Ajker Patrika
সাক্ষাৎকার

‘আপনি কেন ভালো আছেন, আমি তাই অসুখী’

বাংলাদেশ দলের সিনিয়র সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দীন। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাংলাদেশ দলের সিনিয়র সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দীন জাতীয় দলে গত ডিসেম্বরে যুক্ত হওয়ার পর গত আট মাসে মুদ্রার দুটি পিঠই দেখে ফেলেছেন। জাতীয় দলের ধারাবাহিক ব্যর্থতায় সালাহ উদ্দীন সমালোচিত হয়েছেন। অথচ ঘরোয়া ক্রিকেটের সাফল্যে তিনি এত দিন শুধু প্রশংসা পেয়ে অভ্যস্ত ছিলেন। এসব নিয়েই গতকাল মাস্কো ক্রিকেট একাডেমিতে সালাহ উদ্দীন কথা বললেন আজকের পত্রিকার সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রানা আব্বাস

রানা আব্বাস, ঢাকা
আপডেট : ৩০ জুলাই ২০২৫, ১২: ০১

প্রশ্ন: গত ৮ মাসে জাতীয় দলের অভিজ্ঞতা কেমন হলো?

মোহাম্মদ সালাহ উদ্দীন: খুব বেশি পরিবর্তন হইনি। আমি আগের মতোই; যা ছিলাম, তা-ই আছি। এখন চ্যালেঞ্জ একটু বেশি। আগে মানুষের প্রত্যাশা কম ছিল, এখন বেশি। এটা স্বাভাবিক এবং তা হবেই। যেহেতু অনেক দিন হয়ে গেছে, আমরা বড় কোনো টুর্নামেন্টে ভালো করিনি। এটাই বড় চ্যালেঞ্জ।

প্রশ্ন: বিসিবির সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল আপনাকে ডেকেছিলেন। তিনি কী বললেন?

সালাহ উদ্দীন: এসব আসলে প্রকাশ্যে বলা যাবে না। আমার মনে হয় একটা ভালো দিক, যেকোনো পরিস্থিতিতে বোর্ড আমাকে ভালো সহায়তা করছে, যেন কাজের দিকে বেশি মনোযোগ রাখি। খেলায় তিনটা পার্ট থাকে। ক্রিকেটাররা খেলে, ম্যানেজমেন্ট আছে আর কর্মকর্তা আছে। সবকিছুর ওপর নির্ভর করে, আমাদের সামগ্রিক ক্রিকেটটা কীভাবে এগোবে। সমন্বয়টা যদি ঠিকমতো হয়, তাহলে হয়তো আমাদের ক্রিকেট এগোবে। এসব নিয়েই কথা হয়েছে। বোর্ড সভাপতি বুলবুল ভাই নিজেও ক্রিকেট প্লেয়ার ছিলেন। তিনি জানেন আসলে কী কী লাগবে। খুবই জ্ঞানী মানুষ। তাঁর ইচ্ছা আছে।

প্রশ্ন: বলা হচ্ছে, জাতীয় দলে আপনার মধুচন্দ্রিমা শেষ। এখন তাহলে আপনি কি কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি?

সালাহ উদ্দীন: ওভাবে চিন্তা করাটা ভুল হবে। এই আট মাসে আমরা হয়তো কিছু সাফল্য পেয়েছি। কিছু জায়গায় বেশি খারাপ করে ফেলছি। নির্দিষ্টভাবে বললে অনেক টেস্ট ম্যাচ আছে, আমরা কয়েক ঘণ্টা খারাপ খেলছি। তাতেই টেস্ট হেরে গেছি। আরব আমিরাতের সঙ্গে যে সিরিজটা হেরেছি, ওটা বড় ধাক্কা ছিল। এ ছাড়া আমরা প্রতিটি জায়গায় ভালো খেলেছি। কিছু ফল এসেছে। আরও কিছু ফল এলে দলের জন্য আরও ভালো হতো। তাতে দলের আত্মবিশ্বাস আরও বাড়ত। এর মধ্যে আমরা যেসব সিরিজ জিতেছি, সেগুলো দলের আত্মবিশ্বাস বাড়াবে। আমার মনে হয়, ছেলেদের জেতার মানসিকতা তৈরি হয়েছে। আমরা চাচ্ছি, বড় টুর্নামেন্টে ভালো খেলি। সবাই সেভাবেই এগোচ্ছি।

প্রশ্ন: আরব আমিরাতে হারের পর একটা ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল। আপনি যখন ড্রেসিংরুমে ফিরছিলেন, গ্যালারি থেকে ছুটে আসা দর্শকদের তির্যক মন্তব্যে শামীম পাটোয়ারী তেড়ে গেলেন। এটা আপনার জন্য কতটা ধাক্কার? এই দর্শকই তো একসময় আপনাকে মাথায় তুলে রেখেছিল।

সালাহ উদ্দীন: এটা স্বাভাবিক। মানুষের প্রত্যাশা এখন অনেক বেশি। আমাকে এটা মেনে নিতেই হবে। যখন এই দায়িত্বে এসেছি, তখন নিজেও জানতাম, এখানে সাফল্য পেলে আমাকে মাথায় তুলে নাচবে। আবার সাফল্য না পেলে মাথা থেকে নামিয়েও দেবে। সাফল্য-ব্যর্থতা মিলিয়ে দলকে কীভাবে এগিয়ে নিতে পারছি, এটাই মূলকথা। ছেলেদের ভেতরে পরিবর্তন আসছে কি না, ছেলেরা শিখছে কি না ভালোভাবে—সেটাই আমাদের মূল লক্ষ্য। এক দিনেই তো সব পরিবর্তন করা যাবে না। প্রতিটি বিষয়ের ধাপ আছে। মনে হয়, দিন শেষে আমার কাছে মানুষ ফলটা চাইবে। যেহেতু খুব বেশি পিছিয়ে নেই। যদি তাড়াতাড়ি ওভারকাম করতে পারি, বড় টুর্নামেন্টেও আমরা ভালো করব।

প্রশ্ন: অনেক সিনিয়র ক্রিকেটার চলে গেছেন। দল কতটা গুছিয়ে নিতে পেরেছেন?

সালাহ উদ্দীন: টি-টোয়েন্টিতে কমবেশি ফল আসছে। আমাদের ছেলেরা নিজ নিজ দায়িত্ব ভালোভাবে বুঝতে পেরেছে। কে কোন ভূমিকায় খেলবে। কোন পথে আমরা টি-টোয়েন্টিতে এগোব। আমরা এখানে কিছুটা পরিষ্কার হয়ে গেছি। পরিষ্কার থাকাটাই বেশি জরুরি। ব্যাটার হোক বা বোলার—কার কী ভূমিকা। টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডেতে একটা ভালো সেটআপের মধ্যে চলে আসছি। ওয়ানডেতে একটু সময় লাগবে। এখানে ভালো করতে অনেক অভিজ্ঞতা লাগে। আমরা বিশেষভাবে মিডল ওভারে কিছুটা সংগ্রাম করছি। এই জায়গাটা পূরণ হতে কিছুটা সময় লাগবে। এখানে এটাও খেয়াল রাখতে হবে, ছেলেদের কতটা সুযোগ আমরা দিচ্ছি। তারা কীভাবে গুছিয়ে উঠছে। সবচেয়ে বড় উন্নতিটা হয়েছে, আমাদের বোলাররা নিচে দারুণ ব্যাটিং করছে। আগে এটা ছিল না। আগে পাঁচ উইকেট পড়ে গেলে আমরা শেষ! কিন্তু এখন ওই জায়গা থেকে বেরিয়ে আসছি। সাদা বলে ওপেনিংয়ে ভালো একটা জুটি দেখতে পাচ্ছি। এটা থিতু হওয়ার চান্স আছে।

প্রশ্ন: ফিনিশিং রোলে জাকের আলী ও শামীম হোসেন পাটোয়ারীর ভূমিকা আপনাকে কতটা আশাবাদী করছে?

সালাহ উদ্দীন: ওরা এসব জায়গায় নিয়মিতই খেলে। এখানে তারা অভ্যস্ত। কঠিন পরিস্থিতিতে বহুবার খেলেছে। নার্ভটা তারা ধরে রাখে। মনে হয়, তারা দিনে দিনে আরও পরিণত হবে। আমার বিশ্বাস, ভবিষ্যতে তারা হারা ম্যাচও এক হাতে জেতাবে।

প্রশ্ন: পাকিস্তান সিরিজ জিতলেও যে উইকেটে খেলেছেন, সেটা নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। আপনার কি মনে হয়, এটা আদর্শ ছিল?

সালাহ উদ্দীন: ভুল আসলে দুই দলই করেছে। উইকেট এত খারাপ ছিল না, যতটা খারাপ বলা হচ্ছে। খেলা আসলে প্রথম ৬ ওভারেই শেষ! প্রথম ৬ ওভারেই তো অনেক সময় যেভাবে ব্যাটিং করা দরকার ছিল, কোনো দলই সেভাবে করেনি। এটা আমরা ভুল করেছি। ওরাও ভুল করেছে। এখানেই খেলাটা শেষ হয়ে গেছে। এই উইকেটে দেখবেন, ৬ ওভার পর ব্যাটাররা স্ট্রোক খেলতে পেরেছে। প্রতিটি ম্যাচেই দেখবেন, প্রথম দু-তিন ওভারে ৩-৪টা উইকেট পড়ে গেছে। ওই পরিস্থিতিতে যেভাবে খেলা উচিত ছিল, আমরা খেলিনি, ওরাও খেলেনি সেভাবে। আমরা একটা ম্যাচে খেলিনি। ওরা দুটি ম্যাচে খেলেনি। প্রথম দিকের ব্যাটাররাই ভুল করছে।

অনুশীলনে শেখ মেহেদী ও সিনিয়র সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দীন। ছবি: আজকের পত্রিকা
অনুশীলনে শেখ মেহেদী ও সিনিয়র সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দীন। ছবি: আজকের পত্রিকা

প্রশ্ন: এশিয়া কাপের আগেও কি এমন উইকেটে প্রস্তুতি সারতে চান?

সালাহ উদ্দীন: আমরা যে দুবাইয়ে খেলেছি, প্রায় একই ধরনের উইকেট মনে হয়েছে। উইকেটে স্পিন ধরে। হাই স্কোরিং ম্যাচ তেমন একটা হয় না কিন্তু। খুব বেশি যে কঠিন হবে বলে মনে হয় না। কারণ, মোটামুটি একই ধরনের।

প্রশ্ন: যদি বাংলাদেশের ম্যাচ আবুধাবিতে পড়ে?

সালাহ উদ্দীন: সেটা হয়তো ভিন্ন হবে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে হলে আপনাকে সব ধরনের পরিস্থিতিতে মানিয়ে নিতে হবে। উইকেটে হেল্প থাকলে দলের জন্য কিছুটা উপকার আছে। সেটা যেখানেই খেলি। শুধু ফ্ল্যাট ট্র্যাকে খেলবেন, তা তো নয়। আপনাকে বিভিন্ন উইকেটে বিভিন্নভাবে মানিয়ে নিতে হবে।

প্রশ্ন: বিসিবি নেপাল-নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে খেলে এশিয়া কাপের প্রস্তুতি সারতে চাইছে। এটা আদর্শ হবে কি না।

সালাহ উদ্দীন: এখন তো আন্তর্জাতিক কোনো দল নেই। ছেলেরা যাওয়ার আগে কিছু প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে যেতে পারলে দলের জন্য ভালো হবে। দিন শেষে আপনাকে খেলতে হবে। শুধু অনুশীলনই করবেন, তা তো নয়। ম্যাচ খেলার জন্য যা যা করা দরকার, সেগুলো হয়তো ম্যানেজমেন্ট চিন্তা করছে।

প্রশ্ন: বাংলাদেশে তিন অধিনায়ক তত্ত্ব কি সঠিক মনে করেন?

সালাহ উদ্দীন: আগে ছিলাম দলের বাইরে। তখন হয়তো চাইলে অনেক কথা বলতে পারতাম। এখন চাইলেও অনেক কথা বলতে পারব না। ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে বলতে পারি। বোর্ডের সঙ্গে বলতে পারি। তবে সেটা জনসমক্ষে বলতে পারব না। প্রতিষ্ঠান যা মনে করবে, সেই পলিসির সঙ্গে দ্বিমত করা যায় না। দ্বিমত করতে হলে অভ্যন্তরীণভাবে করব।

প্রশ্ন: শ্রীলঙ্কা সফরের মাঝে নাজমুল হোসেন শান্তর অধিনায়কত্ব ছাড়া আপনাকে কতটা অবাক করেছে?

সালাহ উদ্দীন: ও (শান্ত) তো দায়িত্ব ছেড়ে দেয়নি। (টেস্ট) সিরিজটা সম্পূর্ণ করে তারপর করেছে। এমন নয় যে সে সিরিজের আগে বলেছে, আমি করব না (অধিনায়কত্ব)। তা তো নয়। সিরিজটা শেষ করে ভালোভাবেই করেছে (অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেওয়া)। আমার মতে, সবারই ব্যক্তিগত মতামত আছে। এটা তো আসলে জোর করে চাপিয়ে দেওয়ার মতো নয়। সবারই ব্যক্তিগত মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। সে (শান্ত) যদি মানসিকভাবে বিরক্ত থাকে, সে কিন্তু খেলতে পারবে না। দিন শেষে তাকে খেলোয়াড় হিসেবে পারফর্ম করতে হবে। তার যদি মনে হয়, এটা মানসিকভাবে খুবই ভোগাচ্ছে, তার সেই সিদ্ধান্তের প্রতি আমাদের সম্মান জানানো উচিত।

প্রশ্ন: দলে আপনার অনেক প্রভাবের কথা শোনা যায়। কথাগুলো আপনাকে কতটা বিব্রত করে?

সালাহ উদ্দীন: বিব্রত হওয়ার মতো কিছু না। জানি, আগে থেকেই এখানে কিছু ঘটলে জবাবদিহি করতে হবে। কারণ, আমি দেশি মানুষ। এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। বিদেশিদের সঙ্গে পার্থক্য করাও ঠিক নয়। তাহলে তাদের প্রতি অসম্মান করা হয়। এটা আমাদের সংস্কৃতি। এটা নিয়ে মাথা ঘামানোর কিছু নেই। আমাদের নিয়মই হচ্ছে, আপনি কেন ভালো আছেন, আমি তাই খুব অসুখী! আমাদের সংস্কৃতির একটা দিক, ও কেন ভালো আছে। নিজে কেমন আছি, সেটা গুরুত্বপূর্ণ না। এটা মেনে নিয়েছি। এটা নিয়ে দুশ্চিন্তা করার কিছু নাই। তবে আমার মনে হয়, গঠনমূলক সমালোচনা করলে সবার জন্যই ভালো। আমি ব্যাটিং কোচ। দল ভালো করছে না। সেটা নিয়ে আপনি বলেন। কোনো সমস্যা নেই। সবকিছুই গঠনমূলক হলে সবার প্রতি সম্মান থাকে। কারও মোটিভ যদি প্রয়োগ করতে চান, ঠিক নয়। শুধু অন্যায়ভাবে না জেনে দোষ দেওয়া ঠিক নয়। এখানে হেড কোচ, অধিনায়ক আছে। কোচিং স্টাফে অনেক কিংবদন্তি খেলোয়াড় আছেন। আমি চাইলেও মুশতাক ভাইয়ের ওপর মাতব্বরি করতে পারব না। তাঁরাও অনেক হাই প্রোফাইল কোচ। বুঝেশুনে কথা বললে ভালো হয়।

প্রশ্ন: হুট করে শেখ মেহেদীকে সহ-অধিনায়ক করা, বিপিএলের টুর্নামেন্ট সেরা হয়েও মেহেদী হাসান মিরাজের টি-টোয়েন্টি দলে উপেক্ষিত থাকা ইত্যাদি বিষয় আপনার প্রভাবের উদাহরণ হিসেবে এসেছে।

সালাহ উদ্দীন: সব তো প্রকাশ্যে বলা যায় না। এতটুকু বলব, নির্বাচক, অধিনায়ক, প্রধান কোচ আছেন। এগুলো বুঝতে হবে। আমার মতামতেই যদি সব হতো, তাহলে আমারই দল চালালে ভালো হতো। এটা নিয়ে কথা না বলাই ভালো। প্রতিটি বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করে। দলে সাফল্য আসে সম্মিলিত সিদ্ধান্তে।

প্রশ্ন: দলে একজন পাওয়ার হিটিং কোচ যোগ হচ্ছেন। আপনার কাজের পরিধি কমে যেতে পারে। কীভাবে দেখছেন?

সালাহ উদ্দীন: আমার দল যদি সামান্য লাভবান হয়, যেকোনো বিভাগে, আমি কেন ঈর্ষান্বিত হতে যাব। দল হিসেবে ভালো করলে সবারই ভালো লাগবে। আমি তো বলতে যাইনি, গত এক বছরে আমরা সবচেয়ে বেশি ছক্কা মেরেছি, আমাদের পাওয়ার হিটিং কোচ আনার দরকার নেই! আমার যদি মনে হয় দলের সামান্য উপকারেও যদি কেউ আসে, সেটা দলেরই হবে। দলটা পুরো বাংলাদেশের। এখানে ভিন্নভাবে দেখার কিছু নেই।

প্রশ্ন: সংক্ষিপ্ত সময়ে একজন পাওয়ার হিটিং কোচ কতটা বদলে দিতে পারবেন?

সালাহ উদ্দীন: যদি কেউ একটা ধাপ এগিয়ে দিতে পারে, সেটা দলেরই লাভ। কী শিখবে, কী শেখাবে, জানি না। তবে কেউ যদি সামান্য নিতে পারে, তাতে দলই লাভবান। এখানে আমরা ব্যক্তিগতভাবে কেউ গুরুত্বপূর্ণ নই, দল গুরুত্বপূর্ণ।

প্রশ্ন: অধিনায়ক লিটন দাস এই রানে আছেন তো এই নেই! তাঁকে নিয়ে কী বলবেন?

সালাহ উদ্দীন: শুধু লিটন দাস নয়, ব্যাটিং কোচ হিসেবে আমার আরও কয়েকটা চ্যালেঞ্জ আছে। বোলাররা যেন ভালো ব্যাটিং করতে পারে। তাতে ওপরের নাম্বার ছয়-সাতে যারা ব্যাটিং করে, তারা অনেক চাপে খেলে। ওরা ভাবে, আমার পরে আর কেউ নেই! আমরা অধারাবাহিক। এক ম্যাচে সবাই ভালো করল, পরের ম্যাচের সবাই একসঙ্গে খারাপ করল। শুধু লিটন নয়, এখানে সবাইকে উন্নতি করতে হবে। শ্রীলঙ্কার টেস্ট ব্যাটারদের গড় দেখুন, সবারই ৪০-এর ওপরে। আমাদের কারও নেই, ৩৬-৩৭ তারা যদি ৪০-৪২ গড়ে নিয়ে যায়, যারা ২৭-২৮ তারা যদি ৪০-এর কাছাকাছি চলে যায়, তাহলে দল থিতু হয়ে যাবে। এই চ্যালেঞ্জ আছে সামনে। এখানে বেশি উন্নতি করা জরুরি।

প্রশ্ন: সাকিব-তামিমদের সঙ্গে বর্তমান প্রজন্মের ক্রিকেটারদের মৌলিক পার্থক্য কী?

সালাহ উদ্দীন: পার্থক্য খুব বেশি নয়। তাদের সময়ে দলের চাহিদা কম ছিল। টেস্টে আমরা কখনো চিন্তা করতাম, যেন আড়াই দিনে যায়। আড়াই দিনে গেলে বেঁচে যাই! ওয়ানডেতে ২০০৮ সালের দিকে ২০০-২২০ করলে আমরা খুশি হয়ে যেতাম। জেমি (সিডন্স) মাঝে মাঝে উচ্ছ্বসিত হয়ে বলত—সালাহ উদ্দীন, আজ আমরা ২২০ করেছি। তখন চাওয়া-পাওয়া অন্য রকম ছিল। এখন দলটা একটা ভালো পর্যায়ে গেছে। এখন জয়ের প্রত্যাশা বেশি। ছেলেদের এই মানসিকতা আছে, জয়ের ক্ষুধা আছে। এই পরিবর্তন যুগের সঙ্গে সঙ্গে মানিয়ে নিতেই হবে।

প্রশ্ন: সাকিবের সঙ্গে শেষ কথা কবে?

সালাহ উদ্দীন: সর্বশেষ শ্রীলঙ্কা সফরে।

প্রশ্ন: কী কথা হয়েছে ক্রিকেট নিয়ে?

সালাহ উদ্দীন: সাকিব আমাকে নিয়ে একটু চিন্তায় পড়ে গিয়েছিল। জিজ্ঞেস করল, আপনি টেনশনে পড়ে গেছেন কি না। সে আমাকে ভালোভাবে চেনে। একটা ডায়ালগ দিয়েছিলাম ওকে, দেখ, জীবনে মাইনাস ৫০০ টাকা নিয়ে সংসার শুরু করেছিলাম। তুই আমাকে টেনশন দিয়ে কাবু করবি, আমি ওই মানুষ না। তখন বলে, রাখি! রাখি!

প্রশ্ন: ওর ক্রিকেট ক্যারিয়ার কোন দিকে যাচ্ছে, নিভৃতে শেষ?

সালাহ উদ্দীন: এটা নিয়ে আমার কিছু বলার নেই। বোর্ডও কিছু করতে পারবে বলে মনে হয় না। এটা সরকারি নীতি, তাদের ওপর নির্ভর করে। বোর্ডেরও কিছু করার নেই। যখন সরকার মনে করবে, তখনই সে আসতে পারবে। না হলে আসলে...তাকে ক্রিকেট খেলতে দেশে আসতে হবে। এটা নিয়ে আমাদের খুব বেশি চিন্তা করার কিছু নেই। হয়তো সেভাবে সে মেনে নেবে। বা কখনো যদি সে ফিরে আসতে পারে, সবাই চাই আসুক। এটা নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিকেলে কাঁপালেন মোস্তাফিজ, রাতে সাকিব

ক্রীড়া ডেস্ক    
মোস্তাফিজুর রহমান, সাকিব আল হাসান দুজনেই দুর্দান্ত বোলিং করেছেন আজ। ছবি: ক্রিকইনফো
মোস্তাফিজুর রহমান, সাকিব আল হাসান দুজনেই দুর্দান্ত বোলিং করেছেন আজ। ছবি: ক্রিকইনফো

সংযুক্ত আরব আমিরাতে আজ বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের জয়জয়কার। বিকেলে আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে গালফ জায়ান্টসকে কাঁপিয়ে দিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান। ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছেন বাংলাদেশের এই বাঁহাতি পেসার। আবুধাবি থেকে ১৩৯ কিলোমিটার দূরে দু্বাইয়ে রাতে দুর্দান্ত বোলিং করেছেন সাকিব আল হাসান।

মোস্তাফিজ, সাকিব দুজনই এবারের আইএল টি-টোয়েন্টিতে প্রথমবারের মতো খেলছেন। সাকিব এই পর্যন্ত তিন ম্যাচ খেলেছেন। যার মধ্যে প্রথম দুই ম্যাচ ১০-এর বেশি ইকোনমিতে বোলিং করেছেন। মুক্ত হস্তে রান বিলিয়ে দিলেও পাননি কোনো উইকেট। তবে নামটা যে সাকিব আল হাসান, কখন যে ঘুরে দাঁড়াবেন সেটা আগে থেকে অনুমান করা কঠিন। দুবাইয়ে আজ ডেজার্ট ভাইপার্সের বিপক্ষে ৪ ওভারে ১৪ রানে নিয়েছেন ২ উইকেট।

দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এমআই এমিরেটসের অধিনায়ক কাইরন পোলার্ড। সাকিব আজ পাওয়ারপ্লের (প্রথম ৬ ওভার) শেষ হওয়ার ঠিক পরের ওভারেই বোলিংয়ে এসেছেন। ইনিংসের সপ্তম ওভারের শেষ বলে ফখর জামানকে স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলেন সাকিব। ১৩ বলে ১৩ রান করে আউট হয়েছেন ফখর। এক ওভার পরে এসে সাকিব তুলে নিয়েছেন স্যাম কারানের উইকেট। নবম ওভারের দ্বিতীয় বলে কারানকে কট এন্ড বোল্ড করেন সাকিব। বাংলাদেশের বাঁহাতি স্পিনিং অলরাউন্ডারকে দিয়ে ইনিংসের ১১তম ও ১৫তম ওভার করিয়ে নিয়েছেন পোলার্ড। ৪ ওভারে ১৪ রানে ২ উইকেট নেওয়া সাকিব আজ কোনো চার-ছক্কা হজম করেননি। এমনকি কোনো ওয়াইড, নো বলও দেননি।

সাকিবের দুর্দান্ত বোলিংয়ের রাতে ডেজার্ট ভাইপার্স ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১২৪ রান করেছে। ইনিংস সর্বোচ্চ ৩৫ রান করে অপরাজিত থাকেন ড্যান লরেন্স। এমআই এমিরেটসের সাকিব, জহুর খান নিয়েছেন দুটি করে উইকেট। একটি করে উইকেট পেয়েছেন মোহাম্মদ গজনফার ও আরব গুল। ভাইপার্সের ১৮ বলে ১৪ রান করা জেসন রায় হয়েছেন রানআউট।

বিকেলে গালফ জায়ান্টসের বিপক্ষে দুবাই ক্যাপিটালসের ৬ উইকেটের জয়ে মোস্তাফিজ হয়েছেন ম্যান অব দ্য ম্যাচ। ৩.৫ ওভারে ৩৪ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। এবারের আইএল টি-টোয়েন্টিতে এখন পর্যন্ত ৭ ম্যাচে ৮.২৯ ইকোনমিতে নিয়েছেন ১৪ উইকেট। টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী বাংলাদেশের এই বাঁহাতি পেসার। ১৫ উইকেট নিয়ে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী মোস্তাফিজের দুবাই ক্যাপিটালসের সতীর্থ ওয়াকার সালামখেইল। ৮ ম্যাচে ৭.৪৯ ইকোনমিতে সালামখেইল বোলিং করেছেন।

গালফ জায়ান্টসের বিপক্ষে ৬ উইকেটে জেতার পর দুবাই ক্যাপিটালসের পয়েন্ট এখন ৮। সমান ৮ পয়েন্ট এমআই এমিরেটসও। এই দলে খেলছেন বাংলাদেশের তারকা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। তবে নেট রানরেটের কারণে এগিয়ে দুবাই ক্যাপিটালস। ‍+০.৮৩৬ নেট রানরেট নিয়ে দুইয়ে অবস্থান করছে মোস্তাফিজের দুবাই। তিন নম্বরে অবস্থান করা সাকিবের এমিরেটসের নেট রানরেট ‍+০.৩৪১।

দুবাই ক্যাপিটালস ও এমআই এমিরেটস আট ও সাত ম্যাচ খেলেছে এখন পর্যন্ত। চার ও পাঁচে থাকা গালফ জায়ান্টস, আবুধাবি নাইট রাইডার্স দুই দলেরই পয়েন্ট ৬। চার পয়েন্ট নিয়ে ছয় দলের মধ্যে ছয় নম্বরে অবস্থান করছে শারজা ওয়ারিয়র্স। এখন ভাইপার্সকে হারালে এমআই এমিরেটস দুই নম্বরে উঠে আসবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভারতকে একা হাতে শেষ করে দেওয়া কে এই সামির মিনহাজ

ক্রীড়া ডেস্ক    
ভারতের বিপক্ষে ১৭২ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে ম্যাচসেরা হয়েছেন সামির মিনহাস। ছবি: ক্রিকইনফো
ভারতের বিপক্ষে ১৭২ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে ম্যাচসেরা হয়েছেন সামির মিনহাস। ছবি: ক্রিকইনফো

সামির মিনহাসের কাছে ১৬ রানে হেরেছে ভারত—ভক্ত-সমর্থকেরা চাইলে মজা করে এমনটা বলতেই পারেন। দুবাইয়ের আইসিসি একাডেমিতে পাকিস্তানের এই ক্রিকেটার করেছেন ১৭২ রান। তাঁর ব্যাটিং দেখে মনে হচ্ছিল ওয়ানডে নয়, ভারত-পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের ফাইনালটা হচ্ছে টি-টোয়েন্টি সংস্করণে।

সামিরের বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে ভারতের বিপক্ষে ৩৪৭ রানের পাহাড় গড়ে পাকিস্তান। বরাবরের মতো ভারত-পাকিস্তানের অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের এই ফাইনাল ম্যাচটাও হয়েছে একপেশে। শিরোপা নির্ধারণী ফাইনালে ভারত গুটিয়ে গেছে ১৫৬ রানে। পাকিস্তানের ১৯১ রানের বিশাল জয়ের পর একই সঙ্গে ম্যাচসেরা, সিরিজসেরার পুরস্কার পেয়েছেন সামির। ১১৩ বলে ১৭ চার ও ৯ ছক্কায় করেছেন ১৭২ রান। স্বাভাবিকভাবেই ১৯ বছর বয়সী মিনহাসকে নিয়ে অনেকের কৌতূহল জেগেছে। তিনি আসলে পাকিস্তান জাতীয় দলের ক্রিকেটার আরাফাত মিনহাসের ছোট ভাই।

আরাফাত মিনহাসের সঙ্গে সামিরের বয়সের ব্যবধান মাত্র ১ বছর। দুই বছর আগে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হওয়া আরাফাত পাকিস্তানের জার্সিতে খেলেছেন চার টি-টোয়েন্টি। ৫.১৬ ইকোনমিতে নিয়েছেন ৪ উইকেট। সামিরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক না হলেও এই ১৯ বছর বয়সেই তাক লাগিয়ে দিচ্ছেন। বয়সভিত্তিক ক্রিকেটের নানা ধাপ অতিক্রম করে এই টপ অর্ডার ব্যাটার পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দলে জায়গা করে নিয়েছেন। মুলতানের হয়ে অনূর্ধ্ব-১৩ ক্রিকেট, দক্ষিণ পাঞ্জাব অনূর্ধ্ব-১৬ ও মুলতান অনূর্ধ্ব-১৯ দলে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে সামিরের।

দুবাইয়ের আইসিসি একাডেমিতে আজই যে ভারতের বিপক্ষে সামির ঝড় তুলেছেন তা নয়। এর আগে দুবাইয়ের দ্য সেভেন্স স্টেডিয়ামে মালয়েশিয়া অনূর্ধ্ব-১৯ দলের বিপক্ষে বিস্ফোরক সেঞ্চুরি করেছিলেন। ১২ ডিসেম্বর সেই ম্যাচে ১৪৮ বলে ১১ চার ও ৮ ছক্কায় ১৭৭ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিলেন। ৫ ম্যাচে ২ সেঞ্চুরি ও ১ ফিফটিতে ৪৭১ রান করে ২০২৫ অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক তিনি। আজ ভারতের বিপক্ষে ফাইনালসেরা ও টুর্নামেন্টসেরার পুরস্কার পাওয়ার পর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সামির বলেন, ‘দারুণ একটা ইনিংস ছিল। এমন বড় ইনিংস খেলার পরিকল্পনা ছিল। আমি আমার স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে চেয়েছি। এ ধরনের উইকেটে আগে ব্যাটিং করতে চেয়েছিলাম। এই ম্যাচটা (ভারতের বিপক্ষে ফাইনাল) আমার জন্য বেশ স্মরণীয়।’

এ বছরের সেপ্টেম্বরে ভারতের কাছে হেরে এশিয়া কাপে রানার্সআপ হয়েছিল পাকিস্তান। জাতীয় দল রানার্সআপ হলেও বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্টে একের পর এক শিরোপা জিতেছে পাকিস্তান। নভেম্বরে হংকং সিক্সেস, রাইজিং স্টার্স এশিয়া কাপ—এই দুটি টুর্নামেন্ট জেতে পাকিস্তান। খাজা নাফে, আব্দুল সামাদ, আব্বাস আফ্রিদিরা হংকং সিক্সেসে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন। এই তিন ক্রিকেটারের মধ্যে একমাত্র খাজা নাফের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়নি। সবশেষ বিপিএলে চিটাগং কিংসের হয়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে নজর কেড়েছেন তিনি।

কাতারে নভেম্বর রাইজিং স্টার্স টুর্নামেন্টে বাংলাদেশকে সুপার ওভারে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল পাকিস্তান। শিরোপা নির্ধারণী ফাইনালে মূল ম্যাচে সুফিয়ান মুকিম ও আরাফাত মিনহাস ৩ ও ২ উইকেট নিয়েছিলেন। মূল ম্যাচে ২ উইকেট নেওয়া আহমেদ দানিয়াল সুপার ওভারেও নিয়েছিলেন ২ উইকেট। ফাইনালসেরার পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি। টুর্নামেন্টজুড়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে টুর্নামেন্টসেরার পুরস্কার জিতেছিলেন মাজ সাদাকাত। টি-টোয়েন্টিতে বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে এরই মধ্যে লাইমলাইটে চলে এসেছেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হঠাৎ ভাত থেকে স্যান্ডউইচে চলে গেলি, শামীমকে সাইফউদ্দিন

ক্রীড়া ডেস্ক    
শামীম হোসেন পাটোয়ারীর সঙ্গে মজা করেছেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। ছবি: ফাইল ছবি
শামীম হোসেন পাটোয়ারীর সঙ্গে মজা করেছেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। ছবি: ফাইল ছবি

১২তম বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) সামনে রেখে দলগুলো এরই মধ্যে অনুশীলন শুরু করে দিয়েছে। ছয় ফ্র্যাঞ্চাইজি নিয়ে সিলেটে এ সপ্তাহের শুক্রবার মাঠে গড়াচ্ছে বিপিএল। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, শামীম হোসেন পাটোয়ারী, আকবর আলীরা অনুশীলনের ফাঁকে আড্ডাচ্ছলে মজাও করেছেন।

মিরপুরে আজ ঢাকা ক্যাপিটালস আনুষ্ঠানিকভাবে বিপিএলের প্রস্তুতি শুরু করেছে। অনুশীলনটা যেন একঘেঁষে না মনে হয়, সেজন্য একে অন্যের সঙ্গে মজা করে সময়টা প্রাণবন্ত করেছেন সাইফউদ্দিন-শামীমরা। নিজের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে সাইফউদ্দিন আজ বাংলাদেশ সময় রাতে ১৫ সেকেণ্ডের একটি ভিডিও ছেড়েছেন। বাংলাদেশের এই অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার ক্যাপশন দিয়েছেন, ‘শামীম এখন অন্য কিছু খায়’। ভিডিওতে সাইফউদ্দিনকে বলতে শোনা গেছে, ‘শামীম। হঠাৎ করে ভাত থেকে স্যান্ডউইচে চলে গেলি।’ শামীম এরপর তাদের হাতে থাকা স্যান্ডউইচ দেখিয়ে বলেছেন, ‘শুভেচ্ছাদূত।’ সাইফউদ্দিন জানতে চাইলেন, ‘কোনটা বেশি মজা?’ শামীম এরপর প্যাকেট দেখিয়ে বলে, ‘ইউরো।’ ইউরো মূলত সেই স্যান্ডউইচ কোম্পানির নাম।

ছয় দলের বিপিএল সামনে রেখে ঢাকা ক্যাপিটালস গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তুতি শুরু করেছে। অনুশীলনের সময়ই মিঠুনকে অধিনায়ক ঘোষণা করেছে ঢাকা। কেন মিঠুনকেই অধিনায়ক করল ঢাকা, তার ব্যাখ্যায় ফ্র্যাঞ্চাইজিটির প্রধান নির্বাহী আতিক ফাহাদ বলেন, ‘আমাদের প্রত্যেক ক্রিকেটারই অধিনায়ক হওয়ার যোগ্য। আপনি হয়তো দেখেছেন আমাদের সাইফ, তাসকিন, ইমাদ ওয়াসিম আছে। আরও অনেকেই আছে। কাকে অধিনায়কত্ব দেব, সেটা ঠিক করতে আমাদের ম্যানেজমেন্ট, কোচিং প্যানেলেরও অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। শেষ বিপিএলে ফাইনালে নিয়ে গিয়েছিল দলকে (চিটাগং কিংস) এবং আমাদেরও যেহেতু এবার শিরোপা জয়ের ইচ্ছা রয়েছে, আমরা কাপ নিয়ে যাব। সেই পরিকল্পনা থেকেই আমাদের কোচিং প্যানেল সিদ্ধান্ত নিয়েছে মিঠুন ভাইকে দেওয়ার। আশা করি সে (মিঠুন) এ বছর ফাইনালে কাপসহ নিয়ে যাবে।’

এবারের বিপিএলে সর্বোচ্চ ১ কোটি ১০ লাখ টাকায় নাঈম শেখকে কিনেছে চট্টগ্রাম রয়্যালস। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯২ লাখ টাকা দাম উঠেছে হৃদয়ের। তাঁকে কিনেছে রংপুর রাইডার্স। একই দল লিটনকে কিনেছে ৭০ লাখ টাকায়। তাসকিনকে সরাসরি চুক্তিতে নিয়েছে ঢাকা ক্যাপিটালস। এই বিপিএলেই প্রথমবারের মতো অংশ নিচ্ছে নোয়াখালী এক্সপ্রেস। তবে সর্বোচ্চ চারবারের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। নেই ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ফরচুন বরিশালও। সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবালকেও দেখা যাবে না ২০২৬ বিপিএলে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

এবারও পাকিস্তানের বোর্ডপ্রধানকে বর্জন করলেন ভারতীয় ক্রিকেটাররা

ক্রীড়া ডেস্ক    
মহসিন নাকভির কাছ থেকে এবারও পদক গ্রহণ করেননি ভারতীয় ক্রিকেটাররা। ছবি: এসিসি
মহসিন নাকভির কাছ থেকে এবারও পদক গ্রহণ করেননি ভারতীয় ক্রিকেটাররা। ছবি: এসিসি

মাঠের লড়াইয়ে ভারত-পাকিস্তান এখন তেমন একটা জমে না। কিন্তু হাইভোল্টেজ বলেও যে একটা ব্যাপার আছে। মাঠের পারফরম্যান্সের চেয়ে অন্যান্য ঘটনায় বেশি আলোচনা ছড়ায় ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ। তিন মাস পর আজ দুবাইয়ের আইসিসি একাডেমিতে চিত্রনাট্য ভিন্ন হলেও ম্যাচ শেষে কাহিনিটা রয়ে গেছে একই।

দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে এ বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারিয়ে এশিয়া কাপের শিরোপা জিতেছিল ভারত। সেবার সূর্যকুমার যাদবের নেতৃত্বাধীন ভারত এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) প্রধান মহসিন নাকভির কাছ থেকে শিরোপা নেয়নি। প্রায় তিন মাস পর আজ দুবাইয়ের আইসিসি একাডেমিতে ভারতকে ১৯১ রানে হারিয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের শিরোপা জিতেছে পাকিস্তান। এসিসি প্রধান হিসেবে নাকভি বয়সভিত্তিক এই টুর্নামেন্টের ফাইনাল দেখতে গেছেন। তিনি একই সঙ্গে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) চেয়ারম্যানও। কিন্তু ম্যাচ শেষে পরাজিত ভারতকে রানার্সআপ পদক যখন দিতে যান নাকভি, ভারতীয় ক্রিকেটাররা তাঁর কাছ থেকে পদক গ্রহণ করেননি।

নাকভি যে মঞ্চে আজ দাঁড়িয়ে ছিলেন, তাঁর আশপাশেও যাননি ভারতীয় ক্রিকেটাররা। বৈভব সূর্যবংশী, আয়ুশ মাত্রে, কিষাণ সিংরা রানার্সআপ পদক নিয়েছেন মুবাশশির উসমানির কাছ থেকে। উসমানি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থার (আইসিসি) সহযোগী সদস্য দেশগুলোর বোর্ড পরিচালক। একই সঙ্গে আমিরাত ক্রিকেট বোর্ডের (ইসিবি) সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বেও আছেন তিনি। মঞ্চের ডান অংশে দাঁড়িয়ে উসমানির কাছ থেকে একে একে ভারতীয় ক্রিকেটাররা পদক গ্রহণ করেছেন। নাকভি এরপর চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তান দলের সঙ্গে শিরোপা জয়ের উদযাপন করেছেন।

২৮ সেপ্টেম্বর নাকভির কাছ থেকে শিরোপা না নিয়ে উদযাপন করেছিল ভারত। শিরোপাছাড়া উদযাপন করে সূর্যকুমার, অভিষেক শর্মা, তিলক ভার্মারা ক্রিকেট ইতিহাসে বিরল ঘটনার জন্ম দিয়েছিলেন। এ বছরের এপ্রিলে পেহেলগামে বন্দুকধারীদের গুলিতে পর্যটক নিহতের ঘটনায় ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। দুই দেশ মে মাসে জড়িয়েছিল সামরিক সংঘাতেও। এশিয়া কাপ, নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপ, রাইজিং স্টার্স এশিয়া কাপ, অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ—এ বছর এই চার টুর্নামেন্টের কোনোটিতেই টসের সময় করমর্দন করেননি ভারত-পাকিস্তানের অধিনায়কেরা।

অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের শিরোপা পাকিস্তান এর আগে একবারই জিতেছিল। ২০১২ সালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের বিপক্ষে যুগ্মভাবে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল পাকিস্তান। ১৩ বছর পর এবার আর শিরোপা ভাগাভাগি করতে হয়নি ভারত-পাকিস্তানকে। দুবাইয়ে আইসিসি একাডেমি মাঠে ভারতকে ১৯১ রানে হারিয়ে নিজেদের ইতিহাসে দ্বিতীয়বার অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের শিরোপা জিতল পাকিস্তান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত