Ajker Patrika

এটা কি গণতন্ত্রের ভাষা!

সম্পাদকীয়
এটা কি গণতন্ত্রের ভাষা!

‘প্রশাসন উঠবে-বসবে আমাদের কথায়’—এ রকম একটি বক্তব্য দিয়ে জামায়াত নেতা শাহজাহান চৌধুরী কী বোঝাতে চাইলেন, তা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা চলছে। দেশের সব পত্রিকায় তা প্রকাশিত হয়েছে। ইলেকট্রনিক মিডিয়ায়ও তা ছড়িয়ে গেছে। এটা যে গণতন্ত্রের ভাষা নয়, বরং এই মনোভাবের মধ্যে ফ্যাসিবাদ উঁকি দেয়, সে কথা সবাই স্বীকার করবেন। শাহজাহান চৌধুরী যদি জামায়াতের দ্বিতীয় বা তৃতীয় সারির নেতা হতেন, তাহলে এই বক্তব্য নিয়ে খুব বেশি সমালোচনা হতো না। সমর্থকদের চাঙা রাখতে তাঁদের কেউ কেউ উদ্ধত আচরণ করে থাকেন। কিন্তু তাই বলে মূল নেতাদের ভাষা কি এ রকম হবে?

চট্টগ্রাম নগরের জিইসি কনভেনশন হলে শনিবার জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত ‘নির্বাচনী দায়িত্বশীল সম্মেলন’-এ শাহজাহান চৌধুরী যে বক্তব্য দেন, জামায়াত সেটা শাহজাহান চৌধুরীর নিজস্ব বক্তব্য বলে অভিহিত করেছে। কিন্তু দলের জ্যেষ্ঠ একজন নেতার এই বক্তব্য জনমনে প্রশ্ন তুলতে বাধ্য।

জামায়াত নেতা যা বলেছেন, তার লিখিত ও অডিও বার্তা প্রকাশিত হয়েছে। এটি কোনো বক্তব্য থেকে সুবিধামতো কেটে নেওয়া অংশ নয়, বরং এটাই তাঁর বক্তব্য—সেটা না বোঝার কোনো কারণ নেই। তাই প্রশ্ন উঠেছে, শাহজাহান চৌধুরীর পরিকল্পনামতো আসন্ন নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী কি মূলত পেশিশক্তির ওপর নির্ভর করে বৈতরণি পার হওয়ার চেষ্টা করবে? একটি রাজনৈতিক দলের একজন জ্যেষ্ঠ নেতা যদি এ ভাষায় কথা বলেন, তাহলে সে কথা কোন রূপ নিয়ে তাঁর সমর্থকদের কাছে পৌঁছাবে, সে কথা কি বোঝা কঠিন?

শাহজাহান চৌধুরীর বলা যে কথাগুলো সরাসরি বুকে আঘাত হানে, তার পুনরাবৃত্তি আবশ্যক। কারণ, কথাগুলোর মর্ম এমনই যে এ ধরনের মানসিকতা থেকে সব রাজনৈতিক দল যেন রক্ষা পায়, সেটা সাধারণ জনগণকেও বুঝতে হবে। তিনি বলেছেন, ‘...যার যার নির্বাচনী এলাকায়, প্রশাসনে যারা আছে, তাদের অবশ্যই অবশ্যই আমাদের আন্ডারে নিয়ে আসতে হবে। আমাদের কথায় উঠবে, আমাদের কথায় বসবে, আমাদের কথায় গ্রেপ্তার করবে, আমাদের কথায় মামলা করবে।’ আরও আছে। ‘যার যার নির্বাচনী এলাকায় প্রাইমারি স্কুলের মাস্টারকে দাঁড়িপাল্লার কথা বলতে হবে। উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সমস্ত শিক্ষককে দাঁড়িপাল্লার কথা বলতে হবে। পুলিশকে আপনার পিছনে পিছনে হাঁটতে হবে। ওসি সাহেব আপনার কী প্রোগ্রাম সকালবেলায় জেনে নেবে, আর আপনাকে প্রটোকল দেবে।’

ভাবুন একবার! শাহজাহান চৌধুরী হয়তো ভুলে গেছেন, একটি সরকারের স্বৈরাচারী আচরণে অতিষ্ঠ হয়েই জনগণ গত বছরের

আগস্ট মাসে আন্দোলন করেছিল। প্রশাসন যেন কারও করায়ত্ত না হয়, যেন নিজের গতিতে চলে, সে রকম বন্দোবস্তই তো হওয়ার কথা ছিল। শাহজাহান চৌধুরীর বক্তব্য সরাসরি সেই স্পিরিটকে আঘাত করে। এ ধরনের মনোভাবের মধ্যে নতুন স্বৈরাচারের পদধ্বনি শোনা যায়।

এ থেকে বের হয়ে না এলে কোনো সংস্কার, কোনো পরিবর্তনই ইতিবাচক কোনো পথে দেশকে পৌঁছে দেবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা—জনসংখ্যার তীব্র সংকটে ইউক্রেন

বাংলাদেশি ও পাকিস্তানি শিক্ষার্থী ভর্তি স্থগিত করেছে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়

ভোটের মাঠে: টাঙ্গাইলে নির্বাচনী উত্তাপ

গোপালগঞ্জে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ, ছাত্রীর আত্মহত্যা

খালেদা জিয়াকে নিয়ে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স রওনা হবে শুক্রবার দুপুরে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ