Ajker Patrika
সাক্ষাৎকার

রেজাল্ট তখনই আসে, যখন ফাইট দেবেন

রেজাল্ট তখনই আসে, যখন ফাইট দেবেন
রানা আব্বাস, ঢাকা
আপডেট : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৫: ০৩

২ টেস্টে ১৫৫ রান, সিরিজের সর্বোচ্চ ১০ উইকেট নিয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে ঐতিহাসিক টেস্ট সিরিজের সেরা খেলোয়াড় মেহেদী হাসান মিরাজ। সিরিজটা তাঁর অলরাউন্ডার পরিচয়ের সেরা উদাহরণ হয়ে রইল। মিরাজ কাল বিকেলে তাঁর মিরপুরের বাসায় আজকের পত্রিকাকে লম্বা সময় দিলেন নিজের কীর্তি, সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স, ক্যারিয়ার, সামনের ভারত সিরিজ নিয়ে বিস্তারিত বলতে। তাঁর দীর্ঘ সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন রানা আব্বাস। 

প্রশ্ন: চার মাস আগে বিশ্বকাপের আগে টি-টোয়েন্টি থেকে বাদ পড়েই কি ভালো করার জেদ চেপেছিল মনে? 
মেহেদী হাসান মিরাজ: জেদ ঠিক না। আমি যখন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ছিলাম না, তখন আমার সঙ্গে বিসিবি সভাপতির (নাজমুল হাসান পাপন) কথা হয়েছিল। তিনি আমার কাছে জানতে চেয়েছিলেন, দলের সঙ্গে যেতে চাও কি না। আমি তখন পরিষ্কার হতে চাইলাম, ১৫ জনের দলে আমাকে রাখা হচ্ছে কি না। আমাকে বলেছিলেন, ১৭ জনের দলে সদস্য হতে; দলের সঙ্গে থাকতে। ১৭ জনের সদস্য হয়ে যেতে চাইনি। মনে হয়েছে, ওটা আমার জন্য ক্ষতি হবে। এই যে পাঁচটা মাস সুযোগ পেয়েছি, এ সময় নিজের ফিটনেস, স্কিল নিয়ে নিবিড়ভাবে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। সেটারই ফল পেয়েছি। 

প্রশ্ন: প্রস্তুতির এই সময়ে স্কিলে কোথায় বেশি উন্নতি করতে চেয়েছেন? 
মিরাজ: প্রস্তুতির শুরুতে বোলিংয়ে খুব খারাপ অবস্থায় ছিলাম। সোহেল স্যার (সোহেল ইসলাম) বারবার আমাকে নিয়ে টেনশন করছিলেন। এরপর কাজ করেছি। পরে যখন ঠিক হলো, তিনি অনেক স্বস্তি পেলেন। বাবুল স্যারের (মিজানুর রহমান) সঙ্গে ট্রিগার মুভমেন্ট, ব্যাটিং নিয়ে কাজ করেছি। দুজনের সঙ্গে কাজ করার ফল পেয়েছি। 

প্রশ্ন: ওয়ানডে ও টেস্টে আপনি নিয়মিত, তিন সংস্করণেই নিয়মিত হতে আপনার আসলে আর কী করণীয়? 
মিরাজ: আমি তিন ফরম্যাটেই খেলতে চাই। আমি যখন টি-টোয়েন্টিতে বাদ পড়েছি, ওটা যৌক্তিক ছিল। আমি এই সংস্করণে ভালো খেলতে পারিনি। চার বছর আগে যখন ফিরে এলাম এবং ওই সময়ে যখন বাদ পড়লাম, বাদ পড়ার অবস্থায় ছিলাম না। ইংল্যান্ডের সঙ্গে ম্যাচসেরা, এশিয়া কাপে ওপেন করানো হয়েছে, একটাতে ৩৮ রানের ইনিংস খেলেছিলাম, আরব আমিরাতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ ম্যাচসেরা হয়েছিলাম—সব মিলিয়ে যখন টি­-টোয়েন্টিতে বাদ পড়ি, তখন আমি আসলে বাদ পড়ার পজিশনে ছিলাম না। এটা জানি না, কেন আমাকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। তবে বলেছিল যে ওয়ানডে ও টেস্টে বেশি মনোযোগ রাখতে বাদ পড়েছি। 

প্রশ্ন: ব্যাটিংয়ে আপনাকে নিয়ে যে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে এত দিন, আপনি খুব ইতিবাচক, সহজেই ‘না’ করেন না। এ কারণেই কি আপনাকে নিয়ে বেশি পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে? 
মিরাজ: ঠিক বলেছেন। যেখানেই বলে, সেখানেই রাজি হয়ে যাই খেলতে। আমি সব সময় দলের জন্য খেলি। দলের জন্য অনেক বিসর্জন দেওয়ার চেষ্টা করি, নিজের ক্যারিয়ারও বিসর্জন দেওয়ার চেষ্টা করি। রাজি হচ্ছি শুধু দলের জন্যই। একটা পজিশনে যদি খেলা যায়, সেই পজিশন সম্পর্কে ভালো জানা-বোঝা যায়। আমি আটে ব্যাটিং করি লম্বা সময়। ওখানকার ভূমিকা সম্পর্কে আমি খুব ভালো বুঝি। 

প্রশ্ন: আরেকটু ওপরে ব্যাটিং করার কথা অনেকবার বলেছেন। আপনার সবচেয়ে পছন্দের পজিশন আসলে কোনটি? 
মিরাজ: যদি পাঁচ-ছয়ে ব্যাটিং করতে পারি, অনেক ভালো। এই মুহূর্তে এখানে ব্যাটিং করা কঠিন। এখানে প্রতিষ্ঠিত যারা, অনেক দিন ধরে ভালো খেলছে, দীর্ঘদিন দলকে সার্ভিস দিচ্ছে। ওখানে এখন ব্যাটিং করার দাবি করব না, করাটা অযৌক্তিক হবে। তবে যখন সুযোগ আসবে, ওখানে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারলে ভালো লাগবে। 

প্রশ্ন: আট নম্বর পজিশন মানে বেশির ভাগ সময়ে ব্যাটিং করতে হয় চাপের মধ্যে। বেশির ভাগ ইনিংস মেরামত করার কাজ করতে হয়। আর যেদিন আপনার একটু নির্ভার ব্যাটিংয়ের সুযোগ মেলে, তখন দলের ৩০০-৪০০ রান হয়ে যায়, দল তখন ইনিংস ঘোষণার কাছাকাছি এসে যায়। এটা ভেবে একটু দুর্ভাগা মনে হয় কি না—সাকিব আল হাসানের মতো আরেকটু ওপরে ব্যাটিং করতে পারলে হয়তো এত দিনে নিজেকে দুর্দান্ত অলরাউন্ডার হিসেবেই প্রতিষ্ঠা করতে পারতেন?
মিরাজ: না। সবশেষ দুই-তিন বছর ভালো ব্যাটিং করার চেষ্টা করছি। আমি বোলিংয়ে মনোযোগী ছিলাম। দুর্ভাগা না, প্রথম দিকে নিজেকে ওভাবে প্রমাণ করতে পারিনি। এখন ধীরে ধীরে ভালো হচ্ছে ব্যাটিং। 

প্রশ্ন: পাকিস্তান সিরিজের আগে ভাবনাটা কী ছিল? ভেবেছিলেন, এভাবে দাপটের সঙ্গে সিরিজ জিতবেন? 
মিরাজ: আমরা সিরিজ জিতব, এটা কখনো ভাবিনি, চিন্তা করিনি। তবে হ্যাঁ, চিন্তা করেছিলাম, আমরা ভালো ক্রিকেট খেলতে পারি। আমরা পাকিস্তানে গিয়ে ভালো রান করতে পারি, উইকেট নিতে পারি, আমরা ওদের সঙ্গে ফাইট দিতে পারি। একটা রেজাল্ট তখনই আসে, যখন ফাইট দেবেন। আমরা যদি ফাইটই দিতে না পারি, তখন কোনো রেজাল্ট আসবে না। এই মানসিকতা আমাদের দলের প্রত্যেক খেলোয়াড়ের ছিল, আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে ফাইট দিতে চাই। এবং ফাইট দিতে দিতে একটা সময় কিন্তু আপনি জিতে যাবেন। 

প্রশ্ন: এই সিরিজে দুটি বড় জুটির সঙ্গে আপনার নাম জড়িয়ে। মুশফিকের সঙ্গে জুটিতে দলের অবস্থান ভালো ছিল। কিন্তু ২৬ রানে ৬ উইকেট—মানে খুব বিপর্যয়ের মধ্যে কোন বিষয়টি ইতিবাচকভাবে এগোতে সহায়তা করেছে? 
মিরাজ: লিটন আর আমি যখন ব্যাটিং শুরু করেছিলাম, তখন অবশ্য চাপ কাজ করেছে। তবে আমরা ওই মুহূর্তকে উপভোগের চেষ্টা করেছি। চেষ্টা করেছি, একে অন্যের সঙ্গে কথা বলতে। মুহূর্তটা উপভোগ করতে, এই পরিস্থিতিতে কীভাবে একেকটা বল খেলা যায়, আমরা গল্প করেছি। ওকে বলছিলাম, এশিয়া কাপে (২০১৮ সালের ফাইনাল) মনে আছে, তুমি আর আমি ওপেন করেছিলাম। ওই পরিস্থিতিটা কী রকম ছিল। হালকা হতে বিভিন্ন দুষ্টুমি করছিলাম। কারণ, আমাদের চাপ কমানোর প্রয়োজন ছিল। যখন আমরা দুজন খেলাটা ধরতে পারলাম, তখন আমরা সিরিয়াসনেস বাড়িয়ে দিলাম এবং গেমের মধ্যে ঢুকে গেলাম—কীভাবে খেলব, কীভাবে বড় ইনিংস করব, গেমকে সাজাব ইত্যাদি। 

প্রশ্ন: যখন ওদের ডমিনেট করছিলেন, পাকিস্তানি খেলোয়াড়দের প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল? 
মিরাজ: পাকিস্তানের মাটিতে গিয়ে আমরা পাকিস্তানকে হারিয়েছি, এটা বিশাল ব্যাপার। বিশেষ করে টেস্টে। একটা জিতেছেন, হয়তো অনেকে মনে করবেন, এমনি হয়ে গেছে। দুটি জয়—এটা কোনো মজার বিষয় নয়। আপনি দেখেন, আমরা ৯ দিনই ভালো ক্রিকেট খেলেছি। এ জন্যই জিতেছি। পাকিস্তানে যেটা ভালো লেগেছে, ওখানে প্রত্যেক মানুষ শ্রদ্ধা করেছে। 

প্রশ্ন: কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। তাঁকে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন? 
মিরাজ: তিনি পরিকল্পনা খুব ভালো করেন। ক্রিকেটারদের সঙ্গে যখন কথা বলেন, ক্রিকেটীয় জ্ঞান খুবই ভালো। বিভিন্ন সময়ে নানা বিষয়ে খেলোয়াড়দের সঙ্গে আলোচনা করেন। সবশেষ টেস্টের এক লাঞ্চের পরে বলেছিল, সায়েম আইয়ুব ব্যাটিং করছিল (দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে), আমি দুটি ফিল্ডার পেছনে নিয়েছিলাম। দুজন ফিল্ডার পেছনে থাকলে ব্যাটার ঝুঁকি নিয়ে মারতে পারবে। তিনি বললেন, তুমি মিড অনটা সামনে রেখে মিড অফটা হাফওয়েতে রাখলে আর অফ স্টাম্পের বাইরে বল করলে ও একটা ভুল করলে তোমার সুযোগ থাকবে উইকেট নেওয়ার। ওভাবে ফিল্ডিং সাজিয়ে বল করার চেষ্টা করেছি। তখনই ডাউন দ্য উইকেটে সে আউট হয়েছে। এই যে ছোট একটা পরিকল্পনা দিয়েছে, এগুলো তাঁর মধ্যে আছে। 

প্রশ্ন: সামনে ভারত সফর, এবার সেখানেও দুর্দান্ত কিছু করতে কতটা আত্মবিশ্বাসী? 
মিরাজ: শুরুটা ভালো হয়েছে, লড়াই করার মানসিকতা আছে। সে ধরনের বোলার, ব্যাটার আছে। বিশ্ব ক্রিকেটকে আমরা জানান দিয়েছি, ভালোভাবে আসছি। এটা শুরু মাত্র। ধরে রাখতে হবে। টেস্ট ক্রিকেট লম্বা প্রক্রিয়া। প্রতিটি প্রজন্মকে ক্রিকেটকে এগিয়ে নিতে হবে। ভারতের বিপক্ষে সবশেষ টেস্ট সিরিজে (২০২২) ওদের প্রায় হারিয়েই দিয়েছিলাম। ওরাও জানে, আমাদের সামর্থ্য আছে, আমরা ওদের যেকোনো সময় ধরতে পারি। আমরা ভালো করব ইনশা আল্লাহ। 

প্রশ্ন: সাকিব আল হাসানের পর দেশের আরেকজন সেরা অলরাউন্ডার হওয়ার পথে মিরাজ কতটা এগোলেন? 
মিরাজ: আমাকে অলরাউন্ডার হতে গেলে আরও অনেক কষ্ট করতে হবে। অনেক ভালো করতে হবে, ব্যাটিং-বোলিং দুটিতেই। আমি ভালো করার চেষ্টা করছি। যাতে বাংলাদেশ উপকৃত হয়। সাকিব ভাইকে দেখে আমরা সবাই অনুপ্রাণিত হয়েছি। তিনি বাংলাদেশ দলকে অনেক দিন ধরে সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছেন। যখন মানুষ বলে, আমি অলরাউন্ডার হচ্ছি, শুনে খুব ভালো লাগে। এখন যেহেতু ভালো ব্যাটিংটা করছি; আরেকটু ওপরে দিকে নামতে পারলে আমার জন্য আরও ভালো হবে। 

প্রশ্ন: ক্রিকেটের বাইরে যদি আসি, গত কিছুদিনে দেশে বড় একটা পরিবর্তন ঘটে গেছে। ক্ষমতার পটপরিবর্তনের ছোঁয়া বিসিবিতেও, নতুন সভাপতি এসেছেন। তাদের কাছে ক্রিকেটার হিসেবে আপনার চাওয়া কী? 
মিরাজ: টেস্ট ক্রিকেট আমরা ভালো খেলতে পারি না, এত দিন এটাই বলা হতো। কিন্তু এখন সময় টেস্ট ক্রিকেটে নিজেদের আরও এগিয়ে নেওয়ার। আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেটের কাঠামো আরও ভালো করা; ভালো ভালো উইকেটে আরও বেশি বেশি ম্যাচ খেলা; দেশের বাইরে বেশি ম্যাচ খেলা; ‘এ’ দল, এইচপি, বয়সভিত্তিক দলকেও বাইরে খেলার সুযোগ করে দেওয়া। আগে যে বাইরে খেলার সুযোগ ছিল না, তা নয়, কিন্তু এটা আরও বেশি করা দরকার। যত বেশি এটা করা যাবে, ততই এগিয়ে যাবে দেশের ক্রিকেট। ভালোর তো আর শেষ নেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

১৫ উইকেট নিয়ে থামলেন মোস্তাফিজ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আইএল টি-টোয়েন্টিতে দারুণ বোলিং করেছেন কাটার মাস্টার। ছবি: সংগৃহীত
আইএল টি-টোয়েন্টিতে দারুণ বোলিং করেছেন কাটার মাস্টার। ছবি: সংগৃহীত

আইপিএলে কেন কলকাতা নাইট রাইডার্স এবার তাঁকে ১২ কোটি টাকায় নিয়েছে, সেটি খুব ভালোভাবেই আরব আমিরাতের আইএল টি-টোয়েন্টিতে বুঝিয়ে দিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান। আজ একটা পর্যায়ে মোস্তাফিজের নামটা উইকেটশিকারির তালিকায় যৌথভাবে শীর্ষে ছিল।

শারজা ওয়ারিয়র্জের বিপক্ষে ম্যাচটি খেলে কাল দুপুরে ঢাকায় ফিরে আসার কথা মোস্তাফিজের। এসেই নেমে পড়তে হবে বিপিএল খেলতে। সিলেটে তাঁর দল রংপুর রাইডার্সের প্রথম ম্যাচ আগামী সোমবারে। ঢাকায় ফিরে দুদিনের সংক্ষিপ্ত বিরতিতে তিনি চলে যাবেন সাতক্ষীরায় গ্রামের বাড়িতে। সেখান থেকে ফিরে দলে যোগ দেবেন রোববার।

বিপিএলে যোগ দেওয়ার আগে একাধিক সুখবর পেলেন মোস্তাফিজ। আইপিএল নিলামে তিনি বিক্রি হয়েছেন রেকর্ড দামে। আরব আমিরাতে দুবাই ক্যাপিটালসের হয়ে আইএল টি-টোয়েন্টিতেও ধারাবাহিক ভালো খেলেছেন। ৮ ম্যাচে নিয়েছেন ১৫ উইকেট। আজ শারজার বিপক্ষে শীর্ষ উইকেটশিকারি হওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছিলেন সতীর্থ ওয়াকার সালামখেইলের সঙ্গে। ওয়াকার ২ উইকেট নিয়ে টপকে যান মোস্তাফিজকে। তবু টুর্নামেন্টজুড়ে যে বোলিং করেছেন মোস্তাফিজ, আজ দেশে ফেরায় তাঁকে নিশ্চিতভাবেই মিস করবে দুবাই ক্যাপিটালস।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আসছে বিসিবির নতুন টুর্নামেন্ট

ক্রীড়া ডেস্ক    
পাইপলাইন সমৃদ্ধ করতে চায় বিসিবি। ফাইল ছবি
পাইপলাইন সমৃদ্ধ করতে চায় বিসিবি। ফাইল ছবি

বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে নতুন একটি টুর্নামেন্ট চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। যেটির নাম ‘রাইজিং স্টার অনূর্ধ্ব-২৩ ’। সংস্থাটির মিডিয়া কমিটির প্রধান আমজাদ হোসেন জানালেন, টুর্নামেন্টটি হবে অনেকটা বিসিএলের মতো। যেখানে অংশ নেবে চারটা দল। দলগুলো হলো–পূর্বাঞ্চল, মধ্যাঞ্চল, দক্ষিণাঞ্চল ও উত্তরাঞ্চল।

টুর্নামেন্ট হবে ডাবল লিগ পদ্ধতিতে। সেখান থেকে শীর্ষ দুই দল শিরোপার লড়াই করবে। অনূর্ধ্ব-২৩ পর্যায়ের এই টুর্নামেন্টে ম্যাচ হবে মোট ৩১ টি। মূলত পাইপলাইন সমৃদ্ধ করতেই এই উদ্যোগ নিয়েছে বিসিবি।

সংবাদমাধ্যমকে আমজাদ বলেন, ‘আমরা রাইজিং স্টার অনূর্ধ্ব ২৩ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট আয়োজন করব। এটা বিসিএলের মতই হবে। অনূর্ধ্ব ২৩ এর পর নির্দিষ্ট কোনো টুর্নামেন্ট ছিল না। কিন্তু এবার হচ্ছে। ইনশাআল্লাহ ফেব্রুয়ারিতে এই টুর্নামেন্ট করার পরিকল্পনা করছি আমরা।’

টুর্নামেন্টের ভেন্যু প্রসঙ্গে আমজাদ বলেন, ‘চট্টগ্রামে দুটো স্টেডিয়ামে হবে ম্যাচগুলো। ডাবল লিগ পদ্ধতিতে টুর্নামেন্ট আয়োজন করব। ফাইনাল ঢাকায় হবে। এগুলো ছিল আমাদের প্রধান কিছু সিদ্ধান্ত।’

আসন্ন নতুন বছরে বিসিবি সারা বাংলাদেশে ১০০ উইকেট বানাতে চায়, যেটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘১০০ উইকেটস ইন ২০২৬ ’। আমজাদ বলেন, ‘জেলা লিগগুলো সচল করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। গত বছর মাত্র ১২টি জেলায় লিগ হয়েছিল, নতুন বছরে আমাদের লক্ষ্য অন্তত ৪০টি জেলায় লিগ আয়োজন করা। আমাদের নতুন একটি থিম লঞ্চ করা হয়েছে ‘১০০ উইকেটস ইন ২০২৬ ’।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সারা দেশে ১ বছরে ১০০ উইকেট বানাবে বিসিবি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৩৯
জেলা লিগগুলো সচল করতে চায় বিসিবি। ফাইল ছবি
জেলা লিগগুলো সচল করতে চায় বিসিবি। ফাইল ছবি

প্রায় দিনব্যাপী বোর্ড সভার পর সন্ধ্যা ৭টার দিকে সংবাদ সম্মেলন। লম্বা অপেক্ষায় থাকা সংবাদমাধ্যম কর্মীদের চমকে দেওয়া কোনো সিদ্ধান্তের কথা জানাননি সংবাদ সম্মেলনে আসা তিন পরিচালক। তবে বোর্ড মিটিংয়ে নেওয়া নতুন দুটি সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন বিসিবির মিডিয়া কমিটির প্রধান।

আসন্ন নতুন বছরে বিসিবি সারা বাংলাদেশে ১০০ উইকেট বানাতে চায়, যেটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘১০০ উইকেটস ইন ২০২৬ ’। আমজাদ বলেন, ‘জেলা লিগগুলো সচল করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। গত বছর মাত্র ১২টি জেলায় লিগ হয়েছিল, নতুন বছরে আমাদের লক্ষ্য অন্তত ৪০টি জেলায় লিগ আয়োজন করা। আমাদের নতুন একটি থিম লঞ্চ করা হয়েছে ‘১০০ উইকেটস ইন ২০২৬ ’।

সারা দেশে এক বছরে ১০০ উইকেট তৈরির পরিকল্পনা বিসিবির গ্রাউন্ডস বিভাগের প্রধান খালেদ মাসুদ পাইলট বলেন, ‘১০০ উইকেটের পরিকল্পনাটা হচ্ছে মাঠের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা। মাঠ ছাড়া ক্রিকেটে এগোনো কঠিন। ফতুল্লা ইনসাইড এবং আউটার, সঙ্গে পূর্বাচলে যে মাঠটি আছে, সেগুলোর উন্নয়ন আমাদের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। আমরা এই মৌসুমের মধ্যে ১০০টির বেশি উইকেট তৈরির চেষ্টা করছি। আমাদের বিভাগীয় ভেন্যু; যেমন বগুড়া, খুলনা, রাজশাহী—এগুলো ২০ বছর আগের মডেলে চলছে। সেন্টার উইকেটের পাশে আরও উইকেট বাড়িয়ে আমরা এগুলো আধুনিক করতে চাই। বরিশাল মাঠের কাজ ৬০ শতাংশ শেষ হয়েছে, বাকি কাজ দ্রুত শেষ করার চেষ্টা করছি। আমরা চাই আমাদের বিভাগীয় সদর দপ্তরগুলো একেকটি ‘হাব’ হিসেবে কাজ করুক, যাতে জেলা পর্যায়ের ক্রিকেটাররা ঠিকঠাক যন্ত্রপাতি এবং সুযোগ-সুবিধা পায়।’

১০০ উইকেট তৈরিতে নতুন কোনো মাঠ কেনা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন পাইলট। বর্তমানে যে মাঠগুলো আছে, সেগুলোকে সচল করা এবং আধুনিক উইকেট তৈরি করাই তাঁদের লক্ষ্য।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজশাহীর লক্ষ্য নিয়ে কী বললেন সন্দীপ লামিচানে

ক্রীড়া ডেস্ক    
অনুশীলনে বল হাতে তারকা লেগস্পিনার। ছবি: রাজশাহী ওয়ারিয়র্সের ফেসবুক পেজ।
অনুশীলনে বল হাতে তারকা লেগস্পিনার। ছবি: রাজশাহী ওয়ারিয়র্সের ফেসবুক পেজ।

নিলামের পর সন্দীপ লামিচানেকে দলে টেনেছে রাজশাহী ওয়ারিয়র্স। প্রধান কোচ হান্নান সরকারের ইচ্ছায় এই লেগস্পিনারকে নিয়েছে পদ্মাপাড়ের ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। ২০২৬ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) অংশ নিতে গতকাল রাজশাহী শিবিরে যোগ দিয়েছেন তিনি।

আজ দলীয় অনুশীলনেও দেখা গেল লামিচানেকে। এক দিন না যেতেই গোটা দলের মধ্যমণি এই নেপালি ক্রিকেটার। দলের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথাও বলেছেন। সেখানেই জানিয়েছেন, নিজেদের স্কোয়াডের গভীরতা কাজে লাগিয়ে শিরোপা জেতার লড়াই চালিয়ে যাবে রাজশাহী।

লামিচানে বলেন, ‘আমাদের দলে যে ধরণের সম্ভাবনা রয়েছে তা অসাধারণ। বিশেষ করে যখন আপনি কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলেন, তখন স্থানীয় খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। রাজশাহী ওয়ারিয়র্সে অনেক প্রতিভা আছে। আমি এদের অনেকের সাথেই আগে খেলেছি, তাই তাদের চিনি। আমরা সিলেটের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচের জন্য পুরো দল বেশ রোমাঞ্চিত। দলের ভেতরের পরিবেশও এখন খুব ইতিবাচক।’

নিজেদের স্কোয়াড নিয়ে সন্তুষ্ট লামিচানে। তিনি বলেন, ‘আমাদের টপ অর্ডার থেকে শুরু করে লোয়ার অর্ডার, সব জায়গাতেই ভারসাম্য আছে। স্পিনার, ফাস্ট বোলার-সব বিভাগে ভালো খেলোয়াড় আছে। শান্ত দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছে। মুশফিকুর রহিমের মতো অভিজ্ঞ খেলোয়াড় আছে। দলে ভালো বিদেশি ক্রিকেটারও আছে। সব মিলিয়ে আমাদের দলটা স্বয়ংসম্পূর্ণ। সবাই শিরোপার জন্য নিজেদের সেরাটা দিতে প্রস্তুত।’

দর্শকদের হতাশ করতে চান না লামিচানে, ‘আমাদের লক্ষ্য হলো ম্যাচ জেতা। এটিই সবচেয়ে সহজ লক্ষ্য। সেই সাথে দর্শকদের আনন্দ দেয়া এবং দলের জন্য পয়েন্ট অর্জন করা। সবার ভালোবাসার জন্য কৃতজ্ঞতা এবং আমরা দল হিসেবে ট্রফি জেতার চেষ্টা করব।’

কীভাবে রাজশাহীতে যোগ দিলেন সে অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে লামিচানে বলেন, ‘আমি নেপাল প্রিমিয়ার লিগের ফাইনাল দেখছিলাম। তখন আসাদের কোচ হান্নান সরকার মেসেজ করে জিজ্ঞেস করেন আমি রাজশাহী ওয়ারিয়র্সে খেলতে চাই কিনা। অল্প কয়েক মিনিটের মধ্যেই আমরা সবকিছু চূড়ান্ত করে ফেলি। তিনি যেভাবে পুরো বিষয়টি সহজ করেছেন, তার জন্য আমি তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত