Ajker Patrika

সিরাজুল আলম খান: বাংলাদেশের জন্মের ইতিহাসের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্য যিনি

আপডেট : ০৯ জুন ২০২৩, ২১: ৪৭
সিরাজুল আলম খান: বাংলাদেশের জন্মের ইতিহাসের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্য যিনি

বাংলাদেশের জন্মের ইতিহাসের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িয়ে আছে বিশেষ নাম—সিরাজুল আলম খান। মুক্তিযুদ্ধের পূর্বাপর ইতিহাসের পরিক্রমায় নিজের ভূমিকার জন্য ‘রহস্যপুরুষ’ আখ্যা পেয়েছেন এই রাজনীতিক। কর্মকাণ্ডে রহস্য থাকলেও রাজনৈতিক মহলে তাত্ত্বিক হিসেবে পরিচিত তিনি। যে গোপন সংগঠন স্বাধীনতাযুদ্ধের নেতৃত্বের কেন্দ্রে ছিল, সেই ‘স্বাধীন বাংলা নিউক্লিয়াসের’ প্রবক্তা ও মূল সংগঠক তিনিই ছিলেন।

রাজনীতির এই ‘রহস্যপুরুষ’ দশকের পর দশক ধরে রহস্য বুকে পুষে নিয়েই চলে গেলেন। উচ্চ রক্তচাপ, শ্বাসকষ্ট, ফুসফুসে সংক্রমণসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগে আজ শুক্রবার দুপুরে ৮২ বছর বয়সী ‘দাদাভাই’ রহস্যময় জীবন থেকে বিদায় নিলেন। রাজনৈতিক সহযোগী ও ঘনিষ্ঠ বন্ধুরা তাঁকে ‘দাদাভাই’ ডাকতেন।

মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বছরের বেশির ভাগ সময় যুক্তরাষ্ট্রে থাকতেন। বাঙালি জাতীয়তাবাদে ওপর গবেষণা করে ও বই লিখে সময় কাটাতেন। বাংলাদেশে এলে অধিকাংশ সময় কাটাতেন পাঁচতারা হোটেলে। রাজনৈতিক সহযোগী ও ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতেন। সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব ভুলে গেলেও সাম্যবাদী দার্শনিক কার্ল মার্ক্সের আদলে লম্বা দাঁড়ি ও চুল তাঁর আমৃত্যু সঙ্গী হয়ে ছিল। অকৃতদার থেকে তিনি বিপ্লবী ঐতিহ্যের দৃষ্টান্ত হয়ে আছেন।

জন্ম ও শৈশব
সিরাজুল আলম খান ১৯৪১ সালের ৬ জানুয়ারি নোয়াখালী জেলায় জন্ম গ্রহণ করেন। খোরশেদ আলম খান ও সৈয়দা জাকিয়া খাতুনের দ্বিতীয় সন্তান তিনি। তাঁরা পাঁচ ভাই ও তিন বোন। খোরশেদ আলম খান এডিনবরায় (স্কটল্যান্ড) পড়াশোনা শেষে স্কুল পরিদর্শক হিসেবে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি সরকারি কর্মকর্তা হওয়ায় বিভিন্ন জায়গায় বদলি হয়ে যেতেন। তাই শৈশবের বেশির ভাগ সময় তিনি নোয়াখালী থেকে দূরে ছিলেন। সিরাজুল আলম খান বলতেন, শৈশব থেকেই বাবাই তাঁর পরামর্শদাতা ছিলেন।

চিন্তামগ্ন সিরাজুল আলম খানতাঁর মা স্বল্প শিক্ষিত হলেও সামাজিক মূল্যবোধ ও ধর্মীয়-সংস্কৃতির শিক্ষায় কড়া ছিলেন। শৈশব থেকেই তাঁর ভাইবোনদের সবাই তাঁদের পিতার কাছ থেকে আধুনিক এবং পাশ্চাত্য দৃষ্টিভঙ্গির পাঠ এবং মায়ের কাছ থেকে মধ্যপন্থী মুসলিম মূল্যবোধের পাঠ নেন।

শিক্ষা 
১৯৫৬ সালে খুলনা জিলা স্কুল থেকে অসামান্য কৃতিত্বের সঙ্গে ম্যাট্রিকুলেশন (এসএসসি) পাস করেন সিরাজুল আলম খান। এরপর ঢাকা কলেজ থেকে বিজ্ঞান শাখায় উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন তিনি। এইচএসসি পাস করে ১৯৫৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত বিভাগে সম্মান শ্রেণিতে ভর্তি হন। তিনি ফজলুল হক হলে থাকতেন।

‘কনভোকেশন মুভমেন্টে’ অংশগ্রহণ করার কারণে গণিতে স্নাতক ডিগ্রি নেওয়ার পর তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়। প্রতিদিন রাত করে হলে ফিরতেন তিনি। ফলে হল থেকেও একবার বহিষ্কৃত হন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করায় তাঁর পক্ষে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেওয়া সম্ভব হয়নি।

রাজনীতি
কলেজে পাঠ্যক্রম-বহির্ভূত কার্যক্রম সিরাজুল আলম খানকে ভবিষ্যৎ নেতা হওয়ার পথ দেখায়; ঢাকা কলেজেই তাঁর রাজনীতির শুরু। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর ছাত্রলীগের সদস্য হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসেবে তিনি ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং পরবর্তীকালে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হন। ১৯৬৩-৬৪ ও ১৯৬৪-৬৫ দুই মেয়াদে দুই বছর তিনি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

জাতীয়তাবাদী চেতনাকে বিকশিত করে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে ১৯৬২ সালে ছাত্রলীগের অভ্যন্তরে যে ‘স্বাধীন বাংলা নিউক্লিয়াস’ গড়ে উঠেছিল, তাঁর মূল উদ্যোক্তা ছিলেন তিনি। এই নিউক্লিয়াসের সদস্য ছিলেন আব্দুর রাজ্জাক ও কাজী আরেফ আহমেদ। মুক্তিযুদ্ধ শেষ হওয়া পর্যন্ত এই নিউক্লিয়াসের মাধ্যমে ছাত্রলীগের সব কর্মকাণ্ড পরিচালিত হত।

ছয় দফার সমর্থনে জনমত গঠনে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেন সিরাজুল আলম খান। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা বাতিল ও বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবিতে আন্দোলন ও উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্র-শ্রমিকদের সম্পৃক্ত করতে প্রধান ভূমিকা পালন করেন। আন্দোলনের একপর্যায়ে ১৯৬৯-৭০ সালে পূর্ব পাকিস্তানজুড়ে নিউক্লিয়াসের রাজনৈতিক শাখা হিসেবে বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্স (বিএলএফ) এবং সশস্ত্র শাখা হিসেবে ‘জয় বাংলা বাহিনী’ গড়ে তোলা হয়।

(বাঁ থেকে) আব্দুর রাজ্জাক, সিরাজুল আলম খান, তোফায়েল আহমেদ, শেখ ফজলুল হক মনি ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান

এসব সিদ্ধান্ত গ্রহণে সিরাজুল আলম খানের ভূমিকা ছিল মুখ্য। ১৯৬৯-৭০ সালে গণ-আন্দোলনের চাপে ভেঙে পড়া পাকিস্তানি শাসনের সমান্তরালে নিউক্লিয়াসের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সংগঠন করা হয় ছাত্র ব্রিগেড, যুব ব্রিগেড, শ্রমিক ব্রিগেড, নারী ব্রিগেড, কৃষক ব্রিগেড, সার্জেন্ট জহুর বাহিনী। এদের সদস্যরা এ ভেঙে পড়া পাকিস্তানি শাসনের পরিবর্তে যানবাহন চলাচল, ট্রেন-স্টিমার চালু রাখা, শিল্প-কারখানা উৎপাদন আব্যাহত রাখা এবং থানা পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালন করে।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের পতাকা তৈরি করে ২ মার্চ উত্তোলন করেছিল ‘নিউক্লিয়াস’। এর অধীনে ১৯৭১ সালের ৩ মার্চ ‘স্বাধীনতার ইশতেহার’ প্রকাশিত হয়। ‘আমার সোনার বাংলা ...’—কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই গানকে জাতীয় সংগীত এবং স্বাধীনতার থিম হিসেবে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান বাছাই করে।

‘...এবারের সংগ্রাম, আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম’—বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চ ভাষণ প্রস্তুত করতে ‘নিউক্লিয়াস’ ও বিএলএফ নেতৃত্ব সহায়তা করেছিল। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ থেকে অসহযোগ আন্দোলন ও সমান্তরাল বেসামরিক প্রশাসন চালু করায় মূল ভূমিকা রেখেছিল বিএলএফ। শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিও দিয়েছিল বিএলএফ নেতৃত্ব।

পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনুরোধে সিরাজুল আলম খান, শেখ ফজলুল হক মনি, আব্দুর রাজ্জাক ও তোফায়েল আহমেদকে নিয়ে বিএলএফ হাইকমান্ড পুনর্গঠন করা হয়। পাকিস্তানের হানাদার বাহিনীর হাত থেকে মুক্তির জন্য ৯ মাসের সশস্ত্র সংগ্রামের সময় ভারতে বিএলএফের নাম পাল্টে ‘মুজিব বাহিনী’ হয়।

 সিরাজুল আলম খানআওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘১৯৬৯-এ আমি ছিলাম তোতাপাখির মতো। সবকিছু করে দিয়েছেন আমার রাজনৈতিক শিক্ষাগুরু সিরাজুল আলম খান, যিনি আমাকে হাতে-কলমে রাজনীতি শিখিয়েছেন।’

জাসদ পর্ব
১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর আন্দোলন-সংগ্রামের রূপ ও চরিত্র বদলে যায়। ‘বিপ্লবী জাতীয় সরকার’ গঠন প্রশ্নে আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সিরাজুল আলম খানের মতভেদ দেখা দেয়। তাঁর সিদ্ধান্ত ও তৎপরতায় গঠিত হয় নতুন রাজনৈতিক দল ও একমাত্র বিরোধী দল জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)। বাংলাদেশের ইতিহাসের বহুল বিতর্কিত অংশ কথিত ‘সিপাহী জনতার গণ-অভ্যুত্থান’। ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের এই ব্যর্থ অভ্যুত্থানেরও নেপথ্য পরিকল্পনাকারী ছিলেন সিরাজুল আলম খান।

তাঁর সঙ্গে এই দুই ঘটনার আরও কুশীলব ছিলেন মেজর জলিল, আ স ম আবদুর রব ও কর্নেল আবু তাহের। জাসদের চিন্তাগুরু সিরাজুল আলম খান তাহেরকে মাঠে নামিয়ে দিয়ে চলে যান অজ্ঞাত স্থানে। যদিও সেখান থেকেই তিনি তাহেরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। কিন্তু মূল দৃশ্যপট থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখেন তিনি।

কিন্তু পরে ১৯৭৬ সালেই জিয়াউর রহমানের আমলে তিনি গ্রেপ্তার হন এবং ১৯৭৯ সালে মুক্তি পান। আরও দুবার তিনি গ্রেপ্তার হন। ১৯৬৩ সালের শেষদিকে ‘কনভোকেশন মুভমেন্টের’ কারণে তিনি গ্রেপ্তার হন। সর্বশেষ ১৯৯২ সালে বিদেশ যাওয়া আগে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে ২৪ মার্চ সিরাজুল আলম খানকে গ্রেপ্তার করা হলে চার মাস পর হাইকোর্টের রায়ে মুক্তি পান। ভিন্ন ভিন্ন তিন মেয়াদে প্রায় সাত বছর কারাভোগ করেন তিনি।

গবেষণা
দীর্ঘ কারাজীবনে তিনি দর্শন, সাহিত্য, শিল্পকলা, রাজনীতি-বিজ্ঞান, অর্থনীতি, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, সমাজবিজ্ঞান, পরিবেশবিজ্ঞান, সামরিক বিজ্ঞান, মহাকাশ বিজ্ঞান, সংগীত, খেলাধুলা নিয়ে ব্যাপক পড়াশোনা করেন। মেধাবী ছাত্র হিসেবে তাঁর সুখ্যাতি ছিল।

ভারতের জেনারেল এস এস উবানের সঙ্গে চার বিএলএফ অধিনায়ক। আব্দুর রাজ্জাক, সিরাজুল আলম খান, তোফায়েল আহমেদ ও শেখ ফজলুল হক মনিস্বাধীনতার পরপরই রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে বাস্তব অভিজ্ঞতা নিয়ে সিরাজুল আলম খান রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ‘তাত্ত্বিক’ উন্নয়নে নিজেকে নিয়োজিত করেন। গণিত শাস্ত্রে পড়লেও রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ওপর গড়ে উঠে তাঁর অগাধ পাণ্ডিত্য ও দক্ষতা। সেই কারণে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকলেও তিনি ১৯৯৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ওশকোশের ইউনিভার্সিটি অব উইসকনসিনে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের খণ্ডকালীন অধ্যাপক হন।

সিরাজুল আলম খানের বই ও ভাষণ থেকে তাঁর রাজনৈতিক-প্রশাসনিক রূপরেখা নিয়ে বেশ কিছু মূল ধারণা মিলেছে। এসব কিছুর মধ্যে তাঁর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আরেক রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক জিল্লুর রহমান খান। শেষ পর্যন্ত তাঁরা তাত্ত্বিক পর্যায়ে একসঙ্গে কাজ করেছেন।

নব্বই দশকের গোড়ার দিকে সিরাজুল আলম খান পরিবর্তিত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশের শাসনব্যবস্থার প্রতিষ্ঠার জন্য ১৪ দফা প্রস্তাব পেশ করেন। সেখানে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অর্থায়নে উপজেলাভিত্তিক ‘শিল্পাঞ্চল’ প্রতিষ্ঠার পরামর্শ দেন।

মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতে আশ্রয়শিবিরে ট্রানজিনস্টার শুনছেন সিরাজুল আলম খানবাংলাদেশের জনগণকে শ্রমজীবী-কর্মজীবী-পেশাজীবী হিসেবে বিভক্ত করে ‘রাষ্ট্রীয় রাজনৈতিক’ মডেল হাজির করেছেন সিরাজুল আলম খান। চিরাচরিত পার্লামেন্টারি ধাঁচের ‘অঞ্চলভিত্তিক’ প্রতিনিধিত্বের পাশাপাশি শ্রম, কর্ম, পেশায় নিয়োজিত সমাজ শক্তিসমূহের ‘বিষয়ভিত্তিক’ প্রতিনিত্বের ব্যবস্থাসংবলিত ‘দুই কক্ষ’বিশিষ্ট পার্লামেন্ট গঠন, ফেডারেল সরকারব্যবস্থা প্রবর্তন, বাংলাদেশকে কয়েকটি প্রদেশে ভাগ করে প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচন এবং প্রাদেশিক সরকার গঠন, উপজেলা পর্যায়ে স্বশাসিত স্থানীয় সরকার পদ্ধতি চালু করার মধ্য দিয়ে ব্রিটিশ-পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক আইনব্যবস্থা ও শাসন কাঠামোর পরিবর্তে স্বাধীন দেশের উপযোগী শাসনব্যবস্থা গড়ে তোলার মডেল উত্থাপন করেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: অভিযুক্ত গৃহকর্মীর আসল নাম-পরিচয় শনাক্ত

দেড় বছরে ১০ বার থমকে গেছে মেট্রোরেল চলাচল

সাবেক সেনা কর্মকর্তার কাছে দুঃখ প্রকাশ করলেন তারেক রহমান

ভারত যেন হুঁশে থাকে, এবার পাল্টা আঘাত হবে দ্রুত ও মারাত্মক—পাকিস্তানের সিডিএফ হয়েই আসিম মুনিরের গর্জন

জাতীয় সংসদ নির্বাচন ১২ ফেব্রুয়ারি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সংসদ নির্বাচন: আসন ছাড় নিয়ে বিএনপির ওপর ক্ষুব্ধ শরিকেরা

  • বোঝাপড়া না হলে বিএনপির সঙ্গ ছাড়ার কথা বলছেন কেউ কেউ।
  • বাস্তবতার নিরিখে শরিকদের মূল্যায়ন করার কথা বলছে বিএনপি।
  • ১২ দলীয় জোটের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক হতে পারে আজ।
রেজা করিম, ঢাকা 
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭: ১৫
সংসদ নির্বাচন: আসন ছাড় নিয়ে বিএনপির ওপর ক্ষুব্ধ শরিকেরা

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আসন ছাড় নিয়ে যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের সঙ্গে বিএনপির দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে। চাওয়া-পাওয়ার হিসাব না মেলায় শরিকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ ও হতাশা। এই অবস্থায় বিএনপির সঙ্গ ছাড়ার চিন্তাও করছেন শরিকদের কেউ কেউ। এর আগে অবশ্য বিএনপি কী করে, তা দেখার জন্য অপেক্ষায় তাঁরা।

গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক গতকাল মঙ্গলবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কার্যকর পদক্ষেপ না এলে রাজনৈতিক দূরত্ব বাড়বে।’ ফলে নতুন জোট গঠনের ইঙ্গিতও পাওয়া যায় এই নেতার কথায়। তিনি বলেন, ‘বোঝাপড়া হলে (বিএনপির সঙ্গে) এক রকমের, আর বোঝাপড়া না হলে আরেক রকমের।’ এ ক্ষেত্রে বিকল্প চিন্তার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, দলগুলোকে নিয়ে অন্য একটা জোটও হতে পারে।

অবশ্য আসন ছাড় নিয়ে শরিকদের মনোভাব প্রসঙ্গে বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে বলা হচ্ছে, বাস্তবতার নিরিখে বিভিন্ন আসনে প্রার্থী দেওয়া হচ্ছে। নির্বাচনে জিতে আসতে পারে, এমন প্রার্থীদের বেছে নেওয়া হচ্ছে। এ বাস্তবতা বুঝতে হবে।

নাম প্রকাশ না করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্য বলেন, এবারের ভোট অনেক প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে। শেখ হাসিনার আমলের মতো যাঁদের দাঁড় করিয়ে দেওয়া হবে, তাঁরাই জিতে যাবেন—এমনটি হওয়ার সুযোগ নেই। অনেকে জাতীয় নেতা হলেও বেশির ভাগেরই ভোট করে জিতে আসার রেকর্ড নেই। এরপরও শরিকদের বিষয়ে গুরুত্বসহকারে আলোচনা চলছে। যাঁরা বিজয়ী হয়ে আসতে পারবেন, তাঁদের জন্য আসন ছাড় দেওয়া হবে।

আসন ছাড় নিয়ে শরিকদের সঙ্গে মনোমালিন্যের বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমানের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সুরাহা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। গতকাল তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা গুরুত্বের সঙ্গে চিন্তা-ভাবনা করছি। আশা করছি সব ঠিক হয়ে যাবে।’

সব ঠিক থাকলে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হতে পারে আগামীকাল বৃহস্পতিবার।

এই নির্বাচনকে সামনে রেখে এরই মধ্যে দুই দফায় ২৭২টি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি। সম্ভাব্য বলা হলেও ঘোষিত এসব আসনে প্রার্থী বদলের সম্ভাবনা খুব কম বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তফসিল ঘোষণার পর অবশিষ্ট ২৮ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করার কথা বলছে বিএনপি।

ঘোষিত প্রার্থী তালিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির শরিকেরা। তাঁদের অভিযোগ, দ্বিতীয় দফায় ঘোষিত ৩৬ আসনের মধ্যে মিত্র তিন দলের তিন নেতাকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এর মধ্যে ১২ দলীয় জোটের শরিক ও জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা কিশোরগঞ্জ-৫ আসন থেকে নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এর আগে ওই আসনে তাঁকে কাজ করার জন্য চিঠিও দেওয়া হয়েছিল বিএনপি থেকে।

নড়াইল-২ আসনে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়ক ও এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে এই আসন থেকে তিনি ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করেন। এবারও এই আসনে তিনি মনোনয়ন পাবেন বলে মনে করেছিলেন এনপিপির নেতা-কর্মীরা। তবে এই আসনে বিএনপি নেতা মনিরুল ইসলামকেই বেছে নিয়েছে দলটি।

এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, ‘বিএনপি তাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি। এটা গণতন্ত্রের জন্য একধরনের অশনিসংকেত। আমরা আশা করছি, তাদের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে এবং শরিকদের প্রাপ্য বুঝিয়ে দেবে।’

একইভাবে বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান ঝালকাঠি-১ আসন থেকে নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। যদিও ২০১৮ সালের নির্বাচনে তিনি পিরোজপুর-২ আসন থেকে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করেন। তাঁর বাড়িও এই জেলায়। তবে এবার তিনি ঝালকাঠি-১ আসন থেকে মনোনয়ন পাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।

বিএনপির বিরুদ্ধে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের অভিযোগ এনে শরিক দলগুলোর নেতারা বলছেন, ফ্যাসিবাদের কঠিন সময়ে কোনো কিছু চিন্তা না করে যুগপৎ আন্দোলনের শরিকেরা রাজপথে ঝুঁকি নিয়ে বিএনপির সঙ্গে থেকে সরকার পতনে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছে। বিএনপিও সে সময়ে ঘোষণা দিয়েছিল, তারা যুগপৎ আন্দোলনের শরিক দলগুলোকে নিয়ে নির্বাচন ও সরকার গঠন করবে। ৫ আগস্টের পরও বিএনপির শীর্ষ নেতারা বিভিন্ন সভা-সেমিনারে যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের নিয়ে জাতীয় সরকার গঠনের কথা বলেছেন। কিন্তু ইতিমধ্যে শরিকদের সঙ্গে কোনো আলোচনা-সমঝোতা ছাড়াই বিএনপি এককভাবে ২৭২টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে।

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, ‘সামগ্রিক পরিস্থিতিতে মনে হচ্ছে বর্তমানে বিএনপি নির্বাচনী জোট নিয়ে তেমন আগ্রহী নয়, হয়তো মিত্রদের কিছু আসনে তারা প্রার্থী দেবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দেখতে চাই শেষ পর্যন্ত বিএনপি কী ভূমিকা নেয়। রাজনীতিতে শেষ বলে কিছু নেই।’

বিএনপির সূত্র বলছে, বিএনপির কাছ থেকে অন্তত ২৫-৩০টি আসন ছাড়ের প্রত্যাশা করছে যুগপৎ আন্দোলনের শরিক দলগুলো। এ প্রত্যাশার সঙ্গে বিএনপির হিসাব-নিকাশের মিল নেই। শরিকদের অবদানের কথা অস্বীকার করছেন না বিএনপির নীতিনির্ধারকেরা। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী শরিকদের সঙ্গে নিয়ে নির্বাচন মোকাবিলা ও বিজয়ী হলে সরকার গঠন করতে চান তাঁরা। কিন্তু নির্বাচন যেহেতু হারজিতের খেলা, সে খেলায় জিততে পারে এমন প্রার্থী ঠিক করার দিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে শরিক দলগুলো থেকে বিজয়ী হয়ে আসার মতো প্রার্থী খুবই কম। এ বিষয়ে শরিকদের সঙ্গে আলোচনা করে বিএনপি সিদ্ধান্ত নেবে।

গত সোমবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও আসন ছাড় নিয়ে শরিকদের সঙ্গে সৃষ্ট দূরত্বের বিষয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আজ বুধবার ১২ দলীয় জোটের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় পর্যায়ক্রমে দ্রুততম সময়ের মধ্যে অন্য দল ও জোটের সঙ্গেও বৈঠক করবে বিএনপি।

গত শনিবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘এখনো ২৮টি আসন তো বাকি আছে। জোটের আলোচনা তো এখনো শেষ হয় নাই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: অভিযুক্ত গৃহকর্মীর আসল নাম-পরিচয় শনাক্ত

দেড় বছরে ১০ বার থমকে গেছে মেট্রোরেল চলাচল

সাবেক সেনা কর্মকর্তার কাছে দুঃখ প্রকাশ করলেন তারেক রহমান

ভারত যেন হুঁশে থাকে, এবার পাল্টা আঘাত হবে দ্রুত ও মারাত্মক—পাকিস্তানের সিডিএফ হয়েই আসিম মুনিরের গর্জন

জাতীয় সংসদ নির্বাচন ১২ ফেব্রুয়ারি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাবেক সেনা কর্মকর্তার কাছে দুঃখ প্রকাশ করলেন তারেক রহমান

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ১২
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত

স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) ফাতেমী রুমির কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সামরিক বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালী যুক্ত হয়ে বক্তব্য শেষে তারেক রহমান দুঃখ প্রকাশ করেন।

এ সময় ১০১ জন সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। পরিচালনা করেন মেজর জেনারেল (অবঃ) ফজলে এলাহী আকবর।

তারেক রহমান তার বক্তব্যে বলেন, 'আমি স্ক্রিনে একজনকে দেখতে চাচ্ছি, এটা একটু পার্সোনাল ব্যাপার তারপরেও আমি এখানে উল্লেখ করতে চাচ্ছি। আমাদের সামনে এখানে আম্মার সময় উনি ডিজিএসএসএফ ছিলেন। রুমি সাহেব। রুমি সাহেব উপস্থিত আছেন? রুমি সাহেব আপনার নিশ্চয়ই মনে আছে যে একটা মিছিল হয়েছিল একবার। সেই পুরান ঢাকা থেকে আমিন বাজার পর্যন্ত এবং পুরো মিছিলটা আমি হেঁটে এসেছিলাম, আম্মাও (বেগম খালেদা জিয়া) ছিলেন। সেই মিছিলে অনেক ভিড় হট্টগোল ছিল। আপনি আমাকে একটা কিছু বলেছিলেন। আমি সেদিন আপনার সাথে একটু খারাপ ব্যবহার করেছিলাম। সবকিছু মিলে আই অ্যাম ভেরি সরি ফর দ্যাট। আমি অনেকদিন চেষ্টা করেছি, আপনাকে রিচ করার জন্যে। কিন্তু সুযোগ পাইনি। আজকে সুযোগ পেয়েছি ওই ঘটনার জন্য দুঃখিত। সকলে ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আপনাদের সকলের কাছে আমি সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি।'

তারেক রহমান তার মা বেগম খালেদা জিয়ার প্রসঙ্গে বলেন, আম্মা অসুস্থ হওয়ার আগে সর্বশেষ যেই (সশস্ত্র বাহিনী দিবসের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান) অনুষ্ঠানটিতে উনি গিয়েছিলেন ২১ তারিখে। সেখান থেকে আসার পরে উনি অসুস্থ হয়েছেন। উনি যে অনুষ্ঠানটিতে গিয়েছিলেন যাবার আগেও কিন্তু উনি একটু অসুস্থ ছিলেন। ওনাকে ডাক্তাররা কয়েকবার বলেছিলেন যে ম্যাডাম মনে হয় না গেলে বোধহয় ভালো হয়। কিন্তু ওই অসুস্থ শরীরেও উনি উনার মনের সর্বোচ্চ শক্তি, অসুস্থ শরীরের সর্বোচ্চ শক্তিকে এক করে ওই অনুষ্ঠানটিতে উনি গিয়েছিলেন। উনি যখন অনুষ্ঠানটি থেকে ফিরে আসেন তখন আমার ছোট ভাইয়ের স্ত্রী বলছিল যে, আম্মা অনুষ্ঠানে যাওয়ার পর যতক্ষণ ওখানে ছিলেন এবং উনি ফিরে আসার পরে মানসিকভাবে উনি এতটা বুস্ট আপ ছিলেন, যে উনার মনেই হচ্ছিল না যে উনি অসুস্থ একজন মানুষ। এই কথাটা দিয়ে আমার মনে হয় আর বুঝতে কারো বাকি থাকে না যে, আপনাদের সাথে সার্ভিসে অথবা যে অবস্থায় থাকুন, আপনাদের সাথে জিয়া পরিবারের সম্পর্কটা কি, আমি পুরো বিষয়টা এই ছোট্ট ঘটনা দিয়ে আপনাদের বোঝানোর চেষ্টা করলাম। আমি বিশ্বাস করি এই ঘটনার মাধ্যমে আপনারা বুঝতে পেরেছেন, যারা এই ঘরেই আছেন, অনলাইনে যারা দেখছেন, সবাই বোধহয় বিষয়টা বুঝতে পারবেন। উনার মনটা কোন জায়গায় আছে। উনি কিভাবে দেখেন পুরা ডিফেন্সকে। বাংলাদেশের আর্মি হোক, নেভি হোক, এয়ারফোর্স হোক, পুরো ডিফেন্সটাকে উনি কিভাবে দেখেন তা এই ঘটনার মাধ্যমে প্রকাশ পায়।

তিনি বলেন, দয়া করে আপনারা ভুল বুঝবেন না। বিগত স্বৈরাচারের সময় যে রিক্রুটমেন্টগুলো হয়েছিল, সেখানে বিএনপি, শহীদ জিয়া, খালেদা জিয়া সম্পর্কে একটা নেতিবাচক পারসেপশন বা ন্যারেটিভ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। মেজর রেজা বা মেজর মান্নান যেটা বলেছেন, সামান্য কিছু ভ্রান্ত ধারণা স্বৈরাচার তৈরি করেছিল। একটা দূরত্ব তৈরি করার জন্য। আমাদের ধারণা এটি সম্পূর্ণভাবে তাদের তৈরি ছিল। আমার মনে হয় এই বিষয়টি বোধহয় আজকে ক্লিয়ার হয়ে গেছে। আমি আমাদের ব্যক্তিগত পারিবারিক একটি ঘটনা আপনাদের সামনে তুলে ধরেছি, আমার মনে হয় এটার মাধ্যমে পুরা বিষয়টি ক্লিয়ার হয়ে গেছে।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন, এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, মেজর (অব) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম, লেঃ কর্ণেল (অব.) শামসুজ্জোহা, মেজর (অব.) রেজা করিম, মেজর (অব.) সামসুজ্জোহা, মেজর (অব.) জামাল হায়দার, মেজর (অব.) আজিজুল হক, কর্ণেল (অব.) হারুনুর রশিদ, এয়ার কমোডর (অব.) শফিক আহমেদ, রিয়ার এডমিরাল (অব.) মোস্তাফিজ, লেফটেন্যান্ট কর্ণেল (অব.) জয়নাল আবেদীন, কর্ণেল (অব.) জগলুল, লেফটেনেন্ট (অব.) ইমরান কাজল, মেজর (অব.) গোলাম মান্নান চৌধুরী, ক্যাপ্টেন (অব.) রেজাউর রহমান, মেজর জেনারেল (অব.) জামিল ডি আহসান বীর প্রতীক, কর্ণেল (অব.) হান্নান মৃধা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: অভিযুক্ত গৃহকর্মীর আসল নাম-পরিচয় শনাক্ত

দেড় বছরে ১০ বার থমকে গেছে মেট্রোরেল চলাচল

সাবেক সেনা কর্মকর্তার কাছে দুঃখ প্রকাশ করলেন তারেক রহমান

ভারত যেন হুঁশে থাকে, এবার পাল্টা আঘাত হবে দ্রুত ও মারাত্মক—পাকিস্তানের সিডিএফ হয়েই আসিম মুনিরের গর্জন

জাতীয় সংসদ নির্বাচন ১২ ফেব্রুয়ারি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এনসিপির প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা ঘোষণা বুধবার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) প্রথম ধাপের প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা আজ বুধবার (১০ ডিসেম্বর) ঘোষণা করা হতে পারে। সকাল ১০টায় রাজধানীর বাংলামোটরে দলের অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই তালিকা ঘোষণা করার কথা। মঙ্গলবার রাতে এক বার্তায় দলটির মিডিয়া সেল এ তথ্য জানিয়েছে।

এনসিপি সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে এক শ আসনের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হতে পারে। এরপর ধাপে ধাপে মনোনীত প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হবে। এ বিষয়ে এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের প্রায় ১০০ আসনের প্রার্থী চূড়ান্ত। ১০ তারিখের মধ্যে আমরা এই আসনগুলোর প্রার্থিতা ঘোষণা করব।’

এনসিপির নেতারা জানান, ধাপে ধাপে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করবে এনসিপি। প্রথম ধাপে ১০০ আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হবে। এরপর জোটসঙ্গীদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে আসন বণ্টন করে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হবে। চলতি মাসেই সব আসনে প্রার্থীদের নাম প্রকাশ করতে চায় এনসিপি।

গত ৬ নভেম্বর মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু করে এনসিপি। ২০ নভেম্বর পর্যন্ত মনোনয়ন ফরম বিক্রি করে দলটি। ১ হাজার ৪৮৪টি মনোনয়ন ফরম বিক্রি হয়েছে বলে জানিয়েছেন নেতারা।

এনসিপির শীর্ষ নেতা আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ঢাকা-১১ আসন থেকে প্রার্থী হতে পারেন। সদস্যসচিব আখতার হোসেন রংপুর-৪, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ঢাকা-১৮ থেকে প্রার্থী হতে পারেন বলে কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে।

দলটির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের মধ্যে উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম পঞ্চগড়-১, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ কুমিল্লা-৪, সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ নোয়াখালী-৬, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন ভোলা-১, আরিফুল ইসলাম আদিব ঢাকা-১৪, সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা ঢাকা-৯, যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার নরসিংদী-২ আসন থেকে প্রার্থী হতে পারেন।

অন্তর্বর্তী সরকারের দুজন ছাত্র উপদেষ্টার একজন পদত্যাগ করে এনসিপিতে যোগ দিতে পারেন। তিনি ঢাকা-১২ অথবা ঢাকা-১০ আসন থেকে প্রার্থী হতে পারেন বলে গুঞ্জন রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: অভিযুক্ত গৃহকর্মীর আসল নাম-পরিচয় শনাক্ত

দেড় বছরে ১০ বার থমকে গেছে মেট্রোরেল চলাচল

সাবেক সেনা কর্মকর্তার কাছে দুঃখ প্রকাশ করলেন তারেক রহমান

ভারত যেন হুঁশে থাকে, এবার পাল্টা আঘাত হবে দ্রুত ও মারাত্মক—পাকিস্তানের সিডিএফ হয়েই আসিম মুনিরের গর্জন

জাতীয় সংসদ নির্বাচন ১২ ফেব্রুয়ারি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জরিপে নির্বাচনের ফলের আগাম বার্তা ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বুদ্ধিবৃত্তিক অপপ্রয়াস: ইসলামী আন্দোলন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জরিপে নির্বাচনের ফলের আগাম বার্তা ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বুদ্ধিবৃত্তিক অপপ্রয়াস: ইসলামী আন্দোলন

সীমিত মানুষের ওপর করা জরিপের ভিত্তিতে নির্বাচনের ফল সম্পর্কে আগাম বার্তা দেওয়া ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বুদ্ধিবৃত্তিক অপপ্রয়াস বলে মনে করছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। আজ মঙ্গলবার এক প্রেস বিবৃতিতে এমন প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন দলটির যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান।

বিবৃতিতে গাজী আতাউর রহমান বলেন, বাংলাদেশে এবারের নির্বাচনে ভোটারের সংখ্যা ১২ কোটি ৭৬ লাখ ৯৫ হাজার ১৮৩ জন। এখান থেকে মাত্র ১ হাজার ৩৪২ জনের মতামত নিয়ে করা জরিপের ভিত্তিতে আগামীর নির্বাচনে কে প্রধানমন্ত্রী হবেন, কে বেশি আসন পাবে, কোন দল জয়ী হলে দেশের ভালো হবে ইত্যাদি প্রশ্নে পূর্বাভাস দেওয়া ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বুদ্ধিবৃত্তিক অপপ্রয়াস।

কারণ উল্লেখ করে গাজী আতাউর বলেন, এত অল্পসংখ্যক নমুনা ব্যবহার করে বিপুলসংখ্যক ভোটারের চিন্তা সম্পর্কে আভাস পাওয়া যায় না। তারপরও দেশের শীর্ষ একটি পত্রিকা এই জরিপের সংবাদ গুরুত্বসহ উপস্থাপন করে আগামী নির্বাচনকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রভাবিত করার অপচেষ্টা করছে বলে মনে করা অযৌক্তিক না।

ইসলামী আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ইসলামপন্থীদের প্রতি মানুষের আস্থা বেড়েছে। চাঁদাবাজদের প্রতি মানুষের অনীহা প্রকট হয়েছে। কিন্তু এই জরিপ সেই পুরোনো বন্দোবস্তের পক্ষে জনমত আছে বলে উপস্থাপন করেছে। এই জরিপ জনমতকে ভিন্নপথে পরিচালিত করার একটি অপপ্রয়াস ছাড়া কিছু না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আগামী নির্বাচনে জনমতকে ভুলভাবে প্রভাবিত করার জন্য তথ্যের ভুল উপস্থাপন, অপতথ্য তৈরি ও উপস্থাপনের নিন্দা করে এবং সবাইকে দায়িত্বশীলতার সঙ্গে তথ্য তৈরি ও উপস্থাপনের আহ্বান জানায় বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

বিষয়:

নির্বাচন
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: অভিযুক্ত গৃহকর্মীর আসল নাম-পরিচয় শনাক্ত

দেড় বছরে ১০ বার থমকে গেছে মেট্রোরেল চলাচল

সাবেক সেনা কর্মকর্তার কাছে দুঃখ প্রকাশ করলেন তারেক রহমান

ভারত যেন হুঁশে থাকে, এবার পাল্টা আঘাত হবে দ্রুত ও মারাত্মক—পাকিস্তানের সিডিএফ হয়েই আসিম মুনিরের গর্জন

জাতীয় সংসদ নির্বাচন ১২ ফেব্রুয়ারি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত