Ajker Patrika

গণ-অভ্যুত্থানের লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছে বিএনপি ও গণতন্ত্র মঞ্চ: মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
গণ-অভ্যুত্থানের লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছে বিএনপি ও গণতন্ত্র মঞ্চ: মির্জা ফখরুল

যুগপৎ আন্দোলন গড়ে তুলে গণ-অভ্যুত্থানের লক্ষ্যে এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছে বিএনপি ও গণতন্ত্র মঞ্চ। একই সঙ্গে গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বর্তমান অনির্বাচিত-অবৈধ সরকারের পতন, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন ও জাতীয় সরকার গঠন করে রাষ্ট্রের মেরামত নিশ্চিত করতে একমত হয়েছে বিএনপি ও সাত দলের জোট গণতন্ত্র মঞ্চ।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপি ও সাত দলের জোট গণতন্ত্র মঞ্চের সংলাপে এই বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করেছে দলগুলো।

সংলাপ শেষে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এই অনির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে একটা জাতীয় আন্দোলন এবং ঐক্য সৃষ্টি করে একটা গণ-অভ্যুত্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে আমরা একযোগে যুগপৎ আন্দোলন গড়ে তুলব। এ ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত হয়েছি। ইতিমধ্যে এই কাজ শুরু হয়েছে।’ 

বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, ‘রাষ্ট্রের যে পরিবর্তনগুলোর কথা আমরা বলেছি, সেগুলো নিয়ে নিশ্চয়ই আমরা আরও বিস্তারিত আলোচনা করে; আশা করি সেগুলো নিয়েও একমত হতে পারব এবং একই লক্ষ্যে আমরা এগিয়ে যেতে পারব। পরবর্তী সময়ে আরও কয়েকটি আলোচনা হবে এবং আমাদের আলোচনা একটি চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছাবে এ ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত হয়েছি।’ 

আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই সরকারের পতনের লক্ষ্যে বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে প্রচণ্ড উদ্যম সৃষ্টি হয়েছে জানিয়ে ফখরুল বলেন, ‘সেই লক্ষ্যেই আমরা এগিয়ে যাব। আমরা বিশ্বাস করি, এই সরকারের পতনের লক্ষ্যে একটা বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি হবে। যুগপৎ আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে সরকার পতনের আন্দোলনকে আরও বেগবান করতে পারব এবং জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে পরাজিত করতে পারব।’ 

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার কাজ দ্রুত গতিতে চলছে জানিয়ে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে ২২টি দলের সঙ্গে কথা বলেছি। গণতন্ত্র মঞ্চের প্রত্যেকটি দলের সঙ্গে আমরা আলাদাভাবে কথা বলেছি। আজ আমরা দ্বিতীয় ধাপে গণতন্ত্র মঞ্চের জাতীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা করেছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘স্বাধীনতার যে লক্ষ্য ছিল, আশা-আকাঙ্ক্ষা ছিল সেটাকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়ে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একটা ফ্যাসিবাদী, কর্তৃত্ববাদী, একনায়কতন্ত্র সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছে। বাংলাদেশের জনগণ যে গণতন্ত্র, সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন নিয়ে একসময় মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে যে রাষ্ট্র গড়ে তুলেছিল সেই রাষ্ট্রের মালিকানা তাদের হাতে নেই।’ 

বর্তমান কর্তৃত্ববাদী সরকার বাংলাদেশ রাষ্ট্র কাঠামোকে পুরোপুরিভাবে ভেঙে চুরমার করে ফেলেছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই রাষ্ট্রকে পুরোপুরিভাবে এখন মেরামত ও পুনর্গঠন করা প্রয়োজন। দেশের মালিকানা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে একটি অবাধ সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য নিরপেক্ষ অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে জয়লাভের পর বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকারকে হটানোর আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী সকল দলগুলোকে নিয়ে আমরা প্রস্তাব করেছি যে, একটা জাতীয় সরকার গঠন করে তার মাধ্যমে সে রাষ্ট্রের যে পরিবর্তন প্রয়োজন তার সূচনা করা যেতে পারে।’

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সভাপতি আ স ম আব্দুর রব বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের ৫০ বছর পরও বাংলাদেশের জনগণ মুক্তিও পায়নি, স্বাধীনতাও পায়নি। আজকে একটা ঐতিহাসিক দিন। সারা পৃথিবীর কাছে বার্তা যাবে যে, বাংলাদেশের জনগণ রাতের অন্ধকারে যারা ভোট চুরি করে, অবৈধভাবে ক্ষমতায় আছে তাদের সরানোর জন্য বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই স্বৈরাচারের শুধু পতন ঘটাবে না, রাষ্ট্র মেরামত করবে, সংস্কার করবে।’ 

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমরা গণতন্ত্র মঞ্চ যখন গঠন করেছি তখন আমাদের দুটি লক্ষ্য ছিল। এই বর্বর ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে জয় লাভ করা এবং একই সঙ্গে এই রাষ্ট্রটাকে সত্যি সত্যি একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করা। এই দুটি লক্ষ্য নিয়েই আমরা আজ বিএনপির সঙ্গে বসেছিলাম। আমরা সবাই একমত হয়েছি, এই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমরা যুগপৎ আন্দোলন শুরু করব।’ 

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘আমরা তিনটা বিষয় খুব পরিষ্কারভাবে বলছি, এই সরকারের পদত্যাগ চাই, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর ও তার অধীনে নির্বাচন এবং বাংলাদেশের শাসনব্যবস্থার বদল চাই।’ 

সংলাপে বিএনপির পক্ষে আরও উপস্থিত ছিলেন—দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। গণতন্ত্র মঞ্চের পক্ষে আরও উপস্থিত ছিলেন—জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির কার্যকরী সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের আবুল হাসান রুবেল, গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হাসান, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সভাপতি শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সাংগঠনিক সমন্বয়ক ইমরান ইমন।  

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি

আজকের রাশিফল: চায়ের বিল না দেওয়া বন্ধুদের সাহায্য করুন, সন্ধ্যার দিকে ভালো খবর

ব্রিটেনে নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে কোটি মুসলিম, বেশির ভাগই বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যথাযোগ্য মর্যাদায় শহীদ বুদ্ধিজীবী ও মহান বিজয় দিবস পালনের আহ্বান জামায়াত আমিরের

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ডা. শফিকুর রহমান। ফাইল ছবি
ডা. শফিকুর রহমান। ফাইল ছবি

যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ পরিবেশে ১৪ ডিসেম্বর ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস’ এবং ১৬ ডিসেম্বর ‘মহান বিজয় দিবস’ পালন করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। আজ শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ আহ্বান করেন তিনি।

বিবৃতিতে জামায়াত আমির বলেন, ‘“১৪ ডিসেম্বর ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস” এবং ১৬ ডিসেম্বর “মহান বিজয় দিবস”। আমাদের জাতীয় জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ এই দুটি দিন। জাতির ইতিহাসে দিবস দুটি আত্মত্যাগ, সংগ্রাম ও গৌরবের চিরন্তন স্মারক। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য যাঁরা নিজেদের অমূল্য জীবন উৎসর্গ করেছেন—সেই সকল শহীদ বুদ্ধিজীবী এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান আমরা গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করছি। মহান আল্লাহ তাআলার দরবারে তাঁদের সকলের রুহের মাগফিরাত কামনা করছি।’

শফিকুর রহমান বলেন, ‘১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে যাঁরা দেশমাতৃকার মুক্তির সংগ্রামে আত্মনিয়োগ করেছিলেন, সেই সকল বীর মুক্তিযোদ্ধার প্রতি আমরা গভীর সম্মান জানাচ্ছি। একই সঙ্গে জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ হওয়া সকলের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। পাশাপাশি সকল শহীদের শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজনের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।’

জামায়াত আমির বলেন, দেশবাসী আজ এমন একসময় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও মহান বিজয় দিবস পালন করতে যাচ্ছে, যখন ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে দেশ ফ্যাসিবাদী সরকারের কবল থেকে মুক্ত হয়েছে। দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছরের অপশাসন, জুলুম-নির্যাতন ও গুম-খুনের নিষ্ঠুর অভিশাপ থেকে দেশের মানুষ মুক্তি পেয়েছে এবং শান্তি, স্বস্তি ও স্থিতিশীলতার প্রত্যাশা করছে। একই সঙ্গে দেশ ভঙ্গুর অর্থনৈতিক অবস্থা থেকে উত্তরণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

বিপরীত পক্ষে ফ্যাসিবাদের দেশি-বিদেশি দোসররা এখনো থেমে নেই মন্তব্য করে শফিকুর রহমান বলেন, ‘তারা নানামুখী ষড়যন্ত্র ও কূটকৌশলের মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তারই জ্বলন্ত প্রমাণ ১২ ডিসেম্বর শরিফ ওসমান হাদির ওপর ন্যক্কারজনক হামলা। এই প্রেক্ষাপটে দেশবিরোধী সব ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করার জন্য আমরা দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।’

এই দুটি দিবস উপলক্ষে এরই মধ্যে তিন দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে জামায়াত। তারা জানায়, আগামী ১৪ ডিসেম্বর, রোববার রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন হলে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। ১৫ ডিসেম্বর, সোমবার রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে (আইডিইবি) মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। ১৬ ডিসেম্বর, মঙ্গলবার সকাল ৭টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কেন্দ্রীয় যুব ও ক্রীড়া বিভাগের উদ্যোগে যুব ম্যারাথন অনুষ্ঠিত হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি

আজকের রাশিফল: চায়ের বিল না দেওয়া বন্ধুদের সাহায্য করুন, সন্ধ্যার দিকে ভালো খবর

ব্রিটেনে নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে কোটি মুসলিম, বেশির ভাগই বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নির্বাচন অত সহজ হবে না–আমার কথাই সত্যি হচ্ছে: তারেক রহমান

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজধানীর খামারবাড়ির বাংলাদেশ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে শনিবার আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: ফোকাস বাংলা
রাজধানীর খামারবাড়ির বাংলাদেশ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে শনিবার আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: ফোকাস বাংলা

আসন্ন এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে নিজের করা ভবিষ্যদ্বাণী ‘সত্য হচ্ছে’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, ‘আমি আগে বলেছিলাম–নির্বাচন অত সহজ হবে না, ষড়যন্ত্র থেমে নেই। গত কয়েকদিনের ঘটনা, গতকালকের ঘটনা, চট্টগ্রামে আমাদের প্রার্থীর ওপরে গুলিবর্ষণের ঘটনা–এই সবকিছু নিয়েই প্রমাণিত হচ্ছে, আমি যা বলেছিলাম তা সত্যি হচ্ছে আস্তে আস্তে।’

রাজধানীর খামারবাড়ির বাংলাদেশ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আজ শনিবার সন্ধ্যায় বিএনপি আয়োজিত ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে মতভেদ ভুলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তারেক রহমান।

তিনি বলেন, ‘আমরা যদি নিজেদের মধ্যে মতপার্থক্য কমিয়ে নিয়ে না আসি, আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ না হই, এই দেশ ধ্বংস হয়ে যাবে। প্রত্যেকবার এই দেশ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে গিয়েছে। প্রত্যেকবার আপনারা–কখনো শহীদ জিয়ার নেতৃত্বে, কখনো দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে–আস্তে আস্তে সেই খাদের কিনারা থেকে দেশকে আবার বের করে নিয়ে এসেছেন।’

ষড়যন্ত্রের বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিভিন্ন সূত্রের খবর বলছে, এই ষড়যন্ত্রগুলো আরও খারাপও হতে পারে। আমাদের ভয় পেলে চলবে না। মানুষকে সাহস দিতে হবে। ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমরা যত ঐক্যবদ্ধ হব, তত সামনে এগিয়ে যাব। যেকোনো মূল্যে নির্বাচন হবে। এই পরিস্থিতি যত আমরা তৈরি করব, ষড়যন্ত্রকারীরা তত পিছু হটতে বাধ্য হবে।’

চট্টগ্রামে ও ঢাকায় দুই প্রার্থীর ওপর গুলিবর্ষনের ঘটনা সম্পর্কে তারেক বলেন, চট্টগ্রামে একটা ঘটনা ঘটেছে। গতকাল (শুক্রবার) একটা ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনা দিয়ে কেউ কোনো ফায়দা লোটার অবশ্যই প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।

খাল খনন, স্বাস্থ্য কার্ড, কৃষক কার্ড, ফ্যামিলি কার্ড, শিক্ষা ব্যবস্থা, বেকার সমস্যা, তথ্যপ্রযুক্তি, বায়ু ও পানি দূষণ রোধ প্রভৃতি বিষয়ে বিএনপি প্রণীত পরিকল্পনা এবং এসবের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া বিস্তারিত তুলে ধরেন তারেক রহমান।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমি কী পেলাম–এটা বাদ দিতে হবে। সময় এসেছে, আমি দেশ এবং জাতির জন্য কতটুকু করতে পারলাম। আজকে আপনি যদি দেশ এবং জাতির জন্য কিছু করেন, তাহলে আগামী দিনে আপনার সন্তান, আপনার নাতিপুতিরা ভালো থাকবে। আপনার ভবিষ্যৎ বংশধর ভালো থাকবে। আসুন, আমাদের লক্ষ্য হোক দেশে শান্তি, শৃঙ্খলা ও আইনের শাসনকে প্রতিষ্ঠিত করা।’

এর জন্য যুদ্ধে নামার আহ্বান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘এখন আর ঘরে বসে থাকার সময় নেই। দয়া করে আসুন, এই যুদ্ধে আমাদের জিততে হবে। এই যুদ্ধে জেতার সবচেয়ে বড় সহযোগী কে? বাংলাদেশের জনগণ। বাংলাদেশের জনগণকে সাথে নিয়ে এই যুদ্ধে আমাদের জিততে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।’

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি

আজকের রাশিফল: চায়ের বিল না দেওয়া বন্ধুদের সাহায্য করুন, সন্ধ্যার দিকে ভালো খবর

ব্রিটেনে নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে কোটি মুসলিম, বেশির ভাগই বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাদির ওপর হামলায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চায় জামায়াত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
হাদির ওপর হামলায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চায় জামায়াত

প্রধান উপদেষ্টার কাছে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। আজ শনিবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে এমন দাবি জানানো হয়। জামায়াতের প্রচার বিভাগ থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এটি বলা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে জামায়াত জানায়, আলোচনায় গতকাল ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর বিজয়নগরে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও অন্যতম জুলাই যোদ্ধা শরিফ ওসমান হাদি মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনার প্রসঙ্গ বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে উত্থাপিত হয়। এ ঘটনায় জড়িতদের অনতিবিলম্বে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়।

এ ছাড়া বৈঠকে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বিশেষ করে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নির্বিঘ্নভাবে আয়োজনের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন এবং নাগরিকদের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিষয়ে মতবিনিময় করা হয় বলেও জানিয়েছে জামায়াতের প্রচার বিভাগ।

বৈঠকে শরিফ ওসমান হাদির ওপর সংঘটিত হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে জামায়াতের পক্ষ থেকে বলা হয়, এ ঘটনায় গোটা জাতি স্তম্ভিত, বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ। এই হামলা কেবল একজন ব্যক্তির ওপর নয়; এটি গোটা জাতি ও গণতন্ত্রের ওপর সরাসরি আঘাত।

জামায়াতের পক্ষে বৈঠকে অংশ নেন দলের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার এবং সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি

আজকের রাশিফল: চায়ের বিল না দেওয়া বন্ধুদের সাহায্য করুন, সন্ধ্যার দিকে ভালো খবর

ব্রিটেনে নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে কোটি মুসলিম, বেশির ভাগই বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বক্তব্যে ভুয়া ছবির উল্লেখ করায় রিজভীকে ক্ষমা চাইতে বললেন ডাকসু ভিপি সাদিক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯: ০৮
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েম। ছবি: সংগৃহীত
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েম। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে প্রকাশ‍্যে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েম। তিনি বলেছেন, ভুয়া ছবিকে সত্য ধরে ইনকিলাব মঞ্চের মুখমাত্র হাদির হত্যাকারীর সঙ্গে তাঁকে জড়িয়ে রিভজী অপতথ্য ছড়িয়েছেন। সেজন্য রুহুল কবির রিজভীকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।

ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েমের ফেসবুক পোস্ট। ছবি: স্ক্রিনশট।
ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েমের ফেসবুক পোস্ট। ছবি: স্ক্রিনশট।

আজ শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে এ আহ্বান জানান তিনি।

ফেসবুকে সাদিক কায়েম লেখেন, ‘আওয়ামী প্রোপাগাণ্ডা সেল কর্তৃক প্রচারিত এআই জেনারেটেড ছবিকে সত্য ধরে নিয়ে বিএনপির সিনিয়র নেতা রুহুল কবির রিজভী শরিফ ওসমান হাদির হত্যাচেষ্টাকারীর সাথে আমাকে জড়িয়ে যে অপতথ্য ছড়িয়েছেন, তা বিএনপির মতো সংগঠনের সিনিয়র নেতার কাছ থেকে কোনোভাবে প্রত্যাশিত দায়িত্বশীল আচরণ নয়।’

ভিপি সাদিক কায়েম লেখেন, ‘যারা আগামীর বাংলাদেশ গড়ার আশ্বাস নিয়ে জনতার কাছে যাচ্ছেন, তারা যখন যেকোনো সংকটে সত্য জানার চেষ্টা না করে আওয়ামী নির্ভর অপতথ্যকে ফ্যাক্ট হিসেবে গ্রহণ করেন, তখন আগামীর দেশ বিনির্মাণে তাদের সক্ষমতা নিয়ে জনমনে সংশয় তৈরি হয়।’

ফেসবুকে তিনি আরও বলেন, ‘আমাকে নিয়ে আজকে বিএনপির সমাবেশে জনাব রুহুল কবির রিজভী প্রদত্ত বক্তব্যে ভুয়া ছবি নির্ভর যে মিথ্যা অভিযোগ (আমার সাথে শুটার একই টেবিলে চা খাচ্ছেন দাবিতে) তুলেছেন, তা নিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে দল হিসেবে বিএনপি এবং ব্যক্তি রিজভী নিজেকে অপতথ্য ছড়ানোর অপরাধ থেকে দায়মুক্ত করার আহ্বান জানাচ্ছি।’

এর আগে, আজ বিএনপির সমাবেশে রুহুল কবির রিজভীর বলেছেন, ‘ওসমান হাদির ওপর হামলায় শনাক্ত ব্যক্তি ছাত্রলীগের নেতা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিপি সাদিক কায়েম এর সঙ্গে একই টেবিলে চা খাচ্ছেন, এর বিচার কে করবে?’

উল্লেখ্য, গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরে ওসমান হাদিকে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। পরে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে সন্ধ্যার পর তাঁকে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি

আজকের রাশিফল: চায়ের বিল না দেওয়া বন্ধুদের সাহায্য করুন, সন্ধ্যার দিকে ভালো খবর

ব্রিটেনে নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে কোটি মুসলিম, বেশির ভাগই বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত