নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার আন্দোলন শেষ পর্যন্ত ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পরিণত হয়। গত জুলাইয়ের এই অভ্যুত্থানে অনেক দল, সংগঠন, প্ল্যাটফর্ম, ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রেখেছিল। কিন্তু শেখ হাসিনার পতনের পর বিভিন্ন ইস্যুকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে দূরত্ব ও অস্থিরতা দিন দিন বাড়ছে। সরকারের উপদেষ্টা থেকে শুরু করে বিভিন্ন দল ও সংগঠনের নেতাদের বক্তব্য, স্লোগান ও আলাপচারিতায় তা প্রকাশ পাচ্ছে।
আগামী জাতীয় নির্বাচন ঘনিয়ে আসতে আসতে সংস্কারের নানা ইস্যু, ভোটের সময়সীমাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে অভ্যুত্থানের অংশীজনদের মধ্যে এই দূরত্ব আরও বাড়বে—এমনটা মনে করছেন সংগঠনগুলোর নেতারা।
জুলাইয়ের আন্দোলনে অংশীজনদের অনেকে মনে করছেন, শেখ হাসিনার পতনের পরপরই এতে বড় দল বিএনপির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা এবং ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পরিবর্তে ২০২৪ সালের অভ্যুত্থানকে বড় করে দেখানোর পর থেকে দলটির সঙ্গে আন্দোলনের তরুণ নেতৃত্বের দূরত্ব তৈরি শুরু হয়। এরপর ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ তৈরি, নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও ছাত্রসংগঠন গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের আত্মপ্রকাশ, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে অপসারণের চেষ্টা, গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের শপথ নেওয়ার আগে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে মুহাম্মদ ইউনূসের নিয়োগের বিষয়ে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের কথিত আপত্তির দাবি করে ভিডিও প্রকাশসহ বিভিন্ন ইস্যুতে ধীরে ধীরে বিভিন্ন অংশীজনের মধ্যে দূরত্ব বাড়তে থাকে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, জুলাইয়ে গণহত্যার অভিযোগে আওয়ামী লীগকে সরাসরি নির্বাহী আদেশে নিষিদ্ধ করার দাবিতে এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহর ডাকে সর্বশেষ ঢাকায় মিন্টো রোড ও শাহবাগে যে বিক্ষোভ-সমাবেশ হয়েছে, তা সরকারের ওপর চাপ তৈরির জন্যই করা। এ কর্মসূচিতে যোগদানের জন্য প্রকাশ্য ও অনানুষ্ঠানিক অনুরোধ করা হয় বিএনপিকে। জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলনসহ বিভিন্ন সংগঠন এনসিপির কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করে। কিন্তু দুই দিন চলা এই আন্দোলনে শেষ পর্যন্ত বিএনপির কেউ যাননি।
বিএনপি নেতারা বলছেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি নিয়ে তেমন মতভেদ না থাকলেও এনসিপির কর্মসূচিতে গিয়ে সংহতি প্রকাশ করা থেকে বিএনপি বিরত থেকেছে মূলত সাবধানতা হিসেবে। এ ছাড়া রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ, নতুন সংবিধান প্রণয়নের দাবি ও সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানকে বিতর্কিত করার চেষ্টাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে এনসিপির সঙ্গে বিএনপির দূরত্ব তৈরি হয়েছে। বিএনপি আগেই সরকারকে জানিয়েছে, আওয়ামী লীগের মতো দলকে নিষিদ্ধ করা আইনি ও বিচারিক প্রক্রিয়ায় হতে হবে। এ কারণে অন্য দলের কর্মসূচিতে যাওয়া দরকার মনে করেনি তারা।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. সাব্বির আহমেদ মনে করেন, ‘সব বিষয়ে ঐকমত্য থাকবে না, ভিন্নমত থাকবে, এটা স্বাভাবিক। যেমন নতুন সংবিধান হবে কি না, গণপরিষদ কীভাবে গঠিত হবে, সে বিষয়ে দলগুলোর ভিন্নমত আছে। এই ভিন্নমতের বিষয়গুলো যদি আলোচনার টেবিলে সমাধান না করে সরকার চাপিয়ে দিতে চায়, তাহলে দূরত্ব বাড়বে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের এই অধ্যাপক গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকা'কে বলেন, যে বিষয়গুলো দূরত্ব তৈরির কারণ হিসেবে সামনে আসছে, তার বেশির ভাগই আলোচনার টেবিলে সমাধান করা যেত। তিনি বলেন, ‘সবকিছু রাস্তায় নিয়ে যাওয়া ঠিক নয়। সবকিছু চাপ দিয়ে করানোও ঠিক নয়।’
বিশ্লেষকেরা বলছেন, যেসব ইস্যুতে মতভেদ থেকে দূরত্ব তৈরি হচ্ছে, তা প্রকাশ্য ও নেপথ্যের আলোচনায়ই হয়তো সমাধান করা যেত। তা না করে চাপ তৈরির জন্য রাস্তায় আন্দোলনের আবহ তৈরি করা, একই সঙ্গে এসব কর্মসূচি সুযোগে নিজেদের মতো চাপিয়ে দিতে অন্য দলের চেষ্টা করা অনেকে ভালোভাবে নিচ্ছেন না।
জামায়াতে ইসলামীর নাম উল্লেখ না করে সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম গত রোববার এক ফেসবুক পোস্টে যুদ্ধাপরাধের সহযোগীদের ক্ষমা চাওয়ার প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন। জামায়াতে ইসলামীর ওপরের সারির এক নেতা এ বিষয়ে আজকের পত্রিকাকে জানান, দলের ভেতরে বেশ কথা হচ্ছে বিষয়টি নিয়ে। জামায়াত বিষয়টি ভালোভাবে নেয়নি।
ফেসবুক পোস্টে মাহফুজ আলম বলেছিলেন, একাত্তরের প্রশ্ন মীমাংসা করতেই হবে। যুদ্ধাপরাধের সহযোগীদের ক্ষমা চাইতে হবে। বাংলাদেশে রাজনীতি করতে হলে পাকিস্তানপন্থা বাদ দিতে হবে।...জুলাইয়ের শক্তির মধ্যে ঢুকে সাবোটাজ করা বন্ধ করতে হবে। সাফ দিলে আসতে হবে।’
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগের কর্মসূচিতে জাতীয় সংগীত থামাতে বলা এবং স্লোগানে ‘গোলাম আযমের বাংলাদেশ’ উচ্চারণের ভিডিও প্রকাশ্যে আসার পর মাহফুজ আলম ফেসবুকে বিবৃতিটি দেন।
একই বিষয়ে এনসিপি গতকাল সোমবার এক বিজ্ঞপ্তিতে দলের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছে। দলটি বলছে, ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, মত, পক্ষ এবং সাধারণ ছাত্র-জনতা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিলেও একটি পক্ষ সচেতনভাবে দলীয় স্লোগান এবং বাংলাদেশের জনগণের ঐতিহাসিক সংগ্রামবিরোধী স্লোগান দিয়েছে; যা জুলাই-পরবর্তী সময়ে সাম্প্রতিক আন্দোলনে জাতীয় ঐক্য নবায়নের সুবর্ণ সুযোগ সৃষ্টিতে ব্যাঘাত ঘটিয়েছে।
জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানে সামনের সারিতে থাকা প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সমাবেশ ঘটেছে বিভিন্ন মত ও পথের তরুণদের। তাঁদের নেতাদের একটি বড় অংশ নিয়ে এনসিপি ও গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ গঠন করা হয়েছে। তবে উমামা ফাতেমাসহ কয়েকজন নেতা আলাদা করে ছাত্র আন্দোলন টিকিয়ে রাখেন। অন্যদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন, জামায়াতে ইসলামীর ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের এমন কয়েকজন সাবেক নেতা পরে ‘আপ বাংলাদেশ’ নামে আলাদা সংগঠন তৈরি করেন।
জুলাই অভ্যুত্থানে ঐক্যবদ্ধ শক্তিগুলো বিভক্ত হচ্ছে কি না জানতে চাইলে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার গতকাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এটা নানান কারণে হয়। প্রত্যেকের তো আলাদা আলাদা অ্যাজেন্ডা তৈরি হয়েছে। সেটার ভিত্তিতে ভিন্নমত হয়।’
সারোয়ার তুষার আরও বলেন, ‘ভিন্নমত সমস্যা না। ভিন্নমত গণতন্ত্রের জন্য ভালো। তবে এটা বিরোধিতা কিংবা মুখোমুখি অবস্থানে না গেলেই হয়। এদের মধ্যে আবার কিছু কমন জায়গাও আছে; যেমন আওয়ামী লীগ প্রশ্ন, সংস্কার। আমরা এমন কিছু কমন জায়গা তৈরি করে নিলে ভালো।’
নির্বাচন ঘনিয়ে এলে এই ‘মতভিন্নতা’ বাড়তে পারে কি না—এমন প্রশ্নে সারোয়ার তুষার বলেন, ‘সব ঐক্য তো নির্বাচনমুখী না। নির্বাচনের আগে একধরনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকবে, বাগ্বিতণ্ডা থাকবে। সকল পক্ষই সহনশীলতা দেখিয়েছে। একই কারণে বাগ্বিতণ্ডা বড় আকার নেবে না।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক উমামা ফাতেমা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানের শক্তিগুলোর মধ্যে অনৈক্যের যে ধারা তা ৫ আগস্টের পর থেকে শুরু হয়েছিল। রাজনৈতিক এবং ক্ষমতার প্রশ্নকে কেন্দ্র করেই শক্তিগুলো বিভক্ত হয়ে পড়ে। যারা এখানে নেতৃত্বে পর্যায়ে ছিল তাদের এটার দায়ভার গ্রহণ করতে হবে। শুরুতেই তারা তাদের নিজস্ব রাজনীতি তৈরি করতে গিয়ে বিভক্তি তৈরি করেছে। পাঁচ আগস্টের পরে তারা যেভাবে ক্ষমতামুখী রাজনীতিতে ঢুকে গেল তা ঐক্যে ফাটল ধরাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। মূলকথা, যারা ক্ষমতা কাঠামোর কাছাকাছি তারাই ঐক্যে ভাঙন ধরানোর জন্য বেশি দায়ী।’
আরও খবর পড়ুন:

শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার আন্দোলন শেষ পর্যন্ত ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পরিণত হয়। গত জুলাইয়ের এই অভ্যুত্থানে অনেক দল, সংগঠন, প্ল্যাটফর্ম, ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রেখেছিল। কিন্তু শেখ হাসিনার পতনের পর বিভিন্ন ইস্যুকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে দূরত্ব ও অস্থিরতা দিন দিন বাড়ছে। সরকারের উপদেষ্টা থেকে শুরু করে বিভিন্ন দল ও সংগঠনের নেতাদের বক্তব্য, স্লোগান ও আলাপচারিতায় তা প্রকাশ পাচ্ছে।
আগামী জাতীয় নির্বাচন ঘনিয়ে আসতে আসতে সংস্কারের নানা ইস্যু, ভোটের সময়সীমাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে অভ্যুত্থানের অংশীজনদের মধ্যে এই দূরত্ব আরও বাড়বে—এমনটা মনে করছেন সংগঠনগুলোর নেতারা।
জুলাইয়ের আন্দোলনে অংশীজনদের অনেকে মনে করছেন, শেখ হাসিনার পতনের পরপরই এতে বড় দল বিএনপির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা এবং ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পরিবর্তে ২০২৪ সালের অভ্যুত্থানকে বড় করে দেখানোর পর থেকে দলটির সঙ্গে আন্দোলনের তরুণ নেতৃত্বের দূরত্ব তৈরি শুরু হয়। এরপর ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ তৈরি, নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও ছাত্রসংগঠন গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের আত্মপ্রকাশ, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে অপসারণের চেষ্টা, গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের শপথ নেওয়ার আগে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে মুহাম্মদ ইউনূসের নিয়োগের বিষয়ে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের কথিত আপত্তির দাবি করে ভিডিও প্রকাশসহ বিভিন্ন ইস্যুতে ধীরে ধীরে বিভিন্ন অংশীজনের মধ্যে দূরত্ব বাড়তে থাকে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, জুলাইয়ে গণহত্যার অভিযোগে আওয়ামী লীগকে সরাসরি নির্বাহী আদেশে নিষিদ্ধ করার দাবিতে এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহর ডাকে সর্বশেষ ঢাকায় মিন্টো রোড ও শাহবাগে যে বিক্ষোভ-সমাবেশ হয়েছে, তা সরকারের ওপর চাপ তৈরির জন্যই করা। এ কর্মসূচিতে যোগদানের জন্য প্রকাশ্য ও অনানুষ্ঠানিক অনুরোধ করা হয় বিএনপিকে। জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলনসহ বিভিন্ন সংগঠন এনসিপির কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করে। কিন্তু দুই দিন চলা এই আন্দোলনে শেষ পর্যন্ত বিএনপির কেউ যাননি।
বিএনপি নেতারা বলছেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি নিয়ে তেমন মতভেদ না থাকলেও এনসিপির কর্মসূচিতে গিয়ে সংহতি প্রকাশ করা থেকে বিএনপি বিরত থেকেছে মূলত সাবধানতা হিসেবে। এ ছাড়া রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ, নতুন সংবিধান প্রণয়নের দাবি ও সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানকে বিতর্কিত করার চেষ্টাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে এনসিপির সঙ্গে বিএনপির দূরত্ব তৈরি হয়েছে। বিএনপি আগেই সরকারকে জানিয়েছে, আওয়ামী লীগের মতো দলকে নিষিদ্ধ করা আইনি ও বিচারিক প্রক্রিয়ায় হতে হবে। এ কারণে অন্য দলের কর্মসূচিতে যাওয়া দরকার মনে করেনি তারা।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. সাব্বির আহমেদ মনে করেন, ‘সব বিষয়ে ঐকমত্য থাকবে না, ভিন্নমত থাকবে, এটা স্বাভাবিক। যেমন নতুন সংবিধান হবে কি না, গণপরিষদ কীভাবে গঠিত হবে, সে বিষয়ে দলগুলোর ভিন্নমত আছে। এই ভিন্নমতের বিষয়গুলো যদি আলোচনার টেবিলে সমাধান না করে সরকার চাপিয়ে দিতে চায়, তাহলে দূরত্ব বাড়বে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের এই অধ্যাপক গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকা'কে বলেন, যে বিষয়গুলো দূরত্ব তৈরির কারণ হিসেবে সামনে আসছে, তার বেশির ভাগই আলোচনার টেবিলে সমাধান করা যেত। তিনি বলেন, ‘সবকিছু রাস্তায় নিয়ে যাওয়া ঠিক নয়। সবকিছু চাপ দিয়ে করানোও ঠিক নয়।’
বিশ্লেষকেরা বলছেন, যেসব ইস্যুতে মতভেদ থেকে দূরত্ব তৈরি হচ্ছে, তা প্রকাশ্য ও নেপথ্যের আলোচনায়ই হয়তো সমাধান করা যেত। তা না করে চাপ তৈরির জন্য রাস্তায় আন্দোলনের আবহ তৈরি করা, একই সঙ্গে এসব কর্মসূচি সুযোগে নিজেদের মতো চাপিয়ে দিতে অন্য দলের চেষ্টা করা অনেকে ভালোভাবে নিচ্ছেন না।
জামায়াতে ইসলামীর নাম উল্লেখ না করে সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম গত রোববার এক ফেসবুক পোস্টে যুদ্ধাপরাধের সহযোগীদের ক্ষমা চাওয়ার প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন। জামায়াতে ইসলামীর ওপরের সারির এক নেতা এ বিষয়ে আজকের পত্রিকাকে জানান, দলের ভেতরে বেশ কথা হচ্ছে বিষয়টি নিয়ে। জামায়াত বিষয়টি ভালোভাবে নেয়নি।
ফেসবুক পোস্টে মাহফুজ আলম বলেছিলেন, একাত্তরের প্রশ্ন মীমাংসা করতেই হবে। যুদ্ধাপরাধের সহযোগীদের ক্ষমা চাইতে হবে। বাংলাদেশে রাজনীতি করতে হলে পাকিস্তানপন্থা বাদ দিতে হবে।...জুলাইয়ের শক্তির মধ্যে ঢুকে সাবোটাজ করা বন্ধ করতে হবে। সাফ দিলে আসতে হবে।’
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগের কর্মসূচিতে জাতীয় সংগীত থামাতে বলা এবং স্লোগানে ‘গোলাম আযমের বাংলাদেশ’ উচ্চারণের ভিডিও প্রকাশ্যে আসার পর মাহফুজ আলম ফেসবুকে বিবৃতিটি দেন।
একই বিষয়ে এনসিপি গতকাল সোমবার এক বিজ্ঞপ্তিতে দলের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছে। দলটি বলছে, ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, মত, পক্ষ এবং সাধারণ ছাত্র-জনতা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিলেও একটি পক্ষ সচেতনভাবে দলীয় স্লোগান এবং বাংলাদেশের জনগণের ঐতিহাসিক সংগ্রামবিরোধী স্লোগান দিয়েছে; যা জুলাই-পরবর্তী সময়ে সাম্প্রতিক আন্দোলনে জাতীয় ঐক্য নবায়নের সুবর্ণ সুযোগ সৃষ্টিতে ব্যাঘাত ঘটিয়েছে।
জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানে সামনের সারিতে থাকা প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সমাবেশ ঘটেছে বিভিন্ন মত ও পথের তরুণদের। তাঁদের নেতাদের একটি বড় অংশ নিয়ে এনসিপি ও গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ গঠন করা হয়েছে। তবে উমামা ফাতেমাসহ কয়েকজন নেতা আলাদা করে ছাত্র আন্দোলন টিকিয়ে রাখেন। অন্যদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন, জামায়াতে ইসলামীর ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের এমন কয়েকজন সাবেক নেতা পরে ‘আপ বাংলাদেশ’ নামে আলাদা সংগঠন তৈরি করেন।
জুলাই অভ্যুত্থানে ঐক্যবদ্ধ শক্তিগুলো বিভক্ত হচ্ছে কি না জানতে চাইলে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার গতকাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এটা নানান কারণে হয়। প্রত্যেকের তো আলাদা আলাদা অ্যাজেন্ডা তৈরি হয়েছে। সেটার ভিত্তিতে ভিন্নমত হয়।’
সারোয়ার তুষার আরও বলেন, ‘ভিন্নমত সমস্যা না। ভিন্নমত গণতন্ত্রের জন্য ভালো। তবে এটা বিরোধিতা কিংবা মুখোমুখি অবস্থানে না গেলেই হয়। এদের মধ্যে আবার কিছু কমন জায়গাও আছে; যেমন আওয়ামী লীগ প্রশ্ন, সংস্কার। আমরা এমন কিছু কমন জায়গা তৈরি করে নিলে ভালো।’
নির্বাচন ঘনিয়ে এলে এই ‘মতভিন্নতা’ বাড়তে পারে কি না—এমন প্রশ্নে সারোয়ার তুষার বলেন, ‘সব ঐক্য তো নির্বাচনমুখী না। নির্বাচনের আগে একধরনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকবে, বাগ্বিতণ্ডা থাকবে। সকল পক্ষই সহনশীলতা দেখিয়েছে। একই কারণে বাগ্বিতণ্ডা বড় আকার নেবে না।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক উমামা ফাতেমা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানের শক্তিগুলোর মধ্যে অনৈক্যের যে ধারা তা ৫ আগস্টের পর থেকে শুরু হয়েছিল। রাজনৈতিক এবং ক্ষমতার প্রশ্নকে কেন্দ্র করেই শক্তিগুলো বিভক্ত হয়ে পড়ে। যারা এখানে নেতৃত্বে পর্যায়ে ছিল তাদের এটার দায়ভার গ্রহণ করতে হবে। শুরুতেই তারা তাদের নিজস্ব রাজনীতি তৈরি করতে গিয়ে বিভক্তি তৈরি করেছে। পাঁচ আগস্টের পরে তারা যেভাবে ক্ষমতামুখী রাজনীতিতে ঢুকে গেল তা ঐক্যে ফাটল ধরাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। মূলকথা, যারা ক্ষমতা কাঠামোর কাছাকাছি তারাই ঐক্যে ভাঙন ধরানোর জন্য বেশি দায়ী।’
আরও খবর পড়ুন:
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার আন্দোলন শেষ পর্যন্ত ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পরিণত হয়। গত জুলাইয়ের এই অভ্যুত্থানে অনেক দল, সংগঠন, প্ল্যাটফর্ম, ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রেখেছিল। কিন্তু শেখ হাসিনার পতনের পর বিভিন্ন ইস্যুকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে দূরত্ব ও অস্থিরতা দিন দিন বাড়ছে। সরকারের উপদেষ্টা থেকে শুরু করে বিভিন্ন দল ও সংগঠনের নেতাদের বক্তব্য, স্লোগান ও আলাপচারিতায় তা প্রকাশ পাচ্ছে।
আগামী জাতীয় নির্বাচন ঘনিয়ে আসতে আসতে সংস্কারের নানা ইস্যু, ভোটের সময়সীমাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে অভ্যুত্থানের অংশীজনদের মধ্যে এই দূরত্ব আরও বাড়বে—এমনটা মনে করছেন সংগঠনগুলোর নেতারা।
জুলাইয়ের আন্দোলনে অংশীজনদের অনেকে মনে করছেন, শেখ হাসিনার পতনের পরপরই এতে বড় দল বিএনপির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা এবং ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পরিবর্তে ২০২৪ সালের অভ্যুত্থানকে বড় করে দেখানোর পর থেকে দলটির সঙ্গে আন্দোলনের তরুণ নেতৃত্বের দূরত্ব তৈরি শুরু হয়। এরপর ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ তৈরি, নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও ছাত্রসংগঠন গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের আত্মপ্রকাশ, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে অপসারণের চেষ্টা, গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের শপথ নেওয়ার আগে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে মুহাম্মদ ইউনূসের নিয়োগের বিষয়ে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের কথিত আপত্তির দাবি করে ভিডিও প্রকাশসহ বিভিন্ন ইস্যুতে ধীরে ধীরে বিভিন্ন অংশীজনের মধ্যে দূরত্ব বাড়তে থাকে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, জুলাইয়ে গণহত্যার অভিযোগে আওয়ামী লীগকে সরাসরি নির্বাহী আদেশে নিষিদ্ধ করার দাবিতে এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহর ডাকে সর্বশেষ ঢাকায় মিন্টো রোড ও শাহবাগে যে বিক্ষোভ-সমাবেশ হয়েছে, তা সরকারের ওপর চাপ তৈরির জন্যই করা। এ কর্মসূচিতে যোগদানের জন্য প্রকাশ্য ও অনানুষ্ঠানিক অনুরোধ করা হয় বিএনপিকে। জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলনসহ বিভিন্ন সংগঠন এনসিপির কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করে। কিন্তু দুই দিন চলা এই আন্দোলনে শেষ পর্যন্ত বিএনপির কেউ যাননি।
বিএনপি নেতারা বলছেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি নিয়ে তেমন মতভেদ না থাকলেও এনসিপির কর্মসূচিতে গিয়ে সংহতি প্রকাশ করা থেকে বিএনপি বিরত থেকেছে মূলত সাবধানতা হিসেবে। এ ছাড়া রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ, নতুন সংবিধান প্রণয়নের দাবি ও সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানকে বিতর্কিত করার চেষ্টাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে এনসিপির সঙ্গে বিএনপির দূরত্ব তৈরি হয়েছে। বিএনপি আগেই সরকারকে জানিয়েছে, আওয়ামী লীগের মতো দলকে নিষিদ্ধ করা আইনি ও বিচারিক প্রক্রিয়ায় হতে হবে। এ কারণে অন্য দলের কর্মসূচিতে যাওয়া দরকার মনে করেনি তারা।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. সাব্বির আহমেদ মনে করেন, ‘সব বিষয়ে ঐকমত্য থাকবে না, ভিন্নমত থাকবে, এটা স্বাভাবিক। যেমন নতুন সংবিধান হবে কি না, গণপরিষদ কীভাবে গঠিত হবে, সে বিষয়ে দলগুলোর ভিন্নমত আছে। এই ভিন্নমতের বিষয়গুলো যদি আলোচনার টেবিলে সমাধান না করে সরকার চাপিয়ে দিতে চায়, তাহলে দূরত্ব বাড়বে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের এই অধ্যাপক গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকা'কে বলেন, যে বিষয়গুলো দূরত্ব তৈরির কারণ হিসেবে সামনে আসছে, তার বেশির ভাগই আলোচনার টেবিলে সমাধান করা যেত। তিনি বলেন, ‘সবকিছু রাস্তায় নিয়ে যাওয়া ঠিক নয়। সবকিছু চাপ দিয়ে করানোও ঠিক নয়।’
বিশ্লেষকেরা বলছেন, যেসব ইস্যুতে মতভেদ থেকে দূরত্ব তৈরি হচ্ছে, তা প্রকাশ্য ও নেপথ্যের আলোচনায়ই হয়তো সমাধান করা যেত। তা না করে চাপ তৈরির জন্য রাস্তায় আন্দোলনের আবহ তৈরি করা, একই সঙ্গে এসব কর্মসূচি সুযোগে নিজেদের মতো চাপিয়ে দিতে অন্য দলের চেষ্টা করা অনেকে ভালোভাবে নিচ্ছেন না।
জামায়াতে ইসলামীর নাম উল্লেখ না করে সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম গত রোববার এক ফেসবুক পোস্টে যুদ্ধাপরাধের সহযোগীদের ক্ষমা চাওয়ার প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন। জামায়াতে ইসলামীর ওপরের সারির এক নেতা এ বিষয়ে আজকের পত্রিকাকে জানান, দলের ভেতরে বেশ কথা হচ্ছে বিষয়টি নিয়ে। জামায়াত বিষয়টি ভালোভাবে নেয়নি।
ফেসবুক পোস্টে মাহফুজ আলম বলেছিলেন, একাত্তরের প্রশ্ন মীমাংসা করতেই হবে। যুদ্ধাপরাধের সহযোগীদের ক্ষমা চাইতে হবে। বাংলাদেশে রাজনীতি করতে হলে পাকিস্তানপন্থা বাদ দিতে হবে।...জুলাইয়ের শক্তির মধ্যে ঢুকে সাবোটাজ করা বন্ধ করতে হবে। সাফ দিলে আসতে হবে।’
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগের কর্মসূচিতে জাতীয় সংগীত থামাতে বলা এবং স্লোগানে ‘গোলাম আযমের বাংলাদেশ’ উচ্চারণের ভিডিও প্রকাশ্যে আসার পর মাহফুজ আলম ফেসবুকে বিবৃতিটি দেন।
একই বিষয়ে এনসিপি গতকাল সোমবার এক বিজ্ঞপ্তিতে দলের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছে। দলটি বলছে, ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, মত, পক্ষ এবং সাধারণ ছাত্র-জনতা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিলেও একটি পক্ষ সচেতনভাবে দলীয় স্লোগান এবং বাংলাদেশের জনগণের ঐতিহাসিক সংগ্রামবিরোধী স্লোগান দিয়েছে; যা জুলাই-পরবর্তী সময়ে সাম্প্রতিক আন্দোলনে জাতীয় ঐক্য নবায়নের সুবর্ণ সুযোগ সৃষ্টিতে ব্যাঘাত ঘটিয়েছে।
জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানে সামনের সারিতে থাকা প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সমাবেশ ঘটেছে বিভিন্ন মত ও পথের তরুণদের। তাঁদের নেতাদের একটি বড় অংশ নিয়ে এনসিপি ও গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ গঠন করা হয়েছে। তবে উমামা ফাতেমাসহ কয়েকজন নেতা আলাদা করে ছাত্র আন্দোলন টিকিয়ে রাখেন। অন্যদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন, জামায়াতে ইসলামীর ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের এমন কয়েকজন সাবেক নেতা পরে ‘আপ বাংলাদেশ’ নামে আলাদা সংগঠন তৈরি করেন।
জুলাই অভ্যুত্থানে ঐক্যবদ্ধ শক্তিগুলো বিভক্ত হচ্ছে কি না জানতে চাইলে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার গতকাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এটা নানান কারণে হয়। প্রত্যেকের তো আলাদা আলাদা অ্যাজেন্ডা তৈরি হয়েছে। সেটার ভিত্তিতে ভিন্নমত হয়।’
সারোয়ার তুষার আরও বলেন, ‘ভিন্নমত সমস্যা না। ভিন্নমত গণতন্ত্রের জন্য ভালো। তবে এটা বিরোধিতা কিংবা মুখোমুখি অবস্থানে না গেলেই হয়। এদের মধ্যে আবার কিছু কমন জায়গাও আছে; যেমন আওয়ামী লীগ প্রশ্ন, সংস্কার। আমরা এমন কিছু কমন জায়গা তৈরি করে নিলে ভালো।’
নির্বাচন ঘনিয়ে এলে এই ‘মতভিন্নতা’ বাড়তে পারে কি না—এমন প্রশ্নে সারোয়ার তুষার বলেন, ‘সব ঐক্য তো নির্বাচনমুখী না। নির্বাচনের আগে একধরনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকবে, বাগ্বিতণ্ডা থাকবে। সকল পক্ষই সহনশীলতা দেখিয়েছে। একই কারণে বাগ্বিতণ্ডা বড় আকার নেবে না।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক উমামা ফাতেমা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানের শক্তিগুলোর মধ্যে অনৈক্যের যে ধারা তা ৫ আগস্টের পর থেকে শুরু হয়েছিল। রাজনৈতিক এবং ক্ষমতার প্রশ্নকে কেন্দ্র করেই শক্তিগুলো বিভক্ত হয়ে পড়ে। যারা এখানে নেতৃত্বে পর্যায়ে ছিল তাদের এটার দায়ভার গ্রহণ করতে হবে। শুরুতেই তারা তাদের নিজস্ব রাজনীতি তৈরি করতে গিয়ে বিভক্তি তৈরি করেছে। পাঁচ আগস্টের পরে তারা যেভাবে ক্ষমতামুখী রাজনীতিতে ঢুকে গেল তা ঐক্যে ফাটল ধরাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। মূলকথা, যারা ক্ষমতা কাঠামোর কাছাকাছি তারাই ঐক্যে ভাঙন ধরানোর জন্য বেশি দায়ী।’
আরও খবর পড়ুন:

শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার আন্দোলন শেষ পর্যন্ত ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পরিণত হয়। গত জুলাইয়ের এই অভ্যুত্থানে অনেক দল, সংগঠন, প্ল্যাটফর্ম, ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রেখেছিল। কিন্তু শেখ হাসিনার পতনের পর বিভিন্ন ইস্যুকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে দূরত্ব ও অস্থিরতা দিন দিন বাড়ছে। সরকারের উপদেষ্টা থেকে শুরু করে বিভিন্ন দল ও সংগঠনের নেতাদের বক্তব্য, স্লোগান ও আলাপচারিতায় তা প্রকাশ পাচ্ছে।
আগামী জাতীয় নির্বাচন ঘনিয়ে আসতে আসতে সংস্কারের নানা ইস্যু, ভোটের সময়সীমাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে অভ্যুত্থানের অংশীজনদের মধ্যে এই দূরত্ব আরও বাড়বে—এমনটা মনে করছেন সংগঠনগুলোর নেতারা।
জুলাইয়ের আন্দোলনে অংশীজনদের অনেকে মনে করছেন, শেখ হাসিনার পতনের পরপরই এতে বড় দল বিএনপির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা এবং ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পরিবর্তে ২০২৪ সালের অভ্যুত্থানকে বড় করে দেখানোর পর থেকে দলটির সঙ্গে আন্দোলনের তরুণ নেতৃত্বের দূরত্ব তৈরি শুরু হয়। এরপর ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ তৈরি, নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও ছাত্রসংগঠন গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের আত্মপ্রকাশ, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে অপসারণের চেষ্টা, গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের শপথ নেওয়ার আগে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে মুহাম্মদ ইউনূসের নিয়োগের বিষয়ে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের কথিত আপত্তির দাবি করে ভিডিও প্রকাশসহ বিভিন্ন ইস্যুতে ধীরে ধীরে বিভিন্ন অংশীজনের মধ্যে দূরত্ব বাড়তে থাকে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, জুলাইয়ে গণহত্যার অভিযোগে আওয়ামী লীগকে সরাসরি নির্বাহী আদেশে নিষিদ্ধ করার দাবিতে এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহর ডাকে সর্বশেষ ঢাকায় মিন্টো রোড ও শাহবাগে যে বিক্ষোভ-সমাবেশ হয়েছে, তা সরকারের ওপর চাপ তৈরির জন্যই করা। এ কর্মসূচিতে যোগদানের জন্য প্রকাশ্য ও অনানুষ্ঠানিক অনুরোধ করা হয় বিএনপিকে। জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলনসহ বিভিন্ন সংগঠন এনসিপির কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করে। কিন্তু দুই দিন চলা এই আন্দোলনে শেষ পর্যন্ত বিএনপির কেউ যাননি।
বিএনপি নেতারা বলছেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি নিয়ে তেমন মতভেদ না থাকলেও এনসিপির কর্মসূচিতে গিয়ে সংহতি প্রকাশ করা থেকে বিএনপি বিরত থেকেছে মূলত সাবধানতা হিসেবে। এ ছাড়া রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ, নতুন সংবিধান প্রণয়নের দাবি ও সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানকে বিতর্কিত করার চেষ্টাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে এনসিপির সঙ্গে বিএনপির দূরত্ব তৈরি হয়েছে। বিএনপি আগেই সরকারকে জানিয়েছে, আওয়ামী লীগের মতো দলকে নিষিদ্ধ করা আইনি ও বিচারিক প্রক্রিয়ায় হতে হবে। এ কারণে অন্য দলের কর্মসূচিতে যাওয়া দরকার মনে করেনি তারা।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. সাব্বির আহমেদ মনে করেন, ‘সব বিষয়ে ঐকমত্য থাকবে না, ভিন্নমত থাকবে, এটা স্বাভাবিক। যেমন নতুন সংবিধান হবে কি না, গণপরিষদ কীভাবে গঠিত হবে, সে বিষয়ে দলগুলোর ভিন্নমত আছে। এই ভিন্নমতের বিষয়গুলো যদি আলোচনার টেবিলে সমাধান না করে সরকার চাপিয়ে দিতে চায়, তাহলে দূরত্ব বাড়বে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের এই অধ্যাপক গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকা'কে বলেন, যে বিষয়গুলো দূরত্ব তৈরির কারণ হিসেবে সামনে আসছে, তার বেশির ভাগই আলোচনার টেবিলে সমাধান করা যেত। তিনি বলেন, ‘সবকিছু রাস্তায় নিয়ে যাওয়া ঠিক নয়। সবকিছু চাপ দিয়ে করানোও ঠিক নয়।’
বিশ্লেষকেরা বলছেন, যেসব ইস্যুতে মতভেদ থেকে দূরত্ব তৈরি হচ্ছে, তা প্রকাশ্য ও নেপথ্যের আলোচনায়ই হয়তো সমাধান করা যেত। তা না করে চাপ তৈরির জন্য রাস্তায় আন্দোলনের আবহ তৈরি করা, একই সঙ্গে এসব কর্মসূচি সুযোগে নিজেদের মতো চাপিয়ে দিতে অন্য দলের চেষ্টা করা অনেকে ভালোভাবে নিচ্ছেন না।
জামায়াতে ইসলামীর নাম উল্লেখ না করে সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম গত রোববার এক ফেসবুক পোস্টে যুদ্ধাপরাধের সহযোগীদের ক্ষমা চাওয়ার প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন। জামায়াতে ইসলামীর ওপরের সারির এক নেতা এ বিষয়ে আজকের পত্রিকাকে জানান, দলের ভেতরে বেশ কথা হচ্ছে বিষয়টি নিয়ে। জামায়াত বিষয়টি ভালোভাবে নেয়নি।
ফেসবুক পোস্টে মাহফুজ আলম বলেছিলেন, একাত্তরের প্রশ্ন মীমাংসা করতেই হবে। যুদ্ধাপরাধের সহযোগীদের ক্ষমা চাইতে হবে। বাংলাদেশে রাজনীতি করতে হলে পাকিস্তানপন্থা বাদ দিতে হবে।...জুলাইয়ের শক্তির মধ্যে ঢুকে সাবোটাজ করা বন্ধ করতে হবে। সাফ দিলে আসতে হবে।’
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগের কর্মসূচিতে জাতীয় সংগীত থামাতে বলা এবং স্লোগানে ‘গোলাম আযমের বাংলাদেশ’ উচ্চারণের ভিডিও প্রকাশ্যে আসার পর মাহফুজ আলম ফেসবুকে বিবৃতিটি দেন।
একই বিষয়ে এনসিপি গতকাল সোমবার এক বিজ্ঞপ্তিতে দলের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছে। দলটি বলছে, ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, মত, পক্ষ এবং সাধারণ ছাত্র-জনতা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিলেও একটি পক্ষ সচেতনভাবে দলীয় স্লোগান এবং বাংলাদেশের জনগণের ঐতিহাসিক সংগ্রামবিরোধী স্লোগান দিয়েছে; যা জুলাই-পরবর্তী সময়ে সাম্প্রতিক আন্দোলনে জাতীয় ঐক্য নবায়নের সুবর্ণ সুযোগ সৃষ্টিতে ব্যাঘাত ঘটিয়েছে।
জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানে সামনের সারিতে থাকা প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সমাবেশ ঘটেছে বিভিন্ন মত ও পথের তরুণদের। তাঁদের নেতাদের একটি বড় অংশ নিয়ে এনসিপি ও গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ গঠন করা হয়েছে। তবে উমামা ফাতেমাসহ কয়েকজন নেতা আলাদা করে ছাত্র আন্দোলন টিকিয়ে রাখেন। অন্যদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন, জামায়াতে ইসলামীর ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের এমন কয়েকজন সাবেক নেতা পরে ‘আপ বাংলাদেশ’ নামে আলাদা সংগঠন তৈরি করেন।
জুলাই অভ্যুত্থানে ঐক্যবদ্ধ শক্তিগুলো বিভক্ত হচ্ছে কি না জানতে চাইলে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার গতকাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এটা নানান কারণে হয়। প্রত্যেকের তো আলাদা আলাদা অ্যাজেন্ডা তৈরি হয়েছে। সেটার ভিত্তিতে ভিন্নমত হয়।’
সারোয়ার তুষার আরও বলেন, ‘ভিন্নমত সমস্যা না। ভিন্নমত গণতন্ত্রের জন্য ভালো। তবে এটা বিরোধিতা কিংবা মুখোমুখি অবস্থানে না গেলেই হয়। এদের মধ্যে আবার কিছু কমন জায়গাও আছে; যেমন আওয়ামী লীগ প্রশ্ন, সংস্কার। আমরা এমন কিছু কমন জায়গা তৈরি করে নিলে ভালো।’
নির্বাচন ঘনিয়ে এলে এই ‘মতভিন্নতা’ বাড়তে পারে কি না—এমন প্রশ্নে সারোয়ার তুষার বলেন, ‘সব ঐক্য তো নির্বাচনমুখী না। নির্বাচনের আগে একধরনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকবে, বাগ্বিতণ্ডা থাকবে। সকল পক্ষই সহনশীলতা দেখিয়েছে। একই কারণে বাগ্বিতণ্ডা বড় আকার নেবে না।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক উমামা ফাতেমা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানের শক্তিগুলোর মধ্যে অনৈক্যের যে ধারা তা ৫ আগস্টের পর থেকে শুরু হয়েছিল। রাজনৈতিক এবং ক্ষমতার প্রশ্নকে কেন্দ্র করেই শক্তিগুলো বিভক্ত হয়ে পড়ে। যারা এখানে নেতৃত্বে পর্যায়ে ছিল তাদের এটার দায়ভার গ্রহণ করতে হবে। শুরুতেই তারা তাদের নিজস্ব রাজনীতি তৈরি করতে গিয়ে বিভক্তি তৈরি করেছে। পাঁচ আগস্টের পরে তারা যেভাবে ক্ষমতামুখী রাজনীতিতে ঢুকে গেল তা ঐক্যে ফাটল ধরাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। মূলকথা, যারা ক্ষমতা কাঠামোর কাছাকাছি তারাই ঐক্যে ভাঙন ধরানোর জন্য বেশি দায়ী।’
আরও খবর পড়ুন:

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত করে শুরু হওয়া সহকারী শিক্ষকদের কর্মবিরতি স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষকেরা রোববার (৭ ডিসেম্বর) থেকে বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
১ ঘণ্টা আগে
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
১৩ ঘণ্টা আগে
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
১৬ ঘণ্টা আগে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেওয়া ভিভিআইপি মর্যাদা জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা পাবেন কি না—এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উপদেষ্টা বলেন, ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
১৭ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত করে শুরু হওয়া সহকারী শিক্ষকদের কর্মবিরতি স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষকেরা রোববার (৭ ডিসেম্বর) থেকে বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১২টার পর আন্দোলনরত শিক্ষক সংগঠনগুলোর দু’টি মোর্চা ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’ ও ‘প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের’ নেতারা এক যৌথ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন।
কর্মবিরতি স্থগিত ঘোষণার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আমাদের নৈতিকতা, মানবিকতা এবং সন্তানতুল্য কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে’ রোববার (৭ ডিসেম্বর) থেকে পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত সারা দেশের সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কমপ্লিট শাটডাউন বা তালাবদ্ধ কর্মসূচি স্থগিত করা হলো। রোববার থেকে সব শ্রেণির তৃতীয় প্রান্তিক মূল্যায়ন (বার্ষিক পরীক্ষা) চলবে।
এদিকে আন্দোলনরত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও শিক্ষক নেতাদের ‘হয়রানিমূলক’ বদলি করা হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
প্রাথমিকের শিক্ষক নেতাদের দাবি, বৃহস্পতিবার তিনজন কেন্দ্রীয় নেতাসহ ৪৪ জন সহকারী শিক্ষককে নিজ জেলার বাইরে অন্য জেলায় বদলি করা হয়েছে। এসব বদলিকে তাঁরা ‘হয়রানিমূলক বদলি’ বলে মন্তব্য করেছেন।
শিক্ষক নেতারা দাবি করেছেন, ‘রেওয়াজ না থাকলেও নিজ জেলার বাইরে হয়রানি করতে প্রশাসনিক কারণ দেখিয়ে বদলি করা হয়েছে।’
যদিও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা ও অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে এসব বদলির আদেশ খুঁজে পাওয়া যায়নি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের সাড়া পাওয়া যায়নি।
জানতে চাইলে প্রাথমিক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামছুদ্দিন মাসুদ জানিয়েছেন, তাঁকে নোয়াখালী সদর উপজেলার কৃপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার দক্ষিণ চরলক্ষ্মী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আরেক আহ্বায়ক খায়রুন নাহার লিপি জানিয়েছেন, তিনিসহ বিভিন্ন জেলায় কর্মরত অন্তত ৪৪ জন সহকারী শিক্ষককে অন্য জেলায় প্রশাসনিক কারণ দেখিয়ে বদলি করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
তিনি বলেন, আন্দোলনরত শিক্ষকদের প্রথমে শোকজ ও পরে বদলি করা হলো। এটি হয়রানিমূলক বদলি, আমাদের শাস্তি দিয়েছে কারণ আমরা শিক্ষকদের ন্যায্য দাবির পক্ষে লড়াই করেছি। কিন্তু অনেক শিক্ষক যাঁরা আন্দোলনে জড়িত ছিলেন না তবুও তাঁরা বদলি হয়েছেন।
‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের’ অনুসারীরা সরকারের দেওয়া আশ্বাস বাস্তবায়নের দাবিতে গত বৃহস্পতিবার থেকে কর্মবিরতি পালন করেছেন। সোমবার থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বেশ কিছু স্কুলে আন্দোলনরত শিক্ষকেরা তা বর্জন করে কর্মবিরতি চালিয়ে যান।
কয়েক দিন আগে দশম গ্রেডে বেতনসহ তিন দাবিতে তাঁরা আন্দোলন করছিলেন। পরে ১১ তম গ্রেডে বেতনের আশ্বাসে কর্মসূচি স্থগিত করেন।
গত ৮ নভেম্বর শহীদ মিনারে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষকেরা। ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের’ ব্যানারে সেদিন বিকেলে তাঁরা ‘কলম বিরতি কর্মসূচি’ পালনে মিছিল নিয়ে শাহবাগের দিকে এগিয়ে যাওয়া চেষ্টা করলে তাঁদের আটকে দেয় পুলিশ। সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান, লাঠিপেটা, কাঁদুনে গ্যাস প্রয়োগ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ। সেসময় বেশ কয়েকজন আহত হন। এ ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষকেরা পরদিন থেকেই কর্মবিরতি শুরু করেন।
পরে ১০ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভা করেন আন্দোলনরত শিক্ষকেরা, যেখানে একাদশ গ্রেডে বেতন নির্ধারণ এবং উচ্চতর গ্রেড ও পদোন্নতির জটিলতা নিরসনে সরকারে আশ্বাস দিয়েছে জানিয়ে ওই দিন রাতে তাঁরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত করে শুরু হওয়া সহকারী শিক্ষকদের কর্মবিরতি স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষকেরা রোববার (৭ ডিসেম্বর) থেকে বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১২টার পর আন্দোলনরত শিক্ষক সংগঠনগুলোর দু’টি মোর্চা ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’ ও ‘প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের’ নেতারা এক যৌথ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন।
কর্মবিরতি স্থগিত ঘোষণার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আমাদের নৈতিকতা, মানবিকতা এবং সন্তানতুল্য কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে’ রোববার (৭ ডিসেম্বর) থেকে পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত সারা দেশের সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কমপ্লিট শাটডাউন বা তালাবদ্ধ কর্মসূচি স্থগিত করা হলো। রোববার থেকে সব শ্রেণির তৃতীয় প্রান্তিক মূল্যায়ন (বার্ষিক পরীক্ষা) চলবে।
এদিকে আন্দোলনরত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও শিক্ষক নেতাদের ‘হয়রানিমূলক’ বদলি করা হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
প্রাথমিকের শিক্ষক নেতাদের দাবি, বৃহস্পতিবার তিনজন কেন্দ্রীয় নেতাসহ ৪৪ জন সহকারী শিক্ষককে নিজ জেলার বাইরে অন্য জেলায় বদলি করা হয়েছে। এসব বদলিকে তাঁরা ‘হয়রানিমূলক বদলি’ বলে মন্তব্য করেছেন।
শিক্ষক নেতারা দাবি করেছেন, ‘রেওয়াজ না থাকলেও নিজ জেলার বাইরে হয়রানি করতে প্রশাসনিক কারণ দেখিয়ে বদলি করা হয়েছে।’
যদিও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা ও অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে এসব বদলির আদেশ খুঁজে পাওয়া যায়নি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের সাড়া পাওয়া যায়নি।
জানতে চাইলে প্রাথমিক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামছুদ্দিন মাসুদ জানিয়েছেন, তাঁকে নোয়াখালী সদর উপজেলার কৃপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার দক্ষিণ চরলক্ষ্মী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আরেক আহ্বায়ক খায়রুন নাহার লিপি জানিয়েছেন, তিনিসহ বিভিন্ন জেলায় কর্মরত অন্তত ৪৪ জন সহকারী শিক্ষককে অন্য জেলায় প্রশাসনিক কারণ দেখিয়ে বদলি করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
তিনি বলেন, আন্দোলনরত শিক্ষকদের প্রথমে শোকজ ও পরে বদলি করা হলো। এটি হয়রানিমূলক বদলি, আমাদের শাস্তি দিয়েছে কারণ আমরা শিক্ষকদের ন্যায্য দাবির পক্ষে লড়াই করেছি। কিন্তু অনেক শিক্ষক যাঁরা আন্দোলনে জড়িত ছিলেন না তবুও তাঁরা বদলি হয়েছেন।
‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের’ অনুসারীরা সরকারের দেওয়া আশ্বাস বাস্তবায়নের দাবিতে গত বৃহস্পতিবার থেকে কর্মবিরতি পালন করেছেন। সোমবার থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বেশ কিছু স্কুলে আন্দোলনরত শিক্ষকেরা তা বর্জন করে কর্মবিরতি চালিয়ে যান।
কয়েক দিন আগে দশম গ্রেডে বেতনসহ তিন দাবিতে তাঁরা আন্দোলন করছিলেন। পরে ১১ তম গ্রেডে বেতনের আশ্বাসে কর্মসূচি স্থগিত করেন।
গত ৮ নভেম্বর শহীদ মিনারে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষকেরা। ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের’ ব্যানারে সেদিন বিকেলে তাঁরা ‘কলম বিরতি কর্মসূচি’ পালনে মিছিল নিয়ে শাহবাগের দিকে এগিয়ে যাওয়া চেষ্টা করলে তাঁদের আটকে দেয় পুলিশ। সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান, লাঠিপেটা, কাঁদুনে গ্যাস প্রয়োগ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ। সেসময় বেশ কয়েকজন আহত হন। এ ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষকেরা পরদিন থেকেই কর্মবিরতি শুরু করেন।
পরে ১০ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভা করেন আন্দোলনরত শিক্ষকেরা, যেখানে একাদশ গ্রেডে বেতন নির্ধারণ এবং উচ্চতর গ্রেড ও পদোন্নতির জটিলতা নিরসনে সরকারে আশ্বাস দিয়েছে জানিয়ে ওই দিন রাতে তাঁরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন।

শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার আন্দোলন শেষ পর্যন্ত ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পরিণত হয়। গত জুলাইয়ের এই অভ্যুত্থানে অনেক দল, সংগঠন, প্ল্যাটফর্ম, ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রেখেছিল। কিন্তু শেখ হাসিনার পতনের পর বিভিন্ন ইস্যুকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে দূরত্ব ও অস্থিরতা দিন দিন বাড়ছে।
১৩ মে ২০২৫
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
১৩ ঘণ্টা আগে
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
১৬ ঘণ্টা আগে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেওয়া ভিভিআইপি মর্যাদা জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা পাবেন কি না—এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উপদেষ্টা বলেন, ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
১৭ ঘণ্টা আগেশাহরিয়ার হাসান, ঢাকা

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
রাজধানীর রাজারবাগে আজ বৃহস্পতিবার সদ্য পদায়ন পাওয়া ৬৪ জেলার এসপি, কমিশনার ও রেঞ্জ ডিআইজিদের সঙ্গে এক বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়। এর আগে সকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের সব নতুন এসপির সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচনকালীন দায়িত্ব ও মাঠপর্যায়ের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে দিকনির্দেশনা দেন।
আইজিপির সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, বক্তব্য দেওয়া এসপিদের সবার আলোচনাতেই কমবেশি ভোটকেন্দ্রে ব্যালটের নিরাপত্তার বিষয়টি উঠে আসে। আইজিপি বাহারুল আলম বৈঠকে তাঁর বক্তব্যে বলেন, আসন্ন নির্বাচনে পুলিশ শতভাগ নিরপেক্ষ থাকবে। জেলায় জেলায় এসপিরা সংসদীয় আসনের প্রার্থীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখবে এবং সবাইকে সুষ্ঠু নির্বাচনে অংশ নিতে উৎসাহিত করবে। আইজি এসপিদের বলেছেন, যার যার জেলা ও আসন ধরে ধরে নির্বাচনের সকল প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে হবে। এতে কাজটা সহজ হয়ে যাবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলার এসপি জানান, নির্বাচন সামনে রেখে পুলিশের প্রশিক্ষণ ঠিকভাবে সম্পন্ন করার ওপর জোর দিয়েছেন আইজিপি। তিনি বলেন, প্রত্যেক সদস্যকে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রার্থীদের মধ্যে সম্ভাব্য সংঘাত বা উত্তেজনার তথ্য আগে থেকেই সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলো বিবেচনায় নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা রেঞ্জের এক এসপি জানান, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান জোরদার করার নির্দেশও দেওয়া হয়। তাঁর মতে, এসব অস্ত্র উদ্ধার করা গেলে সহিংসতার ঝুঁকিও কমে আসবে বলে মনে করে পুলিশ সদর দপ্তর।
বৈঠকের আলোচনা নিয়ে জানতে চাইলে হবিগঞ্জের এসপি ইয়াসমিন খাতুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের কিছু সমস্যার কথা বলা হয়েছে। ভোটার, ভোট, ভোটের কেন্দ্র নিয়ে আইজি স্যার আমাদের বেশ কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।’
এর আগে সকালে এসপিদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নতুন বাংলাদেশের সূচনা করবে।’ তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের জন্ম হবে। এই জন্ম দিতে আপনারা (এসপি) ধাত্রীর ভূমিকা পালন করবেন। সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করাই আপনাদের দায়িত্ব।’
অতীতের বিতর্কিত নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এবার সেই ইতিহাস বদলানোর সুযোগ এসেছে। যেন দেশে-বিদেশে সবাই বলতে পারে, বাংলাদেশে এক নজিরবিহীন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, এ নির্বাচন কেবল রুটিন নির্বাচন নয়; এটি গণ-অভ্যুত্থানের পরবর্তী নির্বাচন। যে স্বপ্ন নিয়ে মানুষ আত্মত্যাগ করেছে, সেই স্বপ্নের স্থায়ী ভিত্তি তৈরির সুযোগ এই নির্বাচন।
গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ শাহরিয়ার খান আনাসের চিঠির প্রসঙ্গ টেনে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সেই চিঠি দায়িত্ববোধের বার্তা দিয়ে গেছে। এসপিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা কর্মস্থলে যাওয়ার আগে আনাসের চিঠিটা কাছে রাখবেন। সেটাই আপনাদের দায়িত্ব মনে করিয়ে দেবে।’
পুলিশ সুপারদের পদায়নে লটারির কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এর লক্ষ্য ছিল পক্ষপাতহীনতা নিশ্চিত করা। এতে ব্যক্তিগত অসুবিধা হলেও দায়িত্ব পালনে মনোযোগ বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
রাজধানীর রাজারবাগে আজ বৃহস্পতিবার সদ্য পদায়ন পাওয়া ৬৪ জেলার এসপি, কমিশনার ও রেঞ্জ ডিআইজিদের সঙ্গে এক বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়। এর আগে সকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের সব নতুন এসপির সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচনকালীন দায়িত্ব ও মাঠপর্যায়ের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে দিকনির্দেশনা দেন।
আইজিপির সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, বক্তব্য দেওয়া এসপিদের সবার আলোচনাতেই কমবেশি ভোটকেন্দ্রে ব্যালটের নিরাপত্তার বিষয়টি উঠে আসে। আইজিপি বাহারুল আলম বৈঠকে তাঁর বক্তব্যে বলেন, আসন্ন নির্বাচনে পুলিশ শতভাগ নিরপেক্ষ থাকবে। জেলায় জেলায় এসপিরা সংসদীয় আসনের প্রার্থীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখবে এবং সবাইকে সুষ্ঠু নির্বাচনে অংশ নিতে উৎসাহিত করবে। আইজি এসপিদের বলেছেন, যার যার জেলা ও আসন ধরে ধরে নির্বাচনের সকল প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে হবে। এতে কাজটা সহজ হয়ে যাবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলার এসপি জানান, নির্বাচন সামনে রেখে পুলিশের প্রশিক্ষণ ঠিকভাবে সম্পন্ন করার ওপর জোর দিয়েছেন আইজিপি। তিনি বলেন, প্রত্যেক সদস্যকে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রার্থীদের মধ্যে সম্ভাব্য সংঘাত বা উত্তেজনার তথ্য আগে থেকেই সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলো বিবেচনায় নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা রেঞ্জের এক এসপি জানান, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান জোরদার করার নির্দেশও দেওয়া হয়। তাঁর মতে, এসব অস্ত্র উদ্ধার করা গেলে সহিংসতার ঝুঁকিও কমে আসবে বলে মনে করে পুলিশ সদর দপ্তর।
বৈঠকের আলোচনা নিয়ে জানতে চাইলে হবিগঞ্জের এসপি ইয়াসমিন খাতুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের কিছু সমস্যার কথা বলা হয়েছে। ভোটার, ভোট, ভোটের কেন্দ্র নিয়ে আইজি স্যার আমাদের বেশ কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।’
এর আগে সকালে এসপিদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নতুন বাংলাদেশের সূচনা করবে।’ তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের জন্ম হবে। এই জন্ম দিতে আপনারা (এসপি) ধাত্রীর ভূমিকা পালন করবেন। সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করাই আপনাদের দায়িত্ব।’
অতীতের বিতর্কিত নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এবার সেই ইতিহাস বদলানোর সুযোগ এসেছে। যেন দেশে-বিদেশে সবাই বলতে পারে, বাংলাদেশে এক নজিরবিহীন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, এ নির্বাচন কেবল রুটিন নির্বাচন নয়; এটি গণ-অভ্যুত্থানের পরবর্তী নির্বাচন। যে স্বপ্ন নিয়ে মানুষ আত্মত্যাগ করেছে, সেই স্বপ্নের স্থায়ী ভিত্তি তৈরির সুযোগ এই নির্বাচন।
গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ শাহরিয়ার খান আনাসের চিঠির প্রসঙ্গ টেনে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সেই চিঠি দায়িত্ববোধের বার্তা দিয়ে গেছে। এসপিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা কর্মস্থলে যাওয়ার আগে আনাসের চিঠিটা কাছে রাখবেন। সেটাই আপনাদের দায়িত্ব মনে করিয়ে দেবে।’
পুলিশ সুপারদের পদায়নে লটারির কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এর লক্ষ্য ছিল পক্ষপাতহীনতা নিশ্চিত করা। এতে ব্যক্তিগত অসুবিধা হলেও দায়িত্ব পালনে মনোযোগ বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার আন্দোলন শেষ পর্যন্ত ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পরিণত হয়। গত জুলাইয়ের এই অভ্যুত্থানে অনেক দল, সংগঠন, প্ল্যাটফর্ম, ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রেখেছিল। কিন্তু শেখ হাসিনার পতনের পর বিভিন্ন ইস্যুকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে দূরত্ব ও অস্থিরতা দিন দিন বাড়ছে।
১৩ মে ২০২৫
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত করে শুরু হওয়া সহকারী শিক্ষকদের কর্মবিরতি স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষকেরা রোববার (৭ ডিসেম্বর) থেকে বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
১ ঘণ্টা আগে
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
১৬ ঘণ্টা আগে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেওয়া ভিভিআইপি মর্যাদা জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা পাবেন কি না—এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উপদেষ্টা বলেন, ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
১৭ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিএনপির পক্ষ থেকে আপত্তি তোলা সত্ত্বেও পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ ও এনজিও-সংক্রান্ত অধ্যাদেশের অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আজ বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
সেদিন সংবাদমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বিশ্বস্ত সূত্রে আমরা জানতে পেরেছি, তাড়াহুড়ো করে দুটি আইন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার পাস করাতে চাইছে। একটি সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন, অন্যটি এনজিও-সংক্রান্ত আইন। আমরা মনে করি, নির্বাচনের আগে এই আইনগুলো পাস করার পেছনে সরকারের ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য কাজ করছে; যা গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথকে বাধাগ্রস্ত করবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়াই তড়িঘড়ি করে এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আইন পাস করা সমীচীন হবে না। আমরা মনে করি, উপরোক্ত বিষয়ে আইনগুলো পরবর্তী জাতীয় সংসদে যুক্তিতর্কের মধ্য দিয়ে প্রণয়ন করা সঠিক হবে। সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি, এই ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ থেকে বিরত থাকার জন্য।’
বিএনপির আপত্তি আমলে না নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারককে প্রধান করে আজ উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পাঁচ সদস্যের পুলিশ কমিশন গঠনের অনুমোদন দেওয়া হয়। গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশের (আরপিও) দুটি ক্ষেত্রেও সংশোধনী আনা হয়।
বৈঠক শেষে এ বিষয়ে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।
উপদেষ্টা জানান, পুলিশ কমিশনে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ছাড়াও একজন অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ, অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শক পদমর্যাদার নিচে নন—এমন কোনো অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, যিনি কর্মরত হতে পারেন বা অবসরপ্রাপ্তও হতে পারেন এবং মানবাধিকার ও সুশাসন বিষয়ে অন্তত ১৫ বছর অভিজ্ঞতা রয়েছে, এমন একজন ব্যক্তি থাকবেন।
পুলিশকে জনবান্ধব করতে করণীয় সম্পর্কে সরকারকে সুপারিশ করবে কমিশন। এ ছাড়া পুলিশ যাতে সংবেদনশীল হয়, সে জন্য তাদের আধুনিকায়ন কোথায় কোথায় দরকার, কী ধরনের প্রশিক্ষণ দরকার—সেগুলোও চিহ্নিত করবে কমিশন।
কমিশনের কার্যক্রমের মধ্যে থাকবে—পুলিশের বিষয়ে নাগরিকদের যেসব অভিযোগ থাকবে, সেগুলো তদন্ত ও নিষ্পত্তি করা এবং পেশাগত বিষয়ে পুলিশ সদস্যদের যদি কোনো অভিযোগ থাকে, সেগুলোর নিষ্পত্তি করা। পুলিশি কার্যক্রমে দক্ষতা ও উৎকর্ষ আনা, শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রদান ইত্যাদি কাজও হবে এ কমিশনের।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রিজওয়ানা হাসান বলেন, সুপারিশ-পরামর্শ কেউ কখনো মানতে বাধ্য না। পুলিশের সঙ্গে জনগণের একটি ব্রিজ (সেতু) করে দেওয়ার জন্যই এ কমিশন। আর পুলিশের সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে, আধুনিকায়নের ক্ষেত্রে, মানবাধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে সরকারের একটা যোগসূত্র স্থাপন করে দেওয়ার কাজ হচ্ছে এ কমিশনের।
আরপিও সংশোধন করে কোন কোন ভোট বিবেচনায় নেওয়া হবে না এবং পোস্টাল ব্যালটের ভোটগুলো গণনা পদ্ধতি সংযুক্ত করা হয়েছে।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘ব্যালটে যেখানে একটা সিল পড়ার কথা, সেখানে একাধিক সিল পড়লে গণনা করা হবে না। যদি সিল না দেয়, তাহলে গণনা করা হবে না। যখন পোস্টাল ভোট দেওয়া হয়, তখন একটা ডিক্লারেশন স্বাক্ষর করা হবে। ওই ডিক্লারেশনে যদি স্বাক্ষর না থাকে, তাহলে গণনা করা হবে না। আর আমাদের ভোটের দিন পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করে দেবে নির্বাচন কমিশন। সেই সময়ে যে ব্যালটগুলো এসে পৌঁছাবে রিটার্নিং অফিসারের কাছে—সেগুলো একইভাবে গণনা করা হবে।’

বিএনপির পক্ষ থেকে আপত্তি তোলা সত্ত্বেও পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ ও এনজিও-সংক্রান্ত অধ্যাদেশের অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আজ বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
সেদিন সংবাদমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বিশ্বস্ত সূত্রে আমরা জানতে পেরেছি, তাড়াহুড়ো করে দুটি আইন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার পাস করাতে চাইছে। একটি সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন, অন্যটি এনজিও-সংক্রান্ত আইন। আমরা মনে করি, নির্বাচনের আগে এই আইনগুলো পাস করার পেছনে সরকারের ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য কাজ করছে; যা গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথকে বাধাগ্রস্ত করবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়াই তড়িঘড়ি করে এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আইন পাস করা সমীচীন হবে না। আমরা মনে করি, উপরোক্ত বিষয়ে আইনগুলো পরবর্তী জাতীয় সংসদে যুক্তিতর্কের মধ্য দিয়ে প্রণয়ন করা সঠিক হবে। সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি, এই ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ থেকে বিরত থাকার জন্য।’
বিএনপির আপত্তি আমলে না নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারককে প্রধান করে আজ উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পাঁচ সদস্যের পুলিশ কমিশন গঠনের অনুমোদন দেওয়া হয়। গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশের (আরপিও) দুটি ক্ষেত্রেও সংশোধনী আনা হয়।
বৈঠক শেষে এ বিষয়ে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।
উপদেষ্টা জানান, পুলিশ কমিশনে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ছাড়াও একজন অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ, অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শক পদমর্যাদার নিচে নন—এমন কোনো অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, যিনি কর্মরত হতে পারেন বা অবসরপ্রাপ্তও হতে পারেন এবং মানবাধিকার ও সুশাসন বিষয়ে অন্তত ১৫ বছর অভিজ্ঞতা রয়েছে, এমন একজন ব্যক্তি থাকবেন।
পুলিশকে জনবান্ধব করতে করণীয় সম্পর্কে সরকারকে সুপারিশ করবে কমিশন। এ ছাড়া পুলিশ যাতে সংবেদনশীল হয়, সে জন্য তাদের আধুনিকায়ন কোথায় কোথায় দরকার, কী ধরনের প্রশিক্ষণ দরকার—সেগুলোও চিহ্নিত করবে কমিশন।
কমিশনের কার্যক্রমের মধ্যে থাকবে—পুলিশের বিষয়ে নাগরিকদের যেসব অভিযোগ থাকবে, সেগুলো তদন্ত ও নিষ্পত্তি করা এবং পেশাগত বিষয়ে পুলিশ সদস্যদের যদি কোনো অভিযোগ থাকে, সেগুলোর নিষ্পত্তি করা। পুলিশি কার্যক্রমে দক্ষতা ও উৎকর্ষ আনা, শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রদান ইত্যাদি কাজও হবে এ কমিশনের।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রিজওয়ানা হাসান বলেন, সুপারিশ-পরামর্শ কেউ কখনো মানতে বাধ্য না। পুলিশের সঙ্গে জনগণের একটি ব্রিজ (সেতু) করে দেওয়ার জন্যই এ কমিশন। আর পুলিশের সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে, আধুনিকায়নের ক্ষেত্রে, মানবাধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে সরকারের একটা যোগসূত্র স্থাপন করে দেওয়ার কাজ হচ্ছে এ কমিশনের।
আরপিও সংশোধন করে কোন কোন ভোট বিবেচনায় নেওয়া হবে না এবং পোস্টাল ব্যালটের ভোটগুলো গণনা পদ্ধতি সংযুক্ত করা হয়েছে।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘ব্যালটে যেখানে একটা সিল পড়ার কথা, সেখানে একাধিক সিল পড়লে গণনা করা হবে না। যদি সিল না দেয়, তাহলে গণনা করা হবে না। যখন পোস্টাল ভোট দেওয়া হয়, তখন একটা ডিক্লারেশন স্বাক্ষর করা হবে। ওই ডিক্লারেশনে যদি স্বাক্ষর না থাকে, তাহলে গণনা করা হবে না। আর আমাদের ভোটের দিন পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করে দেবে নির্বাচন কমিশন। সেই সময়ে যে ব্যালটগুলো এসে পৌঁছাবে রিটার্নিং অফিসারের কাছে—সেগুলো একইভাবে গণনা করা হবে।’

শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার আন্দোলন শেষ পর্যন্ত ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পরিণত হয়। গত জুলাইয়ের এই অভ্যুত্থানে অনেক দল, সংগঠন, প্ল্যাটফর্ম, ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রেখেছিল। কিন্তু শেখ হাসিনার পতনের পর বিভিন্ন ইস্যুকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে দূরত্ব ও অস্থিরতা দিন দিন বাড়ছে।
১৩ মে ২০২৫
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত করে শুরু হওয়া সহকারী শিক্ষকদের কর্মবিরতি স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষকেরা রোববার (৭ ডিসেম্বর) থেকে বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
১ ঘণ্টা আগে
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
১৩ ঘণ্টা আগে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেওয়া ভিভিআইপি মর্যাদা জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা পাবেন কি না—এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উপদেষ্টা বলেন, ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
১৭ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ভিভিআইপি (অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি) হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স) সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। তবে জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা এই সুবিধা পাবেন না।
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আজ বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেওয়া ভিভিআইপি মর্যাদা জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা পাবেন কি না—এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উপদেষ্টা বলেন, ‘ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা এই সুবিধা পাবেন না।’
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে গত মঙ্গলবার রাষ্ট্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (ভিভিআইপি) ঘোষণা করে অন্তর্বর্তী সরকার। রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে গত ২৩ নভেম্বর থেকে চিকিৎসা নেওয়ার মধ্যেই তাঁকে এই বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়।
বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স) (সংশোধন) অধ্যাদেশ অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা যেখানেই অবস্থান করুন না কেন, তাঁদের দৈহিক নিরাপত্তা দেওয়া এ বাহিনীর প্রধান দায়িত্ব হবে। এ ছাড়া বাহিনী বাংলাদেশে অবস্থানরত অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকেও নিরাপত্তা দেবে।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ভিভিআইপি (অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি) হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স) সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। তবে জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা এই সুবিধা পাবেন না।
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আজ বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেওয়া ভিভিআইপি মর্যাদা জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা পাবেন কি না—এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উপদেষ্টা বলেন, ‘ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা এই সুবিধা পাবেন না।’
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে গত মঙ্গলবার রাষ্ট্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (ভিভিআইপি) ঘোষণা করে অন্তর্বর্তী সরকার। রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে গত ২৩ নভেম্বর থেকে চিকিৎসা নেওয়ার মধ্যেই তাঁকে এই বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়।
বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স) (সংশোধন) অধ্যাদেশ অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা যেখানেই অবস্থান করুন না কেন, তাঁদের দৈহিক নিরাপত্তা দেওয়া এ বাহিনীর প্রধান দায়িত্ব হবে। এ ছাড়া বাহিনী বাংলাদেশে অবস্থানরত অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকেও নিরাপত্তা দেবে।

শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার আন্দোলন শেষ পর্যন্ত ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পরিণত হয়। গত জুলাইয়ের এই অভ্যুত্থানে অনেক দল, সংগঠন, প্ল্যাটফর্ম, ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রেখেছিল। কিন্তু শেখ হাসিনার পতনের পর বিভিন্ন ইস্যুকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে দূরত্ব ও অস্থিরতা দিন দিন বাড়ছে।
১৩ মে ২০২৫
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত করে শুরু হওয়া সহকারী শিক্ষকদের কর্মবিরতি স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষকেরা রোববার (৭ ডিসেম্বর) থেকে বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
১ ঘণ্টা আগে
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
১৩ ঘণ্টা আগে
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
১৬ ঘণ্টা আগে