Ajker Patrika

মব বন্ধ করতে না পারলে সুষ্ঠু নির্বাচন কীভাবে হবে: মান্না

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত সেমিনারে বক্তা ও অতিথিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত সেমিনারে বক্তা ও অতিথিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

দেশে যেভাবে মব চলছে, তা বন্ধ করতে না পারলে কীভাবে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন হবে—এমন প্রশ্ন তুলেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। আজ শনিবার (৫ জুলাই) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে নাগরিক ঐক্য আয়োজিত ‘সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫—কতটুকু সুরক্ষা দেয়’ শীর্ষক সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ বিষয়ে কথা বলেন।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, ‘তিন টার্মে দেশে নির্বাচনের নামে যা হয়েছে, তাতে মানুষের সামনে মুখ দেখানোর উপায় নেই। পৃথিবীর কাছে আমাদের সম্মান নষ্ট হয়েছে। যদি এই সরকার ভালো নির্বাচন করে যেতে পারে, দেশের সম্মান বাঁচবে। তবে পাটগ্রামে, ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে, বরিশালে যেভাবে মব চলছে, সেটা বন্ধ করতে না পারলে সুষ্ঠু নির্বাচন কীভাবে হবে?

মান্না বলেন, ‘সংস্কার নিয়ে এত কথা হচ্ছে। আমি যদি জিজ্ঞেস করি—‘‘বলুন তো ভাই, কোন সংস্কারটা এই সরকার করেছে?’’—সরকার কিন্তু বলতে পারবে না। বলবে আলোচনা শেষ হয়নি, ঐকমত্য গড়ে ওঠেনি—তাহলে এক বছরে কিছুই করেননি।’

তিনি বলেন, ‘ঐকমত্যের বৈঠকগুলোতে আমি আগে নিয়মিত যেতাম, এখন মনে হয় গিয়ে লাভ নেই। অনেক বিষয়েই এমন মতভেদ তৈরি হয়েছে যে আমি জানি না, কীভাবে নিষ্পত্তি হবে। ঐকমত্য না হলে তো প্রফেসর ইউনূস বলেছেন, কিছু চাপিয়ে দেবেন না। তাহলে সংস্কার কীভাবে হবে? এক বছরে কিছুই পারেননি। বড় দল বা মাঝারি দল আপত্তি করলে, সেখানেও যেতে পারেন না। এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বড় সংস্কার একটা ভালো নির্বাচন।’

তিনি আরও বলেন, ‘সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ নিয়ে আমরা আপত্তি করছি। আজকের এই সেমিনারে যাঁরা বক্তৃতা করেছেন, তাঁরা বাংলাদেশের প্রায় সব রাজনৈতিক কণ্ঠস্বরের প্রতিনিধিত্ব করেন, তাঁরা সবাই এটি নিয়ে আপত্তি করছেন। এখনো সময় আছে যে অধ্যাদেশ করেছেন, এটি সংশোধন করুন। আর না করলে না করে যেতেই পারেন, তবে পরে এটি ঠিক করা হবে।’

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি বলেন, ‘পুলিশদের কথা বলি—ওরা যদি নাগরিক ঐক্যের কারও অন্যায় দেখে, সাথে সাথে ধরে ফেলবে। কিন্তু বিএনপি করলে ভাবে—ধরি, না ধরি? ছয় মাস পরে চাকরি থাকবে তো? তখন কে ক্ষমতায় থাকবে? আমি এটা প্রচারের জন্য বলি না। এখন বিএনপির সামনে তেমন প্রতিদ্বন্দ্বী দেখছি না। দাঁড়াবে অনেকে, আমিও দাঁড়াতে পারি। কিন্তু বলছি না আমি তাদের পক্ষে বা বিপক্ষে দাঁড়াব। কেউ কেউ বলছেন, তাঁরা দাঁড়াবেন। কিন্তু প্রশাসন যদি মনে করে—তাঁরাই ক্ষমতায় যাবেন, তাহলে তখন থেকেই তাঁদের স্যালুট দিতে শুরু করবে।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘নতুন সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, অতীতে যারা কিছু অপরাধে শাস্তি পেয়েছিলেন তাঁরা মুক্তি পাবেন, শাস্তি বাতিল হবে। কিন্তু একই সঙ্গে আইনেই আবার এমন ধারা রাখা হয়েছে, যার মাধ্যমে ভবিষ্যতে আবার ওই একই অভিযোগে কাউকে গ্রেপ্তার করা যাবে, শাস্তি দেওয়া যাবে। এর চেয়ে বড় অযৌক্তিকতা আর কী হতে পারে?’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দেশে অনেকগুলো শ্রম আইন ছিল। ২০০৬ সালে সেসব আইনের সমন্বয়ে একটি একক আইন করা হয়। আপনি যদি এই আইনের পাঠ করেন, তাহলে মনে হবে এটি মোটামুটি ভালোই। কিন্তু বাস্তবায়নে গেলে আপনি খুব কষ্ট পাবেন। শ্রম আইনে বলা আছে, প্রতিটি শ্রমিককে নিয়োগপত্র দিতে হবে। কিন্তু বাংলাদেশে যত শ্রমজীবী মানুষ আছে, তাদের মধ্যে মাত্র ২০ থেকে ২৫ শতাংশ নিয়োগপত্র পায়। বাকি শ্রমিকদের কোনো সুনির্দিষ্ট চাকরির শর্ত নেই, নেই ওল্ড এজ বেনিফিট, নেই ছুটি বা অন্যান্য সুবিধা—যা শ্রম আইনে সুস্পষ্টভাবে লেখা আছে। কৃষিশ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরির বিষয় উল্লেখ্য থাকলেও, সেটা কেউ দেখভাল করে না। মজুরি কম দেওয়া হলে, কম দেওয়া লোকের বিরুদ্ধে অভিযোগ কিংবা শাস্তি দেওয়ার কোনো মেকানিজম নেই।’

সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, ভয়েস ফর রিফর্মের সহ-আহ্বায়ক ফাহিম মাশরুর প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঢাকা-১৭ আসনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেন তারেক রহমান

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ০৭
তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত
তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকার আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি ঢাকা-১৭ (গুলশান-বনানী-ক্যান্টনমেন্ট) সংসদীয় আসন থেকে নির্বাচন করবেন। আজ রোববার সকালে তাঁর পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে।

বেলা ১১টায় সেগুনবাগিচায় ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার ও রিটার্নিং কর্মকর্তা শরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরীর কার্যালয় থেকে তারেক রহমানের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়। বিএনপির চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এ বি এম আব্দুস সাত্তার দলের শীর্ষ নেতার পক্ষে এই মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন।

তারেক রহমানের নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বিএনপির মিডিয়া সেল। তাদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টের মাধ্যমে জানানো হয়, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ঢাকা-১৭ আসন থেকে লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এরই মধ্যে তাঁর জন্য মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মায়ের জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন তারেক রহমান

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ১৭
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার চরম অবনতি হয়েছে। তাঁর মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা জানিয়েছেন, তিনি বর্তমানে ‘অত্যন্ত সংকটময় অবস্থা’ পার করছেন। আজ রোববার সকাল ৬টার দিকে বিএনপির মিডিয়া সেল থেকে জানানো হয়েছে, খালেদা জিয়া বর্তমানে নিবিড় পর্যবেক্ষণে (আইসিইউ) রয়েছেন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তাঁর মায়ের জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।

গতকাল শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে এক জরুরি প্রেস ব্রিফিংয়ে খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক পরিস্থিতি তুলে ধরেন মেডিকেল টিমের সদস্য ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, ‘সত্যিকার অর্থে ২৩ নভেম্বর বেগম জিয়া হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ভর্তির পর থেকেই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। বর্তমানে তিনি সিসিইউ থেকে আইসিইউতে স্থানান্তরিত হয়েছেন। তাঁর অবস্থা অত্যন্ত জটিল। এই সংকট উতরিয়ে যেতে পারলে হয়তো আমরা ভালো কিছু শুনতে পাব।’

এর আগে রাত সাড়ে ৯টার দিকে সস্ত্রীক হাসপাতালে যান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ডা. জুবাইদা রহমানসহ তাঁরা প্রায় দুই ঘণ্টা হাসপাতালে অবস্থান করেন এবং চিকিৎসকদের কাছ থেকে বিস্তারিত খোঁজখবর নেন। গত বৃহস্পতিবার লন্ডন থেকে ঢাকা ফেরার পর এটি ছিল তাঁর দ্বিতীয়বার হাসপাতাল পরিদর্শন।

অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ড খালেদা জিয়ার চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ডা. জাহিদ হোসেন জানান, চিকিৎসকেরা তাঁদের সর্বোচ্চ মেধা দিয়ে চেষ্টা করছেন এবং ডা. জুবাইদা রহমান সার্বক্ষণিক দেশি-বিদেশি চিকিৎসকদের সঙ্গে সমন্বয় করছেন।

সম্প্রতি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছিলেন, খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ও ভিসাসহ সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা আছে। তবে বর্তমানে তিনি ‘ফ্লাই’ করার মতো শারীরিক অবস্থায় নেই। চিকিৎসকেরা সবুজসংকেত দিলেই তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নেওয়া হতে পারে।

উল্লেখ্য, ৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস ও চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। গত ২৯ নভেম্বর জানানো হয়েছিল, তিনি নতুন করে নিউমোনিয়া এবং ফুসফুস ও হৃদ্‌যন্ত্রের গুরুতর সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছেন। এর আগে ২০২৪ সালের জুনে তাঁর হৃৎপিণ্ডে পেসমেকার বসানো হয়েছিল এবং বিদেশ থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এনে লিভারের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছিল।

২০১৮ সালে কারারুদ্ধ হওয়ার পর থেকে দীর্ঘ সময় অসুস্থ অবস্থায় থাকা খালেদা জিয়াকে গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর ৬ আগস্ট রাষ্ট্রপতির নির্বাহী আদেশে সব দণ্ড থেকে পুরোপুরি মুক্তি দেওয়া হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাদি হত্যার বিচার দাবিতে ৮ বিভাগীয় শহরে একযোগে অবরোধ ইনকিলাব মঞ্চের

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৩৪
শাহবাগে শনিবার দ্বিতীয় দিনের মতো ইনকিলাব মঞ্চের অবস্থান। ছবি: আজকের পত্রিকা
শাহবাগে শনিবার দ্বিতীয় দিনের মতো ইনকিলাব মঞ্চের অবস্থান। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদি হত্যার বিচারের দাবিতে দেশের আট বিভাগীয় শহরে একযোগে অবরোধ কর্মসূচি পালন করবে ইনকিলাব মঞ্চ। আজ বেলা ২টা থেকে এই অবরোধ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ।

ইনকিলাব মঞ্চ জানিয়েছে, আজ রোববার ডিএমপি কমিশনারের সংবাদ সম্মেলন পর্যালোচনার পর বেলা ২টা থেকে ঢাকাসহ আট বিভাগে অবরোধ কর্মসূচি চলবে।

মঞ্চের সদস্যসচিব আবদুল্লাহ আল জাবের গতকাল শনিবার রাতে বলেন, ‘ওসমান হাদির খুনিদের জনতার সামনে না আনা পর্যন্ত, আমাদের কর্মসূচি চলবে। আমরা আন্দোলন ছোট করব না, আন্দোলন আরও বড় করব।’

শনিবার রাতে শাহবাগে বিক্ষোভকারীদের সামনে উপস্থিত হয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে হাদি হত্যার বিচার সম্পন্ন করার আশ্বাস দেন তথ্য ও সম্প্রচার এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, ‘শহীদ হাদির হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের সবাইকে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং তদন্তের চূড়ান্ত ধাপ প্রায় শেষের পথে। সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন করে নির্ভুল ও শক্ত প্রমাণভিত্তিক চার্জশিট দাখিল করা হবে ৭ জানুয়ারির পর।’

উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা আরও বলেন, ‘আমি হাদিকে আমার ভাই মনে করতাম, এখনো করি। দেশের তাঁকে আরও অনেক দিন প্রয়োজন ছিল। যেই লোকের মৃত্যুতে ১২ থেকে ১৫ লাখ মানুষ জানাজা পড়ে, সেই মানুষের মৃত্যুর বিচার আসলে একটা জাতীয় কর্তব্য।’

উপদেষ্টা বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার হয়তো আপনাদের মতো এখানে বসে নেই। কিন্তু সরকার আমাদের শহীদ হাদিকে যারা খুন করেছে, সে সমস্ত চিহ্নিত খুনির পেছনে যারা ছিল, সকলকে চিহ্নিত করে বিচারের মুখোমুখি করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে।’

শিশু আছিয়া হত্যার বিচারের প্রসঙ্গ তুলে সৈয়দা রিজওয়ানা বলেন, ‘আছিয়ার ঘটনায় ছয় কার্যদিবসের মধ্যে বিচারকার্য সম্পন্ন করা গিয়েছিল। কাজেই চার্জশিটটা যাতে আমরা নির্ভুলভাবে দিতে পারি, নিখুঁতভাবে দিতে পারি। সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ করে যাতে কোথাও কোনো ফাঁকফোকর না থাকে। সেটা সম্পন্ন হয়ে যাওয়ার পর আমাদের ৭ জানুয়ারির পরে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বিচার আমরা অবশ্যই করে যাব।’

উপদেষ্টা রিজওয়ানা আরও বলেন, ‘অপরাধী যদি পালিয়েও থাকে, তারপরেও আমাদের সর্বান্তঃকরণ চেষ্টা আছে, তাদেরকে যেন আমরা অবশ্যই দেশে ফিরিয়ে আনতে পারি।’

অন্তর্বর্তী সরকারের সময়েই হাদি হত্যার বিচারের আশ্বাস দিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা অবশ্যই এই বাংলাদেশের মাটিতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার থাকাকালীন আমাদের হাদিকে যারা মেরে ফেলল, তাদের বিচার সম্পন্ন করে যাব।’

এ সময় ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, ‘শরিফ ওসমান হাদি হত্যার তদন্ত চলছে। সরকার পুলিশ, বিজিবি, র‍্যাবসহ সব গোয়েন্দা বাহিনীকে এই ঘটনার পেছনে কারা আছে, তা উদ্‌ঘাটনের জন্য নিয়োগ করেছে। ইতিমধ্যে এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্‌ঘাটন এবং তদন্তের যথেষ্ট অগ্রগতি আছে। তদন্তের স্বার্থে আমি সব বিষয় এখানে বলাটা ঠিক হবে না। তাহলে প্রতিপক্ষ আমাদের রহস্যগুলো জেনে নেবে। তাই যতটুকু সম্ভব তদন্তের যে অংশটুকু বলা যায়, আমি সেগুলো আপনাদের কাছে এখন বলছি। মামলার তদন্ত চলাকালে এযাবৎ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’

ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘আমরা আশা করছি আগামী ১০ দিনের মধ্যে, অর্থাৎ ৭ জানুয়ারির মধ্যে এই মামলার চার্জশিট দেব। এই মামলা-সংক্রান্ত আমার কাছে যে তথ্য আছে, আপনাদের দিলাম। তদন্তের যতটুকু প্রকাশ করা যায়, ততটুকুই বললাম। আগামীকাল (রোববার) আরও বিস্তারিতভাবে আপনাদের আমার মিডিয়া সেন্টার থেকে বলবেন। আপনারা নিশ্চয় আমার কথা বুঝতে পেরেছেন, সবাই ধৈর্য ধারণ করুন। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য, আরও যারা পেছনে আছে, সবার নাম এবং ঠিকানা উন্মোচন করে দেব।’

তথ্য উপদেষ্টা ও ডিএমপি কমিশনারের আশ্বাসের পর শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে শাহবাগ ছেড়ে যান বিক্ষোভকারীরা। আজ রোববার বেলা ২টা থেকে তাঁরা আবারও সেখানে অবস্থান নেবেন বলে জানিয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জামায়াতে ইসলামী নির্ভরযোগ্য মিত্র না: সামান্তা শারমিন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৩৯
সামান্তা শারমিন। ছবি: সংগৃহীত
সামান্তা শারমিন। ছবি: সংগৃহীত

জামায়াতে ইসলামী নির্ভরযোগ্য মিত্র নয় বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন। আজ রোববার সকালে তাঁর হোয়াটসঅ্যাপ মিডিয়া গ্রুপে এই মন্তব্য করেন তিনি।

জামায়াতের সঙ্গে জোট প্রসঙ্গে সামান্তা শারমিন বলেন, ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নির্ভরযোগ্য মিত্র না। তার রাজনৈতিক অবস্থান বা দর্শনসহ কোনো সহযোগিতা বা সমঝোতায় যাওয়া এনসিপিকে কঠিন মূল্য চুকাতে হবে বলে আমি মনে করি।’

সামান্তা আরও বলেন, ‘সম্প্রতি রাজনৈতিক জোট প্রসঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর দায়িত্বশীল নেতারা মন্তব্য করেছিলেন, জামায়াতের জুলাইয়ের স্পিরিট, বাংলাদেশের নিয়ে পরিকল্পনা নিয়ে একমত হলে জামায়াতের সাথে জোট করতে আসতে পারে যেকোনো দল।’

এনসিপি ও জামায়াতের মূলনীতি আলাদা বলে জানান সামান্তা। তিনি বলেন, ‘জাতীয় নাগরিক পার্টির এত দিনের অবস্থান অনুযায়ী তার মূলনীতি, রাষ্ট্রকল্প জামায়াত থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। বিচার, সংস্কার ও গণপরিষদ নির্বাচন তথা সেকেন্ড রিপাবলিককে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা দল এনসিপি। ফলে এই তিনটি বিষয়ে অভিন্ন অবস্থান যেকোনো রাজনৈতিক মিত্রতার পূর্বশর্ত।’

নিজের অবস্থান তুলে ধরে সামান্তা বলেন, ‘আমার বর্তমান অবস্থান পার্টির গত দেড় বছরের অবস্থানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। নিম্নকক্ষে পিআর আওয়াজ তুলে সংস্কারকে ব্যাহত করায় লিপ্ত হয়েছিল জামায়াত। ফলত এনসিপির আহ্বায়ক বলেছিলেন, “যারা সংস্কারের পক্ষে নয়, তাদের সাথে জোটও সম্ভব নয়।” তাই জুলাই পদযাত্রার পর থেকে “৩০০” আসনে একক প্রার্থী দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয় আহ্বায়কসহ একাধিক বরাতে এবং স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করবে এনসিপি— এই মর্মে সারা দেশ থেকে প্রার্থীদের আহ্বান করা হয়।’

জামায়াতের সঙ্গে জোটের বিরোধিতা মানেই বিএনপির পক্ষ নেওয়া নয়— জানিয়ে এনসিপির এই নেত্রী বলেন, ‘জামায়াতের সাথে জোট করার সমস্যাসমূহ তুলে ধরা মানেই বিএনপির পক্ষে অবস্থান বোঝায় না। বরং বিভিন্ন বিষয়ে এত দিন ধরে প্রকাশিত ও নানান মহলে প্রশংসিত এনসিপির অবস্থান আমি সঠিক মনে করি ও নিজেকে এই আদর্শের সৈনিক মনে করি। বিএনপি-জামায়াতের যেকোনোটির সাথে জোট এনসিপির সাংগঠনিক ও রাজনৈতিক পলিসি থেকে সরে গিয়ে তৈরি হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত