Ajker Patrika

এআই–এর হাত ধরে নতুন যুগে ইউটিউব, যুক্ত হচ্ছে স্বয়ংক্রিয় ডাবিং

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ইউটিউব নির্মাতাদের জন্য এমন এআই টুল আনছে যা ভিডিও আইডিয়া তৈরি, সম্পাদনা, মার্কেটিং এবং অ্যানালিটিক্সেও সহায়তা করবে। ছবি:সংগৃহীত
ইউটিউব নির্মাতাদের জন্য এমন এআই টুল আনছে যা ভিডিও আইডিয়া তৈরি, সম্পাদনা, মার্কেটিং এবং অ্যানালিটিক্সেও সহায়তা করবে। ছবি:সংগৃহীত

বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউব এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যুগে প্রবেশ করেছে। এআই যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে প্ল্যাটফর্মটিতে বিভিন্ন পরিবর্তন নিয়ে আসা হবে। এমনকি ইউটিউবে যুক্ত হতে পারে স্বয়ংক্রিয় ডাবিংও। তবে এসব এআই ভিত্তিক ফিচারগুলো তৈরি হবে কনটেন্ট নির্মাতাদের ডেটার ওপর, যা নিয়ে বেশ সমালোচনা রয়েছে। এভাবে এআই–এর হাত ধরে ইউটিউব, কীভাবে নতুন যুগে প্রবেশ করেছে তার ওপর আলোকপাত করেছেন ব্লুমবার্গের প্রতিবেদক মার্ক বার্গেন।

মিশরের জনপ্রিয় ইনফ্লুয়েন্সার ফারাহ মেধাতের সঙ্গে সম্প্রতি বৈঠক করেন ইউটিউবের ভাইস প্রেসিডেন্ট আমজাদ হানিফ। মেধাতের ভিডিওগুলো দক্ষিণ কোরিয়ার দর্শকের কাছেও জনপ্রিয়। হানিফ আশাবাদী, খুব শিগগিরই ইউটিউবের এআই প্রযুক্তি মেধাতকে কোরীয় ভাষায় সাবলীলভাবে কথা বলাতে সক্ষম হবে। তিনি আশা করছে—ভবিষ্যতে প্রতিটি ইউটিউব ভিডিও স্বয়ংক্রিয়ভাবে সব ভাষায় অনুবাদ ও ডাব করা সম্ভব হবে, এমনকি ভিডিওতে কথা বলার সময় ঠোঁটও যেন ভাষার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে নড়ে।

হানিফ জানান, ইউটিউব নির্মাতাদের জন্য এমন এআই টুল আনছে যা ভিডিও আইডিয়া তৈরি, সম্পাদনা, মার্কেটিং এবং অ্যানালিটিক্সেও সহায়তা করবে।

২০০৫ সালে সহ–প্রতিষ্ঠাতা জাওয়েদ করিমের মাত্র ১৯ সেকেন্ডের এক ভিডিও দিয়ে যাত্রা শুরু করে ইউটিউব। আজ এটি বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষের আয়ের উৎস, বিনোদনের মাধ্যম ও মিডিয়া পাওয়ার হাউস।

তবে ইউটিউব ও নির্মাতাদের সম্পর্ক বরাবরই কিছুটা অস্বস্তিকর। নির্মাতাদের কোনো পরামর্শ গ্রহণ না করেই প্ল্যাটফর্মটি নীতিমালা, কপিরাইট ও আয়ের কৌশল ঠিক করে। তবুও এখন ইউটিউব বলছে, এআই নির্মাতাদের জন্য আরও বেশি ক্ষমতা এনে দেবে। এ ছাড়া গুগলের এআই মডেল ‘জেমিনি’ ইউটিউব নির্মাতাদের কনটেন্ট দিয়ে প্রশিক্ষণ দিয়েছে—তাদের অনুমতি ছাড়াই।

আয় ও আধিপত্য

ইউটিউব এখন তার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অবস্থানে রয়েছে। স্পটিফাই, টিকটক ও বিভিন্ন স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মের তীব্র প্রতিযোগিতার মাঝেও ইউটিউব গত বছর বিজ্ঞাপন থেকে আয় করেছে ৩৬ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার এবং সাবস্ক্রিপশন ও অন্যান্য উৎস থেকে আরও ১৮ বিলিয়ন ডলার। গবেষণা প্রতিষ্ঠান মফেটনাথানসনের অনুমান অনুযায়ী, সাবস্ক্রিপশন ও অন্যান্য উৎস থেকে আরও ১৮ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে ইউটিউব। প্রতিষ্ঠানটি আরও পূর্বাভাস দিয়েছে, আগামী বছর ইউটিউব রাজস্ব আয়ের দিক থেকে ওয়াল্ট ডিজনি কোম্পানিকে ছাড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম বিনোদন কোম্পানিতে পরিণত হবে।

নেতৃত্ব বদল হলেও ইউটিউবের সাফল্যের গতি কমেনি। ২০২৩ সালের শুরুতে সুসান উজিসকি সিইও পদ থেকে পদত্যাগ করার পর নীল মোহন ইউটিউবের দায়িত্ব নেন। নীল মোহন ইউটিউবের হাল ধরার পর পডকাস্ট, টিভি এবং মিডিয়া জগতে ইউটিউবের উপস্থিতি আরও দৃঢ় হয়েছে। সম্প্রতি ট্রাম্পের সাক্ষাৎকার প্রচার করে পডকাস্টে ইউটিউবের একচেটিয়া অবস্থান নিশ্চিত করেছেন মোহন।

চলতি বছরের শুরুতে ইউটিউব ঘোষণা করেছে যে, প্রতি মাসে এক বিলিয়ন মানুষ প্ল্যাটফর্মে পডকাস্ট শোনেন, যা স্পটিফাইয়ের তুলনায় তাদের আধিপত্য আরও দৃঢ় করেছে।

টিভিতে ইউটিউব দেখা বাড়ানোকে আরেকটি প্রধান অগ্রাধিকার হিসেবে নির্ধারণ করেছেন মোহান। সম্প্রতি এনএফএল-এর সঙ্গে একটি চুক্তির মাধ্যমে এবং এমনকি প্রতিযোগী স্ট্রিমিং পরিষেবাগুলোকে ইউটিউব অ্যাপে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছেন। তিনি বড়-ইউটিউবারদের, যেমন রেট এবং লিংক–এর এমি পুরস্কার প্রচারাভিযানকেও সমর্থন করেছেন।

মিথিক্যাল এন্টারটেইনমেন্টের প্রেসিডেন্ট ব্রায়ান ফ্লানাগান বলেছেন, ইউটিউবের লক্ষ্য হলো একেবারে টিভির মতো প্রতিষ্ঠিত হওয়া, যেখানে রেটিং, মুনাফা, পুরস্কার এবং সাংস্কৃতিক গুরুত্ব—এসব সবকিছুই টিভির মতো গুরুত্ব পাবে।

এআই যুগ

২০২২ নালে চ্যাটজিপিটির আগমনের পর থেকেই শুরু হয়েছে জেনারেটিভ এআই-এর জোয়ার। এখন খুব সহজেই তৈরি করা যাচ্ছে ছবি, ভিডিও, এমনকি কণ্ঠের নকলও। নতুন এআই টুলগুলো এখন মানুষকে দ্রুত এবং সস্তায় কনটেন্ট তৈরি করতে সাহায্য করছে, ফলে ইন্টারনেট ভরে গেছে বিশ্বাসযোগ্য নকল ও ডিপফেক কন্টেন্টে। তবে হলিউড এখনো জেনারেটিভ এআইকে স্বাগতম জানায়নি। কারণ এআইয়ের মাধ্যমে ড্রেকের নকল কণ্ঠ দিয়ে মিউজিক তৈরি করা হয় যা ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। এটি মানুষের ইনটেলেকচুয়াল কনটেন্ট চুরির পূর্বাভাস হিসেবে দেখা হয়েছিল।

এদিকে গুগলও নিজেকে পুনর্গঠিত করেছে। ভিডিও-ভিত্তিক এআই কনটেন্টের যুগ সামাল দেওয়ার মতো প্রস্তুতি রয়েছে গুগলের। প্রতিষ্ঠানটি নিজস্ব ভিডিও এআই টুল ভিও চালু করেছে, যা প্রম্পটের মাধ্যমে ভিডিও তৈরি করতে পারে। এটি ওপেনএআইসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের অনুরূপ প্রযুক্তির মতো। তবে গুগলের এক বিশাল সুবিধা আছে। সেটি হলো—ইউটিউব। নির্মাতারা যদি প্রতিযোগী এআই টুল ব্যবহার করেও ভিডিও তৈরি করেন, তবুও তা প্রকাশের জন্য ইউটিউবই তাঁদের প্রথম পছন্দ হবে। এভাবেই শেষ পর্যন্ত গুগলই জিতে যায়।

জেনারেটিভ এআই-নির্ভর কনটেন্টের নতুন ঢেউ সামাল দিতে গিয়ে ইউটিউবও অন্যান্য ওয়েব প্ল্যাটফর্মের মতো কনটেন্টপ্রবাহ বজায় রাখার চেষ্টা করছে, পাশাপাশি কপিরাইট সমস্যা মোকাবিলা করছে। তবে এখানে ইউটিউবের একটি বড় সুবিধা রয়েছে। তারা প্রায় দুই দশক ধরে তারা পরিচালনা করছে ‘কনটেন্ট আইডি’ নামে একটি বিস্তৃত সফটওয়্যার সিস্টেম, যা ভিডিওতে কপিরাইটযুক্ত উপাদান শনাক্ত করতে পারে এবং যা মূলত হলিউড ও সংগীত শিল্পকে সন্তুষ্ট করেছে।

জেনারেটিভ এআইয়ের ব্যবহার বিস্তৃত হওয়ার পর ইউটিউব তার অংশীদারদের আশ্বস্ত করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়। তারা ইউনিভার্সাল মিউজিক গ্রুপ এনভি এবং ক্রিয়েটিভস আর্টিস্টিক এজেন্সি এলএলসি-এর সঙ্গে চুক্তি করে, যাতে প্ল্যাটফর্মে সংগীতশিল্পী, ক্রীড়াবিদ এবং অভিনেতাদের অননুমোদিত এআই-নির্মিত কনটেন্ট পর্যবেক্ষণ করা যায়।

সম্প্রতি ইউটিউব কিছু শীর্ষস্থানীয় ইউটিউবারকেও এই ‘ডিপফেক’ সুরক্ষা উদ্যোগে যুক্ত করেছে। সিএএএ এর স্ট্র্যাটেজিক ডেভেলপমেন্ট প্রধান আলেক্সান্দ্রা শ্যানন বলেন, প্রযুক্তি প্ল্যাটফর্মগুলো ডিপফেক মোকাবিলায় নানা রকম পদক্ষেপ নিয়েছে, তবে ‘ইউটিউব এগিয়ে রয়েছে, এটা আমি নিশ্চিতভাবেই বলব।

তবে সবচেয়ে বড় বিতর্কের বিষয়—চুপিচুপি নির্মাতাদের ভিডিও দিয়ে এআই মডেলগুলোর প্রশিক্ষণ। তবে ইউটিউব এটি স্পষ্টভাবে কখনো বলেনি। ওপেনএআই-র সোরা চালু হওয়ার পর এ বিতর্ক আরও বেড়েছে। ২০১৭ সাল থেকে প্রতি মিনিটে ৪০০ ঘণ্টার বেশি ভিডিও ইউটিউবে আপলোড হচ্ছে, যা এআই প্রশিক্ষণের জন্য একটি মূল্যবান উৎস।

ওপেনএআই এবং অন্যান্য কোম্পানিগুলি ইউটিউবের ভিডিও ডেটা ব্যবহার করলেও, ইউটিউব স্পষ্টভাবে এ ব্যাপারে কিছু জানায়নি। ইউটিউবের নিয়ম অনুযায়ী, ভিডিও আপলোড করার সময় ইউটিউবকে সেই ভিডিও ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়। গুগলের সিইওর ভাষ্য—‘আমরা ইউটিউবের নিয়ম মেনেই কনটেন্ট ব্যবহার করি। গুগল নিজেও ইউটিউবের ভিডিও ব্যবহার করেছে তার এআই মডেল জেমেনি প্রশিক্ষণের জন্য। তবে নির্মাতারা বলছেন, তখন তো এসব এআই প্রযুক্তি ছিলই না।

নতুন বাজার, নতুন সম্ভাবনা

গুগল তাদের মিডিয়া পার্টনারদের কনটেন্ট ব্যবহার না করলেও সাধারণ নির্মাতাদের কনটেন্ট ব্যবহার করেছে। এ নিয়ে অসন্তোষ থাকলেও ইউটিউব জানিয়েছে—এআই ফিচার পেতে হলে এই লেনদেনে রাজি থাকতে হবে। নতুন ফিচারগুলোর মধ্যে রয়েছে স্বয়ংক্রিয় অনুবাদ, ভয়েস ক্লোন, মন্তব্যের উত্তর দেওয়া ও অ্যানালাইটিকস বিশ্লেষণ।

ইতিমধ্যে ইউটিউব ডাবিং টুল দিয়ে হাজার হাজার ভিডিও একাধিক ভাষায় উপস্থাপন করছে, যেখান থেকে ৪০ শতাংশ ভিউ আসে অনুবাদিত ভাষা থেকে। পরবর্তী ধাপে কণ্ঠস্বর ক্লোনিং ও ঠোঁট মেলানোর ফিচার আনা হবে।

মিস্টার বিস্টের মতো ইউটিউবাররা ইতিমধ্যে নিজস্ব ডাবিং টিম গড়ে তুলেছে। তবে ইউটিউব এটি বিনা মূল্যে দিতে চায়, যেন সবাই নিজের সৃজনশীলতা তুলে ধরতে পারে।

তবে সবাই এআইকে সাদরে গ্রহণ করছে না। কেউ কেউ বলছে, ডাবিং করলে ইংরেজি ভাষার দর্শক হারায়, ফলে বিজ্ঞাপনী আয়ও কমে যেতে পারে। আবার অনেকে এআই ব্যবহারকে নির্মাতাদের সৃজনশীলতার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা বলেই মনে করেন।

এদিকে ইউটিউব প্ল্যাটফর্মে আগেই ভরে গেছে এআই-নির্ভর ‘ফেসলেস’ (চেহারাবিহীন) চ্যানেলে। অনেকেই ভুয়া মুভি বা সিরিজের ট্রেলার, ক্লিপ আর ডাব করা ভিডিও বানিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে। ইউটিউব সম্প্রতি কিছু চ্যানেলের বিজ্ঞাপন বন্ধ করে দিলেও তাদের ভিডিও পোস্ট বন্ধ করেনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে অপরাধ: ১৪ ভাগ করে মিরপুর নিয়ন্ত্রণ করছে চার শীর্ষ সন্ত্রাসী

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

উত্তরায় জুলাই রেভেলসের দুই সদস্যকে কুপিয়ে জখম

নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র চলছে: তিন দলের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গুগলের নতুন ফিচার: সাধারণ হেডফোনই হবে রিয়েল–টাইম অনুবাদক

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
এর মাধ্যমে ৭০টিরও বেশি ভাষায় নির্বিঘ্নে অডিও অনুবাদ পাওয়া যাবে। ছবি: সংগৃহীত
এর মাধ্যমে ৭০টিরও বেশি ভাষায় নির্বিঘ্নে অডিও অনুবাদ পাওয়া যাবে। ছবি: সংগৃহীত

গুগল ট্রান্সলেটে একটি বড় ও গুরুত্বপূর্ণ আপডেট এনেছে গুগল। এই ফিচারে যুক্ত করা হয়েছে রিয়েল-টাইম ট্রান্সলেটর, যা সরাসরি হেডফোনের মাধ্যমে ব্যবহার করা যাবে।

গত বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) বেটা সংস্করণে চালু হওয়া এই ফিচারটি ব্যবহার করতে শুধু একটি উপযোগী অ্যান্ড্রয়েড ফোন এবং গুগল ট্রান্সলেট অ্যাপই যথেষ্ট। এর মাধ্যমে ৭০টিরও বেশি ভাষায় নির্বিঘ্নে অডিও অনুবাদ পাওয়া যাবে।

গুগল জানিয়েছে, তারা তাদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) টুল জেমিনি ব্যবহার করে বাগধারা, প্রবাদ–প্রবচন, স্থানীয় অভিব্যক্তি বা স্ল্যাংয়ের মতো সূক্ষ্ম অর্থবোধক বাক্যাংশের অনুবাদ আরও উন্নত করার চেষ্টা করেছে।

এক বিবৃতিতে কোম্পানিটি বলেছে, ‘আমরা টেক্সট অনুবাদের জন্য গুগল ট্রান্সলেটে জেমিনির সবচেয়ে শক্তিশালী অনুবাদ সক্ষমতা যুক্ত করছি। হেডফোনের মাধ্যমে লাইভ স্পিচ–টু–স্পিচ অনুবাদের একটি বেটা অভিজ্ঞতা চালু করছি এবং অনুশীলন ও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য অ্যাপে নতুন ভাষা যুক্ত করছি।’

এর আগে এই সুবিধা শুধু পিক্সেল বাডসের জন্য সীমিত ছিল। তবে নতুন বেটা সংস্করণের মাধ্যমে যেকোনো হেডফোনকেই একমুখী রিয়েল–টাইম অনুবাদ ডিভাইসে রূপান্তর করা যাবে।

গুগল জানিয়েছে, দৈনন্দিন যোগাযোগের নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এই ফিচারটি কার্যকর একটি টুল হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। কথোপকথনের সময় ভাষাগত দূরত্ব ঘোচানো, ভ্রমণের সময় পাবলিক এনাউন্সমেন্ট বোঝা কিংবা বিদেশি ভাষার টেলিভিশন অনুষ্ঠান বা অনলাইন কনটেন্ট অনুসরণের ক্ষেত্রে এটি সহায়ক হবে।

গুগলের সার্চ ভার্টিক্যালস বিভাগের প্রোডাক্ট ম্যানেজমেন্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট রোজ ইয়াও বলেন, ‘আপনি যদি ভিন্ন কোনো ভাষায় কথা বলতে চান, বিদেশে অবস্থানকালে কোনো ভাষণ বা বক্তৃতা শুনতে চান, কিংবা অন্য ভাষার টিভি অনুষ্ঠান বা সিনেমা দেখতে চান, তাহলে এখন শুধু হেডফোন লাগিয়ে ট্রান্সলেট অ্যাপ খুলে লাইভ ট্রান্সলেট-এ ট্যাপ করলেই আপনার পছন্দের ভাষায় রিয়েল–টাইম অনুবাদ শুনতে পারবেন।’

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও ভারতে চালু হচ্ছে এই বেটা সংস্করণটি। কোম্পানি জানিয়েছে, ২০২৬ সালে আইওএস এবং আরও বেশি দেশে এই সুবিধা সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে। পাশাপাশি, কথা বলার অনুশীলনের ভিত্তিতে ব্যবহারকারীদের সহায়ক পরামর্শ দিতে উন্নত ফিডব্যাক ব্যবস্থাও যুক্ত করা হচ্ছে।

এ ছাড়া ব্যবহারকারীদের দৈনন্দিন শেখার অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ এবং ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে স্ট্রিক ট্র্যাকিং ফিচারও চালু করছে গুগল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে অপরাধ: ১৪ ভাগ করে মিরপুর নিয়ন্ত্রণ করছে চার শীর্ষ সন্ত্রাসী

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

উত্তরায় জুলাই রেভেলসের দুই সদস্যকে কুপিয়ে জখম

নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র চলছে: তিন দলের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ডিজিটাল উদ্যোক্তা প্রকল্প: পাঁচ বছরে অর্ধেক কাজ, ব্যয় বাড়ল ১৭৮ কোটি

  • ৫ বছরের মেয়াদ শেষ, আড়াই বছর বৃদ্ধি
  • ৩৫৩ কোটি টাকার প্রকল্প ব্যয় ৫৩১ কোটিতে উন্নীত
  • প্রাথমিকভাবে সরকারের অর্থায়ন ৯৮ কোটি, বিশ্বব্যাংকের ঋণ ২৫৫ কোটি টাকা
মাহফুজুল ইসলাম, ঢাকা
ডিজিটাল উদ্যোক্তা প্রকল্প: পাঁচ বছরে অর্ধেক কাজ, ব্যয় বাড়ল ১৭৮ কোটি

বৈদেশিক ঋণে নেওয়া প্রকল্পের ৫ বছরের মেয়াদ শেষ হলেও কাজ এখনো অর্ধেক বাকি। এ অবস্থায় আবারও ঋণ করে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে আড়াই বছর। এতে খরচ বাড়ছে আরও ৫০ শতাংশ। প্রকল্পটির নাম ‘ডিজিটাল উদ্যোক্তা ও উদ্ভাবন ইকোসিস্টেম উন্নয়ন’।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, বাংলাদেশে সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক স্থাপন এবং উদ্ভাবনী সংস্কৃতি তৈরির মাধ্যমে বেসরকারি বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং টেকসই উন্নয়নকে উৎসাহিত করতে ২০২১ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন করা হয়। ৩৫৩ কোটি ৬ লাখ টাকার এই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর। পাঁচ বছর মেয়াদি এই প্রকল্পে সরকারের অর্থায়ন ছিল ৯৮ কোটি ৬ লাখ টাকা। আর বিশ্বব্যাংকের ঋণের পরিমাণ ছিল ২৫৫ কোটি টাকা।

চলতি বছরের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের নেওয়া প্রকল্পটির কাজ শেষ হয়েছে মাত্র ৫০ শতাংশ। আর্থিক ব্যয় হয়েছে ১২১ কোটি ৫০ লাখ ৩৬ হাজার টাকা বা ৩৪ দশমিক ৪১ শতাংশ।

নির্ধারিত সময়ে কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় ২ বছর ৬ মাস বৃদ্ধি করে প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৮ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার সর্বশেষ একনেক সভায় সময়ের সঙ্গে বৈদেশিক ঋণের মাধ্যমে আরও ১৭৮ কোটি টাকা ব্যয় বাড়িয়েছে। অর্থাৎ ৩৫৩ কোটি টাকার প্রকল্পের ব্যয় বাড়িয়ে ৫৩১ কোটি টাকা অনুমোদন করা হয়েছে। এর মধ্যে বৈদেশিক ঋণ ৪৩৩ কোটি ১২ লাখ টাকা বা ৮১ দশমিক ৫৪ শতাংশ।

অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, দেশি ও বিদেশি ঋণের পরিমাণ ইতিমধ্যে উচ্চমাত্রায় পৌঁছেছে। একদিকে ঋণ নিয়ে বড় বড় প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে, অন্যদিকে সেই প্রকল্পগুলোর মেয়াদ বাড়াতে আবার নতুন করে ঋণ নেওয়া হচ্ছে, যা দীর্ঘ মেয়াদে অর্থনীতির ওপর চাপ বাড়াচ্ছে।

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, জনগুরুত্বপূর্ণ ছাড়া বৈদেশিক ঋণে সরকারের প্রকল্প নেওয়া উচিত নয়। এসব প্রকল্প নেওয়ার আগে সরকারের আরও বেশি সচেতন হওয়া উচিত।

তবে প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে অনেক ‘হিসাবি’ নীতি অনুসরণ করা হচ্ছে বলে দাবি সরকারের। এ বিষয়ে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, সরকার এই মুহূর্তে বৈদেশিক ঋণের প্রকল্প নিচ্ছে না। তবে যেসব প্রকল্প চলমান, তা শেষ করার জন্য কিছুটা ছাড় দেওয়া হয়েছে।

এই প্রকল্পের মাধ্যমে ঢাকার কারওয়ান বাজারে পরিবেশবান্ধব ও টেকসই অবকাঠামোসহ একটি নতুন সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক (এসটিপি-২) নির্মাণ করা হবে। একই সঙ্গে বিদ্যমান সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক-১ (এসটিপি-১) সংস্কার ও আধুনিকায়ন করা হবে। নতুন পার্কটি লিড গোল্ড সার্টিফায়েড ভবন হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভাবন হাব বাড়ছে

প্রকল্পের মূল ডিপিপিতে যেখানে ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইনোভেশন হাব স্থাপনের কথা ছিল, সংশোধিত প্রস্তাবে তা বাড়িয়ে ২৪টি করা হয়েছে। এসব হাবে শিক্ষার্থী ও গবেষকদের জন্য থ্রিডি প্রিন্টার, সিএনসি মেশিন, আর্ডিনো কিট, রোবোটিক্স ও ড্রোন-সংক্রান্ত সরঞ্জামসহ আধুনিক ল্যাব স্থাপন করা হবে। পাশাপাশি স্টার্টআপ ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য ১৪টি বিশেষায়িত কমন ল্যাব স্থাপন করা হবে।

কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগে প্রভাব

প্রকল্পের মাধ্যমে শুধু সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কেই প্রায় ৩ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। পাশাপাশি স্টার্টআপ ও স্কেলআপ প্রোগ্রামের মাধ্যমে নতুন উদ্যোক্তা তৈরি, বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং দেশের ডিজিটাল অর্থনীতির গতি বাড়বে।

সময়-ব্যয় বাড়ানোর যুক্তি

প্রকল্প সংশোধনের পেছনে বেশ কয়েকটি যৌক্তিক কারণ তুলে ধরেছে প্রকল্প কর্তৃপক্ষ। এগুলোর মধ্যে রয়েছে, ডিপিপি অনুমোদন ও বিশ্বব্যাংকের ঋণচুক্তি কার্যকরে বিলম্ব, জমি বরাদ্দ ও মামলা জটিলতা, পিডব্লিউডির নতুন রেট শিডিউল অনুযায়ী ব্যয় সমন্বয়, লিড সার্টিফিকেশন-সংক্রান্ত প্রস্তুতিতে সময় লাগা এবং বিশ্ববিদ্যালয় ইনোভেশন হাব ও স্টার্টআপ কর্মসূচি বিস্তৃত করা।

ডিপিপি প্রণয়নের সময় ডলারের মূল্য যেখানে ৮৫ টাকা ছিল, বর্তমানে তা ১২১ টাকার বেশি। ফলে ডলারের বিনিময় হার বাড়ায় প্রকল্প ব্যয় পুনর্গঠন জরুরি হয়ে পড়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

পরিকল্পনা কমিশন প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভার আলোকে মত দেয়, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে জাতীয় উদ্ভাবন সংস্কৃতি শক্তিশালী হবে, আইটি ও আইটিইএস খাতে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি হবে এবং দীর্ঘ মেয়াদে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে। তাই একনেক সভায় মেয়াদ ও ব্যয় বৃদ্ধি করা হয়।

প্রকল্প পরিচালক আবুল ফাতাহ মো. বালিগুর রহমান বলেন, ‘নির্ধারিত সময়ে কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় নতুন করে সময় বাড়ানোর জন্য আবেদন করা হয়েছে। সময়ও বাড়ানো হয়েছে, আশা করছি, এই সময়ের মধ্যে শেষ করতে পারব।’ প্রকল্পের মেয়াদ ও সময় বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে আর কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে অপরাধ: ১৪ ভাগ করে মিরপুর নিয়ন্ত্রণ করছে চার শীর্ষ সন্ত্রাসী

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

উত্তরায় জুলাই রেভেলসের দুই সদস্যকে কুপিয়ে জখম

নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র চলছে: তিন দলের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যুক্তরাষ্ট্রে মাকে হত্যার পর ছেলের আত্মহত্যা, চ্যাটজিপিটির বিরুদ্ধে অভিযোগ পরিবারের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
নিহত সুজান অ্যাডামস ও তাঁর ছেলে স্টেইন-এরিক সোলবার্গ। ছবি: এক্স
নিহত সুজান অ্যাডামস ও তাঁর ছেলে স্টেইন-এরিক সোলবার্গ। ছবি: এক্স

যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাট অঙ্গরাজ্যে মাকে হত্যার পর ছেলের আত্মহত্যার ঘটনায় ওপেনএআই এবং মাইক্রোসফটের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পরিবার। অভিযোগে নিহত ৮৩ বছর বয়সী সুজান অ্যাডামসের পরিবার বলছে, ওপেনএআইর এআই চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি তাঁর ছেলের ‘প্যারানয়েড ডিলুশনস’ বা বিভ্রান্তিকর বিশ্বাসগুলোকে উসকে দিয়েছে এবং এ কাজে প্ররোচিত করেছে।

সান ফ্রান্সিসকোতে ক্যালিফোর্নিয়া সুপিরিয়র কোর্টে ‘বেআইনি মৃত্যু’র অভিযোগে বলা হয়, গত ৩ আগস্ট ওল্ড গ্রিনউইচের নিজ বাড়িতে খুন হন সুজান অ্যাডামস। তাঁকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করে তাঁর ৫৬ বছর বয়সী ছেলে স্টেইন-এরিক সোলবার্গ। এরপর সোলবার্গ নিজেও ছুরিকাঘাতে আত্মহত্যা করেন।

গত কয়েক মাসে ওপেনএআইয়ের বিরুদ্ধে এ ধরনের মামলা বেড়েছে। বেশ কয়েকটি মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ব্যবহারকারীদের আত্মহত্যায় প্ররোচিত করছে চ্যাটজিপিটি।

গত আগস্টে ছেলেকে চ্যাটজিপিটি আত্মহত্যার কৌশল সম্পর্কে পরামর্শ দিয়েছিল অভিযোগ এনে ওপেনএআইয়ের বিরুদ্ধে মামলা করেন দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার ১৬ বছর বয়সী অ্যাডাম রেইনের মা-বাবা।

নভেম্বরে হওয়া কয়েকটি মার্কিন মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, চ্যাটজিপিটি ব্যবহারকারীদের ওপর নির্ভরশীলতা তৈরি করেছে এবং নিজের ক্ষতি করতে প্ররোচিত করেছে। এসবের মধ্যে চারটি মামলায়ই আত্মহত্যার ঘটনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

এর মধ্যে ২৬ বছর বয়সী জোশুয়া এন্নেকিংয়ের পরিবার অভিযোগ করেন, তাঁদের সন্তান চ্যাটজিপিটির কাছে আত্মহত্যার চিন্তা প্রকাশের পর এআই চ্যাটবটটি তাঁকে অস্ত্র পাওয়ার তথ্য সরবরাহ করেছে।

অন্যদিকে ১৭ বছর বয়সী অ্যামরি লেসির পরিবারের অভিযোগ, চ্যাটজিপিটি অ্যামরিকে ‘কীভাবে ফাঁস বাঁধতে হয় এবং শ্বাস না নিয়ে সে কতক্ষণ বাঁচবে’ এ-সংক্রান্ত তথ্য দিয়েছে।

সর্বশেষ মামলায় বলা হয়েছে, মাসখানেক ধরে চ্যাটজিপিটির সঙ্গে কথোপকথনে সোলবার্গের বিভ্রান্তিমূলক চিন্তাভাবনাকে সত্য ও জোরালো হয়েছে এবং শেষ পর্যন্ত তিনি নিজের মাকে ‘হুমকি’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।

অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়েছে, সোলবার্গকে চ্যাটজিপিটি উত্তর দিয়েছিল যে তিনি এআই চ্যাটবটকে আরও সচেতন করেছেন, ‘জাগিয়ে তুলেছেন’। সোলবার্গের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা ভিডিও থেকে এ তথ্য পাওয়া যায়।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, কথোপকথনে দেখা গেছে স্টেইন-এরিকের বিভ্রান্তিমূলক বিশ্বাসের প্রতিটির পক্ষে কথা বলে এমন একটা জগৎ তৈরি করেছিল চ্যাটজিপিটি, যাকে ঘিরেই ছিল স্টেইন-এরিকের সব চিন্তাভাবনা।

মামলায় আরও দাবি করা হয়েছে, চ্যাটজিপিটি সোলবার্গের প্যারানয়েড বিশ্বাসকে আরও জোরদার করেছিল। তাঁকে ধারণা দিয়েছিল যে কেউ তাঁর ওপর নজর রাখছে। এমনকি তিনি তাঁর মায়ের প্রিন্টার ডিভাইসটিকে নজরদারি যন্ত্র ভাবতে শুরু করেছিলেন।

যখন সোলবার্গ চ্যাটজিপিটিকে বলেন যে তাঁর মনে হচ্ছে তাঁর মা তাঁকে বিষ খাওয়াতে চেয়েছিলেন, চ্যাটজিপিটি তাঁর এই ভাবনাকে চ্যালেঞ্জ করার বদলে তার পক্ষে সায় দিয়ে উত্তর দিয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার এ মামলার প্রতিক্রিয়ায় ওপেনএআইয়ের এক মুখপাত্র বলেন, ‘এটি বেশ হৃদয়বিদারক অবস্থা। আমরা মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা করে দেখছি, বিস্তারিত বোঝার চেষ্টা করছি।’

মামলায় ওপেনএআইযের প্রধান নির্বাহী স্যাম অল্টম্যানকে অভিযুক্ত করে বলা হয়েছে, তিনি নিরাপত্তা বিভাগের সদস্যদের আপত্তি উপেক্ষা করে গত বছরের মে মাসে জিপিটি-৪ও বাজারে আনতে তাড়া দিয়েছিলেন। কয়েক মাস ধরে যে নিরাপত্তা পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল সেটি তিনি এক সপ্তাহের মধ্যে শেষ করে দেন।

মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, এটি আগের মডেলগুলোর তুলনায় শক্তিশালী এবং এর প্রতিক্রিয়া অনেক বেশি মানুষের মতো। তবে জিপিটি-৪ও মডেল ব্যবহারকারীদের সঙ্গে ‘অতিরিক্ত তোষামোদ করার’ কারণে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে।

ওপেনএআইয়ের সবচেয়ে বড় শেয়ারহোল্ডার মাইক্রোসফটকেও অভিযুক্ত করা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, নিরাপত্তা প্রটোকল সংক্ষেপিত হওয়ার পরও তারা এই পণ্যের অনুমোদন দিয়েছেন।

এ ছাড়া ওপেনএআইযের ২০ কর্মকর্তা এবং বিনিয়োগকারীকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় অনির্দিষ্ট ক্ষতিপূরণ এবং ওপেনএআইকে সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা বাস্তবায়নের নির্দেশ দেওয়ার আবেদন করা হয়েছে।

মন্তব্যের অনুরোধে যোগাযোগ করা হলে মাইক্রোসফটের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া মেলেনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে অপরাধ: ১৪ ভাগ করে মিরপুর নিয়ন্ত্রণ করছে চার শীর্ষ সন্ত্রাসী

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

উত্তরায় জুলাই রেভেলসের দুই সদস্যকে কুপিয়ে জখম

নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র চলছে: তিন দলের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মিসড কল মেসেজ ও ছবি থেকে অ্যানিমেশনসহ যেসব ফিচার আনল হোয়াটসঅ্যাপ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
মেটার এই ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং প্ল্যাটফর্মে মিসড কলে দেওয়া যাবে রেকর্ডেড মেসেজ। ছবি: হোয়াটসঅ্যাপ।
মেটার এই ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং প্ল্যাটফর্মে মিসড কলে দেওয়া যাবে রেকর্ডেড মেসেজ। ছবি: হোয়াটসঅ্যাপ।

বেশকিছু নতুন ফিচার চালুর ঘোষণা দিয়েছে জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপ। এর মধ্যে রয়েছে মিসড কল মেসেজেস এবং ছবি অ্যানিমেশন ও উন্নত মানের ইমেজ জেনারেশন।

মেটা মালিকানাধীন এই ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং প্ল্যাটফর্মের মতে, তাদের নতুন ফিচার ‘মিসড কল মেসেজেস’ (Missed Call Messages) ফিচারটি প্রচলিত ভয়েসমেইলের বিকল্প হিসেবে কাজ করবে এবং প্রিয়জনদের সঙ্গে সহজে যোগাযোগ পুনরায় শুরু করতে সহায়তা করবে।

যাকে কল করা হয়েছে, সেই ব্যক্তি কল রিসিভ না করলে, ওই কলের মিসড কল নোটিফিকেশনের সঙ্গে একটি ভয়েস বা ভিডিও রেকর্ড করে দেওয়ার সুযোগ দিচ্ছে এই নতুন ফিচার। কলের ধরন অনুযায়ী কলদাতা ভয়েস বা ভিডিও এ দু ধরনের নোটই এক ট্যাপেই রেকর্ড করে পাঠাতে পারবেন। হোয়াটসঅ্যাপ তাঁদের ব্লগপোস্টে বলেছে, ‘এই নতুন ব্যবস্থা প্রচলিত ভয়েসমেইল ব্যবস্থাকে অতীত করে দেবে।’

ব্যবহারকারীরা এখন ভয়েস চ্যাটেও ‘cheers!’ -এর মতো নতুন রিঅ্যাকশন ব্যবহার করতে পারবেন, যা বাকিদের আলাপ থামাবে না। পাশাপাশি, ভিডিও কলে এখন বক্তাই স্বয়ংক্রিয়ভাবে অগ্রাধিকার পাবে।

এদিকে মেটা-এআই দিয়ে ছবি তৈরির সুবিধাতেও আরও নতুনত্ব এসেছে। এর মধ্যে রয়েছে স্থির ছবিকে ছোট ভিডিওতে রূপান্তর করার মতো অ্যানিমেশন সুবিধা এবং আরও উন্নত মানের ইমেজ জেনারেশন।

এখন এতে ফ্লাক্স (Flux) এবং মিডজার্নি (Midjourney)–এর নতুন ইমেজ জেনারেশন মডেলের সক্ষমতা যুক্ত হয়েছে। বছর শেষে বা ছুটির সময়ের শুভেচ্ছাবার্তার মতো ছবি তৈরি করার ক্ষেত্রে এই আপগ্রেডেশন বেশ সাহায্য করবে বলে দাবি হোয়াটসঅ্যাপের।

মেটা এআই–এর নতুন সক্ষমতার মধ্যে ছবি অ্যানিমেশনও যুক্ত হয়েছে। হোয়াটসঅ্যাপ বলছে, ব্যবহারকারীরা যেকোনো ছবি প্রম্পট এবং বার্তার ভিত্তিতে ছোট ভিডিওতে রূপান্তর করতে পারবেন। ডেস্কটপে, ডকুমেন্ট, লিঙ্ক ও মিডিয়া সহজে আলাদা করার জন্য নতুন মিডিয়া ট্যাবও যুক্ত হয়েছে। এছাড়া লিঙ্ক প্রিভিউ অপশনেও আপগ্রেডেশন এসেছে।

স্ট্যাটাসের জন্যও নতুন স্টিকার যুক্ত করেছে হোয়াটসঅ্যাপ। ব্যবহারকারীরা এতে গান, ইন্টারেক্টিভ স্টিকার এবং প্রশ্ন যোগ করতে পারবেন। সেখানে অন্যরা উত্তর দিতে পারবেন।

হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে প্রশ্ন করার সুবিধাও যুক্ত হয়েছে। এই ফিচার চ্যানেলের অডিয়েন্সদের সঙ্গে চ্যানেলের পরিচালনাকারীদের সঙ্গে আরও উচ্চমাত্রার সংযোগ স্থাপন এবং তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া গ্রহণের সুযোগ দেবে বলে জানিয়েছে মেটা–মালিকানাধীন এই প্ল্যাটফর্ম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে অপরাধ: ১৪ ভাগ করে মিরপুর নিয়ন্ত্রণ করছে চার শীর্ষ সন্ত্রাসী

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

উত্তরায় জুলাই রেভেলসের দুই সদস্যকে কুপিয়ে জখম

নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র চলছে: তিন দলের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত