Ajker Patrika

যৌথ বাহিনীর নামে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ করতে হবে: মায়ের ডাক

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৬: ৫০
যৌথ বাহিনীর নামে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ করতে হবে: মায়ের ডাক

কুমিল্লায় যৌথবাহিনীর হেফাজতে যুবদল নেতার মৃত্যুর ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে গুম ও হত্যাকাণ্ডের শিকার পরিবারদের সংগঠন মায়ের ডাক। সেই সঙ্গে যৌথ বাহিনীর নামে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের সংস্কৃতি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করাসহ চারটি দাবি তুলে ধরেছে সংগঠনটি। আজ শনিবার সংগঠনটির অফিশিয়াল ফেসবুক পেজসহ গণমাধ্যমে এ বিবৃতি পাঠানো হয়।

সংগঠক সানজিদা তুলি স্বাক্ষরিত এ বিবৃতিতে বলা হয়, ‘কুমিল্লায় গভীর রাতে যৌথ বাহিনীর হাতে আটক যুবদল নেতা মো. তৌহিদুল ইসলাম (৪০) অমানবিক নির্যাতনের ফলে মৃত্যুবরণ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তাঁর পরিবার জানিয়েছে, আটক করার পর তাঁকে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়, যার ফলে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হলেও চিকিৎসক দুপুর ১২টার দিকে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।’

এতে আরও বলা হয়, ‘আমরা এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাই। এ ধরনের রাষ্ট্রীয় হত্যাযজ্ঞ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়! বছরের পর বছর আমরা রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের বিরুদ্ধে লড়েছি, ছাত্র-জনতা রক্ত ঢেলেছে, তবু কেন নিরপরাধ মানুষ এভাবে প্রাণ হারাবে? কেন রাষ্ট্রীয় বাহিনীর হাতে একের পর এক বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটবে?’

মায়ের ডাকের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সত্যটা স্পষ্ট—মিলিটারিই মব! গুম, খুন, কাস্টডিয়াল টর্চার এসবের পেছনে তাদের রক্তমাখা হাত। সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের যন্ত্র ভেঙে ফেলতে হবে, অপরাধীদের বিচারের কাঠগড়ায় আনতে হবে। আমরা আগেই সতর্ক করেছিলাম সেপ্টেম্বরে যৌথ বাহিনীর অভিযান শুরুর পর এবং সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দেওয়ার মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় দমন-পীড়নের পথ আরও প্রশস্ত করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি তো হয়নি, বরং সেনা সদস্যদের হাতে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বেড়েছে।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমরা প্রধান উপদেষ্টা ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানাই এই হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন। “হেফাজতে মৃত্যু” নিয়ে বাংলাদেশে মাত্র একটি মামলা হয়েছে, যা পুরো বিচারব্যবস্থার ব্যর্থতার প্রতীক। এটি চলতে পারে না!’

সংগঠনটির পক্ষ থেকে দাবিগুলো হলো—

১. যৌথ বাহিনীর এই হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।

২. ডিজিএফআই, র‍্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে লুকিয়ে থাকা অপরাধীদের শনাক্ত করে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

৩. যৌথ বাহিনীর নামে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের এই সংস্কৃতি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করতে হবে।

৪. শেখ হাসিনার রেখে যাওয়া রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা কাঠামো, দমনমূলক আইন ও বাহিনীর অপব্যবহার যদি চলতে থাকে, তবে একই ধরনের হত্যাকাণ্ড অব্যাহত থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত