Ajker Patrika

৬ মামলায় সাজা হলো তারেকের

আশরাফ-উল-আলম, ঢাকা
৬ মামলায় সাজা হলো তারেকের

অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে দুদকের মামলায় তারেক রহমান ও তাঁর স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানকে সাজা দিয়েছেন ঢাকার সিনিয়র বিশেষ জজ আদালত ও মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান। আজ বুধবার রায় ঘোষণা হয়। রায়ে তারেককে ৯ বছর ও জোবাইদাকে ৩ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

এই নিয়ে তারেক রহমানকে মোট ছয়টি মামলায় সাজা দেওয়া হলো। কোনো মামলাতেই তারেক রহমান বিচারের মুখোমুখি হননি। পলাতক ঘোষণা করে মামলার বিচার কাজ শেষ করা হয়েছে।

১ / ১১ এর তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের ও ব্যবসায়ীদের আটক অভিযান চালানো হয়। এর অংশ হিসেবে তারেক রহমানকে ২০০৭ সালের ৭ মার্চ গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁকে গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডেও নেওয়া হয়। ১৮ মাস কারাভোগের পর ২০০৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর মুক্তি পান তিনি। ওই ১৮ মাসে ১৩ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় তারেককে। ১৩ মামলায় ধাপে ধাপে তাঁকে জামিন দেওয়া হয়। তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সঙ্গে একটি সমঝোতায় তারেক রহমান লন্ডন চলে যান। কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার আট দিন পর ১১ সেপ্টেম্বর তিনি লন্ডনের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেন। সেই থেকে তিনি সেখানেই আছেন।

আগে যেসব মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হন তারেক
এক.
২০১৩ সালের ১৭ নভেম্বর সিঙ্গাপুরে অর্থ পাচারের একটি মামলায় ঢাকার একটি বিশেষ জজ আদালত তারেক রহমানকে খালাস দেন। ওই মামলায় তারেকের বন্ধু ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুনকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তারেক রহমানকে খালাস দেওয়ার রায়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) হাইকোর্টে আপিল করেন। ওই আপিল শুনানি শেষে হাইকোর্ট ২০১৬ সালের ২১ জুলাই বিচারিক আদালতের খালাসের রায় বাতিল করে তারেক রহমানকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেন। পাশাপাশি ২০ কোটি টাকা জরিমানা করেন।

দুই. ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় তারেকের দণ্ড হয় ১০ বছর। এই মামলায় সাজা হয় তাঁর মা সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ারও। বিচারিক আদালত তাঁকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিলেও রাষ্ট্রের আপিলে উচ্চ আদালত সাজা দ্বিগুণ করেছেন।

তিন. ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় হয়। গ্রেনেড হামলার ঘটনা থেকে উদ্ভূত হত্যা মামলায় তারেক রহমানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

চার. একই দিনে ওই ঘটনা থেকে উদ্ভূত বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায়ও রায় দেওয়া হয়। বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় তারেক রহমানকে ২০ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

পাঁচ. ২০২১ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি তারেক রহমানকে নড়াইলের একটি জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত দুই বছরের কারাদণ্ড দেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি করায় নড়াইলে তারেকের বিরুদ্ধে মানহানির এই মামলা করেছিলেন একজন মুক্তিযোদ্ধা। ২০১৪ সালের ১৬ ডিসেম্বর লন্ডনে যুক্তরাজ্য বিএনপি আয়োজিত এক সমাবেশে বঙ্গবন্ধুকে রাজাকার ও পাকবন্ধু আখ্যা দিয়ে বেশ কিছু বক্তব্য দেন তারেক। সেই খবর প্রকাশিত হয় দেশের একটি জাতীয় দৈনিকে। এতে বঙ্গবন্ধুর সম্মানহানি হয়েছে জানিয়ে সে সময় নড়াইলের মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান বিশ্বাস নড়াইল জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তারেকের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেন। 

আরও যত মামলা
১ / ১১ এর তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে ২০০৭ ও ২০০৮ সালে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ১৩টি মামলা হয়। এর মধ্যে অর্থ পাচারের মামলা, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলা ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় সাজা হয়েছে তারেক রহমানের। ওই সময় দায়ের করা একটি করফাঁকির মামলা স্থগিত রয়েছে। বাকি ৯টি মামলা ছিল চাঁদাবাজির অভিযোগে দায়ের করা। 

আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় তারেক রহমান চার্জশিট ভুক্ত হন। গ্রেনেড হামলায় উদ্ভূত দুটি মামলায় তারেক রহমানের সাজা হয়। 

ওই সময় দায়ের করা আরেকটি উল্লেখযোগ্য মামলা হচ্ছে, একটি হত্যা মামলায় বসুন্ধরা গ্রুপের মালিকের ছেলেকে বাঁচাতে ২১ কোটি টাকা ঘুষ নেওয়ার মামলা। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর তারেক রহমান ও বসুন্ধরার মালিক এই মামলার আসামি। মামলাটি চলমান রয়েছে। 

এসব মামলা ছাড়াও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সারা দেশে অসংখ্য মামলা রয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে কটূক্তি ও ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগে এসব মামলা করা হয়। 

২০১৫ সালের ৮ জানুয়ারি তেজগাঁও থানায় রাষ্ট্রদ্রোহের একটি মামলা হয়। ওই মামলাটি এখনো তদন্তাধীন। নোয়াখালীতে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে আরেকটি মামলা আছে। ওই মামলায় তারেক রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি রয়েছে। 

২০২১ সালের ১ মার্চ রাজধানীর শাহবাগ থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করেন ছাত্রলীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম। ওই মামলাও তদন্তাধীন রয়েছে। একই ঘটনায় প্রায় একই সময়ে সুনামগঞ্জের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতেও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আরেকটি মামলা হয়। ওই মামলাটি ও তদন্তাধীন আছে। 

২০২০ সালের ২ জানুয়ারি শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে তারেকের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করেন জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এ বি সিদ্দিকী। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দায়ের করা এই মামলা পুলিশকে তদন্ত দেওয়া হয়। সেটিও তদন্তাধীন আছে। 

ঢাকার আদালতে মানহানির অভিযোগের দায়ের করা কমপক্ষে ১০টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। 

তারেক রহমানের আইনজীবী জয়নাল আবেদীন আজকের পত্রিকাকে বলেন, কতটি মামলা রয়েছে পুরোপুরি হিসেব নেই। তবে সারা দেশে শতাধিক মামলা রয়েছে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে। এগুলো সব মিথ্যা মামলা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

একটা দলের কর্মীরা ‘না’ ভোটের পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছে: গোলাম পরওয়ার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। ছবি: আজকের পত্রিকা
যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। ছবি: আজকের পত্রিকা

গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যুগপৎ আন্দোলনের শরিক জামায়াতসহ ৮ দল। আজ রোববার রাজধানীর মগবাজারে আল ফালাহ মিলনায়তনে আয়োজিত এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ৮ দলের পক্ষে এই আহ্বান জানান জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। একটি দলের কর্মী অনলাইনে ‘না’ ভোটের পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির প্রয়োজনে গণভোটটা যখন হবে, এই গণভোটের সংস্কারের পক্ষে আমরা সবাই “হ্যাঁ” বলব এবং জাতিকে আমরা “হ্যাঁ”-এর পক্ষে ভোট দেওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করব। কারণ, আমরা সংস্কারের পক্ষে ছিলাম।’

তিনি আরও বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক যে সংস্কারগুলো গণভোটে যাচ্ছে কমিশনের পক্ষ থেকে, তার মধ্যে অনেক সংস্কারের ব্যাপারে একটি দল বিরোধিতা করেছিল। আমরা সংস্কারপন্থী, সেই কারণে আমরা এই সংস্কারের পক্ষে আছি এবং আমরা দেশবাসীকে এই সংস্কার প্রস্তাবের পক্ষে “হ্যাঁ” ভোট দেওয়ার জন্য একই সঙ্গে আহ্বান জানাতে থাকব।’

জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল সরকারে কাছে দাবি জানান, সরকার যেন এই সংস্কার প্রস্তাবগুলো জাতির সামনে তুলে ধরে যে, কী কী সংস্কার করা হচ্ছে, কী বিদ্যমান রাষ্ট্র ব্যবস্থায় আছে, আর কী নতুন হবে। নির্বাচন কমিশন তাদের ওয়েবসাইটে পাবলিক করতে পারে, সরকারি প্রচারপত্র বিলি করে, জাতীয় প্রচারমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচার করে জনগণকে সচেতন করতে পারে। তিনি বলেন, ‘জনগণ যেন এই সংস্কার প্রস্তাবের পক্ষে “হ্যাঁ” বলতে পারে। তার প্রয়োজনীয় উৎসাহ দেওয়া, প্রয়োজনীয় ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করে জিনিসটাকে সহজ করা দরকার।’

গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা তাঁর ভাষণে যেভাবে বলেছেন, সাধারণ স্বল্পশিক্ষিত মানুষ এই সব সংস্কারের ইন্টারনাল, এই সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ খুব কমই বোঝে। এটাকে অতি সহজ করে, কিসে আমরা “হ্যাঁ” বলতে যাচ্ছি—সংস্কারে গৃহীত সব বিষয়গুলোকে অতি সহজ করে ভোটারদের কাছে, দেশবাসীর কাছে সরকারকে পেশ করতে হবে।’

একটা দলের কর্মীরা অনলাইনে ‘না’ ভোটের পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছে, অভিযোগ করে গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘এটা দিয়েই প্রমাণ হলো যে নতুন অভিযাত্রায় সংস্কারের কারা বিরোধিতা করছে। গোটা জাতি সংস্কারের পক্ষে, আর যদি কেউ এটার বিপক্ষে যায় জাতি নিশ্চয় তাদের প্রত্যাখ্যান করবে।’

৮ দলের আন্দোলন অব্যাহত থাকছে কিনা—এমন প্রশ্নের জবাবে পরওয়ার বলেন, ‘আমাদের কর্মসূচির বিষয়ে লিয়াজোঁ কমিটির ওপর দায়িত্ব আছে, তারা বসবেন এবং ঘোষণা করবেন। আমাদের আন্দোলনের সব দাবি তো পূরণ হয়নি। এ জন্য আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব ইউনুস আহমাদ, জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, জাগপার সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ইকবাল আহমেদ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব জালালুদ্দিন আহমদসহ ৮ দলের শীর্ষ নেতারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়: সিইসি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপের দ্বিতীয় দিনে বক্তব্য রাখছেন সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপের দ্বিতীয় দিনে বক্তব্য রাখছেন সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা

সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। তিনি বলেছেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব নয়। আমরা যাতে সুষ্ঠু, সুন্দর নির্বাচন করতে পারি। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড সমান রাখতে পারি। সে জন্য আপনাদের পরামর্শ চাই।’

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আজ রোববার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপের দ্বিতীয় দিনে এ কথা বলেন তিনি। আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় সংলাপ শুরু হয়।

আচরণবিধি প্রতিপালনের ওপর সুন্দর নির্বাচন নির্ভর করে উল্লেখ করে সিইসি বলেন, ‘আপনারা নিজেরা পড়বেন। আমরা তো আচরণবিধি প্রতিপালনের জন্য প্রচারণ করবই। আপনারাও দলীয়ভাবে যদি প্রচারণার ব্যবস্থা করেন, আপনাদের কর্মীদের যদি বলেন যে, এই আচরণবিধি আমাদের ফলো করতে হবে। তাহলে আমাদের জন্য একটু সুবিধা হয়।’

আজ সকালে গণফোরাম, গণফ্রন্ট, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি) ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির সঙ্গে সংলাপ বসেছে ইসি। এর পর দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (বাংলাদেশ জাসদ), বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাপ, তৃণমূল বিএনপি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সঙ্গে সংলাপ করবে ইসি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইসির সংলাপে ইসলামী ঐক্যজোটের দুই পক্ষের হট্টগোল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রোববার নির্বাচন কমিশনে সংলাপে এসে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়ান ইসলামী ঐক্যজোটের দুই পক্ষ। ছবি: স্ক্রিনশট
রোববার নির্বাচন কমিশনে সংলাপে এসে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়ান ইসলামী ঐক্যজোটের দুই পক্ষ। ছবি: স্ক্রিনশট

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে দ্বিতীয় দিনের সংলাপ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সংলাপ শুরু হয়। এতে ইসলামী ঐক্যজোটের দুই পক্ষের প্রতিনিধি আসায় কিছুটা হট্টগোল হয়। এ সময় সংলাপে অংশ নিতে আসা যাদের কাছে চিঠি নেই তাদের সম্মেলন কক্ষ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার বলেন ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।

সম্মেলন কক্ষ থেকে বের হাওয়ার সময় ইসলামী ঐক্যজোটের একপক্ষের যুগ্ম মহাসচিব দাবি করা মইনুদ্দিন রুহি আরেক পক্ষের প্রতি অভিযোগ করে বলেন, ‘আমাদের চিঠিটা ব্ল্যাকমেল করে ওনারা উঠিয়ে নিয়েছেন।’

সরেজমিনে দেখা যায়, সংলাপে অংশ নিতে দলটির যুগ্ম মহাসচিব দাবি করা মইনুদ্দিন রুহিসহ তিন সদস্যের প্রতিনিধি আগেই চেয়ারে বসেন। পরে দলটির আরেক পক্ষের মাওলানা জোবায়েরসহ একটি প্রতিনিধি সংলাপের কক্ষে প্রবেশ করেন, যাদের কাছে ইসি থেকে পাঠানো আমন্ত্রণপত্র রয়েছে। তখন কিছুটা হট্টগোলের পরিস্থিতি তৈরি হয়। এ সময় ইসি সচিব যাদের কাছে চিঠি নেই তাদের সম্মেলন কক্ষ থেকে বের হয়ে যাওয়ার অনুরোধ জানান।

সম্মেলন কক্ষ থেকে বের হওয়া অংশ থেকে মইনুদ্দিন রুহি বলেন, ‘আমাদের চিঠিটা ব্ল্যাকমেল করে ওনারা উঠিয়ে নিয়েছেন। কমিশন চেয়ারম্যান বরাবর চিঠি দিয়েছে। চেয়ারম্যান যাদের প্রতিনিধি নির্ণয় করেছেন, তারা আসবেন না? চেয়ারম্যান আমাদের চিঠি দিয়ে, প্যাডের মধ্যে লিখে দিয়েছেন। ওনারা (ইসি) বলছেন চিঠি যার কাছে তারা বসবেন। এটি একটি কথা হলো। বাইরের লোকের কাছে চিঠি থাকতে পারে? চিঠিটা ডাকে পাঠিয়ে, যে কেউ চিঠিটা উঠাইতে পারেন। চিঠি যার কাছে থাকবে, সেই কি ইসলামী ঐক্যজোটের প্রতিনিধি হবে?’ —প্রশ্ন রাখেন তিনি।

মইনুদ্দিন রুহি বলেন, চেয়ারম্যান ও মহাসচিব স্বাক্ষর করে আমাদের তিনজনকে প্রতিনিধি হিসেবে পাঠিয়েছেন।

ইসলামী ঐক্যজোটের এক পক্ষ সম্মেলন কক্ষ ত্যাগ করলে ইসি সচিব বলেন, ‘আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত অসামঞ্জস্যতা দিয়ে শুরু করার জন্য। তিতা দিয়ে শুরু করলে নাকি ভালো হয়।’

আজ সকালে গণফোরাম, গণফ্রন্ট, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি) ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি এবং দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (বাংলাদেশ জাসদ), বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাপ, তৃণমূল বিএনপি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর সঙ্গে সংলাপ করবে ইসি।

বিষয়:

ইসি
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সংবিধানে ‘আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাস’ পুনর্বহাল করবে বিএনপি: সালাহউদ্দিন আহমদ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
সালাহউদ্দিন আহমদ। ফাইল ছবি
সালাহউদ্দিন আহমদ। ফাইল ছবি

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সংবিধানের প্রস্তাবনায় ‘আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাস’ পুনর্বহাল করা হবে বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। গতকাল শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘সম্মিলিত খতমে নবুয়ত পরিষদ’-এর উদ্যোগে আয়োজিত খতমে নবুয়ত মহাসম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

সম্মেলনে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান যেটা সংযোজন করেছিলেন—মহান আল্লাহর প্রতি আস্থা এবং বিশ্বাস–সংবিধানের প্রস্তাবনায় ছিল এবং রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিতে ছিল, অনুচ্ছেদ ৮-এর মধ্যে। সেটা তুলে দেওয়া হয়েছে আপনারা জানেন। ইনশা আল্লাহ আমরা সেটা পুনর্বহাল করব।’

বিএনপির এ জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের একজন কর্মী। আমাদের নেতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের সংবিধানে প্রথমবারের মতো ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ সংযোজন করেছিলেন।’

সালাহউদ্দীন আহমদ আরও বলেন, ‘রাসুল (সা.)-কে আল্লাহ তাআলা সারা বিশ্বের রহমতস্বরূপ পাঠিয়েছেন। আমরা মুসলমান।...রাসুল (সা.) বলে গিয়েছেন, “আমিই সর্বশেষ নবী। আমার পরে কোনো নবী আসবে না। ” যদি এরপরও কেউ নিজেকে নবী ঘোষণা করে বা দাবি করে, তাহলে তিনি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এই ঘোষণার মধ্যে নাই।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আল্লাহ রাব্বুল আলামিন যদি বাংলাদেশের রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব আমাদের দেয়; এ দেশের জনগণ যদি মহব্বত করে আমাদের দায়িত্ব দেয়; যদি আপনারা সবাই সহযোগিতা করেন, তাহলে আপনাদের আজকের এই যে দাবিদাওয়া, এসব দাবিদাওয়ার পক্ষে আমরা। এসব দাবি নিয়ে সংসদে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে কানুনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে ইনশা আল্লাহ। এ জন্য সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’

ধর্মীয় এ মহাসম্মেলনে বক্তারা কাদিয়ানিদের (আহমদিয়া মুসলিম হিসেবে পরিচিত) রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণার দাবি তোলেন। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের প্রতি আহ্বান জানান তাঁরা। পাকিস্তানের কয়েকজন ইসলামি চিন্তাবিদ, রাজনীতিকসহ বেশ কয়েকজন বিদেশি আলেম সম্মেলনে যোগ দেন। এদের মধ্যে ছিলেন পাকিস্তানের পার্লামেন্টের সদস্য ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম পাকিস্তানের সভাপতি মাওলানা ফজলুর রহমান, ইসলামি চিন্তাবিদ মাওলানা ইলিয়াস গুম্মান, পাকিস্তানের বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়ার মহাসচিব মাওলানা হানিফ জলন্ধরী। বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ আলেম ও ইসলামি দলের নেতাদের মধ্যে ছিলেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মামুনুল হক প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত