Ajker Patrika
সাক্ষাৎকার

ফুটবলার না হলে শিক্ষক হতাম

সাফের দুটি শিরোপার সঙ্গে ঋতুপর্ণা চাকমা এবার হয়েছেন টুর্নামেন্টসেরাও। ছবি: বাফুফে

সাফের দুটি শিরোপা উঠেছে তাঁর হাতে। এবার হয়েছেন টুর্নামেন্টসেরাও। সেই ঋতুপর্ণা চাকমার সাফল্যের সিঁড়িগুলো কিন্তু সহজ ছিল না। জীবন আর ফুটবলকে সমানভাবে এগিয়ে নিতে কঠিন এক যুদ্ধই করতে হয়েছে তাঁকে। সে গল্পই তিনি শুনিয়েছেন আজকের পত্রিকাকে। বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের এই ফরোয়ার্ডের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন জহির উদ্দিন মিশু

জহির উদ্দিন মিশু
আপডেট : ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১০: ৩৬

প্রশ্ন: দুবার দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট জিতলেন। সেই সঙ্গে এবার হলেন সেরা খেলোয়াড়ও। ভালো লাগার ব্যাপারটা নিয়ে কিছু বলবেন?

ঋতুপর্ণা চাকমা: টানা দুবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার অনুভূতি ভাষায় প্রকাশের নয়। আমি ব্যক্তিগতভাবে খুবই খুশি। এমন দিন দ্বিতীয়বার দেখতে পাব কখনো ভাবিনি। এটা ঠিক, সেরা হওয়াটা আমাদের প্রাপ্য ছিল। কারণ, এত দূর আসতে সবাইকে অনেক শ্রম, অনেক বাধা টপকাতে হয়েছে। তবে দেশবাসীর দোয়া, সমর্থন না থাকলে কিছুই করা সম্ভব হতো না। সে জন্য সবাইকে ধন্যবাদ। তারা আমাদের যে পরিমাণ ভালোবাসা দিয়েছে, তার কিছুটা হলেও পূরণ করতে পেরে আমাদের ভালো লাগছে।

প্রশ্ন: ফাইনালে আপনার ম্যাজিক্যাল গোলেই জিতেছে বাংলাদেশ। ওই গোল এবং ম্যাচের পরিকল্পনা নিয়ে কিছু শুনতে চাই।

ঋতুপর্ণা: অবশ্যই ওই গোলের অবদান পুরো দলের, সতীর্থদের। তাদের সহযোগিতা ছাড়া হয়তো এমন সুন্দর একটি গোল করতে পারতাম না। তবে আমাদের একটা বিশ্বাস ছিল যে এত দূর যেহেতু এসেছি, আমরা হারতে চাই না। অবশ্যই ট্রফিটা নিয়েই বাড়ি যাব—এমন একটা জেদ, একটা আত্মবিশ্বাস সবার মধ্যে কাজ করেছে। সেই লক্ষ্য আর আত্মবিশ্বাস নিয়েই সবাই ফাইনালে মাঠে নামি। আমার একটা টার্গেট ছিল, যদি ডি-বক্সের বাইরে বল পেয়ে যাই, সেটা সরাসরি পোস্টে শট নেওয়ার চেষ্টা করব। কারণ, নেপাল কিন্তু সমতার পর একটু রক্ষণাত্মক খেলতে শুরু করেছিল। এরপর পেয়েও যাই সুযোগটা।

প্রশ্ন: দুটি সাফ জয়ের পর দেশের জন্য, দেশের ফুটবলের জন্য ভবিষ্যতে আর কী কী করতে চান?

ঋতুপর্ণা: আমার ক্যারিয়ার তো সবে শুরু। এই দেশকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন। সামনে আরও দারুণ কিছু উপহার দিতে চাই। দেশের মানুষ আমাদের যতটা মূল্যায়ন করেছে, যতটা সম্মান দিয়েছে, আমরা চেষ্টা করব তার প্রতিদান দিতে। সামনের সাফেও এমন সাফল্যের প্রত্যাশায় আছি। দেশকে আরও জেতাতে চাই। সবাই দোয়া করবেন। আপনাদের দোয়া আর আমাদের পরিশ্রমে যেন ফুটবল আরও এগিয়ে যেতে পারে।

প্রশ্ন: যত দূর জানি, আপনার বাবা সব সময় চাইতেন, আপনি সেরা হন। আপনার সাফল্য আর তিনি দেখে যেতে পারেননি...

ঋতুপর্ণা: বাবা এবং ভাই—দুজনই কিন্তু ফুটবল ভীষণ পছন্দ করতেন। বিশেষ করে বাবা, তিনি ফুটবলকে অসম্ভব ভালোবাসতেন। যেদিন ফুটবল খেলার কথা বাসায় প্রথম জানিয়েছিলাম, সবার আগে বাবা ‘হ্যাঁ’ বলে দেন। তিনি শুরু থেকেই আমার এই লড়াইয়ের সঙ্গী ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ বাবাকে হারিয়ে ফেললাম। এরপর ভাইটাও চলে গেল। জানি না তাঁরা কেমন আছেন। তবে বাবা চলে যাওয়ার পর আমার পথচলাও খানিকটা থমকে যায়। পুরো পরিবারকেই দীর্ঘদিন সংগ্রাম করতে হয়েছে। কী সুন্দর ছিল সেই দিনগুলো! বাবা আমার হাত ধরে অনুশীলনে নিয়ে যেতেন, আবার নিয়ে আসতেন। বাবাকে আজ খুব মনে পড়ছে। এবার আমি দক্ষিণ এশিয়ায় সেরা খেলোয়াড় হলাম। কিন্তু বাবা দেখে যেতে পারলেন না। আজ বাবা বেঁচে থাকলে অনেক খুশি হতেন।

প্রশ্ন: বাবাহীন পৃথিবীতে ফুটবলে আপনাকে কে প্রেরণা জোগান, সব সময় কাকেই-বা পাশে পাচ্ছেন?

ঋতুপর্ণা: এখন মা-ই আমার সব। তাঁর সঙ্গে প্রতিদিন কথা হয়। প্রতিটি ম্যাচের আগে নির্দিষ্ট একটা সময় রাখি মায়ের জন্য। সত্যি আমি খুবই গর্বিত যে এমন একজন মা পেয়েছি। যাঁকে সব সময় পাশে পাওয়া যায়। সুখে-দুঃখে আমাকে মা সাহস জুগিয়ে যান। যেদিন আমাদের ফাইনাল ম্যাচ, ওই দিন মাঠে নামার আগে মাকে কল দিয়েছিলাম। মা খুব আগ্রহ নিয়ে দৃঢ়তার সঙ্গে বললেন, ‘আমার মন বলছে, তোমরাই জিতবে। ট্রফিটা তোমাদের হাতেই উঠবে। দেখো, মায়ের মন কখনো মিথ্যা বলে না।’ শেষ পর্যন্ত তা-ই হলো। নেপালকে হারিয়ে আমরা চ্যাম্পিয়ন হলাম। শুধু ফাইনালের দিন নয়, প্রতি ম্যাচের আগেই মা আশীর্বাদ করতেন। সবার মঙ্গল কামনা করতেন। এর চেয়ে বড় আর কী হতে পারে।

প্রশ্ন: মেয়েদের ফুটবলে আসা ততটা সহজ নয়। এই পর্যন্ত আসতে আপনাকে কতটা বাধা আর লড়াই করতে হয়েছে?

ঋতুপর্ণা: এমন ঘটনা আমিও শুনেছি। অনেক মেয়েকেই পরিবার থেকে বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে। কিন্তু আমার বেলায় পুরো উল্টো। যেহেতু বাবা ছিলেন ফুটবলের একজন দারুণ সমর্থক। তাই ফুটবলে আমার আসা, এরপর এগিয়ে যেতে পরিবার থেকে অন্তত কোনো প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়নি। সবাই খুবই আন্তরিক ছিলেন। তবে দুজনের অবদান কখনো ভুলতে পারব না। একজন আমার স্যার বিয়াশন চাকমা; সম্পর্কে তিনি কাকা হন। আরেকজন শান্তমনি চাকমা। দুজনই আমার ছোটবেলার কোচ। আমি, রুপনা ও মনিকা—তিনজনের বাড়ি পাশাপাশি। তিনজনই তাঁদের কাছ থেকে ফুটবলটা শিখেছিলাম। বলতে পারেন হাতেখড়ি।

প্রশ্ন: ছোটবেলায় অনেকের অনেক ইচ্ছা থাকে। যদি ফুটবলার না হতেন, কী হতে চাইতেন?

ঋতুপর্ণা: আমারও অনেক স্বপ্ন ছিল। শুরুতে কিন্তু ভাবিনি ফুটবলার হব। কিন্তু কীভাবে যেন হয়ে গেলাম। ছোটবেলায় তো অনেক কিছু হওয়ারই ইচ্ছা ছিল। তবে একটা ইচ্ছা এখনো আছে—শিক্ষক হওয়া। যদি ফুটবলার না হতাম, তাহলে নিশ্চিত শিক্ষকই হতে চাইতাম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘রোনালদোর ক্ষুধা কখনোই শেষ হওয়ার নয়’

ক্রীড়া ডেস্ক    
প্রতিযোগিতামূলক ক্যারিয়ারে ৯৫০-এর বেশি গোল করে ফেলেছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো।  ছবি: এএফপি
প্রতিযোগিতামূলক ক্যারিয়ারে ৯৫০-এর বেশি গোল করে ফেলেছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। ছবি: এএফপি

বয়স শুধুই একটি সংখ্যা—ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে স্বাভাবিকভাবেই এই কথা মনে হবে সবার আগে। পর্তুগাল দল, আল নাসর—সব জায়গায় তিনি গোলের পর গোল করে চলেছেন। একের পর এক রেকর্ড গড়েও পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড ক্ষান্ত হচ্ছেন না। পাগলা ঘোড়ার মতো ছুটতে থাকা রোনালদোকে দেখে রীতিমতো মুগ্ধ পর্তুগাল জাতীয় দলের কোচ রবার্তো মার্তিনেজ।

আল নাসরের হয়ে এ বছর রোনালদো সব ধরনের প্রতিযোগিতা মিলে ১২ ম্যাচে করেছেন ১১ গোল। অ্যাসিস্ট করেছেন ২ গোলে। সৌদি প্রো লিগে সবশেষ তিন ম্যাচে করেছেন চার গোল। যার মধ্যে ২৩ নভেম্বর আল খালিজের বিপক্ষে বাইসাইকেল কিকে গোল করে চমকে দিয়েছেন তিনি। ৪০ বছর বয়সে শরীরটাকে শূন্যে ভাসিয়ে উল্টো দিকে গোল করা তো চাট্টিখানি কথা নয়। রোনালদোকে প্রশংসায় ভাসিয়ে এক পডকাস্টে বিস্তারিত আলাপ-আলোচনা করেছেন মার্তিনেজ। পর্তুগিজ কোচ বলেন,‘আমার কাছে এ ব্যাপারে এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই যে সে সফল হওয়ার পর থেমে যায় না। আরও কিছু করতে চায়। যখন আপনি কোনো কিছু জেতেন, পরের দিন আপনার ক্ষুধা কমে যায়। ক্রিস্টিয়ানো এমনই এক ব্যক্তি, গতকাল তার সঙ্গে যা ঘটেছে সেটা আজ প্রভাব ফেলে না।’

আন্তর্জাতিক ফুটবল ও ক্লাব ফুটবল মিলিয়ে প্রতিযোগিতামূলক ক্যারিয়ারে এখন পর্যন্ত রোনালদো করেছেন ৯৫৪ গোল। সংখ্যাটাকে ১০০০ পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার দৃঢ় ইচ্ছা রয়েছে পর্তুগিজ ফরোয়ার্ডের। মাঝেমধ্যে সহজ গোল মিসের পর তৎক্ষণাৎ হতাশা প্রকাশ করেন ঠিকই। কিন্তু ঘুরে দাঁড়াতে তাঁর বেশি সময় লাগে না। এ বছর পর্তুগালের হয়ে তিনি ৮ গোল করে ফেলেছেন। জুনে স্পেনকে হারিয়ে ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মতো জিতেছেন নেশনস লিগের শিরোপা।

মাঠে যখন রোনালদো নামেন, তখন ক্ষিপ্র গতিতে দৌড়ে থাকেন। ডিফেন্ডারদের বোকা বানিয়ে এমন সব গোল করেন, তখন গোলরক্ষকও শত চেষ্টা করে গোল ঠেকাতে পারেন না। চোটের কারণে ম্যাচ মিস করার ঘটনাও তাঁর খুব কম। রোনালদোর হার না মানা মানসিকতা দেখে মুগ্ধ মার্তিনেজ এক পডকাস্টে বলেন,

‘আমি জানি না এটা জিনগত কি না। এটাই বাস্তবতা। সে প্রতিনিয়ত নিজেকে নিজে ছাড়িয়ে যেতে চায়। সেটা অনুশীলন, চোট থেকে সেরে ওঠা, মাঠের পারফরম্যান্স—যেটা নিয়ে মনে হয় তার কাজ করা দরকার, তা নিয়ে যথেষ্ট মনোযোগী থাকে। সে হ্যাটট্রিক করল বা তিনটা সুযোগ মিস করল কি না, তাতে কিছু যায় আসে না। শেষ বাঁশি বাজার পর পরের দিনের জন্য প্রস্তুতি নেয়। এটাই তাকে অনেক চঞ্চল করে রেখেছে।’

যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোতে আগামী বছর হতে যাচ্ছে ২৩তম ফুটবল বিশ্বকাপ। এই বিশ্বকাপে রোনালদোর বয়স হবে ৪১ বছর। পর্তুগিজ ফরোয়ার্ডকে এরপর আর ‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থে’র মঞ্চে দেখা যাবে না। কিন্তু প্রতিযোগিতামূলক ক্যারিয়ারকে কবে বিদায় বলবেন, সেটা তিনি জানাননি। ৩৫-৩৬ বছর হলেই যেখানে অনেকে বুটজোড়া তুলে রাখেন, রোনালদোর এমন মানসিকতায় মুগ্ধ মার্তিনেজ। ফুটবলারদের অবসর নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তাই রোনালদোর উদাহরণ দিয়েছেন তিনি (মার্তিনেজ)। পডকাস্টে পর্তুগিজ কোচ বলেন,‘‘ফুটবলাররা অবসরের সময় শরীর মস্তিষ্ককে বলে, ‘আমি আর পেরে উঠছি না।’ ক্রিস্টিয়ানোকে দেখে তেমন কিছু মনে হচ্ছে না। তার ব্যাপারে তার মস্তিষ্ক শরীরকে বলে এখনই থেমে যেতে হবে। তার প্রতিনিয়ত নিজেকে নিজে ছাড়িয়ে যাওয়ার সামর্থ্য রয়েছে।’

লিওনেল মেসি, রোনালদো—দুজনেরই বিশ্বকাপে পথচলা ২০০৬ সালে। ২০২৬ বিশ্বকাপে তাঁরা দুজনই ষষ্ঠবারের মতো বিশ্বকাপে খেলতে যাচ্ছেন। আজ এই দুজনের নিশ্চয়ই চোখ থাকবে ফিফার ওয়েবসাইটের দিকে। বাংলাদেশ সময় রাত ১১টায় শুরু হবে ২০২৬ ফুটবল বিশ্বকাপের ড্র অনুষ্ঠান। বিশ্বকাপ ইতিহাসে এবারই প্রথম খেলতে যাচ্ছে ৪৮ দল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বীতশোক-ক্যাসপারদের লাতিন বাংলা সুপার কাপ দেখাবে না টিভিতে, দেখবেন কোথায়

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ১৫
লাতিন বাংলা সুপার কাপ শুরুর আগে অনুশীলন। ছবি: আজকের পত্রিকা
লাতিন বাংলা সুপার কাপ শুরুর আগে অনুশীলন। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাংলাদেশে আসা প্রবাসী ফুটবলারদের খেলা দেখতে অপেক্ষায় আছেন অনেক ফুটবলপ্রেমী। যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বীতশোক চাকমা, ইংল্যান্ডপ্রবাসী কাসপার হক, ইব্রাহীম নাওয়াজ ও অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী ইশান মালিক—এই চার প্রবাসী ফুটবলার আছেন রেড গ্রিন ফিউচার স্টার দলে।

ব্রাজিলের সাও বার্নার্দো ক্লাবের বিপক্ষে সন্ধ্যা ৭টায় জাতীয় স্টেডিয়ামে মাঠে নামবে রেড গ্রিন ফিউচার স্টার। এই ম্যাচ দেখতে অনেকে অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করলেও তা কোনো টিভি চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচার হচ্ছে না। এএফ বক্সিং প্রমোশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান গতকাল সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, তাঁরা টি-স্পোর্টসের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। সেটা যে চূড়ান্ত হয়নি, তা তো বোঝাই গেল। এখন তারা খেলা দেখাবে তাদের অফিশিয়াল দুই পেজ আরটিভি স্পোর্টস ও এএফ বক্সিং প্রমোশন

লাতিন বাংলা সুপার কাপের চেয়ে বড় আকর্ষণ অপেক্ষা করছে রাত ১১টার সময়। ২০২৬ ফুটবল বিশ্বকাপের ড্র অনুষ্ঠান ফিফা প্লাস সরাসরি সম্প্রচার করবে। ফুটবলে দুপুরে বাংলাদেশ ফুটবল লিগের ব্রাদার্স-বসুন্ধরা কিংস মুখোমুখি হবে। অ্যাশেজে গোলাপি বলের টেস্টের ব্রিসবেনে দ্বিতীয় দিনের খেলা চলছে। ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংসে ৩৩৪ রানে গুটিয়ে গেছে। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া ২৬ ওভারে ২ উইকেটে ১৪৬ রান করেছে। এক নজরে দেখে নিন টিভিতে কী কী খেলা রয়েছে।

ক্রিকেট খেলা সরাসরি

ব্রিসবেন টেস্ট: ২য় দিন

অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড

সকাল ১০টা

সরাসরি

স্টার স্পোর্টস ১

নারী বিগ ব্যাশ

মেলবোর্ন রেনেগেডস-সিডনি সিক্সার্স

বিকেল ৫টা ৪০ মিনিট

সরাসরি

স্টার স্পোর্টস সিলেক্ট ১

ফুটবল খেলা সরাসরি

ফিফা বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের ড্র

রাত ১১টা

সরাসরি

ফিফা+

বাংলাদেশ ফুটবল লিগ

ব্রাদার্স-বসুন্ধরা

বেলা ২টা ৩০ মিনিট

সরাসরি

টি স্পোর্টস

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মুলারদের বিপক্ষে প্রতিশোধ নিতে তর সইছে না মেসির

ক্রীড়া ডেস্ক    
থমাস মুলারের বিপক্ষে ফাইনাল খেলতে মুখিয়ে আসেন লিওনেল মেসি। ছবি: এএফপি
থমাস মুলারের বিপক্ষে ফাইনাল খেলতে মুখিয়ে আসেন লিওনেল মেসি। ছবি: এএফপি

লিওনেল মেসি অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন ট্রফির দিকে। কাছে এসেও পরম্য আরাধ্য বিশ্বকাপ শিরোপা ছুঁতে না পারার তীব্র আক্ষেপ কাজ করছে তাঁর। অনেকেই হয়তো বুঝতে পেরেছেন ২০১৪ ফুটবল বিশ্বকাপে মারাকানায় মেসির রানার্সআপ হওয়ার গল্প শোনা যাচ্ছে। মেসি যখন আক্ষেপে পুড়ছিলেন, টমাস মুলার তখন চ্যাম্পিয়ন জার্মানির হয়ে উল্লাস করতে ছিলেন ব্যস্ত।

১১ বছর পর এবার মুলারের বিপক্ষে প্রতিশোধ নেওয়ার অপেক্ষায় মেসি। এবারের মঞ্চ মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) কাপ ফাইনাল। চেজ স্টেডিয়ামে আগামীকাল বাংলাদেশ সময় রাত দেড়টায় শুরু হবে এমএলএস কাপের ইন্টার মায়ামি-ভ্যাঙ্কুভার হোয়াইটক্যাপস ফাইনাল। শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচের আগে মুলারকে এমএলএসে স্বাগত জানিয়েছেন মেসি। আর্জেন্টিনার বিশ্বজয়ী ফরোয়ার্ড বলেন, ‘সবার আগে এটা শুনে ভালো লাগলা যে মুলার মেজর লিগ সকারে (এমএলএস) খেলতে এসেছে। ফাইনালে মুখোমুখি হতে পেরে ভালো লাগছে। আবারও ফের মুখোমুখি হচ্ছি। আমরা ভ্যাঙ্কুভারের বিপক্ষে আগে খেলেছি। তারা কেমন দল, আমরা জানি।’

মেসি অবশ্য ২০১৪ সালের ফাইনালে জার্মানির কাছে হারের প্রতিশোধের দিকে ইঙ্গিত করেননি। এ বছরের ১ মে কনক্যাকাফ চ্যাম্পিয়নস কাপের সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে ভ্যাঙ্কুভারের কাছে ৩-১ গোলে হেরেছিল মায়ামি। দুই লেগ মিলিয়ে ৫-৩ গোলে হেরে টুর্নামেন্টের সেমি থেকেই বিদায়ঘণ্টা বেজে গিয়েছিল মেসির দলের। তখন মুলার ভ্যাঙ্কুভারে যোগদানও করেননি। জার্মান এই কিংবদন্তি এ বছরের আগস্টে ফ্রি এজেন্ট হিসেবে ভ্যাঙ্কুভারে এসেছেন।

আগামীকাল এমএলএস কাপ ফাইনালের আগে মে মাসে ভ্যাঙ্কুভারের কাছে হারের কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন মেসি। একই সঙ্গে আর্জেন্টাইন তারকা ফরোয়ার্ড ফের উল্লেখ করেছেন মুলারের আগেও। ভ্যাঙ্কুভারের বিপক্ষে ফাইনালের আগে গত রাতে মেসি বলেন,‘কনক্যাকাফ চ্যাম্পিয়নস কাপে তারা (ভ্যাঙ্কুভার) আমাদের বিদায় করে দিয়েছিল। পুরো বছরজুড়ে দুর্দান্ত খেলেছিল। সব ধরনের প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে শেষ অব্দি লড়ে গিয়েছিল। আশা করি, অনেক কঠিন একটা ম্যাচ হবে। মুলারের যোগ হওয়া দলকে আরও দারুণ করে তুলেছে। ম্যাচে কী করতে হবে, সেক্ষেত্রে দল (ইন্টার মায়ামি) আরও সচেতন থাকবে। বিশেষ একটা ফাইনাল হতে যাচ্ছে ও ফল আমাদের পক্ষে আসবে বলে আশা করি।’

ভ্যাঙ্কুভারে আসার পর সব ধরনের প্রতিযোগিতামূলক ফুটবলে ১২ ম্যাচ খেলে মুলার করেছেন ৯ গোল। অ্যাসিস্ট করেছেন ৪ গোলে। এর আগে ২০০৮ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ১৭ বছরে বায়ার্ন মিউনিখের জার্সিতে তিনি খেলেছেন ৭৫৬ ম্যাচ। জার্মান ক্লাবটির হয়ে করেছেন ২৫০ গোল ও অ্যাসিস্ট করেছেন ২৭৬ গোলে। বায়ার্নের হয়ে ১৩ বার বুন্দেসলিগা ও চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা জিতেছেন দুইবার। এদিকে মেসি আগামীকাল ইন্টার মায়ামির হয়ে তৃতীয় শিরোপা জয়ের লক্ষ্যে নামছেন। ২০২৩ লিগস কাপ, ২০২৪ সাপোর্টার্স শিল্ড জিতেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্লাবটির জার্সিতে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নিজেদের ইতিহাস নতুন করে লেখার সামনে এখন ওয়েস্ট ইন্ডিজ

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ২৫
চতুর্থ টেস্ট সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন শাই হোপ। ১৮৩ বলে ১১৬ রানে অপরাজিত থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৫৩১ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন। ছবি: ক্রিকইনফো
চতুর্থ টেস্ট সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন শাই হোপ। ১৮৩ বলে ১১৬ রানে অপরাজিত থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৫৩১ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন। ছবি: ক্রিকইনফো

ইতিহাস নিজেই নিজের পুনরাবৃত্তি ঘটায়—বহুল প্রচলিত প্রবাদের বেশির ভাগ সময় বাস্তব প্রতিফলন দেখা গেলেও অনেক সময় হয়ে ওঠে না। খেলার মাঠে এটা নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকে সবচেয়ে বেশি। বিশেষ করে ক্রিকেটে যেকোনো সময় ম্যাচের মোড় ঘুরে যেতে পারে।

টেস্ট ইতিহাসে চতুর্থ ইনিংসে সর্বোচ্চ ৪১৮ রান তাড়া করে জয়ের কীর্তি এখনো ওয়েস্ট ইন্ডিজের দখলে। ২০০৩ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ক্যারিবীয়রা এই রান তাড়া করে জিতেছিল। ২২ বছরে এর চেয়ে বড় লক্ষ্য বারবার চতুর্থ ইনিংসে দলগুলোর সামনে এসেছিল। কিন্তু কেউই সফল হয়নি। ক্রাইস্টচার্চে সিরিজের প্রথম টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে এখন সেই ইতিহাস নতুন করে লেখার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। ৫৩১ রানের লক্ষ্যে নেমে দ্বিতীয় ইনিংসে ৭৪ ওভারে ৪ উইকেটে ২১২ রানে আজ চতুর্থ দিনের খেলা শেষ করেছে। শাই হোপ আগামীকাল শেষ দিনে ১১৬ রানে ব্যাটিং করবেন। জাস্টিন গ্রিভস অপরাজিত ৫৫ রানে।

দ্বিতীয় ইনিংসে ৯৫ ওভারে ৪ উইকেটে ৪১৭ রানে আজ চতুর্থ দিনের খেলা শুরু করে নিউজিল্যান্ড। এই দিনে ৪ উইকেট হারিয়ে ৪৯ রান যোগ করেছে কিউইরা। ১০৯তম ওভারের শেষ বলে জ্যাকব ডাভিকে (১০) কট এন্ড বোল্ড করেন কেমার রোচ। ডাফি আউট হওয়ার পর ১০৯ ওভারে ৮ উইকেটে ৪৬৬ রান হওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে কিউইরা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের রোচ ৭৮ রানে নিয়েছেন ৫ উইকেট। টেস্টে এই নিয়ে ইনিংসে ১২ বার ৫ উইকেট নিয়েছেন ক্যারিবীয় এই পেসার।

নিউজিল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসে সর্বোচ্চ ১৭৬ রান করেন রাচীন রবীন্দ্র। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৪৫ রান আসে অধিনায়ক টম লাথামের ব্যাট থেকে। ৬৪ রান লিড যোগ হওয়ায় কিউইদের রান হয়েছে ৫৩০। ৫৩১ রানের লক্ষ্যে নেমে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর হয়ে যায় ২৮.৩ ওভারে ৪ উইকেটে ৭২ রান। যেভাবে মুড়ি-মুড়কির মতো উইকেট পড়ছিল, তাতে আজই সফরকারীদের অলআউট হওয়ার শঙ্কা ছিল। তখনই প্রতিরোধ গড়েন শাই হোপ ও জাস্টিন গ্রিভস। পঞ্চম উইকেটে ২৭৫ বলে ১৪০ রানের অবিচ্ছেদ্য জুটি গড়েন তাঁরা (হোপ-গ্রিভস)। জুটির ৫০.৯১ স্ট্রাইকরেটই বলে দেয়, প্রথাগত টেস্ট মেজাজে খেলে ইতিহাস গড়ার পথেই তারা এগোচ্ছে।

টেস্ট ক্যারিয়ারের চতুর্থ টেস্ট সেঞ্চুরি তুলতে হোপ খেলেছেন ১৩৯ বল। তিন অঙ্ক ছোঁয়ার পর তিনি খেলতে থাকেন ধীরস্থির গতিতে। আজ চতুর্থ দিনের খেলা যখন শেষ করেছেন, তখন তাঁর নামের পাশে স্কোর ১৮৩ বলে ১১৬ রান। তাঁর সঙ্গী গ্রিভস টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটি করেছেন। ১৪৩ বলে ১৬ চারে করেছেন ৫৫ রান। নিউজিল্যান্ডের জ্যাকব ডাফি নিয়েছেন ২ উইকেট। একটি করে উইকেট নিয়েছেন মাইকেল ব্রেসওয়েল ও ম্যাট হেনরি। ডাফি এর আগে প্রথম ইনিংসে নিয়েছেন ৫ উইকেট। তাঁর আগুনে বোলিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ইনিংসে ১৬৭ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল। টস হেরে আগে ব্যাটিং পাওয়া নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংসে সব উইকেট হারিয়ে করেছিল ২৩১ রান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত