Ajker Patrika

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের আরেকটি পদক্ষেপ: প্রধানমন্ত্রী

বাসস
আপডেট : ০৫ অক্টোবর ২০২৩, ২০: ৪৬
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের আরেকটি পদক্ষেপ: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলার কথা পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র (আরএনপিপি) স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার আরেকটি পদক্ষেপ। 

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ আগামীতে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে উঠবে। এই পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র সেই স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার আরেকটি পদক্ষেপ।’ 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বৃহস্পতিবার ‘আরএনপিপি’র জন্য পরমাণু জ্বালানি গ্রহণ অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে দেওয়া ভাষণে এ কথা বলেন। 

অনুষ্ঠানে ক্রেমলিন থেকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যুক্ত হন। ভিয়েনা থেকে ‘আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা—আইএইএ’র মহাপরিচালক রাফায়েল মারিয়ানো গ্রসিও রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প এলাকায় আয়োজিত মূল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়েছে। আমরা নিউক্লিয়ার যুগে প্রবেশ করেছি।’ 

বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধুপ্রতিম দেশ রাশিয়ান ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে দেশসহ সবাইকে সম্মানিত করায় তিনি রাশিয়ার ফেডারেশন এবং এর প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে তাঁর সরকার, দেশবাসী ও তাঁর ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানান এবং বাংলাদেশ-রাশিয়া বন্ধুত্ব অটুট থাকবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন। 

প্রেসিডেন্ট পুতিনের বক্তব্যের উদ্ধৃতি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এইমাত্র আমরা প্রেসিডেন্ট পুতিনের কাছ থেকে শুনেছি ২০২৬ সালে আমাদের দ্বিতীয় ইউনিট এবং ২০২৪ সালে প্রথম ইউনিট চালু হবে। আমরা সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছি। অচিরেই প্রথম ইউনিট থেকে ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে। আর এই বিদ্যুৎ হবে অত্যন্ত পরিবেশবান্ধব।’ 

এর আগে তাঁর সরকার ২০২৩ সালের মধ্যে প্রথম ইউনিট থেকে এবং ২০২৪ সালের মধ্যে দ্বিতীয় ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল বলেও জানান তিনি। 

তিনি বলেন, ‘এই বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনার জন্য আমরা পৃথক আইন প্রণয়নের মাধ্যমে নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড নামে একটি কোম্পানি গঠন করেছি। যেকোনো ধরনের দুর্যোগে আমাদের এই পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে দিকটা খেয়াল রেখে এই প্ল্যান্টের ডিজাইন প্রণয়ন এবং নির্মাণকাজ পরিচালনা করা হচ্ছে। তা ছাড়া ব্যবহৃত জ্বালানি (স্পেন্ট ফুয়েল) ব্যবস্থাপনার জন্য আমরা রাশিয়ান ফেডারেশনের সঙ্গে চুক্তি সই করেছি। রাশিয়ান ফেডারেশন এসব স্পেন্ট ফুয়েল তাদের দেশে ফেরত নিয়ে যাবে বলে আমাদের কথা দিয়েছে।’ 

রাশিয়ান ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, আইএইএর মহাপরিচালক রাফায়েল মারিয়ানো গ্রসি, রোসাটমের মহাপরিচালক অ্যালেক্সি লিখাচেভ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। 

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। 

শুরুতে আরএনপিপির প্রথম ব্যাচের পারমাণবিক জ্বালানি তৈরি ও বিতরণের ওপর একটি অডিও-ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়, যেখানে আরএনপিপি প্রকল্প পরিচালক এবং এনপিসিবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. শৌকত আকবর আরএনপিপির পরিচিতি তুলে ধরেন। 

স্বাগত বক্তব্য দেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিসচিব মো. আলী হোসেন। পরে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পক্ষ থেকে রোসাটমের মহাপরিচালক অ্যালেক্সি লিখাচেভ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে হস্তান্তরের জন্য জ্বালানি সরবরাহের সনদ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমানের হাতে জ্বালানি সরবরাহের একটি মডেল তুলে দেন। 

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য বর্ষীয়ান নেতা আমির হোসেন আমু, জাতীয় সংসদের উপনেতা এবং দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক গণভবন প্রান্তের মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। 

তেজস্ক্রিয় জ্বালানি হস্তান্তর করার ফলে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৩তম এবং দক্ষিণ এশিয়ায় তৃতীয় পারমাণবিক জ্বালানি ব্যবহারকারী রাষ্ট্র। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর ভাষণে এই শক্তিকে শান্তির জন্য ব্যবহারের এবং পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ চুক্তির বাস্তবায়নের প্রতি দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। 

তিনি বলেন, ‘পরমাণু শক্তি আমরা শান্তি রক্ষায় ব্যবহার করব। আমরা বিশ্বব্যাপী পারমাণবিক অস্ত্রের সাধারণ ও সম্পূর্ণ নির্মূল এবং পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ চুক্তির বাস্তবায়নের প্রতি দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছি। আমরা বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়ন করেছি এবং একটি স্বাধীন পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করেছি।’ 

এই কর্তৃপক্ষ ‘আইএইএ’র সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রক্ষা করে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রতিটি স্তরে নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। 

তিনি বলেন, ‘১৯৯৬ সালে জনগণের ভোটে জয়ী হয়ে আমরা সরকার গঠন করি। ২০২০ সালের মধ্যে সবার জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহের লক্ষ্য নিয়ে ভিশন স্টেটমেন্ট ও পলিসি স্টেটমেন্ট অন পাওয়ার সেক্টর রিফর্মস প্রণয়নও অনুমোদন করি। ১৯৯৬ সালে আমরা জ্বালানি নীতিতে পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করি। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নের কার্যক্রম শুরু করি। বাংলাদেশ নিউক্লিয়ার পাওয়ার অ্যাকশন প্ল্যান-২০০০ প্রণয়ন করি। আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা আইএইএর সহযোগিতা চাই। আইএইএর আন্তরিক সহায়তায় আমরা একটি সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনাও গ্রহণ করি এবং একটি বিশেষ কমিটিও করে দেওয়া হয়।’ 

এরপর সরকারের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় এই প্রকল্প আর এগোয়নি এবং ২০০৮ সালে নির্বাচনে জয়ী হয়ে ২০০৯ সালে পুনরায় আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে এই রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প আবারও বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয় আওয়ামী লীগ সরকার, বলেন তিনি। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা রূপকল্প-২০২১ ঘোষণা দিয়েছিলাম আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারে কাজেই এর সঙ্গে সংগতি রেখে আবার রূপপুর প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করি। বন্ধুরাষ্ট্র রাশিয়া এটি বাস্তবায়নে এগিয়ে আসে। তা ছাড়া আইএইএ শুরু থেকেই আমাদের নানাভাবে সহায়তা করে আসছে। এ জন্য আমি রাশিয়ান ফেডারেশন সরকার, আইএইএ এবং সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।’ 

তিনি প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানানোর পাশাপাশি ২০১৩ সালের জানুয়ারি মাসে তাঁর রাশিয়া সফরে পুতিনের সঙ্গে মস্কোতে বৈঠক এবং রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের কথা স্মরণ করেন। 

তিনি বলেন, ‘২০১৩ সালের ২ অক্টোবর প্রকল্পটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছি। এখন পর্যন্ত আপনার সর্বাত্মক সহযোগিতায় অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি সফলতার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে।’ 

তিনি বন্ধুরাষ্ট্র ভারত এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও ধন্যবাদ জানান এই নির্মাণকাজে সহযোগিতার জন্য। 

তিনি ২০১৭ সালে আইএইএর তৎকালীন মহাপরিচালক ইউকিও আমানোর আমন্ত্রণে ভিয়েনা সফরের সময় আইএইএর সদর দপ্তরে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনার প্রসঙ্গ টেনে সেই সময় এই প্রকল্পে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে তাদের সার্বিক সহায়তা ও মনিটরিং করার আহ্বানের উল্লেখ করেন। 

তিনি বলেন, ‘সেই থেকে আইএইএ আমাদের এ বিষয়ে সার্বিক সহায়তা প্রদান করছে। এরপর ২০১৭ ও ২০১৮ সালে আমি এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ও দ্বিতীয় ইউনিটের কংক্রিট ঢালাইয়ের উদ্বোধন করি। ২০২১ ও ২০২২-এ এই কেন্দ্রের যথাক্রমে ইউনিট-১ ও ইউনিট-২-এর রি-অ্যাক্টর প্রেশার ভেসেল স্থাপন করি। আজ এই কেন্দ্রে পারমাণবিক জ্বালানি সংযুক্ত হলো।’ 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় জনবলকে রাশিয়ান ফেডারেশন যথাযথ প্রশিক্ষণ প্রদান করছে। যেহেতু বন্ধুপ্রতিম ভারতেও একই রকম একটি প্রকল্প হচ্ছে—সে জন্য আমাদের কিছু জনবলকে প্রশিক্ষণের জন্য আমরা ভারতেও প্রেরণ করেছি।’ 

প্রধানমন্ত্রী এ সময় এ দেশে একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রতিষ্ঠায় যুদ্ধবিধ্বস্ত স্বাধীন দেশ গঠনকালেই জাতির পিতার প্রচেষ্টার উল্লেখ করে বলেন, ‘স্বাধীনতার পর জাতির পিতা মাত্র ৯ মাসেই একটি সংবিধান উপহার দিয়েছিলেন। গ্রামীণ উন্নয়ন ও কৃষি বিপ্লব শিরোনামে সেই সংবিধানের ১৬ নম্বর অনুচ্ছেদে যুক্ত করেছিলেন—নগর ও গ্রামাঞ্চলের জীবনযাত্রার মানের বৈষম্য ক্রমাগতভাবে দূর করিবার উদ্দেশ্যে কৃষি বিপ্লবের বিকাশ, গ্রামাঞ্চলে বৈদ্যুতীকরণের ব্যবস্থা, কুটিরশিল্প ও অন্যান্য শিল্পের বিকাশ এবং শিক্ষা, যোগাযোগব্যবস্থা ও জনস্বাস্থ্যের উন্নয়নের মাধ্যমে গ্রামাঞ্চলের আমূল রূপান্তর সাধনের জন্য রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন।’ 

সে লক্ষ্যে তিনি প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিদ্যুতায়নের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। সমুদ্রসম্পদ এমনকি খনিজ সম্পদ জাতীয়করণ করেছিলেন এবং বিদেশি ও বহুজাতিক কোম্পানিগুলো থেকে আমাদের গ্যাস ফিল্ডগুলো কিনে নিয়ে রাষ্ট্রীয় মালিকানা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন এবং নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগের নির্দেশ দিয়েছিলেন, বলেন প্রধানমন্ত্রী। 

শেখ হাসিনা বলেন, বিশিষ্ট পরমাণুবিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়াকে প্রস্তাবিত রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পরিচালকের দায়িত্ব দিয়েছিলেন জাতির পিতা। সে অনুযায়ী কিছু কাজও হয়েছিল। দুর্ভাগ্য, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকেরা জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করার পর এই মেগা প্রকল্পটিসহ সব জনবান্ধব ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড থেমে যায়। 

প্রধানমন্ত্রী সেই বিয়োগান্তক অধ্যায় স্মরণ করে দেশের জনগণের জন্য আজকের দিনটিকে অত্যন্ত আনন্দের দিন হিসেবে অভিহিত করেন। 

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের নিরলস প্রচেষ্টায় পারমাণবিক জ্বালানি গ্রহণের মধ্য দিয়ে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র আজ সফল পরিণতি লাভ করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পোস্টাল ভোট দিতে ১১ লাখ নিবন্ধন, ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বাড়াল ইসি

বাসস, ঢাকা  
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটে পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিতে এখন পর্যন্ত ১১ লাখ ২৫ হাজার ২৬৩ জন ভোটার নিবন্ধন করেছেন। ভোটারদের অনুরোধের প্রেক্ষিতে নিবন্ধনের সময়সীমা আগামী ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত বাড়িয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

আজ বুধবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, মোট নিবন্ধিত ভোটারের মধ্যে পুরুষ ৯ লাখ ৮০ হাজার ৪২৪ জন এবং নারী ১ লাখ ৪৪ হাজার ৮৩৭ জন।

ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানান, পূর্বঘোষিত সময়সীমা আজ ৩১ ডিসেম্বর শেষ হওয়ার কথা থাকলেও প্রবাস ও দেশের অভ্যন্তরের ভোটারদের বিশেষ অনুরোধে নিবন্ধনের সময় আরও পাঁচ দিন বাড়ানো হয়েছে। ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপের মাধ্যমে প্রবাসী বাংলাদেশি, নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং নিজ এলাকার বাইরে কর্মরত সরকারি চাকরিজীবীরা এই নিবন্ধনের সুযোগ পাচ্ছেন। এছাড়া আইনি হেফাজতে (কারাগারে) থাকা ভোটাররাও পোস্টাল ভোটের এই সুবিধা নিতে পারবেন।

প্রবাসী ভোটারদের পরিসংখ্যান

প্রবাসী ভোটারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নিবন্ধন করেছেন সৌদি আরব থেকে, যার সংখ্যা ১ লাখ ৯৭ হাজার ১২ জন। এরপর কাতারে ৬৮ হাজার ৬৬৮, মালয়েশিয়ায় ৬৩ হাজার ৮৩, ওমানে ৫০ হাজার ৩৯ এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে ৩১ হাজার ৫৫৫ জন ভোটার নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন। গত ১৮ নভেম্বর থেকে চালু হওয়া এই অ্যাপের মাধ্যমে বিশ্বের ১৪৮টি দেশের প্রবাসীরা নিবন্ধনের সুযোগ পাচ্ছেন।

দেশের অভ্যন্তরে নিবন্ধন

দেশের ভেতরে ‘ইন-কান্ট্রি পোস্টাল ভোট’ ক্যাটাগরিতে নিবন্ধন করেছেন ৪ লাখ ৭১ হাজার ৭৮৪ জন। জেলাভিত্তিক তালিকায় শীর্ষে রয়েছে কুমিল্লা, যার সংখ্যা ৮৮ হাজার ৬৮২ জন। এরপর ঢাকায় ৮২ হাজার ১৮৫ ও চট্টগ্রামে ৭৫ হাজার ৫৮৯ জন। আসনভিত্তিক হিসেবে ফেনী-৩ আসনে সর্বোচ্চ ১৪ হাজার ১৩৯ জন নিবন্ধন করেছেন। এরপর চট্টগ্রাম-১৫ আসনে ১১ হাজার ৫৮৯ জন ও নোয়াখালী-১ আসনে ১১ হাজার ৪৭৬ জন নিবন্ধন করেছেন।

ব্যালট প্রেরণ কার্যক্রম

প্রবাসী ভোটারদের নিবন্ধন বিষয়ক ‘ওসিভি-এসডিআই’ প্রকল্পের টিম লিডার সালীম আহমাদ খান বাসসকে নিশ্চিত করেছেন, গত ১২ দিনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ৪ লাখ ৪৫ হাজার ৭২৫ জন প্রবাসী ভোটারের ঠিকানায় পোস্টাল ব্যালট পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার এক দিনেই পাঠানো হয়েছে ২৭ হাজার ৪৪২টি ব্যালট।

নির্বাচন কমিশন জানায়, নিবন্ধনের জন্য প্রবাসী ভোটারদের অবশ্যই সংশ্লিষ্ট দেশের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার জানাজায় এসে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পাকিস্তানের স্পিকারের কুশল বিনিময়

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ৪৩
আজ বুধবার বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন অনুষ্ঠানের আগে ঢাকায় কুশল বিনিময় করেন পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর। ছবি: প্রেস উইং
আজ বুধবার বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন অনুষ্ঠানের আগে ঢাকায় কুশল বিনিময় করেন পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর। ছবি: প্রেস উইং

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন অনুষ্ঠানের আগে ঢাকায় কুশল বিনিময় করেছেন পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর।

আজ বুধবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানের প্রাক্কালে দুই দেশের শীর্ষ এই প্রতিনিধির মধ্যে শুভেচ্ছা বিনিময় হয়। খালেদা জিয়ার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নিতে তাঁরা উভয়েই ঢাকায় অবস্থান করছেন।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক মহল গভীর শোক প্রকাশ করেছে এবং তাঁর জানাজায় অংশ নিতে একাধিক দেশের প্রতিনিধিরা ঢাকায় এসেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

২০২৫ সালজুড়ে আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে ‘মব সন্ত্রাস’: আইন ও সালিশ কেন্দ্র

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
২০২৫ সালজুড়ে আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে ‘মব সন্ত্রাস’: আইন ও সালিশ কেন্দ্র

২০২৫ সাল জুড়ে ‘মব সন্ত্রাস’ আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। কোনো ধরনের প্রমাণ, তদন্ত বা আইনিপ্রক্রিয়া অনুসরণ না করে, সন্দেহ, গুজব সৃষ্টি করে মানুষকে মারধর ও হত্যা করা হয়েছে। ‘তওহীদি জনতা’র নামে বেআইনিভাবে মব তৈরি করে শিল্প-সংস্কৃতি কেন্দ্র ভাঙচুর, বাউল সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, এমনকি কবর থেকে তুলে লাশ পুড়িয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে। মুক্তিযোদ্ধাসহ বিরুদ্ধ মতের মানুষকে নানাভাবে হেনস্তা করা হয়েছে। এসব ঘটনায় অনেক ক্ষেত্রেই আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নিষ্ক্রিয়তা এবং অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার ক্ষেত্রে উদাসীনতার প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছে, যা দেশে আইনের শাসনের জন্য চূড়ান্ত হুমকিস্বরূপ এবং সমাজে নজিরবিহীন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে।

বেসরকারি সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) ‘বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ২০২৫’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ সব কথা বলা হয়েছে। আজ বুধবার এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

আসকের তথ্যানুযায়ী, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মব সন্ত্রাসে কমপক্ষে ১৯৭ জন নিহত হয়েছে। ২০২৪ সালে এই সংখ্যা ছিল ১২৮ জন।

আসকের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়কালে কমপক্ষে ২৯৩ জন নাগরিক মব সন্ত্রাসের শিকার হয়ে নিহত হয়েছে। মবের শিকার হয়ে ২০২৫ সালে ঢাকা জেলায় সর্বাধিক ২৭, গাজীপুরে ১৭, নারায়ণগঞ্জে ১১ জন নির্মমভাবে নিহত হয়েছে। ২০২৫ সালের আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে গণপিটুনির সংখ্যা তুলনামূলকভাবে অন্যান্য মাসের থেকে বেশি ঘটেছে। এই সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীরাও গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন, যদিও অধিকাংশ ভুক্তভোগী ছিলেন দল-মত নিরপেক্ষ সাধারণ নাগরিক।

আসকের তথ্য সংরক্ষণ ইউনিটের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ২০২৫ সালে কমপক্ষে ৩৮ জন ব্যক্তি বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছে। এ সব ঘটনা সংঘটিত হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে, নির্যাতনে, কথিত ‘গুলিতে’ বা ‘বন্দুকযুদ্ধের’ নামে। ২০২৫ সালে কমপক্ষে ১০৭ জন ব্যক্তি দেশের বিভিন্ন কারাগারে মৃত্যুবরণ করেছে। এর মধ্যে ৬৯ জন হাজতি এবং কয়েদি ৩৮ জন। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে দেশে অন্তত ৪০১টি রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় প্রায় ৪ হাজার ৭৪৪ জন আহত এবং ১০২ জন নিহত হয়েছে। সহিংসতার এই চিত্র কেবল প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার সংঘাতে সীমাবদ্ধ নয়; বরং দলীয় অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও বিভক্তিও সহিংসতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

আসকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও আইনি নিপীড়নের ঘটনা একটি উদ্বেগজনক ধারায় পৌঁছেছে। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে অন্তত ৩৮১ জন সাংবাদিক নির্যাতন ও হয়রানির তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দ্বারা নির্যাতন, হয়রানি বা হুমকির শিকার হয়েছেন অন্তত ২৩ জন সাংবাদিক। প্রাণনাশের হুমকি পেয়েছেন ২০ জন। প্রকাশিত সংবাদ বা মতামতকে কেন্দ্র করে মামলার সম্মুখীন হয়েছেন কমপক্ষে ১২৩ জন সাংবাদিক। পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সরাসরি হামলার শিকার হয়েছেন ১১৮ জন সাংবাদিক। এ সময়কালে দুর্বৃত্ত কর্তৃক হত্যার শিকার হয়েছেন ৩ জন সাংবাদিক এবং দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে রহস্যজনকভাবে ৪ জন সাংবাদিকের লাশ উদ্ধারের ঘটনা ঘটে।

আসকের তথ্যানুযায়ী, ২০২৫ সালে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর কমপক্ষে ৪২টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই হামলাসমূহে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩৩টি বাড়িঘর, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে ৩৬টি বসত ঘরে। এ ছাড়া ৪টি মন্দিরে হামলা, ৬৪টি প্রতিমা ভাঙচুর, ৯টি জমি দখলের ঘটনা ঘটেছে। এ সব ঘটনায় নিহত হয়েছে ১ জন, আহত হয়েছে কমপক্ষে ১৫ জন। এ বছর দেশে ২১৭ জন নারী স্বামীর মাধ্যমে হত্যার শিকার হয়েছেন এবং ৬৩ জন নারীকে স্বামীর পরিবারের সদস্যরা হত্যা করেছে। নিজের পরিবারের সদস্যদের হাতেও ৫১ জন নারী প্রাণ হারিয়েছেন। পারিবারিক সহিংসতা থেকে মুক্তির পথ খুঁজে না পেয়ে অন্তত ১৬৮ জন নারী আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে ধর্ষণের ৭৪৯টি ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৫৬৯টি ছিল একক ধর্ষণ এবং ১৮০টি দলবদ্ধ ধর্ষণ। ধর্ষণের পর অন্তত ৩৬ জন নারীকে হত্যা করা হয়েছে, ৭ জন নারী আত্মহত্যা করেছেন এবং ধর্ষণের চেষ্টার পর প্রাণ হারিয়েছেন আরও ৬ জন নারী।

আসকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত অন্তত ৪১০ জন শিশু বিভিন্ন ধরনের সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছে। এসব ঘটনার মধ্যে রয়েছে ধর্ষণের পর হত্যা, শারীরিক নির্যাতন, অপহরণ, আত্মহত্যা এবং বিস্ফোরণে মৃত্যু।

আসক মনে করে, দেশে নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রতি জনগণের মধ্যে আশা ও প্রত্যাশা সৃষ্টি হলেও বাস্তব পর্যায়ে বৈষম্য, নিপীড়ন ও দমন-পীড়নের চিত্রে আশানুরূপ ইতিবাচক পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়নি। বরং কিছু ক্ষেত্রে মানবাধিকারের সামগ্রিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে বলে লক্ষ্য করা গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঢাকায় ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, পাকিস্তানের স্পিকার ও ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ৩৮
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, পাকিস্তান পার্লামেন্টের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক ও ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিয়নপো ডি. এন. ধুংগেল। ছবি: সংগৃহীত
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, পাকিস্তান পার্লামেন্টের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক ও ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিয়নপো ডি. এন. ধুংগেল। ছবি: সংগৃহীত

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শেষ বিদায়ে অংশ নিতে এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় অনুষ্ঠেয় জানাজায় যোগ দিতে ঢাকায় পৌঁছেছেন বিভিন্ন দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি ও কূটনীতিকেরা। আজ বুধবার সকাল থেকেই বিদেশি অতিথিরা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করতে শুরু করেন। পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পিকার, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা খালেদা জিয়ার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে বাংলাদেশে পা রেখেছেন।

আজ বুধবার বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে পাকিস্তান সরকারের বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে ঢাকায় পা রাখেন দেশটির জাতীয় পরিষদের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক। ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তান হাইকমিশনের প্রেস কাউন্সিলর ফাসিহ উল্লাহ খান জানান, বিমানবন্দরে স্পিকারকে স্বাগত জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। বিমানবন্দরের মুখপাত্র ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মাসুদ নিশ্চিত করেছেন যে, স্পিকারকে বহনকারী ফ্লাইটটি নির্ধারিত সময়েই অবতরণ করে।

এর কিছুক্ষণ আগে, বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে একটি বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় পৌঁছান ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর। তাঁকে বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। ভারতের পক্ষ থেকে এই উচ্চপর্যায়ের জানাজায় অংশগ্রহণকে দক্ষিণ এশিয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন থেকেও বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

ভুটান সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে বেগম খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে সকালে ঢাকায় এসে পৌঁছান দেশটির পররাষ্ট্র ও বৈদেশিক বাণিজ্য মন্ত্রী লিয়নপো ডি. এন. ধুংগেল। বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক এস এম সামাদ জানান, বিমানবন্দরে ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভুটানের রাষ্ট্রদূত এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা স্বাগত জানান।

আজ দুপুর ২টায় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বেগম খালেদা জিয়ার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এই জানাজায় অংশ নিতে ইতিমধ্যে দেশি-বিদেশি রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক এবং দেশের দূর-দূরান্ত থেকে আসা হাজার হাজার সাধারণ মানুষের সমাগম শুরু হয়েছে। বিদেশি প্রতিনিধিরা জানাজায় উপস্থিত থেকে কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।

বিএনপি চেয়ারপারসনের এই রাষ্ট্রীয় জানাজাকে কেন্দ্র করে মানিক মিয়া এভিনিউ ও আশপাশের এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত