হুসাইন আহমদ, ঢাকা

অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের রাষ্ট্র সংস্কারের আলোচনায় স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে প্রণীত সংবিধান বাতিল বা পুনর্লিখনের প্রস্তাব তুলেছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ। বিষয়টি নানামুখী আলোচনা ও তর্ক-বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী ছাত্রনেতাদের কেউ কেউ ‘বাহাত্তরের সংবিধানের কবর রচনার’ কথা বলে বিতর্ক উসকে দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে আজ রোববার রাজধানীতে একটি আলোচনা সভায় গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
রাজধানীর মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে নাগরিক কোয়ালিশনের আয়োজনে ‘সংবিধান সংস্কারে নাগরিক জোটের ৭ প্রস্তাব’ শীর্ষক সংলাপে এসব কথা বলেন আসিফ নজরুল। এতে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন আলোকচিত্রী ও নাগরিক কোয়ালিশনের সহ-আহ্বায়ক শহিদুল আলম। সাতটি প্রস্তাব তুলে ধরেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ মোহাম্মদ শাহান, বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে কথা বলেন অর্থনীতিবিদ ও লেখক জিয়া হাসান।
প্রস্তাবিত সাতটি বিষয় ছিল : নিম্নকক্ষের ভোটের আনুপাতিক ভিত্তিতে উচ্চকক্ষ গঠন, সাংবিধানিক নিয়োগ পদ্ধতির সংস্কার, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহাল, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ নির্ধারণ, সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কার্যকরী ভূমিকা ও প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর চালু, নারীদের সরাসরি নির্বাচনের সুযোগ বৃদ্ধি ও জুলাই সনদকে ভিত্তি করে একটি নতুন সাংবিধানিক রূপরেখা প্রণয়ন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, জাতীয় সংসদ সংবিধান সংশোধন করে, সাংবিধানিক পরিষদ নতুন সংবিধান প্রণয়ন করে। নতুন সংবিধান প্রণয়ন হতে বহুদিন লাগতে পারে। কোনো দেশে ৮-৯ বছরও লেগেছে। এর মধ্যে সংসদ প্রয়োজনে বাহাত্তরের সংবিধান সংশোধন করবে। নতুন সংবিধান প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত বর্তমান সংসদ সংবিধান পরিচালক হিসেবে কাজ করবে।
জুলাই সনদ, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ, সংসদের উচ্চকক্ষ, প্রধান বিচারপতির ক্ষমতার ভারসাম্য নিয়েও গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেন আইন উপদেষ্টা। তাঁর সেই বক্তব্যের চুম্বক অংশ এখানে তুলে ধরা হলো:—
বাহাত্তরের সংবিধান ও সংসদের ভূমিকা
নাগরিক জোটের প্রস্তাব বাস্তবায়নের পথরেখা ‘খুবই ভালো হয়েছে’ মন্তব্য করে নিজের বেশ কিছু পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন আসিফ নজরুল। আইন উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এর নজির আছে। এটা খুবই সাংবিধানিক ও বৈধ পদ্ধতি। সংসদই সংবিধান পরিষদের কাজ করবে। নেপাল, শ্রীলঙ্কাতে তা-ই হয়েছে। তবে সংসদ সংবিধান প্রণয়নে খুব অল্প সময় দিতে পারে। সপ্তাহে দুদিন সংবিধান পরিষদের কাজ করে। একটা সংবিধান পরিষদ যে জাতীয় সংসদ হিসেবে কাজ, সে তার সম্পূর্ণ সময়ের খুব বেশি হলে ৫০ শতাংশ সময় এখানে দিতে পারবে।
উপদেষ্টা বলেন, ‘এরকম একটা সংবিধান পরিষদ ৯০ দিনে সংবিধান রচনা করে ফেলবে, এটা মনে হচ্ছে একটু উচ্চাশা। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে ৯০ দিনের মধ্যে যদি তারা করতে না পারে, তাহলে এক্সিস্টিং কনস্টিটিউশন কন্টিনিউ করবে? এখানে হচ্ছে আমার আপত্তি! শোনেন, জাতীয় সংসদ সংবিধান সংশোধন করে, সংবিধান পরিষদ নতুন সংবিধান প্রণয়ন করে। নতুন সংবিধান প্রণয়ন হতে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশে এমন উদাহরণ আছে, আট-নয় বছর লেগেছে। নতুন সংবিধান প্রণয়ন হতে বহুদিন লাগতে পারে। এখন এই পর্যন্ত আমি বাহাত্তরের সংবিধান কন্টিনিউ করব?
তাঁর প্রস্তাব হলো— আগামী নির্বাচন হবে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। জাতীয় সংসদই সংবিধান পরিষদ হিসেবে নতুন সংবিধান প্রণয়নের কাজ করবে। নতুন সংবিধান প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত বাহাত্তরের সংবিধান চলবে। সংসদ এতে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনবে।
আসিফ নজরুল আরও বলেন, ‘এটা আপনাদের ইনক্লুড করতে হবে যে গণপরিষদ হিসেবে যখন সে কাজ করবে, সে নতুন সংবিধান প্রণয়নের কাজ করতে থাকবে। ওটা করতে আমার ধারণা দু-তিন বছর লাগতে পারে। এই দু-তিন বছর কি আমি বাহাত্তরের সংবিধান বহন করব? এই দু-তিন বছরের জন্য তারা যখন জাতীয় সংসদ হিসেবে কাজ করবে, তখন তারা সংসদের কিছু ফান্ডামেন্টাল এমেন্ডমেন্ট আনবে।’
এ ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় ভারসাম্য, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ, উচ্চ আদালতের বিকেন্দ্রীকরণ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও সংসদ সদস্যদের ৮৯ দিন পর্যন্ত সংসদে অনুপস্থিত থাকার সুযোগের মতো মৌলিক বিষয়ে পরিবর্তন আনার ‘সমাজে বহু বছর যাবৎ ঐক্য আছে’ বলে আইন উপদেষ্টা মন্তব্য করেন।
উপদেষ্টা বলেন, ‘এই ফান্ডামেন্টাল জিনিসগুলা যেটা আমরা সবাই সারা জীবন ধরে বলে আসছি— এগুলো জাতীয় সংসদ পরিবর্তন করতেই থাকবে। নতুন সংবিধান প্রণয়ন কবে হবে— এ জন্য আমি বাহাত্তরের বোঝা কেন বহন করব? এটা আপনাদের অবশ্যই ইনক্লুড করতে হবে।’
জুলাই সনদের ভূমিকা নিয়ে সংশয়
জুলাই সনদ নিয়ে অতিরিক্ত গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বলে মত দেন আসিফ নজরুল। তাঁর মতে, সবাই এই সনদের সবকিছুর সঙ্গে একমত হবেন—এমন আশা বাস্তবসম্মত নয়।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘দ্বিতীয় যে পথরেখাটা দিয়েছেন, সেখানে আমার মনে হচ্ছে, টু মাচ এমফেসিস দেওয়া হয়েছে জুলাই সনদের ওপর। জুলাই সনদে কি এত কিছুই থাকবে? এটা কি সংবিধানের ভিত্তি হবে? তাহলে জুলাই সনদ হবে নাকি আমার সন্দেহ আছে! জুলাই সনদের ওপর অনেক বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে... মনে হচ্ছে, আমরা এটা ধরেই নিয়েছি, সবাই জুলাই সনদের ওপর অনেক কিছুর বিষয়ে একমত হবে। এটা এত সহজ হবে না, হয়তো এমন হতে পারে জুলাই সনদের মোস্ট ফান্ডামেন্টাল জিনিস রাখা সম্ভব হতে পারে। এটা একটু ভেবে দেখেন! বাট নতুন চিন্তা, খুবই ভালো।’
উচ্চকক্ষ গঠনের যুক্তি ও ঝুঁকি
উচ্চকক্ষকে অত্যন্ত ক্ষমতাধর করে তোলার প্রস্তাব নিয়ে প্রশ্ন তুলে আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়েছে যে ফ্রাঙ্কলি স্পিকিং.. উচ্চকক্ষকে অনেক বেশি ক্ষমতা দিয়ে দেওয়া হয়েছে, এত ক্ষমতাই যদি উচ্চকক্ষকে দেন, তাহলে উচ্চকক্ষে বিএনপি-জামায়াত এবং নাহিদের দল তাদেরকেই নিয়োগ দেবে, যারা দলদাস হবে। আমার কাছে মনে হয়েছে উচ্চকক্ষের ওপর অনেক বেশি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এটাকে আপনারা একটু রেশনালাইজ করার চেষ্টা করেন, সবকিছু তারা করতে পারবে কি না।
নতুন কমিশনের পরিবর্তে বিদ্যমান প্রতিষ্ঠান শক্তিশালী করার আহ্বান
আসিফ নজরুল নতুন নতুন কমিশন গঠনের পরিবর্তে উচ্চ আদালত ও সংসদীয় স্থায়ী কমিটিগুলোকে কার্যকর করার ওপর জোর দেন। বিশেষ করে, স্বরাষ্ট্র, আইন ও অর্থ মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটিগুলোর সভাপতিত্ব বিরোধী দলের হাতে দিলে জবাবদিহি নিশ্চিত করা সম্ভব বলেও মন্তব্য করেন।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘নতুন নতুন অনেক কমিশনের প্রস্তাব করা হয়েছে এখানে। আমাদের এখানে তো অলরেডি অনেক কমিশন আছে। আমরা সব সময় যে জিনিসটা বিশ্বাস করি কি আমরা যখন কোনো সংস্কার ভাবনাতেই যাই। আমরা সব সময়, ‘নতুন নতুন কমিশন করতে হবে’ করি। আপনি খেয়াল করে দেখেন, আমরা ছোটবেলা থেকে বলেছি, সরকারের তিনটা অর্গান থাকবে— একটা হচ্ছে এক্সিকিউটিভ, একটা হচ্ছে জুডিশিয়ারি, একটা হচ্ছে সংসদ। আমাদের এখানে সবচেয়ে ফান্ডামেন্টাল যে দুইটা জবাবদিহিমূলক প্রতিষ্ঠান আছে, সবচেয়ে আদিম ফান্ডামেন্টাল একটা হচ্ছে উচ্চ আদালত, আরেকটা হচ্ছে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।’
আসিফ নজরুল বলেন, ‘উচ্চ আদালত আর সংসদীয় স্থায়ী কমিটিকে যদি ঠিকমতো গঠন করা যায়, ক্ষমতা দেওয়া হয়, তাহলে আমাদের এত নতুন নতুন কমিশন লাগে না। আমাদের যে নতুন কমিশনগুলো হয়েছে, দেখেন ইনফরমেশন কমিশন, তারপরে যে আমাদের নতুন কমিশন হয়েছে আপনার হিউম্যান রাইটস কমিশন, কম্পিটিশন কমিশন, কী রেজাল্ট দিয়েছে? আপনারা বরং এক্সিস্টিং যে প্রতিষ্ঠান আছে, সেটাকে আরও কত বেগবান করা যায়...। আপনারা যেমন স্থায়ী কমিটির কথা বলেছেন, স্থায়ী কমিটির ক্ষেত্রে কয়েকটা কমিটির কথা বলেছেন, ওটা যেন অবশ্যই হেডেড বাই বিরোধী দলের নেতা হয়।’
প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ নয়, ক্ষমতা হ্রাস
নাগরিক জোটের প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ দুই বছর করার প্রস্তাব জনপ্রিয় হলেও সেটি একনায়কতন্ত্র প্রতিরোধে যথেষ্ট নয় বলে মন্তব্য করেন আসিফ নজরুল। প্রধানমন্ত্রীর সংবিধানগত ক্ষমতা হ্রাস করাকেই তিনি বেশি গুরুত্ব দেন।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘আরেকটা জিনিস একটু বলি যে, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ যে দুই বছর আপনারা বলেন— এটা খুব জনপ্রিয় দাবি, আমারও দাবি। আমি দেখলাম যেকোনো একটা সময়.. সম্ভবত সালাহউদ্দিন ভাই বা বিএনপির একজনই কোথাও বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ দুই বছর পৃথিবীর কোন দেশে আছে? আপনি প্রধানমন্ত্রী দুই বছর বললেই শুধু হবে না, কনভিন্সিং আর্গুমেন্ট করতে হবে তো যে, পৃথিবীর আর কোন দেশে আছে সেটা বের করেন, বের করে তারপর দেখেন হয় কি না। কারণ প্রধানমন্ত্রী দুই বছরের মেয়াদ কিন্তু কোথাও নাই আসলে। আপনি ইন্ডিয়া বলেন, ইউকে বলেন, কোথাও কিন্তু নাই।’
আসিফ নজরুল আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে বর্তমানে যে সিস্টেম, দুই বছর দুইটা মেয়াদও যদি রাখেন, একনায়কতন্ত্র সম্ভব। ধরেন দুই মেয়াদের জন্য সালাহউদ্দিন ভাই প্রধানমন্ত্রী হলেন, ধরেন তারপরে দুই মেয়াদে হবে উনার স্ত্রী, তারপরে দুই মেয়াদে হবে উনার সন্তান। শুধু দুই মেয়াদ সলিউশন না। সবচেয়ে ইম্পর্টেন্ট একটা জিনিস প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতাটা কমায় দেন। আমি সব সময় একটা জিনিস বলি, ফান্ডামেন্টাল একটা জিনিস, ভারতে বলে যে রাষ্ট্রপতি ক্যাবিনেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ক্যাবিনেটের পরামর্শ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবে। আর আমাদের এখানে রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবে। ফলে এই প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতাটাকে এড্রেস করেন, মেয়াদটাও নির্দিষ্ট দরকার আছে। কিন্তু কনভিন্সিং আর্গুমেন্টে এস্টাবলিশ করতে হবে।’
প্রধান বিচারপতির ‘অসীম’ ক্ষমতার সমালোচনা
আসিফ নজরুল বলেন, ‘বাংলাদেশের বর্তমান সংবিধানে একটা মাত্র ব্যক্তিকে স্বাধীনভাবে নিয়োগ করা যায়, চিফ জাস্টিস। রাষ্ট্রপতি স্বাধীনভাবে নিয়োগ করতে পারে এবং বাংলাদেশের সংবিধানে চিফ জাস্টিসের অসীম ক্ষমতা! আপনারা শুধু প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা দেখেন। বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী সবচেয়ে দ্বিতীয় ক্ষমতাধর ব্যক্তি হচ্ছে চিফ জাস্টিস। চিফ জাস্টিস কি করতে পারেন, ইতিহাস তো আপনাদের মনে আছে। যাই হোক, একজন চিফ জাস্টিসের কারণে আমাদের জুলাই গণ-অভ্যুত্থান হয়েছে। উনার আবার অন্য রকমভাবে কন্ট্রিবিউশন আছে। তা আমি যে জিনিসটা বলতে চাচ্ছি, চিফ জাস্টিসের যে ক্ষমতা, এই চিফ জাস্টিসের ক্ষমতা আপনার অসীম!’
তাঁর মতে, এটি এককেন্দ্রিক ক্ষমতা, যা রাজনৈতিক অপব্যবহারের ঝুঁকি তৈরি করে। সংবিধান বিষয়ে ২০-২৫ বছরের অধ্যাপনার কথা তুলে ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের শিক্ষক বলেন, ‘শুধুমাত্র এই কারণে.... শুধুমাত্র এই কারণে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধান বিচারপতি— এই দুইটা পদেই দাস শ্রেণির লোকদের নিয়োগ দেওয়া হয়। এত ক্ষমতা প্রধান বিচারপতির! যেকোনো বেঞ্চ উনি ভেঙে দিতে পারেন একা! যেকোনো বেঞ্চ পুনর্গঠন করতে পারেন!’
এই ক্ষমতার দলীয় অপব্যবহারের প্রসঙ্গ তুলে ধরে আসিফ নজরুল বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় এসে করবে কী? আওয়ামী লীগপন্থী যে জাজগুলো আছে, ওদের সবচেয়ে আনইম্পর্টেন্ট বেঞ্চ দেবে বা বেঞ্চই দেবে না। আর নিজেদের রিক্রুট যারা আছে, তাদেরকে ফান্ডামেন্টাল রাইটস শোনার বা ক্রিমিনাল জুরিসডিকশনের বেঞ্চ, ওগুলি দেবে। বাকিগুলোকে সিভিল ম্যাটার, কোম্পানি ম্যাটার এরকম... নয়তো বেঞ্চই দেবে না। একটা লোক পুরো বাংলাদেশের সমস্ত মানুষের মানবাধিকারের বিচার কন্ট্রোল করতে পারেন, একটা লোক, জাস্ট চিফ জাস্টিস।’
আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের বক্তব্যে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, সংবিধান সংস্কার একটি দীর্ঘ, জটিল এবং বহুমাত্রিক প্রক্রিয়া। এখানে আবেগ নয়, বাস্তবতা ও আইনি ভারসাম্যকে প্রাধান্য দিতে হবে। জুলাই সনদ কিংবা উচ্চকক্ষ— সবকিছুর ওপর অতিরিক্ত নির্ভর না করে একটি অন্তর্বর্তী সাংবিধানিক রূপরেখার মাধ্যমে ধাপে ধাপে সংস্কারের পথে এগোনোর আহ্বান জানান তিনি।

অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের রাষ্ট্র সংস্কারের আলোচনায় স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে প্রণীত সংবিধান বাতিল বা পুনর্লিখনের প্রস্তাব তুলেছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ। বিষয়টি নানামুখী আলোচনা ও তর্ক-বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী ছাত্রনেতাদের কেউ কেউ ‘বাহাত্তরের সংবিধানের কবর রচনার’ কথা বলে বিতর্ক উসকে দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে আজ রোববার রাজধানীতে একটি আলোচনা সভায় গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
রাজধানীর মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে নাগরিক কোয়ালিশনের আয়োজনে ‘সংবিধান সংস্কারে নাগরিক জোটের ৭ প্রস্তাব’ শীর্ষক সংলাপে এসব কথা বলেন আসিফ নজরুল। এতে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন আলোকচিত্রী ও নাগরিক কোয়ালিশনের সহ-আহ্বায়ক শহিদুল আলম। সাতটি প্রস্তাব তুলে ধরেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ মোহাম্মদ শাহান, বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে কথা বলেন অর্থনীতিবিদ ও লেখক জিয়া হাসান।
প্রস্তাবিত সাতটি বিষয় ছিল : নিম্নকক্ষের ভোটের আনুপাতিক ভিত্তিতে উচ্চকক্ষ গঠন, সাংবিধানিক নিয়োগ পদ্ধতির সংস্কার, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহাল, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ নির্ধারণ, সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কার্যকরী ভূমিকা ও প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর চালু, নারীদের সরাসরি নির্বাচনের সুযোগ বৃদ্ধি ও জুলাই সনদকে ভিত্তি করে একটি নতুন সাংবিধানিক রূপরেখা প্রণয়ন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, জাতীয় সংসদ সংবিধান সংশোধন করে, সাংবিধানিক পরিষদ নতুন সংবিধান প্রণয়ন করে। নতুন সংবিধান প্রণয়ন হতে বহুদিন লাগতে পারে। কোনো দেশে ৮-৯ বছরও লেগেছে। এর মধ্যে সংসদ প্রয়োজনে বাহাত্তরের সংবিধান সংশোধন করবে। নতুন সংবিধান প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত বর্তমান সংসদ সংবিধান পরিচালক হিসেবে কাজ করবে।
জুলাই সনদ, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ, সংসদের উচ্চকক্ষ, প্রধান বিচারপতির ক্ষমতার ভারসাম্য নিয়েও গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেন আইন উপদেষ্টা। তাঁর সেই বক্তব্যের চুম্বক অংশ এখানে তুলে ধরা হলো:—
বাহাত্তরের সংবিধান ও সংসদের ভূমিকা
নাগরিক জোটের প্রস্তাব বাস্তবায়নের পথরেখা ‘খুবই ভালো হয়েছে’ মন্তব্য করে নিজের বেশ কিছু পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন আসিফ নজরুল। আইন উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এর নজির আছে। এটা খুবই সাংবিধানিক ও বৈধ পদ্ধতি। সংসদই সংবিধান পরিষদের কাজ করবে। নেপাল, শ্রীলঙ্কাতে তা-ই হয়েছে। তবে সংসদ সংবিধান প্রণয়নে খুব অল্প সময় দিতে পারে। সপ্তাহে দুদিন সংবিধান পরিষদের কাজ করে। একটা সংবিধান পরিষদ যে জাতীয় সংসদ হিসেবে কাজ, সে তার সম্পূর্ণ সময়ের খুব বেশি হলে ৫০ শতাংশ সময় এখানে দিতে পারবে।
উপদেষ্টা বলেন, ‘এরকম একটা সংবিধান পরিষদ ৯০ দিনে সংবিধান রচনা করে ফেলবে, এটা মনে হচ্ছে একটু উচ্চাশা। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে ৯০ দিনের মধ্যে যদি তারা করতে না পারে, তাহলে এক্সিস্টিং কনস্টিটিউশন কন্টিনিউ করবে? এখানে হচ্ছে আমার আপত্তি! শোনেন, জাতীয় সংসদ সংবিধান সংশোধন করে, সংবিধান পরিষদ নতুন সংবিধান প্রণয়ন করে। নতুন সংবিধান প্রণয়ন হতে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশে এমন উদাহরণ আছে, আট-নয় বছর লেগেছে। নতুন সংবিধান প্রণয়ন হতে বহুদিন লাগতে পারে। এখন এই পর্যন্ত আমি বাহাত্তরের সংবিধান কন্টিনিউ করব?
তাঁর প্রস্তাব হলো— আগামী নির্বাচন হবে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। জাতীয় সংসদই সংবিধান পরিষদ হিসেবে নতুন সংবিধান প্রণয়নের কাজ করবে। নতুন সংবিধান প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত বাহাত্তরের সংবিধান চলবে। সংসদ এতে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনবে।
আসিফ নজরুল আরও বলেন, ‘এটা আপনাদের ইনক্লুড করতে হবে যে গণপরিষদ হিসেবে যখন সে কাজ করবে, সে নতুন সংবিধান প্রণয়নের কাজ করতে থাকবে। ওটা করতে আমার ধারণা দু-তিন বছর লাগতে পারে। এই দু-তিন বছর কি আমি বাহাত্তরের সংবিধান বহন করব? এই দু-তিন বছরের জন্য তারা যখন জাতীয় সংসদ হিসেবে কাজ করবে, তখন তারা সংসদের কিছু ফান্ডামেন্টাল এমেন্ডমেন্ট আনবে।’
এ ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় ভারসাম্য, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ, উচ্চ আদালতের বিকেন্দ্রীকরণ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও সংসদ সদস্যদের ৮৯ দিন পর্যন্ত সংসদে অনুপস্থিত থাকার সুযোগের মতো মৌলিক বিষয়ে পরিবর্তন আনার ‘সমাজে বহু বছর যাবৎ ঐক্য আছে’ বলে আইন উপদেষ্টা মন্তব্য করেন।
উপদেষ্টা বলেন, ‘এই ফান্ডামেন্টাল জিনিসগুলা যেটা আমরা সবাই সারা জীবন ধরে বলে আসছি— এগুলো জাতীয় সংসদ পরিবর্তন করতেই থাকবে। নতুন সংবিধান প্রণয়ন কবে হবে— এ জন্য আমি বাহাত্তরের বোঝা কেন বহন করব? এটা আপনাদের অবশ্যই ইনক্লুড করতে হবে।’
জুলাই সনদের ভূমিকা নিয়ে সংশয়
জুলাই সনদ নিয়ে অতিরিক্ত গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বলে মত দেন আসিফ নজরুল। তাঁর মতে, সবাই এই সনদের সবকিছুর সঙ্গে একমত হবেন—এমন আশা বাস্তবসম্মত নয়।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘দ্বিতীয় যে পথরেখাটা দিয়েছেন, সেখানে আমার মনে হচ্ছে, টু মাচ এমফেসিস দেওয়া হয়েছে জুলাই সনদের ওপর। জুলাই সনদে কি এত কিছুই থাকবে? এটা কি সংবিধানের ভিত্তি হবে? তাহলে জুলাই সনদ হবে নাকি আমার সন্দেহ আছে! জুলাই সনদের ওপর অনেক বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে... মনে হচ্ছে, আমরা এটা ধরেই নিয়েছি, সবাই জুলাই সনদের ওপর অনেক কিছুর বিষয়ে একমত হবে। এটা এত সহজ হবে না, হয়তো এমন হতে পারে জুলাই সনদের মোস্ট ফান্ডামেন্টাল জিনিস রাখা সম্ভব হতে পারে। এটা একটু ভেবে দেখেন! বাট নতুন চিন্তা, খুবই ভালো।’
উচ্চকক্ষ গঠনের যুক্তি ও ঝুঁকি
উচ্চকক্ষকে অত্যন্ত ক্ষমতাধর করে তোলার প্রস্তাব নিয়ে প্রশ্ন তুলে আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়েছে যে ফ্রাঙ্কলি স্পিকিং.. উচ্চকক্ষকে অনেক বেশি ক্ষমতা দিয়ে দেওয়া হয়েছে, এত ক্ষমতাই যদি উচ্চকক্ষকে দেন, তাহলে উচ্চকক্ষে বিএনপি-জামায়াত এবং নাহিদের দল তাদেরকেই নিয়োগ দেবে, যারা দলদাস হবে। আমার কাছে মনে হয়েছে উচ্চকক্ষের ওপর অনেক বেশি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এটাকে আপনারা একটু রেশনালাইজ করার চেষ্টা করেন, সবকিছু তারা করতে পারবে কি না।
নতুন কমিশনের পরিবর্তে বিদ্যমান প্রতিষ্ঠান শক্তিশালী করার আহ্বান
আসিফ নজরুল নতুন নতুন কমিশন গঠনের পরিবর্তে উচ্চ আদালত ও সংসদীয় স্থায়ী কমিটিগুলোকে কার্যকর করার ওপর জোর দেন। বিশেষ করে, স্বরাষ্ট্র, আইন ও অর্থ মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটিগুলোর সভাপতিত্ব বিরোধী দলের হাতে দিলে জবাবদিহি নিশ্চিত করা সম্ভব বলেও মন্তব্য করেন।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘নতুন নতুন অনেক কমিশনের প্রস্তাব করা হয়েছে এখানে। আমাদের এখানে তো অলরেডি অনেক কমিশন আছে। আমরা সব সময় যে জিনিসটা বিশ্বাস করি কি আমরা যখন কোনো সংস্কার ভাবনাতেই যাই। আমরা সব সময়, ‘নতুন নতুন কমিশন করতে হবে’ করি। আপনি খেয়াল করে দেখেন, আমরা ছোটবেলা থেকে বলেছি, সরকারের তিনটা অর্গান থাকবে— একটা হচ্ছে এক্সিকিউটিভ, একটা হচ্ছে জুডিশিয়ারি, একটা হচ্ছে সংসদ। আমাদের এখানে সবচেয়ে ফান্ডামেন্টাল যে দুইটা জবাবদিহিমূলক প্রতিষ্ঠান আছে, সবচেয়ে আদিম ফান্ডামেন্টাল একটা হচ্ছে উচ্চ আদালত, আরেকটা হচ্ছে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।’
আসিফ নজরুল বলেন, ‘উচ্চ আদালত আর সংসদীয় স্থায়ী কমিটিকে যদি ঠিকমতো গঠন করা যায়, ক্ষমতা দেওয়া হয়, তাহলে আমাদের এত নতুন নতুন কমিশন লাগে না। আমাদের যে নতুন কমিশনগুলো হয়েছে, দেখেন ইনফরমেশন কমিশন, তারপরে যে আমাদের নতুন কমিশন হয়েছে আপনার হিউম্যান রাইটস কমিশন, কম্পিটিশন কমিশন, কী রেজাল্ট দিয়েছে? আপনারা বরং এক্সিস্টিং যে প্রতিষ্ঠান আছে, সেটাকে আরও কত বেগবান করা যায়...। আপনারা যেমন স্থায়ী কমিটির কথা বলেছেন, স্থায়ী কমিটির ক্ষেত্রে কয়েকটা কমিটির কথা বলেছেন, ওটা যেন অবশ্যই হেডেড বাই বিরোধী দলের নেতা হয়।’
প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ নয়, ক্ষমতা হ্রাস
নাগরিক জোটের প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ দুই বছর করার প্রস্তাব জনপ্রিয় হলেও সেটি একনায়কতন্ত্র প্রতিরোধে যথেষ্ট নয় বলে মন্তব্য করেন আসিফ নজরুল। প্রধানমন্ত্রীর সংবিধানগত ক্ষমতা হ্রাস করাকেই তিনি বেশি গুরুত্ব দেন।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘আরেকটা জিনিস একটু বলি যে, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ যে দুই বছর আপনারা বলেন— এটা খুব জনপ্রিয় দাবি, আমারও দাবি। আমি দেখলাম যেকোনো একটা সময়.. সম্ভবত সালাহউদ্দিন ভাই বা বিএনপির একজনই কোথাও বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ দুই বছর পৃথিবীর কোন দেশে আছে? আপনি প্রধানমন্ত্রী দুই বছর বললেই শুধু হবে না, কনভিন্সিং আর্গুমেন্ট করতে হবে তো যে, পৃথিবীর আর কোন দেশে আছে সেটা বের করেন, বের করে তারপর দেখেন হয় কি না। কারণ প্রধানমন্ত্রী দুই বছরের মেয়াদ কিন্তু কোথাও নাই আসলে। আপনি ইন্ডিয়া বলেন, ইউকে বলেন, কোথাও কিন্তু নাই।’
আসিফ নজরুল আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে বর্তমানে যে সিস্টেম, দুই বছর দুইটা মেয়াদও যদি রাখেন, একনায়কতন্ত্র সম্ভব। ধরেন দুই মেয়াদের জন্য সালাহউদ্দিন ভাই প্রধানমন্ত্রী হলেন, ধরেন তারপরে দুই মেয়াদে হবে উনার স্ত্রী, তারপরে দুই মেয়াদে হবে উনার সন্তান। শুধু দুই মেয়াদ সলিউশন না। সবচেয়ে ইম্পর্টেন্ট একটা জিনিস প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতাটা কমায় দেন। আমি সব সময় একটা জিনিস বলি, ফান্ডামেন্টাল একটা জিনিস, ভারতে বলে যে রাষ্ট্রপতি ক্যাবিনেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ক্যাবিনেটের পরামর্শ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবে। আর আমাদের এখানে রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবে। ফলে এই প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতাটাকে এড্রেস করেন, মেয়াদটাও নির্দিষ্ট দরকার আছে। কিন্তু কনভিন্সিং আর্গুমেন্টে এস্টাবলিশ করতে হবে।’
প্রধান বিচারপতির ‘অসীম’ ক্ষমতার সমালোচনা
আসিফ নজরুল বলেন, ‘বাংলাদেশের বর্তমান সংবিধানে একটা মাত্র ব্যক্তিকে স্বাধীনভাবে নিয়োগ করা যায়, চিফ জাস্টিস। রাষ্ট্রপতি স্বাধীনভাবে নিয়োগ করতে পারে এবং বাংলাদেশের সংবিধানে চিফ জাস্টিসের অসীম ক্ষমতা! আপনারা শুধু প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা দেখেন। বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী সবচেয়ে দ্বিতীয় ক্ষমতাধর ব্যক্তি হচ্ছে চিফ জাস্টিস। চিফ জাস্টিস কি করতে পারেন, ইতিহাস তো আপনাদের মনে আছে। যাই হোক, একজন চিফ জাস্টিসের কারণে আমাদের জুলাই গণ-অভ্যুত্থান হয়েছে। উনার আবার অন্য রকমভাবে কন্ট্রিবিউশন আছে। তা আমি যে জিনিসটা বলতে চাচ্ছি, চিফ জাস্টিসের যে ক্ষমতা, এই চিফ জাস্টিসের ক্ষমতা আপনার অসীম!’
তাঁর মতে, এটি এককেন্দ্রিক ক্ষমতা, যা রাজনৈতিক অপব্যবহারের ঝুঁকি তৈরি করে। সংবিধান বিষয়ে ২০-২৫ বছরের অধ্যাপনার কথা তুলে ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের শিক্ষক বলেন, ‘শুধুমাত্র এই কারণে.... শুধুমাত্র এই কারণে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধান বিচারপতি— এই দুইটা পদেই দাস শ্রেণির লোকদের নিয়োগ দেওয়া হয়। এত ক্ষমতা প্রধান বিচারপতির! যেকোনো বেঞ্চ উনি ভেঙে দিতে পারেন একা! যেকোনো বেঞ্চ পুনর্গঠন করতে পারেন!’
এই ক্ষমতার দলীয় অপব্যবহারের প্রসঙ্গ তুলে ধরে আসিফ নজরুল বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় এসে করবে কী? আওয়ামী লীগপন্থী যে জাজগুলো আছে, ওদের সবচেয়ে আনইম্পর্টেন্ট বেঞ্চ দেবে বা বেঞ্চই দেবে না। আর নিজেদের রিক্রুট যারা আছে, তাদেরকে ফান্ডামেন্টাল রাইটস শোনার বা ক্রিমিনাল জুরিসডিকশনের বেঞ্চ, ওগুলি দেবে। বাকিগুলোকে সিভিল ম্যাটার, কোম্পানি ম্যাটার এরকম... নয়তো বেঞ্চই দেবে না। একটা লোক পুরো বাংলাদেশের সমস্ত মানুষের মানবাধিকারের বিচার কন্ট্রোল করতে পারেন, একটা লোক, জাস্ট চিফ জাস্টিস।’
আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের বক্তব্যে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, সংবিধান সংস্কার একটি দীর্ঘ, জটিল এবং বহুমাত্রিক প্রক্রিয়া। এখানে আবেগ নয়, বাস্তবতা ও আইনি ভারসাম্যকে প্রাধান্য দিতে হবে। জুলাই সনদ কিংবা উচ্চকক্ষ— সবকিছুর ওপর অতিরিক্ত নির্ভর না করে একটি অন্তর্বর্তী সাংবিধানিক রূপরেখার মাধ্যমে ধাপে ধাপে সংস্কারের পথে এগোনোর আহ্বান জানান তিনি।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল গতকাল সোমবার। দলের মনোনীত প্রার্থীর বাইরে এদিন বিভিন্ন আসনে প্রার্থী হতে বিএনপির আরও অনেক নেতা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। রাত ১০টায় এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত পাওয়া তথ্যে অন্তত ৮১টি আসনে দলটির একাধিক নেতা...
৩ ঘণ্টা আগে
স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমানকে দুই মাসের জন্য চুক্তি ভিত্তিতে নিয়োগ দিয়েছে সরকার। একই মেয়াদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু জাফরকে।
৬ ঘণ্টা আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য ২ হাজার ৫৮২ জন সম্ভাব্য প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন ৩ হাজার ৪০৭ জন। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষদিন ইসির জনসংযোগ পরিচালক মো. রুহুল আমিন এ তথ্য জানান।
৮ ঘণ্টা আগে
দেশের আর্থিক খাতের পাচারের অন্যতম হোতা এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক এমডি প্রশান্ত কুমার হালদারসহ (পি কে হালদার) ১৮ জনের নামে চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দিয়া শিপিং লিমিটেড নামের একটি কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে এফএএস ফাইন্যান্
৮ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল গতকাল সোমবার। দলের মনোনীত প্রার্থীর বাইরে এদিন বিভিন্ন আসনে প্রার্থী হতে বিএনপির আরও অনেক নেতা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। রাত ১০টায় এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত পাওয়া তথ্যে অন্তত ৮১টি আসনে দলটির একাধিক নেতা প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
তবে শুধু বিএনপিতে নয়, দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলনের দুই নেতা। আজকের পত্রিকার প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য পর্যালোচনায় এসব তথ্য উঠে এসেছে।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আজ মঙ্গলবার থেকে আগামী রোববার পর্যন্ত মনোনয়নপত্র বাছাই চলবে। মনোনয়নপত্র বাছাইয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল দায়েরের তারিখ ৫ থেকে ৯ জানুয়ারি। আপিল নিষ্পত্তির তারিখ ১০ থেকে ১৮ জানুয়ারি। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২০ জানুয়ারি। প্রতীক বরাদ্দ ২১ জানুয়ারি এবং ভোট গ্রহণ ১২ ফেব্রুয়ারি।
নির্বাচন কমিশন থেকে জানানো হয়েছে, নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছিলেন ৩,৪০৭ জন। তাঁদের মধ্যে গতকাল শেষ দিন পর্যন্ত জমা পড়েছে ২ হাজার ৫৮২টি।
গত ৩ নভেম্বর প্রথম পর্যায়ে ২৩৭ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে বিএনপি। এক দিন পরই মাদারীপুর-১ আসনের ঘোষিত প্রার্থী কামাল জামাল মোল্লার নাম স্থগিত করা হয়। পরে ৪ ডিসেম্বর আরও ৩৬টি আসনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করে দলটি। পরবর্তী ২৮ আসনে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা না করলেও চূড়ান্ত মনোনয়ন দিয়েছে। এর মধ্যে মনোনয়ন নিশ্চিত হয়েছে ৮ জোট নেতার। এর বাইরে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করবেন আরও ৫ নেতা।
আজকের পত্রিকার প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে জানা যায়, ময়মনসিংহে ১১টি আসনের ৯টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন বিএনপির ১৪ জন নেতা। ময়মনসিংহ-৪ ও ৫ বাদে বাকি সব আসনেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন বিএনপির নেতারা। ময়মনসিংহ-১ আসনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সের আসনেই দলের আরও দুই নেতা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
নোয়াখালীর ৬টি আসনের মধ্যে তিনটিতেই বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর বাইরে দলের অন্য নেতারাও মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে নোয়াখালী-২ আসনে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মফিজুর রহমানসহ ২ জন। নোয়াখালী-৫ আসনে দলের বাইরে প্রার্থী হয়েছেন বিএনপির নেতা প্রয়াত মওদুদ আহমদের স্ত্রী হাসনা মওদুদ। নোয়াখালী-৬ আসনেও বিএনপি থেকে প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন দলের তিন নেতা। দলের সমর্থন না পেয়েও মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন সাবেক এমপি ফজলুল আজিম ও তাঁর স্ত্রী এবং উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক তানবীর উদ্দিন রাজিব। তিনটি আসনে বিদ্রোহীরা মাঠে থাকলে বিএনপির জন্য নেতিবাচক ফল আনতে পারে।
নওগাঁর ৬ আসনের মধ্যে ৫টিতেই বিএনপির প্রার্থী আছেন একাধিক। ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৬টি আসনেও আছেন বিএনপির একাধিক প্রার্থী। এর মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে বিএনপি জমিয়তে উলামায়ে ইসলামকে সমর্থন দিলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ আসনে গণসংহতি আন্দোলনের নেতা জোনায়েদ সাকিকে বিএনপির ছাড় দেওয়া আসনে বিএনপির এক নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
নাটোরের ৪টি আসনের মধ্যে ২টিতে বিএনপির একাধিক নেতা প্রার্থী হতে চান। এর মধ্যে নাটোর-১ আসনে বিএনপির সহদপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।
পটুয়াখালী-৩ আসনে গণঅধিকার পরিষদের নেতা নুরুল হক নুরকে ছাড় দিলেও সেখানে বিএনপির নেতা হাসান মাহমুদ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। মানিকগঞ্জের ৩ আসনেই বিএনপির একাধিক নেতা প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। ঠাকুরগাঁওয়ের তিনটি সংসদীয় আসনের একটিতে দলীয় মনোনীত প্রার্থীর বাইরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বিএনপির এক নেতা। দিনাজপুরের ৬ আসনের মধ্যে দুটিতে বিএনপির দুজন করে নেতা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন (দিনাজপুর-২ ও ৫)।
এ ছাড়া চট্টগ্রাম, জামালপুর, মুন্সিগঞ্জ, গাজীপুর, হবিগঞ্জ, নেত্রকোনা, সিলেট, বরিশাল, বাগেরহাট, ফরিদপুর, পঞ্চগড়, সাতক্ষীরা, গাইবান্ধা, শেরপুর, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, যশোর, ঝালকাঠি, মাদারীপুর, নাটোর ও রংপুর, নরসিংদী, পাবনাসহ বিভিন্ন জায়গায় এক এবং একাধিক আসনে বিএনপির কয়েকজন করে নেতা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
জামায়াতে ইসলামী
এদিকে দলীয় প্রার্থী থাকার পরেও ময়মনসিংহ-৬ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন জেলা জামায়াতের সাবেক আমীর জসিম উদ্দিন। দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার জামায়াতের এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে ইসলামী আন্দোলনের মনোনীত প্রার্থী হাসানুজ্জামান সজীব। ওই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন দলটির নেতা জহুরুল ইসলাম আজিজি।
১৫ আসনে বিএনপির প্রার্থী বদল
আসন্ন সংসদ নির্বাচনে প্রাথমিকভাবে মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীদের মধ্যে ১৫ আসনে পরিবর্তন করেছে বিএনপি। সবচেয়ে বেশি পরিবর্তন এসেছে ঢাকা ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে। ঢাকা-১২ আসনে সাইফুল আলম নীরবের পরিবর্তে যুগপৎ আন্দোলনের মিত্র বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকের জন্য ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে মো. মাসুদুজ্জামান ভোটে অনীহা প্রকাশ করার পর সেখানে বিএনপির সাবেক মহানগর সভাপতি আবুল কালামকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। রাউজান (চট্টগ্রাম-৬) আসনে ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পরিবর্তে গোলাম আকবর খন্দকারকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম-১৪ আসনটি আগে এলডিপির চেয়ারম্যান অলি আহমদের ছেলে ওমর ফারুকের জন্য ফাঁকা রাখা হলেও অলি আহমদের দল জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বাধীন জোটে যোগ দেওয়ার পর সেখানে বিএনপি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জসিমউদ্দিনকে প্রার্থী করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম-৪ আসনে কাজী সালাহউদ্দিনের পরিবর্তে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আসলাম চৌধুরীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম-১১ থেকে সরিয়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে চট্টগ্রাম-১০ আসনে প্রার্থী করা হয়েছে। চট্টগ্রাম-১১ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন প্রয়াত ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমানের ছেলে সাঈদ আল নোমান।
বগুড়া-২ আসনে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমানের ঋণখেলাপি-সংক্রান্ত জটিলতার কারণে সেখানে বিএনপির নেতা মীর শাহে আলমকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। তবে মান্না শেষ পর্যন্ত প্রার্থিতা ফেরত পেয়েছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসনে সাবেক সচিব মুশফিকুর রহমানের বদলে কবির আহমেদ ভূঁইয়াকে প্রার্থী করা হয়। মুন্সিগঞ্জ-২ আসনে এক্মি গ্রুপের চেয়ারম্যান প্রবীণ নেতা মিজানুর রহমান সিনহার পরিবর্তে কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম আজাদ এবং মুন্সিগঞ্জ-৩ আসনে কামরুজ্জামান রতনের বদলে জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মো. মহিউদ্দিন আহমেদ মনোনয়ন পেয়েছেন।
ঝিনাইদহ-১ আসনে সদ্য পদত্যাগ করা অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামানকে প্রার্থী করা হয়েছে। নড়াইল-২ আসনে বিএনপির প্রার্থীর পরিবর্তে জোটসঙ্গী ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
যশোর-১, যশোর-৫ ও যশোর-৬ আসনেও দলীয় ও জোটগত সমীকরণে নতুন প্রার্থীদের নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে। মাদারীপুর-১ আসনে কামাল জামাল মোল্লার বদলে নাদিরা আক্তারকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। যশোর-৬ আসনে ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি শ্রাবণকে প্রথমে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। এ ছাড়া ঝিনাইদহ-৪ আসনে বিএনপির মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে গণঅধিকার পরিষদ থেকে সদ্য বিএনপিতে যোগ দেওয়া রাশেদ খান। এদিকে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার তিনটি আসনেই বিকল্প প্রার্থী রেখেছে বিএনপি।
মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে ২ হাজার ৫৮২টি
ইসি জানিয়েছে, রংপুর অঞ্চলের ৮ জেলার ৩৩টি আসন থেকে ৩৩৮টি মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করা হয়েছিল, জমা পড়েছে ২৭৮টি। রাজশাহী অঞ্চলের ৮ জেলার ৩৯ আসন থেকে ৩২৯টি মনোনয়ন ফরম বিতরণ করা হয়েছিল, জমা পড়েছে ২৬০টি। বরিশাল অঞ্চলের ৬ জেলার ২১টি আসন থেকে বিতরণ করা হয় ২১২টি, জমা পড়েছে ১৬৬টি। ফরিদপুর অঞ্চলের ৫ জেলার ১৫টি আসন থেকে বিতরণ করা হয় ১৬৫টি, জমা পড়েছে ১৪২টি। খুলনা অঞ্চলের ১০ জেলার ৩৬ আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ৩৫৮টি, জমা পড়েছে ২৭৬টি। ঢাকা অঞ্চলের ৬ জেলার ৪১টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছে ৬৩৮টি, জমা পড়েছে ৪৪৪টি। ময়মনসিংহের ৬টি জেলার ৩৮টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ৪০২টি, জমা পড়েছে ৩১১টি। সিলেটের ৪টি জেলার ১৯টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছে ১৭৬টি, জমা পড়েছে ১৪৬টি। কুমিল্লার ৬ জেলার ৩৫টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ৪৯৬টি, জমা পড়েছে ৩৬৫টি। চট্টগ্রামের ৫ জেলার ২৩টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ২৯৩টি, জমা পড়েছে ১৯৪টি মনোনয়নপত্র।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল গতকাল সোমবার। দলের মনোনীত প্রার্থীর বাইরে এদিন বিভিন্ন আসনে প্রার্থী হতে বিএনপির আরও অনেক নেতা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। রাত ১০টায় এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত পাওয়া তথ্যে অন্তত ৮১টি আসনে দলটির একাধিক নেতা প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
তবে শুধু বিএনপিতে নয়, দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলনের দুই নেতা। আজকের পত্রিকার প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য পর্যালোচনায় এসব তথ্য উঠে এসেছে।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আজ মঙ্গলবার থেকে আগামী রোববার পর্যন্ত মনোনয়নপত্র বাছাই চলবে। মনোনয়নপত্র বাছাইয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল দায়েরের তারিখ ৫ থেকে ৯ জানুয়ারি। আপিল নিষ্পত্তির তারিখ ১০ থেকে ১৮ জানুয়ারি। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২০ জানুয়ারি। প্রতীক বরাদ্দ ২১ জানুয়ারি এবং ভোট গ্রহণ ১২ ফেব্রুয়ারি।
নির্বাচন কমিশন থেকে জানানো হয়েছে, নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছিলেন ৩,৪০৭ জন। তাঁদের মধ্যে গতকাল শেষ দিন পর্যন্ত জমা পড়েছে ২ হাজার ৫৮২টি।
গত ৩ নভেম্বর প্রথম পর্যায়ে ২৩৭ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে বিএনপি। এক দিন পরই মাদারীপুর-১ আসনের ঘোষিত প্রার্থী কামাল জামাল মোল্লার নাম স্থগিত করা হয়। পরে ৪ ডিসেম্বর আরও ৩৬টি আসনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করে দলটি। পরবর্তী ২৮ আসনে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা না করলেও চূড়ান্ত মনোনয়ন দিয়েছে। এর মধ্যে মনোনয়ন নিশ্চিত হয়েছে ৮ জোট নেতার। এর বাইরে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করবেন আরও ৫ নেতা।
আজকের পত্রিকার প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে জানা যায়, ময়মনসিংহে ১১টি আসনের ৯টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন বিএনপির ১৪ জন নেতা। ময়মনসিংহ-৪ ও ৫ বাদে বাকি সব আসনেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন বিএনপির নেতারা। ময়মনসিংহ-১ আসনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সের আসনেই দলের আরও দুই নেতা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
নোয়াখালীর ৬টি আসনের মধ্যে তিনটিতেই বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর বাইরে দলের অন্য নেতারাও মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে নোয়াখালী-২ আসনে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মফিজুর রহমানসহ ২ জন। নোয়াখালী-৫ আসনে দলের বাইরে প্রার্থী হয়েছেন বিএনপির নেতা প্রয়াত মওদুদ আহমদের স্ত্রী হাসনা মওদুদ। নোয়াখালী-৬ আসনেও বিএনপি থেকে প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন দলের তিন নেতা। দলের সমর্থন না পেয়েও মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন সাবেক এমপি ফজলুল আজিম ও তাঁর স্ত্রী এবং উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক তানবীর উদ্দিন রাজিব। তিনটি আসনে বিদ্রোহীরা মাঠে থাকলে বিএনপির জন্য নেতিবাচক ফল আনতে পারে।
নওগাঁর ৬ আসনের মধ্যে ৫টিতেই বিএনপির প্রার্থী আছেন একাধিক। ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৬টি আসনেও আছেন বিএনপির একাধিক প্রার্থী। এর মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে বিএনপি জমিয়তে উলামায়ে ইসলামকে সমর্থন দিলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ আসনে গণসংহতি আন্দোলনের নেতা জোনায়েদ সাকিকে বিএনপির ছাড় দেওয়া আসনে বিএনপির এক নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
নাটোরের ৪টি আসনের মধ্যে ২টিতে বিএনপির একাধিক নেতা প্রার্থী হতে চান। এর মধ্যে নাটোর-১ আসনে বিএনপির সহদপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।
পটুয়াখালী-৩ আসনে গণঅধিকার পরিষদের নেতা নুরুল হক নুরকে ছাড় দিলেও সেখানে বিএনপির নেতা হাসান মাহমুদ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। মানিকগঞ্জের ৩ আসনেই বিএনপির একাধিক নেতা প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। ঠাকুরগাঁওয়ের তিনটি সংসদীয় আসনের একটিতে দলীয় মনোনীত প্রার্থীর বাইরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বিএনপির এক নেতা। দিনাজপুরের ৬ আসনের মধ্যে দুটিতে বিএনপির দুজন করে নেতা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন (দিনাজপুর-২ ও ৫)।
এ ছাড়া চট্টগ্রাম, জামালপুর, মুন্সিগঞ্জ, গাজীপুর, হবিগঞ্জ, নেত্রকোনা, সিলেট, বরিশাল, বাগেরহাট, ফরিদপুর, পঞ্চগড়, সাতক্ষীরা, গাইবান্ধা, শেরপুর, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, যশোর, ঝালকাঠি, মাদারীপুর, নাটোর ও রংপুর, নরসিংদী, পাবনাসহ বিভিন্ন জায়গায় এক এবং একাধিক আসনে বিএনপির কয়েকজন করে নেতা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
জামায়াতে ইসলামী
এদিকে দলীয় প্রার্থী থাকার পরেও ময়মনসিংহ-৬ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন জেলা জামায়াতের সাবেক আমীর জসিম উদ্দিন। দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার জামায়াতের এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে ইসলামী আন্দোলনের মনোনীত প্রার্থী হাসানুজ্জামান সজীব। ওই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন দলটির নেতা জহুরুল ইসলাম আজিজি।
১৫ আসনে বিএনপির প্রার্থী বদল
আসন্ন সংসদ নির্বাচনে প্রাথমিকভাবে মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীদের মধ্যে ১৫ আসনে পরিবর্তন করেছে বিএনপি। সবচেয়ে বেশি পরিবর্তন এসেছে ঢাকা ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে। ঢাকা-১২ আসনে সাইফুল আলম নীরবের পরিবর্তে যুগপৎ আন্দোলনের মিত্র বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকের জন্য ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে মো. মাসুদুজ্জামান ভোটে অনীহা প্রকাশ করার পর সেখানে বিএনপির সাবেক মহানগর সভাপতি আবুল কালামকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। রাউজান (চট্টগ্রাম-৬) আসনে ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পরিবর্তে গোলাম আকবর খন্দকারকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম-১৪ আসনটি আগে এলডিপির চেয়ারম্যান অলি আহমদের ছেলে ওমর ফারুকের জন্য ফাঁকা রাখা হলেও অলি আহমদের দল জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বাধীন জোটে যোগ দেওয়ার পর সেখানে বিএনপি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জসিমউদ্দিনকে প্রার্থী করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম-৪ আসনে কাজী সালাহউদ্দিনের পরিবর্তে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আসলাম চৌধুরীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম-১১ থেকে সরিয়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে চট্টগ্রাম-১০ আসনে প্রার্থী করা হয়েছে। চট্টগ্রাম-১১ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন প্রয়াত ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমানের ছেলে সাঈদ আল নোমান।
বগুড়া-২ আসনে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমানের ঋণখেলাপি-সংক্রান্ত জটিলতার কারণে সেখানে বিএনপির নেতা মীর শাহে আলমকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। তবে মান্না শেষ পর্যন্ত প্রার্থিতা ফেরত পেয়েছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসনে সাবেক সচিব মুশফিকুর রহমানের বদলে কবির আহমেদ ভূঁইয়াকে প্রার্থী করা হয়। মুন্সিগঞ্জ-২ আসনে এক্মি গ্রুপের চেয়ারম্যান প্রবীণ নেতা মিজানুর রহমান সিনহার পরিবর্তে কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম আজাদ এবং মুন্সিগঞ্জ-৩ আসনে কামরুজ্জামান রতনের বদলে জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মো. মহিউদ্দিন আহমেদ মনোনয়ন পেয়েছেন।
ঝিনাইদহ-১ আসনে সদ্য পদত্যাগ করা অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামানকে প্রার্থী করা হয়েছে। নড়াইল-২ আসনে বিএনপির প্রার্থীর পরিবর্তে জোটসঙ্গী ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
যশোর-১, যশোর-৫ ও যশোর-৬ আসনেও দলীয় ও জোটগত সমীকরণে নতুন প্রার্থীদের নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে। মাদারীপুর-১ আসনে কামাল জামাল মোল্লার বদলে নাদিরা আক্তারকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। যশোর-৬ আসনে ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি শ্রাবণকে প্রথমে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। এ ছাড়া ঝিনাইদহ-৪ আসনে বিএনপির মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে গণঅধিকার পরিষদ থেকে সদ্য বিএনপিতে যোগ দেওয়া রাশেদ খান। এদিকে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার তিনটি আসনেই বিকল্প প্রার্থী রেখেছে বিএনপি।
মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে ২ হাজার ৫৮২টি
ইসি জানিয়েছে, রংপুর অঞ্চলের ৮ জেলার ৩৩টি আসন থেকে ৩৩৮টি মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করা হয়েছিল, জমা পড়েছে ২৭৮টি। রাজশাহী অঞ্চলের ৮ জেলার ৩৯ আসন থেকে ৩২৯টি মনোনয়ন ফরম বিতরণ করা হয়েছিল, জমা পড়েছে ২৬০টি। বরিশাল অঞ্চলের ৬ জেলার ২১টি আসন থেকে বিতরণ করা হয় ২১২টি, জমা পড়েছে ১৬৬টি। ফরিদপুর অঞ্চলের ৫ জেলার ১৫টি আসন থেকে বিতরণ করা হয় ১৬৫টি, জমা পড়েছে ১৪২টি। খুলনা অঞ্চলের ১০ জেলার ৩৬ আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ৩৫৮টি, জমা পড়েছে ২৭৬টি। ঢাকা অঞ্চলের ৬ জেলার ৪১টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছে ৬৩৮টি, জমা পড়েছে ৪৪৪টি। ময়মনসিংহের ৬টি জেলার ৩৮টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ৪০২টি, জমা পড়েছে ৩১১টি। সিলেটের ৪টি জেলার ১৯টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছে ১৭৬টি, জমা পড়েছে ১৪৬টি। কুমিল্লার ৬ জেলার ৩৫টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ৪৯৬টি, জমা পড়েছে ৩৬৫টি। চট্টগ্রামের ৫ জেলার ২৩টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ২৯৩টি, জমা পড়েছে ১৯৪টি মনোনয়নপত্র।

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক রূপান্তরের প্রেক্ষাপটে সংবিধান সংস্কার নিয়ে উত্থাপিত বিতর্কে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন— সংবিধান পুনর্লিখন নয়, ধাপে ধাপে বাস্তবভিত্তিক সংশোধনই সময়োপযোগী পথ। তিনি ৭২-এর সংবিধানের ভার বহনের যুক্তি, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ ও ক্ষমতার ভারসাম্য, প্রধান
১১ মে ২০২৫
স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমানকে দুই মাসের জন্য চুক্তি ভিত্তিতে নিয়োগ দিয়েছে সরকার। একই মেয়াদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু জাফরকে।
৬ ঘণ্টা আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য ২ হাজার ৫৮২ জন সম্ভাব্য প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন ৩ হাজার ৪০৭ জন। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষদিন ইসির জনসংযোগ পরিচালক মো. রুহুল আমিন এ তথ্য জানান।
৮ ঘণ্টা আগে
দেশের আর্থিক খাতের পাচারের অন্যতম হোতা এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক এমডি প্রশান্ত কুমার হালদারসহ (পি কে হালদার) ১৮ জনের নামে চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দিয়া শিপিং লিমিটেড নামের একটি কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে এফএএস ফাইন্যান্
৮ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমানকে দুই মাসের জন্য চুক্তি ভিত্তিতে নিয়োগ দিয়েছে সরকার। একই মেয়াদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু জাফরকে।
২৪ ডিসেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব সামিউল আমিন স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর ৪৯ ধারা অনুযায়ী মো. সাইদুর রহমানকে তাঁর অবসরোত্তর ছুটি ও তৎসংশ্লিষ্ট সুবিধাদি স্থগিত এবং অন্য যেকোনো পেশা, ব্যবসা কিংবা সরকারি, আধা সরকারি সংগঠনের সঙ্গে কর্মসম্পর্ক পরিত্যাগের শর্তে ২০২৬ সালের ১১ জানুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রদান করা হলো।
একই আইনের সমধারায় দুই মাসের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফরও। চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তাঁকে অস্থায়ীভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে অধ্যাপক ডা. মো. শাদরুল আলমকে। এত দিন তিনি সেন্টার ফর মেডিকেল এডুকেশনের (সিএমই) পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছিলেন।
আজ সোমবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের উপসচিব দূর-রে শাহওয়াজ স্বাক্ষরিত এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। আগামী ১ জানুয়ারি থেকে তাঁকে নতুন কর্মস্থলে যোগদান করতে বলা হয়েছে।

স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমানকে দুই মাসের জন্য চুক্তি ভিত্তিতে নিয়োগ দিয়েছে সরকার। একই মেয়াদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু জাফরকে।
২৪ ডিসেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব সামিউল আমিন স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর ৪৯ ধারা অনুযায়ী মো. সাইদুর রহমানকে তাঁর অবসরোত্তর ছুটি ও তৎসংশ্লিষ্ট সুবিধাদি স্থগিত এবং অন্য যেকোনো পেশা, ব্যবসা কিংবা সরকারি, আধা সরকারি সংগঠনের সঙ্গে কর্মসম্পর্ক পরিত্যাগের শর্তে ২০২৬ সালের ১১ জানুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রদান করা হলো।
একই আইনের সমধারায় দুই মাসের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফরও। চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তাঁকে অস্থায়ীভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে অধ্যাপক ডা. মো. শাদরুল আলমকে। এত দিন তিনি সেন্টার ফর মেডিকেল এডুকেশনের (সিএমই) পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছিলেন।
আজ সোমবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের উপসচিব দূর-রে শাহওয়াজ স্বাক্ষরিত এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। আগামী ১ জানুয়ারি থেকে তাঁকে নতুন কর্মস্থলে যোগদান করতে বলা হয়েছে।

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক রূপান্তরের প্রেক্ষাপটে সংবিধান সংস্কার নিয়ে উত্থাপিত বিতর্কে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন— সংবিধান পুনর্লিখন নয়, ধাপে ধাপে বাস্তবভিত্তিক সংশোধনই সময়োপযোগী পথ। তিনি ৭২-এর সংবিধানের ভার বহনের যুক্তি, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ ও ক্ষমতার ভারসাম্য, প্রধান
১১ মে ২০২৫
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল গতকাল সোমবার। দলের মনোনীত প্রার্থীর বাইরে এদিন বিভিন্ন আসনে প্রার্থী হতে বিএনপির আরও অনেক নেতা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। রাত ১০টায় এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত পাওয়া তথ্যে অন্তত ৮১টি আসনে দলটির একাধিক নেতা...
৩ ঘণ্টা আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য ২ হাজার ৫৮২ জন সম্ভাব্য প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন ৩ হাজার ৪০৭ জন। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষদিন ইসির জনসংযোগ পরিচালক মো. রুহুল আমিন এ তথ্য জানান।
৮ ঘণ্টা আগে
দেশের আর্থিক খাতের পাচারের অন্যতম হোতা এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক এমডি প্রশান্ত কুমার হালদারসহ (পি কে হালদার) ১৮ জনের নামে চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দিয়া শিপিং লিমিটেড নামের একটি কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে এফএএস ফাইন্যান্
৮ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য ২ হাজার ৫৮২ জন সম্ভাব্য প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন ৩ হাজার ৪০৭ জন। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষদিন ইসির জনসংযোগ পরিচালক মো. রুহুল আমিন এ তথ্য জানান।
ইসির জনসংযোগ পরিচালক জানান, রংপুর অঞ্চলের ৮ জেলার ৩৩টি আসন থেকে ৩৩৮টি মনোনয়ন বিতরণ করা হয়েছিল। জমা পড়েছে ২৭৮টি। রাজশাহী অঞ্চলের ৮ জেলার ৩৯ আসন থেকে ৩২৯টি মনোনয়ন বিতরণ করা হয়েছিল। জমা পড়েছে ২৬০টি। বরিশাল অঞ্চলের ৬ জেলার ২১টি আসন থেকে বিতরণ করা হয় ২১২টি, জমা পড়েছে ১৬৬টি। ফরিদপুর অঞ্চলের ৫ জেলার ১৫টি আসন থেকে বিতরণ করা হয় ১৬৫টি, জমা পড়েছে ১৪২টি।
খুলনা অঞ্চলের ১০ জেলার ৩৬ আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ৩৫৮টি, জমা পড়েছে ২৭৬টি। ঢাকা অঞ্চলের ৬ জেলার ৪১টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছে ৬৩৮টি, জমা পড়েছে ৪৪৪টি।
ময়মনসিংহের ৬টি জেলার ৩৮টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ৪০২টি, জমা পড়েছে ৩১১টি। সিলেটের ৪ জেলার ১৯টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছে ১৭৬টি, জমা পড়েছে ১৪৬টি। কুমিল্লার ৬ জেলার ৩৫টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ৪৯৬টি, জমা পড়েছে ৩৬৫টি। চট্টগ্রামের ৫ জেলার ২৩টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ২৯৩টি, জমা পড়েছে ১৯৪টি।
ইসির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র বাছাই ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত, রিটার্নিং কর্মকর্তার আদেশের বিরুদ্ধে কমিশনে আপিল করার সময় ৫ থেকে ৯ জানুয়ারি, আপিল নিষ্পত্তি ১০ থেকে ১৮ জানুয়ারি, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২০ জানুয়ারি, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ ও প্রতীক বরাদ্দ ২১ জানুয়ারি, নির্বাচনী প্রচারণা চলবে ২২ জানুয়ারি থেকে ভোট শুরুর ৪৮ ঘণ্টা আগপর্যন্ত, অর্থাৎ ১০ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত।
আর ভোট গ্রহণ করা হবে ১২ ফেব্রুয়ারি। সেদিন সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোট গ্রহণ চলবে।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য ২ হাজার ৫৮২ জন সম্ভাব্য প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন ৩ হাজার ৪০৭ জন। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষদিন ইসির জনসংযোগ পরিচালক মো. রুহুল আমিন এ তথ্য জানান।
ইসির জনসংযোগ পরিচালক জানান, রংপুর অঞ্চলের ৮ জেলার ৩৩টি আসন থেকে ৩৩৮টি মনোনয়ন বিতরণ করা হয়েছিল। জমা পড়েছে ২৭৮টি। রাজশাহী অঞ্চলের ৮ জেলার ৩৯ আসন থেকে ৩২৯টি মনোনয়ন বিতরণ করা হয়েছিল। জমা পড়েছে ২৬০টি। বরিশাল অঞ্চলের ৬ জেলার ২১টি আসন থেকে বিতরণ করা হয় ২১২টি, জমা পড়েছে ১৬৬টি। ফরিদপুর অঞ্চলের ৫ জেলার ১৫টি আসন থেকে বিতরণ করা হয় ১৬৫টি, জমা পড়েছে ১৪২টি।
খুলনা অঞ্চলের ১০ জেলার ৩৬ আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ৩৫৮টি, জমা পড়েছে ২৭৬টি। ঢাকা অঞ্চলের ৬ জেলার ৪১টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছে ৬৩৮টি, জমা পড়েছে ৪৪৪টি।
ময়মনসিংহের ৬টি জেলার ৩৮টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ৪০২টি, জমা পড়েছে ৩১১টি। সিলেটের ৪ জেলার ১৯টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছে ১৭৬টি, জমা পড়েছে ১৪৬টি। কুমিল্লার ৬ জেলার ৩৫টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ৪৯৬টি, জমা পড়েছে ৩৬৫টি। চট্টগ্রামের ৫ জেলার ২৩টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ২৯৩টি, জমা পড়েছে ১৯৪টি।
ইসির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র বাছাই ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত, রিটার্নিং কর্মকর্তার আদেশের বিরুদ্ধে কমিশনে আপিল করার সময় ৫ থেকে ৯ জানুয়ারি, আপিল নিষ্পত্তি ১০ থেকে ১৮ জানুয়ারি, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২০ জানুয়ারি, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ ও প্রতীক বরাদ্দ ২১ জানুয়ারি, নির্বাচনী প্রচারণা চলবে ২২ জানুয়ারি থেকে ভোট শুরুর ৪৮ ঘণ্টা আগপর্যন্ত, অর্থাৎ ১০ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত।
আর ভোট গ্রহণ করা হবে ১২ ফেব্রুয়ারি। সেদিন সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোট গ্রহণ চলবে।

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক রূপান্তরের প্রেক্ষাপটে সংবিধান সংস্কার নিয়ে উত্থাপিত বিতর্কে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন— সংবিধান পুনর্লিখন নয়, ধাপে ধাপে বাস্তবভিত্তিক সংশোধনই সময়োপযোগী পথ। তিনি ৭২-এর সংবিধানের ভার বহনের যুক্তি, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ ও ক্ষমতার ভারসাম্য, প্রধান
১১ মে ২০২৫
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল গতকাল সোমবার। দলের মনোনীত প্রার্থীর বাইরে এদিন বিভিন্ন আসনে প্রার্থী হতে বিএনপির আরও অনেক নেতা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। রাত ১০টায় এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত পাওয়া তথ্যে অন্তত ৮১টি আসনে দলটির একাধিক নেতা...
৩ ঘণ্টা আগে
স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমানকে দুই মাসের জন্য চুক্তি ভিত্তিতে নিয়োগ দিয়েছে সরকার। একই মেয়াদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু জাফরকে।
৬ ঘণ্টা আগে
দেশের আর্থিক খাতের পাচারের অন্যতম হোতা এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক এমডি প্রশান্ত কুমার হালদারসহ (পি কে হালদার) ১৮ জনের নামে চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দিয়া শিপিং লিমিটেড নামের একটি কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে এফএএস ফাইন্যান্
৮ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশের আর্থিক খাতের পাচারের অন্যতম হোতা এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক এমডি প্রশান্ত কুমার হালদারসহ (পি কে হালদার) ১৮ জনের নামে চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দিয়া শিপিং লিমিটেড নামের একটি কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড থেকে ৪৪ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় এই চার্জশিট অনুমোদন করে কমিশন।
আজ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এ বিষয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দুদকের সহকারী পরিচালক তানজির আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ২০২২ সালের ১৯ মে দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ সংস্থাটির সহকারী পরিচালক রাকিবুল হায়াত বাদী হয়ে মামলাটি করেছিলেন।
মামলার আসামিরা হলেন এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক এমডি ও পলাতক আসামি প্রশান্ত কুমার হালদার, দিয়া শিপিং লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক শিবপ্রসাদ ব্যানার্জী, পরিচালক পাপিয়া ব্যানার্জী, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের চেয়ারম্যান এম এ হাফিজ, সাবেক চেয়ারম্যান মো. সিদ্দিকুর রহমান ও ভাইস চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম, পরিচালক অরুণ কুমার কুণ্ডু, অঞ্জন কুমার রায়, মো. মোস্তাইন বিল্লাহ, উজ্জল কুমার নন্দী, সত্য গোপাল পোদ্দার এবং এফএএস ফাইন্যান্সের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহরিয়ার।
তদন্তে আরও ছয়জনের সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পায় দুদক। তাঁরা হলেন ইটা অ্যান্ড টাইলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম নওশেরুল ইসলাম, দিয়া অয়েল লিমিটেডের এমডি বাসুদেব ব্যানার্জী, পরিচালক পূজা ব্যানার্জী, এমএসটি মেরিন সার্ভিসেস অ্যান্ড ট্রেডার্স লিমিটেডের পরিচালক অমল চন্দ্র দাস, মমতাজ বেগম এবং বিডিএস অ্যাডজাস্টার্সের চিফ এক্সিকিউটিভ ইবনে মোফাজ্জল বারকি।
আসামিদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতারণা ও জালজালিয়াতির মাধ্যমে এফএএস (ফাস) ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড থেকে অবৈধ উপায়ে ভুয়া ও কাগুজে প্রতিষ্ঠান দিয়া শিপিং লিমিটেডের নামে ঋণ হিসেবে ৪৪ কোটি টাকা গ্রহণ করে আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বর্তমান মামলার অন্যতম আসামি এফএএস ফাইন্যান্সের সাবেক এম ডি রাসেল শাহরিয়ারকে ২০২২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধানের নেতৃত্বে একটি টিম মোহাম্মদপুর থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে এই মামলায় তাঁকে কারাগারে পাঠায়।
কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনার অশোকনগরে গা ঢাকা দিয়েছিলেন বাংলাদেশি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তা পি কে হালদার। তিনি শিবশংকর হালদার নামে নিজেকে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে পরিচয় দিতেন।
২০২২ সালের ১৪ মে ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) হাতে ধরা পড়েন তিনি। তাঁর সঙ্গে গ্রেপ্তার হন আরও পাঁচজন। পরে প্রশান্ত কুমার ওরফে পি কে হালদারসহ ছয়জনকে তিন দিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়। বর্তমানে পি কে হালদার ভারতের কারাগারে রয়েছেন।

দেশের আর্থিক খাতের পাচারের অন্যতম হোতা এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক এমডি প্রশান্ত কুমার হালদারসহ (পি কে হালদার) ১৮ জনের নামে চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দিয়া শিপিং লিমিটেড নামের একটি কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড থেকে ৪৪ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় এই চার্জশিট অনুমোদন করে কমিশন।
আজ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এ বিষয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দুদকের সহকারী পরিচালক তানজির আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ২০২২ সালের ১৯ মে দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ সংস্থাটির সহকারী পরিচালক রাকিবুল হায়াত বাদী হয়ে মামলাটি করেছিলেন।
মামলার আসামিরা হলেন এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক এমডি ও পলাতক আসামি প্রশান্ত কুমার হালদার, দিয়া শিপিং লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক শিবপ্রসাদ ব্যানার্জী, পরিচালক পাপিয়া ব্যানার্জী, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের চেয়ারম্যান এম এ হাফিজ, সাবেক চেয়ারম্যান মো. সিদ্দিকুর রহমান ও ভাইস চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম, পরিচালক অরুণ কুমার কুণ্ডু, অঞ্জন কুমার রায়, মো. মোস্তাইন বিল্লাহ, উজ্জল কুমার নন্দী, সত্য গোপাল পোদ্দার এবং এফএএস ফাইন্যান্সের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহরিয়ার।
তদন্তে আরও ছয়জনের সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পায় দুদক। তাঁরা হলেন ইটা অ্যান্ড টাইলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম নওশেরুল ইসলাম, দিয়া অয়েল লিমিটেডের এমডি বাসুদেব ব্যানার্জী, পরিচালক পূজা ব্যানার্জী, এমএসটি মেরিন সার্ভিসেস অ্যান্ড ট্রেডার্স লিমিটেডের পরিচালক অমল চন্দ্র দাস, মমতাজ বেগম এবং বিডিএস অ্যাডজাস্টার্সের চিফ এক্সিকিউটিভ ইবনে মোফাজ্জল বারকি।
আসামিদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতারণা ও জালজালিয়াতির মাধ্যমে এফএএস (ফাস) ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড থেকে অবৈধ উপায়ে ভুয়া ও কাগুজে প্রতিষ্ঠান দিয়া শিপিং লিমিটেডের নামে ঋণ হিসেবে ৪৪ কোটি টাকা গ্রহণ করে আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বর্তমান মামলার অন্যতম আসামি এফএএস ফাইন্যান্সের সাবেক এম ডি রাসেল শাহরিয়ারকে ২০২২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধানের নেতৃত্বে একটি টিম মোহাম্মদপুর থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে এই মামলায় তাঁকে কারাগারে পাঠায়।
কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনার অশোকনগরে গা ঢাকা দিয়েছিলেন বাংলাদেশি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তা পি কে হালদার। তিনি শিবশংকর হালদার নামে নিজেকে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে পরিচয় দিতেন।
২০২২ সালের ১৪ মে ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) হাতে ধরা পড়েন তিনি। তাঁর সঙ্গে গ্রেপ্তার হন আরও পাঁচজন। পরে প্রশান্ত কুমার ওরফে পি কে হালদারসহ ছয়জনকে তিন দিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়। বর্তমানে পি কে হালদার ভারতের কারাগারে রয়েছেন।

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক রূপান্তরের প্রেক্ষাপটে সংবিধান সংস্কার নিয়ে উত্থাপিত বিতর্কে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন— সংবিধান পুনর্লিখন নয়, ধাপে ধাপে বাস্তবভিত্তিক সংশোধনই সময়োপযোগী পথ। তিনি ৭২-এর সংবিধানের ভার বহনের যুক্তি, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ ও ক্ষমতার ভারসাম্য, প্রধান
১১ মে ২০২৫
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল গতকাল সোমবার। দলের মনোনীত প্রার্থীর বাইরে এদিন বিভিন্ন আসনে প্রার্থী হতে বিএনপির আরও অনেক নেতা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। রাত ১০টায় এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত পাওয়া তথ্যে অন্তত ৮১টি আসনে দলটির একাধিক নেতা...
৩ ঘণ্টা আগে
স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমানকে দুই মাসের জন্য চুক্তি ভিত্তিতে নিয়োগ দিয়েছে সরকার। একই মেয়াদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু জাফরকে।
৬ ঘণ্টা আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য ২ হাজার ৫৮২ জন সম্ভাব্য প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন ৩ হাজার ৪০৭ জন। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষদিন ইসির জনসংযোগ পরিচালক মো. রুহুল আমিন এ তথ্য জানান।
৮ ঘণ্টা আগে