জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সিদ্ধান্ত
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জাতীয় সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব কেমন হবে, তা নিয়ে অবশেষে একটি সিদ্ধান্তে এসেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। কমিশনের সিদ্ধান্তের বিষয়ে বলা হয়েছে, জাতীয় সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব ক্রমান্বয়ে ১০০ আসনে উন্নীত করা হবে। নারী আসন ১০০-তে উন্নীত করার পক্ষে রাজনৈতিক মতৈক্য হলেও বেশির ভাগ দল ১০০ আসনে নারীদের সরাসরি নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিপক্ষে। সংলাপে কিছু দল সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে এবং কিছু দল সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচনের পক্ষে মত দিয়েছে। এই অবস্থায় বিদ্যমান ৫০ সংরক্ষিত নারী আসন রাখার পাশাপাশি জুলাই সনদ স্বাক্ষরের পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনে প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে ৩০০ সংসদীয় আসনের মনোনয়নের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৫ শতাংশ নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে কমিশন। সেই সঙ্গে চতুর্দশ জাতীয় নির্বাচনের মনোনয়নের ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ আসনে নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
গতকাল ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে নারী আসন নিয়ে আলোচনার পর এসব সিদ্ধান্ত দেয় কমিশন। পরে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ও দায়িত্ব নিয়ে কমিশনের প্রস্তাবের ওপর আলোচনা হয়। এতে সিদ্ধান্ত হয়, ১২টি প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ ছাড়া দিতে পারবেন। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো—অ্যাটর্নি জেনারেল; জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ; তথ্য কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্য; বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান; আইন কমিশনের চেয়ারম্যান; বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর; বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্য; এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্য; বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশনস রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্য; সশস্ত্র বাহিনীসমূহের (সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী) প্রধান, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) মহাপরিচালক এবং জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দার (এনএসআই) মহাপরিচালক নিয়োগ।
নারী আসনে নিয়ে বারবার প্রস্তাব পরিবর্তন: সংসদে নারী আসন ১০০-তে উন্নীত করার পক্ষে রাজনৈতিক মতৈক্য হলেও বেশির ভাগ দল ১০০ আসনে নারীদের সরাসরি নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিপক্ষে। দলগুলোর অনাগ্রহের কারণে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন বেশ কয়েকবার প্রস্তাবে সংশোধনী আনলেও এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন প্রথমেই ১০০ আসনে নারীর সরাসরি ভোটের প্রস্তাব করেছিল। সংলাপে নারী আসনে নির্বাচনপদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভেদ দেখা দিলে ১৪ জুলাই নতুন প্রস্তাব হাজির করে কমিশন। ওই প্রস্তাবে বলা হয়, কমপক্ষে ২৫ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী রাজনৈতিক দলের মোট প্রার্থীর এক-তৃতীয়াংশ নারী হতে হবে। এ ক্ষেত্রে নারীদের জন্য পৃথকভাবে কোনো সংরক্ষিত আসন থাকবে না। কিন্তু বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে। পরের এক আলোচনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বিদ্যমান ৫০ সংরক্ষিত আসন বহাল রেখে ৫ শতাংশ আসনে সরাসরি নির্বাচনে নারীদের প্রার্থী করার প্রস্তাব দেন।
গতকাল বুধবার দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ২২তম দিনের আলোচনায় নতুন প্রস্তাব হাজির করে ঐকমত্য কমিশন। পরিবর্তিত প্রস্তাবে বলা হয়, জাতীয় সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব ক্রমে ১০০ আসনে উন্নীত করা হবে। সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৬৫-এর দফা (৩)-এ প্রয়োজনীয় সংশোধনীর মাধ্যমে বিদ্যমান সংরক্ষিত ৫০টি আসন বহাল রেখে প্রতিটি রাজনৈতিক দল ‘জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫’ স্বাক্ষরের পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনে ৭ শতাংশ আসনে নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেবে। পরের নির্বাচন, অর্থাৎ চতুর্দশ জাতীয় নির্বাচনে প্রতিটি রাজনৈতিক দল ১৫ শতাংশ আসনে সরাসরি নির্বাচনের জন্য নারী প্রার্থীকে মনোনয়ন দেবে। এভাবে প্রতি নির্বাচনে ৫ শতাংশ হারে বাড়িয়ে নারী প্রার্থী ১০০-তে উন্নীত করবে রাজনৈতিক দলগুলো। কিন্তু গতকাল পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলো এতেও রাজি হয়নি।
কমিশনসংশ্লিষ্ট একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমরা জুলাই আন্দোলনের চেতনা এবং নারীদের সঙ্গে বেইমানি করেছি। পুরুষতন্ত্রের কাছে নারীর সরাসরি নির্বাচনে অংশগ্রহণ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।’
গতকালের সংলাপে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ সংবিধানের ৬৫(৩) অনুচ্ছেদে সংশোধনের প্রস্তাব দেন, যেখানে তিনি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদের ৩০০টি আসনের মধ্যে প্রার্থী তালিকায় নারীদের জন্য ৫-৭ শতাংশ সংরক্ষণের কথা বলেন। তিনি প্রস্তাব করেন, চতুর্দশ সংসদ থেকে ধাপে ধাপে নারী প্রার্থী ১৫ শতাংশে উন্নীত হবে এবং এভাবেই শেষ পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলো ১০০ জন নারী প্রার্থী মনোনয়ন দিতে সক্ষম হবে। নিজের প্রস্তাবের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে সালাহউদ্দিন বলেন, বিএনপির পক্ষেও মোট প্রার্থীর ৫ শতাংশ নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়া একটি চ্যালেঞ্জ হবে এখন।
জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বিএনপির প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন এবং নারীদের অন্তর্ভুক্তির চেতনা সমুন্নত রেখে বিকল্প উপায়ে হলেও ১০০টি সংরক্ষিত আসন রাখার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, তাঁর দল সংরক্ষিত নারী আসন ৫০ থেকে ১০০-তে বৃদ্ধির পক্ষে।
অন্যদিকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন জাতীয় ঐকমত্য কমিটির প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন এবং ১০০টি নারী সংরক্ষিত আসনে সরাসরি নির্বাচনের পক্ষে নিজের দলের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি জুলাই চার্টারের খসড়া বাস্তবায়ন নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের তানিয়া রব এবং এনডিএমের মোমিনুল আমিন নারীদের মনোনয়ন-সংক্রান্ত বাধ্যবাধকতা কিছুটা শিথিল করার প্রস্তাব দেন, যাতে দলগুলো ৫-৭ শতাংশ নারী প্রার্থী মনোনয়নের ‘সুযোগ’ তৈরি করার অঙ্গীকার করে। অন্যদিকে জাসদের মুশতাক হোসেন গভীর হতাশা প্রকাশ করে বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো ধারাবাহিকভাবে গণপ্রতিনিধিত্ব আইন (আরপিও) অনুযায়ী নিজেদের সংগঠনে ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে।
সিপিবির রুহিন হোসেন প্রিন্স কমিশনের প্রস্তাবে হতাশা জানিয়ে ১০০টি সংরক্ষিত আসনে সরাসরি নির্বাচনের পক্ষে মত দেন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আশরাফ আলী আকন এই আসনগুলোয় ভোটভিত্তিক আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থার পক্ষে মত দেন। নাগরিক ঐক্যের সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব আনোয়ার প্রস্তাবিত ৫ শতাংশ সংরক্ষণ বাধ্যতামূলক করার সুপারিশ করেন। খেলাফত মজলিসের আহমদ আবদুল কাদের বলেন, ১০০টি সংরক্ষিত নারী আসনে ভোটভিত্তিক সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থা নিশ্চিত না হলে তাঁর দল প্রস্তাবে সই করবে না।
মুশতাক এই পরিমার্জিত প্রস্তাবের বিরোধিতা অব্যাহত রাখেন, আর গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি প্রস্তাবটি সমর্থন করেন, তবে ১৪তম জাতীয় সংসদ থেকে নারীদের ১৫ শতাংশ প্রতিনিধিত্ব বাধ্যতামূলক করার সুপারিশ জানান।
বিরতির পর আলী রীয়াজ জানান, সংসদে নারী প্রতিনিধির সংখ্যা ধাপে ধাপে ১০০ আসনে উন্নীত করার বিষয়টি কমিশনের নীতিগত অবস্থান। তিনি বলেন, কেউ পিআর চায়, কেউ চায় সরাসরি নির্বাচন—দুই ধরনের মতামতই সনদে উল্লেখ থাকবে।
আলী রীয়াজ রাজনৈতিক দলগুলোকে একটি সমঝোতার ভিত্তিতে আগামী নির্বাচনে কমপক্ষে ৫ শতাংশ নারী প্রার্থী মনোনয়নের জন্য উৎসাহিত করার আহ্বান জানান এবং বিদ্যমান ৫০টি সংরক্ষিত আসন রাখার পক্ষে মত দেন। প্রতি নির্বাচনে নারী প্রতিনিধিত্বে ৫ শতাংশ হারে বৃদ্ধির মাধ্যমে একসময় ৩০০টি সাধারণ আসনের মধ্যে ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার প্রস্তাব করেন।
আজ শেষ হচ্ছে সংলাপ
জুলাই সনদ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ শেষ হচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার। এদিনই গ্রহণযোগ্য খসড়া সনদ সব দলের কাছে তুলে দিতে চায় কমিশন। গতকাল পর্যন্ত সনদের খসড়া নিয়ে বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি দল কমিশনে তাদের মতামত জানিয়েছে। তবে জুলাই সনদের খসড়া এবং এর বাস্তবায়ন নিয়ে আপত্তি ও ভিন্নমত থাকায় এখন পর্যন্ত মতামত দেওয়া থেকে বিরত রয়েছে জামায়াতে ইসলামী, এনসিপিসহ আরও অনেক দল। এদিকে গতকালের সংলাপে প্রথম পর্বের আলোচনায় ঐকমত্যে উপনীত হওয়া ৬২টি বিষয়ও উপস্থাপন করে কমিশন।
গতকাল আলোচনা শুরুর আগে কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘ঐকমত্যের ভিত্তিতে যেসব বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে, তার একটি তালিকা রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পৌঁছে দেব। আশা করছি, আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) আমরা একটি সমন্বিত ও গ্রহণযোগ্য খসড়া সনদ সব দলের কাছে তুলে দিতে পারব।’
রাষ্ট্রের মূলনীতি, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনপদ্ধতি, সংসদে নারী প্রতিনিধিত্বসহ অমীমাংসিত বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গতকাল দ্বিতীয় ধাপের ২২তম দিনে বৈঠকে বসে কমিশন। বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে রাখা বিষয়গুলো ছিল—সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব; সরকারি কর্ম কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক এবং ন্যায়পাল নিয়োগের বিধান-সম্পর্কিত; রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ও দায়িত্ব [অনুচ্ছেদ ৪৮(৩)]; রাষ্ট্রপতি নির্বাচনপদ্ধতি, ইলেকটোরাল কলেজ ইত্যাদি; উচ্চকক্ষের গঠন, সদস্য নির্বাচনের পদ্ধতি, এখতিয়ার ইত্যাদি; নাগরিকের মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ-সম্পর্কিত প্রস্তাব এবং রাষ্ট্রের মূলনীতি।
এখন পর্যন্ত যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ পরিবর্তন, সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতিত্ব, নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমা-সম্পর্কিত বিধান, হাইকোর্টের বিকেন্দ্রীকরণ, পর্যায়ক্রমে উপজেলা পর্যায়ে নিম্ন আদালত স্থানান্তর, জরুরি অবস্থা জারি, প্রধান বিচারপতি নিয়োগ , ইসি গঠনের পদ্ধতি, প্রধানমন্ত্রীর একাধিক পদে থাকার বিধান।
এর আগে প্রথম পর্বের আলোচনায় যে ৬২ বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো—আইনসভা গঠন, জাতীয় সংসদে নারী আসনের বিধান, ডেপুটি স্পিকার পদে বিরোধী দল থেকে মনোনয়ন, রাষ্ট্রপতির অভিশংসন প্রক্রিয়া, সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারীদের স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের অধীনে ন্যস্ত করা, সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠা, স্বাধীন ও স্থায়ী জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন গঠন, কুমিল্লা ও ফরিদপুর নামে দুটি প্রশাসনিক বিভাগ গঠন, দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ধারা ৩২ক বিলুপ্ত করা।

জাতীয় সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব কেমন হবে, তা নিয়ে অবশেষে একটি সিদ্ধান্তে এসেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। কমিশনের সিদ্ধান্তের বিষয়ে বলা হয়েছে, জাতীয় সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব ক্রমান্বয়ে ১০০ আসনে উন্নীত করা হবে। নারী আসন ১০০-তে উন্নীত করার পক্ষে রাজনৈতিক মতৈক্য হলেও বেশির ভাগ দল ১০০ আসনে নারীদের সরাসরি নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিপক্ষে। সংলাপে কিছু দল সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে এবং কিছু দল সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচনের পক্ষে মত দিয়েছে। এই অবস্থায় বিদ্যমান ৫০ সংরক্ষিত নারী আসন রাখার পাশাপাশি জুলাই সনদ স্বাক্ষরের পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনে প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে ৩০০ সংসদীয় আসনের মনোনয়নের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৫ শতাংশ নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে কমিশন। সেই সঙ্গে চতুর্দশ জাতীয় নির্বাচনের মনোনয়নের ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ আসনে নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
গতকাল ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে নারী আসন নিয়ে আলোচনার পর এসব সিদ্ধান্ত দেয় কমিশন। পরে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ও দায়িত্ব নিয়ে কমিশনের প্রস্তাবের ওপর আলোচনা হয়। এতে সিদ্ধান্ত হয়, ১২টি প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ ছাড়া দিতে পারবেন। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো—অ্যাটর্নি জেনারেল; জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ; তথ্য কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্য; বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান; আইন কমিশনের চেয়ারম্যান; বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর; বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্য; এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্য; বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশনস রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্য; সশস্ত্র বাহিনীসমূহের (সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী) প্রধান, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) মহাপরিচালক এবং জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দার (এনএসআই) মহাপরিচালক নিয়োগ।
নারী আসনে নিয়ে বারবার প্রস্তাব পরিবর্তন: সংসদে নারী আসন ১০০-তে উন্নীত করার পক্ষে রাজনৈতিক মতৈক্য হলেও বেশির ভাগ দল ১০০ আসনে নারীদের সরাসরি নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিপক্ষে। দলগুলোর অনাগ্রহের কারণে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন বেশ কয়েকবার প্রস্তাবে সংশোধনী আনলেও এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন প্রথমেই ১০০ আসনে নারীর সরাসরি ভোটের প্রস্তাব করেছিল। সংলাপে নারী আসনে নির্বাচনপদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভেদ দেখা দিলে ১৪ জুলাই নতুন প্রস্তাব হাজির করে কমিশন। ওই প্রস্তাবে বলা হয়, কমপক্ষে ২৫ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী রাজনৈতিক দলের মোট প্রার্থীর এক-তৃতীয়াংশ নারী হতে হবে। এ ক্ষেত্রে নারীদের জন্য পৃথকভাবে কোনো সংরক্ষিত আসন থাকবে না। কিন্তু বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে। পরের এক আলোচনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বিদ্যমান ৫০ সংরক্ষিত আসন বহাল রেখে ৫ শতাংশ আসনে সরাসরি নির্বাচনে নারীদের প্রার্থী করার প্রস্তাব দেন।
গতকাল বুধবার দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ২২তম দিনের আলোচনায় নতুন প্রস্তাব হাজির করে ঐকমত্য কমিশন। পরিবর্তিত প্রস্তাবে বলা হয়, জাতীয় সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব ক্রমে ১০০ আসনে উন্নীত করা হবে। সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৬৫-এর দফা (৩)-এ প্রয়োজনীয় সংশোধনীর মাধ্যমে বিদ্যমান সংরক্ষিত ৫০টি আসন বহাল রেখে প্রতিটি রাজনৈতিক দল ‘জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫’ স্বাক্ষরের পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনে ৭ শতাংশ আসনে নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেবে। পরের নির্বাচন, অর্থাৎ চতুর্দশ জাতীয় নির্বাচনে প্রতিটি রাজনৈতিক দল ১৫ শতাংশ আসনে সরাসরি নির্বাচনের জন্য নারী প্রার্থীকে মনোনয়ন দেবে। এভাবে প্রতি নির্বাচনে ৫ শতাংশ হারে বাড়িয়ে নারী প্রার্থী ১০০-তে উন্নীত করবে রাজনৈতিক দলগুলো। কিন্তু গতকাল পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলো এতেও রাজি হয়নি।
কমিশনসংশ্লিষ্ট একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমরা জুলাই আন্দোলনের চেতনা এবং নারীদের সঙ্গে বেইমানি করেছি। পুরুষতন্ত্রের কাছে নারীর সরাসরি নির্বাচনে অংশগ্রহণ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।’
গতকালের সংলাপে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ সংবিধানের ৬৫(৩) অনুচ্ছেদে সংশোধনের প্রস্তাব দেন, যেখানে তিনি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদের ৩০০টি আসনের মধ্যে প্রার্থী তালিকায় নারীদের জন্য ৫-৭ শতাংশ সংরক্ষণের কথা বলেন। তিনি প্রস্তাব করেন, চতুর্দশ সংসদ থেকে ধাপে ধাপে নারী প্রার্থী ১৫ শতাংশে উন্নীত হবে এবং এভাবেই শেষ পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলো ১০০ জন নারী প্রার্থী মনোনয়ন দিতে সক্ষম হবে। নিজের প্রস্তাবের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে সালাহউদ্দিন বলেন, বিএনপির পক্ষেও মোট প্রার্থীর ৫ শতাংশ নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়া একটি চ্যালেঞ্জ হবে এখন।
জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বিএনপির প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন এবং নারীদের অন্তর্ভুক্তির চেতনা সমুন্নত রেখে বিকল্প উপায়ে হলেও ১০০টি সংরক্ষিত আসন রাখার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, তাঁর দল সংরক্ষিত নারী আসন ৫০ থেকে ১০০-তে বৃদ্ধির পক্ষে।
অন্যদিকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন জাতীয় ঐকমত্য কমিটির প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন এবং ১০০টি নারী সংরক্ষিত আসনে সরাসরি নির্বাচনের পক্ষে নিজের দলের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি জুলাই চার্টারের খসড়া বাস্তবায়ন নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের তানিয়া রব এবং এনডিএমের মোমিনুল আমিন নারীদের মনোনয়ন-সংক্রান্ত বাধ্যবাধকতা কিছুটা শিথিল করার প্রস্তাব দেন, যাতে দলগুলো ৫-৭ শতাংশ নারী প্রার্থী মনোনয়নের ‘সুযোগ’ তৈরি করার অঙ্গীকার করে। অন্যদিকে জাসদের মুশতাক হোসেন গভীর হতাশা প্রকাশ করে বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো ধারাবাহিকভাবে গণপ্রতিনিধিত্ব আইন (আরপিও) অনুযায়ী নিজেদের সংগঠনে ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে।
সিপিবির রুহিন হোসেন প্রিন্স কমিশনের প্রস্তাবে হতাশা জানিয়ে ১০০টি সংরক্ষিত আসনে সরাসরি নির্বাচনের পক্ষে মত দেন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আশরাফ আলী আকন এই আসনগুলোয় ভোটভিত্তিক আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থার পক্ষে মত দেন। নাগরিক ঐক্যের সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব আনোয়ার প্রস্তাবিত ৫ শতাংশ সংরক্ষণ বাধ্যতামূলক করার সুপারিশ করেন। খেলাফত মজলিসের আহমদ আবদুল কাদের বলেন, ১০০টি সংরক্ষিত নারী আসনে ভোটভিত্তিক সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থা নিশ্চিত না হলে তাঁর দল প্রস্তাবে সই করবে না।
মুশতাক এই পরিমার্জিত প্রস্তাবের বিরোধিতা অব্যাহত রাখেন, আর গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি প্রস্তাবটি সমর্থন করেন, তবে ১৪তম জাতীয় সংসদ থেকে নারীদের ১৫ শতাংশ প্রতিনিধিত্ব বাধ্যতামূলক করার সুপারিশ জানান।
বিরতির পর আলী রীয়াজ জানান, সংসদে নারী প্রতিনিধির সংখ্যা ধাপে ধাপে ১০০ আসনে উন্নীত করার বিষয়টি কমিশনের নীতিগত অবস্থান। তিনি বলেন, কেউ পিআর চায়, কেউ চায় সরাসরি নির্বাচন—দুই ধরনের মতামতই সনদে উল্লেখ থাকবে।
আলী রীয়াজ রাজনৈতিক দলগুলোকে একটি সমঝোতার ভিত্তিতে আগামী নির্বাচনে কমপক্ষে ৫ শতাংশ নারী প্রার্থী মনোনয়নের জন্য উৎসাহিত করার আহ্বান জানান এবং বিদ্যমান ৫০টি সংরক্ষিত আসন রাখার পক্ষে মত দেন। প্রতি নির্বাচনে নারী প্রতিনিধিত্বে ৫ শতাংশ হারে বৃদ্ধির মাধ্যমে একসময় ৩০০টি সাধারণ আসনের মধ্যে ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার প্রস্তাব করেন।
আজ শেষ হচ্ছে সংলাপ
জুলাই সনদ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ শেষ হচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার। এদিনই গ্রহণযোগ্য খসড়া সনদ সব দলের কাছে তুলে দিতে চায় কমিশন। গতকাল পর্যন্ত সনদের খসড়া নিয়ে বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি দল কমিশনে তাদের মতামত জানিয়েছে। তবে জুলাই সনদের খসড়া এবং এর বাস্তবায়ন নিয়ে আপত্তি ও ভিন্নমত থাকায় এখন পর্যন্ত মতামত দেওয়া থেকে বিরত রয়েছে জামায়াতে ইসলামী, এনসিপিসহ আরও অনেক দল। এদিকে গতকালের সংলাপে প্রথম পর্বের আলোচনায় ঐকমত্যে উপনীত হওয়া ৬২টি বিষয়ও উপস্থাপন করে কমিশন।
গতকাল আলোচনা শুরুর আগে কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘ঐকমত্যের ভিত্তিতে যেসব বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে, তার একটি তালিকা রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পৌঁছে দেব। আশা করছি, আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) আমরা একটি সমন্বিত ও গ্রহণযোগ্য খসড়া সনদ সব দলের কাছে তুলে দিতে পারব।’
রাষ্ট্রের মূলনীতি, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনপদ্ধতি, সংসদে নারী প্রতিনিধিত্বসহ অমীমাংসিত বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গতকাল দ্বিতীয় ধাপের ২২তম দিনে বৈঠকে বসে কমিশন। বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে রাখা বিষয়গুলো ছিল—সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব; সরকারি কর্ম কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক এবং ন্যায়পাল নিয়োগের বিধান-সম্পর্কিত; রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ও দায়িত্ব [অনুচ্ছেদ ৪৮(৩)]; রাষ্ট্রপতি নির্বাচনপদ্ধতি, ইলেকটোরাল কলেজ ইত্যাদি; উচ্চকক্ষের গঠন, সদস্য নির্বাচনের পদ্ধতি, এখতিয়ার ইত্যাদি; নাগরিকের মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ-সম্পর্কিত প্রস্তাব এবং রাষ্ট্রের মূলনীতি।
এখন পর্যন্ত যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ পরিবর্তন, সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতিত্ব, নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমা-সম্পর্কিত বিধান, হাইকোর্টের বিকেন্দ্রীকরণ, পর্যায়ক্রমে উপজেলা পর্যায়ে নিম্ন আদালত স্থানান্তর, জরুরি অবস্থা জারি, প্রধান বিচারপতি নিয়োগ , ইসি গঠনের পদ্ধতি, প্রধানমন্ত্রীর একাধিক পদে থাকার বিধান।
এর আগে প্রথম পর্বের আলোচনায় যে ৬২ বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো—আইনসভা গঠন, জাতীয় সংসদে নারী আসনের বিধান, ডেপুটি স্পিকার পদে বিরোধী দল থেকে মনোনয়ন, রাষ্ট্রপতির অভিশংসন প্রক্রিয়া, সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারীদের স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের অধীনে ন্যস্ত করা, সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠা, স্বাধীন ও স্থায়ী জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন গঠন, কুমিল্লা ও ফরিদপুর নামে দুটি প্রশাসনিক বিভাগ গঠন, দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ধারা ৩২ক বিলুপ্ত করা।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সিদ্ধান্ত
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জাতীয় সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব কেমন হবে, তা নিয়ে অবশেষে একটি সিদ্ধান্তে এসেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। কমিশনের সিদ্ধান্তের বিষয়ে বলা হয়েছে, জাতীয় সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব ক্রমান্বয়ে ১০০ আসনে উন্নীত করা হবে। নারী আসন ১০০-তে উন্নীত করার পক্ষে রাজনৈতিক মতৈক্য হলেও বেশির ভাগ দল ১০০ আসনে নারীদের সরাসরি নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিপক্ষে। সংলাপে কিছু দল সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে এবং কিছু দল সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচনের পক্ষে মত দিয়েছে। এই অবস্থায় বিদ্যমান ৫০ সংরক্ষিত নারী আসন রাখার পাশাপাশি জুলাই সনদ স্বাক্ষরের পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনে প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে ৩০০ সংসদীয় আসনের মনোনয়নের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৫ শতাংশ নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে কমিশন। সেই সঙ্গে চতুর্দশ জাতীয় নির্বাচনের মনোনয়নের ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ আসনে নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
গতকাল ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে নারী আসন নিয়ে আলোচনার পর এসব সিদ্ধান্ত দেয় কমিশন। পরে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ও দায়িত্ব নিয়ে কমিশনের প্রস্তাবের ওপর আলোচনা হয়। এতে সিদ্ধান্ত হয়, ১২টি প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ ছাড়া দিতে পারবেন। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো—অ্যাটর্নি জেনারেল; জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ; তথ্য কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্য; বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান; আইন কমিশনের চেয়ারম্যান; বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর; বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্য; এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্য; বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশনস রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্য; সশস্ত্র বাহিনীসমূহের (সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী) প্রধান, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) মহাপরিচালক এবং জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দার (এনএসআই) মহাপরিচালক নিয়োগ।
নারী আসনে নিয়ে বারবার প্রস্তাব পরিবর্তন: সংসদে নারী আসন ১০০-তে উন্নীত করার পক্ষে রাজনৈতিক মতৈক্য হলেও বেশির ভাগ দল ১০০ আসনে নারীদের সরাসরি নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিপক্ষে। দলগুলোর অনাগ্রহের কারণে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন বেশ কয়েকবার প্রস্তাবে সংশোধনী আনলেও এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন প্রথমেই ১০০ আসনে নারীর সরাসরি ভোটের প্রস্তাব করেছিল। সংলাপে নারী আসনে নির্বাচনপদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভেদ দেখা দিলে ১৪ জুলাই নতুন প্রস্তাব হাজির করে কমিশন। ওই প্রস্তাবে বলা হয়, কমপক্ষে ২৫ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী রাজনৈতিক দলের মোট প্রার্থীর এক-তৃতীয়াংশ নারী হতে হবে। এ ক্ষেত্রে নারীদের জন্য পৃথকভাবে কোনো সংরক্ষিত আসন থাকবে না। কিন্তু বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে। পরের এক আলোচনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বিদ্যমান ৫০ সংরক্ষিত আসন বহাল রেখে ৫ শতাংশ আসনে সরাসরি নির্বাচনে নারীদের প্রার্থী করার প্রস্তাব দেন।
গতকাল বুধবার দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ২২তম দিনের আলোচনায় নতুন প্রস্তাব হাজির করে ঐকমত্য কমিশন। পরিবর্তিত প্রস্তাবে বলা হয়, জাতীয় সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব ক্রমে ১০০ আসনে উন্নীত করা হবে। সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৬৫-এর দফা (৩)-এ প্রয়োজনীয় সংশোধনীর মাধ্যমে বিদ্যমান সংরক্ষিত ৫০টি আসন বহাল রেখে প্রতিটি রাজনৈতিক দল ‘জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫’ স্বাক্ষরের পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনে ৭ শতাংশ আসনে নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেবে। পরের নির্বাচন, অর্থাৎ চতুর্দশ জাতীয় নির্বাচনে প্রতিটি রাজনৈতিক দল ১৫ শতাংশ আসনে সরাসরি নির্বাচনের জন্য নারী প্রার্থীকে মনোনয়ন দেবে। এভাবে প্রতি নির্বাচনে ৫ শতাংশ হারে বাড়িয়ে নারী প্রার্থী ১০০-তে উন্নীত করবে রাজনৈতিক দলগুলো। কিন্তু গতকাল পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলো এতেও রাজি হয়নি।
কমিশনসংশ্লিষ্ট একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমরা জুলাই আন্দোলনের চেতনা এবং নারীদের সঙ্গে বেইমানি করেছি। পুরুষতন্ত্রের কাছে নারীর সরাসরি নির্বাচনে অংশগ্রহণ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।’
গতকালের সংলাপে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ সংবিধানের ৬৫(৩) অনুচ্ছেদে সংশোধনের প্রস্তাব দেন, যেখানে তিনি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদের ৩০০টি আসনের মধ্যে প্রার্থী তালিকায় নারীদের জন্য ৫-৭ শতাংশ সংরক্ষণের কথা বলেন। তিনি প্রস্তাব করেন, চতুর্দশ সংসদ থেকে ধাপে ধাপে নারী প্রার্থী ১৫ শতাংশে উন্নীত হবে এবং এভাবেই শেষ পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলো ১০০ জন নারী প্রার্থী মনোনয়ন দিতে সক্ষম হবে। নিজের প্রস্তাবের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে সালাহউদ্দিন বলেন, বিএনপির পক্ষেও মোট প্রার্থীর ৫ শতাংশ নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়া একটি চ্যালেঞ্জ হবে এখন।
জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বিএনপির প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন এবং নারীদের অন্তর্ভুক্তির চেতনা সমুন্নত রেখে বিকল্প উপায়ে হলেও ১০০টি সংরক্ষিত আসন রাখার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, তাঁর দল সংরক্ষিত নারী আসন ৫০ থেকে ১০০-তে বৃদ্ধির পক্ষে।
অন্যদিকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন জাতীয় ঐকমত্য কমিটির প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন এবং ১০০টি নারী সংরক্ষিত আসনে সরাসরি নির্বাচনের পক্ষে নিজের দলের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি জুলাই চার্টারের খসড়া বাস্তবায়ন নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের তানিয়া রব এবং এনডিএমের মোমিনুল আমিন নারীদের মনোনয়ন-সংক্রান্ত বাধ্যবাধকতা কিছুটা শিথিল করার প্রস্তাব দেন, যাতে দলগুলো ৫-৭ শতাংশ নারী প্রার্থী মনোনয়নের ‘সুযোগ’ তৈরি করার অঙ্গীকার করে। অন্যদিকে জাসদের মুশতাক হোসেন গভীর হতাশা প্রকাশ করে বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো ধারাবাহিকভাবে গণপ্রতিনিধিত্ব আইন (আরপিও) অনুযায়ী নিজেদের সংগঠনে ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে।
সিপিবির রুহিন হোসেন প্রিন্স কমিশনের প্রস্তাবে হতাশা জানিয়ে ১০০টি সংরক্ষিত আসনে সরাসরি নির্বাচনের পক্ষে মত দেন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আশরাফ আলী আকন এই আসনগুলোয় ভোটভিত্তিক আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থার পক্ষে মত দেন। নাগরিক ঐক্যের সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব আনোয়ার প্রস্তাবিত ৫ শতাংশ সংরক্ষণ বাধ্যতামূলক করার সুপারিশ করেন। খেলাফত মজলিসের আহমদ আবদুল কাদের বলেন, ১০০টি সংরক্ষিত নারী আসনে ভোটভিত্তিক সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থা নিশ্চিত না হলে তাঁর দল প্রস্তাবে সই করবে না।
মুশতাক এই পরিমার্জিত প্রস্তাবের বিরোধিতা অব্যাহত রাখেন, আর গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি প্রস্তাবটি সমর্থন করেন, তবে ১৪তম জাতীয় সংসদ থেকে নারীদের ১৫ শতাংশ প্রতিনিধিত্ব বাধ্যতামূলক করার সুপারিশ জানান।
বিরতির পর আলী রীয়াজ জানান, সংসদে নারী প্রতিনিধির সংখ্যা ধাপে ধাপে ১০০ আসনে উন্নীত করার বিষয়টি কমিশনের নীতিগত অবস্থান। তিনি বলেন, কেউ পিআর চায়, কেউ চায় সরাসরি নির্বাচন—দুই ধরনের মতামতই সনদে উল্লেখ থাকবে।
আলী রীয়াজ রাজনৈতিক দলগুলোকে একটি সমঝোতার ভিত্তিতে আগামী নির্বাচনে কমপক্ষে ৫ শতাংশ নারী প্রার্থী মনোনয়নের জন্য উৎসাহিত করার আহ্বান জানান এবং বিদ্যমান ৫০টি সংরক্ষিত আসন রাখার পক্ষে মত দেন। প্রতি নির্বাচনে নারী প্রতিনিধিত্বে ৫ শতাংশ হারে বৃদ্ধির মাধ্যমে একসময় ৩০০টি সাধারণ আসনের মধ্যে ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার প্রস্তাব করেন।
আজ শেষ হচ্ছে সংলাপ
জুলাই সনদ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ শেষ হচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার। এদিনই গ্রহণযোগ্য খসড়া সনদ সব দলের কাছে তুলে দিতে চায় কমিশন। গতকাল পর্যন্ত সনদের খসড়া নিয়ে বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি দল কমিশনে তাদের মতামত জানিয়েছে। তবে জুলাই সনদের খসড়া এবং এর বাস্তবায়ন নিয়ে আপত্তি ও ভিন্নমত থাকায় এখন পর্যন্ত মতামত দেওয়া থেকে বিরত রয়েছে জামায়াতে ইসলামী, এনসিপিসহ আরও অনেক দল। এদিকে গতকালের সংলাপে প্রথম পর্বের আলোচনায় ঐকমত্যে উপনীত হওয়া ৬২টি বিষয়ও উপস্থাপন করে কমিশন।
গতকাল আলোচনা শুরুর আগে কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘ঐকমত্যের ভিত্তিতে যেসব বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে, তার একটি তালিকা রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পৌঁছে দেব। আশা করছি, আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) আমরা একটি সমন্বিত ও গ্রহণযোগ্য খসড়া সনদ সব দলের কাছে তুলে দিতে পারব।’
রাষ্ট্রের মূলনীতি, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনপদ্ধতি, সংসদে নারী প্রতিনিধিত্বসহ অমীমাংসিত বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গতকাল দ্বিতীয় ধাপের ২২তম দিনে বৈঠকে বসে কমিশন। বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে রাখা বিষয়গুলো ছিল—সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব; সরকারি কর্ম কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক এবং ন্যায়পাল নিয়োগের বিধান-সম্পর্কিত; রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ও দায়িত্ব [অনুচ্ছেদ ৪৮(৩)]; রাষ্ট্রপতি নির্বাচনপদ্ধতি, ইলেকটোরাল কলেজ ইত্যাদি; উচ্চকক্ষের গঠন, সদস্য নির্বাচনের পদ্ধতি, এখতিয়ার ইত্যাদি; নাগরিকের মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ-সম্পর্কিত প্রস্তাব এবং রাষ্ট্রের মূলনীতি।
এখন পর্যন্ত যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ পরিবর্তন, সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতিত্ব, নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমা-সম্পর্কিত বিধান, হাইকোর্টের বিকেন্দ্রীকরণ, পর্যায়ক্রমে উপজেলা পর্যায়ে নিম্ন আদালত স্থানান্তর, জরুরি অবস্থা জারি, প্রধান বিচারপতি নিয়োগ , ইসি গঠনের পদ্ধতি, প্রধানমন্ত্রীর একাধিক পদে থাকার বিধান।
এর আগে প্রথম পর্বের আলোচনায় যে ৬২ বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো—আইনসভা গঠন, জাতীয় সংসদে নারী আসনের বিধান, ডেপুটি স্পিকার পদে বিরোধী দল থেকে মনোনয়ন, রাষ্ট্রপতির অভিশংসন প্রক্রিয়া, সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারীদের স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের অধীনে ন্যস্ত করা, সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠা, স্বাধীন ও স্থায়ী জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন গঠন, কুমিল্লা ও ফরিদপুর নামে দুটি প্রশাসনিক বিভাগ গঠন, দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ধারা ৩২ক বিলুপ্ত করা।

জাতীয় সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব কেমন হবে, তা নিয়ে অবশেষে একটি সিদ্ধান্তে এসেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। কমিশনের সিদ্ধান্তের বিষয়ে বলা হয়েছে, জাতীয় সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব ক্রমান্বয়ে ১০০ আসনে উন্নীত করা হবে। নারী আসন ১০০-তে উন্নীত করার পক্ষে রাজনৈতিক মতৈক্য হলেও বেশির ভাগ দল ১০০ আসনে নারীদের সরাসরি নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিপক্ষে। সংলাপে কিছু দল সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে এবং কিছু দল সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচনের পক্ষে মত দিয়েছে। এই অবস্থায় বিদ্যমান ৫০ সংরক্ষিত নারী আসন রাখার পাশাপাশি জুলাই সনদ স্বাক্ষরের পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনে প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে ৩০০ সংসদীয় আসনের মনোনয়নের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৫ শতাংশ নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে কমিশন। সেই সঙ্গে চতুর্দশ জাতীয় নির্বাচনের মনোনয়নের ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ আসনে নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
গতকাল ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে নারী আসন নিয়ে আলোচনার পর এসব সিদ্ধান্ত দেয় কমিশন। পরে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ও দায়িত্ব নিয়ে কমিশনের প্রস্তাবের ওপর আলোচনা হয়। এতে সিদ্ধান্ত হয়, ১২টি প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ ছাড়া দিতে পারবেন। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো—অ্যাটর্নি জেনারেল; জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ; তথ্য কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্য; বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান; আইন কমিশনের চেয়ারম্যান; বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর; বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্য; এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্য; বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশনস রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্য; সশস্ত্র বাহিনীসমূহের (সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী) প্রধান, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) মহাপরিচালক এবং জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দার (এনএসআই) মহাপরিচালক নিয়োগ।
নারী আসনে নিয়ে বারবার প্রস্তাব পরিবর্তন: সংসদে নারী আসন ১০০-তে উন্নীত করার পক্ষে রাজনৈতিক মতৈক্য হলেও বেশির ভাগ দল ১০০ আসনে নারীদের সরাসরি নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিপক্ষে। দলগুলোর অনাগ্রহের কারণে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন বেশ কয়েকবার প্রস্তাবে সংশোধনী আনলেও এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন প্রথমেই ১০০ আসনে নারীর সরাসরি ভোটের প্রস্তাব করেছিল। সংলাপে নারী আসনে নির্বাচনপদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভেদ দেখা দিলে ১৪ জুলাই নতুন প্রস্তাব হাজির করে কমিশন। ওই প্রস্তাবে বলা হয়, কমপক্ষে ২৫ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী রাজনৈতিক দলের মোট প্রার্থীর এক-তৃতীয়াংশ নারী হতে হবে। এ ক্ষেত্রে নারীদের জন্য পৃথকভাবে কোনো সংরক্ষিত আসন থাকবে না। কিন্তু বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে। পরের এক আলোচনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বিদ্যমান ৫০ সংরক্ষিত আসন বহাল রেখে ৫ শতাংশ আসনে সরাসরি নির্বাচনে নারীদের প্রার্থী করার প্রস্তাব দেন।
গতকাল বুধবার দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ২২তম দিনের আলোচনায় নতুন প্রস্তাব হাজির করে ঐকমত্য কমিশন। পরিবর্তিত প্রস্তাবে বলা হয়, জাতীয় সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব ক্রমে ১০০ আসনে উন্নীত করা হবে। সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৬৫-এর দফা (৩)-এ প্রয়োজনীয় সংশোধনীর মাধ্যমে বিদ্যমান সংরক্ষিত ৫০টি আসন বহাল রেখে প্রতিটি রাজনৈতিক দল ‘জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫’ স্বাক্ষরের পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনে ৭ শতাংশ আসনে নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেবে। পরের নির্বাচন, অর্থাৎ চতুর্দশ জাতীয় নির্বাচনে প্রতিটি রাজনৈতিক দল ১৫ শতাংশ আসনে সরাসরি নির্বাচনের জন্য নারী প্রার্থীকে মনোনয়ন দেবে। এভাবে প্রতি নির্বাচনে ৫ শতাংশ হারে বাড়িয়ে নারী প্রার্থী ১০০-তে উন্নীত করবে রাজনৈতিক দলগুলো। কিন্তু গতকাল পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলো এতেও রাজি হয়নি।
কমিশনসংশ্লিষ্ট একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমরা জুলাই আন্দোলনের চেতনা এবং নারীদের সঙ্গে বেইমানি করেছি। পুরুষতন্ত্রের কাছে নারীর সরাসরি নির্বাচনে অংশগ্রহণ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।’
গতকালের সংলাপে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ সংবিধানের ৬৫(৩) অনুচ্ছেদে সংশোধনের প্রস্তাব দেন, যেখানে তিনি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদের ৩০০টি আসনের মধ্যে প্রার্থী তালিকায় নারীদের জন্য ৫-৭ শতাংশ সংরক্ষণের কথা বলেন। তিনি প্রস্তাব করেন, চতুর্দশ সংসদ থেকে ধাপে ধাপে নারী প্রার্থী ১৫ শতাংশে উন্নীত হবে এবং এভাবেই শেষ পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলো ১০০ জন নারী প্রার্থী মনোনয়ন দিতে সক্ষম হবে। নিজের প্রস্তাবের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে সালাহউদ্দিন বলেন, বিএনপির পক্ষেও মোট প্রার্থীর ৫ শতাংশ নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়া একটি চ্যালেঞ্জ হবে এখন।
জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বিএনপির প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন এবং নারীদের অন্তর্ভুক্তির চেতনা সমুন্নত রেখে বিকল্প উপায়ে হলেও ১০০টি সংরক্ষিত আসন রাখার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, তাঁর দল সংরক্ষিত নারী আসন ৫০ থেকে ১০০-তে বৃদ্ধির পক্ষে।
অন্যদিকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন জাতীয় ঐকমত্য কমিটির প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন এবং ১০০টি নারী সংরক্ষিত আসনে সরাসরি নির্বাচনের পক্ষে নিজের দলের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি জুলাই চার্টারের খসড়া বাস্তবায়ন নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের তানিয়া রব এবং এনডিএমের মোমিনুল আমিন নারীদের মনোনয়ন-সংক্রান্ত বাধ্যবাধকতা কিছুটা শিথিল করার প্রস্তাব দেন, যাতে দলগুলো ৫-৭ শতাংশ নারী প্রার্থী মনোনয়নের ‘সুযোগ’ তৈরি করার অঙ্গীকার করে। অন্যদিকে জাসদের মুশতাক হোসেন গভীর হতাশা প্রকাশ করে বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো ধারাবাহিকভাবে গণপ্রতিনিধিত্ব আইন (আরপিও) অনুযায়ী নিজেদের সংগঠনে ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে।
সিপিবির রুহিন হোসেন প্রিন্স কমিশনের প্রস্তাবে হতাশা জানিয়ে ১০০টি সংরক্ষিত আসনে সরাসরি নির্বাচনের পক্ষে মত দেন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আশরাফ আলী আকন এই আসনগুলোয় ভোটভিত্তিক আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থার পক্ষে মত দেন। নাগরিক ঐক্যের সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব আনোয়ার প্রস্তাবিত ৫ শতাংশ সংরক্ষণ বাধ্যতামূলক করার সুপারিশ করেন। খেলাফত মজলিসের আহমদ আবদুল কাদের বলেন, ১০০টি সংরক্ষিত নারী আসনে ভোটভিত্তিক সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থা নিশ্চিত না হলে তাঁর দল প্রস্তাবে সই করবে না।
মুশতাক এই পরিমার্জিত প্রস্তাবের বিরোধিতা অব্যাহত রাখেন, আর গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি প্রস্তাবটি সমর্থন করেন, তবে ১৪তম জাতীয় সংসদ থেকে নারীদের ১৫ শতাংশ প্রতিনিধিত্ব বাধ্যতামূলক করার সুপারিশ জানান।
বিরতির পর আলী রীয়াজ জানান, সংসদে নারী প্রতিনিধির সংখ্যা ধাপে ধাপে ১০০ আসনে উন্নীত করার বিষয়টি কমিশনের নীতিগত অবস্থান। তিনি বলেন, কেউ পিআর চায়, কেউ চায় সরাসরি নির্বাচন—দুই ধরনের মতামতই সনদে উল্লেখ থাকবে।
আলী রীয়াজ রাজনৈতিক দলগুলোকে একটি সমঝোতার ভিত্তিতে আগামী নির্বাচনে কমপক্ষে ৫ শতাংশ নারী প্রার্থী মনোনয়নের জন্য উৎসাহিত করার আহ্বান জানান এবং বিদ্যমান ৫০টি সংরক্ষিত আসন রাখার পক্ষে মত দেন। প্রতি নির্বাচনে নারী প্রতিনিধিত্বে ৫ শতাংশ হারে বৃদ্ধির মাধ্যমে একসময় ৩০০টি সাধারণ আসনের মধ্যে ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার প্রস্তাব করেন।
আজ শেষ হচ্ছে সংলাপ
জুলাই সনদ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ শেষ হচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার। এদিনই গ্রহণযোগ্য খসড়া সনদ সব দলের কাছে তুলে দিতে চায় কমিশন। গতকাল পর্যন্ত সনদের খসড়া নিয়ে বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি দল কমিশনে তাদের মতামত জানিয়েছে। তবে জুলাই সনদের খসড়া এবং এর বাস্তবায়ন নিয়ে আপত্তি ও ভিন্নমত থাকায় এখন পর্যন্ত মতামত দেওয়া থেকে বিরত রয়েছে জামায়াতে ইসলামী, এনসিপিসহ আরও অনেক দল। এদিকে গতকালের সংলাপে প্রথম পর্বের আলোচনায় ঐকমত্যে উপনীত হওয়া ৬২টি বিষয়ও উপস্থাপন করে কমিশন।
গতকাল আলোচনা শুরুর আগে কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘ঐকমত্যের ভিত্তিতে যেসব বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে, তার একটি তালিকা রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পৌঁছে দেব। আশা করছি, আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) আমরা একটি সমন্বিত ও গ্রহণযোগ্য খসড়া সনদ সব দলের কাছে তুলে দিতে পারব।’
রাষ্ট্রের মূলনীতি, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনপদ্ধতি, সংসদে নারী প্রতিনিধিত্বসহ অমীমাংসিত বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গতকাল দ্বিতীয় ধাপের ২২তম দিনে বৈঠকে বসে কমিশন। বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে রাখা বিষয়গুলো ছিল—সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব; সরকারি কর্ম কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক এবং ন্যায়পাল নিয়োগের বিধান-সম্পর্কিত; রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ও দায়িত্ব [অনুচ্ছেদ ৪৮(৩)]; রাষ্ট্রপতি নির্বাচনপদ্ধতি, ইলেকটোরাল কলেজ ইত্যাদি; উচ্চকক্ষের গঠন, সদস্য নির্বাচনের পদ্ধতি, এখতিয়ার ইত্যাদি; নাগরিকের মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ-সম্পর্কিত প্রস্তাব এবং রাষ্ট্রের মূলনীতি।
এখন পর্যন্ত যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ পরিবর্তন, সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতিত্ব, নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমা-সম্পর্কিত বিধান, হাইকোর্টের বিকেন্দ্রীকরণ, পর্যায়ক্রমে উপজেলা পর্যায়ে নিম্ন আদালত স্থানান্তর, জরুরি অবস্থা জারি, প্রধান বিচারপতি নিয়োগ , ইসি গঠনের পদ্ধতি, প্রধানমন্ত্রীর একাধিক পদে থাকার বিধান।
এর আগে প্রথম পর্বের আলোচনায় যে ৬২ বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো—আইনসভা গঠন, জাতীয় সংসদে নারী আসনের বিধান, ডেপুটি স্পিকার পদে বিরোধী দল থেকে মনোনয়ন, রাষ্ট্রপতির অভিশংসন প্রক্রিয়া, সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারীদের স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের অধীনে ন্যস্ত করা, সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠা, স্বাধীন ও স্থায়ী জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন গঠন, কুমিল্লা ও ফরিদপুর নামে দুটি প্রশাসনিক বিভাগ গঠন, দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ধারা ৩২ক বিলুপ্ত করা।

জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের বিষয়ে ভোটারদের উদ্বুদ্ধ করতে নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর অংশ হিসেবে ১০টি ভোটের গাড়ি চালু করা হয়েছে। ভোটারদের সচেতন করার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় তথ্য দিতে ভোট পর্যন্ত দেশের সব জেলা-উপজেলায় ঘুরবে এসব গাড়ি। এ ছাড়া ভোটের গান প্রচারের পাশাপাশি উঠান বৈঠকও শুরু হয়েছে দেশব্যাপী
১৭ মিনিট আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আগ্রহী প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় শেষ হচ্ছে। আগামীকাল সোমবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে। আজ রোববার বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৩০০ আসন থেকে ৩ হাজার ১৪৪ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। আর জমা দিয়েছেন ১৬৬ জন।
৫ ঘণ্টা আগে
আগামী মঙ্গলবার সকাল ১০টায় সুপ্রিম কোর্ট অডিটরিয়ামে অভিভাষণ দেবেন তিনি। সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোছাইন আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
৫ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। এ সময় দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য খাতে
৬ ঘণ্টা আগেতানিম আহমেদ, ঢাকা

জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের বিষয়ে ভোটারদের উদ্বুদ্ধ করতে নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর অংশ হিসেবে ১০টি ভোটের গাড়ি চালু করা হয়েছে। ভোটারদের সচেতন করার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় তথ্য দিতে ভোট পর্যন্ত দেশের সব জেলা-উপজেলায় ঘুরবে এসব গাড়ি। এ ছাড়া ভোটের গান প্রচারের পাশাপাশি উঠান বৈঠকও শুরু হয়েছে দেশব্যাপী। এর ধারাবাহিকতায় ‘দেশের চাবি আপনার হাতে’ স্লোগান নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে লিফলেট বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
লিফলেটে ‘আপনি কি এমন বাংলাদেশ চান, যেখানে...’—এই জিজ্ঞাসার বিপরীতে ১১টি সংস্কারের কথা বলা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে, সরকারি দল ইচ্ছেমতো সংবিধান সংশোধন করতে পারবে না; সংবিধানের গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের ক্ষেত্রে গণভোটের বিধান চালু হবে; বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার এবং গুরুত্বপূর্ণ সংসদীয় কমিটিসমূহের সভাপতি নির্বাচিত হবে; কেউ ১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না; সংসদে নারীর প্রতিনিধিত্ব বাড়বে; ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠার জন্য পার্লামেন্টে একটি উচ্চকক্ষ গঠিত হবে; দেশের বিচারব্যবস্থা স্বাধীনভাবে কাজ করবে; আপনার মৌলিক অধিকারের সংখ্যা (যেমন অবাধে ইন্টারনেট সেবাপ্রাপ্তির অধিকার) বাড়বে; দণ্ডপ্রাপ্ত অপরাধীকে রাষ্ট্রপতি ইচ্ছেমতো ক্ষমা করতে পারবেন না; রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার মধ্যে ভারসাম্য থাকবে।
লিফলেটে বলা হয়েছে, ‘হ্যাঁ’ ভোট দিলে ওপরের সবকিছু পাবেন। ‘না’ ভোট দিলে কিছুই পাবেন না। মনে রাখবেন, পরিবর্তনের চাবি এবার আপনারই হাতে।
এ ছাড়া গণভোটের বিষয়ে প্রচারের জন্য প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের উদ্যোগে ‘গণভোট বিষয়ে জনসচেতনতামূলক প্রচার কার্যক্রম’ সেল খোলা হয়েছে। প্রচার কার্যক্রমের মুখ্য সমন্বয়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (উপদেষ্টা পদমর্যাদা) অধ্যাপক আলী রীয়াজকে। সেলের উদ্যোগে লোগো ও লিফলেট তৈরি করা হয়েছে, যা এরই মধ্যে চূড়ান্ত করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
জানা গেছে, লিফলেট দু-এক দিনের মধ্যে বিলি শুরু করবে সরকার। তারা পর্যায়ক্রমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার শুরু করবে। গণভোট নিয়ে দুটি ওয়েবসাইট খোলা হয়েছে। যেখানে গণভোটের বিষয়ে সব ধরনের তথ্য দেওয়া থাকবে।
প্রচারের মাধ্যমে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের কাছে পৌঁছানো সরকারের লক্ষ্য বলে জানান অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গণভোট একটি ঐতিহাসিক সুযোগ দেশের মানুষের জন্য। অতীতে যেভাবে গণভোট হয়েছে, তা থেকে এবার সম্পূর্ণ ভিন্ন। কারণ অতীতের গণভোটের ক্ষেত্রে দেখা গেছে গৃহীত সিদ্ধান্ত। যেমন দ্বাদশ সংশোধনীর ক্ষেত্রে। কিংবা এমন পরিস্থিতিতে হয়েছে, মানুষের পছন্দের জায়গা ছিল না। এই গণভোট হচ্ছে মানুষের পছন্দের সুযোগ। আশা করি, মানুষ সে সুযোগ ব্যবহার করবে।’
সংসদ নির্বাচন ও জুলাই জাতীয় সনদের বিষয়ে গণভোটের বিষয়ে সারা দেশে প্রচারের লক্ষ্যে ২২ ডিসেম্বর থেকে যাত্রা শুরু করেছে ১০টি ভোটের গাড়ি—সুপার ক্যারাভান। এসব গাড়ি দেশের ৬৪ জেলা ও ৩০০টি উপজেলায় ঘুরে বেড়াবে। তারা মানুষের দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে নির্বাচন ও গণভোট সম্পর্কে তথ্য পৌঁছে দেবে, ভোটাধিকার সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করবে এবং গণতন্ত্রের বার্তা ছড়িয়ে দেবে। সেখানে বিভিন্ন ভিডিও চিত্র দেখানো হবে।
নির্বাচন এবং গণভোট উপলক্ষে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ৩০টি ভিডিও তৈরি করা হবে। যেখানে আটটি বিভাগের জন্য আটটি গান তৈরি করা হয়েছে। গত বুধবার ঢাকা বিভাগের জন্য নির্মিত গান রিলিজ করা হয়। গেয়েছেন স্টোইক ব্লিসখ্যাত কাজী। পর্যায়ক্রমে বাকি সাতটি বিভাগের জন্য নির্মিত গানও রিলিজ করা হবে। গানের কথায় এক দিন দুই ভোট, সংসদ-গণভোট আওয়াজ ওঠায়, জবাবদিহি, সংস্কার, পরিবর্তন চাইলে গণভোট দেওয়ার কথা বলা আছে। গত সরকারের আমলের বিভিন্ন নেতিবাচক কর্মকাণ্ড গানে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। গানের কথায় সব জেলার নাম বলা হয়েছে। যেখানে দেশের মালিক জনগণকে ভোট দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। সর্বশেষ মানুষের উদ্দেশে বলা হয়, ‘আসুন দেশের মালিকানা বুঝে নিন।’
গণভোট নিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি, ধর্ম মন্ত্রণালয়সহ ১৯ মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে প্রচার কার্যক্রম করবে সরকার। এরই মধ্যে জেলা প্রশাসকদের নিয়ে সরকার বৈঠক করেছে। এ ছাড়া সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে তথ্যচিত্র, শর্ট ভিডিও। তথ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে জারি-সারি গান, অঞ্চলভিত্তিক গান তৈরি করা হয়েছে—যা হাট-বাজারে প্রচার করা হবে। তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে উপজেলা পর্যায়ে ফোকাল ব্যক্তি নির্ধারণের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারের জন্য একটি টিম তৈরি করা হচ্ছে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে প্রচার হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, এনজিও ব্যুরোর উদ্যোগেও প্রচার করা হবে।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মসজিদের ইমাম, মন্দিরের পুরোহিতসহ অন্যান্য সম্প্রদায়ের ধর্মগুরুদের নিয়ে বৈঠক করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। যেখানে ধর্মগুরুদের নিজ নিজ ধর্মীয় স্থানের গণভোটের বিষয়ে মানুষকে বার্তা দিতে বলা হবে। সেখানে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিলে কী সংস্কার হবে, ‘না’ ভোট দিলে কী হবে—তা বলতে বলা হবে।
এদিকে নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগেও গণভোটে নিয়ে প্রচার করা হবে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ‘গণভোটের প্রচার করার জন্য আমাদের অফিসগুলোকে ফেস্টুন দেব। এ ছাড়া লিফলেট বিলি করব। তবে মূল কাজ করছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। আমরা আমাদের ভোট ব্যবস্থাপনায় যেটুকু দরকার, সেটুকু করব।’
গণভোট ও জুলাই সনদের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোও প্রচার করবে বলে আশা সরকারের।

জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের বিষয়ে ভোটারদের উদ্বুদ্ধ করতে নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর অংশ হিসেবে ১০টি ভোটের গাড়ি চালু করা হয়েছে। ভোটারদের সচেতন করার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় তথ্য দিতে ভোট পর্যন্ত দেশের সব জেলা-উপজেলায় ঘুরবে এসব গাড়ি। এ ছাড়া ভোটের গান প্রচারের পাশাপাশি উঠান বৈঠকও শুরু হয়েছে দেশব্যাপী। এর ধারাবাহিকতায় ‘দেশের চাবি আপনার হাতে’ স্লোগান নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে লিফলেট বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
লিফলেটে ‘আপনি কি এমন বাংলাদেশ চান, যেখানে...’—এই জিজ্ঞাসার বিপরীতে ১১টি সংস্কারের কথা বলা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে, সরকারি দল ইচ্ছেমতো সংবিধান সংশোধন করতে পারবে না; সংবিধানের গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের ক্ষেত্রে গণভোটের বিধান চালু হবে; বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার এবং গুরুত্বপূর্ণ সংসদীয় কমিটিসমূহের সভাপতি নির্বাচিত হবে; কেউ ১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না; সংসদে নারীর প্রতিনিধিত্ব বাড়বে; ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠার জন্য পার্লামেন্টে একটি উচ্চকক্ষ গঠিত হবে; দেশের বিচারব্যবস্থা স্বাধীনভাবে কাজ করবে; আপনার মৌলিক অধিকারের সংখ্যা (যেমন অবাধে ইন্টারনেট সেবাপ্রাপ্তির অধিকার) বাড়বে; দণ্ডপ্রাপ্ত অপরাধীকে রাষ্ট্রপতি ইচ্ছেমতো ক্ষমা করতে পারবেন না; রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার মধ্যে ভারসাম্য থাকবে।
লিফলেটে বলা হয়েছে, ‘হ্যাঁ’ ভোট দিলে ওপরের সবকিছু পাবেন। ‘না’ ভোট দিলে কিছুই পাবেন না। মনে রাখবেন, পরিবর্তনের চাবি এবার আপনারই হাতে।
এ ছাড়া গণভোটের বিষয়ে প্রচারের জন্য প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের উদ্যোগে ‘গণভোট বিষয়ে জনসচেতনতামূলক প্রচার কার্যক্রম’ সেল খোলা হয়েছে। প্রচার কার্যক্রমের মুখ্য সমন্বয়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (উপদেষ্টা পদমর্যাদা) অধ্যাপক আলী রীয়াজকে। সেলের উদ্যোগে লোগো ও লিফলেট তৈরি করা হয়েছে, যা এরই মধ্যে চূড়ান্ত করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
জানা গেছে, লিফলেট দু-এক দিনের মধ্যে বিলি শুরু করবে সরকার। তারা পর্যায়ক্রমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার শুরু করবে। গণভোট নিয়ে দুটি ওয়েবসাইট খোলা হয়েছে। যেখানে গণভোটের বিষয়ে সব ধরনের তথ্য দেওয়া থাকবে।
প্রচারের মাধ্যমে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের কাছে পৌঁছানো সরকারের লক্ষ্য বলে জানান অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গণভোট একটি ঐতিহাসিক সুযোগ দেশের মানুষের জন্য। অতীতে যেভাবে গণভোট হয়েছে, তা থেকে এবার সম্পূর্ণ ভিন্ন। কারণ অতীতের গণভোটের ক্ষেত্রে দেখা গেছে গৃহীত সিদ্ধান্ত। যেমন দ্বাদশ সংশোধনীর ক্ষেত্রে। কিংবা এমন পরিস্থিতিতে হয়েছে, মানুষের পছন্দের জায়গা ছিল না। এই গণভোট হচ্ছে মানুষের পছন্দের সুযোগ। আশা করি, মানুষ সে সুযোগ ব্যবহার করবে।’
সংসদ নির্বাচন ও জুলাই জাতীয় সনদের বিষয়ে গণভোটের বিষয়ে সারা দেশে প্রচারের লক্ষ্যে ২২ ডিসেম্বর থেকে যাত্রা শুরু করেছে ১০টি ভোটের গাড়ি—সুপার ক্যারাভান। এসব গাড়ি দেশের ৬৪ জেলা ও ৩০০টি উপজেলায় ঘুরে বেড়াবে। তারা মানুষের দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে নির্বাচন ও গণভোট সম্পর্কে তথ্য পৌঁছে দেবে, ভোটাধিকার সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করবে এবং গণতন্ত্রের বার্তা ছড়িয়ে দেবে। সেখানে বিভিন্ন ভিডিও চিত্র দেখানো হবে।
নির্বাচন এবং গণভোট উপলক্ষে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ৩০টি ভিডিও তৈরি করা হবে। যেখানে আটটি বিভাগের জন্য আটটি গান তৈরি করা হয়েছে। গত বুধবার ঢাকা বিভাগের জন্য নির্মিত গান রিলিজ করা হয়। গেয়েছেন স্টোইক ব্লিসখ্যাত কাজী। পর্যায়ক্রমে বাকি সাতটি বিভাগের জন্য নির্মিত গানও রিলিজ করা হবে। গানের কথায় এক দিন দুই ভোট, সংসদ-গণভোট আওয়াজ ওঠায়, জবাবদিহি, সংস্কার, পরিবর্তন চাইলে গণভোট দেওয়ার কথা বলা আছে। গত সরকারের আমলের বিভিন্ন নেতিবাচক কর্মকাণ্ড গানে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। গানের কথায় সব জেলার নাম বলা হয়েছে। যেখানে দেশের মালিক জনগণকে ভোট দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। সর্বশেষ মানুষের উদ্দেশে বলা হয়, ‘আসুন দেশের মালিকানা বুঝে নিন।’
গণভোট নিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি, ধর্ম মন্ত্রণালয়সহ ১৯ মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে প্রচার কার্যক্রম করবে সরকার। এরই মধ্যে জেলা প্রশাসকদের নিয়ে সরকার বৈঠক করেছে। এ ছাড়া সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে তথ্যচিত্র, শর্ট ভিডিও। তথ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে জারি-সারি গান, অঞ্চলভিত্তিক গান তৈরি করা হয়েছে—যা হাট-বাজারে প্রচার করা হবে। তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে উপজেলা পর্যায়ে ফোকাল ব্যক্তি নির্ধারণের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারের জন্য একটি টিম তৈরি করা হচ্ছে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে প্রচার হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, এনজিও ব্যুরোর উদ্যোগেও প্রচার করা হবে।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মসজিদের ইমাম, মন্দিরের পুরোহিতসহ অন্যান্য সম্প্রদায়ের ধর্মগুরুদের নিয়ে বৈঠক করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। যেখানে ধর্মগুরুদের নিজ নিজ ধর্মীয় স্থানের গণভোটের বিষয়ে মানুষকে বার্তা দিতে বলা হবে। সেখানে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিলে কী সংস্কার হবে, ‘না’ ভোট দিলে কী হবে—তা বলতে বলা হবে।
এদিকে নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগেও গণভোটে নিয়ে প্রচার করা হবে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ‘গণভোটের প্রচার করার জন্য আমাদের অফিসগুলোকে ফেস্টুন দেব। এ ছাড়া লিফলেট বিলি করব। তবে মূল কাজ করছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। আমরা আমাদের ভোট ব্যবস্থাপনায় যেটুকু দরকার, সেটুকু করব।’
গণভোট ও জুলাই সনদের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোও প্রচার করবে বলে আশা সরকারের।

সংস্কারের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ ৩০টি দলের প্রতিনিধিরা এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। গতকাল ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে।
৩১ জুলাই ২০২৫
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আগ্রহী প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় শেষ হচ্ছে। আগামীকাল সোমবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে। আজ রোববার বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৩০০ আসন থেকে ৩ হাজার ১৪৪ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। আর জমা দিয়েছেন ১৬৬ জন।
৫ ঘণ্টা আগে
আগামী মঙ্গলবার সকাল ১০টায় সুপ্রিম কোর্ট অডিটরিয়ামে অভিভাষণ দেবেন তিনি। সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোছাইন আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
৫ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। এ সময় দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য খাতে
৬ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আগ্রহী প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় শেষ হচ্ছে। আগামীকাল সোমবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে। আজ রোববার বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৩০০ আসন থেকে ৩ হাজার ১৪৪ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। আর জমা দিয়েছেন ১৬৬ জন।
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জনসংযোগ পরিচালক মো. রুহুল আমিন মল্লিক এ তথ্য জানিয়েছেন।
এদিকে নির্বাচনী কার্যক্রমের এই গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, ভোটের কাজে কর্মকর্তা নিয়োগসহ বিভিন্ন বিষয়ে সরকারের বিভিন্ন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে ইসি।
এর আগে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারসহ বিভিন্ন পদক্ষেপের তাগিদ দিয়ে গতকাল শনিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ স্বাক্ষরিত পৃথক চিঠি দেওয়া হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিবকে পাঠানো চিঠিতে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোটের লক্ষ্যে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা বিধান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েনের পরিকল্পনা ও এ জন্য বাজেট প্রণয়ন, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড প্রস্তুত করা, ভুল তথ্য ও অপতথ্যের বিস্তার রোধ এবং বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকদের অনুমোদন ও নিরাপত্তা দেওয়াসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ বাস্তবায়নের তাগিদ দেওয়া হয়।
এদিকে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে পাঠানো এক চিঠিতে বলা হয়, নির্বাচন-সংক্রান্ত কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ, সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিত অফিস, প্রতিষ্ঠান এবং প্রয়োজনে বেসরকারি অফিস ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকেও প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ করতে হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিবকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, নির্বাচন উপলক্ষে আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং গণমাধ্যমের বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিক আসবেন। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকের বাংলাদেশে আগমন উপলক্ষে ভিসা প্রসেসিংসহ সব বিষয়ে সচিবের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করা হয়।
স্থানীয় সরকার বিভাগকে দেওয়া চিঠিতে বিগত সংসদ নির্বাচনে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দিষ্ট নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য যেভাবে নির্বাহী আদেশ জারি করা হয়েছিল, এবারও তা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় ও সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবদের কাছে সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের জন্য ব্যাপকভাবে প্রচার ও প্রচারণা চালানো ও জনসচেতনতা সৃষ্টি করার জন্য সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিবকে পাঠানো চিঠিতে পোস্টাল ভোটের বিষয়ে সহায়তা চাওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, ডাক বিভাগকে সমন্বয় ও গোপনীয়তা বজায় রেখে পোস্টাল ব্যালট দ্রুত ও নিরাপদে পৌঁছে দেওয়া এবং ফেরত আনার কাজ সুষ্ঠুভাবে করতে হবে।
এ ছাড়া আজ স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব ও শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীকে দেওয়া চিঠিতে ইসি জানায়, ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হবে এমন প্রতিষ্ঠানগুলো সংস্কার, কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপন, সংস্কার এবং কেন্দ্রে যাতায়াতের ভাঙা ও সংকীর্ণ রাস্তা মেরামতের প্রয়োজন হলে এ বিষয়ে ইসির সম্মতির প্রয়োজন হবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আগ্রহী প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় শেষ হচ্ছে। আগামীকাল সোমবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে। আজ রোববার বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৩০০ আসন থেকে ৩ হাজার ১৪৪ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। আর জমা দিয়েছেন ১৬৬ জন।
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জনসংযোগ পরিচালক মো. রুহুল আমিন মল্লিক এ তথ্য জানিয়েছেন।
এদিকে নির্বাচনী কার্যক্রমের এই গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, ভোটের কাজে কর্মকর্তা নিয়োগসহ বিভিন্ন বিষয়ে সরকারের বিভিন্ন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে ইসি।
এর আগে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারসহ বিভিন্ন পদক্ষেপের তাগিদ দিয়ে গতকাল শনিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ স্বাক্ষরিত পৃথক চিঠি দেওয়া হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিবকে পাঠানো চিঠিতে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোটের লক্ষ্যে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা বিধান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েনের পরিকল্পনা ও এ জন্য বাজেট প্রণয়ন, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড প্রস্তুত করা, ভুল তথ্য ও অপতথ্যের বিস্তার রোধ এবং বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকদের অনুমোদন ও নিরাপত্তা দেওয়াসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ বাস্তবায়নের তাগিদ দেওয়া হয়।
এদিকে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে পাঠানো এক চিঠিতে বলা হয়, নির্বাচন-সংক্রান্ত কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ, সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিত অফিস, প্রতিষ্ঠান এবং প্রয়োজনে বেসরকারি অফিস ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকেও প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ করতে হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিবকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, নির্বাচন উপলক্ষে আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং গণমাধ্যমের বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিক আসবেন। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকের বাংলাদেশে আগমন উপলক্ষে ভিসা প্রসেসিংসহ সব বিষয়ে সচিবের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করা হয়।
স্থানীয় সরকার বিভাগকে দেওয়া চিঠিতে বিগত সংসদ নির্বাচনে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দিষ্ট নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য যেভাবে নির্বাহী আদেশ জারি করা হয়েছিল, এবারও তা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় ও সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবদের কাছে সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের জন্য ব্যাপকভাবে প্রচার ও প্রচারণা চালানো ও জনসচেতনতা সৃষ্টি করার জন্য সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিবকে পাঠানো চিঠিতে পোস্টাল ভোটের বিষয়ে সহায়তা চাওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, ডাক বিভাগকে সমন্বয় ও গোপনীয়তা বজায় রেখে পোস্টাল ব্যালট দ্রুত ও নিরাপদে পৌঁছে দেওয়া এবং ফেরত আনার কাজ সুষ্ঠুভাবে করতে হবে।
এ ছাড়া আজ স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব ও শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীকে দেওয়া চিঠিতে ইসি জানায়, ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হবে এমন প্রতিষ্ঠানগুলো সংস্কার, কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপন, সংস্কার এবং কেন্দ্রে যাতায়াতের ভাঙা ও সংকীর্ণ রাস্তা মেরামতের প্রয়োজন হলে এ বিষয়ে ইসির সম্মতির প্রয়োজন হবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সংস্কারের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ ৩০টি দলের প্রতিনিধিরা এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। গতকাল ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে।
৩১ জুলাই ২০২৫
জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের বিষয়ে ভোটারদের উদ্বুদ্ধ করতে নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর অংশ হিসেবে ১০টি ভোটের গাড়ি চালু করা হয়েছে। ভোটারদের সচেতন করার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় তথ্য দিতে ভোট পর্যন্ত দেশের সব জেলা-উপজেলায় ঘুরবে এসব গাড়ি। এ ছাড়া ভোটের গান প্রচারের পাশাপাশি উঠান বৈঠকও শুরু হয়েছে দেশব্যাপী
১৭ মিনিট আগে
আগামী মঙ্গলবার সকাল ১০টায় সুপ্রিম কোর্ট অডিটরিয়ামে অভিভাষণ দেবেন তিনি। সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোছাইন আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
৫ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। এ সময় দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য খাতে
৬ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সারা দেশে কর্মরত জেলা ও দায়রা জজ, মহানগর দায়রা জজ, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটদের উদ্দেশে অভিভাষণ দেবেন প্রধান বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী।
আগামী মঙ্গলবার সকাল ১০টায় সুপ্রিম কোর্ট অডিটরিয়ামে এই অভিভাষণ দেবেন তিনি। সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোছাইন আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে আজ রোববার আইন মন্ত্রণালয়ের এক স্মারকে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শে ৩০ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় সুপ্রিম কোর্ট অডিটরিয়ামে আয়োজিত প্রধান বিচারপতির অভিভাষণ দেওয়া অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য দেশের সব জেলার জেলা ও দায়রা জজ, মহানগর দায়রা জজ, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
এর আগে আজ সকালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী দেশের ২৬তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন। বঙ্গভবনের দরবার হলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তাঁকে শপথবাক্য পড়ান।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

সারা দেশে কর্মরত জেলা ও দায়রা জজ, মহানগর দায়রা জজ, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটদের উদ্দেশে অভিভাষণ দেবেন প্রধান বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী।
আগামী মঙ্গলবার সকাল ১০টায় সুপ্রিম কোর্ট অডিটরিয়ামে এই অভিভাষণ দেবেন তিনি। সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোছাইন আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে আজ রোববার আইন মন্ত্রণালয়ের এক স্মারকে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শে ৩০ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় সুপ্রিম কোর্ট অডিটরিয়ামে আয়োজিত প্রধান বিচারপতির অভিভাষণ দেওয়া অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য দেশের সব জেলার জেলা ও দায়রা জজ, মহানগর দায়রা জজ, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
এর আগে আজ সকালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী দেশের ২৬তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন। বঙ্গভবনের দরবার হলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তাঁকে শপথবাক্য পড়ান।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

সংস্কারের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ ৩০টি দলের প্রতিনিধিরা এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। গতকাল ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে।
৩১ জুলাই ২০২৫
জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের বিষয়ে ভোটারদের উদ্বুদ্ধ করতে নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর অংশ হিসেবে ১০টি ভোটের গাড়ি চালু করা হয়েছে। ভোটারদের সচেতন করার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় তথ্য দিতে ভোট পর্যন্ত দেশের সব জেলা-উপজেলায় ঘুরবে এসব গাড়ি। এ ছাড়া ভোটের গান প্রচারের পাশাপাশি উঠান বৈঠকও শুরু হয়েছে দেশব্যাপী
১৭ মিনিট আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আগ্রহী প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় শেষ হচ্ছে। আগামীকাল সোমবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে। আজ রোববার বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৩০০ আসন থেকে ৩ হাজার ১৪৪ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। আর জমা দিয়েছেন ১৬৬ জন।
৫ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। এ সময় দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য খাতে
৬ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। এ সময় দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার জানান, গত বছরের তুলনায় বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য প্রায় ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। দুই দেশের ব্যবসায়ী সমাজ নতুন নতুন খাতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা নিয়ে কাজ করছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ২০২৬ সালের জানুয়ারি মাস থেকেই ঢাকা-করাচি সরাসরি বিমান চলাচল শুরু হতে পারে।
পাকিস্তানি হাইকমিশনার জানান, বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাকিস্তানে উচ্চশিক্ষার প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। বিশেষ করে চিকিৎসাবিজ্ঞান, ন্যানো টেকনোলজি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নিয়ে পড়ার বিষয়ে অনেক শিক্ষার্থী আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
লিভার ও কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্টের জন্য বাংলাদেশি রোগীদের পাকিস্তানে যাওয়ার হার বাড়ছে উল্লেখ করে ইমরান হায়দার বলেন, পাকিস্তান এ-সংক্রান্ত বিশেষায়িত চিকিৎসাক্ষেত্রে বাংলাদেশের চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা প্রদানের সুযোগ দিতে প্রস্তুত।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান যোগাযোগকে স্বাগত জানান। তিনি সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সাংস্কৃতিক, শিক্ষামূলক এবং সরাসরি জনযোগাযোগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন। পাশাপাশি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য আরও সম্প্রসারণের জন্য নতুন নতুন ক্ষেত্র খুঁজে বের করার পরামর্শ দেন প্রধান উপদেষ্টা।
হাইকমিশনার ইমরান হায়দারের দায়িত্ব পালনকালে দুই দেশের মধ্যে যৌথ বিনিয়োগের নতুন দুয়ার উন্মোচিত হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রধান উপদেষ্টা।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-বিষয়ক (এসডিজি) সমন্বয়কারী ও সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। এ সময় দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার জানান, গত বছরের তুলনায় বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য প্রায় ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। দুই দেশের ব্যবসায়ী সমাজ নতুন নতুন খাতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা নিয়ে কাজ করছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ২০২৬ সালের জানুয়ারি মাস থেকেই ঢাকা-করাচি সরাসরি বিমান চলাচল শুরু হতে পারে।
পাকিস্তানি হাইকমিশনার জানান, বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাকিস্তানে উচ্চশিক্ষার প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। বিশেষ করে চিকিৎসাবিজ্ঞান, ন্যানো টেকনোলজি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নিয়ে পড়ার বিষয়ে অনেক শিক্ষার্থী আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
লিভার ও কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্টের জন্য বাংলাদেশি রোগীদের পাকিস্তানে যাওয়ার হার বাড়ছে উল্লেখ করে ইমরান হায়দার বলেন, পাকিস্তান এ-সংক্রান্ত বিশেষায়িত চিকিৎসাক্ষেত্রে বাংলাদেশের চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা প্রদানের সুযোগ দিতে প্রস্তুত।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান যোগাযোগকে স্বাগত জানান। তিনি সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সাংস্কৃতিক, শিক্ষামূলক এবং সরাসরি জনযোগাযোগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন। পাশাপাশি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য আরও সম্প্রসারণের জন্য নতুন নতুন ক্ষেত্র খুঁজে বের করার পরামর্শ দেন প্রধান উপদেষ্টা।
হাইকমিশনার ইমরান হায়দারের দায়িত্ব পালনকালে দুই দেশের মধ্যে যৌথ বিনিয়োগের নতুন দুয়ার উন্মোচিত হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রধান উপদেষ্টা।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-বিষয়ক (এসডিজি) সমন্বয়কারী ও সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।

সংস্কারের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ ৩০টি দলের প্রতিনিধিরা এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। গতকাল ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে।
৩১ জুলাই ২০২৫
জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের বিষয়ে ভোটারদের উদ্বুদ্ধ করতে নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর অংশ হিসেবে ১০টি ভোটের গাড়ি চালু করা হয়েছে। ভোটারদের সচেতন করার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় তথ্য দিতে ভোট পর্যন্ত দেশের সব জেলা-উপজেলায় ঘুরবে এসব গাড়ি। এ ছাড়া ভোটের গান প্রচারের পাশাপাশি উঠান বৈঠকও শুরু হয়েছে দেশব্যাপী
১৭ মিনিট আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আগ্রহী প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় শেষ হচ্ছে। আগামীকাল সোমবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে। আজ রোববার বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৩০০ আসন থেকে ৩ হাজার ১৪৪ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। আর জমা দিয়েছেন ১৬৬ জন।
৫ ঘণ্টা আগে
আগামী মঙ্গলবার সকাল ১০টায় সুপ্রিম কোর্ট অডিটরিয়ামে অভিভাষণ দেবেন তিনি। সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোছাইন আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
৫ ঘণ্টা আগে