Ajker Patrika

যুক্তরাষ্ট্র হয়তো ক্ষমতায় দেখতে চায় না, তাই নিষেধাজ্ঞা: বিবিসিকে প্রধানমন্ত্রী

আপডেট : ১৬ মে ২০২৩, ১৭: ১১
যুক্তরাষ্ট্র হয়তো ক্ষমতায় দেখতে চায় না, তাই নিষেধাজ্ঞা: বিবিসিকে প্রধানমন্ত্রী

যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না অথবা চলমান উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তাদের পছন্দ হচ্ছে না বলেই হয়তো বাংলাদেশের বিশেষ বাহিনী র‍্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, এই আধাসামরিক বাহিনীকে যুক্তরাষ্ট্রই প্রশিক্ষণ দিয়েছিল। সেভাবেই এই বাহিনী কাজ করছে, তাহলে নিষেধাজ্ঞা কেন?

কয়েক দিন আগে যুক্তরাজ্য সফরের সময় বিবিসির সাংবাদিক ইয়ালদা হাকিমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। ওই সাক্ষাৎকারের একটি অংশের ভিডিও ইয়ালদা টুইটারে শেয়ার করেছেন।

টুইটে ইয়ালদা লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বিরল এক সাক্ষাৎকারে ছিলাম। তাঁর দেশে মানবাধিকারের রেকর্ড, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘিরে উদ্বেগ, গুম, নির্যাতন ও সংবাদমাধ্যমের ওপর সাঁড়াশি নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে আমি তাঁর কাছে জানতে চেয়েছিলাম। তিনি সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।’

বাংলাদেশের র‍্যাবের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য জানতে চান বিবিসির সাংবাদিক ইয়ালদা হাকিম। জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০০৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের পরামর্শেই এই বাহিনী প্রতিষ্ঠা করা হয়। তাদের সকল প্রশিক্ষণ, সরঞ্জাম যুক্তরাষ্ট্রই দিয়েছে। যেভাবে তারা এ বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে, তারা সেভাবেই কাজ করছে বলে আমার বিশ্বাস। তাহলে কেন তারা এই নিষেধাজ্ঞা দিল? এটা আমার কাছেও বিরাট এক প্রশ্ন।’

তাহলে নিষেধাজ্ঞার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের কী উদ্দেশ্য থাকতে পারে—ইয়ালদার প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি জানি না, আমি ক্ষমতায় থাকি তারা হয়তো চায় না, আমি বাংলাদেশের জন্য যেসব উন্নতি করেছি, সেটা তারা হয়তো গ্রহণ করতে পারছে না। এটা আমার অনুভূতি। একটা পর্যায়ে সন্ত্রাস সব দেশের জন্য সমস্যা হয়ে উঠেছিল। আমাদের দেশে আমরা সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণ করেছি। এরপর মাত্র একটা ঘটনা ঘটেছে। আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়ন্ত্রণে রাখতে কঠোর পরিশ্রম করেছে।’

মারাত্মক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর এলিট ফোর্স র‌্যাব এবং এর সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র সরকার। সরকার নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের অনুরোধ জানালেও যুক্তরাষ্ট্রের সাড়া মেলেনি।

বিবিসির ইয়ালদা হাকিমের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকার নিয়ে বিবিসি বাংলা এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রায় আধঘণ্টা ধরে চলা ওই সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি গণতন্ত্র ও রোহিঙ্গা ইস্যুসহ নানা বিষয়ে তিনি কথা বলেছেন।

নিষেধাজ্ঞা, পাল্টা নিষেধাজ্ঞা খেলার মতো

আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার পক্ষ থেকে বাংলাদেশে অটোক্রেসি বা একনায়কতন্ত্রের যে ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে বলে অভিযোগ করা হয়, সেটি নাকচ করে দিয়ে বলেছেন, ‘গত ১৪ বছর ধরেই শুধুমাত্র দেশে সত্যিকারের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা রয়েছে, তাই আমরা উন্নতি করতে পারছি।’

বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধের পরিসংখ্যান তুলে ধরেন বিবিসির ইয়ালদা হাকিম। সেখানে দেখানো হয়, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা জারির আগে ২০১৮ সালে বন্দুকযুদ্ধে নিহত ৪৬৬, ২০১৯ সালে ৩৮৮ এবং ২০২০ সালে নিহত ১৮৮ জন। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার পর এই সংখ্যা মাত্র ১৫ জনে নেমে এসেছে।

এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘যেসব নম্বর তারা উল্লেখ করেছে, সেগুলো তারা প্রমাণ করতে পারেনি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এসব হত্যাকাণ্ড আইনশৃঙ্খলা বাহিনী করেনি। কারণ আমরা প্রমাণ চেয়েছিলাম, সেগুলো তারা পাঠিয়ে দিক, আমরা তদন্ত করে দেখব।’

জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়েচেভেলের একটি তথ্যচিত্রে দাবি করা হয়েছে, এই র‍্যাবের দুই ব্যক্তি গোপন তথ্য ফাঁস করে বলেছেন যে এসব হত্যাকাণ্ডের নির্দেশ সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে এসেছে।

এই তথ্য তুলে ধরা হলে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি জানি না তারা কীভাবে এটা করেছে, কিন্তু আমেরিকায় কী ঘটছে, আপনি দেখতে পাচ্ছেন। সেখানে প্রায় প্রতিদিন একাধিক হত্যাকাণ্ড ঘটছে। এমনকি স্কুল, শপিং মল, রেস্তোরাঁয় হত্যাকাণ্ড ঘটছে। এমনকি স্কুল শিক্ষার্থীরা, সাধারণ মানুষ হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অথবা সশস্ত্র ব্যক্তির হাতে নিহত হচ্ছে।

‘আমার মনে হয়, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত তাদের নিজেদের ব্যাপারে আরও মনোযোগী হওয়া। তাদের দেশের কী অবস্থা? তাদের উচিত শিশুদের জীবন রক্ষা করা। তারা নিজেদের লোকজনের ব্যাপারে যথেষ্ট ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তারা যেসব অভিযোগ করেছে, আমরা তাদের কাছে প্রমাণ চেয়েছিলাম। তারা দেয়নি।’

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলছেন, ‘আমি মনে করি, নিষেধাজ্ঞা, পাল্টা নিষেধাজ্ঞা একটা খেলার মতো। এটা আমার কাছে এখনো পরিষ্কার নয়, কেন তারা আমাদের দেশের প্রতি নিষেধাজ্ঞা দিল?’

শেখ হাসিনা নিজের পরিবারের সদস্যদের হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা তুলে ধরে বলেন, ‘এই খুনিরা দায়মুক্তি পেয়েছিল। আমি এমনকি তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারিনি, আমার বিচার পাওয়ার কোনো অধিকার ছিল না। সেই সময় তারা কোনো নিষেধাজ্ঞা দেয়নি। বরং একজন হত্যাকারী আমেরিকায় আশ্রয় নিয়েছে। আমরা তাদের বারবার অনুরোধ করেছি, তাকে ফেরত পাঠানোর জন্য। তারা করেনি। কেন তারা শুনছে না, আমি জানি না।’

বাংলাদেশের পার্লামেন্টে গত এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি শেখ হাসিনা এক বক্তব্যে বলেছেন, আমেরিকা বাংলাদেশের ক্ষমতায় পরিবর্তন আনতে চায়। এই বক্তব্যের পক্ষে কী প্রমাণ আছে? বিবিসির পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয় শেখ হাসিনার কাছে।

জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার কাছে একটা বড় প্রশ্ন হলো, কেন তারা নিষেধাজ্ঞা জারি করল? যখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দেশের সন্ত্রাস মোকাবিলার জন্য কাজ করছে, মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে, তখন তারা লঙ্ঘনকারীদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে, যারা ভুক্তভোগী, তাদের পক্ষে নয়।’

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, জাতিসংঘ, সবাই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে—এই তথ্য শেখ হাসিনাকে জানানো হলে তিনি বলেন, ‘আমি জানি ১২টি প্রতিষ্ঠান মিলে এসব বক্তব্য দিয়েছে, কিন্তু তারা প্রমাণ করতে পারেনি। আমি জানি না কী আন্তর্জাতিক খেলা চলছে।’

কেন তারা আপনাকে সরাতে চাইবে? ইয়ালদা হাকিমের এই প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তারা আমার পিতাকে হত্যা করেছে। যারা আমার পরিবারকে হত্যা করেছে, এমনকি ১০ বছরের ভাইকে হত্যা করেছে, সেই ষড়যন্ত্রকারীরা চায় না এই পরিবারের কেউ ক্ষমতায় আসুক।’

বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং সংবাদমাধ্যমের ওপর চাপ

বাংলাদেশের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং সংবাদমাধ্যমের ওপর চাপ তৈরি করা সম্পর্কে বিভিন্ন সময় জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

এই বিষয়ে শেখ হাসিনার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলছেন, ‘আমি জানি না, তারা যেসব অভিযোগ করছে, সেগুলো খুব বেশি প্রমাণ করতে পারেনি। কিছু গ্রুপ বড় বড় সংখ্যায় অভিযোগ করেছে, কিন্তু আমরা যখন তদন্ত করেছি, তখন আমরা পাঁচ ছয়জনের (হত্যা বা গুম) ব্যাপার দেখতে পেয়েছি।

‘আসলে কিছু মানুষ বিভিন্ন কারণে নিজেরাই লুকিয়ে ছিল। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড আমরাও সমর্থন করি না। আমাদের দেশে আইন আছে, আমাদের আইন প্রয়োগকারীরা কোনো অন্যায় করলে তাদেরও বিচারের আওতায় আনা হয়। তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়।’

বিবিসির ইয়ালদা হাকিম শেখ হাসিনার কাছে জানতে চান, যেভাবে ডয়েচেভেলের তথ্যচিত্রে তুলে ধরা হয়েছে, আসলেই কি সাংবাদিক, বিরোধী দলের নেতা-কর্মী, অ্যাকটিভিস্টদের ওপর হামলার জন্য র‍্যাব, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল?

কারণ সরকারের তথ্যেই জানা গেছে, বিরোধী দল বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ২০ হাজারের মতো মামলা হয়েছে, সাত হাজারের বেশি বিএনপি নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, হাজার হাজার মানুষকে আটক করা হয়েছে।

এর জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলছেন, ‘হ্যাঁ, কিন্তু তারা কী করেছিল? তারা মানুষ হত্যা করেছে, তারা মলোটভ ককটেল ছুড়েছে, তারা পাবলিক বাসে আগুন দিয়েছে। ৩৮০০ পাবলিক বাসের ভেতরে যাত্রীদের রেখেই আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। তারা সাধারণ মানুষ হত্যা করেছে, ট্রেন, লঞ্চ, প্রাইভেট কারে আগুন দিয়েছে। আপনি হলে কী করতেন? আপনারা কি তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতেন না?

‘এটা সাধারণ দলীয় সমর্থকদের ক্ষেত্রে করা হয়নি। যারা হত্যা করেছে, মানুষকে নির্যাতন করেছে, দুর্নীতি করেছে- এই জন্য তারা শাস্তি পেয়েছে। আমি বুঝতে পারি না, তারা যেসব অপরাধ করেছে, কেন এইসব (মানবাধিকার) সংগঠন সেটা দেখতে পাচ্ছে না,’ বলছেন শেখ হাসিনা।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর প্রতি অভিযোগ তুলে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘মানবাধিকার সংস্থাগুলো কখনো আমার মানবাধিকার নিয়ে কথা বলেনি। যখন আমার পুরো পরিবারকে হারিয়েছি, তখনো তারা আমার পক্ষে কথা বলেনি। কেন?’

বিবিসির সংবাদদাতা ইয়ালদা হাকিম জানতে চান, আমেরিকার কেউ কেউ মনে করেন, আধা-সামরিক বাহিনী র‍্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞার আসল কারণ হলো, বাংলাদেশের মানবাধিকার অবস্থাকে আবার সঠিক পথে ফিরিয়ে আনা। এর জবাবে তিনি কী বলবেন?

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ সব সময়ই মানবাধিকার রক্ষা করে আসছে। মানবাধিকার মানেই শুধু শরীরের নিরাপত্তা নয়। আমার কাছে মানবাধিকার মানে হলো তাদের নিরাপত্তা, খাদ্য, শিক্ষা, ভোট, সুস্থ থাকার অধিকার। সবকিছু আমরা রক্ষা করছি।’

যুক্তরাজ্য সফরের সময় বিবিসির সাংবাদিক ইয়ালদা হাকিম সাক্ষাৎকার দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।নির্বাচন
বিবিসির পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয়, বাংলাদেশের বিরোধী নেতা-কর্মীদের কেউ কেউ অভিযোগ করছেন, শেখ হাসিনা নির্বাচন কিংবা প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়াই আজীবন ক্ষমতায় থাকার স্বপ্ন দেখছে?

এর জবাবে শেখ হাসিনা বলছেন, ‘অবশ্যই না। নির্বাচন এবং ভোটাধিকারের জন্য আমি সারা জীবন ধরে সংগ্রাম করেছি, সামরিক শাসকদের বিরুদ্ধে। নির্বাচন কমিশন প্রতিষ্ঠার জন্য আমরাই আইন করেছি। আমরা সব সময়ই চেয়েছি যেন মুক্ত ও স্বচ্ছ নির্বাচন হয়। এখন আমাদের ভোটার লিস্ট ছবিসহ তৈরি করেছি, আমরা স্বচ্ছ ব্যালট বক্সের ব্যবস্থা করেছি।’

সেই সময় ইয়ালদা হাকিম উল্লেখ করেন,গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ৯৬ শতাংশ ভোট পেয়েছে। ভোটের এই হার মিসরের মতো অনেক সামরিক শাসকের চেয়েও বেশি। এটা অনেকটা ভ্লাদিমির পুতিনের ভোটের মতো।

শেখ হাসিনা তার জবাবে বলেন, ‘কেন নয়। আমাদের কাজের জন্যই মানুষ আমাদের ভোট দিয়েছে। আমরা তাদের জন্য কাজ করেছি। আমাদের ১৭০ মিলিয়ন মানুষ রয়েছে। আমাদের জনগণ রাজনৈতিক অধিকারের ব্যাপারে সচেতন। আমরা ক্ষমতায় আসার পর দারিদ্র্য কমেছে, খাদ্য নিরাপত্তা বেড়েছে, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, গৃহায়ণ- সব মৌলিক অধিকার নিশ্চিত হয়েছে। তাহলে মানুষ কেন (আমাদের) ভোট দেবে না?’

বিবিসির পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে মনে করিয়ে দেয়া হয়, ২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল যে জরিপ করেছে, সেখানে ৫০টা আসনের মধ্যে ৪৭টিতেই অনিয়ম দেখতে পেয়েছে। যার মধ্যে জাল ভোট, ভোটার ও বিরোধী এজেন্টদের বের করে দেয়ার মতো অভিযোগ রয়েছে। এই কারণেই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় পরবর্তী নির্বাচন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছে।

‘তারা কি সেটা প্রমাণ করতে পেরেছে? কোথায় সেই প্রমাণ? আমি নথিপত্র দেখতে চাই। কারণ আমি বলছি, ২০০৮ সালের নির্বাচন নিয়ে তো কেউ অভিযোগ করেনি। ২১-দলীয় জোট, বিএনপি-জামায়াত ইসলামী সব মিলিয়ে কতগুলো আসন পেয়েছিল? ৩০০ আসনের মধ্যে মাত্র ২১টি। মানুষ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছিল। তারা আমাদের জোটকে ভোট দিয়েছে,’ শেখ হাসিনা বলেন।

তাহলে কেন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা বলছে যে এটা অবাধ আর স্বচ্ছ হয়নি? ইয়ালদা হাকিম প্রশ্ন করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘সেটা আমি জানি না, তারা কীভাবে এটা দেখেছে। কিন্তু নির্বাচন অবশ্যই স্বচ্ছ এবং অবাধ হয়েছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে তারা (বিএনপি জোট) শুরুতে অংশ নিয়েছিল। কিন্তু পরিস্থিতি কী হলো? আমাদের ৩০০ আসন আছে। আপনাকে ৩০০ প্রার্থী দিতে হবে। তারা মনোনয়ন দিয়েছে প্রায় ৭০০ জনকে। তারা নিজেদের মধ্যে মারামারি করতে শুরু করে। একপর্যায়ে তারা নির্বাচন থেকে সরে যায়। তাহলে তারা কীভাবে দাবি করতে পারে যে নির্বাচন স্বচ্ছ, অবাধ হয়নি।

সেই সময় ইয়ালদা হাকিম মনে করিয়ে দেন, এটা বিরোধীদের কথা নয়, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল এই তথ্য দিয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি জানি। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল এটা বলেছে, আমার তাদের স্বচ্ছতা নিয়েই সন্দেহ রয়েছে। আমি খোলাখুলিভাবেই বলছি।’

রোহিঙ্গা ইস্যু
রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মানবাধিকারের কথা বিবেচনা করেই রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়া হয়েছে।

ইয়ালদা হাকিম তাঁর কাছে জানতে চান, আপনি যখন তাদের আশ্রয় দিয়েছিলেন, বিশ্বের কাছে অনেক প্রশংসা পেয়েছেন। তাদের বিপদের সময় ১০ লাখ মানুষকে আশ্রয় দিয়েছেন। বাংলাদেশকে, আপনাকে তারা প্রশংসা করেছে। কিন্তু পাঁচ বছর পরে কী হচ্ছে? সেখানে সংখ্যাতিরিক্ত মানুষ বসবাস করছে, ক্যাম্পে আগুন লাগানোর ঘটনা ঘটছে, সহিংসতা হচ্ছে। তাদের আরেকটি দ্বীপে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে?

শেখ হাসিনা বলেন, ‘সেখানে যারা গিয়েছে, তারা অনেক ভালো অবস্থায় বসবাস করছে। কারণ সেখানে এক লাখ পরিবারের জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে। কে বলেছে সেটা বন্যাপ্রবণ? বন্যা ঠেকাতে সেখানে সবকিছুই করা হয়েছে। সেখানে ভালো স্কুল, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা রয়েছে। ক্যাম্পের চেয়ে সেখানে বসবাসের ব্যবস্থা অনেক ভালো।’

তিনি বলেন, এখন যেখানে রোহিঙ্গা ক্যাম্প, ওই এলাকার পরিবেশ পুরো ধ্বংস হয়ে গেছে। ওখানে গভীর জঙ্গল ছিল, সেটা এখন নেই। তারা এখন একে অপরের সঙ্গে মারামারি করছে। তারা মানব পাচার, মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে।

এ ধরনের অভিযোগ করার আগে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের রোহিঙ্গারা যাতে নিজেদের দেশে ফিরে যেতে পারে, সেই ব্যবস্থা করা। তাদের (রোহিঙ্গাদের) উচিত নিজেদের দেশে ফিরে যাওয়া।

মিয়ানমারে হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশ পালিয়ে এসে ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে

কিন্তু রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরে যাওয়া কি নিরাপদ? বিবিসির পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলছেন, ‘জাতিসংঘ এবং অন্য সংগঠনগুলোর সে জন্য ব্যবস্থা করা উচিত। তাদের (রোহিঙ্গাদের) নিজেদের দেশেই তাদের নিরাপদ থাকার কথা। এটা জাতিসংঘের নিশ্চিত করার দায়িত্ব, আমাদের না।’

‘যখন তারা বিপদে ছিল, আমরা তাদের আমাদের দেশে ঢুকতে দিয়েছি, তাদের জন্য সব ব্যবস্থা করেছি। ৪০ হাজার নারী গর্ভবতী ছিল, তাদের খাবার, স্বাস্থ্য চিকিৎসা দিয়েছি। প্রথমে কেউ এগিয়ে আসেনি, আমাদের দেশের লোকজন তাদের সহায়তা করেছে।’

বিবিসির প্রশ্ন ছিল, মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের বিষয়ে কী হবে? কারণ জাতিসংঘ বলেছে, কাউকে জোর করে পাঠানো উচিত নয়। ২০ জনের রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদল মিয়ানমার ঘুরে এসে বলেছে, বাংলাদেশি কর্মকর্তারা মিথ্যা তথ্য দিয়ে তাদের মিয়ানমারের সামরিক জান্তার সঙ্গে বৈঠক করতে নিয়ে গেছে।

এই প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলছেন, ‘না, আমি জানি না কেন তারা এটা বলছে। তারা স্বেচ্ছায় পরিস্থিতি দেখতে সেখানে গিয়েছিল। কেউ তাদের মিথ্যা বলে নিয়ে যায়নি। কেন মিথ্যা বলা হবে? তারা স্বেচ্ছায় সেখানকার পরিস্থিতি দেখতে গিয়েছিল। আমরা তাদের জোর করিনি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনিই বলুন, কোন দেশ কীভাবে ১০ লাখের বেশি মানুষের এই বোঝা কত দিন বয়ে যাবে? দিন দিন এটা আরও বড় হচ্ছে, আমরা এই বোঝা কত দিন টানব? তাদের উচিত নিজেদের দেশে ফিরে যাওয়া।’

‘আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে, মানবাধিকার সংস্থা, জাতিসংঘকে অনুরোধ করেছি, তারা যাতে এসব মানুষকে নিজেদের দেশে ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা করে। এটা তাদের দায়িত্ব। তারা এই বোঝা চিরদিনের জন্য আমাদের ওপর চাপিয়ে দিতে পারে না। এমনিতেই আমাদের দেশে জনসংখ্যা অনেক বেশি। আমাদের স্থানীয় মানুষজন অনেক দুঃখকষ্ট ভোগ করছে,’ বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

কিন্তু এই বিষয়ে কি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় থেকে বাংলাদেশ যথেষ্ট সমর্থন পাচ্ছে? জানতে চান বিবিসির ইয়ালদা হাকিম।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘তারা সমর্থন করছে, কিন্তু তারা ইতিবাচক কিছু করছে না। আলোচনা করলেই তারা বলে, হ্যাঁ, তাদের ফিরে যাওয়া উচিত। কিন্তু তারা ইতিবাচক কিছু করছে না। কেন? এটা আমার প্রশ্ন। মানবাধিকারের কথা চিন্তা করে আমরা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি।’

‘এখন আপনি বলুন, যখন আমরা এত বেশি মানুষকে আমাদের দেশে আশ্রয় দিয়েছি, তখন কীভাবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় অভিযোগ করে যে আমরা নিজেদের দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন করছি?’ প্রশ্ন করেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘সুতরাং এসব অভিযোগ পুরোপুরি বানোয়াট। আমরা জানি না, কেন তারা এসব করছে? আমার নিজেরও প্রশ্ন, কেন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ আনা হয়েছে?’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শৈত্যপ্রবাহে কাঁপছে গোপালগঞ্জ

রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় জিয়াউর রহমানের পাশে খালেদা জিয়ার দাফন সম্পন্ন

দুই উপদেষ্টার ‘গ্রিন সিগন্যাল’ পেয়েও দেশে আসতে পারেননি সাকিব

ভারতে চলন্ত গাড়িতে ২ ঘণ্টা দলবদ্ধ ধর্ষণের পর ছুড়ে ফেলা হলো রাস্তায়

এরশাদের ১২৬টি আসনের টোপ প্রত্যাখ্যান করে সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন খালেদা জিয়া

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নাহিদ শিক্ষকতা ও পরামর্শ দিয়ে বছরে আয় করেন ১৬ লাখ টাকা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৪৫
এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত
এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম তাঁর হলফনামায় বর্তমান পেশা হিসেবে পরামর্শক ও আগের পেশা অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা উল্লেখ করেছেন। আর তিনি শিক্ষকতা ও পরামর্শ দিয়ে বছরে আয় করেন ১৬ লাখ টাকা। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১১ আসনে প্রার্থী হিসেবে হলফনামায় এমন তথ্য দিয়েছেন তিনি।

শিক্ষাগত যোগ্যতায় উল্লেখ করেছেন স্নাতক। তাঁর স্ত্রী ফাতিমাতুজ জোহরা পেশায় গৃহিণী।

অস্থাবর সম্পদে নাহিদ উল্লেখ করেছেন, নগদ অর্থ আছে ১৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা। স্ত্রীর কাছে আছে ২ লাখ টাকা। ব্যাংকে আছে ৩ লাখ ৮৫ হাজার ৩৬৩ টাকা ৫৭ পয়সা। নিজের কাছে অর্জনকালীন পৌনে ৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকার গয়না আছে। স্ত্রীর কাছে আছে অর্জনকালীন ১০ লাখ টাকা মূল্যের গয়না। এ ছাড়া ১ লাখ টাকার ইলেকট্রনিক পণ্য আছে এবং আসবাবপত্র আছে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকার।

আয়কর রিটার্নে নাহিদ ৩২ লাখ ১৬ হাজার ১২২ টাকার সম্পদের হিসাব দিয়েছেন। আয়কর দিয়েছেন ১ লাখ ১৩ হাজার ২৭৪ টাকা।

স্থাবর সম্পদে তিনি কোনো কিছু উল্লেখ করেননি। সব ঘরে প্রযোজ্য নয় লিখেছেন। ঋণের তথ্যে তিনি উল্লেখ করেছেন, নির্ভরশীল ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ (স্ত্রী) ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের রামপুরা শাখা থেকে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শৈত্যপ্রবাহে কাঁপছে গোপালগঞ্জ

রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় জিয়াউর রহমানের পাশে খালেদা জিয়ার দাফন সম্পন্ন

দুই উপদেষ্টার ‘গ্রিন সিগন্যাল’ পেয়েও দেশে আসতে পারেননি সাকিব

ভারতে চলন্ত গাড়িতে ২ ঘণ্টা দলবদ্ধ ধর্ষণের পর ছুড়ে ফেলা হলো রাস্তায়

এরশাদের ১২৬টি আসনের টোপ প্রত্যাখ্যান করে সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন খালেদা জিয়া

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তারেক রহমানের বাড়ি-গাড়ি নেই, আছে ১ কোটি ৯৬ লাখ টাকার সম্পদ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৪৬
তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত
তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নগদ ও ব্যাংকে জমা আছে ৩১ লাখ ৫৮ হাজার ৪২৮ টাকা। স্ত্রী জুবাইদা রহমানের আছে ৬৬ লাখ ৫৪ হাজার ৭৪৭ টাকা। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৬ ও ঢাকা-১৭ আসনের প্রার্থী হিসেবে জমা দেওয়া হলফনামায় অস্থাবর সম্পদের তিনি এমন হিসাব দিয়েছেন।

হলফনামায় পেশা হিসেবে তারেক রহমান রাজনীতি উল্লেখ করেছেন। স্ত্রী জুবাইদা রহমান পেশায় চিকিৎসক। মেয়ে জাইমা জারনাজ রহমান ছাত্রী।

হলফনামা অনুযায়ী, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আয়কর রিটার্নে ১ কোটি ৯৬ লাখ ৮০ হাজার ১৮৫ টাকার সম্পদের হিসাব দিয়েছেন। আর আয়কর দিয়েছেন ৫ লাখ ৫৭ হাজার ৭১৩ টাকা।

দেশে-বিদেশে আয়ের উৎসে দেখিয়েছেন, বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট ও বাণিজ্যিক স্থান নেই। শেয়ার, বন্ড/সঞ্চয়পত্র/ব্যাংক আমানত থেকে বছরে আয় করেন ৬ লাখ ৭৬ হাজার ৩৫৩ টাকা।

অস্থাবর সম্পদে তারেক রহমান আরও উল্লেখ করেছেন, স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির অর্জনকালীন সময়ে শেয়ার আছে ৫ লাখ টাকার, কোম্পানির শেয়ার ৪৫ লাখ টাকার, কোম্পানি আছে ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকার।

তারেক রহমানের ব্যাংকে নিজ নামে ৯০ লাখ ২৪ হাজার ৩০৭ টাকার এফডিআর, সঞ্চয়ী আমানত ২০ হাজার ও অন্যান্য আমানত আছে ১ লাখ টাকার। স্ত্রীর নামে আছে ৩৫ লাখ টাকার এফডিআর, সঞ্চয়ী আমানত আছে ১৫ হাজার ২৬০ টাকার।

অর্জনকালীন ২ হাজার ৯৫০ টাকা মূল্যের গয়না ও ১ লাখ ৭৯ হাজার ৫০০ টাকার আসবাবপত্র আছে।

স্থাবর সম্পদে উল্লেখ করেছেন, নিজের কোনো কৃষিজমি নেই। ২ দশমিক ০১ একর ও ১ দশমিক ৪ শতাংশ অকৃষিজমি আছে; যার অর্জনকালীন মূল্য ৩ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। উপহারের আবাসস্থলের জমি আছে ২ দশমিক ৯ শতাংশ ৷ স্ত্রীর আছে যৌথ মালিকানার ১১১ দশমিক ২৫ শতাংশ জমি ও ৮০০ বর্গফুট দোতলা ভবন; যার মূল্য অজানা।

তারেক রহমান তাঁর হলফনামায় আরও উল্লেখ করেছেন, তিনি দ্বৈত নাগরিক নন। শিক্ষাগত যোগ্যতা উচ্চমাধ্যমিক। বর্তমানে কোনো ফৌজদারি মামলা নেই। ২০০৭ সাল থেকে তাঁর নামে ৭৭টি মামলা করা হয়েছিল, যার কোনোটি থেকে খালাস, কোনোটি প্রত্যাহার, কোনোটি খারিজ, কোনোটি থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন।

ইসির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গতকাল মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ছিল। বাছাই চলবে ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে ৫ থেকে ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত। আপিল নিষ্পত্তি হবে ১০ থেকে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২০ জানুয়ারি। চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ ও প্রতীক বরাদ্দ ২১ জানুয়ারি। নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হবে ২২ জানুয়ারি। প্রচার চালানো যাবে ১০ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত। আর একই সঙ্গে সংসদ ও গণভোট অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শৈত্যপ্রবাহে কাঁপছে গোপালগঞ্জ

রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় জিয়াউর রহমানের পাশে খালেদা জিয়ার দাফন সম্পন্ন

দুই উপদেষ্টার ‘গ্রিন সিগন্যাল’ পেয়েও দেশে আসতে পারেননি সাকিব

ভারতে চলন্ত গাড়িতে ২ ঘণ্টা দলবদ্ধ ধর্ষণের পর ছুড়ে ফেলা হলো রাস্তায়

এরশাদের ১২৬টি আসনের টোপ প্রত্যাখ্যান করে সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন খালেদা জিয়া

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাসনাতের বছরে আয় সাড়ে ১২ লাখ টাকা, ব্যাংকে ২৬ লাখ টাকার সোনা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। ছবি: সংগৃহীত
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহর বছরে আয় ১২ লাখ ৫৩ হাজার ৫৩৯ টাকা। তাঁর পেশা ব্যবসা। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-৪ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হলফনামায় এসব তথ্য উল্লেখ করেন তিনি।

হলফনামায় শিক্ষাগত যোগ্যতা দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে এমএ। তিনি উল্লেখ করেছেন স্ত্রী সাবরিনা জাহান নুসরাত পেশায় গৃহিণী। হাম্মাম আব্দুল্লাহ হামজা নামে এক পুত্রসন্তান রয়েছে।

অস্থাবর সম্পদে হাসনাত উল্লেখ করেছেন, নগদ আছে ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ব্যাংকে আছে ৩ লাখ ৩ হাজার টাকা। গয়না আছে ২৬ লাখ টাকার। ইলেকট্রনিক পণ্য আছে ৬৫ হাজার টাকার। আসবাব আছে ১ লাখ টাকার।

স্থাবর সম্পদে তিনি কোনো কিছু উল্লেখ করেননি। লিখেছেন, ‘প্রযোজ্য নয়’।

আয়কর রিটার্নে তিনি ৩১ লাখ ৬৭ হাজার ৬১৯ টাকার সম্পদ দেখিয়েছেন। আয়কর দিয়েছেন ১ লাখ ৫ হাজার ৫৩১ টাকা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শৈত্যপ্রবাহে কাঁপছে গোপালগঞ্জ

রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় জিয়াউর রহমানের পাশে খালেদা জিয়ার দাফন সম্পন্ন

দুই উপদেষ্টার ‘গ্রিন সিগন্যাল’ পেয়েও দেশে আসতে পারেননি সাকিব

ভারতে চলন্ত গাড়িতে ২ ঘণ্টা দলবদ্ধ ধর্ষণের পর ছুড়ে ফেলা হলো রাস্তায়

এরশাদের ১২৬টি আসনের টোপ প্রত্যাখ্যান করে সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন খালেদা জিয়া

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার প্রয়াণে ছায়ানট ও উদীচীর শোক প্রকাশ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
খালেদা জিয়ার প্রয়াণে ছায়ানট ও উদীচীর শোক প্রকাশ

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করেছে দেশের সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানট ও বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী।

এক বিজ্ঞপ্তিতে ছায়ানট জানায়, দেশের গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের আন্দোলনে বেগম খালেদা জিয়ার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য সংগঠনটি কৃতজ্ঞচিত্তে তাঁকে স্মরণ করছে। শোকবার্তায় ছায়ানটের সভাপতি সারওয়ার আলী বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার প্রয়াণ জাতির জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি।

এদিকে, এক পৃথক শোকবার্তায় বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর কেন্দ্রীয় সংসদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদ সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যু দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের একটি বর্ণিল অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটিয়েছে।

শোকবার্তায় উদীচীর নেতারা উল্লেখ করেন, ১৯৮০–এর দশকে স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনে বেগম খালেদা জিয়া অনন্য ভূমিকা পালন করেন। সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান হত্যাকাণ্ডের পর তিনি বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে সক্রিয় হন। ধারাবাহিক গণ-আন্দোলনের মুখে স্বৈরাচারী এরশাদের পতনের পর অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে তিনি দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন।

বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর নেতারা বেগম খালেদা জিয়ার শোকসন্তপ্ত পরিবার ও তাঁর রাজনৈতিক সহযোদ্ধাদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শৈত্যপ্রবাহে কাঁপছে গোপালগঞ্জ

রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় জিয়াউর রহমানের পাশে খালেদা জিয়ার দাফন সম্পন্ন

দুই উপদেষ্টার ‘গ্রিন সিগন্যাল’ পেয়েও দেশে আসতে পারেননি সাকিব

ভারতে চলন্ত গাড়িতে ২ ঘণ্টা দলবদ্ধ ধর্ষণের পর ছুড়ে ফেলা হলো রাস্তায়

এরশাদের ১২৬টি আসনের টোপ প্রত্যাখ্যান করে সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন খালেদা জিয়া

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত