Ajker Patrika

অনড় অবস্থানে সংলাপে জট

  • সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ এবং সংসদের উচ্চকক্ষ নির্বাচন নিয়ে বিরোধ।
  • সব বিষয়ে সব দল একমত হতে হবে, এটা গণতান্ত্রিক ধারণা নয়: সালাহউদ্দিন আহমদ
  • যেখানে আমাদের যাওয়ার কথা ছিল, সেখানে আমরা এখনো পৌঁছাতে পারিনি: আলী রীয়াজ
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০২ জুলাই ২০২৫, ১৫: ৩৮
অনড় অবস্থানে সংলাপে জট

জুলাই সনদ চলতি মাসেই দেওয়া এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ভাবনা থেকে রাষ্ট্র পরিচালনার মৌলিক পদ্ধতি সংস্কারে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। সংস্কার প্রস্তাবের বেশির ভাগ দল মোটামুটি একমত হলেও দুটি বিষয়ে প্রায় অনড় অবস্থান নিয়েছে জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। এতে সংলাপে বেশ ভালোই জট লেগেছে।

যে দুই বিষয়ে বিএনপির প্রবল আপত্তি, তার একটি হলো সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের জন্য কমিটি গঠন, অন্যটি দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভার উচ্চকক্ষের গঠন পদ্ধতি ও এর এখতিয়ার।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সংবিধান ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের জন্য কমিটি গঠনের বিষয়টি সংবিধানে যুক্ত করার প্রস্তাব দিয়েছে। অনেক দল এ প্রস্তাব সমর্থন করেছে। কিন্তু বিএনপি সংবিধানে এই বিধান যুক্ত করার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। দলটি মনে করছে, এসব প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের বিষয়ে সাংবিধানিক বিধিবিধান যুক্ত করা হলে তা নির্বাহী বিভাগের এখতিয়ার বেশ সীমিত করে দেবে। এতে যে দলই ভোটে জিতে আসুক, তাদের জন্য রাষ্ট্র পরিচালনা করা কঠিন হয়ে পড়বে। বিএনপির এ অবস্থান সমর্থন করছে ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, এনডিএম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও লেবার পার্টি। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন, গণসংহতি আন্দোলন, এবি পার্টি, এলডিপি, সিপিবি, বাসদসহ সংলাপে অংশ নেওয়া বাকি ২৪টি দল সংবিধানে নিয়োগ কমিটির বিধান চায়।

জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে সরাসরি ভোটে আইনসভার নিম্নকক্ষের সদস্য নির্বাচনের বর্তমান বিধান বহাল রেখে দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যানুপাতে উচ্চকক্ষ গঠনের প্রস্তাব করেছে ঐকমত্য কমিশন। এ প্রস্তাবটি অনেক দলের সমর্থন পেয়েছে। তবে বিএনপি বলছে, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সংখ্যানুপাতে উচ্চকক্ষের সদস্য নির্বাচন একটি অবাস্তব ধারণা। দলটি বলেছে, সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচনের যে ব্যবস্থা বিদ্যমান, সেটার মতোই নিম্নকক্ষে দলগুলোর প্রাপ্ত আসনসংখ্যার ভিত্তিতে উচ্চকক্ষের সদস্য নির্বাচন করা যেতে পারে। ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, এনডিএম ও লেবার পার্টি বিএনপির এ ধারণা সমর্থন করছে। তবে সংলাপে অংশ নেওয়া বেশির ভাগ দল বিএনপির এ ধারণার বিপরীতে অবস্থান নিয়েছে। জাতীয় নির্বাচনে দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যানুপাতে উভয় কক্ষ চায় জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলনসহ ইসলামপন্থী দলগুলো। এনসিপি, গণসংহতি আন্দোলন, এবি পার্টি, নাগরিক ঐক্য, গণঅধিকার পরিষদসহ ভোটের সংখ্যানুপাতে উচ্চকক্ষের দাবি করছে। অন্যদিকে সিপিবি ও বাসদ এক কক্ষের সংসদ রাখার পক্ষে।

টানা সংলাপের পরও দলগুলোর মধ্যে কিছু বিষয়ে বড় ধরনের ব্যবধান থেকে যাওয়ায় কমিশন এখন কৌশল বদলাতে শুরু করেছে। প্রকাশ্য সংলাপে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি নেপথ্যে প্রভাবশালী দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে কথা চলছে। একই সঙ্গে জট যে যে প্রস্তাব নিয়ে লেগেছে, সেগুলোর মূল ধারণা ঠিক রেখে কিছুটা শিথিল করা যায় কি না, তাও বিবেচনা করা হচ্ছে।

সংলাপ প্রায় অচলাবস্থা দেখা দেওয়ার পর্যায়ে গড়ালেও আশা ছাড়ছেন না ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। এ পর্যন্ত কতটুকু এগোনো গেল আজকের পত্রিকা থেকে গতকাল মঙ্গলবার জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘যেখানে আমাদের যাওয়ার কথা ছিল, সেখানে আমরা এখন পর্যন্ত পৌঁছাতে পারিনি। এখনো আমরা আশাবাদী, রাজনৈতিক দলগুলো তাঁদের ভূমিকা বুঝতে পারবে।’

রাষ্ট্রব্যবস্থার মৌলিক সংস্কারের আলোচনায় যে বিষয়গুলো প্রাধান্য পাচ্ছে তা হলো—প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ, সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি গঠন, জাতীয় নির্বাচনে দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যানুপাতে উচ্চকক্ষ গঠন, বিচার বিভাগ বিকেন্দ্রীকরণ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান সংবিধানে আবার যুক্ত করা, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ও সংবিধান সংশোধনের প্রক্রিয়া এবং একজন সংসদ সদস্য কতগুলো পদে থাকতে পারবেন তা।

একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ দুইবার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করার প্রস্তাব করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় এক ব্যক্তির জীবনে সর্বোচ্চ ১০ বছর প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করার বিষয়ে মোটামুটি ঐকমত্য হয়েছে। তবে বিএনপি বলেছে, সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে নিয়োগে কমিটি গঠনের বিষয়টি সংবিধানে যুক্ত করা হলে এক ব্যক্তির সর্বোচ্চ ১০ বছর প্রধানমন্ত্রী পদে থাকার বিষয়ে দেওয়া সমর্থন প্রত্যাহার করবে তারা।

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ দুই বিচারপতি থেকে পরবর্তী প্রধান বিচারপতি নিয়োগের বিষয়ে দলগুলো একমত হয়েছে। এ ছাড়া আইনসভায় উভয় কক্ষের দুই-তৃতীয়াংশে ভোটে সংবিধান সংশোধনের বিধান সুপারিশ করেছে কমিশন। তবে বিএনপি বলছে, দেশের চলমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় কোনো দল ৫০ শতাংশ ভোট পায় না। সে ক্ষেত্রে দুই-তৃতীয়াংশের এ বিধান থাকলে প্রয়োজন হলেও সংবিধান সংশোধন করা যাবে না।

বিএনপির হয়ে সংলাপে নেতৃত্ব দেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, সব বিষয়ে সব দল একমত হতে হবে, এটা গণতান্ত্রিক ধারণা নয়। ভিন্নমত থাকতেই পারে। দেখতে হবে বিভিন্ন ইস্যুতে দেশের বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে দলীয় অবস্থান ঠিক করা হচ্ছে কি না।

সংলাপে এ পর্যন্ত দুই ধাপে ৫২টি অধিবেশনে কথা হয়েছে। প্রথম ধাপে পৃথকভাবে ৩৩টি দল ও জোটের সঙ্গে ৪৫টি অধিবেশনে কমিশন মতবিনিময় করেছে। দ্বিতীয় ধাপে সব দল ও জোটের সঙ্গে একসঙ্গে আলোচনা চলছে।

আজ বুধবার দ্বিতীয় ধাপের অষ্টম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি, নির্বাচনী এলাকা নির্ধারণ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনসহ কিছু বিষয়ে আজ আলোচনা হতে পারে।

কমিশনের ভেতরকার তথ্য অনুযায়ী, বিভিন্ন বিষয়ে দলগুলোর মধ্যকার ব্যবধান কমিয়ে আনতে কমিশন সোম ও মঙ্গলবার বড় দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে সরাসরি বা ভার্চুয়ালি কথা বলেছে। সরকারের একজন উপদেষ্টাও দলগুলোর সঙ্গে কথা বলছেন। কয়েকটি দলের নেতাদের সঙ্গে শিগগির সরাসরি বৈঠকও হতে পারে।

আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে কমিশন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তবে সংস্কারে ছাড় দেওয়ার ক্ষেত্রে বড় দলগুলোর অনুদার মনোভাবে ঐকমত্য কমিশনের অনেকেই বিরক্ত। আবার কিছু রাজনৈতিক দলের অবস্থানে বিস্মিত হয়েছেন কমিশনের কেউ কেউ। একজন প্রভাবশালী সদস্য মনে করছেন, ভোটের হিসাবনিকাশের দিক থেকে কিছুটা পিছিয়ে থাকায় বাম সংগঠনগুলোর বেশির ভাগ পুরোনো ধ্যানধারণা থেকে বেরোচ্ছে না। অন্যদিকে ভোটে কিছুটা এগিয়ে থাকার আশা থেকে কয়েকটি ইসলামপন্থী দল তুলনামূলক উদার মনোভাব দেখাচ্ছে।

রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের আত্মজিজ্ঞাসার তাগিদ দিয়ে আলী রীয়াজ বলেন, এখন জুলাই মাস, প্রত্যেকের স্মৃতিতে গত বছরের জুলাই ও ১৬ বছরের দুঃশাসন। রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত তাদের কর্মীদের কাছে জিজ্ঞেস করা—কী পরিমাণ নিপীড়নের মধ্য দিয়ে তাঁরা গেছেন। ৫৩ বছরে যে সুযোগ সবাই পেয়েছেন, দেশের মানুষ ও যাঁরা প্রাণ দিয়েছেন, তাঁরা যে দায়িত্ব দিয়ে গেছেন, সে দায়িত্ব সহজে আসেনি। কিন্তু দায়িত্ব সবাই পালন করছেন কি না, সে প্রশ্ন নিজেকে করা উচিত।

কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার বলেন, কিছু কিছু বিষয়ে সবাই একমত হয়েছে। বাকি বিষয়ে আলাপ হচ্ছে। কতগুলো মৌলিক বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানো গেলে একটা জাতীয় সনদ প্রণয়ন ও স্বাক্ষর হবে। তিনি বলেন, যে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে তা ব্যর্থ হোক, কেউ চায় না। আর যাঁরা প্রাণ দিয়েছেন, রক্ত দিয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করতে কেউ চায় না।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

২০২৫ সালজুড়ে আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে ‘মব সন্ত্রাস’: আইন ও সালিশ কেন্দ্র

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
২০২৫ সালজুড়ে আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে ‘মব সন্ত্রাস’: আইন ও সালিশ কেন্দ্র

২০২৫ সাল জুড়ে ‘মব সন্ত্রাস’ আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। কোনো ধরনের প্রমাণ, তদন্ত বা আইনিপ্রক্রিয়া অনুসরণ না করে, সন্দেহ, গুজব সৃষ্টি করে মানুষকে মারধর ও হত্যা করা হয়েছে। ‘তওহীদি জনতা’র নামে বেআইনিভাবে মব তৈরি করে শিল্প-সংস্কৃতি কেন্দ্র ভাঙচুর, বাউল সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, এমনকি কবর থেকে তুলে লাশ পুড়িয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে। মুক্তিযোদ্ধাসহ বিরুদ্ধ মতের মানুষকে নানাভাবে হেনস্তা করা হয়েছে। এসব ঘটনায় অনেক ক্ষেত্রেই আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নিষ্ক্রিয়তা এবং অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার ক্ষেত্রে উদাসীনতার প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছে, যা দেশে আইনের শাসনের জন্য চূড়ান্ত হুমকিস্বরূপ এবং সমাজে নজিরবিহীন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে।

বেসরকারি সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) ‘বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ২০২৫’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ সব কথা বলা হয়েছে। আজ বুধবার এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

আসকের তথ্যানুযায়ী, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মব সন্ত্রাসে কমপক্ষে ১৯৭ জন নিহত হয়েছে। ২০২৪ সালে এই সংখ্যা ছিল ১২৮ জন।

আসকের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়কালে কমপক্ষে ২৯৩ জন নাগরিক মব সন্ত্রাসের শিকার হয়ে নিহত হয়েছে। মবের শিকার হয়ে ২০২৫ সালে ঢাকা জেলায় সর্বাধিক ২৭, গাজীপুরে ১৭, নারায়ণগঞ্জে ১১ জন নির্মমভাবে নিহত হয়েছে। ২০২৫ সালের আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে গণপিটুনির সংখ্যা তুলনামূলকভাবে অন্যান্য মাসের থেকে বেশি ঘটেছে। এই সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীরাও গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন, যদিও অধিকাংশ ভুক্তভোগী ছিলেন দল-মত নিরপেক্ষ সাধারণ নাগরিক।

আসকের তথ্য সংরক্ষণ ইউনিটের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ২০২৫ সালে কমপক্ষে ৩৮ জন ব্যক্তি বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছে। এ সব ঘটনা সংঘটিত হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে, নির্যাতনে, কথিত ‘গুলিতে’ বা ‘বন্দুকযুদ্ধের’ নামে। ২০২৫ সালে কমপক্ষে ১০৭ জন ব্যক্তি দেশের বিভিন্ন কারাগারে মৃত্যুবরণ করেছে। এর মধ্যে ৬৯ জন হাজতি এবং কয়েদি ৩৮ জন। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে দেশে অন্তত ৪০১টি রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় প্রায় ৪ হাজার ৭৪৪ জন আহত এবং ১০২ জন নিহত হয়েছে। সহিংসতার এই চিত্র কেবল প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার সংঘাতে সীমাবদ্ধ নয়; বরং দলীয় অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও বিভক্তিও সহিংসতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

আসকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও আইনি নিপীড়নের ঘটনা একটি উদ্বেগজনক ধারায় পৌঁছেছে। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে অন্তত ৩৮১ জন সাংবাদিক নির্যাতন ও হয়রানির তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দ্বারা নির্যাতন, হয়রানি বা হুমকির শিকার হয়েছেন অন্তত ২৩ জন সাংবাদিক। প্রাণনাশের হুমকি পেয়েছেন ২০ জন। প্রকাশিত সংবাদ বা মতামতকে কেন্দ্র করে মামলার সম্মুখীন হয়েছেন কমপক্ষে ১২৩ জন সাংবাদিক। পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সরাসরি হামলার শিকার হয়েছেন ১১৮ জন সাংবাদিক। এ সময়কালে দুর্বৃত্ত কর্তৃক হত্যার শিকার হয়েছেন ৩ জন সাংবাদিক এবং দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে রহস্যজনকভাবে ৪ জন সাংবাদিকের লাশ উদ্ধারের ঘটনা ঘটে।

আসকের তথ্যানুযায়ী, ২০২৫ সালে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর কমপক্ষে ৪২টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই হামলাসমূহে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩৩টি বাড়িঘর, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে ৩৬টি বসত ঘরে। এ ছাড়া ৪টি মন্দিরে হামলা, ৬৪টি প্রতিমা ভাঙচুর, ৯টি জমি দখলের ঘটনা ঘটেছে। এ সব ঘটনায় নিহত হয়েছে ১ জন, আহত হয়েছে কমপক্ষে ১৫ জন। এ বছর দেশে ২১৭ জন নারী স্বামীর মাধ্যমে হত্যার শিকার হয়েছেন এবং ৬৩ জন নারীকে স্বামীর পরিবারের সদস্যরা হত্যা করেছে। নিজের পরিবারের সদস্যদের হাতেও ৫১ জন নারী প্রাণ হারিয়েছেন। পারিবারিক সহিংসতা থেকে মুক্তির পথ খুঁজে না পেয়ে অন্তত ১৬৮ জন নারী আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে ধর্ষণের ৭৪৯টি ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৫৬৯টি ছিল একক ধর্ষণ এবং ১৮০টি দলবদ্ধ ধর্ষণ। ধর্ষণের পর অন্তত ৩৬ জন নারীকে হত্যা করা হয়েছে, ৭ জন নারী আত্মহত্যা করেছেন এবং ধর্ষণের চেষ্টার পর প্রাণ হারিয়েছেন আরও ৬ জন নারী।

আসকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত অন্তত ৪১০ জন শিশু বিভিন্ন ধরনের সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছে। এসব ঘটনার মধ্যে রয়েছে ধর্ষণের পর হত্যা, শারীরিক নির্যাতন, অপহরণ, আত্মহত্যা এবং বিস্ফোরণে মৃত্যু।

আসক মনে করে, দেশে নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রতি জনগণের মধ্যে আশা ও প্রত্যাশা সৃষ্টি হলেও বাস্তব পর্যায়ে বৈষম্য, নিপীড়ন ও দমন-পীড়নের চিত্রে আশানুরূপ ইতিবাচক পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়নি। বরং কিছু ক্ষেত্রে মানবাধিকারের সামগ্রিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে বলে লক্ষ্য করা গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকায় ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, পাকিস্তানের স্পিকার ও ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ৩৮
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, পাকিস্তান পার্লামেন্টের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক ও ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিয়নপো ডি. এন. ধুংগেল। ছবি: সংগৃহীত
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, পাকিস্তান পার্লামেন্টের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক ও ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিয়নপো ডি. এন. ধুংগেল। ছবি: সংগৃহীত

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শেষ বিদায়ে অংশ নিতে এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় অনুষ্ঠেয় জানাজায় যোগ দিতে ঢাকায় পৌঁছেছেন বিভিন্ন দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি ও কূটনীতিকেরা। আজ বুধবার সকাল থেকেই বিদেশি অতিথিরা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করতে শুরু করেন। পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পিকার, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা খালেদা জিয়ার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে বাংলাদেশে পা রেখেছেন।

আজ বুধবার বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে পাকিস্তান সরকারের বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে ঢাকায় পা রাখেন দেশটির জাতীয় পরিষদের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক। ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তান হাইকমিশনের প্রেস কাউন্সিলর ফাসিহ উল্লাহ খান জানান, বিমানবন্দরে স্পিকারকে স্বাগত জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। বিমানবন্দরের মুখপাত্র ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মাসুদ নিশ্চিত করেছেন যে, স্পিকারকে বহনকারী ফ্লাইটটি নির্ধারিত সময়েই অবতরণ করে।

এর কিছুক্ষণ আগে, বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে একটি বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় পৌঁছান ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর। তাঁকে বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। ভারতের পক্ষ থেকে এই উচ্চপর্যায়ের জানাজায় অংশগ্রহণকে দক্ষিণ এশিয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন থেকেও বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

ভুটান সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে বেগম খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে সকালে ঢাকায় এসে পৌঁছান দেশটির পররাষ্ট্র ও বৈদেশিক বাণিজ্য মন্ত্রী লিয়নপো ডি. এন. ধুংগেল। বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক এস এম সামাদ জানান, বিমানবন্দরে ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভুটানের রাষ্ট্রদূত এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা স্বাগত জানান।

আজ দুপুর ২টায় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বেগম খালেদা জিয়ার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এই জানাজায় অংশ নিতে ইতিমধ্যে দেশি-বিদেশি রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক এবং দেশের দূর-দূরান্ত থেকে আসা হাজার হাজার সাধারণ মানুষের সমাগম শুরু হয়েছে। বিদেশি প্রতিনিধিরা জানাজায় উপস্থিত থেকে কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।

বিএনপি চেয়ারপারসনের এই রাষ্ট্রীয় জানাজাকে কেন্দ্র করে মানিক মিয়া এভিনিউ ও আশপাশের এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘খালেদা জিয়াকে এভাবে বিদায় দিতে হবে ভাবিনি’

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ১৪
সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা
সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রিত্বের ভার বহন করেছিলেন তিনবার। গণতন্ত্রের আন্দোলনে ছিলেন আপোসহীন নেত্রী। তাঁর শেষ বিদায়ে আজ দেশ শোকাহত। আর শোক ধারণ করে হাজারো মানুষের ভিড় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে। যেখানে আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বাদ জোহর আনুমানিক বেলা ২টার দিকে অনুষ্ঠিত হবে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা।

সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা
সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা

জানাজায় অংশ নিতে সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। এছাড়াও বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীদেরও। কেউ চোখের পানি ধরে রাখতে পারছেন না, কেউ নীরবে বসে আছেন মন ভার করে। পুরো এলাকা জুড়ে শোক আর নীরবতার আবহ।

লালবাগ থেকে আসা মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমরা আজ একজন রাজনৈতিক অভিভাবককে হারালাম। এই শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়। দোয়া করি, তারেক রহমান যেন দেশের হাল ধরতে পারেন।’

সংসদ-এলাকা

সাভার থেকে আসা দুই বন্ধু স্বপন শেখ ও মো. রিয়াজ বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে এই মুহূর্তে এভাবে বিদায় দিতে হবে, ভাবিনি। তিনি জীবনে এত ত্যাগ করেছেন, অথচ কিছুই সঙ্গে নিয়ে যেতে পারলেন না। তাঁর একমাত্র প্রাপ্তি—বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসা।’

বগুড়া থেকে জানাজায় অংশ নিতে আসা মনোয়ার হোসেন মামুন বলেন, ‘এ দেশ যাঁরা শাসন করেছেন, তাঁদের সবার গায়েই কোনো না কোনো কলঙ্ক আছে। কেবল বেগম খালেদা জিয়ার কোনো কলঙ্ক নেই। তিনি ক্ষমতার লোভ করেননি। জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত সাধারণ মানুষের পাশেই ছিলেন। ”

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘শেখ হাসিনা তিলে তিলে এমন একজন মানুষকে মেরে ফেলেছে। এর বিচার জনসম্মুখে হতে হবে—যে সরকারই আসুক।’

জানাজা শেষে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে শহিদ রাষ্ট্রপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানের পাশে বেগম খালেদা জিয়াকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হবে। এ সময় পরিবারের সদস্য, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ, সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্তরা, বিদেশি কূটনীতিক এবং বিএনপি মনোনীত নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।

দাফনকাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে নির্ধারিত ব্যক্তিবর্গ ছাড়া অন্য কারও প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে। দাফনকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত শেরেবাংলা নগরের জিয়া উদ্যান এলাকায় সাধারণ মানুষের চলাচল সীমিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজার পরিবর্তে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের পশ্চিম প্রান্তে কফিন রাখা হবে। জাতীয় সংসদ ভবনের ভেতরের মাঠ, বাইরের অংশ এবং পুরো মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ জুড়েই জানাজার আয়োজন করা হয়েছে। জানাজাকে ঘিরে নিরাপত্তা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সব রাষ্ট্রীয় দপ্তর যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। জনসাধারণের অংশগ্রহণ নির্বিঘ্ন করতে আশপাশের সড়কগুলোতেও অবস্থানের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী সায়েদুর রহমানের পদত্যাগ

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ২৪
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান পদত্যাগ করেছেন।

তাঁর পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি কর্তৃক গৃহীত হয়েছে জানিয়ে গতকাল মঙ্গলবার রাতে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

তিনি কী কারণে পদত্যাগ করেছেন সে বিষয়ে প্রজ্ঞাপনে কিছু জানানো হয়নি।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় নির্বাহী ক্ষমতা অনুশীলনের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমানের পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি গ্রহণ করেছেন।

গত বছরের ১০ নভেম্বর প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী পদে নিয়োগ পান সায়েদুর রহমান। একই সঙ্গে তাঁকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী ক্ষমতা অর্পণ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত