Ajker Patrika

একাত্তরে ধর্ষণ–গণহত্যার জন্য জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে হবে: বিএনপি নেতা আলাল

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০১ নভেম্বর ২০২৫, ২২: ১৫
সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। ছবি: আজকের পত্রিকা
সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। ছবি: আজকের পত্রিকা

২০২৪ সালে ও তার আগে মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য আওয়ামী লীগের মতোই ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় গণহত্যা, ধর্ষণ ও নারকীয় হত্যাযজ্ঞের দায়ে জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও দলের কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।

শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীতে অনুষ্ঠিত ‘স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষায় আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অপরিহার্য’ শীর্ষক মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে এ দাবি জানান তিনি। অনুষ্ঠানে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ মুক্তিযোদ্ধারা উপস্থিত ছিলেন।

আলাল বলেন, ‘বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি তোলা উচিত, চব্বিশ এবং আগের গণহত্যা, নির্মম নির্যাতন–নিপীড়ন, ভোটাধিকার হরণ—এসবের জন্য যদি আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হতে পারে, তাহলে একাত্তরে গণহত্যা, ধর্ষণ, নারকীয় হত্যাযজ্ঞের কারণে জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করতে হবে, তাদের কার্যক্রমকেও নিষিদ্ধ করতে হবে। একই অপরাধে দুই রকমের বিচার হতে পারে না। প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করে আজকের এই কথাটা বলতে চাই।’

তিনি বলেন, যদি আওয়ামী লীগের মতো একই ধরনের অপরাধে জামায়াতের বিচার না হয়, তাহলে সেটা হবে ইতিহাসের প্রতি অবিচার।

এই বিএনপি নেতা দাবি করেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে বিএনপিই একমাত্র শক্তি। অথচ এই শক্তিকেই দুর্বল করার ষড়যন্ত্র চলছে। সরকার নিজের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে নির্বাচনের নামে প্রক্রিয়া চালালেও জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতা কেড়ে নিচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, বর্তমান সরকার মনে করেছে, দেশের সব অনাচারের মূলে সংবিধান। কিন্তু সমস্যার মূল সংবিধান নয়— ক্ষমতার অপব্যবহার ও জনগণের ভোটাধিকার হরণ। শেখ হাসিনার ১৬–১৭ বছরের শাসনে এই অন্যায়, নির্যাতন, দুর্নীতি ও অর্থপাচারই হয়েছে সবচেয়ে বড় বাস্তবতা।

জামায়াত প্রসঙ্গে আলাল আরও বলেন, আজকে জামায়াত তাদের পোশাক-চেহারা, আচরণ পাল্টে নতুন রূপে হাজির হয়েছে। তারা হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে বৈঠক করছে, কিন্তু মূল উদ্দেশ্য বিএনপিকে আক্রমণ করা। এই বহুরূপীদের চেহারা জনগণ চিনে ফেলেছে।

জামায়াতের জন্য ভালো খবরও আছে মন্তব্য করে তিনি একটি গল্পের অবতারণা করে বলেন, ‘মুরগির বাচ্চারা মুরগিকে দুঃখ করে বলছে, মা মানুষের এত সুন্দর সুন্দর নাম। আমাদের তো কোনো নাম হয় না কেন, আমরা এতগুলো বাচ্চা তোমার? উত্তরে মুরগি বলছে, না না তোমাদেরও নাম হয়। বাচ্চারা বলে, কোথায় নাম হয়? মা বলে, তোমরা মারা গেলে পরে তোমাদের নাম হয় চিকেন বিরিয়ানি, চিকেন রোস্ট, চিকেন বার্গার, চিকেন তন্দুরি— দেখ কত সুন্দর সুন্দর নাম!’

আলাল বলেন, ‘জামায়াতও মরার পরে জামায়াতের নাম হবে, তার আগে হবে না। এদেশের মানুষ তাদেরকে গ্রহণ করবে না। পঁচাত্তরের চেতনা আমাদেরকে সেটাই শিখিয়েছে। স্বাধীনতার পক্ষের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের এবং মুক্তিযুদ্ধের মূল যে ধারণা, মূল যে রূপরেখা, সেটা হৃদয়ে লালন করে শহীদ জিয়াউর রহমান বীরোত্তম, তাঁর নেতৃত্বে হয়েছে পঁচাত্তরের ৭ই নভেম্বর।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

লন্ডন সফরে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৪১
জামায়াতের আমির ডা. শফিকুল রহমান। ফাইল ছবি
জামায়াতের আমির ডা. শফিকুল রহমান। ফাইল ছবি

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন। গতকাল বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) বিমানবন্দরে পৌঁছেই সরাসরি যুক্তরাজ্যের নটিংহামে নেতা-কর্মীদের পূর্বনির্ধারিত একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি।

জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যুক্তরাজ্য সরকারের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে পূর্বনির্ধারিত বৈঠক ও কর্মসূচিতে অংশ নিতেই ডা. শফিকুর রহমান লন্ডন সফর করছেন।

জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান এহসানুল মাহবুব জুবায়ের গণমাধ্যমকে জানান, ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে বৈঠকের নির্ধারিত কর্মসূচি থাকায় বুধবার সকালে শফিকুর রহমান লন্ডন সফর করছেন।

জামায়াতের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, লন্ডন সফর শেষে শফিকুর রহমান সৌদি আরবে পবিত্র ওমরাহ পালন করবেন। সৌদি আরব থেকে ২১ ডিসেম্বর তাঁর দেশে ফেরার কথা রয়েছে।

এর আগে ১৭ ডিসেম্বর সকালে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে লন্ডন যাত্রা করেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দুই মিত্র জোটের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক

  • ১২ দলীয় জোট ও জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটকে একটি করে আসনে ছাড়ের ইঙ্গিত।
  • আজ বৈঠক হবে এলডিপি, গণতন্ত্র মঞ্চ ও গণফোরামের সঙ্গে।
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৪৮
দুই মিত্র জোটের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক

আসন ভাগাভাগি নিয়ে সৃষ্ট মতবিরোধ নিষ্পত্তিতে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দল ও জোটগুলোর সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছে বিএনপি। গতকাল বুধবার প্রথম দিনের বৈঠকে ১২ দলীয় জোট ও জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটকে একটি করে আসনে ছাড়ের ইঙ্গিত দিয়েছে দলটি। এ ছাড়া ১২ দলীয় জোটকে আরেকটি আসন ছাড় দেওয়া নিয়েও আলোচনা আছে। এই দুই জোটের অন্য দলগুলোকে বিএনপির পক্ষ থেকে ভিন্নভাবে মূল্যায়নের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

গতকাল রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট ও বিকেলে ১২ দলীয় জোটের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি। বৈঠকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু অংশ নেন।

সূত্র বলছে, ১২ দলীয় জোটের প্রধান ও জাতীয় পার্টির (জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার এবং জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়ক ও এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদকে আসন দেওয়ার ব্যাপারে সবুজসংকেত দেওয়া হয়েছে, যার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে ২০ ডিসেম্বর।

এদিকে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), ৬ দলীয় জোট গণতন্ত্র মঞ্চ ও গণফোরামের সঙ্গে আজ বৃহস্পতিবার আসন ভাগাভাগি নিয়ে বৈঠকে বসবে বিএনপি। আগামীকাল শুক্রবার জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম), বাম গণতান্ত্রিক ঐক্য ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে। সবশেষে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সঙ্গে বৈঠক করবে বিএনপি।

১২ দলীয় জোট ও সমমনা জোটের বৈঠক সূত্র জানায়, কিশোরগঞ্জ-৫, কুষ্টিয়া-২ আসনসহ কয়েকটি আসনে প্রার্থী মনোনয়নের বিষয়টি পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছে দুই জোটের মিত্ররা। বিএনপির হাইকমান্ড তাদের আশ্বস্ত করেছে, এই বিষয়গুলো ইতিবাচকভাবে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।

এ ছাড়া আগামী দিনে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা সব দলকে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠনের দাবি তুলেছেন মিত্র জোটের নেতারা। তাঁদের দাবি, জাতীয় সরকারে যেন সব দলকেই মূল্যায়ন করা হয়। বিএনপির পক্ষ থেকে দুই জোটের নেতাদের আশ্বস্ত করা হয়েছে, তাঁদের সর্বোচ্চ মূল্যায়ন করা হবে। যাঁদের মনোনয়ন দিয়ে মূল্যায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না, তাঁদের সংসদের উচ্চকক্ষে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বিএনপির। গণতন্ত্র ও দেশের স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।

১২ দলীয় জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা বলেন, ‘ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। আমরা আমাদের দাবিগুলো তুলে ধরেছি। তারা দীর্ঘ দিনের মিত্র হিসেবে সর্বোচ্চ মূল্যায়নের চেষ্টা করার কথা জানিয়েছেন।’

জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়ক ও এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, ‘আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। আমরা ৯টা আসন চেয়েছি। বিএনপির পক্ষে সমমনা জোটকে আসন দেওয়ার ব্যাপারে আমাদের আশ্বস্ত করা হয়েছে। আর যাঁদের এবার মনোনয়ন দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না, তাঁদের ক্ষমতায় গেলে যোগ্যতা অনুযায়ী মূল্যায়ন করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নিরাপত্তা শঙ্কায় ইসিতে ব্যারিস্টার ফুয়াদ ও রেহা কবির সিগমা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ব্যারিস্টার ফুয়াদ ও কবির সিগমা। ছবি: সংগৃহীত
ব্যারিস্টার ফুয়াদ ও কবির সিগমা। ছবি: সংগৃহীত

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় নির্বাচন কমিশনের (ইসি) দ্বারস্থ হয়েছেন দুই সম্ভাব্য এমপি প্রার্থী। তাঁরা হলেন কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী কাজী রেহা কবির সিগমা এবং আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও বরিশাল-৩ (বাবুগঞ্জ-মুলাদী) আসনে দলের প্রার্থী আসাদুজ্জামান ফুয়াদ।

আজ বুধবার তাঁরা আগারগাঁওস্থ নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) দ্বারস্থ হন।

এলাকার কর্মী ও সাধারণ মানুষের জীবনের নিরাপত্তা এবং নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। সার্বিক বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) পদক্ষেপ এবং নিজের নিরাপত্তা চেয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী কাজী রেহা কবির সিগমা।

সিগমা প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন, নির্বাচন কমিশনার আবদুর রহমানেল মাছউদ ও মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকারের সঙ্গে দেখা করে লিখিত অভিযোগ জমা দেন।

সিইসিকে দেওয়া লিখিত অভিযোগে কাজী রেহা কবির সিগমা বলেন, ‘আসন্ন ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন পক্ষপাতমুক্ত, সুষ্ঠু ও সবার জন্য নির্বিঘ্ন করা অন্তর্বর্তী সরকার, নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের অঙ্গীকার ও প্রত্য়য়। কিন্তু এসব প্রশ্নবিদ্ধ ও বাধাগ্রস্ত করার প্রক্রিয়া ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে অবিলম্বে জড়িত ও দায়ীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করার আবেদন করছি।’

কাজী রেহা কবির সিগমা বলেন, ‘আমি কিশোরগঞ্জ-৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার প্রত্যয় জানিয়ে নির্বাচনী এলাকায় গণসংযোগ শুরু করেছি। ইতিমধ্যে ব্যাপক সমর্থন পেয়েছি। গণসংযোগের কাজে অনেক কর্মী-সমর্থক তৎপর হয়েছে। কিন্তু আমার আইনানুগ গণসংযোগের কাজে ত্রাস সৃষ্টি করে আমার কাজ দুরূহ করার কল্পে কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম থানার পুলিশ কর্তৃপক্ষ ন্যক্কারজনকভাবে তৎপর হয়েছে।’

রেহা কবির সিগমা সিইসিকে বলেন, ‘১৬ ডিসেম্বর দিবাগত রাত আনুমানিক ১টায় তারা এক নিরপরাধ কর্মীকে গ্রেপ্তার করে ভুয়া মামলায় কিশোরগঞ্জ আদালতে পাঠায়। আমার কর্মীদের আতঙ্কগ্রস্ত করা হয়েছে। যার ফলে নির্বাচনী কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে।’

কবির সিগমা আরও বলেন, ‘আমার কর্মী মো. কিয়ামত আলী (৫০) একজন নিরীহ জনপ্রিয় লোক। তার নামে কোনো মামলা বা অভিযোগ ছিল না। তাকে ২০২৪ সালের ৯ নভেম্বরে করা একটি মামলায় আসামি দেখানো হয়েছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। ওই মামলায় আমার কর্মী মো. কিয়ামত আলী এজাহারভুক্ত আসামি নয়। কিয়ামত আলীর বাড়ি অষ্টগ্রাম থানা হতে মাত্র ১০ মিনিটের হাঁটার পথ দূরত্বে হলেও গত এক বছরে কোনো কারণে কখনো পুলিশ কিয়ামতের খোঁজ করেনি। কিয়ামতের সঙ্গে নিয়মিত দেখা হলেও কিছু জিজ্ঞাসা করেনি। এতে স্পষ্টতই প্রতীয়মান হয় যে, শুধু আমার কর্মীদের মধ্যে ভীতি সৃষ্টির জন্যই অষ্টগ্রাম থানা-পুলিশ কোনো বিশেষ স্বার্থ হাসিল করার জন্য এ কাজ করেছে।’

সিগমা অবিলম্বে বিষয়টি তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের আইনানুগ শাস্তি নিশ্চিত করে আসন্ন নির্বাচন প্রশ্নাতীত ও সুষ্ঠু করার পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সিইসিকে অনুরোধ জানান।

পরে রেহা কবির সিগমা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘পুলিশ ভীতি সৃষ্টি করছে। আমার কর্মী ও আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তাই ইসি ও প্রশাসনের কাছে সার্বিক সহযোগিতা চেয়েছি।’

এদিকে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও বরিশাল-৩ (বাবুগঞ্জ-মুলাদী) আসনে দলের প্রার্থী আসাদুজ্জামান ফুয়াদ নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ ও ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদের সঙ্গে দেখা করেছেন।

প্রার্থী নিরাপত্তার শঙ্কা নিয়ে ইসিতে আসছেন—এ বিষয়ে কমিশন কী ব্যবস্থা নিচ্ছে—জানতে চাইলে ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ব্যারিস্টার ফুয়াদ এসেছিলেন। তাঁর অভিযোগ হচ্ছে, পুলিশ তাঁকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করছে না। আমরা সার্বিকভাবে সব প্রার্থীর নিরাপত্তার বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছি।

সব প্রার্থী বিজয়ী হতে পারবেন না। জনগণ যাঁকে বেশি ভোট দেবেন, তিনিই বিজয়ী হবেন।’ তাই সচিব সব প্রার্থী ও তাঁদের সমর্থকদের আচরণ বিধিমালা মেনে চলার আহ্বান জানান ইসি সচিব।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নির্বাচনে এককভাবে অংশ নেবে জি এম কাদেরের জাপা, মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৩১
নির্বাচনে এককভাবে অংশ নেবে জি এম কাদেরের জাপা, মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এককভাবে অংশ নেবে জি এম কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি (জাপা)। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়। তফসিল ঘোষণার ছয় দিন পর আজ সন্ধ্যায় রাজধানীর কাকরাইলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু করে দলটি। নেতারা জানিয়েছেন, মনোনয়ন ফরম বিক্রি চলবে ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

দল থেকে বহিষ্কৃত সাবেক মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গাকে দলে ফিরিয়ে নিয়েছে জাপা। আজ কেন্দ্রীয় কমিটির সভার মঞ্চে দলীয় চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের পাশে ছিলেন তিনি। ২০০১ সালের নির্বাচনে রংপুর-৬ আসনে শেখ হাসিনাকে হারিয়ে চমক দেখানো নুর মোহাম্মদ মণ্ডলকেও দলে ফিরিয়ে নিয়েছে জাপা। তিনি ২০০৮ সালে বিএনপিতে যোগ দিয়েছিলেন। পরে যোগ দেন আওয়ামী লীগে।

নৌকা প্রতীকে উপজেলা চেয়ারম্যানও নির্বাচিত হন রংপুর-৬ আসনের তৎকালীন এমপি ও আওয়ামী লীগ আমলের স্পিকার ড. শিরীন শারমিনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত নুর মণ্ডল। জাপা সূত্র জানিয়েছে, দলছুট অন্য নেতাদেরও ফেরানোর চেষ্টা চলছে।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির বিএনপিবিহীন একতরফা নির্বাচনে অংশ নিয়ে জাপা ৩৪ আসন পেয়ে প্রধান বিরোধী দল হয়েছিল। যোগ দিয়েছিল সরকারেও। ২০১৮ সালের নির্বাচনে দলটিকে ২৬ আসনে ছাড় দেয় আওয়ামী লীগ। সেই নির্বাচনেও ২২ আসন পেয়ে বিরোধী দল হয় জাপা। বিএনপিবিহীন ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারির নির্বাচনেও দলটিকে ২৬ আসন ছাড় দেয় আওয়ামী লীগ। ১১ আসন পেয়ে তৃতীয়বারের মতো বিরোধী দল হয় জাপা।

আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনামলে সরকারের সুরে কথা বলে গৃহপালিত বিরোধী দলের তকমা পাওয়া জাপা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর চাপে পড়েছে। অভ্যুত্থানের ছাত্র নেতৃত্ব দলটিকে ফ্যাসিবাদের দোসর আখ্যা দেওয়ার পর সরকার, নির্বাচন কমিশন ও সংস্কার কমিশনগুলো বৈঠকে ডাকছে না দলটিকে। একাধিকবার জাপা কার্যালয়ে হামলাও হয়েছে।

এ পরিস্থিতিতে আজ দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাও হয়েছে অনেকটা গোপনে। ডাকা হয়নি কমিটির অধিকাংশ সদস্যকে। জাপা মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী জানিয়েছেন, নির্দিষ্ট কিছু নেতাকে ডাকা হয়েছিল বৈঠকে। নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি হিসেবে দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরিবেশ-পরিস্থিতি দেখব। যদি লেভেল প্লেয়িং থাকে, জাপা বরাবরের মতোই নির্বাচনে অংশ নেবে।

আজ জাপা কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, আট বিভাগের জন্য পৃথক বুথে মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু হয়েছে। তবে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের ভিড় ছিল না। দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া জানান, ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মনোনয়ন ফরম বিক্রি হবে। এরপর মনোনয়ন বোর্ড প্রার্থী বাছাই করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত