Ajker Patrika

‘জুলাই সনদ’ বাস্তবায়ন হবে কীভাবে, যা বললেন আলী রীয়াজ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৮ আগস্ট ২০২৫, ১৭: ২৫
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

স্থানীয় সরকারে সংসদ সদস্যদের প্রভাব কমানো, ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ এবং একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কাজ করছে। এ বিষয়ে কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ আজ শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে জানান, দ্বিতীয় ধাপের আলোচনায় ২০টি মৌলিক কাঠামোগত বিষয়ের মধ্যে ১১টিতে সম্পূর্ণ ঐকমত্য হয়েছে, তবে ৯টি বিষয়ে ভিন্নমত (নোট অব ডিসেন্ট) রয়েছে। কমিশনের মেয়াদ মধ্য আগস্টে শেষ হচ্ছে এবং সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মেয়াদ বাড়ানো হতে পারে।

আজ বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ‘জুলাই সনদ’ ঘোষণা ও বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়েও কথা বলেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি।

আলী রীয়াজ বলেন, স্থানীয় সরকারব্যবস্থায় সংসদ সদস্যদের প্রভাব বিস্তার আইনত বৈধ নয় এবং এ বিষয়ে আদালতের রায়ও রয়েছে। প্রথম ধাপের আলোচনায় ৬২টি বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছিল, যার মধ্যে স্থানীয় পর্যায়ে জনপ্রতিনিধিদের প্রভাব রোধে সুনির্দিষ্ট কিছু প্রস্তাব ছিল। এই প্রস্তাবগুলো রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্যের ভিত্তিতেই তৈরি হয়েছে।

সংস্কার কমিশনের মূল লক্ষ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করা। এ প্রসঙ্গে আলী রীয়াজ জানান, কেবল প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য নয়, প্রধানমন্ত্রীর একাধিক পদে না থাকা ও মেয়াদের মতো বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যদিও কিছু বিষয়ে ভিন্নমত রয়েছে, তবে এগুলোর মূল উদ্দেশ্য হলো ক্ষমতার এককেন্দ্রীকরণ রোধ করা। তিনি বলেন, এটি কেবল সাংবিধানিক পরিবর্তন নয়, দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে একটি বড় পরিবর্তনের সুযোগ তৈরি করবে।

জুলাই সনদের ভিত্তিতে নির্বাচনের বিষয়ে আলী রীয়াজ বলেন, কমিশনের কাজ হচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা। এ লক্ষ্যে ‘জুলাই সনদ’-এর একটি প্রাথমিক খসড়া তৈরি করা হয়েছে। ঐকমত্যের ভিত্তিতে রচিত এই সনদের বাধ্যবাধকতা নিশ্চিত করা এবং বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।

জুলাই সনদ কবে নাগাদ সই হতে পারে—এমন প্রশ্নে আলী রীয়াজ বলেন, ‘কবে নাগাদ জুলাই সনদ—সেটা নির্ভর করছে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আমাদের আলোচনার তৃতীয় পর্বে, বিশেষত বিশেষজ্ঞদের মতামত পাওয়ার পর। আমরা যেটা বলেছি। প্রাথমিক একটা খসড়া দেওয়া হয়েছে সবাইকে, সে খসড়া অনুযায়ী তারা মন্তব্য করেছে। খসড়া থেকে এসব মন্তব্যের ভিত্তিতে সমন্বিত পূর্ণাঙ্গ খসড়া আবার পাঠাব আগামী দুদিনের মধ্যে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সবাই একমত হয়ে স্বাক্ষরের দিন-তারিখ ঠিক করা যাবে। যদি অন্য কোনো মতামত থাকে, তাহলে বিবেচনায় নিতে হবে।’

সনদ অন্তর্বর্তী সরকার বাস্তবায়ন করবে নাকি আগামী সংসদকে বাধ্যবাধকতার মধ্যে রাখা হবে—এমন প্রশ্নে আলী রীয়াজ বলেন, ‘আমরা এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি। আমরা যেটা বলেছি, বিশেষজ্ঞদের কাছে প্রশ্ন করা যে এটা বাস্তবায়নের পথ কী হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থানেরও বিষয় রয়েছে। ফলে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতের ওপর নির্ভর করবে, বিশেষজ্ঞদের মতামতের ওপর নির্ভর করবে বাস্তবায়নের পথটা কী হবে। কোনো পূর্বনির্ধারিত অবস্থান থেকে বাস্তবায়নের কোনো পথ ঐকমত্য কমিশন সুপারিশ করছে না। সেটাই আমাদের অবস্থান।’

তৃতীয় ধাপের সংলাপ দীর্ঘস্থায়ী হবে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে কমিশনের সহসভাপতি বলেন, ‘স্বল্পতম সময়ে আলোচনাটা এ পর্যায়ে করতে চাই। বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে দীর্ঘ মেয়াদে আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে হয় না। কারণ, তাঁদের মতামতের ভিত্তিতে এবং রাজনৈতিক দলগুলোও তাদের অবস্থান জানে। সেগুলোর ভিত্তিতে এক জায়গায় আসা যায় কি না, সে চেষ্টা করব আমরা। সেটা খুব দীর্ঘমেয়াদি হবে না।’

ঐকমত্য কমিশন তাদের কার্যক্রমকে সফল হিসেবে দেখছে। আলী রীয়াজ বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংস্কারের বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা ছিল তাদের মূল লক্ষ্য। প্রথম ধাপে ৬২টি এবং দ্বিতীয় ধাপে ১৯টির মধ্যে ১০টি বিষয়ে পুরোপুরি ঐকমত্য হয়েছে। তিনি এটিকে দেশের ইতিহাসের প্রেক্ষাপটে একটি বড় অর্জন হিসেবে উল্লেখ করেন।

কমিশনের মেয়াদ মধ্য আগস্টে শেষ হলেও সরকার চাইলে এর মেয়াদ বাড়াতে পারে। আলী রীয়াজ জানান, কমিশন আলাদাভাবে মেয়াদ বাড়ানোর কোনো সুপারিশ করবে না। তবে যদি আগামী সাত দিনের মধ্যে পুরো প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করা না যায়, তাহলে বাস্তব পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে। কমিশনের আর্থিক ব্যয় সম্পর্কে তিনি জানান, কমিশন আইন মন্ত্রণালয়ের অধীনে কাজ করেছে এবং তাদের সাচিবিক সহায়তা আইন মন্ত্রণালয় ও সংসদ সচিবালয় থেকে দেওয়া হয়েছে। এ-সম্পর্কিত যাবতীয় খরচ তাদের কাছেই হিসাব করা রয়েছে।

৯টি বিষয়ে ভিন্নমত থাকা প্রসঙ্গে আলী রীয়াজ বলেন, নোট অব ডিসেন্টকেও সমান গুরুত্ব দেওয়া হবে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে বৈশ্বিক অভিজ্ঞতা ও দেশের বাস্তবতার আলোকে সমাধানের পথ খোঁজা হবে। সংখ্যাগুরু দলের ঐকমত্যের পাশাপাশি সংখ্যালঘুদের মতামতকেও গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হবে। তিনি বলেন, এমন কিছু বিষয় ছিল, যেগুলো নিয়ে মাসের পর মাস আলোচনা করলেও ঐকমত্যে আসা সম্ভব ছিল না, তাই বাস্তবতার নিরিখে সেগুলো বাদ দেওয়া হয়েছে।

আলী রীয়াজ মনে করেন, কেবল একটি নির্বাচন ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার পুনরুত্থান বন্ধ করতে পারবে না। এর জন্য একাধিক প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো, সাংবিধানিক বিধি ও রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন প্রয়োজন। তিনি আশা করেন, দেশের সব নাগরিক যেমন একটি সুষ্ঠু নির্বাচন চান, তেমনি এই সংস্কার পদক্ষেপগুলো দেশকে একটি গণতান্ত্রিক কাঠামোর দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

প্রথম পর্বের আলোচনায় দেখা গেছে, সংস্কার কমিশনের পক্ষ থেকে দেওয়া সুপারিশগুলোর ভেতরে ২৫টি সুপারিশের ব্যাপারে রাজনৈতিক দল ও জোটগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য এতটাই ব্যাপক যে, এসব বিষয়ে আলোচনায় অগ্রগতির সম্ভাবনা নেই। সেই বিবেচনায় কমিশন দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা থেকে বেশ কিছু বিষয় বাদ দেয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে—রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও সংসদের মেয়াদ কমিয়ে চার বছরে করা; বাংলাদেশকে চারটি প্রদেশে বিভক্ত করা; সংবিধানের প্রযোজ্য ক্ষেত্রগুলোতে রিপাবলিকের বাংলা হিসেবে ‘নাগরিকতন্ত্র’ এবং People’s Republic of Bangladesh-এর অনুবাদ হিসেবে ‘জনগণতন্ত্রী বাংলাদেশ’ ব্যবহার করা; রাজনৈতিক দলগুলো কর্তৃক নিম্নকক্ষের মোট আসনের ন্যূনতম ১০ শতাংশ আসনে তরুণ-তরুণীদের মধ্য থেকে প্রার্থী মনোনীত করা; সংসদীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ন্যূনতম বয়স কমিয়ে ২১ বছর করা; একটি স্থায়ী স্থানীয় সরকার কমিশন প্রতিষ্ঠা করা; জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের আয়োজন করা, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের জন্য যেমন সংসদীয় স্থায়ী কমিটি রয়েছে, তেমনিভাবে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নাগরিকদের নিয়ে একটি করে জেলা নাগরিক কমিটি ও উপজেলা নাগরিক কমিটি গঠন করা; দেশের পুরোনো চারটি বিভাগের সীমানাকে চারটি প্রদেশে বিভক্ত করে প্রাদেশিক শাসনব্যবস্থা চালু করা; বিদ্যমান জেলা পরিষদ ব্যবস্থা বাতিল করে জেলা পরিষদসমূহের সব সম্পত্তি প্রস্তাবিত প্রাদেশিক সরকারের কাছে হস্তান্তর করা; প্রস্তাবিত প্রাদেশিক ব্যবস্থা প্রবর্তনের সুপারিশের আলোকে ঢাকা মহানগরী, টঙ্গী, কেরানীগঞ্জ, সাভার ও নারায়ণগঞ্জকে নিয়ে প্রাদেশিক সরকারের সমপর্যায়ের ‘ক্যাপিটাল সিটি গভর্নমেন্ট’ গঠন করা; উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান পদটি বিলুপ্ত করা; পৌরসভার চেয়ারম্যান ওয়ার্ড মেম্বারদের ভোটে নির্বাচন করা এবং মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রীর একান্ত সচিব (পিএস), সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) মন্ত্রীদের অভিপ্রায় অনুসারে সিভিল সার্ভিসের বাইরে থেকে নিয়োগ করা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বোরো ধানের মৌসুম: সেচ মৌসুমে জ্বালানিতে টান

  • যেকোনো পরিস্থিতিতে তিন মাসের জ্বালানি মজুত থাকার কথা
  • বিপিসির নথি বলছে, আর ১৩ থেকে ২০ দিনের জ্বালানি আছে
 আবু বকর ছিদ্দিক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৩১
বোরো ধানের মৌসুম: সেচ মৌসুমে জ্বালানিতে টান

বোরো ধানের মৌসুমে দেশে জ্বালানি মজুতে টান পড়েছে। বর্তমান ডিজেলের মজুত একেবারেই তলানিতে রয়েছে। সরকারি তেল বিপণনকারী তিনটি কোম্পানি পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েলে মজুত প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছে। যেকোনো পরিস্থিতিতে তিন মাসের জ্বালানি মজুত থাকার কথা থাকলেও বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) নথি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বর্তমানে আর ১৩ থেকে ২০ দিনের জ্বালানি তেলের মজুত রয়েছে। যদিও বিপিসির দাবি, দেশে জ্বালানি-সংকট দেখা দেওয়ার আশঙ্কা নেই।

বিপিসির মজুত প্রতিবেদনে জানা যায়, ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে মোট ডিজেল ৩ লাখ ৩৬ হাজার ৪৯৭ টন মজুত রয়েছে। এর মধ্যে দেশের ২৪টি ডিপোর ট্যাংকে ২ লাখ ৬৮ হাজার ৮২৯ টন মজুত রয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন লাইটার জাহাজসহ ট্রানজিটে রয়েছে ৪৯ হাজার ৬৬৮ টন। ২২ ডিসেম্বর বিপিসির বিক্রয় প্রতিবেদনে দেখা যায়, এদিন ১৬ হাজার ৬০১ টন ডিজেল সারা দেশে বিক্রি করা হয়েছে। সে হিসাবে দেখা যায়, বর্তমানে বিপিসির কাছে ২০ দিনের ডিজেল মজুত রয়েছে। একইভাবে বিপিসি বিভিন্ন ডিপোতে পেট্রল মজুত আছে ২২ হাজার ১১৪ টন। ২২ ডিসেম্বর বিপিসির বিক্রয় প্রতিবেদনে দেখা যায়, এদিন ১ হাজার ৬১৮ টন পেট্রল বিক্রি করা হয়েছে। এই হিসাবে বিপিসির কাছে পেট্রল ১৩ দিনের মজুত আছে।

বিপিসির ২৩ ডিসেম্বরের স্টক প্রতিবেদনে দেখা যায়, সারা দেশে মোট ২৮ হাজার ২৭০ টন অকটেন মজুত রয়েছে। ২২ ডিসেম্বর বিপিসির বিক্রয় প্রতিবেদনে দেখা যায়, এদিন ১ হাজার ৮৮৫ টন অকটেন বিক্রি করা হয়েছে। এই হিসাবে বিপিসির কাছে ১৫ দিনের অকটেন মজুত আছে।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বিপিসির পরিচালক এ কে এম আজাদুর রহমান জানান, সারা দেশে ২৫ দিনের অকটেন ও পেট্রল মজুত রয়েছে। এ ছাড়া ডিজেল ৩৫ দিনের মজুত রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। দেশে ডিজেলের মজুত কম কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন শুষ্ক মৌসুমে সব জায়গায় বিদ্যুতের ব্যবহার হচ্ছে। তাই ডিজেলের চাহিদা কম।

এদিকে রাষ্ট্রায়ত্ত তেল বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান মেঘনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ২৩ ডিসেম্বরের মজুত প্রতিবেদনে দেখা যায়, সারা দেশে ১৭টি ডিপোতে ৫ হাজার ৬৯৫ টন অকটেন মজুত রয়েছে। আর পেট্রল মজুত রয়েছে ৪ হাজার ২৯৫ টন। সারা দেশের ১৭টি ডিপোতে ৯২ হাজার ৮৯৫ টন ডিজেল মজুত রয়েছে। একইভাবে সরকারি তেল বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ২৩ ডিসেম্বরের মজুত প্রতিবেদনে দেখা যায়, সারা দেশে ১৭টি ডিপোতে ৮০ হাজার ২১৩ টন ডিজেল মজুত রয়েছে। এ ছাড়া ২ হাজার ৯১৪ টন পেট্রল এবং ৪ হাজার ১৮৭ টন অকটেন মজুত রয়েছে। পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ২৩ ডিসেম্বরের মজুত প্রতিবেদনে দেখা যায়, ফতুল্লা, রাজশাহী, হরিয়ান, চিলমারী ডিপোতে কোনো জ্বালানি তেল নাই। পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের নাটোর ডিপোতে ৩০ টন, রংপুর ডিপোতে ৫৭ টন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ডিপোতে ২ টন ডিজেল রয়েছে।

নাম না প্রকাশে সরকারি তেল বিপণনকারী এক কর্মকর্তা জানান, বিপিসির আমদানি করা জ্বালানি তেলের মজুত আশঙ্কাজনকভাবে কম রয়েছে। ডিজেলের মজুত একবারেই কম। তাঁর মতে ১৩ থেকে ১৫ দিনের জ্বালানি মজুত রয়েছে বর্তমানে।

পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক আসিফ মালিক বলেন, দেশে পর্যাপ্ত জ্বালানি মজুত রয়েছে। সংকটের কোনো আশঙ্কা নেই। নিয়মিতভাবে জ্বালানি তেলের জাহাজ আসা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান।

তবে গাজীপুর ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আবদুল মোমিন বলেন, দেশে ধান উৎপাদনের জন্য সবচেয়ে বড় মৌসুম হচ্ছে বর্তমান বোরো মৌসুম। এ সময় প্রায় ৫২ লাখ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়। এই মৌসুমে জ্বালানি-সংকট হলে সেটা দেশের খাদ্য উৎপাদনে ছেদ পড়বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজবাড়ীতে গণপিটুনিতে অমৃত মন্ডল নিহতের ঘটনা সাম্প্রদায়িক হামলা নয়: প্রেস উইং

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজবাড়ীতে গণপিটুনিতে অমৃত মন্ডল নিহতের ঘটনা সাম্প্রদায়িক হামলা নয়: প্রেস উইং

রাজবাড়ীর পাংশা থানাধীন এলাকায় গত বুধবার রাতে সংঘটিত একটি দুঃখজনক হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর বিষয়টি সরকারের নজরে এসেছে।

পুলিশের তথ্য ও প্রাথমিক তদন্ত থেকে প্রতীয়মান হচ্ছে, ঘটনাটি মোটেই সাম্প্রদায়িক হামলা নয়। এটি চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড থেকে উদ্ভূত সহিংস পরিস্থিতির থেকে সৃষ্ট ঘটনা। নিহত ব্যক্তি শীর্ষ সন্ত্রাসী অমৃত মন্ডল ওরফে সম্রাট চাঁদা দাবির উদ্দেশ্যে এলাকায় উপস্থিত হন এবং বিক্ষুব্ধ স্থানীয় জনতার সঙ্গে সংঘর্ষের একপর্যায়ে প্রাণ হারান। তিনি ইতিপূর্বে ২০২৩ সালে রুজুকৃত হত্যা, চাঁদাবাজির মামলাসহ একাধিক গুরুতর মামলার আসামি ছিলেন। এসব মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও রয়েছে।

পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সম্রাটের সহযোগী সেলিমকে একটি বিদেশি পিস্তল, ১টি পাইপগানসহ আটক করে। এই ঘটনায় ইতিমধ্যে তিনটি মামলা দায়ের হয়েছে।

এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সরকার কঠোর নিন্দা জানায়। সরকার সুস্পষ্টভাবে জানাতে চায়, যেকোনো ধরনের আইনবহির্ভূত কর্মকাণ্ড, গণপিটুনি বা সহিংসতা সরকার কোনোভাবেই সমর্থন করে না। এ ঘটনায় যারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত, তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

একই সঙ্গে সরকার গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছে, একটি মহল নিহত ব্যক্তির ধর্মীয় পরিচয়কে সামনে এনে ঘটনাটিকে সাম্প্রদায়িক হামলা হিসেবে উপস্থাপনের অপচেষ্টা চালাচ্ছে, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও অসদুদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এ ধরনের অপপ্রচার সামাজিক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে পারে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে পারে।

সরকারসংশ্লিষ্ট সবাইকে দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানাচ্ছে এবং বিভ্রান্তিকর, উসকানিমূলক ও সাম্প্রদায়িক বক্তব্য প্রচার থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছে।

আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। বাংলাদেশ একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ, এ দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করার যেকোনো অপচেষ্টা সরকার কঠোরহস্তে দমন করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তারেক রহমানের আগমনে রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ হবে: প্রেস সচিব

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ফাইল ছবি
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ফাইল ছবি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আগমনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ হবে বলে মনে করছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। আজ বৃহস্পতিবার বড়দিন উপলক্ষে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের পবিত্র জপমালা রাণী গির্জায় খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে যান শফিকুল আলম। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

শফিকুল আলম বলেন, ‘আমরা তাঁকে (তারেক রহমান) স্বাগত জানাই। উনি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দলের নেতা এবং আমি বলব তাঁর বাংলাদেশে আসা খুবই একটা ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। বাংলাদেশে তো সত্যিকার অর্থে কিছু রাজনৈতিক শূন্যতা আছে। উনি আসলে সেটা পূরণ হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের সামনে আমাদের একটা বড় ইলেকশন, আমরা একটা ডেমোক্রেটিক ট্রানজিশনে (গণতান্ত্রিক উত্তরণে) আছি। আমরা আশা করছি, আমাদের এই ট্রানজিশনটা আরও স্মুথ হবে।’

তারেক রহমানের নিরাপত্তা নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে জবাবে শফিকুল আলম বলেন, ‘তাঁর নিরাপত্তা তো তাঁর পার্টি দেখছেন, তবে তাঁরা আমাদের কাছে যেই ধরনের সহযোগিতা চাচ্ছেন, আমরা সব সহযোগিতাই করছি।’

দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবন কাটানোর পর তারেক রহমানকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইটটি যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে সকাল ৯টা ৫৬ মিনিটে সিলেটে আসে। সিলেটে যাত্রাবিরতি শেষে ফ্লাইটটি বেলা ১১টা ৩৯ মিনিটে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সেখান থেকে তাঁর বাসটি সংবর্ধনাস্থলে আসে। কিছুক্ষণ আগে তিনি মঞ্চে অবস্থান নিয়ে তিনি বক্তব্য শুরু করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বড়দিনে বঙ্গভবনে শুভেচ্ছা বিনিময় করলেন রাষ্ট্রপতি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা

খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎস বড়দিনে খ্রিষ্টান ধর্মের বিশিষ্ট ব্যক্তি, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

আজ বৃহস্পতিবার বঙ্গভবনে তিনি এই শুভেচ্ছা বিনিময় করেন বলে বঙ্গভবনের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা

সেখানে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি দেশের খ্রিষ্টান সম্প্রদায়সহ বিশ্ববাসীর প্রতি বড় দিনের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও উষ্ণ অভিনন্দন জানান। জাতি, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে এ দেশের মানুষের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি চিরকাল অটুট ও অক্ষুণ্ন রাখার আহ্বান জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত