Ajker Patrika

উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগে স্বতন্ত্র কাউন্সিল, পৃথক সচিবালয়ের উদ্যোগ

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা ­­
আপডেট : ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ২১: ১৭
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগে স্বতন্ত্র কাউন্সিল গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আজ মঙ্গলবার একটি গেজেট প্রকাশিত হয়েছে। একই সঙ্গে পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় এবং স্থায়ী অ্যাটর্নি সার্ভিস চালুর উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। আজ বিকেলে সচিবালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন।

স্বতন্ত্র কাউন্সিলের মাধ্যমে বিচারক নিয়োগ

‘সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ, ২০২৫’ অনুযায়ী, উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগ প্রক্রিয়া এখন থেকে স্বতন্ত্র কাউন্সিলের অধীনে হবে। ‘সুপ্রিম জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল’ নামে একটি ছয় সদস্যের কমিটি গঠন করা হবে। এতে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে থাকবেন আপিল বিভাগের একজন কর্মরত ও একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারক, হাইকোর্ট বিভাগের দুজন বিচারক এবং অ্যাটর্নি জেনারেল।

কাউন্সিলের কার্যক্রম
১.
কাউন্সিল নিজ উদ্যোগে সম্ভাব্য বিচারক প্রার্থীদের তালিকা তৈরি করবে।

২. সাধারণ নাগরিক বা আইনজীবীরাও কাউকে প্রস্তাব করতে বা নিজেই আবেদন করতে পারবেন।

৩. প্রাথমিক যাচাই–বাছাই শেষে প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হবে।

অধ্যাদেশ অনুযায়ী, প্রধান বিচারপতি সুপ্রিম জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিলের চেয়ারপারসন হবেন। আপিল বিভাগে কর্মরত বিচারকদের মধ্য থেকে প্রবীণতম বিচারক, হাইকোর্ট বিভাগে (বিচার কর্মবিভাগ থেকে নিযুক্ত ব্যতীত) কর্মরত বিচারকদের মধ্য থেকে প্রবীণতম বিচারক, বিচার-কর্মবিভাগ থেকে নিযুক্ত হাইকোর্ট বিভাগের কর্মে প্রবীণতম বিচারক, চেয়ারপার্সন মনোনীত আপিল বিভাগের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারক, অ্যাটর্নি-জেনারেল এবং চেয়ারপার্সন মনোনীত একজন আইনের অধ্যাপক বা আইন-বিশেষজ্ঞকে কাউন্সিলে রাখা হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল পদাধিকারবলে কাউন্সিলের সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন। তিনি ও তার দপ্তর কাউন্সিলের কার্য-সম্পাদনে প্রয়োজনীয় সাচিবিক সহায়তা দেবে।

অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের কোনো অতিরিক্ত বিচারকের পদে নিযুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায়র দুই মাস আগে কাউন্সিলের সভা আহ্বান করতে হবে।

কাউন্সিল প্রয়োজনীয় সংখ্যক উপযুক্ত ব্যক্তিকে বাছাই করে বিচারক পদে নিয়োগের জন্য রাষ্ট্রপতিকে সুপারিশ করবে। এ জন্য প্রার্থীর বয়স কোনোভাবেই ৪৫ বছরের কম হওয়া যাবে না।

অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, প্রধান বিচারপতির পরামর্শ পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে রাষ্ট্রপতি সুপারিশকৃত ব্যক্তিদের মধ্য থেকে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক পদে নিয়োগ দেবেন বা ক্ষেত্রমতে প্রধান বিচারপতির পরামর্শ কার্যকর করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

কোনো কারণে রাষ্ট্রপতি প্রধান বিচারপতির পরামর্শের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করলে তিনি সংশ্লিষ্ট তথ্য এবং কারণ উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠাতে পারবেন। রাষ্ট্রপতি কোনো বিষয়ে পুনরীক্ষণের অনুরোধ করলে প্রধান বিচারপতি তা যত দ্রুত সম্ভব কাউন্সিলে উপস্থাপন করবেন। পরে কাউন্সিল সংশোধিত আকারে সুপারিশ করতে পারবে। এ ছাড়া যথাযথ তথ্য ও কারণ উল্লেখ করে এর আগে পাঠানো সুপারিশ কোনো সংশোধন না করেই কাউন্সিল পুনরায় গ্রহণ করতে পারবে। এরপর প্রধান বিচারপতি তা রাষ্ট্রপতিকে জানাবেন। এই সুপারিশ পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে রাষ্ট্রপতি সুপারিশ কার্যকর করার ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

কাউন্সিল সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত গ্রহণের চেষ্টা করবে জানিয়ে অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া সম্ভব না হলে কাউন্সিলের সভায় উপস্থিত সদস্যদের সংখ্যাগরিষ্ঠের সিদ্ধান্ত কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত হিসাবে গণ্য হবে। তবে সিদ্ধান্তের সমতার ক্ষেত্রে চেয়ারপার্সন বা ক্ষেত্রবিশেষে, সভায় সভাপতিত্বকারী ব্যক্তি, নির্ণায়ক সিদ্ধান্ত দিতে পারবেন।

অধ্যাপক আসিফ নজরুল জানান, এ পদ্ধতিতে যোগ্য, দক্ষ এবং নিরপেক্ষ ব্যক্তিরা বিচারক হিসেবে নিয়োগ পাবেন বলে আশা করা হচ্ছে। অতীতে দলীয় বিবেচনায় ও অদক্ষ ব্যক্তিদের নিয়োগের অভিযোগ থাকলেও নতুন এই প্রক্রিয়া এ ধরনের অনিয়ম দূর করবে বলে মনে করেন তিনি।

পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয়ের উদ্যোগ
সুপ্রিম কোর্টের পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগের কথাও জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটি একটি জাতীয় ঐকমত্যে পরিণত হয়েছে। সমাজে এটির দীর্ঘদিনের দাবি রয়েছে। খুঁটিনাটি পরীক্ষা–নিরীক্ষার জন্য কিছুটা সময় লাগছে। তবে এটি বাস্তবায়নের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে।’

প্রসঙ্গত, মাসদার হোসেন মামলার রায়ের আলোকে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের কথাও উল্লেখ রয়েছে।

স্থায়ী অ্যাটর্নি সার্ভিস চালুর উদ্যোগ
সরকারি কৌঁসুলিদের ভূমিকা আরও নিরপেক্ষ ও দক্ষ করতে ‘স্থায়ী অ্যাটর্নি সার্ভিস চালু’ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, ‘বর্তমানে দলীয়ভাবে নিয়োগ পাওয়ায় অনেক কৌঁসুলি নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হন। এটি দূর করার জন্য একটি স্থায়ী অ্যাটর্নি সার্ভিস চালু করা হবে।’

আইন উপদেষ্টা আশা প্রকাশ করেন, এক মাসের মধ্যেই এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন সম্পন্ন হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আইন উপদেষ্টা আরও জানান, আইন মন্ত্রণালয়ের সেবা ডিজিটালাইজেশনের অংশ হিসেবে গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে ৩৬ ধরনের কাগজপত্র অনলাইনে সত্যায়নের কার্যক্রম চালু হয়েছে। এই উদ্যোগ জনগণের হয়রানি কমাতে এবং সেবার গতি বাড়াতে সহায়ক হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, ‘উচ্চ আদালতে যোগ্য বিচারক নিয়োগ না হলে দেশের ১৭ কোটি মানুষের মানবাধিকার প্রশ্নবিদ্ধ থেকে যায়। এই নতুন আইন স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক প্রক্রিয়া নিশ্চিত করবে, যা দীর্ঘদিনের চাহিদা।’

এই উদ্যোগগুলো দেশের বিচার ব্যবস্থায় গুণগত পরিবর্তন আনবে এবং জনগণের ন্যায়বিচার প্রাপ্তির অধিকার আরও সুসংহত করবে বলে আশা করছেন আইন উপদেষ্টা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়াকে শ্রদ্ধা জানাতে আসবেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮: ৪৪
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ছবি: সংগৃহীত
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজায় যোগ দিতে ঢাকায় আসছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। আজ মঙ্গলবার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আগামীকাল বুধবার ঢাকায় খালেদা জিয়ার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, জানাজায় দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একাধিক দেশের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত থাকবেন। বিষয়টিকে বাংলাদেশ ও সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সঙ্গে কূটনৈতিক সৌজন্য ও রাজনৈতিক শ্রদ্ধা প্রদর্শনের অংশ হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।

এর আগে খালেদা জিয়ার জানাজায় পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার যোগ দেবেন বলে নিশ্চিত করেছে ঢাকায় অবস্থিত পাকিস্তান হাইকমিশন। হাইকমিশনের একটি সূত্র জানায়, ইসহাক দার আগামীকাল বুধবার ঢাকায় এসে সরাসরি জানাজায় অংশ নেবেন।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, একাধিক দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদের উপস্থিতি খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক অবস্থান ও দীর্ঘদিনের রাষ্ট্রীয় ভূমিকার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তিনি তিনবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন এবং বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সহধর্মিণী হিসেবে দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের প্রতিনিধিত্ব করেন।

এদিকে, জানাজা ঘিরে ঢাকায় কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে, দেশি-বিদেশি অতিথিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনগুলোও জানাজা এবং সংশ্লিষ্ট আনুষ্ঠানিকতায় ব্যাপক জনসমাগমের জন্য প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।

খালেদা জিয়ার জানাজাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মতভেদ ছাপিয়ে দেশজুড়ে শোক ও শ্রদ্ধার আবহ তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে নোয়াবের শোক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে নোয়াবের শোক

দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করছে সংবাদপত্রের মালিকদের সংগঠন, নিউজপেপার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব)।

আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সংগঠনটির সভাপতি এ. কে. আজাদের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় তাঁর সংগ্রাম সকল গোষ্ঠী ও মতের ঊর্ধ্বে। আমরা তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং শোকসন্তপ্ত পরিবার ও দলের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই।’

আজ মঙ্গলবার সকাল ৬টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন খালেদা জিয়া। গত ২৩ নভেম্বর থেকে এই হাসপাতালেই ভর্তি ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আবারও বাড়ল পোস্টাল ভোটের নিবন্ধনের সময়

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ২১
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে সামনে রেখে পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপে নিবন্ধনের সময় আবারও বাড়িয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে ইসি জানায়, পোস্টাল ভোটের নিবন্ধনের সময়সীমা শেষবারের মতো বাড়িয়ে ৫ জানুয়ারি নির্ধারণ করা হয়েছে।

ইসি জানায়, আজ বিকেল ৪টা পর্যন্ত পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপে নিবন্ধিত ভোটারের সংখ্যা ১০ লাখ ৫১ হাজার ছাড়িয়েছে।

এর আগে, ২৪ ডিসেম্বর ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানিয়েছিলেন, পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপে নিবন্ধনের সময়সীমা ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্ধারিত ছিল, তা বাড়িয়ে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার ৩ আসনে এখন কী হবে, জানাল নির্বাচন কমিশন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ২৫
বেগম খালেদা জিয়া। ফাইল ছবি
বেগম খালেদা জিয়া। ফাইল ছবি

বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুর এক দিন আগেই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় শেষ হয়েছে। তিনি যে তিনটি আসনে মনোনয়ন দাখিল করেছিলেন, সেগুলোতে নতুন করে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার প্রয়োজন হবে না বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

গতকাল সোমবার ছিল নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমার শেষ দিন। দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, খালেদা জিয়ার পক্ষে বগুড়া–৭, দিনাজপুর–৩ ও ফেনী–১ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হয়েছিল। নির্বাচনী আইন অনুযায়ী, একজন প্রার্থী সর্বোচ্চ তিনটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন। এই তিন আসনেই বিএনপির পক্ষ থেকে একজন করে ‘বিকল্প প্রার্থী’ রাখা হয়েছে, যাঁরা নির্দিষ্ট সময়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

আজ মঙ্গলবার ভোর ৬টায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় খালেদা জিয়া শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর এই প্রয়াণের পর প্রশ্ন উঠেছে, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী ওই তিন আসনে নতুন করে নির্বাচনের সময়সূচি বা তফসিল ঘোষণা করতে হবে কি না।

জাতীয় নির্বাচনসংক্রান্ত আইন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে বলা আছে, প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি এমন কোনো ‘বৈধভাবে মনোনীত’ প্রার্থীর মৃত্যু হলে সংশ্লিষ্ট আসনে নতুন করে তফসিল ঘোষণা করতে হয়। তবে বর্তমান ক্ষেত্রে পরিস্থিতি ভিন্ন বলে মনে করছে ইসি।

নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আবদুর রহমানেল মাছউদ গণমাধ্যমকে জানান, মনোনয়নপত্র জমা দিলেই কেউ বৈধ প্রার্থী হয়ে যান না। বাছাইপ্রক্রিয়ায় টিকে যাওয়ার পর চূড়ান্তভাবে প্রার্থী হিসেবে স্বীকৃত হন। খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে, ফলে আইনিভাবে তিনি এখনো ‘বৈধ প্রার্থী’ হিসেবে বিবেচিত হননি। তাঁর মৃত্যুর কারণে সংশ্লিষ্ট তিন আসনে মনোনয়নপত্রটি স্থগিত থাকবে।

ইসি কমিশনার আরও উল্লেখ করেন, যেহেতু ওই তিনটি আসনেই বিএনপির বিকল্প প্রার্থী রয়েছে, তাই নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় কোনো বিঘ্ন ঘটবে না। প্রতীক বরাদ্দের আগে দল থেকে যাঁর নামে চিঠি দেওয়া হবে, তিনিই দলীয় প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত হবেন।

নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুর পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচনী তফসিলে কোনো পরিবর্তন আনার সুযোগ বা প্রয়োজন নেই। পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুযায়ী ওই আসনগুলোতে বাছাই ও ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপির বিকল্প প্রার্থীরাই এখন ওই আসনগুলোতে দলের হাল ধরবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত