Ajker Patrika

সরকারি মাঠে খেলতে ৮ হাজার টাকা

  • ‘বাণিজ্যিকীকরণের’ চরমে গুলশান ইয়ুথ ক্লাব।
  • সরকারের সাড়ে ৮ কোটি টাকায় উন্নয়নকাজ।
  • আদালতের রায়ের পরও ক্লাবের কবলে পার্ক।
  • টাকা দিয়েও অনেক সময় ব্যবহার করা যায় না।
তোফাজ্জল হোসেন রুবেল, ঢাকা 
আপডেট : ০৬ মার্চ ২০২৫, ০৮: ০৪
সিটি করপোরেশনের মালিকানাধীন মাঠের ব্যবস্থাপনা করে থাকে গুলশান ইয়ুথ ক্লাব। এই মাঠে খেলতে দিতে হয় টাকা। সম্প্রতি সেই ফি অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। ছবি: সংগৃহীত
সিটি করপোরেশনের মালিকানাধীন মাঠের ব্যবস্থাপনা করে থাকে গুলশান ইয়ুথ ক্লাব। এই মাঠে খেলতে দিতে হয় টাকা। সম্প্রতি সেই ফি অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। ছবি: সংগৃহীত

কাজের ব্যস্ততায় একমাত্র ছেলেকে তেমন সময় দিতে পারেন না সরকারি চাকুরে সায়মা মুসলিমীন। তাই ছেলের বিনোদনের জন্য বেছে নিয়েছেন খেলার মাঠ। রাজধানীর গুলশান এলাকার বাসিন্দা সায়মা ‘গুলশান ইয়ুথ ক্লাব’-এর ব্যবস্থাপনায় থাকা সিটি করপোরেশনের মালিকানাধীন মাঠে পাঠান সন্তানকে। কিন্তু এ জন্য ক্রমবর্ধমান ব্যয় তাঁর জন্য রীতিমতো বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এককালের সর্বসাধারণের জন্য থাকা মাঠটিতে একপর্যায়ে ফি দিয়ে খেলার ব্যবস্থা চালু হয়েছিল। সম্প্রতি সেই ফি অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের মাঠ ব্যবহারের ফির নামে অস্বাভাবিক হারে অর্থ আদায়ে সায়মাসহ এলাকার অনেক সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ।

‘গুলশান ইয়ুথ ক্লাব’-এর ওয়েবসাইট ঘেঁটে ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) সঙ্গে ক্লাবের চুক্তির সময় মাঠ ব্যবহারের জন্য নামমাত্র একটি ফি নির্ধারিত হয়। এখন তা বাড়িয়ে অধিকাংশ মানুষের জন্য অসহনীয় পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বছরখানেক ধরে ক্রিকেট খেলার জন্য পরিশোধ করতে হয় দুপুরে ৩ হাজার টাকা আর বিকেলে ৪ হাজার টাকা। দেড় ঘণ্টা ফুটবল খেলার জন্য দুপুরে ৫ হাজার টাকা এবং বিকেলে ৮ হাজার টাকা লাগে। ৪৫ মিনিট টেনিস খেলার জন্য দুপুরে হলে ৮ হাজার টাকা আর বিকেলে হলে ১০ হাজার টাকা। সুইমিংপুল ব্যবহারের জন্য ভর্তি হতে লাগবে ৫ হাজার টাকা। প্রতি ঘণ্টা পুল ব্যবহারের জন্য গুনতে হবে ৭০০ টাকা।

যেভাবে নাগরিকের ‘হাতছাড়া’ মাঠ

এলাকার কয়েকজন স্থায়ী ও পুরোনো বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সর্বসাধারণের এ মাঠটি মূলত ডিএনসিসির সাবেক মেয়র ব্যবসায়ী আতিকুল ইসলামের হাত ধরে স্থানীয় এলিট শ্রেণির নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। এর পর থেকে ধীরে ধীরে মাঠে সাধারণ মানুষের খেলাধুলার অধিকার ক্ষুণ্ন হতে থাকে। এখন বিনা মূল্যে মাঠের একাংশে সকাল-সন্ধ্যার হাঁটাহাঁটি ছাড়া সাধারণের জন্য কোনো সুযোগ নেই। এ ছাড়া বাইরের কাউকে সাময়িকভাবে ভাড়া দেওয়ার কারণে মাঝে মাঝেই সাধারণ মানুষ মাঠ ব্যবহারের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়। যেমন, গত ১৯ থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ‘স্পোর্টস ফেস্ট উল্লাস’ নামের একটি ইভেন্টের জন্য মাঠ ভাড়া দেওয়া হয়েছিল। এসব কারণে টাকা দেওয়ার পরও সব সময় নির্বিঘ্নে মাঠ ব্যবহারের নিশ্চয়তা নেই। ভুক্তভোগীরা বলেছেন, এসব বিষয় নিয়ে কোনো কর্তৃপক্ষের কাছে নালিশ করারও সুযোগ নেই তাঁদের।

রাজউক ও ডিএনসিসি সূত্রে জানা যায়, গুলশান ২ নম্বরে অবস্থিত পার্ক তথা খেলার মাঠটির আয়তন ৯ একরের মতো। রাজউক থেকে জায়গাটি ডিএনসিসির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল। ডিএনসিসি প্রায় সাড়ে ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে এর একাংশে নানা রকম খেলার আধুনিক ব্যবস্থা করে ২০২২ সালের ১৯ ডিসেম্বর উদ্বোধন করে। এ মাঠে আছে টেনিস কোর্ট, ইনডোর ব্যাডমিন্টন কোর্ট, বাস্কেটবল মাঠ, জিমনেশিয়াম, স্কেটিং জোন, লেডি’স কর্নার, অ্যাডভেঞ্চার হাট (খোলা জায়গা) ইত্যাদি। রাজউক জায়গাটি সিটি করপোরেশনকে দেওয়ার পর মাঠের ব্যবহার নিয়ে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান গুলশান ইয়ুথ ক্লাবের সঙ্গে তাদের চুক্তি হয়। এর পর থেকে ধীরে মাঠের নিয়ন্ত্রণ ক্লাবটির হাতেই চলে যেতে থাকে। একপর্যায়ে ক্লাব কর্তৃপক্ষ তা ধীরে ধীরে ‘সংরক্ষিত’ এলাকায় পরিণত করে।

আদালতের রায় উপেক্ষিত

এলাকার মানুষ জানিয়েছেন, মাঠটির দখল নিতে গুলশান ইয়ুথ ক্লাব কর্তৃপক্ষ অনেক আগে থেকেই নানা পরিকল্পনা করে আসছিল। রাজউক মাঠটি তাদের মালিকানাধীন থাকা অবস্থায় পার্কের জায়গা থেকে অনুপ্রবেশকারী ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের নোটিশ দিয়েছিল। ওই নোটিশের আইনগত বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ক্লাব কর্তৃপক্ষ ২০১৩ সালের মার্চে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করেন। আদালত ২০২২ সালের ৩১ আগস্ট ওই রিট আবেদনের রায়ে বলেন, পার্কের জায়গা দখলের কোনো আইনগত অধিকার ইয়ুথ ক্লাবের নেই। প্লটটি গুলশান মডেল টাউনের লে-আউট অনুযায়ী পার্কের জায়গা হিসেবেই চিহ্নিত। এটি পার্ক হিসেবে থাকবে। কোনো অবস্থাতেই প্লটে কোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না। পার্ক ছাড়া অন্য কোনো কাজে প্লট ব্যবহার করা যাবে না। উচ্চ আদালত পার্কটি পুনরুদ্ধার করারও নির্দেশ দেন। পার্ক রক্ষায় প্লটে থাকা সব অনুমোদনহীন কাঠামো ভেঙে ফেলারও নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু বাস্তবে ডিএনসিসির শীর্ষ পর্যায়ের মদদে প্রভাবশালী মহল ক্লাবের নামে নানা স্থাপনা করেছেন সেখানে।

আজকের পত্রিকার এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে ভুক্তভোগী সায়মা মুসলিমীন বলেন, ‘একে তো ইচ্ছেমতো টাকা নিচ্ছে; আবার এরই মধ্যে টাকা দিয়েও সব সময় খেলার মাঠে যাওয়া যাচ্ছে না। ক্লাবের নির্বাহী সদস্যদের নামে নানাভাবে বুকিং দিয়ে তা সংরক্ষণ করা হচ্ছে। এ মাঠ এখন পুরোপুরি ইয়ুথ ক্লাবের লোকজনের ইচ্ছেমতো চলছে। অথচ এই মাঠ ও পার্কের উন্নয়নেই সরকারি কোষাগার থেকে সাড়ে ৮ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে!’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গুলশান ইয়ুথ ক্লাবের প্রেসিডেন্ট হুমায়ূন কবির আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সবকিছুর বাজারমূল্য বেড়েছে। সেই হিসেবে আমাদের মাঠ ব্যবহারের ফি-ও বাড়াতে হয়েছে। এখানে লাভের জন্য কিছু করা হচ্ছে না। যা আয় হয় তা পার্ক ও মাঠ রক্ষণাবেক্ষণের কাজে খরচ করা হয়। এরপরও এ বিষয়ে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি; যাতে মাঠ ব্যবহারের খরচ কিছু কমানো যায়।’

অন্যদিকে মাঠের মালিক ডিএনসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. নুরুজ্জামান বলেন, ‘মাঠ নিয়ে এ ধরনের অভিযোগ আসার পর আমরা তদন্তে নেমেছি। উচ্চ মূল্য আদায়ের অভিযোগের সত্যতাও পাওয়া গেছে। এখন সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে পাকিস্তানের হাইকমিশনারের সৌজন্য সাক্ষাৎ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ২৩
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার। ছবি: প্রেস উইং
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার। ছবি: প্রেস উইং

বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। এ সময় দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার জানান, গত বছরের তুলনায় বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য প্রায় ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। দুই দেশের ব্যবসায়ী সমাজ নতুন নতুন খাতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা নিয়ে কাজ করছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ২০২৬ সালের জানুয়ারি মাস থেকেই ঢাকা-করাচি সরাসরি বিমান চলাচল শুরু হতে পারে।

পাকিস্তানি হাইকমিশনার জানান, বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাকিস্তানে উচ্চশিক্ষার প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। বিশেষ করে চিকিৎসাবিজ্ঞান, ন্যানো টেকনোলজি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নিয়ে পড়ার বিষয়ে অনেক শিক্ষার্থী আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

লিভার ও কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্টের জন্য বাংলাদেশি রোগীদের পাকিস্তানে যাওয়ার হার বাড়ছে উল্লেখ করে ইমরান হায়দার বলেন, পাকিস্তান এ-সংক্রান্ত বিশেষায়িত চিকিৎসাক্ষেত্রে বাংলাদেশের চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা প্রদানের সুযোগ দিতে প্রস্তুত।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান যোগাযোগকে স্বাগত জানান। তিনি সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সাংস্কৃতিক, শিক্ষামূলক এবং সরাসরি জনযোগাযোগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন। পাশাপাশি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য আরও সম্প্রসারণের জন্য নতুন নতুন ক্ষেত্র খুঁজে বের করার পরামর্শ দেন প্রধান উপদেষ্টা।

হাইকমিশনার ইমরান হায়দারের দায়িত্ব পালনকালে দুই দেশের মধ্যে যৌথ বিনিয়োগের নতুন দুয়ার উন্মোচিত হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রধান উপদেষ্টা।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-বিষয়ক (এসডিজি) সমন্বয়কারী ও সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজ রাতে চাঁদপুর ও দক্ষিণাঞ্চলে নৌযান চলাচল বন্ধ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
এমভি কীর্তনখোলা ১০ লঞ্চ। ছবি: সংগৃহীত
এমভি কীর্তনখোলা ১০ লঞ্চ। ছবি: সংগৃহীত

ঘন কুয়াশার কারণে আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) রাতে চাঁদপুর ও দেশের দক্ষিণাঞ্চলে সব ধরনের নৌযান চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।

আজ বিআইডব্লিউটিএর জারি করা এক বিশেষ নৌ চলাচল বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বর্তমানে যেসব লঞ্চ নির্দিষ্ট গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রাপথে রয়েছে, সেসবসহ অন্য সব নৌযানকে অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল বিধিমালা, ১৯৭৬ অনুসরণ করে চলাচল করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, চাঁদপুরের হাইমচরে মেঘনা নদীতে গত বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) রাতে ঘন কুয়াশার কারণে ঢাকাগামী যাত্রীবাহী লঞ্চ এমভি জাকির সম্রাট-৩ ও বরিশালগামী অ্যাডভেঞ্চার-৯ নামে দুই লঞ্চের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় চার যাত্রী নিহত হন এবং আহত হন বেশ কয়েকজন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৬ শিক্ষানবিশ এএসপিকে চাকরি থেকে অপসারণ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
৬ শিক্ষানবিশ এএসপিকে চাকরি থেকে অপসারণ

৪১তম বিসিএস ব্যাচে নিয়োগ পাওয়া ছয় শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারকে (এএসপি) চাকরি থেকে অপসারণ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। অপসারণ করা এএসপিরা হলেন মো. দেলোয়ার হোসেন, মাহমুদুল হক, মো. ইসহাক হোসেন, মো. মশিউর রহমান, মুহাম্মদ রাকিব আনোয়ার ও সাঈদ করিম মুগ্ধ।

আজ রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পুলিশ-১ শাখার জারি করা প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস নিয়োগ বিধিমালার ৬এর ২(এ) বিধি অনুযায়ী ওই ছয় শিক্ষানবিশ এএসপিকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়েছে।

বিধিতে বলা আছে, শিক্ষানবিশ মেয়াদ চলাকালে কেউ সংশ্লিষ্ট চাকরিতে বহাল থাকার অযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হলে সরকারি কর্ম কমিশনের সঙ্গে পরামর্শ না করেই সরাসরি নিয়োগ অবসান করতে পারবে সরকার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সংখ্যালঘু পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের ‘অতিরঞ্জিত’ মন্তব্য প্রত্যাখ্যান বাংলাদেশের

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮: ২৬
সংখ্যালঘু পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের ‘অতিরঞ্জিত’ মন্তব্য প্রত্যাখ্যান বাংলাদেশের

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পরিস্থিতি সম্পর্কে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের সাম্প্রতিক মন্তব্যকে অতিরঞ্জিত বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিসেবে বর্ণনা করে তা প্রত্যাখ্যান করেছে বাংলাদেশ। একই সঙ্গে ভারতের বিভিন্ন মহলকে সংখ্যালঘু বিষয়ে বিভ্রান্তিকর বর্ণনা ছড়ানো থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা।

আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এস এম মাহবুবুল আলম এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন। তিনি বিকেলে সাংবাদিকদের এই বিবৃতির কথা জানান।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পরিস্থিতি সম্পর্কে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের সাম্প্রতিক মন্তব্য আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। তাঁর মন্তব্য বাস্তব পরিস্থিতির প্রতিফলন নয়। বাংলাদেশ সরকারের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দীর্ঘদিনের ঐতিহ্যকে ভুলভাবে উপস্থাপন করে এমন কোনো বিভ্রান্তিকর, অতিরঞ্জিত বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বর্ণনা বাংলাদেশ সরকার স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করে।’

বিচ্ছিন্ন কিছু অপরাধমূলক ঘটনাকে পরিকল্পিতভাবে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর প্রাতিষ্ঠানিক নিপীড়ন হিসেবে উপস্থাপনের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে। এতে আরও বলা হয়, ভারতের বিভিন্ন স্থানে বাংলাদেশবিরোধী মনোভাব ছড়িয়ে দিতে সেটার অপব্যবহার করা হচ্ছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, কিছু মহলে বাছাই করা ও পক্ষপাতদুষ্ট দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে বিচ্ছিন্ন ঘটনাগুলোকে অতিরঞ্জিত ও বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে সাধারণ ভারতীয় জনগণকে বাংলাদেশ, ভারতের বাংলাদেশি কূটনৈতিক মিশন এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে উসকে দেওয়ার অপচেষ্টা চলছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র যে ব্যক্তির উদাহরণ দিয়েছেন, তিনি ছিলেন তালিকাভুক্ত অপরাধী। চাঁদাবাজির সময় তাঁর মুসলিম সহযোগীর সঙ্গে থাকা অবস্থায় তাঁর দুর্ভাগ্যজনক মৃত্যু ঘটে, যাঁকে পরে গ্রেপ্তার করা হয়। এই অপরাধমূলক ঘটনাকে সংখ্যালঘুদের প্রতি আচরণের প্রেক্ষাপটে উপস্থাপন করা বাস্তবসম্মত নয়, বরং বিভ্রান্তিকর।

বাংলাদেশ সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর বর্ণনা ছড়ানো থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ভারতের বিভিন্ন মহলকে বিভ্রান্তিকর বর্ণনা ছড়ানো থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছে, যা সুপ্রতিবেশীসুলভ সম্পর্ক ও পারস্পরিক আস্থার চেতনাকে ক্ষুণ্ন করে।

আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত