Ajker Patrika

নেতৃত্ব নিয়ে অস্থিরতা জাতীয় পার্টিতে

  • চেয়ারম্যানের স্বৈরাচারিতা কমানোর জন্য গঠনতন্ত্রের ২০/১/ক ধারা বাতিলের দাবি নেতাদের
  • সম্মেলন হলে নেতৃত্ব হারানোর আশঙ্কায় জি এম কাদের
  • কোন্দলে অনিশ্চিত দলের ভবিষ্যৎ
সাখাওয়াত ফাহাদ, ঢাকা 
নেতৃত্ব নিয়ে অস্থিরতা জাতীয় পার্টিতে

দশম জাতীয় সম্মেলনকে কেন্দ্র করে আবারও অস্থিরতা দেখা দিয়েছে জাতীয় পার্টিতে (জাপা)। সম্মেলনের আয়োজন, চেয়ারম্যানের ক্ষমতা কমানো, আর্থিক স্বচ্ছতা আনাসহ নানা ইস্যুতে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন দলটির প্রথম সারির নেতারা। তাঁদের মধ্যে বিভক্তি আরও প্রকট হয়েছে গত ২৮ জুনের সম্মেলন স্থগিত হওয়াকে ঘিরে।

জানা গেছে, জাতীয় পার্টি এখন দুই পক্ষে বিভক্ত। এক পক্ষে আছেন দলের চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের (জি এম কাদের) ও তাঁর অনুসারীরা, অন্য পক্ষে রয়েছেন দলের জ্যেষ্ঠ কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, কো-চেয়ারম্যান এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুসহ শীর্ষ নেতাদের একটি অংশ। জি এম কাদেরবিরোধী এই অংশের দাবি, নেতৃত্ব হারানোর আশঙ্কায় সম্মেলন করতে চাইছেন না চেয়ারম্যান। কিন্তু তাঁরা দল ভাঙতে চান না; বরং সম্মেলনের জন্য চেয়ারম্যানের ওপর ক্রমাগত চাপ অব্যাহত রাখতে চান।

জাতীয় পার্টির নেতারা বলছেন, ২৮ জুন বাংলাদেশ-চীন-মৈত্রী আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে দলটির দশম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ওই মিলনায়তনটি বরাদ্দ পাওয়া যাচ্ছে না উল্লেখ করে ১৬ জুন সম্মেলন স্থগিত ঘোষণা করেন জি এম কাদের। চেয়ারম্যানের এ সিদ্ধান্তে বেশ চটে যান দলের জ্যেষ্ঠ কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এবং কো-চেয়ারম্যান এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার। একপর্যায়ে তাঁরা দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় কাকরাইলে আলাদা সম্মেলন আহ্বান করেন। পরে জি এম কাদেরের অনুসারীরা সেখানে সমাবেশ করার ঘোষণা দিলে সংঘাত এড়াতে আপাতত কাউন্সিল না করার সিদ্ধান্ত নেন আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। এসব ঘটনায় দলটির নেতা-কর্মীদের মধ্যে দ্বিধাবিভক্তি সৃষ্টি হয়েছে। অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে দলের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে।

সম্মেলন স্থগিত করার ঘটনা নেতৃত্বের স্বৈরাচারী প্রবণতার প্রতিফলন বলে মন্তব্য করেছেন জাপার শীর্ষ নেতারা। দলের গঠনতন্ত্রের ২০/১/ক ধারা চেয়ারম্যানকে এমন ক্ষমতা দিয়েছে, যার মাধ্যমে তিনি যেকোনো নেতাকে বহিষ্কার বা পদচ্যুত করতে পারেন, আবার পদোন্নতিও দিতে পারেন। এ কারণে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এবং রুহুল আমিন হাওলাদারের নেতৃত্বে জ্যেষ্ঠ নেতারা এ ধারার বিলোপ এবং প্রেসিডিয়ামের ক্ষমতা বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে চেয়ারম্যান এ ধারার অপপ্রয়োগ করছেন বলে অভিযোগ নেতাদের।

দলটির সঙ্গে জড়িত একাধিক শীর্ষ পর্যায়ের নেতা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরেই জি এম কাদেরের নেতৃত্বশৈলী দলে প্রশ্নবিদ্ধ। প্রেসিডিয়ামের সম্মতি ছাড়াই বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেওয়া, দলের গণতান্ত্রিক চর্চা ক্ষুণ্ন করা ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ রয়েছে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। এসব কারণে দলের অধিকাংশ নেতা চেয়ারম্যানের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। জুলাই অভ্যুত্থানের পর আওয়ামী লীগের সঙ্গে দলটির ঘনিষ্ঠতা এবং জি এম কাদেরের অন্তর্বর্তী সরকারবিরোধী অবস্থান দলকে রাজনৈতিকভাবে আরও কোণঠাসা করে তুলেছে বলে মনে করেন নেতারা।

দলে নেতৃত্বের পরিবর্তনের পক্ষে থাকা নেতারা বলছেন, ইতিমধ্যে জি এম কাদেরসহ দলটির শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও হয়েছে। জি এম কাদের নেতৃত্বে থাকলে সামনে দলের পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। এমনকি নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়েও শঙ্কা দেখা দিতে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। তাই জি এম কাদেরকে বাইরে রেখে দলের নেতৃত্ব তৈরির চেষ্টা করছেন তাঁরা।

দলের জ্যেষ্ঠ কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা বলেছিলাম, ২০-এর ‘ক’ যদি গঠনতন্ত্রে থাকে তাহলে পার্টি নিজস্ব সম্পত্তিতে পরিণত হয়। উনার (চেয়ারম্যান) বিপক্ষে যে কথা বলবে তাঁকে বের করে দেবে, কারও কোনো অনুমোদন নেওয়ার দরকার নেই, এভাবে পার্টি করা যায় না। এই যে রাজার ক্ষমতা, এইটা আমরা পরিবর্তন করতে বলেছিলাম। এ ছাড়া ফাইন্যান্সিয়াল ট্রান্সপারেন্সির (আর্থিক স্বচ্ছতা) এবং দলে বৃহত্তর ঐক্যের কথা বলেছি। কিন্তু তিনি আমাদের সঙ্গে একমত হননি।’

বিরোধী পক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসতে জি এম কাদের রাজি নন জানিয়ে আনিসুল ইসলাম বলেন, ‘উনি আমাদেরকে নিয়ে বসবেন না। সম্মেলন ডাকার পর প্রেসিডিয়াম পাল্লা ভারী করতে তিনি ওখানে সাতজনকে অলরেডি বের করেছেন। তাঁর পক্ষের পাঁচজনকে নিয়েছেন। এভাবে উনি কোরাম করার চেষ্টা করছেন। একটা মেজরিটি করার চেষ্টা করছেন।’

এদিকে গত বুধবার জাতীয় পার্টির জেলা ও মহানগর কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, আহ্বায়ক ও সদস্যসচিবদের সঙ্গে এক জরুরি সভায় আগত নেতারা বিশৃঙ্খলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। কঠোর হওয়ার বার্তা দিয়েছেন জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদেরও। তিনি বলেন, ‘যাঁরা জাতীয় পার্টি নিয়ে এতদিন বেচাকেনার রাজনীতি করেছেন, তাঁদের সঙ্গে নিয়ে আর রাজনীতি করব না।’

সভায় উপস্থিত জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ‘চেয়ারম্যানের সম্মতি ছাড়া কাউন্সিলের কোনো স্থান কখনো নির্ধারণ করা যাবে না। এটা আমাদের গঠনতন্ত্রে আছে। আর কাউন্সিল মিটিংয়ে সভাপতিত্ব করবেন চেয়ারম্যান। এটাও আমাদের গঠনতন্ত্রে আছে। এসব বিষয়ে আলোচনা হয়নি। আমরা সামনে আবার মিটিং ডাকব এবং আবার কাউন্সিলের ব্যাপারে আলাপ করব। পাশাপাশি আমাদের হলরুম পাওয়া সাপেক্ষে নিরাপত্তার কোনো সমস্যা যদি না থাকে, আমরা অবশ্যই স্বল্প সময়ে কাউন্সিল করতে আগ্রহী।’

গঠনতন্ত্রের ‘স্বৈরতান্ত্রিক’ ধারা প্রসঙ্গে এই জাপা নেতা বলেন, এ রকম একটি ধারা অনেক দিন আগে থেকেই আছে, এ ধারার অধীনে যে খুব বেশি কাজ হয়, এমনটিও নয়। যদি জরুরি অবস্থায় প্রেসিডিয়াম মিটিং করা না যায় সে ক্ষেত্রে এই ‘এক্সেপশনাল সেফটিনেস পাওয়ারটা’ চেয়ারম্যানের কাছে আছে, যেটা খুব কমই ব্যবহার করা হয়।

এদিকে জেলা ও মহানগর কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, আহ্বায়ক ও সদস্যসচিবদের সঙ্গে জরুরি সভায় ছিলেন না দলের মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। তিনি বলেন, ‘সেই মিটিংয়ে আসলে কী সিদ্ধান্ত হয়েছে আমি জানি না, আমি মিটিংয়ে ছিলাম না। আমার দেখামতে দলে কোনো বিশৃঙ্খলা আমি দেখতে পাই না। তাঁরা (অন্যা নেতারা) বরং চেয়ারম্যানকে অনুরোধ করেছেন প্রেসিডিয়াম মিটিং ডেকে সিদ্ধান্ত নিয়ে যাতে কাউন্সিলটা করা হয়। এটা তো আর বিশৃঙ্খল নয়, এটা তো অধিকার। কাউন্সিল যে সময় হবে, তাঁরা সে সময় অনুযায়ী কাউন্সিলের জন্য দাবি জানাইছেন। এটাকে যদি উনি (চেয়ারম্যান) বিশৃঙ্খলা হিসেবে নেন, এটা উনার বিষয়, নিতে পারেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দিনাজপুরে খালেদা জিয়ার আসনে মনোনয়নপত্র নিলেন বিএনপির আরেক নেতা

প্রতিনিধি (দিনাজপুর) 
বেগম খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত
বেগম খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত

দিনাজপুর-৩ (সদর) আসনে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পর এবার একই আসন থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন দলের কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম। আজ রোববার দিনাজপুর রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নূর-ই-আলম সিদ্দিকীর কাছ থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন তিনি।

এ সময় নেতা-কর্মীদের হাতে দিনাজপুর সদর-৩ আসনে বিএনপির পক্ষ থেকে সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলমকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে মর্মে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত একটি পত্র দেখা গেছে।

এর আগে গত মঙ্গলবার ওই আসনে দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বখতিয়ার আহমেদ। আজ সেই মনোনয়নপত্রটি জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দেওয়ার কথা রয়েছে বলে জানা গেছে।

মনোনয়নপত্র সংগ্রহ শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশে সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘দলের উচ্চপর্যায় থেকে দিনাজপুর-৩ আসনে আমাকে মনোনয়ন ফরম উত্তোলনের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারই অংশ হিসেবে আজ মনোনয়ন ফরম উত্তোলন করেছি।’

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘দলীয় চেইন অব কমান্ডের বাইরে আমরা কিছু বলতে পারি না।’

উল্লেখ্য, দিনাজপুর-৩ আসন থেকে প্রথমবারের মতো নির্বাচনে অংশ নেবেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এর আগে সপ্তম ও অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয় পেয়েছিলেন বেগম খালেদা জিয়ার বড় বোন প্রয়াত খুরশিদ জাহান হক চকলেট।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এনসিপিসহ ১০ দলের জোট ঘোষণা করলেন জামায়াতের আমির

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ৩৬
এনসিপিসহ ১০ দলের জোট ঘোষণা করলেন জামায়াতের আমির

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে জোটের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান।

আজ রোববার সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে আরও দুটি দল যুক্ত হয়েছে। একটি কর্নেল অলির নেতৃত্বাধীন এলডিপি ও অপরটি এনসিপি।’

জামায়াতের আমির আরও বলেন, ‘এনসিপির সঙ্গে আমাদের আলোচনা আজকে সমাপ্ত হয়েছে। তাঁরা এখানে আসার সুযোগ পাননি। তাঁরা রাতে একটি প্রেস কনফারেন্স করে তাঁদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেবেন।’

জামায়াত আমির আরও বলেন, ‘আমাদের আসন সমঝোতা অলমোস্ট কমপ্লিট। সামান্য যা বাকি আছে, তা আলোচনার ভিত্তিতে আমরা সুন্দরভাবে শেষ করতে পারব আশা করি।’

এর আগে বিকেলে ঢাকা-১৩ আসনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবে অংশীজন দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হয়ে আসন সমঝোতার মাধ্যমে জোটের মাধ্যমে ভোটে অংশ নিচ্ছি। অন্যান্য দলের সঙ্গে খেলাফত মজলিস, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, এনসিপিও থাকবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এনসিপিসহ জুলাই বিপ্লবে অংশীজনেরা ঐক্যবদ্ধ নির্বাচন করছে: মামুনুল হক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রোববার বিকেলে ঢাকা-১৩ আসনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন মামুনুল হক। ছবি: আজকের পত্রিকা
রোববার বিকেলে ঢাকা-১৩ আসনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন মামুনুল হক। ছবি: আজকের পত্রিকা

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোটবদ্ধভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মুহাম্মাদ মামুনুল হক। এই জোটে জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) জুলাই বিপ্লবের অংশীজনেরা থাকছে বলে জানান তিনি।

আজ রোববার বিকেলে ঢাকা-১৩ আসনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে সাংবাদিকদের সামনে এ কথা বলেন তিনি।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে (ইটিআই) ঢাকার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও ঢাকা-১৫ ও ১৩ আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ইউনুচ আলীর কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন মামুনুল হক।

মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর মামুনুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবে অংশীজন দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হয়ে আসন সমঝোতার মাধ্যমে জোটের মাধ্যমে ভোটে অংশ নিচ্ছি। অন্যান্য দলের সঙ্গে খেলাফতে মজলিশ, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, এনসিপিসহ অন্যান্য দল থাকবে।’

কতটি দল থাকবে সে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটা এখনো ঠিক হয়নি। বিকেলে আমাদের সংবাদ সম্মেলনে জানানো হবে।’

জোটে আপনারা কতটি আসন দাবি করেছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সেটা এই মুহূর্তে বলছি না, প্রক্রিয়াধীন আছে।’

লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চাইলে মামুনুল হক বলেন, ‘আমরা এখনো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড দেখতে পাচ্ছি না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এনসিপির জোট নিয়ে যা বললেন বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম খান

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ৩২
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। ফাইল ছবি
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। ফাইল ছবি

জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সম্ভাব্য জোট প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, যেকোনো রাজনৈতিক দল তাদের ঘোষিত আদর্শ অনুযায়ী অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জোট করতেই পারে। এটা তাদের নিজস্ব ব্যাপার। তবে জামায়াতের সঙ্গে এনসিপির জোট নিয়ে যেই অভ্যন্তরীণ সংকট দেখা দিয়েছে, সেটির সঙ্গে আদর্শিক একটি দ্বন্দ্ব চলছে বলেই মনে করেন তিনি।

আজ রোববার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে বিষয়টি নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করে নজরুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

শোনা যাচ্ছে যে এনসিপির সঙ্গে জামায়াতের জোট হচ্ছে—এই বিষয়টা বিএনপি কীভাবে দেখছে? সাংবাদিকেরা জানতে চাইলে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। সে হিসেবে সব রাজনৈতিক দলের স্বাধীন সিদ্ধান্ত গ্রহণের অধিকার স্বীকার করে। যদি কোনো রাজনৈতিক দল তার ঘোষিত আদর্শ অনুযায়ী অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পর্কিত হতে চায়, সে অধিকার তাদের আছে। অবশ্য আমরা এটাও দেখলাম তাদের এই ভাবনায় দ্বিমত পোষণ করে অনেক নেতৃবৃন্দ দল ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন। অর্থাৎ মনে হয় যেন, তাদের ঘোষিত আদর্শ বা ঘোষিত ভাবনার সঙ্গে তাদের এই নতুন চিন্তা বোধ হয় যাচ্ছে না। যাই হোক এটা তাদের ব্যাপার।’

বিএনপির সঙ্গে এনসিপির কোনো আলোচনা হয়েছে কি না? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি এ ব্যাপারে আপনাদের কিছু বলতে পারব না। কারণ এটা দলের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। আমরা মনে করি সবাই দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দল। আমরা গণতন্ত্র, দেশের উন্নয়নে বিশ্বাস করি। তবে সব ব্যাপারেই যদি একমত হতাম, তাহলে তো আমরা একদল করতাম। আলাদা দল থাকত না।’

শরিক দলগুলোর সঙ্গে বিএনপির সমঝোতা চূড়ান্ত হয়েছে? জানতে চাইলে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘চূড়ান্ত তো ভাই শেষ দিন পর্যন্ত। কোনো কিছুই কি চূড়ান্ত হয়?’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দুই জায়গা থেকে মনোনয়ন তুলেছেন। তিনি কোন আসন থেকে নির্বাচন করবেন? জানতে চাইলে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘বগুড়া থেকে করছেন এটা নিশ্চিত। ঢাকায় করছেন কি না, এটা আমাদের দলের পক্ষ থেকে জানালে জানতে পারবেন।’

অনেক নেতা নতুন যুক্ত হয়েই মনোনয়ন পেয়ে যাচ্ছেন। সেসব আসনে অনেক ত্যাগী নেতা মনোনয়ন পাচ্ছেন না। বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ হচ্ছে। এ বিষয়টাকে আপনারা কীভাবে মূল্যায়ন করেন? এ প্রশ্নে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমিও প্রথম থেকেই দলে আছি। অন্তত আমি নিজেকে ত্যাগী বলেই দাবি করি। আমি তো মনোনয়ন চাইনি। দল ও দেশের স্বার্থ সবার আগে। ত্যাগী নেতাদের জন্য আরও বেশি আগে। যদি এমন কাউকে মনোনয়ন দিয়ে দলের এবং দেশের স্বার্থ অধিক রক্ষিত হয়, তাহলে ত্যাগী নেতারাই সবার আগে সেটাকে স্বাগত জানান।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত