Ajker Patrika

ছোট্ট ছেলেটির আজ জন্মদিন

জাহীদ রেজা নূর, ঢাকা
ছোট্ট ছেলেটির আজ জন্মদিন

শেখ রাসেলের জন্মদিন আজ। ১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবর ধানমন্ডির ৩২ নম্বর রোডের বাড়িতেই তার জন্ম হয়। বঙ্গবন্ধুর বাড়িটি তখনো পুরোপুরি তৈরি হয়নি। একটু একটু করে বাড়ির কাজ চলছে। নিচতলার উত্তর-পূর্বদিকের একটা ঘরে থাকতেন শেখ হাসিনা আর শেখ কামাল। সেই ঘরেই জন্ম নিয়েছিল শেখ রাসেল। বঙ্গবন্ধু তখন ঢাকায় নেই। মিস ফাতেমা জিন্নাহর পক্ষে প্রচার চালাতে গেছেন চট্টগ্রামে। ল্যান্ডফোনেই তাঁকে খবর দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছিল।রাসেলের জন্ম হতে পারত কোনো ক্লিনিকে বা হাসপাতালে।

কিন্তু বেগম মুজিব একেবারেই চাননি বাড়ির বাইরে যেতে। তিনি বাড়িতে না থাকলে ছোট ছোট চার ছেলেমেয়েকে কে দেখে রাখবে? তাই একজন ডাক্তার আর নার্স এসেছিলেন এই ৩২ নম্বরের বাড়িতে। রাসেলের বড় ফুফু, মেজ ফুফু চলে এসেছিলেন। আরও ছিলেন খোকা মামা। অনেক রাত। শেখ জামাল আর শেখ রেহানার চোখ ঘুমে ঢুলুঢুলু। ঠিক এ সময় মেজ ফুফু ঘর থেকে বেরিয়ে জানালেন একটা ছেলে হয়েছে! সবার মন আনন্দে ভরে গেল!
২.
রাসেল যখন একেবারে ছোট, সে সময়ই তো ছয় দফা দিলেন বঙ্গবন্ধু। তার কিছুদিন পরেই বঙ্গবন্ধুকে জেলে পুরল পাকিস্তানি শাসকেরা। রাসেলের বয়স তখন দেড় বছরের মতো। সবাই রাসেলকে আদর করে; কিন্তু রাসেল তো বাবার আদর পায় না। আর ও এত ছোট ছিল যে, সবকিছু বোঝার বয়সও হয়নি। তাই ও বুঝতেও পারত না ওর বাবা যেখানে থাকে সেটা জেলখানা। কেন থাকে সেখানে, সেটাও জানা নেই ওর।

বঙ্গবন্ধু লিখেছেন, ‘১৮ মাসের রাসেল জেল অফিসে এসে একটুও হাসে না যে-পর্যন্ত আমাকে না দেখে।’ বঙ্গবন্ধুকে দূর থেকে দেখলেই ‘আব্বা, আব্বা’ বলে চিৎকার করত। গলা জড়িয়ে ধরত। জেলখানার নাম দিয়েছিল ‘আব্বার বাড়ি’। কথাটা তো সত্যি। জীবনের একটা বড় সময় বঙ্গবন্ধু কাটিয়েছেন জেলখানায়।

অন্যদের সঙ্গে রাসেলও বঙ্গবন্ধুকে দেখতে কারাগারে যেত। মূলত শেখ হাসিনার কোলে করেই আসত।রাসেল বঙ্গবন্ধুর হৃদয়জুড়ে ছিল। ‘কারাগারের রোজনামচা’য় অন্তত ১৫ বার রাসেল-প্রসঙ্গ আছে।

১৯৬৭ সালের ২৭-২৮ মে যে ভুক্তি আছে, তাতে বঙ্গবন্ধু লিখেছেন, ‘রাসেল আমাকে পড়ে শোনাল, আড়াই বছরের ছেলে আমাকে বলছে, ৬ দফা মানতে হবে, সংগ্রাম সংগ্রাম চলবে চলবে।’

কোথা থেকে এসব শিখল, জিজ্ঞেস করলে বেগম মুজিব উত্তর দিলেন, ‘বাড়িতে সভা হলে কর্মীরা বলে।’ সেখান থেকেই শিখে নিয়েছে।

 ৩. 
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আর বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের পাঁচ ছেলেমেয়ের মধ্যে রাসেল সবার ছোট। বঙ্গবন্ধুর খুব প্রিয় ছিলেন বার্ট্রান্ড রাসেল। রাসেলের বই পড়ে তিনি বেগম মুজিবকে ব্যাখ্যা করে শোনাতেন। রাসেলের দার্শনিক আলোচনায় বেগম মুজিব খুবই আকৃষ্ট হন। তাই ছেলের নাম রাখেন রাসেল। ছোট্ট রাসেল আস্তে আস্তে বড় হতে থাকে। ওকে বিছানায় শুইয়ে রেখেই সংসারের কাজ করতেন বেগম মুজিব। স্কুল বন্ধ থাকলে শেখ হাসিনা এসে বসতেন ছোট্ট ভাইটার পাশে। রাসেল তার ছোট ছোট হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরত বড় বোনের বেণি। লম্বা চুলের বেণিটা এগিয়ে দিতেন শেখ হাসিনা, রাসেল তা ধরে হাসত। নাড়াচাড়া করত। খুব মজা পেত বেণি নিয়ে খেলতে।

একটা ক্যামেরা ছিল। জন্মের প্রথম দিন থেকেই শেখ রাসেলের ছবি তোলা হয়েছে। জন্মের দিন, প্রথম মাস, প্রতি তিন মাস, প্রতি ছয় মাসে ছবি তুলে ভরে ফেলা হয়েছিল অ্যালবাম। যেভাবে বড় হচ্ছে রাসেল, তা ছিল সেই ছবিগুলোয়। কিন্তু সেই ছবিগুলো আর থাকেনি। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে পাকিস্তানি বাহিনী বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে লুটতরাজ চালায়, অ্যালবামটিও তারা লুট করে নেয়। তাই একেবারে ছোট্ট রাসেলের খুব বেশি ছবি এখন আর দেখা যায় না।
৪.
দেশ স্বাধীন হলো ১৬ ডিসেম্বর। বেগম মুজিব মুক্তি পেলেন ১৭ ডিসেম্বর। চোখে পানি, মুখে হাসি নিয়ে কাটতে থাকল দিনগুলো। রাসেল খুবই উল্লসিত হলো।
বঙ্গবন্ধু ফিরে এলেন ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি। রাসেলকে কোলে দিয়ে রাসেলের দাদা মানে বঙ্গবন্ধুর বাবা গিয়েছিলেন বিমানবন্দরে। লাখো মানুষের ঢল তখন বিমানবন্দরে। দেশে ফেরার পর বঙ্গবন্ধুকে একেবারে দূরে যেতে দিতে চাইত না রাসেল। বঙ্গবন্ধু দুপুরে গণভবনেই খেতেন। বিকেলে হাঁটতেন। রাসেল প্রতিদিন বিকেলে গণভবনে যেত বাবার কাছে। তার সাইকেলটাও আসত সঙ্গে। রাসেলের মাছ ধরার খুব শখ ছিল। মাছ ধরে আবার ছেড়ে দিত। একবার নাটোরের উত্তরা গণভবনে যাওয়ার পর সেখানে সারা দিন মাছ ধরা নিয়েই ব্যস্ত ছিল রাসেল।
৫.
 ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে হত্যা করা হয় বঙ্গবন্ধুকে। বাংলাদেশেরই একদল কুলাঙ্গার এই হত্যাযজ্ঞে অংশ নেয়। শেখ কামালকে হত্যা করার পর বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। এরপর বেগম মুজিবসহ পরিবারের সবাইকে হত্যা করা হয়। বিদেশে ছিলেন বলে বেঁচে যান শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। শেখ রাসেলকে নিচতলায় এনে লাইনে দাঁড় করানো হয়। মায়ের কাছে যাব—বলে শেখ রাসেল। রাসেলকে সেখানে নিয়ে গিয়ে হত্যা করা হয়।
৬.
আজ শেখ রাসেলের জন্মদিন। এই শিশুটিকে হত্যা করেছিল কুলাঙ্গারেরা। পরিবারের সর্বকনিষ্ঠ সন্তানটি ছিল বড় আদরের। ওর শৈশবের বেশির ভাগ সময় জেলে ছিলেন বলে বঙ্গবন্ধু রাসেলকে সব সময় কাছে রাখতে চাইতেন। সে কারণেই কি না, কে জানে, বঙ্গবন্ধুর সঙ্গেই অচেনা পথে পাড়ি দিল শেখ রাসেল।

কর্মসূচি: শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে দুই দিনের কর্মসূচি পালন করবে আওয়ামী লীগ। দলটির দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘শেখ রাসেল দিবস’ উপলক্ষে আজ সকাল ৮টায় বনানী কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত শহীদ শেখ রাসেলসহ ১৫ আগস্ট নিহত সব শহীদের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, ফাতেহা পাঠ, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল হবে।

আগামীকাল মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টায় শেখ রাসেল দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভা করবে দলটি। সভায় সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হবেন।

শেখ রাসেল দিবস উপলক্ষে মন্ত্রণালয়গুলো পৃথক পৃথক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে শেখ রাসেলের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা, আলোচনা সভা।

এদিকে দিবসটি উপলক্ষে গতকাল রোববার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, প্রিয় বঙ্গবন্ধু গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করে যুবলীগ।

শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি (ইউল্যাব) স্কুল অ্যান্ড কলেজে আলোচনা সভা ও শিক্ষার্থীদের মাঝে মেধাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটি। যাতে প্রধান অতিথি ছিলেন দলীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মনোনয়নপত্র নিলেন ৩১৪৪ জন, আগামীকালই দাখিলের শেষ সময়

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ১৫
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আগ্রহী প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় শেষ হচ্ছে। আগামীকাল সোমবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে। আজ রোববার বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৩০০ আসন থেকে ৩ হাজার ১৪৪ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। আর জমা দিয়েছেন ১৬৬ জন।

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জনসংযোগ পরিচালক মো. রুহুল আমিন মল্লিক এ তথ্য জানিয়েছেন।

এদিকে নির্বাচনী কার্যক্রমের এই গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, ভোটের কাজে কর্মকর্তা নিয়োগসহ বিভিন্ন বিষয়ে সরকারের বিভিন্ন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে ইসি।

এর আগে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারসহ বিভিন্ন পদক্ষেপের তাগিদ দিয়ে গতকাল শনিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ স্বাক্ষরিত পৃথক চিঠি দেওয়া হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিবকে পাঠানো চিঠিতে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোটের লক্ষ্যে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা বিধান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েনের পরিকল্পনা ও এ জন্য বাজেট প্রণয়ন, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড প্রস্তুত করা, ভুল তথ্য ও অপতথ্যের বিস্তার রোধ এবং বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকদের অনুমোদন ও নিরাপত্তা দেওয়াসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ বাস্তবায়নের তাগিদ দেওয়া হয়।

এদিকে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে পাঠানো এক চিঠিতে বলা হয়, নির্বাচন-সংক্রান্ত কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ, সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিত অফিস, প্রতিষ্ঠান এবং প্রয়োজনে বেসরকারি অফিস ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকেও প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ করতে হবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিবকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, নির্বাচন উপলক্ষে আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং গণমাধ্যমের বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিক আসবেন। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকের বাংলাদেশে আগমন উপলক্ষে ভিসা প্রসেসিংসহ সব বিষয়ে সচিবের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করা হয়।

স্থানীয় সরকার বিভাগকে দেওয়া চিঠিতে বিগত সংসদ নির্বাচনে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দিষ্ট নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য যেভাবে নির্বাহী আদেশ জারি করা হয়েছিল, এবারও তা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় ও সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবদের কাছে সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের জন্য ব্যাপকভাবে প্রচার ও প্রচারণা চালানো ও জনসচেতনতা সৃষ্টি করার জন্য সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিবকে পাঠানো চিঠিতে পোস্টাল ভোটের বিষয়ে সহায়তা চাওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, ডাক বিভাগকে সমন্বয় ও গোপনীয়তা বজায় রেখে পোস্টাল ব্যালট দ্রুত ও নিরাপদে পৌঁছে দেওয়া এবং ফেরত আনার কাজ সুষ্ঠুভাবে করতে হবে।

এ ছাড়া আজ স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব ও শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীকে দেওয়া চিঠিতে ইসি জানায়, ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হবে এমন প্রতিষ্ঠানগুলো সংস্কার, কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপন, সংস্কার এবং কেন্দ্রে যাতায়াতের ভাঙা ও সংকীর্ণ রাস্তা মেরামতের প্রয়োজন হলে এ বিষয়ে ইসির সম্মতির প্রয়োজন হবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আগামী মঙ্গলবার অভিভাষণ দেবেন প্রধান বিচারপতি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত
আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

সারা দেশে কর্মরত জেলা ও দায়রা জজ, মহানগর দায়রা জজ, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটদের উদ্দেশে অভিভাষণ দেবেন প্রধান বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী।

আগামী মঙ্গলবার সকাল ১০টায় সুপ্রিম কোর্ট অডিটরিয়ামে এই অভিভাষণ দেবেন তিনি। সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোছাইন আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে আজ রোববার আইন মন্ত্রণালয়ের এক স্মারকে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শে ৩০ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় সুপ্রিম কোর্ট অডিটরিয়ামে আয়োজিত প্রধান বিচারপতির অভিভাষণ দেওয়া অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য দেশের সব জেলার জেলা ও দায়রা জজ, মহানগর দায়রা জজ, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

এর আগে আজ সকালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী দেশের ২৬তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন। বঙ্গভবনের দরবার হলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তাঁকে শপথবাক্য পড়ান।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে পাকিস্তানের হাইকমিশনারের সৌজন্য সাক্ষাৎ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ২৩
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার। ছবি: প্রেস উইং
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার। ছবি: প্রেস উইং

বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। এ সময় দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার জানান, গত বছরের তুলনায় বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য প্রায় ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। দুই দেশের ব্যবসায়ী সমাজ নতুন নতুন খাতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা নিয়ে কাজ করছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ২০২৬ সালের জানুয়ারি মাস থেকেই ঢাকা-করাচি সরাসরি বিমান চলাচল শুরু হতে পারে।

পাকিস্তানি হাইকমিশনার জানান, বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাকিস্তানে উচ্চশিক্ষার প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। বিশেষ করে চিকিৎসাবিজ্ঞান, ন্যানো টেকনোলজি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নিয়ে পড়ার বিষয়ে অনেক শিক্ষার্থী আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

লিভার ও কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্টের জন্য বাংলাদেশি রোগীদের পাকিস্তানে যাওয়ার হার বাড়ছে উল্লেখ করে ইমরান হায়দার বলেন, পাকিস্তান এ-সংক্রান্ত বিশেষায়িত চিকিৎসাক্ষেত্রে বাংলাদেশের চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা প্রদানের সুযোগ দিতে প্রস্তুত।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান যোগাযোগকে স্বাগত জানান। তিনি সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সাংস্কৃতিক, শিক্ষামূলক এবং সরাসরি জনযোগাযোগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন। পাশাপাশি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য আরও সম্প্রসারণের জন্য নতুন নতুন ক্ষেত্র খুঁজে বের করার পরামর্শ দেন প্রধান উপদেষ্টা।

হাইকমিশনার ইমরান হায়দারের দায়িত্ব পালনকালে দুই দেশের মধ্যে যৌথ বিনিয়োগের নতুন দুয়ার উন্মোচিত হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রধান উপদেষ্টা।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-বিষয়ক (এসডিজি) সমন্বয়কারী ও সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজ রাতে চাঁদপুর ও দক্ষিণাঞ্চলে নৌযান চলাচল বন্ধ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
এমভি কীর্তনখোলা ১০ লঞ্চ। ছবি: সংগৃহীত
এমভি কীর্তনখোলা ১০ লঞ্চ। ছবি: সংগৃহীত

ঘন কুয়াশার কারণে আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) রাতে চাঁদপুর ও দেশের দক্ষিণাঞ্চলে সব ধরনের নৌযান চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।

আজ বিআইডব্লিউটিএর জারি করা এক বিশেষ নৌ চলাচল বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বর্তমানে যেসব লঞ্চ নির্দিষ্ট গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রাপথে রয়েছে, সেসবসহ অন্য সব নৌযানকে অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল বিধিমালা, ১৯৭৬ অনুসরণ করে চলাচল করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, চাঁদপুরের হাইমচরে মেঘনা নদীতে গত বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) রাতে ঘন কুয়াশার কারণে ঢাকাগামী যাত্রীবাহী লঞ্চ এমভি জাকির সম্রাট-৩ ও বরিশালগামী অ্যাডভেঞ্চার-৯ নামে দুই লঞ্চের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় চার যাত্রী নিহত হন এবং আহত হন বেশ কয়েকজন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত