আইনের খসড়া
সৌগত বসু, ঢাকা

মেট্রোরেল চালায় যারা, সেই ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) অধীন একটি প্রতিষ্ঠান। আইন সংশোধন করে এখন আধুনিক নগর পরিবহনটির নিয়ন্ত্রণ থেকে সেই কর্তৃপক্ষকে বাদ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। সংশোধিত আইনের খসড়ায় মেট্রোরেলের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি পরিচালনা কোম্পানি ডিএমটিসিএলের হাতেই রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
প্রস্তাবিত খসড়ায় মেট্রোরেলে অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরক দিয়ে ক্ষতি করা, যাত্রীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত করা, ভাঙচুর, অশালীন কাজ করা, ভিক্ষা করা এবং অনুমতি ছাড়া শুটিং করার মতো বিভিন্ন অপরাধের জন্য অর্থদণ্ড বা জরিমানা কিংবা উভয় ধরনের সাজার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যাত্রী ও ট্রেনের বিমাবিষয়ক ধারা বাতিলেরও প্রস্তাব করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ ডিএমটিসিএলের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণের যৌক্তিকতা নিয়ে কার্যত একমত হলেও সম্ভাব্য অনিয়ম ও অঘটনের ক্ষেত্রে কর্তাব্যক্তিদের দায়মুক্তির প্রস্তাবে উদ্বেগ জানিয়েছেন।
যাত্রী পরিবহন সেবা চালুর দুই বছর পূর্তির আগেই মেট্রোরেল পরিচালনায় এই বড় পরিবর্তনের আভাস দিয়েছে ডিএমটিসিএল। গত মঙ্গলবার সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিবের দপ্তরে ২০১৫ সালের মেট্রোরেল আইন সংশোধন করে তৈরি করা ‘মেট্রোরেল নির্মাণ, রক্ষণাবেক্ষণ, নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা আইন, ২০২৪’-এর খসড়া চূড়ান্ত করার সভা হয়। এতে ডিটিসিএর নির্বাহী পরিচালক, ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
২০১২ সালের ১৮ ডিসেম্বর মেট্রোরেল প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) অনুমোদিত হয়। এরপর মেট্রোরেল আইন প্রণয়ন করা হয় ২০১৫ সালে। ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর থেকে মেট্রোরেলের প্রথম লাইনে যাত্রী পরিবহন শুরু হয়। শুরু থেকে মেট্রোরেল পরিচালনা করে আসছিল ডিএমটিসিএল। ডিটিসিএ আইন, ২০১২ অনুযায়ী এই সংস্থাই মেট্রোরেলের প্রধান কর্তৃপক্ষ। নতুন আইনে ডিটিসিএকে বাদ দিয়ে সব দায়িত্ব নিতে চাইছে ডিএমটিসিএল। ডিটিসিএর নির্বাহী পরিচালকই মেট্রোরেলের প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। নতুন আইনের খসড়ায় সেই ধারা বিলুপ্ত করা হয়েছে।
যাত্রীসেবার কিছু ধারার বিলুপ্তি মেট্রোরেল পরিচালনার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষকে (লাইসেন্সি) বাধ্যতামূলকভাবে মেট্রোরেল ও যাত্রীর জন্য বিমা করার নির্দেশনা রয়েছে বর্তমান আইনে। মেট্রোরেল দুর্ঘটনায় পড়ে কোনো ব্যক্তি বা স্থাপনার ক্ষতি হলে ৯০ দিনের মধ্যে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে আইনে। নতুন আইনে এ-সংক্রান্ত ধারা বিলুপ্ত করতে চায় ডিএমটিসিএল। এ ছাড়া মেট্রোরেল দুর্ঘটনায় আঘাতপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের প্রাথমিক চিকিৎসার বাধ্যতামূলক দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছিল লাইসেন্সিকে। কোনো আহত ব্যক্তি লাইসেন্সির মাধ্যমে চিকিৎসাসেবা নিতে না চাইলেও তাঁর প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যয়ভার পরিশোধের বাধ্যবাধকতা রয়েছে এই আইনে। ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষ নতুন আইনে এ ধারা বিলুপ্ত করতে চাইছে।
মেট্রোরেল আইনে ‘লাইসেন্সি’ বলতে এ পর্যন্ত মেট্রোরেল নির্মাণ, পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নের জন্য লাইসেন্সপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের বোঝানো হতো। নতুন আইনের খসড়ায় সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি যৌথ মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের জন্য এ সুযোগ রাখা হয়েছে। মেট্রোরেল লাইসেন্স প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ হিসেবে এর আগে কোনো সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ না থাকলেও ডিএমটিসিএল এখন সেই কর্তৃত্ব চাইছে।
বিভিন্ন অপরাধে সাজার বিধান
মেট্রোরেলের যাত্রীদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করলে এক বছর জেল অথবা পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। আগের আইনে শুধু জরিমানা ছিল। যাত্রী মদ্যপ বা মাতাল অবস্থায় থাকলে, ভাঙচুর বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে অথবা অশালীন কাজ বা গালিগালাজ করলে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড অথবা এক বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড কিংবা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। আগের আইনে এটি ছিল না। মেট্রোরেলে ক্ষতিকর ও বিপজ্জনক সামগ্রী বহন করলে ২০ হাজার টাকা অথবা এক বছর কারাদণ্ড কিংবা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে।
মেট্রোরেলের কোনো কর্মচারীকে কর্তব্যরত অবস্থায় যদি নেশাগ্রস্ত পাওয়া যায়, তবে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড হবে।
খসড়ায় অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরক দ্রব্যের মাধ্যমে মেট্রোরেলের সম্পত্তির (রেললাইন, বক্স-কাঠামো, স্টেশন ভবন এবং বিভিন্ন যন্ত্র ও অবকাঠামো) ক্ষতি করলে ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। মেট্রোরেলে বিক্ষোভ প্রদর্শনের জন্য এক বছর কারাদণ্ড অথবা ৫০ হাজার টাকা অথবা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। বিনা অনুমতিতে বিজ্ঞাপন, পোস্টার লাগালে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা ৬ মাস কারাদণ্ড কিংবা উভয় দণ্ড হবে। মেট্রোরেলের ভেতরে পণ্য বিক্রি করলে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা এক বছর কারাদণ্ড কিংবা উভয় দণ্ড হবে। অনুমতি ছাড়া শুটিং করলে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা ৬ মাস কারাদণ্ড কিংবা উভয় দণ্ড প্রযোজ্য হবে। মেট্রোরেলে ভিক্ষা করলে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা ৩ মাস কারাদণ্ড কিংবা উভয় দণ্ড থাকবে। এসব বিধান আগের আইনে ছিল না।
বাড়ির ক্ষতি হলে ক্ষতিপূরণ
নতুন আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, ভূগর্ভস্থ মেট্রোরেল লাইন (এমআরটি টানেল বা পাতালরেল) নির্মাণের সময় ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষ আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করবে, যেন কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ভবন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। তবে নির্মাণকাজ চলার সময় কারও ভবনের কোনো ক্ষতি হলে মালিকপক্ষকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। তবে জমির মালিক কোনো ক্ষতিপূরণ পাবেন না। এমআরটি পিলার বা টানেল নির্মাণের সময় পানি, গ্যাস, বিদ্যুৎসহ নানা পরিষেবা অপসারণ বা স্থানান্তরের যৌক্তিক ব্যয় বহন করা হবে।
মেট্রোরেল নির্মাণ, পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণের কাজে কেউ বাধা দিলে তার সাজা ছিল দুই বছরের কারাদণ্ড বা দুই লাখ টাকা জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ড। এই জরিমানার অঙ্ক ১০ লাখ টাকায় উন্নীত করতে চায় ডিএমটিসিএল।
চিত্র থেকে বাদ পড়ছে ডিটিসিএ
ডিটিসিএ সূত্রে জানা যায়, বিদ্যমান আইন অনুযায়ী তারা মেট্রোরেলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা হলেও নতুন আইনের খসড়া তৈরি করার ক্ষেত্রে তাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা করা হয়নি। ভাড়া নির্ধারণের জন্য এখন ডিটিসিএর প্রধান নির্বাহীর নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি কমিটি রয়েছে। খসড়ায় ডিটিসিএর প্রধান নির্বাহীকে বাদ দিয়ে ৯ সদস্যের কমিটি গঠনের কথা বলা হয়েছে। এর প্রধান হিসেবে অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তাকে চায় ডিএমটিসিএল।
সংশোধিত আইনের খসড়ার বিষয়ে ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুর রউফ গতকাল বুধবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মেট্রোরেলের নতুন আইনটি এখনো সরকারের বিবেচনার অপেক্ষায়। মেট্রোরেল পরিচালনায় যুক্ত সব কর্তৃপক্ষকে নিয়েই এর খসড়া তৈরি করা হয়েছে। তবে আইনটিতে খুব বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়নি।
প্রসঙ্গত, গতকাল ডিএমটিসিএলের ওয়েবসাইটে গিয়ে আগের আইনটি পাওয়া যায়নি।
মোহাম্মদ আবদুর রউফ বলেন, ‘মেট্রোরেলের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান জাপানের জাইকার কিছু বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আন্তর্জাতিক আইন অনুসরণ করে কিছু ধারা পরিবর্তন করার কথা বলা হয়েছে। তবে সেগুলো সড়ক মন্ত্রণালয়ে আলোচনা হবে, তারপর আইন মন্ত্রণালয়ে যাবে পর্যালোচনার জন্য। এই আইন নিয়ে আরও আলোচনা হবে।’
ডিটিসিএর নির্বাহী পরিচালক নীলিমা আখতারের কাছে এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।
এ বিষয়ে খসড়া চূড়ান্ত করার বৈঠকে সভাপতিত্বকারী আরবান ট্রান্সপোর্ট অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব নাফিউল হাসানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
নতুন আইনে ডিটিসিএকে নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা থেকে বাদ দেওয়ার উদ্যোগ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক এম শামছুল হক বলেন, ‘ডিটিসিএ মূলত সমন্বয় কর্তৃপক্ষ। মেট্রোরেলের শুরুর দিকে তাদের মাদার অর্গানাইজেশন করা হয়েছিল; কারণ, তখন স্পেশাল পারপাস ভেহিকেল (এসপিভি) আইনের সুবিধা ডিএমটিসিএলের ছিল না। এখন তা আছে। এ ছাড়া মেট্রোরেল পরিচালনা-সম্পর্কিত সব দায়দায়িত্ব এখন ডিএমটিসিএল পালন করছে। মাদার অর্গানাইজেশন হিসেবে তাদেরই থাকা উচিত।’
‘দায়মুক্তির’ ধারায় ক্ষোভ
আইনের খসড়ায় মেট্রোরেলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ‘সরল বিশ্বাসে কৃতকর্মের’ সুরক্ষার বিধান রেখে বলা হয়েছে, সরকার, মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ মেট্রোরেলের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী সরল বিশ্বাসে কোনো কাজ করলে তার বিরুদ্ধে মেট্রোরেলের নতুন আইন এবং আইনের ধারা অনুযায়ী কোনো আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না।
খসড়ায় সম্ভাব্য অনিয়ম বা দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে কর্তাব্যক্তিদের দায়মুক্তির সুপারিশে বিস্ময় ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অধ্যাপক এম শামছুল হক। তিনি বলেন, ‘ভুলটা হয়েছিল মেট্রোরেলের সাবেক এমডি এম এ এন ছিদ্দিকের আমলে। তিনি তাঁর পছন্দমতো অভিজ্ঞতাহীন কিছু লোককে নিয়োগ দিয়েছিলেন। মেট্রোরেল পরিচালনায় যখন তাঁদের নানা ব্যর্থতা সামনে আসছে, তখন তাঁরা নিজেদের অপরাধ ও দুর্বলতা ঢাকতে এখন দায়মুক্তির বিধান করতে চাইছেন।’ মেট্রোরেল ও যাত্রীর জন্য বিমার বিধান বাতিল করা হলে ডিএমটিসিএল যাত্রী হারাতে শুরু করতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

মেট্রোরেল চালায় যারা, সেই ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) অধীন একটি প্রতিষ্ঠান। আইন সংশোধন করে এখন আধুনিক নগর পরিবহনটির নিয়ন্ত্রণ থেকে সেই কর্তৃপক্ষকে বাদ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। সংশোধিত আইনের খসড়ায় মেট্রোরেলের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি পরিচালনা কোম্পানি ডিএমটিসিএলের হাতেই রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
প্রস্তাবিত খসড়ায় মেট্রোরেলে অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরক দিয়ে ক্ষতি করা, যাত্রীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত করা, ভাঙচুর, অশালীন কাজ করা, ভিক্ষা করা এবং অনুমতি ছাড়া শুটিং করার মতো বিভিন্ন অপরাধের জন্য অর্থদণ্ড বা জরিমানা কিংবা উভয় ধরনের সাজার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যাত্রী ও ট্রেনের বিমাবিষয়ক ধারা বাতিলেরও প্রস্তাব করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ ডিএমটিসিএলের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণের যৌক্তিকতা নিয়ে কার্যত একমত হলেও সম্ভাব্য অনিয়ম ও অঘটনের ক্ষেত্রে কর্তাব্যক্তিদের দায়মুক্তির প্রস্তাবে উদ্বেগ জানিয়েছেন।
যাত্রী পরিবহন সেবা চালুর দুই বছর পূর্তির আগেই মেট্রোরেল পরিচালনায় এই বড় পরিবর্তনের আভাস দিয়েছে ডিএমটিসিএল। গত মঙ্গলবার সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিবের দপ্তরে ২০১৫ সালের মেট্রোরেল আইন সংশোধন করে তৈরি করা ‘মেট্রোরেল নির্মাণ, রক্ষণাবেক্ষণ, নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা আইন, ২০২৪’-এর খসড়া চূড়ান্ত করার সভা হয়। এতে ডিটিসিএর নির্বাহী পরিচালক, ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
২০১২ সালের ১৮ ডিসেম্বর মেট্রোরেল প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) অনুমোদিত হয়। এরপর মেট্রোরেল আইন প্রণয়ন করা হয় ২০১৫ সালে। ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর থেকে মেট্রোরেলের প্রথম লাইনে যাত্রী পরিবহন শুরু হয়। শুরু থেকে মেট্রোরেল পরিচালনা করে আসছিল ডিএমটিসিএল। ডিটিসিএ আইন, ২০১২ অনুযায়ী এই সংস্থাই মেট্রোরেলের প্রধান কর্তৃপক্ষ। নতুন আইনে ডিটিসিএকে বাদ দিয়ে সব দায়িত্ব নিতে চাইছে ডিএমটিসিএল। ডিটিসিএর নির্বাহী পরিচালকই মেট্রোরেলের প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। নতুন আইনের খসড়ায় সেই ধারা বিলুপ্ত করা হয়েছে।
যাত্রীসেবার কিছু ধারার বিলুপ্তি মেট্রোরেল পরিচালনার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষকে (লাইসেন্সি) বাধ্যতামূলকভাবে মেট্রোরেল ও যাত্রীর জন্য বিমা করার নির্দেশনা রয়েছে বর্তমান আইনে। মেট্রোরেল দুর্ঘটনায় পড়ে কোনো ব্যক্তি বা স্থাপনার ক্ষতি হলে ৯০ দিনের মধ্যে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে আইনে। নতুন আইনে এ-সংক্রান্ত ধারা বিলুপ্ত করতে চায় ডিএমটিসিএল। এ ছাড়া মেট্রোরেল দুর্ঘটনায় আঘাতপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের প্রাথমিক চিকিৎসার বাধ্যতামূলক দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছিল লাইসেন্সিকে। কোনো আহত ব্যক্তি লাইসেন্সির মাধ্যমে চিকিৎসাসেবা নিতে না চাইলেও তাঁর প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যয়ভার পরিশোধের বাধ্যবাধকতা রয়েছে এই আইনে। ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষ নতুন আইনে এ ধারা বিলুপ্ত করতে চাইছে।
মেট্রোরেল আইনে ‘লাইসেন্সি’ বলতে এ পর্যন্ত মেট্রোরেল নির্মাণ, পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নের জন্য লাইসেন্সপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের বোঝানো হতো। নতুন আইনের খসড়ায় সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি যৌথ মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের জন্য এ সুযোগ রাখা হয়েছে। মেট্রোরেল লাইসেন্স প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ হিসেবে এর আগে কোনো সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ না থাকলেও ডিএমটিসিএল এখন সেই কর্তৃত্ব চাইছে।
বিভিন্ন অপরাধে সাজার বিধান
মেট্রোরেলের যাত্রীদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করলে এক বছর জেল অথবা পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। আগের আইনে শুধু জরিমানা ছিল। যাত্রী মদ্যপ বা মাতাল অবস্থায় থাকলে, ভাঙচুর বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে অথবা অশালীন কাজ বা গালিগালাজ করলে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড অথবা এক বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড কিংবা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। আগের আইনে এটি ছিল না। মেট্রোরেলে ক্ষতিকর ও বিপজ্জনক সামগ্রী বহন করলে ২০ হাজার টাকা অথবা এক বছর কারাদণ্ড কিংবা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে।
মেট্রোরেলের কোনো কর্মচারীকে কর্তব্যরত অবস্থায় যদি নেশাগ্রস্ত পাওয়া যায়, তবে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড হবে।
খসড়ায় অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরক দ্রব্যের মাধ্যমে মেট্রোরেলের সম্পত্তির (রেললাইন, বক্স-কাঠামো, স্টেশন ভবন এবং বিভিন্ন যন্ত্র ও অবকাঠামো) ক্ষতি করলে ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। মেট্রোরেলে বিক্ষোভ প্রদর্শনের জন্য এক বছর কারাদণ্ড অথবা ৫০ হাজার টাকা অথবা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। বিনা অনুমতিতে বিজ্ঞাপন, পোস্টার লাগালে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা ৬ মাস কারাদণ্ড কিংবা উভয় দণ্ড হবে। মেট্রোরেলের ভেতরে পণ্য বিক্রি করলে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা এক বছর কারাদণ্ড কিংবা উভয় দণ্ড হবে। অনুমতি ছাড়া শুটিং করলে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা ৬ মাস কারাদণ্ড কিংবা উভয় দণ্ড প্রযোজ্য হবে। মেট্রোরেলে ভিক্ষা করলে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা ৩ মাস কারাদণ্ড কিংবা উভয় দণ্ড থাকবে। এসব বিধান আগের আইনে ছিল না।
বাড়ির ক্ষতি হলে ক্ষতিপূরণ
নতুন আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, ভূগর্ভস্থ মেট্রোরেল লাইন (এমআরটি টানেল বা পাতালরেল) নির্মাণের সময় ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষ আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করবে, যেন কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ভবন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। তবে নির্মাণকাজ চলার সময় কারও ভবনের কোনো ক্ষতি হলে মালিকপক্ষকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। তবে জমির মালিক কোনো ক্ষতিপূরণ পাবেন না। এমআরটি পিলার বা টানেল নির্মাণের সময় পানি, গ্যাস, বিদ্যুৎসহ নানা পরিষেবা অপসারণ বা স্থানান্তরের যৌক্তিক ব্যয় বহন করা হবে।
মেট্রোরেল নির্মাণ, পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণের কাজে কেউ বাধা দিলে তার সাজা ছিল দুই বছরের কারাদণ্ড বা দুই লাখ টাকা জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ড। এই জরিমানার অঙ্ক ১০ লাখ টাকায় উন্নীত করতে চায় ডিএমটিসিএল।
চিত্র থেকে বাদ পড়ছে ডিটিসিএ
ডিটিসিএ সূত্রে জানা যায়, বিদ্যমান আইন অনুযায়ী তারা মেট্রোরেলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা হলেও নতুন আইনের খসড়া তৈরি করার ক্ষেত্রে তাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা করা হয়নি। ভাড়া নির্ধারণের জন্য এখন ডিটিসিএর প্রধান নির্বাহীর নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি কমিটি রয়েছে। খসড়ায় ডিটিসিএর প্রধান নির্বাহীকে বাদ দিয়ে ৯ সদস্যের কমিটি গঠনের কথা বলা হয়েছে। এর প্রধান হিসেবে অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তাকে চায় ডিএমটিসিএল।
সংশোধিত আইনের খসড়ার বিষয়ে ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুর রউফ গতকাল বুধবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মেট্রোরেলের নতুন আইনটি এখনো সরকারের বিবেচনার অপেক্ষায়। মেট্রোরেল পরিচালনায় যুক্ত সব কর্তৃপক্ষকে নিয়েই এর খসড়া তৈরি করা হয়েছে। তবে আইনটিতে খুব বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়নি।
প্রসঙ্গত, গতকাল ডিএমটিসিএলের ওয়েবসাইটে গিয়ে আগের আইনটি পাওয়া যায়নি।
মোহাম্মদ আবদুর রউফ বলেন, ‘মেট্রোরেলের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান জাপানের জাইকার কিছু বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আন্তর্জাতিক আইন অনুসরণ করে কিছু ধারা পরিবর্তন করার কথা বলা হয়েছে। তবে সেগুলো সড়ক মন্ত্রণালয়ে আলোচনা হবে, তারপর আইন মন্ত্রণালয়ে যাবে পর্যালোচনার জন্য। এই আইন নিয়ে আরও আলোচনা হবে।’
ডিটিসিএর নির্বাহী পরিচালক নীলিমা আখতারের কাছে এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।
এ বিষয়ে খসড়া চূড়ান্ত করার বৈঠকে সভাপতিত্বকারী আরবান ট্রান্সপোর্ট অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব নাফিউল হাসানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
নতুন আইনে ডিটিসিএকে নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা থেকে বাদ দেওয়ার উদ্যোগ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক এম শামছুল হক বলেন, ‘ডিটিসিএ মূলত সমন্বয় কর্তৃপক্ষ। মেট্রোরেলের শুরুর দিকে তাদের মাদার অর্গানাইজেশন করা হয়েছিল; কারণ, তখন স্পেশাল পারপাস ভেহিকেল (এসপিভি) আইনের সুবিধা ডিএমটিসিএলের ছিল না। এখন তা আছে। এ ছাড়া মেট্রোরেল পরিচালনা-সম্পর্কিত সব দায়দায়িত্ব এখন ডিএমটিসিএল পালন করছে। মাদার অর্গানাইজেশন হিসেবে তাদেরই থাকা উচিত।’
‘দায়মুক্তির’ ধারায় ক্ষোভ
আইনের খসড়ায় মেট্রোরেলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ‘সরল বিশ্বাসে কৃতকর্মের’ সুরক্ষার বিধান রেখে বলা হয়েছে, সরকার, মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ মেট্রোরেলের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী সরল বিশ্বাসে কোনো কাজ করলে তার বিরুদ্ধে মেট্রোরেলের নতুন আইন এবং আইনের ধারা অনুযায়ী কোনো আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না।
খসড়ায় সম্ভাব্য অনিয়ম বা দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে কর্তাব্যক্তিদের দায়মুক্তির সুপারিশে বিস্ময় ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অধ্যাপক এম শামছুল হক। তিনি বলেন, ‘ভুলটা হয়েছিল মেট্রোরেলের সাবেক এমডি এম এ এন ছিদ্দিকের আমলে। তিনি তাঁর পছন্দমতো অভিজ্ঞতাহীন কিছু লোককে নিয়োগ দিয়েছিলেন। মেট্রোরেল পরিচালনায় যখন তাঁদের নানা ব্যর্থতা সামনে আসছে, তখন তাঁরা নিজেদের অপরাধ ও দুর্বলতা ঢাকতে এখন দায়মুক্তির বিধান করতে চাইছেন।’ মেট্রোরেল ও যাত্রীর জন্য বিমার বিধান বাতিল করা হলে ডিএমটিসিএল যাত্রী হারাতে শুরু করতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আইনের খসড়া
সৌগত বসু, ঢাকা

মেট্রোরেল চালায় যারা, সেই ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) অধীন একটি প্রতিষ্ঠান। আইন সংশোধন করে এখন আধুনিক নগর পরিবহনটির নিয়ন্ত্রণ থেকে সেই কর্তৃপক্ষকে বাদ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। সংশোধিত আইনের খসড়ায় মেট্রোরেলের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি পরিচালনা কোম্পানি ডিএমটিসিএলের হাতেই রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
প্রস্তাবিত খসড়ায় মেট্রোরেলে অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরক দিয়ে ক্ষতি করা, যাত্রীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত করা, ভাঙচুর, অশালীন কাজ করা, ভিক্ষা করা এবং অনুমতি ছাড়া শুটিং করার মতো বিভিন্ন অপরাধের জন্য অর্থদণ্ড বা জরিমানা কিংবা উভয় ধরনের সাজার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যাত্রী ও ট্রেনের বিমাবিষয়ক ধারা বাতিলেরও প্রস্তাব করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ ডিএমটিসিএলের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণের যৌক্তিকতা নিয়ে কার্যত একমত হলেও সম্ভাব্য অনিয়ম ও অঘটনের ক্ষেত্রে কর্তাব্যক্তিদের দায়মুক্তির প্রস্তাবে উদ্বেগ জানিয়েছেন।
যাত্রী পরিবহন সেবা চালুর দুই বছর পূর্তির আগেই মেট্রোরেল পরিচালনায় এই বড় পরিবর্তনের আভাস দিয়েছে ডিএমটিসিএল। গত মঙ্গলবার সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিবের দপ্তরে ২০১৫ সালের মেট্রোরেল আইন সংশোধন করে তৈরি করা ‘মেট্রোরেল নির্মাণ, রক্ষণাবেক্ষণ, নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা আইন, ২০২৪’-এর খসড়া চূড়ান্ত করার সভা হয়। এতে ডিটিসিএর নির্বাহী পরিচালক, ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
২০১২ সালের ১৮ ডিসেম্বর মেট্রোরেল প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) অনুমোদিত হয়। এরপর মেট্রোরেল আইন প্রণয়ন করা হয় ২০১৫ সালে। ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর থেকে মেট্রোরেলের প্রথম লাইনে যাত্রী পরিবহন শুরু হয়। শুরু থেকে মেট্রোরেল পরিচালনা করে আসছিল ডিএমটিসিএল। ডিটিসিএ আইন, ২০১২ অনুযায়ী এই সংস্থাই মেট্রোরেলের প্রধান কর্তৃপক্ষ। নতুন আইনে ডিটিসিএকে বাদ দিয়ে সব দায়িত্ব নিতে চাইছে ডিএমটিসিএল। ডিটিসিএর নির্বাহী পরিচালকই মেট্রোরেলের প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। নতুন আইনের খসড়ায় সেই ধারা বিলুপ্ত করা হয়েছে।
যাত্রীসেবার কিছু ধারার বিলুপ্তি মেট্রোরেল পরিচালনার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষকে (লাইসেন্সি) বাধ্যতামূলকভাবে মেট্রোরেল ও যাত্রীর জন্য বিমা করার নির্দেশনা রয়েছে বর্তমান আইনে। মেট্রোরেল দুর্ঘটনায় পড়ে কোনো ব্যক্তি বা স্থাপনার ক্ষতি হলে ৯০ দিনের মধ্যে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে আইনে। নতুন আইনে এ-সংক্রান্ত ধারা বিলুপ্ত করতে চায় ডিএমটিসিএল। এ ছাড়া মেট্রোরেল দুর্ঘটনায় আঘাতপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের প্রাথমিক চিকিৎসার বাধ্যতামূলক দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছিল লাইসেন্সিকে। কোনো আহত ব্যক্তি লাইসেন্সির মাধ্যমে চিকিৎসাসেবা নিতে না চাইলেও তাঁর প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যয়ভার পরিশোধের বাধ্যবাধকতা রয়েছে এই আইনে। ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষ নতুন আইনে এ ধারা বিলুপ্ত করতে চাইছে।
মেট্রোরেল আইনে ‘লাইসেন্সি’ বলতে এ পর্যন্ত মেট্রোরেল নির্মাণ, পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নের জন্য লাইসেন্সপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের বোঝানো হতো। নতুন আইনের খসড়ায় সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি যৌথ মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের জন্য এ সুযোগ রাখা হয়েছে। মেট্রোরেল লাইসেন্স প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ হিসেবে এর আগে কোনো সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ না থাকলেও ডিএমটিসিএল এখন সেই কর্তৃত্ব চাইছে।
বিভিন্ন অপরাধে সাজার বিধান
মেট্রোরেলের যাত্রীদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করলে এক বছর জেল অথবা পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। আগের আইনে শুধু জরিমানা ছিল। যাত্রী মদ্যপ বা মাতাল অবস্থায় থাকলে, ভাঙচুর বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে অথবা অশালীন কাজ বা গালিগালাজ করলে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড অথবা এক বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড কিংবা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। আগের আইনে এটি ছিল না। মেট্রোরেলে ক্ষতিকর ও বিপজ্জনক সামগ্রী বহন করলে ২০ হাজার টাকা অথবা এক বছর কারাদণ্ড কিংবা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে।
মেট্রোরেলের কোনো কর্মচারীকে কর্তব্যরত অবস্থায় যদি নেশাগ্রস্ত পাওয়া যায়, তবে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড হবে।
খসড়ায় অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরক দ্রব্যের মাধ্যমে মেট্রোরেলের সম্পত্তির (রেললাইন, বক্স-কাঠামো, স্টেশন ভবন এবং বিভিন্ন যন্ত্র ও অবকাঠামো) ক্ষতি করলে ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। মেট্রোরেলে বিক্ষোভ প্রদর্শনের জন্য এক বছর কারাদণ্ড অথবা ৫০ হাজার টাকা অথবা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। বিনা অনুমতিতে বিজ্ঞাপন, পোস্টার লাগালে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা ৬ মাস কারাদণ্ড কিংবা উভয় দণ্ড হবে। মেট্রোরেলের ভেতরে পণ্য বিক্রি করলে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা এক বছর কারাদণ্ড কিংবা উভয় দণ্ড হবে। অনুমতি ছাড়া শুটিং করলে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা ৬ মাস কারাদণ্ড কিংবা উভয় দণ্ড প্রযোজ্য হবে। মেট্রোরেলে ভিক্ষা করলে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা ৩ মাস কারাদণ্ড কিংবা উভয় দণ্ড থাকবে। এসব বিধান আগের আইনে ছিল না।
বাড়ির ক্ষতি হলে ক্ষতিপূরণ
নতুন আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, ভূগর্ভস্থ মেট্রোরেল লাইন (এমআরটি টানেল বা পাতালরেল) নির্মাণের সময় ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষ আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করবে, যেন কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ভবন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। তবে নির্মাণকাজ চলার সময় কারও ভবনের কোনো ক্ষতি হলে মালিকপক্ষকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। তবে জমির মালিক কোনো ক্ষতিপূরণ পাবেন না। এমআরটি পিলার বা টানেল নির্মাণের সময় পানি, গ্যাস, বিদ্যুৎসহ নানা পরিষেবা অপসারণ বা স্থানান্তরের যৌক্তিক ব্যয় বহন করা হবে।
মেট্রোরেল নির্মাণ, পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণের কাজে কেউ বাধা দিলে তার সাজা ছিল দুই বছরের কারাদণ্ড বা দুই লাখ টাকা জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ড। এই জরিমানার অঙ্ক ১০ লাখ টাকায় উন্নীত করতে চায় ডিএমটিসিএল।
চিত্র থেকে বাদ পড়ছে ডিটিসিএ
ডিটিসিএ সূত্রে জানা যায়, বিদ্যমান আইন অনুযায়ী তারা মেট্রোরেলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা হলেও নতুন আইনের খসড়া তৈরি করার ক্ষেত্রে তাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা করা হয়নি। ভাড়া নির্ধারণের জন্য এখন ডিটিসিএর প্রধান নির্বাহীর নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি কমিটি রয়েছে। খসড়ায় ডিটিসিএর প্রধান নির্বাহীকে বাদ দিয়ে ৯ সদস্যের কমিটি গঠনের কথা বলা হয়েছে। এর প্রধান হিসেবে অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তাকে চায় ডিএমটিসিএল।
সংশোধিত আইনের খসড়ার বিষয়ে ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুর রউফ গতকাল বুধবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মেট্রোরেলের নতুন আইনটি এখনো সরকারের বিবেচনার অপেক্ষায়। মেট্রোরেল পরিচালনায় যুক্ত সব কর্তৃপক্ষকে নিয়েই এর খসড়া তৈরি করা হয়েছে। তবে আইনটিতে খুব বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়নি।
প্রসঙ্গত, গতকাল ডিএমটিসিএলের ওয়েবসাইটে গিয়ে আগের আইনটি পাওয়া যায়নি।
মোহাম্মদ আবদুর রউফ বলেন, ‘মেট্রোরেলের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান জাপানের জাইকার কিছু বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আন্তর্জাতিক আইন অনুসরণ করে কিছু ধারা পরিবর্তন করার কথা বলা হয়েছে। তবে সেগুলো সড়ক মন্ত্রণালয়ে আলোচনা হবে, তারপর আইন মন্ত্রণালয়ে যাবে পর্যালোচনার জন্য। এই আইন নিয়ে আরও আলোচনা হবে।’
ডিটিসিএর নির্বাহী পরিচালক নীলিমা আখতারের কাছে এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।
এ বিষয়ে খসড়া চূড়ান্ত করার বৈঠকে সভাপতিত্বকারী আরবান ট্রান্সপোর্ট অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব নাফিউল হাসানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
নতুন আইনে ডিটিসিএকে নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা থেকে বাদ দেওয়ার উদ্যোগ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক এম শামছুল হক বলেন, ‘ডিটিসিএ মূলত সমন্বয় কর্তৃপক্ষ। মেট্রোরেলের শুরুর দিকে তাদের মাদার অর্গানাইজেশন করা হয়েছিল; কারণ, তখন স্পেশাল পারপাস ভেহিকেল (এসপিভি) আইনের সুবিধা ডিএমটিসিএলের ছিল না। এখন তা আছে। এ ছাড়া মেট্রোরেল পরিচালনা-সম্পর্কিত সব দায়দায়িত্ব এখন ডিএমটিসিএল পালন করছে। মাদার অর্গানাইজেশন হিসেবে তাদেরই থাকা উচিত।’
‘দায়মুক্তির’ ধারায় ক্ষোভ
আইনের খসড়ায় মেট্রোরেলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ‘সরল বিশ্বাসে কৃতকর্মের’ সুরক্ষার বিধান রেখে বলা হয়েছে, সরকার, মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ মেট্রোরেলের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী সরল বিশ্বাসে কোনো কাজ করলে তার বিরুদ্ধে মেট্রোরেলের নতুন আইন এবং আইনের ধারা অনুযায়ী কোনো আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না।
খসড়ায় সম্ভাব্য অনিয়ম বা দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে কর্তাব্যক্তিদের দায়মুক্তির সুপারিশে বিস্ময় ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অধ্যাপক এম শামছুল হক। তিনি বলেন, ‘ভুলটা হয়েছিল মেট্রোরেলের সাবেক এমডি এম এ এন ছিদ্দিকের আমলে। তিনি তাঁর পছন্দমতো অভিজ্ঞতাহীন কিছু লোককে নিয়োগ দিয়েছিলেন। মেট্রোরেল পরিচালনায় যখন তাঁদের নানা ব্যর্থতা সামনে আসছে, তখন তাঁরা নিজেদের অপরাধ ও দুর্বলতা ঢাকতে এখন দায়মুক্তির বিধান করতে চাইছেন।’ মেট্রোরেল ও যাত্রীর জন্য বিমার বিধান বাতিল করা হলে ডিএমটিসিএল যাত্রী হারাতে শুরু করতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

মেট্রোরেল চালায় যারা, সেই ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) অধীন একটি প্রতিষ্ঠান। আইন সংশোধন করে এখন আধুনিক নগর পরিবহনটির নিয়ন্ত্রণ থেকে সেই কর্তৃপক্ষকে বাদ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। সংশোধিত আইনের খসড়ায় মেট্রোরেলের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি পরিচালনা কোম্পানি ডিএমটিসিএলের হাতেই রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
প্রস্তাবিত খসড়ায় মেট্রোরেলে অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরক দিয়ে ক্ষতি করা, যাত্রীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত করা, ভাঙচুর, অশালীন কাজ করা, ভিক্ষা করা এবং অনুমতি ছাড়া শুটিং করার মতো বিভিন্ন অপরাধের জন্য অর্থদণ্ড বা জরিমানা কিংবা উভয় ধরনের সাজার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যাত্রী ও ট্রেনের বিমাবিষয়ক ধারা বাতিলেরও প্রস্তাব করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ ডিএমটিসিএলের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণের যৌক্তিকতা নিয়ে কার্যত একমত হলেও সম্ভাব্য অনিয়ম ও অঘটনের ক্ষেত্রে কর্তাব্যক্তিদের দায়মুক্তির প্রস্তাবে উদ্বেগ জানিয়েছেন।
যাত্রী পরিবহন সেবা চালুর দুই বছর পূর্তির আগেই মেট্রোরেল পরিচালনায় এই বড় পরিবর্তনের আভাস দিয়েছে ডিএমটিসিএল। গত মঙ্গলবার সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিবের দপ্তরে ২০১৫ সালের মেট্রোরেল আইন সংশোধন করে তৈরি করা ‘মেট্রোরেল নির্মাণ, রক্ষণাবেক্ষণ, নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা আইন, ২০২৪’-এর খসড়া চূড়ান্ত করার সভা হয়। এতে ডিটিসিএর নির্বাহী পরিচালক, ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
২০১২ সালের ১৮ ডিসেম্বর মেট্রোরেল প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) অনুমোদিত হয়। এরপর মেট্রোরেল আইন প্রণয়ন করা হয় ২০১৫ সালে। ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর থেকে মেট্রোরেলের প্রথম লাইনে যাত্রী পরিবহন শুরু হয়। শুরু থেকে মেট্রোরেল পরিচালনা করে আসছিল ডিএমটিসিএল। ডিটিসিএ আইন, ২০১২ অনুযায়ী এই সংস্থাই মেট্রোরেলের প্রধান কর্তৃপক্ষ। নতুন আইনে ডিটিসিএকে বাদ দিয়ে সব দায়িত্ব নিতে চাইছে ডিএমটিসিএল। ডিটিসিএর নির্বাহী পরিচালকই মেট্রোরেলের প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। নতুন আইনের খসড়ায় সেই ধারা বিলুপ্ত করা হয়েছে।
যাত্রীসেবার কিছু ধারার বিলুপ্তি মেট্রোরেল পরিচালনার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষকে (লাইসেন্সি) বাধ্যতামূলকভাবে মেট্রোরেল ও যাত্রীর জন্য বিমা করার নির্দেশনা রয়েছে বর্তমান আইনে। মেট্রোরেল দুর্ঘটনায় পড়ে কোনো ব্যক্তি বা স্থাপনার ক্ষতি হলে ৯০ দিনের মধ্যে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে আইনে। নতুন আইনে এ-সংক্রান্ত ধারা বিলুপ্ত করতে চায় ডিএমটিসিএল। এ ছাড়া মেট্রোরেল দুর্ঘটনায় আঘাতপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের প্রাথমিক চিকিৎসার বাধ্যতামূলক দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছিল লাইসেন্সিকে। কোনো আহত ব্যক্তি লাইসেন্সির মাধ্যমে চিকিৎসাসেবা নিতে না চাইলেও তাঁর প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যয়ভার পরিশোধের বাধ্যবাধকতা রয়েছে এই আইনে। ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষ নতুন আইনে এ ধারা বিলুপ্ত করতে চাইছে।
মেট্রোরেল আইনে ‘লাইসেন্সি’ বলতে এ পর্যন্ত মেট্রোরেল নির্মাণ, পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নের জন্য লাইসেন্সপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের বোঝানো হতো। নতুন আইনের খসড়ায় সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি যৌথ মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের জন্য এ সুযোগ রাখা হয়েছে। মেট্রোরেল লাইসেন্স প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ হিসেবে এর আগে কোনো সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ না থাকলেও ডিএমটিসিএল এখন সেই কর্তৃত্ব চাইছে।
বিভিন্ন অপরাধে সাজার বিধান
মেট্রোরেলের যাত্রীদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করলে এক বছর জেল অথবা পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। আগের আইনে শুধু জরিমানা ছিল। যাত্রী মদ্যপ বা মাতাল অবস্থায় থাকলে, ভাঙচুর বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে অথবা অশালীন কাজ বা গালিগালাজ করলে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড অথবা এক বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড কিংবা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। আগের আইনে এটি ছিল না। মেট্রোরেলে ক্ষতিকর ও বিপজ্জনক সামগ্রী বহন করলে ২০ হাজার টাকা অথবা এক বছর কারাদণ্ড কিংবা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে।
মেট্রোরেলের কোনো কর্মচারীকে কর্তব্যরত অবস্থায় যদি নেশাগ্রস্ত পাওয়া যায়, তবে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড হবে।
খসড়ায় অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরক দ্রব্যের মাধ্যমে মেট্রোরেলের সম্পত্তির (রেললাইন, বক্স-কাঠামো, স্টেশন ভবন এবং বিভিন্ন যন্ত্র ও অবকাঠামো) ক্ষতি করলে ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। মেট্রোরেলে বিক্ষোভ প্রদর্শনের জন্য এক বছর কারাদণ্ড অথবা ৫০ হাজার টাকা অথবা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। বিনা অনুমতিতে বিজ্ঞাপন, পোস্টার লাগালে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা ৬ মাস কারাদণ্ড কিংবা উভয় দণ্ড হবে। মেট্রোরেলের ভেতরে পণ্য বিক্রি করলে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা এক বছর কারাদণ্ড কিংবা উভয় দণ্ড হবে। অনুমতি ছাড়া শুটিং করলে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা ৬ মাস কারাদণ্ড কিংবা উভয় দণ্ড প্রযোজ্য হবে। মেট্রোরেলে ভিক্ষা করলে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা ৩ মাস কারাদণ্ড কিংবা উভয় দণ্ড থাকবে। এসব বিধান আগের আইনে ছিল না।
বাড়ির ক্ষতি হলে ক্ষতিপূরণ
নতুন আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, ভূগর্ভস্থ মেট্রোরেল লাইন (এমআরটি টানেল বা পাতালরেল) নির্মাণের সময় ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষ আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করবে, যেন কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ভবন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। তবে নির্মাণকাজ চলার সময় কারও ভবনের কোনো ক্ষতি হলে মালিকপক্ষকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। তবে জমির মালিক কোনো ক্ষতিপূরণ পাবেন না। এমআরটি পিলার বা টানেল নির্মাণের সময় পানি, গ্যাস, বিদ্যুৎসহ নানা পরিষেবা অপসারণ বা স্থানান্তরের যৌক্তিক ব্যয় বহন করা হবে।
মেট্রোরেল নির্মাণ, পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণের কাজে কেউ বাধা দিলে তার সাজা ছিল দুই বছরের কারাদণ্ড বা দুই লাখ টাকা জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ড। এই জরিমানার অঙ্ক ১০ লাখ টাকায় উন্নীত করতে চায় ডিএমটিসিএল।
চিত্র থেকে বাদ পড়ছে ডিটিসিএ
ডিটিসিএ সূত্রে জানা যায়, বিদ্যমান আইন অনুযায়ী তারা মেট্রোরেলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা হলেও নতুন আইনের খসড়া তৈরি করার ক্ষেত্রে তাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা করা হয়নি। ভাড়া নির্ধারণের জন্য এখন ডিটিসিএর প্রধান নির্বাহীর নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি কমিটি রয়েছে। খসড়ায় ডিটিসিএর প্রধান নির্বাহীকে বাদ দিয়ে ৯ সদস্যের কমিটি গঠনের কথা বলা হয়েছে। এর প্রধান হিসেবে অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তাকে চায় ডিএমটিসিএল।
সংশোধিত আইনের খসড়ার বিষয়ে ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুর রউফ গতকাল বুধবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মেট্রোরেলের নতুন আইনটি এখনো সরকারের বিবেচনার অপেক্ষায়। মেট্রোরেল পরিচালনায় যুক্ত সব কর্তৃপক্ষকে নিয়েই এর খসড়া তৈরি করা হয়েছে। তবে আইনটিতে খুব বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়নি।
প্রসঙ্গত, গতকাল ডিএমটিসিএলের ওয়েবসাইটে গিয়ে আগের আইনটি পাওয়া যায়নি।
মোহাম্মদ আবদুর রউফ বলেন, ‘মেট্রোরেলের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান জাপানের জাইকার কিছু বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আন্তর্জাতিক আইন অনুসরণ করে কিছু ধারা পরিবর্তন করার কথা বলা হয়েছে। তবে সেগুলো সড়ক মন্ত্রণালয়ে আলোচনা হবে, তারপর আইন মন্ত্রণালয়ে যাবে পর্যালোচনার জন্য। এই আইন নিয়ে আরও আলোচনা হবে।’
ডিটিসিএর নির্বাহী পরিচালক নীলিমা আখতারের কাছে এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।
এ বিষয়ে খসড়া চূড়ান্ত করার বৈঠকে সভাপতিত্বকারী আরবান ট্রান্সপোর্ট অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব নাফিউল হাসানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
নতুন আইনে ডিটিসিএকে নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা থেকে বাদ দেওয়ার উদ্যোগ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক এম শামছুল হক বলেন, ‘ডিটিসিএ মূলত সমন্বয় কর্তৃপক্ষ। মেট্রোরেলের শুরুর দিকে তাদের মাদার অর্গানাইজেশন করা হয়েছিল; কারণ, তখন স্পেশাল পারপাস ভেহিকেল (এসপিভি) আইনের সুবিধা ডিএমটিসিএলের ছিল না। এখন তা আছে। এ ছাড়া মেট্রোরেল পরিচালনা-সম্পর্কিত সব দায়দায়িত্ব এখন ডিএমটিসিএল পালন করছে। মাদার অর্গানাইজেশন হিসেবে তাদেরই থাকা উচিত।’
‘দায়মুক্তির’ ধারায় ক্ষোভ
আইনের খসড়ায় মেট্রোরেলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ‘সরল বিশ্বাসে কৃতকর্মের’ সুরক্ষার বিধান রেখে বলা হয়েছে, সরকার, মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ মেট্রোরেলের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী সরল বিশ্বাসে কোনো কাজ করলে তার বিরুদ্ধে মেট্রোরেলের নতুন আইন এবং আইনের ধারা অনুযায়ী কোনো আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না।
খসড়ায় সম্ভাব্য অনিয়ম বা দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে কর্তাব্যক্তিদের দায়মুক্তির সুপারিশে বিস্ময় ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অধ্যাপক এম শামছুল হক। তিনি বলেন, ‘ভুলটা হয়েছিল মেট্রোরেলের সাবেক এমডি এম এ এন ছিদ্দিকের আমলে। তিনি তাঁর পছন্দমতো অভিজ্ঞতাহীন কিছু লোককে নিয়োগ দিয়েছিলেন। মেট্রোরেল পরিচালনায় যখন তাঁদের নানা ব্যর্থতা সামনে আসছে, তখন তাঁরা নিজেদের অপরাধ ও দুর্বলতা ঢাকতে এখন দায়মুক্তির বিধান করতে চাইছেন।’ মেট্রোরেল ও যাত্রীর জন্য বিমার বিধান বাতিল করা হলে ডিএমটিসিএল যাত্রী হারাতে শুরু করতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের ভলান্টিয়ার বা স্বেচ্ছাসেবকদের জন্য কিছু সুযোগ-সুবিধা প্রদান এবং তাঁদের প্রশিক্ষণের মান ও সংখ্যা বৃদ্ধির চিন্তাভাবনা করছে সরকার। এই লক্ষ্যে একটি বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনা দ্রুত প্রণয়ন করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল...
৩০ মিনিট আগে
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, ‘শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে ভারত এখনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। ট্রাইব্যুনালের রায় নিয়ে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে, আমরাও তাদের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় আছি।’
৩ ঘণ্টা আগে
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত করে শুরু হওয়া সহকারী শিক্ষকদের কর্মবিরতি স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষকেরা রোববার (৭ ডিসেম্বর) থেকে বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
৩ ঘণ্টা আগে
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
১৫ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের ভলান্টিয়ার বা স্বেচ্ছাসেবকদের জন্য কিছু সুযোগ-সুবিধা প্রদান এবং তাঁদের প্রশিক্ষণের মান ও সংখ্যা বৃদ্ধির চিন্তাভাবনা করছে সরকার। এই লক্ষ্যে একটি বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনা দ্রুত প্রণয়ন করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর পূর্বাচলে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স-এর ট্রেনিং গ্রাউন্ডে ‘ইন্টারন্যাশনাল ভলান্টিয়ার্স ডে’ উদ্যাপন উপলক্ষে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা এ কথা জানান।
উপদেষ্টা বলেন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের প্রশিক্ষিত ভলান্টিয়াররা নিজেদের নিঃস্বার্থ সেবার মাধ্যমে জনগণের বন্ধু হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে সমর্থ হয়েছেন। তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন, সাম্প্রতিক সময়ের ভূমিকম্প, বড় বড় অগ্নিদুর্ঘটনা এবং অন্যান্য দুর্যোগে ফায়ার ফাইটারদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ভলান্টিয়াররাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধারকাজে অংশগ্রহণ করেছেন।
উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ভলান্টিয়ারদের আন্তরিক সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, ‘কোনো রকম সুবিধা না নিয়ে নিজের ইচ্ছায় নিঃস্বার্থভাবে স্বেচ্ছাসেবামূলক কার্যক্রমে অংশগ্রহণের জন্য আপনারা সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য। আপনারা এ কাজের প্রতিদান শুধু ইহকালে নয়, পরকালেও পাবেন।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সারা দেশে ৬২ হাজার ভলান্টিয়ার তৈরির লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। ইতিমধ্যে ৫৫ হাজারেরও অধিক ভলান্টিয়ারকে প্রশিক্ষণ প্রদান সম্পন্ন হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এই প্রশিক্ষণ গ্রহণের মাধ্যমে স্বেচ্ছাসেবকেরা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স পরিবারের গর্বিত সদস্য হিসেবে আর্তমানবতার সেবায় ভূমিকা রাখছেন। এর ফলে একদিকে যেমন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের জনবল সংকট দূর হচ্ছে, তেমনি প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘সরকারি বাহিনীর সদস্যদের পক্ষে এককভাবে ভূমিকম্প, বড় অগ্নিদুর্ঘটনা বা বন্যার মতো দুর্যোগ মোকাবিলা করা দুরূহ। এ ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাসেবকেরা পেশাদার বাহিনীর সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করে দুর্যোগ প্রশমনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। বিশেষ করে ভূমিকম্পের মতো দুর্যোগ মোকাবিলায় সকল স্তরে স্বেচ্ছাসেবকদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি এবং প্রশিক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ রাজনীতিমুক্ত হবে কিনা—এ সংক্রান্ত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘আইন প্রণয়ন করা হয় জনগণকে সেবা দেওয়ার জন্য। এই আইনটিও করা হয়েছে জনগণ যেন প্রকৃত সেবা পায়, তা নিশ্চিত করতে।’ তিনি আশ্বস্ত করেন, পুলিশ কমিশন জনগণ ও পুলিশের প্রকৃত কল্যাণে কিছু সুপারিশ করবে, যা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাস্তবায়ন করবে।
এর আগে উপদেষ্টা পূর্বাচল ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স-এর ট্রেনিং গ্রাউন্ডে স্বেচ্ছাসেবকদের প্রদর্শিত মহড়া দেখেন এবং তাঁদের ভূমিকার প্রশংসা করেন।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের ভলান্টিয়ার বা স্বেচ্ছাসেবকদের জন্য কিছু সুযোগ-সুবিধা প্রদান এবং তাঁদের প্রশিক্ষণের মান ও সংখ্যা বৃদ্ধির চিন্তাভাবনা করছে সরকার। এই লক্ষ্যে একটি বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনা দ্রুত প্রণয়ন করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর পূর্বাচলে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স-এর ট্রেনিং গ্রাউন্ডে ‘ইন্টারন্যাশনাল ভলান্টিয়ার্স ডে’ উদ্যাপন উপলক্ষে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা এ কথা জানান।
উপদেষ্টা বলেন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের প্রশিক্ষিত ভলান্টিয়াররা নিজেদের নিঃস্বার্থ সেবার মাধ্যমে জনগণের বন্ধু হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে সমর্থ হয়েছেন। তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন, সাম্প্রতিক সময়ের ভূমিকম্প, বড় বড় অগ্নিদুর্ঘটনা এবং অন্যান্য দুর্যোগে ফায়ার ফাইটারদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ভলান্টিয়াররাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধারকাজে অংশগ্রহণ করেছেন।
উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ভলান্টিয়ারদের আন্তরিক সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, ‘কোনো রকম সুবিধা না নিয়ে নিজের ইচ্ছায় নিঃস্বার্থভাবে স্বেচ্ছাসেবামূলক কার্যক্রমে অংশগ্রহণের জন্য আপনারা সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য। আপনারা এ কাজের প্রতিদান শুধু ইহকালে নয়, পরকালেও পাবেন।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সারা দেশে ৬২ হাজার ভলান্টিয়ার তৈরির লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। ইতিমধ্যে ৫৫ হাজারেরও অধিক ভলান্টিয়ারকে প্রশিক্ষণ প্রদান সম্পন্ন হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এই প্রশিক্ষণ গ্রহণের মাধ্যমে স্বেচ্ছাসেবকেরা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স পরিবারের গর্বিত সদস্য হিসেবে আর্তমানবতার সেবায় ভূমিকা রাখছেন। এর ফলে একদিকে যেমন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের জনবল সংকট দূর হচ্ছে, তেমনি প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘সরকারি বাহিনীর সদস্যদের পক্ষে এককভাবে ভূমিকম্প, বড় অগ্নিদুর্ঘটনা বা বন্যার মতো দুর্যোগ মোকাবিলা করা দুরূহ। এ ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাসেবকেরা পেশাদার বাহিনীর সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করে দুর্যোগ প্রশমনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। বিশেষ করে ভূমিকম্পের মতো দুর্যোগ মোকাবিলায় সকল স্তরে স্বেচ্ছাসেবকদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি এবং প্রশিক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ রাজনীতিমুক্ত হবে কিনা—এ সংক্রান্ত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘আইন প্রণয়ন করা হয় জনগণকে সেবা দেওয়ার জন্য। এই আইনটিও করা হয়েছে জনগণ যেন প্রকৃত সেবা পায়, তা নিশ্চিত করতে।’ তিনি আশ্বস্ত করেন, পুলিশ কমিশন জনগণ ও পুলিশের প্রকৃত কল্যাণে কিছু সুপারিশ করবে, যা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাস্তবায়ন করবে।
এর আগে উপদেষ্টা পূর্বাচল ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স-এর ট্রেনিং গ্রাউন্ডে স্বেচ্ছাসেবকদের প্রদর্শিত মহড়া দেখেন এবং তাঁদের ভূমিকার প্রশংসা করেন।

মেট্রোরেল চালায় যারা, সেই ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) অধীন একটি প্রতিষ্ঠান। আইন সংশোধন করে এখন আধুনিক নগর পরিবহনটির নিয়ন্ত্রণ থেকে সেই কর্তৃপক্ষকে বাদ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। সংশোধিত আইনের খসড়ায় মেট্রোরেলের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি...
২৮ নভেম্বর ২০২৪
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, ‘শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে ভারত এখনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। ট্রাইব্যুনালের রায় নিয়ে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে, আমরাও তাদের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় আছি।’
৩ ঘণ্টা আগে
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত করে শুরু হওয়া সহকারী শিক্ষকদের কর্মবিরতি স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষকেরা রোববার (৭ ডিসেম্বর) থেকে বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
৩ ঘণ্টা আগে
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
১৫ ঘণ্টা আগেরংপুর প্রতিনিধি

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, ‘শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে ভারত এখনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। ট্রাইব্যুনালের রায় নিয়ে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে, আমরাও তাদের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় আছি।’
আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে রংপুর সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। রংপুর অঞ্চলে চার দিনের সফরে এসেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা তো চেয়েছি যে তাঁকে (শেখ হাসিনাকে) ফেরত পাঠানো হোক। যেহেতু উনি একজন কনভিক্টেড, যেহেতু সর্বোচ্চ বিচারিক সংস্থা তাঁকে একটি শাস্তি দিয়েছে। কিন্তু আমরা ইতিবাচক কোনো সাড়া এখন পর্যন্ত পাইনি। এটা নিয়ে আমার মনে হয় স্পেকুলেট না করাই ভালো। দেখা যাক কী হয়। আমরা তো চেয়েছি খুব, এ ধরনের ঘটনায় তো ঝট করে এক দিনে, সাত দিনে কোনো পরিবর্তন ঘটে না। আমরা অপেক্ষা করব, দেখি, ভারতের পক্ষ থেকে কী আসছে রিঅ্যাকশন।’
তৌহিদ হোসেন বলেন, একটা রিঅ্যাকশন আমরা দেখেছি যেটা, সেটা হলো তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছে, এ রকম একটা কথা আসছে আমাদের। দেখুক তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়ে পররাষ্ট্র দপ্তরে কোনো তথ্য নেই বলে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘তারেক সাহেব কখন আসবেন, এই সম্বন্ধে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। উনার স্ত্রী সম্ভবত আসছেন বা পৌঁছে গেছেন হয়তো ইতিমধ্যে। আজকে সকালে পৌঁছার কথা ছিল। বেগম জিয়াকে আজকে নেওয়া হচ্ছে না, আমি ঢাকা থেকে আজকে সকালে জানলাম যে আজকে নেওয়া হচ্ছে না। একটু টেকনিক্যাল প্রবলেম দেখা দিয়েছে ওই এয়ারক্র্যাফট নিয়ে। সে ক্ষেত্রে হয়তো এক-আধ দিন দেরি হতে পারে।’
আরাকান আর্মি বাংলাদেশিদের ধরে নিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আরাকান আর্মির সাথে আমাদের দ্বিপক্ষীয় আলোচনা সম্ভব নয়। তারা একটা নন-স্টেট অ্যাক্টর। আমরা স্টেট হিসেবে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা যেমন মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষ, থাইল্যান্ড বা ভারতের সাথে করতে পারি, সেটা তাদের সাথে করতে পারি না। তবে আমাদের স্বার্থ যেহেতু আছে, আমাদের দেখতে হবে। এই ঘটনা যাতে কমে বা আদৌ না ঘটে, এটার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’
এ ছাড়াও নীলফামারীতে প্রস্তাবিত চীনা হাসপাতালের কার্যক্রম অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত শুরু করে যেতে চায় বলেও জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। একই সঙ্গে নির্বাচিত সরকার এলে এই কাজ সমাপ্ত করবে বলেও আশা তার। এ সময় পিছিয়ে পড়া রংপুরের প্রত্নতাত্ত্বিকসহ সব ক্ষেত্রে নেওয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক সরকারের সদিচ্ছার কথা জানান তৌহিদ হোসেন।
এরপর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সপরিবার রংপুর জমিদার বাড়ি তাজহাটে পরিদর্শনে যান। এ ছাড়াও বিকেলে রংপুর সার্কিট হাউসে চা-চক্রের কথা রয়েছে তৌহিদ হোসেনের। আগামীকাল রংপুরের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় এবং রংপুরের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জিলা স্কুল পরিদর্শন করার কথাও রয়েছে তাঁর।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, ‘শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে ভারত এখনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। ট্রাইব্যুনালের রায় নিয়ে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে, আমরাও তাদের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় আছি।’
আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে রংপুর সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। রংপুর অঞ্চলে চার দিনের সফরে এসেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা তো চেয়েছি যে তাঁকে (শেখ হাসিনাকে) ফেরত পাঠানো হোক। যেহেতু উনি একজন কনভিক্টেড, যেহেতু সর্বোচ্চ বিচারিক সংস্থা তাঁকে একটি শাস্তি দিয়েছে। কিন্তু আমরা ইতিবাচক কোনো সাড়া এখন পর্যন্ত পাইনি। এটা নিয়ে আমার মনে হয় স্পেকুলেট না করাই ভালো। দেখা যাক কী হয়। আমরা তো চেয়েছি খুব, এ ধরনের ঘটনায় তো ঝট করে এক দিনে, সাত দিনে কোনো পরিবর্তন ঘটে না। আমরা অপেক্ষা করব, দেখি, ভারতের পক্ষ থেকে কী আসছে রিঅ্যাকশন।’
তৌহিদ হোসেন বলেন, একটা রিঅ্যাকশন আমরা দেখেছি যেটা, সেটা হলো তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছে, এ রকম একটা কথা আসছে আমাদের। দেখুক তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়ে পররাষ্ট্র দপ্তরে কোনো তথ্য নেই বলে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘তারেক সাহেব কখন আসবেন, এই সম্বন্ধে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। উনার স্ত্রী সম্ভবত আসছেন বা পৌঁছে গেছেন হয়তো ইতিমধ্যে। আজকে সকালে পৌঁছার কথা ছিল। বেগম জিয়াকে আজকে নেওয়া হচ্ছে না, আমি ঢাকা থেকে আজকে সকালে জানলাম যে আজকে নেওয়া হচ্ছে না। একটু টেকনিক্যাল প্রবলেম দেখা দিয়েছে ওই এয়ারক্র্যাফট নিয়ে। সে ক্ষেত্রে হয়তো এক-আধ দিন দেরি হতে পারে।’
আরাকান আর্মি বাংলাদেশিদের ধরে নিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আরাকান আর্মির সাথে আমাদের দ্বিপক্ষীয় আলোচনা সম্ভব নয়। তারা একটা নন-স্টেট অ্যাক্টর। আমরা স্টেট হিসেবে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা যেমন মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষ, থাইল্যান্ড বা ভারতের সাথে করতে পারি, সেটা তাদের সাথে করতে পারি না। তবে আমাদের স্বার্থ যেহেতু আছে, আমাদের দেখতে হবে। এই ঘটনা যাতে কমে বা আদৌ না ঘটে, এটার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’
এ ছাড়াও নীলফামারীতে প্রস্তাবিত চীনা হাসপাতালের কার্যক্রম অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত শুরু করে যেতে চায় বলেও জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। একই সঙ্গে নির্বাচিত সরকার এলে এই কাজ সমাপ্ত করবে বলেও আশা তার। এ সময় পিছিয়ে পড়া রংপুরের প্রত্নতাত্ত্বিকসহ সব ক্ষেত্রে নেওয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক সরকারের সদিচ্ছার কথা জানান তৌহিদ হোসেন।
এরপর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সপরিবার রংপুর জমিদার বাড়ি তাজহাটে পরিদর্শনে যান। এ ছাড়াও বিকেলে রংপুর সার্কিট হাউসে চা-চক্রের কথা রয়েছে তৌহিদ হোসেনের। আগামীকাল রংপুরের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় এবং রংপুরের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জিলা স্কুল পরিদর্শন করার কথাও রয়েছে তাঁর।

মেট্রোরেল চালায় যারা, সেই ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) অধীন একটি প্রতিষ্ঠান। আইন সংশোধন করে এখন আধুনিক নগর পরিবহনটির নিয়ন্ত্রণ থেকে সেই কর্তৃপক্ষকে বাদ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। সংশোধিত আইনের খসড়ায় মেট্রোরেলের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি...
২৮ নভেম্বর ২০২৪
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের ভলান্টিয়ার বা স্বেচ্ছাসেবকদের জন্য কিছু সুযোগ-সুবিধা প্রদান এবং তাঁদের প্রশিক্ষণের মান ও সংখ্যা বৃদ্ধির চিন্তাভাবনা করছে সরকার। এই লক্ষ্যে একটি বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনা দ্রুত প্রণয়ন করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল...
৩০ মিনিট আগে
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত করে শুরু হওয়া সহকারী শিক্ষকদের কর্মবিরতি স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষকেরা রোববার (৭ ডিসেম্বর) থেকে বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
৩ ঘণ্টা আগে
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
১৫ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত করে শুরু হওয়া সহকারী শিক্ষকদের কর্মবিরতি স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষকেরা রোববার (৭ ডিসেম্বর) থেকে বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১২টার পর আন্দোলনরত শিক্ষক সংগঠনগুলোর দু’টি মোর্চা ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’ ও ‘প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের’ নেতারা এক যৌথ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন।
কর্মবিরতি স্থগিত ঘোষণার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আমাদের নৈতিকতা, মানবিকতা এবং সন্তানতুল্য কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে’ রোববার (৭ ডিসেম্বর) থেকে পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত সারা দেশের সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কমপ্লিট শাটডাউন বা তালাবদ্ধ কর্মসূচি স্থগিত করা হলো। রোববার থেকে সব শ্রেণির তৃতীয় প্রান্তিক মূল্যায়ন (বার্ষিক পরীক্ষা) চলবে।
এদিকে আন্দোলনরত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও শিক্ষক নেতাদের ‘হয়রানিমূলক’ বদলি করা হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
প্রাথমিকের শিক্ষক নেতাদের দাবি, বৃহস্পতিবার তিনজন কেন্দ্রীয় নেতাসহ ৪৪ জন সহকারী শিক্ষককে নিজ জেলার বাইরে অন্য জেলায় বদলি করা হয়েছে। এসব বদলিকে তাঁরা ‘হয়রানিমূলক বদলি’ বলে মন্তব্য করেছেন।
শিক্ষক নেতারা দাবি করেছেন, ‘রেওয়াজ না থাকলেও নিজ জেলার বাইরে হয়রানি করতে প্রশাসনিক কারণ দেখিয়ে বদলি করা হয়েছে।’
যদিও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা ও অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে এসব বদলির আদেশ খুঁজে পাওয়া যায়নি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের সাড়া পাওয়া যায়নি।
জানতে চাইলে প্রাথমিক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামছুদ্দিন মাসুদ জানিয়েছেন, তাঁকে নোয়াখালী সদর উপজেলার কৃপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার দক্ষিণ চরলক্ষ্মী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আরেক আহ্বায়ক খায়রুন নাহার লিপি জানিয়েছেন, তিনিসহ বিভিন্ন জেলায় কর্মরত অন্তত ৪৪ জন সহকারী শিক্ষককে অন্য জেলায় প্রশাসনিক কারণ দেখিয়ে বদলি করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
তিনি বলেন, আন্দোলনরত শিক্ষকদের প্রথমে শোকজ ও পরে বদলি করা হলো। এটি হয়রানিমূলক বদলি, আমাদের শাস্তি দিয়েছে কারণ আমরা শিক্ষকদের ন্যায্য দাবির পক্ষে লড়াই করেছি। কিন্তু অনেক শিক্ষক যাঁরা আন্দোলনে জড়িত ছিলেন না তবুও তাঁরা বদলি হয়েছেন।
‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের’ অনুসারীরা সরকারের দেওয়া আশ্বাস বাস্তবায়নের দাবিতে গত বৃহস্পতিবার থেকে কর্মবিরতি পালন করেছেন। সোমবার থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বেশ কিছু স্কুলে আন্দোলনরত শিক্ষকেরা তা বর্জন করে কর্মবিরতি চালিয়ে যান।
কয়েক দিন আগে দশম গ্রেডে বেতনসহ তিন দাবিতে তাঁরা আন্দোলন করছিলেন। পরে ১১ তম গ্রেডে বেতনের আশ্বাসে কর্মসূচি স্থগিত করেন।
গত ৮ নভেম্বর শহীদ মিনারে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষকেরা। ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের’ ব্যানারে সেদিন বিকেলে তাঁরা ‘কলম বিরতি কর্মসূচি’ পালনে মিছিল নিয়ে শাহবাগের দিকে এগিয়ে যাওয়া চেষ্টা করলে তাঁদের আটকে দেয় পুলিশ। সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান, লাঠিপেটা, কাঁদুনে গ্যাস প্রয়োগ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ। সেসময় বেশ কয়েকজন আহত হন। এ ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষকেরা পরদিন থেকেই কর্মবিরতি শুরু করেন।
পরে ১০ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভা করেন আন্দোলনরত শিক্ষকেরা, যেখানে একাদশ গ্রেডে বেতন নির্ধারণ এবং উচ্চতর গ্রেড ও পদোন্নতির জটিলতা নিরসনে সরকারে আশ্বাস দিয়েছে জানিয়ে ওই দিন রাতে তাঁরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত করে শুরু হওয়া সহকারী শিক্ষকদের কর্মবিরতি স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষকেরা রোববার (৭ ডিসেম্বর) থেকে বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১২টার পর আন্দোলনরত শিক্ষক সংগঠনগুলোর দু’টি মোর্চা ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’ ও ‘প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের’ নেতারা এক যৌথ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন।
কর্মবিরতি স্থগিত ঘোষণার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আমাদের নৈতিকতা, মানবিকতা এবং সন্তানতুল্য কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে’ রোববার (৭ ডিসেম্বর) থেকে পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত সারা দেশের সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কমপ্লিট শাটডাউন বা তালাবদ্ধ কর্মসূচি স্থগিত করা হলো। রোববার থেকে সব শ্রেণির তৃতীয় প্রান্তিক মূল্যায়ন (বার্ষিক পরীক্ষা) চলবে।
এদিকে আন্দোলনরত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও শিক্ষক নেতাদের ‘হয়রানিমূলক’ বদলি করা হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
প্রাথমিকের শিক্ষক নেতাদের দাবি, বৃহস্পতিবার তিনজন কেন্দ্রীয় নেতাসহ ৪৪ জন সহকারী শিক্ষককে নিজ জেলার বাইরে অন্য জেলায় বদলি করা হয়েছে। এসব বদলিকে তাঁরা ‘হয়রানিমূলক বদলি’ বলে মন্তব্য করেছেন।
শিক্ষক নেতারা দাবি করেছেন, ‘রেওয়াজ না থাকলেও নিজ জেলার বাইরে হয়রানি করতে প্রশাসনিক কারণ দেখিয়ে বদলি করা হয়েছে।’
যদিও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা ও অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে এসব বদলির আদেশ খুঁজে পাওয়া যায়নি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের সাড়া পাওয়া যায়নি।
জানতে চাইলে প্রাথমিক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামছুদ্দিন মাসুদ জানিয়েছেন, তাঁকে নোয়াখালী সদর উপজেলার কৃপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার দক্ষিণ চরলক্ষ্মী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আরেক আহ্বায়ক খায়রুন নাহার লিপি জানিয়েছেন, তিনিসহ বিভিন্ন জেলায় কর্মরত অন্তত ৪৪ জন সহকারী শিক্ষককে অন্য জেলায় প্রশাসনিক কারণ দেখিয়ে বদলি করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
তিনি বলেন, আন্দোলনরত শিক্ষকদের প্রথমে শোকজ ও পরে বদলি করা হলো। এটি হয়রানিমূলক বদলি, আমাদের শাস্তি দিয়েছে কারণ আমরা শিক্ষকদের ন্যায্য দাবির পক্ষে লড়াই করেছি। কিন্তু অনেক শিক্ষক যাঁরা আন্দোলনে জড়িত ছিলেন না তবুও তাঁরা বদলি হয়েছেন।
‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের’ অনুসারীরা সরকারের দেওয়া আশ্বাস বাস্তবায়নের দাবিতে গত বৃহস্পতিবার থেকে কর্মবিরতি পালন করেছেন। সোমবার থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বেশ কিছু স্কুলে আন্দোলনরত শিক্ষকেরা তা বর্জন করে কর্মবিরতি চালিয়ে যান।
কয়েক দিন আগে দশম গ্রেডে বেতনসহ তিন দাবিতে তাঁরা আন্দোলন করছিলেন। পরে ১১ তম গ্রেডে বেতনের আশ্বাসে কর্মসূচি স্থগিত করেন।
গত ৮ নভেম্বর শহীদ মিনারে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষকেরা। ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের’ ব্যানারে সেদিন বিকেলে তাঁরা ‘কলম বিরতি কর্মসূচি’ পালনে মিছিল নিয়ে শাহবাগের দিকে এগিয়ে যাওয়া চেষ্টা করলে তাঁদের আটকে দেয় পুলিশ। সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান, লাঠিপেটা, কাঁদুনে গ্যাস প্রয়োগ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ। সেসময় বেশ কয়েকজন আহত হন। এ ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষকেরা পরদিন থেকেই কর্মবিরতি শুরু করেন।
পরে ১০ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভা করেন আন্দোলনরত শিক্ষকেরা, যেখানে একাদশ গ্রেডে বেতন নির্ধারণ এবং উচ্চতর গ্রেড ও পদোন্নতির জটিলতা নিরসনে সরকারে আশ্বাস দিয়েছে জানিয়ে ওই দিন রাতে তাঁরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন।

মেট্রোরেল চালায় যারা, সেই ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) অধীন একটি প্রতিষ্ঠান। আইন সংশোধন করে এখন আধুনিক নগর পরিবহনটির নিয়ন্ত্রণ থেকে সেই কর্তৃপক্ষকে বাদ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। সংশোধিত আইনের খসড়ায় মেট্রোরেলের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি...
২৮ নভেম্বর ২০২৪
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের ভলান্টিয়ার বা স্বেচ্ছাসেবকদের জন্য কিছু সুযোগ-সুবিধা প্রদান এবং তাঁদের প্রশিক্ষণের মান ও সংখ্যা বৃদ্ধির চিন্তাভাবনা করছে সরকার। এই লক্ষ্যে একটি বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনা দ্রুত প্রণয়ন করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল...
৩০ মিনিট আগে
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, ‘শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে ভারত এখনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। ট্রাইব্যুনালের রায় নিয়ে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে, আমরাও তাদের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় আছি।’
৩ ঘণ্টা আগে
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
১৫ ঘণ্টা আগেশাহরিয়ার হাসান, ঢাকা

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
রাজধানীর রাজারবাগে আজ বৃহস্পতিবার সদ্য পদায়ন পাওয়া ৬৪ জেলার এসপি, কমিশনার ও রেঞ্জ ডিআইজিদের সঙ্গে এক বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়। এর আগে সকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের সব নতুন এসপির সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচনকালীন দায়িত্ব ও মাঠপর্যায়ের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে দিকনির্দেশনা দেন।
আইজিপির সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, বক্তব্য দেওয়া এসপিদের সবার আলোচনাতেই কমবেশি ভোটকেন্দ্রে ব্যালটের নিরাপত্তার বিষয়টি উঠে আসে। আইজিপি বাহারুল আলম বৈঠকে তাঁর বক্তব্যে বলেন, আসন্ন নির্বাচনে পুলিশ শতভাগ নিরপেক্ষ থাকবে। জেলায় জেলায় এসপিরা সংসদীয় আসনের প্রার্থীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখবে এবং সবাইকে সুষ্ঠু নির্বাচনে অংশ নিতে উৎসাহিত করবে। আইজি এসপিদের বলেছেন, যার যার জেলা ও আসন ধরে ধরে নির্বাচনের সকল প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে হবে। এতে কাজটা সহজ হয়ে যাবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলার এসপি জানান, নির্বাচন সামনে রেখে পুলিশের প্রশিক্ষণ ঠিকভাবে সম্পন্ন করার ওপর জোর দিয়েছেন আইজিপি। তিনি বলেন, প্রত্যেক সদস্যকে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রার্থীদের মধ্যে সম্ভাব্য সংঘাত বা উত্তেজনার তথ্য আগে থেকেই সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলো বিবেচনায় নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা রেঞ্জের এক এসপি জানান, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান জোরদার করার নির্দেশও দেওয়া হয়। তাঁর মতে, এসব অস্ত্র উদ্ধার করা গেলে সহিংসতার ঝুঁকিও কমে আসবে বলে মনে করে পুলিশ সদর দপ্তর।
বৈঠকের আলোচনা নিয়ে জানতে চাইলে হবিগঞ্জের এসপি ইয়াসমিন খাতুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের কিছু সমস্যার কথা বলা হয়েছে। ভোটার, ভোট, ভোটের কেন্দ্র নিয়ে আইজি স্যার আমাদের বেশ কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।’
এর আগে সকালে এসপিদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নতুন বাংলাদেশের সূচনা করবে।’ তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের জন্ম হবে। এই জন্ম দিতে আপনারা (এসপি) ধাত্রীর ভূমিকা পালন করবেন। সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করাই আপনাদের দায়িত্ব।’
অতীতের বিতর্কিত নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এবার সেই ইতিহাস বদলানোর সুযোগ এসেছে। যেন দেশে-বিদেশে সবাই বলতে পারে, বাংলাদেশে এক নজিরবিহীন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, এ নির্বাচন কেবল রুটিন নির্বাচন নয়; এটি গণ-অভ্যুত্থানের পরবর্তী নির্বাচন। যে স্বপ্ন নিয়ে মানুষ আত্মত্যাগ করেছে, সেই স্বপ্নের স্থায়ী ভিত্তি তৈরির সুযোগ এই নির্বাচন।
গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ শাহরিয়ার খান আনাসের চিঠির প্রসঙ্গ টেনে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সেই চিঠি দায়িত্ববোধের বার্তা দিয়ে গেছে। এসপিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা কর্মস্থলে যাওয়ার আগে আনাসের চিঠিটা কাছে রাখবেন। সেটাই আপনাদের দায়িত্ব মনে করিয়ে দেবে।’
পুলিশ সুপারদের পদায়নে লটারির কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এর লক্ষ্য ছিল পক্ষপাতহীনতা নিশ্চিত করা। এতে ব্যক্তিগত অসুবিধা হলেও দায়িত্ব পালনে মনোযোগ বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
রাজধানীর রাজারবাগে আজ বৃহস্পতিবার সদ্য পদায়ন পাওয়া ৬৪ জেলার এসপি, কমিশনার ও রেঞ্জ ডিআইজিদের সঙ্গে এক বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়। এর আগে সকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের সব নতুন এসপির সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচনকালীন দায়িত্ব ও মাঠপর্যায়ের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে দিকনির্দেশনা দেন।
আইজিপির সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, বক্তব্য দেওয়া এসপিদের সবার আলোচনাতেই কমবেশি ভোটকেন্দ্রে ব্যালটের নিরাপত্তার বিষয়টি উঠে আসে। আইজিপি বাহারুল আলম বৈঠকে তাঁর বক্তব্যে বলেন, আসন্ন নির্বাচনে পুলিশ শতভাগ নিরপেক্ষ থাকবে। জেলায় জেলায় এসপিরা সংসদীয় আসনের প্রার্থীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখবে এবং সবাইকে সুষ্ঠু নির্বাচনে অংশ নিতে উৎসাহিত করবে। আইজি এসপিদের বলেছেন, যার যার জেলা ও আসন ধরে ধরে নির্বাচনের সকল প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে হবে। এতে কাজটা সহজ হয়ে যাবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলার এসপি জানান, নির্বাচন সামনে রেখে পুলিশের প্রশিক্ষণ ঠিকভাবে সম্পন্ন করার ওপর জোর দিয়েছেন আইজিপি। তিনি বলেন, প্রত্যেক সদস্যকে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রার্থীদের মধ্যে সম্ভাব্য সংঘাত বা উত্তেজনার তথ্য আগে থেকেই সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলো বিবেচনায় নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা রেঞ্জের এক এসপি জানান, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান জোরদার করার নির্দেশও দেওয়া হয়। তাঁর মতে, এসব অস্ত্র উদ্ধার করা গেলে সহিংসতার ঝুঁকিও কমে আসবে বলে মনে করে পুলিশ সদর দপ্তর।
বৈঠকের আলোচনা নিয়ে জানতে চাইলে হবিগঞ্জের এসপি ইয়াসমিন খাতুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের কিছু সমস্যার কথা বলা হয়েছে। ভোটার, ভোট, ভোটের কেন্দ্র নিয়ে আইজি স্যার আমাদের বেশ কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।’
এর আগে সকালে এসপিদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নতুন বাংলাদেশের সূচনা করবে।’ তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের জন্ম হবে। এই জন্ম দিতে আপনারা (এসপি) ধাত্রীর ভূমিকা পালন করবেন। সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করাই আপনাদের দায়িত্ব।’
অতীতের বিতর্কিত নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এবার সেই ইতিহাস বদলানোর সুযোগ এসেছে। যেন দেশে-বিদেশে সবাই বলতে পারে, বাংলাদেশে এক নজিরবিহীন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, এ নির্বাচন কেবল রুটিন নির্বাচন নয়; এটি গণ-অভ্যুত্থানের পরবর্তী নির্বাচন। যে স্বপ্ন নিয়ে মানুষ আত্মত্যাগ করেছে, সেই স্বপ্নের স্থায়ী ভিত্তি তৈরির সুযোগ এই নির্বাচন।
গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ শাহরিয়ার খান আনাসের চিঠির প্রসঙ্গ টেনে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সেই চিঠি দায়িত্ববোধের বার্তা দিয়ে গেছে। এসপিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা কর্মস্থলে যাওয়ার আগে আনাসের চিঠিটা কাছে রাখবেন। সেটাই আপনাদের দায়িত্ব মনে করিয়ে দেবে।’
পুলিশ সুপারদের পদায়নে লটারির কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এর লক্ষ্য ছিল পক্ষপাতহীনতা নিশ্চিত করা। এতে ব্যক্তিগত অসুবিধা হলেও দায়িত্ব পালনে মনোযোগ বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

মেট্রোরেল চালায় যারা, সেই ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) অধীন একটি প্রতিষ্ঠান। আইন সংশোধন করে এখন আধুনিক নগর পরিবহনটির নিয়ন্ত্রণ থেকে সেই কর্তৃপক্ষকে বাদ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। সংশোধিত আইনের খসড়ায় মেট্রোরেলের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি...
২৮ নভেম্বর ২০২৪
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের ভলান্টিয়ার বা স্বেচ্ছাসেবকদের জন্য কিছু সুযোগ-সুবিধা প্রদান এবং তাঁদের প্রশিক্ষণের মান ও সংখ্যা বৃদ্ধির চিন্তাভাবনা করছে সরকার। এই লক্ষ্যে একটি বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনা দ্রুত প্রণয়ন করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল...
৩০ মিনিট আগে
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, ‘শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে ভারত এখনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। ট্রাইব্যুনালের রায় নিয়ে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে, আমরাও তাদের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় আছি।’
৩ ঘণ্টা আগে
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত করে শুরু হওয়া সহকারী শিক্ষকদের কর্মবিরতি স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষকেরা রোববার (৭ ডিসেম্বর) থেকে বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
৩ ঘণ্টা আগে