Ajker Patrika

নিখোঁজের ১৯ মাস পর চার তরুণের ফোন, র‍্যাব-পুলিশের সহযোগিতা চেয়েছে পরিবার

আমানুর রহমান রনি, ঢাকা
আপডেট : ০৬ জুন ২০২৩, ১০: ০৮
নিখোঁজের ১৯ মাস পর চার তরুণের ফোন, র‍্যাব-পুলিশের সহযোগিতা চেয়েছে পরিবার

উনিশ মাস আগে বাড়ি ছেড়ে নিখোঁজ হন কয়েক তরুণ। তাঁদের চারজন সম্প্রতি বাবা-মাকে ফোন কল করে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার আকুতি জানিয়েছেন। তাঁরা ‘জামাআতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’ নামে দেশের নতুন একটি জঙ্গি সংগঠনে যোগ দিয়েছিলেন।

তাঁদের উদ্ধার করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে পরিবারগুলো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অনুরোধ জানিয়েছে।

অবশ্য ওই তরুণদের অবস্থান এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বিষয়টি নিয়ে পুলিশের জঙ্গি ও সন্ত্রাস দমনের বিশেষ ইউনিটগুলো কাজ করছে। 

২০২১ সালের ১৫ নভেম্বর সিলেটের ওসমানীনগর থেকে নিখোঁজ হন শেখ আহমদ মামুন। নিখোঁজের ১৯ মাস পর গত ঈদুল ফিতরের তিন দিন আগে মা আনোয়ারা বেগমকে ফোনকল করেন। 

আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘শবে কদরের আগে আমার ছেলে ফোন দিয়ে অনেক কেঁদেছে। বলছে, মা, আমাকে বাঁচাও। আমি বলছি, বাড়ি আয়। কিন্তু ভয়ে সে বাড়ি আসেনি। স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চায় আমার ছেলে। আমি পুলিশ ও র‍্যাবের কাছে আমার ছেলেকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে অনুরোধ জানিয়েছি। সিলেট ও ঢাকার র‍্যাব ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলেছি। আমার ছেলেকে তাবলিগের কথা বলে ভুল বুঝিয়ে অন্যরা এই জঙ্গিবাদের পথে নিয়েছে।’ 

মামুন সিলেটের লিডিং ইউনিভার্সিটির ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। ওসমানীনগর উপজেলার দয়ামীরে তাঁদের বাড়ি। মামুন বাজারে যাওয়ার কথা বলে বের হয়ে আর ফেরেননি। এ ঘটনায় তাঁর বাবা শেখ শামসুল হক স্বপন ওই বছরের ২৭ নভেম্বর ওসমানীনগর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। 

ছেলের ফোনকল পাওয়ার কথা জানিয়ে শামসুল হক স্বপন বলেন, ‘পার্বত্য অঞ্চলের জঙ্গি আস্তানার ভিডিওতে ছেলেকে দেখে আমার পৃথিবী অন্ধকার হয়ে যায়। বাবা হিসেবে এটা খুবই কষ্টের। এত দিনে সে ইঞ্জিনিয়ার হয়ে বের হতো। তাকে ভুল বুঝিয়ে এই পথে নিয়েছে। তারা কয়েকজন জঙ্গি আস্তানায় বিদ্রোহ করে বের হয়ে আসতে চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তাদের আবার আটকে দেয় অন্য জঙ্গিরা।’ 

শামসুল হক বলেন, ‘ঈদের আগে মামুনের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে। একবার বলেছিল ঢাকা, আরেকবার বলেছিল চট্টগ্রাম। বাড়িতে আসতে বললেও র‍্যাবের ভয়ে আসেনি। এরপর ফোন বন্ধ হয়ে যায়। আমরা ওই ফোন নম্বর র‍্যাবকে দিয়েছি। র‍্যাবকে আমি অনুরোধ করেছি আমার ছেলেকে জীবিত উদ্ধার করতে। তাকে আমি দায়িত্ব নিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনব।’ 

মামুনের সঙ্গে নিখোঁজ হন একই গ্রামের আরও তিন যুবক। তাঁরা হলেন—হাসান সাঈদ, সাইফুল ইসলাম ও সাদিকুর রহমান। তাঁদের মধ্যে সাইফুল ইসলাম ও সাদিকুর রহমানকে র‍্যাব গ্রেপ্তার করেছে। তবে হাসান সাঈদের এখনো খোঁজ নেই। মামুন তাঁর বাবাকে ফোনকল দেওয়ার কিছুদিন আগে হাসান সাঈদ তাঁর বাবা ছোরাব আলী হাসানকে ফোনকল করেন। 

সাঈদ হাসানের ছোট ভাই আবিদ হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার ভাই গত রমজানে হঠাৎ একদিন ফোন দিয়েছিল। এরপর আর খোঁজ নেই। আমরা বিষয়টি নিয়ে খুবই চিন্তিত।’ 

হাসান সাঈদ নিখোঁজের মাত্র পাঁচ মাস আগে বিয়ে করেন। এরও তিন বছর আগে ঢাকার মাদ্রাসা থেকে টাইটেল পাস করেন তিনি। এরপর থেকে গ্রামেই থাকতেন। 

হাসান সাঈদের বাবা ছোরাব আলী হাসান বলেন, ‘বিদেশি তাবলিগ জামাতের সঙ্গে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর আর খোঁজ পাইনি। রমজানে ফোন দিয়েছিল, এরপর আবার এক মাস হলো নিখোঁজ। আমরা র‍্যাব ও পুলিশকে জানিয়েছি। দেখি তারা কী করে।’ 

সিলেটের মামুন ও সাঈদের ফোনকলের পর আরও এক নিখোঁজ কিশোর বাবা-মায়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। তাঁর নাম আবু বক্কর রিয়াসাদ রাইয়ান (১৬)। তিনি নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানা এলাকা থেকে ২০২২ সালের মার্চে নিখোঁজ হন। 

আল-আমিন নামে একজন গৃহশিক্ষকের মাধ্যমে তিনি জঙ্গিবাদে জড়ান। তাঁকে ‘জামাআতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার’ বান্দরবানের আস্তানায় নিয়ে যান ওই শিক্ষক। এমনটাই অভিযোগ পরিবারের। 

রাইয়ানের বাবা তানজীম মোহাম্মদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার ছেলে অনেক ছোট ছিল, তাকে ভুল বুঝিয়ে ভুল পথে নিয়েছে শিক্ষক। আমার ছেলে কয়েক দিন আগে ফোন দিয়েছিল। বলছে, বাবা আমাকে বাঁচাও, আমি আর ভুল করব না। পরে ওই নম্বরে ফোন দিয়েছি, আর পাইনি। আমি সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ও র‍্যাবকে নম্বর দিয়েছি, তারা এখন কাজ করছে।’ 

এ ছাড়া মাদারীপুর জেলার কালিকাপুর পূর্ব হোসনাবাদ গ্রামের মো. ইয়াছিন ওরফে আরিফ (২১) তাঁর পরিবারকে ফোনকল করেছেন। তিনিও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চান। 

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে র‍্যাবের মুখপাত্র খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘আমরা তাদের আস্থায় নিয়ে স্বাভাবিক জীবনে আনার চেষ্টা করছি। তারা পরিবারের কাছে যে দাবি করেছে, তার সত্যতা আমরা যাচাই করছি।’ 

এদিকে চার তরুণ স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চাওয়াকে স্বাগত জানিয়েছে র‍্যাব ও পুলিশ। এরই মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা পরিবারগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। 

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তথ্যমতে, ২০২১ ও ২০২২ সালে দেশের ১৯টি জেলা থেকে ৫৫ জন তরুণ বাড়ি ছাড়েন। র‍্যাব গত বছরের শেষের দিকে বান্দরবান অভিযান চালিয়ে নতুন জঙ্গি সংগঠনটির একটি আস্তানার সন্ধান পায়। পাহাড়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি চীনের আশ্রয়ে এই জঙ্গি সংগঠন প্রশিক্ষণ নিচ্ছিল। সেখানে নিখোঁজ তরুণদের অনেকে উপস্থিতি ছিলেন। তাঁদের মধ্যে র‍্যাব ও ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের অভিযানে ৪৩ জন গ্রেপ্তার হয়। দুজন নিহত হন। পাহাড়ি এলাকা থেকে পালিয়ে যাওয়ারাই এখন তাঁদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চাইছেন বলে ধারণা করছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা। 

ডিএমপির সিটিটিসির প্রধান মো. আসাদুজ্জামান জানিয়েছেন, ‘কেউ ভালো হতে চাইলে আমরা তাদের সুযোগ দেই। এ জন্য আমাদের একটি প্রোগ্রাম নেওয়া আছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

ভালুকায় কারখানার শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

আজকের রাশিফল: ফুচকায় ঝাল কম দিতে বলুন, বড় অঙ্কের টাকা হাতে আসার সম্ভাবনা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে হামলাকারীরা শনাক্ত, জানালেন ধর্ম উপদেষ্টা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ৫৫
ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত
ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউয়ে অবস্থিত দেশের শীর্ষস্থানীয় দুই সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ ও ‘দ্য ডেইলি স্টার’ কার্যালয়ে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনায় জড়িত কয়েকজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন।

আজ রোববার (২১ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে ধর্ম উপদেষ্টা এ তথ্য জানান।

ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে যারা আগুন দিয়েছে, আমি গোয়েন্দা রিপোর্ট থেকে জানতে পেরেছি যে, তাদের কিছু ছবি ও পরিচয় আমরা ইতিমধ্যে শনাক্ত করতে পেরেছি। তাদের গ্রেপ্তার করে দ্রুততম সময়ে আইনের আওতায় আনার জন্য আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছি।’

উপদেষ্টা আরও উল্লেখ করেন, কোনো প্রতিষ্ঠান জ্বালিয়ে দেওয়া বা মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করা কখনোই কাম্য নয়। সরকার এ ধরনের অন্যায় ও গর্হিত কাজ বন্ধ করতে এবং অপরাধীদের শাস্তি দিতে বদ্ধপরিকর।

গত বৃহস্পতিবার রাতে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের কার্যালয়ে একদল দুর্বৃত্ত হামলা করে। হামলাকারীরা কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কার্যালয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। পরে কার্যালয় দুটি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

এই ভয়াবহ হামলার ঘটনাকে ‘গণমাধ্যমের জন্য কালো দিন’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন সাংবাদিক নেতা ও বিশিষ্ট নাগরিকেরা। তাঁরা বলছেন, এই হামলা স্বাধীন গণমাধ্যমের কণ্ঠ রোধ করার একটি জঘন্য প্রচেষ্টা।

ছায়ানট ভবনে হামলার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ‘কোনো প্রতিষ্ঠান কেউ আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেবে, এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা এটাকে অন্যায় ও গর্হিত কাজ বলে বিবেচনা করি।’

এ ছাড়া ময়মনসিংহের ভালুকায় পোশাককর্মী দিপু চন্দ্র দাসকে পিটিয়ে হত্যার পর মরদেহ গাছে ঝুলিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনাকে ‘অত্যন্ত নিন্দনীয়’ বলে অভিহিত করেন ধর্ম উপদেষ্টা। উপদেষ্টা বলেন, সরকার কোনোভাবেই কাউকে আইন নিজের হাতে তুলে নিতে দেবে না। প্রতিটি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

ভালুকায় কারখানার শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

আজকের রাশিফল: ফুচকায় ঝাল কম দিতে বলুন, বড় অঙ্কের টাকা হাতে আসার সম্ভাবনা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শেখ হাসিনা, সাবেক মন্ত্রী-সচিবসহ ১৭ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ফাইল ছবি
আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ফাইল ছবি

ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ মোট ১৭ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আজ রোববার (২১ ডিসেম্বর) ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতের অবকাশকালীন বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন মেঘনা-গোমতী সেতুতে টোল আদায়ে দুর্নীতির অভিযোগে দায়ের করা মামলায় এই নির্দেশ দেন।

অন্য যাঁদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে তাঁরা হলেন— সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমু, আনিসুল হক, তোফায়েল আহমেদ, খন্দকার মোশাররফ হোসেন, সাবেক প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, সাবেক সচিব এম এ এন ছিদ্দিক, সাবেক অতিরিক্ত সচিব মো. ফারুক জলিল, সাবেক উপ-সচিব মোহাম্মদ শফিকুল করিম, প্রকৌশলী মো. ফিরোজ ইকবাল, ইবনে আলম হাসান, মো. আফতাব হোসেন খান, মো. আব্দুস সালাম এবং সিএনএস লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুনীর উজ জামান চৌধুরী, পরিচালক সেলিনা চৌধুরী ও ইকরাম ইকবাল।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত এ আদেশ দেন বলে জানান দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম।

দুদকের সহকারী পরিচালক তানজিল হাসান ১৭ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আছে আবেদন করেন।

আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম রোডে মেঘনা-গোমতী সেতুতে ২০১৬ সালে নীতিমালা উপেক্ষা করে ‘কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেম লিমিটেড’কে (সিএনএস) উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। টাকার অঙ্কে কাজের মূল্য নির্ধারণ না করে বরং মোট আদায়কৃত টোলের ১৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে সার্ভিস চার্জ নির্ধারণ করা হয়। এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি মোট ৪৮৯ কোটি ৪৩ লাখ ৭৩ হাজার টাকা বিল তুলেছে। দুদক বলছে, এ প্রক্রিয়ায় সরকারের প্রায় ৩০৯ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

এ ঘটনায় দুদক ১২ অক্টোবর শেখ হাসিনাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে। মামলাটি তদন্তাধীন। তদন্তকালে দুদক জানতে পেরেছে, এ মামলার আসামিরা যেকোনো সময় দেশত্যাগ করতে পারেন। তাঁরা দেশত্যাগ করলে তদন্তে ব্যাঘাত ঘটবে বিধায় তাঁদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা প্রয়োজন।

উল্লেখ্য, গত বছর ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা দেশত্যাগ থেকে ভারতে চলে যান। এরপর বিভিন্ন মামলায় তাঁর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

ভালুকায় কারখানার শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

আজকের রাশিফল: ফুচকায় ঝাল কম দিতে বলুন, বড় অঙ্কের টাকা হাতে আসার সম্ভাবনা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দেশি নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের জন্য আবেদনের সময় বাড়ল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ৪৬
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট পর্যবেক্ষণের জন্য দেশি পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোর পর্যবেক্ষক মোতায়েনের আবেদনের সময়সীমা বাড়িয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগ্রহী সংস্থাগুলো ২৯ ডিসেম্বর (সোমবার) অফিস চলাকালীন সময় পর্যন্ত আবেদন করতে পারবে।

আজ রোববার নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের জনসংযোগ শাখা থেকে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালা-২০২৫ অনুযায়ী, তফসিল ঘোষণার ১০ দিনের মধ্যে অর্থাৎ ২১ ডিসেম্বরের মধ্যে পর্যবেক্ষক মোতায়েনের আবেদন করার কথা ছিল। তবে বিভিন্ন পর্যবেক্ষক সংস্থার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কমিশন এই সময়সীমা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

নির্বাচন কমিশন থেকে অনুমতি পাওয়ার পর কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকদের পরিচয়পত্র ও গাড়ির স্টিকার নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে সরবরাহ করা হবে। অন্যদিকে, স্থানীয় পর্যবেক্ষকদের জন্য এই পরিচয়পত্র ও স্টিকার সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং বা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে দেওয়া হবে।

পরিচয়পত্র সংগ্রহের সময় অনুমোদিত পর্যবেক্ষকের এইচএসসি বা সমমানের সার্টিফিকেটের সত্যায়িত ফটোকপি, জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্যায়িত ফটোকপি ও নির্ধারিত ফরম (EO-2 ও EO-3) পূরণ করে জমা দিতে হবে।

পর্যবেক্ষক নীতিমালা-২০২৫ এবং প্রয়োজনীয় অঙ্গীকারনামা ও অন্যান্য ফরম নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে (www.ecs.gov.bd) পাওয়া যাবে। বর্তমানে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ৮১টি পর্যবেক্ষক সংস্থা রয়েছে, যারা এই প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারবে।

নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মো. আশাদুল হক স্বাক্ষরিত এ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতেই পর্যবেক্ষকদের এই সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

ভালুকায় কারখানার শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

আজকের রাশিফল: ফুচকায় ঝাল কম দিতে বলুন, বড় অঙ্কের টাকা হাতে আসার সম্ভাবনা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

টিএফআই সেলে গুম: হাসিনাসহ সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ পেছাল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ০৩
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগের শাসনামলে টিএফআই সেলে গুম করে নির্যাতনের ঘটনায় দায়ের করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনা ও সেনা কর্মকর্তাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের বিষয়ে আদেশ ২৩ ডিসেম্বর। আজ রোববার (২১ ডিসেম্বর) উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ আদেশের জন্য এই দিন ধার্য করেন।

ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত তিন আসামির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী হামিদুল মিসবাহ ও সাতজনের পক্ষে ছিলেন তাবারক হোসেন। পলাতক আসামি শেখ হাসিনার পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের পক্ষে শুনানি করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী এম হাসান ইমাম ও পলাতক তিন সেনা কর্মকর্তার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সুজাদ মিয়া।

এর আগে এই মামলায় অভিযোগ গঠনের জন্য আজকের দিন ধার্য করা হয়েছিল। তবে আজ সিনিয়র আইনজীবী হিসেবে মনসুরুল হক চৌধুরী এই মামলায় শুনানি করতে সময় আবেদন করেন। পরে ট্রাইব্যুনাল তাঁকে শুনানি করতে আগামীকাল এবং আদেশের জন্য ২৩ ডিসেম্বর দিন ঠিক করে দেন।

এই মামলায় ১৭ আসামির মধ্যে রোববার শুনানির সময় ১০ সেনা কর্মকর্তা ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা হলেন র‍্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল কে এম আজাদ, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কামরুল হাসান, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুব আলম, সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারোয়ার বিন কাশেম, সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) খায়রুল ইসলাম, সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মশিউর রহমান জুয়েল এবং সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন।

এই মামলায় পলাতক রয়েছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শেখ হাসিনার সাবেক প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, র‍্যাবের সাবেক মহাপরিচালক এম খুরশিদ হোসেন, র‍্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ব্যারিস্টার হারুন অর রশিদ এবং সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন।

এর আগে র‍্যাবের টাস্কফোর্স ইন্টারোগেশনের (টিএফআই) মাধ্যমে গুম-নির্যাতনের ঘটনায় দায়ের করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গত ৮ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জমা দেয় প্রসিকিউশন। পরে ওই দিনই তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এই মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে ১৪ জনকে গুম করে নির্যাতনের ঘটনায় চারটি অভিযোগ আনা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

ভালুকায় কারখানার শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

আজকের রাশিফল: ফুচকায় ঝাল কম দিতে বলুন, বড় অঙ্কের টাকা হাতে আসার সম্ভাবনা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত