Ajker Patrika

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা মার্চে বেড়েছে: এমএসএফ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ৩১ মার্চ ২০২৩, ১৯: ৩৯
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা মার্চে বেড়েছে: এমএসএফ

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে সমালোচনার মধ্যেও এই আইনে ফেব্রুয়ারির তুলনায় মার্চ মাসে দ্বিগুণ মামলা হয়েছে বলে জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ)। শুক্রবার সংস্থার সভাপতি সুলতানা কামাল স্বাক্ষরিত মার্চ মাসের মানবাধিকার পরিস্থিতি মনিটরিং প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। সংস্থাটি জানিয়েছে, মার্চে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ১০ মামলায় ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে একজন সাংবাদিক, একজন বিএনপির কর্মী, একজন আওয়ামী লীগ কর্মী, একজন অভিনেত্রী, দুজন যুবক এবং একজন সরকারি কর্মচারী রয়েছেন। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, ফেব্রুয়ারি মাসে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার সংখ্যা ছিল ৫। এই মাসে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এই আইনে তিনটি মামলা হয়েছে, যার মধ্যে একজন সাংবাদিক গ্রেপ্তার হয়েছেন। এ ছাড়া সরকারি কর্মচারী নারী র‍্যাবের হেফাজতে মারা যান। এসব মামলার সাতটি হয়েছে সরকারের উচ্চপর্যায়ের ব্যক্তি ও দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়—এ ধরনের সমালোচনামূলক পোস্ট বা শেয়ার অথবা কমেন্ট করার কারণে। এ ছাড়া প্রতারণার অভিযোগে দুটি এবং জনমনে ভীতি প্রদর্শন, জনমনে অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির কথিত অপরাধে একটি মামলা হয়েছে। 

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি জানিয়ে এমএসএফ বলছে, এ আইনের যথেচ্ছ অপব্যবহারের মাধ্যমে মানুষকে মতামত প্রকাশে বাধাগ্রস্ত করা ও ভয় দেখানো এবং সবার মুখ বন্ধ করে দেওয়ার একটি ভয়ংকর তৎপরতা চালানো হচ্ছে। 

সংস্থাটি আরও জানায়, চলতি মাসে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় অন্তত ৪০ জন সাংবাদিক নানাভাবে অপমান, নিপীড়ন, হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামান ছাড়া আরও তিনজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে। 

এ ছাড়া প্রতিবেদনে মার্চে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসমূহের মানবাধিকার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। মার্চে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে এক নারীসহ দুজনের মৃত্যু হয়েছে। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে পুলিশের গাড়িতে করে নরসিংদী কারাগারে নিয়ে যাওয়ার পথে সিরাজ মিয়া ও ২২ মার্চ সকালে নওগাঁয় র‍্যাব হেফাজতে সুলতানা জেসমিনের মৃত্যু হয়। এ মাসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে তিনজনকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

এমএসএফ আরও জানায়, বিরোধীদলীয় কর্মসূচিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক বল প্রয়োগ, বাধাদান অব্যাহত ছিল। এ মাসে রাজনৈতিক, নির্বাচনী সহিংসতা ও সভা-সমাবেশে বাধার ৩১টি ঘটনায় ৩৮৫ জন আহত ও পাঁচজন নিহত হয়েছেন। নিহত পাঁচজনের মধ্যে তিনজন ক্ষমতাসীন দলের অন্তর্দ্বন্দ্বে এবং দুজন ইউপি নির্বাচনী সহিংসতায় মারা গেছেন। 

এ মাসে পাচটি রাজনৈতিক মামলার মধ্যে বিএনপির বিরুদ্ধে দুটি, তিনটি জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের বিরুদ্ধে করা হয়েছে। এ ছাড়া ১৭০ জন রাজনৈতিক কর্মীকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এতে ১১২ জন বিএনপি ও ৫৮ জন জামায়াতে ইসলামীর কর্মী রয়েছেন। মার্চে কারা হেফাজতে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। গত মাসে এই সংখ্যা ছিল ৫। এ মাসে তিনজন হাজতি ও তিনজন কয়েদির মৃত্যু হয়েছে। 

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড অব্যাহত রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে মৃত্যু, তাদের পরিচয়ে অপহরণ, গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের মতো ঘটনা ঘটেই চলেছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে মতামত প্রকাশের সংবিধান প্রদত্ত অধিকার প্রয়োগের পথ রুদ্ধ করার মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। এ মাসে একাধিক বাণিজ্যিক ভবনে বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনা জনমনে উৎকণ্ঠার সৃষ্টি করেছে। গণপিটুনির মতো ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের এই ঘটনাগুলো ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়ায় মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) গভীর ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে তলব করে যা বলল ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ৫৭
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের নিরাপত্তা নিয়ে চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেছে নয়াদিল্লি। আজ বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) বাংলাদেশের হাইকমিশনার মুহাম্মদ রিয়াজ হামিদউল্লাহকে তলব করে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ উদ্বেগের কথা জানায়।

আজ বুধবার স্থানীয় সময় দুপুর ১২টার দিকে রিয়াজ হামিদুল্লাহকে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়। তাঁকে তলব করেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (বিএম) বি শ্যাম।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাংলাদেশে নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতির পরিপ্রেক্ষিতে হাইকমিশনারকে তলব করা হয়েছে। এ সময় ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিশেষভাবে হাইকমিশনারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেছে, ঢাকায় কিছু ‘চরমপন্থী উপাদান’ প্রকাশ্যে ঢাকায় ভারতীয় মিশনের আশেপাশে একটি নিরাপত্তা সংকট তৈরি করার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। ভারতের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে জানানো হয়েছে, এই ধরনের হুমকি কূটনৈতিক সম্পর্কের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক এবং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নিক—এমনটাই প্রত্যাশিত।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, বাংলাদেশে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা নিয়ে ‘চরমপন্থী উপাদানগুলো’র মাধ্যমে যে ‘মিথ্যা বয়ান’ তৈরি করার চেষ্টা চলছে, ভারত তা সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করে। এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এটিকে দুর্ভাগ্যজনক বলে অভিহিত করেছে। তারা বলেছে, অন্তর্বর্তী সরকার এই উদ্বেগজনক ঘটনাগুলোর কোনো পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করেনি বা ভারত সরকারের সঙ্গে কোনো অর্থবহ প্রমাণ দেয়নি।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ভারত বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে ঐতিহাসিকভাবে মুক্তি সংগ্রামের মাধ্যমে গড়ে ওঠা ঘনিষ্ঠ ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে গুরুত্ব দেয়, যা বিভিন্ন উন্নয়নমূলক এবং মানুষে-মানুষে উদ্যোগের মাধ্যমে আরও জোরদার হয়েছে। এই সম্পর্কের ভিত্তিতেই নয়াদিল্লি বারবার বাংলাদেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতার পক্ষে মত দিয়েছে। ভারত সরকার ধারাবাহিক আহ্বান জানিয়েছে, একটি শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল পরিবেশে যেন অবাধ, সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছে, বাংলাদেশ সরকার তাদের কূটনৈতিক বাধ্যবাধকতা বজায় রেখে সেদেশে অবস্থিত ভারতীয় মিশন এবং অন্যান্য বিদেশি পোস্টগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।

উল্লেখ্য, ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে, এই তলবের মূল কারণ জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) এক নেতার ‘উসকানিমূলক’ মন্তব্য বলে উল্লেখ করা হলেও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে সে প্রসঙ্গ আনা হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যাত্রীদের মালপত্রের নিরাপত্তায় শাহজালালে বডি ক্যামেরা পরবেন ট্রাফিক স্টাফরা

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা
আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ৫৪
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। ফাইল ছবি
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। ফাইল ছবি

রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাত্রীদের মালপত্রের (ব্যাগেজ) নিরাপত্তা নিশ্চিতে আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর উদ্যোগ নিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং এজেন্ট (জিএইচএ) হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী প্রতিষ্ঠানটি ব্যাগেজ পরিবহনপ্রক্রিয়ায় নিয়োজিত ট্রাফিক স্টাফদের জন্য বডি ক্যামেরা সংযোজন করেছে।

এই বডি ক্যামেরা ব্যবস্থার মাধ্যমে বিমানের হোল্ড থেকে শুরু করে ব্যাগেজ বেল্ট হয়ে যাত্রীর হাতে পৌঁছানো পর্যন্ত সম্পূর্ণ ব্যাগেজ হ্যান্ডলিং প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণের আওতায় আসবে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের নিজস্ব অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের পাশাপাশি যেসব আন্তর্জাতিক এয়ারলাইনসের জন্য প্রতিষ্ঠানটি গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবা দেয়, তাদের ক্ষেত্রেও এই ব্যবস্থা কার্যকর থাকবে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস কর্তৃপক্ষ জানায়, বডি ক্যামেরা সংযোজনের ফলে ব্যাগেজ চুরি, হারানো কিংবা ক্ষতির অভিযোগ দ্রুত ও নির্ভুলভাবে যাচাই করা সম্ভব হবে। কোনো অভিযোগ উত্থাপিত হলে সংশ্লিষ্ট ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনার মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা শনাক্ত করে দ্রুত সমাধান নিশ্চিত করা যাবে।

এই উদ্যোগের মাধ্যমে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে যাত্রীদের আস্থা ও সন্তুষ্টি আরও সুদৃঢ় হবে। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক মানের নিরাপত্তা ও সেবার একটি অভিন্ন কাঠামো প্রতিষ্ঠায় এই উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) বোসরা ইসলাম এক বিজ্ঞপ্তিতে জানান, গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবায় আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার এবং যাত্রীকেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গির বাস্তব উদাহরণ হিসেবে বডি ক্যামেরা উদ্যোগটি বিবেচিত হবে। যাত্রীদের নিরাপত্তা, সেবা ও আস্থাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ভবিষ্যতেও এ ধরনের কার্যকর ও আধুনিক উদ্যোগ অব্যাহত রাখবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দুবাইয়ে এমিরেটস যাত্রীদের জন্য আকর্ষণীয় সুযোগ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

শীতে দুবাই ভ্রমণকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে বিশেষ অফার নিয়ে এসেছে এমিরেটস। যাঁরা ২১ ডিসেম্বরের মধ্যে দুবাইয়ের রিটার্ন ফ্লাইট বুক করবেন, তাঁরা সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে দুটি জনপ্রিয় ও আকর্ষণীয় স্থানে প্রবেশাধিকার পাবেন; যার মধ্যে রয়েছে দুবাই মেরিনায় মনোমুগ্ধকর ৯০ মিনিটের সানসেট ডিনার ক্রুজ এবং অত্যাধুনিক দুবাই আর্ট মিউজিয়ামে মাল্টিসেন্সরি অভিজ্ঞতা। ৮ থেকে ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বুকিং এবং ৭ জানুয়ারি থেকে ১৮ মার্চ পর্যন্ত ভ্রমণের ক্ষেত্রে এই অফার প্রযোজ্য হবে।

১২৫ ফুট দীর্ঘ গ্লাস হাউসবোটে করে সানসেট ক্রুজে যাত্রীরা দুবাই মেরিনার অসাধারণ দৃশ্য উপভোগ করতে পারবেন। ক্রুজকালে পরিবেশিত হবে আন্তর্জাতিক মানের বুফে ডিনার। সঙ্গে থাকবে সংগীতশিল্পীদের সুরেলা পরিবেশনা।

অন্যদিকে দুবাই আর্ট মিউজিয়ামে দর্শনার্থীরা উপভোগ করতে পারবেন ডিজিটাল শিল্পকলা ও ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য গল্প বলার এক অনন্য মিশ্রণ। এখানে ইমারসিভ ইনস্টলেশন, চমকপ্রদ ভিজ্যুয়াল ল্যান্ডস্কেপ, মৌলিক সাউন্ডস্কেপ এবং বিশেষভাবে তৈরি সুগন্ধির মাধ্যমে সৃষ্টি করা হয়েছে এক সম্পূর্ণ মাল্টিসেন্সরি অভিজ্ঞতা।

এই অফারের পাশাপাশি এমিরেটস তাদের যাত্রীদের দুবাইয়ে অবস্থানকে আরও উপভোগ্য করতে বাড়তি সুবিধাও দিচ্ছে।

মাই এমিরেটস পাস ব্যবহার করে যাত্রীরা শহরজুড়ে ৭০০টির বেশি এক্সক্লুসিভ অফার উপভোগ করতে পারবেন। একই সঙ্গে এমিরেটস স্কাইওয়ার্ডস লয়্যালটি প্রোগ্রামের সদস্যরা হোটেল, এয়ারলাইনস, গাড়ি ভাড়া, রিটেইল, ব্যাংকিংসহ বিশ্বব্যাপী পার্টনারদের সেবা গ্রহণ করলে পাবেন মাইলস বা পয়েন্টস। এই পয়েন্টস দিয়ে তাঁরা রিওয়ার্ড টিকিট, ফ্লাইট আপগ্রেড কিংবা কনসার্ট ও স্পোর্টস ইভেন্টের টিকিট নেওয়ার সুযোগ পাবেন।

এমিরেটস বর্তমানে ঢাকা থেকে সপ্তাহে ২১টি ফ্লাইট পরিচালনা করছে এবং যাত্রীরা দুবাই হয়ে বিশ্বের ১৪০-এর বেশি গন্তব্যে সুবিধাজনক সংযোগ নিয়ে ভ্রমণের সুবিধা পাচ্ছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জনশক্তি রপ্তানিতে সংকট তৈরি হয়েছে দালাল চক্রের কারণে: প্রধান উপদেষ্টা

বাসস, ঢাকা  
আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ৫৮
আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ও জাতীয় প্রবাসী দিবস-২০২৫ উপলক্ষে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা। ছবি: প্রেস উইং।
আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ও জাতীয় প্রবাসী দিবস-২০২৫ উপলক্ষে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা। ছবি: প্রেস উইং।

প্রাতিষ্ঠানিক দালাল চক্র, নথি জালিয়াতি ও কাঠামোগত দুর্বলতার কারণে বাংলাদেশের বৈদেশিক কর্মসংস্থানে গভীর ও জটিল সংকট তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে বিদেশে কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে দালাল ও প্রতারণামুক্ত ব্যবস্থা গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন তিনি।

আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ও জাতীয় প্রবাসী দিবস-২০২৫ উপলক্ষে আজ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন অধ্যাপক ইউনূস।

প্রতিবছর ১৮ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস পালিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বিদেশ গমন আজ বিপজ্জনকভাবে দালাল ও প্রতারণার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে পড়েছে। এ অবস্থা থেকে মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত অর্থবহ অগ্রগতি হয়েছে, এমনটি ভাবার কোনো কারণ নেই।

প্রবাসী কর্মসংস্থানের দীর্ঘদিনের সংকট নিরসনে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টা থাকা সত্ত্বেও যে পরিমাণ সাফল্য অর্জিত হওয়ার কথা ছিল, তা এখনো সম্ভব হয়নি।

ড. ইউনূস আরও বলেন, অনেক উদ্যোগ বাইরে থেকে বেশ আকর্ষণীয় ও গুরুত্বপূর্ণ মনে হলেও সরকার এখনো দালাল নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থার মূল কাঠামোর ভেতরে ঢুকতে পারেনি।

গ্রামীণ ব্যাংকের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, গ্রামাঞ্চলের নারীরা সন্তানদের বিদেশে পাঠাতে ঋণের জন্য আবেদন জানাতে শুরু করলে প্রথমে দালাল চক্রের বাস্তব চিত্র তাঁর সামনে আসে।

তিনি বলেন, বিশ্বের যেকোনো দেশে বাংলাদেশ থেকে অভিবাসনের ক্ষেত্র কার্যত দালালনিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে। কে কার কাছ থেকে কী কারণে টাকা নিয়েছে, তা বোঝা প্রায় অসম্ভব। সরকার এখনো এই ব্যবস্থার অনেক বাইরে অবস্থান করছে। রেমিট্যান্স আয়ের মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিতে হলে যেকোনো মূল্যে এই বাস্তবতা বদলাতে হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। স্বাগত বক্তব্য দেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্লাহ ভূঁইয়া।

অনুষ্ঠানে তিনটি ক্যাটাগরিতে ৮৬ জন প্রবাসী বাংলাদেশিকে বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (সিআইপি) হিসেবে সম্মাননা দেওয়া হয়। এর মধ্যে শিল্প খাতে প্রত্যক্ষ বিনিয়োগের জন্য একজন, বৈধ পথে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স পাঠানোর জন্য ৭৫ জন এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশি পণ্য আমদানির জন্য ১০ জন রয়েছেন।

তিন ক্যাটাগরিতে সিআইপি সম্মাননা পাওয়া প্রবাসীদের মধ্যে যথাক্রমে কল্লোল আহমেদ, মো. আবদুল করিম ও মো. মাহমুদুর রহমান খান প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকে ক্রেস্ট গ্রহণ করেন।

এ ছাড়া অনুষ্ঠানে প্রবাসী কর্মীদের জন্য বিমা সুবিধা, চিকিৎসা সহায়তা, আর্থিক অনুদান, ক্ষতিপূরণ এবং মেধাবী সন্তানদের জন্য বৃত্তির চেক বিতরণ করেন প্রধান উপদেষ্টা।

অনুষ্ঠানে ক্রোয়েশিয়াপ্রবাসী রাজু আহমেদ এবং সৌদি আরবফেরত প্রবাসী শাহনাজ আক্তার শানু তাঁদের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে ২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থানে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভূমিকা এবং দেশের অর্থনীতিতে তাঁদের অবদান তুলে ধরে একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এতে প্রবাসীদের কল্যাণে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগও তুলে ধরা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত