Ajker Patrika

হাজার কোটি টাকার ইভিএম এখন ইসির বোঝা

  • ওয়্যারহাউস খালি করতে বিএমটিএফের চিঠি।
  • বিএমটিএফের দাবি, ভাড়া বাকি ৬০ কোটি টাকা।
  • মেয়াদ না থাকায় প্রকল্প বুঝে নিতে পারছে না ইসি।
  • প্রকল্পটি পরিকল্পিতভাবে নেওয়া হয়নি: পরিচালক।
মো. হুমায়ূন কবীর, ঢাকা 
আপডেট : ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২: ৪৫
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং নাগরিক সমাজের অনেকের ব্যাপক আপত্তি থাকা সত্ত্বেও তড়িঘড়ি করে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দেড় লাখ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) কেনার প্রকল্প নিয়েছিল তৎকালীন কে এম নূরুল হুদার নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে সেই নির্বাচনে পরীক্ষামূলকভাবে মাত্র ছয়টি আসনে ইভিএম ব্যবহার করা হয়। ইভিএম কোথায় রাখা হবে, প্রকল্পে তা ছিল না। এ কারণে বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির (বিএমটিএফ) ওয়্যারহাউসের (গুদাম) বকেয়া ভাড়ার টাকাও দেওয়া যাচ্ছে না। এই অবস্থায় ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ইভিএম বুঝে নিয়ে ওয়্যারহাউস খালি করতে ইসিকে চিঠি দিয়েছে সেনাবাহিনী পরিচালিত রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বিএমটিএফ।

এক বছর মেয়াদ বাড়ানোর পরও প্রকল্পটির সময় শেষ হয়ে গেছে গত ৩০ জুন। অব্যবহৃত রয়ে গেছে প্রকল্পের ১১৬ কোটি টাকা, যা ব্যবহার করা যাচ্ছে না। অন্যদিকে বিএমটিএফের দাবি, ভাড়া বাবদ ইসির কাছে তারা ৬০ কোটি টাকা পায়। ইসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এবং প্রকল্প পরিচালক বলছেন, অপরিকল্পিতভাবে প্রকল্পটি নেওয়ায় রাষ্ট্রের বিপুল অঙ্কের অর্থ কার্যকর ব্যবহার হয়নি।

বিএমটিএফ ওয়্যারহাউস খালি করতে বললেও প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও নির্বাচন কমিশনারদের পদ শূন্য থাকায় ইসি সচিবালয় কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারছে না। তাই প্রকল্পের মেয়াদ আরেকবার বাড়াতে ১১ নভেম্বর দ্বিতীয়বার পরিকল্পনা কমিশনে চিঠি দিয়েছেন ইসি সচিব শফিউল আজিম। প্রসঙ্গত, বর্ধিত মেয়াদ শেষের চার দিন আগে গত ২৬ জুনও একই অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছিল ইসি।

ইভিএম প্রকল্প নিয়ে কথা হলে সচিব শফিউল আজিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা বিষয়টা শেষ করতে চাচ্ছি। আমাকে প্রকল্পটি বুঝে নিতে হবে। এ কথাগুলোই আমরা পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে লিখেছি। বিএমটিএফের গুদামের ভাড়ার বিষয়টি সেটেল (ফয়সালা) করতে হবে। আমি দেব কীভাবে?’

বকেয়া ভাড়ার জন্য তাগাদা এবং ওয়্যারহাউস খালি করার চিঠি পাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন শফিউল আজিম।

তিনি জানান, পরিকল্পনা কমিশনে লেখা চিঠিতে তাঁরা ব্যয় না বাড়িয়ে প্রকল্পের মেয়াদ এক বছর বাড়ানোর জন্য বলেছেন। এখন এটি সরকারের সিদ্ধান্তের বিষয়।

সচিব বলেন, ইসির নিজস্ব ওয়্যারহাউস থাকলে সেখানে ইভিএমগুলো রাখা যেত। তিনি বলেন, ইসির ১০ অঞ্চলের ডিসিদের ওয়্যারহাউসের জায়গা বরাদ্দের জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে। তবে এগুলো দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া।

প্রকল্পের আওতায় কেনা দেড় লাখ ইভিএমের মধ্যে ৮৬ হাজার ৫৭৮টি বিএমটিএফে, ৬২ হাজার ৭৬৩টি ইসির মাঠপর্যায়ের কার্যালয়ে এবং ৬৫৯টি নির্বাচন ভবনের কাস্টমাইজ সেন্টারে সংরক্ষিত আছে। ইসি সচিবালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, ইভিএমগুলো সেনাবাহিনী কর্তৃক প্রকল্প দপ্তরকে বুঝিয়ে দেওয়ার কথা থাকলেও প্রকল্পের মেয়াদ না থাকায় এগুলো বুঝে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। কিছু অডিট আপত্তিও রয়েছে, যা প্রকল্পের মেয়াদের মধ্যেই নিষ্পন্ন করা প্রয়োজন ছিল। কিছু ইভিএম নষ্ট অবস্থায় রয়েছে, যা মেরামতযোগ্য। কিছু ইভিএম একেবারে অচল। বর্তমানে নির্বাচন কমিশন না থাকায় ইভিএমগুলোর বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যাচ্ছে না। প্রসঙ্গত, এ প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩ হাজার ৮২৫ কোটি ৩৪ লাখ টাকা।

ইভিএমের সোর্স কোড ক্রেডেনশিয়াল সফটওয়্যারসহ বিভিন্ন স্পর্শকাতর সামগ্রী বুঝে নেওয়ার লক্ষ্যে সেনাবাহিনী কর্তৃক ইসি সচিবালয়ের কর্মকর্তা, কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া প্রয়োজন। প্রকল্পের আওতায় অনিয়মিত শ্রমিক মজুরি বাবদ কিছু বিল পরিশোধ বাকি রয়েছে। কর্মকর্তারা এসব কারণে ব্যয় না বাড়িয়ে হলেও প্রকল্পের মেয়াদ বাড়াতে বলছেন। তাঁরা এ-ও বলছেন, প্রয়োজনে প্রকল্পের খরচ না হওয়া আনুমানিক ১১৬ কোটি টাকায় বাড়তি মেয়াদের ব্যয় নির্বাহ করা সম্ভব হবে।

গুদামের ভাড়া বাবদ ৬০ কোটি টাকা বকেয়া হওয়ার কথা নিশ্চিত করে প্রকল্প পরিচালক কর্নেল সৈয়দ রাকিবুল হাসান বলেন, ইভিএম প্রকল্পটি পরিকল্পিতভাবে নেওয়া হয়নি। যদি অল্প সময়ের মধ্যে নেওয়া হয়েও থাকে, পরে অনেক সময় ছিল তা ঠিক করার। আগের ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম প্রকল্প শেষ করে দেবেন বললেও এর জন্য কোনো ব্যবস্থা নেননি। পরে বর্তমান সচিব এসে ব্যয় না বাড়িয়ে এক বছর মেয়াদ বাড়ানোর উদ্যোগ নেন। সাবেক সরকারের পক্ষ থেকে মেয়াদ বাড়ানোর আশ্বাসও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ৫ আগস্টের পর থেকে এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।

কর্নেল সৈয়দ রাকিবুল হাসান বলেন, আগামীতে ইভিএম ব্যবহার করা হবে কি না, এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন কমিশনবিষয়ক সংস্কার কমিশন থেকে এখনো কিছু বলা হয়নি। তবে সুষ্ঠু, কারচুপিমুক্তভাবে দেশের প্রত্যেক মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার জন্য ইভিএমের কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করেন তিনি। সোর্স কোড দেওয়ার জন্য সেনাবাহিনীকে চিঠি দেওয়া হয়েছে জানিয়ে প্রকল্প পরিচালক বলেন, নভেম্বরের মধ্যেই প্রকল্প ইসিকে বুঝিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে।

ইভিএমের অবস্থা এবং প্রকল্পের ভবিষ্যৎ

প্রকল্প পরিচালক কর্নেল সৈয়দ রাকিবুল হাসান বলেন, ‘গত জুন পর্যন্ত যে নির্বাচন হয়েছে, তখনকার হিসাবে ৫০ থেকে ৫৫ হাজার মেশিন ওয়ার্কিং কন্ডিশনে (কার্যোপযোগী) ছিল। ২০-৩০ হাজার ব্যবহারের অনুপযোগী, যেগুলো আর ঠিক করা যাবে না। আর বাকিগুলোর বেশির ভাগের টাইমারে সমস্যা, সেগুলোর সমাধান আমরা পেয়েছি। এ ছাড়া ব্যালট ইউনিটের সমস্যার বিষয়ে বিএমটিএফকে জিজ্ঞেস করতে হবে, মেরামতের খরচ কী রকম আসে।’

প্রকল্পের মেয়াদ না বাড়ানো হলে রাষ্ট্রের টাকা একপ্রকার গচ্চা গেল মনে করেন কি না, এ প্রশ্নে প্রকল্প পরিচালক বলেন, ‘এই টাকা তো আর কোনো কিছুতে কার্যকরভাবে লাগেনি। এতে আসলে সেই অর্থে কোনো উপকার পাওয়া যায়নি।’

কর্নেল সৈয়দ রাকিবুল হাসান আরও বলেন, প্রায় চার হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি পরিকল্পনার পর ঠিকঠাক করে রাখার প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত কেউই দেয়নি। এটি নিয়ে কারও কোনো উৎসাহ নেই, কেউ জানতে চায় না।

তাহলে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে কাজ হবে কি না, এটি জানতে চাইলে রাকিবুল হাসান বলেন, ‘প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ালে যদি এক-দেড় মাসের মধ্যে টাকা দেয়, তাহলে ঠিক আছে। কিন্তু এগুলো আমলাতান্ত্রিক বিষয়। চিঠি যাবে, অর্থ মন্ত্রণালয় হয়ে টাকা আসবে, টাকা কবে দেবে—এসব করতে করতে আরও লম্বা সময় লাগবে। আমার মনে হয় কোনো লাভ নেই।’

প্রসঙ্গত, নির্বাচন কমিশনের সাবেক অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে আজকের পত্রিকাকে বলেছিলেন, ত্রুটিপূর্ণ ইভিএমগুলো মেরামতে ১ হাজার ২৬০ কোটি টাকা লাগবে বলে বিএমটিএফ জানিয়েছে।

ইভিএম নিয়ে নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব ভাবনা কী অথবা অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কথা হয়েছে কি না জানতে চাইলে সচিব শফিউল আজিম বলেন, ‘আমাদের এখনকার ভাবনা হচ্ছে প্রকল্পটি বুঝে নেওয়া। একটি প্রকল্প শেষ হলে তা বুঝে নেওয়ার ব্যাপার থাকে। নতুন কমিশন এলেও কমপক্ষে ছয় মাস লাগবে এটি বুঝে নিতে। যন্ত্রগুলো রাখবে, না ফেলে দেবে; তা সরকার বা কমিশনের নীতিগত সিদ্ধান্তের বিষয়। আপাতত আমরা শুধু প্রকল্পটা বুঝে নিতে চাচ্ছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদি হত্যাকাণ্ড: ফয়সালের স্ত্রী, শ্যালক ও বান্ধবীর দোষ স্বীকার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
হাদি হত্যাকাণ্ড: ফয়সালের স্ত্রী, শ্যালক ও বান্ধবীর দোষ স্বীকার

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার মামলার প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদের স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়া, তাঁর বান্ধবী মারিয়া আক্তার লিমা ও তাঁর শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ সিপু দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন আদালত।

অন্যদিকে ঘটনাস্থল থেকে আলামত হিসেবে জব্দ করা ফায়ার কার্তুজ ও ফায়ার বুলেট সদৃশ বস্তুর ব্যালিস্টিক পরীক্ষা করে বিস্তারিত মতামত প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

গতকাল বুধবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনজন। একইদিনে তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনাস্থলে জব্দ করা কার্তুজ ও বুলেট পরীক্ষার নির্দেশ দেন আদালত।

ঢাকার মহানগর পিপি ওমর ফারুক ফারুকী এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনজনের জবানবন্দি

গতকাল বুধবার সামিয়া, মারিয়া ও সিপুকে আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত সংস্থা ডিবি। মামলার তদন্তকর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ফয়সাল আহমেদ তিনজনের স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করার আবেদন করেন। পরে আসামি মারিয়া ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কামাল উদ্দিনের আদালতে এবং সামিয়া ও সিপু ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আমিনুল ইসলাম জুনাঈদের আদালতে জবানবন্দি দেন। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।

জবানবন্দিতে তিনজন কী বলেছেন তা জানা যায়নি। তবে বিশ্বস্ত এক সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার আগে ও পরে ফয়সাল কি করেছে এবং কি বলেছে সে সম্পর্কে বর্ণনা দিয়েছেন তিনজন।

এর আগে, গত ১৫ ডিসেম্বর এই তিনজনকে ৫ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। পরে ২০ ডিসেম্বর তিনজনকে আবার দ্বিতীয় দফায় চার দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। গত ১৪ ডিসেম্বর সামিয়া ও সিপুকে নারায়ণগঞ্জ থেকে এবং মারিয়াকে ঢাকা থেকে আটক করে পল্টন থানায় হস্তান্তর করা হয়।

উল্লেখ্য, এ মামলায় গ্রেফতার ফয়সালের মা ও বাবাও স্বীকোরোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

কার্তুজ-বুলেট ব্যালিস্টিক পরীক্ষা

বুধবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আওলাদ হোসাইন মোহাম্মদ জুনায়েদ ঘটনাস্থলে জব্দ করা ফায়ার কার্তুজ ও বুলেট সদৃশ বস্তু পরীক্ষার নির্দেশ দেন।

আবেদনে বলা হয়, শরিফ ওসমান হাদি ওরফে ওসমান গণি (৩৩) গত ১২ ডিসেম্বর দুপুর আনুমানিক ২টা ২০ মিনিটের দিকে পল্টন থানাধীন বিজয়নগর বক্স কালভার্ট রোড সংলগ্ন ডিআর টাওয়ারের সামনে দুষ্কৃতিকারীদের দ্বারা গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরবর্তীতে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

তাঁর অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স যোগে গত ১৫ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরে নিয়ে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসারত অবস্থায় গত ১৮ ডিসেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃতদেহ বাংলাদেশ বিমান যোগে দেশে এনে ২০ ডিসেম্বর সকালে সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়।

মামলায় ঘটনাস্থল হতে ফায়ার কার্তুজ ও ফায়ার বুলেট সদৃশ বস্তু আলামত জব্দ করা হয়। মামলাটির সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আলামতসমূহ ব্যালিস্টিক পরীক্ষা করে বিস্তারিত মতামত প্রদান করার জন্য সিআইডির ব্যালিস্টিক শাখার বিশেষ পুলিশ সুপারকে নির্দেশ প্রদান করা একান্ত প্রয়োজন। শুনানি শেষে আদালত সিআইডিকে নির্দেশ দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিমানবন্দর-৩০০ ফুট-গুলশানসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিজিবি মোতায়েন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ০৩
বিমানবন্দর, ৩০০ ফুট ও গুলশানসহ রাজধানীর অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
বিমানবন্দর, ৩০০ ফুট ও গুলশানসহ রাজধানীর অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরাকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা জোরদারে বিমানবন্দর, ৩০০ ফুট ও গুলশানসহ রাজধানীর অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে বিজিবি সদর দপ্তর থেকে এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস সূত্র জানায়, বাংলাদেশ সময় বুধবার দিবাগত রাত ১২টা ১৫ মিনিটে লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দর থেকে বিমানের বিজি-২০২ ফ্লাইটে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়ে আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন তারেক রহমান। স্ত্রী জুবাইদা রহমান ও একমাত্র কন্যা জাইমা রহমানও তাঁর সঙ্গে আসছেন।

সকাল ৯টা ৩৪ মিনিটে একটি ছবি শেয়ার করে ফেসবুকে তারেক রহমান জানান দেশের সীমানায় প্রবেশ করেছেন তিনি। পোস্টে লেখেন ‘দীর্ঘ ৬ হাজার ৩শ ১৪ দিন পর বাংলাদেশের আকাশে!’

এর কিছুক্ষণ আগেই উড়োজাহাজের ভেতরে নির্দিষ্ট আসনে বসা তারেক রহমান বিমানের টিকিট হাতে নিয়ে একটি ছবি পোস্ট করে লেখেন—ফেরা।

এদিকে তারেক রহমানকে সংবর্ধনা দিতে ঢাকার ৩০০ ফুট এলাকায় ৪৮ ফুট বাই ৩৬ ফুটের মঞ্চ প্রস্তুত করা হয়েছে। গতকাল বুধবার সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, কুড়িল থেকে সংবর্ধনা মঞ্চ পর্যন্ত রাস্তাজুড়ে তারেক রহমানকে স্বাগত জানিয়ে বিভিন্ন রঙের ব্যানার ও ফেস্টুন লাগানো হয়েছে। মঞ্চের দুই পাশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তাঁবু স্থাপন করা হয়েছে। রাস্তার ল্যাম্পপোস্টে লাগানো হয়েছে মাইক।

২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর উন্নত চিকিৎসার জন্য সপরিবারে যুক্তরাজ্যে যান তারেক রহমান। এরপর আর ফিরতে পারেননি। দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবন শেষে আজ দেশে ফিরছেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজ শুভ বড়দিন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬: ৪৩
আজ শুভ বড়দিন

খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ‘শুভ বড়দিন’ আজ ২৫ ডিসেম্বর। এই ধর্মের প্রবর্তক যিশুখ্রিষ্ট আজকের এই দিনে প্রাচীন ফিলিস্তিনের বেথলেহেম শহরে জন্মগ্রহণ করেন। বিশ্বের খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীরা এ দিনটিকে ‘বড়দিন’ হিসেবে উদ্‌যাপন করে থাকে। দিনটি উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার সরকারি ছুটি।

খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের বিশ্বাস, সৃষ্টিকর্তার মহিমা প্রচারের মাধ্যমে মানবজাতিকে সত্য ও ন্যায়ের পথে পরিচালিত করতেই প্রভু যিশুর পৃথিবীতে আগমন ঘটেছিল। মুসলিমদের কাছে যিশুখ্রিষ্ট হজরত ঈসা (আ.) হিসেবে পরিচিত। ঈসা (আ.)-এর ওপর নাজিল হওয়া আসমানি কিতাবের নাম ইঞ্জিল শরিফ। তবে দুই ধর্মের বিশ্বাসে কিছু তফাতও রয়েছে।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের খ্রিষ্টান ধর্মানুসারীরাও যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য, আনন্দ-উৎসব ও প্রার্থনার মধ্য দিয়ে বড়দিন উদ্‌যাপন করবে।

বড়দিন উপলক্ষে সারা দেশে খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের বাড়ি ও গির্জা উৎসবের সাজে সাজানো হয়। এ দিন গির্জায় বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে।

অনেক পরিবার তাদের বাড়িতে তৈরি করে প্রতীকী গোয়ালঘর। বিদেশি অতিথিদের বিবেচনায় তারকা হোটেলগুলো ক্রিসমাস ট্রি, সান্তা ক্লজসহ বিভিন্ন অনুষঙ্গ দিয়ে সাজানো হয়।

বড়দিন উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন।

বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, মহামতি যিশুখ্রিষ্ট ছিলেন মানবজাতির মুক্তির দূত এবং শান্তি, সত্য ও ন্যায়ের প্রচারক। তাঁর আদর্শ ভালোবাসা, সেবা ও ক্ষমার শিক্ষা দেয়। ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে দেশ ও জনগণের কল্যাণে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। বড়দিন সবার জীবনে আনন্দ ও সমৃদ্ধি বয়ে আনুক।

প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর বাণীতে বলেন, বড়দিন শান্তি, ন্যায় ও মানবমুক্তির বার্তা বহন করে। যিশুখ্রিষ্টের মানবসেবা, ভালোবাসা ও ক্ষমার আদর্শ অনুসরণের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বড়দিন উদ্‌যাপন দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আরও সুদৃঢ় করবে। বৈষম্যহীন, ন্যায়ভিত্তিক বাংলাদেশ গঠনে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

আতশবাজি, পটকা ও ফানুস নিষিদ্ধ

খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের বৃহত্তম ধর্মীয় অনুষ্ঠান পবিত্র বড়দিন উদ্‌যাপন উপলক্ষে আতশবাজি, পটকা ফোটানো এবং ফানুস ও গ্যাস বেলুন ওড়ানো নিষিদ্ধ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। গতকাল বুধবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী স্বাক্ষরিত এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শুভ বড়দিন ভাবগম্ভীর ও উৎসবমুখর পরিবেশে উদ্‌যাপনের লক্ষ্যে ঢাকা মহানগর পুলিশ অধ্যাদেশের ২৮ ধারার ক্ষমতাবলে বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে আগামী শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ঢাকা মহানগর এলাকায় সব ধরনের আতশবাজি, পটকা ফোটানো এবং ফানুস ও গ্যাস বেলুন ওড়ানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বড়দিনের অনুষ্ঠান সুষ্ঠু ও নিরাপদে উদ্‌যাপনের লক্ষ্যে ঢাকা মহানগর পুলিশ নগরবাসীর সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পদত্যাগ করলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বকশ চৌধুরী

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০০: ৪০
খোদা বকশ চৌধুরী। ফাইল ছবি
খোদা বকশ চৌধুরী। ফাইল ছবি

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখশ চৌধুরী পদত্যাগ করেছেন। তিনি প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী ক্ষমতাপ্রাপ্ত ছিলেন।

খোদা বখশ চৌধুরীর পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি গ্রহণ করেছেন জানিয়ে বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদে শেষ দিকে এসে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে গুঞ্জন ওঠে। ওই পদে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখশ চৌধুরীকে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে বলেও গুঞ্জন ছিল।

সরকারের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছিল, গত মঙ্গলবার রাতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেওয়ার কথা ছিল খোদা বখশ চৌধুরীর। কিন্তু এ নিয়ে উপদেষ্টাদের মধ্যে মতভেদ তৈরি হওয়ায় আগের অবস্থান থেকে সরে আসেন প্রধান উপদেষ্টা।

একটি সূত্র বলছে, উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ পাচ্ছেন এমন খবর ছড়িয়ে পড়ার পর সে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন না হওয়ায় খোদা বখশ চৌধুরী পদত্যাগ করেছেন।

এর আগে গত ১০ মার্চ প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক এম আমিনুল ইসলামও এভাবে পদত্যাগ করেছিলেন।

অধ্যাপক আমিনুলকে শিক্ষা উপদেষ্টার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু গত ৫ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও মানবাধিকারকর্মী সি আর আবরারকে শিক্ষা উপদেষ্টার দায়িত্ব দেওয়া হয়। এর পাঁচদিন পর পদত্যাগ করেন অধ্যাপক আমিনুল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত