Ajker Patrika

জন্মদিনে টুইটার নিয়ে যত কথা

প্রযুক্তি ডেস্ক
আপডেট : ২১ মার্চ ২০২৩, ১৫: ১৪
জন্মদিনে টুইটার নিয়ে যত কথা

জ্যাক ডরসি, নোয়াহ গ্লাস, বিজ স্টোন ও ইভান উইলিয়ামসের হাত ধরে ২০০৬ সালের ২১ মার্চ যাত্রা শুরু করেছিল টুইটার। গত অক্টোবরে মাস্কের টুইটার অধিগ্রহণের পর থেকে প্ল্যাটফর্মটি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। গত কয়েক মাস ঘটনাবহুল সময় পার করল টুইটার। অথচ এই মাইক্রো ব্লগিং সাইটের শুরুর সময়টা ছিল একদমই ভিন্ন। বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারের জন্মদিনে জেনে নেওয়া যাক এর আদ্যোপান্ত।  

২০০৪ সালে ‘ওডেহো’ নামের পডকাস্ট সার্ভিস চালু করেছিলেন ইভান উইলিয়াম। তিনি গুগলের একজন সাবেক কর্মী হওয়ার পাশাপাশি ছিলেন বিখ্যাত ব্লগিং সাইট ব্লগার ডট কমের প্রতিষ্ঠাতা। উইলিয়ামের সঙ্গে যোগ দেন তাঁর সহকর্মী বিজ স্টোন ও নোয়া গ্লাস। তবে ২০০৫ সালে অ্যাপল তাদের আইটিউনস প্ল্যাটফর্মে পডকাস্ট যুক্ত করার ঘোষণা দেওয়ার পর ওডেহোর প্রতিষ্ঠাতারা দুশ্চিন্তায় পড়ে যান। কারণ তাঁরা জানতেন তাঁদের পক্ষে অ্যাপলের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করা সম্ভব না।

প্ল্যাটফর্মে জ্যাক ডরসির দেওয়া প্রথম টুইটওডেহোর প্রতিষ্ঠাতারা তাঁদের কর্মীদের নতুন আইডিয়া নিয়ে ভাবতে বলেন। ওডেহোতে কর্মরত ইঞ্জিনিয়ার জ্যাক ডরসি তখন টেক্সটভিত্তিক সার্ভিস চালু করার প্রস্তাব দেন। নোয়া গ্লাসের নাম প্রস্তাব করে ‘Twttr’। ২০০৬ সালের জুন মাসে ডরসি প্রথম টুইট করে ‘just setting up my twttr’। টুইটারের প্রোটোটাইপ শুরুতে ওডেহোর কর্মীদের জন্য একটি অভ্যন্তরীণ পরিষেবা হিসেবে  ব্যবহৃত হতো। পরে সম্পূর্ণ সংস্করণটি ২০০৬ সালের ১৫ জুলাই সাধারণ মানুষের জন্য চালু করা হয়। তবে ওডেহোর বিনিয়োগকারীরা এই প্রকল্পকে খুব একটা ভালো চোখে নেননি। ইভান উইলিয়াম ওডেহোর সব শেয়ার কিনে নেযন এবং নোয়া গ্লাসকে চাকরিচ্যুত করেন। 

টুইটার উন্মোচনের ছয় মাস পর এর নামে ভাওয়েল যুক্ত করে ‘Twitter’ নাম দেওয়া হয়। মূলত টুইটার ডট কমের ডোমেইন পাওয়ার পরেই নাম বদলানোর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।  

২০০৭ সালে প্রতি ত্রৈমাসিকে ৪ লাখ টুইট পোস্ট করা হয়েছে। ওই বছরই জ্যাক ডরসি কোম্পানির প্রথম প্রধান নির্বাহী হিসেবে নিযুক্ত হন। ২০০৮ সালে টুইটের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১০ কোটিতে। ২০০৯ সালে টুইটারকে ‘ব্রেকআউট অব দ্য ইয়ার’-এর পুরস্কার দেয় ওয়েবি অ্যাওয়ার্ড। ২০১০ সালের মার্চের মধ্যে প্ল্যাটফর্মে ৭০ হাজারেরও বেশি ব্যবহারকারী যুক্ত হন। চলতি মাসের হিসাব অনুযায়ী, টুইটারে প্রায় ৪৫ কোটি সক্রিয় ব্যবহারকারী রয়েছেন।

টুইটারে সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রধান নির্বাহী জ্যাক ডরসিটুইটারের ব্যবহার মূলত বাড়ে বিভিন্ন ব্রেকিং নিউজ প্রচারের মাধ্যমে। তা প্রচার করত সাধারণ মানুষ। টুইটার সংক্ষিপ্ত টেক্সটভিত্তিক সোশ্যাল মিডিয়া হওয়ার কারণে এখানে নিউজগুলো বেশি প্রচারিত হতো। উদাহরণস্বরূপ, ২০০৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের হাডসন নদীতে প্লেন বিধ্বস্তের ছবি তুলে একজন যাত্রী ‘টুইট পিক ডট কম’-এ পোস্ট করলে লাখ লাখ মানুষ সেই ছবি দেখতে গেলে সার্ভার ডাউন হয়ে পড়ে। 

২০০৯ সালে বিং ও গুগলের সঙ্গে যথাক্রমে ১ ও ১ দশমিক ৫ কোটি ডলারের চুক্তি করে তাদের সার্চ ইঞ্জিনে টুইট যোগ করা হয়। অর্থাৎ, সার্চ ইঞ্জিন দুটিতে সার্চ দিলে টুইটারের টুইটও রেজাল্টে আসবে। তবে তা শুধু মোবাইল ফোনে কাজ হতো। ডেস্কটপে এই ফিচার আসে ২০১৫ সালে।  

পরে ২০১০ সালে প্রমোটেড টুইট নামে আরেকটা সার্ভিস চালু করা হয়, যেখানে টাকা দিয়ে কোনো কোম্পানির বা ব্যক্তির টুইট, অ্যাকাউন্ট, হ্যাশট্যাগ অন্যের ফিডে দেখানো যাবে। এই সার্ভিসের মাধ্যমে ২০১৫ সালে ৪ কোটি ডলার আয় করে টুইটার।

মাস্কের টুইটার অধিগ্রহণ
ঘটনার শুরু ২০২২ সালের মার্চে। ওই মাসের এক সাদামাটা সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের সান জোসের এয়ারবিএনবিতে তৎকালীন বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ইলন মাস্ক একটি বৈঠকের আয়োজন করেন। বৈঠকটি টুইটারের জন্য ছিল বিশেষ কিছু। কারণ তার অল্প কয়েক দিন আগেই মাস্ক টুইটারের অন্যতম শেয়ারহোল্ডার হয়েছেন। তবে তখনো টুইটারের চেয়ারম্যান ব্রেট টেলর বৈঠকটি ডাকার কারণ সম্বন্ধে জানতেন না। টুইটারের অংশীদার (শেয়ারহোল্ডার) হওয়ার পর কোম্পানিটির বোর্ডেরও অংশ হওয়ার ইচ্ছা হয়েছিল মাস্কের। সেই উদ্দেশ্য সফল করতেই মূলত তিনি বৈঠকটি ডেকেছিলেন। 

বৈঠকের কয়েক দিন পর মাস্ক ঘোষণা করেন, তিনি টুইটারের বোর্ডে যোগ দিয়েছেন। সেই ঘোষণা ছিল একটি টানটান উত্তেজনাময়-পরবর্তী ছয় মাসের ঘটনাবহুল এক টুইটারকাণ্ডের শুরু। সত্যিকার অর্থেই মার্চ মাসের পর থেকে টুইটার ও ইলন মাস্ককে ঘিরে যা ঘটেছে, তা সিলিকন ভ্যালির ইতিহাসে কেউ দেখেনি। এপ্রিলের শুরুর দিকে মাস্ক টুইটার নিয়ে নিয়মিত টুইট করতে শুরু করেন এবং কীভাবে টুইটারে আরও পরিবর্তন আনা যায়, সেসব নিয়ে পোস্ট করতে থাকেন। তাঁকে তখন টুইটার বোর্ডের সদস্য হিসেবে বেশ উৎফুল্লই মনে হচ্ছিল। 

তবে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর বের হতে শুরু করে, টুইটারের প্রধান নির্বাহী (সিইও) পরাগ আগরওয়ালের সঙ্গে ইলন মাস্কের বৈঠকগুলো হৃদ্যতাপূর্ণ হচ্ছে না। টুইটার প্ল্যাটফর্মে পরিবর্তন আনার বিষয়ে তাঁরা ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারছেন না। এ নিয়ে তাঁদের মতবিরোধ একসময় চরমে ওঠে। গুঞ্জন ওঠে, টুইটার কিনতে চান ইলন মাস্ক। 

এরপর এপ্রিলের ১৪ তারিখে ইলন মাস্ক প্রকাশ্যে বোমাটি ফাটান এবং ঘোষণা দেন, তিনি টুইটার কিনতে চান। তখন বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানায়, মাস্ক ৪৪ বিলিয়ন ডলারে টুইটার কেনার প্রস্তাব দিয়েছেন। টুইটার বোর্ড প্রাথমিকভাবে তাঁর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে এবং জোর করে মাস্ক যাতে টুইটার কিনতে না পারেন, সে জন্য ‘পয়জন পিল’ নামে একটি কোম্পানি বিধিমালাও তৈরি করেছিল। 

পরে টুইটার বোর্ড তাদের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে এবং টুইটার বিক্রির বিষয়ে মাস্কের সঙ্গে চুক্তি করে। এপ্রিলের ২৫ তারিখে টুইটার ঘোষণা করে, তারা মাস্কের টুইটার ক্রয়বিষয়ক প্রস্তাবটি গ্রহণ করেছে।  ওই দিনই মাস্ক খুশিতে টুইট করেন—‘ইয়েসসসসস’ লিখে। 

৪৪ বিলিয়ন ডলারে টুইটার কিনে নেন মাস্কএরপর হঠাৎ করেই মাস্ক টুইটারের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উত্থাপন করতে শুরু করেন। যেমন—টুইটার তার পথ হারিয়েছে, এটি মানুষের বাকস্বাধীনতা খর্ব করে ইত্যাদি। এরপর তিনি সবচেয়ে গুরুতর যে অভিযোগটি তোলেন সেটি হচ্ছে, ভুয়া অ্যাকাউন্ট দিয়ে টুইটার ভরা। 

এরপর থেকে তিনি টুইটার কর্তৃপক্ষকে বারবার প্রকৃত ব্যবহারকারীর তথ্য সরবরাহ করতে চাপ দিতে থাকেন। টুইটারের নির্বাহীরা বলেন, টুইটারে ভুয়া অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ৫ শতাংশের কম। কিন্তু মাস্ক তা বিশ্বাস করতে নারাজ ছিলেন। তিনি বারবার প্রকৃত ব্যবহারকারীর তথ্য চাইতে থাকেন টুইটারের কাছে। মাস্কের দাবি, টুইটার কর্তৃপক্ষের দাবি করা অ্যাকাউন্টের চেয়ে অনেক বেশি ভুয়া অ্যাকাউন্ট আছে এই প্ল্যাটফর্মে। 

এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে টুইটারের চুক্তিটি হুমকির মুখে পড়ে। ৪ জুলাই মাস্ক ঘোষণা দেন, তিনি আর টুইটার কিনতে চান না। চুক্তি থেকে বের হয়ে আসতে চান। কিন্তু বেঁকে বসে টুইটার কর্তৃপক্ষ। তারা জানায়, টুইটার কিনতে ইলন আইনত বাধ্য। চুক্তি থেকে বের হয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। 

শেষমেশ বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। মাস্কের বিরুদ্ধে মামলা করে টুইটার। এরপর মাস্ক টুইটার কিনতে বাধ্য কি না, সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে উভয় পক্ষের আইনজীবীকে ১৭ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের ডেলাওয়্যার অঙ্গরাজ্যের একটি আদালতে উপস্থিত হতে বলা হয়। 

এরপর হঠাৎ করেই ঘটনার মোড় অন্য দিকে ঘুরে যায়। মাস্ক বলেন, ‘তিনি টুইটার কিনবেন। চুক্তিটি সচল থাকবে।’ ইলন মাস্কের এই ঘোষণার পর টুইটার কর্তৃপক্ষ মামলাটি স্থগিত করে। দীর্ঘ ছয় মাস ধরে জল ঘোলা করার পর টুইটারের নিয়ন্ত্রণ নেন ইলন মাস্ক। টুইটারের অন্যতম বিনিয়োগকারী রস গারবারের বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, ৪৪ বিলিয়ন ডলারে টুইটার কিনে নিয়েছেন মাস্ক। ২৭ অক্টোবর এই প্ল্যাটফর্মের প্রধান নির্বাহীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকায় স্কুলের ফুটবল টিমে গোলকিপার ছিলেন জাইমা রহমান

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে জাইমা রহমান। ছবি: সংগৃহীত
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে জাইমা রহমান। ছবি: সংগৃহীত

যে বয়সে মানুষ কৈশোরে পা রাখে ঠিক সেই বয়সেই, অর্থাৎ মাত্র ১৩ বছর বয়সে বাবা-মায়ের সঙ্গে দেশান্তরী হয়েছিলেন জাইমা রহমান। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নাতনি ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একমাত্র কন্যা জাইমার কৈশোর কেটেছে লন্ডনে। সেখানেই স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরিয়ে এখন ব্যারিস্টার তিনি।

তবে, জাইমা রহমানের শৈশবের পুরোটা সময় বাংলাদেশেই কেটেছে। প্রাথমিকে পড়াশোনা করেছেন বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ঢাকায় (আইএসডি)। এই স্কুলেরই ফুটবল দলের সদস্য ছিলেন তিনি। শুধু তাই নয়, গোলকিপার হিসেবে দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বও সামাল দিয়েছেন। এমনকি জয় করেছেন মেডেলও।

সম্প্রতি বাংলাদেশে ফিরে আসাকে সামনে রেখে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে শৈশবের সেই অভিজ্ঞতার স্মৃতিচারণা করেন জাইমা। তিনি জানান, ফুটবল খেলে তিনি যে মেডেলটি পেয়েছিলেন, সেটি দাদিকে দেখাতে নিয়ে গিয়েছিলেন দাদির অফিসেই।

সেই সময়টিতে জাইমা রহমানের দাদি বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। নাতনির মুখে মেডেল জয়ের গল্পটি তিনি বেশ মনোযোগ দিয়ে শুনছিলেন এবং এই গল্পটি তিনি অন্যদের সঙ্গেও খুব গর্ব করে বলতেন।

এ বিষয়ে জাইমা লিখেছেন—‘আমার বয়স তখন এগারো। আমাদের স্কুলের ফুটবল টিম একটা টুর্নামেন্ট জিতেছিল, আর আমি মেডেল পেয়েছিলাম। আম্মু আমাকে সরাসরি দাদুর অফিসে নিয়ে গিয়েছিলেন, আমি যেন নিজেই দাদুকে আমার বিজয়ের গল্পটা বলতে পারি; তাঁকে আমার বিজয়ের মেডেলটা দেখাতে পারি। আমি খুব উচ্ছ্বসিত হয়ে গোলকিপার হিসেবে কী-কী করেছি, সেটা বলছিলাম; আর স্পষ্ট টের পাচ্ছিলাম, দাদু প্রচণ্ড মনোযোগ নিয়ে আমাকে শুনছেন। তিনি এতটাই গর্বিত হয়েছিলেন যে, পরে সেই গল্পটা তিনি অন্যদের কাছেও বলতেন।’

১৭ বছর পর বাবা-মায়ের সঙ্গে আবারও দেশে ফিরে আসা জাইমা রহমান এখন ৩০ বছরের পরিপূর্ণ এক ব্যক্তিত্ব। লন্ডনে গিয়ে তাঁর জীবন নতুনভাবে গড়ে ওঠে। শেকড় হারানোর বেদনার সঙ্গে যুক্ত হয় নতুন সমাজ, নতুন ভাষা, নতুন লড়াই। কিন্তু তিনি থেমে থাকেননি। লন্ডনের ম্যারিমাউন্ট গার্লস স্কুল থেকে তিনি ও-লেভেল পাস করেন। পরে আইন বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি নেন লন্ডনের কুইন মেরি ইউনিভার্সিটি থেকে। পরে তিনি লন্ডনের ঐতিহ্যবাহী আইন প্রতিষ্ঠান ‘ইনার টেম্পল’ থেকে ‘বার-এট-ল’ কোর্স সম্পন্ন করে ব্যারিস্টার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বড়দিনে কেন টার্কি খাওয়া হয়, প্রচলন হয়েছিল কীভাবে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৫৪
ষোড়শ শতাব্দীর শুরুতে স্পেনীয় অভিযাত্রীদের মাধ্যমে টার্কি প্রথম ইউরোপে আসে। ছবি: সংগৃহীত
ষোড়শ শতাব্দীর শুরুতে স্পেনীয় অভিযাত্রীদের মাধ্যমে টার্কি প্রথম ইউরোপে আসে। ছবি: সংগৃহীত

বড়দিন বা ক্রিসমাস মানেই ডাইনিং টেবিলে সাজানো বড়সড় এক টার্কি রোস্ট। কিন্তু উত্তর আমেরিকার আদি নিবাসী এই পাখি কীভাবে ইউরোপীয়দের উৎসবের প্রধান অনুষঙ্গ হয়ে উঠল, তা বেশ কৌতূহল উদ্দীপক। ষোড়শ শতাব্দীর শুরুতে স্পেনীয় অভিযাত্রীদের মাধ্যমে টার্কি প্রথম ইউরোপে আসে। তার আগে উৎসবের ভোজ বলতে ছিল ময়ূর বা রাজহাঁসের মাংস।

ইংল্যান্ডের রাজা হেনরি অষ্টম প্রথম ব্রিটিশ সম্রাট হিসেবে বড়দিনের ভোজে টার্কি খেয়েছিলেন বলে ধারণা করা হয়। তবে টার্কিকে জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছে দেওয়ার মূল কৃতিত্ব ভিক্টোরিয়ান যুগের। রানি ভিক্টোরিয়া যখন তাঁর রাজকীয় ক্রিসমাস ভোজে টার্কি খাওয়া শুরু করেন, তখন থেকেই এটি আভিজাত্যের প্রতীক হয়ে দাঁড়ায়।

ইংল্যান্ডের রাজা হেনরি অষ্টম প্রথম ব্রিটিশ সম্রাট হিসেবে বড়দিনের ভোজে টার্কি খেয়েছিলেন বলে ধারণা করা হয়। ছবি: সংগৃহীত
ইংল্যান্ডের রাজা হেনরি অষ্টম প্রথম ব্রিটিশ সম্রাট হিসেবে বড়দিনের ভোজে টার্কি খেয়েছিলেন বলে ধারণা করা হয়। ছবি: সংগৃহীত

রাজকীয় পছন্দের বাইরে সাধারণ মানুষের ঘরে টার্কিকে জনপ্রিয় করার পেছনে বড় ভূমিকা ছিল লেখক চার্লস ডিকেন্সের। ১৮৪৩ সালে প্রকাশিত তাঁর বিখ্যাত উপন্যাস ‘আ ক্রিসমাস ক্যারল’-এ দেখা যায়, একসময়ের কৃপণ ইবেনেজার স্ক্রুজ বড়দিনে ক্র্যাচিট পরিবারকে একটি বিশাল টার্কি উপহার পাঠাচ্ছেন। এই গল্প সাধারণ মানুষের মনে গেঁথে দেয় যে—বড়দিনের আদর্শ খাবার মানেই টার্কি।

কেন টার্কিই সেরা পছন্দ

টার্কি জনপ্রিয় হওয়ার পেছনে কিছু ব্যবহারিক কারণও রয়েছে। আকার ও উপযোগিতা—গরু দুধ দেয় আর মুরগি দেয় ডিম; কিন্তু টার্কির অন্য কোনো ব্যবহার নেই। এ ছাড়া একটি বড় টার্কি দিয়ে অনায়াসেই পুরো পরিবারের ভোজ সম্পন্ন করা যায়। অনেকগুলো ছোট পাখি রান্না করার চেয়ে একটি বড় পাখি রান্না করা অনেক বেশি সাশ্রয়ী।

হিমায়িত বা ফ্রোজেন টার্কি—রেফ্রিজারেশন বা ফ্রিজ আবিষ্কারের আগে টাটকা টার্কি কেনা ছিল বেশ ঝক্কির কাজ। কিন্তু ফ্রোজেন টার্কি বাজারে আসার পর মানুষ আগে থেকেই পরিকল্পনা করে এটি কিনতে শুরু করে, যা এর জনপ্রিয়তা বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়।

রাজকীয় পছন্দের বাইরে সাধারণ মানুষের ঘরে টার্কিকে জনপ্রিয় করার পেছনে বড় ভূমিকা ছিল লেখক চার্লস ডিকেন্সের। ছবি: সংগৃহীত
রাজকীয় পছন্দের বাইরে সাধারণ মানুষের ঘরে টার্কিকে জনপ্রিয় করার পেছনে বড় ভূমিকা ছিল লেখক চার্লস ডিকেন্সের। ছবি: সংগৃহীত

পরদিনের চমৎকার নাশতা—বড়দিনের পরদিন অর্থাৎ ‘বক্সিং ডে’তে টার্কির বেঁচে যাওয়া মাংস (Leftovers) দিয়ে স্যান্ডউইচ, স্টু, কারি বা পাই তৈরি করা যায়। বিশেষ করে, টার্কি কারি এখন অনেক দেশেই বেশ জনপ্রিয়।

যুক্তরাজ্যে টার্কির একটি দীর্ঘ ঐতিহাসিক ঐতিহ্য রয়েছে। সেই ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় আজও ক্রিসমাসে টার্কি খাওয়ার রীতি বজায় আছে।

যাঁরা বড় টার্কি রান্না করতে চান না বা ঝামেলা ছাড়াই উৎসবের খাবার উপভোগ করতে চান, তাঁদের জন্যও আজ নানা ধরনের প্রস্তুত টার্কি খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে—যা ক্রিসমাস উদ্‌যাপনকে আরও সহজ করে তুলেছে। বড়দিনের এই দীর্ঘ ঐতিহ্যের কারণে আজও বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ টার্কি ছাড়া উৎসবের কথা কল্পনাও করতে পারেন না। আপনিও কি এবার বড়দিনের আয়োজনে টার্কি রাখছেন?

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কাজুবাদাম কেন খাবেন, কতটুকু খাবেন

ফিচার ডেস্ক
এতে আছে ম্যাগনেশিয়াম, কপার আর জিংক। ছবি: সংগৃহীত
এতে আছে ম্যাগনেশিয়াম, কপার আর জিংক। ছবি: সংগৃহীত

কাজুবাদামকে বলা হয় ‘পুষ্টির ছোট প্যাকেট’। এটি যেমন সুস্বাদু তেমনি পুষ্টিকর। এ কারণে যে আপনি মুঠো মুঠো করে সব সময় এটি খেতেই থাকবেন, তা হবে না। নিয়মিত কাজুবাদাম পরিমিত খেতে হবে। এতে আপনি পেতে পারেন দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক সুস্থতা। মূলত ব্রাজিলীয় বংশোদ্ভূত এই বৃক্ষজাত বীজ বর্তমানে বিশ্বজুড়ে তার স্বাস্থ্যগুণের জন্য সমাদৃত। হৃদ্‌রোগ প্রতিরোধ থেকে শুরু করে ওজন নিয়ন্ত্রণ—কাজুবাদামের আছে বহুমুখী উপকারিতা। এটি নিয়মিত খাওয়ার পেছনে অনেকগুলো স্বাস্থ্যগত কারণ আছে। আবার খাওয়ার ক্ষেত্রে রয়েছে কিছু সতর্কতাও। তাই নিজের খাবারের তালিকায় কাজুবাদাম রাখার আগে ভালো ও খারাপ দিক জেনে রাখুন।

হৃদ্‌যন্ত্রের সুরক্ষা

কাজুবাদামে রয়েছে প্রচুর অসম্পৃক্ত চর্বি। এটি রক্তের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল বা এলডিএলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত বাদাম খেলে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঝুঁকি প্রায় ২৭ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়। এ ছাড়া এতে থাকা ম্যাগনেশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রেখে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়।

ওজন নিয়ন্ত্রণ

কাজুবাদাম উচ্চ ক্যালরিযুক্ত হলেও এটি ওজন কমাতে সহায়ক হতে পারে। এর কারণ হলো, কাজুবাদামের সবটুকু ক্যালরি শরীর শোষণ করতে পারে না। এর ভেতরের আঁশ বা ফাইবার চর্বিকে আটকে ফেলে, যা হজমের সময় শরীরে পুরোপুরি শোষিত হয় না। ফলে এটি দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে এবং আজেবাজে খাওয়ার প্রবণতা কমায়।

ডায়াবেটিসের জন্য উপকারী

টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের জন্য কাজুবাদাম খুবই উপকারী। এতে থাকা আঁশ রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বেড়ে যাওয়া রোধ করে। এ ছাড়া এর ম্যাগনেশিয়াম ইনসুলিন হরমোনের কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, দৈনিক ক্যালরির ১০ শতাংশ কাজুবাদাম থেকে গ্রহণ করলে ইনসুলিনের মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসে।

শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধক্ষমতা

কাজুবাদাম কপার ও জিঙ্কের চমৎকার উৎস। এই দুটি খনিজ উপাদান শরীরের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থাকে শক্তিশালী রাখতে অপরিহার্য। এ ছাড়া এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট (পলিফেনল ও ক্যারোটিনয়েড) শরীরের ভেতরের ব্যথা কমাতে এবং কোষের ক্ষতি রোধ করতে কাজ করে।

হাড় ও মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য

কাজুবাদামে আছে ভরপুর ম্যাঙ্গানিজ, ফসফরাস, ভিটামিন কে। এগুলো হাড়ের গঠনে ভূমিকা রাখে। এর কপার উপাদান মস্তিষ্কের সুস্থ বিকাশ ও শক্তি উৎপাদনে সরাসরি সাহায্য করে।

কাঁচা কাজু নিরাপদ কি না

আমরা বাজারে যে কাজুবাদাম কাঁচা হিসেবে কিনি, তা আসলে পুরোপুরি কাঁচা নয়। গাছের তাজা কাজুবাদামের খোসায় ইউরুশিয়াল নামক বিষাক্ত উপাদান থাকে, যা ত্বকে অ্যালার্জি বা ফোসকা তৈরি করতে পারে। প্রক্রিয়াজাত করার সময় তাপ দিয়ে এই বিষাক্ত অংশ দূর করা হয়। তাই গাছ থেকে সরাসরি পেড়ে কাজু খাওয়া নিরাপদ নয়।

খাদ্যাভ্যাসে যুক্ত করার সহজ উপায়

কাজুবাদাম খুব সহজে প্রতিদিনের খাবারে যোগ করা যায়। বিকেলের নাশতায় এক মুঠো ভাজা কাজু খেতে পারেন। সালাদ, স্যুপ বা স্ট্যুতে কাজুবাদাম ছড়িয়ে দিলে স্বাদ ও পুষ্টি—দুই-ই বেড়ে যায়। কাজুবাদাম ভিজিয়ে ব্লেন্ড করে দুধ মুক্ত ক্রিম বা পনির তৈরি করা সম্ভব। টোস্ট বা ওটমিলের সঙ্গে কাজু বাটার ব্যবহার করা যায়।

মনে রাখবেন

পরিমাণ: কাজুবাদাম অত্যন্ত পুষ্টিকর হলেও এতে ক্যালরি বেশি। তাই দিনে ২৮ গ্রাম বা প্রায় ১৮টি বাদাম খাওয়াই যথেষ্ট।

লবণ ও তেল: অতিরিক্ত লবণ বা তেলে ভাজা কাজুর চেয়ে শুকনো ভাজা বা আনসলটেড কাজু বেছে নেওয়া ভালো।

অ্যালার্জি: যাদের কাঠবাদাম বা পেস্তাবাদামে অ্যালার্জি আছে, তাদের কাজু খাওয়ার আগে সতর্ক হওয়া উচিত। শ্বাসকষ্ট বা চুলকানির মতো লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

সূত্র: হেলথ লাইন, ইভিএন এক্সপ্রেস, ওয়েব মেড

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গরম কড়াইয়ে কেন ঠান্ডা পানি ঢালবেন না

ফিচার ডেস্ক
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

কড়াইসহ যেকোনো ধাতব হাঁড়িপাতিল কেন বাঁকা হয়ে যায়, জানেন? এর উত্তর লুকিয়ে আছে ধাতব পাত্রে ঠান্ডা পানি ঢালার অভ্যাসের মধ্যে।

চুলা থেকে নামানো গরম কড়াইয়ে হঠাৎ ঠান্ডা পানি ঢাললে যে শব্দ হয়, অনেকের কাছে তা সাধারণ মনে হতে পারে। কিন্তু বাস্তবে এটি একটি সতর্কবার্তা। আপনার কড়াইটি তখন থার্মাল শকের শিকার হচ্ছে, যা ধীরে ধীরে রান্নার পাত্রের আয়ু কমিয়ে দেয়। অনেক গৃহিণী ও রান্নাপ্রেমী মনে করেন, গরম কাড়াই সরাসরি সিঙ্কে নিয়ে ঠান্ডা পানি ঢাললে পোড়া খাবারের অংশ সহজে উঠে যায়। কিন্তু অল-ক্ল্যাড ও ক্যালফালনের মতো নামকরা কুকওয়্যার ব্রান্ড সতর্ক করে বলছে, এটি কড়াই নষ্ট হওয়ার বড় কারণগুলোর একটি।

থার্মাল শক কীভাবে ক্ষতি করে

ধাতু গরম হলে প্রসারিত হয় এবং ঠান্ডা হলে সংকুচিত হয়। এটি পদার্থবিজ্ঞানের সাধারণ নিয়ম। যখন প্রায় ২০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার একটি কড়াই হঠাৎ ঠান্ডা পানির সংস্পর্শে আসে, তখন ধাতব অণুগুলো দ্রুত সংকুচিত হয়। এই হঠাৎ পরিবর্তনই সৃষ্টি করে থার্মাল শক, যা কড়াইয়ের গঠনকে স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে।

কড়াই বাঁকা হয়ে যাওয়া

থার্মাল শকের সবচেয়ে সাধারণ ফল হলো কড়াই বাঁকা হয়ে যাওয়া। হঠাৎ ঠান্ডায় কড়াইয়ের নিচের অংশ সংকুচিত হয়ে ভাঁজ হয়ে যায়। ফলে কড়াই চুলার ওপর ঠিকভাবে বসে না এবং তাপ সমানভাবে ছড়ায় না। এর ফল হিসেবে রান্নার সময় এক পাশে খাবার পুড়ে যায়, অন্য পাশে ঠিকমতো রান্না হয় না।

নন-স্টিক কড়াই বাড়তি ঝুঁকি

নন-স্টিক কড়াইয়ের ক্ষেত্রে থার্মাল শক আরও বেশি ক্ষতিকর। কারণ, প্যানের ধাতু ও নন-স্টিক কোটিংয়ের প্রসারণ ও সংকোচনের হার এক নয়। হঠাৎ ঠান্ডা হলে কোটিং ফেটে যেতে বা উঠে যেতে পারে। এতে প্যানের নন-স্টিক ক্ষমতা নষ্ট হয় এবং কোটিংয়ের ক্ষুদ্র কণা খাবারের সঙ্গে মিশে যেতে পারে। আরও উদ্বেগজনক বিষয় হলো, ক্ষতিগ্রস্ত নন-স্টিক কোটিং থেকে পিএফএএস জাতীয় ক্ষতিকর রাসায়নিক নির্গত হতে পারে। যেগুলো দীর্ঘ মেয়াদে স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এবং ক্যানসারের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে গবেষণায় উঠে এসেছে।

ফাটল ধরার ঝুঁকি

কাস্ট আয়রন, স্টোনওয়্যার বা সিরামিক প্যানের ক্ষেত্রে থার্মাল শক কখনো কখনো তাৎক্ষণিক ফাটল ধরাতে পারে। এসব উপাদান স্টেইনলেস স্টিল বা অ্যালুমিনিয়ামের তুলনায় বেশি ভঙ্গুর হওয়ায় হঠাৎ তাপমাত্রা পরিবর্তন সহ্য করতে পারে না।

ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

কড়াই রক্ষা করার নিয়ম

বিশেষজ্ঞদের মতে, কড়াই ভালো রাখার সহজ নিয়ম হলো ধৈর্য। এ ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো মেনে চলতে হবে—

রান্না শেষ হলে কড়াইটি চুলার ওপর বা পাশে রেখে স্বাভাবিকভাবে ঠান্ডা হতে দিন।

পুরোপুরি ঠান্ডা হলে তারপর ধুয়ে ফেলুন।

তাড়াহুড়া থাকলে ঠান্ডা পানির বদলে গরম বা কুসুম গরম পানি ব্যবহার করুন, যাতে তাপমাত্রার পার্থক্য কম থাকে।

আরও কিছু সাধারণ ভুল

বিশেষজ্ঞরা আরও কয়েকটি ভুলের কথা উল্লেখ করেন। সেগুলো হলো—

ঠান্ডা পানিতে লবণ দিলে লবণের কণা তলায় জমে স্টেইনলেস স্টিলের পাত্রে ক্ষুদ্র গর্ত তৈরি করতে পারে। তাই পানি ফুটে ওঠার পর লবণ যোগ করা ভালো।

নন-স্টিক প্যান একটির ওপর আরেকটি রাখলে ওপরের প্যানের তলা নিচের প্যানের কোটিংয়ে আঁচড় ফেলতে পারে।

নন-স্টিক প্যানে ধাতব স্ক্রাবার বা শক্ত ঘষামাজা একেবারেই এড়িয়ে চলা উচিত।

কাস্ট আয়রন প্যান পরিষ্কারে সাবান কম ব্যবহার করে গরম পানি দিয়ে ধুয়ে দ্রুত শুকিয়ে হালকা তেল মেখে রাখা ভালো, এতে মরিচা ধরবে না।

রান্নার পাত্রের যত্ন নেওয়া মানে শুধু খরচ বাঁচানো নয়; এটি খাবারের মান, স্বাদ এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষিত রাখে। একটি ভালো পাত্র দীর্ঘদিন ভালো থাকলে সমানভাবে রান্না হয়। খাবার পুড়ে যাওয়ার ঝুঁকি কমে এবং ক্ষতিকর পদার্থ খাবারের সঙ্গে মিশে যাওয়ার আশঙ্কাও কমে যায়। গরম প্যানে ঠান্ডা পানি ঢালার অভ্যাসটি ত্যাগ করলে কড়াইয়ের গঠন ও কোটিং অক্ষত এবং সেটি দীর্ঘদিন ব্যবহারের উপযোগী থাকবে।

সূত্র: হাফ পোস্ট

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত