Ajker Patrika

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় ফেসবুকের ‘হস্তক্ষেপ’, চাকরি হারিয়েছেন গবেষক

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় ফেসবুকের ‘হস্তক্ষেপ’, চাকরি হারিয়েছেন গবেষক

রাষ্ট্র ও সমাজ সব ক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাব ক্রমেই বাড়ছে। অধিকারকর্মীরা দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ করে আসছেন, ফেসবুকের মতো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম স্বাধীন মত প্রকাশে বাধা হয়ে উঠছে। তাদের তথাকথিত কমিউনিটি গাইডলাইনের দোহাই দিয়ে প্রয়োজনীয় ও যৌক্তিক কনটেন্ট মুছে ফেলা হচ্ছে। ব্যবসার খাতিরে এই প্ল্যাটফর্মগুলো কনটেন্ট সেন্সরের পাশাপাশি নিপীড়ক সরকারের সহযোগী হয়ে উঠছে। সরকারের দাবি মেনে নিয়মিত ভিন্ন মতাবলম্বী ও সমালোচকদের আইডি ও কনটেন্ট সরকারের কাছে সরবরাহ করছে তারা। 

এবার দেখা যাচ্ছে, সোশ্যাল মিডিয়া শিক্ষাবিদ গবেষকদের কাজেও হস্তক্ষেপ শুরু করেছে। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্তৃপক্ষের ওপর ছড়ি ঘোরাচ্ছে ফেসবুক। হার্ভার্ডের সাবেক গবেষক জোয়ান ডোনোভান অভিযোগ করেছেন, ফেসবুকের অনুবাদ বন্ধের হুমকি পেয়ে তাঁর চাকরিই খেয়ে দেওয়া হয়েছে! 

একটি গবেষণাকে কেন্দ্র করে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ডোনোভানকে চাকরিচ্যুত করেছে। ওই গবেষকের সঙ্গে হার্ভার্ডের বিরোধটি স্পষ্টত একাডেমিক স্বাধীনতা, সোশ্যাল মিডিয়া এবং গবেষণার ওপর করপোরেট প্রভাবের একটি বৈশ্বিক বাস্তব দৃষ্টান্ত। 

২০২১ সালের ২৯ অক্টোবর একটি জুম মিটিংয়ে নিজের গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপনের ডাক পান ডোনোভান। তিনি তখন হার্ভার্ডে, সোশ্যাল মিডিয়া এবং ভুয়া তথ্য বিষয়ক গবেষণা পরিচালক। এটি হার্ভার্ডের জন এফ কেনেডি স্কুল অব গভর্নমেন্টের অধীন ছিল। বৈঠকটি ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ধনী দাতাদের সঙ্গে, যাদের বলা হয় ডিনস কাউন্সিল। 

ডোনোভান ইন্টারনেটে ভুয়া তথ্যের বিস্তার এবং আমেরিকান সমাজে এর প্রভাব সম্পর্কে তাঁর গবেষণার বিষয়ে দাতাদের ব্রিফ করেন। এই জুম মিটিংয়ের মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে মেটার (তৎকালীন ফেসবুক) একজন সাবেক কর্মচারী ফ্রান্সেস হাউগেন টেক জায়ান্টটির হাজার হাজার পৃষ্ঠার অভ্যন্তরীণ নথি ফাঁস করে দেন। 

হাউগেন সে বছরের ৫ অক্টোবর মার্কিন কংগ্রেসের সামনে এ নিয়ে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন। তিনি দাবি করেন, এই নথিগুলোতে স্পষ্ট যে, ফেসবুকের পরিষেবাগুলো সমাজের ক্ষতি করছে, ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে এবং কিশোর–কিশোরীদের ক্ষতি করছে—এটি ফেসবুক কর্তৃপক্ষও জানে। কিন্তু তারা সামাজিক সুরক্ষা উপেক্ষা করে পয়সা কামানোকেই বেছে নিয়েছে। 

ডোনোভান হার্ভার্ডের দাতাদের সামনে আরেকটি বোমা ফাটান: তিনি তাঁদের বলেন, তাঁর কাছেও এমন নথিপত্রের ভান্ডার রয়েছেন। বিপুল পরিমাণ নথি পেয়েছেন, তিনি যাকে ‘ইন্টারনেট ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নথি’ বলে মনে করেন। হাউগেনের মতো তিনিও দাবি করেন, ফেসবুক কর্তৃপক্ষ তাদের পরিষেবার ক্ষতি সম্পর্কে জানে, কিন্তু কিছুই করে না। 

ডোনোভানের দৃষ্টিভঙ্গি ছিল, ফেসবুক নিজেই খারাপ লোকদের শিকার, নতুন প্রযুক্তিকে এসব মানুষ অসৎ উদ্দেশ্য সাধনে ব্যবহার করে—এটা যেমন সত্য, আবার ফেসবুক নিজেই এমন সিস্টেম ডিজাইন করেছে যা সবচেয়ে উত্তেজক বিষয়বস্তুকে উৎসাহিত করে। 

তিনি মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনবিসিকে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘সমস্যাটা হলো, সোশ্যাল মিডিয়া নিজেই খারাপ লোকদের যেচে সুবিধা দেয়, বিশেষত নতুন এবং আপত্তিকর বিষয়বস্তু—যেটি ভাইরাল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে— সেটিতেই তারা গুরুত্ব দেয়। এখানে যা ভুল হচ্ছে তা ফেসবুকের বাইরের বিশ্বের বিষয় নয়, বরং এটি রয়েছে কোম্পানির  অ্যালগরিদমের ভেতরেই।’ 

ডোনোভান যখন জুম কলে তাঁর গবেষণার ফলাফলগুলো ব্যাখ্যা করা শেষ করেন, তখন জুম মিটিংয়ে থাকা একজন হাত তোলেন। তিনি ছিলেন ইলিয়ট শ্রেজ। তিনি হার্ভার্ডের ডিনস কাউন্সিলের দাতা গোষ্ঠীর সদস্য এবং ফেসবুকের গ্লোবাল কমিউনিকেশনস এবং পাবলিক পলিসির সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট। 

শ্রেজ এই গবেষণার ফলাফলের তীব্র বিরোধিতা করেন। বাগ্‌বিতণ্ডা এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে, মিটিংটি সেখানেই শেষ হয়ে যায়। বিষয়টি পরে তাঁর সুপারভাইজারকে জানিয়েছিলেন ডোনোভান। সুপারভাইজার জবাবে বলেছিলেন, ‘আমি মনে করি, যদি তিনি পাগল না হয়ে থাকেন তাহলে আমাদের উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত ছিল।’ 

শ্রেজ অবশ্য এ ব্যাপারে সিএনবিসির কাছে মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছেন। ফেসবুকও অভিযোগ অস্বীকার করেছে। 

এর আগে ফেসবুকের গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড কমিউনিকেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট নিক ক্লেগ (যুক্তরাজ্যের সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী) ফেসবুকের বিরুদ্ধে ওঠার এ ধরনের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর মতে, পছন্দমতো কিছু তথ্য–উপাত্ত নিয়ে এ ধরনের পর্যবেক্ষণ দেওয়া হয়। 

ডোনোভান বলেন, এ ঘটনার পর থেকে হার্ভার্ডের ঊর্ধ্বতনদের কাছ থেকে তেমন সমর্থন পাননি। ফেসবুক গবেষণায় তিনি আর এগোতে পারেননি। 

ওই বছরের নভেম্বরের শুরুতে কেনেডি স্কুলের তৎকালীন ডিন ডগলাস এলমেনডর্ফ ফেসবুকের প্রভাব নিয়ে গবেষণার বিষয়ে নানা প্রশ্ন তুলে ডোনোভানকে ই–মেইল করেন। এমনকি তিনি বলতে গেলে, গবেষণায় পাওয়া ফলাফল ও পর্যবেক্ষণের ভিত্তিকেই চ্যালেঞ্জ করেন। 

এমন ই–মেইল পেয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েন ডোনোভান। ডিন ডগলাসের কণ্ঠে তিনি ফেসবুক নির্বাহীদের কণ্ঠেরই প্রতিধ্বনি শুনেছিলেন। কারণ তিনি জানতেন, ফেসবুকের মূল সংস্থা মেটার তৎকালীন প্রধান অপারেটিং অফিসার শেরিল স্যান্ডবার্গের সঙ্গে ডিন এলমেনডর্ফের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিগত সম্পর্ক রয়েছে। 

এলমেনডর্ফ হার্ভার্ডে স্যান্ডবার্গের স্নাতক উপদেষ্টা ছিলেন। স্যান্ডবার্গ নিজেই হার্ভার্ডের কেনেডি স্কুলের বড় দাতা। এলমেনডর্ফ ২০২২ সালের গ্রীষ্মে স্যান্ডবার্গের বিয়েতেও আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন। 

ডোনোভান বলেন, ‘আমাকে প্রিন্সিপালের অফিসে ডাকা হয়েছিল এবং আমি কেন ফেসবুক নিয়ে কথা বলছি সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। আশ্চর্যের বিষয় হলো, ডিন আমাকে কখনো টুইটার বা ইউটিউব বা গুগল সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেননি। অথচ এগুলো নিয়েও তদন্ত করেছি।’ 

হার্ভার্ডের একজন মুখপাত্রের মাধ্যমে এলমেনডর্ফের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছেন। শেরিল স্যান্ডবার্গও মন্তব্য করতে রাজি হননি। 

হার্ভার্ডের কর্মকর্তারা দ্য ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেছেন, এলমেনডর্ফ এবং স্যান্ডবার্গ কখনই ডোনোভানকে নিয়ে আলোচনা করেননি। 

পরের মাসে ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ এবং তাঁর স্ত্রী প্রিসিলা চ্যান পরিচালিত দাতব্য সংস্থা ঘোষণা দেয়: হার্ভার্ডে একটি নতুন ইনস্টিটিউট তৈরি করার জন্য ১৫ বছরের মধ্যে ৫০ কোটি ডলার দেওয়া দেবে তারা। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) বিষয়ে জাকারবার্গের মায়ের নামে হবে ইনস্টিটিউট। জাকারবার্গ এবং প্রিসিলা দুজনেই হার্ভার্ডের প্রাক্তন। 

এই সময় এ নিয়ে হার্ভার্ড ক্যাম্পাসে অসন্তোষ দেখা দিয়েছিল। অনেক শিক্ষার্থীই বিশ্ববিদ্যালয়ে এভাবে করপোরেটের অনুপ্রবেশ নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন। 

২০২১ সালের ডিসেম্বরে হার্ভার্ডে সবচেয়ে বড় অনুদানটি এসেছিল চ্যান–জাকারবার্গ ইনিশিয়েটিভ থেকে। অবশ্য এটিই তাদের প্রথম অনুদান নয়। ২০১৮ সালের উপাত্ত দেখে বোঝা যায়, ফাউন্ডেশনটি হার্ভার্ড বা এর সঙ্গে যুক্ত সংস্থাগুলোকে কোটি কোটি ডলার অনুদান দিয়েছে। 

ডোনোভান বলেন, যত মাস যাচ্ছিল হার্ভার্ডে তাঁর অবস্থান ততই অস্থিতিশীল হয়ে উঠছিল। তাঁর মনে হচ্ছিল, কর্তৃপক্ষ চাচ্ছে তিনি চাকরিটা ছেড়ে দেন। তিনি বলেন, ‘আমি যখন বিশেষভাবে ফেসবুকের দিকে মনোযোগ দিই, তখনই চাপের মুখে পড়ি।’ 

২০২২ সালের গ্রীষ্মে ডিন এলমেনডর্ফের সঙ্গে বৈঠকে ডোনোভানকে জানানো হয়, তাঁর প্রোগ্রামটি বন্ধ করতে হবে। এটি ছিল প্রযুক্তি এবং সামাজিক পরিবর্তন বিষয়ক গবেষণা প্রকল্প। এর মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৪ সালের জুনে। 

ডোনোভান ছিলেন হার্ভার্ডের স্টাফ। ফ্যাকাল্টি না হওয়ার অজুহাতে তাঁকে শেষ পর্যন্ত আর সুরক্ষা দেওয়া হয়নি। ২০২৩ সালের ১৩ জুলাই গবেষণা প্রকল্পটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। চাকরি হারান ডোনোভান। 

ডোনোভানের চাকরি হারানোর বিস্তারিত বিবরণ গত বছরের ২৮ নভেম্বর হার্ভার্ডে পাঠায় হুইসেল ব্লোয়ার এইড। একই অলাভজনক গোষ্ঠী ২০২১ সালে ফেসবুক হুইসেল ব্লোয়ার হাউগেনের সঙ্গে কাজ করেছিল। 

হুইসেলব্লোয়ার এইড ম্যাসাচুসেটসের অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিসে ডোনোভানের অভিযোগ পাঠায়। এরপর ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব এডুকেশনের অফিস ফর সিভিল রাইটসের কাছেও ডোনোভানের অভিযোগ উত্থাপন করা হয়। তবে কোনো পক্ষ থেকেই কোনো অগ্রগতি হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকায় স্কুলের ফুটবল টিমে গোলকিপার ছিলেন জাইমা রহমান

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে জাইমা রহমান। ছবি: সংগৃহীত
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে জাইমা রহমান। ছবি: সংগৃহীত

যে বয়সে মানুষ কৈশোরে পা রাখে ঠিক সেই বয়সেই, অর্থাৎ মাত্র ১৩ বছর বয়সে বাবা-মায়ের সঙ্গে দেশান্তরী হয়েছিলেন জাইমা রহমান। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নাতনি ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একমাত্র কন্যা জাইমার কৈশোর কেটেছে লন্ডনে। সেখানেই স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরিয়ে এখন ব্যারিস্টার তিনি।

তবে, জাইমা রহমানের শৈশবের পুরোটা সময় বাংলাদেশেই কেটেছে। প্রাথমিকে পড়াশোনা করেছেন বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ঢাকায় (আইএসডি)। এই স্কুলেরই ফুটবল দলের সদস্য ছিলেন তিনি। শুধু তাই নয়, গোলকিপার হিসেবে দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বও সামাল দিয়েছেন। এমনকি জয় করেছেন মেডেলও।

সম্প্রতি বাংলাদেশে ফিরে আসাকে সামনে রেখে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে শৈশবের সেই অভিজ্ঞতার স্মৃতিচারণা করেন জাইমা। তিনি জানান, ফুটবল খেলে তিনি যে মেডেলটি পেয়েছিলেন, সেটি দাদিকে দেখাতে নিয়ে গিয়েছিলেন দাদির অফিসেই।

সেই সময়টিতে জাইমা রহমানের দাদি বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। নাতনির মুখে মেডেল জয়ের গল্পটি তিনি বেশ মনোযোগ দিয়ে শুনছিলেন এবং এই গল্পটি তিনি অন্যদের সঙ্গেও খুব গর্ব করে বলতেন।

এ বিষয়ে জাইমা লিখেছেন—‘আমার বয়স তখন এগারো। আমাদের স্কুলের ফুটবল টিম একটা টুর্নামেন্ট জিতেছিল, আর আমি মেডেল পেয়েছিলাম। আম্মু আমাকে সরাসরি দাদুর অফিসে নিয়ে গিয়েছিলেন, আমি যেন নিজেই দাদুকে আমার বিজয়ের গল্পটা বলতে পারি; তাঁকে আমার বিজয়ের মেডেলটা দেখাতে পারি। আমি খুব উচ্ছ্বসিত হয়ে গোলকিপার হিসেবে কী-কী করেছি, সেটা বলছিলাম; আর স্পষ্ট টের পাচ্ছিলাম, দাদু প্রচণ্ড মনোযোগ নিয়ে আমাকে শুনছেন। তিনি এতটাই গর্বিত হয়েছিলেন যে, পরে সেই গল্পটা তিনি অন্যদের কাছেও বলতেন।’

১৭ বছর পর বাবা-মায়ের সঙ্গে আবারও দেশে ফিরে আসা জাইমা রহমান এখন ৩০ বছরের পরিপূর্ণ এক ব্যক্তিত্ব। লন্ডনে গিয়ে তাঁর জীবন নতুনভাবে গড়ে ওঠে। শেকড় হারানোর বেদনার সঙ্গে যুক্ত হয় নতুন সমাজ, নতুন ভাষা, নতুন লড়াই। কিন্তু তিনি থেমে থাকেননি। লন্ডনের ম্যারিমাউন্ট গার্লস স্কুল থেকে তিনি ও-লেভেল পাস করেন। পরে আইন বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি নেন লন্ডনের কুইন মেরি ইউনিভার্সিটি থেকে। পরে তিনি লন্ডনের ঐতিহ্যবাহী আইন প্রতিষ্ঠান ‘ইনার টেম্পল’ থেকে ‘বার-এট-ল’ কোর্স সম্পন্ন করে ব্যারিস্টার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বড়দিনে কেন টার্কি খাওয়া হয়, প্রচলন হয়েছিল কীভাবে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৫৪
ষোড়শ শতাব্দীর শুরুতে স্পেনীয় অভিযাত্রীদের মাধ্যমে টার্কি প্রথম ইউরোপে আসে। ছবি: সংগৃহীত
ষোড়শ শতাব্দীর শুরুতে স্পেনীয় অভিযাত্রীদের মাধ্যমে টার্কি প্রথম ইউরোপে আসে। ছবি: সংগৃহীত

বড়দিন বা ক্রিসমাস মানেই ডাইনিং টেবিলে সাজানো বড়সড় এক টার্কি রোস্ট। কিন্তু উত্তর আমেরিকার আদি নিবাসী এই পাখি কীভাবে ইউরোপীয়দের উৎসবের প্রধান অনুষঙ্গ হয়ে উঠল, তা বেশ কৌতূহল উদ্দীপক। ষোড়শ শতাব্দীর শুরুতে স্পেনীয় অভিযাত্রীদের মাধ্যমে টার্কি প্রথম ইউরোপে আসে। তার আগে উৎসবের ভোজ বলতে ছিল ময়ূর বা রাজহাঁসের মাংস।

ইংল্যান্ডের রাজা হেনরি অষ্টম প্রথম ব্রিটিশ সম্রাট হিসেবে বড়দিনের ভোজে টার্কি খেয়েছিলেন বলে ধারণা করা হয়। তবে টার্কিকে জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছে দেওয়ার মূল কৃতিত্ব ভিক্টোরিয়ান যুগের। রানি ভিক্টোরিয়া যখন তাঁর রাজকীয় ক্রিসমাস ভোজে টার্কি খাওয়া শুরু করেন, তখন থেকেই এটি আভিজাত্যের প্রতীক হয়ে দাঁড়ায়।

ইংল্যান্ডের রাজা হেনরি অষ্টম প্রথম ব্রিটিশ সম্রাট হিসেবে বড়দিনের ভোজে টার্কি খেয়েছিলেন বলে ধারণা করা হয়। ছবি: সংগৃহীত
ইংল্যান্ডের রাজা হেনরি অষ্টম প্রথম ব্রিটিশ সম্রাট হিসেবে বড়দিনের ভোজে টার্কি খেয়েছিলেন বলে ধারণা করা হয়। ছবি: সংগৃহীত

রাজকীয় পছন্দের বাইরে সাধারণ মানুষের ঘরে টার্কিকে জনপ্রিয় করার পেছনে বড় ভূমিকা ছিল লেখক চার্লস ডিকেন্সের। ১৮৪৩ সালে প্রকাশিত তাঁর বিখ্যাত উপন্যাস ‘আ ক্রিসমাস ক্যারল’-এ দেখা যায়, একসময়ের কৃপণ ইবেনেজার স্ক্রুজ বড়দিনে ক্র্যাচিট পরিবারকে একটি বিশাল টার্কি উপহার পাঠাচ্ছেন। এই গল্প সাধারণ মানুষের মনে গেঁথে দেয় যে—বড়দিনের আদর্শ খাবার মানেই টার্কি।

কেন টার্কিই সেরা পছন্দ

টার্কি জনপ্রিয় হওয়ার পেছনে কিছু ব্যবহারিক কারণও রয়েছে। আকার ও উপযোগিতা—গরু দুধ দেয় আর মুরগি দেয় ডিম; কিন্তু টার্কির অন্য কোনো ব্যবহার নেই। এ ছাড়া একটি বড় টার্কি দিয়ে অনায়াসেই পুরো পরিবারের ভোজ সম্পন্ন করা যায়। অনেকগুলো ছোট পাখি রান্না করার চেয়ে একটি বড় পাখি রান্না করা অনেক বেশি সাশ্রয়ী।

হিমায়িত বা ফ্রোজেন টার্কি—রেফ্রিজারেশন বা ফ্রিজ আবিষ্কারের আগে টাটকা টার্কি কেনা ছিল বেশ ঝক্কির কাজ। কিন্তু ফ্রোজেন টার্কি বাজারে আসার পর মানুষ আগে থেকেই পরিকল্পনা করে এটি কিনতে শুরু করে, যা এর জনপ্রিয়তা বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়।

রাজকীয় পছন্দের বাইরে সাধারণ মানুষের ঘরে টার্কিকে জনপ্রিয় করার পেছনে বড় ভূমিকা ছিল লেখক চার্লস ডিকেন্সের। ছবি: সংগৃহীত
রাজকীয় পছন্দের বাইরে সাধারণ মানুষের ঘরে টার্কিকে জনপ্রিয় করার পেছনে বড় ভূমিকা ছিল লেখক চার্লস ডিকেন্সের। ছবি: সংগৃহীত

পরদিনের চমৎকার নাশতা—বড়দিনের পরদিন অর্থাৎ ‘বক্সিং ডে’তে টার্কির বেঁচে যাওয়া মাংস (Leftovers) দিয়ে স্যান্ডউইচ, স্টু, কারি বা পাই তৈরি করা যায়। বিশেষ করে, টার্কি কারি এখন অনেক দেশেই বেশ জনপ্রিয়।

যুক্তরাজ্যে টার্কির একটি দীর্ঘ ঐতিহাসিক ঐতিহ্য রয়েছে। সেই ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় আজও ক্রিসমাসে টার্কি খাওয়ার রীতি বজায় আছে।

যাঁরা বড় টার্কি রান্না করতে চান না বা ঝামেলা ছাড়াই উৎসবের খাবার উপভোগ করতে চান, তাঁদের জন্যও আজ নানা ধরনের প্রস্তুত টার্কি খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে—যা ক্রিসমাস উদ্‌যাপনকে আরও সহজ করে তুলেছে। বড়দিনের এই দীর্ঘ ঐতিহ্যের কারণে আজও বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ টার্কি ছাড়া উৎসবের কথা কল্পনাও করতে পারেন না। আপনিও কি এবার বড়দিনের আয়োজনে টার্কি রাখছেন?

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কাজুবাদাম কেন খাবেন, কতটুকু খাবেন

ফিচার ডেস্ক
এতে আছে ম্যাগনেশিয়াম, কপার আর জিংক। ছবি: সংগৃহীত
এতে আছে ম্যাগনেশিয়াম, কপার আর জিংক। ছবি: সংগৃহীত

কাজুবাদামকে বলা হয় ‘পুষ্টির ছোট প্যাকেট’। এটি যেমন সুস্বাদু তেমনি পুষ্টিকর। এ কারণে যে আপনি মুঠো মুঠো করে সব সময় এটি খেতেই থাকবেন, তা হবে না। নিয়মিত কাজুবাদাম পরিমিত খেতে হবে। এতে আপনি পেতে পারেন দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক সুস্থতা। মূলত ব্রাজিলীয় বংশোদ্ভূত এই বৃক্ষজাত বীজ বর্তমানে বিশ্বজুড়ে তার স্বাস্থ্যগুণের জন্য সমাদৃত। হৃদ্‌রোগ প্রতিরোধ থেকে শুরু করে ওজন নিয়ন্ত্রণ—কাজুবাদামের আছে বহুমুখী উপকারিতা। এটি নিয়মিত খাওয়ার পেছনে অনেকগুলো স্বাস্থ্যগত কারণ আছে। আবার খাওয়ার ক্ষেত্রে রয়েছে কিছু সতর্কতাও। তাই নিজের খাবারের তালিকায় কাজুবাদাম রাখার আগে ভালো ও খারাপ দিক জেনে রাখুন।

হৃদ্‌যন্ত্রের সুরক্ষা

কাজুবাদামে রয়েছে প্রচুর অসম্পৃক্ত চর্বি। এটি রক্তের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল বা এলডিএলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত বাদাম খেলে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঝুঁকি প্রায় ২৭ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়। এ ছাড়া এতে থাকা ম্যাগনেশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রেখে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়।

ওজন নিয়ন্ত্রণ

কাজুবাদাম উচ্চ ক্যালরিযুক্ত হলেও এটি ওজন কমাতে সহায়ক হতে পারে। এর কারণ হলো, কাজুবাদামের সবটুকু ক্যালরি শরীর শোষণ করতে পারে না। এর ভেতরের আঁশ বা ফাইবার চর্বিকে আটকে ফেলে, যা হজমের সময় শরীরে পুরোপুরি শোষিত হয় না। ফলে এটি দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে এবং আজেবাজে খাওয়ার প্রবণতা কমায়।

ডায়াবেটিসের জন্য উপকারী

টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের জন্য কাজুবাদাম খুবই উপকারী। এতে থাকা আঁশ রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বেড়ে যাওয়া রোধ করে। এ ছাড়া এর ম্যাগনেশিয়াম ইনসুলিন হরমোনের কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, দৈনিক ক্যালরির ১০ শতাংশ কাজুবাদাম থেকে গ্রহণ করলে ইনসুলিনের মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসে।

শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধক্ষমতা

কাজুবাদাম কপার ও জিঙ্কের চমৎকার উৎস। এই দুটি খনিজ উপাদান শরীরের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থাকে শক্তিশালী রাখতে অপরিহার্য। এ ছাড়া এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট (পলিফেনল ও ক্যারোটিনয়েড) শরীরের ভেতরের ব্যথা কমাতে এবং কোষের ক্ষতি রোধ করতে কাজ করে।

হাড় ও মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য

কাজুবাদামে আছে ভরপুর ম্যাঙ্গানিজ, ফসফরাস, ভিটামিন কে। এগুলো হাড়ের গঠনে ভূমিকা রাখে। এর কপার উপাদান মস্তিষ্কের সুস্থ বিকাশ ও শক্তি উৎপাদনে সরাসরি সাহায্য করে।

কাঁচা কাজু নিরাপদ কি না

আমরা বাজারে যে কাজুবাদাম কাঁচা হিসেবে কিনি, তা আসলে পুরোপুরি কাঁচা নয়। গাছের তাজা কাজুবাদামের খোসায় ইউরুশিয়াল নামক বিষাক্ত উপাদান থাকে, যা ত্বকে অ্যালার্জি বা ফোসকা তৈরি করতে পারে। প্রক্রিয়াজাত করার সময় তাপ দিয়ে এই বিষাক্ত অংশ দূর করা হয়। তাই গাছ থেকে সরাসরি পেড়ে কাজু খাওয়া নিরাপদ নয়।

খাদ্যাভ্যাসে যুক্ত করার সহজ উপায়

কাজুবাদাম খুব সহজে প্রতিদিনের খাবারে যোগ করা যায়। বিকেলের নাশতায় এক মুঠো ভাজা কাজু খেতে পারেন। সালাদ, স্যুপ বা স্ট্যুতে কাজুবাদাম ছড়িয়ে দিলে স্বাদ ও পুষ্টি—দুই-ই বেড়ে যায়। কাজুবাদাম ভিজিয়ে ব্লেন্ড করে দুধ মুক্ত ক্রিম বা পনির তৈরি করা সম্ভব। টোস্ট বা ওটমিলের সঙ্গে কাজু বাটার ব্যবহার করা যায়।

মনে রাখবেন

পরিমাণ: কাজুবাদাম অত্যন্ত পুষ্টিকর হলেও এতে ক্যালরি বেশি। তাই দিনে ২৮ গ্রাম বা প্রায় ১৮টি বাদাম খাওয়াই যথেষ্ট।

লবণ ও তেল: অতিরিক্ত লবণ বা তেলে ভাজা কাজুর চেয়ে শুকনো ভাজা বা আনসলটেড কাজু বেছে নেওয়া ভালো।

অ্যালার্জি: যাদের কাঠবাদাম বা পেস্তাবাদামে অ্যালার্জি আছে, তাদের কাজু খাওয়ার আগে সতর্ক হওয়া উচিত। শ্বাসকষ্ট বা চুলকানির মতো লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

সূত্র: হেলথ লাইন, ইভিএন এক্সপ্রেস, ওয়েব মেড

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গরম কড়াইয়ে কেন ঠান্ডা পানি ঢালবেন না

ফিচার ডেস্ক
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

কড়াইসহ যেকোনো ধাতব হাঁড়িপাতিল কেন বাঁকা হয়ে যায়, জানেন? এর উত্তর লুকিয়ে আছে ধাতব পাত্রে ঠান্ডা পানি ঢালার অভ্যাসের মধ্যে।

চুলা থেকে নামানো গরম কড়াইয়ে হঠাৎ ঠান্ডা পানি ঢাললে যে শব্দ হয়, অনেকের কাছে তা সাধারণ মনে হতে পারে। কিন্তু বাস্তবে এটি একটি সতর্কবার্তা। আপনার কড়াইটি তখন থার্মাল শকের শিকার হচ্ছে, যা ধীরে ধীরে রান্নার পাত্রের আয়ু কমিয়ে দেয়। অনেক গৃহিণী ও রান্নাপ্রেমী মনে করেন, গরম কাড়াই সরাসরি সিঙ্কে নিয়ে ঠান্ডা পানি ঢাললে পোড়া খাবারের অংশ সহজে উঠে যায়। কিন্তু অল-ক্ল্যাড ও ক্যালফালনের মতো নামকরা কুকওয়্যার ব্রান্ড সতর্ক করে বলছে, এটি কড়াই নষ্ট হওয়ার বড় কারণগুলোর একটি।

থার্মাল শক কীভাবে ক্ষতি করে

ধাতু গরম হলে প্রসারিত হয় এবং ঠান্ডা হলে সংকুচিত হয়। এটি পদার্থবিজ্ঞানের সাধারণ নিয়ম। যখন প্রায় ২০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার একটি কড়াই হঠাৎ ঠান্ডা পানির সংস্পর্শে আসে, তখন ধাতব অণুগুলো দ্রুত সংকুচিত হয়। এই হঠাৎ পরিবর্তনই সৃষ্টি করে থার্মাল শক, যা কড়াইয়ের গঠনকে স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে।

কড়াই বাঁকা হয়ে যাওয়া

থার্মাল শকের সবচেয়ে সাধারণ ফল হলো কড়াই বাঁকা হয়ে যাওয়া। হঠাৎ ঠান্ডায় কড়াইয়ের নিচের অংশ সংকুচিত হয়ে ভাঁজ হয়ে যায়। ফলে কড়াই চুলার ওপর ঠিকভাবে বসে না এবং তাপ সমানভাবে ছড়ায় না। এর ফল হিসেবে রান্নার সময় এক পাশে খাবার পুড়ে যায়, অন্য পাশে ঠিকমতো রান্না হয় না।

নন-স্টিক কড়াই বাড়তি ঝুঁকি

নন-স্টিক কড়াইয়ের ক্ষেত্রে থার্মাল শক আরও বেশি ক্ষতিকর। কারণ, প্যানের ধাতু ও নন-স্টিক কোটিংয়ের প্রসারণ ও সংকোচনের হার এক নয়। হঠাৎ ঠান্ডা হলে কোটিং ফেটে যেতে বা উঠে যেতে পারে। এতে প্যানের নন-স্টিক ক্ষমতা নষ্ট হয় এবং কোটিংয়ের ক্ষুদ্র কণা খাবারের সঙ্গে মিশে যেতে পারে। আরও উদ্বেগজনক বিষয় হলো, ক্ষতিগ্রস্ত নন-স্টিক কোটিং থেকে পিএফএএস জাতীয় ক্ষতিকর রাসায়নিক নির্গত হতে পারে। যেগুলো দীর্ঘ মেয়াদে স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এবং ক্যানসারের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে গবেষণায় উঠে এসেছে।

ফাটল ধরার ঝুঁকি

কাস্ট আয়রন, স্টোনওয়্যার বা সিরামিক প্যানের ক্ষেত্রে থার্মাল শক কখনো কখনো তাৎক্ষণিক ফাটল ধরাতে পারে। এসব উপাদান স্টেইনলেস স্টিল বা অ্যালুমিনিয়ামের তুলনায় বেশি ভঙ্গুর হওয়ায় হঠাৎ তাপমাত্রা পরিবর্তন সহ্য করতে পারে না।

ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

কড়াই রক্ষা করার নিয়ম

বিশেষজ্ঞদের মতে, কড়াই ভালো রাখার সহজ নিয়ম হলো ধৈর্য। এ ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো মেনে চলতে হবে—

রান্না শেষ হলে কড়াইটি চুলার ওপর বা পাশে রেখে স্বাভাবিকভাবে ঠান্ডা হতে দিন।

পুরোপুরি ঠান্ডা হলে তারপর ধুয়ে ফেলুন।

তাড়াহুড়া থাকলে ঠান্ডা পানির বদলে গরম বা কুসুম গরম পানি ব্যবহার করুন, যাতে তাপমাত্রার পার্থক্য কম থাকে।

আরও কিছু সাধারণ ভুল

বিশেষজ্ঞরা আরও কয়েকটি ভুলের কথা উল্লেখ করেন। সেগুলো হলো—

ঠান্ডা পানিতে লবণ দিলে লবণের কণা তলায় জমে স্টেইনলেস স্টিলের পাত্রে ক্ষুদ্র গর্ত তৈরি করতে পারে। তাই পানি ফুটে ওঠার পর লবণ যোগ করা ভালো।

নন-স্টিক প্যান একটির ওপর আরেকটি রাখলে ওপরের প্যানের তলা নিচের প্যানের কোটিংয়ে আঁচড় ফেলতে পারে।

নন-স্টিক প্যানে ধাতব স্ক্রাবার বা শক্ত ঘষামাজা একেবারেই এড়িয়ে চলা উচিত।

কাস্ট আয়রন প্যান পরিষ্কারে সাবান কম ব্যবহার করে গরম পানি দিয়ে ধুয়ে দ্রুত শুকিয়ে হালকা তেল মেখে রাখা ভালো, এতে মরিচা ধরবে না।

রান্নার পাত্রের যত্ন নেওয়া মানে শুধু খরচ বাঁচানো নয়; এটি খাবারের মান, স্বাদ এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষিত রাখে। একটি ভালো পাত্র দীর্ঘদিন ভালো থাকলে সমানভাবে রান্না হয়। খাবার পুড়ে যাওয়ার ঝুঁকি কমে এবং ক্ষতিকর পদার্থ খাবারের সঙ্গে মিশে যাওয়ার আশঙ্কাও কমে যায়। গরম প্যানে ঠান্ডা পানি ঢালার অভ্যাসটি ত্যাগ করলে কড়াইয়ের গঠন ও কোটিং অক্ষত এবং সেটি দীর্ঘদিন ব্যবহারের উপযোগী থাকবে।

সূত্র: হাফ পোস্ট

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত