নতুন মূল্যায়ন পদ্ধতি
মুহাম্মাদ শফিউল্লাহ, ঢাকা

গত দুই দশকে দেশে ৭০টির বেশি সরকারি ও বেসরকারি চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তবে এসব কলেজের অধিকাংশই শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মান পুরোপুরি বজায় রাখতে পারছে না। এ নিয়ে শিক্ষাবিদসহ বিশেষজ্ঞরা দীর্ঘদিন ধরে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছেন। এমন প্রেক্ষাপটে চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়গুলোর যথাযথ মান নিশ্চিত করতে সরকার নতুন মূল্যায়ন কার্যক্রম শুরু করেছে। চলতি মাসেই মূল্যায়নের ফল প্রকাশ করার পর ২০টির কাছাকাছি সরকারি ও বেসরকারি কলেজের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।
চিকিৎসা শিক্ষা বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিবছর হাজার হাজার চিকিৎসক তৈরি হলেও সার্বিকভাবে চিকিৎসাসেবার মানের তেমন উন্নয়ন হচ্ছে না। শিক্ষার মান নিয়ে বড় প্রশ্ন রয়েছে। তাঁরা শিক্ষার মান ও প্রশিক্ষণ উন্নয়নের জন্য বিদ্যমান অবস্থা পর্যালোচনার পরামর্শ দিয়ে আসছিলেন।
স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগ ও স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সরকারি-বেসরকারি উভয় ধরনের মেডিকেল কলেজের গ্রহণযোগ্য মান নিশ্চিত করতে একটি মূল্যায়ন পদ্ধতি (ম্যাট্রিকস) স্থির করা হয়েছে। আইন অনুযায়ী এবং এ পদ্ধতির মাধ্যমে কলেজগুলোর মূল্যায়ন করা হবে। বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত, শ্রেণিকক্ষের সংখ্যা, নিজস্ব ক্যাম্পাস থাকা না থাকা, শিক্ষায়তন ও হাসপাতালের অবকাঠামো, ব্যাংক হিসাব, শিক্ষার্থী অনুপাতে হাসপাতালের শয্যাসংখ্যা, রোগী ভর্তির হার, গবেষণা কার্যক্রম ইত্যাদির ওপর। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, এই মূল্যায়নের ভিত্তিতেই আগামী শিক্ষাবর্ষে কলেজগুলোর ভর্তির আসন অনুমোদন দেওয়া হবে।
প্রতি শিক্ষাবর্ষে আসন অনুমোদনের জন্য বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজগুলোকে নির্দিষ্ট চেকলিস্ট অনুযায়ী পরিদর্শন করা হয়। সেই পরিদর্শন প্রতিবেদনের ভিত্তিতে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় আসনের অনুমোদন দেয়। স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নতুন ম্যাট্রিকসের মাধ্যমে কলেজগুলোর সার্বিক মান আরও স্পষ্টভাবে বোঝা যাবে। প্রসঙ্গত, ম্যাট্রিকস হচ্ছে, কর্মী বা প্রতিষ্ঠানের যোগ্যতা বা মান মূল্যায়নের একটি কাঠামোবদ্ধ পদ্ধতি। এতে প্রতিটি মানদণ্ডের জন্য নম্বর নির্ধারণ করা হয়। সব ক্ষেত্রে প্রাপ্ত নম্বর যোগ করে মোট স্কোর পাওয়া যায়। মোট স্কোর থেকে বোঝা যাবে কোন প্রতিষ্ঠান কতটা মানসম্পন্ন। আগামীতে এর ওপর ভিত্তি করে শিক্ষার্থীসংখ্যা কমানো বা বাড়ানো হবে এবং কিছু কলেজ বন্ধও করা হতে পারে।

সংখ্যা ও মানে মেডিকেল শিক্ষা
স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে ১০৪টি মেডিকেল কলেজ রয়েছে। এর মধ্যে ৩৭টি সরকারি এবং ৬৭টি বেসরকারি। শুধু ২০০৫ সালের পর থেকেই ২৪টি সরকারি এবং ৪৫টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ স্থাপিত হয়েছে। এর বাইরে দেশে একটি সরকারি ডেন্টাল কলেজ চালু আছে এবং আরও দুটি কলেজের অনুমোদন রয়েছে। বেসরকারি ডেন্টাল কলেজের সংখ্যা ১২টি। আটটি সরকারি এবং ১৫টি বেসরকারি মেডিকেলে ডেন্টাল ইউনিটও আছে। সরকারি মেডিকেল কলেজের জন্য স্বতন্ত্র কোনো আইন নেই। তবে ২০২২ সালে বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও ডেন্টাল কলেজ আইন কার্যকর করেছে সরকার। ২০২২ সালের আগে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে ‘বেসরকারি মেডিকেল কলেজ স্থাপন ও পরিচালনা নীতিমালা, ২০১১’ (সংশোধিত) অনুযায়ী চলতে হতো। অভিযোগ রয়েছে, বেশির ভাগ বেসরকারি কলেজে নানা ধরনের ঘাটতি রয়েছে। সর্বশেষ, ২০২৪ সালের শুরুতে ৬টি বেসরকারি কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমোদন বাতিল করা হয়। এর মধ্যে দুটি কলেজের নিবন্ধনও বাতিল করা হয়েছে।
অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বেশ কয়েকটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। বেসরকারি কলেজের জন্য নিজস্ব জমি, আলাদা কলেজ ও হাসপাতাল ভবন থাকার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আইনে কলেজ ও হাসপাতালের ফ্লোর স্পেস, মৌলিক বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক, হাসপাতালের শয্যা, রোগী ভর্তির হারসহ বিভিন্ন অপরিহার্য শর্ত দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ঝুঁকিতে থাকা কলেজগুলো অবকাঠামোগত শর্ত পূরণ করছে না। তাদের শিক্ষকের অভাব রয়েছে, নির্ধারিত শিক্ষাক্রম যথাযথভাবে অনুসরণ করা হচ্ছে না এবং হাসপাতাল প্রয়োজনীয় শর্ত না মেনে পরিচালিত হচ্ছে। দেশের দুই-তৃতীয়াংশ বেসরকারি মেডিকেল কলেজই শর্ত পূরণে ব্যর্থ।
সরকারি কলেজও সমস্যামুক্ত নয়
বিদ্যমান ৩৭টি সরকারি মেডিকেল কলেজে শিক্ষকের তীব্র ঘাটতি রয়েছে। এখন জ্যেষ্ঠ শিক্ষকসহ মোট পদের ৪৩ শতাংশ শূন্য। স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তরের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, সরকারি কলেজগুলোর অনুমোদিত ৬ হাজার ৩৮৪টি পদের মধ্যে ২ হাজার ৭২৫টি খালি। সবচেয়ে বেশি ঘাটতি (৬৪ শতাংশ) অধ্যাপক পদে। নতুন প্রতিষ্ঠিত এবং বড় শহরের বাইরের মেডিকেল কলেজগুলোতে শিক্ষকসংকট সবচেয়ে বেশি। কিন্তু অবকাঠামো, শিক্ষক ও প্রশিক্ষণ সুবিধার ঘাটতির মধ্যেও ২০২৪ সালে সরকার এসব প্রতিষ্ঠানে আসন সংখ্যা বাড়িয়েছে।
যেসব মেডিকেল কলেজ কম নম্বর পাবে , তাদের শিক্ষার্থী ভর্তি কমিয়ে দেওয়া হবে এবং নতুন ভর্তি বন্ধ হতে পারে । অধ্যাপক সায়েদুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অবকাঠামো, জনবল ও হাসপাতাল না থাকার কারণে দেশের সর্বশেষ প্রতিষ্ঠিত ছয়টি সরকারি মেডিকেল কলেজ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এসব কলেজে স্থায়ী ক্যাম্পাস নেই, ক্লাস হয় সদর হাসপাতাল বা ভাড়া ভবনে। তাদের যথেষ্টসংখ্যক শিক্ষক ও মানসম্মত ল্যাবেরও অভাব রয়েছে। এসব সীমাবদ্ধতায় মান রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না।
ম্যাট্রিকস দিয়ে যেভাবে মূল্যায়ন
স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নাজমুল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কলেজগুলোর কাছে আমরা আইন ও বিধি অনুযায়ী কী কী চাই এবং তাদের কী কী আছে, ঘাটতি কিসে তার একটা গাণিতিক প্রকাশ হচ্ছে ম্যাট্রিকস। এতে শিক্ষার্থীদের জন্য জমি, শিক্ষক অনুপাত, অবকাঠামো, ক্লাসরুম, শিক্ষা, গবেষণা ইত্যাদির ওপর স্কোরিং করা হবে। এখন একটা চেকলিস্টের আলোকে কলেজগুলো ভিজিট করা হয়। ম্যাট্রিকসে সব শর্তের জন্য নির্দিষ্ট নম্বর থাকবে।’
অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসেন আরও বলেন, কলেজগুলোর মানের পার্থক্য কতখানি তা বোঝা যাবে কোনটি কত নম্বর পায়, তা দেখে। ভর্তির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আগেই ম্যাট্রিকসের আলোকে মূল্যায়ন করা হবে। এ মাসেই কাজ শেষ হতে পারে। সাধারণত অক্টোবরে মেডিকেলে ভর্তির বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়।
মূল্যায়নের পর কোনো কলেজ বন্ধ হওয়ার বিষয়ে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ‘কোনো কলেজ বন্ধ হবে কি হবে না, সে সিদ্ধান্ত মন্ত্রণালয় পরে নেবে। মানসম্মত চিকিৎসক তৈরির বিষয়টি আমাদের অঙ্গীকার। এ বিষয়ে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।’
বিশেষজ্ঞের পরামর্শ
চিকিৎসা শিক্ষা বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা যেসব দেশের চিকিৎসা শিক্ষার মান ভালো, সেগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবস্থার পার্থক্য তুলে ধরে একটি গ্রহণযোগ্য মানমাত্রা তৈরি করার পরামর্শ দিয়েছেন। তাঁদের মতে, এ থেকেই বোঝা যাবে দেশের চিকিৎসা শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ ব্যবস্থার প্রকৃত অবস্থা।
চিকিৎসা শিক্ষাবিষয়ক আন্তর্জাতিক তত্ত্বাবধানকারী প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন ফর মেডিকেল এডুকেশনের (ডব্লিউএফএমই) সাবেক জ্যেষ্ঠ পরামর্শক এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. মোজাহেরুল হক এ বিষয়ে কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। আজকের পত্রিকার সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘ম্যাট্রিকস চালু করা একটি ভালো উদ্যোগ। তবে এটি কার্যকর করার জন্য সংশ্লিষ্টদের সঠিকভাবে প্রস্তুত হতে হবে। ত্রুটিপূর্ণ কলেজকে শুধু সতর্কীকরণ নোটিশ দিলে চলবে না। কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। ব্যবস্থাটি যথাযথভাবে মনিটর এবং প্রয়োজনমতো সংস্কার করতে হবে। গত কয়েক দশকে চিকিৎসা শিক্ষার মান ঠিক রাখার বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর আগ্রহ দেখা যায়নি। দেশের বহু সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার মান গ্রহণযোগ্য নয়।’
বহু বছর আগে ডিগ্রি নেওয়া জ্যেষ্ঠ চিকিৎসকদেরও পেশা-সংক্রান্ত জ্ঞানে হালনাগাদ থাকার ওপর জোর দিয়ে এই বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘চিকিৎসা শিক্ষাজীবনের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত। এটি ধারাবাহিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উন্নত রাখতে হবে।’
সরকার যেভাবে ব্যবস্থা নেবে
গত ২৮ আগস্ট অবসরোত্তর ছুটিতে যান স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের সচিব ডা. মো. সারোয়ার বারী। তাঁর সময়েই মেডিকেল কলেজ মূল্যায়নের জন্য ম্যাট্রিকস চূড়ান্ত করা হয়। এ বিষয়ে তিনি ২৯ আগস্ট আজকের পত্রিকাকে বলেন, মেডিকেল কলেজ বন্ধের কোনো সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি। ম্যাট্রিকসের ভিত্তিতে কলেজগুলোর মূল্যায়ন করা হবে। যেসব কলেজ খুব কম নম্বর পাবে, তাদের বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়) অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, ‘যেসব মেডিকেল কলেজ কম নম্বর পাবে, তাদের শিক্ষার্থী ভর্তি কমিয়ে দেওয়া হবে এবং নতুন ভর্তি বন্ধ হতে পারে। বড় ঘাটতি থাকলে কলেজ বন্ধও করা হতে পারে। এসব বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে সংশ্লিষ্ট কমিটি। স্বচ্ছতার জন্য ম্যাট্রিকসের ফল সবার জন্য প্রকাশ করা হবে।’
সরকারি মেডিকেল কলেজের জন্য বর্তমানে কোনো আইন না থাকার পরিপ্রেক্ষিতে সেসব প্রতিষ্ঠানের মূল্যায়ন বিষয়ে ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, ‘আইন তৈরি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। তবে একাডেমিক কার্যক্রমের জন্য সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজের জন্য যেসব শর্ত অভিন্ন, সেগুলো সরকারি প্রতিষ্ঠানের জন্যও বিবেচনায় আসবে।’

গত দুই দশকে দেশে ৭০টির বেশি সরকারি ও বেসরকারি চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তবে এসব কলেজের অধিকাংশই শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মান পুরোপুরি বজায় রাখতে পারছে না। এ নিয়ে শিক্ষাবিদসহ বিশেষজ্ঞরা দীর্ঘদিন ধরে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছেন। এমন প্রেক্ষাপটে চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়গুলোর যথাযথ মান নিশ্চিত করতে সরকার নতুন মূল্যায়ন কার্যক্রম শুরু করেছে। চলতি মাসেই মূল্যায়নের ফল প্রকাশ করার পর ২০টির কাছাকাছি সরকারি ও বেসরকারি কলেজের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।
চিকিৎসা শিক্ষা বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিবছর হাজার হাজার চিকিৎসক তৈরি হলেও সার্বিকভাবে চিকিৎসাসেবার মানের তেমন উন্নয়ন হচ্ছে না। শিক্ষার মান নিয়ে বড় প্রশ্ন রয়েছে। তাঁরা শিক্ষার মান ও প্রশিক্ষণ উন্নয়নের জন্য বিদ্যমান অবস্থা পর্যালোচনার পরামর্শ দিয়ে আসছিলেন।
স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগ ও স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সরকারি-বেসরকারি উভয় ধরনের মেডিকেল কলেজের গ্রহণযোগ্য মান নিশ্চিত করতে একটি মূল্যায়ন পদ্ধতি (ম্যাট্রিকস) স্থির করা হয়েছে। আইন অনুযায়ী এবং এ পদ্ধতির মাধ্যমে কলেজগুলোর মূল্যায়ন করা হবে। বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত, শ্রেণিকক্ষের সংখ্যা, নিজস্ব ক্যাম্পাস থাকা না থাকা, শিক্ষায়তন ও হাসপাতালের অবকাঠামো, ব্যাংক হিসাব, শিক্ষার্থী অনুপাতে হাসপাতালের শয্যাসংখ্যা, রোগী ভর্তির হার, গবেষণা কার্যক্রম ইত্যাদির ওপর। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, এই মূল্যায়নের ভিত্তিতেই আগামী শিক্ষাবর্ষে কলেজগুলোর ভর্তির আসন অনুমোদন দেওয়া হবে।
প্রতি শিক্ষাবর্ষে আসন অনুমোদনের জন্য বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজগুলোকে নির্দিষ্ট চেকলিস্ট অনুযায়ী পরিদর্শন করা হয়। সেই পরিদর্শন প্রতিবেদনের ভিত্তিতে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় আসনের অনুমোদন দেয়। স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নতুন ম্যাট্রিকসের মাধ্যমে কলেজগুলোর সার্বিক মান আরও স্পষ্টভাবে বোঝা যাবে। প্রসঙ্গত, ম্যাট্রিকস হচ্ছে, কর্মী বা প্রতিষ্ঠানের যোগ্যতা বা মান মূল্যায়নের একটি কাঠামোবদ্ধ পদ্ধতি। এতে প্রতিটি মানদণ্ডের জন্য নম্বর নির্ধারণ করা হয়। সব ক্ষেত্রে প্রাপ্ত নম্বর যোগ করে মোট স্কোর পাওয়া যায়। মোট স্কোর থেকে বোঝা যাবে কোন প্রতিষ্ঠান কতটা মানসম্পন্ন। আগামীতে এর ওপর ভিত্তি করে শিক্ষার্থীসংখ্যা কমানো বা বাড়ানো হবে এবং কিছু কলেজ বন্ধও করা হতে পারে।

সংখ্যা ও মানে মেডিকেল শিক্ষা
স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে ১০৪টি মেডিকেল কলেজ রয়েছে। এর মধ্যে ৩৭টি সরকারি এবং ৬৭টি বেসরকারি। শুধু ২০০৫ সালের পর থেকেই ২৪টি সরকারি এবং ৪৫টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ স্থাপিত হয়েছে। এর বাইরে দেশে একটি সরকারি ডেন্টাল কলেজ চালু আছে এবং আরও দুটি কলেজের অনুমোদন রয়েছে। বেসরকারি ডেন্টাল কলেজের সংখ্যা ১২টি। আটটি সরকারি এবং ১৫টি বেসরকারি মেডিকেলে ডেন্টাল ইউনিটও আছে। সরকারি মেডিকেল কলেজের জন্য স্বতন্ত্র কোনো আইন নেই। তবে ২০২২ সালে বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও ডেন্টাল কলেজ আইন কার্যকর করেছে সরকার। ২০২২ সালের আগে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে ‘বেসরকারি মেডিকেল কলেজ স্থাপন ও পরিচালনা নীতিমালা, ২০১১’ (সংশোধিত) অনুযায়ী চলতে হতো। অভিযোগ রয়েছে, বেশির ভাগ বেসরকারি কলেজে নানা ধরনের ঘাটতি রয়েছে। সর্বশেষ, ২০২৪ সালের শুরুতে ৬টি বেসরকারি কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমোদন বাতিল করা হয়। এর মধ্যে দুটি কলেজের নিবন্ধনও বাতিল করা হয়েছে।
অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বেশ কয়েকটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। বেসরকারি কলেজের জন্য নিজস্ব জমি, আলাদা কলেজ ও হাসপাতাল ভবন থাকার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আইনে কলেজ ও হাসপাতালের ফ্লোর স্পেস, মৌলিক বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক, হাসপাতালের শয্যা, রোগী ভর্তির হারসহ বিভিন্ন অপরিহার্য শর্ত দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ঝুঁকিতে থাকা কলেজগুলো অবকাঠামোগত শর্ত পূরণ করছে না। তাদের শিক্ষকের অভাব রয়েছে, নির্ধারিত শিক্ষাক্রম যথাযথভাবে অনুসরণ করা হচ্ছে না এবং হাসপাতাল প্রয়োজনীয় শর্ত না মেনে পরিচালিত হচ্ছে। দেশের দুই-তৃতীয়াংশ বেসরকারি মেডিকেল কলেজই শর্ত পূরণে ব্যর্থ।
সরকারি কলেজও সমস্যামুক্ত নয়
বিদ্যমান ৩৭টি সরকারি মেডিকেল কলেজে শিক্ষকের তীব্র ঘাটতি রয়েছে। এখন জ্যেষ্ঠ শিক্ষকসহ মোট পদের ৪৩ শতাংশ শূন্য। স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তরের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, সরকারি কলেজগুলোর অনুমোদিত ৬ হাজার ৩৮৪টি পদের মধ্যে ২ হাজার ৭২৫টি খালি। সবচেয়ে বেশি ঘাটতি (৬৪ শতাংশ) অধ্যাপক পদে। নতুন প্রতিষ্ঠিত এবং বড় শহরের বাইরের মেডিকেল কলেজগুলোতে শিক্ষকসংকট সবচেয়ে বেশি। কিন্তু অবকাঠামো, শিক্ষক ও প্রশিক্ষণ সুবিধার ঘাটতির মধ্যেও ২০২৪ সালে সরকার এসব প্রতিষ্ঠানে আসন সংখ্যা বাড়িয়েছে।
যেসব মেডিকেল কলেজ কম নম্বর পাবে , তাদের শিক্ষার্থী ভর্তি কমিয়ে দেওয়া হবে এবং নতুন ভর্তি বন্ধ হতে পারে । অধ্যাপক সায়েদুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অবকাঠামো, জনবল ও হাসপাতাল না থাকার কারণে দেশের সর্বশেষ প্রতিষ্ঠিত ছয়টি সরকারি মেডিকেল কলেজ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এসব কলেজে স্থায়ী ক্যাম্পাস নেই, ক্লাস হয় সদর হাসপাতাল বা ভাড়া ভবনে। তাদের যথেষ্টসংখ্যক শিক্ষক ও মানসম্মত ল্যাবেরও অভাব রয়েছে। এসব সীমাবদ্ধতায় মান রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না।
ম্যাট্রিকস দিয়ে যেভাবে মূল্যায়ন
স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নাজমুল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কলেজগুলোর কাছে আমরা আইন ও বিধি অনুযায়ী কী কী চাই এবং তাদের কী কী আছে, ঘাটতি কিসে তার একটা গাণিতিক প্রকাশ হচ্ছে ম্যাট্রিকস। এতে শিক্ষার্থীদের জন্য জমি, শিক্ষক অনুপাত, অবকাঠামো, ক্লাসরুম, শিক্ষা, গবেষণা ইত্যাদির ওপর স্কোরিং করা হবে। এখন একটা চেকলিস্টের আলোকে কলেজগুলো ভিজিট করা হয়। ম্যাট্রিকসে সব শর্তের জন্য নির্দিষ্ট নম্বর থাকবে।’
অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসেন আরও বলেন, কলেজগুলোর মানের পার্থক্য কতখানি তা বোঝা যাবে কোনটি কত নম্বর পায়, তা দেখে। ভর্তির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আগেই ম্যাট্রিকসের আলোকে মূল্যায়ন করা হবে। এ মাসেই কাজ শেষ হতে পারে। সাধারণত অক্টোবরে মেডিকেলে ভর্তির বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়।
মূল্যায়নের পর কোনো কলেজ বন্ধ হওয়ার বিষয়ে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ‘কোনো কলেজ বন্ধ হবে কি হবে না, সে সিদ্ধান্ত মন্ত্রণালয় পরে নেবে। মানসম্মত চিকিৎসক তৈরির বিষয়টি আমাদের অঙ্গীকার। এ বিষয়ে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।’
বিশেষজ্ঞের পরামর্শ
চিকিৎসা শিক্ষা বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা যেসব দেশের চিকিৎসা শিক্ষার মান ভালো, সেগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবস্থার পার্থক্য তুলে ধরে একটি গ্রহণযোগ্য মানমাত্রা তৈরি করার পরামর্শ দিয়েছেন। তাঁদের মতে, এ থেকেই বোঝা যাবে দেশের চিকিৎসা শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ ব্যবস্থার প্রকৃত অবস্থা।
চিকিৎসা শিক্ষাবিষয়ক আন্তর্জাতিক তত্ত্বাবধানকারী প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন ফর মেডিকেল এডুকেশনের (ডব্লিউএফএমই) সাবেক জ্যেষ্ঠ পরামর্শক এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. মোজাহেরুল হক এ বিষয়ে কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। আজকের পত্রিকার সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘ম্যাট্রিকস চালু করা একটি ভালো উদ্যোগ। তবে এটি কার্যকর করার জন্য সংশ্লিষ্টদের সঠিকভাবে প্রস্তুত হতে হবে। ত্রুটিপূর্ণ কলেজকে শুধু সতর্কীকরণ নোটিশ দিলে চলবে না। কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। ব্যবস্থাটি যথাযথভাবে মনিটর এবং প্রয়োজনমতো সংস্কার করতে হবে। গত কয়েক দশকে চিকিৎসা শিক্ষার মান ঠিক রাখার বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর আগ্রহ দেখা যায়নি। দেশের বহু সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার মান গ্রহণযোগ্য নয়।’
বহু বছর আগে ডিগ্রি নেওয়া জ্যেষ্ঠ চিকিৎসকদেরও পেশা-সংক্রান্ত জ্ঞানে হালনাগাদ থাকার ওপর জোর দিয়ে এই বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘চিকিৎসা শিক্ষাজীবনের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত। এটি ধারাবাহিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উন্নত রাখতে হবে।’
সরকার যেভাবে ব্যবস্থা নেবে
গত ২৮ আগস্ট অবসরোত্তর ছুটিতে যান স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের সচিব ডা. মো. সারোয়ার বারী। তাঁর সময়েই মেডিকেল কলেজ মূল্যায়নের জন্য ম্যাট্রিকস চূড়ান্ত করা হয়। এ বিষয়ে তিনি ২৯ আগস্ট আজকের পত্রিকাকে বলেন, মেডিকেল কলেজ বন্ধের কোনো সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি। ম্যাট্রিকসের ভিত্তিতে কলেজগুলোর মূল্যায়ন করা হবে। যেসব কলেজ খুব কম নম্বর পাবে, তাদের বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়) অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, ‘যেসব মেডিকেল কলেজ কম নম্বর পাবে, তাদের শিক্ষার্থী ভর্তি কমিয়ে দেওয়া হবে এবং নতুন ভর্তি বন্ধ হতে পারে। বড় ঘাটতি থাকলে কলেজ বন্ধও করা হতে পারে। এসব বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে সংশ্লিষ্ট কমিটি। স্বচ্ছতার জন্য ম্যাট্রিকসের ফল সবার জন্য প্রকাশ করা হবে।’
সরকারি মেডিকেল কলেজের জন্য বর্তমানে কোনো আইন না থাকার পরিপ্রেক্ষিতে সেসব প্রতিষ্ঠানের মূল্যায়ন বিষয়ে ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, ‘আইন তৈরি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। তবে একাডেমিক কার্যক্রমের জন্য সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজের জন্য যেসব শর্ত অভিন্ন, সেগুলো সরকারি প্রতিষ্ঠানের জন্যও বিবেচনায় আসবে।’
নতুন মূল্যায়ন পদ্ধতি
মুহাম্মাদ শফিউল্লাহ, ঢাকা

গত দুই দশকে দেশে ৭০টির বেশি সরকারি ও বেসরকারি চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তবে এসব কলেজের অধিকাংশই শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মান পুরোপুরি বজায় রাখতে পারছে না। এ নিয়ে শিক্ষাবিদসহ বিশেষজ্ঞরা দীর্ঘদিন ধরে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছেন। এমন প্রেক্ষাপটে চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়গুলোর যথাযথ মান নিশ্চিত করতে সরকার নতুন মূল্যায়ন কার্যক্রম শুরু করেছে। চলতি মাসেই মূল্যায়নের ফল প্রকাশ করার পর ২০টির কাছাকাছি সরকারি ও বেসরকারি কলেজের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।
চিকিৎসা শিক্ষা বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিবছর হাজার হাজার চিকিৎসক তৈরি হলেও সার্বিকভাবে চিকিৎসাসেবার মানের তেমন উন্নয়ন হচ্ছে না। শিক্ষার মান নিয়ে বড় প্রশ্ন রয়েছে। তাঁরা শিক্ষার মান ও প্রশিক্ষণ উন্নয়নের জন্য বিদ্যমান অবস্থা পর্যালোচনার পরামর্শ দিয়ে আসছিলেন।
স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগ ও স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সরকারি-বেসরকারি উভয় ধরনের মেডিকেল কলেজের গ্রহণযোগ্য মান নিশ্চিত করতে একটি মূল্যায়ন পদ্ধতি (ম্যাট্রিকস) স্থির করা হয়েছে। আইন অনুযায়ী এবং এ পদ্ধতির মাধ্যমে কলেজগুলোর মূল্যায়ন করা হবে। বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত, শ্রেণিকক্ষের সংখ্যা, নিজস্ব ক্যাম্পাস থাকা না থাকা, শিক্ষায়তন ও হাসপাতালের অবকাঠামো, ব্যাংক হিসাব, শিক্ষার্থী অনুপাতে হাসপাতালের শয্যাসংখ্যা, রোগী ভর্তির হার, গবেষণা কার্যক্রম ইত্যাদির ওপর। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, এই মূল্যায়নের ভিত্তিতেই আগামী শিক্ষাবর্ষে কলেজগুলোর ভর্তির আসন অনুমোদন দেওয়া হবে।
প্রতি শিক্ষাবর্ষে আসন অনুমোদনের জন্য বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজগুলোকে নির্দিষ্ট চেকলিস্ট অনুযায়ী পরিদর্শন করা হয়। সেই পরিদর্শন প্রতিবেদনের ভিত্তিতে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় আসনের অনুমোদন দেয়। স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নতুন ম্যাট্রিকসের মাধ্যমে কলেজগুলোর সার্বিক মান আরও স্পষ্টভাবে বোঝা যাবে। প্রসঙ্গত, ম্যাট্রিকস হচ্ছে, কর্মী বা প্রতিষ্ঠানের যোগ্যতা বা মান মূল্যায়নের একটি কাঠামোবদ্ধ পদ্ধতি। এতে প্রতিটি মানদণ্ডের জন্য নম্বর নির্ধারণ করা হয়। সব ক্ষেত্রে প্রাপ্ত নম্বর যোগ করে মোট স্কোর পাওয়া যায়। মোট স্কোর থেকে বোঝা যাবে কোন প্রতিষ্ঠান কতটা মানসম্পন্ন। আগামীতে এর ওপর ভিত্তি করে শিক্ষার্থীসংখ্যা কমানো বা বাড়ানো হবে এবং কিছু কলেজ বন্ধও করা হতে পারে।

সংখ্যা ও মানে মেডিকেল শিক্ষা
স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে ১০৪টি মেডিকেল কলেজ রয়েছে। এর মধ্যে ৩৭টি সরকারি এবং ৬৭টি বেসরকারি। শুধু ২০০৫ সালের পর থেকেই ২৪টি সরকারি এবং ৪৫টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ স্থাপিত হয়েছে। এর বাইরে দেশে একটি সরকারি ডেন্টাল কলেজ চালু আছে এবং আরও দুটি কলেজের অনুমোদন রয়েছে। বেসরকারি ডেন্টাল কলেজের সংখ্যা ১২টি। আটটি সরকারি এবং ১৫টি বেসরকারি মেডিকেলে ডেন্টাল ইউনিটও আছে। সরকারি মেডিকেল কলেজের জন্য স্বতন্ত্র কোনো আইন নেই। তবে ২০২২ সালে বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও ডেন্টাল কলেজ আইন কার্যকর করেছে সরকার। ২০২২ সালের আগে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে ‘বেসরকারি মেডিকেল কলেজ স্থাপন ও পরিচালনা নীতিমালা, ২০১১’ (সংশোধিত) অনুযায়ী চলতে হতো। অভিযোগ রয়েছে, বেশির ভাগ বেসরকারি কলেজে নানা ধরনের ঘাটতি রয়েছে। সর্বশেষ, ২০২৪ সালের শুরুতে ৬টি বেসরকারি কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমোদন বাতিল করা হয়। এর মধ্যে দুটি কলেজের নিবন্ধনও বাতিল করা হয়েছে।
অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বেশ কয়েকটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। বেসরকারি কলেজের জন্য নিজস্ব জমি, আলাদা কলেজ ও হাসপাতাল ভবন থাকার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আইনে কলেজ ও হাসপাতালের ফ্লোর স্পেস, মৌলিক বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক, হাসপাতালের শয্যা, রোগী ভর্তির হারসহ বিভিন্ন অপরিহার্য শর্ত দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ঝুঁকিতে থাকা কলেজগুলো অবকাঠামোগত শর্ত পূরণ করছে না। তাদের শিক্ষকের অভাব রয়েছে, নির্ধারিত শিক্ষাক্রম যথাযথভাবে অনুসরণ করা হচ্ছে না এবং হাসপাতাল প্রয়োজনীয় শর্ত না মেনে পরিচালিত হচ্ছে। দেশের দুই-তৃতীয়াংশ বেসরকারি মেডিকেল কলেজই শর্ত পূরণে ব্যর্থ।
সরকারি কলেজও সমস্যামুক্ত নয়
বিদ্যমান ৩৭টি সরকারি মেডিকেল কলেজে শিক্ষকের তীব্র ঘাটতি রয়েছে। এখন জ্যেষ্ঠ শিক্ষকসহ মোট পদের ৪৩ শতাংশ শূন্য। স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তরের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, সরকারি কলেজগুলোর অনুমোদিত ৬ হাজার ৩৮৪টি পদের মধ্যে ২ হাজার ৭২৫টি খালি। সবচেয়ে বেশি ঘাটতি (৬৪ শতাংশ) অধ্যাপক পদে। নতুন প্রতিষ্ঠিত এবং বড় শহরের বাইরের মেডিকেল কলেজগুলোতে শিক্ষকসংকট সবচেয়ে বেশি। কিন্তু অবকাঠামো, শিক্ষক ও প্রশিক্ষণ সুবিধার ঘাটতির মধ্যেও ২০২৪ সালে সরকার এসব প্রতিষ্ঠানে আসন সংখ্যা বাড়িয়েছে।
যেসব মেডিকেল কলেজ কম নম্বর পাবে , তাদের শিক্ষার্থী ভর্তি কমিয়ে দেওয়া হবে এবং নতুন ভর্তি বন্ধ হতে পারে । অধ্যাপক সায়েদুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অবকাঠামো, জনবল ও হাসপাতাল না থাকার কারণে দেশের সর্বশেষ প্রতিষ্ঠিত ছয়টি সরকারি মেডিকেল কলেজ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এসব কলেজে স্থায়ী ক্যাম্পাস নেই, ক্লাস হয় সদর হাসপাতাল বা ভাড়া ভবনে। তাদের যথেষ্টসংখ্যক শিক্ষক ও মানসম্মত ল্যাবেরও অভাব রয়েছে। এসব সীমাবদ্ধতায় মান রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না।
ম্যাট্রিকস দিয়ে যেভাবে মূল্যায়ন
স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নাজমুল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কলেজগুলোর কাছে আমরা আইন ও বিধি অনুযায়ী কী কী চাই এবং তাদের কী কী আছে, ঘাটতি কিসে তার একটা গাণিতিক প্রকাশ হচ্ছে ম্যাট্রিকস। এতে শিক্ষার্থীদের জন্য জমি, শিক্ষক অনুপাত, অবকাঠামো, ক্লাসরুম, শিক্ষা, গবেষণা ইত্যাদির ওপর স্কোরিং করা হবে। এখন একটা চেকলিস্টের আলোকে কলেজগুলো ভিজিট করা হয়। ম্যাট্রিকসে সব শর্তের জন্য নির্দিষ্ট নম্বর থাকবে।’
অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসেন আরও বলেন, কলেজগুলোর মানের পার্থক্য কতখানি তা বোঝা যাবে কোনটি কত নম্বর পায়, তা দেখে। ভর্তির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আগেই ম্যাট্রিকসের আলোকে মূল্যায়ন করা হবে। এ মাসেই কাজ শেষ হতে পারে। সাধারণত অক্টোবরে মেডিকেলে ভর্তির বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়।
মূল্যায়নের পর কোনো কলেজ বন্ধ হওয়ার বিষয়ে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ‘কোনো কলেজ বন্ধ হবে কি হবে না, সে সিদ্ধান্ত মন্ত্রণালয় পরে নেবে। মানসম্মত চিকিৎসক তৈরির বিষয়টি আমাদের অঙ্গীকার। এ বিষয়ে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।’
বিশেষজ্ঞের পরামর্শ
চিকিৎসা শিক্ষা বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা যেসব দেশের চিকিৎসা শিক্ষার মান ভালো, সেগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবস্থার পার্থক্য তুলে ধরে একটি গ্রহণযোগ্য মানমাত্রা তৈরি করার পরামর্শ দিয়েছেন। তাঁদের মতে, এ থেকেই বোঝা যাবে দেশের চিকিৎসা শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ ব্যবস্থার প্রকৃত অবস্থা।
চিকিৎসা শিক্ষাবিষয়ক আন্তর্জাতিক তত্ত্বাবধানকারী প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন ফর মেডিকেল এডুকেশনের (ডব্লিউএফএমই) সাবেক জ্যেষ্ঠ পরামর্শক এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. মোজাহেরুল হক এ বিষয়ে কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। আজকের পত্রিকার সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘ম্যাট্রিকস চালু করা একটি ভালো উদ্যোগ। তবে এটি কার্যকর করার জন্য সংশ্লিষ্টদের সঠিকভাবে প্রস্তুত হতে হবে। ত্রুটিপূর্ণ কলেজকে শুধু সতর্কীকরণ নোটিশ দিলে চলবে না। কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। ব্যবস্থাটি যথাযথভাবে মনিটর এবং প্রয়োজনমতো সংস্কার করতে হবে। গত কয়েক দশকে চিকিৎসা শিক্ষার মান ঠিক রাখার বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর আগ্রহ দেখা যায়নি। দেশের বহু সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার মান গ্রহণযোগ্য নয়।’
বহু বছর আগে ডিগ্রি নেওয়া জ্যেষ্ঠ চিকিৎসকদেরও পেশা-সংক্রান্ত জ্ঞানে হালনাগাদ থাকার ওপর জোর দিয়ে এই বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘চিকিৎসা শিক্ষাজীবনের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত। এটি ধারাবাহিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উন্নত রাখতে হবে।’
সরকার যেভাবে ব্যবস্থা নেবে
গত ২৮ আগস্ট অবসরোত্তর ছুটিতে যান স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের সচিব ডা. মো. সারোয়ার বারী। তাঁর সময়েই মেডিকেল কলেজ মূল্যায়নের জন্য ম্যাট্রিকস চূড়ান্ত করা হয়। এ বিষয়ে তিনি ২৯ আগস্ট আজকের পত্রিকাকে বলেন, মেডিকেল কলেজ বন্ধের কোনো সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি। ম্যাট্রিকসের ভিত্তিতে কলেজগুলোর মূল্যায়ন করা হবে। যেসব কলেজ খুব কম নম্বর পাবে, তাদের বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়) অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, ‘যেসব মেডিকেল কলেজ কম নম্বর পাবে, তাদের শিক্ষার্থী ভর্তি কমিয়ে দেওয়া হবে এবং নতুন ভর্তি বন্ধ হতে পারে। বড় ঘাটতি থাকলে কলেজ বন্ধও করা হতে পারে। এসব বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে সংশ্লিষ্ট কমিটি। স্বচ্ছতার জন্য ম্যাট্রিকসের ফল সবার জন্য প্রকাশ করা হবে।’
সরকারি মেডিকেল কলেজের জন্য বর্তমানে কোনো আইন না থাকার পরিপ্রেক্ষিতে সেসব প্রতিষ্ঠানের মূল্যায়ন বিষয়ে ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, ‘আইন তৈরি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। তবে একাডেমিক কার্যক্রমের জন্য সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজের জন্য যেসব শর্ত অভিন্ন, সেগুলো সরকারি প্রতিষ্ঠানের জন্যও বিবেচনায় আসবে।’

গত দুই দশকে দেশে ৭০টির বেশি সরকারি ও বেসরকারি চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তবে এসব কলেজের অধিকাংশই শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মান পুরোপুরি বজায় রাখতে পারছে না। এ নিয়ে শিক্ষাবিদসহ বিশেষজ্ঞরা দীর্ঘদিন ধরে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছেন। এমন প্রেক্ষাপটে চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়গুলোর যথাযথ মান নিশ্চিত করতে সরকার নতুন মূল্যায়ন কার্যক্রম শুরু করেছে। চলতি মাসেই মূল্যায়নের ফল প্রকাশ করার পর ২০টির কাছাকাছি সরকারি ও বেসরকারি কলেজের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।
চিকিৎসা শিক্ষা বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিবছর হাজার হাজার চিকিৎসক তৈরি হলেও সার্বিকভাবে চিকিৎসাসেবার মানের তেমন উন্নয়ন হচ্ছে না। শিক্ষার মান নিয়ে বড় প্রশ্ন রয়েছে। তাঁরা শিক্ষার মান ও প্রশিক্ষণ উন্নয়নের জন্য বিদ্যমান অবস্থা পর্যালোচনার পরামর্শ দিয়ে আসছিলেন।
স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগ ও স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সরকারি-বেসরকারি উভয় ধরনের মেডিকেল কলেজের গ্রহণযোগ্য মান নিশ্চিত করতে একটি মূল্যায়ন পদ্ধতি (ম্যাট্রিকস) স্থির করা হয়েছে। আইন অনুযায়ী এবং এ পদ্ধতির মাধ্যমে কলেজগুলোর মূল্যায়ন করা হবে। বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত, শ্রেণিকক্ষের সংখ্যা, নিজস্ব ক্যাম্পাস থাকা না থাকা, শিক্ষায়তন ও হাসপাতালের অবকাঠামো, ব্যাংক হিসাব, শিক্ষার্থী অনুপাতে হাসপাতালের শয্যাসংখ্যা, রোগী ভর্তির হার, গবেষণা কার্যক্রম ইত্যাদির ওপর। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, এই মূল্যায়নের ভিত্তিতেই আগামী শিক্ষাবর্ষে কলেজগুলোর ভর্তির আসন অনুমোদন দেওয়া হবে।
প্রতি শিক্ষাবর্ষে আসন অনুমোদনের জন্য বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজগুলোকে নির্দিষ্ট চেকলিস্ট অনুযায়ী পরিদর্শন করা হয়। সেই পরিদর্শন প্রতিবেদনের ভিত্তিতে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় আসনের অনুমোদন দেয়। স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নতুন ম্যাট্রিকসের মাধ্যমে কলেজগুলোর সার্বিক মান আরও স্পষ্টভাবে বোঝা যাবে। প্রসঙ্গত, ম্যাট্রিকস হচ্ছে, কর্মী বা প্রতিষ্ঠানের যোগ্যতা বা মান মূল্যায়নের একটি কাঠামোবদ্ধ পদ্ধতি। এতে প্রতিটি মানদণ্ডের জন্য নম্বর নির্ধারণ করা হয়। সব ক্ষেত্রে প্রাপ্ত নম্বর যোগ করে মোট স্কোর পাওয়া যায়। মোট স্কোর থেকে বোঝা যাবে কোন প্রতিষ্ঠান কতটা মানসম্পন্ন। আগামীতে এর ওপর ভিত্তি করে শিক্ষার্থীসংখ্যা কমানো বা বাড়ানো হবে এবং কিছু কলেজ বন্ধও করা হতে পারে।

সংখ্যা ও মানে মেডিকেল শিক্ষা
স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে ১০৪টি মেডিকেল কলেজ রয়েছে। এর মধ্যে ৩৭টি সরকারি এবং ৬৭টি বেসরকারি। শুধু ২০০৫ সালের পর থেকেই ২৪টি সরকারি এবং ৪৫টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ স্থাপিত হয়েছে। এর বাইরে দেশে একটি সরকারি ডেন্টাল কলেজ চালু আছে এবং আরও দুটি কলেজের অনুমোদন রয়েছে। বেসরকারি ডেন্টাল কলেজের সংখ্যা ১২টি। আটটি সরকারি এবং ১৫টি বেসরকারি মেডিকেলে ডেন্টাল ইউনিটও আছে। সরকারি মেডিকেল কলেজের জন্য স্বতন্ত্র কোনো আইন নেই। তবে ২০২২ সালে বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও ডেন্টাল কলেজ আইন কার্যকর করেছে সরকার। ২০২২ সালের আগে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে ‘বেসরকারি মেডিকেল কলেজ স্থাপন ও পরিচালনা নীতিমালা, ২০১১’ (সংশোধিত) অনুযায়ী চলতে হতো। অভিযোগ রয়েছে, বেশির ভাগ বেসরকারি কলেজে নানা ধরনের ঘাটতি রয়েছে। সর্বশেষ, ২০২৪ সালের শুরুতে ৬টি বেসরকারি কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমোদন বাতিল করা হয়। এর মধ্যে দুটি কলেজের নিবন্ধনও বাতিল করা হয়েছে।
অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বেশ কয়েকটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। বেসরকারি কলেজের জন্য নিজস্ব জমি, আলাদা কলেজ ও হাসপাতাল ভবন থাকার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আইনে কলেজ ও হাসপাতালের ফ্লোর স্পেস, মৌলিক বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক, হাসপাতালের শয্যা, রোগী ভর্তির হারসহ বিভিন্ন অপরিহার্য শর্ত দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ঝুঁকিতে থাকা কলেজগুলো অবকাঠামোগত শর্ত পূরণ করছে না। তাদের শিক্ষকের অভাব রয়েছে, নির্ধারিত শিক্ষাক্রম যথাযথভাবে অনুসরণ করা হচ্ছে না এবং হাসপাতাল প্রয়োজনীয় শর্ত না মেনে পরিচালিত হচ্ছে। দেশের দুই-তৃতীয়াংশ বেসরকারি মেডিকেল কলেজই শর্ত পূরণে ব্যর্থ।
সরকারি কলেজও সমস্যামুক্ত নয়
বিদ্যমান ৩৭টি সরকারি মেডিকেল কলেজে শিক্ষকের তীব্র ঘাটতি রয়েছে। এখন জ্যেষ্ঠ শিক্ষকসহ মোট পদের ৪৩ শতাংশ শূন্য। স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তরের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, সরকারি কলেজগুলোর অনুমোদিত ৬ হাজার ৩৮৪টি পদের মধ্যে ২ হাজার ৭২৫টি খালি। সবচেয়ে বেশি ঘাটতি (৬৪ শতাংশ) অধ্যাপক পদে। নতুন প্রতিষ্ঠিত এবং বড় শহরের বাইরের মেডিকেল কলেজগুলোতে শিক্ষকসংকট সবচেয়ে বেশি। কিন্তু অবকাঠামো, শিক্ষক ও প্রশিক্ষণ সুবিধার ঘাটতির মধ্যেও ২০২৪ সালে সরকার এসব প্রতিষ্ঠানে আসন সংখ্যা বাড়িয়েছে।
যেসব মেডিকেল কলেজ কম নম্বর পাবে , তাদের শিক্ষার্থী ভর্তি কমিয়ে দেওয়া হবে এবং নতুন ভর্তি বন্ধ হতে পারে । অধ্যাপক সায়েদুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অবকাঠামো, জনবল ও হাসপাতাল না থাকার কারণে দেশের সর্বশেষ প্রতিষ্ঠিত ছয়টি সরকারি মেডিকেল কলেজ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এসব কলেজে স্থায়ী ক্যাম্পাস নেই, ক্লাস হয় সদর হাসপাতাল বা ভাড়া ভবনে। তাদের যথেষ্টসংখ্যক শিক্ষক ও মানসম্মত ল্যাবেরও অভাব রয়েছে। এসব সীমাবদ্ধতায় মান রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না।
ম্যাট্রিকস দিয়ে যেভাবে মূল্যায়ন
স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নাজমুল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কলেজগুলোর কাছে আমরা আইন ও বিধি অনুযায়ী কী কী চাই এবং তাদের কী কী আছে, ঘাটতি কিসে তার একটা গাণিতিক প্রকাশ হচ্ছে ম্যাট্রিকস। এতে শিক্ষার্থীদের জন্য জমি, শিক্ষক অনুপাত, অবকাঠামো, ক্লাসরুম, শিক্ষা, গবেষণা ইত্যাদির ওপর স্কোরিং করা হবে। এখন একটা চেকলিস্টের আলোকে কলেজগুলো ভিজিট করা হয়। ম্যাট্রিকসে সব শর্তের জন্য নির্দিষ্ট নম্বর থাকবে।’
অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসেন আরও বলেন, কলেজগুলোর মানের পার্থক্য কতখানি তা বোঝা যাবে কোনটি কত নম্বর পায়, তা দেখে। ভর্তির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আগেই ম্যাট্রিকসের আলোকে মূল্যায়ন করা হবে। এ মাসেই কাজ শেষ হতে পারে। সাধারণত অক্টোবরে মেডিকেলে ভর্তির বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়।
মূল্যায়নের পর কোনো কলেজ বন্ধ হওয়ার বিষয়ে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ‘কোনো কলেজ বন্ধ হবে কি হবে না, সে সিদ্ধান্ত মন্ত্রণালয় পরে নেবে। মানসম্মত চিকিৎসক তৈরির বিষয়টি আমাদের অঙ্গীকার। এ বিষয়ে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।’
বিশেষজ্ঞের পরামর্শ
চিকিৎসা শিক্ষা বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা যেসব দেশের চিকিৎসা শিক্ষার মান ভালো, সেগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবস্থার পার্থক্য তুলে ধরে একটি গ্রহণযোগ্য মানমাত্রা তৈরি করার পরামর্শ দিয়েছেন। তাঁদের মতে, এ থেকেই বোঝা যাবে দেশের চিকিৎসা শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ ব্যবস্থার প্রকৃত অবস্থা।
চিকিৎসা শিক্ষাবিষয়ক আন্তর্জাতিক তত্ত্বাবধানকারী প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন ফর মেডিকেল এডুকেশনের (ডব্লিউএফএমই) সাবেক জ্যেষ্ঠ পরামর্শক এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. মোজাহেরুল হক এ বিষয়ে কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। আজকের পত্রিকার সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘ম্যাট্রিকস চালু করা একটি ভালো উদ্যোগ। তবে এটি কার্যকর করার জন্য সংশ্লিষ্টদের সঠিকভাবে প্রস্তুত হতে হবে। ত্রুটিপূর্ণ কলেজকে শুধু সতর্কীকরণ নোটিশ দিলে চলবে না। কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। ব্যবস্থাটি যথাযথভাবে মনিটর এবং প্রয়োজনমতো সংস্কার করতে হবে। গত কয়েক দশকে চিকিৎসা শিক্ষার মান ঠিক রাখার বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর আগ্রহ দেখা যায়নি। দেশের বহু সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার মান গ্রহণযোগ্য নয়।’
বহু বছর আগে ডিগ্রি নেওয়া জ্যেষ্ঠ চিকিৎসকদেরও পেশা-সংক্রান্ত জ্ঞানে হালনাগাদ থাকার ওপর জোর দিয়ে এই বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘চিকিৎসা শিক্ষাজীবনের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত। এটি ধারাবাহিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উন্নত রাখতে হবে।’
সরকার যেভাবে ব্যবস্থা নেবে
গত ২৮ আগস্ট অবসরোত্তর ছুটিতে যান স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের সচিব ডা. মো. সারোয়ার বারী। তাঁর সময়েই মেডিকেল কলেজ মূল্যায়নের জন্য ম্যাট্রিকস চূড়ান্ত করা হয়। এ বিষয়ে তিনি ২৯ আগস্ট আজকের পত্রিকাকে বলেন, মেডিকেল কলেজ বন্ধের কোনো সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি। ম্যাট্রিকসের ভিত্তিতে কলেজগুলোর মূল্যায়ন করা হবে। যেসব কলেজ খুব কম নম্বর পাবে, তাদের বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়) অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, ‘যেসব মেডিকেল কলেজ কম নম্বর পাবে, তাদের শিক্ষার্থী ভর্তি কমিয়ে দেওয়া হবে এবং নতুন ভর্তি বন্ধ হতে পারে। বড় ঘাটতি থাকলে কলেজ বন্ধও করা হতে পারে। এসব বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে সংশ্লিষ্ট কমিটি। স্বচ্ছতার জন্য ম্যাট্রিকসের ফল সবার জন্য প্রকাশ করা হবে।’
সরকারি মেডিকেল কলেজের জন্য বর্তমানে কোনো আইন না থাকার পরিপ্রেক্ষিতে সেসব প্রতিষ্ঠানের মূল্যায়ন বিষয়ে ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, ‘আইন তৈরি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। তবে একাডেমিক কার্যক্রমের জন্য সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজের জন্য যেসব শর্ত অভিন্ন, সেগুলো সরকারি প্রতিষ্ঠানের জন্যও বিবেচনায় আসবে।’

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
১০ ঘণ্টা আগে
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
১৩ ঘণ্টা আগে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেওয়া ভিভিআইপি মর্যাদা জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা পাবেন কি না—এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উপদেষ্টা বলেন, ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
১৪ ঘণ্টা আগে
প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আজ বৃহস্পতিবার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যাদেশের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
১৫ ঘণ্টা আগেশাহরিয়ার হাসান, ঢাকা

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
রাজধানীর রাজারবাগে আজ বৃহস্পতিবার সদ্য পদায়ন পাওয়া ৬৪ জেলার এসপি, কমিশনার ও রেঞ্জ ডিআইজিদের সঙ্গে এক বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়। এর আগে সকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের সব নতুন এসপির সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচনকালীন দায়িত্ব ও মাঠপর্যায়ের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে দিকনির্দেশনা দেন।
আইজিপির সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, বক্তব্য দেওয়া এসপিদের সবার আলোচনাতেই কমবেশি ভোটকেন্দ্রে ব্যালটের নিরাপত্তার বিষয়টি উঠে আসে। আইজিপি বাহারুল আলম বৈঠকে তাঁর বক্তব্যে বলেন, আসন্ন নির্বাচনে পুলিশ শতভাগ নিরপেক্ষ থাকবে। জেলায় জেলায় এসপিরা সংসদীয় আসনের প্রার্থীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখবে এবং সবাইকে সুষ্ঠু নির্বাচনে অংশ নিতে উৎসাহিত করবে। আইজি এসপিদের বলেছেন, যার যার জেলা ও আসন ধরে ধরে নির্বাচনের সকল প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে হবে। এতে কাজটা সহজ হয়ে যাবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলার এসপি জানান, নির্বাচন সামনে রেখে পুলিশের প্রশিক্ষণ ঠিকভাবে সম্পন্ন করার ওপর জোর দিয়েছেন আইজিপি। তিনি বলেন, প্রত্যেক সদস্যকে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রার্থীদের মধ্যে সম্ভাব্য সংঘাত বা উত্তেজনার তথ্য আগে থেকেই সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলো বিবেচনায় নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা রেঞ্জের এক এসপি জানান, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান জোরদার করার নির্দেশও দেওয়া হয়। তাঁর মতে, এসব অস্ত্র উদ্ধার করা গেলে সহিংসতার ঝুঁকিও কমে আসবে বলে মনে করে পুলিশ সদর দপ্তর।
বৈঠকের আলোচনা নিয়ে জানতে চাইলে হবিগঞ্জের এসপি ইয়াসমিন খাতুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের কিছু সমস্যার কথা বলা হয়েছে। ভোটার, ভোট, ভোটের কেন্দ্র নিয়ে আইজি স্যার আমাদের বেশ কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।’
এর আগে সকালে এসপিদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নতুন বাংলাদেশের সূচনা করবে।’ তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের জন্ম হবে। এই জন্ম দিতে আপনারা (এসপি) ধাত্রীর ভূমিকা পালন করবেন। সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করাই আপনাদের দায়িত্ব।’
অতীতের বিতর্কিত নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এবার সেই ইতিহাস বদলানোর সুযোগ এসেছে। যেন দেশে-বিদেশে সবাই বলতে পারে, বাংলাদেশে এক নজিরবিহীন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, এ নির্বাচন কেবল রুটিন নির্বাচন নয়; এটি গণ-অভ্যুত্থানের পরবর্তী নির্বাচন। যে স্বপ্ন নিয়ে মানুষ আত্মত্যাগ করেছে, সেই স্বপ্নের স্থায়ী ভিত্তি তৈরির সুযোগ এই নির্বাচন।
গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ শাহরিয়ার খান আনাসের চিঠির প্রসঙ্গ টেনে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সেই চিঠি দায়িত্ববোধের বার্তা দিয়ে গেছে। এসপিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা কর্মস্থলে যাওয়ার আগে আনাসের চিঠিটা কাছে রাখবেন। সেটাই আপনাদের দায়িত্ব মনে করিয়ে দেবে।’
পুলিশ সুপারদের পদায়নে লটারির কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এর লক্ষ্য ছিল পক্ষপাতহীনতা নিশ্চিত করা। এতে ব্যক্তিগত অসুবিধা হলেও দায়িত্ব পালনে মনোযোগ বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
রাজধানীর রাজারবাগে আজ বৃহস্পতিবার সদ্য পদায়ন পাওয়া ৬৪ জেলার এসপি, কমিশনার ও রেঞ্জ ডিআইজিদের সঙ্গে এক বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়। এর আগে সকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের সব নতুন এসপির সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচনকালীন দায়িত্ব ও মাঠপর্যায়ের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে দিকনির্দেশনা দেন।
আইজিপির সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, বক্তব্য দেওয়া এসপিদের সবার আলোচনাতেই কমবেশি ভোটকেন্দ্রে ব্যালটের নিরাপত্তার বিষয়টি উঠে আসে। আইজিপি বাহারুল আলম বৈঠকে তাঁর বক্তব্যে বলেন, আসন্ন নির্বাচনে পুলিশ শতভাগ নিরপেক্ষ থাকবে। জেলায় জেলায় এসপিরা সংসদীয় আসনের প্রার্থীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখবে এবং সবাইকে সুষ্ঠু নির্বাচনে অংশ নিতে উৎসাহিত করবে। আইজি এসপিদের বলেছেন, যার যার জেলা ও আসন ধরে ধরে নির্বাচনের সকল প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে হবে। এতে কাজটা সহজ হয়ে যাবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলার এসপি জানান, নির্বাচন সামনে রেখে পুলিশের প্রশিক্ষণ ঠিকভাবে সম্পন্ন করার ওপর জোর দিয়েছেন আইজিপি। তিনি বলেন, প্রত্যেক সদস্যকে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রার্থীদের মধ্যে সম্ভাব্য সংঘাত বা উত্তেজনার তথ্য আগে থেকেই সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলো বিবেচনায় নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা রেঞ্জের এক এসপি জানান, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান জোরদার করার নির্দেশও দেওয়া হয়। তাঁর মতে, এসব অস্ত্র উদ্ধার করা গেলে সহিংসতার ঝুঁকিও কমে আসবে বলে মনে করে পুলিশ সদর দপ্তর।
বৈঠকের আলোচনা নিয়ে জানতে চাইলে হবিগঞ্জের এসপি ইয়াসমিন খাতুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের কিছু সমস্যার কথা বলা হয়েছে। ভোটার, ভোট, ভোটের কেন্দ্র নিয়ে আইজি স্যার আমাদের বেশ কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।’
এর আগে সকালে এসপিদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নতুন বাংলাদেশের সূচনা করবে।’ তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের জন্ম হবে। এই জন্ম দিতে আপনারা (এসপি) ধাত্রীর ভূমিকা পালন করবেন। সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করাই আপনাদের দায়িত্ব।’
অতীতের বিতর্কিত নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এবার সেই ইতিহাস বদলানোর সুযোগ এসেছে। যেন দেশে-বিদেশে সবাই বলতে পারে, বাংলাদেশে এক নজিরবিহীন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, এ নির্বাচন কেবল রুটিন নির্বাচন নয়; এটি গণ-অভ্যুত্থানের পরবর্তী নির্বাচন। যে স্বপ্ন নিয়ে মানুষ আত্মত্যাগ করেছে, সেই স্বপ্নের স্থায়ী ভিত্তি তৈরির সুযোগ এই নির্বাচন।
গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ শাহরিয়ার খান আনাসের চিঠির প্রসঙ্গ টেনে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সেই চিঠি দায়িত্ববোধের বার্তা দিয়ে গেছে। এসপিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা কর্মস্থলে যাওয়ার আগে আনাসের চিঠিটা কাছে রাখবেন। সেটাই আপনাদের দায়িত্ব মনে করিয়ে দেবে।’
পুলিশ সুপারদের পদায়নে লটারির কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এর লক্ষ্য ছিল পক্ষপাতহীনতা নিশ্চিত করা। এতে ব্যক্তিগত অসুবিধা হলেও দায়িত্ব পালনে মনোযোগ বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

গত দুই দশকে দেশে ৭০টির বেশি সরকারি ও বেসরকারি চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তবে এসব কলেজের অধিকাংশই শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মান পুরোপুরি বজায় রাখতে পারছে না। এ নিয়ে শিক্ষাবিদসহ বিশেষজ্ঞরা দীর্ঘদিন ধরে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছেন। এমন প্রেক্ষাপটে চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়গুলোর যথাযথ মান নিশ্চিত করতে সরকার
০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
১৩ ঘণ্টা আগে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেওয়া ভিভিআইপি মর্যাদা জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা পাবেন কি না—এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উপদেষ্টা বলেন, ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
১৪ ঘণ্টা আগে
প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আজ বৃহস্পতিবার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যাদেশের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
১৫ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিএনপির পক্ষ থেকে আপত্তি তোলা সত্ত্বেও পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ ও এনজিও-সংক্রান্ত অধ্যাদেশের অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আজ বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
সেদিন সংবাদমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বিশ্বস্ত সূত্রে আমরা জানতে পেরেছি, তাড়াহুড়ো করে দুটি আইন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার পাস করাতে চাইছে। একটি সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন, অন্যটি এনজিও-সংক্রান্ত আইন। আমরা মনে করি, নির্বাচনের আগে এই আইনগুলো পাস করার পেছনে সরকারের ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য কাজ করছে; যা গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথকে বাধাগ্রস্ত করবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়াই তড়িঘড়ি করে এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আইন পাস করা সমীচীন হবে না। আমরা মনে করি, উপরোক্ত বিষয়ে আইনগুলো পরবর্তী জাতীয় সংসদে যুক্তিতর্কের মধ্য দিয়ে প্রণয়ন করা সঠিক হবে। সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি, এই ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ থেকে বিরত থাকার জন্য।’
বিএনপির আপত্তি আমলে না নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারককে প্রধান করে আজ উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পাঁচ সদস্যের পুলিশ কমিশন গঠনের অনুমোদন দেওয়া হয়। গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশের (আরপিও) দুটি ক্ষেত্রেও সংশোধনী আনা হয়।
বৈঠক শেষে এ বিষয়ে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।
উপদেষ্টা জানান, পুলিশ কমিশনে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ছাড়াও একজন অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ, অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শক পদমর্যাদার নিচে নন—এমন কোনো অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, যিনি কর্মরত হতে পারেন বা অবসরপ্রাপ্তও হতে পারেন এবং মানবাধিকার ও সুশাসন বিষয়ে অন্তত ১৫ বছর অভিজ্ঞতা রয়েছে, এমন একজন ব্যক্তি থাকবেন।
পুলিশকে জনবান্ধব করতে করণীয় সম্পর্কে সরকারকে সুপারিশ করবে কমিশন। এ ছাড়া পুলিশ যাতে সংবেদনশীল হয়, সে জন্য তাদের আধুনিকায়ন কোথায় কোথায় দরকার, কী ধরনের প্রশিক্ষণ দরকার—সেগুলোও চিহ্নিত করবে কমিশন।
কমিশনের কার্যক্রমের মধ্যে থাকবে—পুলিশের বিষয়ে নাগরিকদের যেসব অভিযোগ থাকবে, সেগুলো তদন্ত ও নিষ্পত্তি করা এবং পেশাগত বিষয়ে পুলিশ সদস্যদের যদি কোনো অভিযোগ থাকে, সেগুলোর নিষ্পত্তি করা। পুলিশি কার্যক্রমে দক্ষতা ও উৎকর্ষ আনা, শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রদান ইত্যাদি কাজও হবে এ কমিশনের।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রিজওয়ানা হাসান বলেন, সুপারিশ-পরামর্শ কেউ কখনো মানতে বাধ্য না। পুলিশের সঙ্গে জনগণের একটি ব্রিজ (সেতু) করে দেওয়ার জন্যই এ কমিশন। আর পুলিশের সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে, আধুনিকায়নের ক্ষেত্রে, মানবাধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে সরকারের একটা যোগসূত্র স্থাপন করে দেওয়ার কাজ হচ্ছে এ কমিশনের।
আরপিও সংশোধন করে কোন কোন ভোট বিবেচনায় নেওয়া হবে না এবং পোস্টাল ব্যালটের ভোটগুলো গণনা পদ্ধতি সংযুক্ত করা হয়েছে।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘ব্যালটে যেখানে একটা সিল পড়ার কথা, সেখানে একাধিক সিল পড়লে গণনা করা হবে না। যদি সিল না দেয়, তাহলে গণনা করা হবে না। যখন পোস্টাল ভোট দেওয়া হয়, তখন একটা ডিক্লারেশন স্বাক্ষর করা হবে। ওই ডিক্লারেশনে যদি স্বাক্ষর না থাকে, তাহলে গণনা করা হবে না। আর আমাদের ভোটের দিন পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করে দেবে নির্বাচন কমিশন। সেই সময়ে যে ব্যালটগুলো এসে পৌঁছাবে রিটার্নিং অফিসারের কাছে—সেগুলো একইভাবে গণনা করা হবে।’

বিএনপির পক্ষ থেকে আপত্তি তোলা সত্ত্বেও পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ ও এনজিও-সংক্রান্ত অধ্যাদেশের অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আজ বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
সেদিন সংবাদমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বিশ্বস্ত সূত্রে আমরা জানতে পেরেছি, তাড়াহুড়ো করে দুটি আইন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার পাস করাতে চাইছে। একটি সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন, অন্যটি এনজিও-সংক্রান্ত আইন। আমরা মনে করি, নির্বাচনের আগে এই আইনগুলো পাস করার পেছনে সরকারের ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য কাজ করছে; যা গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথকে বাধাগ্রস্ত করবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়াই তড়িঘড়ি করে এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আইন পাস করা সমীচীন হবে না। আমরা মনে করি, উপরোক্ত বিষয়ে আইনগুলো পরবর্তী জাতীয় সংসদে যুক্তিতর্কের মধ্য দিয়ে প্রণয়ন করা সঠিক হবে। সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি, এই ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ থেকে বিরত থাকার জন্য।’
বিএনপির আপত্তি আমলে না নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারককে প্রধান করে আজ উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পাঁচ সদস্যের পুলিশ কমিশন গঠনের অনুমোদন দেওয়া হয়। গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশের (আরপিও) দুটি ক্ষেত্রেও সংশোধনী আনা হয়।
বৈঠক শেষে এ বিষয়ে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।
উপদেষ্টা জানান, পুলিশ কমিশনে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ছাড়াও একজন অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ, অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শক পদমর্যাদার নিচে নন—এমন কোনো অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, যিনি কর্মরত হতে পারেন বা অবসরপ্রাপ্তও হতে পারেন এবং মানবাধিকার ও সুশাসন বিষয়ে অন্তত ১৫ বছর অভিজ্ঞতা রয়েছে, এমন একজন ব্যক্তি থাকবেন।
পুলিশকে জনবান্ধব করতে করণীয় সম্পর্কে সরকারকে সুপারিশ করবে কমিশন। এ ছাড়া পুলিশ যাতে সংবেদনশীল হয়, সে জন্য তাদের আধুনিকায়ন কোথায় কোথায় দরকার, কী ধরনের প্রশিক্ষণ দরকার—সেগুলোও চিহ্নিত করবে কমিশন।
কমিশনের কার্যক্রমের মধ্যে থাকবে—পুলিশের বিষয়ে নাগরিকদের যেসব অভিযোগ থাকবে, সেগুলো তদন্ত ও নিষ্পত্তি করা এবং পেশাগত বিষয়ে পুলিশ সদস্যদের যদি কোনো অভিযোগ থাকে, সেগুলোর নিষ্পত্তি করা। পুলিশি কার্যক্রমে দক্ষতা ও উৎকর্ষ আনা, শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রদান ইত্যাদি কাজও হবে এ কমিশনের।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রিজওয়ানা হাসান বলেন, সুপারিশ-পরামর্শ কেউ কখনো মানতে বাধ্য না। পুলিশের সঙ্গে জনগণের একটি ব্রিজ (সেতু) করে দেওয়ার জন্যই এ কমিশন। আর পুলিশের সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে, আধুনিকায়নের ক্ষেত্রে, মানবাধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে সরকারের একটা যোগসূত্র স্থাপন করে দেওয়ার কাজ হচ্ছে এ কমিশনের।
আরপিও সংশোধন করে কোন কোন ভোট বিবেচনায় নেওয়া হবে না এবং পোস্টাল ব্যালটের ভোটগুলো গণনা পদ্ধতি সংযুক্ত করা হয়েছে।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘ব্যালটে যেখানে একটা সিল পড়ার কথা, সেখানে একাধিক সিল পড়লে গণনা করা হবে না। যদি সিল না দেয়, তাহলে গণনা করা হবে না। যখন পোস্টাল ভোট দেওয়া হয়, তখন একটা ডিক্লারেশন স্বাক্ষর করা হবে। ওই ডিক্লারেশনে যদি স্বাক্ষর না থাকে, তাহলে গণনা করা হবে না। আর আমাদের ভোটের দিন পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করে দেবে নির্বাচন কমিশন। সেই সময়ে যে ব্যালটগুলো এসে পৌঁছাবে রিটার্নিং অফিসারের কাছে—সেগুলো একইভাবে গণনা করা হবে।’

গত দুই দশকে দেশে ৭০টির বেশি সরকারি ও বেসরকারি চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তবে এসব কলেজের অধিকাংশই শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মান পুরোপুরি বজায় রাখতে পারছে না। এ নিয়ে শিক্ষাবিদসহ বিশেষজ্ঞরা দীর্ঘদিন ধরে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছেন। এমন প্রেক্ষাপটে চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়গুলোর যথাযথ মান নিশ্চিত করতে সরকার
০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
১০ ঘণ্টা আগে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেওয়া ভিভিআইপি মর্যাদা জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা পাবেন কি না—এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উপদেষ্টা বলেন, ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
১৪ ঘণ্টা আগে
প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আজ বৃহস্পতিবার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যাদেশের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
১৫ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ভিভিআইপি (অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি) হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স) সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। তবে জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা এই সুবিধা পাবেন না।
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আজ বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেওয়া ভিভিআইপি মর্যাদা জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা পাবেন কি না—এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উপদেষ্টা বলেন, ‘ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা এই সুবিধা পাবেন না।’
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে গত মঙ্গলবার রাষ্ট্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (ভিভিআইপি) ঘোষণা করে অন্তর্বর্তী সরকার। রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে গত ২৩ নভেম্বর থেকে চিকিৎসা নেওয়ার মধ্যেই তাঁকে এই বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়।
বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স) (সংশোধন) অধ্যাদেশ অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা যেখানেই অবস্থান করুন না কেন, তাঁদের দৈহিক নিরাপত্তা দেওয়া এ বাহিনীর প্রধান দায়িত্ব হবে। এ ছাড়া বাহিনী বাংলাদেশে অবস্থানরত অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকেও নিরাপত্তা দেবে।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ভিভিআইপি (অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি) হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স) সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। তবে জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা এই সুবিধা পাবেন না।
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আজ বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেওয়া ভিভিআইপি মর্যাদা জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা পাবেন কি না—এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উপদেষ্টা বলেন, ‘ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা এই সুবিধা পাবেন না।’
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে গত মঙ্গলবার রাষ্ট্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (ভিভিআইপি) ঘোষণা করে অন্তর্বর্তী সরকার। রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে গত ২৩ নভেম্বর থেকে চিকিৎসা নেওয়ার মধ্যেই তাঁকে এই বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়।
বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স) (সংশোধন) অধ্যাদেশ অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা যেখানেই অবস্থান করুন না কেন, তাঁদের দৈহিক নিরাপত্তা দেওয়া এ বাহিনীর প্রধান দায়িত্ব হবে। এ ছাড়া বাহিনী বাংলাদেশে অবস্থানরত অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকেও নিরাপত্তা দেবে।

গত দুই দশকে দেশে ৭০টির বেশি সরকারি ও বেসরকারি চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তবে এসব কলেজের অধিকাংশই শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মান পুরোপুরি বজায় রাখতে পারছে না। এ নিয়ে শিক্ষাবিদসহ বিশেষজ্ঞরা দীর্ঘদিন ধরে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছেন। এমন প্রেক্ষাপটে চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়গুলোর যথাযথ মান নিশ্চিত করতে সরকার
০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
১০ ঘণ্টা আগে
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
১৩ ঘণ্টা আগে
প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আজ বৃহস্পতিবার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যাদেশের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
১৫ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আজ বৃহস্পতিবার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যাদেশের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানান, গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশে (আরপিও) দুটি ক্ষেত্রে সংশোধনী আনা হয়েছে। প্রথম—এখন থেকে পোস্টাল ভোট সাধারণ ভোটের সঙ্গে একই সঙ্গে গণনা করা হবে। দ্বিতীয়—ব্যালট পেপারে একাধিক সিল থাকলে সেই ভোট বাতিল বলে গণ্য হবে।
উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশও পাস হয়েছে। পুলিশকে জনবান্ধব করার জন্য এই কমিশন সরকারকে সুপারিশ করবে। পাশাপাশি, পেশাগত ক্ষেত্রে পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলোও এই কমিশন দেখবে।
এক প্রশ্নের জবাবে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান নিশ্চিত করেন, ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। তবে তিনি আরও জানান, জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা এই সুবিধা পাবেন না।
উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার অন্য এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁর পরিবার বিদেশে নিতে চাইলে তার সব প্রস্তুতি সরকারের রয়েছে। তিনি জানান, সরকার এ ব্যাপারে সহযোগিতা করছে এবং বিএনপি চাইলে আরও সহায়তা দেওয়া হবে।

প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আজ বৃহস্পতিবার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যাদেশের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানান, গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশে (আরপিও) দুটি ক্ষেত্রে সংশোধনী আনা হয়েছে। প্রথম—এখন থেকে পোস্টাল ভোট সাধারণ ভোটের সঙ্গে একই সঙ্গে গণনা করা হবে। দ্বিতীয়—ব্যালট পেপারে একাধিক সিল থাকলে সেই ভোট বাতিল বলে গণ্য হবে।
উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশও পাস হয়েছে। পুলিশকে জনবান্ধব করার জন্য এই কমিশন সরকারকে সুপারিশ করবে। পাশাপাশি, পেশাগত ক্ষেত্রে পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলোও এই কমিশন দেখবে।
এক প্রশ্নের জবাবে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান নিশ্চিত করেন, ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। তবে তিনি আরও জানান, জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা এই সুবিধা পাবেন না।
উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার অন্য এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁর পরিবার বিদেশে নিতে চাইলে তার সব প্রস্তুতি সরকারের রয়েছে। তিনি জানান, সরকার এ ব্যাপারে সহযোগিতা করছে এবং বিএনপি চাইলে আরও সহায়তা দেওয়া হবে।

গত দুই দশকে দেশে ৭০টির বেশি সরকারি ও বেসরকারি চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তবে এসব কলেজের অধিকাংশই শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মান পুরোপুরি বজায় রাখতে পারছে না। এ নিয়ে শিক্ষাবিদসহ বিশেষজ্ঞরা দীর্ঘদিন ধরে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছেন। এমন প্রেক্ষাপটে চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়গুলোর যথাযথ মান নিশ্চিত করতে সরকার
০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
১০ ঘণ্টা আগে
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
১৩ ঘণ্টা আগে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেওয়া ভিভিআইপি মর্যাদা জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা পাবেন কি না—এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উপদেষ্টা বলেন, ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
১৪ ঘণ্টা আগে