আরাফাত রহমান

ফেসবুক ব্যবহার করতে গিয়ে বাবা-মায়ের কাছে বকা শোনেনি এমন লোক খুঁজে পাওয়া কঠিন হবে। বলা হয়, সোশ্যাল মিডিয়া বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্ল্যাটফর্মগুলোতে সময়ের অপচয় হয়। কিন্তু এটাই আবার আয়ের মাধ্যম হয়ে উঠছে। বিভিন্ন নামীদামি ব্র্যান্ড থেকে শুরু করে ছোটখাটো ব্যবসা—সবারই প্রচারের মাধ্যম হয়ে উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়া। তবে এর জন্য শেখা চাই সঠিক ব্যবস্থাপনা। ব্যবসা বা নিজের উদ্যোগের নামে একটি পেজ করলেই চলে না। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে নিজের ব্যবসাকে লাভবান করতে হলে সঠিক ব্যবস্থাপনা শেখা ভীষণ জরুরি।
সাধারণত বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান অনলাইনে নিজেদের প্রচার চালাতে একটি পেজ খুলেই কাজ সারে। এর চেয়ে যারা একটু অগ্রসর, তারা দেখা যায় পেজের প্রচারের জন্য কিছু টাকা ব্যয় করে। এটুকু করেই অনেকে ভাবেন, অনেকটাই করা হলো। এমন যারা ভাবেন, তারা বলতে হয় বোকার স্বর্গে বাস করছেন। কেন? এই প্রশ্নের উত্তরেই সামনে হাজির হয় সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংয়ের প্রসঙ্গটি।
সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের ব্যবসাকে প্রতিষ্ঠিত করতে অবশ্যই আপনাকে টার্গেট অডিয়েন্স, কনটেন্ট স্ট্র্যাটেজি, সেলস ফানেল, কাস্টমার জার্নি, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের নিজস্ব এলগরিদম ইত্যাদি সম্পর্কে জ্ঞান রাখতে হবে। এ জন্যই বড় বড় ব্র্যান্ড থেকে শুরু করে ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ী—সবাই সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টে পারদর্শী লোক খোঁজে। বলা যায়, সময়ের সঙ্গে এই পেশায় দক্ষ লোকের চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে।
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টের কাজ
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টের মূল কাজ হলো একটি ব্যবসাকে অনলাইনে প্রতিষ্ঠা করা। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিনিয়ত লোকজন বিভিন্ন বিজ্ঞাপন দেখে সেগুলো পর্যালোচনা করে এবং পণ্য কেনে। এখানকার মার্কেটিংকে বলা যায় ‘রিয়েল টাইম মার্কেটিং’। তাই একজন সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটারের মূল কাজ হলো—
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজারের আয়
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট যথাযথভাবে শিখতে পারলে দেশের পাশাপাশি বিদেশি কোম্পানিগুলোতেও কাজের সুবিধা পেতে পারেন। সোশ্যাল মিডিয়া বিপণনকর্মী হিসেবে আপনি যেভাবে আয় করতে পারেন, তা হচ্ছে—
ফ্রিল্যান্সিং: ফ্রিল্যান্সিং বর্তমানে আমাদের দেশে ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আপনি ফাইভার, আপওয়ার্ক, ফ্রিল্যান্সের ডটকম, পিপল পার আওয়ারসহ বিভিন্ন সাইটে নিজের প্রোফাইল খুলে পছন্দের কাজে বিড (কাজের বিপরীতে নিজের মজুরি জানিয়ে কার্যাদেশ পাওয়ার আবেদন) করতে পারবেন বা যোগাযোগ করতে পারবেন বায়ার বা ক্রেতার সঙ্গে। একজন মোটামুটি দক্ষতা সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটার প্রতি মাসে ৩০০ ডলার–১০০০ ডলার পর্যন্ত আয় করতে পারেন।
দেশীয় প্রতিষ্ঠান: বর্তমানে বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ডিজিটাল মার্কেটার নিয়োগ দিচ্ছে। কথায় ডিজিটাল মার্কেটিং হলেও মূল কাজ থাকে সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টের। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একজন শিক্ষানবিশ সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজারের বেতন ১০,০০০ হাজার টাকা থেকে শুরু হয়। নির্বাহী পদে প্রতিষ্ঠান ও চাকরির কাজের পরিধি ভেদে ২০ থেকে ৪০ হাজার টাকা বেতন হয়। বিডিজবসে, ফেসবুকের বিভিন্ন নিয়োগভিত্তিক পেজে নিয়মিত এ ধরনের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখতে পাওয়া যায়।
বিদেশি প্রতিষ্ঠান: বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোতে চাকরির জন্য আবেদন করার আগে আপনার একটি পোর্টফোলিও থাকা প্রয়োজন। কারণ, বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো অভিজ্ঞ লোক নিতে পছন্দ করে। আপনি দেশে বসেই লিংকডইনের মাধ্যমে চাকরির আবেদন করতে পারেন। বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো ঘণ্টা ভিত্তিতে বা মাসিক চুক্তি—দুভাবেই নিয়োগ করে। ভালো বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোতে কাজ ও দক্ষতার ভিত্তিতে মাসে ৮০০-১৫০০ ডলার আয়ের সুযোগ রয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হতে হলে
একজন দক্ষ সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হতে হলে অবশ্যই আপনাকে কিছু বিষয়ে দক্ষ হতে হবে। এ ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলোর দিকে খেয়াল রাখতে হবে—
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট কোর্স: বর্তমানে বিভিন্ন আইটি প্রতিষ্ঠান ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে কোর্স অফার করে। এ ছাড়া সরকারি উদ্যোগেও বিভিন্ন ধরনের কোর্স করানো হচ্ছে। এগুলোর যেকোনো একটিতে ভর্তি হয়ে যেতে পারেন। তবে সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টের জন্য কোর্স করতেই হবে, তা কিন্তু নয়। আপনি চাইলে ইউটিউব, ইউডেমি, কোর্সেরাসহ বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মেও কোর্সটি করতে পারবেন।
পোর্টফোলিও তৈরি করুন ও কনটেন্ট শেয়ার করুন: ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের দুনিয়ায় নিজের অবস্থান তৈরির জন্য একটি ভালো পোর্টফোলিও খুবই দরকার। প্রথম দিকে কাজ পাওয়া সত্যিই কষ্টসাধ্য। শুরুটা ঠিকঠাক করতে হলে যা করতে পারেন—
*কাজ শেখার প্রথমদিকে বিভিন্ন ছোটখাটো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কয়েক মাসের জন্য তাদের বিনা মূল্যে সেবা দিতে পারেন। কারণ, প্রথম দিকে আপনার পোর্টফোলিও তৈরি করাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়টাকে আপনার বিনিয়োগ হিসেবে ধরতে পারেন। এমনও হতে পারে, আপনি যে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ করছেন, তারাই আপনাকে পরে নিয়োগ দিতে পারে।
*বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের জন্য ইন্টার্ন নিয়োগ করে। ইন্টার্নশিপের জন্য সাধারণত ৮০০০-১০,০০০ টাকা দেওয়া হয়। এই ধরনের ইন্টার্নশিপগুলোতে কাজের চাপ থাকে। ফলে আপনার বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতাটা হয়ে যাবে।
*বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে নিজের অ্যাকাউন্ট/পেজ/চ্যানেল খুলে কনটেন্ট শেয়ার করতে পারেন এবং অরগানিকভাবে ফলোয়ার বাড়াতে পারেন। ফলে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের ব্যাপারে আপনার ব্যবহারিক অভিজ্ঞতা হবে। তা ছাড়া আপনার কনটেন্ট মার্কেটিং নিয়ে ভালো ধারণা হয়ে যাবে।
যে দক্ষতাগুলো জরুরি
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংয়ে ক্যারিয়ার গড়তে হলে কিছু বিষয়ে দক্ষ হয়ে উঠতে হবে। এর মধ্যে শুরুতে থাকে লেখার বিষয়টি। এর সঙ্গে ডিজাইন সম্পর্কিত জ্ঞান থাকলে প্রাথমিক কাজটা ভালোভাবে চালিয়ে নেওয়া যায়। মোটাদাগে বেশ কিছু বিষয়ে দক্ষ হয়ে উঠলে তবেই এ পেশায় ভালো করা যায়। এর মধ্যে রয়েছে—
কপি রাইটিং: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পণ্য ও সেবা বিপণনে দক্ষ ব্যবস্থাপক হয়ে উঠতে হলে লেখালেখির অভ্যাস থাকাটা ভীষণ জরুরি। সোশ্যাল মিডিয়ায় চোখের সামনে ঘোরা এবং আকর্ষণীয় বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের ছবি বা ভিডিওর সঙ্গে দেখবেন কিছু লেখা রয়েছে। এই ক্যাপশনগুলোই কিন্তু পাঠক ও দর্শককে আকৃষ্ট করে। এর ওপরই নির্ভর করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিটি ওই বিজ্ঞাপনের ভেতরে ঢুকবেন কিনা। মানুষকে আপনার বিজ্ঞাপনের সঙ্গে যুক্ত করতে হলে চাই আকর্ষণীয় ক্যাপশন। ক্যাপশন ভালো ও আকর্ষণীয় হলেই মানুষ পণ্যটি কিনতে বেশি আগ্রহী হবে। তাই একজন দক্ষ সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজারকে বিজ্ঞাপনী ভাষা রপ্ত করতে হবে। এই কপি রাইটিং ভালোমতো আয়ত্ত করতে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে বিভিন্ন নামী ব্র্যান্ডের পেজ ও গ্রুপগুলো ফলো করতে পারেন। তা ছাড়া নিজের মতো করে একটা কপি লিখে আশপাশের মানুষকে দেখাতে পারেন এবং তাঁদের মতামত নিতে পারেন। কারণ, আপনার চারপাশে থাকা মানুষদের একজনই আপনার পণ্যটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে কিনবেন।
গ্রাফিক ডিজাইন: সোশ্যাল মিডিয়াতে ছবি ও ভিডিও কনটেন্ট হিসেবে খুব গুরুত্বপূর্ণ রাখে। বলা হয়, মানুষের মস্তিষ্কে অন্য কিছুর চেয়ে ছবি ৫০০০ গুণ দ্রুত প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। তাই আপনার যদি গ্রাফিক ডিজাইন নিয়ে ধারণা থাকে ও আকর্ষণীয় সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট তৈরি করতে পারেন, তাহলে খুব দ্রুতই একজন সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হিসেবে আপনি সফল হতে পারবেন। প্রাথমিকভাবে আপনি ক্যানভা (Canva) দিয়ে শুরু করতে পারেন। পরে এডোবি ফটোশপ ও ইলাস্ট্রেটর শিখে নিতে পারেন।
কাস্টোমার সাপোর্ট বা কমিউনিটি ম্যানেজমেন্টে দক্ষতা: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভোক্তারা বিভিন্ন সময় ফেসবুক পেজের ইনবক্সে মেসেজ দেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের কাছে পণ্য বা সেবা বিক্রি ও বিক্রয়-পরবর্তী সেবা নিশ্চিত করতে পারাটা একজন সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজারের গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা।
বিপণন কৌশল: সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টে দক্ষ হতে হলে আপনার সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি বা বিপণন কৌশল নিয়ে ভালো ধারণা রাখতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়াতে একজন ভোক্তাকে সেলস ফানেলের ভেতর দিয়ে নিয়ে যেতে হয়। সেলস ফানেলের ওপরের দিকে থাকে ব্র্যান্ড অ্যাওয়ারনেস। এই ধাপে আপনি ক্রেতাদের আপনাদের পণ্যের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেবেন। তার পরবর্তী ধাপে থাকে ব্র্যান্ড কনসিডারেশন। এই ধাপে আপনি ক্রেতাদের পণ্যটি ক্রয়ে আগ্রহী করে তুলবেন। আর শেষ ধাপটি হচ্ছে কনভারশন। এই ধাপে এসে একজন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী চূড়ান্তভাবে আপনার পণ্যের ক্রেতায় পরিণত হবে।
সেলস ফানেল ছাড়াও কোন ধরনের চ্যানেলে কোন ধরনের অডিয়েন্স পাওয়া যায়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। যেমন তরুণ প্রজন্মের অধিকাংশ ইনস্টাগ্রাম, টিকটক ব্যবহার করে। আবার ফেসবুকে আপনি সব শ্রেণি ও বয়সের লোকেদের পাবেন। ইউটিউবে ইন্টারেস্টভিত্তিক অডিয়েন্সের উপস্থিতি আবার বেশি। তাই আপনার পণ্যের প্রকরণ বুঝে প্ল্যাটফর্ম নির্বাচন করতে হবে। এ ছাড়া কোন সময় আপনি আপনার কনটেন্ট আপলোড করবেন, কোন সময় মানুষ বেশি সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করছে—এসব সম্পর্কেও সম্যক ধারণা রাখতে হবে।
বিশ্লেষণ: সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টে দক্ষ হতে হলে আপনাকে অবশ্যই বিভিন্ন ধরনের বিশ্লেষণী বা অ্যানালিটিক্যাল টুলস ব্যবহার করতে জানতে হবে। আপনি যদি একজন সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হন, তাহলে অবশ্যই আপনাকে বিভিন্ন রিপোর্ট তৈরি করতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়াতে কী ধরনের পোস্ট আপনি শেয়ার করছেন, সেগুলো কতজন মানুষের কাছে পৌঁছাল, কতজন পোস্টটির সঙ্গে যুক্ত হলো, পোস্টটির ফলে কতজন মানুষ আপনার ওয়েবসাইটে এসেছে, কোন পণ্যটি অর্ডার করেছে, কখন ক্রেতারা বেশি সক্রিয় থাকে—এই বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করে প্ল্যাটফর্মগুলোয় আপনার কার্যক্রম সাজাতে হবে। এ জন্য সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোর নিজস্ব অ্যানালিটিকস আছে। যেগুলোর বিভিন্ন মেট্রিক্স নিয়ে আপনার অবশ্যই ধারণা থাকতে হবে।
ব্যয় নির্ধারণ: সোশ্যাল মিডিয়াতে ব্যবসার পেইড মার্কেটিং করতে হয়। অর্থাৎ আপনার ব্যবসা বা পণ্যকে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্ল্যাটফর্মগুলোকে নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা দিতে হবে। অবশ্যই এই বিনিময় হবে ডলারে। আর বিভিন্ন ক্রিয়েটিভ তৈরি, টুলস কেনাসহ নানা খরচ তো আছেই। সে ক্ষেত্রে বিজ্ঞাপন প্রচারের মাধ্যমে যেন আপনার বিনিয়োগ উঠে আসে, সে হিসাব করা এবং এর বাজেট নির্ধারণ করা একটি গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা।
কোন কোন প্ল্যাটফর্মে কাজ করা শিখবেন
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট শিখতে হলে প্রথমে আপনাকে কয়েকটি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মকে চিহ্নিত করতে হবে, যেগুলোর আপনি কাজ করবেন। প্রধানত ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, লিংকডিন, টুইটার, পিন্টারেস্ট, টিকটক, কোরা—এই সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলো সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখাটা বাঞ্ছনীয়। কারণ, এই প্ল্যাটফর্মগুলোতেই অধিকাংশ ব্যবহারকারীরা থাকে। ভিডিও নিয়ে কাজ করলে অবশ্যই ইউটিউব সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখতে হবে। এই প্ল্যাটফর্মগুলো কিন্তু আবার একটি থেকে অন্যটি আলাদা। ফলে এগুলোয় কাজের জন্য চাই আলাদা আলাদা প্রস্তুতি। একেক প্ল্যাটফর্মে একেক বয়স, শ্রেণি ও পেশার লোকেরা থাকে। আবার ভিন্ন ভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের কনটেন্টের ভিন্নতাও পাওয়া যায়। যেমন ইনস্টাগ্রাম বর্তমানে ছবিনির্ভর, আবার ইউটিউব পুরোপুরি ভিডিওনির্ভর। আবার টিকটক ভিডিওনির্ভর হলেও সেখানকার ভিডিওগুলোর দৈর্ঘ্য কম। কম দৈর্ঘ্যের ভিডিওর ফিচার নিয়ে অবশ্য ইউটিউব, ফেসবুকের মতো প্ল্যাটফর্মগুলোও হাজির হয়েছে। তাই বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এবং এসবের নতুন নতুন সব ফিচার সম্পর্কে অবশ্যই ধারণা থাকা বাঞ্ছনীয়।
বর্তমান সময়কে বলা হয় চতুর্থ শিল্প-বিপ্লবের যুগ। এই সময় গতানুগতিক চাকরির পেছনে না ছুটে দক্ষতা অর্জন করলে খুব সহজেই সম্মানজনকভাবে আয় করতে পারবেন। আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহার উত্তরোত্তর বাড়ছে; সামনে আরও বাড়বে। ফেসবুক নিজেদের মূল কোম্পানির নাম এরই মধ্যে ‘মেটা’ রেখেছে। তারা মেটাভার্সের কথা বলছে। অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোও বসে নেই। মেটাভার্সের যে বাস্তবতা আসছে সামনে, তাতে ব্যবসা বা যে কোনো ধরনের উদ্যোগকে এগিয়ে নিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্ল্যাটফর্মগুলোকে কাজে লাগানোর কোনো বিকল্প নেই। তাই এই খাতে দক্ষ জনবলের চাহিদা দিন দিন বাড়বে। ফলে নতুন এই দুনিয়ায় নিজেকে একজন দক্ষ কর্মী হিসেবে গড়ে তুলতে এখন থেকেই লেগে পড়ুন।
প্রযুক্তি সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

ফেসবুক ব্যবহার করতে গিয়ে বাবা-মায়ের কাছে বকা শোনেনি এমন লোক খুঁজে পাওয়া কঠিন হবে। বলা হয়, সোশ্যাল মিডিয়া বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্ল্যাটফর্মগুলোতে সময়ের অপচয় হয়। কিন্তু এটাই আবার আয়ের মাধ্যম হয়ে উঠছে। বিভিন্ন নামীদামি ব্র্যান্ড থেকে শুরু করে ছোটখাটো ব্যবসা—সবারই প্রচারের মাধ্যম হয়ে উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়া। তবে এর জন্য শেখা চাই সঠিক ব্যবস্থাপনা। ব্যবসা বা নিজের উদ্যোগের নামে একটি পেজ করলেই চলে না। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে নিজের ব্যবসাকে লাভবান করতে হলে সঠিক ব্যবস্থাপনা শেখা ভীষণ জরুরি।
সাধারণত বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান অনলাইনে নিজেদের প্রচার চালাতে একটি পেজ খুলেই কাজ সারে। এর চেয়ে যারা একটু অগ্রসর, তারা দেখা যায় পেজের প্রচারের জন্য কিছু টাকা ব্যয় করে। এটুকু করেই অনেকে ভাবেন, অনেকটাই করা হলো। এমন যারা ভাবেন, তারা বলতে হয় বোকার স্বর্গে বাস করছেন। কেন? এই প্রশ্নের উত্তরেই সামনে হাজির হয় সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংয়ের প্রসঙ্গটি।
সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের ব্যবসাকে প্রতিষ্ঠিত করতে অবশ্যই আপনাকে টার্গেট অডিয়েন্স, কনটেন্ট স্ট্র্যাটেজি, সেলস ফানেল, কাস্টমার জার্নি, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের নিজস্ব এলগরিদম ইত্যাদি সম্পর্কে জ্ঞান রাখতে হবে। এ জন্যই বড় বড় ব্র্যান্ড থেকে শুরু করে ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ী—সবাই সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টে পারদর্শী লোক খোঁজে। বলা যায়, সময়ের সঙ্গে এই পেশায় দক্ষ লোকের চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে।
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টের কাজ
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টের মূল কাজ হলো একটি ব্যবসাকে অনলাইনে প্রতিষ্ঠা করা। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিনিয়ত লোকজন বিভিন্ন বিজ্ঞাপন দেখে সেগুলো পর্যালোচনা করে এবং পণ্য কেনে। এখানকার মার্কেটিংকে বলা যায় ‘রিয়েল টাইম মার্কেটিং’। তাই একজন সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটারের মূল কাজ হলো—
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজারের আয়
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট যথাযথভাবে শিখতে পারলে দেশের পাশাপাশি বিদেশি কোম্পানিগুলোতেও কাজের সুবিধা পেতে পারেন। সোশ্যাল মিডিয়া বিপণনকর্মী হিসেবে আপনি যেভাবে আয় করতে পারেন, তা হচ্ছে—
ফ্রিল্যান্সিং: ফ্রিল্যান্সিং বর্তমানে আমাদের দেশে ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আপনি ফাইভার, আপওয়ার্ক, ফ্রিল্যান্সের ডটকম, পিপল পার আওয়ারসহ বিভিন্ন সাইটে নিজের প্রোফাইল খুলে পছন্দের কাজে বিড (কাজের বিপরীতে নিজের মজুরি জানিয়ে কার্যাদেশ পাওয়ার আবেদন) করতে পারবেন বা যোগাযোগ করতে পারবেন বায়ার বা ক্রেতার সঙ্গে। একজন মোটামুটি দক্ষতা সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটার প্রতি মাসে ৩০০ ডলার–১০০০ ডলার পর্যন্ত আয় করতে পারেন।
দেশীয় প্রতিষ্ঠান: বর্তমানে বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ডিজিটাল মার্কেটার নিয়োগ দিচ্ছে। কথায় ডিজিটাল মার্কেটিং হলেও মূল কাজ থাকে সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টের। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একজন শিক্ষানবিশ সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজারের বেতন ১০,০০০ হাজার টাকা থেকে শুরু হয়। নির্বাহী পদে প্রতিষ্ঠান ও চাকরির কাজের পরিধি ভেদে ২০ থেকে ৪০ হাজার টাকা বেতন হয়। বিডিজবসে, ফেসবুকের বিভিন্ন নিয়োগভিত্তিক পেজে নিয়মিত এ ধরনের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখতে পাওয়া যায়।
বিদেশি প্রতিষ্ঠান: বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোতে চাকরির জন্য আবেদন করার আগে আপনার একটি পোর্টফোলিও থাকা প্রয়োজন। কারণ, বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো অভিজ্ঞ লোক নিতে পছন্দ করে। আপনি দেশে বসেই লিংকডইনের মাধ্যমে চাকরির আবেদন করতে পারেন। বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো ঘণ্টা ভিত্তিতে বা মাসিক চুক্তি—দুভাবেই নিয়োগ করে। ভালো বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোতে কাজ ও দক্ষতার ভিত্তিতে মাসে ৮০০-১৫০০ ডলার আয়ের সুযোগ রয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হতে হলে
একজন দক্ষ সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হতে হলে অবশ্যই আপনাকে কিছু বিষয়ে দক্ষ হতে হবে। এ ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলোর দিকে খেয়াল রাখতে হবে—
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট কোর্স: বর্তমানে বিভিন্ন আইটি প্রতিষ্ঠান ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে কোর্স অফার করে। এ ছাড়া সরকারি উদ্যোগেও বিভিন্ন ধরনের কোর্স করানো হচ্ছে। এগুলোর যেকোনো একটিতে ভর্তি হয়ে যেতে পারেন। তবে সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টের জন্য কোর্স করতেই হবে, তা কিন্তু নয়। আপনি চাইলে ইউটিউব, ইউডেমি, কোর্সেরাসহ বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মেও কোর্সটি করতে পারবেন।
পোর্টফোলিও তৈরি করুন ও কনটেন্ট শেয়ার করুন: ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের দুনিয়ায় নিজের অবস্থান তৈরির জন্য একটি ভালো পোর্টফোলিও খুবই দরকার। প্রথম দিকে কাজ পাওয়া সত্যিই কষ্টসাধ্য। শুরুটা ঠিকঠাক করতে হলে যা করতে পারেন—
*কাজ শেখার প্রথমদিকে বিভিন্ন ছোটখাটো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কয়েক মাসের জন্য তাদের বিনা মূল্যে সেবা দিতে পারেন। কারণ, প্রথম দিকে আপনার পোর্টফোলিও তৈরি করাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়টাকে আপনার বিনিয়োগ হিসেবে ধরতে পারেন। এমনও হতে পারে, আপনি যে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ করছেন, তারাই আপনাকে পরে নিয়োগ দিতে পারে।
*বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের জন্য ইন্টার্ন নিয়োগ করে। ইন্টার্নশিপের জন্য সাধারণত ৮০০০-১০,০০০ টাকা দেওয়া হয়। এই ধরনের ইন্টার্নশিপগুলোতে কাজের চাপ থাকে। ফলে আপনার বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতাটা হয়ে যাবে।
*বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে নিজের অ্যাকাউন্ট/পেজ/চ্যানেল খুলে কনটেন্ট শেয়ার করতে পারেন এবং অরগানিকভাবে ফলোয়ার বাড়াতে পারেন। ফলে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের ব্যাপারে আপনার ব্যবহারিক অভিজ্ঞতা হবে। তা ছাড়া আপনার কনটেন্ট মার্কেটিং নিয়ে ভালো ধারণা হয়ে যাবে।
যে দক্ষতাগুলো জরুরি
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংয়ে ক্যারিয়ার গড়তে হলে কিছু বিষয়ে দক্ষ হয়ে উঠতে হবে। এর মধ্যে শুরুতে থাকে লেখার বিষয়টি। এর সঙ্গে ডিজাইন সম্পর্কিত জ্ঞান থাকলে প্রাথমিক কাজটা ভালোভাবে চালিয়ে নেওয়া যায়। মোটাদাগে বেশ কিছু বিষয়ে দক্ষ হয়ে উঠলে তবেই এ পেশায় ভালো করা যায়। এর মধ্যে রয়েছে—
কপি রাইটিং: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পণ্য ও সেবা বিপণনে দক্ষ ব্যবস্থাপক হয়ে উঠতে হলে লেখালেখির অভ্যাস থাকাটা ভীষণ জরুরি। সোশ্যাল মিডিয়ায় চোখের সামনে ঘোরা এবং আকর্ষণীয় বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের ছবি বা ভিডিওর সঙ্গে দেখবেন কিছু লেখা রয়েছে। এই ক্যাপশনগুলোই কিন্তু পাঠক ও দর্শককে আকৃষ্ট করে। এর ওপরই নির্ভর করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিটি ওই বিজ্ঞাপনের ভেতরে ঢুকবেন কিনা। মানুষকে আপনার বিজ্ঞাপনের সঙ্গে যুক্ত করতে হলে চাই আকর্ষণীয় ক্যাপশন। ক্যাপশন ভালো ও আকর্ষণীয় হলেই মানুষ পণ্যটি কিনতে বেশি আগ্রহী হবে। তাই একজন দক্ষ সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজারকে বিজ্ঞাপনী ভাষা রপ্ত করতে হবে। এই কপি রাইটিং ভালোমতো আয়ত্ত করতে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে বিভিন্ন নামী ব্র্যান্ডের পেজ ও গ্রুপগুলো ফলো করতে পারেন। তা ছাড়া নিজের মতো করে একটা কপি লিখে আশপাশের মানুষকে দেখাতে পারেন এবং তাঁদের মতামত নিতে পারেন। কারণ, আপনার চারপাশে থাকা মানুষদের একজনই আপনার পণ্যটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে কিনবেন।
গ্রাফিক ডিজাইন: সোশ্যাল মিডিয়াতে ছবি ও ভিডিও কনটেন্ট হিসেবে খুব গুরুত্বপূর্ণ রাখে। বলা হয়, মানুষের মস্তিষ্কে অন্য কিছুর চেয়ে ছবি ৫০০০ গুণ দ্রুত প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। তাই আপনার যদি গ্রাফিক ডিজাইন নিয়ে ধারণা থাকে ও আকর্ষণীয় সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট তৈরি করতে পারেন, তাহলে খুব দ্রুতই একজন সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হিসেবে আপনি সফল হতে পারবেন। প্রাথমিকভাবে আপনি ক্যানভা (Canva) দিয়ে শুরু করতে পারেন। পরে এডোবি ফটোশপ ও ইলাস্ট্রেটর শিখে নিতে পারেন।
কাস্টোমার সাপোর্ট বা কমিউনিটি ম্যানেজমেন্টে দক্ষতা: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভোক্তারা বিভিন্ন সময় ফেসবুক পেজের ইনবক্সে মেসেজ দেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের কাছে পণ্য বা সেবা বিক্রি ও বিক্রয়-পরবর্তী সেবা নিশ্চিত করতে পারাটা একজন সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজারের গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা।
বিপণন কৌশল: সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টে দক্ষ হতে হলে আপনার সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি বা বিপণন কৌশল নিয়ে ভালো ধারণা রাখতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়াতে একজন ভোক্তাকে সেলস ফানেলের ভেতর দিয়ে নিয়ে যেতে হয়। সেলস ফানেলের ওপরের দিকে থাকে ব্র্যান্ড অ্যাওয়ারনেস। এই ধাপে আপনি ক্রেতাদের আপনাদের পণ্যের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেবেন। তার পরবর্তী ধাপে থাকে ব্র্যান্ড কনসিডারেশন। এই ধাপে আপনি ক্রেতাদের পণ্যটি ক্রয়ে আগ্রহী করে তুলবেন। আর শেষ ধাপটি হচ্ছে কনভারশন। এই ধাপে এসে একজন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী চূড়ান্তভাবে আপনার পণ্যের ক্রেতায় পরিণত হবে।
সেলস ফানেল ছাড়াও কোন ধরনের চ্যানেলে কোন ধরনের অডিয়েন্স পাওয়া যায়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। যেমন তরুণ প্রজন্মের অধিকাংশ ইনস্টাগ্রাম, টিকটক ব্যবহার করে। আবার ফেসবুকে আপনি সব শ্রেণি ও বয়সের লোকেদের পাবেন। ইউটিউবে ইন্টারেস্টভিত্তিক অডিয়েন্সের উপস্থিতি আবার বেশি। তাই আপনার পণ্যের প্রকরণ বুঝে প্ল্যাটফর্ম নির্বাচন করতে হবে। এ ছাড়া কোন সময় আপনি আপনার কনটেন্ট আপলোড করবেন, কোন সময় মানুষ বেশি সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করছে—এসব সম্পর্কেও সম্যক ধারণা রাখতে হবে।
বিশ্লেষণ: সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টে দক্ষ হতে হলে আপনাকে অবশ্যই বিভিন্ন ধরনের বিশ্লেষণী বা অ্যানালিটিক্যাল টুলস ব্যবহার করতে জানতে হবে। আপনি যদি একজন সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হন, তাহলে অবশ্যই আপনাকে বিভিন্ন রিপোর্ট তৈরি করতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়াতে কী ধরনের পোস্ট আপনি শেয়ার করছেন, সেগুলো কতজন মানুষের কাছে পৌঁছাল, কতজন পোস্টটির সঙ্গে যুক্ত হলো, পোস্টটির ফলে কতজন মানুষ আপনার ওয়েবসাইটে এসেছে, কোন পণ্যটি অর্ডার করেছে, কখন ক্রেতারা বেশি সক্রিয় থাকে—এই বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করে প্ল্যাটফর্মগুলোয় আপনার কার্যক্রম সাজাতে হবে। এ জন্য সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোর নিজস্ব অ্যানালিটিকস আছে। যেগুলোর বিভিন্ন মেট্রিক্স নিয়ে আপনার অবশ্যই ধারণা থাকতে হবে।
ব্যয় নির্ধারণ: সোশ্যাল মিডিয়াতে ব্যবসার পেইড মার্কেটিং করতে হয়। অর্থাৎ আপনার ব্যবসা বা পণ্যকে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্ল্যাটফর্মগুলোকে নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা দিতে হবে। অবশ্যই এই বিনিময় হবে ডলারে। আর বিভিন্ন ক্রিয়েটিভ তৈরি, টুলস কেনাসহ নানা খরচ তো আছেই। সে ক্ষেত্রে বিজ্ঞাপন প্রচারের মাধ্যমে যেন আপনার বিনিয়োগ উঠে আসে, সে হিসাব করা এবং এর বাজেট নির্ধারণ করা একটি গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা।
কোন কোন প্ল্যাটফর্মে কাজ করা শিখবেন
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট শিখতে হলে প্রথমে আপনাকে কয়েকটি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মকে চিহ্নিত করতে হবে, যেগুলোর আপনি কাজ করবেন। প্রধানত ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, লিংকডিন, টুইটার, পিন্টারেস্ট, টিকটক, কোরা—এই সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলো সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখাটা বাঞ্ছনীয়। কারণ, এই প্ল্যাটফর্মগুলোতেই অধিকাংশ ব্যবহারকারীরা থাকে। ভিডিও নিয়ে কাজ করলে অবশ্যই ইউটিউব সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখতে হবে। এই প্ল্যাটফর্মগুলো কিন্তু আবার একটি থেকে অন্যটি আলাদা। ফলে এগুলোয় কাজের জন্য চাই আলাদা আলাদা প্রস্তুতি। একেক প্ল্যাটফর্মে একেক বয়স, শ্রেণি ও পেশার লোকেরা থাকে। আবার ভিন্ন ভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের কনটেন্টের ভিন্নতাও পাওয়া যায়। যেমন ইনস্টাগ্রাম বর্তমানে ছবিনির্ভর, আবার ইউটিউব পুরোপুরি ভিডিওনির্ভর। আবার টিকটক ভিডিওনির্ভর হলেও সেখানকার ভিডিওগুলোর দৈর্ঘ্য কম। কম দৈর্ঘ্যের ভিডিওর ফিচার নিয়ে অবশ্য ইউটিউব, ফেসবুকের মতো প্ল্যাটফর্মগুলোও হাজির হয়েছে। তাই বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এবং এসবের নতুন নতুন সব ফিচার সম্পর্কে অবশ্যই ধারণা থাকা বাঞ্ছনীয়।
বর্তমান সময়কে বলা হয় চতুর্থ শিল্প-বিপ্লবের যুগ। এই সময় গতানুগতিক চাকরির পেছনে না ছুটে দক্ষতা অর্জন করলে খুব সহজেই সম্মানজনকভাবে আয় করতে পারবেন। আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহার উত্তরোত্তর বাড়ছে; সামনে আরও বাড়বে। ফেসবুক নিজেদের মূল কোম্পানির নাম এরই মধ্যে ‘মেটা’ রেখেছে। তারা মেটাভার্সের কথা বলছে। অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোও বসে নেই। মেটাভার্সের যে বাস্তবতা আসছে সামনে, তাতে ব্যবসা বা যে কোনো ধরনের উদ্যোগকে এগিয়ে নিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্ল্যাটফর্মগুলোকে কাজে লাগানোর কোনো বিকল্প নেই। তাই এই খাতে দক্ষ জনবলের চাহিদা দিন দিন বাড়বে। ফলে নতুন এই দুনিয়ায় নিজেকে একজন দক্ষ কর্মী হিসেবে গড়ে তুলতে এখন থেকেই লেগে পড়ুন।
প্রযুক্তি সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
আরাফাত রহমান

ফেসবুক ব্যবহার করতে গিয়ে বাবা-মায়ের কাছে বকা শোনেনি এমন লোক খুঁজে পাওয়া কঠিন হবে। বলা হয়, সোশ্যাল মিডিয়া বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্ল্যাটফর্মগুলোতে সময়ের অপচয় হয়। কিন্তু এটাই আবার আয়ের মাধ্যম হয়ে উঠছে। বিভিন্ন নামীদামি ব্র্যান্ড থেকে শুরু করে ছোটখাটো ব্যবসা—সবারই প্রচারের মাধ্যম হয়ে উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়া। তবে এর জন্য শেখা চাই সঠিক ব্যবস্থাপনা। ব্যবসা বা নিজের উদ্যোগের নামে একটি পেজ করলেই চলে না। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে নিজের ব্যবসাকে লাভবান করতে হলে সঠিক ব্যবস্থাপনা শেখা ভীষণ জরুরি।
সাধারণত বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান অনলাইনে নিজেদের প্রচার চালাতে একটি পেজ খুলেই কাজ সারে। এর চেয়ে যারা একটু অগ্রসর, তারা দেখা যায় পেজের প্রচারের জন্য কিছু টাকা ব্যয় করে। এটুকু করেই অনেকে ভাবেন, অনেকটাই করা হলো। এমন যারা ভাবেন, তারা বলতে হয় বোকার স্বর্গে বাস করছেন। কেন? এই প্রশ্নের উত্তরেই সামনে হাজির হয় সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংয়ের প্রসঙ্গটি।
সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের ব্যবসাকে প্রতিষ্ঠিত করতে অবশ্যই আপনাকে টার্গেট অডিয়েন্স, কনটেন্ট স্ট্র্যাটেজি, সেলস ফানেল, কাস্টমার জার্নি, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের নিজস্ব এলগরিদম ইত্যাদি সম্পর্কে জ্ঞান রাখতে হবে। এ জন্যই বড় বড় ব্র্যান্ড থেকে শুরু করে ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ী—সবাই সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টে পারদর্শী লোক খোঁজে। বলা যায়, সময়ের সঙ্গে এই পেশায় দক্ষ লোকের চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে।
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টের কাজ
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টের মূল কাজ হলো একটি ব্যবসাকে অনলাইনে প্রতিষ্ঠা করা। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিনিয়ত লোকজন বিভিন্ন বিজ্ঞাপন দেখে সেগুলো পর্যালোচনা করে এবং পণ্য কেনে। এখানকার মার্কেটিংকে বলা যায় ‘রিয়েল টাইম মার্কেটিং’। তাই একজন সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটারের মূল কাজ হলো—
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজারের আয়
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট যথাযথভাবে শিখতে পারলে দেশের পাশাপাশি বিদেশি কোম্পানিগুলোতেও কাজের সুবিধা পেতে পারেন। সোশ্যাল মিডিয়া বিপণনকর্মী হিসেবে আপনি যেভাবে আয় করতে পারেন, তা হচ্ছে—
ফ্রিল্যান্সিং: ফ্রিল্যান্সিং বর্তমানে আমাদের দেশে ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আপনি ফাইভার, আপওয়ার্ক, ফ্রিল্যান্সের ডটকম, পিপল পার আওয়ারসহ বিভিন্ন সাইটে নিজের প্রোফাইল খুলে পছন্দের কাজে বিড (কাজের বিপরীতে নিজের মজুরি জানিয়ে কার্যাদেশ পাওয়ার আবেদন) করতে পারবেন বা যোগাযোগ করতে পারবেন বায়ার বা ক্রেতার সঙ্গে। একজন মোটামুটি দক্ষতা সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটার প্রতি মাসে ৩০০ ডলার–১০০০ ডলার পর্যন্ত আয় করতে পারেন।
দেশীয় প্রতিষ্ঠান: বর্তমানে বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ডিজিটাল মার্কেটার নিয়োগ দিচ্ছে। কথায় ডিজিটাল মার্কেটিং হলেও মূল কাজ থাকে সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টের। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একজন শিক্ষানবিশ সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজারের বেতন ১০,০০০ হাজার টাকা থেকে শুরু হয়। নির্বাহী পদে প্রতিষ্ঠান ও চাকরির কাজের পরিধি ভেদে ২০ থেকে ৪০ হাজার টাকা বেতন হয়। বিডিজবসে, ফেসবুকের বিভিন্ন নিয়োগভিত্তিক পেজে নিয়মিত এ ধরনের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখতে পাওয়া যায়।
বিদেশি প্রতিষ্ঠান: বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোতে চাকরির জন্য আবেদন করার আগে আপনার একটি পোর্টফোলিও থাকা প্রয়োজন। কারণ, বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো অভিজ্ঞ লোক নিতে পছন্দ করে। আপনি দেশে বসেই লিংকডইনের মাধ্যমে চাকরির আবেদন করতে পারেন। বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো ঘণ্টা ভিত্তিতে বা মাসিক চুক্তি—দুভাবেই নিয়োগ করে। ভালো বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোতে কাজ ও দক্ষতার ভিত্তিতে মাসে ৮০০-১৫০০ ডলার আয়ের সুযোগ রয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হতে হলে
একজন দক্ষ সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হতে হলে অবশ্যই আপনাকে কিছু বিষয়ে দক্ষ হতে হবে। এ ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলোর দিকে খেয়াল রাখতে হবে—
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট কোর্স: বর্তমানে বিভিন্ন আইটি প্রতিষ্ঠান ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে কোর্স অফার করে। এ ছাড়া সরকারি উদ্যোগেও বিভিন্ন ধরনের কোর্স করানো হচ্ছে। এগুলোর যেকোনো একটিতে ভর্তি হয়ে যেতে পারেন। তবে সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টের জন্য কোর্স করতেই হবে, তা কিন্তু নয়। আপনি চাইলে ইউটিউব, ইউডেমি, কোর্সেরাসহ বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মেও কোর্সটি করতে পারবেন।
পোর্টফোলিও তৈরি করুন ও কনটেন্ট শেয়ার করুন: ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের দুনিয়ায় নিজের অবস্থান তৈরির জন্য একটি ভালো পোর্টফোলিও খুবই দরকার। প্রথম দিকে কাজ পাওয়া সত্যিই কষ্টসাধ্য। শুরুটা ঠিকঠাক করতে হলে যা করতে পারেন—
*কাজ শেখার প্রথমদিকে বিভিন্ন ছোটখাটো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কয়েক মাসের জন্য তাদের বিনা মূল্যে সেবা দিতে পারেন। কারণ, প্রথম দিকে আপনার পোর্টফোলিও তৈরি করাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়টাকে আপনার বিনিয়োগ হিসেবে ধরতে পারেন। এমনও হতে পারে, আপনি যে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ করছেন, তারাই আপনাকে পরে নিয়োগ দিতে পারে।
*বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের জন্য ইন্টার্ন নিয়োগ করে। ইন্টার্নশিপের জন্য সাধারণত ৮০০০-১০,০০০ টাকা দেওয়া হয়। এই ধরনের ইন্টার্নশিপগুলোতে কাজের চাপ থাকে। ফলে আপনার বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতাটা হয়ে যাবে।
*বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে নিজের অ্যাকাউন্ট/পেজ/চ্যানেল খুলে কনটেন্ট শেয়ার করতে পারেন এবং অরগানিকভাবে ফলোয়ার বাড়াতে পারেন। ফলে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের ব্যাপারে আপনার ব্যবহারিক অভিজ্ঞতা হবে। তা ছাড়া আপনার কনটেন্ট মার্কেটিং নিয়ে ভালো ধারণা হয়ে যাবে।
যে দক্ষতাগুলো জরুরি
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংয়ে ক্যারিয়ার গড়তে হলে কিছু বিষয়ে দক্ষ হয়ে উঠতে হবে। এর মধ্যে শুরুতে থাকে লেখার বিষয়টি। এর সঙ্গে ডিজাইন সম্পর্কিত জ্ঞান থাকলে প্রাথমিক কাজটা ভালোভাবে চালিয়ে নেওয়া যায়। মোটাদাগে বেশ কিছু বিষয়ে দক্ষ হয়ে উঠলে তবেই এ পেশায় ভালো করা যায়। এর মধ্যে রয়েছে—
কপি রাইটিং: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পণ্য ও সেবা বিপণনে দক্ষ ব্যবস্থাপক হয়ে উঠতে হলে লেখালেখির অভ্যাস থাকাটা ভীষণ জরুরি। সোশ্যাল মিডিয়ায় চোখের সামনে ঘোরা এবং আকর্ষণীয় বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের ছবি বা ভিডিওর সঙ্গে দেখবেন কিছু লেখা রয়েছে। এই ক্যাপশনগুলোই কিন্তু পাঠক ও দর্শককে আকৃষ্ট করে। এর ওপরই নির্ভর করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিটি ওই বিজ্ঞাপনের ভেতরে ঢুকবেন কিনা। মানুষকে আপনার বিজ্ঞাপনের সঙ্গে যুক্ত করতে হলে চাই আকর্ষণীয় ক্যাপশন। ক্যাপশন ভালো ও আকর্ষণীয় হলেই মানুষ পণ্যটি কিনতে বেশি আগ্রহী হবে। তাই একজন দক্ষ সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজারকে বিজ্ঞাপনী ভাষা রপ্ত করতে হবে। এই কপি রাইটিং ভালোমতো আয়ত্ত করতে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে বিভিন্ন নামী ব্র্যান্ডের পেজ ও গ্রুপগুলো ফলো করতে পারেন। তা ছাড়া নিজের মতো করে একটা কপি লিখে আশপাশের মানুষকে দেখাতে পারেন এবং তাঁদের মতামত নিতে পারেন। কারণ, আপনার চারপাশে থাকা মানুষদের একজনই আপনার পণ্যটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে কিনবেন।
গ্রাফিক ডিজাইন: সোশ্যাল মিডিয়াতে ছবি ও ভিডিও কনটেন্ট হিসেবে খুব গুরুত্বপূর্ণ রাখে। বলা হয়, মানুষের মস্তিষ্কে অন্য কিছুর চেয়ে ছবি ৫০০০ গুণ দ্রুত প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। তাই আপনার যদি গ্রাফিক ডিজাইন নিয়ে ধারণা থাকে ও আকর্ষণীয় সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট তৈরি করতে পারেন, তাহলে খুব দ্রুতই একজন সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হিসেবে আপনি সফল হতে পারবেন। প্রাথমিকভাবে আপনি ক্যানভা (Canva) দিয়ে শুরু করতে পারেন। পরে এডোবি ফটোশপ ও ইলাস্ট্রেটর শিখে নিতে পারেন।
কাস্টোমার সাপোর্ট বা কমিউনিটি ম্যানেজমেন্টে দক্ষতা: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভোক্তারা বিভিন্ন সময় ফেসবুক পেজের ইনবক্সে মেসেজ দেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের কাছে পণ্য বা সেবা বিক্রি ও বিক্রয়-পরবর্তী সেবা নিশ্চিত করতে পারাটা একজন সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজারের গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা।
বিপণন কৌশল: সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টে দক্ষ হতে হলে আপনার সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি বা বিপণন কৌশল নিয়ে ভালো ধারণা রাখতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়াতে একজন ভোক্তাকে সেলস ফানেলের ভেতর দিয়ে নিয়ে যেতে হয়। সেলস ফানেলের ওপরের দিকে থাকে ব্র্যান্ড অ্যাওয়ারনেস। এই ধাপে আপনি ক্রেতাদের আপনাদের পণ্যের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেবেন। তার পরবর্তী ধাপে থাকে ব্র্যান্ড কনসিডারেশন। এই ধাপে আপনি ক্রেতাদের পণ্যটি ক্রয়ে আগ্রহী করে তুলবেন। আর শেষ ধাপটি হচ্ছে কনভারশন। এই ধাপে এসে একজন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী চূড়ান্তভাবে আপনার পণ্যের ক্রেতায় পরিণত হবে।
সেলস ফানেল ছাড়াও কোন ধরনের চ্যানেলে কোন ধরনের অডিয়েন্স পাওয়া যায়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। যেমন তরুণ প্রজন্মের অধিকাংশ ইনস্টাগ্রাম, টিকটক ব্যবহার করে। আবার ফেসবুকে আপনি সব শ্রেণি ও বয়সের লোকেদের পাবেন। ইউটিউবে ইন্টারেস্টভিত্তিক অডিয়েন্সের উপস্থিতি আবার বেশি। তাই আপনার পণ্যের প্রকরণ বুঝে প্ল্যাটফর্ম নির্বাচন করতে হবে। এ ছাড়া কোন সময় আপনি আপনার কনটেন্ট আপলোড করবেন, কোন সময় মানুষ বেশি সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করছে—এসব সম্পর্কেও সম্যক ধারণা রাখতে হবে।
বিশ্লেষণ: সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টে দক্ষ হতে হলে আপনাকে অবশ্যই বিভিন্ন ধরনের বিশ্লেষণী বা অ্যানালিটিক্যাল টুলস ব্যবহার করতে জানতে হবে। আপনি যদি একজন সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হন, তাহলে অবশ্যই আপনাকে বিভিন্ন রিপোর্ট তৈরি করতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়াতে কী ধরনের পোস্ট আপনি শেয়ার করছেন, সেগুলো কতজন মানুষের কাছে পৌঁছাল, কতজন পোস্টটির সঙ্গে যুক্ত হলো, পোস্টটির ফলে কতজন মানুষ আপনার ওয়েবসাইটে এসেছে, কোন পণ্যটি অর্ডার করেছে, কখন ক্রেতারা বেশি সক্রিয় থাকে—এই বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করে প্ল্যাটফর্মগুলোয় আপনার কার্যক্রম সাজাতে হবে। এ জন্য সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোর নিজস্ব অ্যানালিটিকস আছে। যেগুলোর বিভিন্ন মেট্রিক্স নিয়ে আপনার অবশ্যই ধারণা থাকতে হবে।
ব্যয় নির্ধারণ: সোশ্যাল মিডিয়াতে ব্যবসার পেইড মার্কেটিং করতে হয়। অর্থাৎ আপনার ব্যবসা বা পণ্যকে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্ল্যাটফর্মগুলোকে নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা দিতে হবে। অবশ্যই এই বিনিময় হবে ডলারে। আর বিভিন্ন ক্রিয়েটিভ তৈরি, টুলস কেনাসহ নানা খরচ তো আছেই। সে ক্ষেত্রে বিজ্ঞাপন প্রচারের মাধ্যমে যেন আপনার বিনিয়োগ উঠে আসে, সে হিসাব করা এবং এর বাজেট নির্ধারণ করা একটি গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা।
কোন কোন প্ল্যাটফর্মে কাজ করা শিখবেন
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট শিখতে হলে প্রথমে আপনাকে কয়েকটি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মকে চিহ্নিত করতে হবে, যেগুলোর আপনি কাজ করবেন। প্রধানত ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, লিংকডিন, টুইটার, পিন্টারেস্ট, টিকটক, কোরা—এই সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলো সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখাটা বাঞ্ছনীয়। কারণ, এই প্ল্যাটফর্মগুলোতেই অধিকাংশ ব্যবহারকারীরা থাকে। ভিডিও নিয়ে কাজ করলে অবশ্যই ইউটিউব সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখতে হবে। এই প্ল্যাটফর্মগুলো কিন্তু আবার একটি থেকে অন্যটি আলাদা। ফলে এগুলোয় কাজের জন্য চাই আলাদা আলাদা প্রস্তুতি। একেক প্ল্যাটফর্মে একেক বয়স, শ্রেণি ও পেশার লোকেরা থাকে। আবার ভিন্ন ভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের কনটেন্টের ভিন্নতাও পাওয়া যায়। যেমন ইনস্টাগ্রাম বর্তমানে ছবিনির্ভর, আবার ইউটিউব পুরোপুরি ভিডিওনির্ভর। আবার টিকটক ভিডিওনির্ভর হলেও সেখানকার ভিডিওগুলোর দৈর্ঘ্য কম। কম দৈর্ঘ্যের ভিডিওর ফিচার নিয়ে অবশ্য ইউটিউব, ফেসবুকের মতো প্ল্যাটফর্মগুলোও হাজির হয়েছে। তাই বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এবং এসবের নতুন নতুন সব ফিচার সম্পর্কে অবশ্যই ধারণা থাকা বাঞ্ছনীয়।
বর্তমান সময়কে বলা হয় চতুর্থ শিল্প-বিপ্লবের যুগ। এই সময় গতানুগতিক চাকরির পেছনে না ছুটে দক্ষতা অর্জন করলে খুব সহজেই সম্মানজনকভাবে আয় করতে পারবেন। আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহার উত্তরোত্তর বাড়ছে; সামনে আরও বাড়বে। ফেসবুক নিজেদের মূল কোম্পানির নাম এরই মধ্যে ‘মেটা’ রেখেছে। তারা মেটাভার্সের কথা বলছে। অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোও বসে নেই। মেটাভার্সের যে বাস্তবতা আসছে সামনে, তাতে ব্যবসা বা যে কোনো ধরনের উদ্যোগকে এগিয়ে নিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্ল্যাটফর্মগুলোকে কাজে লাগানোর কোনো বিকল্প নেই। তাই এই খাতে দক্ষ জনবলের চাহিদা দিন দিন বাড়বে। ফলে নতুন এই দুনিয়ায় নিজেকে একজন দক্ষ কর্মী হিসেবে গড়ে তুলতে এখন থেকেই লেগে পড়ুন।
প্রযুক্তি সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

ফেসবুক ব্যবহার করতে গিয়ে বাবা-মায়ের কাছে বকা শোনেনি এমন লোক খুঁজে পাওয়া কঠিন হবে। বলা হয়, সোশ্যাল মিডিয়া বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্ল্যাটফর্মগুলোতে সময়ের অপচয় হয়। কিন্তু এটাই আবার আয়ের মাধ্যম হয়ে উঠছে। বিভিন্ন নামীদামি ব্র্যান্ড থেকে শুরু করে ছোটখাটো ব্যবসা—সবারই প্রচারের মাধ্যম হয়ে উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়া। তবে এর জন্য শেখা চাই সঠিক ব্যবস্থাপনা। ব্যবসা বা নিজের উদ্যোগের নামে একটি পেজ করলেই চলে না। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে নিজের ব্যবসাকে লাভবান করতে হলে সঠিক ব্যবস্থাপনা শেখা ভীষণ জরুরি।
সাধারণত বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান অনলাইনে নিজেদের প্রচার চালাতে একটি পেজ খুলেই কাজ সারে। এর চেয়ে যারা একটু অগ্রসর, তারা দেখা যায় পেজের প্রচারের জন্য কিছু টাকা ব্যয় করে। এটুকু করেই অনেকে ভাবেন, অনেকটাই করা হলো। এমন যারা ভাবেন, তারা বলতে হয় বোকার স্বর্গে বাস করছেন। কেন? এই প্রশ্নের উত্তরেই সামনে হাজির হয় সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংয়ের প্রসঙ্গটি।
সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের ব্যবসাকে প্রতিষ্ঠিত করতে অবশ্যই আপনাকে টার্গেট অডিয়েন্স, কনটেন্ট স্ট্র্যাটেজি, সেলস ফানেল, কাস্টমার জার্নি, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের নিজস্ব এলগরিদম ইত্যাদি সম্পর্কে জ্ঞান রাখতে হবে। এ জন্যই বড় বড় ব্র্যান্ড থেকে শুরু করে ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ী—সবাই সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টে পারদর্শী লোক খোঁজে। বলা যায়, সময়ের সঙ্গে এই পেশায় দক্ষ লোকের চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে।
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টের কাজ
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টের মূল কাজ হলো একটি ব্যবসাকে অনলাইনে প্রতিষ্ঠা করা। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিনিয়ত লোকজন বিভিন্ন বিজ্ঞাপন দেখে সেগুলো পর্যালোচনা করে এবং পণ্য কেনে। এখানকার মার্কেটিংকে বলা যায় ‘রিয়েল টাইম মার্কেটিং’। তাই একজন সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটারের মূল কাজ হলো—
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজারের আয়
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট যথাযথভাবে শিখতে পারলে দেশের পাশাপাশি বিদেশি কোম্পানিগুলোতেও কাজের সুবিধা পেতে পারেন। সোশ্যাল মিডিয়া বিপণনকর্মী হিসেবে আপনি যেভাবে আয় করতে পারেন, তা হচ্ছে—
ফ্রিল্যান্সিং: ফ্রিল্যান্সিং বর্তমানে আমাদের দেশে ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আপনি ফাইভার, আপওয়ার্ক, ফ্রিল্যান্সের ডটকম, পিপল পার আওয়ারসহ বিভিন্ন সাইটে নিজের প্রোফাইল খুলে পছন্দের কাজে বিড (কাজের বিপরীতে নিজের মজুরি জানিয়ে কার্যাদেশ পাওয়ার আবেদন) করতে পারবেন বা যোগাযোগ করতে পারবেন বায়ার বা ক্রেতার সঙ্গে। একজন মোটামুটি দক্ষতা সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটার প্রতি মাসে ৩০০ ডলার–১০০০ ডলার পর্যন্ত আয় করতে পারেন।
দেশীয় প্রতিষ্ঠান: বর্তমানে বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ডিজিটাল মার্কেটার নিয়োগ দিচ্ছে। কথায় ডিজিটাল মার্কেটিং হলেও মূল কাজ থাকে সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টের। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একজন শিক্ষানবিশ সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজারের বেতন ১০,০০০ হাজার টাকা থেকে শুরু হয়। নির্বাহী পদে প্রতিষ্ঠান ও চাকরির কাজের পরিধি ভেদে ২০ থেকে ৪০ হাজার টাকা বেতন হয়। বিডিজবসে, ফেসবুকের বিভিন্ন নিয়োগভিত্তিক পেজে নিয়মিত এ ধরনের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখতে পাওয়া যায়।
বিদেশি প্রতিষ্ঠান: বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোতে চাকরির জন্য আবেদন করার আগে আপনার একটি পোর্টফোলিও থাকা প্রয়োজন। কারণ, বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো অভিজ্ঞ লোক নিতে পছন্দ করে। আপনি দেশে বসেই লিংকডইনের মাধ্যমে চাকরির আবেদন করতে পারেন। বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো ঘণ্টা ভিত্তিতে বা মাসিক চুক্তি—দুভাবেই নিয়োগ করে। ভালো বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোতে কাজ ও দক্ষতার ভিত্তিতে মাসে ৮০০-১৫০০ ডলার আয়ের সুযোগ রয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হতে হলে
একজন দক্ষ সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হতে হলে অবশ্যই আপনাকে কিছু বিষয়ে দক্ষ হতে হবে। এ ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলোর দিকে খেয়াল রাখতে হবে—
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট কোর্স: বর্তমানে বিভিন্ন আইটি প্রতিষ্ঠান ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে কোর্স অফার করে। এ ছাড়া সরকারি উদ্যোগেও বিভিন্ন ধরনের কোর্স করানো হচ্ছে। এগুলোর যেকোনো একটিতে ভর্তি হয়ে যেতে পারেন। তবে সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টের জন্য কোর্স করতেই হবে, তা কিন্তু নয়। আপনি চাইলে ইউটিউব, ইউডেমি, কোর্সেরাসহ বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মেও কোর্সটি করতে পারবেন।
পোর্টফোলিও তৈরি করুন ও কনটেন্ট শেয়ার করুন: ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের দুনিয়ায় নিজের অবস্থান তৈরির জন্য একটি ভালো পোর্টফোলিও খুবই দরকার। প্রথম দিকে কাজ পাওয়া সত্যিই কষ্টসাধ্য। শুরুটা ঠিকঠাক করতে হলে যা করতে পারেন—
*কাজ শেখার প্রথমদিকে বিভিন্ন ছোটখাটো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কয়েক মাসের জন্য তাদের বিনা মূল্যে সেবা দিতে পারেন। কারণ, প্রথম দিকে আপনার পোর্টফোলিও তৈরি করাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়টাকে আপনার বিনিয়োগ হিসেবে ধরতে পারেন। এমনও হতে পারে, আপনি যে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ করছেন, তারাই আপনাকে পরে নিয়োগ দিতে পারে।
*বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের জন্য ইন্টার্ন নিয়োগ করে। ইন্টার্নশিপের জন্য সাধারণত ৮০০০-১০,০০০ টাকা দেওয়া হয়। এই ধরনের ইন্টার্নশিপগুলোতে কাজের চাপ থাকে। ফলে আপনার বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতাটা হয়ে যাবে।
*বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে নিজের অ্যাকাউন্ট/পেজ/চ্যানেল খুলে কনটেন্ট শেয়ার করতে পারেন এবং অরগানিকভাবে ফলোয়ার বাড়াতে পারেন। ফলে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের ব্যাপারে আপনার ব্যবহারিক অভিজ্ঞতা হবে। তা ছাড়া আপনার কনটেন্ট মার্কেটিং নিয়ে ভালো ধারণা হয়ে যাবে।
যে দক্ষতাগুলো জরুরি
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংয়ে ক্যারিয়ার গড়তে হলে কিছু বিষয়ে দক্ষ হয়ে উঠতে হবে। এর মধ্যে শুরুতে থাকে লেখার বিষয়টি। এর সঙ্গে ডিজাইন সম্পর্কিত জ্ঞান থাকলে প্রাথমিক কাজটা ভালোভাবে চালিয়ে নেওয়া যায়। মোটাদাগে বেশ কিছু বিষয়ে দক্ষ হয়ে উঠলে তবেই এ পেশায় ভালো করা যায়। এর মধ্যে রয়েছে—
কপি রাইটিং: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পণ্য ও সেবা বিপণনে দক্ষ ব্যবস্থাপক হয়ে উঠতে হলে লেখালেখির অভ্যাস থাকাটা ভীষণ জরুরি। সোশ্যাল মিডিয়ায় চোখের সামনে ঘোরা এবং আকর্ষণীয় বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের ছবি বা ভিডিওর সঙ্গে দেখবেন কিছু লেখা রয়েছে। এই ক্যাপশনগুলোই কিন্তু পাঠক ও দর্শককে আকৃষ্ট করে। এর ওপরই নির্ভর করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিটি ওই বিজ্ঞাপনের ভেতরে ঢুকবেন কিনা। মানুষকে আপনার বিজ্ঞাপনের সঙ্গে যুক্ত করতে হলে চাই আকর্ষণীয় ক্যাপশন। ক্যাপশন ভালো ও আকর্ষণীয় হলেই মানুষ পণ্যটি কিনতে বেশি আগ্রহী হবে। তাই একজন দক্ষ সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজারকে বিজ্ঞাপনী ভাষা রপ্ত করতে হবে। এই কপি রাইটিং ভালোমতো আয়ত্ত করতে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে বিভিন্ন নামী ব্র্যান্ডের পেজ ও গ্রুপগুলো ফলো করতে পারেন। তা ছাড়া নিজের মতো করে একটা কপি লিখে আশপাশের মানুষকে দেখাতে পারেন এবং তাঁদের মতামত নিতে পারেন। কারণ, আপনার চারপাশে থাকা মানুষদের একজনই আপনার পণ্যটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে কিনবেন।
গ্রাফিক ডিজাইন: সোশ্যাল মিডিয়াতে ছবি ও ভিডিও কনটেন্ট হিসেবে খুব গুরুত্বপূর্ণ রাখে। বলা হয়, মানুষের মস্তিষ্কে অন্য কিছুর চেয়ে ছবি ৫০০০ গুণ দ্রুত প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। তাই আপনার যদি গ্রাফিক ডিজাইন নিয়ে ধারণা থাকে ও আকর্ষণীয় সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট তৈরি করতে পারেন, তাহলে খুব দ্রুতই একজন সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হিসেবে আপনি সফল হতে পারবেন। প্রাথমিকভাবে আপনি ক্যানভা (Canva) দিয়ে শুরু করতে পারেন। পরে এডোবি ফটোশপ ও ইলাস্ট্রেটর শিখে নিতে পারেন।
কাস্টোমার সাপোর্ট বা কমিউনিটি ম্যানেজমেন্টে দক্ষতা: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভোক্তারা বিভিন্ন সময় ফেসবুক পেজের ইনবক্সে মেসেজ দেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের কাছে পণ্য বা সেবা বিক্রি ও বিক্রয়-পরবর্তী সেবা নিশ্চিত করতে পারাটা একজন সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজারের গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা।
বিপণন কৌশল: সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টে দক্ষ হতে হলে আপনার সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি বা বিপণন কৌশল নিয়ে ভালো ধারণা রাখতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়াতে একজন ভোক্তাকে সেলস ফানেলের ভেতর দিয়ে নিয়ে যেতে হয়। সেলস ফানেলের ওপরের দিকে থাকে ব্র্যান্ড অ্যাওয়ারনেস। এই ধাপে আপনি ক্রেতাদের আপনাদের পণ্যের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেবেন। তার পরবর্তী ধাপে থাকে ব্র্যান্ড কনসিডারেশন। এই ধাপে আপনি ক্রেতাদের পণ্যটি ক্রয়ে আগ্রহী করে তুলবেন। আর শেষ ধাপটি হচ্ছে কনভারশন। এই ধাপে এসে একজন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী চূড়ান্তভাবে আপনার পণ্যের ক্রেতায় পরিণত হবে।
সেলস ফানেল ছাড়াও কোন ধরনের চ্যানেলে কোন ধরনের অডিয়েন্স পাওয়া যায়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। যেমন তরুণ প্রজন্মের অধিকাংশ ইনস্টাগ্রাম, টিকটক ব্যবহার করে। আবার ফেসবুকে আপনি সব শ্রেণি ও বয়সের লোকেদের পাবেন। ইউটিউবে ইন্টারেস্টভিত্তিক অডিয়েন্সের উপস্থিতি আবার বেশি। তাই আপনার পণ্যের প্রকরণ বুঝে প্ল্যাটফর্ম নির্বাচন করতে হবে। এ ছাড়া কোন সময় আপনি আপনার কনটেন্ট আপলোড করবেন, কোন সময় মানুষ বেশি সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করছে—এসব সম্পর্কেও সম্যক ধারণা রাখতে হবে।
বিশ্লেষণ: সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টে দক্ষ হতে হলে আপনাকে অবশ্যই বিভিন্ন ধরনের বিশ্লেষণী বা অ্যানালিটিক্যাল টুলস ব্যবহার করতে জানতে হবে। আপনি যদি একজন সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হন, তাহলে অবশ্যই আপনাকে বিভিন্ন রিপোর্ট তৈরি করতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়াতে কী ধরনের পোস্ট আপনি শেয়ার করছেন, সেগুলো কতজন মানুষের কাছে পৌঁছাল, কতজন পোস্টটির সঙ্গে যুক্ত হলো, পোস্টটির ফলে কতজন মানুষ আপনার ওয়েবসাইটে এসেছে, কোন পণ্যটি অর্ডার করেছে, কখন ক্রেতারা বেশি সক্রিয় থাকে—এই বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করে প্ল্যাটফর্মগুলোয় আপনার কার্যক্রম সাজাতে হবে। এ জন্য সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোর নিজস্ব অ্যানালিটিকস আছে। যেগুলোর বিভিন্ন মেট্রিক্স নিয়ে আপনার অবশ্যই ধারণা থাকতে হবে।
ব্যয় নির্ধারণ: সোশ্যাল মিডিয়াতে ব্যবসার পেইড মার্কেটিং করতে হয়। অর্থাৎ আপনার ব্যবসা বা পণ্যকে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্ল্যাটফর্মগুলোকে নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা দিতে হবে। অবশ্যই এই বিনিময় হবে ডলারে। আর বিভিন্ন ক্রিয়েটিভ তৈরি, টুলস কেনাসহ নানা খরচ তো আছেই। সে ক্ষেত্রে বিজ্ঞাপন প্রচারের মাধ্যমে যেন আপনার বিনিয়োগ উঠে আসে, সে হিসাব করা এবং এর বাজেট নির্ধারণ করা একটি গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা।
কোন কোন প্ল্যাটফর্মে কাজ করা শিখবেন
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট শিখতে হলে প্রথমে আপনাকে কয়েকটি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মকে চিহ্নিত করতে হবে, যেগুলোর আপনি কাজ করবেন। প্রধানত ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, লিংকডিন, টুইটার, পিন্টারেস্ট, টিকটক, কোরা—এই সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলো সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখাটা বাঞ্ছনীয়। কারণ, এই প্ল্যাটফর্মগুলোতেই অধিকাংশ ব্যবহারকারীরা থাকে। ভিডিও নিয়ে কাজ করলে অবশ্যই ইউটিউব সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখতে হবে। এই প্ল্যাটফর্মগুলো কিন্তু আবার একটি থেকে অন্যটি আলাদা। ফলে এগুলোয় কাজের জন্য চাই আলাদা আলাদা প্রস্তুতি। একেক প্ল্যাটফর্মে একেক বয়স, শ্রেণি ও পেশার লোকেরা থাকে। আবার ভিন্ন ভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের কনটেন্টের ভিন্নতাও পাওয়া যায়। যেমন ইনস্টাগ্রাম বর্তমানে ছবিনির্ভর, আবার ইউটিউব পুরোপুরি ভিডিওনির্ভর। আবার টিকটক ভিডিওনির্ভর হলেও সেখানকার ভিডিওগুলোর দৈর্ঘ্য কম। কম দৈর্ঘ্যের ভিডিওর ফিচার নিয়ে অবশ্য ইউটিউব, ফেসবুকের মতো প্ল্যাটফর্মগুলোও হাজির হয়েছে। তাই বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এবং এসবের নতুন নতুন সব ফিচার সম্পর্কে অবশ্যই ধারণা থাকা বাঞ্ছনীয়।
বর্তমান সময়কে বলা হয় চতুর্থ শিল্প-বিপ্লবের যুগ। এই সময় গতানুগতিক চাকরির পেছনে না ছুটে দক্ষতা অর্জন করলে খুব সহজেই সম্মানজনকভাবে আয় করতে পারবেন। আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহার উত্তরোত্তর বাড়ছে; সামনে আরও বাড়বে। ফেসবুক নিজেদের মূল কোম্পানির নাম এরই মধ্যে ‘মেটা’ রেখেছে। তারা মেটাভার্সের কথা বলছে। অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোও বসে নেই। মেটাভার্সের যে বাস্তবতা আসছে সামনে, তাতে ব্যবসা বা যে কোনো ধরনের উদ্যোগকে এগিয়ে নিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্ল্যাটফর্মগুলোকে কাজে লাগানোর কোনো বিকল্প নেই। তাই এই খাতে দক্ষ জনবলের চাহিদা দিন দিন বাড়বে। ফলে নতুন এই দুনিয়ায় নিজেকে একজন দক্ষ কর্মী হিসেবে গড়ে তুলতে এখন থেকেই লেগে পড়ুন।
প্রযুক্তি সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

স্মার্টফোন থেকে শুরু করে বৈদ্যুতিক গাড়ি—সবকিছুতেই এখন লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারির ব্যবহার। কিন্তু এই ব্যাটারি থেকে মাঝেমধ্যে ভয়াবহ আগুনের খবর পাওয়া যায়, যা অনেক সময় প্রাণঘাতী হয়ে দাঁড়ায়। সম্প্রতি এক গবেষণায় জানা গেছে, ব্যাটারির অভ্যন্তরীণ নকশায় সামান্য পরিবর্তনের মাধ্যমে এই ঝুঁকি কমিয়ে আনা সম্ভব।
৫ ঘণ্টা আগে
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে সন্ত্রাস ও সহিংসতায় উসকানিমূলক কনটেন্টের (আধেয়) বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এসব কনটেন্ট বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও সংস্থাগুলো।
২ দিন আগে
চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ব্যাপক সহিংসতা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানে ১ হাজার ৪০০ জনের বেশি শিক্ষার্থী নিহত ও হাজারো মানুষ আহত হওয়ার পর দেশ এখন একটি নাজুক রাজনৈতিক পালাবদলের মধ্যে আছে। অন্তর্বর্তী সরকার শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং একটি গ্রহণযোগ্য জাতীয়...
২ দিন আগে
দেড় দশকের বেশি সময় ধরে কখনো ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’, আবার কখনো ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার স্লোগান শুনে আসছে দেশের মানুষ। এ নিয়ে ‘অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই)’ নামে প্রকল্পও আছে সরকারের। বেসরকারি পর্যায়েও রয়েছে নানা উদ্যোগ। তারপরও দেশের ৪৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ পরিবার এখনো ইন্টারনেট সেবার আওতার বাইরে রয়ে গেছে।
৫ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

স্মার্টফোন থেকে শুরু করে বৈদ্যুতিক গাড়ি—সবকিছুতেই এখন লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারির ব্যবহার। কিন্তু এই ব্যাটারি থেকে মাঝেমধ্যে ভয়াবহ আগুনের খবর পাওয়া যায়, যা অনেক সময় প্রাণঘাতী হয়ে দাঁড়ায়। তবে সম্প্রতি এক গবেষণায় জানা গেছে, ব্যাটারির অভ্যন্তরীণ নকশায় সামান্য পরিবর্তনের মাধ্যমে এই ঝুঁকি কমিয়ে আনা সম্ভব।
লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারিতে থাকে দাহ্য ‘ইলেকট্রোলাইট’; এটি মূলত জৈব দ্রাবকে দ্রবীভূত লিথিয়াম লবণের একটি তরল দ্রবণ। ব্যাটারি অতিরিক্ত চার্জ হওয়া, ফুটো হয়ে যাওয়া বা অতিরিক্ত গরম হলে এই তরল অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে। তখন এক বিপজ্জনক রাসায়নিক বিক্রিয়া শুরু হয়, যাকে বলা হয় ‘থার্মাল রানঅ্যাওয়ে’। এর ফলে ব্যাটারি খুব দ্রুত উত্তপ্ত হয়ে আগুন ধরে যায়।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে বিমানে ব্যাটারিজনিত ধোঁয়া বা আগুনের ৮৯টি ঘটনা রেকর্ড করা হয়। দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানে গত জানুয়ারিতে একটি এয়ারবাসে পাওয়ার ব্যাংক থেকে লাগা আগুনে পুরো বিমানটিই ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছিল।
২০২৪ সালের এক জরিপে দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যের অর্ধেক ব্যবসায়ী লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি-সংশ্লিষ্ট অগ্নিকাণ্ড বা বিস্ফোরণের অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন।
হংকংয়ের চায়নিজ ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক ব্যাটারির নকশায় এমন পরিবর্তন এনেছেন। সংশ্লিষ্ট গবেষকেরা বলছেন, বর্তমান উৎপাদন পদ্ধতি পরিবর্তন না করেই এটি প্রয়োগ করা সম্ভব।
গবেষণার প্রধান লেখক এবং ভার্জিনিয়া টেকের পোস্টডক্টরাল ফেলো ইউ সান বলেন, ‘সাধারণত ব্যাটারির পারফরম্যান্স বাড়াতে গেলে নিরাপত্তা কিছুটা বিঘ্নিত হয়। আমরা এমন একটি তাপ-সংবেদনশীল উপাদান তৈরি করেছি, যা সাধারণ তাপমাত্রায় ভালো পারফরম্যান্স দেবে, কিন্তু তাপমাত্রা বাড়লে ব্যাটারিকে স্থিতিশীল রাখবে।’
কীভাবে কাজ করে এটি
গবেষকদের উদ্ভাবিত নতুন ইলেকট্রোলাইটে দুটি দ্রাবক ব্যবহার করা হয়েছে। স্বাভাবিক তাপমাত্রায়—প্রথম দ্রাবকটি ব্যাটারির রাসায়নিক কাঠামোকে দৃঢ় রাখে এবং কার্যক্ষমতা বজায় রাখে। উচ্চ তাপমাত্রায়—ব্যাটারি গরম হতে শুরু করলে দ্বিতীয় দ্রাবকটি সক্রিয় হয়ে ওঠে। এটি রাসায়নিক কাঠামোকে কিছুটা শিথিল করে দেয় এবং আগুনের সূত্রপাত ঘটাতে পারে এমন বিক্রিয়াগুলো ধীর করে দেয়।
গবেষণাগারে নতুন নকশার ব্যাটারিকে যখন পেরেক দিয়ে ফুটো করা হয়, তখন এর তাপমাত্রা বেড়েছিল মাত্র ৩.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অন্যদিকে, প্রথাগত ব্যাটারিতে একই পরীক্ষায় তাপমাত্রা মুহূর্তের মধ্যে ৫৫৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বেড়ে যায়। গবেষকেরা জানিয়েছেন, এই পদ্ধতিতে ব্যাটারির স্থায়িত্বে কোনো প্রভাব পড়ে না। ১ হাজার বার চার্জ করার পরও এটি ৮০ শতাংশের বেশি ক্ষমতা বজায় রাখতে সক্ষম।
গবেষক দলের অন্যতম সদস্য অধ্যাপক ই-চুন লু জানান, এই পদ্ধতি বাণিজ্যিক ব্যাটারি সিস্টেমে সহজে যুক্ত করা সম্ভব। কারণ, এতে শুধু বিদ্যমান ইলেকট্রোলাইট তরলটি বদলে দিলেই হয়, কোনো নতুন যন্ত্রপাতির প্রয়োজন নেই। তিনি আরও বলেন, ‘বড় পরিসরে উৎপাদন করলে এর খরচ বর্তমান ব্যাটারির মতোই হবে।’
অধ্যাপক ই-চুন লু জানান, আগামী ৩ থেকে ৫ বছরের মধ্যে এমন প্রযুক্তির ব্যাটারি বাজারে আসবে।

স্মার্টফোন থেকে শুরু করে বৈদ্যুতিক গাড়ি—সবকিছুতেই এখন লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারির ব্যবহার। কিন্তু এই ব্যাটারি থেকে মাঝেমধ্যে ভয়াবহ আগুনের খবর পাওয়া যায়, যা অনেক সময় প্রাণঘাতী হয়ে দাঁড়ায়। তবে সম্প্রতি এক গবেষণায় জানা গেছে, ব্যাটারির অভ্যন্তরীণ নকশায় সামান্য পরিবর্তনের মাধ্যমে এই ঝুঁকি কমিয়ে আনা সম্ভব।
লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারিতে থাকে দাহ্য ‘ইলেকট্রোলাইট’; এটি মূলত জৈব দ্রাবকে দ্রবীভূত লিথিয়াম লবণের একটি তরল দ্রবণ। ব্যাটারি অতিরিক্ত চার্জ হওয়া, ফুটো হয়ে যাওয়া বা অতিরিক্ত গরম হলে এই তরল অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে। তখন এক বিপজ্জনক রাসায়নিক বিক্রিয়া শুরু হয়, যাকে বলা হয় ‘থার্মাল রানঅ্যাওয়ে’। এর ফলে ব্যাটারি খুব দ্রুত উত্তপ্ত হয়ে আগুন ধরে যায়।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে বিমানে ব্যাটারিজনিত ধোঁয়া বা আগুনের ৮৯টি ঘটনা রেকর্ড করা হয়। দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানে গত জানুয়ারিতে একটি এয়ারবাসে পাওয়ার ব্যাংক থেকে লাগা আগুনে পুরো বিমানটিই ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছিল।
২০২৪ সালের এক জরিপে দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যের অর্ধেক ব্যবসায়ী লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি-সংশ্লিষ্ট অগ্নিকাণ্ড বা বিস্ফোরণের অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন।
হংকংয়ের চায়নিজ ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক ব্যাটারির নকশায় এমন পরিবর্তন এনেছেন। সংশ্লিষ্ট গবেষকেরা বলছেন, বর্তমান উৎপাদন পদ্ধতি পরিবর্তন না করেই এটি প্রয়োগ করা সম্ভব।
গবেষণার প্রধান লেখক এবং ভার্জিনিয়া টেকের পোস্টডক্টরাল ফেলো ইউ সান বলেন, ‘সাধারণত ব্যাটারির পারফরম্যান্স বাড়াতে গেলে নিরাপত্তা কিছুটা বিঘ্নিত হয়। আমরা এমন একটি তাপ-সংবেদনশীল উপাদান তৈরি করেছি, যা সাধারণ তাপমাত্রায় ভালো পারফরম্যান্স দেবে, কিন্তু তাপমাত্রা বাড়লে ব্যাটারিকে স্থিতিশীল রাখবে।’
কীভাবে কাজ করে এটি
গবেষকদের উদ্ভাবিত নতুন ইলেকট্রোলাইটে দুটি দ্রাবক ব্যবহার করা হয়েছে। স্বাভাবিক তাপমাত্রায়—প্রথম দ্রাবকটি ব্যাটারির রাসায়নিক কাঠামোকে দৃঢ় রাখে এবং কার্যক্ষমতা বজায় রাখে। উচ্চ তাপমাত্রায়—ব্যাটারি গরম হতে শুরু করলে দ্বিতীয় দ্রাবকটি সক্রিয় হয়ে ওঠে। এটি রাসায়নিক কাঠামোকে কিছুটা শিথিল করে দেয় এবং আগুনের সূত্রপাত ঘটাতে পারে এমন বিক্রিয়াগুলো ধীর করে দেয়।
গবেষণাগারে নতুন নকশার ব্যাটারিকে যখন পেরেক দিয়ে ফুটো করা হয়, তখন এর তাপমাত্রা বেড়েছিল মাত্র ৩.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অন্যদিকে, প্রথাগত ব্যাটারিতে একই পরীক্ষায় তাপমাত্রা মুহূর্তের মধ্যে ৫৫৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বেড়ে যায়। গবেষকেরা জানিয়েছেন, এই পদ্ধতিতে ব্যাটারির স্থায়িত্বে কোনো প্রভাব পড়ে না। ১ হাজার বার চার্জ করার পরও এটি ৮০ শতাংশের বেশি ক্ষমতা বজায় রাখতে সক্ষম।
গবেষক দলের অন্যতম সদস্য অধ্যাপক ই-চুন লু জানান, এই পদ্ধতি বাণিজ্যিক ব্যাটারি সিস্টেমে সহজে যুক্ত করা সম্ভব। কারণ, এতে শুধু বিদ্যমান ইলেকট্রোলাইট তরলটি বদলে দিলেই হয়, কোনো নতুন যন্ত্রপাতির প্রয়োজন নেই। তিনি আরও বলেন, ‘বড় পরিসরে উৎপাদন করলে এর খরচ বর্তমান ব্যাটারির মতোই হবে।’
অধ্যাপক ই-চুন লু জানান, আগামী ৩ থেকে ৫ বছরের মধ্যে এমন প্রযুক্তির ব্যাটারি বাজারে আসবে।

সোশ্যাল মিডিয়াতে নিজের ব্যবসাকে প্রতিষ্ঠিত করতে অবশ্যই আপনাকে টার্গেট অডিয়েন্স, কনটেন্ট স্ট্র্যাটেজি, সেলস ফানেল, কাস্টমার জার্নি, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের নিজস্ব এলগরিদম ইত্যাদি সম্পর্কে জ্ঞান রাখতে হবে।
০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে সন্ত্রাস ও সহিংসতায় উসকানিমূলক কনটেন্টের (আধেয়) বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এসব কনটেন্ট বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও সংস্থাগুলো।
২ দিন আগে
চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ব্যাপক সহিংসতা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানে ১ হাজার ৪০০ জনের বেশি শিক্ষার্থী নিহত ও হাজারো মানুষ আহত হওয়ার পর দেশ এখন একটি নাজুক রাজনৈতিক পালাবদলের মধ্যে আছে। অন্তর্বর্তী সরকার শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং একটি গ্রহণযোগ্য জাতীয়...
২ দিন আগে
দেড় দশকের বেশি সময় ধরে কখনো ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’, আবার কখনো ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার স্লোগান শুনে আসছে দেশের মানুষ। এ নিয়ে ‘অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই)’ নামে প্রকল্পও আছে সরকারের। বেসরকারি পর্যায়েও রয়েছে নানা উদ্যোগ। তারপরও দেশের ৪৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ পরিবার এখনো ইন্টারনেট সেবার আওতার বাইরে রয়ে গেছে।
৫ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে সন্ত্রাস ও সহিংসতায় উসকানিমূলক কনটেন্টের (আধেয়) বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এসব কনটেন্ট বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও সংস্থাগুলো। এরই মধ্যে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপের মূল সংস্থা মেটাকে চিঠি দিয়েছে জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সি ও বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। পাশাপাশি উসকানিমূলক পোস্টের বিষয়ে অভিযোগ নিতে হোয়াটসঅ্যাপ ও ইমেইল আইডি চালু করা হয়েছে।
এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব জানান, হেট স্পিচ—যা সরাসরি সহিংসতা ঘটায় কিংবা সহিংসতার ডাক দেয়; সেটা জাতীয় সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫ মতে দণ্ডনীয় অপরাধ। সন্ত্রাস ও সহিংসতার আহ্বানসংবলিত সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের বিষয়ে মেটাকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের পোস্ট সম্পর্কে সরাসরি রিপোর্ট করতে হবে। এ জন্য হোয়াটসঅ্যাপ ও ইমেইল চালু করা হয়েছে।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর তিনি মারা যান। ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর বৃহস্পতিবার রাতে দেশের শীর্ষস্থানীয় দুটি সংবাদমাধ্যম ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। অন্তর্বর্তী সরকার মনে করছে, নির্বাচনের আগে ওসমান হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উসকানি দিয়ে মানুষকে সহিংসতায় উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। তারই ফলে এসব হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
এসব ঘটনা তুলে ধরে শুক্রবার মেটার ভাইস প্রেসিডেন্ট (পাবলিক পলিসি) সাইমন মিলনার, আঞ্চলিক কার্যালয়ের পরিচালক (পাবলিক পলিসি) সারিম আজিজ ও মানবাধিকার নীতি প্রধান ফ্রেডরিক রাউস্কিকে চিঠি দেয় জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সি ও বিটিআরসি। ওই চিঠিতে সহিংসতা উসকে দিয়ে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা এবং সংবাদমাধ্যমের ওপর হামলায় উসকানি দেওয়া কনটেন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মেটাকে আহ্বান জানানো হয়।
বর্তমানে দেশে জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণের কাজ চলছে জানিয়ে চিঠিতে বলা হয়, ‘দুঃখজনকভাবে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বিশেষ করে, ফেসবুক ব্যাপক সহিংসতা উসকে দেওয়া, ভীতি প্রদর্শন এবং আসন্ন নির্বাচন ব্যাহত করার আহ্বানের প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে। গণতান্ত্রিক রূপান্তরের পথে থাকা বাংলাদেশে মেটার প্ল্যাটফর্মগুলোকে সহিংসতা উসকে দিতে ব্যবহার করা হচ্ছে। এর ফলে উত্তেজনা আরও বেড়েছে এবং বাস্তবে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে রয়েছে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব উসমান হাদির মর্মান্তিক মৃত্যু এবং বিভিন্ন গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের ওপর হামলা।’
অন্তর্বর্তী সরকার মনে করে, বিগত সরকারের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এবং আরেকটি গোষ্ঠী দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে তাদের উদ্দেশ্য হাসিলের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। বিগত সরকারের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অ্যাকাউন্ট, পেজ ও চ্যানেল নিষ্ক্রিয় করতে এর আগে একাধিকবার মেটাকে অনুরোধ জানিয়েছিল বিটিআরসি। কিন্তু মেটা সে সব অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় করেনি। শুক্রবার পাঠানো চিঠিতে সে বিষয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়।
চিঠির সঙ্গে সহিংসতা ও হামলার আহ্বান জানানো কিছু ফেসবুক পোস্টের তালিকা সংযুক্ত করা হয়। একই সঙ্গে অভিযোগ করে বলা হয়, এসব কনটেন্ট সম্পর্কে যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রিপোর্ট করা হলেও, ‘কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড’ সময়মতো বা কার্যকরভাবে প্রয়োগ করা হয়নি। এসব পোস্টের অব্যাহত উপস্থিতি ও বিস্তার সহিংসতায় ভূমিকা রেখেছে, যার মধ্যে গণমাধ্যম ভবন ধ্বংস ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাও রয়েছে।
সরকার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কোনো পোস্ট বা অ্যাকাউন্ট ডাউন করতে, অর্থাৎ সরিয়ে দিতে পারে না। সরকার শুধু যৌক্তিক কারণ তুলে ধরে সহিংসতার সঙ্গে সম্পর্কিত পোস্টগুলো সংশ্লিষ্ট প্ল্যাটফর্মের কাছে তুলে ধরতে পারে। তাই সরকার সহিংসতার উসকানিমূলক পোস্টের তথ্য দিতে ইমেইল ও হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর চালু করেছে। এখন থেকে ০১৩০৮৩৩২৫৯২ হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে এবং [email protected] ই-মেইলে উসকানিমূলক পোস্টের তথ্য দেওয়া যাবে। এসব তথ্য বিটিআরসির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট প্ল্যাটফর্মে পাঠানো হবে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে একটা পক্ষ ভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছে। বিভিন্ন পোস্ট দিয়ে মানুষকে সহিংসতায় উসকানি দেওয়া হচ্ছে। দেশকে অস্থিতিশীল করার একধরনের প্রচেষ্টা আমরা দেখতে পাচ্ছি। এগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে সন্ত্রাস ও সহিংসতায় উসকানিমূলক কনটেন্টের (আধেয়) বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এসব কনটেন্ট বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও সংস্থাগুলো। এরই মধ্যে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপের মূল সংস্থা মেটাকে চিঠি দিয়েছে জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সি ও বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। পাশাপাশি উসকানিমূলক পোস্টের বিষয়ে অভিযোগ নিতে হোয়াটসঅ্যাপ ও ইমেইল আইডি চালু করা হয়েছে।
এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব জানান, হেট স্পিচ—যা সরাসরি সহিংসতা ঘটায় কিংবা সহিংসতার ডাক দেয়; সেটা জাতীয় সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫ মতে দণ্ডনীয় অপরাধ। সন্ত্রাস ও সহিংসতার আহ্বানসংবলিত সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের বিষয়ে মেটাকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের পোস্ট সম্পর্কে সরাসরি রিপোর্ট করতে হবে। এ জন্য হোয়াটসঅ্যাপ ও ইমেইল চালু করা হয়েছে।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর তিনি মারা যান। ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর বৃহস্পতিবার রাতে দেশের শীর্ষস্থানীয় দুটি সংবাদমাধ্যম ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। অন্তর্বর্তী সরকার মনে করছে, নির্বাচনের আগে ওসমান হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উসকানি দিয়ে মানুষকে সহিংসতায় উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। তারই ফলে এসব হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
এসব ঘটনা তুলে ধরে শুক্রবার মেটার ভাইস প্রেসিডেন্ট (পাবলিক পলিসি) সাইমন মিলনার, আঞ্চলিক কার্যালয়ের পরিচালক (পাবলিক পলিসি) সারিম আজিজ ও মানবাধিকার নীতি প্রধান ফ্রেডরিক রাউস্কিকে চিঠি দেয় জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সি ও বিটিআরসি। ওই চিঠিতে সহিংসতা উসকে দিয়ে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা এবং সংবাদমাধ্যমের ওপর হামলায় উসকানি দেওয়া কনটেন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মেটাকে আহ্বান জানানো হয়।
বর্তমানে দেশে জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণের কাজ চলছে জানিয়ে চিঠিতে বলা হয়, ‘দুঃখজনকভাবে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বিশেষ করে, ফেসবুক ব্যাপক সহিংসতা উসকে দেওয়া, ভীতি প্রদর্শন এবং আসন্ন নির্বাচন ব্যাহত করার আহ্বানের প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে। গণতান্ত্রিক রূপান্তরের পথে থাকা বাংলাদেশে মেটার প্ল্যাটফর্মগুলোকে সহিংসতা উসকে দিতে ব্যবহার করা হচ্ছে। এর ফলে উত্তেজনা আরও বেড়েছে এবং বাস্তবে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে রয়েছে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব উসমান হাদির মর্মান্তিক মৃত্যু এবং বিভিন্ন গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের ওপর হামলা।’
অন্তর্বর্তী সরকার মনে করে, বিগত সরকারের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এবং আরেকটি গোষ্ঠী দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে তাদের উদ্দেশ্য হাসিলের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। বিগত সরকারের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অ্যাকাউন্ট, পেজ ও চ্যানেল নিষ্ক্রিয় করতে এর আগে একাধিকবার মেটাকে অনুরোধ জানিয়েছিল বিটিআরসি। কিন্তু মেটা সে সব অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় করেনি। শুক্রবার পাঠানো চিঠিতে সে বিষয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়।
চিঠির সঙ্গে সহিংসতা ও হামলার আহ্বান জানানো কিছু ফেসবুক পোস্টের তালিকা সংযুক্ত করা হয়। একই সঙ্গে অভিযোগ করে বলা হয়, এসব কনটেন্ট সম্পর্কে যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রিপোর্ট করা হলেও, ‘কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড’ সময়মতো বা কার্যকরভাবে প্রয়োগ করা হয়নি। এসব পোস্টের অব্যাহত উপস্থিতি ও বিস্তার সহিংসতায় ভূমিকা রেখেছে, যার মধ্যে গণমাধ্যম ভবন ধ্বংস ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাও রয়েছে।
সরকার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কোনো পোস্ট বা অ্যাকাউন্ট ডাউন করতে, অর্থাৎ সরিয়ে দিতে পারে না। সরকার শুধু যৌক্তিক কারণ তুলে ধরে সহিংসতার সঙ্গে সম্পর্কিত পোস্টগুলো সংশ্লিষ্ট প্ল্যাটফর্মের কাছে তুলে ধরতে পারে। তাই সরকার সহিংসতার উসকানিমূলক পোস্টের তথ্য দিতে ইমেইল ও হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর চালু করেছে। এখন থেকে ০১৩০৮৩৩২৫৯২ হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে এবং [email protected] ই-মেইলে উসকানিমূলক পোস্টের তথ্য দেওয়া যাবে। এসব তথ্য বিটিআরসির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট প্ল্যাটফর্মে পাঠানো হবে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে একটা পক্ষ ভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছে। বিভিন্ন পোস্ট দিয়ে মানুষকে সহিংসতায় উসকানি দেওয়া হচ্ছে। দেশকে অস্থিতিশীল করার একধরনের প্রচেষ্টা আমরা দেখতে পাচ্ছি। এগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

সোশ্যাল মিডিয়াতে নিজের ব্যবসাকে প্রতিষ্ঠিত করতে অবশ্যই আপনাকে টার্গেট অডিয়েন্স, কনটেন্ট স্ট্র্যাটেজি, সেলস ফানেল, কাস্টমার জার্নি, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের নিজস্ব এলগরিদম ইত্যাদি সম্পর্কে জ্ঞান রাখতে হবে।
০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২
স্মার্টফোন থেকে শুরু করে বৈদ্যুতিক গাড়ি—সবকিছুতেই এখন লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারির ব্যবহার। কিন্তু এই ব্যাটারি থেকে মাঝেমধ্যে ভয়াবহ আগুনের খবর পাওয়া যায়, যা অনেক সময় প্রাণঘাতী হয়ে দাঁড়ায়। সম্প্রতি এক গবেষণায় জানা গেছে, ব্যাটারির অভ্যন্তরীণ নকশায় সামান্য পরিবর্তনের মাধ্যমে এই ঝুঁকি কমিয়ে আনা সম্ভব।
৫ ঘণ্টা আগে
চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ব্যাপক সহিংসতা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানে ১ হাজার ৪০০ জনের বেশি শিক্ষার্থী নিহত ও হাজারো মানুষ আহত হওয়ার পর দেশ এখন একটি নাজুক রাজনৈতিক পালাবদলের মধ্যে আছে। অন্তর্বর্তী সরকার শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং একটি গ্রহণযোগ্য জাতীয়...
২ দিন আগে
দেড় দশকের বেশি সময় ধরে কখনো ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’, আবার কখনো ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার স্লোগান শুনে আসছে দেশের মানুষ। এ নিয়ে ‘অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই)’ নামে প্রকল্পও আছে সরকারের। বেসরকারি পর্যায়েও রয়েছে নানা উদ্যোগ। তারপরও দেশের ৪৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ পরিবার এখনো ইন্টারনেট সেবার আওতার বাইরে রয়ে গেছে।
৫ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে সন্ত্রাস ও সহিংসতার উসকানিমূলক কনটেন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে মেটাকে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।
গতকাল শুক্রবার মেটার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ও ফেসবুকের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিনিধিদের কাছে ই-মেইলের মাধ্যমে এই চিঠি পাঠানো হয়।
চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ব্যাপক সহিংসতা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানে ১ হাজার ৪০০ জনের বেশি শিক্ষার্থী নিহত ও হাজারো মানুষ আহত হওয়ার পর দেশ এখন একটি নাজুক রাজনৈতিক পালাবদলের মধ্যে আছে। অন্তর্বর্তী সরকার শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং একটি গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে বিশেষ করে ফেসবুক ব্যবহার করে বড় ধরনের সহিংসতা, ভীতি প্রদর্শন ও আসন্ন নির্বাচন বানচালের ডাক দেওয়া হচ্ছে, যা জনজীবনে সহিংসতার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর পর উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে চিঠিতে বলা হয়, ভিন্ন মতাদর্শের কিছু ব্যক্তি মতপ্রকাশের স্বাধীনতার নামে প্রকাশ্যে এই মৃত্যুকে সমর্থন জানিয়েছে, যা সবচেয়ে উদ্বেগজনক। আবার কেউ কেউ গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান ও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতায় উসকানি দিচ্ছে। এসব উসকানিমূলক প্রচারণার পরই দেশের দুটি শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ডেইলি স্টার ও দৈনিক প্রথম আলোসহ বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এতে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা চরম হুমকির মুখে পড়ে এবং জনমনে ভীতির সৃষ্টি হয়।
বিটিআরসির অভিযোগ, উসকানিমূলক কনটেন্ট সরাতে বা ব্লক করতে দেরি করছে মেটা। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে মেটা যে সময় নিচ্ছে, এর মধ্যে ওই সব অ্যাকাউন্ট থেকে আরও সহিংসতা ছড়ানোর সুযোগ তৈরি হচ্ছে।
মেটার কাছে বারবার অভিযোগ জানিয়েও সময়মতো সাড়া পাওয়া যায়নি বলে চিঠিতে অসন্তোষ প্রকাশ করে বিটিআরসি।
একই সঙ্গে কয়েকটি দাবি তুলে ধরা হয় চিঠিতে। এর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ-সম্পর্কিত কনটেন্টের ক্ষেত্রে কমিউনিটি গাইডলাইন আরও কঠোর, দ্রুত ও প্রাসঙ্গিকভাবে প্রয়োগ করা; বাংলা ভাষার কনটেন্টে নজরদারি জোরদার করা এবং অভিযোগ ওঠা কনটেন্টের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে সন্ত্রাস ও সহিংসতার উসকানিমূলক কনটেন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে মেটাকে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।
গতকাল শুক্রবার মেটার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ও ফেসবুকের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিনিধিদের কাছে ই-মেইলের মাধ্যমে এই চিঠি পাঠানো হয়।
চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ব্যাপক সহিংসতা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানে ১ হাজার ৪০০ জনের বেশি শিক্ষার্থী নিহত ও হাজারো মানুষ আহত হওয়ার পর দেশ এখন একটি নাজুক রাজনৈতিক পালাবদলের মধ্যে আছে। অন্তর্বর্তী সরকার শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং একটি গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে বিশেষ করে ফেসবুক ব্যবহার করে বড় ধরনের সহিংসতা, ভীতি প্রদর্শন ও আসন্ন নির্বাচন বানচালের ডাক দেওয়া হচ্ছে, যা জনজীবনে সহিংসতার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর পর উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে চিঠিতে বলা হয়, ভিন্ন মতাদর্শের কিছু ব্যক্তি মতপ্রকাশের স্বাধীনতার নামে প্রকাশ্যে এই মৃত্যুকে সমর্থন জানিয়েছে, যা সবচেয়ে উদ্বেগজনক। আবার কেউ কেউ গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান ও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতায় উসকানি দিচ্ছে। এসব উসকানিমূলক প্রচারণার পরই দেশের দুটি শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ডেইলি স্টার ও দৈনিক প্রথম আলোসহ বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এতে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা চরম হুমকির মুখে পড়ে এবং জনমনে ভীতির সৃষ্টি হয়।
বিটিআরসির অভিযোগ, উসকানিমূলক কনটেন্ট সরাতে বা ব্লক করতে দেরি করছে মেটা। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে মেটা যে সময় নিচ্ছে, এর মধ্যে ওই সব অ্যাকাউন্ট থেকে আরও সহিংসতা ছড়ানোর সুযোগ তৈরি হচ্ছে।
মেটার কাছে বারবার অভিযোগ জানিয়েও সময়মতো সাড়া পাওয়া যায়নি বলে চিঠিতে অসন্তোষ প্রকাশ করে বিটিআরসি।
একই সঙ্গে কয়েকটি দাবি তুলে ধরা হয় চিঠিতে। এর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ-সম্পর্কিত কনটেন্টের ক্ষেত্রে কমিউনিটি গাইডলাইন আরও কঠোর, দ্রুত ও প্রাসঙ্গিকভাবে প্রয়োগ করা; বাংলা ভাষার কনটেন্টে নজরদারি জোরদার করা এবং অভিযোগ ওঠা কনটেন্টের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া।

সোশ্যাল মিডিয়াতে নিজের ব্যবসাকে প্রতিষ্ঠিত করতে অবশ্যই আপনাকে টার্গেট অডিয়েন্স, কনটেন্ট স্ট্র্যাটেজি, সেলস ফানেল, কাস্টমার জার্নি, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের নিজস্ব এলগরিদম ইত্যাদি সম্পর্কে জ্ঞান রাখতে হবে।
০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২
স্মার্টফোন থেকে শুরু করে বৈদ্যুতিক গাড়ি—সবকিছুতেই এখন লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারির ব্যবহার। কিন্তু এই ব্যাটারি থেকে মাঝেমধ্যে ভয়াবহ আগুনের খবর পাওয়া যায়, যা অনেক সময় প্রাণঘাতী হয়ে দাঁড়ায়। সম্প্রতি এক গবেষণায় জানা গেছে, ব্যাটারির অভ্যন্তরীণ নকশায় সামান্য পরিবর্তনের মাধ্যমে এই ঝুঁকি কমিয়ে আনা সম্ভব।
৫ ঘণ্টা আগে
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে সন্ত্রাস ও সহিংসতায় উসকানিমূলক কনটেন্টের (আধেয়) বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এসব কনটেন্ট বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও সংস্থাগুলো।
২ দিন আগে
দেড় দশকের বেশি সময় ধরে কখনো ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’, আবার কখনো ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার স্লোগান শুনে আসছে দেশের মানুষ। এ নিয়ে ‘অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই)’ নামে প্রকল্পও আছে সরকারের। বেসরকারি পর্যায়েও রয়েছে নানা উদ্যোগ। তারপরও দেশের ৪৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ পরিবার এখনো ইন্টারনেট সেবার আওতার বাইরে রয়ে গেছে।
৫ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেড় দশকের বেশি সময় ধরে কখনো ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’, আবার কখনো ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার স্লোগান শুনে আসছে দেশের মানুষ। এ নিয়ে ‘অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই)’ নামে প্রকল্পও আছে সরকারের। বেসরকারি পর্যায়েও রয়েছে নানা উদ্যোগ। তারপরও দেশের ৪৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ পরিবার এখনো ইন্টারনেট সেবার আওতার বাইরে রয়ে গেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) এক জরিপের তথ্য বলছে, বাংলাদেশে এখন ইন্টারনেট ব্যবহার করে ৫৬ দশমিক ২ শতাংশ পরিবারের মানুষ। এই হার গ্রামাঞ্চলে ৫১ দশমিক ৫ শতাংশ এবং শহরে ৬৪ শতাংশ।
‘ব্যক্তি ও খানা পর্যায়ে জেলাভিত্তিক আইসিটি ব্যবহারের সুযোগ ও প্রয়োগ পরিমাপ’ প্রকল্পের আওতায় পাঁচ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সীদের ওপর এই জরিপ পরিচালনা করে বিবিএস। এতে পরিবারগুলোয় মোবাইল ফোন, ফিক্সড ফোন, টেলিভিশন, রেডিও ও কম্পিউটার ব্যবহারের চিত্রও উঠে আসে।
জরিপের তথ্য অনুযায়ী, দেশে ব্যক্তি ও পারিবারিক পর্যায়ে মোবাইল ফোনের ব্যবহার বেড়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে টেলিভিশন, কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ব্যবহারের হারও। তবে কমেছে স্মার্টফোন ও রেডিওর ব্যবহার।
‘আইসিটি প্রয়োগ ও ব্যবহার জরিপ’-এ পাঁচ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সী এবং শহর-পল্লি অঞ্চল অনুযায়ী জাতীয় পর্যায়ে আইসিটির সূচকসমূহ ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে তৈরি করা হয়। সারা দেশে ২ হাজার ৫৬৮টি নির্বাচিত নমুনা এলাকায় দৈবচয়নের ভিত্তিতে ২৪টি করে মোট ৬১ হাজার ৬৩২টি খানায় ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।
জরিপের বিষয়ে বিবিএসের মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, জরিপের খানা ও ব্যক্তি পর্যায়ে আইসিটির সূচকগুলো আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) আলোকে নেওয়া হয়েছে। জরিপে খানায় রেডিও, টেলিভিশন, কম্পিউটার, মোবাইল ফোন, স্মার্টফোন, ইন্টারনেটের এক্সেস এবং ব্যক্তি পর্যায়ে মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, ইন্টারনেটের ব্যবহার, মোবাইল ফোনের মালিকানার ফলাফল প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, দেশের অনেক মানুষ ডিজিটাল সেবার বাইরে। এই জরিপে বিকাশ, নগদসহ মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) এর আওতায় আনা হলে পরিসংখ্যান হয়তো পাল্টাবে।
তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ তানভীর হাসান জোহা আজকের পত্রিকাকে বলেন, সচেতনতার অভাবে এখনো অর্ধেক মানুষ ডিজিটাল সিস্টেমের আওতার বাইরে রয়েছে, যাদের বেশির ভাগ গ্রামাঞ্চল এবং পার্বত্য এলাকার। তারা ডিজিটাল সেবাকে ভয় পায়।
জরিপের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে ৯৮ দশমিক ৯ শতাংশ পরিবারে অন্তত একটি মোবাইল ফোন ব্যবহৃত হচ্ছে। এর মধ্যে ৭২ দশমিক ৪ শতাংশ পরিবারে রয়েছে স্মার্টফোন। স্মার্টফোন ব্যবহারে শহরাঞ্চল এগিয়ে। শহরে ৮০ দশমিক ৮ শতাংশ এবং গ্রামে ৬৮ দশমিক ৮ শতাংশ পরিবার স্মার্টফোন ব্যবহার করে। এ ছাড়া ফিক্সড ফোন ব্যবহার করে শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ পরিবার। কম্পিউটার ব্যবহার করে ৯ দশমিক ১ শতাংশ পরিবার। আর ৫৬ দশমিক ২ শতাংশ পরিবার ইন্টারনেট ব্যবহার করে।
অন্যদিকে, ৫৮ দশমিক ৯ শতাংশ পরিবারে টেলিভিশন দেখা হয় এবং ১৫ দশমিক ১ শতাংশ পরিবার রেডিও ব্যবহার করে বলে জরিপে উঠে এসেছে। আর বিদ্যুৎ সুবিধা রয়েছে ৯৮ দশমিক ৯ শতাংশ পরিবারে।
এর আগের বছর ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে দেশের ৯৮ দশমিক ৮ শতাংশ পরিবারের অন্তত একজন মোবাইল ফোন ব্যবহার করেছিল। এর মধ্যে স্মার্টফোন ছিল ৭২ দশমিক ৮ শতাংশ। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে মোবাইল ফোনের ব্যবহার ১ শতাংশ বাড়লেও স্মার্টফোনের ব্যবহার কমেছে দশমিক ৪ শতাংশ।
২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিকে পারিবারিকভাবে কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের সংখ্যা ছিল ১৫ দশমিক ৩ শতাংশ। সেখান থেকে এই হার দশমিক ২ শতাংশ কমে ১৫ দশমিক ১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। গ্রাম-শহরভিত্তিক হিসাবে দেখা যায়, গ্রামাঞ্চলে ১৪ শতাংশ পরিবার রেডিও ব্যবহার করলেও শহরে এই হার ১৭ দশমিক ৭ শতাংশ।
জরিপের ব্যক্তি পর্যায়ের বিশ্লেষণে দেখানো হয়, ২০২৫ সালের জুলাই-সেপ্টেম্বরে ৮০ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করেছে, যা এক বছর আগে ছিল ৭৮ দশমিক ৯ শতাংশ। অর্থাৎ এক বছরে মোবাইল ব্যবহারকারী বেড়েছে ১ দশমিক ৭ শতাংশ। এর মধ্যে পুরুষ ৮০ দশমিক ৯ শতাংশ এবং নারী ৭৮ দশমিক ৮ শতাংশ।
তবে ব্যক্তিমালিকানাধীন মোবাইল ফোনের ব্যবহার কিছুটা কমেছে। ২০২৪ সালে যেখানে এ হার ছিল ৫৭ দশমিক ৫ শতাংশ, ২০২৫ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৫৬ দশমিক ৫ শতাংশে। কম্পিউটার ব্যবহারের হারও সামান্য কমে ১০ দশমিক ১ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নেমেছে। বিপরীতে, ব্যক্তি পর্যায়ে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েছে। ২০২৪ সালে ৪৭ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে ২০২৫ সালে তা বেড়ে হয়েছে ৪৮ দশমিক ৯ শতাংশ। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে ৫১ দশমিক ২ শতাংশ পুরুষ এবং ৪৬ দশমিক ৩ শতাংশ নারী।
বিবিএস জানায়, এই জরিপের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) পরিমাপ এবং আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) জন্য আইসিটি সূচক সরবরাহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

দেড় দশকের বেশি সময় ধরে কখনো ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’, আবার কখনো ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার স্লোগান শুনে আসছে দেশের মানুষ। এ নিয়ে ‘অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই)’ নামে প্রকল্পও আছে সরকারের। বেসরকারি পর্যায়েও রয়েছে নানা উদ্যোগ। তারপরও দেশের ৪৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ পরিবার এখনো ইন্টারনেট সেবার আওতার বাইরে রয়ে গেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) এক জরিপের তথ্য বলছে, বাংলাদেশে এখন ইন্টারনেট ব্যবহার করে ৫৬ দশমিক ২ শতাংশ পরিবারের মানুষ। এই হার গ্রামাঞ্চলে ৫১ দশমিক ৫ শতাংশ এবং শহরে ৬৪ শতাংশ।
‘ব্যক্তি ও খানা পর্যায়ে জেলাভিত্তিক আইসিটি ব্যবহারের সুযোগ ও প্রয়োগ পরিমাপ’ প্রকল্পের আওতায় পাঁচ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সীদের ওপর এই জরিপ পরিচালনা করে বিবিএস। এতে পরিবারগুলোয় মোবাইল ফোন, ফিক্সড ফোন, টেলিভিশন, রেডিও ও কম্পিউটার ব্যবহারের চিত্রও উঠে আসে।
জরিপের তথ্য অনুযায়ী, দেশে ব্যক্তি ও পারিবারিক পর্যায়ে মোবাইল ফোনের ব্যবহার বেড়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে টেলিভিশন, কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ব্যবহারের হারও। তবে কমেছে স্মার্টফোন ও রেডিওর ব্যবহার।
‘আইসিটি প্রয়োগ ও ব্যবহার জরিপ’-এ পাঁচ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সী এবং শহর-পল্লি অঞ্চল অনুযায়ী জাতীয় পর্যায়ে আইসিটির সূচকসমূহ ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে তৈরি করা হয়। সারা দেশে ২ হাজার ৫৬৮টি নির্বাচিত নমুনা এলাকায় দৈবচয়নের ভিত্তিতে ২৪টি করে মোট ৬১ হাজার ৬৩২টি খানায় ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।
জরিপের বিষয়ে বিবিএসের মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, জরিপের খানা ও ব্যক্তি পর্যায়ে আইসিটির সূচকগুলো আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) আলোকে নেওয়া হয়েছে। জরিপে খানায় রেডিও, টেলিভিশন, কম্পিউটার, মোবাইল ফোন, স্মার্টফোন, ইন্টারনেটের এক্সেস এবং ব্যক্তি পর্যায়ে মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, ইন্টারনেটের ব্যবহার, মোবাইল ফোনের মালিকানার ফলাফল প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, দেশের অনেক মানুষ ডিজিটাল সেবার বাইরে। এই জরিপে বিকাশ, নগদসহ মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) এর আওতায় আনা হলে পরিসংখ্যান হয়তো পাল্টাবে।
তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ তানভীর হাসান জোহা আজকের পত্রিকাকে বলেন, সচেতনতার অভাবে এখনো অর্ধেক মানুষ ডিজিটাল সিস্টেমের আওতার বাইরে রয়েছে, যাদের বেশির ভাগ গ্রামাঞ্চল এবং পার্বত্য এলাকার। তারা ডিজিটাল সেবাকে ভয় পায়।
জরিপের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে ৯৮ দশমিক ৯ শতাংশ পরিবারে অন্তত একটি মোবাইল ফোন ব্যবহৃত হচ্ছে। এর মধ্যে ৭২ দশমিক ৪ শতাংশ পরিবারে রয়েছে স্মার্টফোন। স্মার্টফোন ব্যবহারে শহরাঞ্চল এগিয়ে। শহরে ৮০ দশমিক ৮ শতাংশ এবং গ্রামে ৬৮ দশমিক ৮ শতাংশ পরিবার স্মার্টফোন ব্যবহার করে। এ ছাড়া ফিক্সড ফোন ব্যবহার করে শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ পরিবার। কম্পিউটার ব্যবহার করে ৯ দশমিক ১ শতাংশ পরিবার। আর ৫৬ দশমিক ২ শতাংশ পরিবার ইন্টারনেট ব্যবহার করে।
অন্যদিকে, ৫৮ দশমিক ৯ শতাংশ পরিবারে টেলিভিশন দেখা হয় এবং ১৫ দশমিক ১ শতাংশ পরিবার রেডিও ব্যবহার করে বলে জরিপে উঠে এসেছে। আর বিদ্যুৎ সুবিধা রয়েছে ৯৮ দশমিক ৯ শতাংশ পরিবারে।
এর আগের বছর ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে দেশের ৯৮ দশমিক ৮ শতাংশ পরিবারের অন্তত একজন মোবাইল ফোন ব্যবহার করেছিল। এর মধ্যে স্মার্টফোন ছিল ৭২ দশমিক ৮ শতাংশ। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে মোবাইল ফোনের ব্যবহার ১ শতাংশ বাড়লেও স্মার্টফোনের ব্যবহার কমেছে দশমিক ৪ শতাংশ।
২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিকে পারিবারিকভাবে কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের সংখ্যা ছিল ১৫ দশমিক ৩ শতাংশ। সেখান থেকে এই হার দশমিক ২ শতাংশ কমে ১৫ দশমিক ১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। গ্রাম-শহরভিত্তিক হিসাবে দেখা যায়, গ্রামাঞ্চলে ১৪ শতাংশ পরিবার রেডিও ব্যবহার করলেও শহরে এই হার ১৭ দশমিক ৭ শতাংশ।
জরিপের ব্যক্তি পর্যায়ের বিশ্লেষণে দেখানো হয়, ২০২৫ সালের জুলাই-সেপ্টেম্বরে ৮০ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করেছে, যা এক বছর আগে ছিল ৭৮ দশমিক ৯ শতাংশ। অর্থাৎ এক বছরে মোবাইল ব্যবহারকারী বেড়েছে ১ দশমিক ৭ শতাংশ। এর মধ্যে পুরুষ ৮০ দশমিক ৯ শতাংশ এবং নারী ৭৮ দশমিক ৮ শতাংশ।
তবে ব্যক্তিমালিকানাধীন মোবাইল ফোনের ব্যবহার কিছুটা কমেছে। ২০২৪ সালে যেখানে এ হার ছিল ৫৭ দশমিক ৫ শতাংশ, ২০২৫ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৫৬ দশমিক ৫ শতাংশে। কম্পিউটার ব্যবহারের হারও সামান্য কমে ১০ দশমিক ১ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নেমেছে। বিপরীতে, ব্যক্তি পর্যায়ে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েছে। ২০২৪ সালে ৪৭ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে ২০২৫ সালে তা বেড়ে হয়েছে ৪৮ দশমিক ৯ শতাংশ। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে ৫১ দশমিক ২ শতাংশ পুরুষ এবং ৪৬ দশমিক ৩ শতাংশ নারী।
বিবিএস জানায়, এই জরিপের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) পরিমাপ এবং আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) জন্য আইসিটি সূচক সরবরাহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

সোশ্যাল মিডিয়াতে নিজের ব্যবসাকে প্রতিষ্ঠিত করতে অবশ্যই আপনাকে টার্গেট অডিয়েন্স, কনটেন্ট স্ট্র্যাটেজি, সেলস ফানেল, কাস্টমার জার্নি, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের নিজস্ব এলগরিদম ইত্যাদি সম্পর্কে জ্ঞান রাখতে হবে।
০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২
স্মার্টফোন থেকে শুরু করে বৈদ্যুতিক গাড়ি—সবকিছুতেই এখন লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারির ব্যবহার। কিন্তু এই ব্যাটারি থেকে মাঝেমধ্যে ভয়াবহ আগুনের খবর পাওয়া যায়, যা অনেক সময় প্রাণঘাতী হয়ে দাঁড়ায়। সম্প্রতি এক গবেষণায় জানা গেছে, ব্যাটারির অভ্যন্তরীণ নকশায় সামান্য পরিবর্তনের মাধ্যমে এই ঝুঁকি কমিয়ে আনা সম্ভব।
৫ ঘণ্টা আগে
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে সন্ত্রাস ও সহিংসতায় উসকানিমূলক কনটেন্টের (আধেয়) বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এসব কনটেন্ট বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও সংস্থাগুলো।
২ দিন আগে
চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ব্যাপক সহিংসতা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানে ১ হাজার ৪০০ জনের বেশি শিক্ষার্থী নিহত ও হাজারো মানুষ আহত হওয়ার পর দেশ এখন একটি নাজুক রাজনৈতিক পালাবদলের মধ্যে আছে। অন্তর্বর্তী সরকার শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং একটি গ্রহণযোগ্য জাতীয়...
২ দিন আগে