অনলাইন ডেস্ক
বাংলাদেশে পানির অন্যতম বড় স্বাস্থ্যঝুঁকি আর্সেনিক দূষণ মোকাবিলায় একটি নতুন অ্যাপ চালু হয়েছে, যা ল্যাব টেস্ট ছাড়াই একটি নলকূপের পানি নিরাপদ কি না, তা তাৎক্ষণিকভাবে জানিয়ে দিতে পারবে। ‘আই-আর্সেনিক’ নামের এই অ্যাপ গত এক দশকের ভূগর্ভস্থ পানির গবেষণা ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) সমন্বয়ে তৈরি। ব্যবহারকারীর কাছ থেকে নলকূপের অবস্থান ও গভীরতাসংক্রান্ত তথ্য নিয়ে এটি অঞ্চলভিত্তিক ঝুঁকির একটি পূর্বাভাস দেয়।
অ্যাপটির প্রধান গবেষক ইউনিভার্সিটি অব পোর্টসমাউথের পরিবেশ ও জীববিজ্ঞান বিভাগের ড. মো. হক। তিনি বলেন, ‘আই-আর্সেনিক ল্যাবরেটরির রাসায়নিক বিশ্লেষণের বিকল্প নয়, তবে এটি সহজে ব্যবহারযোগ্য একটি প্রাথমিক সতর্কতামূলক সরঞ্জাম, যেটি মোবাইল বা কম্পিউটার থেকেই ব্যবহার করা যাবে।’
এই প্রকল্প ইউনিভার্সিটি অব পোর্টসমাউথের নেতৃত্বে কার্টিন ইউনিভার্সিটি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ইম্পিরিয়াল কলেজ লন্ডনের সহযোগিতায় গড়ে তোলা হয়েছে। এতে সার্বিক সহযোগিতা করেছে বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর (ডিপিএইচই)।
১৯৯০-এর দশকে বাংলাদেশে আর্সেনিক দূষণের বিষয়টি ব্যাপকভাবে সামনে আসে। তখন বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা ও সরকার আর্সেনিক বা দূষিত পানি এড়াতে লাখ লাখ নলকূপ স্থাপন করে। এতে পানিবাহিত রোগ; যেমন ডায়রিয়া ও কলেরা কমলেও অনেক নতুন নলকূপ আর্সেনিকসমৃদ্ধ স্তর থেকে পানি তুলতে শুরু করে। ফলে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর বড় একটি অংশ দীর্ঘ মেয়াদে আর্সেনিকে আক্রান্ত হয়।
গত দুই দশকে বাংলাদেশ আর্সেনিক মিটিগেশন ওয়াটার প্রকল্পের জরিপ (২০০০-২০০৫) এবং ‘আর্সেনিক ঝুঁকি হ্রাস প্রকল্প’ (২০২১-২০২৩)-এর অধীনে ১০ মিলিয়নের বেশি নলকূপ রাসায়নিকভাবে পরীক্ষা করেছে। কিন্তু একটি নলকূপের গড় আয়ু মাত্র ১০ বছর। কোনো ফলোআপ পরীক্ষা ছাড়াই প্রতিনিয়ত নতুন নলকূপ স্থাপন করা হচ্ছে, ফলে সমস্যা যা, তা রয়েই যাচ্ছে।
আর্সেনিকের প্রভাব মারাত্মক। পানিতে আর্সেনিকের মাত্রা জাতীয় মান ৫০ মাইক্রোগ্রাম/লিটারের নিচে হলেও দীর্ঘ মেয়াদে গ্রহণে ক্যানসার, হৃদ্রোগ, চর্মরোগ ও শিশুদের বিকাশজনিত সমস্যার আশঙ্কা থাকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মাত্র ১০ মাইক্রোগ্রাম/লিটার পর্যন্ত সহনীয় বললেও ধারণা করা হচ্ছে, এখনো প্রায় ২ কোটি মানুষ নিরাপদ মাত্রার চেয়ে বেশি আর্সেনিকযুক্ত পানি পান করছে।
কীভাবে কাজ করে আই-আর্সেনিক
অ্যাপটি ব্যবহারকারীর কাছ থেকে তিনটি তথ্য নেয়—নলকূপের গভীরতা, লাল, হলুদ বা কালো দাগ রয়েছে কি না এবং নলকূপের ভৌগোলিক অবস্থান। এআইভিত্তিক মডেল এরপর এটি মূল্যায়ন করে জানায়, সেই নির্দিষ্ট নলকূপ কতটা নিরাপদ। ফলাফল তাৎক্ষণিক রঙে প্রদর্শিত হয়—সবুজ=সম্ভাব্য নিরাপদ, লাল=সম্ভাব্য ঝুঁকিপূর্ণ।
এই পদ্ধতির বৈজ্ঞানিক ভিত্তি হলো, নলকূপের প্ল্যাটফর্মে থাকা দাগ। কালো দাগ (ম্যাঙ্গানিজ) সাধারণত নিরাপদ, অন্যদিকে লাল বা হলুদ দাগ (আয়রন) আর্সেনিক দূষণের ইঙ্গিত দেয়, বিশেষ করে অগভীর নলকূপে।
গবেষক কেইন সোয়ার্টজ বলেন, ‘স্থানীয় মানুষ সহজে দাগের রং চিনতে পারে এবং বেশির ভাগই জানে, তাদের নলকূপ কত গভীর। এই সাধারণ তথ্যই এআই দিয়ে বিশ্লেষণ করলে অসাধারণ ফল পাওয়া যায়।’
গবেষকদের দাবি, এই এআই মডেলের নির্ভুলতা প্রায় ৮৪ শতাংশ। আই-আর্সেনিক শুধু ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য নয়, জাতীয় পর্যায়েও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সরবরাহ করে। গবেষকেরা ‘টিয়ার-১’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন হাজারো গ্রাম ও শহর, যেখানে আর্সেনিকের ঝুঁকি বেশি এবং বিকল্প নিরাপদ পানির উৎস বিরল। কার্টিন ইউনিভার্সিটির ড. আশরাফ দেওয়ান বলেন, ‘এসব জায়গাই মূল অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত। অ্যাপ নিজে সমাধান নয়, তবে এটি সরকারের উদ্যোগকে সঠিক দিক দেখাতে সহায়তা করতে পারে।’
গবেষকদের দাবি, ব্যাপক ব্যবহার হলে অ্যাপটি আগামী কয়েক বছরে কোটি মানুষের নিরাপদ পানির উৎস বেছে নিতে সহায়তা করতে পারে; যা স্বাস্থ্য সুরক্ষা, জীবিকা রক্ষা ও স্বাস্থ্যব্যবস্থার ওপর চাপ কমাতে সহায়ক হবে। ড. হক বলেন, পরিষ্কার পানি কোনো বিলাসিতা নয়, এটা মৌলিক অধিকার। এই অ্যাপ সেই অধিকারের পথে একটি পদক্ষেপ।
বর্তমানে এটি ওয়েব অ্যাপ হিসেবে ক্রোম, ফায়ারফক্স ও সাফারির মতো ব্রাউজারে ব্যবহার উপযোগী। শিগগির এটির অ্যান্ড্রয়েড ও আইওএস ভার্সন চালু হবে বলেও জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশে পানির অন্যতম বড় স্বাস্থ্যঝুঁকি আর্সেনিক দূষণ মোকাবিলায় একটি নতুন অ্যাপ চালু হয়েছে, যা ল্যাব টেস্ট ছাড়াই একটি নলকূপের পানি নিরাপদ কি না, তা তাৎক্ষণিকভাবে জানিয়ে দিতে পারবে। ‘আই-আর্সেনিক’ নামের এই অ্যাপ গত এক দশকের ভূগর্ভস্থ পানির গবেষণা ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) সমন্বয়ে তৈরি। ব্যবহারকারীর কাছ থেকে নলকূপের অবস্থান ও গভীরতাসংক্রান্ত তথ্য নিয়ে এটি অঞ্চলভিত্তিক ঝুঁকির একটি পূর্বাভাস দেয়।
অ্যাপটির প্রধান গবেষক ইউনিভার্সিটি অব পোর্টসমাউথের পরিবেশ ও জীববিজ্ঞান বিভাগের ড. মো. হক। তিনি বলেন, ‘আই-আর্সেনিক ল্যাবরেটরির রাসায়নিক বিশ্লেষণের বিকল্প নয়, তবে এটি সহজে ব্যবহারযোগ্য একটি প্রাথমিক সতর্কতামূলক সরঞ্জাম, যেটি মোবাইল বা কম্পিউটার থেকেই ব্যবহার করা যাবে।’
এই প্রকল্প ইউনিভার্সিটি অব পোর্টসমাউথের নেতৃত্বে কার্টিন ইউনিভার্সিটি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ইম্পিরিয়াল কলেজ লন্ডনের সহযোগিতায় গড়ে তোলা হয়েছে। এতে সার্বিক সহযোগিতা করেছে বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর (ডিপিএইচই)।
১৯৯০-এর দশকে বাংলাদেশে আর্সেনিক দূষণের বিষয়টি ব্যাপকভাবে সামনে আসে। তখন বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা ও সরকার আর্সেনিক বা দূষিত পানি এড়াতে লাখ লাখ নলকূপ স্থাপন করে। এতে পানিবাহিত রোগ; যেমন ডায়রিয়া ও কলেরা কমলেও অনেক নতুন নলকূপ আর্সেনিকসমৃদ্ধ স্তর থেকে পানি তুলতে শুরু করে। ফলে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর বড় একটি অংশ দীর্ঘ মেয়াদে আর্সেনিকে আক্রান্ত হয়।
গত দুই দশকে বাংলাদেশ আর্সেনিক মিটিগেশন ওয়াটার প্রকল্পের জরিপ (২০০০-২০০৫) এবং ‘আর্সেনিক ঝুঁকি হ্রাস প্রকল্প’ (২০২১-২০২৩)-এর অধীনে ১০ মিলিয়নের বেশি নলকূপ রাসায়নিকভাবে পরীক্ষা করেছে। কিন্তু একটি নলকূপের গড় আয়ু মাত্র ১০ বছর। কোনো ফলোআপ পরীক্ষা ছাড়াই প্রতিনিয়ত নতুন নলকূপ স্থাপন করা হচ্ছে, ফলে সমস্যা যা, তা রয়েই যাচ্ছে।
আর্সেনিকের প্রভাব মারাত্মক। পানিতে আর্সেনিকের মাত্রা জাতীয় মান ৫০ মাইক্রোগ্রাম/লিটারের নিচে হলেও দীর্ঘ মেয়াদে গ্রহণে ক্যানসার, হৃদ্রোগ, চর্মরোগ ও শিশুদের বিকাশজনিত সমস্যার আশঙ্কা থাকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মাত্র ১০ মাইক্রোগ্রাম/লিটার পর্যন্ত সহনীয় বললেও ধারণা করা হচ্ছে, এখনো প্রায় ২ কোটি মানুষ নিরাপদ মাত্রার চেয়ে বেশি আর্সেনিকযুক্ত পানি পান করছে।
কীভাবে কাজ করে আই-আর্সেনিক
অ্যাপটি ব্যবহারকারীর কাছ থেকে তিনটি তথ্য নেয়—নলকূপের গভীরতা, লাল, হলুদ বা কালো দাগ রয়েছে কি না এবং নলকূপের ভৌগোলিক অবস্থান। এআইভিত্তিক মডেল এরপর এটি মূল্যায়ন করে জানায়, সেই নির্দিষ্ট নলকূপ কতটা নিরাপদ। ফলাফল তাৎক্ষণিক রঙে প্রদর্শিত হয়—সবুজ=সম্ভাব্য নিরাপদ, লাল=সম্ভাব্য ঝুঁকিপূর্ণ।
এই পদ্ধতির বৈজ্ঞানিক ভিত্তি হলো, নলকূপের প্ল্যাটফর্মে থাকা দাগ। কালো দাগ (ম্যাঙ্গানিজ) সাধারণত নিরাপদ, অন্যদিকে লাল বা হলুদ দাগ (আয়রন) আর্সেনিক দূষণের ইঙ্গিত দেয়, বিশেষ করে অগভীর নলকূপে।
গবেষক কেইন সোয়ার্টজ বলেন, ‘স্থানীয় মানুষ সহজে দাগের রং চিনতে পারে এবং বেশির ভাগই জানে, তাদের নলকূপ কত গভীর। এই সাধারণ তথ্যই এআই দিয়ে বিশ্লেষণ করলে অসাধারণ ফল পাওয়া যায়।’
গবেষকদের দাবি, এই এআই মডেলের নির্ভুলতা প্রায় ৮৪ শতাংশ। আই-আর্সেনিক শুধু ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য নয়, জাতীয় পর্যায়েও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সরবরাহ করে। গবেষকেরা ‘টিয়ার-১’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন হাজারো গ্রাম ও শহর, যেখানে আর্সেনিকের ঝুঁকি বেশি এবং বিকল্প নিরাপদ পানির উৎস বিরল। কার্টিন ইউনিভার্সিটির ড. আশরাফ দেওয়ান বলেন, ‘এসব জায়গাই মূল অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত। অ্যাপ নিজে সমাধান নয়, তবে এটি সরকারের উদ্যোগকে সঠিক দিক দেখাতে সহায়তা করতে পারে।’
গবেষকদের দাবি, ব্যাপক ব্যবহার হলে অ্যাপটি আগামী কয়েক বছরে কোটি মানুষের নিরাপদ পানির উৎস বেছে নিতে সহায়তা করতে পারে; যা স্বাস্থ্য সুরক্ষা, জীবিকা রক্ষা ও স্বাস্থ্যব্যবস্থার ওপর চাপ কমাতে সহায়ক হবে। ড. হক বলেন, পরিষ্কার পানি কোনো বিলাসিতা নয়, এটা মৌলিক অধিকার। এই অ্যাপ সেই অধিকারের পথে একটি পদক্ষেপ।
বর্তমানে এটি ওয়েব অ্যাপ হিসেবে ক্রোম, ফায়ারফক্স ও সাফারির মতো ব্রাউজারে ব্যবহার উপযোগী। শিগগির এটির অ্যান্ড্রয়েড ও আইওএস ভার্সন চালু হবে বলেও জানানো হয়েছে।
বিশ্বের বড় বড় বিমানবন্দরগুলোতে ব্যবহৃত রাডার সিস্টেমগুলো শুধু বিমান চলাচলই নিয়ন্ত্রণ করছে না, বরং এগুলো বুদ্ধিমান ভিনগ্রহের প্রানীদের দৃষ্টি আকর্ষণও করতে পারে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। যুক্তরাজ্যের ডারহামে অনুষ্ঠিত রয়্যাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির ন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমি মিটিং ২০২৫-এ প্রকাশিত...
১৭ ঘণ্টা আগেমহামারি, দুর্ভিক্ষ কিংবা দাসত্বের মতো কঠিন সময়েও পুরুষের চেয়ে বেশি দিন বাঁচে নারীরা। একাধিক গবেষণায় প্রমাণিত একটি বৈজ্ঞানিক সত্য। নারীদেহ গঠিত হয়েছে সহনশীলতা, স্থায়িত্ব ও দীর্ঘায়ুর জন্য। জটিল প্রজননব্যবস্থা, মাসিক চক্র, গর্ভধারণ, প্রসব ও স্তন্যদানের মতো শারীরিক চাপ সত্ত্বেও নারীরা শুধু তা সামালই
১ দিন আগেযুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনায় খুঁজে পাওয়া গেছে ২০ কোটিরও বেশি বছর আগের উড়ন্ত সরীসৃপের নতুন প্রজাতি। বিজ্ঞানীরা জানান, এটি এখন পর্যন্ত উত্তর আমেরিকায় খুঁজে পাওয়া প্রাচীনতম টেরোসর বা উড়ন্ত সরীসৃপ। ২০১১ সালে অ্যারিজোনার পেট্রিফাইড ফরেস্ট ন্যাশনাল পার্কে খননের সময় একটি চোয়ালের হাড় খুঁজে পান গবেষকেরা...
২ দিন আগেমানবদেহকে যদি একটি জটিল যন্ত্র বলা হয়, তাহলে তা হয়তো অতিরঞ্জন হবে না। কোষের সূক্ষ্ম গঠন থেকে শুরু করে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, চোখ, মস্তিষ্ক, যকৃৎ—৪০ কোটি বছরের বিবর্তনের ধারায় ধাপে ধাপে তৈরি হয়েছে। তবুও আজও বিজ্ঞানীরা বুঝে উঠতে পারেননি, কীভাবে ঠিক এমন আকৃতির মানুষ আমরা হয়ে উঠলাম।
৩ দিন আগে