Ajker Patrika

আমার বাচ্চারা সব পুড়ে মারা যাচ্ছে, আমি কীভাবে সহ্য করি—মৃত্যুর আগে স্বামীকে বলেন মাহরীন চৌধুরী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২২ জুলাই ২০২৫, ১৯: ২৮
মাহরীন চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত
মাহরীন চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

গতকাল সোমবার (২১ জুলাই) উত্তরা মাইলস্টোন স্কুলে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমানটি যখন বিধ্বস্ত হয়, তখনো সম্পূর্ণ অক্ষত ও সুস্থ ছিলেন মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সমন্বয়ক সাহসী শিক্ষিকা মাহরীন চৌধুরী। কিন্তু তিনি বিপদ দেখে সরে যাননি, নিজের সন্তানের মতো করেই বুক আগলে বাঁচাতে চেয়েছিলেন ছাত্র-ছাত্রীদের। নিজের প্রাণ বিলিয়ে দিয়ে তিনি অনেক শিশুর প্রাণ বাঁচিয়েছেন।

ঢাকার জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় গতকাল সোমবার (২১ জুলাই) রাতে মারা যান মাহরীন চৌধুরী। তাঁর শরীরের ১০০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল বলে আবাসিক সার্জন শাওন বিন রহমান জানান। লাইফ সাপোর্টে নেওয়ার আগে স্বামী মনছুর হেলালের সঙ্গে তাঁর শেষ কথা হয়েছিল।

আজ মঙ্গলবার গ্রামের বাড়ি নীলফামারীর জলঢাকা পৌরসভার বগুলাগাড়িতে জানাজার আগে বিমান দুর্ঘটনায় মাইলস্টোনের শিক্ষিকা মাহরীন চৌধুরীর কীভাবে বিমানের আগুন থেকে অনেক শিক্ষার্থীকে বাঁচাতে গিয়ে নিজের জীবন বিলিয়ে দিলেন, সেই সাহসিকতার বর্ণনা তুলে ধরেন তাঁর স্বামী।

মনছুর হেলাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘যেই জায়গাটায় ওরা দাঁড়ায়, ঠিক যেদিক দিয়ে বাচ্চারা বের হবে, ওখানে সরাসরি এসে বিমানটি ক্রাশ করছে, তারপরে এক্সপ্লোশন হয়ে ভেতরে ঢুকে গেছে, ক্লাসরুমে, কিছু বাচ্চা ওখানে ঔনডেড হইছে। ও ওর বাচ্চাদের বাঁচাইতে গিয়া সে...কিছু বাচ্চাকে সে বের করেও নিয়া আসছে।’

বার্ন ইনস্টিটিউটের আইসিউতে তাঁর সঙ্গে মাহরীনের শেষ কথা হয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার সাথে তার আইসিইউতে যে কথা হইছে, আমি তাকে বললাম, তুমি কেন এ কাজ করতে গেলা? বলে আমার বাচ্চারা আমার সামনে সব পুইড়া মারা যাচ্ছে, আমি এটা কীভাবে সহ্য করি। ও সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে, কিছু বাচ্চা বের করছে, আরও কিছু বাচ্চা বের করার চেষ্টায় ছিল।’

ঠিক এমন সময় বিকট শব্দে আরেকটি বিস্ফোরণ হয়। আর তাতেই ৪২ বছর বয়সী মাহরীনের পুরো শরীর পুড়ে যায় জানিয়ে মনছুর হেলাল বলেন, ‘পা থেকে মাথা পর্যন্ত সব পুড়ে শেষ। শুধু বেঁচে ছিল, একটু কথা বলতে পারছে। আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে নেওয়ার আগে বলল, আমার ডান হাতটা শক্ত করে ধরো। ভাই, হাত ধরা যায় না, সব পুড়ে শেষ। ও বলল, তোমার সাথে আর দেখা হবে না।’

মনছুর হেলাল। ছবি: আজকের পত্রিকা
মনছুর হেলাল। ছবি: আজকের পত্রিকা

স্বামীর হাত ধরে মাহরীন তখন বলছিলেন, ‘আমার বাচ্চাদের দেখো।’ জবাবে মনছুর হেলাল বলেন, ‘তোমার বাচ্চাদের এতিম করে গেলা!’

মাহরীন তখন বলেন, ‘কী করব, ওরাও তো (মাইলস্টোনের শিক্ষার্থীরা) আমার বাচ্চা, সবাই পুড়ে মারা যাচ্ছে, আমি কীভাবে সহ্য করব? রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সবাই সহযোগিতা করেছে, কিন্তু তাকে বাঁচাইতে পারলাম না। .. বলে আমার খুব খিদা লাগছে আমারে কিছু খাওয়াও, আমি ভাই তিন ফোঁটা পানি ছাড়া কিচ্ছু দিতে পারি নাই। ডাক্তার বলে, ভাই শক্ত কিছু দিলেই বুকে আটকায়ে মারা যাবে। ভাই, কী যে কষ্ট ভাই! ”

মাহরীনের ছোট ভাই মুনাফ মজিব চৌধুরী বোনের মৃত্যুর খবর দিয়ে ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। মাহরীন আপু (মাহরীন চৌধুরী) আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। তিনি আমার বড় বোন। যিনি আমাকে মায়ের মতো করে বড় করেছেন। তিনি মাইলস্টোন স্কুলের কো-অর্ডিনেটর ছিলেন। ভবনে আগুন লাগার সময় তিনি সবার আগে নিজে বের হননি, বরং যতজন ছাত্রছাত্রীকে পারা যায়, বের করে আনার চেষ্টা করেছেন। এতে তাঁর শরীরের ১০০ শতাংশ পুড়ে যায়। আজ রাতে আমার প্রিয় বোনের জন্য দোয়া করবেন দয়া করে। তিনি রেখে গেছেন তাঁর দুই ছেলে—আমার দুটি ভাগনে। আমরা এখনো হাসপাতালে থেকে তাঁর মরদেহ বুঝে পাওয়ার অপেক্ষায় আছি।’

মাহরীন চৌধুরী নীলফামারীর জলঢাকার মৃত মহিতুর রহমান চৌধুরীর মেয়ে এবং জলঢাকা বগুলাগাড়ী স্কুল অ্যান্ড কলেজের অ্যাডহক কমিটির সভাপতি। নিজ গ্রামে শিক্ষানুরাগী হিসেবে পরিচিত ছিলেন মাহরীন চৌধুরী। আজ সকাল থেকে জেলার জলঢাকা পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বগুলাগাড়ী গ্রামে তাঁকে দাফনের প্রস্তুতি শুরু হয়।

মাহরীন চৌধুরীর প্রতিবেশী আব্দুল জব্বার আজকের পত্রিকা'কে বলেন, দুই ঈদ ও মাঝেমধ্যে গ্রামে আসতেন মাহরীন। এ সময় এলাকার গরিব মানুষকে আর্থিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কালভার্ট নির্মাণেও সহযোগিতা করেছেন। তিনি শিক্ষানুরাগী হিসেবে বগুলাগাড়ী স্কুল অ্যান্ড কলেজের অ্যাডহক কমিটির সভাপতি হিসেবে তাঁকে মনোনীত করেছে এলাকাবাসী।

নিহতের স্বামী মনছুর হেলাল বলেন, ‘ক্লাস শেষে শিক্ষার্থীদের নিয়ে বের হওয়ার সময় বিমান দুর্ঘটনাটি ঘটে। এ সময় মাহরীন সামান্য আঘাত পায়। কিন্তু ২০ থেকে ২৫ জন শিক্ষার্থী ভেতরে আটকা পড়ে যায়। সে শিক্ষার্থী আটকা পড়ার বিষয়টি মোবাইলে আমাকে জানায় এবং তাদের উদ্ধারে ভেতরে ঢুকে পড়ে। শিক্ষার্থীদের উদ্ধারে সময় সে অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ৯টার পর মারা যায়।’

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যত বড় অপরাধীই হোক, পিটিয়ে মারা গ্রহণযোগ্য নয়: ধর্ম উপদেষ্টা

রংপুর প্রতিনিধি
সোমবার রংপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে মন্দিরভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা প্রকল্পের জেলা কর্মশালায় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ধর্ম উপদেষ্টা। ছবি: আজকের পত্রিকা
সোমবার রংপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে মন্দিরভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা প্রকল্পের জেলা কর্মশালায় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ধর্ম উপদেষ্টা। ছবি: আজকের পত্রিকা

ময়মনসিংহে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে গার্মেন্টস কর্মী দিপু চন্দ্র দাশকে পিটিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যার ঘটনার নিন্দা জানিয়ে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, ‘যত বড় অপরাধীই হোক, আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে কাউকে পিটিয়ে হত্যা করা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’

আজ সোমবার সকালে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে মন্দিরভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা প্রকল্পের জেলা কর্মশালায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন ধর্ম উপদেষ্টা।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল আহসান, হিন্দু ধর্ম কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান তপন চন্দ্র মজুমদার, প্রকল্প পরিচালক নিত্য প্রকাশ বিশ্বাসসহ হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের কর্মকর্তারা।

ময়মনসিংহে দিপু হত্যাকাণ্ড এবং রাজবাড়ীর পাংশায় সংঘটিত পৃথক ঘটনার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ‘ময়মনসিংহে দিপু হত্যার ঘটনায় আমরা প্রথম দিন থেকেই দুঃখ প্রকাশ করেছি। আমরা কোনো দিন চাই না এই কিলিং আউটসাইড দি জুডিশিয়ারি—ইট ইজ নট অ্যাক্সেপ্টেবল টু আস। ইন এনি সারকামস্ট্যান্স উই কান্ট অ্যালাও মব জাস্টিস। তাহলে তো দেশ থাকবে না, সরকার থাকবে না, অ্যাডমিনিস্ট্রেশন থাকবে না; আইন যদি আমি করি, বিচার যদি আমি করি।’

উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘কেউ যদি ধর্ম অবমাননা করে থাকে—করতে পারে, ফেসবুক ওপেন প্ল্যাটফর্ম, করে—তার জন্য আমাদের তো নির্ধারিত আইন আছে। সরকার আছে, ল এনফোর্সমেন্ট এজেন্সিজ আছে, জাস্টিস আছে, তার বিচার হবে যদি সে করে থাকে। কিন্তু এটার একটা অজুহাত তুলে কোনো মানুষকে পিটিয়ে মারা এবং তাকে পুড়িয়ে ফেলা—এটা জঘন্যতম কাজ। এটার নিন্দা জানাই।’

দিপু হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা আমাদের গভর্নমেন্টের পক্ষ থেকে আমাদের মাননীয় শিল্প উপদেষ্টাকে দিপুর বাড়িতে পাঠিয়েছি। এই মানুষটাও দরিদ্র। তো ক্যাবিনেটেও আমরা এটা আলোচনা করেছি—দিপুর পরিবারের সমস্ত খরচ বাংলাদেশ সরকার বহন করবে।’

রাজবাড়ীর পাংশার ঘটনায় সাম্প্রদায়িক কোনো যোগ নেই উল্লেখ করে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশে তিনি ঘটনাটির প্রকৃত চিত্র জানতে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেছেন। প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, নিহত ব্যক্তি অমিত নামে পরিচিত এবং তাঁর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও ডাকাতির অভিযোগ রয়েছে। ডাকাতির সময় গুলি ছোড়ার ঘটনায় স্থানীয়রা তাঁকে ধরে পিটিয়ে হত্যা করে।’

তবে এ প্রসঙ্গে ধর্ম উপদেষ্টা স্পষ্ট করে বলেন, ‘আমরা পিটিয়ে মারার সংস্কৃতি থেকে সরে আসতে চাই। যত বড় অপরাধী হোক, আমাদের তো আইন আছে, ল মাস্ট টেক ইটস ওউন কোর্স। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। সে ডাকাত হলেও তার আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না থাকলে, এভাবে হলে তো আপনারে পিটিয়ে মারবে, আরেকজনকে পিটিয়ে মারবে, আরেকজনের ঘরে আগুন ধরিয়ে দেবে। এই যে আগুন ধরিয়ে দেওয়া অথবা পিটিয়ে মারা—আমরা এই সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে চাই। আমরা রুল অব ল, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চাই।’

আগুন দেওয়া, পিটিয়ে হত্যা—এই সহিংস সংস্কৃতি পরিহার করে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠাই সরকারের লক্ষ্য বলে উল্লেখ করে ধর্ম উপদেষ্টা।

জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ‘আজকে নমিনেশন পেপার সাবমিটের লাস্ট ডেট। জাতি একটা নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। একটা নির্বাচনী আবহ তৈরি হয়েছে। আমরা আশা করছি, আমাদের দৃঢ় প্রত্যাশা, উৎসবমুখর পরিবেশে ১২ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং যারাই ম্যান্ডেট পেয়ে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসবেন, আমরা তাদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে আমরা পুরোনো ঠিকানায় ফিরে যাব। এটা আমাদের কমিটমেন্ট। আমরা এভাবে এগোচ্ছি এবং ইলেকশন মাস্ট বি হেল্ড ফেয়ার, ফ্রি, ইমপারশিয়াল অ্যান্ড ইনক্লুসিভ হবে। এটাই আমরা সমস্ত রিটার্নিং অফিসারদের, ল এনফোর্সমেন্ট এজেন্সি যারা আছেন তাদের আমরা নির্দেশনা দিয়েছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রতিদিনই বিদেশি অস্ত্র উদ্ধার করা হচ্ছে, নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
পিলখানায় বিজিবি সদর দপ্তরে অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। ছবি: আজকের পত্রিকা
পিলখানায় বিজিবি সদর দপ্তরে অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। ছবি: আজকের পত্রিকা

‎আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে এখন কোনো শঙ্কা নেই। প্রতিদিনই বিদেশি অস্ত্র উদ্ধার হচ্ছে। কোনো রকমের ছাড় দেওয়া হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল(অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনের সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। বিজিবিও সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তাদের প্রায় ৩৫ হাজার সদস্য নির্বাচনের সময় নিয়োজিত থাকবে। এর মধ্যেও দুই-চারটা অস্ত্র যে দেশে ঢুকছে না তা না। তবে এগুলো ধরাও হচ্ছে। প্রতিদিনই বিদেশি অস্ত্র উদ্ধার করা হচ্ছে। কোনো রকমের কোথাও ছাড় দেওয়া হচ্ছে না।

আজ ‎সোমবার বিজিবি দিবস-২০২৫ উপলক্ষে পিলখানায় বিজিবি সদর দপ্তরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে এখন কোনো শঙ্কা নেই। এবারই নির্বাচনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

কেরানীগঞ্জ মাদ্রাসায় বিস্ফোরণের বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, কেরানীগঞ্জে যেই ব্যক্তি অপকর্মটা ঘটিয়েছে সে পলাতক রয়েছে। কিন্তু তার সহযোগীকে ধরা হয়েছে। পলাতক ওই ব্যক্তিকেও ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে। ‎

এসব ঘটনা সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধা হয়ে দাঁড়াবে কিনা —এমন এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ফ্যাসিস্ট যারা আছে তারা সব সময়ই এটা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করবে। কিন্তু সবার সহযোগিতা যদি থাকে তবে নির্বাচন সুষ্ঠু শান্তিপূর্ণ এবং উৎসবমুখর হবে। সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে। এ রকম একটা নির্বাচনই এই সরকারের দেওয়ার ইচ্ছা এবং এটা বাস্তবায়ন করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কুয়াশায় গাড়ি চালানো নিরাপদ করতে বিআরটিএর নির্দেশনা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

শীতকালে ঘন কুয়াশার কারণে চালকের দৃষ্টিসীমা কমে যাওয়ায় সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ে। এ পরিস্থিতিতে নিরাপদে গাড়ি চালাতে মোটরযান চালক ও মালিকদের জন্য কিছু নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)।

আজ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) বিআরটিএ তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এসব নির্দেশনা প্রকাশ করে।

বিআরটিএ নির্দেশনায় বলা হয়েছে—

১. কুয়াশায় দৃষ্টিসীমার মধ্যে থামানো যায় এমন নিয়ন্ত্রণ উপযোগী ধীর গতিতে সর্বদা নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে রাস্তায় গাড়ি চালাতে হবে।

২. সর্বদা ‘লো-বিম বা ডিপার’ জ্বালিয়ে গাড়ি চালাতে হবে। ‘হাই-বিম বা আপার’ কুয়াশাকে আরও বেশি ঘন করে বিধায় ‘হাই-বিম বা আপার’ জ্বালিয়ে গাড়ি চালানো যাবে না।

৩. লেন পরিবর্তন/ওভারটেকিং করা যাবে না। যেসব স্থানে দৃষ্টি যায় না বা বাঁক নেওয়ার আগে দেখা যায় না, সেসব স্থানে দরকার হলে বিপদ এড়ানোর জন্য হর্ন বাজাতে হবে।

৪. ঘন কুয়াশার কারণে একেবারেই দেখা না গেলে বা দৃষ্টিসীমা শূন্যের কোঠায় পৌঁছে গেলে নিরাপদ জায়গায় গাড়ি থামিয়ে হেডলাইট বন্ধ করে হ্যাজার্ড লাইট জ্বালাতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‎সীমান্ত দিয়ে সন্ত্রাসীরা যেন পালাতে না পারে, সতর্ক থাকার নির্দেশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

‎সীমান্ত দিয়ে কোনো অপরাধী বা সন্ত্রাসী যেন পালিয়ে যেতে না পারে, সে বিষয়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যদের সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। ‎

আজ ‎সোমবার বিজিবি দিবস-২০২৫ উপলক্ষে পিলখানায় বিজিবি সদর দপ্তরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, সীমান্ত সুরক্ষা ও দেশের অভ্যন্তরীণ শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় বিজিবিকে আরও পেশাদারিত্ব ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে। ‎

বক্তব্যের শুরুতে মুক্তিযুদ্ধে বিজিবির সাহস ও আত্মত্যাগের কথা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন ‎স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। একই সঙ্গে তিনি জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আত্মোৎসর্গকারী শহীদদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন এবং ওই আন্দোলনে আহত ও পঙ্গুত্ববরণকারী ছাত্র-জনতার প্রতি সম্মান জানান।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘বিজিবি একটি গৌরবময় ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক। বর্তমানে বিজিবি একটি “ত্রিমাত্রিক বাহিনী” হিসেবে সীমান্ত সুরক্ষা, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সহায়তা এবং জনকল্যাণমূলক কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে।’

বিজিবির সার্বিক উন্নয়নে সরকার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

‎স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘সীমান্ত দিয়ে কোনো ধরনের মাদক দেশে প্রবেশ করতে দেওয়া যাবে না। স্পর্শকাতর এলাকাগুলোতে অতিরিক্ত সতর্কতা জোরদার করতে হবে।’

একই সঙ্গে অবৈধ পথে দেশীয় পণ্য বিদেশে পাচার রোধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি।

‎‎চোরাকারবারি ও মাদক পাচারকারীদের সঙ্গে জড়িত কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী থাকলে তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।

পাশাপাশি অধীনস্ত সদস্যদের কল্যাণে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সর্বদা সজাগ ও সচেতন থাকার আহ্বান জানান তিনি।

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী আরও বলেন, প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সীমান্তসংক্রান্ত যেকোনো সমস্যা অত্যন্ত কৌশল ও দক্ষতার সঙ্গে মোকাবিলা করতে হবে, যাতে দেশের স্বার্থ শতভাগ সুরক্ষিত থাকে। সীমান্ত ব্যবহারকারী চোরাকারবারিদের আইনের আওতায় আনতে প্রয়োজনে জেলা প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে নিবিড় সমন্বয় বজায় রাখার নির্দেশ দেন তিনি। ‎

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বিজিবি সদস্যদের ‘চেইন অব কমান্ড’-এর প্রতি পূর্ণ আস্থা ও আনুগত্য বজায় রাখার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে বিজিবি দেশের মানুষের আস্থার প্রতীক হয়ে তার গৌরবময় অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখবে এমন প্রত্যাশা তাঁর।

‎‎অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি এবং বিজিবির মহাপরিচালকসহ বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত