষম। তবে যখন বিপদ দেখা দেয় তখন কমোডো ড্রাগন তাদের ওজন কমাতে তাদের পেটের ভেতরে জমা হওয়া খাবার ছুড়ে ফেলে দ্রুতগতিতে পালাতে পারে।
সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক কিডস, বিবিসি সায়েন্স ফোকাস, স্মিথসোনিয়ানস ন্যাশনাল জু, বিবিসি

হাজার হাজার বছর ধরেই ভয়ানক এক প্রাণী ড্রাগনের গল্প আলোড়িত করে আসছে মানুষকে। সুমেরু অঞ্চলের কিংবদন্তি থেকে শুরু করে প্রাচীন মেসোপটেমিয়া এবং পরে চীন, মিসর, ভারত, গ্রিস এমনকি গ্রেট ব্রিটেনের মতো জায়গায় ড্রাগন নিয়ে ডালপালা মেলেছে কত হাজারও গল্প। বই, সিনেমা, টিভি শোতে নিয়মিতই ড্রাগনকে দেখি আমরা।
কিন্তু ড্রাগন কি সত্যি আছে, নাকি পুরোটা আমাদের কল্পনা। সত্যি বলতে ড্রাগন নামধারী অনেক প্রাণীই আছে পৃথিবীতে। তবে মুখ দিয়ে আগুন বের হওয়া সেই ভয়াল দর্শন ড্রাগন পুরোপুরিই কল্পনা। এমনকি ড্রাগন নামধারী বেশির ভাগ প্রাণী ততটা বিপজ্জনকও নয়। তবে কমোডো ড্রাগনের কথা যদি বলেন তবে হিসাবটা একটু আলাদা। দশ ফুটি প্রাণীটা যখন লকলকে জিব বের করে আপনার দিকে এগিয়ে আসবে, তখন আমাদের কল্পনার ওই ড্রাগনের কথাই হয়তো মনে পড়ে যাবে। উল্টো দিকে খিঁচে দৌড় দেওয়াটাই হবে তখন একমাত্র লক্ষ্য।
লিজার্ডদের মধ্যে কমোডো ড্রাগনই সবচেয়ে বড় ও ভারী। প্রাপ্তবয়স্ক একটি কমোডো ড্রাগন ১০ ফুট পর্যন্ত হয় লম্বায়। ওজনের হয় ১৪০ কেজি বা ৩০০ পাউন্ডের মতো। তবে সাধারণত এদের ওজন ৭০ কেজি বা ১৫০ পাউন্ডের আশপাশে হয়।
আনুমানিক ১৫১০ সালের হান্ট-লেনক্স গ্লোবে প্রথম সম্ভবত ‘হিক সান্ট ড্রাকোনস’ বা ‘এখানে ড্রাগন আছে’ কথাটি প্রথম ব্যবহার করা হয়। এশিয়ার পূর্ব উপকূলকে চিহ্নিত করা হয় এটা দিয়ে। চীনা নাবিকদের কয়েকটি ছোট ইন্দোনেশিয়ান দ্বীপে ড্রাগন দেখার গল্পের ভিত্তিতে সম্ভবত এটা করা হয়।
ইন্দোনেশিয়ার কমোডো দ্বীপের পাশাপাশি রিনকা, ফ্লোরস দ্বীপে দেখা মেলে তাদের। কমোডো জাতীয় উদ্যান এদের মূল আস্তানা। পার্কটিতে তিনটি বড় দ্বীপ কমোডো, পাদার এবং রিনকা ছাড়াও ছোট ২৬টি দ্বীপ আছে। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচারের (আইইউসিএন) দেওয়া তথ্য বলছে বর্তমানে ইন্দোনেশিয়ার দ্বীপগুলোতে বুনো পরিবেশে টিকে থাকা প্রাপ্তবয়স্ক কমোডো ড্রাগনের সংখ্যা ১ হাজার ৩৮৩। ছোট ও কিশোর বয়সী ড্রাগনের সংখ্যাটাও কম নয়। এ ছাড়া বিভিন্ন দেশের চিড়িয়াখানায় বেশ কিছু কমোডো ড্রাগন আছে।
যতদূর জানা যায়, ইন্দোনেশিয়ার কমোডো দ্বীপে বাস করায় আর ভয়ানক চেহারা ও লম্বা হলুদ জিভ মিলিয়ে পৌরাণিক সেই ড্রাগনের সঙ্গে কিছুটি মিল খুঁজে পাওয়াতেই এর নাম রাখা হয় ‘কমোডো ড্রাগন’।
স্থানীয়রা এদের কথা জানলেও পৃথিবীর মানুষের কাছে এরা পরিচিত হয় বিশ শতকের গোড়ার দিকে, আরও পরিষ্কারভাবে বললে ১৯১০ সালে। ওই সময় ইন্দোনেশিয়া ছিল ডাচদের কলোনি। এখানকার ডাচ প্রশাসক ছিলেন লেফটেন্যান্ট জ্যাক কেল হেনরি ভ্যান স্টেইন ভ্যান হেনসব্রুক। ডাঙায় বাস করে এমন বিশাল আকারের ‘কুমিরের’ গল্প শুনে উৎসাহিত হয়ে ওঠেন তিনি। কমোডো দ্বীপে অভিযান চালিয়ে ফেরেন আশ্চর্য এই প্রাণীদের ছবি আর একটা চামড়া নিয়ে।
যে দ্বীপগুলোয় কমোডো ড্রাগনের বাস সেখানে তারাই রাজা। মোটামুটি যা পায় তাই খায় এরা। ইতিমধ্যে মারা যাওয়া প্রাণী খেতেও তাদের আপত্তি নেই। হরিণ, মহিষ, শূকর এমনকি বাচ্চা বা কম বয়স্ক কমোডো ড্রাগনদেরও খায় এরা। তবে এসব বাচ্চা কমোডো ড্রাগনেরা খুব চটপটে। গাছে চড়ে বড়দের শিকার হওয়া থেকে রক্ষা পাওয়ার তরিকা খুব দ্রুতই শিখে নেয় তারা।
কমোডো ড্রাগনের মানুষকে আক্রমণের ঘটনাও ঘটে, যদিও সংখ্যাটা বেশি নয়। বন্য এবং চিড়িয়াখানায় বন্দী দুই ধরনের কমোডো ড্রাগনের থেকেই এমন আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। ১৯৭৪ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ৩৮ বছরে কমোডো ন্যাশনাল পার্কের তথ্য অনুসারে, মানুষের ওপর ২৪টি আক্রমণের খবর পাওয়া গেছে, যার মধ্যে পাঁচজন নিহত হন। নিহতদের বেশির ভাগই কমোডো জাতীয় উদ্যানের আশপাশে বসবাসকারী স্থানীয় গ্রামবাসী।
শিকারের সময় কমোডো ড্রাগন তাদের লুকিয়ে থাকার অসাধারণ ক্ষমতা ও ধৈর্যের প্রমাণ দেয়। ঝোপ-জঙ্গল বা লম্বা ঘাসে ঘাপটি মেরে থাকে, যতক্ষণ না কোনো শিকার পাশ দিয়ে যায়। নাগালের মধ্যে এলেই ঝাঁপিয়ে পড়ে শক্তিশালী পা এবং ধারালো নখ দিয়ে আঁকড়ে ধরে। তারপর ধারালো দাঁত ডুবিয়ে দেয় শিকারের শরীরে।
শুনে অবাক হবেন, স্ত্রী কমোডো ড্রাগন পুরুষ ড্রাগন ছাড়াই প্রজনন করতে সক্ষম। এটি পার্থেনোজেনেসিস নামে পরিচিত অযৌন প্রজননের একটি প্রক্রিয়ার কারণে হয়। ২০০৬ সালে প্রথম বিষয়টি জানা যায়, যখন ফ্লোরা নামক একটি ড্রাগন ইংল্যান্ডের চেস্টার চিড়িয়াখানায় পাঁচটি শিশু ড্রাগন জন্ম দেয়। অথচ কোনো পুরুষ কমোডো ড্রাগনের সঙ্গে কখনো তাকে রাখা হয়নি।
লন্ডন চিড়িয়াখানার জো ক্যাপনের মতে, কমোডো ড্রাগনের উদ্ভব ৯ কোটি বছর আগে। অস্ট্রেলিয়া থেকে আসা বিশালাকায় মনিটর লিজার্ড বা গুইসাপ থেকে বিবর্তনের মাধ্যমে এদের উদ্ভব। এতদিন ধরে অন্যদের থেকে বিচ্ছিন্ন থাকায় একপর্যায়ে নিজেরাই একটি প্রজাতিতে পরিণত হয়।
১৯২৬ সালে উইলিয়াম ডগলাস বার্ডেন নিউইয়র্কের ব্রঙ্কস চিড়িয়াখানার জন্য এক জোড়া ড্রাগন ধরতে কমোডো দ্বীপে যান। বার্ডেনের বন্ধু, চলচ্চিত্র পরিচালক মেরিয়ান কুপার তাঁর ১৯৩৩ সালে মুক্তি পাওয়া কিং কং ছবিতে দুঃসাহসিক সেই অভিযানের অনেক উপাদানই ব্যবহার করেন। কুপার সব সময়ই চেয়েছিলেন দৈত্যাকার একটি গরিলা বা শিম্পাঞ্জিজাতীয় প্রাণীকে ঘিরে আবর্তিত হবে কাহিনি। তবে রহস্যময় দ্বীপ এবং বিশাল আকারের প্রাচীন দানব সরীসৃপগুলোর দৃশ্য চিত্রায়িত হয় বার্ডেনের ভ্রমণে অনুপ্রাণিত হয়ে। যতদূর নানা যায় কমোডো ড্রাগনদের নামটি দেন বার্ডেনই।
এবার শক্তিশালী এ সরীসৃপদের চেহারার একটু বর্ণনা দেওয়া যাক। এদের মাথা চওড়া ও চ্যাপ্টা, নাক কিছুটা বৃত্তাকার, পা বাঁকানো এবং লেজটা বিশাল ও পেশিবহুল। তাদের হাঁটা অবশ্য খুব দ্রুতগতির নয়। ১০ মাইলের বেশি গতি তোলাটাই ওদের জন্য বেশ কঠিন। ততে এই ড্রাগনদের যে জিনিসটা আপনার নজর কাড়বে সেটি, লম্বা হলুদ জিব। ক্রমাগত এটা বাইরে বের করে আনে আবার ভেতরে ঢুকিয়ে ফেলে। এমনিতে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় সাভানা বনে বাস করে। তবে দ্বীপের বিস্তৃত সৈকত এমনকি পাহাড়েও এরা বিচরণ করে।
স্ত্রী কমোডো ড্রাগন একবারে ৩০টি ডিম পাড়তে পারে। এগুলো এরা কয়েক মাস ধরে পাহারা দেয়। শিশুদের সবুজাভ শরীরে হলুদ ও কালো বলয়ের মতো থাকে। কিন্তু বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ধূসর থেকে লালচে-বাদামি হয়ে যায় এই রং। ছোট ড্রাগনরা বড় কমোডো ড্রাগনসহ অন্য শিকারি প্রাণীদের এড়াতে আট মাস বয়স না হওয়া পর্যন্ত গাছেই থাকে।
ভয়ংকর চেহারারা এই ড্রাগনদের শিকারের বেশির ভাগ প্রচেষ্টাই ব্যর্থ হয়। তবে তাতে এদের বয়েই গেছে। একবার যদি শিকারকে কামড়াতে সক্ষম হয় তবেই হয়েছে। এদের লালায় থাকা ব্যাকটেরিয়া এবং বিষ কয়েক দিনের মধ্যে শিকারকে মেরে ফেলবে। প্রাণীটি মারা যাওয়ার পরে, যার জন্য চার দিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে, কমোডো তার শক্তিশালী ঘ্রাণশক্তি ব্যবহার করে দেহটি শনাক্ত করে। প্রায়ই কোনো একটি শিকার অনেক কমোডো ড্রাগনকে মিলেমিশে খেতে দেখা যায়। এদের দৃষ্টিশক্তিও প্রখর, তাই অনেক দূর থেকেই শিকারকে দেখতে পারে।
এই সরীসৃপদের বড়, বাঁকা ও ধারালো দাঁত এদের সবচেয়ে মারাত্মক অস্ত্র। যেগুলো মাংস ছিঁড়ে খেতে সাহায্য করে। দাঁতের ফাঁকে সাম্প্রতিক খাওয়া মাংসের কণা রয়ে যায়। এই প্রোটিন-সমৃদ্ধ পচা মাংসে প্রচুর ব্যাকটেরিয়া উপস্থিত থাকে। এদের লালায় প্রায় ৫০ ধরনের ব্যাকটেরিয়া পাওয়া গেছে, যার মধ্যে অন্তত সাতটি খুব ক্ষতিকর। গবেষকেরা ড্রাগনের নিচের চোয়ালে একটি বিষ গ্রন্থিরও সন্ধান পেয়েছেন। এ বিষ রক্তকে জমাট বাঁধতে বাধা দেয়, যা ব্যাপক রক্তক্ষরণ ঘটিয়ে শিকারকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়।
তবে কমোডোর কামড় কিন্তু অন্য কমোডো ড্রাগনের জন্য মারাত্মক নয়। একে অপরের সঙ্গে ঝগড়া করার সময় আহত ড্রাগনেরা ব্যাকটেরিয়া এবং বিষে আক্রান্ত হয়েছে এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বিজ্ঞানীরা কমোডো ড্রাগনের রক্তে এর বিষ বা ব্যাকটেরিয়ার প্রতিষেধক খুঁজছেন। এদের গলা এবং ঘাড়ের পেশি দ্রুত মাংসের বিশাল খণ্ড গিলে ফেলতে সাহায্য করে। একটি প্রাপ্তবয়স্ক প্রাণী একবারে নিজের শরীরের ওজনের ৮০ শতাংশ খাবার গ্রহণ করতে সক্ষম। তবে যখন বিপদ দেখা দেয় তখন কমোডো ড্রাগন তাদের ওজন কমাতে তাদের পেটের ভেতরে জমা হওয়া খাবার ছুড়ে ফেলে দ্রুতগতিতে পালাতে পারে।
সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক কিডস, বিবিসি সায়েন্স ফোকাস, স্মিথসোনিয়ানস ন্যাশনাল জু, বিবিসি
ইশতিয়াক হাসান

হাজার হাজার বছর ধরেই ভয়ানক এক প্রাণী ড্রাগনের গল্প আলোড়িত করে আসছে মানুষকে। সুমেরু অঞ্চলের কিংবদন্তি থেকে শুরু করে প্রাচীন মেসোপটেমিয়া এবং পরে চীন, মিসর, ভারত, গ্রিস এমনকি গ্রেট ব্রিটেনের মতো জায়গায় ড্রাগন নিয়ে ডালপালা মেলেছে কত হাজারও গল্প। বই, সিনেমা, টিভি শোতে নিয়মিতই ড্রাগনকে দেখি আমরা।
কিন্তু ড্রাগন কি সত্যি আছে, নাকি পুরোটা আমাদের কল্পনা। সত্যি বলতে ড্রাগন নামধারী অনেক প্রাণীই আছে পৃথিবীতে। তবে মুখ দিয়ে আগুন বের হওয়া সেই ভয়াল দর্শন ড্রাগন পুরোপুরিই কল্পনা। এমনকি ড্রাগন নামধারী বেশির ভাগ প্রাণী ততটা বিপজ্জনকও নয়। তবে কমোডো ড্রাগনের কথা যদি বলেন তবে হিসাবটা একটু আলাদা। দশ ফুটি প্রাণীটা যখন লকলকে জিব বের করে আপনার দিকে এগিয়ে আসবে, তখন আমাদের কল্পনার ওই ড্রাগনের কথাই হয়তো মনে পড়ে যাবে। উল্টো দিকে খিঁচে দৌড় দেওয়াটাই হবে তখন একমাত্র লক্ষ্য।
লিজার্ডদের মধ্যে কমোডো ড্রাগনই সবচেয়ে বড় ও ভারী। প্রাপ্তবয়স্ক একটি কমোডো ড্রাগন ১০ ফুট পর্যন্ত হয় লম্বায়। ওজনের হয় ১৪০ কেজি বা ৩০০ পাউন্ডের মতো। তবে সাধারণত এদের ওজন ৭০ কেজি বা ১৫০ পাউন্ডের আশপাশে হয়।
আনুমানিক ১৫১০ সালের হান্ট-লেনক্স গ্লোবে প্রথম সম্ভবত ‘হিক সান্ট ড্রাকোনস’ বা ‘এখানে ড্রাগন আছে’ কথাটি প্রথম ব্যবহার করা হয়। এশিয়ার পূর্ব উপকূলকে চিহ্নিত করা হয় এটা দিয়ে। চীনা নাবিকদের কয়েকটি ছোট ইন্দোনেশিয়ান দ্বীপে ড্রাগন দেখার গল্পের ভিত্তিতে সম্ভবত এটা করা হয়।
ইন্দোনেশিয়ার কমোডো দ্বীপের পাশাপাশি রিনকা, ফ্লোরস দ্বীপে দেখা মেলে তাদের। কমোডো জাতীয় উদ্যান এদের মূল আস্তানা। পার্কটিতে তিনটি বড় দ্বীপ কমোডো, পাদার এবং রিনকা ছাড়াও ছোট ২৬টি দ্বীপ আছে। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচারের (আইইউসিএন) দেওয়া তথ্য বলছে বর্তমানে ইন্দোনেশিয়ার দ্বীপগুলোতে বুনো পরিবেশে টিকে থাকা প্রাপ্তবয়স্ক কমোডো ড্রাগনের সংখ্যা ১ হাজার ৩৮৩। ছোট ও কিশোর বয়সী ড্রাগনের সংখ্যাটাও কম নয়। এ ছাড়া বিভিন্ন দেশের চিড়িয়াখানায় বেশ কিছু কমোডো ড্রাগন আছে।
যতদূর জানা যায়, ইন্দোনেশিয়ার কমোডো দ্বীপে বাস করায় আর ভয়ানক চেহারা ও লম্বা হলুদ জিভ মিলিয়ে পৌরাণিক সেই ড্রাগনের সঙ্গে কিছুটি মিল খুঁজে পাওয়াতেই এর নাম রাখা হয় ‘কমোডো ড্রাগন’।
স্থানীয়রা এদের কথা জানলেও পৃথিবীর মানুষের কাছে এরা পরিচিত হয় বিশ শতকের গোড়ার দিকে, আরও পরিষ্কারভাবে বললে ১৯১০ সালে। ওই সময় ইন্দোনেশিয়া ছিল ডাচদের কলোনি। এখানকার ডাচ প্রশাসক ছিলেন লেফটেন্যান্ট জ্যাক কেল হেনরি ভ্যান স্টেইন ভ্যান হেনসব্রুক। ডাঙায় বাস করে এমন বিশাল আকারের ‘কুমিরের’ গল্প শুনে উৎসাহিত হয়ে ওঠেন তিনি। কমোডো দ্বীপে অভিযান চালিয়ে ফেরেন আশ্চর্য এই প্রাণীদের ছবি আর একটা চামড়া নিয়ে।
যে দ্বীপগুলোয় কমোডো ড্রাগনের বাস সেখানে তারাই রাজা। মোটামুটি যা পায় তাই খায় এরা। ইতিমধ্যে মারা যাওয়া প্রাণী খেতেও তাদের আপত্তি নেই। হরিণ, মহিষ, শূকর এমনকি বাচ্চা বা কম বয়স্ক কমোডো ড্রাগনদেরও খায় এরা। তবে এসব বাচ্চা কমোডো ড্রাগনেরা খুব চটপটে। গাছে চড়ে বড়দের শিকার হওয়া থেকে রক্ষা পাওয়ার তরিকা খুব দ্রুতই শিখে নেয় তারা।
কমোডো ড্রাগনের মানুষকে আক্রমণের ঘটনাও ঘটে, যদিও সংখ্যাটা বেশি নয়। বন্য এবং চিড়িয়াখানায় বন্দী দুই ধরনের কমোডো ড্রাগনের থেকেই এমন আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। ১৯৭৪ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ৩৮ বছরে কমোডো ন্যাশনাল পার্কের তথ্য অনুসারে, মানুষের ওপর ২৪টি আক্রমণের খবর পাওয়া গেছে, যার মধ্যে পাঁচজন নিহত হন। নিহতদের বেশির ভাগই কমোডো জাতীয় উদ্যানের আশপাশে বসবাসকারী স্থানীয় গ্রামবাসী।
শিকারের সময় কমোডো ড্রাগন তাদের লুকিয়ে থাকার অসাধারণ ক্ষমতা ও ধৈর্যের প্রমাণ দেয়। ঝোপ-জঙ্গল বা লম্বা ঘাসে ঘাপটি মেরে থাকে, যতক্ষণ না কোনো শিকার পাশ দিয়ে যায়। নাগালের মধ্যে এলেই ঝাঁপিয়ে পড়ে শক্তিশালী পা এবং ধারালো নখ দিয়ে আঁকড়ে ধরে। তারপর ধারালো দাঁত ডুবিয়ে দেয় শিকারের শরীরে।
শুনে অবাক হবেন, স্ত্রী কমোডো ড্রাগন পুরুষ ড্রাগন ছাড়াই প্রজনন করতে সক্ষম। এটি পার্থেনোজেনেসিস নামে পরিচিত অযৌন প্রজননের একটি প্রক্রিয়ার কারণে হয়। ২০০৬ সালে প্রথম বিষয়টি জানা যায়, যখন ফ্লোরা নামক একটি ড্রাগন ইংল্যান্ডের চেস্টার চিড়িয়াখানায় পাঁচটি শিশু ড্রাগন জন্ম দেয়। অথচ কোনো পুরুষ কমোডো ড্রাগনের সঙ্গে কখনো তাকে রাখা হয়নি।
লন্ডন চিড়িয়াখানার জো ক্যাপনের মতে, কমোডো ড্রাগনের উদ্ভব ৯ কোটি বছর আগে। অস্ট্রেলিয়া থেকে আসা বিশালাকায় মনিটর লিজার্ড বা গুইসাপ থেকে বিবর্তনের মাধ্যমে এদের উদ্ভব। এতদিন ধরে অন্যদের থেকে বিচ্ছিন্ন থাকায় একপর্যায়ে নিজেরাই একটি প্রজাতিতে পরিণত হয়।
১৯২৬ সালে উইলিয়াম ডগলাস বার্ডেন নিউইয়র্কের ব্রঙ্কস চিড়িয়াখানার জন্য এক জোড়া ড্রাগন ধরতে কমোডো দ্বীপে যান। বার্ডেনের বন্ধু, চলচ্চিত্র পরিচালক মেরিয়ান কুপার তাঁর ১৯৩৩ সালে মুক্তি পাওয়া কিং কং ছবিতে দুঃসাহসিক সেই অভিযানের অনেক উপাদানই ব্যবহার করেন। কুপার সব সময়ই চেয়েছিলেন দৈত্যাকার একটি গরিলা বা শিম্পাঞ্জিজাতীয় প্রাণীকে ঘিরে আবর্তিত হবে কাহিনি। তবে রহস্যময় দ্বীপ এবং বিশাল আকারের প্রাচীন দানব সরীসৃপগুলোর দৃশ্য চিত্রায়িত হয় বার্ডেনের ভ্রমণে অনুপ্রাণিত হয়ে। যতদূর নানা যায় কমোডো ড্রাগনদের নামটি দেন বার্ডেনই।
এবার শক্তিশালী এ সরীসৃপদের চেহারার একটু বর্ণনা দেওয়া যাক। এদের মাথা চওড়া ও চ্যাপ্টা, নাক কিছুটা বৃত্তাকার, পা বাঁকানো এবং লেজটা বিশাল ও পেশিবহুল। তাদের হাঁটা অবশ্য খুব দ্রুতগতির নয়। ১০ মাইলের বেশি গতি তোলাটাই ওদের জন্য বেশ কঠিন। ততে এই ড্রাগনদের যে জিনিসটা আপনার নজর কাড়বে সেটি, লম্বা হলুদ জিব। ক্রমাগত এটা বাইরে বের করে আনে আবার ভেতরে ঢুকিয়ে ফেলে। এমনিতে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় সাভানা বনে বাস করে। তবে দ্বীপের বিস্তৃত সৈকত এমনকি পাহাড়েও এরা বিচরণ করে।
স্ত্রী কমোডো ড্রাগন একবারে ৩০টি ডিম পাড়তে পারে। এগুলো এরা কয়েক মাস ধরে পাহারা দেয়। শিশুদের সবুজাভ শরীরে হলুদ ও কালো বলয়ের মতো থাকে। কিন্তু বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ধূসর থেকে লালচে-বাদামি হয়ে যায় এই রং। ছোট ড্রাগনরা বড় কমোডো ড্রাগনসহ অন্য শিকারি প্রাণীদের এড়াতে আট মাস বয়স না হওয়া পর্যন্ত গাছেই থাকে।
ভয়ংকর চেহারারা এই ড্রাগনদের শিকারের বেশির ভাগ প্রচেষ্টাই ব্যর্থ হয়। তবে তাতে এদের বয়েই গেছে। একবার যদি শিকারকে কামড়াতে সক্ষম হয় তবেই হয়েছে। এদের লালায় থাকা ব্যাকটেরিয়া এবং বিষ কয়েক দিনের মধ্যে শিকারকে মেরে ফেলবে। প্রাণীটি মারা যাওয়ার পরে, যার জন্য চার দিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে, কমোডো তার শক্তিশালী ঘ্রাণশক্তি ব্যবহার করে দেহটি শনাক্ত করে। প্রায়ই কোনো একটি শিকার অনেক কমোডো ড্রাগনকে মিলেমিশে খেতে দেখা যায়। এদের দৃষ্টিশক্তিও প্রখর, তাই অনেক দূর থেকেই শিকারকে দেখতে পারে।
এই সরীসৃপদের বড়, বাঁকা ও ধারালো দাঁত এদের সবচেয়ে মারাত্মক অস্ত্র। যেগুলো মাংস ছিঁড়ে খেতে সাহায্য করে। দাঁতের ফাঁকে সাম্প্রতিক খাওয়া মাংসের কণা রয়ে যায়। এই প্রোটিন-সমৃদ্ধ পচা মাংসে প্রচুর ব্যাকটেরিয়া উপস্থিত থাকে। এদের লালায় প্রায় ৫০ ধরনের ব্যাকটেরিয়া পাওয়া গেছে, যার মধ্যে অন্তত সাতটি খুব ক্ষতিকর। গবেষকেরা ড্রাগনের নিচের চোয়ালে একটি বিষ গ্রন্থিরও সন্ধান পেয়েছেন। এ বিষ রক্তকে জমাট বাঁধতে বাধা দেয়, যা ব্যাপক রক্তক্ষরণ ঘটিয়ে শিকারকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়।
তবে কমোডোর কামড় কিন্তু অন্য কমোডো ড্রাগনের জন্য মারাত্মক নয়। একে অপরের সঙ্গে ঝগড়া করার সময় আহত ড্রাগনেরা ব্যাকটেরিয়া এবং বিষে আক্রান্ত হয়েছে এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বিজ্ঞানীরা কমোডো ড্রাগনের রক্তে এর বিষ বা ব্যাকটেরিয়ার প্রতিষেধক খুঁজছেন। এদের গলা এবং ঘাড়ের পেশি দ্রুত মাংসের বিশাল খণ্ড গিলে ফেলতে সাহায্য করে। একটি প্রাপ্তবয়স্ক প্রাণী একবারে নিজের শরীরের ওজনের ৮০ শতাংশ খাবার গ্রহণ করতে সক্ষম। তবে যখন বিপদ দেখা দেয় তখন কমোডো ড্রাগন তাদের ওজন কমাতে তাদের পেটের ভেতরে জমা হওয়া খাবার ছুড়ে ফেলে দ্রুতগতিতে পালাতে পারে।
সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক কিডস, বিবিসি সায়েন্স ফোকাস, স্মিথসোনিয়ানস ন্যাশনাল জু, বিবিসি

হাজার হাজার বছর ধরেই ভয়ানক এক প্রাণী ড্রাগনের গল্প আলোড়িত করে আসছে মানুষকে। সুমেরু অঞ্চলের কিংবদন্তি থেকে শুরু করে প্রাচীন মেসোপটেমিয়া এবং পরে চীন, মিসর, ভারত, গ্রিস এমনকি গ্রেট ব্রিটেনের মতো জায়গায় ড্রাগন নিয়ে ডালপালা মেলেছে কত হাজারও গল্প। বই, সিনেমা, টিভি শোতে নিয়মিতই ড্রাগনকে দেখি আমরা।
কিন্তু ড্রাগন কি সত্যি আছে, নাকি পুরোটা আমাদের কল্পনা। সত্যি বলতে ড্রাগন নামধারী অনেক প্রাণীই আছে পৃথিবীতে। তবে মুখ দিয়ে আগুন বের হওয়া সেই ভয়াল দর্শন ড্রাগন পুরোপুরিই কল্পনা। এমনকি ড্রাগন নামধারী বেশির ভাগ প্রাণী ততটা বিপজ্জনকও নয়। তবে কমোডো ড্রাগনের কথা যদি বলেন তবে হিসাবটা একটু আলাদা। দশ ফুটি প্রাণীটা যখন লকলকে জিব বের করে আপনার দিকে এগিয়ে আসবে, তখন আমাদের কল্পনার ওই ড্রাগনের কথাই হয়তো মনে পড়ে যাবে। উল্টো দিকে খিঁচে দৌড় দেওয়াটাই হবে তখন একমাত্র লক্ষ্য।
লিজার্ডদের মধ্যে কমোডো ড্রাগনই সবচেয়ে বড় ও ভারী। প্রাপ্তবয়স্ক একটি কমোডো ড্রাগন ১০ ফুট পর্যন্ত হয় লম্বায়। ওজনের হয় ১৪০ কেজি বা ৩০০ পাউন্ডের মতো। তবে সাধারণত এদের ওজন ৭০ কেজি বা ১৫০ পাউন্ডের আশপাশে হয়।
আনুমানিক ১৫১০ সালের হান্ট-লেনক্স গ্লোবে প্রথম সম্ভবত ‘হিক সান্ট ড্রাকোনস’ বা ‘এখানে ড্রাগন আছে’ কথাটি প্রথম ব্যবহার করা হয়। এশিয়ার পূর্ব উপকূলকে চিহ্নিত করা হয় এটা দিয়ে। চীনা নাবিকদের কয়েকটি ছোট ইন্দোনেশিয়ান দ্বীপে ড্রাগন দেখার গল্পের ভিত্তিতে সম্ভবত এটা করা হয়।
ইন্দোনেশিয়ার কমোডো দ্বীপের পাশাপাশি রিনকা, ফ্লোরস দ্বীপে দেখা মেলে তাদের। কমোডো জাতীয় উদ্যান এদের মূল আস্তানা। পার্কটিতে তিনটি বড় দ্বীপ কমোডো, পাদার এবং রিনকা ছাড়াও ছোট ২৬টি দ্বীপ আছে। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচারের (আইইউসিএন) দেওয়া তথ্য বলছে বর্তমানে ইন্দোনেশিয়ার দ্বীপগুলোতে বুনো পরিবেশে টিকে থাকা প্রাপ্তবয়স্ক কমোডো ড্রাগনের সংখ্যা ১ হাজার ৩৮৩। ছোট ও কিশোর বয়সী ড্রাগনের সংখ্যাটাও কম নয়। এ ছাড়া বিভিন্ন দেশের চিড়িয়াখানায় বেশ কিছু কমোডো ড্রাগন আছে।
যতদূর জানা যায়, ইন্দোনেশিয়ার কমোডো দ্বীপে বাস করায় আর ভয়ানক চেহারা ও লম্বা হলুদ জিভ মিলিয়ে পৌরাণিক সেই ড্রাগনের সঙ্গে কিছুটি মিল খুঁজে পাওয়াতেই এর নাম রাখা হয় ‘কমোডো ড্রাগন’।
স্থানীয়রা এদের কথা জানলেও পৃথিবীর মানুষের কাছে এরা পরিচিত হয় বিশ শতকের গোড়ার দিকে, আরও পরিষ্কারভাবে বললে ১৯১০ সালে। ওই সময় ইন্দোনেশিয়া ছিল ডাচদের কলোনি। এখানকার ডাচ প্রশাসক ছিলেন লেফটেন্যান্ট জ্যাক কেল হেনরি ভ্যান স্টেইন ভ্যান হেনসব্রুক। ডাঙায় বাস করে এমন বিশাল আকারের ‘কুমিরের’ গল্প শুনে উৎসাহিত হয়ে ওঠেন তিনি। কমোডো দ্বীপে অভিযান চালিয়ে ফেরেন আশ্চর্য এই প্রাণীদের ছবি আর একটা চামড়া নিয়ে।
যে দ্বীপগুলোয় কমোডো ড্রাগনের বাস সেখানে তারাই রাজা। মোটামুটি যা পায় তাই খায় এরা। ইতিমধ্যে মারা যাওয়া প্রাণী খেতেও তাদের আপত্তি নেই। হরিণ, মহিষ, শূকর এমনকি বাচ্চা বা কম বয়স্ক কমোডো ড্রাগনদেরও খায় এরা। তবে এসব বাচ্চা কমোডো ড্রাগনেরা খুব চটপটে। গাছে চড়ে বড়দের শিকার হওয়া থেকে রক্ষা পাওয়ার তরিকা খুব দ্রুতই শিখে নেয় তারা।
কমোডো ড্রাগনের মানুষকে আক্রমণের ঘটনাও ঘটে, যদিও সংখ্যাটা বেশি নয়। বন্য এবং চিড়িয়াখানায় বন্দী দুই ধরনের কমোডো ড্রাগনের থেকেই এমন আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। ১৯৭৪ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ৩৮ বছরে কমোডো ন্যাশনাল পার্কের তথ্য অনুসারে, মানুষের ওপর ২৪টি আক্রমণের খবর পাওয়া গেছে, যার মধ্যে পাঁচজন নিহত হন। নিহতদের বেশির ভাগই কমোডো জাতীয় উদ্যানের আশপাশে বসবাসকারী স্থানীয় গ্রামবাসী।
শিকারের সময় কমোডো ড্রাগন তাদের লুকিয়ে থাকার অসাধারণ ক্ষমতা ও ধৈর্যের প্রমাণ দেয়। ঝোপ-জঙ্গল বা লম্বা ঘাসে ঘাপটি মেরে থাকে, যতক্ষণ না কোনো শিকার পাশ দিয়ে যায়। নাগালের মধ্যে এলেই ঝাঁপিয়ে পড়ে শক্তিশালী পা এবং ধারালো নখ দিয়ে আঁকড়ে ধরে। তারপর ধারালো দাঁত ডুবিয়ে দেয় শিকারের শরীরে।
শুনে অবাক হবেন, স্ত্রী কমোডো ড্রাগন পুরুষ ড্রাগন ছাড়াই প্রজনন করতে সক্ষম। এটি পার্থেনোজেনেসিস নামে পরিচিত অযৌন প্রজননের একটি প্রক্রিয়ার কারণে হয়। ২০০৬ সালে প্রথম বিষয়টি জানা যায়, যখন ফ্লোরা নামক একটি ড্রাগন ইংল্যান্ডের চেস্টার চিড়িয়াখানায় পাঁচটি শিশু ড্রাগন জন্ম দেয়। অথচ কোনো পুরুষ কমোডো ড্রাগনের সঙ্গে কখনো তাকে রাখা হয়নি।
লন্ডন চিড়িয়াখানার জো ক্যাপনের মতে, কমোডো ড্রাগনের উদ্ভব ৯ কোটি বছর আগে। অস্ট্রেলিয়া থেকে আসা বিশালাকায় মনিটর লিজার্ড বা গুইসাপ থেকে বিবর্তনের মাধ্যমে এদের উদ্ভব। এতদিন ধরে অন্যদের থেকে বিচ্ছিন্ন থাকায় একপর্যায়ে নিজেরাই একটি প্রজাতিতে পরিণত হয়।
১৯২৬ সালে উইলিয়াম ডগলাস বার্ডেন নিউইয়র্কের ব্রঙ্কস চিড়িয়াখানার জন্য এক জোড়া ড্রাগন ধরতে কমোডো দ্বীপে যান। বার্ডেনের বন্ধু, চলচ্চিত্র পরিচালক মেরিয়ান কুপার তাঁর ১৯৩৩ সালে মুক্তি পাওয়া কিং কং ছবিতে দুঃসাহসিক সেই অভিযানের অনেক উপাদানই ব্যবহার করেন। কুপার সব সময়ই চেয়েছিলেন দৈত্যাকার একটি গরিলা বা শিম্পাঞ্জিজাতীয় প্রাণীকে ঘিরে আবর্তিত হবে কাহিনি। তবে রহস্যময় দ্বীপ এবং বিশাল আকারের প্রাচীন দানব সরীসৃপগুলোর দৃশ্য চিত্রায়িত হয় বার্ডেনের ভ্রমণে অনুপ্রাণিত হয়ে। যতদূর নানা যায় কমোডো ড্রাগনদের নামটি দেন বার্ডেনই।
এবার শক্তিশালী এ সরীসৃপদের চেহারার একটু বর্ণনা দেওয়া যাক। এদের মাথা চওড়া ও চ্যাপ্টা, নাক কিছুটা বৃত্তাকার, পা বাঁকানো এবং লেজটা বিশাল ও পেশিবহুল। তাদের হাঁটা অবশ্য খুব দ্রুতগতির নয়। ১০ মাইলের বেশি গতি তোলাটাই ওদের জন্য বেশ কঠিন। ততে এই ড্রাগনদের যে জিনিসটা আপনার নজর কাড়বে সেটি, লম্বা হলুদ জিব। ক্রমাগত এটা বাইরে বের করে আনে আবার ভেতরে ঢুকিয়ে ফেলে। এমনিতে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় সাভানা বনে বাস করে। তবে দ্বীপের বিস্তৃত সৈকত এমনকি পাহাড়েও এরা বিচরণ করে।
স্ত্রী কমোডো ড্রাগন একবারে ৩০টি ডিম পাড়তে পারে। এগুলো এরা কয়েক মাস ধরে পাহারা দেয়। শিশুদের সবুজাভ শরীরে হলুদ ও কালো বলয়ের মতো থাকে। কিন্তু বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ধূসর থেকে লালচে-বাদামি হয়ে যায় এই রং। ছোট ড্রাগনরা বড় কমোডো ড্রাগনসহ অন্য শিকারি প্রাণীদের এড়াতে আট মাস বয়স না হওয়া পর্যন্ত গাছেই থাকে।
ভয়ংকর চেহারারা এই ড্রাগনদের শিকারের বেশির ভাগ প্রচেষ্টাই ব্যর্থ হয়। তবে তাতে এদের বয়েই গেছে। একবার যদি শিকারকে কামড়াতে সক্ষম হয় তবেই হয়েছে। এদের লালায় থাকা ব্যাকটেরিয়া এবং বিষ কয়েক দিনের মধ্যে শিকারকে মেরে ফেলবে। প্রাণীটি মারা যাওয়ার পরে, যার জন্য চার দিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে, কমোডো তার শক্তিশালী ঘ্রাণশক্তি ব্যবহার করে দেহটি শনাক্ত করে। প্রায়ই কোনো একটি শিকার অনেক কমোডো ড্রাগনকে মিলেমিশে খেতে দেখা যায়। এদের দৃষ্টিশক্তিও প্রখর, তাই অনেক দূর থেকেই শিকারকে দেখতে পারে।
এই সরীসৃপদের বড়, বাঁকা ও ধারালো দাঁত এদের সবচেয়ে মারাত্মক অস্ত্র। যেগুলো মাংস ছিঁড়ে খেতে সাহায্য করে। দাঁতের ফাঁকে সাম্প্রতিক খাওয়া মাংসের কণা রয়ে যায়। এই প্রোটিন-সমৃদ্ধ পচা মাংসে প্রচুর ব্যাকটেরিয়া উপস্থিত থাকে। এদের লালায় প্রায় ৫০ ধরনের ব্যাকটেরিয়া পাওয়া গেছে, যার মধ্যে অন্তত সাতটি খুব ক্ষতিকর। গবেষকেরা ড্রাগনের নিচের চোয়ালে একটি বিষ গ্রন্থিরও সন্ধান পেয়েছেন। এ বিষ রক্তকে জমাট বাঁধতে বাধা দেয়, যা ব্যাপক রক্তক্ষরণ ঘটিয়ে শিকারকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়।
তবে কমোডোর কামড় কিন্তু অন্য কমোডো ড্রাগনের জন্য মারাত্মক নয়। একে অপরের সঙ্গে ঝগড়া করার সময় আহত ড্রাগনেরা ব্যাকটেরিয়া এবং বিষে আক্রান্ত হয়েছে এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বিজ্ঞানীরা কমোডো ড্রাগনের রক্তে এর বিষ বা ব্যাকটেরিয়ার প্রতিষেধক খুঁজছেন। এদের গলা এবং ঘাড়ের পেশি দ্রুত মাংসের বিশাল খণ্ড গিলে ফেলতে সাহায্য করে। একটি প্রাপ্তবয়স্ক প্রাণী একবারে নিজের শরীরের ওজনের ৮০ শতাংশ খাবার গ্রহণ করতে সক্ষম। তবে যখন বিপদ দেখা দেয় তখন কমোডো ড্রাগন তাদের ওজন কমাতে তাদের পেটের ভেতরে জমা হওয়া খাবার ছুড়ে ফেলে দ্রুতগতিতে পালাতে পারে।
সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক কিডস, বিবিসি সায়েন্স ফোকাস, স্মিথসোনিয়ানস ন্যাশনাল জু, বিবিসি

সকালে দোকানের শাটার খুলতেই চক্ষু চড়কগাছ যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার অ্যাশল্যান্ডের একটি সরকারি মদের দোকানের কর্মীদের। দোকানের মেঝেতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে শত শত ভাঙা কাচের টুকরা। মেঝে ভেসে গেছে দামি বিলেতি মদে!
২ দিন আগে
ভারতের মধ্যাঞ্চলের একটি প্রত্যন্ত এলাকায় হঠাৎ পাওয়া একটি হিরার খোঁজ দুই বন্ধুর জীবনে আশার আলো জ্বালিয়েছে। মধ্যপ্রদেশের পান্না জেলায় সম্প্রতি এক শীতের সকালে শৈশবের বন্ধু সতীশ খাটিক ও সাজিদ মোহাম্মদের হাতে ধরা পড়েছে ১৫.৩৪ ক্যারেটের মূল্যবান ওই হিরাটি।
২ দিন আগেচাকরি খোঁজার জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম লিংকডইন। সেখানে কর্মীরা চাকরি খোঁজেন এবং অনেক প্রতিষ্ঠান সেখান থেকে কর্মীদের বাছাই করে থাকে। এই প্ল্যাটফর্মে এবার ‘গার্লফ্রেন্ড’ বা নারীবন্ধুর খোঁজে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন ভারতের এক ব্যক্তি। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে হাসি-ঠাট্টা ও বিদ্রুপ।
৫ দিন আগে
কাজের মধ্যে ঘন ঘন টয়লেটে যাওয়ার জন্য বিরতি নিয়ে চাকরি খুইয়েছেন এক চীনা প্রকৌশলী। চীনের পূর্বাঞ্চলের জিয়াংসু প্রদেশের ওই প্রকৌশলী ঘন ঘন এবং প্রতিবার এক ঘণ্টার বেশি সময় টয়লেটে কাটাচ্ছিলেন। যদিও তাঁর দাবি ছিল, তিনি অর্শ বা পাইলসের সমস্যায় ভুগছেন।
৬ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

সকালে দোকানের শাটার খুলতেই চক্ষু চড়কগাছ যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার অ্যাশল্যান্ডের একটি সরকারি মদের দোকানের কর্মীদের। দোকানের মেঝেতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে শত শত ভাঙা কাচের টুকরা। মেঝে ভেসে গেছে দামি বিলেতি মদে! প্রাথমিকভাবে সবাই বড় কোনো চুরির আশঙ্কা করলেও কোনো দামি জিনিস খোয়া যায়নি; বরং দোকানের বাথরুমের কমোড আর ডাস্টবিনের চিপায় উদ্ধার হলো আসল ‘অপরাধী’। সেখানে অঘোরে নাক ডেকে ঘুমাচ্ছিল এক বুনো র্যাকুন!
ঘটনার সূত্রপাত হয় থ্যাংকসগিভিংয়ের ছুটিতে। দোকান বন্ধ থাকার সুযোগে এই ‘মুখোশধারী ডাকাত’ সিলিংয়ের টাইলস ভেঙে দোকানের ভেতরে প্রবেশ করে। পশুপালন দপ্তরের কর্মকর্তা সামান্থা মার্টিন গণমাধ্যমকে জানান, ভেতরে ঢুকেই র্যাকুনটি পুরোদস্তুর তাণ্ডব শুরু করে। তবে তার প্রধান আকর্ষণ ছিল নিচের দিকের তাকগুলোতে সাজিয়ে রাখা স্কচ হুইস্কির বোতলগুলো। বেশ কয়েকটি বোতল ভেঙে, প্রচুর পরিমাণে স্কচ সাবাড় করে র্যাকুনটি মাতাল হয়ে পড়ে। একপর্যায়ে নেশার ঘোরে সে বাথরুমে আশ্রয় নেয় এবং সেখানেই জ্ঞান হারায়।
খবর পেয়ে সামান্থা মার্টিন ঘটনাস্থলে পৌঁছে র্যাকুনটিকে উদ্ধার করেন। তিনি কৌতুক করে বলেন, ‘পশু সুরক্ষা ও নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তার জীবনে এটা আর দশটা দিনের মতোই একটি সাধারণ দিন!’

র্যাকুনটি এতটাই নেশাগ্রস্ত ছিল যে সেটিকে ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য’ হ্যানোভার কাউন্টি অ্যানিমেল প্রটেকশন শেল্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে পুলিশি কাস্টডিতে নয়, বরং তার নেশা কাটানোর জন্যই এই ব্যবস্থা।
বেশ কয়েক ঘণ্টা একটানা ঘুমের পর যখন র্যাকুনটি হ্যাংওভার কাটে। শারীরিক কোনো চোট পাওয়া যায়নি। এটি নিশ্চিত হয়েই তাকে সসম্মানে জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হয়।
দোকানের সিসিটিভি ফুটেজে এক রহস্যময় ছায়ামূর্তির তাণ্ডব দেখা গেলেও র্যাকুনটি ঠিক কতটা স্কচ হজম করেছিল, তা অজানাই রয়ে গেছে। দোকানের পক্ষ থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি মজার পোস্ট দিয়ে জানানো হয়, র্যাকুনটিকে নিরাপদে ‘সোবার রাইড’, অর্থাৎ নেশামুক্ত অবস্থায় বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার জন্য তারা প্রশাসনের কাছে কৃতজ্ঞ!

সকালে দোকানের শাটার খুলতেই চক্ষু চড়কগাছ যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার অ্যাশল্যান্ডের একটি সরকারি মদের দোকানের কর্মীদের। দোকানের মেঝেতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে শত শত ভাঙা কাচের টুকরা। মেঝে ভেসে গেছে দামি বিলেতি মদে! প্রাথমিকভাবে সবাই বড় কোনো চুরির আশঙ্কা করলেও কোনো দামি জিনিস খোয়া যায়নি; বরং দোকানের বাথরুমের কমোড আর ডাস্টবিনের চিপায় উদ্ধার হলো আসল ‘অপরাধী’। সেখানে অঘোরে নাক ডেকে ঘুমাচ্ছিল এক বুনো র্যাকুন!
ঘটনার সূত্রপাত হয় থ্যাংকসগিভিংয়ের ছুটিতে। দোকান বন্ধ থাকার সুযোগে এই ‘মুখোশধারী ডাকাত’ সিলিংয়ের টাইলস ভেঙে দোকানের ভেতরে প্রবেশ করে। পশুপালন দপ্তরের কর্মকর্তা সামান্থা মার্টিন গণমাধ্যমকে জানান, ভেতরে ঢুকেই র্যাকুনটি পুরোদস্তুর তাণ্ডব শুরু করে। তবে তার প্রধান আকর্ষণ ছিল নিচের দিকের তাকগুলোতে সাজিয়ে রাখা স্কচ হুইস্কির বোতলগুলো। বেশ কয়েকটি বোতল ভেঙে, প্রচুর পরিমাণে স্কচ সাবাড় করে র্যাকুনটি মাতাল হয়ে পড়ে। একপর্যায়ে নেশার ঘোরে সে বাথরুমে আশ্রয় নেয় এবং সেখানেই জ্ঞান হারায়।
খবর পেয়ে সামান্থা মার্টিন ঘটনাস্থলে পৌঁছে র্যাকুনটিকে উদ্ধার করেন। তিনি কৌতুক করে বলেন, ‘পশু সুরক্ষা ও নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তার জীবনে এটা আর দশটা দিনের মতোই একটি সাধারণ দিন!’

র্যাকুনটি এতটাই নেশাগ্রস্ত ছিল যে সেটিকে ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য’ হ্যানোভার কাউন্টি অ্যানিমেল প্রটেকশন শেল্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে পুলিশি কাস্টডিতে নয়, বরং তার নেশা কাটানোর জন্যই এই ব্যবস্থা।
বেশ কয়েক ঘণ্টা একটানা ঘুমের পর যখন র্যাকুনটি হ্যাংওভার কাটে। শারীরিক কোনো চোট পাওয়া যায়নি। এটি নিশ্চিত হয়েই তাকে সসম্মানে জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হয়।
দোকানের সিসিটিভি ফুটেজে এক রহস্যময় ছায়ামূর্তির তাণ্ডব দেখা গেলেও র্যাকুনটি ঠিক কতটা স্কচ হজম করেছিল, তা অজানাই রয়ে গেছে। দোকানের পক্ষ থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি মজার পোস্ট দিয়ে জানানো হয়, র্যাকুনটিকে নিরাপদে ‘সোবার রাইড’, অর্থাৎ নেশামুক্ত অবস্থায় বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার জন্য তারা প্রশাসনের কাছে কৃতজ্ঞ!

ইন্দোনেশিয়ার কয়েকটি দ্বীপে আছে কমোডো ড্রাগন নামের ভয়াল দর্শন এক প্রাণী। দশ ফুটি কমোডো ড্রাগন যখন হলদে লকলকে জিব বের করে আপনার দিকে এগিয়ে আসবে তখন কল্পনার ওই মুখে আগুন বের হওয়া ড্রাগনের কথা মনে পড়েও যেতে পারে।
২৮ আগস্ট ২০২৩
ভারতের মধ্যাঞ্চলের একটি প্রত্যন্ত এলাকায় হঠাৎ পাওয়া একটি হিরার খোঁজ দুই বন্ধুর জীবনে আশার আলো জ্বালিয়েছে। মধ্যপ্রদেশের পান্না জেলায় সম্প্রতি এক শীতের সকালে শৈশবের বন্ধু সতীশ খাটিক ও সাজিদ মোহাম্মদের হাতে ধরা পড়েছে ১৫.৩৪ ক্যারেটের মূল্যবান ওই হিরাটি।
২ দিন আগেচাকরি খোঁজার জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম লিংকডইন। সেখানে কর্মীরা চাকরি খোঁজেন এবং অনেক প্রতিষ্ঠান সেখান থেকে কর্মীদের বাছাই করে থাকে। এই প্ল্যাটফর্মে এবার ‘গার্লফ্রেন্ড’ বা নারীবন্ধুর খোঁজে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন ভারতের এক ব্যক্তি। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে হাসি-ঠাট্টা ও বিদ্রুপ।
৫ দিন আগে
কাজের মধ্যে ঘন ঘন টয়লেটে যাওয়ার জন্য বিরতি নিয়ে চাকরি খুইয়েছেন এক চীনা প্রকৌশলী। চীনের পূর্বাঞ্চলের জিয়াংসু প্রদেশের ওই প্রকৌশলী ঘন ঘন এবং প্রতিবার এক ঘণ্টার বেশি সময় টয়লেটে কাটাচ্ছিলেন। যদিও তাঁর দাবি ছিল, তিনি অর্শ বা পাইলসের সমস্যায় ভুগছেন।
৬ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ভারতের মধ্যাঞ্চলের একটি প্রত্যন্ত এলাকায় হঠাৎ পাওয়া একটি হিরার খোঁজ দুই বন্ধুর জীবনে আশার আলো জ্বালিয়েছে। মধ্যপ্রদেশের পান্না জেলায় সম্প্রতি এক শীতের সকালে শৈশবের বন্ধু সতীশ খাটিক ও সাজিদ মোহাম্মদের হাতে ধরা পড়েছে ১৫.৩৪ ক্যারেটের মূল্যবান ওই হিরাটি। এটির বাজারমূল্য বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় পৌনে এক কোটি টাকা।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) বিবিসি জানিয়েছে, পান্না জেলা ভারতের অন্যতম হিরা উত্তোলন অঞ্চল। সেখানেই কয়েক সপ্তাহ আগে লিজ নেওয়া একটি জমিতে কাজ করতে গিয়ে চকচকে পাথরটির সন্ধান পান সতীশ ও সাজিদ। পরে সেটি শহরের সরকারি হিরা মূল্যায়ন কর্মকর্তার কাছে নিয়ে গেলে নিশ্চিত হওয়া যায়—এটি উৎকৃষ্ট মানের প্রাকৃতিক হিরা।

মূল্যায়ন কর্মকর্তা অনুপম সিং জানান, হিরাটির সম্ভাব্য দাম ৭০ থেকে ৮০ লাখ টাকা। শিগগিরই এটিকে সরকারি নিলামে তোলা হবে। এই নিলামে দেশ-বিদেশের ক্রেতারা অংশ নেবেন। তিনি আরও জানান, হিরার দাম নির্ভর করে ডলারের বিনিময় হার ও আন্তর্জাতিক রাপাপোর্ট রিপোর্টের মানদণ্ডের ওপর।
২৪ বছর বয়সী সতীশ খাটিক একটি মাংসের দোকান চালান, আর ২৩ বছরের সাজিদ মোহাম্মদ ফল বিক্রি করেন। দুজনই দরিদ্র পরিবারের সন্তান এবং পরিবারের কনিষ্ঠ সদস্য। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে তাঁদের পরিবার পান্নায় হিরা খোঁজার চেষ্টা করেছে। কিন্তু এত দিন কোনো বড় সাফল্য আসেনি।
উন্নয়ন সূচকে পান্না জেলা পিছিয়ে থাকা একটি এলাকা। এখানে দারিদ্র্য, পানির সংকট ও বেকারত্ব নিত্যদিনের বাস্তবতা। তবে এই জেলাতেই ভারতের অধিকাংশ হিরা মজুত রয়েছে, যা স্থানীয়দের ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখায়।
সাজিদের বাবা নাফিস জানান, বছরের পর বছর খোঁড়াখুঁড়ি করেও তাঁরা পেয়েছেন শুধু ধুলো আর কাঁচের টুকরো। তিনি বলেন, ‘ঈশ্বর অবশেষে আমাদের ধৈর্য আর পরিশ্রমের ফল দিয়েছেন।’ সংসারের ক্রমবর্ধমান খরচ ও বিয়ের ব্যয় মেটাতে না পেরে হতাশা থেকেই জমিটি লিজ নিয়েছিলেন সাজিদ।
হিরা খোঁজার কাজ সহজ নয়। দিনের কাজ শেষে সন্ধ্যায় কিংবা ছুটির সময় মাটি খুঁড়ে, পাথর ধুয়ে, চালুনিতে ছেঁকে হাজারো কণার ভিড় থেকে সম্ভাব্য হিরা আলাদা করতেন সতীশ ও সাজিদ। পান্নার জেলা খনি কর্মকর্তা রবি প্যাটেল বলেন, ‘গত ১৯ নভেম্বর তারা জমিটি লিজ নেয়। কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই এমন মানের হিরা পাওয়া সৌভাগ্যের ব্যাপার।’
এখনো নিলামের টাকা হাতে না পেলেও দুই বন্ধু আশাবাদী। বড় শহরে চলে যাওয়া বা ব্যবসা বাড়ানোর চিন্তা আপাতত তাঁরা বাদ দিয়েছেন। তাঁদের একটাই লক্ষ্য—এই অর্থ দিয়ে নিজেদের বোনদের বিয়ে দেওয়া।

ভারতের মধ্যাঞ্চলের একটি প্রত্যন্ত এলাকায় হঠাৎ পাওয়া একটি হিরার খোঁজ দুই বন্ধুর জীবনে আশার আলো জ্বালিয়েছে। মধ্যপ্রদেশের পান্না জেলায় সম্প্রতি এক শীতের সকালে শৈশবের বন্ধু সতীশ খাটিক ও সাজিদ মোহাম্মদের হাতে ধরা পড়েছে ১৫.৩৪ ক্যারেটের মূল্যবান ওই হিরাটি। এটির বাজারমূল্য বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় পৌনে এক কোটি টাকা।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) বিবিসি জানিয়েছে, পান্না জেলা ভারতের অন্যতম হিরা উত্তোলন অঞ্চল। সেখানেই কয়েক সপ্তাহ আগে লিজ নেওয়া একটি জমিতে কাজ করতে গিয়ে চকচকে পাথরটির সন্ধান পান সতীশ ও সাজিদ। পরে সেটি শহরের সরকারি হিরা মূল্যায়ন কর্মকর্তার কাছে নিয়ে গেলে নিশ্চিত হওয়া যায়—এটি উৎকৃষ্ট মানের প্রাকৃতিক হিরা।

মূল্যায়ন কর্মকর্তা অনুপম সিং জানান, হিরাটির সম্ভাব্য দাম ৭০ থেকে ৮০ লাখ টাকা। শিগগিরই এটিকে সরকারি নিলামে তোলা হবে। এই নিলামে দেশ-বিদেশের ক্রেতারা অংশ নেবেন। তিনি আরও জানান, হিরার দাম নির্ভর করে ডলারের বিনিময় হার ও আন্তর্জাতিক রাপাপোর্ট রিপোর্টের মানদণ্ডের ওপর।
২৪ বছর বয়সী সতীশ খাটিক একটি মাংসের দোকান চালান, আর ২৩ বছরের সাজিদ মোহাম্মদ ফল বিক্রি করেন। দুজনই দরিদ্র পরিবারের সন্তান এবং পরিবারের কনিষ্ঠ সদস্য। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে তাঁদের পরিবার পান্নায় হিরা খোঁজার চেষ্টা করেছে। কিন্তু এত দিন কোনো বড় সাফল্য আসেনি।
উন্নয়ন সূচকে পান্না জেলা পিছিয়ে থাকা একটি এলাকা। এখানে দারিদ্র্য, পানির সংকট ও বেকারত্ব নিত্যদিনের বাস্তবতা। তবে এই জেলাতেই ভারতের অধিকাংশ হিরা মজুত রয়েছে, যা স্থানীয়দের ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখায়।
সাজিদের বাবা নাফিস জানান, বছরের পর বছর খোঁড়াখুঁড়ি করেও তাঁরা পেয়েছেন শুধু ধুলো আর কাঁচের টুকরো। তিনি বলেন, ‘ঈশ্বর অবশেষে আমাদের ধৈর্য আর পরিশ্রমের ফল দিয়েছেন।’ সংসারের ক্রমবর্ধমান খরচ ও বিয়ের ব্যয় মেটাতে না পেরে হতাশা থেকেই জমিটি লিজ নিয়েছিলেন সাজিদ।
হিরা খোঁজার কাজ সহজ নয়। দিনের কাজ শেষে সন্ধ্যায় কিংবা ছুটির সময় মাটি খুঁড়ে, পাথর ধুয়ে, চালুনিতে ছেঁকে হাজারো কণার ভিড় থেকে সম্ভাব্য হিরা আলাদা করতেন সতীশ ও সাজিদ। পান্নার জেলা খনি কর্মকর্তা রবি প্যাটেল বলেন, ‘গত ১৯ নভেম্বর তারা জমিটি লিজ নেয়। কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই এমন মানের হিরা পাওয়া সৌভাগ্যের ব্যাপার।’
এখনো নিলামের টাকা হাতে না পেলেও দুই বন্ধু আশাবাদী। বড় শহরে চলে যাওয়া বা ব্যবসা বাড়ানোর চিন্তা আপাতত তাঁরা বাদ দিয়েছেন। তাঁদের একটাই লক্ষ্য—এই অর্থ দিয়ে নিজেদের বোনদের বিয়ে দেওয়া।

ইন্দোনেশিয়ার কয়েকটি দ্বীপে আছে কমোডো ড্রাগন নামের ভয়াল দর্শন এক প্রাণী। দশ ফুটি কমোডো ড্রাগন যখন হলদে লকলকে জিব বের করে আপনার দিকে এগিয়ে আসবে তখন কল্পনার ওই মুখে আগুন বের হওয়া ড্রাগনের কথা মনে পড়েও যেতে পারে।
২৮ আগস্ট ২০২৩
সকালে দোকানের শাটার খুলতেই চক্ষু চড়কগাছ যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার অ্যাশল্যান্ডের একটি সরকারি মদের দোকানের কর্মীদের। দোকানের মেঝেতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে শত শত ভাঙা কাচের টুকরা। মেঝে ভেসে গেছে দামি বিলেতি মদে!
২ দিন আগেচাকরি খোঁজার জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম লিংকডইন। সেখানে কর্মীরা চাকরি খোঁজেন এবং অনেক প্রতিষ্ঠান সেখান থেকে কর্মীদের বাছাই করে থাকে। এই প্ল্যাটফর্মে এবার ‘গার্লফ্রেন্ড’ বা নারীবন্ধুর খোঁজে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন ভারতের এক ব্যক্তি। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে হাসি-ঠাট্টা ও বিদ্রুপ।
৫ দিন আগে
কাজের মধ্যে ঘন ঘন টয়লেটে যাওয়ার জন্য বিরতি নিয়ে চাকরি খুইয়েছেন এক চীনা প্রকৌশলী। চীনের পূর্বাঞ্চলের জিয়াংসু প্রদেশের ওই প্রকৌশলী ঘন ঘন এবং প্রতিবার এক ঘণ্টার বেশি সময় টয়লেটে কাটাচ্ছিলেন। যদিও তাঁর দাবি ছিল, তিনি অর্শ বা পাইলসের সমস্যায় ভুগছেন।
৬ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক
চাকরি খোঁজার জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম লিংকডইন। সেখানে কর্মীরা চাকরি খোঁজেন এবং অনেক প্রতিষ্ঠান সেখান থেকে কর্মীদের বাছাই করে থাকে। এই প্ল্যাটফর্মে এবার ‘গার্লফ্রেন্ড’ বা নারীবন্ধুর খোঁজে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন ভারতের এক ব্যক্তি। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে হাসি-ঠাট্টা ও বিদ্রুপ।

ভারতের হরিয়ানার গুরুগ্রামের দীনেশ বৈরাগী। ‘পূর্ণকালীন’ চাকরির অফার দিয়ে নারীবন্ধু খুঁজেছেন লিংকডইনে। ওই বিজ্ঞাপনের বিবরণে সম্ভাব্য ‘গার্লফ্রেন্ড’-এর জন্য প্রয়োজনীয় নানা গুণাবলির কথাও উল্লেখ করেছেন দীনেশ।
টেক মাহিন্দ্রার সাবেক সিনিয়র অ্যাসোসিয়েট দীনেশ চাকরির বিজ্ঞাপনে লিখেছেন, ‘গুরগাঁওয়ে পূর্ণকালীন গার্লফ্রেন্ডের পদ খালি আছে। সরাসরি দেখা করা এবং দূর থেকে দায়িত্ব পালন দুটোই করতে হবে।’
প্রযুক্তিখাতে অভিজ্ঞ এই যুবক চাকরির বিজ্ঞাপনে আরও লিখেছেন, ‘এই ভূমিকায় শক্তিশালী আবেগগত সম্পর্ক গড়ে তোলা ও তা বজায় রাখা, অর্থবহ কথোপকথনে অংশ নেওয়া, সঙ্গ দেওয়া, পারস্পরিক সমর্থন এবং সঙ্গীর সঙ্গে বিভিন্ন কার্যক্রম বা শখে যুক্ত থাকার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত থাকবে।’
তিনি আরও লেখেন, ‘সক্রিয় যোগাযোগ, পারস্পরিক সম্মান ও বোঝাপড়া এই ভূমিকাটির ভিত্তি হবে। পাশাপাশি যৌথ সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং ইতিবাচক ও সহায়ক সম্পর্কের পরিবেশ গড়ে তোলাও এর অন্তর্ভুক্ত।’
দীনেশ চাকরিপ্রার্থীর যোগ্যতার ক্ষেত্রে উচ্চমাত্রার আবেগগত বুদ্ধিমত্তা, শোনার সক্ষমতা, সহমর্মিতা ও আন্তঃব্যক্তিক দক্ষতার কথা উল্লেখ করেছেন। এ ছাড়া তিনি জানান, এমন একজনকে তিনি খুঁজছেন, যাঁর মধ্যে রসবোধ, দয়া এবং ইতিবাচক মানসিকতা থাকবে।
তিনি আরও যোগ করেন, ‘সম্পর্কের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত ও যৌথ লক্ষ্যগুলোর মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করার সক্ষমতা থাকতে হবে। শখ, কার্যক্রমে আগ্রহ বা একসঙ্গে নতুন অভিজ্ঞতা গড়ে তোলার মানসিকতারও প্রয়োজন রয়েছে। পাশাপাশি সম্পর্কের ভেতরে পারস্পরিক সমর্থন ও বিকাশে আগ্রহী হতে হবে।’
লিংকডইনে দেওয়া এই চাকরি খোঁজার মতো করে গার্লফ্রেন্ড খোঁজার পোস্টটি দ্রুতই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এটি নিয়ে রসিকতার বন্যা বইয়ে দেন নেটিজেনরা। অনেকেই এই অদ্ভুত চাকরির বিজ্ঞাপন নিয়ে ঠাট্টা–মশকরা করেন, আবার কেউ কেউ সরাসরি পারিশ্রমিক বা বেতন প্যাকেজ সম্পর্কে জানতে চান।
একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘ওহ, এখন সব পরিষ্কার! তাহলে আমার প্রাক্তন আমার সঙ্গে ছয় মাস গার্লফ্রেন্ড হিসেবে ইন্টার্নশিপ করেছিল, এরপর অন্য কোথাও ফুলটাইম গার্লফ্রেন্ডের চাকরি পেয়ে চলে গেছে।’
আরেকজন মন্তব্য করেন, ‘আপনি যদি আসলেই ভারতীয় হন, তাহলে যেকোনো অ্যাপই ডেটিং অ্যাপ বানিয়ে ফেলবেন।’
তৃতীয় একজন লিখেছেন, ‘পদের বিবরণ দেখে বেশ চমকপ্রদই লাগছে, কিন্তু স্যালারি কত?’
একজন ব্যবহারকারী প্রশ্ন করেন, ‘তিনি কি লিংকডইনের পোস্টের মাধ্যমে কোনো পরীক্ষা চালাচ্ছেন?’ উত্তরে দীনেশ বলেন, ‘একেবারেই না। এটি একটি প্রকৃত শূন্যপদ। প্রোফাইলটি ভালোভাবে বোঝার জন্য আমি চাকরির বিবরণ দেখার পরামর্শ দিচ্ছি। এছাড়া কেউ যদি আগ্রহী ও যোগ্য হন, তাদেরও নির্দেশনা দেওয়া যেতে পারে।’
শেষ আপডেট অনুযায়ী দীনেশ জানিয়েছেন, এই ‘চাকরির’ জন্য এরইমধ্যে ২৬ জন আবেদন করেছেন। এখন নতুন কোনো আবেদন গ্রহণ করা হচ্ছে না বলেও জানান তিনি।
চাকরি খোঁজার জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম লিংকডইন। সেখানে কর্মীরা চাকরি খোঁজেন এবং অনেক প্রতিষ্ঠান সেখান থেকে কর্মীদের বাছাই করে থাকে। এই প্ল্যাটফর্মে এবার ‘গার্লফ্রেন্ড’ বা নারীবন্ধুর খোঁজে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন ভারতের এক ব্যক্তি। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে হাসি-ঠাট্টা ও বিদ্রুপ।

ভারতের হরিয়ানার গুরুগ্রামের দীনেশ বৈরাগী। ‘পূর্ণকালীন’ চাকরির অফার দিয়ে নারীবন্ধু খুঁজেছেন লিংকডইনে। ওই বিজ্ঞাপনের বিবরণে সম্ভাব্য ‘গার্লফ্রেন্ড’-এর জন্য প্রয়োজনীয় নানা গুণাবলির কথাও উল্লেখ করেছেন দীনেশ।
টেক মাহিন্দ্রার সাবেক সিনিয়র অ্যাসোসিয়েট দীনেশ চাকরির বিজ্ঞাপনে লিখেছেন, ‘গুরগাঁওয়ে পূর্ণকালীন গার্লফ্রেন্ডের পদ খালি আছে। সরাসরি দেখা করা এবং দূর থেকে দায়িত্ব পালন দুটোই করতে হবে।’
প্রযুক্তিখাতে অভিজ্ঞ এই যুবক চাকরির বিজ্ঞাপনে আরও লিখেছেন, ‘এই ভূমিকায় শক্তিশালী আবেগগত সম্পর্ক গড়ে তোলা ও তা বজায় রাখা, অর্থবহ কথোপকথনে অংশ নেওয়া, সঙ্গ দেওয়া, পারস্পরিক সমর্থন এবং সঙ্গীর সঙ্গে বিভিন্ন কার্যক্রম বা শখে যুক্ত থাকার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত থাকবে।’
তিনি আরও লেখেন, ‘সক্রিয় যোগাযোগ, পারস্পরিক সম্মান ও বোঝাপড়া এই ভূমিকাটির ভিত্তি হবে। পাশাপাশি যৌথ সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং ইতিবাচক ও সহায়ক সম্পর্কের পরিবেশ গড়ে তোলাও এর অন্তর্ভুক্ত।’
দীনেশ চাকরিপ্রার্থীর যোগ্যতার ক্ষেত্রে উচ্চমাত্রার আবেগগত বুদ্ধিমত্তা, শোনার সক্ষমতা, সহমর্মিতা ও আন্তঃব্যক্তিক দক্ষতার কথা উল্লেখ করেছেন। এ ছাড়া তিনি জানান, এমন একজনকে তিনি খুঁজছেন, যাঁর মধ্যে রসবোধ, দয়া এবং ইতিবাচক মানসিকতা থাকবে।
তিনি আরও যোগ করেন, ‘সম্পর্কের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত ও যৌথ লক্ষ্যগুলোর মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করার সক্ষমতা থাকতে হবে। শখ, কার্যক্রমে আগ্রহ বা একসঙ্গে নতুন অভিজ্ঞতা গড়ে তোলার মানসিকতারও প্রয়োজন রয়েছে। পাশাপাশি সম্পর্কের ভেতরে পারস্পরিক সমর্থন ও বিকাশে আগ্রহী হতে হবে।’
লিংকডইনে দেওয়া এই চাকরি খোঁজার মতো করে গার্লফ্রেন্ড খোঁজার পোস্টটি দ্রুতই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এটি নিয়ে রসিকতার বন্যা বইয়ে দেন নেটিজেনরা। অনেকেই এই অদ্ভুত চাকরির বিজ্ঞাপন নিয়ে ঠাট্টা–মশকরা করেন, আবার কেউ কেউ সরাসরি পারিশ্রমিক বা বেতন প্যাকেজ সম্পর্কে জানতে চান।
একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘ওহ, এখন সব পরিষ্কার! তাহলে আমার প্রাক্তন আমার সঙ্গে ছয় মাস গার্লফ্রেন্ড হিসেবে ইন্টার্নশিপ করেছিল, এরপর অন্য কোথাও ফুলটাইম গার্লফ্রেন্ডের চাকরি পেয়ে চলে গেছে।’
আরেকজন মন্তব্য করেন, ‘আপনি যদি আসলেই ভারতীয় হন, তাহলে যেকোনো অ্যাপই ডেটিং অ্যাপ বানিয়ে ফেলবেন।’
তৃতীয় একজন লিখেছেন, ‘পদের বিবরণ দেখে বেশ চমকপ্রদই লাগছে, কিন্তু স্যালারি কত?’
একজন ব্যবহারকারী প্রশ্ন করেন, ‘তিনি কি লিংকডইনের পোস্টের মাধ্যমে কোনো পরীক্ষা চালাচ্ছেন?’ উত্তরে দীনেশ বলেন, ‘একেবারেই না। এটি একটি প্রকৃত শূন্যপদ। প্রোফাইলটি ভালোভাবে বোঝার জন্য আমি চাকরির বিবরণ দেখার পরামর্শ দিচ্ছি। এছাড়া কেউ যদি আগ্রহী ও যোগ্য হন, তাদেরও নির্দেশনা দেওয়া যেতে পারে।’
শেষ আপডেট অনুযায়ী দীনেশ জানিয়েছেন, এই ‘চাকরির’ জন্য এরইমধ্যে ২৬ জন আবেদন করেছেন। এখন নতুন কোনো আবেদন গ্রহণ করা হচ্ছে না বলেও জানান তিনি।

ইন্দোনেশিয়ার কয়েকটি দ্বীপে আছে কমোডো ড্রাগন নামের ভয়াল দর্শন এক প্রাণী। দশ ফুটি কমোডো ড্রাগন যখন হলদে লকলকে জিব বের করে আপনার দিকে এগিয়ে আসবে তখন কল্পনার ওই মুখে আগুন বের হওয়া ড্রাগনের কথা মনে পড়েও যেতে পারে।
২৮ আগস্ট ২০২৩
সকালে দোকানের শাটার খুলতেই চক্ষু চড়কগাছ যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার অ্যাশল্যান্ডের একটি সরকারি মদের দোকানের কর্মীদের। দোকানের মেঝেতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে শত শত ভাঙা কাচের টুকরা। মেঝে ভেসে গেছে দামি বিলেতি মদে!
২ দিন আগে
ভারতের মধ্যাঞ্চলের একটি প্রত্যন্ত এলাকায় হঠাৎ পাওয়া একটি হিরার খোঁজ দুই বন্ধুর জীবনে আশার আলো জ্বালিয়েছে। মধ্যপ্রদেশের পান্না জেলায় সম্প্রতি এক শীতের সকালে শৈশবের বন্ধু সতীশ খাটিক ও সাজিদ মোহাম্মদের হাতে ধরা পড়েছে ১৫.৩৪ ক্যারেটের মূল্যবান ওই হিরাটি।
২ দিন আগে
কাজের মধ্যে ঘন ঘন টয়লেটে যাওয়ার জন্য বিরতি নিয়ে চাকরি খুইয়েছেন এক চীনা প্রকৌশলী। চীনের পূর্বাঞ্চলের জিয়াংসু প্রদেশের ওই প্রকৌশলী ঘন ঘন এবং প্রতিবার এক ঘণ্টার বেশি সময় টয়লেটে কাটাচ্ছিলেন। যদিও তাঁর দাবি ছিল, তিনি অর্শ বা পাইলসের সমস্যায় ভুগছেন।
৬ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

কাজের মধ্যে ঘন ঘন টয়লেটে যাওয়ার জন্য বিরতি নিয়ে চাকরি খুইয়েছেন এক চীনা প্রকৌশলী। চীনের পূর্বাঞ্চলের জিয়াংসু প্রদেশের ওই প্রকৌশলী ঘন ঘন এবং প্রতিবার এক ঘণ্টার বেশি সময় টয়লেটে কাটাচ্ছিলেন। যদিও তাঁর দাবি ছিল, তিনি অর্শ বা পাইলসের সমস্যায় ভুগছেন।
হংকং থেকে প্রকাশিত ইংরেজি ভাষার দৈনিক সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের খবরে বলা হয়েছে জিয়াংসু প্রদেশের লি নামক ওই ব্যক্তি গত বছর এপ্রিল থেকে মে মাসের মধ্যে এক মাসে ১৪ বার টয়লেটে যাওয়ার জন্য বিরতি নেন। এর মধ্যে একবার তিনি চার ঘণ্টা টয়লেটে কাটান। এর জেরে তাঁকে চাকরি হারাতে হয়।
এই খবর সম্প্রতি সাংহাই ফেডারেশন অব ট্রেড ইউনিয়নসের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়।
ওই ব্যক্তি বেআইনিভাবে চুক্তি বাতিলের জন্য কোম্পানির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করলে বিষয়টি সামনে আসে। লি প্রমাণ হিসেবে গত বছর মে ও জুন মাসে তাঁর সঙ্গীর কেনা অর্শের ওষুধ এবং চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে তাঁর হাসপাতালে ভর্তি ও অস্ত্রোপচারের নথিও পেশ করেন।
এরপর লি ওই কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করে বেআইনিভাবে চুক্তি বাতিলের দায়ে ৩ লাখ ২০ হাজার ইউয়ান ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। অন্যদিকে কোম্পানি লি-এর ঘন ঘন এবং দীর্ঘ সময় ধরে বিরতিতে থাকার প্রমাণস্বরূপ সিসিটিভি ফুটেজ আদালতে জমা দেয়।
আদালতের বিশ্বাস, লি টয়লেটে যে সময় ব্যয় করেছেন, তা তাঁর ‘শারীরিক প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি’ ছিল। এ ছাড়া লি যে ডাক্তারি নথি জমা দিয়েছেন, তা তাঁর বহুবার দীর্ঘ পানির বিরতি নেওয়ার পরের সময়ের। চুক্তিতে প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও লি তাঁর অসুস্থতার কথা কোম্পানিকে আগে জানাননি বা অসুস্থতাজনিত ছুটির জন্য আবেদনও করেননি।
কোম্পানি লি-কে তাঁর অনুপস্থিতি লক্ষ্য করে প্রথমে একটি চ্যাট অ্যাপের মাধ্যমে যোগাযোগ করে, কিন্তু কোনো উত্তর পায়নি। লি-এর পদে কাজ করার জন্য তাঁকে সব সময় কাজের অনুরোধে সাড়া দিতে হয়। সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করার পর কোম্পানি তাঁকে বরখাস্ত করে।
লি ২০১০ সালে কোম্পানিতে যোগ দেন এবং ২০১৪ সালে একটি উন্মুক্ত-মেয়াদি চুক্তি নবায়ন করেন। চুক্তি অনুযায়ী, অনুমতি ছাড়া নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নিজের কর্মস্থল ত্যাগ করাকে অনুপস্থিতি বলে গণ্য করা হবে এবং ১৮০ দিনের মধ্যে মোট তিন কার্যদিবস অনুপস্থিত থাকলে চুক্তি সঙ্গে সঙ্গে বাতিল হয়ে যাবে।
বরখাস্ত করার আগে কোম্পানি ট্রেড ইউনিয়নের অনুমতিও নিয়েছিল। দুই দফা বিচার পর্বের পর আদালত অবশেষে দুই পক্ষের মধ্যে মধ্যস্থতা করেন এবং লি-এর কোম্পানিতে অবদানের কথা এবং বেকারত্বের পর তাঁর অসুবিধার কথা বিবেচনা করে কোম্পানিকে ৩০ হাজার ইউয়ান ভাতা দিয়ে মামলাটি মিটিয়ে নিতে রাজি করান।
চীনে এ ধরনের বিরতি নিয়ে বিতর্ক এই প্রথম নয়। এর আগে ২০২৩ সালেও জিয়াংসু প্রদেশের আরেক ব্যক্তিকে একই অভিযোগে বরখাস্ত করা হয়েছিল। তাঁর দীর্ঘতম বিরতি ছিল এক দিনে ছয় ঘণ্টা।

কাজের মধ্যে ঘন ঘন টয়লেটে যাওয়ার জন্য বিরতি নিয়ে চাকরি খুইয়েছেন এক চীনা প্রকৌশলী। চীনের পূর্বাঞ্চলের জিয়াংসু প্রদেশের ওই প্রকৌশলী ঘন ঘন এবং প্রতিবার এক ঘণ্টার বেশি সময় টয়লেটে কাটাচ্ছিলেন। যদিও তাঁর দাবি ছিল, তিনি অর্শ বা পাইলসের সমস্যায় ভুগছেন।
হংকং থেকে প্রকাশিত ইংরেজি ভাষার দৈনিক সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের খবরে বলা হয়েছে জিয়াংসু প্রদেশের লি নামক ওই ব্যক্তি গত বছর এপ্রিল থেকে মে মাসের মধ্যে এক মাসে ১৪ বার টয়লেটে যাওয়ার জন্য বিরতি নেন। এর মধ্যে একবার তিনি চার ঘণ্টা টয়লেটে কাটান। এর জেরে তাঁকে চাকরি হারাতে হয়।
এই খবর সম্প্রতি সাংহাই ফেডারেশন অব ট্রেড ইউনিয়নসের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়।
ওই ব্যক্তি বেআইনিভাবে চুক্তি বাতিলের জন্য কোম্পানির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করলে বিষয়টি সামনে আসে। লি প্রমাণ হিসেবে গত বছর মে ও জুন মাসে তাঁর সঙ্গীর কেনা অর্শের ওষুধ এবং চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে তাঁর হাসপাতালে ভর্তি ও অস্ত্রোপচারের নথিও পেশ করেন।
এরপর লি ওই কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করে বেআইনিভাবে চুক্তি বাতিলের দায়ে ৩ লাখ ২০ হাজার ইউয়ান ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। অন্যদিকে কোম্পানি লি-এর ঘন ঘন এবং দীর্ঘ সময় ধরে বিরতিতে থাকার প্রমাণস্বরূপ সিসিটিভি ফুটেজ আদালতে জমা দেয়।
আদালতের বিশ্বাস, লি টয়লেটে যে সময় ব্যয় করেছেন, তা তাঁর ‘শারীরিক প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি’ ছিল। এ ছাড়া লি যে ডাক্তারি নথি জমা দিয়েছেন, তা তাঁর বহুবার দীর্ঘ পানির বিরতি নেওয়ার পরের সময়ের। চুক্তিতে প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও লি তাঁর অসুস্থতার কথা কোম্পানিকে আগে জানাননি বা অসুস্থতাজনিত ছুটির জন্য আবেদনও করেননি।
কোম্পানি লি-কে তাঁর অনুপস্থিতি লক্ষ্য করে প্রথমে একটি চ্যাট অ্যাপের মাধ্যমে যোগাযোগ করে, কিন্তু কোনো উত্তর পায়নি। লি-এর পদে কাজ করার জন্য তাঁকে সব সময় কাজের অনুরোধে সাড়া দিতে হয়। সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করার পর কোম্পানি তাঁকে বরখাস্ত করে।
লি ২০১০ সালে কোম্পানিতে যোগ দেন এবং ২০১৪ সালে একটি উন্মুক্ত-মেয়াদি চুক্তি নবায়ন করেন। চুক্তি অনুযায়ী, অনুমতি ছাড়া নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নিজের কর্মস্থল ত্যাগ করাকে অনুপস্থিতি বলে গণ্য করা হবে এবং ১৮০ দিনের মধ্যে মোট তিন কার্যদিবস অনুপস্থিত থাকলে চুক্তি সঙ্গে সঙ্গে বাতিল হয়ে যাবে।
বরখাস্ত করার আগে কোম্পানি ট্রেড ইউনিয়নের অনুমতিও নিয়েছিল। দুই দফা বিচার পর্বের পর আদালত অবশেষে দুই পক্ষের মধ্যে মধ্যস্থতা করেন এবং লি-এর কোম্পানিতে অবদানের কথা এবং বেকারত্বের পর তাঁর অসুবিধার কথা বিবেচনা করে কোম্পানিকে ৩০ হাজার ইউয়ান ভাতা দিয়ে মামলাটি মিটিয়ে নিতে রাজি করান।
চীনে এ ধরনের বিরতি নিয়ে বিতর্ক এই প্রথম নয়। এর আগে ২০২৩ সালেও জিয়াংসু প্রদেশের আরেক ব্যক্তিকে একই অভিযোগে বরখাস্ত করা হয়েছিল। তাঁর দীর্ঘতম বিরতি ছিল এক দিনে ছয় ঘণ্টা।

ইন্দোনেশিয়ার কয়েকটি দ্বীপে আছে কমোডো ড্রাগন নামের ভয়াল দর্শন এক প্রাণী। দশ ফুটি কমোডো ড্রাগন যখন হলদে লকলকে জিব বের করে আপনার দিকে এগিয়ে আসবে তখন কল্পনার ওই মুখে আগুন বের হওয়া ড্রাগনের কথা মনে পড়েও যেতে পারে।
২৮ আগস্ট ২০২৩
সকালে দোকানের শাটার খুলতেই চক্ষু চড়কগাছ যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার অ্যাশল্যান্ডের একটি সরকারি মদের দোকানের কর্মীদের। দোকানের মেঝেতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে শত শত ভাঙা কাচের টুকরা। মেঝে ভেসে গেছে দামি বিলেতি মদে!
২ দিন আগে
ভারতের মধ্যাঞ্চলের একটি প্রত্যন্ত এলাকায় হঠাৎ পাওয়া একটি হিরার খোঁজ দুই বন্ধুর জীবনে আশার আলো জ্বালিয়েছে। মধ্যপ্রদেশের পান্না জেলায় সম্প্রতি এক শীতের সকালে শৈশবের বন্ধু সতীশ খাটিক ও সাজিদ মোহাম্মদের হাতে ধরা পড়েছে ১৫.৩৪ ক্যারেটের মূল্যবান ওই হিরাটি।
২ দিন আগেচাকরি খোঁজার জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম লিংকডইন। সেখানে কর্মীরা চাকরি খোঁজেন এবং অনেক প্রতিষ্ঠান সেখান থেকে কর্মীদের বাছাই করে থাকে। এই প্ল্যাটফর্মে এবার ‘গার্লফ্রেন্ড’ বা নারীবন্ধুর খোঁজে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন ভারতের এক ব্যক্তি। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে হাসি-ঠাট্টা ও বিদ্রুপ।
৫ দিন আগে