Ajker Patrika

দাদু খালেদা জিয়াকে নিয়ে জাইমার আবেগঘন পোস্ট

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ৫৭
জাইমা রহমান। ছবি: সংগৃহীত
জাইমা রহমান। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে কাটানো সময়ের স্মৃতিচারণা করলেন তাঁর নাতনি জাইমা রহমান। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কন্যা জাইমা। তিনি আজ মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক আবেগঘন পোস্টে দাদু খালেদা জিয়ার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক কেমন ছিল, সে কথা তুলে ধরেন।

জাইমার পোস্টটি নিচে তুলে দেওয়া হলো—

দাদুকে নিয়ে আমার সবচেয়ে প্রিয় স্মৃতিগুলোর একটি হলো, পরিবারকে আগলে রাখা একজন অভিভাবক হিসেবে তিনি কতটা মমতাময়ী ছিলেন! আমার বয়স তখন এগারো। আমাদের স্কুলের ফুটবল টিম একটা টুর্নামেন্ট জিতেছিল, আর আমি মেডেল পেয়েছিলাম। আম্মু আমাকে সরাসরি দাদুর অফিসে নিয়ে গিয়েছিলেন, আমি যেন নিজেই দাদুকে আমার বিজয়ের গল্পটা বলতে পারি; তাঁকে আমার বিজয়ের মেডেলটা দেখাতে পারি। আমি খুব উচ্ছ্বসিত হয়ে গোলকিপার হিসেবে কী কী করেছি, সেটা বলছিলাম; আর স্পষ্ট টের পাচ্ছিলাম, দাদু প্রচন্ড মনোযোগ নিয়ে আমাকে শুনছেন। তিনি এতটাই গর্বিত হয়েছিলেন যে পরে সেই গল্পটা তিনি অন্যদের কাছেও বলতেন।

আমি সব সময়ই জানতাম, আমার দাদুর কাঁধে একটা দেশের দায়িত্ব। তবুও আমার স্মৃতিতে দাদু হলেন পরিবারকে আগলে রাখা একজন মমতাময়ী অভিভাবক। লাখো মানুষের কাছে তিনি ছিলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু আমার আর আমার কাজিনদের কাছে তিনি ছিলেন ‘দাদু’। আমাদের ‘দাদু’। তিনি সব সময় আমাদের খেয়াল রাখতেন, আমাদের জন্য সময় বের করতেন, আর যেসব মুহূর্ত আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ ছিল, সেগুলোতে আমাদের সাহস দিতেন, উজ্জীবিত করতেন।

এই ছোট ছোট মুহূর্তগুলো থেকেই আমি নেতৃত্বের প্রথম শিক্ষা পাই। সেটি হলো, নম্রতা, আন্তরিকতা আর মন দিয়ে শোনার মানসিকতা।

বাংলাদেশের বাইরে কাটানো সতেরোটা বছর আমার জীবন অনেকভাবে বদলে দিয়েছে। কিন্তু আমি কখনোই আমার শিকড় ভুলে যাইনি। কারণ, আমাদের সত্তার যে ভিত্তি, আমাদের যে সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ; সেটিই আমাদেরকে মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে, পরিচয় বহন করে। প্রবাসে থাকা দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রজন্মের অনেক বাংলাদেশির মতো আমিও নিজ দেশের বাইরে, ভিন্ন দেশে অনেকগুলো বছর কাটিয়েছি। লন্ডনের দিনগুলো আমাকে বাস্তববাদী করেছে, একটা বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়েছে। যদিও আমার হৃদয়-মন সব সময় বাংলাদেশেই ছিল।

প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা আমাকে শৃঙ্খলা ও বিষয়ভিত্তিক জ্ঞান শিখিয়েছে। তবে মানুষের সঙ্গে কাজ করা আমাকে শিখিয়েছে আরও অনেক বেশি; শিখিয়েছে দায়িত্বশীল হতে, বিপদগ্রস্তের পাশে দাঁড়াতে। আইন পেশায় কাজ করার সময় কাছ থেকে দেখা মানুষগুলোর গল্প, আর সেই গল্পগুলোর যৌক্তিক এবং আইনগত সমাধান খোঁজার দায়িত্ব আমাকে আলোড়িত করে। প্রত্যেক ক্লায়েন্ট, প্রতিটি মামলা, প্রতিটি মানুষের সমস্যা, কারও না কারও জীবনের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। যারা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন, অবহেলার শিকার হয়েছেন, তাঁদের পাশে দাঁড়িয়ে সেই বিশ্বাস দিতে হয় যে তাঁদের বিষয়টি দেখা হচ্ছে, শোনা হচ্ছে, সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। কারও জীবনের সবচেয়ে কঠিন দিনে তাঁর পাশে দাঁড়ানোর অভিজ্ঞতা যে শিক্ষাটা দেয়, সেটা কোনো ক্লাসরুম দিতে পারে না। এই প্রতিটা ধাপ আমাকে ভাবতে শিখিয়েছে, মানুষ হিসেবে কেমন হতে চাই।

আমি আমার ‘দাদা’কে কখনো দেখিনি। কিন্তু তাঁর সততা আর দেশপ্রেমের কথা সব সময় শুনে এসেছি। ‘দাদু’ আর ‘আব্বু’ সেই আদর্শটাই বয়ে নিয়ে চলেছেন। চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের সময় এবং ৫ আগস্টের আগে-পরের সময়টাতে আমি যতটুকু পেরেছি, নেপথ্যে থেকে সাধ্যমতো ভূমিকা রাখার চেষ্টা করেছি। অধিকাংশ সময় বলেছি কম, বরং শুনেছি বেশি। ছোট ছোট কাজের মাধ্যমে তাঁদের বোঝা একটু হালকা করার চেষ্টা করেছি।

অনেকগুলো বছর পর দেশে ফিরছি। দেশে ফেরা মানে আবেগ আর অনুভূতির এক অনন্য সংমিশ্রণ। দেশে ফিরে ইনশা আল্লাহ, আমি ‘দাদু’র পাশে থাকতে চাই। এই সময়টাতে আব্বুকে সর্বাত্মক সহায়তা করতে চাই। একজন দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে দেশের জন্য সর্বস্ব দিয়ে সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখতে চাই। নিজের চোখে, নিজের অভিজ্ঞতায় প্রিয় বাংলাদেশকে নতুন করে জানতে চাই; মানুষের সঙ্গে সামনাসামনি কথা বলতে চাই। যেভাবে এগুনো দরকার, আমি চাই বাংলাদেশ আবারো সেভাবে সামনে এগিয়ে যাক, গর্জে উঠুক।

আমি জানি, আমার পরিবারকে ঘিরে দেশের জনগণের কৌতূহল রয়েছে, প্রত্যাশা রয়েছে। সেটি কখনো আশার, কখনো প্রশ্নের। সেই প্রত্যাশা পূরণের দায়ভারও রয়েছে। জনগণের সেই প্রত্যাশা পূরণের চাপ আমরা সবাই কোনো না কোনোভাবে অনুভব করি; পরিবারে, বন্ধুত্বে, সমাজে।

সংক্ষেপে, আমার নিজের ভাষায়, এই হলো আমার গল্প। আমাদের প্রত্যেকের জীবনে একটা নিজস্ব গল্প আছে। এই গল্পগুলোকে ধারণ করে আমরা সবাই হয়তো একসঙ্গে বাকি পথটা হাঁটতে পারি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তারেক রহমানের নির্দেশ অমান্য করেই হিথ্রো বিমানবন্দরে উৎসুকের ভিড়

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবিটি লাইভ ভিডিও থেকে নেওয়া
ছবিটি লাইভ ভিডিও থেকে নেওয়া

বাংলাদেশ সময় রাত সোয়া ১২টায় (স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সোয়া ৬ টা) লন্ডন থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত রাত সোয়া ১০টার (স্থানীয় সময় বিকেল সোয়া ৪ টা) দিকে তিনি লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরের ভেতরে ছিলেন। এ সময় তাঁকে ঘিরে উৎসুক মানুষদের প্রচণ্ড ভিড় দেখা গেছে।

‘ইউকে বাংলা লাইভ নিউজ’-এর ফেসবুক পেজে একটি লাইভ ভিডিওতে দেখা গেছে, বেষ্টনী করে রাখা একটি পথ ধরে এগিয়ে যাচ্ছেন তারেক রহমান। এ সময় তাঁর পথের দুপাশ ঘিরে ছিল অসংখ্য মানুষের উপস্থিতি। তারেক রহমানের উদ্দেশে তাঁদের অনেকেই চিৎকার করে শুভকামনার বার্তা জানাচ্ছিলেন।

আরও দেখা গেছে, বেশ কয়েকজন তারেক রহমানকে ঘিরে রেখে তাঁকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করছিলেন। এই দলের সঙ্গে থাকা একজনের সঙ্গে তাঁকে বিদায়ী আলিঙ্গন করতেও দেখা গেছে। ভিড়ের অনেকেই এ সময় মোবাইল ফোনে তারেক রহমানের ওই মুহূর্তটি ভিডিও করছিলেন।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি দেশে ফেরা উপলক্ষে সম্প্রতি লন্ডনে অনুষ্ঠিত একটি বিদায় সংবর্ধনায় নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের তারেক রহমান নির্দেশ দিয়েছিলেন—কেউ যেন তাঁর বিদায় বেলায় বিমানবন্দরে ভিড় না করেন। তবে উৎসুক সমর্থকেরা সেই নির্দেশের তোয়াক্কা না করেই বিমানবন্দর ও এর আশপাশের এলাকায় অবস্থান নেন।

স্থানীয় সময় বুধবার বিকেলে তারেক রহমান লন্ডনের বাসা থেকে হিথ্রো বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা হন। তিনি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইট BG-202–এ যাত্রা করছেন। এই ফ্লাইটটি লন্ডন–সিলেট–ঢাকা রুটে পরিচালিত হচ্ছে।

সূত্রমতে, ফ্লাইটটি বোয়িং ড্রিমলাইনার ৭৮৭-৯০০ উড়োজাহাজে পরিচালিত হচ্ছে। উচ্চপর্যায়ের যাত্রী থাকায় ফ্লাইট পরিচালনায় অতিরিক্ত অপারেশনাল সমন্বয় ও বিশেষ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। উড়োজাহাজে তারেক রহমানকে সামনের সারির A1 নম্বর আসনে বসানো হয়েছে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস সূত্র জানিয়েছে, বোয়িং উড়োজাহাজে পরিচালিত এই ফ্লাইটটি বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করার কথা রয়েছে। সেখানে এক ঘণ্টার গ্রাউন্ড টার্নঅ্যারাউন্ড শেষে সকাল ১০টা ৫৫ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবে এবং ১১টা ৪৫ মিনিটে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর সূচি নির্ধারিত রয়েছে।

তারেক রহমানের দেশে ফেরাকে ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা ও আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, তাঁর আগমন নির্বিঘ্ন করতে বিভিন্ন সংস্থা সমন্বিতভাবে কাজ করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিএনপি সরকার গঠন করলে গণঅধিকারকে মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করবে: নুর

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
নুরুল হক নুর। ছবি: সংগৃহীত
নুরুল হক নুর। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপি সরকার গঠন করলে গণঅধিকার পরিষদকে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বলে জানিয়েছেন দলটির সভাপতি নুরুল হক নুর। তিনি বলেন, ‘মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্তিসহ সরকার পরিচালনায় তাদের ভূমিকা থাকবে, এমন আশ্বাস দিয়েছে বিএনপি।’

আজ বুধবার দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন নুরুল হক নুর। তিনি জানান, ‘দীর্ঘদিন ধরেই বিএনপির সঙ্গে তাদের যুগপৎ আন্দোলন চলছে এবং দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নে দুই দলের অবস্থান প্রায় একই রকম।’

নুরুল হক নুর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা বিএনপির সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে একটি যুগপৎ আন্দোলনে আছি। বিএনপি একটি বড় রাজনৈতিক দল। তারা আগেই ঘোষণা দিয়েছিল, গণঅভ্যুত্থানের পর ফ্যাসিবাদের পতন হলে যুগপৎ আন্দোলনের মিত্রদের নিয়ে একসাথে সরকার গঠন করবে এবং একসাথে নির্বাচন করবে।’

নুর জানান, সেই সিদ্ধান্তের ধারাবাহিকতায় বিএনপি তাদের জন্য দুটি আসনে প্রার্থী না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে করে গণঅধিকার পরিষদের নেতারা সংসদে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পাবেন। আজ বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, পটুয়াখালী-৩ আসনে নুরুল হক নুর (সভাপতি, গণঅধিকার পরিষদ) এবং ঝিনাইদহ-৪ আসনে মুহাম্মদ রাশেদ খান (সাধারণ সম্পাদক, গণঅধিকার পরিষদ)-এর জন্য বিএনপি আসন ছেড়ে দিয়েছে।

নুর বলেন, বিএনপির মতো একটি বড় দলের পক্ষ থেকে এটি একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। একই সঙ্গে জাতীয় সরকারে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় রাখবে—এই বিষয়টি আমাদের আশ্বস্ত করেছে। এসব বিবেচনায় আমরা আপাতত বিএনপির সাথেই থাকছি এবং একসাথে নির্বাচন ও সরকার গঠনের পথে এগোচ্ছি।

এর আগে গতকাল গণঅধিকার পরিষদের নির্বাহী পরিষদ সভায় বিএনপির সঙ্গে দুই আসনে সমঝোতা না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তবে সর্বশেষ রাজনৈতিক বাস্তবতা ও আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে দলটি বিএনপির সঙ্গে যুগপৎভাবে নির্বাচন ও সরকার গঠনের পথে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানান নুরুল হক নুর।

‘রাজনৈতিক কৌশল’ এর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, রাজনীতিতে স্থির বা রিজিড থাকা যায় না। সময়, পরিবেশ ও পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে হয়। তার বলেন, ‘আমাদের মতো দলের জন্য মাত্র দুটি আসনে সমঝোতা করা নেতাকর্মীদের কাছে মানানো কিছুটা চ্যালেঞ্জিং ছিল। তারপরও দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে আমরা কিছু অপ্রাপ্তি মেনে নিয়েই এই সিদ্ধান্তে এসেছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তারেক রহমানের জন্য উড়োজাহাজে এ-১ আসন নির্ধারণ

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্য লন্ডন থেকে ঢাকা অভিমুখী ফ্লাইটে A1 নম্বর আসন নির্ধারণ করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স । তিনি দীর্ঘ ১৭ বছর পর দেশে ফেরার পথে রয়েছেন।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একাধিক সূত্র জানায়, বুধবার সন্ধ্যায় তারেক রহমান লন্ডনের বাসা থেকে হিথ্রো বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা হন। তিনি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট BG-202–এ যাত্রা করছেন, যা লন্ডন হিথ্রো–সিলেট–ঢাকা রুটে পরিচালিত হচ্ছে।

সূত্র অনুযায়ী, ফ্লাইটটি বোয়িং ড্রিমলাইনার ৭৮৭-৯০০ উড়োজাহাজে পরিচালিত হচ্ছে। উচ্চপর্যায়ের যাত্রী থাকায় ফ্লাইট পরিচালনায় অতিরিক্ত অপারেশনাল সমন্বয় ও বিশেষ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। উড়োজাহাজে তারেক রহমানকে সামনের সারির A1 নম্বর আসনে বসানো হয়েছে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সূত্র জানায়, তারেক রহমান লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে বিমানের ফ্লাইট BG-202–এ সিলেট হয়ে ঢাকায় ফিরছেন। ফ্লাইটটি স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিটে (ঢাকা সময় রাত ১২টা ১৫ মিনিট) লন্ডন থেকে যাত্রা করবে।

বোয়িং উড়োজাহাজে পরিচালিত এই ফ্লাইটটি বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করার কথা রয়েছে। সেখানে এক ঘণ্টার গ্রাউন্ড টার্নঅ্যারাউন্ড শেষে সকাল ১০টা ৫৫ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়ে ১১টা ৪৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর সূচি নির্ধারিত রয়েছে।

এদিকে তারেক রহমানের দেশে ফেরাকে ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা ও আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, তার আগমন নির্বিঘ্ন করতে বিভিন্ন সংস্থা সমন্বিতভাবে কাজ করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা থাকলেও যথাসময়ে নির্বাচন চায় এনসিপি-জামায়াত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ০৯
উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা থাকলেও যথাসময়ে নির্বাচন চায় এনসিপি-জামায়াত

দেশের চলমান পরিস্থিতিতে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা থাকলেও যথাসময়ে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট চায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। আজ বুধবার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক শেষে দল দুটির প্রতিনিধিরা সাংবাদিকদের এমন কথা জানান।

দুপুরে সিইসির সঙ্গে বৈঠক শেষে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘ইসি আগামী ফেব্রুয়ারির ১২ তারিখে নির্বাচন আয়োজন করতে চাচ্ছে। আমরা জাতীয় নাগরিক পার্টির পক্ষ থেকে বলেছি, যাতে এই ঘোষিত তারিখ যেটা আছে, এটা যাতে না পেছায়; যাতে নির্বাচনটা যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হয়। কারণ, আওয়ামী লীগ বিভিন্নভাবে এবং ভারত বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করে নির্বাচন পেছানোর চেষ্টা করছে।’

১২ ফেব্রুয়ারি ভোট নিয়ে কোনো আশঙ্কা আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আশঙ্কা তো বাংলাদেশে রয়েছে। আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে বলেছি, যাতে ফেব্রুয়ারি ১২ তারিখে নির্বাচন করা যায়। আমরা আজকে অনুরোধ জানিয়েছি, মনোনয়ন আবেদনের যে তারিখগুলো আছে, সেগুলো পুনর্বিবেচনা করা যায় কি না।’

নির্বাচন নিয়ে আপনাদের কোনো সন্দেহ বা উদ্বেগ আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘উদ্বেগ আছে। একজন প্রার্থী অলরেডি হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। আমাদের প্রার্থীদের আমরা বলেছি, আপনারা বিধিমালাগুলো মেনে চলবেন। নির্বাচন কমিশনকেও বলেছি, সকল দলের প্রার্থীদের ক্ষেত্রে যাতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়।’

বিকেলে সিইসির সঙ্গে বৈঠক শেষে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসান মাহবুব জুবায়ের বলেন, ‘যেখানে যতটুকু আচরণবিধি লঙ্ঘিত হচ্ছে, আমরা তাদের দৃষ্টি আকর্ষণে এনেছি। উনাদের (ইসি) বলেছি, যেন তাৎক্ষণিকভাবে যাতে ব্যবস্থা নেন।’

জুবায়ের বলেন, ‘ওনারা (বিএনপি) বিভিন্ন ধরনের ওয়াদা করছেন যে আমরা এত লক্ষ, এত কোটি কার্ড দিব, এক একটা কার্ডে এত হাজার, এত লাখ টাকা পাবেন। এই ধরনের অনেকগুলো ওয়াদা করছেন, যেটা নির্বাচন বিধির অর্থাৎ আচরণবিধির সুনির্দিষ্ট খেলাফ।’

তারেক রহমানে দেশে ফেরাকে কেন্দ্র করে আচরণবিধি লঙ্ঘিত হচ্ছে কি না, তা নিয়েও ইসির দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে বলেও জানান জামায়াতের এই সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল।

নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে এহসান মাহবুব বলেন, শরিফ ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডের পরে জনমনে আতঙ্ক, উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা তৈরি হয়েছে। আমাদের ৩০০ প্রার্থী মাঠে কাজ করছেন— এটা বাস্তব উদ্বেগ। আমরা বলেছি, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার, প্রশাসনকে আরও অ্যাকটিভ করতে হবে। আচরণবিধি লঙ্ঘিত হলে কমিশন ব্যবস্থা নিচ্ছে, তা দৃশ্যমান করার বিষয়ে ইসিকে বলা হয়েছে।

প্রার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন, নির্বাচন উপলক্ষে আমাদের আমির, সেক্রেটারি জেনারেলসহ শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ব্যাপক সফর করবেন। তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি আমরা দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। কেউ অনেক ফ্যাসিলিটি পাবেন, ভিভিআইপি ফ্যাসিলিটিজ পাবেন, আবার কেউ পাবেন না। এটা তো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হলো না। উনারা বলেছেন, বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় দেখেন, তাদের সঙ্গে কথা বলবেন।

৩ তারিখে আপনাদের সমাবেশ রয়েছে, সেখানে আচরণবিধির ব্যাপারে আপনারা সতর্ক আছেন কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রিটার্নিং অফিসার, ইসিকে আশ্বস্ত করেছি, জনমনে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দূর করার জন্য সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য আমাদের উদ্যোগ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত