Ajker Patrika
সাক্ষাৎকার

ফুটবলার না হলে শিক্ষক হতাম

সাফের দুটি শিরোপার সঙ্গে ঋতুপর্ণা চাকমা এবার হয়েছেন টুর্নামেন্টসেরাও। ছবি: বাফুফে

সাফের দুটি শিরোপা উঠেছে তাঁর হাতে। এবার হয়েছেন টুর্নামেন্টসেরাও। সেই ঋতুপর্ণা চাকমার সাফল্যের সিঁড়িগুলো কিন্তু সহজ ছিল না। জীবন আর ফুটবলকে সমানভাবে এগিয়ে নিতে কঠিন এক যুদ্ধই করতে হয়েছে তাঁকে। সে গল্পই তিনি শুনিয়েছেন আজকের পত্রিকাকে। বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের এই ফরোয়ার্ডের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন জহির উদ্দিন মিশু

জহির উদ্দিন মিশু
আপডেট : ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১০: ৩৬

প্রশ্ন: দুবার দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট জিতলেন। সেই সঙ্গে এবার হলেন সেরা খেলোয়াড়ও। ভালো লাগার ব্যাপারটা নিয়ে কিছু বলবেন?

ঋতুপর্ণা চাকমা: টানা দুবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার অনুভূতি ভাষায় প্রকাশের নয়। আমি ব্যক্তিগতভাবে খুবই খুশি। এমন দিন দ্বিতীয়বার দেখতে পাব কখনো ভাবিনি। এটা ঠিক, সেরা হওয়াটা আমাদের প্রাপ্য ছিল। কারণ, এত দূর আসতে সবাইকে অনেক শ্রম, অনেক বাধা টপকাতে হয়েছে। তবে দেশবাসীর দোয়া, সমর্থন না থাকলে কিছুই করা সম্ভব হতো না। সে জন্য সবাইকে ধন্যবাদ। তারা আমাদের যে পরিমাণ ভালোবাসা দিয়েছে, তার কিছুটা হলেও পূরণ করতে পেরে আমাদের ভালো লাগছে।

প্রশ্ন: ফাইনালে আপনার ম্যাজিক্যাল গোলেই জিতেছে বাংলাদেশ। ওই গোল এবং ম্যাচের পরিকল্পনা নিয়ে কিছু শুনতে চাই।

ঋতুপর্ণা: অবশ্যই ওই গোলের অবদান পুরো দলের, সতীর্থদের। তাদের সহযোগিতা ছাড়া হয়তো এমন সুন্দর একটি গোল করতে পারতাম না। তবে আমাদের একটা বিশ্বাস ছিল যে এত দূর যেহেতু এসেছি, আমরা হারতে চাই না। অবশ্যই ট্রফিটা নিয়েই বাড়ি যাব—এমন একটা জেদ, একটা আত্মবিশ্বাস সবার মধ্যে কাজ করেছে। সেই লক্ষ্য আর আত্মবিশ্বাস নিয়েই সবাই ফাইনালে মাঠে নামি। আমার একটা টার্গেট ছিল, যদি ডি-বক্সের বাইরে বল পেয়ে যাই, সেটা সরাসরি পোস্টে শট নেওয়ার চেষ্টা করব। কারণ, নেপাল কিন্তু সমতার পর একটু রক্ষণাত্মক খেলতে শুরু করেছিল। এরপর পেয়েও যাই সুযোগটা।

প্রশ্ন: দুটি সাফ জয়ের পর দেশের জন্য, দেশের ফুটবলের জন্য ভবিষ্যতে আর কী কী করতে চান?

ঋতুপর্ণা: আমার ক্যারিয়ার তো সবে শুরু। এই দেশকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন। সামনে আরও দারুণ কিছু উপহার দিতে চাই। দেশের মানুষ আমাদের যতটা মূল্যায়ন করেছে, যতটা সম্মান দিয়েছে, আমরা চেষ্টা করব তার প্রতিদান দিতে। সামনের সাফেও এমন সাফল্যের প্রত্যাশায় আছি। দেশকে আরও জেতাতে চাই। সবাই দোয়া করবেন। আপনাদের দোয়া আর আমাদের পরিশ্রমে যেন ফুটবল আরও এগিয়ে যেতে পারে।

প্রশ্ন: যত দূর জানি, আপনার বাবা সব সময় চাইতেন, আপনি সেরা হন। আপনার সাফল্য আর তিনি দেখে যেতে পারেননি...

ঋতুপর্ণা: বাবা এবং ভাই—দুজনই কিন্তু ফুটবল ভীষণ পছন্দ করতেন। বিশেষ করে বাবা, তিনি ফুটবলকে অসম্ভব ভালোবাসতেন। যেদিন ফুটবল খেলার কথা বাসায় প্রথম জানিয়েছিলাম, সবার আগে বাবা ‘হ্যাঁ’ বলে দেন। তিনি শুরু থেকেই আমার এই লড়াইয়ের সঙ্গী ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ বাবাকে হারিয়ে ফেললাম। এরপর ভাইটাও চলে গেল। জানি না তাঁরা কেমন আছেন। তবে বাবা চলে যাওয়ার পর আমার পথচলাও খানিকটা থমকে যায়। পুরো পরিবারকেই দীর্ঘদিন সংগ্রাম করতে হয়েছে। কী সুন্দর ছিল সেই দিনগুলো! বাবা আমার হাত ধরে অনুশীলনে নিয়ে যেতেন, আবার নিয়ে আসতেন। বাবাকে আজ খুব মনে পড়ছে। এবার আমি দক্ষিণ এশিয়ায় সেরা খেলোয়াড় হলাম। কিন্তু বাবা দেখে যেতে পারলেন না। আজ বাবা বেঁচে থাকলে অনেক খুশি হতেন।

প্রশ্ন: বাবাহীন পৃথিবীতে ফুটবলে আপনাকে কে প্রেরণা জোগান, সব সময় কাকেই-বা পাশে পাচ্ছেন?

ঋতুপর্ণা: এখন মা-ই আমার সব। তাঁর সঙ্গে প্রতিদিন কথা হয়। প্রতিটি ম্যাচের আগে নির্দিষ্ট একটা সময় রাখি মায়ের জন্য। সত্যি আমি খুবই গর্বিত যে এমন একজন মা পেয়েছি। যাঁকে সব সময় পাশে পাওয়া যায়। সুখে-দুঃখে আমাকে মা সাহস জুগিয়ে যান। যেদিন আমাদের ফাইনাল ম্যাচ, ওই দিন মাঠে নামার আগে মাকে কল দিয়েছিলাম। মা খুব আগ্রহ নিয়ে দৃঢ়তার সঙ্গে বললেন, ‘আমার মন বলছে, তোমরাই জিতবে। ট্রফিটা তোমাদের হাতেই উঠবে। দেখো, মায়ের মন কখনো মিথ্যা বলে না।’ শেষ পর্যন্ত তা-ই হলো। নেপালকে হারিয়ে আমরা চ্যাম্পিয়ন হলাম। শুধু ফাইনালের দিন নয়, প্রতি ম্যাচের আগেই মা আশীর্বাদ করতেন। সবার মঙ্গল কামনা করতেন। এর চেয়ে বড় আর কী হতে পারে।

প্রশ্ন: মেয়েদের ফুটবলে আসা ততটা সহজ নয়। এই পর্যন্ত আসতে আপনাকে কতটা বাধা আর লড়াই করতে হয়েছে?

ঋতুপর্ণা: এমন ঘটনা আমিও শুনেছি। অনেক মেয়েকেই পরিবার থেকে বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে। কিন্তু আমার বেলায় পুরো উল্টো। যেহেতু বাবা ছিলেন ফুটবলের একজন দারুণ সমর্থক। তাই ফুটবলে আমার আসা, এরপর এগিয়ে যেতে পরিবার থেকে অন্তত কোনো প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়নি। সবাই খুবই আন্তরিক ছিলেন। তবে দুজনের অবদান কখনো ভুলতে পারব না। একজন আমার স্যার বিয়াশন চাকমা; সম্পর্কে তিনি কাকা হন। আরেকজন শান্তমনি চাকমা। দুজনই আমার ছোটবেলার কোচ। আমি, রুপনা ও মনিকা—তিনজনের বাড়ি পাশাপাশি। তিনজনই তাঁদের কাছ থেকে ফুটবলটা শিখেছিলাম। বলতে পারেন হাতেখড়ি।

প্রশ্ন: ছোটবেলায় অনেকের অনেক ইচ্ছা থাকে। যদি ফুটবলার না হতেন, কী হতে চাইতেন?

ঋতুপর্ণা: আমারও অনেক স্বপ্ন ছিল। শুরুতে কিন্তু ভাবিনি ফুটবলার হব। কিন্তু কীভাবে যেন হয়ে গেলাম। ছোটবেলায় তো অনেক কিছু হওয়ারই ইচ্ছা ছিল। তবে একটা ইচ্ছা এখনো আছে—শিক্ষক হওয়া। যদি ফুটবলার না হতাম, তাহলে নিশ্চিত শিক্ষকই হতে চাইতাম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রোনালদোকে পর্তুগালের এখন অনেক বেশি দরকার, বলছেন কোচ

ক্রীড়া ডেস্ক    
পর্তুগাল ফুটবল দলে রোনালদোকে অনেক দরকার বলে মনে করেন কোচ রবার্তো মার্তিনেজ। ছবি: এএফপি
পর্তুগাল ফুটবল দলে রোনালদোকে অনেক দরকার বলে মনে করেন কোচ রবার্তো মার্তিনেজ। ছবি: এএফপি

বয়সের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ছুটছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। একের পর এক গোল করে ওলটপালট করে দিচ্ছেন রেকর্ড বইয়ের পাতা। ৪০ পেরোনোর পরও যেভাবে পাগলা ঘোড়ার মতো ছুটে চলেছেন, তা সত্যিই অসাধারণ। ফুটবলপ্রেমীরা তো বটেই, ছন্দে থাকা রোনালদোকে দেখে প্রতিপক্ষ দলের মুখেও শোনা যায় প্রশংসা।

মাঠে তো বটেই, অনুশীলনেও বিন্দুমাত্র ছাড় দেন না রোনালদো। ফিটনেস নিয়ে অনেক কাজ করেন পর্তুগালের তারকা ফুটবলার। ২০২৬ বিশ্বকাপ আসতে আসতে তাঁর বয়স হয়ে যাবে ৪১ বছর। আগামী বছরের জুন-জুলাইয়ে শুরু হতে যাওয়া পর্তুগালের বিশ্বকাপ পরিকল্পনা স্বাভাবিকভাবেই তাঁকে ঘিরে তৈরি হচ্ছে। পর্তুগালের প্রধান কোচ রবার্তো মার্তিনেজের মতে রোনালদো শুরুর একাদশে থাকার মতো অপরিহার্য খেলোয়াড়।

রোনালদোকে নিয়ে স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম মার্কাকে কদিন আগে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অনেক কথাই বলেছেন মার্তিনেজ। কোচের মতে তিনটি গুণের কারণে রোনালদোকে এখনো পর্তুগালের অনেক প্রয়োজন। পর্তুগাল কোচ বলেন, ‘প্রতিভা, অভিজ্ঞতা, মানসিকতা—সব সময় এই তিনটা জিনিস আমরা দেখি। দলের জন্য কিছু করতে সদা তৎপর থাকে সে। একারণেই সে জাতীয় দলের অপরিহার্য অংশ। সেরা হওয়ার ক্ষুধাটা তার মধ্যে অনেক কাজ করে। মাঠে সে অনেক বড় অবদান রাখতে পারে।’

ফুটবল ইতিহাসের প্রথম ফুটবলার হিসেবে ১০০০ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করার লক্ষ্যের কথা আগেই বলেছিলেন রোনালদো। আন্তর্জাতিক দল, ক্লাব ফুটবল সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ২০ বছরের বেশি সময় খেলে তিনি করেছেন ৯৫৪ গোল। তাঁর সেই ১০০০ গোলের প্রসঙ্গ এসেছে পর্তুগাল কোচ মার্তিনেজের কাছেও। স্প্যানিশ সংবাদ মাধ্যম মার্কাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কোচ বলেন, ‘সে (রোনালদো) এখন তার ক্যারিয়ারের দারুণ এক অবস্থায় আছে। তার গোলের ব্যাপারে আলাপ-আলোচনা হলে সে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে কথাবার্তা কম বলে। ১০০০ সংখ্যাটা আমার মতে গোল নয়। কত দিন পরে সে অবসর নেবে, তেমনই কিছু মনে হচ্ছে। তার সাফল্যের রহস্য হচ্ছে আজ ও কাল সব সময় নিজের সেরাটা দেওয়া।’

২০০৬ থেকে শুরু করে ২০২২ পর্যন্ত পাঁচ বিশ্বকাপেই খেলেছেন রোনালদো। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোতে আগামী বছরের জুন-জুলাইয়ে হতে যাওয়া বিশ্বকাপ হতে যাচ্ছে তাঁর ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ বিশ্বকাপ। আগামী বছরই ফুটবল বিশ্বকাপ ক্যারিয়ারের ইতি টানতে যাচ্ছেন বলে কয়েক মাস আগে জানিয়েছেন রোনালদো। তবে প্রতিযোগিতামূলক ফুটবল কবে ছাড়বেন, তা এখনো জানাননি তিনি। পর্তুগালের জার্সিতে এখন পর্যন্ত ২২৬ ম্যাচে ১৪৩ গোল করেছেন তিনি। আন্তর্জাতিক ফুটবলে এখনো তিনি সর্বোচ্চ গোলদাতা। গত রাতে এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগ টুতে তাঁর দল আল নাসর ৫-১ গোলে হারিয়েছে আল জাওরাকে। গোল না পেলেও সতীর্থকে দিয়ে একটি গোল করিয়েছেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আগামীকাল নামছে বিধ্বস্ত ইংল্যান্ড, খেলা দেখবেন কোথায়

ক্রীড়া ডেস্ক    
অ্যাশেজে মিচেল স্টার্কের তোপে কাঁপছে ইংল্যান্ড। এখন পর্যন্ত  তিন টেস্টে ২২ উইকেট নিয়েছেন স্টার্ক। ছবি: ক্রিকইনফো
অ্যাশেজে মিচেল স্টার্কের তোপে কাঁপছে ইংল্যান্ড। এখন পর্যন্ত তিন টেস্টে ২২ উইকেট নিয়েছেন স্টার্ক। ছবি: ক্রিকইনফো

অ্যাশেজে প্রথম তিন টেস্ট হেরে আগেভাগেই সিরিজ খুইয়েছে ইংল্যান্ড। পার্থ, ব্রিসবেনে দুই টেস্টেই ইংল্যান্ড হেরেছে ৮ উইকেট। অ্যাডিলেডে তৃতীয় টেস্টে ইংলিশদের ৮২ রানে হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। এখন বাকি দুই টেস্টে ইংলিশরা নামবে ধবলধোলাই এড়ানোর মিশনে। বাংলাদেশ সময় আগামীকাল ভোর ৫টা ৩০ মিনিটে মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে শুরু হবে বক্সিং ডে টেস্ট। এক নজরে দেখে নিন টিভিতে কী কী খেলা রয়েছে।

ক্রিকেট খেলা সরাসরি

মেলবোর্ন টেস্ট: ১ম দিন

অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড

আগামীকাল ভোর ৫ টা ৩০ মিনিট

সরাসরি

স্টার স্পোর্টস ১

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিপিএল শুরুর আগের দিন চট্টগ্রামের দায়িত্ব নিচ্ছে বিসিবি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ২০
চট্টগ্রাম রয়্যালসের দায়িত্ব নিচ্ছে বিসিবি। ছবি: সংগৃহীত
চট্টগ্রাম রয়্যালসের দায়িত্ব নিচ্ছে বিসিবি। ছবি: সংগৃহীত

১২তম বিপিএল শুরু হচ্ছে আগামীকাল। কিন্তু টুর্নামেন্ট শুরুর আগের দিন চট্টগ্রাম রয়্যালসের মালিকানা নিয়ে তৈরি হয়েছে জটিলতা। এখন এই ফ্র্যাঞ্চাইজির দায়িত্ব নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বিষয়টি আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছেন বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্যসচিব ও বিসিবি পরিচালক ইফতেখার রহমান মিঠু।

মালিকানা নিয়ে জটিলতা তৈরি হলেও চট্টগ্রাম রয়্যালসের ক্রিকেটাররা অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছেন। ছবি: ফেসবুক
মালিকানা নিয়ে জটিলতা তৈরি হলেও চট্টগ্রাম রয়্যালসের ক্রিকেটাররা অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছেন। ছবি: ফেসবুক

চট্টগ্রাম রয়্যালসের মালিকানা ছেড়ে দিয়েছেন ফ্র্যাঞ্চাইজিটির স্বত্বাধিকারী আবদুল কাইয়ুম। বিসিবির দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, আগমুহূর্তে স্বত্বাধিকারী শূন্য হয়ে যাওয়া চট্টগ্রাম রয়্যালসের দায়িত্ব নিতে যাচ্ছে বিসিবি। সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশার সুমনকে টিম ডিরেক্টর করে বিসিবিই দলটি পরিচালনা করবে।

নিলামে ১ কোটি ১০ লাখ টাকায় নাঈম শেখকে নিয়ে হইচই ফেলে দেয় চট্টগ্রাম রয়্যালস। ছবি: ফেসবুক
নিলামে ১ কোটি ১০ লাখ টাকায় নাঈম শেখকে নিয়ে হইচই ফেলে দেয় চট্টগ্রাম রয়্যালস। ছবি: ফেসবুক

নিলাম তালিকায় কোটি টাকার ওপরে ওপেনার নাঈম শেখকে নিয়ে আলোচনায় আসে চট্টগ্রাম রয়্যালস। এবারের বিপিএল নিলাম থেকে সবচেয়ে বেশি দামে ক্রিকেটার কেনার রেকর্ডটি তাদেরই। ওপেনার নাঈম শেখকে ১ কোটি ১০ লাখ টাকায় দলে ভিড়িয়েছিল ফ্রাঞ্চাইজিটি। এরপর থেকেই নানা বিশৃঙ্খলা দেখা গেছে ফ্র্যাঞ্চাইজিটিতে।

নেতিবাচক কারণে বারবার খবরের শিরোনাম হয়ে থাকে বিপিএল। সবশেষ বিপিএলে যেন ছাড়িয়ে গেছে সবকিছুকেই। দুর্বার রাজশাহী, চিটাগং কিংসের বিরুদ্ধে ক্রিকেটার ও স্টাফদের পারিশ্রমিক বকেয়া রাখাসহ নানা অভিযোগ উঠেছিল। এবার ফ্র্যাঞ্চাইজির নাম চিটাগং কিংসের পরিবর্তে হয়েছে চট্টগ্রাম রয়্যালস। ট্রায়াঙ্গুলার সার্ভিসেস নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে বিসিবি দিয়েছিল চট্টগ্রাম রয়্যালসের দায়িত্ব। ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি, ব্যাংক গ্যারান্টি, ক্রিকেটারদের অর্থ পরিশোধসহ বিসিবির সব শর্ত ঠিকঠাকমতো পূরণ করতে পেরেছে কি না, তা নিয়ে সংশয় দেখা যায়। ঠিক বিপিএল শুরুর আগের দিন ট্রায়াঙ্গুলার সার্ভিসেস দায়িত্ব ছেড়ে দিল।

সিলেট স্টেডিয়ামে আগামীকাল সিলেট টাইটান্স-রাজশাহী ওয়ারিয়র্স ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে ১২তম বিপিএল। রাতে মুখোমুখি হবে চট্টগ্রাম রয়্যালস-নোয়াখালী এক্সপ্রেস। বিপিএলে এবারই প্রথমবারের মতো অংশ নিচ্ছে নোয়াখালী এক্সপ্রেস। ২৩ জানুয়ারি মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে হবে ফাইনাল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মাঠের ক্রিকেটের বাইরের বিষয় নিয়েও ভাবতে হচ্ছে ইংল্যান্ডকে

ক্রীড়া ডেস্ক    
দুই ম্যাচ আগেই অ্যাশেজ খুইয়েছে ইংল্যান্ড। অনুশীলনে জফরা আর্চারের এমন চেহারাই ইংলিশ ক্রিকেট দলের প্রতিচ্ছবি। ছবি: ক্রিকইনফো
দুই ম্যাচ আগেই অ্যাশেজ খুইয়েছে ইংল্যান্ড। অনুশীলনে জফরা আর্চারের এমন চেহারাই ইংলিশ ক্রিকেট দলের প্রতিচ্ছবি। ছবি: ক্রিকইনফো

১১ দিনেই অ্যাশেজ খুইয়ে ফেলার পর হতাশ ‘বার্মি আর্মি’রা। অস্ট্রেলিয়ার সমর্থকেরাও কি একটু হতাশ নয়! উত্তেজনাপূর্ণ ক্রিকেট দেখবেন বলে আগামীকাল ভোরে মেলবোর্নে শুরু হতে যাওয়া বক্সিং ডে টেস্টে মাঠে যাওয়ার পরিকল্পনা করে রেখেছিলেন। কিন্তু অ্যাশেজ মেলবোর্নে আসার আগেই সিরিজ নিশ্চিত করে ফেলেছে অস্ট্রেলিয়া। তাতেই নিভে গেছে উত্তেজনার আগুন। সিরিজের বাকি দুটি টেস্ট তাই এক অর্থে নিয়মরক্ষারই।

কিন্তু ইংল্যান্ডের জন্য তা স্রেফ নিছক আনুষ্ঠানিকতার নয়। অ্যাশেজ পুনরুদ্ধারের যে স্বপ্ন নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে পা রেখেছিল ইংল্যান্ড, তা মিইয়ে যাওয়ার পর পরের দুটি টেস্ট বেন স্টোকসদের জন্য হবে আত্মবিশ্বাস পুনরুদ্ধার। বক্সিং ডে টেস্টে সেই চেষ্টাই করবে ইংল্যান্ড।

তবে শুধু মাঠের ক্রিকেট নয়, মাঠের বাইরের বিষয় নিয়েও ভাবতে হচ্ছে বেন স্টোকস ও তাঁর দলকে। ব্রিসবেন ও অ্যাডিলেড টেস্টের মাঝের বিরতিতে কুইন্সল্যান্ডের পর্যটন শহর নুসায় অবকাশ যাপনে গিয়েছিলেন ইংলিশ ক্রিকেটাররা। যেটাকে ‘স্ট্যাগ ডু’ বা ব্যাচেলর পার্টির সঙ্গে তুলনা করেছে ইংল্যান্ডের পত্রপত্রিকা। অ্যাডিলেডে জিতে সিরিজ বাঁচিয়ে রাখতে পারলে স্টোকসদের সেই অবকাশ যাপন নিয়ে হয়তো হইচই-ই হতো না। কিন্তু হচ্ছে, কারণ প্রথম তিন টেস্ট হেরেই আগেভাগে সিরিজ খুইয়ে বসেছে দল। অ্যাডিলেডে হারের পর ক্রিকেটারদের সে অবকাশ যাপনের চিত্রও বাইরে আসতে শুরু করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, মদ্যপ অবস্থায় হোটেলে ফেরার পথ খুঁজছেন ওপেনার বেন ডাকেট। চারদিকে সমালোচনার মুখে সফর চলাকালে অতিরিক্ত মদ্যপান কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় জানিয়ে ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন ইংল্যান্ড দলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রব কি।

এসব ঘটনা নিয়ে ভাবতে না চাইলেও পিছু ছাড়ছে না স্টোকসদের। মেলবোর্নে বক্সিং ডে টেস্ট শুরুর আগে গতকাল সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন বেন স্টোকস। নুসায় অবকাশ যাপন নিয়েও সেখানে একের পর এক প্রশ্নের মুখে পড়তে হলো তাঁকে। অযাচিত এক চাপের মধ্যেও দলকে আগলে রাখার চেষ্টা করে গেলেন ইংল্যান্ডের টেস্ট অধিনায়ক, ‘এ মুহূর্তে আমার প্রধান ভাবনা খেলোয়াড়দের মানসিক কল্যাণ এবং তারা যেন শুক্রবার শুরু হতে যাওয়া মেলবোর্ন টেস্টের জন্য প্রস্তুত থাকে, সেটা দেখা। সংবাদমাধ্যমের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকেও চাপ এলে তা ব্যক্তিগতভাবে খুব কঠিন হয়ে ওঠে। এই কঠিন পরিস্থিতিতে নেতৃত্বস্থানীয়দের সমর্থন পাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’

আর অধিনায়ক হিসেবে দলের পাশেই থাকছেন স্টোকস। চাপের মধ্যে থাকা বেন ডাকেটকে নিয়ে বলতে গিয়ে নিজের অবস্থানটা স্পষ্ট করে দিলেন স্টোকস, ‘অবশ্যই ওর (ডাকেট) কাছে গিয়েছি, ওর কথা বলেছি। পুরো প্রক্রিয়ায় পুরোপুরিভাবে সবটুকু পাশে থাকার কথা জানিয়েছি। এই দলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার ও। সিরিজের দুটি ম্যাচ এখনো বাকি। এই দলের ওপর ভালো প্রভাব ওর (ডাকেটের)।’ নুসায় সতীর্থরা যা করেছে, সেটা ভুল কি না, এমন প্রশ্নে স্টোকসের উত্তর, ‘আমি এর মধ্যেই সব উত্তর দিয়ে দিয়েছি।’

অস্ট্রেলিয়ার মাঠে ১৫ বছর কোনো টেস্ট জিততে পারেনি ইংল্যান্ড। ব্যর্থতার সেই ধারাবাহিকতা এবারও বজায় থাকায় দলের সবকিছুই স্বাভাবিকভাবেই কড়া নজরদারির মধ্যে বলে মনে করেন স্টোকস, ‘৩-০-তে পিছিয়ে থাকলে দাঁড়ানোর জায়গা থাকে না। তবু সামনে দুটো ম্যাচ আছে, সেটাতেই মনোযোগ দিতে হবে। আর অস্ট্রেলিয়ায় আমরা বহুদিন ধরে ম্যাচ জিততে পারিনি।’ একটা জয়ই এখন খুইয়ে ফেলা অ্যাশেজে সান্ত্বনা হতে পারে ইংলিশদের।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত