তানিম আহমেদ, ঢাকা

শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র সংস্কারে গুরুত্ব দিচ্ছে। এই সংস্কারের জন্য ছয়টি সংস্কার কমিশনও গঠন করেছে। তবে সব কমিশন এখনো পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দেয়নি।
কমিশনগুলোর ইতিমধ্যে দেওয়া সুপারিশ নিয়ে বিশ্লেষকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। তাঁদের কেউ কেউ বলছেন, কমিশনগুলোর সুপারিশে জনপ্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটেছে। তবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও মানুষের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। সরকারের ইতিবাচক নানা উদ্যোগ ও সদিচ্ছার প্রতিফলন ঘটছে না যৌক্তিক-অযৌক্তিক আন্দোলন ও নানামুখী অসহযোগিতার কারণে।
সংস্কারের উদ্যোগে সমঝোতায় আসতে সবাই চেষ্টা করবে বলে মনে করেন অন্তর্বর্তী সরকারের বন, পরিবেশ ও জলবায়ু উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সংস্কার যদি না হয় তাহলে গণক্ষোভ ও গণরোষের জায়গাগুলো জীবিত থেকে যাবে। নির্বাচনের পরে দায়িত্ব নিলেও স্বস্তির জায়গাটা নাও থাকতে পারে। সমাজের বেশির মানুষ বলছে সংস্কার জরুরি। আশা করি রাজনৈতিক দলগুলো গণ-অভ্যুত্থানের আত্মত্যাগের কথা বিবেচনা করে সংস্কারে সম্মত হবে।’
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগের মধ্য দিয়ে অবসান ঘটে আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনের। ড. ইউনূসের নেতৃত্বে ৮ আগস্ট দায়িত্ব নেওয়া অন্তর্বর্তী সরকারের ছয় মাস পূর্ণ হচ্ছে ৮ ফেব্রুয়ারি। অন্তর্বর্তী সরকার জন-আকাঙ্ক্ষা পূরণে সংস্কারে জোর দিলেও বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল দাবি জানাচ্ছে দ্রুত নির্বাচনের। নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানাচ্ছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস গত ১১ সেপ্টেম্বর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, প্রশাসন, পুলিশ ও দুর্নীতি দমন কমিশনের সংস্কারে ছয়টি কমিশন গঠন করেন। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে কাজ শুরু করে কমিশনগুলো। এগুলো ইতিমধ্যে প্রাথমিক প্রতিবেদনের বেশ কিছু সুপারিশ করেছে। ১৫ ফেব্রুয়ারি কমিশনগুলো পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেবে। একই সঙ্গে কমিশনগুলোর প্রধানেরা রাষ্ট্র সংস্কারে আশু করণীয়, মধ্যমেয়াদি বা ভবিষ্যতে নির্বাচিত সরকার কী করতে পারে সে বিষয়ে সর্বসম্মত সুপারিশমালা দেবেন।
ছয় সংস্কার কমিশনের সুপারিশ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করবে প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। সূত্র বলেছে, ঐকমত্য কমিশন ১৫ ফেব্রুয়ারির পর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে সংলাপ শুরু করবে।
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন গত বুধবার প্রধান উপদেষ্টাকে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনায় সিদ্ধান্ত হবে কতটুকু সংস্কার দ্রুত করতে হবে এবং কতটুকু পরে করা যাবে। ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই সনদ প্রণয়ন হবে। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আলোকে নির্ভর করবে নির্বাচন চলতি বছরের ডিসেম্বরে হবে নাকি আগামী বছরের জুলাইয়ের মধ্যে হবে।
কমিশনগুলোর প্রতিবেদনে সংস্কারের যে বিষয়গুলো এসেছে, তার সঙ্গে জন-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন রয়েছে বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাব্বির আহমেদ। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, মানুষ কিন্তু এগুলো চায়। মানুষের আকাঙ্ক্ষাগুলোকে সংযুক্ত করে উপস্থাপন করা সরকারের বড় সফলতা। এখন সংস্কারের বাস্তবায়ন পুরোটা সরকারের হাতে নেই। অধ্যাদেশ আকারে করা গেলেও তা টিকে থাকবে নির্বাচিত সংসদের অনুমোদনের মাধ্যমে। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হবে।
অন্তর্বর্তী সরকার যে সংস্কারের কথা বারবার বলছে, সেটা বাস্তব অর্থে গত ছয় মাসে দেখা যায়নি বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জোবাইদা নাসরীন। তিনি বলেন, কয়েকটি কমিশন প্রস্তাব জমা দিয়েছে। সেগুলোর অসংগতি নিয়ে নানা কথাবার্তা হচ্ছে।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, রাজধানীর সরকারি সাত কলেজ নিয়ে পৃথক বিশ্ববিদ্যালয় দাবি এবং তিতুমীর কলেজকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে আন্দোলন হয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারে কমিশন করলেও শিক্ষা নিয়ে কমিশন না করায় হতাশা প্রকাশ করেছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, শিক্ষা নিয়ে বলতে গেলে কিছুই হয়নি। শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে একধরনের উদ্বেগ ও বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। ফলে শিক্ষাক্ষেত্রে একটা বিরাট শূন্যতা বিরাজ করছে।
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সুপারিশে প্রশাসনে আমূল পরিবর্তনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। প্রশাসন ক্যাডারে পদোন্নতির ক্ষেত্রে করা সুপারিশগুলো কোনো ক্যাডার মানবে না বলে মনে করেন সাবেক সচিব আবু আলম শহীদ খান। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সিভিল সার্ভিস, পুলিশ সার্ভিস এবং জুডিশিয়ারি সার্ভিস যদি স্বাধীনভাবে গড়ে তোলা যায়, তাহলে আমাদের সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। তবে প্রথমে ঠিক করতে হবে আমরা এগুলো স্বাধীন চাই কি না। আর সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিতে হবে। ওইটুকু করতে পারলে বাংলাদেশের জন্য যথেষ্ট।’
বিচার বিভাগের আলাদা সচিবালয়ের বিষয়ে ইতিমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনজ্ঞরা। বিভাগীয় পর্যায়ে হাইকোর্টের বেঞ্চ এবং উপজেলা পর্যায়ে আদালতের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায় আছে বলে জানিয়েছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আইন করা যায় না। এই সুপারিশের সুযোগ নেই।
সাবেক সচিব এ কে এম আবদুল আউয়াল মজুমদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, সরকারের ভালো কাজ করার সদিচ্ছা আছে। কিন্তু তারা গোছাতে পারেনি। একই সঙ্গে নানা ধরনের দাবিদাওয়ায় তারা জর্জরিত। এ দুটি কারণে তারা মানুষের প্রত্যাশা পূরণ সেভাবে পারেনি। মানুষের মধ্যে হতাশা আছে।
৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের পতনের পর দেশের প্রায় সব থানা হয়ে যায় পুলিশশূন্য। অন্তর্বর্তী সরকার পুলিশকে সক্রিয় করতে কাজ করছে এবং আইনশৃঙ্খলার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। পুলিশ, র্যাব ও আনসারের পোশাক পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) নুরুল হুদা বলেন, ঐতিহাসিক পরিবর্তনের পর কর্মক্ষমতা কমে গেছে। সেগুলোকে পুনরুদ্ধার করার চেষ্টা হচ্ছে, এটাই বাস্তবতা। কিন্তু ছয় মাসে পুলিশের তেমন পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না।

শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র সংস্কারে গুরুত্ব দিচ্ছে। এই সংস্কারের জন্য ছয়টি সংস্কার কমিশনও গঠন করেছে। তবে সব কমিশন এখনো পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দেয়নি।
কমিশনগুলোর ইতিমধ্যে দেওয়া সুপারিশ নিয়ে বিশ্লেষকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। তাঁদের কেউ কেউ বলছেন, কমিশনগুলোর সুপারিশে জনপ্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটেছে। তবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও মানুষের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। সরকারের ইতিবাচক নানা উদ্যোগ ও সদিচ্ছার প্রতিফলন ঘটছে না যৌক্তিক-অযৌক্তিক আন্দোলন ও নানামুখী অসহযোগিতার কারণে।
সংস্কারের উদ্যোগে সমঝোতায় আসতে সবাই চেষ্টা করবে বলে মনে করেন অন্তর্বর্তী সরকারের বন, পরিবেশ ও জলবায়ু উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সংস্কার যদি না হয় তাহলে গণক্ষোভ ও গণরোষের জায়গাগুলো জীবিত থেকে যাবে। নির্বাচনের পরে দায়িত্ব নিলেও স্বস্তির জায়গাটা নাও থাকতে পারে। সমাজের বেশির মানুষ বলছে সংস্কার জরুরি। আশা করি রাজনৈতিক দলগুলো গণ-অভ্যুত্থানের আত্মত্যাগের কথা বিবেচনা করে সংস্কারে সম্মত হবে।’
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগের মধ্য দিয়ে অবসান ঘটে আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনের। ড. ইউনূসের নেতৃত্বে ৮ আগস্ট দায়িত্ব নেওয়া অন্তর্বর্তী সরকারের ছয় মাস পূর্ণ হচ্ছে ৮ ফেব্রুয়ারি। অন্তর্বর্তী সরকার জন-আকাঙ্ক্ষা পূরণে সংস্কারে জোর দিলেও বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল দাবি জানাচ্ছে দ্রুত নির্বাচনের। নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানাচ্ছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস গত ১১ সেপ্টেম্বর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, প্রশাসন, পুলিশ ও দুর্নীতি দমন কমিশনের সংস্কারে ছয়টি কমিশন গঠন করেন। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে কাজ শুরু করে কমিশনগুলো। এগুলো ইতিমধ্যে প্রাথমিক প্রতিবেদনের বেশ কিছু সুপারিশ করেছে। ১৫ ফেব্রুয়ারি কমিশনগুলো পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেবে। একই সঙ্গে কমিশনগুলোর প্রধানেরা রাষ্ট্র সংস্কারে আশু করণীয়, মধ্যমেয়াদি বা ভবিষ্যতে নির্বাচিত সরকার কী করতে পারে সে বিষয়ে সর্বসম্মত সুপারিশমালা দেবেন।
ছয় সংস্কার কমিশনের সুপারিশ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করবে প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। সূত্র বলেছে, ঐকমত্য কমিশন ১৫ ফেব্রুয়ারির পর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে সংলাপ শুরু করবে।
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন গত বুধবার প্রধান উপদেষ্টাকে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনায় সিদ্ধান্ত হবে কতটুকু সংস্কার দ্রুত করতে হবে এবং কতটুকু পরে করা যাবে। ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই সনদ প্রণয়ন হবে। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আলোকে নির্ভর করবে নির্বাচন চলতি বছরের ডিসেম্বরে হবে নাকি আগামী বছরের জুলাইয়ের মধ্যে হবে।
কমিশনগুলোর প্রতিবেদনে সংস্কারের যে বিষয়গুলো এসেছে, তার সঙ্গে জন-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন রয়েছে বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাব্বির আহমেদ। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, মানুষ কিন্তু এগুলো চায়। মানুষের আকাঙ্ক্ষাগুলোকে সংযুক্ত করে উপস্থাপন করা সরকারের বড় সফলতা। এখন সংস্কারের বাস্তবায়ন পুরোটা সরকারের হাতে নেই। অধ্যাদেশ আকারে করা গেলেও তা টিকে থাকবে নির্বাচিত সংসদের অনুমোদনের মাধ্যমে। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হবে।
অন্তর্বর্তী সরকার যে সংস্কারের কথা বারবার বলছে, সেটা বাস্তব অর্থে গত ছয় মাসে দেখা যায়নি বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জোবাইদা নাসরীন। তিনি বলেন, কয়েকটি কমিশন প্রস্তাব জমা দিয়েছে। সেগুলোর অসংগতি নিয়ে নানা কথাবার্তা হচ্ছে।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, রাজধানীর সরকারি সাত কলেজ নিয়ে পৃথক বিশ্ববিদ্যালয় দাবি এবং তিতুমীর কলেজকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে আন্দোলন হয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারে কমিশন করলেও শিক্ষা নিয়ে কমিশন না করায় হতাশা প্রকাশ করেছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, শিক্ষা নিয়ে বলতে গেলে কিছুই হয়নি। শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে একধরনের উদ্বেগ ও বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। ফলে শিক্ষাক্ষেত্রে একটা বিরাট শূন্যতা বিরাজ করছে।
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সুপারিশে প্রশাসনে আমূল পরিবর্তনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। প্রশাসন ক্যাডারে পদোন্নতির ক্ষেত্রে করা সুপারিশগুলো কোনো ক্যাডার মানবে না বলে মনে করেন সাবেক সচিব আবু আলম শহীদ খান। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সিভিল সার্ভিস, পুলিশ সার্ভিস এবং জুডিশিয়ারি সার্ভিস যদি স্বাধীনভাবে গড়ে তোলা যায়, তাহলে আমাদের সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। তবে প্রথমে ঠিক করতে হবে আমরা এগুলো স্বাধীন চাই কি না। আর সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিতে হবে। ওইটুকু করতে পারলে বাংলাদেশের জন্য যথেষ্ট।’
বিচার বিভাগের আলাদা সচিবালয়ের বিষয়ে ইতিমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনজ্ঞরা। বিভাগীয় পর্যায়ে হাইকোর্টের বেঞ্চ এবং উপজেলা পর্যায়ে আদালতের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায় আছে বলে জানিয়েছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আইন করা যায় না। এই সুপারিশের সুযোগ নেই।
সাবেক সচিব এ কে এম আবদুল আউয়াল মজুমদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, সরকারের ভালো কাজ করার সদিচ্ছা আছে। কিন্তু তারা গোছাতে পারেনি। একই সঙ্গে নানা ধরনের দাবিদাওয়ায় তারা জর্জরিত। এ দুটি কারণে তারা মানুষের প্রত্যাশা পূরণ সেভাবে পারেনি। মানুষের মধ্যে হতাশা আছে।
৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের পতনের পর দেশের প্রায় সব থানা হয়ে যায় পুলিশশূন্য। অন্তর্বর্তী সরকার পুলিশকে সক্রিয় করতে কাজ করছে এবং আইনশৃঙ্খলার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। পুলিশ, র্যাব ও আনসারের পোশাক পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) নুরুল হুদা বলেন, ঐতিহাসিক পরিবর্তনের পর কর্মক্ষমতা কমে গেছে। সেগুলোকে পুনরুদ্ধার করার চেষ্টা হচ্ছে, এটাই বাস্তবতা। কিন্তু ছয় মাসে পুলিশের তেমন পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না।

দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) আরও গতিশীল ও কার্যকর করতে কমিশনের সদস্যসংখ্যা তিন থেকে বাড়িয়ে পাঁচ করা এবং কমিশনের মেয়াদ পাঁচ বছর থেকে কমিয়ে চার বছর নির্ধারণ করে দুর্নীতি দমন কমিশন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ জারি করেছে সরকার।
২ ঘণ্টা আগে
সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদের (১) দফায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি আপিল বিভাগের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীকে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করেছেন।
৩ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছে চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকে। গত প্রায় দেড় বছরে নানা ঘটনায় সেই টানাপোড়েন বেড়েছে। অতি সম্প্রতি বিভিন্ন ইস্যুতে পাল্টাপাল্টি কূটনৈতিক তলব, রাজনৈতিক নেতাদের বক্তব্য, দুই দেশের হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে।
১১ ঘণ্টা আগে
প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয় এবং ছায়ানট ভবনে সাম্প্রতিক হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মতামত ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাবিষয়ক স্পেশাল র্যাপোর্টিয়ার আইরিন খান। এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত তদন্ত ও বিচারের আওতায় আনার জন্য বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী...
১৩ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) আরও গতিশীল ও কার্যকর করতে কমিশনের সদস্যসংখ্যা তিন থেকে বাড়িয়ে পাঁচ করা এবং কমিশনের মেয়াদ পাঁচ বছর থেকে কমিয়ে চার বছর নির্ধারণ করে দুর্নীতি দমন কমিশন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ জারি করেছে সরকার।
গতকাল মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সচিব ড. হাফিজ আহমেদ চৌধুরীর স্বাক্ষরে অধ্যাদেশটি জারি করা হয়। এতে বলা হয়েছে, এই অধ্যাদেশটি “দুর্নীতি দমন কমিশন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫” নামে অভিহিত হবে।
অধ্যাদেশ অনুযায়ী, এখন থেকে দুদক হবে অনধিক পাঁচ সদস্যের একটি কমিশন। আগে কমিশনের সদস্যসংখ্যা ছিল তিন। একই সঙ্গে কমিশনের মেয়াদ এক বছর কমিয়ে চার বছর নির্ধারণ করা হয়েছে, যা আগে ছিল পাঁচ বছর।
কমিশনার নিয়োগের ক্ষেত্রেও নতুন বাধ্যবাধকতা যুক্ত করা হয়েছে। অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, কমিশনে অন্তত একজন নারী কমিশনার এবং অন্তত একজন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ে দক্ষ ও অভিজ্ঞ কমিশনার থাকতে হবে। কমিশনের সদস্যদের মধ্য থেকে রাষ্ট্রপতি একজনকে চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেবেন।
তবে বিদ্যমান কমিশনের ক্ষেত্রে এই সংশোধিত অধ্যাদেশ কার্যকর হবে কি না-সে সিদ্ধান্ত সরকারের ওপর ন্যস্ত রাখা হয়েছে।
নতুন অধ্যাদেশ নিয়ে দুদক সংশ্লিষ্টদের মধ্যে উদ্বেগও দেখা দিয়েছে। তাদের আশঙ্কা, সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় জটিলতা তৈরি হতে পারে। সংশ্লিষ্টদের মতে, চেয়ারম্যান ও দুই কমিশনার একমত হলে সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হলেও, চারজন কমিশনার একমত হলেও চেয়ারম্যান ভিন্নমত পোষণ করলে সে ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত স্থগিত হয়ে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হবে।
অধ্যাদেশে আরও বলা হয়েছে, এখন থেকে প্রতি ছয় মাস পরপর দুদককে তাদের কার্যক্রমের হিসাব জনসমক্ষে প্রকাশ করতে হবে। পাশাপাশি দুদকের সব কর্মকর্তার জন্য সম্পদের হিসাব জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এ ছাড়া বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের ক্ষমতাও দুদককে দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৩ অক্টোবর সংস্কার কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে দুদক আইনের খসড়া অধ্যাদেশ অনুমোদন দেয় সরকার। সংশোধিত খসড়া প্রকাশের পর সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইস্তেখারুজ্জামান এর তীব্র সমালোচনা করেন। দুই মাস পর সেই খসড়ায় কিছু সংশোধনী এনে গতকাল চূড়ান্ত অধ্যাদেশ জারি করা হলো।

দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) আরও গতিশীল ও কার্যকর করতে কমিশনের সদস্যসংখ্যা তিন থেকে বাড়িয়ে পাঁচ করা এবং কমিশনের মেয়াদ পাঁচ বছর থেকে কমিয়ে চার বছর নির্ধারণ করে দুর্নীতি দমন কমিশন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ জারি করেছে সরকার।
গতকাল মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সচিব ড. হাফিজ আহমেদ চৌধুরীর স্বাক্ষরে অধ্যাদেশটি জারি করা হয়। এতে বলা হয়েছে, এই অধ্যাদেশটি “দুর্নীতি দমন কমিশন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫” নামে অভিহিত হবে।
অধ্যাদেশ অনুযায়ী, এখন থেকে দুদক হবে অনধিক পাঁচ সদস্যের একটি কমিশন। আগে কমিশনের সদস্যসংখ্যা ছিল তিন। একই সঙ্গে কমিশনের মেয়াদ এক বছর কমিয়ে চার বছর নির্ধারণ করা হয়েছে, যা আগে ছিল পাঁচ বছর।
কমিশনার নিয়োগের ক্ষেত্রেও নতুন বাধ্যবাধকতা যুক্ত করা হয়েছে। অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, কমিশনে অন্তত একজন নারী কমিশনার এবং অন্তত একজন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ে দক্ষ ও অভিজ্ঞ কমিশনার থাকতে হবে। কমিশনের সদস্যদের মধ্য থেকে রাষ্ট্রপতি একজনকে চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেবেন।
তবে বিদ্যমান কমিশনের ক্ষেত্রে এই সংশোধিত অধ্যাদেশ কার্যকর হবে কি না-সে সিদ্ধান্ত সরকারের ওপর ন্যস্ত রাখা হয়েছে।
নতুন অধ্যাদেশ নিয়ে দুদক সংশ্লিষ্টদের মধ্যে উদ্বেগও দেখা দিয়েছে। তাদের আশঙ্কা, সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় জটিলতা তৈরি হতে পারে। সংশ্লিষ্টদের মতে, চেয়ারম্যান ও দুই কমিশনার একমত হলে সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হলেও, চারজন কমিশনার একমত হলেও চেয়ারম্যান ভিন্নমত পোষণ করলে সে ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত স্থগিত হয়ে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হবে।
অধ্যাদেশে আরও বলা হয়েছে, এখন থেকে প্রতি ছয় মাস পরপর দুদককে তাদের কার্যক্রমের হিসাব জনসমক্ষে প্রকাশ করতে হবে। পাশাপাশি দুদকের সব কর্মকর্তার জন্য সম্পদের হিসাব জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এ ছাড়া বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের ক্ষমতাও দুদককে দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৩ অক্টোবর সংস্কার কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে দুদক আইনের খসড়া অধ্যাদেশ অনুমোদন দেয় সরকার। সংশোধিত খসড়া প্রকাশের পর সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইস্তেখারুজ্জামান এর তীব্র সমালোচনা করেন। দুই মাস পর সেই খসড়ায় কিছু সংশোধনী এনে গতকাল চূড়ান্ত অধ্যাদেশ জারি করা হলো।

শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র সংস্কারে গুরুত্ব দিচ্ছে। এই সংস্কারের জন্য ছয়টি সংস্কার কমিশনও গঠন করেছে। তবে সব কমিশন এখনো পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দেয়নি।
০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদের (১) দফায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি আপিল বিভাগের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীকে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করেছেন।
৩ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছে চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকে। গত প্রায় দেড় বছরে নানা ঘটনায় সেই টানাপোড়েন বেড়েছে। অতি সম্প্রতি বিভিন্ন ইস্যুতে পাল্টাপাল্টি কূটনৈতিক তলব, রাজনৈতিক নেতাদের বক্তব্য, দুই দেশের হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে।
১১ ঘণ্টা আগে
প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয় এবং ছায়ানট ভবনে সাম্প্রতিক হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মতামত ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাবিষয়ক স্পেশাল র্যাপোর্টিয়ার আইরিন খান। এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত তদন্ত ও বিচারের আওতায় আনার জন্য বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী...
১৩ ঘণ্টা আগেবিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা

আপিল বিভাগের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।
আজ বুধবার তাঁকে ওই পদে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে আইন ও বিচার বিভাগের বিচার শাখা-৪।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদের (১) দফায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি আপিল বিভাগের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীকে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করেছেন।
এ নিয়োগ শপথ গ্রহণের তারিখ থেকে কার্যকর হবে।

আপিল বিভাগের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।
আজ বুধবার তাঁকে ওই পদে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে আইন ও বিচার বিভাগের বিচার শাখা-৪।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদের (১) দফায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি আপিল বিভাগের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীকে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করেছেন।
এ নিয়োগ শপথ গ্রহণের তারিখ থেকে কার্যকর হবে।

শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র সংস্কারে গুরুত্ব দিচ্ছে। এই সংস্কারের জন্য ছয়টি সংস্কার কমিশনও গঠন করেছে। তবে সব কমিশন এখনো পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দেয়নি।
০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) আরও গতিশীল ও কার্যকর করতে কমিশনের সদস্যসংখ্যা তিন থেকে বাড়িয়ে পাঁচ করা এবং কমিশনের মেয়াদ পাঁচ বছর থেকে কমিয়ে চার বছর নির্ধারণ করে দুর্নীতি দমন কমিশন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ জারি করেছে সরকার।
২ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছে চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকে। গত প্রায় দেড় বছরে নানা ঘটনায় সেই টানাপোড়েন বেড়েছে। অতি সম্প্রতি বিভিন্ন ইস্যুতে পাল্টাপাল্টি কূটনৈতিক তলব, রাজনৈতিক নেতাদের বক্তব্য, দুই দেশের হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে।
১১ ঘণ্টা আগে
প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয় এবং ছায়ানট ভবনে সাম্প্রতিক হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মতামত ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাবিষয়ক স্পেশাল র্যাপোর্টিয়ার আইরিন খান। এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত তদন্ত ও বিচারের আওতায় আনার জন্য বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী...
১৩ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছে চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকে। গত প্রায় দেড় বছরে নানা ঘটনায় সেই টানাপোড়েন বেড়েছে। অতি সম্প্রতি বিভিন্ন ইস্যুতে পাল্টাপাল্টি কূটনৈতিক তলব, রাজনৈতিক নেতাদের বক্তব্য, দুই দেশের হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। এর জেরে প্রথমে বাংলাদেশে ভিসা সেন্টারের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় ভারত। তারপর বাংলাদেশও ভারতে ভিসা সেন্টারের কার্যক্রম বন্ধ করে। এ ছাড়া ঢাকার অভিযোগ, বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ‘নসিহত’ দেওয়ার চেষ্টা করছে ভারত।
সর্বশেষ গতকাল মঙ্গলবার ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশন ও কলকাতায় উপহাইকমিশনের সামনে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো বিক্ষোভ করেছে। দিল্লিতে তারা ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করে। এর আগের দিন গত সোমবারও নয়াদিল্লি ও শিলিগুড়িতে বাংলাদেশের কূটনৈতিক স্থাপনায় হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
এসব বিষয়ে গতকাল ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে তলব করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিপরীতে দিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোহাম্মদ রিয়াজ হামিদুল্লাহকে তলব করে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ নিয়ে গত ১০ দিনে চার দফায় দুই দেশ একে অন্যের কূটনীতিককে তলব করে প্রতিবাদ আর উদ্বেগ জানাল।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চলমান টানাপোড়েনের বিষয়ে সাবেক রাষ্ট্রদূত মাহফুজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের যথেষ্ট অবনতি হয়েছে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর সম্পর্কের অবনতি হওয়া খুব খারাপ লক্ষণ। এটি শুধু দুর্ভাগ্যজনক নয়, বরং উদ্বেগজনক। এ রকম চলতে থাকলে দুই দেশে চরমপন্থীদের উত্থান ঘটবে এবং নির্বাচনে তার অশুভ প্রভাব পড়বে। এর ফলে নির্বাচিত সরকার এলেও দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের টানাপোড়েন অব্যাহত থাকতে পারে।’
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির হত্যাকাণ্ডের পর ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাত রাজ্য নিয়ে বক্তব্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। এর জবাবে গত সপ্তাহে ভারতের আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা নিজ দেশকে ‘পারমাণবিক শক্তিধর দেশ’ এবং ‘বাংলাদেশকে শিক্ষা দেওয়া উচিত’ মন্তব্য করে ঢাকাকে প্রচ্ছন্ন হুমকি দেন। পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয় ময়মনসিংহের ভালুকায় দীপু চন্দ্র দাসকে পিটিয়ে হত্যার পর লাশ পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায়।
১৪ ডিসেম্বর প্রণয় ভার্মাকে তলব করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এরপর গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের পরিস্থিতি এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ জানাতে নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মুহাম্মদ রিয়াজ হামিদউল্লাহকে তলব করে সে দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ওই দিনই বিকেলের দিকে ভারতীয় হাইকমিশন অভিমুখে মিছিলের আয়োজন করে ‘জুলাই ঐক্য’। যদিও পুলিশি বাধায় রাজধানীর বাড্ডায় সেই মিছিল আটকে যায়। এই বিক্ষোভ থেকে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ভারতে পলাতকদের ফেরত পাঠানোর দাবি জানানো হয়। এই বিক্ষোভের আগে ওই দিন দুপুরে ঢাকায় ভারতীয় ভিসা সেন্টারের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়।
ঠিক ওই দিন রাতেই ভালুকায় ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে একটি পোশাক কারখানার কর্মী দীপু চন্দ্র দাসকে কারখানা থেকে ধরে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বিভাজকের একটি গাছে ঝুলিয়ে তাঁর লাশে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
এ ঘটনার জেরে নয়াদিল্লিতে ভারতীয় হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ হয়। হুমকি দেওয়া হয় হাইকমিশনারকে। ওই রাতেই খবর আসে, গুলিবিদ্ধ হাদি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। এর পরপরই চট্টগ্রাম ও খুলনায় ভারতীয় উপহাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ হয়। ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয় চট্টগ্রাম উপহাইকমিশনের কার্যালয়ে। এসব ঘটনার ঠিক আগের দিন গত শনিবার নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে চট্টগ্রামেও অনির্দিষ্টকালের জন্য ভিসা কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় ভারত।
এদিকে নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনের বিক্ষোভের ঘটনা নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল গত রোববার এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের গণমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর গুজব প্রত্যক্ষ করেছি। বাস্তবতা হলো, ২০-২৫ জন তরুণ বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে জড়ো হয়েছিলেন। ময়মনসিংহে দীপু চন্দ্র দাসকে হত্যার প্রতিবাদে স্লোগান দিয়েছেন তাঁরা। ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা কয়েক মিনিটের মধ্যে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেন।’
রণধীর জয়সওয়ালের বক্তব্যের জবাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতকাল সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, বাংলাদেশের গণমাধ্যমে ‘বিভ্রান্তিকর প্রচার’ চালানো হচ্ছে, ভারত এ কথা বললেও কোনোভাবে তা মেনে নেওয়া যায় না। দুষ্কৃতকারীদের হাইকমিশনের সীমানার ঠিক বাইরে কর্মকাণ্ড চালানোর সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ময়মনসিংহে দীপু দাসকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনাকে ‘বিচ্ছিন্ন হামলা’ বলে অভিহিত করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এর আগে রোববার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভের ঘটনায় ভারত সরকারের দেওয়া বিবৃতি প্রত্যাখ্যান করে প্রশ্ন তোলেন, হাইকমিশনের মতো সুরক্ষিত এলাকায় কীভাবে বিক্ষোভকারীরা যেতে পারল? তিনি বলেন, বিক্ষোভের ওই ঘটনার পর থেকে নয়াদিল্লিতে নিয়োজিত বাংলাদেশের হাইকমিশনারের পরিবার ঝুঁকি অনুভব করছে। উপদেষ্টা বলেন, ‘নয়াদিল্লিতে কূটনৈতিক এলাকার ভেতরে বাংলাদেশ মিশনের অবস্থান খুবই নিরাপদ স্থানে, সেখানে হিন্দু চরমপন্থীরা ওই এলাকার মধ্যে আসতে পারবে কেন? তাহলে তাদের আসতে দেওয়া হয়েছে।’
পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভের মধ্যে নিরাপত্তার কারণে গত সোমবার নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশন এবং ত্রিপুরার আগরতলায় সহকারী হাইকমিশন ও পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ির ভিসা সেন্টার থেকে ভিসা ও কনস্যুলার সেবা সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে বাংলাদেশ। পাশাপাশি দিল্লিতে অন্য কনস্যুলার পরিষেবাও আপাতত বন্ধ রেখেছে ঢাকা।
ভারতের সংবাদমাধ্যম শিলিগুড়ি টাইমস জানায়, সোমবার পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়িতে বাংলাদেশের ভিসা কেন্দ্র ভাঙচুর করেছেন হিন্দুত্ববাদী কয়েকটি সংগঠনের সদস্যরা। এতে নেতৃত্ব দেন বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি), হিন্দু জাগরণ মঞ্চ ও শিলিগুড়ি মহানগর সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
এরপর গতকাল নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশন ও কলকাতায় উপহাইকমিশনের সামনে ভিএইচপির নেতৃত্বে বিক্ষোভ হয়, ভাঙার চেষ্টা করা হয় ব্যারিকেড। কলকাতার বিক্ষোভে সংহতি জানাতে পরে বিজেপি নেতারাও যোগ দেন।
এদিনই প্রণয় ভার্মাকে তলব করে নয়াদিল্লি ও শিলিগুড়িতে বাংলাদেশের কূটনৈতিক স্থাপনায় হামলা এবং ভাঙচুরের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পরে মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, কূটনৈতিক স্থাপনায় এ রকম পরিকল্পিত সহিংসতা এবং ভয়ভীতি প্রদর্শনের মতো কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। এ ধরনের ঘটনা শুধু কূটনৈতিক মিশনের কর্মীদের নিরাপত্তাকেই হুমকির মুখে ফেলে না; বরং পারস্পরিক সম্মান, শান্তি ও সহনশীলতার নীতিকেও ক্ষুণ্ন করে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছে, সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে প্রণয় ভার্মা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রসচিব আসাদ আলম সিয়ামের দপ্তরে প্রবেশ করেন। আসা-যাওয়া মিলিয়ে ৫ মিনিটের মতো তিনি মন্ত্রণালয়ে ছিলেন। এ নিয়ে ১০ দিনের মধ্যে দ্বিতীয়বার ভারতীয় হাইকমিশনারকে তলব করা হলো।
মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সরকার ২০ ডিসেম্বর নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশন প্রাঙ্গণ ও আবাসস্থলের বাইরে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এবং ২২ ডিসেম্বর শিলিগুড়িতে বাংলাদেশের ভিসা কেন্দ্রে উগ্রপন্থী গোষ্ঠীর ভাঙচুরের ঘটনায় ভারত সরকারের কাছে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এ ছাড়া ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশের বিভিন্ন কূটনৈতিক মিশনের সামনে সহিংস বিক্ষোভের ঘটনাকে উদ্বেগজনক বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে। ঘটনাগুলোর পূর্ণাঙ্গ ও নিরপেক্ষ তদন্ত, ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশন ও সংশ্লিষ্ট স্থাপনাগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা।
এরপর গতকাল বিকেলে দিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তলব করে দেশটিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার এম রিয়াজ হামিদুল্লাহকে। কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব বি শ্যাম তলবের সময় বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে বলেছেন, বাংলাদেশ সম্প্রতি বেশ কয়েকটি ইস্যুতে অযৌক্তিক ও অপ্রাসঙ্গিকভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে। তখন এই অভিযোগ খণ্ডন করে বাংলাদেশের হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশ বিভিন্ন ইস্যুতে বাস্তবতার নিরিখে অবস্থান তুলে ধরছে।
সার্বিক বিষয়ে সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সি ফয়েজ আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ও একটা বললে আমি একটা বলব, এমন প্রতিযোগিতা ঠিক নয়। আমাদের চেষ্টা করতে হবে, কীভাবে ওখান থেকে সরে এসে একটা স্বাভাবিক সম্পর্কের দিকে যাওয়া যায়, সেই চেষ্টা করা। তাই বলে স্বাভাবিক সম্পর্ক মানেই নতজানু সম্পর্ক নয়।’
আরেক সাবেক রাষ্ট্রদূত মাহফুজুর রহমান বলেন, এ মুহূর্তে সম্পর্কের অবনতি রোধ প্রথম করণীয়। এ জন্য যাঁরা দায়িত্বশীল, তাঁদের দায় অনেক। অপর পক্ষ কী করছে, তার পাল্টা কীভাবে নেওয়া যায়, তা বিবেচনায় না নিয়ে বরং নিজ উদ্যোগে সম্পর্কের অবনতি কীভাবে রোধ করা যায়, তাতে সচেষ্ট হতে হবে।

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছে চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকে। গত প্রায় দেড় বছরে নানা ঘটনায় সেই টানাপোড়েন বেড়েছে। অতি সম্প্রতি বিভিন্ন ইস্যুতে পাল্টাপাল্টি কূটনৈতিক তলব, রাজনৈতিক নেতাদের বক্তব্য, দুই দেশের হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। এর জেরে প্রথমে বাংলাদেশে ভিসা সেন্টারের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় ভারত। তারপর বাংলাদেশও ভারতে ভিসা সেন্টারের কার্যক্রম বন্ধ করে। এ ছাড়া ঢাকার অভিযোগ, বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ‘নসিহত’ দেওয়ার চেষ্টা করছে ভারত।
সর্বশেষ গতকাল মঙ্গলবার ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশন ও কলকাতায় উপহাইকমিশনের সামনে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো বিক্ষোভ করেছে। দিল্লিতে তারা ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করে। এর আগের দিন গত সোমবারও নয়াদিল্লি ও শিলিগুড়িতে বাংলাদেশের কূটনৈতিক স্থাপনায় হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
এসব বিষয়ে গতকাল ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে তলব করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিপরীতে দিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোহাম্মদ রিয়াজ হামিদুল্লাহকে তলব করে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ নিয়ে গত ১০ দিনে চার দফায় দুই দেশ একে অন্যের কূটনীতিককে তলব করে প্রতিবাদ আর উদ্বেগ জানাল।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চলমান টানাপোড়েনের বিষয়ে সাবেক রাষ্ট্রদূত মাহফুজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের যথেষ্ট অবনতি হয়েছে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর সম্পর্কের অবনতি হওয়া খুব খারাপ লক্ষণ। এটি শুধু দুর্ভাগ্যজনক নয়, বরং উদ্বেগজনক। এ রকম চলতে থাকলে দুই দেশে চরমপন্থীদের উত্থান ঘটবে এবং নির্বাচনে তার অশুভ প্রভাব পড়বে। এর ফলে নির্বাচিত সরকার এলেও দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের টানাপোড়েন অব্যাহত থাকতে পারে।’
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির হত্যাকাণ্ডের পর ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাত রাজ্য নিয়ে বক্তব্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। এর জবাবে গত সপ্তাহে ভারতের আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা নিজ দেশকে ‘পারমাণবিক শক্তিধর দেশ’ এবং ‘বাংলাদেশকে শিক্ষা দেওয়া উচিত’ মন্তব্য করে ঢাকাকে প্রচ্ছন্ন হুমকি দেন। পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয় ময়মনসিংহের ভালুকায় দীপু চন্দ্র দাসকে পিটিয়ে হত্যার পর লাশ পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায়।
১৪ ডিসেম্বর প্রণয় ভার্মাকে তলব করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এরপর গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের পরিস্থিতি এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ জানাতে নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মুহাম্মদ রিয়াজ হামিদউল্লাহকে তলব করে সে দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ওই দিনই বিকেলের দিকে ভারতীয় হাইকমিশন অভিমুখে মিছিলের আয়োজন করে ‘জুলাই ঐক্য’। যদিও পুলিশি বাধায় রাজধানীর বাড্ডায় সেই মিছিল আটকে যায়। এই বিক্ষোভ থেকে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ভারতে পলাতকদের ফেরত পাঠানোর দাবি জানানো হয়। এই বিক্ষোভের আগে ওই দিন দুপুরে ঢাকায় ভারতীয় ভিসা সেন্টারের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়।
ঠিক ওই দিন রাতেই ভালুকায় ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে একটি পোশাক কারখানার কর্মী দীপু চন্দ্র দাসকে কারখানা থেকে ধরে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বিভাজকের একটি গাছে ঝুলিয়ে তাঁর লাশে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
এ ঘটনার জেরে নয়াদিল্লিতে ভারতীয় হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ হয়। হুমকি দেওয়া হয় হাইকমিশনারকে। ওই রাতেই খবর আসে, গুলিবিদ্ধ হাদি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। এর পরপরই চট্টগ্রাম ও খুলনায় ভারতীয় উপহাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ হয়। ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয় চট্টগ্রাম উপহাইকমিশনের কার্যালয়ে। এসব ঘটনার ঠিক আগের দিন গত শনিবার নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে চট্টগ্রামেও অনির্দিষ্টকালের জন্য ভিসা কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় ভারত।
এদিকে নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনের বিক্ষোভের ঘটনা নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল গত রোববার এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের গণমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর গুজব প্রত্যক্ষ করেছি। বাস্তবতা হলো, ২০-২৫ জন তরুণ বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে জড়ো হয়েছিলেন। ময়মনসিংহে দীপু চন্দ্র দাসকে হত্যার প্রতিবাদে স্লোগান দিয়েছেন তাঁরা। ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা কয়েক মিনিটের মধ্যে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেন।’
রণধীর জয়সওয়ালের বক্তব্যের জবাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতকাল সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, বাংলাদেশের গণমাধ্যমে ‘বিভ্রান্তিকর প্রচার’ চালানো হচ্ছে, ভারত এ কথা বললেও কোনোভাবে তা মেনে নেওয়া যায় না। দুষ্কৃতকারীদের হাইকমিশনের সীমানার ঠিক বাইরে কর্মকাণ্ড চালানোর সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ময়মনসিংহে দীপু দাসকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনাকে ‘বিচ্ছিন্ন হামলা’ বলে অভিহিত করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এর আগে রোববার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভের ঘটনায় ভারত সরকারের দেওয়া বিবৃতি প্রত্যাখ্যান করে প্রশ্ন তোলেন, হাইকমিশনের মতো সুরক্ষিত এলাকায় কীভাবে বিক্ষোভকারীরা যেতে পারল? তিনি বলেন, বিক্ষোভের ওই ঘটনার পর থেকে নয়াদিল্লিতে নিয়োজিত বাংলাদেশের হাইকমিশনারের পরিবার ঝুঁকি অনুভব করছে। উপদেষ্টা বলেন, ‘নয়াদিল্লিতে কূটনৈতিক এলাকার ভেতরে বাংলাদেশ মিশনের অবস্থান খুবই নিরাপদ স্থানে, সেখানে হিন্দু চরমপন্থীরা ওই এলাকার মধ্যে আসতে পারবে কেন? তাহলে তাদের আসতে দেওয়া হয়েছে।’
পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভের মধ্যে নিরাপত্তার কারণে গত সোমবার নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশন এবং ত্রিপুরার আগরতলায় সহকারী হাইকমিশন ও পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ির ভিসা সেন্টার থেকে ভিসা ও কনস্যুলার সেবা সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে বাংলাদেশ। পাশাপাশি দিল্লিতে অন্য কনস্যুলার পরিষেবাও আপাতত বন্ধ রেখেছে ঢাকা।
ভারতের সংবাদমাধ্যম শিলিগুড়ি টাইমস জানায়, সোমবার পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়িতে বাংলাদেশের ভিসা কেন্দ্র ভাঙচুর করেছেন হিন্দুত্ববাদী কয়েকটি সংগঠনের সদস্যরা। এতে নেতৃত্ব দেন বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি), হিন্দু জাগরণ মঞ্চ ও শিলিগুড়ি মহানগর সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
এরপর গতকাল নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশন ও কলকাতায় উপহাইকমিশনের সামনে ভিএইচপির নেতৃত্বে বিক্ষোভ হয়, ভাঙার চেষ্টা করা হয় ব্যারিকেড। কলকাতার বিক্ষোভে সংহতি জানাতে পরে বিজেপি নেতারাও যোগ দেন।
এদিনই প্রণয় ভার্মাকে তলব করে নয়াদিল্লি ও শিলিগুড়িতে বাংলাদেশের কূটনৈতিক স্থাপনায় হামলা এবং ভাঙচুরের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পরে মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, কূটনৈতিক স্থাপনায় এ রকম পরিকল্পিত সহিংসতা এবং ভয়ভীতি প্রদর্শনের মতো কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। এ ধরনের ঘটনা শুধু কূটনৈতিক মিশনের কর্মীদের নিরাপত্তাকেই হুমকির মুখে ফেলে না; বরং পারস্পরিক সম্মান, শান্তি ও সহনশীলতার নীতিকেও ক্ষুণ্ন করে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছে, সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে প্রণয় ভার্মা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রসচিব আসাদ আলম সিয়ামের দপ্তরে প্রবেশ করেন। আসা-যাওয়া মিলিয়ে ৫ মিনিটের মতো তিনি মন্ত্রণালয়ে ছিলেন। এ নিয়ে ১০ দিনের মধ্যে দ্বিতীয়বার ভারতীয় হাইকমিশনারকে তলব করা হলো।
মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সরকার ২০ ডিসেম্বর নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশন প্রাঙ্গণ ও আবাসস্থলের বাইরে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এবং ২২ ডিসেম্বর শিলিগুড়িতে বাংলাদেশের ভিসা কেন্দ্রে উগ্রপন্থী গোষ্ঠীর ভাঙচুরের ঘটনায় ভারত সরকারের কাছে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এ ছাড়া ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশের বিভিন্ন কূটনৈতিক মিশনের সামনে সহিংস বিক্ষোভের ঘটনাকে উদ্বেগজনক বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে। ঘটনাগুলোর পূর্ণাঙ্গ ও নিরপেক্ষ তদন্ত, ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশন ও সংশ্লিষ্ট স্থাপনাগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা।
এরপর গতকাল বিকেলে দিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তলব করে দেশটিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার এম রিয়াজ হামিদুল্লাহকে। কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব বি শ্যাম তলবের সময় বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে বলেছেন, বাংলাদেশ সম্প্রতি বেশ কয়েকটি ইস্যুতে অযৌক্তিক ও অপ্রাসঙ্গিকভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে। তখন এই অভিযোগ খণ্ডন করে বাংলাদেশের হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশ বিভিন্ন ইস্যুতে বাস্তবতার নিরিখে অবস্থান তুলে ধরছে।
সার্বিক বিষয়ে সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সি ফয়েজ আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ও একটা বললে আমি একটা বলব, এমন প্রতিযোগিতা ঠিক নয়। আমাদের চেষ্টা করতে হবে, কীভাবে ওখান থেকে সরে এসে একটা স্বাভাবিক সম্পর্কের দিকে যাওয়া যায়, সেই চেষ্টা করা। তাই বলে স্বাভাবিক সম্পর্ক মানেই নতজানু সম্পর্ক নয়।’
আরেক সাবেক রাষ্ট্রদূত মাহফুজুর রহমান বলেন, এ মুহূর্তে সম্পর্কের অবনতি রোধ প্রথম করণীয়। এ জন্য যাঁরা দায়িত্বশীল, তাঁদের দায় অনেক। অপর পক্ষ কী করছে, তার পাল্টা কীভাবে নেওয়া যায়, তা বিবেচনায় না নিয়ে বরং নিজ উদ্যোগে সম্পর্কের অবনতি কীভাবে রোধ করা যায়, তাতে সচেষ্ট হতে হবে।

শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র সংস্কারে গুরুত্ব দিচ্ছে। এই সংস্কারের জন্য ছয়টি সংস্কার কমিশনও গঠন করেছে। তবে সব কমিশন এখনো পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দেয়নি।
০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) আরও গতিশীল ও কার্যকর করতে কমিশনের সদস্যসংখ্যা তিন থেকে বাড়িয়ে পাঁচ করা এবং কমিশনের মেয়াদ পাঁচ বছর থেকে কমিয়ে চার বছর নির্ধারণ করে দুর্নীতি দমন কমিশন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ জারি করেছে সরকার।
২ ঘণ্টা আগে
সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদের (১) দফায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি আপিল বিভাগের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীকে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করেছেন।
৩ ঘণ্টা আগে
প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয় এবং ছায়ানট ভবনে সাম্প্রতিক হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মতামত ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাবিষয়ক স্পেশাল র্যাপোর্টিয়ার আইরিন খান। এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত তদন্ত ও বিচারের আওতায় আনার জন্য বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী...
১৩ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয় এবং ছায়ানট ভবনে সাম্প্রতিক হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মতামত ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাবিষয়ক স্পেশাল র্যাপোর্টিয়ার আইরিন খান। এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত তদন্ত ও বিচারের আওতায় আনার জন্য বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশে শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম ও একটি গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে ‘মব’ বা উচ্ছৃঙ্খল জনতার হামলা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। সরকারকে অবিলম্বে কার্যকর ও স্বচ্ছ তদন্ত পরিচালনা করে অপরাধীদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থানের প্রখ্যাত তরুণ নেতা শরিফ ওসমান বিন হাদির প্রকাশ্য দিবালোকে হত্যাকাণ্ডের পর দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। ওই বিক্ষোভের ধারাবাহিকতায় দ্য ডেইলি স্টার ও প্রথম আলো কার্যালয় এবং ছায়ানট ভবনে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর চালানো হয়। একই সময়ে নিউ এজ পত্রিকার সম্পাদক নূরুল কবীরের ওপরও হামলার ঘটনা ঘটে।
আইরিন খান বলেন, ‘এই মব আক্রমণগুলো হাওয়া থেকে ঘটেনি। বিচারহীনতা দূর করতে এবং সংবাদমাধ্যম ও শিল্প-সাহিত্যের স্বাধীনতা রক্ষায় অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতাই এসব ঘটনার পথ তৈরি করেছে।’ শরিফ ওসমান বিন হাদির পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের পাশাপাশি তাঁর মৃত্যুর ঘোষণার পর সাংবাদিক ও শিল্পীদের লক্ষ্য করে সংগঠিত সহিংসতারও তিনি কঠোর নিন্দা জানান।
জাতিসংঘের এই বিশেষজ্ঞ সতর্ক করে বলেন, জনরোষকে সাংবাদিক ও শিল্পীদের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা অত্যন্ত বিপজ্জনক—বিশেষ করে এমন সময়ে, যখন দেশ একটি নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এর ফলে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, সংখ্যালঘুদের কণ্ঠস্বর ও ভিন্নমতের ওপর গুরুতর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে, যা গণতন্ত্রের জন্য মারাত্মক হুমকি।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর থেকে কয়েক শ সাংবাদিককে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও অস্পষ্ট অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অনেককে দীর্ঘ সময় নিবর্তনমূলকভাবে আটক রাখা হয়েছে এবং বেশ কয়েকজন সাংবাদিক হত্যার শিকার হয়েছেন। আইরিন খান বলেন, সরকার যদি নিরাপদ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে চায়, তবে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার এবং সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই হবে।

প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয় এবং ছায়ানট ভবনে সাম্প্রতিক হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মতামত ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাবিষয়ক স্পেশাল র্যাপোর্টিয়ার আইরিন খান। এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত তদন্ত ও বিচারের আওতায় আনার জন্য বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশে শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম ও একটি গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে ‘মব’ বা উচ্ছৃঙ্খল জনতার হামলা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। সরকারকে অবিলম্বে কার্যকর ও স্বচ্ছ তদন্ত পরিচালনা করে অপরাধীদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থানের প্রখ্যাত তরুণ নেতা শরিফ ওসমান বিন হাদির প্রকাশ্য দিবালোকে হত্যাকাণ্ডের পর দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। ওই বিক্ষোভের ধারাবাহিকতায় দ্য ডেইলি স্টার ও প্রথম আলো কার্যালয় এবং ছায়ানট ভবনে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর চালানো হয়। একই সময়ে নিউ এজ পত্রিকার সম্পাদক নূরুল কবীরের ওপরও হামলার ঘটনা ঘটে।
আইরিন খান বলেন, ‘এই মব আক্রমণগুলো হাওয়া থেকে ঘটেনি। বিচারহীনতা দূর করতে এবং সংবাদমাধ্যম ও শিল্প-সাহিত্যের স্বাধীনতা রক্ষায় অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতাই এসব ঘটনার পথ তৈরি করেছে।’ শরিফ ওসমান বিন হাদির পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের পাশাপাশি তাঁর মৃত্যুর ঘোষণার পর সাংবাদিক ও শিল্পীদের লক্ষ্য করে সংগঠিত সহিংসতারও তিনি কঠোর নিন্দা জানান।
জাতিসংঘের এই বিশেষজ্ঞ সতর্ক করে বলেন, জনরোষকে সাংবাদিক ও শিল্পীদের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা অত্যন্ত বিপজ্জনক—বিশেষ করে এমন সময়ে, যখন দেশ একটি নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এর ফলে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, সংখ্যালঘুদের কণ্ঠস্বর ও ভিন্নমতের ওপর গুরুতর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে, যা গণতন্ত্রের জন্য মারাত্মক হুমকি।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর থেকে কয়েক শ সাংবাদিককে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও অস্পষ্ট অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অনেককে দীর্ঘ সময় নিবর্তনমূলকভাবে আটক রাখা হয়েছে এবং বেশ কয়েকজন সাংবাদিক হত্যার শিকার হয়েছেন। আইরিন খান বলেন, সরকার যদি নিরাপদ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে চায়, তবে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার এবং সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই হবে।

শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র সংস্কারে গুরুত্ব দিচ্ছে। এই সংস্কারের জন্য ছয়টি সংস্কার কমিশনও গঠন করেছে। তবে সব কমিশন এখনো পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দেয়নি।
০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) আরও গতিশীল ও কার্যকর করতে কমিশনের সদস্যসংখ্যা তিন থেকে বাড়িয়ে পাঁচ করা এবং কমিশনের মেয়াদ পাঁচ বছর থেকে কমিয়ে চার বছর নির্ধারণ করে দুর্নীতি দমন কমিশন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ জারি করেছে সরকার।
২ ঘণ্টা আগে
সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদের (১) দফায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি আপিল বিভাগের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীকে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করেছেন।
৩ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছে চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকে। গত প্রায় দেড় বছরে নানা ঘটনায় সেই টানাপোড়েন বেড়েছে। অতি সম্প্রতি বিভিন্ন ইস্যুতে পাল্টাপাল্টি কূটনৈতিক তলব, রাজনৈতিক নেতাদের বক্তব্য, দুই দেশের হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে।
১১ ঘণ্টা আগে