Ajker Patrika

জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয়ের কাজ কী, দেশে কেন আপত্তি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৯ জুলাই ২০২৫, ১৬: ৫৩
জেনেভায় ওএইচসিএইচআর-এর সদরদপ্তর। ছবি: সংগৃহীত
জেনেভায় ওএইচসিএইচআর-এর সদরদপ্তর। ছবি: সংগৃহীত

জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয় (ওএইচসিএইচআর), বিশ্বজুড়ে মানবাধিকারের প্রচার ও সুরক্ষায় রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রধান সংস্থা হিসেবে কাজ করে। ১৯৯৩ সালের ডিসেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত এই সংস্থা জাতিসংঘ সচিবালয়ের একটি বিভাগ হিসেবে পরিচালিত হয়। এ সংস্থার ম্যান্ডেট জাতিসংঘের সনদ (ইউএন চার্টার) এবং মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্র থেকে উদ্ভূত।

কাজের ক্ষেত্র

জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয়ের (ওএইচসিএইচআর) কাজ অত্যন্ত বিস্তৃত এবং বহুমুখী। এটির লক্ষ্য হলো সবার জন্য মানবাধিকারকে বাস্তবে রূপ দেওয়া। এই সংস্থার প্রধান প্রধান কাজের ক্ষেত্রগুলো হলো:

সর্বজনীন মানবাধিকার: আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ঐকমত্যের ভিত্তিতে নির্ধারিত এবং জাতিসংঘের মাধ্যমে প্রকাশিত মানবাধিকারের প্রতি অঙ্গীকারকে বাস্তবে রূপ দেওয়া।

মানবাধিকার ইস্যুতে নেতৃত্ব: বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার আলোচনায় একটি কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে, আন্তর্জাতিক ও জাতীয়—উভয় স্তরেই মানবাধিকারের গুরুত্ব তুলে ধরে।

আন্তর্জাতিক সহযোগিতা: মানবাধিকার সুরক্ষায় রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি করা।

জাতিসংঘ ব্যবস্থার কার্যক্রম সমন্বয়: পুরো জাতিসংঘ ব্যবস্থার মধ্যে মানবাধিকার-সংক্রান্ত প্রচেষ্টাকে উৎসাহিত ও সমন্বয় করা।

আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের অনুমোদন ও বাস্তবায়ন প্রচার: রাষ্ট্রগুলোকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার চুক্তিগুলো অনুমোদন এবং সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়নে উৎসাহিত করা।

নতুন মানদণ্ড তৈরি: নতুন মানবাধিকার মানদণ্ড এবং দলিল তৈরিতে সহায়তা করা।

মানবাধিকার সংস্থাগুলোকে সমর্থন: জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থা এবং চুক্তি পর্যবেক্ষণকারী সংস্থাগুলোকে, যেমন—মানবাধিকার কাউন্সিল এবং বিভিন্ন চুক্তি সংস্থা, বাস্তব ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দেওয়া।

গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিক্রিয়া: মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে সক্রিয়ভাবে প্রতিক্রিয়া জানানো এবং এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া।

প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ: সংঘাত বা অপব্যবহারের দিকে নিয়ে যেতে পারে—এমন পরিস্থিতি প্রশমিত করতে প্রতিরোধমূলক মানবাধিকার কার্যক্রম গ্রহণ করা।

জাতীয় মানবাধিকার অবকাঠামো প্রতিষ্ঠা: সদস্য রাষ্ট্রগুলোতে স্বাধীন জাতীয় মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান (এনএইচআরআই) প্রতিষ্ঠা ও সমর্থন করা।

ক্ষেত্রভিত্তিক কার্যক্রম ও অভিযান: মাঠপর্যায়ে উপস্থিতির মাধ্যমে সংস্থাটি, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ডগুলো বাস্তবায়িত হচ্ছে কি না, সে ব্যাপারে প্রায়ই কারিগরি সহায়তা এবং পর্যবেক্ষণ দেয়।

শিক্ষা ও অ্যাডভোকেসি: আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং জনসাধারণের মধ্যে মানবাধিকার বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে এবং জড়িত থাকার জন্য গবেষণা, শিক্ষা এবং অ্যাডভোকেসি কার্যক্রমে অংশ নেওয়া।

সরকারকে সহায়তা: বিচার প্রশাসন, আইন সংস্কার, মানবাধিকার চুক্তি অনুমোদন এবং মানবাধিকার শিক্ষার মতো ক্ষেত্রগুলোতে সরকারগুলোকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ড বাস্তবায়নে সহায়তা করার জন্য প্রযুক্তিগত দক্ষতা এবং সক্ষমতা-নির্মাণ সহায়তা দেওয়া।

মানবাধিকারের মূলধারা: সংস্থাটি জাতিসংঘের সমস্ত কর্মসূচিতে মানবাধিকারের দৃষ্টিভঙ্গি অন্তর্ভুক্ত করার জন্য কাজ করে, যাতে শান্তি ও নিরাপত্তা, উন্নয়ন এবং মানবাধিকার–জাতিসংঘের তিনটি স্তম্ভ–একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত থাকে এবং পারস্পরিকভাবে শক্তিশালী হয়।

ওএইচসিএইচআরের সদর দপ্তর সুইজারল্যান্ডের জেনেভায়। এ ছাড়া নিউইয়র্ক কার্যালয়, আঞ্চলিক কার্যালয়, দেশীয় কার্যালয় এবং জাতিসংঘ শান্তি মিশনে মানবাধিকার শাখাগুলোর মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী উপস্থিতি বজায় রাখে জাতিসংঘের এই মানবাধিকার সংস্থা।

নিউইয়র্ক কার্যালয় জাতিসংঘের সদর দপ্তরে জাতিসংঘের সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং অপারেশনাল কার্যক্রমে মানবাধিকারের নিয়মাবলি কার্যকরভাবে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য কাজ করে।

আর আঞ্চলিক কার্যালয়গুলো বৃহত্তর অঞ্চলগুলোর মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপর নজর রাখে। এর মধ্যে রয়েছে—পূর্ব আফ্রিকা (আদ্দিস আবাবা), দক্ষিণ আফ্রিকা (প্রিটোরিয়া), পশ্চিম আফ্রিকা (ডাকার), দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া (ব্যাংকক), প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল (সুভা), মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা (বৈরুত), মধ্য এশিয়া (বিশকেক), ইউরোপ (ব্রাসেলস), মধ্য আমেরিকা (পানামা সিটি), দক্ষিণ আমেরিকা (সান্তিয়াগো দে চিলি)।

দেশীয় এবং স্বতন্ত্র কার্যালয় রয়েছে প্রায় ১৮টি (বাড়ে কমে)। এই কার্যালয়গুলো স্বাগতিক সরকারগুলোর সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং সাধারণত মানবাধিকার সুরক্ষা, প্রচার, পর্যবেক্ষণ এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদানের ম্যান্ডেট থাকে। দেশীয় কার্যালয় রয়েছে এমন দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে: বুর্কিনা ফাসো, কম্বোডিয়া, চাদ, কলম্বিয়া, গুয়াতেমালা, গিনি, হন্ডুরাস, লাইবেরিয়া, মৌরিতানিয়া, মেক্সিকো, নাইজার, ফিলিস্তিন, সুদান, তিউনিসিয়া, ইয়েমেন। দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলেও তাদের উপস্থিতি রয়েছে।

বিভিন্ন সংঘাতপূর্ণ বা সংঘাত-পরবর্তী অঞ্চলে জাতিসংঘ শান্তি মিশনে অন্তর্ভুক্ত মানবাধিকার কর্মকর্তাদেরও সহায়তা করে এই সংস্থা। যেমন—আফগানিস্তান, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, হাইতি, ইরাক, কোসোভো, লিবিয়া, সোমালিয়া, দক্ষিণ সুদান—এসব দেশে শাখাগুলো সেখানকার মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও সুপারিশ করে।

এই বিস্তৃত নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ওএইচসিএইচআর সরাসরি সরকার, নাগরিক সমাজ এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সাথে মাঠপর্যায়ে কাজ করার সুযোগ পায়।

বাংলাদেশে কার্যালয় স্থাপন ও নানামুখি আপত্তি

ঢাকায় কার্যালয় স্থাপনের বিষয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ও জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থার মধ্যে সম্প্রতি তিন বছর মেয়াদি একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে।

তবে কিছু রাজনৈতিক দল ও সংগঠন এ নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে। তাদের আপত্তির প্রধান কারণ হলো, অতীতে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা মানবাধিকারের নামে ইসলামি শরিয়াহ, পারিবারিক আইন এবং ধর্মীয় মূল্যবোধে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করেছে। তারা মনে করে, এই ধরনের কার্যালয় স্থাপন করলে তা সার্বভৌমত্ব ও ধর্মীয় অনুভূতির ওপর আঘাত আসতে পারে। বিশেষ করে এলজিবিটি অধিকারের ইস্যুটি বারবার সামনে এসেছে।

বিশেষ করে, হেফাজতে ইসলাম সরকারের এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করছে। তাদের মতে, অতীতেও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা মানবাধিকারের অজুহাতে দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করেছে। তাই, তারা এই ধরনের কার্যালয় স্থাপনে রাজি নয়।

এ ছাড়া এনসিপির নেতা সারজিস আলমও আপত্তির কথা জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মন্তব্য করেছেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমাশক্তির অন্যায় আগ্রাসন, হত্যা, নির্যাতনের বিরুদ্ধে ওএইচসিএইচআর কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হওয়া এবং তাঁর ভাষায় পশ্চিমে দাবি অনুযায়ী, মুসলিমদের জঙ্গি-সন্ত্রাসী তকমা দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন তিনি।

সমালোচকেরা মনে করেন, এই ধরনের কার্যালয় স্থাপন করা হলে তা দেশের ওপর একটি চাপ সৃষ্টি করবে এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের কাজে বাধা সৃষ্টি হতে পারে।

আপত্তির মূল কারণগুলোর মধ্যে—

কিছু রাজনৈতিক দল ও সংগঠন মনে করে, জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় তাদের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের পরিপন্থী কাজ করতে পারে। তাদের আশঙ্কা, এই কার্যালয় দেশের সার্বভৌমত্বকে ক্ষুণ্ণ করতে পারে এবং সরকারের কাজে হস্তক্ষেপ করতে পারে। অতীতে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা মানবাধিকারের নামে বিভিন্ন দেশে হস্তক্ষেপ করেছে, যা এই ক্ষেত্রেও হতে পারে বলে তারা মনে করে।

এসব উদ্বেগের পরিপ্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে একটি ব্যাখ্যাসহ বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, এই কার্যালয় কোনো হস্তক্ষেপমূলক সংস্থা হবে না।

অন্তর্বর্তী সরকার বলেছে, ‘ওএইচসিএইচআর মিশন কেবল গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা, যেমন—পূর্ববর্তী সরকারের সময় সংঘটিত অপরাধ—প্রতিরোধ ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতেই কাজ করবে। এটি কোনো সামাজিক অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নের প্ল্যাটফর্ম হবে না, যা বাংলাদেশের প্রচলিত আইন, সামাজিক রীতিনীতি ও সাংস্কৃতিক কাঠামোর বাইরে যায়।’

এ ছাড়া, সরকারের পূর্ণ সার্বভৌম অধিকার থাকবে এ চুক্তি থেকে সরে আসার, যদি মনে করে যে এই অংশীদারত্ব আর দেশের স্বার্থের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়—বলেও উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে।

সরকার মনে করে, এই ধরনের একটি কার্যালয় আগের সরকারগুলোর সময় যদি থাকত, যখন বিচারবহির্ভূত হত্যা ও গণহত্যার মতো অপরাধ দায়মুক্তির সঙ্গে সংঘটিত হতো, তাহলে হয়তো অনেক অপরাধের তদন্ত, নথিভুক্ত ও বিচার হতো।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা এনসিপি নেত্রী মনজিলা ঝুমার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এখন র‍্যাপিড পাস রিচার্জ করা যাবে মোবাইল অ্যাপে

তৌফিকুল ইসলাম, ঢাকা 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

মেট্রোর র‍্যাপিড পাস ও এমআরটি পাস কার্ড গত মাস থেকে অনলাইনে রিচার্জের সুবিধা চালু হয়েছে। ফলে যাত্রীরা ঘরে বসেই মোবাইল ফোন বা কম্পিউটার ব্যবহার করে র‍্যাপিড পাসের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে অনলাইনে রিচার্জ করতে পারছেন। এবার সেই সেবাকে আরও সহজ ও ব্যবহারবান্ধব করতে র‍্যাপিড পাসের জন্য একটি অ্যাপ প্রস্তুত করেছে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ)। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে র‍্যাপিড পাস ও এমআরটি পাস কার্ড ব্যবহারকারীদের জন্য র‍্যাপিড পাস অ্যাপের মাধ্যমে অনলাইন রিচার্জ সুবিধা চালু করা হচ্ছে।

ডিটিসিএ সূত্র জানিয়েছে, এক মাস ধরে র‍্যাপিড পাস অ্যাপটি নিয়ে কাজ করছে সংস্থাটি। অ্যাপটি তৈরি করে ইতিমধ্যে গুগলের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে গুগল বিভিন্ন ধাপে অ্যাপটির পরীক্ষা–নিরীক্ষা চালাচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিটিসিএর নির্বাহী পরিচালক নীলিমা আখতার আজ সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, র‍্যাপিড পাস অ্যাপটি মোটামুটি প্রস্তুত। আগামী দুই–এক দিনের মধ্যে এটি জনগণের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। এতে যাত্রীদের আরও বেশি সুবিধা হবে।

অ্যাপটি ব্যবহারের নিয়ম

ডিটিসিএ সূত্র জানায়, র‍্যাপিড পাস অ্যাপ ব্যবহার করতে হলে যেসব গ্রাহক ইতিমধ্যে rapidpass.com.bd ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন করেছেন, তাঁরা একই ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে অ্যাপে লগইন করতে পারবেন। লগইনের পর ব্যবহারকারী ১০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত নির্ধারিত অ্যামাউন্ট সেট করে রিচার্জের জন্য প্রসেস দিতে পারবেন। এ সময় ব্যাংকের কার্ডের পাশাপাশি বিকাশ ও নগদের মাধ্যমেও সহজে রিচার্জ করা যাবে।

অনলাইনে রিচার্জ সম্পন্ন হওয়ার পর র‍্যাপিড পাস বা এমআরটি পাস কার্ডটি মেট্রো স্টেশনে থাকা এভিএমে (অ্যাড ভ্যালু মেশিন) ট্যাগ করলেই রিচার্জ করা অর্থ কার্ডে অ্যাকটিভ হয়ে যাবে। পাশাপাশি অ্যাপের মাধ্যমে কার্ডে থাকা বর্তমান ব্যালেন্স, কোথায় কোথায় ভ্রমণ করা হয়েছে—এসব বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে। একই সঙ্গে যদি ব্যবহারকারীর মোবাইলে নিয়ার–ফিল্ড কমিউনিকেশন (এনএফসি) সুবিধা থাকে, তাহলে মোবাইলের নিচে র‍্যাপিড পাস কার্ড ধরলেই অ্যাপের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্ডে থাকা টাকার পরিমাণ মোবাইলের স্ক্রিনে দেখা যাবে।

ডিটিসিএ জানিয়েছে, র‍্যাপিড পাসের ওয়েবসাইট ও অ্যাপের মাধ্যমে অনলাইন রিচার্জের সুবিধা নিশ্চিত করতে মেট্রোর ১৬টি স্টেশনে দুটি করে মোট ৩২টি এভিএম বসানো হয়েছে। যাত্রীরা অনলাইনে রিচার্জ করার পর স্টেশনে থাকা এভিএম মেশিনে কার্ড স্পর্শ করলেই রিচার্জ সক্রিয় হয়ে যাবে।

ডিটিসিএ সূত্র অনুযায়ী, বর্তমানে প্রায় ১৭ লাখ গ্রাহক র‍্যাপিড পাস ও এমআরটি পাস ব্যবহার করছেন। এর মধ্যে ইতিমধ্যে ২ লাখ ৩০ হাজার গ্রাহক rapidpass.com.bd ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন করেছেন, অর্থাৎ তাঁরা অনলাইনে রিচার্জ সুবিধা ব্যবহার করছেন।

ডিটিসিএ কর্মকর্তারা জানান, যাত্রীদের সময় ও ঝামেলা কমাতেই অ্যাপের মাধ্যমে রিচার্জ সুবিধা চালু করা হচ্ছে। ডিজিটাল পদ্ধতিতে সহজেই অর্থ যোগ করা যাবে, ফলে যাতায়াত আরও নিরবচ্ছিন্ন হবে। মেট্রোরেল চালুর পর থেকে যাত্রীরা স্বল্প সময়ে র‍্যাপিড পাস ব্যবহার করে যাতায়াতের সুবিধা পাচ্ছেন। অ্যাপ ব্যবহার করে অনলাইন রিচার্জ যুক্ত হওয়ায় ডিজিটাল সেবার পরিধি আরও বাড়বে।

উল্লেখ্য, এর আগে গত ২৫ নভেম্বর মোবাইল ফোন বা কম্পিউটার থেকে র‍্যাপিড পাসের ওয়েবসাইটে গিয়ে অনলাইন রিচার্জ সেবা চালু করা হয়েছিল। সেই সময় প্রধান উপদেষ্টার সড়ক, সেতু ও রেলযোগাযোগবিষয়ক বিশেষ সহকারী শেখ মইনউদ্দিন এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা এনসিপি নেত্রী মনজিলা ঝুমার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রেলপথ, ইঞ্জিনসহ সম্পদের ক্ষতিসাধন থেকে বিরত থাকার আহ্বান

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বাংলাদেশ রেলওয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন রেলপথ, রেলইঞ্জিন, কোচ, ওয়াগনসহ সব সম্পদ রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন জাতীয় সম্পদ। এসব সম্পদের সুষ্ঠু পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণ ও সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করা শুধু রেলপথ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ রেলওয়ের নয়, দেশের সব নাগরিকের নৈতিক দায়িত্ব। তাই রেলসম্পদের ক্ষতিসাধন থেকে বিরত থাকতে আহ্বান জানিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ।

আজ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার রেজাউল করিম সিদ্দিকীর স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

সম্প্রতি ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ, অযৌক্তিকভাবে রেললাইন অবরোধ ও ইচ্ছাকৃতভাবে রেললাইনের ক্ষতিসাধনের মতো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এতে একদিকে যাত্রীদের ভোগান্তি বাড়ছে, অন্যদিকে বাংলাদেশ রেলওয়ে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছে। পাশাপাশি সুষ্ঠুভাবে ট্রেন পরিচালনা ব্যাহত হওয়ায় রেলওয়ের ভাবমূর্তিও মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন হচ্ছে।

রেল কর্তৃপক্ষ জানায়, যেহেতু রেল একটি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন জাতীয় সম্পদ, তাই এর ক্ষতি মানে সরাসরি জনগণের ক্ষতি। এই ক্ষয়ক্ষতি ও লোকসান প্রতিরোধ করা দেশের সব নাগরিকের দায়িত্ব। নৈতিক এই দায়িত্ব পালনে আরও সচেতন ও দায়িত্বশীল হতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।

যাত্রীসাধারণকে মানসম্মত সেবা দিতে বাংলাদেশ রেলওয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মানসম্মত যাত্রীসেবা নিশ্চিতে নাগরিকদের সহযোগিতা একান্ত কাম্য।

এ ছাড়া যেকোনো রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষতিসাধন বা এর চেষ্টা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ উল্লেখ করে জানানো হয়, রাজনৈতিক, সামাজিক কিংবা অন্য যেকোনো কর্মসূচির নামে বেআইনি উপায়ে রেলের ক্ষতিসাধনের চেষ্টা করলে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা এনসিপি নেত্রী মনজিলা ঝুমার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৪ আইন কর্মকর্তার নিয়োগ বাতিল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
৪ আইন কর্মকর্তার নিয়োগ বাতিল

উচ্চ আদালতের চার আইন কর্মকর্তার নিয়োগ বাতিল করেছে সরকার। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে তাঁদের নিয়োগ বাতিল করে গতকাল রোববার আইন মন্ত্রণালয়ের সলিসিটর কার্যালয় থেকে পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। আজ সোমবার বিষয়টি জানানো হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, জনস্বার্থে তাঁদের নিয়োগ আদেশ বাতিলক্রমে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলো। এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।

নিয়োগ বাতিল করা চার আইন কর্মকর্তা হলেন—ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জুলফিকার আলম শিমুল, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইব্রাহিম খলিল, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আইয়ুব আলী ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মন্টু আলম।

উল্লেখ্য, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলরা সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হিসেবে মামলা পরিচালনা করে থাকেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা এনসিপি নেত্রী মনজিলা ঝুমার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় বাড়ছে না: ইসি সচিব

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
নির্বাচন কমিশনের জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ। ফাইল ছবি
নির্বাচন কমিশনের জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ। ফাইল ছবি

আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট উপলক্ষে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় আর বাড়াবে না নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আজ সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ এ তথ্য জানান।

মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময়সীমা ইসি বাড়াচ্ছে কি না—এ বিষয়ে জানতে চাইলে সচিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘না। সময় বাড়ছে না।’

দল ও প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল আজ। বিকেল ৫টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেন প্রার্থীরা।

আজ দিনভর কত মনোনয়নপত্র জমা পড়ল, এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ‘পুরোটা সংগ্রহ করা শেষ হলে, রাত ১০টার দিকে তা জানাতে পারব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা এনসিপি নেত্রী মনজিলা ঝুমার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত