ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের নিবন্ধ

প্রতিবছর যখন বাংলাদেশের বিজয় দিবস আসে, তখন অনেকের অবদানই লেখা হয়, স্মরণ করা হয়। কিন্তু এখনো এমন অনেক ইতিহাস আছে যা অজানা। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে এমনই এক অজানা অধ্যায় হলো—তিব্বতি স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে গঠিত স্পেশাল ফ্রন্টিয়ার ফোর্স বা এসএফএফ।
এসএফএফ হয়তো এমন নিয়তি বরণই করে নিয়েছিল যে,১৯৭১ সালে তাদের যে কার্যক্রম তা কোনো দিনই আলোর মুখ দেখবে না। এই বাহিনীর সদস্যরা কোনো বীরত্ব পদক পাননি, তাদের কেবলই নগদ পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল। এমনকি তিব্বতিদের নিয়ে এসএফএফ গঠন করা ও নেতৃত্ব দেওয়া ভারতীয় সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল সুজান সিং উবানও তাঁর বই ‘ফ্যান্টমস অব চিটাগাং—দ্য ফিফথ আর্মি ইন বাংলাদেশ’—এ এসএফএফ—এর সৈন্যদের তিব্বতি হিসেবে উল্লেখ করেননি। তিনি কেবল পরোক্ষভাবে এসব সেনা কোথা থেকে এসেছিলেন তার উৎসের কথা করেছেন।
সুজান সিং উবান বলেছেন, এসএফএফ গঠন করা হয়েছিল ‘অভিযোজনযোগ্য উত্তরের পাহাড়ি উপজাতি’ সদস্যদের নিয়ে। এই বাহিনী মূলত ১৯৬২ সালের চীন-ভারত যুদ্ধের পর গঠন করা হয়েছিল এবং তাদের ফুসফুসের অস্বাভাবিক ক্ষমতার উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, এই অসাধারণ ক্ষমতা হাই অলটিট্যুড বা ব্যাপক উচ্চতার এলাকা যুদ্ধের ক্ষেত্রে তাদের একটি বিশাল সুবিধা দিয়েছিল। এমন গোপনীয়তার কারণে, তিব্বতি যোদ্ধারা চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলে যে সাহসিকতা দেখিয়েছেন তা এখনো অধিকাংশ সাধারণ ভারতীয়ের কাছে অজানা।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাপ্রবাহ শুরু হওয়ার পরপরই ‘টিবেটানস অব এস্টাব্লিশমেন্ট-২২’—এর সদস্যদের (যেটি প্রাথমিকভাবে এসএফএফ হিসেবে পরিচিত ছিল) ডাকা হয় যুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য। তাঁরা আগে থেকেই বেশ ভালোভাবেই প্রশিক্ষিত ছিলেন। তারা পার্বত্য ও জঙ্গলে যুদ্ধ পরিচালনায় এবং মর্টার থেকে রকেট লঞ্চার পর্যন্ত সব ধরনের অস্ত্র পরিচালনায় বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠেছিলেন। এমনকি অনেকেই প্যারাট্রুপার হিসেবে যোগ্যতা অর্জন করেছিল। চীনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নেওয়ার সুযোগের জন্য দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর, তাদের সামনে নিজেদের আরও একবার প্রমাণের নতুন সুযোগ হাজির হয়েছিল। একই সঙ্গে ভারতের প্রতি তাদের কৃতজ্ঞতা ও বিশ্বস্ততা প্রদর্শন করারও সুযোগ ছিল এটি। কারণ, ভারত তাদের তিব্বত থেকে তুলে এনে আশ্রয় এবং আয়ের সুযোগ দিয়েছিল।
এসএফএফ—এর সদস্যদের ওই সময়কার অনুভূতিগুলো ‘তিব্বতি গেরিলার ইন এক্সাইল—ইন্ডিয়ার সিক্রেট আর্মি’—একটি প্রামাণ্যচিত্রে প্রতিফলিত হয়েছে। লোমা ফিল্মস নির্মিত এই প্রামাণ্যচিত্রে বাংলাদেশে যুদ্ধ করা লামা কুংচক নামের এক এসএফএফ বলেন, তিনি তিব্বতের স্বাধীনতার জন্য চীনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে চান এবং ‘শত্রুর চোখে ধুলো দিতে চান।’ কিন্তু তাঁর সেই ইচ্ছা যেহেতু পূর্ণ হয়নি, তাই তিনি ভারতের হয়ে যুদ্ধ করতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাবেন।
সুজান সিং উবান এই একই ধরনের অনুভূতি আর সব এসএফএফ সদস্যদের মধ্যে পেয়েছিলেন। তিনি জানতেন, এসএফএফ সদস্যদের বিশেষ দক্ষতা—গেরিলা যুদ্ধ, পর্বত ও জঙ্গলে যুদ্ধ—কোথায় সবচেয়ে ভালোভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। আর তাই উবান তাদের চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলে যুদ্ধ করার জন্য বেছে নেন।
পাকিস্তানের অনিয়মিত বাহিনী এবং মিজো বিদ্রোহীরা এরই মধ্যেই চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলে অপারেশন শুরু করেছিল এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভারতীয় বাহিনীকে লক্ষ্য করে আক্রমণ পরিচালনা করছিল। সুজান সিং উবান জানতেন, যদি এসএফএফ এই পাহাড়ি অঞ্চলের কঠোর ভূমিকে সফলভাবে আয়ত্ত করতে পারে তবে এটি কেবল বাংলাদেশের দিকে অগ্রসর হওয়া ভারতীয় বাহিনীর জন্য একটি দুর্বল গ্যাপকেই পূরণ করবে না একই সঙ্গে এটি আরাকানের সঙ্গে বাংলাদেশের সড়ক যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন করে দেবে। ভারতীয় সমরকুশলীদের আশঙ্কা ছিল, পাকিস্তানি সেনারা মিয়ানমারে পালিয়ে যাওয়ার জন্য এই সড়ক ব্যবহার করতে পারে।
জেনারেল উবান এই পরিকল্পনাগুলো ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল স্যাম মানেকশয়ের সঙ্গে আলোচনা করেন। স্যাম মানেকশ এসএফএফকে এই অপ্রথাগত ভূমিকা পালন করার জন্য ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন। তারপরও উবান এসএফএফ সৈন্যদের লিখিতভাবে অনুরোধ করতে বলেন যে, তাঁরা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পরবর্তী যেকোনো অভিযানে অংশগ্রহণের অনুমতি চায়। আর এভাবেই বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধে এসএফএফ—এর ঐতিহাসিক ভূমিকা পালনের মঞ্চ তৈরি হয়।
চট্টগ্রাম একটি ঘন অভেদ্য জঙ্গলে পূর্ণ পাহাড়ি অঞ্চল। এ ছাড়া নদী-নালার উপস্থিতিও আছে। এই অঞ্চলে সুনির্দিষ্ট তেমন কোনো পথই নেই। এই বিপজ্জনক ভূখণ্ডে কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য যে শারীরিক সক্ষমতা প্রয়োজন তা এসএফএফের তিব্বতিদের ছিল। এই অঞ্চলে এক স্থান থেকে আরেক স্থানে যাওয়া ছিল ব্যাপক কঠিন ও সময়সাপেক্ষ। এমন অঞ্চলে অভিযান পরিচালনার জন্য আগেভাবেই ভালোভাবে পরিকল্পনা করা প্রয়োজন। এসব সমস্যা ছাড়াও আবহাওয়া ছিল এক বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ, চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলে ঘন ঘন তীব্র হতো, যা সামরিক সরঞ্জামগুলোকে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে এবং ভূখণ্ড যুদ্ধ কার্যক্রম পরিচালনা করা আরও কঠিন করে তুলতে পারে।
পার্বত্য চট্টগ্রামে এসএফএফের তিনটি কলাম নিযুক্ত ছিল। একটি কলাম ছিল আরাকান সড়ক হয়ে চট্টগ্রাম ঘেরাও করার জন্য, দ্বিতীয়টি কাপ্তাই বাঁধ-চট্টগ্রাম সড়ক দিয়েও একই কাজ করছিল এবং তৃতীয়টি রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়ক হয়ে চট্টগ্রাম ঘেরাওয়ে কাজে নিযুক্ত ছিল।
কাপ্তাই বাঁধ ছিল এসএফএফের একটি প্রধান লক্ষ্য। মেজর জেনারেল উবান এবং তাঁর দল এই স্থাপনার বিষয়ে পরিকল্পনা করেছিলেন। তিনি এই বিষয়ে জেনারেল মানেকশর সঙ্গে আলোচনা করেন। স্যাম চেয়েছিলেন এই বাঁধটি ধ্বংস করতে। কারণ এটি পূর্ব পাকিস্তানের বিদ্যুৎ শক্তির একটি প্রধান উৎস ছিল। এই ভেঙে ফেললে জঙ্গলে বন্যা দেখা দিত এবং তা পাকিস্তানি বাহিনীর জন্য এই অঞ্চলে কার্যকর অভিযান পরিচালনা কঠিন তোলে।
একইভাবে আরাকান সড়ক বিচ্ছিন্ন করাও ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি অনুমান করা হচ্ছিল যে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী পরাজয় নিশ্চিত মনে করলে এই সড়ক দিয়ে বার্মায় পালিয়ে যেতে পারে। আরাকান সড়ক ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে কক্সবাজার এবং বার্মা পর্যন্ত যায়।
তবে জেনারেল উবান যখন সেনা সদর দপ্তর থেকে এসএফএফের জন্য নির্ধারিত কাজগুলোর বিষয়ে চূড়ান্ত নির্দেশনা পান, তখন তিনি খুব একটা খুশি হননি। তিনি মনে করেছিলেন, তাঁর বাহিনীর জন্য খুব কম অর্জনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাঁর কাছে পাঠানো নির্দেশনায় বলা হয়েছিল, এসএফএফকে কাপ্তাই বাঁধ এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ সেতু উড়িয়ে দিতে হবে, যা সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর বাহিনীকে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অবস্থানগুলোতে ‘হয়রানি’ করতে এবং তাদের ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে কার্যকরী আঘাত প্রতিরোধ করতে বলা হয়েছিল।
উবান মনে করেছিলেন, এই নির্দেশে এসএফএফ বাহিনীর পূর্ণ সক্ষমতা ব্যবহার করা হবে না। তাই উবান তার সেনাদের জন্য আরও কিছু লক্ষ্য নির্ধারণের জন্য আবেদন করেছিলেন। যার মধ্যে ছিল—চট্টগ্রাম বন্দরের দখল। এটি ছিল একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এবং যেখানে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জন্য সব সমুদ্রপথের সরবরাহ আসত।
তবে সেনা সদর দপ্তর মনে করেছিল যে, যেহেতু এসএফএফের কাছে সরাসরি কামান এবং বিমান সহায়তা নেই—তাই একমাত্র গেরিলা কার্যক্রমের মাধ্যমে চট্টগ্রাম দখল সম্ভব নয়। বন্দরের চারপাশে পাকিস্তান সেনাবাহিনী এবং নৌবাহিনীর উপস্থিতি ছিল উল্লেখযোগ্য। যার ফলে আক্রমণ করতে হলে বিমান এবং কামান দিয়ে তাদের প্রতিরক্ষা অবস্থান লক্ষ্য করে আঘাত হানতে হতো। উবান চেয়েছিলেন, তিনি এসএফএফের ১ হাজার সেনা চট্টগ্রামে প্রবেশ করাবেন এবং শহরে থাকা ২ হাজার মুজিব বাহিনীর স্বেচ্ছাসেবী এসএফএফকে সমর্থন কবে। তবে এই বিষয়টি ঊর্ধ্বতনদের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়নি। মূল নির্দেশনা তখনো বলবৎ থাকে।
‘অপারেশন ইগলের’—চূড়ান্ত অনুমতি পাওয়ার পর জেনারেল উবান এসএফএফকে পার্বত্য চট্টগ্রামের কাছাকাছি মিজোরাম সীমান্তে স্থানান্তর শুরু করেন। তাদের আকাশ ও স্থল পথে সেখানে নেওয়া হয়। এই অপারেশনের জন্য উবান সদর দপ্তর হিসেবে ডেমাগিরিকে নির্বাচন করেছিলেন এবং মারপাড়া, বর্ণপানসুড়ি এবং জারুলছড়িতে এসএফএফের তিনটি কলামের মূল ঘাঁটি স্থাপন করেছিলেন।
এসএফএফ ভারতের মূল বাহিনী থেকে আলাদাভাবেই কার্যক্রম পরিচালনা করেছে এবং তারা নিজেরাই স্থানীয়ভাবে নিজেদের খাবার সংগ্রহ করেছে। অনেককে দিনের পর দিন কেবল নদীর মাছ ধরে বাঁচতে হয়। কারণ, হেলিকপ্টারে খাদ্য সরবরাহ যথাসময়ে আসতে পারত না এবং তাদের খাবার প্রায়ই শেষ হয়ে যেত। এমনও ঘটনা ঘটেছে যে, এসএফএফ বাহিনী আধপেটা অবস্থায় পাকিস্তানি অবস্থানগুলোতে আক্রমণ চালিয়ে সেগুলি দখল করে নিয়েছে। এই বিষয়টি কেবল ভারতীয় কমান্ডারদের কৌশলগত লক্ষ্য অর্জন করতে সহায়তা করেনি বরং দখলকৃত পাকিস্তানি অবস্থানগুলো এসএফএফকে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় রেশনও প্রদান করেছিল। এসএফএফের সাফল্যের ফলেই সুজান সিং উবান একসময় রাঙামাটি শহর ঘেরাও করতে সক্ষম হন। এই শহর পাকিস্তান সেনার একটি গুরুত্বপূর্ণ দুর্গ ছিল। অবশেষে উবানের বাহিনী শহরে প্রবেশ করে ব্যাপক নাগরিক অভ্যর্থনা পায়। পাকিস্তানি সৈন্যরা শহর ত্যাগ করার সময় প্রচুর জ্বালানি, অস্ত্র ও গোলাবারুদ রেখে যায়।
এসএফএফ যখন দোহাজারী ব্রিজ ধ্বংস করে এবং সাংগু নদী নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর আর পাকিস্তানি বাহিনীর বার্মায় আরাকান সড়ক দিয়ে পালানোর সম্ভব ছিল না। মেজর জেনারেল উবানের মতে, এটি ছিল একটি প্রধান কারণ—যা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডে প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল এএকে নিয়াজীকে যৌথবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করেছিল।
যুদ্ধ শেষে অপারেশন ইগলে অংশ নেওয়া এসএফএফ কর্মকর্তাদের ২৯টি পদক দেওয়া হয়। ভারতীয় সেনার যেসব এসএফএফের সঙ্গে অপারেশনে অংশগ্রহণ করেছিলেন তাদের মধ্যে ছয়জনকে বীরচক্র, পাঁচ জনক ‘বিশিষ্ট সেবা’, পাঁচজনকে ‘সেনা’ পদক, একজনকে ‘পরম বিশিষ্ট সেবা’ পদক এবং একজনকে ‘অতি বিশিষ্ট সেবা’ পদক দেওয়া হয়। আর ১১ জনের নাম অংশগ্রহণকারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
এসএফএফের তিব্বতি জওয়ানরা গোপন বাহিনী হিসেবে পরিচিত থাকায় কোনো বীরত্বসূচক পদক পাননি। এক হিসাব অনুসারে, অপারেশন ইগলে ৫৬ জন তিব্বতি নিহত হয়েছিলেন এবং প্রায় ১৫০ জন আহত হয়েছিলেন। ৫ শতাধিক তিব্বতি সেনা কেবল নগদ পুরস্কার পেয়ে ছিলেন যুদ্ধে সাহসিকতার জন্য। ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যের চক্রাতায় এক স্মৃতিস্তম্ভে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে প্রাণ হারানো সবার নাম খোদাই করা রয়েছে।
লেখক: মান আমান সিং ছিনা। তিনি ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সহকারী সম্পাদক। তিনি প্রতিরক্ষা এবং জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক প্রতিবেদন নিয়ে কাজ করেন। মান আমান সিং ছিনা সামরিক ইতিহাস এবং পাঞ্জাব রাজনীতির সম্পর্কিত বিষয়েও লেখেন। তিনি ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যুদ্ধ নিয়ে ‘সেভেন হিরোজ অব ১৯৭১’—নামে একটি বই লিখেছেন।
অনুবাদ: আব্দুর রহমান

প্রতিবছর যখন বাংলাদেশের বিজয় দিবস আসে, তখন অনেকের অবদানই লেখা হয়, স্মরণ করা হয়। কিন্তু এখনো এমন অনেক ইতিহাস আছে যা অজানা। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে এমনই এক অজানা অধ্যায় হলো—তিব্বতি স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে গঠিত স্পেশাল ফ্রন্টিয়ার ফোর্স বা এসএফএফ।
এসএফএফ হয়তো এমন নিয়তি বরণই করে নিয়েছিল যে,১৯৭১ সালে তাদের যে কার্যক্রম তা কোনো দিনই আলোর মুখ দেখবে না। এই বাহিনীর সদস্যরা কোনো বীরত্ব পদক পাননি, তাদের কেবলই নগদ পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল। এমনকি তিব্বতিদের নিয়ে এসএফএফ গঠন করা ও নেতৃত্ব দেওয়া ভারতীয় সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল সুজান সিং উবানও তাঁর বই ‘ফ্যান্টমস অব চিটাগাং—দ্য ফিফথ আর্মি ইন বাংলাদেশ’—এ এসএফএফ—এর সৈন্যদের তিব্বতি হিসেবে উল্লেখ করেননি। তিনি কেবল পরোক্ষভাবে এসব সেনা কোথা থেকে এসেছিলেন তার উৎসের কথা করেছেন।
সুজান সিং উবান বলেছেন, এসএফএফ গঠন করা হয়েছিল ‘অভিযোজনযোগ্য উত্তরের পাহাড়ি উপজাতি’ সদস্যদের নিয়ে। এই বাহিনী মূলত ১৯৬২ সালের চীন-ভারত যুদ্ধের পর গঠন করা হয়েছিল এবং তাদের ফুসফুসের অস্বাভাবিক ক্ষমতার উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, এই অসাধারণ ক্ষমতা হাই অলটিট্যুড বা ব্যাপক উচ্চতার এলাকা যুদ্ধের ক্ষেত্রে তাদের একটি বিশাল সুবিধা দিয়েছিল। এমন গোপনীয়তার কারণে, তিব্বতি যোদ্ধারা চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলে যে সাহসিকতা দেখিয়েছেন তা এখনো অধিকাংশ সাধারণ ভারতীয়ের কাছে অজানা।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাপ্রবাহ শুরু হওয়ার পরপরই ‘টিবেটানস অব এস্টাব্লিশমেন্ট-২২’—এর সদস্যদের (যেটি প্রাথমিকভাবে এসএফএফ হিসেবে পরিচিত ছিল) ডাকা হয় যুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য। তাঁরা আগে থেকেই বেশ ভালোভাবেই প্রশিক্ষিত ছিলেন। তারা পার্বত্য ও জঙ্গলে যুদ্ধ পরিচালনায় এবং মর্টার থেকে রকেট লঞ্চার পর্যন্ত সব ধরনের অস্ত্র পরিচালনায় বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠেছিলেন। এমনকি অনেকেই প্যারাট্রুপার হিসেবে যোগ্যতা অর্জন করেছিল। চীনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নেওয়ার সুযোগের জন্য দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর, তাদের সামনে নিজেদের আরও একবার প্রমাণের নতুন সুযোগ হাজির হয়েছিল। একই সঙ্গে ভারতের প্রতি তাদের কৃতজ্ঞতা ও বিশ্বস্ততা প্রদর্শন করারও সুযোগ ছিল এটি। কারণ, ভারত তাদের তিব্বত থেকে তুলে এনে আশ্রয় এবং আয়ের সুযোগ দিয়েছিল।
এসএফএফ—এর সদস্যদের ওই সময়কার অনুভূতিগুলো ‘তিব্বতি গেরিলার ইন এক্সাইল—ইন্ডিয়ার সিক্রেট আর্মি’—একটি প্রামাণ্যচিত্রে প্রতিফলিত হয়েছে। লোমা ফিল্মস নির্মিত এই প্রামাণ্যচিত্রে বাংলাদেশে যুদ্ধ করা লামা কুংচক নামের এক এসএফএফ বলেন, তিনি তিব্বতের স্বাধীনতার জন্য চীনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে চান এবং ‘শত্রুর চোখে ধুলো দিতে চান।’ কিন্তু তাঁর সেই ইচ্ছা যেহেতু পূর্ণ হয়নি, তাই তিনি ভারতের হয়ে যুদ্ধ করতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাবেন।
সুজান সিং উবান এই একই ধরনের অনুভূতি আর সব এসএফএফ সদস্যদের মধ্যে পেয়েছিলেন। তিনি জানতেন, এসএফএফ সদস্যদের বিশেষ দক্ষতা—গেরিলা যুদ্ধ, পর্বত ও জঙ্গলে যুদ্ধ—কোথায় সবচেয়ে ভালোভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। আর তাই উবান তাদের চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলে যুদ্ধ করার জন্য বেছে নেন।
পাকিস্তানের অনিয়মিত বাহিনী এবং মিজো বিদ্রোহীরা এরই মধ্যেই চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলে অপারেশন শুরু করেছিল এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভারতীয় বাহিনীকে লক্ষ্য করে আক্রমণ পরিচালনা করছিল। সুজান সিং উবান জানতেন, যদি এসএফএফ এই পাহাড়ি অঞ্চলের কঠোর ভূমিকে সফলভাবে আয়ত্ত করতে পারে তবে এটি কেবল বাংলাদেশের দিকে অগ্রসর হওয়া ভারতীয় বাহিনীর জন্য একটি দুর্বল গ্যাপকেই পূরণ করবে না একই সঙ্গে এটি আরাকানের সঙ্গে বাংলাদেশের সড়ক যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন করে দেবে। ভারতীয় সমরকুশলীদের আশঙ্কা ছিল, পাকিস্তানি সেনারা মিয়ানমারে পালিয়ে যাওয়ার জন্য এই সড়ক ব্যবহার করতে পারে।
জেনারেল উবান এই পরিকল্পনাগুলো ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল স্যাম মানেকশয়ের সঙ্গে আলোচনা করেন। স্যাম মানেকশ এসএফএফকে এই অপ্রথাগত ভূমিকা পালন করার জন্য ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন। তারপরও উবান এসএফএফ সৈন্যদের লিখিতভাবে অনুরোধ করতে বলেন যে, তাঁরা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পরবর্তী যেকোনো অভিযানে অংশগ্রহণের অনুমতি চায়। আর এভাবেই বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধে এসএফএফ—এর ঐতিহাসিক ভূমিকা পালনের মঞ্চ তৈরি হয়।
চট্টগ্রাম একটি ঘন অভেদ্য জঙ্গলে পূর্ণ পাহাড়ি অঞ্চল। এ ছাড়া নদী-নালার উপস্থিতিও আছে। এই অঞ্চলে সুনির্দিষ্ট তেমন কোনো পথই নেই। এই বিপজ্জনক ভূখণ্ডে কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য যে শারীরিক সক্ষমতা প্রয়োজন তা এসএফএফের তিব্বতিদের ছিল। এই অঞ্চলে এক স্থান থেকে আরেক স্থানে যাওয়া ছিল ব্যাপক কঠিন ও সময়সাপেক্ষ। এমন অঞ্চলে অভিযান পরিচালনার জন্য আগেভাবেই ভালোভাবে পরিকল্পনা করা প্রয়োজন। এসব সমস্যা ছাড়াও আবহাওয়া ছিল এক বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ, চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলে ঘন ঘন তীব্র হতো, যা সামরিক সরঞ্জামগুলোকে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে এবং ভূখণ্ড যুদ্ধ কার্যক্রম পরিচালনা করা আরও কঠিন করে তুলতে পারে।
পার্বত্য চট্টগ্রামে এসএফএফের তিনটি কলাম নিযুক্ত ছিল। একটি কলাম ছিল আরাকান সড়ক হয়ে চট্টগ্রাম ঘেরাও করার জন্য, দ্বিতীয়টি কাপ্তাই বাঁধ-চট্টগ্রাম সড়ক দিয়েও একই কাজ করছিল এবং তৃতীয়টি রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়ক হয়ে চট্টগ্রাম ঘেরাওয়ে কাজে নিযুক্ত ছিল।
কাপ্তাই বাঁধ ছিল এসএফএফের একটি প্রধান লক্ষ্য। মেজর জেনারেল উবান এবং তাঁর দল এই স্থাপনার বিষয়ে পরিকল্পনা করেছিলেন। তিনি এই বিষয়ে জেনারেল মানেকশর সঙ্গে আলোচনা করেন। স্যাম চেয়েছিলেন এই বাঁধটি ধ্বংস করতে। কারণ এটি পূর্ব পাকিস্তানের বিদ্যুৎ শক্তির একটি প্রধান উৎস ছিল। এই ভেঙে ফেললে জঙ্গলে বন্যা দেখা দিত এবং তা পাকিস্তানি বাহিনীর জন্য এই অঞ্চলে কার্যকর অভিযান পরিচালনা কঠিন তোলে।
একইভাবে আরাকান সড়ক বিচ্ছিন্ন করাও ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি অনুমান করা হচ্ছিল যে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী পরাজয় নিশ্চিত মনে করলে এই সড়ক দিয়ে বার্মায় পালিয়ে যেতে পারে। আরাকান সড়ক ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে কক্সবাজার এবং বার্মা পর্যন্ত যায়।
তবে জেনারেল উবান যখন সেনা সদর দপ্তর থেকে এসএফএফের জন্য নির্ধারিত কাজগুলোর বিষয়ে চূড়ান্ত নির্দেশনা পান, তখন তিনি খুব একটা খুশি হননি। তিনি মনে করেছিলেন, তাঁর বাহিনীর জন্য খুব কম অর্জনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাঁর কাছে পাঠানো নির্দেশনায় বলা হয়েছিল, এসএফএফকে কাপ্তাই বাঁধ এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ সেতু উড়িয়ে দিতে হবে, যা সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর বাহিনীকে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অবস্থানগুলোতে ‘হয়রানি’ করতে এবং তাদের ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে কার্যকরী আঘাত প্রতিরোধ করতে বলা হয়েছিল।
উবান মনে করেছিলেন, এই নির্দেশে এসএফএফ বাহিনীর পূর্ণ সক্ষমতা ব্যবহার করা হবে না। তাই উবান তার সেনাদের জন্য আরও কিছু লক্ষ্য নির্ধারণের জন্য আবেদন করেছিলেন। যার মধ্যে ছিল—চট্টগ্রাম বন্দরের দখল। এটি ছিল একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এবং যেখানে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জন্য সব সমুদ্রপথের সরবরাহ আসত।
তবে সেনা সদর দপ্তর মনে করেছিল যে, যেহেতু এসএফএফের কাছে সরাসরি কামান এবং বিমান সহায়তা নেই—তাই একমাত্র গেরিলা কার্যক্রমের মাধ্যমে চট্টগ্রাম দখল সম্ভব নয়। বন্দরের চারপাশে পাকিস্তান সেনাবাহিনী এবং নৌবাহিনীর উপস্থিতি ছিল উল্লেখযোগ্য। যার ফলে আক্রমণ করতে হলে বিমান এবং কামান দিয়ে তাদের প্রতিরক্ষা অবস্থান লক্ষ্য করে আঘাত হানতে হতো। উবান চেয়েছিলেন, তিনি এসএফএফের ১ হাজার সেনা চট্টগ্রামে প্রবেশ করাবেন এবং শহরে থাকা ২ হাজার মুজিব বাহিনীর স্বেচ্ছাসেবী এসএফএফকে সমর্থন কবে। তবে এই বিষয়টি ঊর্ধ্বতনদের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়নি। মূল নির্দেশনা তখনো বলবৎ থাকে।
‘অপারেশন ইগলের’—চূড়ান্ত অনুমতি পাওয়ার পর জেনারেল উবান এসএফএফকে পার্বত্য চট্টগ্রামের কাছাকাছি মিজোরাম সীমান্তে স্থানান্তর শুরু করেন। তাদের আকাশ ও স্থল পথে সেখানে নেওয়া হয়। এই অপারেশনের জন্য উবান সদর দপ্তর হিসেবে ডেমাগিরিকে নির্বাচন করেছিলেন এবং মারপাড়া, বর্ণপানসুড়ি এবং জারুলছড়িতে এসএফএফের তিনটি কলামের মূল ঘাঁটি স্থাপন করেছিলেন।
এসএফএফ ভারতের মূল বাহিনী থেকে আলাদাভাবেই কার্যক্রম পরিচালনা করেছে এবং তারা নিজেরাই স্থানীয়ভাবে নিজেদের খাবার সংগ্রহ করেছে। অনেককে দিনের পর দিন কেবল নদীর মাছ ধরে বাঁচতে হয়। কারণ, হেলিকপ্টারে খাদ্য সরবরাহ যথাসময়ে আসতে পারত না এবং তাদের খাবার প্রায়ই শেষ হয়ে যেত। এমনও ঘটনা ঘটেছে যে, এসএফএফ বাহিনী আধপেটা অবস্থায় পাকিস্তানি অবস্থানগুলোতে আক্রমণ চালিয়ে সেগুলি দখল করে নিয়েছে। এই বিষয়টি কেবল ভারতীয় কমান্ডারদের কৌশলগত লক্ষ্য অর্জন করতে সহায়তা করেনি বরং দখলকৃত পাকিস্তানি অবস্থানগুলো এসএফএফকে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় রেশনও প্রদান করেছিল। এসএফএফের সাফল্যের ফলেই সুজান সিং উবান একসময় রাঙামাটি শহর ঘেরাও করতে সক্ষম হন। এই শহর পাকিস্তান সেনার একটি গুরুত্বপূর্ণ দুর্গ ছিল। অবশেষে উবানের বাহিনী শহরে প্রবেশ করে ব্যাপক নাগরিক অভ্যর্থনা পায়। পাকিস্তানি সৈন্যরা শহর ত্যাগ করার সময় প্রচুর জ্বালানি, অস্ত্র ও গোলাবারুদ রেখে যায়।
এসএফএফ যখন দোহাজারী ব্রিজ ধ্বংস করে এবং সাংগু নদী নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর আর পাকিস্তানি বাহিনীর বার্মায় আরাকান সড়ক দিয়ে পালানোর সম্ভব ছিল না। মেজর জেনারেল উবানের মতে, এটি ছিল একটি প্রধান কারণ—যা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডে প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল এএকে নিয়াজীকে যৌথবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করেছিল।
যুদ্ধ শেষে অপারেশন ইগলে অংশ নেওয়া এসএফএফ কর্মকর্তাদের ২৯টি পদক দেওয়া হয়। ভারতীয় সেনার যেসব এসএফএফের সঙ্গে অপারেশনে অংশগ্রহণ করেছিলেন তাদের মধ্যে ছয়জনকে বীরচক্র, পাঁচ জনক ‘বিশিষ্ট সেবা’, পাঁচজনকে ‘সেনা’ পদক, একজনকে ‘পরম বিশিষ্ট সেবা’ পদক এবং একজনকে ‘অতি বিশিষ্ট সেবা’ পদক দেওয়া হয়। আর ১১ জনের নাম অংশগ্রহণকারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
এসএফএফের তিব্বতি জওয়ানরা গোপন বাহিনী হিসেবে পরিচিত থাকায় কোনো বীরত্বসূচক পদক পাননি। এক হিসাব অনুসারে, অপারেশন ইগলে ৫৬ জন তিব্বতি নিহত হয়েছিলেন এবং প্রায় ১৫০ জন আহত হয়েছিলেন। ৫ শতাধিক তিব্বতি সেনা কেবল নগদ পুরস্কার পেয়ে ছিলেন যুদ্ধে সাহসিকতার জন্য। ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যের চক্রাতায় এক স্মৃতিস্তম্ভে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে প্রাণ হারানো সবার নাম খোদাই করা রয়েছে।
লেখক: মান আমান সিং ছিনা। তিনি ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সহকারী সম্পাদক। তিনি প্রতিরক্ষা এবং জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক প্রতিবেদন নিয়ে কাজ করেন। মান আমান সিং ছিনা সামরিক ইতিহাস এবং পাঞ্জাব রাজনীতির সম্পর্কিত বিষয়েও লেখেন। তিনি ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যুদ্ধ নিয়ে ‘সেভেন হিরোজ অব ১৯৭১’—নামে একটি বই লিখেছেন।
অনুবাদ: আব্দুর রহমান
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের নিবন্ধ

প্রতিবছর যখন বাংলাদেশের বিজয় দিবস আসে, তখন অনেকের অবদানই লেখা হয়, স্মরণ করা হয়। কিন্তু এখনো এমন অনেক ইতিহাস আছে যা অজানা। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে এমনই এক অজানা অধ্যায় হলো—তিব্বতি স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে গঠিত স্পেশাল ফ্রন্টিয়ার ফোর্স বা এসএফএফ।
এসএফএফ হয়তো এমন নিয়তি বরণই করে নিয়েছিল যে,১৯৭১ সালে তাদের যে কার্যক্রম তা কোনো দিনই আলোর মুখ দেখবে না। এই বাহিনীর সদস্যরা কোনো বীরত্ব পদক পাননি, তাদের কেবলই নগদ পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল। এমনকি তিব্বতিদের নিয়ে এসএফএফ গঠন করা ও নেতৃত্ব দেওয়া ভারতীয় সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল সুজান সিং উবানও তাঁর বই ‘ফ্যান্টমস অব চিটাগাং—দ্য ফিফথ আর্মি ইন বাংলাদেশ’—এ এসএফএফ—এর সৈন্যদের তিব্বতি হিসেবে উল্লেখ করেননি। তিনি কেবল পরোক্ষভাবে এসব সেনা কোথা থেকে এসেছিলেন তার উৎসের কথা করেছেন।
সুজান সিং উবান বলেছেন, এসএফএফ গঠন করা হয়েছিল ‘অভিযোজনযোগ্য উত্তরের পাহাড়ি উপজাতি’ সদস্যদের নিয়ে। এই বাহিনী মূলত ১৯৬২ সালের চীন-ভারত যুদ্ধের পর গঠন করা হয়েছিল এবং তাদের ফুসফুসের অস্বাভাবিক ক্ষমতার উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, এই অসাধারণ ক্ষমতা হাই অলটিট্যুড বা ব্যাপক উচ্চতার এলাকা যুদ্ধের ক্ষেত্রে তাদের একটি বিশাল সুবিধা দিয়েছিল। এমন গোপনীয়তার কারণে, তিব্বতি যোদ্ধারা চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলে যে সাহসিকতা দেখিয়েছেন তা এখনো অধিকাংশ সাধারণ ভারতীয়ের কাছে অজানা।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাপ্রবাহ শুরু হওয়ার পরপরই ‘টিবেটানস অব এস্টাব্লিশমেন্ট-২২’—এর সদস্যদের (যেটি প্রাথমিকভাবে এসএফএফ হিসেবে পরিচিত ছিল) ডাকা হয় যুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য। তাঁরা আগে থেকেই বেশ ভালোভাবেই প্রশিক্ষিত ছিলেন। তারা পার্বত্য ও জঙ্গলে যুদ্ধ পরিচালনায় এবং মর্টার থেকে রকেট লঞ্চার পর্যন্ত সব ধরনের অস্ত্র পরিচালনায় বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠেছিলেন। এমনকি অনেকেই প্যারাট্রুপার হিসেবে যোগ্যতা অর্জন করেছিল। চীনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নেওয়ার সুযোগের জন্য দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর, তাদের সামনে নিজেদের আরও একবার প্রমাণের নতুন সুযোগ হাজির হয়েছিল। একই সঙ্গে ভারতের প্রতি তাদের কৃতজ্ঞতা ও বিশ্বস্ততা প্রদর্শন করারও সুযোগ ছিল এটি। কারণ, ভারত তাদের তিব্বত থেকে তুলে এনে আশ্রয় এবং আয়ের সুযোগ দিয়েছিল।
এসএফএফ—এর সদস্যদের ওই সময়কার অনুভূতিগুলো ‘তিব্বতি গেরিলার ইন এক্সাইল—ইন্ডিয়ার সিক্রেট আর্মি’—একটি প্রামাণ্যচিত্রে প্রতিফলিত হয়েছে। লোমা ফিল্মস নির্মিত এই প্রামাণ্যচিত্রে বাংলাদেশে যুদ্ধ করা লামা কুংচক নামের এক এসএফএফ বলেন, তিনি তিব্বতের স্বাধীনতার জন্য চীনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে চান এবং ‘শত্রুর চোখে ধুলো দিতে চান।’ কিন্তু তাঁর সেই ইচ্ছা যেহেতু পূর্ণ হয়নি, তাই তিনি ভারতের হয়ে যুদ্ধ করতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাবেন।
সুজান সিং উবান এই একই ধরনের অনুভূতি আর সব এসএফএফ সদস্যদের মধ্যে পেয়েছিলেন। তিনি জানতেন, এসএফএফ সদস্যদের বিশেষ দক্ষতা—গেরিলা যুদ্ধ, পর্বত ও জঙ্গলে যুদ্ধ—কোথায় সবচেয়ে ভালোভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। আর তাই উবান তাদের চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলে যুদ্ধ করার জন্য বেছে নেন।
পাকিস্তানের অনিয়মিত বাহিনী এবং মিজো বিদ্রোহীরা এরই মধ্যেই চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলে অপারেশন শুরু করেছিল এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভারতীয় বাহিনীকে লক্ষ্য করে আক্রমণ পরিচালনা করছিল। সুজান সিং উবান জানতেন, যদি এসএফএফ এই পাহাড়ি অঞ্চলের কঠোর ভূমিকে সফলভাবে আয়ত্ত করতে পারে তবে এটি কেবল বাংলাদেশের দিকে অগ্রসর হওয়া ভারতীয় বাহিনীর জন্য একটি দুর্বল গ্যাপকেই পূরণ করবে না একই সঙ্গে এটি আরাকানের সঙ্গে বাংলাদেশের সড়ক যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন করে দেবে। ভারতীয় সমরকুশলীদের আশঙ্কা ছিল, পাকিস্তানি সেনারা মিয়ানমারে পালিয়ে যাওয়ার জন্য এই সড়ক ব্যবহার করতে পারে।
জেনারেল উবান এই পরিকল্পনাগুলো ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল স্যাম মানেকশয়ের সঙ্গে আলোচনা করেন। স্যাম মানেকশ এসএফএফকে এই অপ্রথাগত ভূমিকা পালন করার জন্য ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন। তারপরও উবান এসএফএফ সৈন্যদের লিখিতভাবে অনুরোধ করতে বলেন যে, তাঁরা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পরবর্তী যেকোনো অভিযানে অংশগ্রহণের অনুমতি চায়। আর এভাবেই বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধে এসএফএফ—এর ঐতিহাসিক ভূমিকা পালনের মঞ্চ তৈরি হয়।
চট্টগ্রাম একটি ঘন অভেদ্য জঙ্গলে পূর্ণ পাহাড়ি অঞ্চল। এ ছাড়া নদী-নালার উপস্থিতিও আছে। এই অঞ্চলে সুনির্দিষ্ট তেমন কোনো পথই নেই। এই বিপজ্জনক ভূখণ্ডে কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য যে শারীরিক সক্ষমতা প্রয়োজন তা এসএফএফের তিব্বতিদের ছিল। এই অঞ্চলে এক স্থান থেকে আরেক স্থানে যাওয়া ছিল ব্যাপক কঠিন ও সময়সাপেক্ষ। এমন অঞ্চলে অভিযান পরিচালনার জন্য আগেভাবেই ভালোভাবে পরিকল্পনা করা প্রয়োজন। এসব সমস্যা ছাড়াও আবহাওয়া ছিল এক বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ, চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলে ঘন ঘন তীব্র হতো, যা সামরিক সরঞ্জামগুলোকে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে এবং ভূখণ্ড যুদ্ধ কার্যক্রম পরিচালনা করা আরও কঠিন করে তুলতে পারে।
পার্বত্য চট্টগ্রামে এসএফএফের তিনটি কলাম নিযুক্ত ছিল। একটি কলাম ছিল আরাকান সড়ক হয়ে চট্টগ্রাম ঘেরাও করার জন্য, দ্বিতীয়টি কাপ্তাই বাঁধ-চট্টগ্রাম সড়ক দিয়েও একই কাজ করছিল এবং তৃতীয়টি রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়ক হয়ে চট্টগ্রাম ঘেরাওয়ে কাজে নিযুক্ত ছিল।
কাপ্তাই বাঁধ ছিল এসএফএফের একটি প্রধান লক্ষ্য। মেজর জেনারেল উবান এবং তাঁর দল এই স্থাপনার বিষয়ে পরিকল্পনা করেছিলেন। তিনি এই বিষয়ে জেনারেল মানেকশর সঙ্গে আলোচনা করেন। স্যাম চেয়েছিলেন এই বাঁধটি ধ্বংস করতে। কারণ এটি পূর্ব পাকিস্তানের বিদ্যুৎ শক্তির একটি প্রধান উৎস ছিল। এই ভেঙে ফেললে জঙ্গলে বন্যা দেখা দিত এবং তা পাকিস্তানি বাহিনীর জন্য এই অঞ্চলে কার্যকর অভিযান পরিচালনা কঠিন তোলে।
একইভাবে আরাকান সড়ক বিচ্ছিন্ন করাও ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি অনুমান করা হচ্ছিল যে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী পরাজয় নিশ্চিত মনে করলে এই সড়ক দিয়ে বার্মায় পালিয়ে যেতে পারে। আরাকান সড়ক ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে কক্সবাজার এবং বার্মা পর্যন্ত যায়।
তবে জেনারেল উবান যখন সেনা সদর দপ্তর থেকে এসএফএফের জন্য নির্ধারিত কাজগুলোর বিষয়ে চূড়ান্ত নির্দেশনা পান, তখন তিনি খুব একটা খুশি হননি। তিনি মনে করেছিলেন, তাঁর বাহিনীর জন্য খুব কম অর্জনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাঁর কাছে পাঠানো নির্দেশনায় বলা হয়েছিল, এসএফএফকে কাপ্তাই বাঁধ এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ সেতু উড়িয়ে দিতে হবে, যা সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর বাহিনীকে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অবস্থানগুলোতে ‘হয়রানি’ করতে এবং তাদের ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে কার্যকরী আঘাত প্রতিরোধ করতে বলা হয়েছিল।
উবান মনে করেছিলেন, এই নির্দেশে এসএফএফ বাহিনীর পূর্ণ সক্ষমতা ব্যবহার করা হবে না। তাই উবান তার সেনাদের জন্য আরও কিছু লক্ষ্য নির্ধারণের জন্য আবেদন করেছিলেন। যার মধ্যে ছিল—চট্টগ্রাম বন্দরের দখল। এটি ছিল একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এবং যেখানে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জন্য সব সমুদ্রপথের সরবরাহ আসত।
তবে সেনা সদর দপ্তর মনে করেছিল যে, যেহেতু এসএফএফের কাছে সরাসরি কামান এবং বিমান সহায়তা নেই—তাই একমাত্র গেরিলা কার্যক্রমের মাধ্যমে চট্টগ্রাম দখল সম্ভব নয়। বন্দরের চারপাশে পাকিস্তান সেনাবাহিনী এবং নৌবাহিনীর উপস্থিতি ছিল উল্লেখযোগ্য। যার ফলে আক্রমণ করতে হলে বিমান এবং কামান দিয়ে তাদের প্রতিরক্ষা অবস্থান লক্ষ্য করে আঘাত হানতে হতো। উবান চেয়েছিলেন, তিনি এসএফএফের ১ হাজার সেনা চট্টগ্রামে প্রবেশ করাবেন এবং শহরে থাকা ২ হাজার মুজিব বাহিনীর স্বেচ্ছাসেবী এসএফএফকে সমর্থন কবে। তবে এই বিষয়টি ঊর্ধ্বতনদের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়নি। মূল নির্দেশনা তখনো বলবৎ থাকে।
‘অপারেশন ইগলের’—চূড়ান্ত অনুমতি পাওয়ার পর জেনারেল উবান এসএফএফকে পার্বত্য চট্টগ্রামের কাছাকাছি মিজোরাম সীমান্তে স্থানান্তর শুরু করেন। তাদের আকাশ ও স্থল পথে সেখানে নেওয়া হয়। এই অপারেশনের জন্য উবান সদর দপ্তর হিসেবে ডেমাগিরিকে নির্বাচন করেছিলেন এবং মারপাড়া, বর্ণপানসুড়ি এবং জারুলছড়িতে এসএফএফের তিনটি কলামের মূল ঘাঁটি স্থাপন করেছিলেন।
এসএফএফ ভারতের মূল বাহিনী থেকে আলাদাভাবেই কার্যক্রম পরিচালনা করেছে এবং তারা নিজেরাই স্থানীয়ভাবে নিজেদের খাবার সংগ্রহ করেছে। অনেককে দিনের পর দিন কেবল নদীর মাছ ধরে বাঁচতে হয়। কারণ, হেলিকপ্টারে খাদ্য সরবরাহ যথাসময়ে আসতে পারত না এবং তাদের খাবার প্রায়ই শেষ হয়ে যেত। এমনও ঘটনা ঘটেছে যে, এসএফএফ বাহিনী আধপেটা অবস্থায় পাকিস্তানি অবস্থানগুলোতে আক্রমণ চালিয়ে সেগুলি দখল করে নিয়েছে। এই বিষয়টি কেবল ভারতীয় কমান্ডারদের কৌশলগত লক্ষ্য অর্জন করতে সহায়তা করেনি বরং দখলকৃত পাকিস্তানি অবস্থানগুলো এসএফএফকে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় রেশনও প্রদান করেছিল। এসএফএফের সাফল্যের ফলেই সুজান সিং উবান একসময় রাঙামাটি শহর ঘেরাও করতে সক্ষম হন। এই শহর পাকিস্তান সেনার একটি গুরুত্বপূর্ণ দুর্গ ছিল। অবশেষে উবানের বাহিনী শহরে প্রবেশ করে ব্যাপক নাগরিক অভ্যর্থনা পায়। পাকিস্তানি সৈন্যরা শহর ত্যাগ করার সময় প্রচুর জ্বালানি, অস্ত্র ও গোলাবারুদ রেখে যায়।
এসএফএফ যখন দোহাজারী ব্রিজ ধ্বংস করে এবং সাংগু নদী নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর আর পাকিস্তানি বাহিনীর বার্মায় আরাকান সড়ক দিয়ে পালানোর সম্ভব ছিল না। মেজর জেনারেল উবানের মতে, এটি ছিল একটি প্রধান কারণ—যা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডে প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল এএকে নিয়াজীকে যৌথবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করেছিল।
যুদ্ধ শেষে অপারেশন ইগলে অংশ নেওয়া এসএফএফ কর্মকর্তাদের ২৯টি পদক দেওয়া হয়। ভারতীয় সেনার যেসব এসএফএফের সঙ্গে অপারেশনে অংশগ্রহণ করেছিলেন তাদের মধ্যে ছয়জনকে বীরচক্র, পাঁচ জনক ‘বিশিষ্ট সেবা’, পাঁচজনকে ‘সেনা’ পদক, একজনকে ‘পরম বিশিষ্ট সেবা’ পদক এবং একজনকে ‘অতি বিশিষ্ট সেবা’ পদক দেওয়া হয়। আর ১১ জনের নাম অংশগ্রহণকারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
এসএফএফের তিব্বতি জওয়ানরা গোপন বাহিনী হিসেবে পরিচিত থাকায় কোনো বীরত্বসূচক পদক পাননি। এক হিসাব অনুসারে, অপারেশন ইগলে ৫৬ জন তিব্বতি নিহত হয়েছিলেন এবং প্রায় ১৫০ জন আহত হয়েছিলেন। ৫ শতাধিক তিব্বতি সেনা কেবল নগদ পুরস্কার পেয়ে ছিলেন যুদ্ধে সাহসিকতার জন্য। ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যের চক্রাতায় এক স্মৃতিস্তম্ভে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে প্রাণ হারানো সবার নাম খোদাই করা রয়েছে।
লেখক: মান আমান সিং ছিনা। তিনি ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সহকারী সম্পাদক। তিনি প্রতিরক্ষা এবং জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক প্রতিবেদন নিয়ে কাজ করেন। মান আমান সিং ছিনা সামরিক ইতিহাস এবং পাঞ্জাব রাজনীতির সম্পর্কিত বিষয়েও লেখেন। তিনি ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যুদ্ধ নিয়ে ‘সেভেন হিরোজ অব ১৯৭১’—নামে একটি বই লিখেছেন।
অনুবাদ: আব্দুর রহমান

প্রতিবছর যখন বাংলাদেশের বিজয় দিবস আসে, তখন অনেকের অবদানই লেখা হয়, স্মরণ করা হয়। কিন্তু এখনো এমন অনেক ইতিহাস আছে যা অজানা। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে এমনই এক অজানা অধ্যায় হলো—তিব্বতি স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে গঠিত স্পেশাল ফ্রন্টিয়ার ফোর্স বা এসএফএফ।
এসএফএফ হয়তো এমন নিয়তি বরণই করে নিয়েছিল যে,১৯৭১ সালে তাদের যে কার্যক্রম তা কোনো দিনই আলোর মুখ দেখবে না। এই বাহিনীর সদস্যরা কোনো বীরত্ব পদক পাননি, তাদের কেবলই নগদ পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল। এমনকি তিব্বতিদের নিয়ে এসএফএফ গঠন করা ও নেতৃত্ব দেওয়া ভারতীয় সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল সুজান সিং উবানও তাঁর বই ‘ফ্যান্টমস অব চিটাগাং—দ্য ফিফথ আর্মি ইন বাংলাদেশ’—এ এসএফএফ—এর সৈন্যদের তিব্বতি হিসেবে উল্লেখ করেননি। তিনি কেবল পরোক্ষভাবে এসব সেনা কোথা থেকে এসেছিলেন তার উৎসের কথা করেছেন।
সুজান সিং উবান বলেছেন, এসএফএফ গঠন করা হয়েছিল ‘অভিযোজনযোগ্য উত্তরের পাহাড়ি উপজাতি’ সদস্যদের নিয়ে। এই বাহিনী মূলত ১৯৬২ সালের চীন-ভারত যুদ্ধের পর গঠন করা হয়েছিল এবং তাদের ফুসফুসের অস্বাভাবিক ক্ষমতার উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, এই অসাধারণ ক্ষমতা হাই অলটিট্যুড বা ব্যাপক উচ্চতার এলাকা যুদ্ধের ক্ষেত্রে তাদের একটি বিশাল সুবিধা দিয়েছিল। এমন গোপনীয়তার কারণে, তিব্বতি যোদ্ধারা চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলে যে সাহসিকতা দেখিয়েছেন তা এখনো অধিকাংশ সাধারণ ভারতীয়ের কাছে অজানা।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাপ্রবাহ শুরু হওয়ার পরপরই ‘টিবেটানস অব এস্টাব্লিশমেন্ট-২২’—এর সদস্যদের (যেটি প্রাথমিকভাবে এসএফএফ হিসেবে পরিচিত ছিল) ডাকা হয় যুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য। তাঁরা আগে থেকেই বেশ ভালোভাবেই প্রশিক্ষিত ছিলেন। তারা পার্বত্য ও জঙ্গলে যুদ্ধ পরিচালনায় এবং মর্টার থেকে রকেট লঞ্চার পর্যন্ত সব ধরনের অস্ত্র পরিচালনায় বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠেছিলেন। এমনকি অনেকেই প্যারাট্রুপার হিসেবে যোগ্যতা অর্জন করেছিল। চীনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নেওয়ার সুযোগের জন্য দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর, তাদের সামনে নিজেদের আরও একবার প্রমাণের নতুন সুযোগ হাজির হয়েছিল। একই সঙ্গে ভারতের প্রতি তাদের কৃতজ্ঞতা ও বিশ্বস্ততা প্রদর্শন করারও সুযোগ ছিল এটি। কারণ, ভারত তাদের তিব্বত থেকে তুলে এনে আশ্রয় এবং আয়ের সুযোগ দিয়েছিল।
এসএফএফ—এর সদস্যদের ওই সময়কার অনুভূতিগুলো ‘তিব্বতি গেরিলার ইন এক্সাইল—ইন্ডিয়ার সিক্রেট আর্মি’—একটি প্রামাণ্যচিত্রে প্রতিফলিত হয়েছে। লোমা ফিল্মস নির্মিত এই প্রামাণ্যচিত্রে বাংলাদেশে যুদ্ধ করা লামা কুংচক নামের এক এসএফএফ বলেন, তিনি তিব্বতের স্বাধীনতার জন্য চীনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে চান এবং ‘শত্রুর চোখে ধুলো দিতে চান।’ কিন্তু তাঁর সেই ইচ্ছা যেহেতু পূর্ণ হয়নি, তাই তিনি ভারতের হয়ে যুদ্ধ করতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাবেন।
সুজান সিং উবান এই একই ধরনের অনুভূতি আর সব এসএফএফ সদস্যদের মধ্যে পেয়েছিলেন। তিনি জানতেন, এসএফএফ সদস্যদের বিশেষ দক্ষতা—গেরিলা যুদ্ধ, পর্বত ও জঙ্গলে যুদ্ধ—কোথায় সবচেয়ে ভালোভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। আর তাই উবান তাদের চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলে যুদ্ধ করার জন্য বেছে নেন।
পাকিস্তানের অনিয়মিত বাহিনী এবং মিজো বিদ্রোহীরা এরই মধ্যেই চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলে অপারেশন শুরু করেছিল এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভারতীয় বাহিনীকে লক্ষ্য করে আক্রমণ পরিচালনা করছিল। সুজান সিং উবান জানতেন, যদি এসএফএফ এই পাহাড়ি অঞ্চলের কঠোর ভূমিকে সফলভাবে আয়ত্ত করতে পারে তবে এটি কেবল বাংলাদেশের দিকে অগ্রসর হওয়া ভারতীয় বাহিনীর জন্য একটি দুর্বল গ্যাপকেই পূরণ করবে না একই সঙ্গে এটি আরাকানের সঙ্গে বাংলাদেশের সড়ক যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন করে দেবে। ভারতীয় সমরকুশলীদের আশঙ্কা ছিল, পাকিস্তানি সেনারা মিয়ানমারে পালিয়ে যাওয়ার জন্য এই সড়ক ব্যবহার করতে পারে।
জেনারেল উবান এই পরিকল্পনাগুলো ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল স্যাম মানেকশয়ের সঙ্গে আলোচনা করেন। স্যাম মানেকশ এসএফএফকে এই অপ্রথাগত ভূমিকা পালন করার জন্য ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন। তারপরও উবান এসএফএফ সৈন্যদের লিখিতভাবে অনুরোধ করতে বলেন যে, তাঁরা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পরবর্তী যেকোনো অভিযানে অংশগ্রহণের অনুমতি চায়। আর এভাবেই বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধে এসএফএফ—এর ঐতিহাসিক ভূমিকা পালনের মঞ্চ তৈরি হয়।
চট্টগ্রাম একটি ঘন অভেদ্য জঙ্গলে পূর্ণ পাহাড়ি অঞ্চল। এ ছাড়া নদী-নালার উপস্থিতিও আছে। এই অঞ্চলে সুনির্দিষ্ট তেমন কোনো পথই নেই। এই বিপজ্জনক ভূখণ্ডে কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য যে শারীরিক সক্ষমতা প্রয়োজন তা এসএফএফের তিব্বতিদের ছিল। এই অঞ্চলে এক স্থান থেকে আরেক স্থানে যাওয়া ছিল ব্যাপক কঠিন ও সময়সাপেক্ষ। এমন অঞ্চলে অভিযান পরিচালনার জন্য আগেভাবেই ভালোভাবে পরিকল্পনা করা প্রয়োজন। এসব সমস্যা ছাড়াও আবহাওয়া ছিল এক বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ, চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলে ঘন ঘন তীব্র হতো, যা সামরিক সরঞ্জামগুলোকে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে এবং ভূখণ্ড যুদ্ধ কার্যক্রম পরিচালনা করা আরও কঠিন করে তুলতে পারে।
পার্বত্য চট্টগ্রামে এসএফএফের তিনটি কলাম নিযুক্ত ছিল। একটি কলাম ছিল আরাকান সড়ক হয়ে চট্টগ্রাম ঘেরাও করার জন্য, দ্বিতীয়টি কাপ্তাই বাঁধ-চট্টগ্রাম সড়ক দিয়েও একই কাজ করছিল এবং তৃতীয়টি রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়ক হয়ে চট্টগ্রাম ঘেরাওয়ে কাজে নিযুক্ত ছিল।
কাপ্তাই বাঁধ ছিল এসএফএফের একটি প্রধান লক্ষ্য। মেজর জেনারেল উবান এবং তাঁর দল এই স্থাপনার বিষয়ে পরিকল্পনা করেছিলেন। তিনি এই বিষয়ে জেনারেল মানেকশর সঙ্গে আলোচনা করেন। স্যাম চেয়েছিলেন এই বাঁধটি ধ্বংস করতে। কারণ এটি পূর্ব পাকিস্তানের বিদ্যুৎ শক্তির একটি প্রধান উৎস ছিল। এই ভেঙে ফেললে জঙ্গলে বন্যা দেখা দিত এবং তা পাকিস্তানি বাহিনীর জন্য এই অঞ্চলে কার্যকর অভিযান পরিচালনা কঠিন তোলে।
একইভাবে আরাকান সড়ক বিচ্ছিন্ন করাও ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি অনুমান করা হচ্ছিল যে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী পরাজয় নিশ্চিত মনে করলে এই সড়ক দিয়ে বার্মায় পালিয়ে যেতে পারে। আরাকান সড়ক ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে কক্সবাজার এবং বার্মা পর্যন্ত যায়।
তবে জেনারেল উবান যখন সেনা সদর দপ্তর থেকে এসএফএফের জন্য নির্ধারিত কাজগুলোর বিষয়ে চূড়ান্ত নির্দেশনা পান, তখন তিনি খুব একটা খুশি হননি। তিনি মনে করেছিলেন, তাঁর বাহিনীর জন্য খুব কম অর্জনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাঁর কাছে পাঠানো নির্দেশনায় বলা হয়েছিল, এসএফএফকে কাপ্তাই বাঁধ এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ সেতু উড়িয়ে দিতে হবে, যা সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর বাহিনীকে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অবস্থানগুলোতে ‘হয়রানি’ করতে এবং তাদের ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে কার্যকরী আঘাত প্রতিরোধ করতে বলা হয়েছিল।
উবান মনে করেছিলেন, এই নির্দেশে এসএফএফ বাহিনীর পূর্ণ সক্ষমতা ব্যবহার করা হবে না। তাই উবান তার সেনাদের জন্য আরও কিছু লক্ষ্য নির্ধারণের জন্য আবেদন করেছিলেন। যার মধ্যে ছিল—চট্টগ্রাম বন্দরের দখল। এটি ছিল একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এবং যেখানে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জন্য সব সমুদ্রপথের সরবরাহ আসত।
তবে সেনা সদর দপ্তর মনে করেছিল যে, যেহেতু এসএফএফের কাছে সরাসরি কামান এবং বিমান সহায়তা নেই—তাই একমাত্র গেরিলা কার্যক্রমের মাধ্যমে চট্টগ্রাম দখল সম্ভব নয়। বন্দরের চারপাশে পাকিস্তান সেনাবাহিনী এবং নৌবাহিনীর উপস্থিতি ছিল উল্লেখযোগ্য। যার ফলে আক্রমণ করতে হলে বিমান এবং কামান দিয়ে তাদের প্রতিরক্ষা অবস্থান লক্ষ্য করে আঘাত হানতে হতো। উবান চেয়েছিলেন, তিনি এসএফএফের ১ হাজার সেনা চট্টগ্রামে প্রবেশ করাবেন এবং শহরে থাকা ২ হাজার মুজিব বাহিনীর স্বেচ্ছাসেবী এসএফএফকে সমর্থন কবে। তবে এই বিষয়টি ঊর্ধ্বতনদের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়নি। মূল নির্দেশনা তখনো বলবৎ থাকে।
‘অপারেশন ইগলের’—চূড়ান্ত অনুমতি পাওয়ার পর জেনারেল উবান এসএফএফকে পার্বত্য চট্টগ্রামের কাছাকাছি মিজোরাম সীমান্তে স্থানান্তর শুরু করেন। তাদের আকাশ ও স্থল পথে সেখানে নেওয়া হয়। এই অপারেশনের জন্য উবান সদর দপ্তর হিসেবে ডেমাগিরিকে নির্বাচন করেছিলেন এবং মারপাড়া, বর্ণপানসুড়ি এবং জারুলছড়িতে এসএফএফের তিনটি কলামের মূল ঘাঁটি স্থাপন করেছিলেন।
এসএফএফ ভারতের মূল বাহিনী থেকে আলাদাভাবেই কার্যক্রম পরিচালনা করেছে এবং তারা নিজেরাই স্থানীয়ভাবে নিজেদের খাবার সংগ্রহ করেছে। অনেককে দিনের পর দিন কেবল নদীর মাছ ধরে বাঁচতে হয়। কারণ, হেলিকপ্টারে খাদ্য সরবরাহ যথাসময়ে আসতে পারত না এবং তাদের খাবার প্রায়ই শেষ হয়ে যেত। এমনও ঘটনা ঘটেছে যে, এসএফএফ বাহিনী আধপেটা অবস্থায় পাকিস্তানি অবস্থানগুলোতে আক্রমণ চালিয়ে সেগুলি দখল করে নিয়েছে। এই বিষয়টি কেবল ভারতীয় কমান্ডারদের কৌশলগত লক্ষ্য অর্জন করতে সহায়তা করেনি বরং দখলকৃত পাকিস্তানি অবস্থানগুলো এসএফএফকে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় রেশনও প্রদান করেছিল। এসএফএফের সাফল্যের ফলেই সুজান সিং উবান একসময় রাঙামাটি শহর ঘেরাও করতে সক্ষম হন। এই শহর পাকিস্তান সেনার একটি গুরুত্বপূর্ণ দুর্গ ছিল। অবশেষে উবানের বাহিনী শহরে প্রবেশ করে ব্যাপক নাগরিক অভ্যর্থনা পায়। পাকিস্তানি সৈন্যরা শহর ত্যাগ করার সময় প্রচুর জ্বালানি, অস্ত্র ও গোলাবারুদ রেখে যায়।
এসএফএফ যখন দোহাজারী ব্রিজ ধ্বংস করে এবং সাংগু নদী নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর আর পাকিস্তানি বাহিনীর বার্মায় আরাকান সড়ক দিয়ে পালানোর সম্ভব ছিল না। মেজর জেনারেল উবানের মতে, এটি ছিল একটি প্রধান কারণ—যা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডে প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল এএকে নিয়াজীকে যৌথবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করেছিল।
যুদ্ধ শেষে অপারেশন ইগলে অংশ নেওয়া এসএফএফ কর্মকর্তাদের ২৯টি পদক দেওয়া হয়। ভারতীয় সেনার যেসব এসএফএফের সঙ্গে অপারেশনে অংশগ্রহণ করেছিলেন তাদের মধ্যে ছয়জনকে বীরচক্র, পাঁচ জনক ‘বিশিষ্ট সেবা’, পাঁচজনকে ‘সেনা’ পদক, একজনকে ‘পরম বিশিষ্ট সেবা’ পদক এবং একজনকে ‘অতি বিশিষ্ট সেবা’ পদক দেওয়া হয়। আর ১১ জনের নাম অংশগ্রহণকারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
এসএফএফের তিব্বতি জওয়ানরা গোপন বাহিনী হিসেবে পরিচিত থাকায় কোনো বীরত্বসূচক পদক পাননি। এক হিসাব অনুসারে, অপারেশন ইগলে ৫৬ জন তিব্বতি নিহত হয়েছিলেন এবং প্রায় ১৫০ জন আহত হয়েছিলেন। ৫ শতাধিক তিব্বতি সেনা কেবল নগদ পুরস্কার পেয়ে ছিলেন যুদ্ধে সাহসিকতার জন্য। ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যের চক্রাতায় এক স্মৃতিস্তম্ভে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে প্রাণ হারানো সবার নাম খোদাই করা রয়েছে।
লেখক: মান আমান সিং ছিনা। তিনি ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সহকারী সম্পাদক। তিনি প্রতিরক্ষা এবং জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক প্রতিবেদন নিয়ে কাজ করেন। মান আমান সিং ছিনা সামরিক ইতিহাস এবং পাঞ্জাব রাজনীতির সম্পর্কিত বিষয়েও লেখেন। তিনি ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যুদ্ধ নিয়ে ‘সেভেন হিরোজ অব ১৯৭১’—নামে একটি বই লিখেছেন।
অনুবাদ: আব্দুর রহমান

রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত সহিংসতার বিরুদ্ধে দেশের সব নাগরিককে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। আজ শুক্রবার এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানায় সরকার। বিবৃতিতে সতর্ক করে বলা হয়েছে, গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িত ব্যক্তিদের ছাড় দেওয়া হবে না।
১ ঘণ্টা আগে
দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টারের কার্যালয়ে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর সংবাদমাধ্যম দুটির সম্পাদকদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ শুক্রবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে বিষয়টি জানানো হয়।
২ ঘণ্টা আগে
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধা এবং ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাক দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে শাহবাগ থেকে এই আহ্বান জানান বিক্ষোভকারীরা।
২ ঘণ্টা আগে
যমুনা নদীর ওপর নির্মিত ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ডুয়েলগেজ ডাবল লাইনের যমুনা রেলসেতুতে ট্রেন চলাচল করলেও প্রকল্পের আনুষঙ্গিক কিছু কাজ বাকি রয়েছে। তাই প্রকল্পের মেয়াদ আরও দেড় বছর বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
১২ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুলাই আন্দোলনের সম্মুখসারির সংগঠক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর প্রকাশের পর রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত সহিংসতার বিরুদ্ধে দেশের সব নাগরিককে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। আজ শুক্রবার এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানায় সরকার। বিবৃতিতে সতর্ক করে বলা হয়েছে, গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িত ব্যক্তিদের ছাড় দেওয়া হবে না।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের সকল নাগরিককে আহ্বান জানানো হচ্ছে—কয়েকজন বিচ্ছিন্ন উগ্র গোষ্ঠীর দ্বারা সংঘটিত সকল প্রকার সহিংসতার বিরুদ্ধে দৃঢ়তার সঙ্গে সতর্ক থাকুন।’ এতে আরও বলা হয়, ‘আমরা সহিংসতা, ভীতি প্রদর্শন, অগ্নিসংযোগ এবং জানমাল ধ্বংসের সকল কর্মকাণ্ডকে দৃঢ়ভাবে ও দ্ব্যর্থহীনভাবে নিন্দা জানাই।’
অন্তর্বর্তী সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘দেশের ইতিহাসের এই সংকটময় সময়ে আমরা একটি ঐতিহাসিক গণতান্ত্রিক রূপান্তরের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হচ্ছি। যারা বিশৃঙ্খলাকে পুঁজি হিসেবে নেয় এবং শান্তির পথকে উপেক্ষা করে—এমন অল্প কয়েকজনের কারণে এই অগ্রযাত্রা আমরা কোনোভাবেই ব্যাহত হতে দিতে পারি না এবং দেব না।’
নির্বাচন ও গণভোটের বিষয়ে সরকারের অবস্থান পরিষ্কার করে বলা হয়, ‘আসন্ন নির্বাচন ও গণভোট কেবল রাজনৈতিক অনুশীলন নয়; এগুলো একটি গুরুতর জাতীয় অঙ্গীকার। এই অঙ্গীকার অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িয়ে আছে সেই স্বপ্নের সঙ্গে, যার জন্য শহীদ শরিফ ওসমান হাদি তাঁর জীবন উৎসর্গ করেছেন। তাঁর আত্মত্যাগ ও স্মৃতির প্রতি সম্মান জানাতে হলে সংযম, দায়িত্বশীলতা এবং ঘৃণা প্রত্যাখ্যানের প্রতি অবিচল অঙ্গীকার প্রয়োজন।’
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘দ্য ডেইলি স্টার, প্রথম আলো ও নিউ এজের সাংবাদিকদের প্রতি আমরা বলতে চাই, আমরা আপনাদের পাশে আছি। আপনারা যে সন্ত্রাস ও সহিংসতার শিকার হয়েছেন, তার জন্য আমরা গভীরভাবে দুঃখিত। সন্ত্রাসের মুখেও আপনাদের সাহস ও সহনশীলতা জাতি প্রত্যক্ষ করেছে। সাংবাদিকদের ওপর হামলা মানেই সত্যের ওপর হামলা। আমরা আপনাদের পূর্ণ ন্যায়বিচারের আশ্বাস দিচ্ছি।’
ময়মনসিংহে একজনকে পিটিয়ে হত্যার বিষয়ে সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ময়মনসিংহে এক হিন্দু ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় আমরা গভীরভাবে নিন্দা জানাই। নতুন বাংলাদেশে এ ধরনের সহিংসতার কোনো স্থান নেই। এই নৃশংস অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।’
‘এই সংকটময় মুহূর্তে আমরা প্রত্যেক নাগরিকের প্রতি আহ্বান জানাই—সহিংসতা, উসকানি ও ঘৃণাকে প্রত্যাখ্যান ও প্রতিরোধের মাধ্যমে শহীদ হাদির প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করুন’—বলা হয় বিবৃতিতে।

জুলাই আন্দোলনের সম্মুখসারির সংগঠক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর প্রকাশের পর রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত সহিংসতার বিরুদ্ধে দেশের সব নাগরিককে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। আজ শুক্রবার এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানায় সরকার। বিবৃতিতে সতর্ক করে বলা হয়েছে, গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িত ব্যক্তিদের ছাড় দেওয়া হবে না।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের সকল নাগরিককে আহ্বান জানানো হচ্ছে—কয়েকজন বিচ্ছিন্ন উগ্র গোষ্ঠীর দ্বারা সংঘটিত সকল প্রকার সহিংসতার বিরুদ্ধে দৃঢ়তার সঙ্গে সতর্ক থাকুন।’ এতে আরও বলা হয়, ‘আমরা সহিংসতা, ভীতি প্রদর্শন, অগ্নিসংযোগ এবং জানমাল ধ্বংসের সকল কর্মকাণ্ডকে দৃঢ়ভাবে ও দ্ব্যর্থহীনভাবে নিন্দা জানাই।’
অন্তর্বর্তী সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘দেশের ইতিহাসের এই সংকটময় সময়ে আমরা একটি ঐতিহাসিক গণতান্ত্রিক রূপান্তরের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হচ্ছি। যারা বিশৃঙ্খলাকে পুঁজি হিসেবে নেয় এবং শান্তির পথকে উপেক্ষা করে—এমন অল্প কয়েকজনের কারণে এই অগ্রযাত্রা আমরা কোনোভাবেই ব্যাহত হতে দিতে পারি না এবং দেব না।’
নির্বাচন ও গণভোটের বিষয়ে সরকারের অবস্থান পরিষ্কার করে বলা হয়, ‘আসন্ন নির্বাচন ও গণভোট কেবল রাজনৈতিক অনুশীলন নয়; এগুলো একটি গুরুতর জাতীয় অঙ্গীকার। এই অঙ্গীকার অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িয়ে আছে সেই স্বপ্নের সঙ্গে, যার জন্য শহীদ শরিফ ওসমান হাদি তাঁর জীবন উৎসর্গ করেছেন। তাঁর আত্মত্যাগ ও স্মৃতির প্রতি সম্মান জানাতে হলে সংযম, দায়িত্বশীলতা এবং ঘৃণা প্রত্যাখ্যানের প্রতি অবিচল অঙ্গীকার প্রয়োজন।’
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘দ্য ডেইলি স্টার, প্রথম আলো ও নিউ এজের সাংবাদিকদের প্রতি আমরা বলতে চাই, আমরা আপনাদের পাশে আছি। আপনারা যে সন্ত্রাস ও সহিংসতার শিকার হয়েছেন, তার জন্য আমরা গভীরভাবে দুঃখিত। সন্ত্রাসের মুখেও আপনাদের সাহস ও সহনশীলতা জাতি প্রত্যক্ষ করেছে। সাংবাদিকদের ওপর হামলা মানেই সত্যের ওপর হামলা। আমরা আপনাদের পূর্ণ ন্যায়বিচারের আশ্বাস দিচ্ছি।’
ময়মনসিংহে একজনকে পিটিয়ে হত্যার বিষয়ে সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ময়মনসিংহে এক হিন্দু ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় আমরা গভীরভাবে নিন্দা জানাই। নতুন বাংলাদেশে এ ধরনের সহিংসতার কোনো স্থান নেই। এই নৃশংস অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।’
‘এই সংকটময় মুহূর্তে আমরা প্রত্যেক নাগরিকের প্রতি আহ্বান জানাই—সহিংসতা, উসকানি ও ঘৃণাকে প্রত্যাখ্যান ও প্রতিরোধের মাধ্যমে শহীদ হাদির প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করুন’—বলা হয় বিবৃতিতে।

এসএফএফ হয়তো এমন নিয়তি বরণই করে নিয়েছিল যে,১৯৭১ সালে তাদের যে কার্যক্রম তা কোনো দিনই আলোর মুখ দেখবে না। এই বাহিনীর সদস্যরা কোনো বীরত্ব পদক পাননি, তাদের কেবলই নগদ পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল। এমনকি তিব্বতিদের নিয়ে এসএফএফ গঠন করা ও নেতৃত্ব দেওয়া ভারতীয় সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল সুজান সিং উবানও তাঁর বই ‘ফ্য
১৫ ডিসেম্বর ২০২৪
দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টারের কার্যালয়ে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর সংবাদমাধ্যম দুটির সম্পাদকদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ শুক্রবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে বিষয়টি জানানো হয়।
২ ঘণ্টা আগে
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধা এবং ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাক দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে শাহবাগ থেকে এই আহ্বান জানান বিক্ষোভকারীরা।
২ ঘণ্টা আগে
যমুনা নদীর ওপর নির্মিত ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ডুয়েলগেজ ডাবল লাইনের যমুনা রেলসেতুতে ট্রেন চলাচল করলেও প্রকল্পের আনুষঙ্গিক কিছু কাজ বাকি রয়েছে। তাই প্রকল্পের মেয়াদ আরও দেড় বছর বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
১২ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টারের কার্যালয়ে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর সংবাদমাধ্যম দুটির সম্পাদকদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ শুক্রবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে বিষয়টি জানানো হয়।
প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয়ে বর্বরোচিত হামলার ঘটনায় পত্রিকা দুটির সম্পাদকদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।’
এতে আরও বলা হয়, ‘প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান ও ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্ফুজ আনামের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনাদের প্রতিষ্ঠান ও সংবাদকর্মীদের ওপর এই অনাকাঙ্ক্ষিত ও ন্যক্কারজনক হামলা আমাকে গভীরভাবে ব্যথিত করেছে। আপনাদের এই দুঃসময়ে সরকার আপনাদের পাশে আছে।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘দেশের শীর্ষস্থানীয় দুটি গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের ওপর এই হামলা স্বাধীন গণমাধ্যমের ওপর হামলার শামিল। এই ঘটনা দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা ও স্বাধীন সাংবাদিকতার পথে এক বিরাট বাধা সৃষ্টি করেছে। টেলিফোনে আলাপকালে সম্পাদকদের ও সংবাদমাধ্যমগুলোর পূর্ণ নিরাপত্তা এবং প্রয়োজনীয় অন্যান্য সহযোগিতার আশ্বাস দেন প্রধান উপদেষ্টা।’
শিগগির এই সম্পাদকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হবে বলেও জানান প্রধান উপদেষ্টা।

দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টারের কার্যালয়ে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর সংবাদমাধ্যম দুটির সম্পাদকদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ শুক্রবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে বিষয়টি জানানো হয়।
প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয়ে বর্বরোচিত হামলার ঘটনায় পত্রিকা দুটির সম্পাদকদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।’
এতে আরও বলা হয়, ‘প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান ও ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্ফুজ আনামের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনাদের প্রতিষ্ঠান ও সংবাদকর্মীদের ওপর এই অনাকাঙ্ক্ষিত ও ন্যক্কারজনক হামলা আমাকে গভীরভাবে ব্যথিত করেছে। আপনাদের এই দুঃসময়ে সরকার আপনাদের পাশে আছে।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘দেশের শীর্ষস্থানীয় দুটি গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের ওপর এই হামলা স্বাধীন গণমাধ্যমের ওপর হামলার শামিল। এই ঘটনা দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা ও স্বাধীন সাংবাদিকতার পথে এক বিরাট বাধা সৃষ্টি করেছে। টেলিফোনে আলাপকালে সম্পাদকদের ও সংবাদমাধ্যমগুলোর পূর্ণ নিরাপত্তা এবং প্রয়োজনীয় অন্যান্য সহযোগিতার আশ্বাস দেন প্রধান উপদেষ্টা।’
শিগগির এই সম্পাদকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হবে বলেও জানান প্রধান উপদেষ্টা।

এসএফএফ হয়তো এমন নিয়তি বরণই করে নিয়েছিল যে,১৯৭১ সালে তাদের যে কার্যক্রম তা কোনো দিনই আলোর মুখ দেখবে না। এই বাহিনীর সদস্যরা কোনো বীরত্ব পদক পাননি, তাদের কেবলই নগদ পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল। এমনকি তিব্বতিদের নিয়ে এসএফএফ গঠন করা ও নেতৃত্ব দেওয়া ভারতীয় সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল সুজান সিং উবানও তাঁর বই ‘ফ্য
১৫ ডিসেম্বর ২০২৪
রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত সহিংসতার বিরুদ্ধে দেশের সব নাগরিককে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। আজ শুক্রবার এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানায় সরকার। বিবৃতিতে সতর্ক করে বলা হয়েছে, গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িত ব্যক্তিদের ছাড় দেওয়া হবে না।
১ ঘণ্টা আগে
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধা এবং ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাক দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে শাহবাগ থেকে এই আহ্বান জানান বিক্ষোভকারীরা।
২ ঘণ্টা আগে
যমুনা নদীর ওপর নির্মিত ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ডুয়েলগেজ ডাবল লাইনের যমুনা রেলসেতুতে ট্রেন চলাচল করলেও প্রকল্পের আনুষঙ্গিক কিছু কাজ বাকি রয়েছে। তাই প্রকল্পের মেয়াদ আরও দেড় বছর বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
১২ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধা এবং ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাক দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে শাহবাগ থেকে এই আহ্বান জানান বিক্ষোভকারীরা।
শরিফ ওসমান বিন হাদির হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে আজ শুক্রবার সকাল থেকে শাহবাগে অবস্থান নিতে থাকেন ছাত্র-জনতা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে বিক্ষোভ থেকে ভারতীয় পণ্য বয়কটের আহ্বান জানানো হয়। এ সময় বিক্ষোভকারীরা ‘ভারতীয় পণ্য, বয়কট, বয়কট’—স্লোগান দিতে থাকেন।
হাদি মারা যাওয়ার খবর ঘোষণার পর গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন ছাত্র-জনতা। পরে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে ছাত্র-জনতার বিভিন্ন অংশ সেখানে যোগ দেয়। আজ সকাল থেকেও ছাত্র-জনতা শাহবাগে উপস্থিত হন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের সঙ্গে অনেকেই যোগ দিচ্ছেন।
এ দিকে ভারতীয় আধিপত্যবাদবিরোধী সংগ্রামের সেনানী শহীদ শরিফ ওসমান বিন হাদিকে ‘আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী কর্তৃক গুলি করে হত্যার প্রতিবাদে’—আজ বেলা ৩টায় শাহবাগে আধিপত্যবাদবিরোধী সমাবেশের ঘোষণা দেয় ডাকসু, ইসলামি ছাত্রশিবির ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
গতকাল রাতে শাহবাগের বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন কার্যত একটি যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া ছাত্র-তরুণ এবং দেশপ্রেমিক নাগরিকদের জীবন আজ হুমকির মুখে। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে আমাদের কেউ পরাজিত করতে পারবে না।’
নাহিদ বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় যেসব স্পটে আপনারা নেমে এসেছিলেন—যেমন চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বরিশাল, খুলনা, রংপুর এবং ঢাকায় যাত্রাবাড়ী ও উত্তরাসহ সব জায়গায় অবস্থান কর্মসূচি গ্রহণ করুন।’ শাহবাগে বিক্ষোভ অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন তিনি।
গতকাল রাতে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী শহীদ শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর সংবাদে উত্তাল হয়ে উঠে রাজধানী ঢাকা। বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে ছাত্র-জনতা। বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম সংগঠক শরিফ ওসমান হাদি গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর বিজয়নগরে গণসংযোগকালে চলন্ত রিকশায় আততায়ীর গুলিতে আহত হন। গুলিটি তাঁর মাথায় লাগে। ঢাকা এবং পরে সিঙ্গাপুরে দীর্ঘ চিকিৎসা শেষে বৃহস্পতিবার রাতে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর এই মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ঢাকা এখন এক উত্তাল ও থমথমে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
ওসমান হাদির মরদেহ আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় সিঙ্গাপুর থেকে দেশে এসে পৌঁছাবে বলে জানা গেছে।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধা এবং ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাক দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে শাহবাগ থেকে এই আহ্বান জানান বিক্ষোভকারীরা।
শরিফ ওসমান বিন হাদির হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে আজ শুক্রবার সকাল থেকে শাহবাগে অবস্থান নিতে থাকেন ছাত্র-জনতা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে বিক্ষোভ থেকে ভারতীয় পণ্য বয়কটের আহ্বান জানানো হয়। এ সময় বিক্ষোভকারীরা ‘ভারতীয় পণ্য, বয়কট, বয়কট’—স্লোগান দিতে থাকেন।
হাদি মারা যাওয়ার খবর ঘোষণার পর গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন ছাত্র-জনতা। পরে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে ছাত্র-জনতার বিভিন্ন অংশ সেখানে যোগ দেয়। আজ সকাল থেকেও ছাত্র-জনতা শাহবাগে উপস্থিত হন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের সঙ্গে অনেকেই যোগ দিচ্ছেন।
এ দিকে ভারতীয় আধিপত্যবাদবিরোধী সংগ্রামের সেনানী শহীদ শরিফ ওসমান বিন হাদিকে ‘আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী কর্তৃক গুলি করে হত্যার প্রতিবাদে’—আজ বেলা ৩টায় শাহবাগে আধিপত্যবাদবিরোধী সমাবেশের ঘোষণা দেয় ডাকসু, ইসলামি ছাত্রশিবির ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
গতকাল রাতে শাহবাগের বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন কার্যত একটি যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া ছাত্র-তরুণ এবং দেশপ্রেমিক নাগরিকদের জীবন আজ হুমকির মুখে। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে আমাদের কেউ পরাজিত করতে পারবে না।’
নাহিদ বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় যেসব স্পটে আপনারা নেমে এসেছিলেন—যেমন চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বরিশাল, খুলনা, রংপুর এবং ঢাকায় যাত্রাবাড়ী ও উত্তরাসহ সব জায়গায় অবস্থান কর্মসূচি গ্রহণ করুন।’ শাহবাগে বিক্ষোভ অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন তিনি।
গতকাল রাতে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী শহীদ শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর সংবাদে উত্তাল হয়ে উঠে রাজধানী ঢাকা। বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে ছাত্র-জনতা। বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম সংগঠক শরিফ ওসমান হাদি গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর বিজয়নগরে গণসংযোগকালে চলন্ত রিকশায় আততায়ীর গুলিতে আহত হন। গুলিটি তাঁর মাথায় লাগে। ঢাকা এবং পরে সিঙ্গাপুরে দীর্ঘ চিকিৎসা শেষে বৃহস্পতিবার রাতে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর এই মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ঢাকা এখন এক উত্তাল ও থমথমে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
ওসমান হাদির মরদেহ আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় সিঙ্গাপুর থেকে দেশে এসে পৌঁছাবে বলে জানা গেছে।

এসএফএফ হয়তো এমন নিয়তি বরণই করে নিয়েছিল যে,১৯৭১ সালে তাদের যে কার্যক্রম তা কোনো দিনই আলোর মুখ দেখবে না। এই বাহিনীর সদস্যরা কোনো বীরত্ব পদক পাননি, তাদের কেবলই নগদ পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল। এমনকি তিব্বতিদের নিয়ে এসএফএফ গঠন করা ও নেতৃত্ব দেওয়া ভারতীয় সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল সুজান সিং উবানও তাঁর বই ‘ফ্য
১৫ ডিসেম্বর ২০২৪
রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত সহিংসতার বিরুদ্ধে দেশের সব নাগরিককে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। আজ শুক্রবার এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানায় সরকার। বিবৃতিতে সতর্ক করে বলা হয়েছে, গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িত ব্যক্তিদের ছাড় দেওয়া হবে না।
১ ঘণ্টা আগে
দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টারের কার্যালয়ে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর সংবাদমাধ্যম দুটির সম্পাদকদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ শুক্রবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে বিষয়টি জানানো হয়।
২ ঘণ্টা আগে
যমুনা নদীর ওপর নির্মিত ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ডুয়েলগেজ ডাবল লাইনের যমুনা রেলসেতুতে ট্রেন চলাচল করলেও প্রকল্পের আনুষঙ্গিক কিছু কাজ বাকি রয়েছে। তাই প্রকল্পের মেয়াদ আরও দেড় বছর বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
১২ ঘণ্টা আগেতৌফিকুল ইসলাম, ঢাকা

যমুনা নদীর ওপর নির্মিত ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ডুয়েলগেজ ডাবল লাইনের যমুনা রেলসেতুতে ট্রেন চলাচল করলেও প্রকল্পের আনুষঙ্গিক কিছু কাজ বাকি রয়েছে। তাই প্রকল্পের মেয়াদ আরও দেড় বছর বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
যমুনা রেলসেতু প্রকল্পের মেয়াদ এই ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা। তবে নতুন প্রস্তাবে এই মেয়াদ ২০২৭ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধনীতে এই প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই সংশোধনীতে প্রকল্প ব্যয় ২৬৮ দশমিক ৩৫ কোটি টাকা কমিয়ে ১৬ হাজার ৫১২ কোটি ৬০ লাখ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রকল্প সূত্র জানায়, যমুনা রেলসেতুর কাঠামো ও রেললাইন নির্মাণকাজ শেষ হওয়ায় চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি বাণিজ্যিকভাবে ট্রেন চলাচল উদ্বোধন করা হয়। তবে ঠিকাদারের কাজের বিল বকেয়া রয়েছে। সংকেত (সিগন্যালিং) ব্যবস্থার কিছু কাজ এবং নতুন একটি প্যাকেজের আওতায় অবকাঠামো নির্মাণ-কাজ এখনো বাকি।
বিশেষ করে নতুন প্যাকেজের দরপত্র প্রক্রিয়াই শুরু করা যায়নি। ফলে প্রকল্পের মেয়াদ আরও দেড় বছর বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রকল্পের মূল উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনায় (ডিপিপি) যমুনা রেলসেতু প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়েছিল ২০১৬ সালের জুলাই থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। পরে প্রথম সংশোধনীতে সেই মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়।
প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা জানান, ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজের আমদানি কার্গো কমপ্লেক্সে অগ্নিকাণ্ডে এই প্রকল্পের ব্রিজ লাইটিংয়ের কিছু মালামাল পুড়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত এসব মালামাল ঠিকাদার নিজ দায়িত্বে আবার সংগ্রহ করে সরবরাহ করবে। এ ছাড়া ওই অগ্নিকাণ্ডের পর আমদানি কার্গো কমপ্লেক্স কিছুদিন বন্ধ থাকায় সিগন্যালিং-সংক্রান্ত কিছু মালামাল আমদানিতে বিলম্ব হয়েছে। পরে রুট পরিবর্তন করে এসব মালামাল অন্য বন্দর দিয়ে আনার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, এ কারণে কাজ সম্পন্ন করতে অতিরিক্ত সময় প্রয়োজন হচ্ছে।
প্রকল্পের আওতায় একটি বিশেষ নির্মাণ প্যাকেজের (ডব্লিউডি-৫) অধীনে রেলওয়ে সেতু জাদুঘর, পরিদর্শন বাংলো, ক্যাফেটেরিয়া, অভ্যন্তরীণ সড়ক, মাটি ভরাট ও ড্রেনেজ নির্মাণের পরিকল্পনা ছিল। এর প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছিল ৭৪ কোটি টাকা। তবে ২০২৫ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এই প্যাকেজে পরিবর্তন আনা হয়। সংশোধিত পরিকল্পনায় রেলওয়ে সেতু জাদুঘর বাদ দিয়ে পরিদর্শন বাংলো, অভ্যন্তরীণ সড়ক, ড্রেনেজ এবং সয়দাবাদ রেলওয়ে স্টেশনের অবকাঠামো নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরিবর্তিত এই প্যাকেজে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৫৪ কোটি টাকা। তবে এখনো এই কাজের দরপত্র আহ্বান করা হয়নি। দরপত্রপ্রক্রিয়া সম্পন্ন এবং নির্মাণকাজ শেষ করতে অতিরিক্ত সময় লাগবে।
এদিকে প্রকল্পের আওতায় নতুন করে ‘সিসিটিভি নজরদারি ব্যবস্থা’ শীর্ষক একটি আলাদা প্যাকেজ যুক্ত করা হয়েছে। এই প্যাকেজ বাস্তবায়নের কাজও বাকি রয়েছে।
প্রকল্প সূত্র জানায়, সার্বিকভাবে যমুনা রেলসেতু প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ৯৯ দশমিক ২৮ শতাংশ এবং আর্থিক অগ্রগতি ৮২ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে যমুনা রেলসেতু প্রকল্পের পরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসউদুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধনী প্রস্তাব ইতিমধ্যে রেলপথ উপদেষ্টার অনুমোদন পেয়েছে। এখন এটি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হবে। প্রকল্পের ভেতর এখনো কিছু ছোটখাটো কাজ বাকি থাকায় চূড়ান্তভাবে কাজ শেষ করতে এই অতিরিক্ত সময় প্রয়োজন। তিনি বলেন, ডব্লিউডি-৫ প্যাকেজের কাজ শেষ করতে আনুমানিক ছয় মাস লাগতে পারে। তবে এ নিয়ে বড় কোনো জটিলতা নেই। সিগন্যালিংয়ের কাজ আগামী মধ্য জানুয়ারিতে শেষ হবে। বাড়তি সময়ের মধ্যেই প্রকল্পের সব কাজ শেষ হবে বলে তাঁরা আশাবাদী।
প্রকল্পের ব্যয় কমেছে
প্রকল্পের আওতায় যমুনা রেলসেতুসহ ভায়াডাক্ট, অ্যাপ্রোচ এমব্যাংকমেন্ট, লুপ, সাইডিংসহ মোট ৩০ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার রেললাইন স্থাপন করা হয়েছে। সয়দাবাদ ও ইব্রাহিমাবাদ স্টেশন আধুনিকীকরণ, ইয়ার্ড রিমডেলিং, সিগন্যালিং ও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং সেতু রক্ষণাবেক্ষণে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য অফিস ও আবাসন নির্মাণ করা হয়েছে।
মূল ডিপিপিতে প্রকল্পের ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছিল ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি ৭ লাখ টাকা। পরে প্রথম সংশোধনীতে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৫ লাখ টাকায়। তবে দ্বিতীয় সংশোধনীতে প্রকল্প ব্যয় ২৬৮ দশমিক ৩৫ কোটি টাকা কমিয়ে ১৬ হাজার ৫১২ কোটি ৬০ লাখ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে।
এই প্রকল্পে ৪ হাজার ৬০৪ দশমিক ৪১ কোটি টাকা অর্থায়ন করা হয়েছে দেশীয় উৎস থেকে এবং বাকি ১১ হাজার ৯০৮ দশমিক ১১ কোটি টাকা ঋণ হিসেবে দিয়েছে জাপানের উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জাইকা।
১৯৯৮ সালে যমুনা নদীর ওপর নির্মিত বহুমুখী সেতু দিয়ে ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ট্রেন চলাচল শুরু হয়। তবে ২০০৮ সালে সেতুতে ফাটল দেখা দিলে ট্রেনের গতি সীমিত করা হয়। এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানে যমুনা নদীর ওপর আলাদা রেলসেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয় তৎকালীন সরকার।
প্রকল্পের সার্বিক বিষয়ে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, মূল সেতু চালু হওয়ায় বড় অর্জন হয়েছে। তবে সিগন্যালিং, স্টেশন অবকাঠামো ও নিরাপত্তাব্যবস্থার মতো বিষয়গুলো সম্পূর্ণ না হলে কাঙ্ক্ষিত সুফল পুরোপুরি পাওয়া যাবে না। তাই প্রকল্পের মেয়াদ যৌক্তিকভাবে বাড়িয়ে কাজ শেষ করাই বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত। তবে পরিকল্পিত সময়ে কাজ শেষ করতে না পারা একটা অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে, এটা বন্ধ করা দরকার।
যমুনা নদীর ওপর নির্মিত ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ডুয়েলগেজ ডাবল লাইনের যমুনা রেলসেতুতে ট্রেন চলাচল করলেও প্রকল্পের আনুষঙ্গিক কিছু কাজ বাকি রয়েছে। তাই প্রকল্পের মেয়াদ আরও দেড় বছর বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
যমুনা রেলসেতু প্রকল্পের মেয়াদ এই ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা। তবে নতুন প্রস্তাবে এই মেয়াদ ২০২৭ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধনীতে এই প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই সংশোধনীতে প্রকল্প ব্যয় ২৬৮ দশমিক ৩৫ কোটি টাকা কমিয়ে ১৬ হাজার ৫১২ কোটি ৬০ লাখ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রকল্প সূত্র জানায়, যমুনা রেলসেতুর কাঠামো ও রেললাইন নির্মাণকাজ শেষ হওয়ায় চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি বাণিজ্যিকভাবে ট্রেন চলাচল উদ্বোধন করা হয়। তবে ঠিকাদারের কাজের বিল বকেয়া রয়েছে। সংকেত (সিগন্যালিং) ব্যবস্থার কিছু কাজ এবং নতুন একটি প্যাকেজের আওতায় অবকাঠামো নির্মাণ-কাজ এখনো বাকি।
বিশেষ করে নতুন প্যাকেজের দরপত্র প্রক্রিয়াই শুরু করা যায়নি। ফলে প্রকল্পের মেয়াদ আরও দেড় বছর বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রকল্পের মূল উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনায় (ডিপিপি) যমুনা রেলসেতু প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়েছিল ২০১৬ সালের জুলাই থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। পরে প্রথম সংশোধনীতে সেই মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়।
প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা জানান, ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজের আমদানি কার্গো কমপ্লেক্সে অগ্নিকাণ্ডে এই প্রকল্পের ব্রিজ লাইটিংয়ের কিছু মালামাল পুড়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত এসব মালামাল ঠিকাদার নিজ দায়িত্বে আবার সংগ্রহ করে সরবরাহ করবে। এ ছাড়া ওই অগ্নিকাণ্ডের পর আমদানি কার্গো কমপ্লেক্স কিছুদিন বন্ধ থাকায় সিগন্যালিং-সংক্রান্ত কিছু মালামাল আমদানিতে বিলম্ব হয়েছে। পরে রুট পরিবর্তন করে এসব মালামাল অন্য বন্দর দিয়ে আনার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, এ কারণে কাজ সম্পন্ন করতে অতিরিক্ত সময় প্রয়োজন হচ্ছে।
প্রকল্পের আওতায় একটি বিশেষ নির্মাণ প্যাকেজের (ডব্লিউডি-৫) অধীনে রেলওয়ে সেতু জাদুঘর, পরিদর্শন বাংলো, ক্যাফেটেরিয়া, অভ্যন্তরীণ সড়ক, মাটি ভরাট ও ড্রেনেজ নির্মাণের পরিকল্পনা ছিল। এর প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছিল ৭৪ কোটি টাকা। তবে ২০২৫ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এই প্যাকেজে পরিবর্তন আনা হয়। সংশোধিত পরিকল্পনায় রেলওয়ে সেতু জাদুঘর বাদ দিয়ে পরিদর্শন বাংলো, অভ্যন্তরীণ সড়ক, ড্রেনেজ এবং সয়দাবাদ রেলওয়ে স্টেশনের অবকাঠামো নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরিবর্তিত এই প্যাকেজে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৫৪ কোটি টাকা। তবে এখনো এই কাজের দরপত্র আহ্বান করা হয়নি। দরপত্রপ্রক্রিয়া সম্পন্ন এবং নির্মাণকাজ শেষ করতে অতিরিক্ত সময় লাগবে।
এদিকে প্রকল্পের আওতায় নতুন করে ‘সিসিটিভি নজরদারি ব্যবস্থা’ শীর্ষক একটি আলাদা প্যাকেজ যুক্ত করা হয়েছে। এই প্যাকেজ বাস্তবায়নের কাজও বাকি রয়েছে।
প্রকল্প সূত্র জানায়, সার্বিকভাবে যমুনা রেলসেতু প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ৯৯ দশমিক ২৮ শতাংশ এবং আর্থিক অগ্রগতি ৮২ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে যমুনা রেলসেতু প্রকল্পের পরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসউদুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধনী প্রস্তাব ইতিমধ্যে রেলপথ উপদেষ্টার অনুমোদন পেয়েছে। এখন এটি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হবে। প্রকল্পের ভেতর এখনো কিছু ছোটখাটো কাজ বাকি থাকায় চূড়ান্তভাবে কাজ শেষ করতে এই অতিরিক্ত সময় প্রয়োজন। তিনি বলেন, ডব্লিউডি-৫ প্যাকেজের কাজ শেষ করতে আনুমানিক ছয় মাস লাগতে পারে। তবে এ নিয়ে বড় কোনো জটিলতা নেই। সিগন্যালিংয়ের কাজ আগামী মধ্য জানুয়ারিতে শেষ হবে। বাড়তি সময়ের মধ্যেই প্রকল্পের সব কাজ শেষ হবে বলে তাঁরা আশাবাদী।
প্রকল্পের ব্যয় কমেছে
প্রকল্পের আওতায় যমুনা রেলসেতুসহ ভায়াডাক্ট, অ্যাপ্রোচ এমব্যাংকমেন্ট, লুপ, সাইডিংসহ মোট ৩০ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার রেললাইন স্থাপন করা হয়েছে। সয়দাবাদ ও ইব্রাহিমাবাদ স্টেশন আধুনিকীকরণ, ইয়ার্ড রিমডেলিং, সিগন্যালিং ও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং সেতু রক্ষণাবেক্ষণে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য অফিস ও আবাসন নির্মাণ করা হয়েছে।
মূল ডিপিপিতে প্রকল্পের ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছিল ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি ৭ লাখ টাকা। পরে প্রথম সংশোধনীতে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৫ লাখ টাকায়। তবে দ্বিতীয় সংশোধনীতে প্রকল্প ব্যয় ২৬৮ দশমিক ৩৫ কোটি টাকা কমিয়ে ১৬ হাজার ৫১২ কোটি ৬০ লাখ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে।
এই প্রকল্পে ৪ হাজার ৬০৪ দশমিক ৪১ কোটি টাকা অর্থায়ন করা হয়েছে দেশীয় উৎস থেকে এবং বাকি ১১ হাজার ৯০৮ দশমিক ১১ কোটি টাকা ঋণ হিসেবে দিয়েছে জাপানের উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জাইকা।
১৯৯৮ সালে যমুনা নদীর ওপর নির্মিত বহুমুখী সেতু দিয়ে ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ট্রেন চলাচল শুরু হয়। তবে ২০০৮ সালে সেতুতে ফাটল দেখা দিলে ট্রেনের গতি সীমিত করা হয়। এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানে যমুনা নদীর ওপর আলাদা রেলসেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয় তৎকালীন সরকার।
প্রকল্পের সার্বিক বিষয়ে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, মূল সেতু চালু হওয়ায় বড় অর্জন হয়েছে। তবে সিগন্যালিং, স্টেশন অবকাঠামো ও নিরাপত্তাব্যবস্থার মতো বিষয়গুলো সম্পূর্ণ না হলে কাঙ্ক্ষিত সুফল পুরোপুরি পাওয়া যাবে না। তাই প্রকল্পের মেয়াদ যৌক্তিকভাবে বাড়িয়ে কাজ শেষ করাই বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত। তবে পরিকল্পিত সময়ে কাজ শেষ করতে না পারা একটা অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে, এটা বন্ধ করা দরকার।

এসএফএফ হয়তো এমন নিয়তি বরণই করে নিয়েছিল যে,১৯৭১ সালে তাদের যে কার্যক্রম তা কোনো দিনই আলোর মুখ দেখবে না। এই বাহিনীর সদস্যরা কোনো বীরত্ব পদক পাননি, তাদের কেবলই নগদ পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল। এমনকি তিব্বতিদের নিয়ে এসএফএফ গঠন করা ও নেতৃত্ব দেওয়া ভারতীয় সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল সুজান সিং উবানও তাঁর বই ‘ফ্য
১৫ ডিসেম্বর ২০২৪
রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত সহিংসতার বিরুদ্ধে দেশের সব নাগরিককে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। আজ শুক্রবার এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানায় সরকার। বিবৃতিতে সতর্ক করে বলা হয়েছে, গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িত ব্যক্তিদের ছাড় দেওয়া হবে না।
১ ঘণ্টা আগে
দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টারের কার্যালয়ে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর সংবাদমাধ্যম দুটির সম্পাদকদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ শুক্রবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে বিষয়টি জানানো হয়।
২ ঘণ্টা আগে
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধা এবং ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাক দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে শাহবাগ থেকে এই আহ্বান জানান বিক্ষোভকারীরা।
২ ঘণ্টা আগে