Ajker Patrika

দেশ যুদ্ধাবস্থার মধ্যে রয়েছে: প্রধান উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৭ মার্চ ২০২৫, ২১: ২২
আজ সোমবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: পিআইডি
আজ সোমবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: পিআইডি

দেশ যুদ্ধাবস্থার মধ্যে রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, ‘আমরা একটা কন্টিনিউয়াস যুদ্ধাবস্থার মধ্যে আছি। এটা যেন মনে থাকে যে আমরা যুদ্ধাবস্থার মধ্যে আছি। এই যুদ্ধাবস্থা থেকে আমাকে জয় নিয়ে বেরিয়ে আসতে হবে।’

আজ সোমবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।

পরাজিত শক্তি অর্থ ব্যয় করে অপপ্রচারের মহা কারখানা গড়ে তুলেছে বলে অভিযোগ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, নিত্যনতুনভাবে অপপ্রচার হবে, সবাইকে দ্বিধাগ্রস্ত করবে। কোনো অপপ্রচার দেখলে মানুষকে সচেতন করার জন্য পুলিশের প্রতি নির্দেশনা দেন তিনি।

আইন সঠিকভাবে প্রয়োগ ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করতে পারলে যেকোনো যুদ্ধ জয় সম্ভব বলে মনে করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, এই যে এগিয়ে যাওয়ার যে যুদ্ধ, লড়াই যেটা, এটা আনন্দের লড়াই, এটা কষ্টের লড়াই না।

অন্তর্বর্তী সরকারের হাতে খুব বেশি সময় নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা বলছি, ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে। কাজেই এর মধ্যে যা আমরা করতে চাই, যা আমাদের সামর্থ্য আছে, এগুলো করে ফেলা। আমাদের যত সংস্কার করার দরকার আছে, করে ফেলব। কারও জন্য অপেক্ষা করে আমাদের কোনো ফায়দা হবে না। কাজটা করতে হবে এবং সেটা আমাদের প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।’

নির্বাচনে পুলিশ নানা রকমের সমস্যায় পড়তে পারে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘নানা রকম চাপ আসবে, ডেসপারেট হয়ে যাবে—আমার কেন্দ্র জিতাতে হবে, ওর কেন্দ্রকে জিতাতে হবে, তুমি এখন আইন মানতে চাইলে তোমার ওপরে ক্ষ্যাপাক্ষেপি করবে। আমাদের সেখানে শক্ত থাকতে হবে, আইনের ভেতরে থাকতে হবে। যাতে করে নির্বাচিত সরকার আইনের সরকার হয়।’

পুলিশকে নির্বাচনের সময় আইন অনুযায়ী কাজ করার নির্দেশনা দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এক মহা অন্ধকার আমরা পার হয়ে এসেছি। আমাদের কপাল ভালো। ছাত্ররা আমাদের সেটা থেকে মুক্তি দিয়েছে। আমরা যেন আবার এই গর্তের মধ্যে ঢুকে না পড়ি। তাহলে আমাদের কেউ আর উদ্ধার করতে পারবে না।’

সরকারকে কোনো কাজ করতে হলে তার পরিবেশ পুলিশকে তৈরি করতে হয় বলে মনে করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘পুলিশের কথা প্রসঙ্গে বারে বারে আমরা বলছি দুটো শব্দ—আইন ও শৃঙ্খলা। এটাই হলো পুলিশ। কাজেই ওই পুলিশের হাতেই এটাকে এক্সিকিউট করতে হবে। আইনের পরিবেশ সৃষ্টি করা।’ পুলিশকে অবহেলা করে বা পাশ কাটিয়ে দেশ গড়া সম্ভব নয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তারাই সম্মুখসারির মানুষ। তারা ক্ষেত্র প্রস্তুত করলে তখন বাকি জিনিসগুলো হয়। তখন বীজ লাগানো হয়, চারা লাগানো যায়—সবকিছু হয়।’

বৈঠকে পুলিশের কর্মকর্তারা তাঁদের সমস্যার কথা বলেন। সেগুলো সমাধান করার কথা জানান প্রধান উপদেষ্টা। এ নিয়ে বৈঠক করা হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের কারণে নতুন বাংলাদেশ গড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘হারিয়ে ফেলা খুব সোজা। মুহূর্তে হারিয়ে যায়। এই সম্ভাবনাকে ধরে রাখার যেটুকু সময় আমাদের আছে, সেটুকু সময়ের মধ্যে আমরা চেষ্টা করব। ভবিষ্যতে যারা আসবে, তারাও আশা করি চেষ্টা করবে। পথটা যেন আমরা সৃষ্টি করে দিই। এই সম্ভাবনাগুলো বাস্তবে পরিণত হবে।’

গণ-অভ্যুত্থানের পরে সারা দুনিয়া সমর্থন করেছে জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘শুধু মিনমিনে সমর্থন না। আচ্ছা আচ্ছা, ঠিক আছে করো, ওরকম না। উৎসাহভরে এগিয়ে আসল। তারা যে রকম মনে করেছে যে এই দেশ যদি উঠে দাঁড়াতে পারে, সেটা ভালো সঙ্গী হবে সবার।’

আওয়ামী লীগের সময়কালকে তথা পুরোনো বাংলাদেশ ‘অন্ধকার যুগ’ উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সে সময় পুলিশ সরাসরি অংশগ্রহণ করেছিল, হুকুমের চাপে তাদের চিন্তায় তা ঢুকে গিয়েছিল বলে মনে করেন সরকারপ্রধান।

পুলিশকে সেই চিন্তা থেকে বের হয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশ সৃষ্টি করার জন্য তোমাদেরকে ওই চিন্তা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে যে, আমরা নতুন বাংলাদেশ সৃষ্টি করব। আমাদের অনেক দোষ দেয়। আমরা দেখিয়ে দেব, মানুষ খারাপ না।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা খারাপ মানুষের পাল্লায় পড়েছিলাম। আমরা সেই খারাপ মানুষ থেকে বের হয়ে এসেছি। আমরা ভালো মানুষ, দেখো আমরা কী করতে পারি। সেই দৃঢ় চিন্তাটা মাথার ভেতরে রাখতে হবে। আমরা একটু দেখিয়ে দেব, আমাদের সবাই গালিগালাজ করে মন্দভাবে। আমাদের কাজের মাধ্যমে আমরা দেখাব।’

নতুন বাংলাদেশ স্লোগানের যুক্তি তুলে ধরেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, নতুন দেশ আর আশপাশে দুই-চারটা দেশের সঙ্গে পাল্লা দেবে না, আমরা দুনিয়ার মাঠে খেলার খেলোয়াড়। আমরা ছোট মাঠে খেলার খেলোয়াড় না। বাংলাদেশ অপূর্ব একটা দেশ। আমরা দুনিয়ার মাঠে খেলব।

পুলিশ কর্মকর্তাদের সৃজনশীল কাজ করার পরামর্শ দেন প্রধান উপদেষ্টা। নিজ নিজ জেলার সমস্যার তালিকা করে সমাধান করার কথা বলেন তিনি। নারীদের নিরাপত্তায় জোর দেওয়ার নির্দেশনা দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, নারীদের সুরক্ষা দেওয়া এটা একটা মস্ত বড় কাজ। এটা আমাদের অবহেলার কারণেই এটা ক্রমে সমাজের মধ্যে দ্রুত বিস্তার লাভ করেছে। আমাদের দেশের অর্ধেক মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছে। তাই তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশকে বলেন সরকারপ্রধান। একই সঙ্গে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য কাজ করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দেন তিনি।

জেলাওয়ারি আইনশৃঙ্খলার র‍্যাঙ্কিং করার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, কাজের উৎসাহ দিতে এটা করা; যেন ঝিমিয়ে পড়লে এটা আমাকে জাগিয়ে দেয়।

অনলাইনে মামলার সুবিধার কথা তুলে ধরেন প্রধান উপদেষ্টা। পাসপোর্টে পুলিশ ভেরিফিকেশন তুলে দেওয়ার কথা আবারও জানান তিনি। রোহিঙ্গারা যাতে পাসপোর্ট না নিতে পারে, সে জন্য ইউএনএসির ডেটাবেইসের তথ্য সরকার নিচ্ছে বলেও জানান সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, বায়োমেট্রিকসটা দিলে সঙ্গে সঙ্গে সমস্ত তথ্য স্ক্রিনে ভেসে উঠবে। পাসপোর্ট অথরিটি ঠিক করবে যে তুমি রোহিঙ্গা; তোমাকে আমরা পাসপোর্ট দিতে পারলাম না এখানে পুলিশ ভেরিফিকেশনের দরকার নাই।

পুলিশের কাজ সহজ করার জন্য সরকার প্রযুক্তি ব্যবহার করছে বলেও জানান প্রধান উপদেষ্টা। পুলিশ হলো কোর বাহিনী, যারা মানুষের সঙ্গে সরকারকে সংযুক্ত রাখে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সভায় আরও বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, স্বরাষ্ট্রসচিব নাসিমুল গনি এবং পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম। মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আহসান হাবিব পলাশ এবং রাজশাহীর পুলিশ সুপার ফারজানা ইসলাম। সভায় পুলিশের ঊর্ধ্বতন ১২৭ কর্মকর্তা যোগ দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজ শুভ বড়দিন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আজ শুভ বড়দিন

খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ‘শুভ বড়দিন’ আজ ২৫ ডিসেম্বর। এই ধর্মের প্রবর্তক যিশুখ্রিষ্ট আজকের এই দিনে প্রাচীন ফিলিস্তিনের বেথলেহেম শহরে জন্মগ্রহণ করেন। বিশ্বের খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীরা এ দিনটিকে ‘বড়দিন’ হিসেবে উদ্‌যাপন করে থাকে। দিনটি উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার সরকারি ছুটি।

খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের বিশ্বাস, সৃষ্টিকর্তার মহিমা প্রচারের মাধ্যমে মানবজাতিকে সত্য ও ন্যায়ের পথে পরিচালিত করতেই প্রভু যিশুর পৃথিবীতে আগমন ঘটেছিল। মুসলিমদের কাছে যিশুখ্রিষ্ট হজরত ঈসা (আ.) হিসেবে পরিচিত। ঈসা (আ.)-এর ওপর নাজিল হওয়া আসমানি কিতাবের নাম ইঞ্জিল শরিফ। তবে দুই ধর্মের বিশ্বাসে কিছু তফাতও রয়েছে।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের খ্রিষ্টান ধর্মানুসারীরাও যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য, আনন্দ-উৎসব ও প্রার্থনার মধ্য দিয়ে বড়দিন উদ্‌যাপন করবে।

বড়দিন উপলক্ষে সারা দেশে খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের বাড়ি ও গির্জা উৎসবের সাজে সাজানো হয়। এ দিন গির্জায় বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে।

অনেক পরিবার তাদের বাড়িতে তৈরি করে প্রতীকী গোয়ালঘর। বিদেশি অতিথিদের বিবেচনায় তারকা হোটেলগুলো ক্রিসমাস ট্রি, সান্তা ক্লজসহ বিভিন্ন অনুষঙ্গ দিয়ে সাজানো হয়।

বড়দিন উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন।

বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, মহামতি যিশুখ্রিষ্ট ছিলেন মানবজাতির মুক্তির দূত এবং শান্তি, সত্য ও ন্যায়ের প্রচারক। তাঁর আদর্শ ভালোবাসা, সেবা ও ক্ষমার শিক্ষা দেয়। ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে দেশ ও জনগণের কল্যাণে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। বড়দিন সবার জীবনে আনন্দ ও সমৃদ্ধি বয়ে আনুক।

প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর বাণীতে বলেন, বড়দিন শান্তি, ন্যায় ও মানবমুক্তির বার্তা বহন করে। যিশুখ্রিষ্টের মানবসেবা, ভালোবাসা ও ক্ষমার আদর্শ অনুসরণের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বড়দিন উদ্‌যাপন দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আরও সুদৃঢ় করবে। বৈষম্যহীন, ন্যায়ভিত্তিক বাংলাদেশ গঠনে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

আতশবাজি, পটকা ও ফানুস নিষিদ্ধ

খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের বৃহত্তম ধর্মীয় অনুষ্ঠান পবিত্র বড়দিন উদ্‌যাপন উপলক্ষে আতশবাজি, পটকা ফোটানো এবং ফানুস ও গ্যাস বেলুন ওড়ানো নিষিদ্ধ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। গতকাল বুধবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী স্বাক্ষরিত এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শুভ বড়দিন ভাবগম্ভীর ও উৎসবমুখর পরিবেশে উদ্‌যাপনের লক্ষ্যে ঢাকা মহানগর পুলিশ অধ্যাদেশের ২৮ ধারার ক্ষমতাবলে বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে আগামী শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ঢাকা মহানগর এলাকায় সব ধরনের আতশবাজি, পটকা ফোটানো এবং ফানুস ও গ্যাস বেলুন ওড়ানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বড়দিনের অনুষ্ঠান সুষ্ঠু ও নিরাপদে উদ্‌যাপনের লক্ষ্যে ঢাকা মহানগর পুলিশ নগরবাসীর সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পদত্যাগ করলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বকশ চৌধুরী

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০০: ৪০
খোদা বকশ চৌধুরী। ফাইল ছবি
খোদা বকশ চৌধুরী। ফাইল ছবি

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখশ চৌধুরী পদত্যাগ করেছেন। তিনি প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী ক্ষমতাপ্রাপ্ত ছিলেন।

খোদা বখশ চৌধুরীর পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি গ্রহণ করেছেন জানিয়ে বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদে শেষ দিকে এসে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে গুঞ্জন ওঠে। ওই পদে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখশ চৌধুরীকে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে বলেও গুঞ্জন ছিল।

সরকারের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছিল, গত মঙ্গলবার রাতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেওয়ার কথা ছিল খোদা বখশ চৌধুরীর। কিন্তু এ নিয়ে উপদেষ্টাদের মধ্যে মতভেদ তৈরি হওয়ায় আগের অবস্থান থেকে সরে আসেন প্রধান উপদেষ্টা।

একটি সূত্র বলছে, উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ পাচ্ছেন এমন খবর ছড়িয়ে পড়ার পর সে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন না হওয়ায় খোদা বখশ চৌধুরী পদত্যাগ করেছেন।

এর আগে গত ১০ মার্চ প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক এম আমিনুল ইসলামও এভাবে পদত্যাগ করেছিলেন।

অধ্যাপক আমিনুলকে শিক্ষা উপদেষ্টার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু গত ৫ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও মানবাধিকারকর্মী সি আর আবরারকে শিক্ষা উপদেষ্টার দায়িত্ব দেওয়া হয়। এর পাঁচদিন পর পদত্যাগ করেন অধ্যাপক আমিনুল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জুলাই অভ্যুত্থানে চানখাঁরপুলে হত্যাকাণ্ডের রায় ২০ জানুয়ারি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ০১
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় রাজধানীর চানখাঁরপুলে ৬ জনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আগামী ২০ জানুয়ারি রায় দেবেন ট্রাইব্যুনাল। উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে বুধবার রায়ের জন্য এই দিন ধার্য করেন বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।

এই মামলায় আট আসামির বিরুদ্ধে গত ১৪ জুলাই অভিযোগ গঠন করা হয়। আট আসামির মধ্যে গ্রেপ্তার থাকা শাহবাগ থানার সাবেক পরিদর্শক মো. আরশাদ হোসেন, সাবেক কনস্টেবল মো. সুজন হোসেন, ইমাজ হোসেন ও মো. নাসিরুল ইসলাম ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন। আর পলাতক রয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, রমনা অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহ্ আলম মো. আক্তারুল ইসলাম ও রমনা অঞ্চলের সাবেক সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ ইমরুল।

যাত্রাবাড়ীতে তাইম হত্যায় ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় পুলিশ কর্মকর্তার ছেলে ইমাম হাসান তাইম হত্যার ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ১১ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ এই অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন। যাতে ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ ১১ জনকে আসামি করা হয়েছে। অভিযোগ আমলে নিয়ে গ্রেপ্তারদের হাজিরের জন্য আগামী ৫ জানুয়ারি দিন ধার্য করা হয়েছে। সেই সঙ্গে পলাতকদের গ্রেপ্তারে পরোয়ানা জারি করেছেন ট্রাইব্যুনাল।

গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছেন যাত্রাবাড়ী থানার তৎকালীন ওসি আবুল হাসান ও তৎকালীন ওসি (তদন্ত) জাকির হোসাইন। আর পলাতক রয়েছেন ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিএমপির সাবেক যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, ওয়ারী জোনের সাবেক ডিসি ইকবাল হোসাইন ও এডিসি এস এম শামীম, ডেমরা জোনের তৎকালীন এডিসি মো. মাসুদুর রহমান মনির, তৎকালীন সহকারী পুলিশ কমিশনার নাহিদ ফেরদৌস, যাত্রাবাড়ী থানার তৎকালীন পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) ওহিদুল হক মামুন, এসআই (নিরস্ত্র) সাজ্জাদ উজ জামান ও মো. শাহদৎ আলী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বড়দিন উপলক্ষে ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার শুভেচ্ছা বিনিময়

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০: ৫১
আজ বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: প্রেস উইং
আজ বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: প্রেস উইং

বড়দিন উপলক্ষে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। আজ বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন তিনি।

ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন, বাংলাদেশের ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের প্রধান ধর্মগুরু আর্চবিশপ বিজয় এন ডি’ক্রুজ, ন্যাশনাল ক্রিশ্চিয়ান ফেলোশিপ অব বাংলাদেশের সভাপতি বিশপ ফিলিপ পি অধিকারী, খ্রিষ্টধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি ড. বেনেডিক্ট আলো ডি রোজারিও, জাতীয় চার্চ পরিষদ বাংলাদেশের সভাপতি খ্রিস্টোফার অধিকারীসহ দেশের খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় খ্রিষ্টধর্মের নেতারা তাঁদের শুভেচ্ছা বক্তব্যে বিশ্বজুড়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সুনাম এবং দেশের অর্থনীতি ও সার্বিক পরিস্থিতির উন্নয়নে তাঁর ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন। প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে আগামী নির্বাচনও সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে আয়োজিত হবে বলে তাঁরা আশা প্রকাশ করেন।

আজ বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: প্রেস উইং
আজ বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: প্রেস উইং

আর্চবিশপ বিজয় এন ডি’ক্রুজ তাঁর শুভেচ্ছা বক্তব্যে যিশুখ্রিষ্টকে সর্বজনীন উল্লেখ করে বলেন, যিশুখ্রিষ্টের ক্ষমা ও মানবসেবার মহান আদর্শ সামনে রেখে বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষের সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষও এ বছর উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে বড়দিন উদ্‌যাপন করছে।

প্রধান উপদেষ্টাকে বড়দিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে আর্চবিশপ বিজয় এন ডি’ক্রুজ বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পরে বাংলাদেশকে নতুন করে গড়ে তুলতে জনগণ আপনার ওপর আস্থা রেখেছিল। আপনি অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে সে দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। আমরা প্রার্থনা করি, একটি সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আপনার প্রচেষ্টা সফল হবে।’

প্রধান উপদেষ্টা উপস্থিত নেতৃবৃন্দসহ সবাইকে বড়দিন ও আসন্ন নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ‘আপনারাই সমাজের প্রতিবিম্ব। আপনাদের দেখলে বুঝতে পারি, সবকিছু ঠিক আছে কি না।’

আজ বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: প্রেস উইং
আজ বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা একটি সুস্থ সমাজ গড়ে তুলতে চাই। সে জন্যই গণ-অভ্যুত্থানের চেতনাকে সমুন্নত রাখতে জুলাই সনদ প্রস্তুত করা হয়েছে। এই সনদের ওপর গণভোটের মাধ্যমে দেশ আরেক ধাপ এগিয়ে যাবে।

তিনি বলেন, এবারের নির্বাচনে সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে গণভোটও অনুষ্ঠিত হবে। গণভোটে জনগণ যে রায় দেবে, পরবর্তী সময়ে সংসদ সেভাবেই সংস্কার কার্যক্রম গ্রহণ করবে।

প্রধান উপদেষ্টা এ সময় আসন্ন নির্বাচন ও গণভোটের বিষয়ে জনগণকে সচেতন করে তুলতে ধর্মীয় নেতৃবৃন্দকে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।

বড়দিন উপলক্ষে খ্রিষ্টধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকে আড়াই কোটি টাকা অনুদান দেওয়ার জন্য অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান ট্রাস্টের নেতৃবৃন্দ। দেশব্যাপী ৮০০টি চার্চের মধ্যে তিন ধাপে এই অনুদান বিতরণ করা হচ্ছে বলে জানান তাঁরা।

পরে বড়দিন উপলক্ষে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে কেক কাটেন প্রধান উপদেষ্টা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত