Ajker Patrika

খুনিদের বিচারে গুরুত্ব নেই, ক্ষমতা দখলে ব্যস্ত সবাই: অ্যাটর্নি জেনারেল

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯: ০৯
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। ফাইল ছবি
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। ফাইল ছবি

অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, ‘বর্তমান সময়ে এসে কেউ জমি দখলে ব্যস্ত, কেউ ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য ব্যস্ত, কেউ পদ–পদবি দখলে ব্যস্ত, কেউ নিজস্ব লোক পুনর্বাসনে ব্যস্ত, কিন্তু খুনিদের ধরিয়ে দেওয়ার জন্য, খুনিদের বিচারের জন্য আমাদের ওপর যে পরিমাণ চাপ প্রয়োজন ছিল, সেদিকে আপনারা ফোকাস করেননি।’

আজ শনিবার রাজধানীর খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ আয়োজিত ঐক্য, সংস্কার ও নির্বাচন শীর্ষক জাতীয় সংলাপে এসব কথা বলেন অ্যাটর্নি জেনারেল।

মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আপনারা যত বেশি চাপে রাখবেন, আমরা তত বেশি এই বিষয়টাকে (বিচার) সামনের দিকে এগিয়ে নিতে দৃঢ় চেষ্ট থাকব। আপনারা যত বেশি অতন্দ্র প্রহরীর মতো দায়িত্ব পালন করবেন, আমরা রাষ্ট্রকে এবং জনগণের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তত বেশি এজেন্ডা ভিত্তিক সাহসিকতা নিয়ে এগিয়ে যাব।’

আজকে যে ঐক্যের প্রয়োজন, ঐক্য ছাড়া সংস্কার সম্ভব নয়। সংস্কার ছাড়া যৌক্তিক কোনো বাংলাদেশ আপনাদের উপহার দেওয়া সম্ভব নয়। ঐক্য ছাড়া, সংস্কার ছাড়া এই বিচার প্রক্রিয়া দ্রুততম সময়ের মধ্যে করাটা কঠিন এবং দুরূহ বলে উল্লেখ করেন অ্যাটর্নি জেনারেল।

বিচারের চ্যালেঞ্জ বিষয়ে আলোচনা কম হওয়ায় কিছুটা হতাশা প্রকাশ করে রাষ্ট্রের এই প্রধান আইন কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা ছিল চ্যালেঞ্জের জায়গাটা কী সেটা আমাদের বলবেন। আমরা সেটায় যেন যৌক্তিক সমাধানের জায়গায় যেতে পারি, সেটা সুনির্দিষ্ট ভাবে আমরা পাইনি।’

তিনি বলেন, ‘আমার কাছে চ্যালেঞ্জের প্রধান জায়গাটা হলো, জুলাই বিপ্লবের শহীদদের রক্তের বিনিময়ে যে চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আমরা রাস্তায় কাঁধে কাঁধ মিলিয়েছিলাম, সেই লক্ষ্য, সেই ইস্পাত কঠিন দৃঢ়তা, সেই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে, হাতে হাত মিলিয়ে ব্যারিকেড তৈরি করার যে ঐক্য, সেই ঐক্যটাতে যে ফাটল ধরেছে সেই ফাটলটাই প্রধান চ্যালেঞ্জ।’

হরহামেশায় অনেক মিথ্যা মামলা হয়েছে এমন প্রশ্ন এসেছে—উল্লেখ করে মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘পার্সোনাল গ্রাজ এক্সপোজ (ব্যক্তিগত ক্ষোভ প্রকাশ) করার জন্য মামলা দিয়েছেন, আসামির খাতায় নাম দিয়েছেন, এই মামলাগুলোর পরিণতি কী হবে এবং এটার সঙ্গে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের যে মামলা তার কোনো কনফ্লিক্ট (সংঘাত) হবে কিনা! আপনাদের আইনিভাবে, দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই, মানবতাবিরোধী অপরাধের যে বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছে সে ট্রাইব্যুনাল ১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ বিশেষ ট্রাইব্যুনাল–১৯৭৩ এর ১৯ নম্বর আইন। সেই আইনে মানবতাবিরোধী অপরাধের যে সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে হত্যা, নির্যাতন, গুমসহ অনেকগুলো অপরাধের কথা বলা হয়েছে, যেই অপরাধগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর ঘটানো হয়েছে তার বিচার হবে। সেটি একটা দুইটা স্পেসিফিক ঘটনার দরকার নেই। ইনজেনারেল সেটার বিচার হবে। ওই আইনেই বলা আছে, দেশের অন্যান্য আইনে যা–ই বলা থাকুক না কেন, ওইটার বিচার ওখানে হবে। অর্ডিনারি গুমের বিচার, খুনের বিচার, নির্যাতনের বিচার, নিপীড়নের বিচার, এইগুলো অর্ডিনারি কোর্টে হতে কোনো বাধা নেই এবং সেটাও চলবে।’

এই বিচারটায় আমরা কি প্রতিশোধ নিতে চাচ্ছি, এমন অনেক প্রশ্নও আসছে জানিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘আমরা বলতে চাই, আমরা প্রতিশোধ নিতে চাচ্ছি না। আমরা বিচার করতে চাচ্ছি। কেন বিচার করতে চাচ্ছি? আমরা আগামী প্রজন্মকে ইতিহাসের একটি দায় থেকে মুক্ত করতে চাচ্ছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিএনপি মনোনীত প্রার্থী জালাল, সাবেক সংসদ সদস্য জাহিদ ফারুকসহ ১১ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বিএনপি মনোনীত প্রার্থী জালাল, সাবেক সংসদ সদস্য জাহিদ ফারুকসহ ১১ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

চাঁদপুর-২ (মতলব) আসনে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ড. মো. জালাল উদ্দিন ও তাঁর পরিবারের চার সদস্য এবং বরিশাল-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জাহিদ ফারুকসহ ১১ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আজ সোমবার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতের অবকাশকালীন বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পৃথক পৃথক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত পৃথক পৃথক আদেশে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। দুদকের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) তানজির আহমেদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগে ড. মো. জালাল উদ্দিন ও তাঁর পরিবারের চার সদস্যের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।

অন্যরা হলেন জালাল উদ্দিনের স্ত্রী শাহানাজ পারভিন, দুই ছেলে সাঈদ মোহাম্মদ রিজভী ও সাঈদ মোহাম্মদ আলভী এবং মেয়ে আয়েশা তাসিনীমা তানভী।

দুদকের সহকারী পরিচালক এস এম মামুনুর রশীদ তাঁদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন।

আবেদনে বলা হয়েছে, অভিযোগসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বিধিবহির্ভূত অর্থ উপার্জন করে তা নিজ ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নামে ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তরের মাধ্যমে বৈধ করার চেষ্টা এবং বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগে অনুসন্ধান চলছে।

এদিকে সাবেক সংসদ সদস্য জাহিদ ফারুকের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন দুদকের সহকারী পরিচালক বিষান ঘোষ। আবেদনে বলা হয়েছে, সাবেক সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক।

এ ছাড়া সাবেক সেতুমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কথিত পালক পুত্র মো. আসাদুজ্জামান, তাঁর স্ত্রী ইসরাত জাহান ও আসাদুজ্জামানের ভাই আখতারুজ্জামানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন দুদকের সহকারী পরিচালক মো. নাসরুল্লাহ হোসেন।

আবেদনে বলা হয়, ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে অভিযুক্তরা চোরা চালান, হুন্ডি ব্যবসা, শুল্ক ফাঁকিসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থসম্পদ অর্জন করেছেন এবং বিদেশে পাচার করেছেন বলে দুদক অনুসন্ধান করছে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অতিরিক্ত কর কমিশনার সেহেলা সিদ্দিকা ও যুগ্ম কর কমিশনার মোনালিসা শাহরিন সুস্মিতার দেশত্যাগেও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। তাঁদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন দুদকের উপসহকারী পরিচালক মিনু আক্তার সুমি।

আবেদনে বলা হয়েছে, অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ থাকায় তাঁদের সম্পদ বিবরণী দাখিলের নির্দেশ দেয় দুদক। ইতিমধ্যে তাঁরা সম্পদ বিবরণী দাখিল করেছেন, যা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।

প্রত্যেকের আবেদনে বলা হয়েছে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ অনুসন্ধান কার্যক্রম চলার সময় দুদক বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পেরেছে, তাঁরা যেকোনো সময় দেশত্যাগ করতে পারেন। তাঁরা দেশত্যাগ করলে অনুসন্ধান কার্যক্রম ব্যাহত হবে। এ কারণে প্রত্যেকের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা প্রয়োজন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভয় ও বাধামুক্ত নির্বাচন করতে সরকার বদ্ধপরিকর: প্রধান উপদেষ্টা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস । ছবি: পিআইডি
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস । ছবি: পিআইডি

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ও জুলাই জাতীয় সনদের বিষয়ে গণভোটের বিষয়ে সারা দেশে প্রচারণার লক্ষ্যে যাত্রা শুরু করেছে ১০টি ভোটের গাড়ি— সুপার ক্যারাভান। আজ সোমবার জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু করেছে সুপার ক্যারাভান।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভিডিওবার্তায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘আমরা এমন একটি নির্বাচন চাই, যেখানে থাকবে না ভয়, থাকবে না বাধা— থাকবে কেবল জনগণের মুক্ত ও নির্ভীক মতপ্রকাশ। সরকার সেই পরিবেশ নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর।’

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত থেকে ফিতা কেটে ভোটের গাড়ির উদ্বোধন করেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ এবং প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

ভিডিও বার্তায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ সময় অতিক্রম করছে। সামনে আমাদের জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের ওপর গণভোট। তিনি বলেন, এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে যাত্রা শুরু করেছে ১০টি ভোটের গাড়ি—সুপার ক্যারাভান। এসব গাড়ি দেশের ৬৪টি জেলা ও ৩০০টি উপজেলায় ঘুরে বেড়াবে। তারা মানুষের দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে নির্বাচন ও গণভোট সম্পর্কে তথ্য পৌঁছে দেবে, ভোটাধিকার সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করবে এবং গণতন্ত্রের বার্তা ছড়িয়ে দেবে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘ভোটাধিকার কারও দয়া নয়—এটি আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। এই অধিকার প্রয়োগের মাধ্যমেই আমরা ঠিক করি, আমাদের ভবিষ্যৎ কোন পথে যাবে। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করা শুধু সরকারের দায়িত্ব নয়; এটি রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এই সুপার ক্যারাভান কেবল একটি গাড়িই নয়—এটি গণতন্ত্রের আনন্দবাণী বহনকারী বহর। এটি জানিয়ে দেবে, আপনার একটি ভোট কতটা গুরুত্বপূর্ণ। এটা মনে করিয়ে দেবে নিষ্ক্রিয়তা নয়, অংশগ্রহণই গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করে।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি, তরুণ সমাজ, নারী ভোটার এবং প্রথমবারের ভোটারদের প্রতি, আপনারা এগিয়ে আসুন। প্রশ্ন করুন, জানুন, বুঝুন এবং ভোট দিন। আপনার সিদ্ধান্তই গড়ে উঠবে আগামী দিনের বাংলাদেশ—নতুন বাংলাদেশ।’

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আপনি দেশের মালিক। এ দেশ আগামী পাঁচ বছর আপনার পক্ষে কে চালাবে সেটা আপনি ঠিক করে দেবেন। আপনার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিন। সৎ ও সমর্থ প্রার্থী বেছে ভোট দিন। চিন্তা ভাবনা করে ভোট দিন।’

গণভোটের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এবারের নির্বাচনে আপনি আরও একটি ভোট দেবেন। জুলাই সনদে ভোট দেবেন। দীর্ঘ ৯ মাস ধরে সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে দিনের পর দিন বৈঠককরে এই সনদ তৈরি হয়েছে। এই সনদ দেশের মানুষ পছন্দ করলে দেশ আগামী বহু বছরের জন্য নিরাপদে চলবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস। আপনি যদি এই সনদ সমর্থন করেন তবে গণভোটে অবশ্যই হ্যাঁ ভোট দিন।’

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘চলুন, আমরা সবাই মিলে এই গণতান্ত্রিক যাত্রাকে সফল করি। চলুন, ভোট দিই—নিজের জন্য, দেশের জন্য, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য, নতুন পৃথিবীর জন্য।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোট চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯: ৪৬
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ভিডিও থেকে নেওয়া
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ভিডিও থেকে নেওয়া

আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। একই দিনে জুলাই জাতীয় সনদের বিষয়ে গণভোটও অনুষ্ঠিত হবে। এই গণভোটে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য ‘হ্যাঁ’ ভোট চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। নির্বাচনকে সামনে রেখে সারা দেশে প্রচারণার লক্ষ্যে আজ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) যাত্রা শুরু করা ‘ভোটের গাড়ির’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এই আহ্বান জানান তিনি।

জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করেছে সুপার ক‍্যারাভান। ছবি: প্রেস উইং
জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করেছে সুপার ক‍্যারাভান। ছবি: প্রেস উইং

জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় ভোটের গাড়ির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এক ভিডিওবার্তায় ড. ইউনূস বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ সময় অতিক্রম করছে। সামনে আমাদের জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের ওপর গণভোট।’

সবাইকে ভোটে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি তরুণ সমাজ, নারী ভোটার ও প্রথমবারের ভোটারদের প্রতি—আপনারা এগিয়ে আসুন। প্রশ্ন করুন, জানুন, বুঝুন এবং ভোট দিন। আপনার সিদ্ধান্তেই গড়ে উঠবে আগামী দিনের বাংলাদেশ—নতুন বাংলাদেশ।’

ভোটারদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আপনি দেশের মালিক। এ দেশ আগামী পাঁচ বছর আপনার পক্ষে কে চালাবে, সেটা আপনি ঠিক করে দেবেন। আপনার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিন। সৎ ও সমর্থ প্রার্থী বেছে ভোট দিন। চিন্তাভাবনা করে ভোট দিন।’

এ সময় গণভোটের প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এবারের নির্বাচনে আপনি আরও একটি ভোট দেবেন। জুলাই সনদে ভোট দেবেন। দীর্ঘ ৯ মাস ধরে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে দিনের পর দিন বৈঠক করে এই সনদ তৈরি হয়েছে। এই সনদ দেশের মানুষ পছন্দ করলে দেশ আগামী বহু বছরের জন্য নিরাপদে চলবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস। আপনি যদি এই সনদ সমর্থন করেন, তবে গণভোটে অবশ্যই ‘‘হ‍্যাঁ’’ ভোট দিন।’

ড. ইউনূস জানান, নির্বাচনী প্রচারণাকে সামনে রেখে যাত্রা শুরু করেছে ১০টি ‘ভোটের গাড়ি’, যা মূলত একধরনের সুপার ক্যারাভান। এসব গাড়ি দেশের সব জেলা ও উপজেলায় ঘুরে বেড়াবে। তারা মানুষের দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে নির্বাচন ও গণভোট সম্পর্কে তথ্য পৌঁছে দেবে। এ ছাড়া এই ভোটের গাড়ির মাধ্যমে ভোটাধিকার সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা হবে এবং গণতন্ত্রের বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া হবে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘ভোটাধিকার কারও দয়া নয়—এটি আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। এই অধিকার প্রয়োগের মাধ্যমেই আমরা ঠিক করি, আমাদের ভবিষ্যৎ কোন পথে যাবে। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করা শুধু সরকারের দায়িত্ব নয়; এটি রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব।’

অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত থেকে ফিতা কেটে ভোটের গাড়ির উদ্বোধনে আরও উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরওয়ার ফারুকী, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গুয়াংজু বিমানবন্দরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের টার্মিনাল পরিবর্তন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
গুয়াংজু বিমানবন্দরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের টার্মিনাল পরিবর্তন

চীনের গুয়াংজু বাইয়ুন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইট পরিচালনায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। ২০২৬ সালের ২২ জানুয়ারি থেকে গুয়াংজু বিমানবন্দরে বিমানের সব ফ্লাইট টার্মিনাল-১-এর পরিবর্তে টার্মিনাল-৩ থেকে পরিচালিত হবে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, গুয়াংজু বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হচ্ছে। একই সঙ্গে যাত্রীদের আরও উন্নত সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এই টার্মিনাল পরিবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ঢাকা-গুয়াংজু-ঢাকা রুটে চলাচলকারী বিমানের ফ্লাইটগুলো নির্ধারিত তারিখের পর থেকে নতুন টার্মিনাল ব্যবহার করবে। এ কারণে যাত্রীদের ভ্রমণের সময় অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বনের অনুরোধ জানানো হয়েছে।

বিশেষ করে, আগামী ২২ জানুয়ারি বা তার পর গুয়াংজু থেকে যাত্রা করবেন—এমন যাত্রীদের টিকিট ও বোর্ডিং পাস ভালোভাবে যাচাই করা এবং টার্মিনাল-৩-এ পৌঁছাতে পর্যাপ্ত সময় হাতে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যেকোনো সমস্যায় বিমানের গ্রাউন্ড স্টাফদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যাত্রীসেবার মানোন্নয়নে প্রতিষ্ঠানটি সব সময় সচেষ্ট এবং এই পরিবর্তনের ফলে যাত্রীদের সাময়িক কোনো অসুবিধা হলে তার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছে।

প্রয়োজনে যাত্রীরা ঢাকায় বিমানের কল সেন্টার ১৩৬৩৬ নম্বরে অথবা গুয়াংজু অফিসের +৮৬১৯৮৬৮৬৫৩০২৪ নম্বরে যোগাযোগ করতে পারবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত