Ajker Patrika

বিশ্বে প্রথম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আইন কার্যকর ইউরোপে, যা আছে এতে

আপডেট : ০২ আগস্ট ২০২৪, ২০: ৩৭
বিশ্বে প্রথম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আইন কার্যকর ইউরোপে, যা আছে এতে

বিশ্বে প্রথম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) আইন কার্যকর করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এআই-এর বিকাশ ও ব্যবহারে প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করবে যুগান্তকারী এই আইন। এর ফলে ইউরোপে বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে যুক্তরাষ্ট্রের টেক জায়ান্টগুলো। 

এআইকে নিয়ে আলাদাভাবে তৈরি আইনটি গত মে মাসে অনুমোদন দেয় ইইউ সদস্য রাষ্ট্র, আইনপ্রণেতা ও ইউরোপীয় কমিশন। এরপর গতকাল বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) আইনটি কার্যকর করেছে (ইইউ)। 

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) আইন কী, যা আছে এতে

এআই-এর নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের আইনগুলোর অন্যতম এই আইন। এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করবে। ২০২০ সালে প্রথম আইনটির কার্যকরের প্রস্তাব দেয় ইউরোপীয় কমিশন। 

প্রাথমিকভাবে আইনটির লক্ষ্য থাকবে বড় বড় মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানি। এসব কোম্পানিই সবচেয়ে উন্নত এআই সিস্টেমের প্রধান নির্মাতা ও ডেভেলপার। তবে এই আইনের আওতায় অন্যান্য ব্যবসায়িক কোম্পানিও পড়বে, এমনকি অপ্রযুক্তি কোম্পানিগুলোও। 

ইউরোপীয় ইউনিয়নজুড়ে এআই-এর ব্যাপক ও সামঞ্জস্যপূর্ণ নিয়ন্ত্রক কাঠামো নির্ধারণ করেছে আইনটি। সেই সঙ্গে প্রযুক্তিটি নিয়ন্ত্রণের জন্য ঝুঁকিভিত্তিক (ঝুঁকি চিহ্নিত করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সমাধান করা) পদ্ধতি প্রয়োগ করবে। 

ব্রাসেলসের আইন সংস্থা লিঙ্কলেটার্সের ট্যানগুই ভ্যান ওভারস্ট্রেটেন বলেছেন, ‘এই ধরনের আইন বিশ্বে এটিই প্রথম। এটি ব্যবসার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। যারা এআই সিস্টেম ডেভেলপ করছে ও নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে এগুলো শুধু ব্যবহার করছে, তাদের উপর বিশেষ প্রভাব পড়বে।’ 

এআই নিয়ন্ত্রণে একটি ঝুঁকিভিত্তিক পদ্ধতি প্রয়োগ করবে আইনটি। এর অর্থ হল— সমাজের জন্য ঝুঁকির স্তরের ওপর নির্ভর করে প্রযুক্তির বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন ভিন্নভাবে নিয়ন্ত্রিত করা হবে। 

ইউরোপীয় ইউনিয়নের আইনগুলোর একটি অংশ হলো এআই আইন। ছবি: সিম্পল লার্ন 

উদাহরণস্বরূপ, এআই অ্যাপ্লিকেশনগুলো ‘উচ্চ-ঝুঁকি’ হিসেবে বিবেচিত হলে এআই আইনের অধীনে কঠোর বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হবে। এই ধরনের বাধ্যবাধকতাগুলোর মধ্যে আছে— পর্যাপ্ত ঝুঁকি মূল্যায়ন ও প্রশমন ব্যবস্থা, পক্ষপাতের ঝুঁকি কমানোর জন্য উচ্চ-মানের প্রশিক্ষণ ডেটাসেট তৈরি, কর্মকাণ্ডের নিয়মিত তথ্য সংগ্রহ করা ও সম্মতি মূল্যায়নের জন্য বিশদ ডকুমেন্টেশন বাধ্যতামূলক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শেয়ার করতে হবে। 

‘উচ্চ-ঝুঁকি’এর এআই সিস্টেমের মধ্যে আছে- স্বয়ংক্রিয় যানবাহন, মেডিকেল ডিভাইস, লোন নেওয়ার সিস্টেম, শিক্ষাগত গ্রেডিং সিস্টেম ও দূরবর্তী বায়োমেট্রিক শনাক্তকরণ সিস্টেম। 

ঝুঁকির স্তরের পরিপ্রেক্ষিতে এআইয়ের কোনো অ্যাপ্লিকেশনকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে গণ্য করা হলে তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। 

যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর ওপর এর প্রভাব

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি খাতে নেতৃত্ব দিতে পারে এমন কোম্পানিগুলোর সঙ্গে অংশীদারত্ব ও ব্যাপক পরিমাণে বিনিয়োগ করছে মাইক্রোসফট, গুগল, আমাজন, অ্যাপল ও মেটার মতো যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি টেক জায়ান্টগুলো। 

এআই প্রযুক্তির বিকাশ ও প্রশিক্ষণের জন্য বিশাল কম্পিউটিং অবকাঠামো প্রয়োজন। এজন্য মাইক্রোসফটের আজুর, আমাজন ওয়েব সার্ভিস ও গুগল ক্লাউডের মতো ক্লাউড প্ল্যাটফর্মের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। প্রথমেই নতুন আইনের অধীনে এই ধরনের বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো নিয়ে পর্যবেক্ষণ করা হবে। 

সফটওয়্যার ফার্ম এপিয়ার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট চার্লি থম্পসন বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরে এআই আইনের প্রভাব পড়বে। ইইউতে কোনো কার্যক্রমের প্রভাব যে কোনো কোম্পানির জন্য প্রযোজ্য। অর্থাৎ যেখানেই থাকুন না কেন এআই আইন আপনার জন্য প্রযোজ্য হবে।’ 

চার্লি থম্পসন আরও বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে ক্রিয়াকলাপ ও ইইউ নাগরিকের ডেটা ব্যবহারের ক্ষেত্রে আইনটি আরও প্রযুক্তি কোম্পানিকে যাচাই-বাছাই করবে। 

আইনি কড়াকড়ি নিয়ে উদ্বেগের কারণে মেটা ইতিমধ্যে ইউরোপে এআই মডেলের কার্যক্রম সীমিত করেছে। তবে ইইউ এর নতুন আইনের কারণে এই পদক্ষেপ নেয়নি মেটা। 

এই মাসের শুরুতে মেটা বলে, এটি ইইউতে তার এলএলএএমএ মডেলগুলো চালু করবে না। ইউরোপের সাধারণ ডেটা সুরক্ষা প্রবিধান বা জিডিপিআর মেনে চলছে কিনা তা নিয়ে অনিশ্চয়তার থাকায় মেটা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। 

জিডিপিআর লঙ্ঘন করতে পারে এমন উদ্বেগের কারণে এআই মডেল প্রশিক্ষণে কোম্পানিটি ইইউ-এর ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের পোস্টগুলো ব্যবহার বন্ধ করেছে। 

ইইউতে জেনারেটিভ এআইকে যেভাবে দেখছে 

এআই আইনে জেনারেটিভ এআইকে ‘জেনারেল পারপাস এআই সিস্টেম-জিপিএআইএ’ বা সাধারণ উদ্দেশ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই লেবেলের আওতায় এমন টুলগুলোকে বোঝায় যা বিস্তৃত পরিসরে মানুষের মতো বা মানুষের চেয়ে ভালো কাজ করতে পারে। সাধারণ-উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা মডেলগুলোর মধ্যে রয়েছে ওপেনএআইয়ের জিপিটি, গুগলের জেমিনি ও এনথ্রপিকের ক্লড। তবে এসব মডেলের মধ্যেই আইনটি সীমাবদ্ধ নয়। 

এসব সিস্টেমের জন্য কঠোর নীতিমালা আরোপ করে এই আইন। যেমন— ইইউ এর কপিরাইট আইনকে সম্মান করা, মডেলগুলোকে কীভাবে প্রশিক্ষিত করা হয় সে সম্পর্কে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা, প্রযুক্তিগুলো নিয়মিত পরীক্ষা করা ও পর্যাপ্ত সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। যদিও সমস্ত এআই মডেলকে সমানভাবে বিবেচনা করা হয় না। 

এআই প্রযুক্তির ডেভেলপাররা বলেন, ‘জনসাধারণের জন্য বিনামূল্যে ও উপযোগী এআই অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করতে ব্যবহার করা যেতে পারে এমন ওপেন সোর্স মডেলগুলোকে চিহ্নিত করতে হবে ইইউকে। যেগুলো খুব কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত হবে না।’ 

এই ধরনের ওপেনসোর্স মডেল হলো মেটার এএলএএমএ, স্ট্যাবিলিটি এআই এর স্টাবল ডিফিউশন ও মিস্ট্রালের ৭ বি। 

ওপেন সোর্স জেনারেটিভ এআই মডেলের জন্য কিছু ছাড় দেওয়া হবে। তবে এই ছাড় পাওয়ার জন্য ওপেন সোর্স প্রদানকারীদের মডেলগুলোর আর্কিটেকচার সর্বজনীনভাবে অ্যাকসেসের সুবিধা দিতে হবে। মডেলগুলোর ‘অ্যাকসেস, ব্যবহার, পরিবর্তন ও বিতরণ’ এর সুবিধা দিতে হবে। 

এআই আইন অনুসারে, যেসব ওপেন সোর্স মডেলগুলো ‘সিস্টেমিক’ ঝুঁকি তৈরি করে, সেগুলো ছাড়ের জন্য গণনা করা হবে না। 

এআই আইন ভঙ্গ করলে যা হবে 

ইইউয়ের এআই আইন ভঙ্গ করলে কোম্পানিগুলোর ৭.৫ মিলিয়ন (৭৫ লাখ) ইউরো থেকে ৩৫ মিলিয়ন (৩ কোটি ৫০ লাখ) ইউরো বা বিশ্বব্যাপী বার্ষিক আয়ের ১ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ৭ শতাংশ থেকে জরিমানা হতে পারে। আইনের কতটুকু লঙ্ঘন করা হয়েছে তার উপর কোম্পানির জরিমানা নির্ভর করবে। 

এই জরিমানা জিডিপিআর বা ইউরোপের ডিজিটাল প্রাইভেসি আইনের চেয়ে বেশি। জিডিপিআর আইন লঙ্ঘন করলে কোম্পানিগুলো ২ কোটি ডলার বা বিশ্বব্যাপী বার্ষিক আয়ের ৪ শতাংশ জরিমানা হতে পারে। 

সাধারণ-উদ্দেশ্য এআই সিস্টেমসহ এআই মডেলগুলোর তত্ত্বাবধান ইউরোপীয় এআই অফিসের অধীনে পড়বে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি প্রতিষ্ঠা করে ইউরোপীয় কমিশন। 

ফাইন্যান্সিয়াল টেকনোলজি সংস্থার সম্পদ ব্যবস্থাপনার গ্লোবাল হেড জামিল জিভা বলেন, ‘আইনের মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার করতে চাইলে কোম্পানিগুলোকে উল্লেখযোগ্য জরিমানা আরোপ করতে হবে।’ 

অবশেষে এআই আইন কার্যকর হলেও আইনটির বেশির ভাগ বিধান কমপক্ষে ২০২৬ সাল পর্যন্ত কার্যকর হবে না। এআই আইন কার্যকর হওয়ার ১২ মাস পরে সাধারণ-উদ্দেশ্য সিস্টেমের ওপর বিধিনিষেধ শুরু হবে। 

জেনারেটিভ এআই সিস্টেমগুলো বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের উপযোগী। তবে ইইউতে ওপেনেআইয়ের চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি ও গুগলের জেমিনিকে নতুন আইন মেনে চলার জন্য ৩৬ মাসের সময় বা ‘ট্রানজিশন পিরিয়ড’ দেওয়া হয়েছে। 

তথ্যসূত্র: সিএনবিসি

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গুগলের নতুন ফিচার: সাধারণ হেডফোনই হবে রিয়েল–টাইম অনুবাদক

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
এর মাধ্যমে ৭০টিরও বেশি ভাষায় নির্বিঘ্নে অডিও অনুবাদ পাওয়া যাবে। ছবি: সংগৃহীত
এর মাধ্যমে ৭০টিরও বেশি ভাষায় নির্বিঘ্নে অডিও অনুবাদ পাওয়া যাবে। ছবি: সংগৃহীত

গুগল ট্রান্সলেটে একটি বড় ও গুরুত্বপূর্ণ আপডেট এনেছে গুগল। এই ফিচারে যুক্ত করা হয়েছে রিয়েল-টাইম ট্রান্সলেটর, যা সরাসরি হেডফোনের মাধ্যমে ব্যবহার করা যাবে।

গত বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) বেটা সংস্করণে চালু হওয়া এই ফিচারটি ব্যবহার করতে শুধু একটি উপযোগী অ্যান্ড্রয়েড ফোন এবং গুগল ট্রান্সলেট অ্যাপই যথেষ্ট। এর মাধ্যমে ৭০টিরও বেশি ভাষায় নির্বিঘ্নে অডিও অনুবাদ পাওয়া যাবে।

গুগল জানিয়েছে, তারা তাদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) টুল জেমিনি ব্যবহার করে বাগধারা, প্রবাদ–প্রবচন, স্থানীয় অভিব্যক্তি বা স্ল্যাংয়ের মতো সূক্ষ্ম অর্থবোধক বাক্যাংশের অনুবাদ আরও উন্নত করার চেষ্টা করেছে।

এক বিবৃতিতে কোম্পানিটি বলেছে, ‘আমরা টেক্সট অনুবাদের জন্য গুগল ট্রান্সলেটে জেমিনির সবচেয়ে শক্তিশালী অনুবাদ সক্ষমতা যুক্ত করছি। হেডফোনের মাধ্যমে লাইভ স্পিচ–টু–স্পিচ অনুবাদের একটি বেটা অভিজ্ঞতা চালু করছি এবং অনুশীলন ও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য অ্যাপে নতুন ভাষা যুক্ত করছি।’

এর আগে এই সুবিধা শুধু পিক্সেল বাডসের জন্য সীমিত ছিল। তবে নতুন বেটা সংস্করণের মাধ্যমে যেকোনো হেডফোনকেই একমুখী রিয়েল–টাইম অনুবাদ ডিভাইসে রূপান্তর করা যাবে।

গুগল জানিয়েছে, দৈনন্দিন যোগাযোগের নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এই ফিচারটি কার্যকর একটি টুল হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। কথোপকথনের সময় ভাষাগত দূরত্ব ঘোচানো, ভ্রমণের সময় পাবলিক এনাউন্সমেন্ট বোঝা কিংবা বিদেশি ভাষার টেলিভিশন অনুষ্ঠান বা অনলাইন কনটেন্ট অনুসরণের ক্ষেত্রে এটি সহায়ক হবে।

গুগলের সার্চ ভার্টিক্যালস বিভাগের প্রোডাক্ট ম্যানেজমেন্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট রোজ ইয়াও বলেন, ‘আপনি যদি ভিন্ন কোনো ভাষায় কথা বলতে চান, বিদেশে অবস্থানকালে কোনো ভাষণ বা বক্তৃতা শুনতে চান, কিংবা অন্য ভাষার টিভি অনুষ্ঠান বা সিনেমা দেখতে চান, তাহলে এখন শুধু হেডফোন লাগিয়ে ট্রান্সলেট অ্যাপ খুলে লাইভ ট্রান্সলেট-এ ট্যাপ করলেই আপনার পছন্দের ভাষায় রিয়েল–টাইম অনুবাদ শুনতে পারবেন।’

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও ভারতে চালু হচ্ছে এই বেটা সংস্করণটি। কোম্পানি জানিয়েছে, ২০২৬ সালে আইওএস এবং আরও বেশি দেশে এই সুবিধা সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে। পাশাপাশি, কথা বলার অনুশীলনের ভিত্তিতে ব্যবহারকারীদের সহায়ক পরামর্শ দিতে উন্নত ফিডব্যাক ব্যবস্থাও যুক্ত করা হচ্ছে।

এ ছাড়া ব্যবহারকারীদের দৈনন্দিন শেখার অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ এবং ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে স্ট্রিক ট্র্যাকিং ফিচারও চালু করছে গুগল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ডিজিটাল উদ্যোক্তা প্রকল্প: পাঁচ বছরে অর্ধেক কাজ, ব্যয় বাড়ল ১৭৮ কোটি

  • ৫ বছরের মেয়াদ শেষ, আড়াই বছর বৃদ্ধি
  • ৩৫৩ কোটি টাকার প্রকল্প ব্যয় ৫৩১ কোটিতে উন্নীত
  • প্রাথমিকভাবে সরকারের অর্থায়ন ৯৮ কোটি, বিশ্বব্যাংকের ঋণ ২৫৫ কোটি টাকা
মাহফুজুল ইসলাম, ঢাকা
ডিজিটাল উদ্যোক্তা প্রকল্প: পাঁচ বছরে অর্ধেক কাজ, ব্যয় বাড়ল ১৭৮ কোটি

বৈদেশিক ঋণে নেওয়া প্রকল্পের ৫ বছরের মেয়াদ শেষ হলেও কাজ এখনো অর্ধেক বাকি। এ অবস্থায় আবারও ঋণ করে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে আড়াই বছর। এতে খরচ বাড়ছে আরও ৫০ শতাংশ। প্রকল্পটির নাম ‘ডিজিটাল উদ্যোক্তা ও উদ্ভাবন ইকোসিস্টেম উন্নয়ন’।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, বাংলাদেশে সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক স্থাপন এবং উদ্ভাবনী সংস্কৃতি তৈরির মাধ্যমে বেসরকারি বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং টেকসই উন্নয়নকে উৎসাহিত করতে ২০২১ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন করা হয়। ৩৫৩ কোটি ৬ লাখ টাকার এই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর। পাঁচ বছর মেয়াদি এই প্রকল্পে সরকারের অর্থায়ন ছিল ৯৮ কোটি ৬ লাখ টাকা। আর বিশ্বব্যাংকের ঋণের পরিমাণ ছিল ২৫৫ কোটি টাকা।

চলতি বছরের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের নেওয়া প্রকল্পটির কাজ শেষ হয়েছে মাত্র ৫০ শতাংশ। আর্থিক ব্যয় হয়েছে ১২১ কোটি ৫০ লাখ ৩৬ হাজার টাকা বা ৩৪ দশমিক ৪১ শতাংশ।

নির্ধারিত সময়ে কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় ২ বছর ৬ মাস বৃদ্ধি করে প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৮ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার সর্বশেষ একনেক সভায় সময়ের সঙ্গে বৈদেশিক ঋণের মাধ্যমে আরও ১৭৮ কোটি টাকা ব্যয় বাড়িয়েছে। অর্থাৎ ৩৫৩ কোটি টাকার প্রকল্পের ব্যয় বাড়িয়ে ৫৩১ কোটি টাকা অনুমোদন করা হয়েছে। এর মধ্যে বৈদেশিক ঋণ ৪৩৩ কোটি ১২ লাখ টাকা বা ৮১ দশমিক ৫৪ শতাংশ।

অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, দেশি ও বিদেশি ঋণের পরিমাণ ইতিমধ্যে উচ্চমাত্রায় পৌঁছেছে। একদিকে ঋণ নিয়ে বড় বড় প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে, অন্যদিকে সেই প্রকল্পগুলোর মেয়াদ বাড়াতে আবার নতুন করে ঋণ নেওয়া হচ্ছে, যা দীর্ঘ মেয়াদে অর্থনীতির ওপর চাপ বাড়াচ্ছে।

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, জনগুরুত্বপূর্ণ ছাড়া বৈদেশিক ঋণে সরকারের প্রকল্প নেওয়া উচিত নয়। এসব প্রকল্প নেওয়ার আগে সরকারের আরও বেশি সচেতন হওয়া উচিত।

তবে প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে অনেক ‘হিসাবি’ নীতি অনুসরণ করা হচ্ছে বলে দাবি সরকারের। এ বিষয়ে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, সরকার এই মুহূর্তে বৈদেশিক ঋণের প্রকল্প নিচ্ছে না। তবে যেসব প্রকল্প চলমান, তা শেষ করার জন্য কিছুটা ছাড় দেওয়া হয়েছে।

এই প্রকল্পের মাধ্যমে ঢাকার কারওয়ান বাজারে পরিবেশবান্ধব ও টেকসই অবকাঠামোসহ একটি নতুন সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক (এসটিপি-২) নির্মাণ করা হবে। একই সঙ্গে বিদ্যমান সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক-১ (এসটিপি-১) সংস্কার ও আধুনিকায়ন করা হবে। নতুন পার্কটি লিড গোল্ড সার্টিফায়েড ভবন হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভাবন হাব বাড়ছে

প্রকল্পের মূল ডিপিপিতে যেখানে ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইনোভেশন হাব স্থাপনের কথা ছিল, সংশোধিত প্রস্তাবে তা বাড়িয়ে ২৪টি করা হয়েছে। এসব হাবে শিক্ষার্থী ও গবেষকদের জন্য থ্রিডি প্রিন্টার, সিএনসি মেশিন, আর্ডিনো কিট, রোবোটিক্স ও ড্রোন-সংক্রান্ত সরঞ্জামসহ আধুনিক ল্যাব স্থাপন করা হবে। পাশাপাশি স্টার্টআপ ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য ১৪টি বিশেষায়িত কমন ল্যাব স্থাপন করা হবে।

কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগে প্রভাব

প্রকল্পের মাধ্যমে শুধু সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কেই প্রায় ৩ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। পাশাপাশি স্টার্টআপ ও স্কেলআপ প্রোগ্রামের মাধ্যমে নতুন উদ্যোক্তা তৈরি, বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং দেশের ডিজিটাল অর্থনীতির গতি বাড়বে।

সময়-ব্যয় বাড়ানোর যুক্তি

প্রকল্প সংশোধনের পেছনে বেশ কয়েকটি যৌক্তিক কারণ তুলে ধরেছে প্রকল্প কর্তৃপক্ষ। এগুলোর মধ্যে রয়েছে, ডিপিপি অনুমোদন ও বিশ্বব্যাংকের ঋণচুক্তি কার্যকরে বিলম্ব, জমি বরাদ্দ ও মামলা জটিলতা, পিডব্লিউডির নতুন রেট শিডিউল অনুযায়ী ব্যয় সমন্বয়, লিড সার্টিফিকেশন-সংক্রান্ত প্রস্তুতিতে সময় লাগা এবং বিশ্ববিদ্যালয় ইনোভেশন হাব ও স্টার্টআপ কর্মসূচি বিস্তৃত করা।

ডিপিপি প্রণয়নের সময় ডলারের মূল্য যেখানে ৮৫ টাকা ছিল, বর্তমানে তা ১২১ টাকার বেশি। ফলে ডলারের বিনিময় হার বাড়ায় প্রকল্প ব্যয় পুনর্গঠন জরুরি হয়ে পড়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

পরিকল্পনা কমিশন প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভার আলোকে মত দেয়, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে জাতীয় উদ্ভাবন সংস্কৃতি শক্তিশালী হবে, আইটি ও আইটিইএস খাতে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি হবে এবং দীর্ঘ মেয়াদে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে। তাই একনেক সভায় মেয়াদ ও ব্যয় বৃদ্ধি করা হয়।

প্রকল্প পরিচালক আবুল ফাতাহ মো. বালিগুর রহমান বলেন, ‘নির্ধারিত সময়ে কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় নতুন করে সময় বাড়ানোর জন্য আবেদন করা হয়েছে। সময়ও বাড়ানো হয়েছে, আশা করছি, এই সময়ের মধ্যে শেষ করতে পারব।’ প্রকল্পের মেয়াদ ও সময় বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে আর কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যুক্তরাষ্ট্রে মাকে হত্যার পর ছেলের আত্মহত্যা, চ্যাটজিপিটির বিরুদ্ধে অভিযোগ পরিবারের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
নিহত সুজান অ্যাডামস ও তাঁর ছেলে স্টেইন-এরিক সোলবার্গ। ছবি: এক্স
নিহত সুজান অ্যাডামস ও তাঁর ছেলে স্টেইন-এরিক সোলবার্গ। ছবি: এক্স

যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাট অঙ্গরাজ্যে মাকে হত্যার পর ছেলের আত্মহত্যার ঘটনায় ওপেনএআই এবং মাইক্রোসফটের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পরিবার। অভিযোগে নিহত ৮৩ বছর বয়সী সুজান অ্যাডামসের পরিবার বলছে, ওপেনএআইর এআই চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি তাঁর ছেলের ‘প্যারানয়েড ডিলুশনস’ বা বিভ্রান্তিকর বিশ্বাসগুলোকে উসকে দিয়েছে এবং এ কাজে প্ররোচিত করেছে।

সান ফ্রান্সিসকোতে ক্যালিফোর্নিয়া সুপিরিয়র কোর্টে ‘বেআইনি মৃত্যু’র অভিযোগে বলা হয়, গত ৩ আগস্ট ওল্ড গ্রিনউইচের নিজ বাড়িতে খুন হন সুজান অ্যাডামস। তাঁকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করে তাঁর ৫৬ বছর বয়সী ছেলে স্টেইন-এরিক সোলবার্গ। এরপর সোলবার্গ নিজেও ছুরিকাঘাতে আত্মহত্যা করেন।

গত কয়েক মাসে ওপেনএআইয়ের বিরুদ্ধে এ ধরনের মামলা বেড়েছে। বেশ কয়েকটি মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ব্যবহারকারীদের আত্মহত্যায় প্ররোচিত করছে চ্যাটজিপিটি।

গত আগস্টে ছেলেকে চ্যাটজিপিটি আত্মহত্যার কৌশল সম্পর্কে পরামর্শ দিয়েছিল অভিযোগ এনে ওপেনএআইয়ের বিরুদ্ধে মামলা করেন দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার ১৬ বছর বয়সী অ্যাডাম রেইনের মা-বাবা।

নভেম্বরে হওয়া কয়েকটি মার্কিন মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, চ্যাটজিপিটি ব্যবহারকারীদের ওপর নির্ভরশীলতা তৈরি করেছে এবং নিজের ক্ষতি করতে প্ররোচিত করেছে। এসবের মধ্যে চারটি মামলায়ই আত্মহত্যার ঘটনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

এর মধ্যে ২৬ বছর বয়সী জোশুয়া এন্নেকিংয়ের পরিবার অভিযোগ করেন, তাঁদের সন্তান চ্যাটজিপিটির কাছে আত্মহত্যার চিন্তা প্রকাশের পর এআই চ্যাটবটটি তাঁকে অস্ত্র পাওয়ার তথ্য সরবরাহ করেছে।

অন্যদিকে ১৭ বছর বয়সী অ্যামরি লেসির পরিবারের অভিযোগ, চ্যাটজিপিটি অ্যামরিকে ‘কীভাবে ফাঁস বাঁধতে হয় এবং শ্বাস না নিয়ে সে কতক্ষণ বাঁচবে’ এ-সংক্রান্ত তথ্য দিয়েছে।

সর্বশেষ মামলায় বলা হয়েছে, মাসখানেক ধরে চ্যাটজিপিটির সঙ্গে কথোপকথনে সোলবার্গের বিভ্রান্তিমূলক চিন্তাভাবনাকে সত্য ও জোরালো হয়েছে এবং শেষ পর্যন্ত তিনি নিজের মাকে ‘হুমকি’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।

অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়েছে, সোলবার্গকে চ্যাটজিপিটি উত্তর দিয়েছিল যে তিনি এআই চ্যাটবটকে আরও সচেতন করেছেন, ‘জাগিয়ে তুলেছেন’। সোলবার্গের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা ভিডিও থেকে এ তথ্য পাওয়া যায়।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, কথোপকথনে দেখা গেছে স্টেইন-এরিকের বিভ্রান্তিমূলক বিশ্বাসের প্রতিটির পক্ষে কথা বলে এমন একটা জগৎ তৈরি করেছিল চ্যাটজিপিটি, যাকে ঘিরেই ছিল স্টেইন-এরিকের সব চিন্তাভাবনা।

মামলায় আরও দাবি করা হয়েছে, চ্যাটজিপিটি সোলবার্গের প্যারানয়েড বিশ্বাসকে আরও জোরদার করেছিল। তাঁকে ধারণা দিয়েছিল যে কেউ তাঁর ওপর নজর রাখছে। এমনকি তিনি তাঁর মায়ের প্রিন্টার ডিভাইসটিকে নজরদারি যন্ত্র ভাবতে শুরু করেছিলেন।

যখন সোলবার্গ চ্যাটজিপিটিকে বলেন যে তাঁর মনে হচ্ছে তাঁর মা তাঁকে বিষ খাওয়াতে চেয়েছিলেন, চ্যাটজিপিটি তাঁর এই ভাবনাকে চ্যালেঞ্জ করার বদলে তার পক্ষে সায় দিয়ে উত্তর দিয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার এ মামলার প্রতিক্রিয়ায় ওপেনএআইয়ের এক মুখপাত্র বলেন, ‘এটি বেশ হৃদয়বিদারক অবস্থা। আমরা মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা করে দেখছি, বিস্তারিত বোঝার চেষ্টা করছি।’

মামলায় ওপেনএআইযের প্রধান নির্বাহী স্যাম অল্টম্যানকে অভিযুক্ত করে বলা হয়েছে, তিনি নিরাপত্তা বিভাগের সদস্যদের আপত্তি উপেক্ষা করে গত বছরের মে মাসে জিপিটি-৪ও বাজারে আনতে তাড়া দিয়েছিলেন। কয়েক মাস ধরে যে নিরাপত্তা পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল সেটি তিনি এক সপ্তাহের মধ্যে শেষ করে দেন।

মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, এটি আগের মডেলগুলোর তুলনায় শক্তিশালী এবং এর প্রতিক্রিয়া অনেক বেশি মানুষের মতো। তবে জিপিটি-৪ও মডেল ব্যবহারকারীদের সঙ্গে ‘অতিরিক্ত তোষামোদ করার’ কারণে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে।

ওপেনএআইয়ের সবচেয়ে বড় শেয়ারহোল্ডার মাইক্রোসফটকেও অভিযুক্ত করা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, নিরাপত্তা প্রটোকল সংক্ষেপিত হওয়ার পরও তারা এই পণ্যের অনুমোদন দিয়েছেন।

এ ছাড়া ওপেনএআইযের ২০ কর্মকর্তা এবং বিনিয়োগকারীকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় অনির্দিষ্ট ক্ষতিপূরণ এবং ওপেনএআইকে সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা বাস্তবায়নের নির্দেশ দেওয়ার আবেদন করা হয়েছে।

মন্তব্যের অনুরোধে যোগাযোগ করা হলে মাইক্রোসফটের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া মেলেনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মিসড কল মেসেজ ও ছবি থেকে অ্যানিমেশনসহ যেসব ফিচার আনল হোয়াটসঅ্যাপ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
মেটার এই ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং প্ল্যাটফর্মে মিসড কলে দেওয়া যাবে রেকর্ডেড মেসেজ। ছবি: হোয়াটসঅ্যাপ।
মেটার এই ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং প্ল্যাটফর্মে মিসড কলে দেওয়া যাবে রেকর্ডেড মেসেজ। ছবি: হোয়াটসঅ্যাপ।

বেশকিছু নতুন ফিচার চালুর ঘোষণা দিয়েছে জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপ। এর মধ্যে রয়েছে মিসড কল মেসেজেস এবং ছবি অ্যানিমেশন ও উন্নত মানের ইমেজ জেনারেশন।

মেটা মালিকানাধীন এই ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং প্ল্যাটফর্মের মতে, তাদের নতুন ফিচার ‘মিসড কল মেসেজেস’ (Missed Call Messages) ফিচারটি প্রচলিত ভয়েসমেইলের বিকল্প হিসেবে কাজ করবে এবং প্রিয়জনদের সঙ্গে সহজে যোগাযোগ পুনরায় শুরু করতে সহায়তা করবে।

যাকে কল করা হয়েছে, সেই ব্যক্তি কল রিসিভ না করলে, ওই কলের মিসড কল নোটিফিকেশনের সঙ্গে একটি ভয়েস বা ভিডিও রেকর্ড করে দেওয়ার সুযোগ দিচ্ছে এই নতুন ফিচার। কলের ধরন অনুযায়ী কলদাতা ভয়েস বা ভিডিও এ দু ধরনের নোটই এক ট্যাপেই রেকর্ড করে পাঠাতে পারবেন। হোয়াটসঅ্যাপ তাঁদের ব্লগপোস্টে বলেছে, ‘এই নতুন ব্যবস্থা প্রচলিত ভয়েসমেইল ব্যবস্থাকে অতীত করে দেবে।’

ব্যবহারকারীরা এখন ভয়েস চ্যাটেও ‘cheers!’ -এর মতো নতুন রিঅ্যাকশন ব্যবহার করতে পারবেন, যা বাকিদের আলাপ থামাবে না। পাশাপাশি, ভিডিও কলে এখন বক্তাই স্বয়ংক্রিয়ভাবে অগ্রাধিকার পাবে।

এদিকে মেটা-এআই দিয়ে ছবি তৈরির সুবিধাতেও আরও নতুনত্ব এসেছে। এর মধ্যে রয়েছে স্থির ছবিকে ছোট ভিডিওতে রূপান্তর করার মতো অ্যানিমেশন সুবিধা এবং আরও উন্নত মানের ইমেজ জেনারেশন।

এখন এতে ফ্লাক্স (Flux) এবং মিডজার্নি (Midjourney)–এর নতুন ইমেজ জেনারেশন মডেলের সক্ষমতা যুক্ত হয়েছে। বছর শেষে বা ছুটির সময়ের শুভেচ্ছাবার্তার মতো ছবি তৈরি করার ক্ষেত্রে এই আপগ্রেডেশন বেশ সাহায্য করবে বলে দাবি হোয়াটসঅ্যাপের।

মেটা এআই–এর নতুন সক্ষমতার মধ্যে ছবি অ্যানিমেশনও যুক্ত হয়েছে। হোয়াটসঅ্যাপ বলছে, ব্যবহারকারীরা যেকোনো ছবি প্রম্পট এবং বার্তার ভিত্তিতে ছোট ভিডিওতে রূপান্তর করতে পারবেন। ডেস্কটপে, ডকুমেন্ট, লিঙ্ক ও মিডিয়া সহজে আলাদা করার জন্য নতুন মিডিয়া ট্যাবও যুক্ত হয়েছে। এছাড়া লিঙ্ক প্রিভিউ অপশনেও আপগ্রেডেশন এসেছে।

স্ট্যাটাসের জন্যও নতুন স্টিকার যুক্ত করেছে হোয়াটসঅ্যাপ। ব্যবহারকারীরা এতে গান, ইন্টারেক্টিভ স্টিকার এবং প্রশ্ন যোগ করতে পারবেন। সেখানে অন্যরা উত্তর দিতে পারবেন।

হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে প্রশ্ন করার সুবিধাও যুক্ত হয়েছে। এই ফিচার চ্যানেলের অডিয়েন্সদের সঙ্গে চ্যানেলের পরিচালনাকারীদের সঙ্গে আরও উচ্চমাত্রার সংযোগ স্থাপন এবং তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া গ্রহণের সুযোগ দেবে বলে জানিয়েছে মেটা–মালিকানাধীন এই প্ল্যাটফর্ম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত