Ajker Patrika

৫ আগস্টের পর আওয়ামীপন্থী বলে গণমাধ্যমের ওপর প্রতিশোধমূলক হামলা হয়: জাতিসংঘ

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর ক্ষুব্ধ জনতা প্রতিশোধমূলক হত্যাকাণ্ড এবং অন্যান্য গুরুতর সহিংস হামলায় লিপ্ত হয়। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী, প্রকৃত বা ধারণাকৃত সমর্থক, পুলিশ ও আওয়ামীপন্থী হিসেবে বিবেচিত গণমাধ্যমকে লক্ষ্য করে এসব সহিংসতা চালানো হয়। এতে আওয়ামী লীগের ১৪৪ জন নেতা-কর্মী নিহত হয়েছেন।

অন্তর্বর্তী সরকারের আমন্ত্রণে স্বাধীনভাবে তদন্ত পরিচালনার পর এক প্রতিবেদনে এমনটি জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় (ওএইচসিএইচআর)। গত জুলাই-আগস্ট মাস পর্যন্ত শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার দ্বারা সংঘটিত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, নির্বিচার গ্রেপ্তার, নির্যাতন এবং অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের মতো ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, আগস্টের প্রথম সপ্তাহে আন্দোলনের মধ্যে কিছু সহিংস গোষ্ঠী প্রতিশোধমূলক হামলা শুরু করে। ১৯ জুলাই উত্তরায় গাজীপুরের সাবেক মেয়রকে গণপিটুনি দেওয়া হয় এবং তাঁর এক সহযোগীকে হত্যা করা হয়। বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালানোর অভিযোগে এ ঘটনা ঘটে।

৪ আগস্ট থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ চরম আকার ধারণ করে। সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে আওয়ামী লীগের স্থানীয় কার্যালয় পুড়িয়ে দেওয়া হয়। সেখানে পাঁচজন আওয়ামী লীগ নেতা ও একজন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়। একই দিনে এনায়েতপুর স্টেশন আক্রমণের ঘটনায় ১৫ পুলিশ সদস্য নিহত হন।

গত ৫ আগস্ট ফেনীতে বিক্ষুব্ধ জনতা তিনটি থানায় অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালায় এবং ১৬ জন পুলিশ কর্মকর্তার ওপর আক্রমণ করে। এর আগের দিন ৪ আগস্ট একই জেলায় ৩০০-৪০০ জন আগ্নেয়াস্ত্র ও অন্যান্য অস্ত্র নিয়ে আওয়ামী লীগ সমর্থক ছাত্র-বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালায়। এতে ৮ জন বিক্ষোভকারী নিহত ও ৭৯ জন গুরুতর আহত হয়।

রংপুরে একজন আওয়ামী লীগ কাউন্সিলর ও তাঁর এক সহযোগীকে পিটিয়ে হত্যার পর লাশ রাস্তা দিয়ে টেনে নিয়ে যাওয়া হয়। নরসিংদীতে ৬ জন আওয়ামী লীগ কর্মীকে ধাওয়া করে হত্যা করা হয়, যারা বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালিয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।

৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করার পর দেশজুড়ে প্রতিশোধমূলক হামলা বেড়ে যায়। পুলিশের ৬৩৯টি স্টেশনের মধ্যে ৪৫০টি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

সাভার, সিলেট, যাত্রাবাড়ী, উত্তরা, আশুলিয়াসহ বিভিন্ন স্থানে থানা আক্রমণের ঘটনা ঘটে। উত্তেজিত জনতা যাত্রাবাড়ী থানায় পেট্রলবোমা দিয়ে হামলা করে। এতে দুজন র‍্যাব কর্মকর্তাসহ চারজন আনসার ও পুলিশ সদস্য নিহত হন। উত্তরা থানায় চার পুলিশ কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয় এবং আশুলিয়ায় তিনজন পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।

আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা

৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের ঘরবাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও অফিস লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। ঢাকার ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের একটি কার্যালয় আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। যাত্রাবাড়ীতে আওয়ামী লীগের কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। যশোরে একটি হোটেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়, যেখানে ২৪ জন নিহত হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের দেওয়া সাক্ষ্য অনুযায়ী, কিছু ক্ষেত্রে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর সমর্থকেরাও এসব সহিংসতায় জড়িত ছিল। বিএনপি প্রকাশ্যে স্বীকার করেছে, তাদের কিছু স্থানীয় নেতা-কর্মী, বিশেষ করে ছাত্র ও যুব সংগঠনের সদস্যরা প্রতিশোধমূলক সহিংসতায় অংশ নিয়েছিল। ১০ আগস্ট বিএনপি সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৪৪ জন স্থানীয় নেতা-কর্মীকে বহিষ্কার করে।

১৪ আগস্ট বিএনপি-সমর্থিত ব্যক্তির নেতৃত্বে একটি কারখানায় হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে, যেখানে শ্রমিকদের মারধর করে অর্থ আদায়ের অভিযোগ রয়েছে।

এক ঘটনায় বিএনপির সমর্থকেরা এক সিনিয়র যুবলীগ নেতার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে তাঁর বাবা-মাকে জিম্মি করে। এরপর স্থানীয় এক বিএনপির নেতা মুক্তিপণ আদায় করেন। পরে বিএনপির কর্মীরা ওই নেতার ব্যবসা দখল করে নেয়। এ ঘটনায় পুলিশের কাছে অভিযোগ করতে গেলে ভুক্তভোগীর পরিবারের এক সদস্যকে আক্রমণ করা হয়।

যশোরে এক আওয়ামী লীগ নেতার মালিকানাধীন একটি হোটেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এতে প্রায় ২৪ জন নিহত হয়। এ ছাড়া বিরোধীদলীয় সমর্থকেরা শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবনে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে লুটপাট ও পেট্রলবোমা হামলার ঘটনাও ঘটে।

গণমাধ্যমের ওপর হামলা ও সাংবাদিক নির্যাতন

আওয়ামী লীগের প্রতি পক্ষপাতদুষ্ট ও সাবেক সরকারের সমর্থক হিসেবে বিবেচিত সাংবাদিক ও গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপরও চালানো হয়। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করার কিছুক্ষণ পর সংক্ষুব্ধ জনতা একাধিক টেলিভিশন চ্যানেলে হামলা চালিয়ে তা পুড়িয়ে দেয় বা ভাঙচুর করে।

৩ আগস্ট একাত্তর টিভিতে লাঠিসোঁটা ও পাথর হাতে সশস্ত্র একদল লোক হামলা চালায়, যারা অন্যান্য বিক্ষোভকারীর চেয়ে আলাদা ছিল। ৫ আগস্ট কয়েক শ লোক একাত্তর টিভিতে আবারও হামলা ও ভবনে ঢুকে লুটপাট-অগ্নিসংযোগ করে।

সময় টিভিও আক্রমণের শিকার হয়। স্থানীয় বাসিন্দা ও আন্দোলনকারীদের সমন্বয়ে একদল লোক সেখানে হামলা চালিয়ে ভবনে আগুন দেয়। এটিএন নিউজ টিভিতে হামলাকারীরা দুই সাংবাদিক ও আরও দুই কর্মীর ওপর শারীরিকভাবে আক্রমণ করে, পাশাপাশি অফিস ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়।

৫ আগস্ট এটিএন বাংলা, ডিবিসি নিউজ, মাই টিভি, বিজয় টিভি ও গাজী টিভির দপ্তরেও হামলার ঘটনা ঘটে। ৭ আগস্ট প্রায় ২০০ জনের একটি দল আগ্নেয়াস্ত্রসহ বিএনপির স্লোগান দিতে দিতে মোহনা টিভির ভবনে জোরপূর্বক প্রবেশ করে। তারা একজন সিনিয়র সাংবাদিককে মারধর করে এবং ভবন ধ্বংস বা আগুন না লাগানোর শর্তে চাঁদা আদায় করে।

একাধিক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হত্যা ও অন্যান্য সহিংস অপরাধের অভিযোগে মামলা দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগপন্থী হিসেবে পরিচিত কয়েকজন বিশিষ্ট সাংবাদিককে এসব মামলার ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে এই মামলাগুলো সাজানো বলে উদ্বেগ রয়েছে।

অক্টোবরে অন্তর্বর্তী সরকার গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা পর্যবেক্ষণের জন্য একটি কমিটি গঠন করে। ২১ নভেম্বর এক গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা স্বীকার করেন, হত্যা মামলাগুলো ‘দ্রুতগতিতে, পুরোনো আইন ও প্রক্রিয়া অনুসরণ করে’ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সরকারের পাঠানো এক বিবৃতিতে জানানো হয়, আইনের আওতায় ভুক্তভোগীরাই সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন এবং এতে সরকারের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। সরকার আরও জানায়, তদন্ত সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হবে এবং প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করা হবে।

৫ আগস্টের পর থেকে সাংবাদিক ও নাগরিক সমাজের পর্যবেক্ষকদের মতে, উল্টো ধরনের ভয়ভীতি ছড়ানোর একটি পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এখন গণমাধ্যমকর্মীরা আওয়ামী লীগের পক্ষে কোনো সংবাদ প্রকাশ করতে বা বিরোধী দলের সমালোচনা করতে সতর্কতা অবলম্বন করছে।

নারীদের ওপর সহিংসতা

আগস্ট মাসে চট্টগ্রামে ছাত্রলীগ সদস্য এক নারীকে দুই ব্যক্তি আটকায়। বয়স ও পোশাক দেখে তাঁদের ছাত্রদের মতো মনে হয়নি। তাঁরা ওই নারীকে যৌন হয়রানিমূলক মন্তব্য করে, তাঁর পোশাক ধরে টান দেয়, গালে চড় মারে এবং বুকে ঘুষি মারে। কয়েক দিন পর ওই নারীর ওপর আরও ভয়াবহ হামলা হয়। একদল লোক তাঁকে ঘিরে ফেলে তাঁর পোশাক ছিঁড়ে ফেলে, শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে এবং শেষ পর্যন্ত তাকে ধর্ষণ করে। শুধু তা-ই নয়, রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে হাসপাতালে তাঁকে চিকিৎসাও দেওয়া হয়নি।

অন্য কয়েকটি ঘটনায় নারী আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ সমর্থকদের ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয়। এসব সরাসরি ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ওএইচসিএইচআর মনে করে, বাস্তবে লৈঙ্গিকভিত্তিক সহিংসতার ঘটনা আরও বেশি ঘটেছে, তবে সবকিছু নথিভুক্ত করা সম্ভব হয়নি। আন্দোলনের পর অনেক নারীনেত্রী ও পরিচিত কর্মী হুমকির মুখে পড়েন এবং প্রতিশোধমূলক হামলার ভয়ে মুখ ও চুল ঢেকে রাখতে বাধ্য হন।

আওয়ামী লীগের তথ্য অনুসারে, ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত ১৪৪ জন নেতা-কর্মী নিহত হন। ৫ আগস্ট এক দিনেই ৬৮ জন নিহত হন। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, এই সময়ের মধ্যে ৪৪ পুলিশ সদস্য নিহত হন এবং ২ হাজার ৩০৮ জন আহত হন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তারেক রহমানের আগমনে রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ হবে: প্রেস সচিব

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ফাইল ছবি
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ফাইল ছবি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আগমনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ হবে বলে মনে করছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। আজ বৃহস্পতিবার বড়দিন উপলক্ষে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের পবিত্র জপমালা রাণী গির্জায় খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে যান শফিকুল আলম। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

শফিকুল আলম বলেন, ‘আমরা তাঁকে (তারেক রহমান) স্বাগত জানাই। উনি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দলের নেতা এবং আমি বলব তাঁর বাংলাদেশে আসা খুবই একটা ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। বাংলাদেশে তো সত্যিকার অর্থে কিছু রাজনৈতিক শূন্যতা আছে। উনি আসলে সেটা পূরণ হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের সামনে আমাদের একটা বড় ইলেকশন, আমরা একটা ডেমোক্রেটিক ট্রানজিশনে (গণতান্ত্রিক উত্তরণে) আছি। আমরা আশা করছি, আমাদের এই ট্রানজিশনটা আরও স্মুথ হবে।’

তারেক রহমানের নিরাপত্তা নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে জবাবে শফিকুল আলম বলেন, ‘তাঁর নিরাপত্তা তো তাঁর পার্টি দেখছেন, তবে তাঁরা আমাদের কাছে যেই ধরনের সহযোগিতা চাচ্ছেন, আমরা সব সহযোগিতাই করছি।’

দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবন কাটানোর পর তারেক রহমানকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইটটি যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে সকাল ৯টা ৫৬ মিনিটে সিলেটে আসে। সিলেটে যাত্রাবিরতি শেষে ফ্লাইটটি বেলা ১১টা ৩৯ মিনিটে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সেখান থেকে তাঁর বাসটি সংবর্ধনাস্থলে আসে। কিছুক্ষণ আগে তিনি মঞ্চে অবস্থান নিয়ে তিনি বক্তব্য শুরু করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বড়দিনে বঙ্গভবনে শুভেচ্ছা বিনিময় করলেন রাষ্ট্রপতি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা

খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎস বড়দিনে খ্রিষ্টান ধর্মের বিশিষ্ট ব্যক্তি, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

আজ বৃহস্পতিবার বঙ্গভবনে তিনি এই শুভেচ্ছা বিনিময় করেন বলে বঙ্গভবনের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা

সেখানে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি দেশের খ্রিষ্টান সম্প্রদায়সহ বিশ্ববাসীর প্রতি বড় দিনের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও উষ্ণ অভিনন্দন জানান। জাতি, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে এ দেশের মানুষের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি চিরকাল অটুট ও অক্ষুণ্ন রাখার আহ্বান জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ফোনে কথা বললেন তারেক রহমান

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ১৭ বছর নির্বাসনে থাকার পর এখন দেশের মাটিতে। আজ বৃহস্পতিবার ১১টায় ৫৪ মিনিটে তিনি ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে ভেতরে প্রবেশ করেন। প্রথমেই তিনি বিএনপির মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে জড়িয়ে ধরেন। পরে স্থায়ী কমিটির অন্য সদস্যদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। তারেক রহমানের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।

এরপর তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ফোনে কুশল-বিনিয়ম করেন। নিরাপত্তা ও বিভিন্ন ধরনের সহায়তার জন্য এ সময় তিনি সরকারপ্রধানের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

কথোপকথনে তারেককে বলতে শোনা যায়, ‘জি জি...আমার জন্য আমার...জি জি...আপনার শরীর কেমন আছে?’

...

‘হ্যাঁ, দোয়া করবেন, দোয়া করবেন।’ ...

‘আমি আমার পক্ষ থেকে এবং আমার পরিবারের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আপনি আপনার পক্ষ থেকে বিভিন্ন রকম আয়োজন করেছেন, বিশেষ করে আমার নিরাপত্তার জন্য। অ্যান্ড উই আর থ্যাঙ্ক ইউ সো মাচ...থ্যাঙ্ক ইউ সো মাচ। সব রকম আয়োজনের জন্য।’

...

‘নিশ্চয়ই, নিশ্চয়ই। জি নিশ্চয়ই...ইনশাল্লাহ...ইনশাল্লাহ।’

ভিআইপি লাউঞ্জে তারেক রহমানকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। তারেক রহমানের সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী জুবাইদা রহমান ও মেয়ে জাইমা রহমান।

এরপরই তারেক রহমানের শাশুড়ি সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানু ফুলের মালা পরিয়ে জামাতাকে বরণ করেন নেন। নাতনি জাইমাকেও আদর করতে দেখা যায়। তারেক রহমান এ সময় তাঁর পাশে কিছু সময় বসে থাকেন। এরপর বেলা ১২টা ২০ মিনিটে তারেক রহমানে স্ত্রী ও তাঁর মেয়ে সাদা রঙের একটি জিপ গাড়িতে উঠে বসেন।

দলের অন্য নেতাদের সঙ্গে তারেক রহমান বেলা ১২টা মিনিটে ৩২ মিনিটে লাল সবুজ রঙে একটি বুলেটপ্রুফ বাসে উঠেন। ২ মিনিট পরে বাসটি বিমানবন্দর থেকে পূর্বাচলের ৩০০ ফিটের সংবর্ধনা মঞ্চের দিকে যেতে শুরু করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদি হত্যাকাণ্ড: ফয়সালের স্ত্রী, শ্যালক ও বান্ধবীর দোষ স্বীকার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
হাদি হত্যাকাণ্ড: ফয়সালের স্ত্রী, শ্যালক ও বান্ধবীর দোষ স্বীকার

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার মামলার প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদের স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়া, তাঁর বান্ধবী মারিয়া আক্তার লিমা ও তাঁর শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ সিপু দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন আদালত।

অন্যদিকে ঘটনাস্থল থেকে আলামত হিসেবে জব্দ করা ফায়ার কার্তুজ ও ফায়ার বুলেট সদৃশ বস্তুর ব্যালিস্টিক পরীক্ষা করে বিস্তারিত মতামত প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

গতকাল বুধবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনজন। একইদিনে তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনাস্থলে জব্দ করা কার্তুজ ও বুলেট পরীক্ষার নির্দেশ দেন আদালত।

ঢাকার মহানগর পিপি ওমর ফারুক ফারুকী এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনজনের জবানবন্দি

গতকাল বুধবার সামিয়া, মারিয়া ও সিপুকে আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত সংস্থা ডিবি। মামলার তদন্তকর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ফয়সাল আহমেদ তিনজনের স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করার আবেদন করেন। পরে আসামি মারিয়া ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কামাল উদ্দিনের আদালতে এবং সামিয়া ও সিপু ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আমিনুল ইসলাম জুনাঈদের আদালতে জবানবন্দি দেন। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।

জবানবন্দিতে তিনজন কী বলেছেন তা জানা যায়নি। তবে বিশ্বস্ত এক সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার আগে ও পরে ফয়সাল কি করেছে এবং কি বলেছে সে সম্পর্কে বর্ণনা দিয়েছেন তিনজন।

এর আগে, গত ১৫ ডিসেম্বর এই তিনজনকে ৫ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। পরে ২০ ডিসেম্বর তিনজনকে আবার দ্বিতীয় দফায় চার দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। গত ১৪ ডিসেম্বর সামিয়া ও সিপুকে নারায়ণগঞ্জ থেকে এবং মারিয়াকে ঢাকা থেকে আটক করে পল্টন থানায় হস্তান্তর করা হয়।

উল্লেখ্য, এ মামলায় গ্রেফতার ফয়সালের মা ও বাবাও স্বীকোরোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

কার্তুজ-বুলেট ব্যালিস্টিক পরীক্ষা

বুধবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আওলাদ হোসাইন মোহাম্মদ জুনায়েদ ঘটনাস্থলে জব্দ করা ফায়ার কার্তুজ ও বুলেট সদৃশ বস্তু পরীক্ষার নির্দেশ দেন।

আবেদনে বলা হয়, শরিফ ওসমান হাদি ওরফে ওসমান গণি (৩৩) গত ১২ ডিসেম্বর দুপুর আনুমানিক ২টা ২০ মিনিটের দিকে পল্টন থানাধীন বিজয়নগর বক্স কালভার্ট রোড সংলগ্ন ডিআর টাওয়ারের সামনে দুষ্কৃতিকারীদের দ্বারা গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরবর্তীতে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

তাঁর অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স যোগে গত ১৫ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরে নিয়ে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসারত অবস্থায় গত ১৮ ডিসেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃতদেহ বাংলাদেশ বিমান যোগে দেশে এনে ২০ ডিসেম্বর সকালে সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়।

মামলায় ঘটনাস্থল হতে ফায়ার কার্তুজ ও ফায়ার বুলেট সদৃশ বস্তু আলামত জব্দ করা হয়। মামলাটির সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আলামতসমূহ ব্যালিস্টিক পরীক্ষা করে বিস্তারিত মতামত প্রদান করার জন্য সিআইডির ব্যালিস্টিক শাখার বিশেষ পুলিশ সুপারকে নির্দেশ প্রদান করা একান্ত প্রয়োজন। শুনানি শেষে আদালত সিআইডিকে নির্দেশ দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত