Ajker Patrika

পাখিও তো গান গায়, পাখির নীড় ভাঙবে কবে—সংস্কৃতিকর্মীর জিজ্ঞাসা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডিতে ছায়ানট সংস্কৃতি ভবনের সামনে সংস্কৃতির ওপর আক্রমণের প্রতিবাদ সমাবেশ করেন সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানটির কর্মী ও সদস্যরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডিতে ছায়ানট সংস্কৃতি ভবনের সামনে সংস্কৃতির ওপর আক্রমণের প্রতিবাদ সমাবেশ করেন সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানটির কর্মী ও সদস্যরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

‘মানুষ গান গায়, তাই তাঁর ঘর ভাঙো, বাড়ি ভাঙো, ইশকুল ভাঙো। পাখিও তো গান গায়...পাখির নীড় ভাঙবে কবে?’—এমন প্রশ্ন করেছেন বিপ্লব নামের একজন সংস্কৃতিকর্মী। আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডিতে ছায়ানট সংস্কৃতি ভবনের সামনে সংস্কৃতির ওপর আক্রমণের প্রতিবাদে সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি।

সংস্কৃতিকর্মী বিপ্লব বলেন, ‘‘মানুষ গান গায়, তাই তাঁর ঘর ভাঙো, বাড়ি ভাঙো, ইশকুল ভাঙো। পাখিও তো গান গায়...পাখির নীড় ভাঙবে কবে?’’ আমি এই লেখাসংবলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়েছি। কারণ, মানুষের গান গাওয়াতে যদি ঘরবাড়ি ভাঙা হয়, তার মানে পাখিরাও তো গান গায়, তাই বলে তাদের বাড়িও ভাঙতে হবে? এই অসভ্যতা আমরা এই দেশে চাই না। আমরা এর প্রতিকার চাই।’

আজ মঙ্গলবার বিকেলে গানে গানে সংহতি সমাবেশের আয়োজনের মাধ্যমে সংস্কৃতি স্থাপনার ওপর আক্রমণের প্রতিবাদ জানানো হয়। প্রতিবাদ ও সংহতি সমাবেশে এক হাজারের বেশি মানুষ অংশগ্রহণ করেছেন বলে জানিয়েছেন সংস্কৃতিকর্মী পার্থ তানভীর।

প্রতিবাদী সংহতি সমাবেশে ‘চল চল চল! ঊর্ধ্ব গগনে বাজে মাদল’, ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে, তবে একলা চলো রে’, ‘মানুষ ছাড়া ক্ষ্যাপা রে তুই মূল হারাবি’, ‘তীরহারা এই ঢেউয়ের সাগর পাড়ি দেবো রে’, ‘আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম আমরা’, ‘মোরা ঝঞ্ঝার মতো উদ্দাম, মোরা ঝর্ণার মত চঞ্চল, মোরা বিধাতার মতো নির্ভয়, মোরা প্রকৃতির মতো সচ্ছল’, ‘মানুষ হ, মানুষ হ, আবার তোরা মানুষ হ’-সহ নানান গান গাওয়া হয়। এরপরে জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে সমাপ্তি করা হয় সংহতি সমাবেশ।

ছায়ানটের সাধারণ সম্পাদক সংগীতশিল্পী লাইসা আহমদ লিসা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের কথা খুবই স্পষ্ট, এ ধরনের আক্রমণের আমরা তীব্র নিন্দা জানাই। এর আগেও আমরা প্রতিবাদ জানিয়েছি, আজও জানালাম। আমাদের সংস্কৃতিচর্চার পথে কোনো বাধা আমরা মানি না। আমরা আমাদের কাজ করে যাব এবং আশা রাখি, আপনাদের মতো মিডিয়া থেকে শুরু করে সারা দেশের মানুষ আমাদের সঙ্গে আছেন এবং থাকবেন। আমাদের যাত্রাপথ নির্বিঘ্ন রাখবই, আপনাদের সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে চলবই। সকলের মঙ্গল হোক।’

ছায়ানট ভবন আক্রান্ত হওয়ার প্রতিবাদে দেশের শিল্পী-সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী ও সংস্কৃতি অনুরাগী যাঁরা আজকের সংহতি সমাবেশে যোগদান করেছেন, তাঁদের ধন্যবাদ জানিয়ে ছায়ানট সভাপতি সারওয়ার আলী বলেন, ‘উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী ও সাম্প্রতিককালে দেশের বাউলসমাজের ওপরও একটি মহল সহিংস আক্রমণ চালিয়েছে। সেই সঙ্গে তারা বিভ্রান্তিকর অপপ্রচার চালিয়ে আবহমান বাংলার সংস্কৃতিচর্চা থেকে আমাদের নিবৃত্ত করতে উদ্যত। এসব কর্মকাণ্ড বাঙালি জাতিসত্তা ও সংস্কৃতির ওপরে আঘাত হানছে।’

ছায়ানট সভাপতি আরও বলেন, ‘গণমাধ্যমের ওপর বেপরোয়া আক্রমণ এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘটে চলা শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত নিরপরাধ হত্যা দেশবাসীর নিরাপত্তা বিপন্ন করছে। এমন পরিস্থিতিতে আমাদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে যোগ্য কর্মোদ্যোগ গ্রহণ জাতিসত্তা ও সংস্কৃতি সুরক্ষায় সমাজকে সক্রিয় করে তুলবে। নিরাপত্তাহীনতার অবসান ঘটুক। বাঙালির সংস্কৃতির যাত্রাপথ নির্বিঘ্ন হোক। দেশে ও বিদেশের যে অগণিত মানুষ আমাদের প্রতিবাদের প্রতি সংহতি জানিয়েছেন, ছায়ানট তাঁদের কাছে কৃতজ্ঞ।’

সংস্কৃতিকর্মী হামিন আহমেদ বলেন, ‘চাপিয়ে দেওয়ার মতবাদ কখনো গ্রহণ করিনি আর করবও না। আমাদের সংস্কৃতি ব্যাহত করতে কেউ পারবে না।’

শিরোনামহীন ব্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান জিয়া বলেন, ‘সংস্কৃতির ওপর আগ্রাসন মানব না। শৃঙ্খলার মধ্যে আসতে চাই। দরকার হলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল রোডম্যাপ দিক—সংস্কৃতি কীভাবে চলবে সেই ব্যাপারে। কেউ যদি সংস্কৃতি বন্ধ করে দিতে চায়, সেটাও বলুক। কিন্তু এমন আক্রমণ মানা হবে না।’

সংস্কৃতিকর্মী সম্রাট বলেন, ‘আমরা আর্টিস্ট যারা আছি, আমরা চাই স্বাধীনতা। আর্ট করার মতো স্বাধীনতা চাই। আমরা যাতে বাধাবিপত্তি ছাড়াই করতে পারি, সেটাই চাই।’

সংস্কৃতিকর্মী বান্টি বলেন, ‘গানের মাধ্যমে আমরা প্রতিবাদ জানিয়েছি। সব সময় বাঙালিরা প্রতিবাদ জানাই। সেটা বাদ্যযন্ত্রের মাধ্যমে। খুব কমসংখ্যক মানুষ শান্তি চায় না, তারাই এগুলো আক্রমণ করে।’

সংস্কৃতিকর্মী ইতি গোমস্তা বলেন, ‘এই ন্যক্কারজনক ঘটনায় আমরা ব্যথিত হয়েছি। আমরা কোনো ধরনের অন্যায় আপস করি না, অন্যায়মূলক কাজও করি না। তাই সামনে অন্যায় কাজ হলে প্রতিবাদ করেই যাব।’

বাঙালি সংস্কৃতিচর্চার অন্যতম প্রধান বাতিঘর এই ‘ছায়ানটে’ গত বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) গভীর রাতে একদল উন্মত্ত জনতা রাজধানীর ধানমন্ডির শংকর এলাকায় অবস্থিত ছায়ানট সংস্কৃতি ভবনে ভয়াবহ হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিকাণ্ড ও লুটপাট চালায়। অসাম্প্রদায়িক চেতনার ধারক এই প্রতিষ্ঠানের ওপর এমন আঘাত দেশের সাংস্কৃতিক ও সচেতন মহলে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

ওই আক্রমণের ঘটনায় গত শুক্রবার ৩০০ থেকে ৩৫০ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির বিরুদ্ধে ধানমন্ডি থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। মামলাটি করেন ছায়ানটের প্রধান ব্যবস্থাপক দুলাল ঘোষ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের ৯ শতাংশ নারী ধর্ষণের শিকার: বিএনপিএস

কক্সবাজার প্রতিনিধি
কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলের সম্মেলনকক্ষে আজ বুধবার বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ আয়োজিত গোল টেবিল বৈঠক। ছবি: আজকের পত্রিকা
কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলের সম্মেলনকক্ষে আজ বুধবার বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ আয়োজিত গোল টেবিল বৈঠক। ছবি: আজকের পত্রিকা

কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে বসবাস করা ৫৫ শতাংশ নারী ও কন্যা শিশু প্রতিনিয়ত সুরক্ষা, শিক্ষা, পুষ্টি ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। শুধু তা-ই নয়, সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, আশ্রয়শিবিরগুলোয় ৯ শতাংশ নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন।

আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলের সম্মেলনকক্ষে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস) আয়োজিত গোল টেবিল বৈঠকে এ তথ্য তুলে ধরে সংস্থাটি।

বিএনপিএসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সাল থেকে ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। বর্তমানে তারা কক্সবাজারের ৩৩টি শিবিরে বসবাস করছে, যা বিশ্বে বৃহত্তম শরণার্থী আশ্রয়স্থলগুলোর একটি। এই জনগোষ্ঠীর ৫২ শতাংশের বেশি নারী ও কন্যা।

সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়ে আট বছরেরও বেশি সময়ে কক্সবাজারের প্রায় ৫ লাখ মানুষ নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই দীর্ঘস্থায়ী সংকটের প্রভাবে স্থানীয় জনগোষ্ঠী জীবিকা, মজুরি, বন ও জলসম্পদ, স্বাস্থ্যসেবা এবং সামাজিক সংহতির ওপর ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে পড়েছে। ফলে এটি শুধু শরণার্থী সংকট নয়; এটি মানবিকতা, উন্নয়ন এবং শান্তির এক যৌথ চ্যালেঞ্জ।

‘শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর অধিকার ও দায়িত্ব’ শীর্ষক এ গোল টেবিল বৈঠক সঞ্চালনা করেন বিএনপিএসের উপপরিচালক নাসরিন বেগম। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (যুগ্ম সচিব) মোহাম্মদ শামসুদ্দৌজা নয়ন। এ ছাড়া শরণার্থী ত্রান ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব এম এ সানোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ পরিবশে আন্দোলন (বাপা) কক্সবাজারের সাধারণ সম্পাদক কলিম উল্লাহ, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য হুমায়রা বেগমসহ সংশ্লিষ্টরা বক্তব্য রাখেন।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় শামসুদ্দৌজা নয়ন বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আন্তর্জাতিক অর্থ সহায়তা কমে এসেছে। এর ফলে সামাজিক নিরাপত্তা সংকট তৈরি হচ্ছে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন নারীরা।

গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপত্তা, খাদ্য, আশ্রয়, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং ও সহিংসতা থেকে সুরক্ষার অধিকার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কাঠামোর অধীনে নিশ্চিত করা নৈতিক ও আইনগত দায়িত্ব। একইভাবে, আশ্রয়দাতা সম্প্রদায়েরও টেকসই উন্নয়ন, পরিবেশ সুরক্ষা, সম্মানজনক কাজ এবং জনসেবায় ন্যায্য প্রবেশাধিকারের জরুরি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যবিপ্রবির প্রথম উপাচার্য রফিকুল ইসলাম মারা গেছেন

­যশোর প্রতিনিধি
মো. রফিকুল ইসলাম সরকার। ছবি: সংগৃহীত
মো. রফিকুল ইসলাম সরকার। ছবি: সংগৃহীত

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরকার মারা গেছেন (ইন্না...রাজিউন)। আজ বুধবার সকালে ঢাকার নিজ বাসা থেকে বের হয়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর তাঁকে একটি বেসরকারি বিশেষায়িত হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরকার যবিপ্রবি স্থাপন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক। পরবর্তীতে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। সেখানে তিনি কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি কৃষিবিদ গ্রুপের চেয়ারম্যান ও যবিপ্রবির রিজেন্ট বোর্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

এ ছাড়া তিনি একজন কৃষি বিজ্ঞানী এবং প্রকৌশলী হিসেবে দেশের কৃষি খাতের যান্ত্রিকীকরণ ও আধুনিকায়নে দীর্ঘ পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে কৃতিত্বের সঙ্গে অবদান রেখেছেন।

এদিকে, ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরকারের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মজিদ ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. হোসেন আল মামুন, রিজেন্টবোর্ড সদস্যবৃন্দসহ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার।

এক শোক বার্তায় যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মজিদ বলেন, রফিকুল ইসলাম সরকার ছিলেন একজন সৎ, মানবিক, ধর্মভীরু ও দায়িত্বশীল মানুষ। যবিপ্রবির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আজ অবধি তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নতিতে নিরলস পরিশ্রম করেছেন।

তিনি ছিলেন একজন দক্ষ প্রশাসক এবং বরেণ্য কৃষি বিজ্ঞানী। যবিপ্রবির সূচনালগ্নে তার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও দূরদর্শী পরিকল্পনা বিশ্ববিদ্যালয়টিকে আজকের এই অবস্থানে পৌঁছাতে ভিত গড়ে দিয়েছে। প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য হিসেবে তিনি শূন্য থেকে একটি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার যে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছিলেন, তা যবিপ্রবি কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ১০ কিলোমিটার যানজট

সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ২৪
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে কাঁচপুর সেতু থেকে লাঙ্গলবন্দ পর্যন্ত ১০ কিলোমাটার যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সকালে একটি ট্রাক দুর্ঘটনার পর দীর্ঘ সময় সড়কে যান চলাচল ব্যাহত হওয়ায় এ যানজট তৈরি হয়।

এতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে আটকে থেকে যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী ট্রাক, ব্যক্তিগত যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। রাত সাড়ে ৯টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মহাসড়কে যানজট দেখা গেছে।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী জানান, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে লাঙ্গলবন্দ ব্রিজ এলাকায় একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেতুর রেলিংয়ে সজোরে আঘাত করে। ট্রাকটিতে প্রায় ২৭ টন মালামাল বোঝাই ছিল। দুর্ঘটনায় সেতুর রেলিং ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

তিনি আরও জানান, ট্রাকটিতে অতিরিক্ত মালামাল থাকায় রেকার দিয়ে সরানো সম্ভব হয়নি। ফলে প্রথমে অন্য একটি ট্রাকে মালামাল স্থানান্তরের কাজ শুরু করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় দীর্ঘ সময় লাগায় দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাকটি বিকেলের আগে সরানো যায়নি। এর ফলে ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের চট্টগ্রামমুখী লেনে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়েছে।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা

পণ্যবাহী ট্রাকচালক শাহ আলম জানান, দুর্ঘটনার কারণে রাস্তা বন্ধ ছিল বুঝতে পারছি। কিন্তু এত সময় লাগবে ভাবিনি। মালামাল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। এতে আর্থিক ক্ষতিও হচ্ছে।

আরেক যাত্রী আক্তার হোসেন বলেন, আমি চট্টগ্রামে যাচ্ছি। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পৌঁছানোর কথা ছিল। কিন্তু তিন ঘণ্টা ধরে একই জায়গায় আটকে আছি। ছোট বাচ্চা নিয়ে খুব বিপদে পড়েছি।

কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দুর্ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশের একাধিক টিম কাজ শুরু করে। বিকেল নাগাদ মালামাল সরিয়ে ট্রাকটি সড়ক থেকে অপসারণ করা হলে ধীরে ধীরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আমাদের একাধিক টিম কাজ করছে। টানা তিন দিনের ছুটি থাকায় মহাসড়কে গাড়ির চাপ বেশি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মগবাজারে ককটেল বিস্ফোরণে নিহতের মরদেহ ঢামেক মর্গে

ঢামেক প্রতিবেদক
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ৪৫
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর মগবাজারে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত সিয়াম মজুমদারের (২১) মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে। আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে হাতিরঝিল থানা পুলিশ মরদেহটি হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন।

হাতিরঝিল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাইদুর রহমান জানান, সিয়াম মজুমদারের (২১) বাড়ি খুলনার দিঘুলিয়া উপজেলার কলোনীতে। তার বাবার নাম আলী আকবর মজুমদার। পরিবারের সাথে নিউ ইস্কাটন দুই হাজার গলির ১০১ নম্বর বাসায় থাকতেন। আগামীকাল বৃহস্পতিবার তার মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হবে।

নিহত সিয়ামের সহকর্মী অহিদুল হাওলাদার জানান, নিউ ইস্কাটনে ‘জাহিদ কার ডেকোরেশনের’ কর্মচারী সিয়াম। গত ৩-৪ বছর যাবৎ এখানে কাজ করে সে। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে দোকানে কাজ সেরে চা পান করার জন্য বের হয়েছিল সিয়াম। চা পান করেই চলে আসবে। এর আধাঘণ্টা পর দোকানে এসে কয়েকজন খবর দেয়, তাদের দোকানের কর্মচারী সিয়াম মারা গেছে। রাস্তায় তার মরদেহ পড়ে আছে। সঙ্গে সঙ্গে তারা দোকান থেকে ঘটনাস্থলে গিয়ে সিয়ামের রক্তাক্ত মৃতদেহ দেখতে পান। সিয়াম অবিবাহিত ছিল। তার বাবা সিএনজি অটোরিকশা চালক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত