Ajker Patrika

নিজের ক্ষমতা নিজেই কমায় নির্বাচন কমিশন

মো. হুমায়ূন কবীর, ঢাকা
আপডেট : ২৫ আগস্ট ২০২৪, ০৯: ৩৩
নিজের ক্ষমতা নিজেই কমায় নির্বাচন কমিশন

বিগত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকার কারণে বারবার সমালোচনার মুখে পড়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই অবস্থায় স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে ইসিকে নিরপেক্ষ ও শক্তিশালী করার ওপর অনেক দিন ধরেই জোর দিয়ে আসছেন নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু তা না করে উল্টো পথে হেঁটেছে নির্বাচন আয়োজনকারী সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। নিজের ক্ষমতা না বাড়িয়ে বিভিন্ন সময় উল্টো কমিয়েছে ইসি।

ইসির ক্ষমতা কমানোর সর্বশেষ নজির দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন। এ সময় আরপিওর বেশ কিছু ধারা-উপধারায় সংশোধনী আনে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন। তখন মূলত বিতর্কের সৃষ্টি হয় ৯১ ধারার (এ) উপধারা সংশোধন নিয়ে। এই উপধারা অনুযায়ী, নির্বাচনে ভীতি প্রদর্শন, বলপ্রয়োগ, চাপপ্রয়োগ বা বিরাজমান বিভিন্ন অপকর্মের কারণে ইসি যদি মনে করে, তারা আইনানুগ ও ন্যায়সংগত নির্বাচন করতে সক্ষম হবে না, তাহলে নির্বাচনের যেকোনো পর্যায়ে ভোট বন্ধ করার ক্ষমতা রাখে। এই ক্ষমতাবলে গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচন বন্ধ করেছিল কমিশন। কিন্তু আরপিও সংশোধনকালে সেই ক্ষমতা কমিয়ে শুধু ভোটের দিন সংসদীয় আসনের (অনিয়মের কারণে) ভোট বন্ধ করার ক্ষমতা রাখা হয়। সংশোধিত আরপিওর ৯১ ধারার (এ) উপধারায় ‘ইলেকশন’ শব্দের বদলে ‘পোলিং’ শব্দ প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। ‘ইলেকশন’ শব্দ দিয়ে পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়া বোঝায়।

অর্থাৎ তফসিল ঘোষণা থেকে ফলাফল ঘোষণা পর্যন্ত সময়টা হলো ‘ইলেকশন’। আর ‘পোলিং’ হলো শুধু ভোটের দিন; যার ফলে এই সংশোধনীর মাধ্যমে অনিয়মের কারণে ইসি শুধু ভোটের দিন সংশ্লিষ্ট ভোটকেন্দ্র বা পুরো সংসদীয় আসনের ভোট বন্ধ করতে পারবে।
বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে তখন নিজের মতো ব্যাখ্যা দিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ইসি। এতে উল্লেখ করা হয়, অনুচ্ছেদ ৯১-এর (এ)-তে ‘ইলেকশন’ শব্দটি ‘পোলিং’ শব্দ দ্বারা প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।

 এখানে কারেকশন হয়েছে। অ্যামেন্ডমেন্ট নয়। কারেকশন ও অ্যামেন্ডমেন্টের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। পোলিং সার্বিক ইলেকশন-প্রক্রিয়ার একটি পর্যায়। এটিকে ক্ষেত্রভেদে সমার্থক ভাবা যেতে পারে। আবার বিভাজিত করেও ভাবা যেতে পারে। এই পরিবর্তন দিয়ে কমিশনের ক্ষমতার কোনো রকম হেরফের হওয়ার সুযোগ নেই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, এই কমিশন তো নিজেদের ক্ষমতা কমিয়েছেই; রকিবউদ্দীন কমিশনও (২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করা প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ) আরপিওর ৯১-এর (ই) উপধারা বাতিল করতে চেয়েছিল (এই উপধারায় প্রার্থী অনিয়ম করলে তাঁর প্রার্থিতা বাতিলের সুযোগ কমিশনের রয়েছে। পরে অবশ্য সেখান থেকে ফেরত আসে)। কমিশন স্বাধীন একটি প্রতিষ্ঠান। কমিশনকে সরকারের আজ্ঞাবহ হয়ে কাজ করলে হবে না।

আগে সব সময় জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের দায়িত্ব পালন করতেন ইসি কর্মকর্তারা। কিন্তু গত সংসদ নির্বাচনের আগে এ জন্য আলাদা আলাদা কমিটি গঠন করে কমিশন। মহানগর ও জেলার জন্য গঠিত সাত সদস্যের কমিটিতে জেলা প্রশাসককে (ডিসি) আহ্বায়ক করা হয়। সদস্যসচিব করা হয় সিনিয়র জেলা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে। এ ছাড়া এই কমিটিতে পুলিশ সুপার, সংশ্লিষ্ট মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনারের উপযুক্ত একজন প্রতিনিধি (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে), জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এবং জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে সদস্য রাখা হয়েছে।

আর উপজেলা ও থানা পর্যায়ে ভোটকেন্দ্র-সংক্রান্ত কমিটিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) আহ্বায়ক করা হয়েছে। সদস্যসচিব করা হয়েছে উপজেলা ও থানা নির্বাচন কর্মকর্তাকে। পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট কমিটিতে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও অফিসার ইনচার্জকে সদস্য করা হয়। একইভাবে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তার তালিকা তৈরির জন্যও মহানগর ও জেলায় ডিসি এবং উপজেলায় ইউএনওকে প্রধান করে কমিটি করার উদ্যোগ নিয়েছিল কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন। যদিও পরবর্তী সময়ে এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে ইসি।

এ বিষয়ে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, প্রশাসনের কর্মকর্তাদের দিয়ে এমন কাজ করানো উচিত নয়, যেগুলো দিয়ে নির্বাচন প্রভাবিত করা যায়, নির্বাচনের ফলাফলকে ভবিষ্যতে প্রভাবিত করার শঙ্কা থাকে। সেগুলোর ব্যাপারে সাবধান হওয়া দরকার।  ভোটকেন্দ্রের দায়িত্ব পালনের জন্য গঠিত কমিটিতে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের প্রধান করা নিয়ে তখন নানা যুক্তি দেখানো হয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ আছে ইসির কর্মকর্তাদের মধ্যে।

তাঁরা বলেন, প্রশাসনের কর্মকর্তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ অন্যদের সঙ্গে যেভাবে যোগাযোগ রেখে নির্বাচন সম্পন্ন করেন, সেই দক্ষতা ইসির নির্বাচন কর্মকর্তাদের হয়নি, এমন অজুহাতে ইসির নিজস্ব জনবল থেকে রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না।

অথচ গত সংসদ নির্বাচনের আগেও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সংসদ নির্বাচনে ইসির নিজস্ব কর্মকর্তাদের রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছিল। ইসির রোডম্যাপেও রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা যত দূর সম্ভব ইসির কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে নিয়োগের বিষয়টি উল্লেখ ছিল। তারপরও ইসির জনবল থেকে ওই নির্বাচনে কাউকে রিটার্নিং কর্মকর্তা করা হয়নি। সংসদ নির্বাচনে ডিসিরা রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেন। শুধু কোথাও ইউএনও না থাকলে সেখানে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে ইসির জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়।

জনবল নিয়োগের বিষয়ে ইসির কর্মকর্তারা জানান, সংবিধানে ইসির ওপর ন্যস্ত দায়িত্ব পালনের জন্য প্রয়োজনীয় কর্মচারীর জন্য রাষ্ট্রপতিকে অনুরোধ করলে তিনি তার ব্যবস্থা করবেন। উল্লেখ থাকলেও কমিশন যেন নিজের ক্ষমতা নিজেই বুঝতে অক্ষম। তাই যখনই নিজস্ব জনবলের প্রয়োজন হয়, সংস্থাটি সরকারের মুখাপেক্ষী হয়ে জনপ্রশাসনের কাছে প্রস্তাব পাঠায়। এতে সরকার যথারীতি ইসির প্রস্তাবিত জনবল থেকে কাটছাঁট করে লোকবল দেয়।

ইসি কর্মকর্তাদের মতে, রোহিঙ্গা-অধ্যুষিত এলাকায় ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমেও নিজের ক্ষমতায় অন্যকে ভাগ দিয়েছে কমিশন। কারণ, রোহিঙ্গা-অধ্যুষিত এলাকার জন্য যে বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছে, সেখানেও ইউএনওকে কমিটির প্রধান করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে পাকিস্তানের হাইকমিশনারের সৌজন্য সাক্ষাৎ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ২৩
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার। ছবি: প্রেস উইং
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার। ছবি: প্রেস উইং

বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। এ সময় দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার জানান, গত বছরের তুলনায় বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য প্রায় ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। দুই দেশের ব্যবসায়ী সমাজ নতুন নতুন খাতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা নিয়ে কাজ করছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ২০২৬ সালের জানুয়ারি মাস থেকেই ঢাকা-করাচি সরাসরি বিমান চলাচল শুরু হতে পারে।

পাকিস্তানি হাইকমিশনার জানান, বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাকিস্তানে উচ্চশিক্ষার প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। বিশেষ করে চিকিৎসাবিজ্ঞান, ন্যানো টেকনোলজি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নিয়ে পড়ার বিষয়ে অনেক শিক্ষার্থী আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

লিভার ও কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্টের জন্য বাংলাদেশি রোগীদের পাকিস্তানে যাওয়ার হার বাড়ছে উল্লেখ করে ইমরান হায়দার বলেন, পাকিস্তান এ-সংক্রান্ত বিশেষায়িত চিকিৎসাক্ষেত্রে বাংলাদেশের চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা প্রদানের সুযোগ দিতে প্রস্তুত।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান যোগাযোগকে স্বাগত জানান। তিনি সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সাংস্কৃতিক, শিক্ষামূলক এবং সরাসরি জনযোগাযোগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন। পাশাপাশি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য আরও সম্প্রসারণের জন্য নতুন নতুন ক্ষেত্র খুঁজে বের করার পরামর্শ দেন প্রধান উপদেষ্টা।

হাইকমিশনার ইমরান হায়দারের দায়িত্ব পালনকালে দুই দেশের মধ্যে যৌথ বিনিয়োগের নতুন দুয়ার উন্মোচিত হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রধান উপদেষ্টা।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-বিষয়ক (এসডিজি) সমন্বয়কারী ও সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজ রাতে চাঁদপুর ও দক্ষিণাঞ্চলে নৌযান চলাচল বন্ধ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
এমভি কীর্তনখোলা ১০ লঞ্চ। ছবি: সংগৃহীত
এমভি কীর্তনখোলা ১০ লঞ্চ। ছবি: সংগৃহীত

ঘন কুয়াশার কারণে আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) রাতে চাঁদপুর ও দেশের দক্ষিণাঞ্চলে সব ধরনের নৌযান চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।

আজ বিআইডব্লিউটিএর জারি করা এক বিশেষ নৌ চলাচল বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বর্তমানে যেসব লঞ্চ নির্দিষ্ট গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রাপথে রয়েছে, সেসবসহ অন্য সব নৌযানকে অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল বিধিমালা, ১৯৭৬ অনুসরণ করে চলাচল করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, চাঁদপুরের হাইমচরে মেঘনা নদীতে গত বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) রাতে ঘন কুয়াশার কারণে ঢাকাগামী যাত্রীবাহী লঞ্চ এমভি জাকির সম্রাট-৩ ও বরিশালগামী অ্যাডভেঞ্চার-৯ নামে দুই লঞ্চের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় চার যাত্রী নিহত হন এবং আহত হন বেশ কয়েকজন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৬ শিক্ষানবিশ এএসপিকে চাকরি থেকে অপসারণ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
৬ শিক্ষানবিশ এএসপিকে চাকরি থেকে অপসারণ

৪১তম বিসিএস ব্যাচে নিয়োগ পাওয়া ছয় শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারকে (এএসপি) চাকরি থেকে অপসারণ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। অপসারণ করা এএসপিরা হলেন মো. দেলোয়ার হোসেন, মাহমুদুল হক, মো. ইসহাক হোসেন, মো. মশিউর রহমান, মুহাম্মদ রাকিব আনোয়ার ও সাঈদ করিম মুগ্ধ।

আজ রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পুলিশ-১ শাখার জারি করা প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস নিয়োগ বিধিমালার ৬এর ২(এ) বিধি অনুযায়ী ওই ছয় শিক্ষানবিশ এএসপিকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়েছে।

বিধিতে বলা আছে, শিক্ষানবিশ মেয়াদ চলাকালে কেউ সংশ্লিষ্ট চাকরিতে বহাল থাকার অযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হলে সরকারি কর্ম কমিশনের সঙ্গে পরামর্শ না করেই সরাসরি নিয়োগ অবসান করতে পারবে সরকার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সংখ্যালঘু পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের ‘অতিরঞ্জিত’ মন্তব্য প্রত্যাখ্যান বাংলাদেশের

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮: ২৬
সংখ্যালঘু পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের ‘অতিরঞ্জিত’ মন্তব্য প্রত্যাখ্যান বাংলাদেশের

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পরিস্থিতি সম্পর্কে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের সাম্প্রতিক মন্তব্যকে অতিরঞ্জিত বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিসেবে বর্ণনা করে তা প্রত্যাখ্যান করেছে বাংলাদেশ। একই সঙ্গে ভারতের বিভিন্ন মহলকে সংখ্যালঘু বিষয়ে বিভ্রান্তিকর বর্ণনা ছড়ানো থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা।

আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এস এম মাহবুবুল আলম এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন। তিনি বিকেলে সাংবাদিকদের এই বিবৃতির কথা জানান।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পরিস্থিতি সম্পর্কে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের সাম্প্রতিক মন্তব্য আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। তাঁর মন্তব্য বাস্তব পরিস্থিতির প্রতিফলন নয়। বাংলাদেশ সরকারের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দীর্ঘদিনের ঐতিহ্যকে ভুলভাবে উপস্থাপন করে এমন কোনো বিভ্রান্তিকর, অতিরঞ্জিত বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বর্ণনা বাংলাদেশ সরকার স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করে।’

বিচ্ছিন্ন কিছু অপরাধমূলক ঘটনাকে পরিকল্পিতভাবে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর প্রাতিষ্ঠানিক নিপীড়ন হিসেবে উপস্থাপনের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে। এতে আরও বলা হয়, ভারতের বিভিন্ন স্থানে বাংলাদেশবিরোধী মনোভাব ছড়িয়ে দিতে সেটার অপব্যবহার করা হচ্ছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, কিছু মহলে বাছাই করা ও পক্ষপাতদুষ্ট দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে বিচ্ছিন্ন ঘটনাগুলোকে অতিরঞ্জিত ও বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে সাধারণ ভারতীয় জনগণকে বাংলাদেশ, ভারতের বাংলাদেশি কূটনৈতিক মিশন এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে উসকে দেওয়ার অপচেষ্টা চলছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র যে ব্যক্তির উদাহরণ দিয়েছেন, তিনি ছিলেন তালিকাভুক্ত অপরাধী। চাঁদাবাজির সময় তাঁর মুসলিম সহযোগীর সঙ্গে থাকা অবস্থায় তাঁর দুর্ভাগ্যজনক মৃত্যু ঘটে, যাঁকে পরে গ্রেপ্তার করা হয়। এই অপরাধমূলক ঘটনাকে সংখ্যালঘুদের প্রতি আচরণের প্রেক্ষাপটে উপস্থাপন করা বাস্তবসম্মত নয়, বরং বিভ্রান্তিকর।

বাংলাদেশ সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর বর্ণনা ছড়ানো থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ভারতের বিভিন্ন মহলকে বিভ্রান্তিকর বর্ণনা ছড়ানো থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছে, যা সুপ্রতিবেশীসুলভ সম্পর্ক ও পারস্পরিক আস্থার চেতনাকে ক্ষুণ্ন করে।

আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত