Ajker Patrika

জেলে বসে সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
জেলে বসে সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণ

‘জঙ্গি আল আমিন কারাগারের মতো সুরক্ষিত জায়গায় থেকে অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন ব্যবহার করে কাশিমপুর কারাগারের কারারক্ষী নিজাম উদ্দিনের সহায়তায় পলাতক আসামি আনোয়ার আলী হৃদয়ের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করত।’ পুলিশ সদর দপ্তরে গত ২৫ এপ্রিল পাঠানো ঢাকার মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। এই তালিকায় যেমন জঙ্গিদের নাম আছে, তেমনি আছেন এমএলএম কোম্পানি ডেসটিনির মালিক রফিকুল আমীনেরা। 

আর প্রভাবশালী বন্দীরা মূলত বিপুল অর্থের বিনিময়ে কারাগারের একশ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারীকে এই কাজে লাগিয়ে নিজেদের সাম্রাজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন। নিরাপত্তা বিশ্লেষকেরা বলছেন, এ কারণে ওই হাইপ্রোফাইল বন্দীদের কারাগারে আটক রাখার মূল্য উদ্দেশ্যই ব্যর্থ হচ্ছে। গোয়েন্দা প্রতিবেদন ও কারা অধিদপ্তরের প্রতিবেদনে কারাগার ও প্রিজন্স সেলের কারা এসব অনিয়মের সঙ্গে জড়িত, তা উঠে এসেছে। যদিও তাঁদের তেমন কোনো শাস্তির কথা এখনো শোনা যায়নি। 

বিভিন্ন সময় গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ ও অনুসন্ধানের বরাত দিয়ে পুলিশ সদর দপ্তরে পাঠানো গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়, কাশিমপুর কারাগারে বন্দী নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবির নেতা আল আমিন, নাহিদ তাসনিম, আবু সাঈদ ও ফয়সাল বাইরে থাকা জঙ্গি আসিফুর রহমান আসিফের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করতেন। কারাবন্দী জঙ্গিদের নির্দেশনায় আনোয়ার আলী, হাফিজুল শেখ, আবু সালেহ, সোহেলসহ অজ্ঞাতনামা জঙ্গিরা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করত। অর্থ সংগ্রহ করত। 

সেই অর্থের অংশ কাশিমপুর কারাগারের কারারক্ষী নিজাম উদ্দিন, মিন্টু মিয়া, কয়েদি সামিউল, শরিফুল, শাহীন এবং কারাগারের খাদ্য সরবরাহের ভ্যানচালক আলালের সহযোগিতায় জেএমবির শীর্ষ নেতা নাহিদ তাসনীম, আল আমিন, আবু সাঈদ ও ফয়সালের কাছে পাঠাত। বাইরে থাকা জঙ্গিদের গ্রেপ্তারের পর তাদের হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রামসহ বিভিন্ন অ্যাপসের কথোপকথন, খুদে বার্তা, ভয়েস বার্তা ও অন্যান্য এসএমএস পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, তা ছিল কারাবন্দী জঙ্গিদের। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, এসব ঘটনার সঙ্গে মূলত জড়িত থাকে কারারক্ষীরা। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও এসব টাকার ভাগ পান। বড় থেকে ছোট–সবাই দুর্নীতিগ্রস্ত। হাইসিকিউরিটি জেলে বসে জঙ্গিরা যদি এমন সুবিধা পায়, তাহলে ভয়ানক আতঙ্কের বিষয়। 

যদিও কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার গিয়াস উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনকে উড়িয়ে দিচ্ছি না। কারাগারের ভেতর নিয়মিত তল্লাশি চালানো হয়। অনেক আগে ২-১ বার মোবাইল কিংবা মাদক পাওয়া গেছে। তখন বন্দীরা আদালতে যেত। কিন্তু এখন তো কোর্ট বন্ধ। আদালতে না যাওয়ায় এগুলোর সুযোগও নেই। ফলে এ ধরনের ঘটনা নাই বললেই চলে।’ সব জায়গায় কিছু দুষ্ট লোক থাকে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কারাগারে জ্যামার আছে। কিন্তু জ্যামার তো মোবাইলের নেটওয়ার্ক পুরোপুরি বন্ধ করে দেয় না। জ্যামার বিঘ্ন ঘটনায়। তারপরও আমরা নিজেদের কর্মচারীদের তল্লাশি করেই ভেতরে ঢোকাই। এরপর কারাগারের ভেতরেও মাঝেমধ্যে ঝটিকা অভিযান চালাই।’ কারাগারের ভেতরে থেকে অবৈধ কার্যক্রম পরিচালনার ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘গোয়েন্দা সংস্থা তদন্ত করছে। গাজীপুরের পুলিশও তদন্ত করে দেখছে। আমরা কারাগারে বিধিবহির্ভূত কোনো কর্মকাণ্ড চলতে দেব না। তার কোনো সুযোগও নেই।’ 

এদিকে, রফিকুল আমীন কারা অধিদপ্তরের তদন্ত কমিটির কাছে বলেছেন, তিনি বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে ৫-১০ মিনিটের কয়েকটি অডিও কলে সংযুক্ত ছিলেন। সেখানে রাষ্ট্র কিংবা সমাজবিরোধী কোনো বক্তব্য ছিল না। রফিকুল আমীন বলেছেন, ঘটনাটি প্রকাশ ও প্রচার করেছেন তাঁর কোম্পানির সাবেক সচিব মিজানুর রহমান ও আরও কিছু পথভ্রষ্ট বিনিয়োগকারী। মোবাইল ফোন সংগ্রহের ব্যাপারে তিনি বলেন, আউটডোরে রেগুলার চেকআপের সময় শাহীন নামে এক বিনিয়োগকারী স্যামসাং বাটন ফোনটি তাঁকে দেন। মোবাইল নিয়ে প্রবেশের সময় প্রিজন্স সেলের কোনো কর্মচারী তাঁকে তল্লাশি করেননি। এ ছাড়া বিশ্বনাথ পোদ্দার নামে একজন ব্যক্তি তাঁর কাছে আসতেন। তিনি ওষুধপথ্য নিয়ে আসতেন।’

কারাগারে বসে ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড পরিচালনার ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর আবেদন করেছিলেন উল্লেখ করে রফিকুল আমীন বলেছেন, ‘তাঁকে বিশেষ কারাগারে রেখে ফোন ব্যবহার করতে দেওয়া, ফোনে মিটিং করা, ব্যবসায়িক মিটিং, রেজল্যুশন সই করার অনুমতি দেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর আবেদন পাঠিয়েছিলেন। আবেদনপত্রটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগে অপেক্ষমাণ। তাই সরল বিশ্বাসে করা তাঁর মোবাইল ফোনে মিটিং করা আইন ভঙ্গ হয়েছে বলে কখনো মনে হয়নি।’

প্রিজন্স সেলে বসে ডেসটিনির এমডি রফিকুল আমীনের জুম মিটিংয়ের ব্যাপারে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘টাকার বিনিময়ে এসব অপকর্ম হয়। কারাগারে বসেও যদি একজন অপরাধী বিধিবহির্ভূত কর্মকাণ্ড চালাতে পারে, তাহলে কারাগারের মূল উদ্দেশ্যই ব্যাহত হয়। শুধু কারারক্ষীদের মধ্যে শাস্তি সীমাবন্ধ না রেখে সর্বস্তরের অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।’ 

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কারাবন্দী ডেসটিনি ২০০০ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমীনের দুই মাসে পাঁচবার জুমে মিটিং করার ঘটনায় ১২ কারারক্ষীর জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে কারা অধিদপ্তরের তদন্ত কমিটি। চারজন ডেপুটি জেলার ও একজন প্রধান কারারক্ষীকে ভবিষ্যতের জন্য কঠোরভাবে সতর্ক করা হয়। ঢাকা বিভাগের কারা উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি-প্রিজন) তৌহিদুল ইসলামকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। প্রিজন্স সেলে সিসি ক্যামেরা স্থাপন, কারাগারে লোকবল বৃদ্ধিসহ তদন্ত কমিটি ১৯ দফা পরামর্শ দেয়। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকায় ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, পাকিস্তানের স্পিকার ও ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ৩৮
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, পাকিস্তান পার্লামেন্টের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক ও ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিয়নপো ডি. এন. ধুংগেল। ছবি: সংগৃহীত
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, পাকিস্তান পার্লামেন্টের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক ও ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিয়নপো ডি. এন. ধুংগেল। ছবি: সংগৃহীত

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শেষ বিদায়ে অংশ নিতে এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় অনুষ্ঠেয় জানাজায় যোগ দিতে ঢাকায় পৌঁছেছেন বিভিন্ন দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি ও কূটনীতিকেরা। আজ বুধবার সকাল থেকেই বিদেশি অতিথিরা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করতে শুরু করেন। পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পিকার, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা খালেদা জিয়ার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে বাংলাদেশে পা রেখেছেন।

আজ বুধবার বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে পাকিস্তান সরকারের বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে ঢাকায় পা রাখেন দেশটির জাতীয় পরিষদের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক। ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তান হাইকমিশনের প্রেস কাউন্সিলর ফাসিহ উল্লাহ খান জানান, বিমানবন্দরে স্পিকারকে স্বাগত জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। বিমানবন্দরের মুখপাত্র ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মাসুদ নিশ্চিত করেছেন যে, স্পিকারকে বহনকারী ফ্লাইটটি নির্ধারিত সময়েই অবতরণ করে।

এর কিছুক্ষণ আগে, বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে একটি বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় পৌঁছান ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর। তাঁকে বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। ভারতের পক্ষ থেকে এই উচ্চপর্যায়ের জানাজায় অংশগ্রহণকে দক্ষিণ এশিয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন থেকেও বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

ভুটান সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে বেগম খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে সকালে ঢাকায় এসে পৌঁছান দেশটির পররাষ্ট্র ও বৈদেশিক বাণিজ্য মন্ত্রী লিয়নপো ডি. এন. ধুংগেল। বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক এস এম সামাদ জানান, বিমানবন্দরে ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভুটানের রাষ্ট্রদূত এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা স্বাগত জানান।

আজ দুপুর ২টায় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বেগম খালেদা জিয়ার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এই জানাজায় অংশ নিতে ইতিমধ্যে দেশি-বিদেশি রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক এবং দেশের দূর-দূরান্ত থেকে আসা হাজার হাজার সাধারণ মানুষের সমাগম শুরু হয়েছে। বিদেশি প্রতিনিধিরা জানাজায় উপস্থিত থেকে কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।

বিএনপি চেয়ারপারসনের এই রাষ্ট্রীয় জানাজাকে কেন্দ্র করে মানিক মিয়া এভিনিউ ও আশপাশের এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘খালেদা জিয়াকে এভাবে বিদায় দিতে হবে ভাবিনি’

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ১৪
সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা
সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রিত্বের ভার বহন করেছিলেন তিনবার। গণতন্ত্রের আন্দোলনে ছিলেন আপোসহীন নেত্রী। তাঁর শেষ বিদায়ে আজ দেশ শোকাহত। আর শোক ধারণ করে হাজারো মানুষের ভিড় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে। যেখানে আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বাদ জোহর আনুমানিক বেলা ২টার দিকে অনুষ্ঠিত হবে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা।

সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা
সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা

জানাজায় অংশ নিতে সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। এছাড়াও বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীদেরও। কেউ চোখের পানি ধরে রাখতে পারছেন না, কেউ নীরবে বসে আছেন মন ভার করে। পুরো এলাকা জুড়ে শোক আর নীরবতার আবহ।

লালবাগ থেকে আসা মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমরা আজ একজন রাজনৈতিক অভিভাবককে হারালাম। এই শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়। দোয়া করি, তারেক রহমান যেন দেশের হাল ধরতে পারেন।’

সংসদ-এলাকা

সাভার থেকে আসা দুই বন্ধু স্বপন শেখ ও মো. রিয়াজ বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে এই মুহূর্তে এভাবে বিদায় দিতে হবে, ভাবিনি। তিনি জীবনে এত ত্যাগ করেছেন, অথচ কিছুই সঙ্গে নিয়ে যেতে পারলেন না। তাঁর একমাত্র প্রাপ্তি—বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসা।’

বগুড়া থেকে জানাজায় অংশ নিতে আসা মনোয়ার হোসেন মামুন বলেন, ‘এ দেশ যাঁরা শাসন করেছেন, তাঁদের সবার গায়েই কোনো না কোনো কলঙ্ক আছে। কেবল বেগম খালেদা জিয়ার কোনো কলঙ্ক নেই। তিনি ক্ষমতার লোভ করেননি। জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত সাধারণ মানুষের পাশেই ছিলেন। ”

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘শেখ হাসিনা তিলে তিলে এমন একজন মানুষকে মেরে ফেলেছে। এর বিচার জনসম্মুখে হতে হবে—যে সরকারই আসুক।’

জানাজা শেষে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে শহিদ রাষ্ট্রপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানের পাশে বেগম খালেদা জিয়াকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হবে। এ সময় পরিবারের সদস্য, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ, সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্তরা, বিদেশি কূটনীতিক এবং বিএনপি মনোনীত নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।

দাফনকাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে নির্ধারিত ব্যক্তিবর্গ ছাড়া অন্য কারও প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে। দাফনকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত শেরেবাংলা নগরের জিয়া উদ্যান এলাকায় সাধারণ মানুষের চলাচল সীমিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজার পরিবর্তে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের পশ্চিম প্রান্তে কফিন রাখা হবে। জাতীয় সংসদ ভবনের ভেতরের মাঠ, বাইরের অংশ এবং পুরো মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ জুড়েই জানাজার আয়োজন করা হয়েছে। জানাজাকে ঘিরে নিরাপত্তা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সব রাষ্ট্রীয় দপ্তর যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। জনসাধারণের অংশগ্রহণ নির্বিঘ্ন করতে আশপাশের সড়কগুলোতেও অবস্থানের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী সায়েদুর রহমানের পদত্যাগ

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ২৪
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান পদত্যাগ করেছেন।

তাঁর পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি কর্তৃক গৃহীত হয়েছে জানিয়ে গতকাল মঙ্গলবার রাতে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

তিনি কী কারণে পদত্যাগ করেছেন সে বিষয়ে প্রজ্ঞাপনে কিছু জানানো হয়নি।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় নির্বাহী ক্ষমতা অনুশীলনের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমানের পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি গ্রহণ করেছেন।

গত বছরের ১০ নভেম্বর প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী পদে নিয়োগ পান সায়েদুর রহমান। একই সঙ্গে তাঁকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী ক্ষমতা অর্পণ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার জানাজার আনুষ্ঠানিকতা চলছে, সংসদ ভবন এলাকা লোকারণ্য

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ৩৪
খালেদা জিয়ার জানাজার আনুষ্ঠানিকতা চলছে, সংসদ ভবন এলাকা লোকারণ্য
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত