কামরুল হাসান

হুমায়ূন আহমেদের শোয়ার ঘরটি ছিল দেখার মতো। ইয়া লম্বা একটা ঘর। ভেতরে কিং সাইজের বিছানা আর ঢাউস একটি টিভি ছাড়া আর কিছু নেই। ১৮০০ বর্গফুটের অ্যাপার্টমেন্টের ৫০০ বর্গফুটজুড়ে শুধু একটি শোয়ার ঘর।
আর কোনো ঘর নেই, পুরো বাড়ি ফাঁকা। এক পাশের দেয়ালে কাপড় রাখার একটি কেবিনেট। এ ছাড়া ভেতরের কোথাও কোনো ফার্নিচার নেই। রান্নাঘর আছে, কিন্তু সেখানে বসে খাওয়ার টেবিল পর্যন্ত নেই। মিসির আলি কিংবা হিমুর মতোই তাঁর অ্যাপার্টমেন্টের ভেতরটাও ছিল অদ্ভুতুড়ে।
সেই বাড়িতে ভুতুড়ে কাণ্ডটা ঘটল ২০০৬ সালের আগস্ট মাসে, সম্ভবত ২৫ আগস্টে। সেদিন ছিল শুক্রবার। অফিসে কাজের চাপ খুব কম। হাতেও তেমন কিছু নেই। কী একটা কারণে সন্ধ্যার দিকে ফোন দিলাম রমনা বিভাগের উপকমিশনার সেলিম মোহাম্মদ জাহাঙ্গীরকে। তিনি তখন ধানমন্ডিতে। বললেন, কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ধানমন্ডির বাসায় একটি অদ্ভুত কাণ্ড ঘটেছে। চাইলে দেখে যেতে পারেন। আমি না যাওয়া পর্যন্ত তিনি থাকবেন সেখানে।
আমাকে আর পায় কে, দিলাম দৌড়। এ ঘটনার কয়েক মাস আগে হুমায়ূন আহমেদ তাঁর আগের স্ত্রী গুলতেকিন আহমেদকে তালাক দিয়ে অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওনকে বিয়ে করেছেন। বাজারে তা নিয়ে নানা আলোচনা। লোকে বলাবলি করছে, হুমায়ূন আহমেদ তাঁর মেয়ের বান্ধবীকে বিয়ে করেছেন। সেই বউকে নিয়ে থাকছেন ধানমন্ডির ৩/এ সড়কের এই বাড়িতে। বাড়িটির নাম ‘দখিন হাওয়া’।
বাড়ির গেটে পৌঁছে দেখি ব্যাপক কড়াকড়ি। কাউকে ভেতরে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। তবে পুলিশের রেফারেন্স দিয়ে লাভ হলো। সহজেই ভেতরে যাওয়ার অনুমতি মিলল। উঠে গেলাম হুমায়ূন আহমেদের ফ্ল্যাটে।
দখিন হাওয়ার উত্তর দিকে ছয়তলায় মুখোমুখি দুটি ফ্ল্যাট, একটিতে থাকেন হুমায়ূন আহমেদ, আরেকটিতে থাকেন তাঁর বেশির ভাগ বইয়ের প্রকাশনা সংস্থা ‘অন্যপ্রকাশের’ মালিক মাজহারুল ইসলাম। দেখি, গেটের সামনে মাজহারুল ইসলাম দাঁড়িয়ে আছেন। তিনি পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পরই ভেতরে ঢুকতে দিচ্ছেন। হুমায়ূন আহমেদ তখন বাড়িতে নেই। তাঁর স্ত্রী শাওন দরজার সামনে দাঁড়িয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা বলছেন।
আমি ভেতরে ঢুকে পরিচয় দিতেই শাওন আমাকে নিয়ে গেলেন যা ঘটেছে, তা দেখাতে। ঢুকে দেখি শোয়ার ঘরের সবকিছু তছনছ করা। শতাধিক জামাকাপড় মেঝেতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। বিছানাপত্র উল্টোপাল্টা। কিছু কাপড় শোয়ার ঘরের বাথরুমের ভেতরে ফেলে রাখা। ভাঙা কাচের চুড়ির টুকরো আর ৫০০ টাকার অনেকগুলো নোটের টুকরো মেঝের সর্বত্র ছড়ানো। আর আছে এখানে-ওখানে অসংখ্য সোনার গয়নার টুকরো।
শাওন আমাকে বলেছিলেন, ওই ঘরে ৪০ ভরির মতো সোনার গয়না ছিল। সব গয়না কেবিনেটের তালা ভেঙে বের করে দুমড়ে-মুচড়ে মেঝেতে ফেলে রাখা হয়েছে। যেদিকে তাকাই দেখি সোনার গয়নার টুকরো পড়ে আছে। যেন পুরো ঘরটাই সোনার খনি। বাড়ির একটি গয়নাও আর আস্ত নেই। গয়নাগুলো রাখা ছিল দেয়ালের সঙ্গে লাগানো কাঠের কেবিনেটে। তবে শোয়ার ঘরের টিভি, কম্পিউটার ও সাউন্ড সিস্টেম ঠিক আছে। তাতে কেউ হাত দেয়নি।
আমি যাওয়ার একটু পরে সিআইডির একটি টিম এল। টিমের সদস্যরা ঘর থেকে অপরাধচিহ্ন জোগাড়ের কাজে নেমে পড়লেন। শাওন আমাকে বললেন, এই অ্যাপার্টমেন্টের দুটি চাবির একটি ছিল তাঁর কাছে, অন্যটি মাজহারুল ইসলামের বাসায়। ঘটনার সময় তাঁরা কেউ বাসায় ছিলেন না। নাটকের শুটিংয়ের কাজে হুমায়ূন আহমেদ প্রায় এক মাস ধরে নুহাশ পল্লিতে থাকছিলেন। এ সময় তিনি ছিলেন গুলশানে মায়ের বাড়িতে। তবে মাঝে দুবার তিনি এ বাড়িতে আসেন। সর্বশেষ আসেন এ ঘটনার ১০ দিন আগে, ১৫ আগস্ট। জরুরি একটা কাজে এসে আবার গুলশানে চলে যান। নুহাশ পল্লির কাজ শেষ হওয়ার পর ওই দিনই তাঁরা সবাই বাসায় ফেরেন।
সেদিন ছিল শুক্রবার। বিকেলে হুমায়ূন আহমেদের কর্মচারী মোস্তফা প্রথম বাসায় আসেন। মোস্তফা এসে দরজা খুলে সবকিছু তছনছ দেখে সবাইকে ডাকেন। খবর পেয়ে শাওন আসেন বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে।
শাওনের কাছে জানতে চাইলাম, বাসা থেকে কী কী জিনিস খোয়া গেছে? তিনি বেশ দ্রুততার সঙ্গে বললেন, সবকিছু ওলটপালট হয়েছে, তবে কোনো কিছু কেউ নেয়নি। কাউকে সন্দেহ করেন বা কোনো হুমকি ছিল কিনা?
বললেন, ‘না ভাই, সে রকম সন্দেহ করার মতো কেউ নেই।’ শাওনের কথা শুনে আমার সবকিছু বড় অদ্ভুত লাগছিল। মনে হচ্ছিল তিনি অনেক কিছু জানেন।
ধানমন্ডি থানায় সে সময় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছিলেন মাহবুবুর রহমান। পরদিন তাঁর কাছে এলাম সেই ঘটনার ফলোআপ করতে। তিনি বললেন, ঘর তছনছের ঘটনায় শাওন একটি মামলা করেছেন। কিন্তু তিনি কাউকে সন্দেহ করেননি। পুলিশকে শাওন বলেছেন, কারও বিরুদ্ধে তাঁর কোনো অভিযোগ নেই। তবে ওসি আমাকে বললেন, তাঁর কাছে বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হয়েছে। তিনি মনে করেন, বাইরের কেউ অ্যাপার্টমেন্টের নকল চাবি তৈরি করে দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে সবকিছু তছনছ করেছে। অবশ্য তিনি বাড়ির নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে কথাও বলেছিলেন। তাঁরা জানিয়েছেন, দখিন হাওয়ায় ৩০টি অ্যাপার্টমেন্টের বাসিন্দা ও তাঁদের লোকজন ছাড়া বাইরের কেউ সেখানে আসেনি। পুলিশ এ নিয়ে বেশ কিছুদিন দৌড়ঝাঁপ করল। তাঁরা হুমায়ূন আহমেদের কর্মচারী মোস্তফা, ভবনের নিরাপত্তাকর্মী ও লিফটচালককে জিজ্ঞাসাবাদও করেছিল। তারপর সব চুপ হয়ে গেল।
এই লেখাটা শুরুর আগে গত বৃহস্পতিবার মেহের আফরোজ শাওনকে ফোন দিয়ে সেই ঘটনার শেষ কী হলো জানতে চাইলাম। তিনি বললেন, ‘পুলিশ কোনো কিছুই বের করতে পারেনি। মামলাটাও শেষ হয়ে গেছে।’ ফোন দিলাম অন্য প্রকাশের মালিক মাজহারুল ইসলামকে। তিনিও একই কথা বললেন। তবে শাওন বললেন, হুমায়ূন আহমেদের সেই ফ্ল্যাট এখন আর সে রকম নেই। ২০১০ সালে সেটা ভেঙে নতুন করে তৈরি করেছেন। সেই টিভিটি এখন নুহাশ পল্লিতে।
এত বছর পরে মনে পড়ে গেল ধানমন্ডির ওসি মাহবুবুর রহমানের কথা। ফলোআপ করার সময় একদিন তিনি আমাকে বলেছিলেন, শাওনকে বিয়ে করার পর আগের স্ত্রীর সঙ্গে হুমায়ূন আহমেদের ঝামেলা চলছিল। হুমায়ূন আহমেদ নিজেও এ মামলার তদন্ত হোক, তা চাইছিলেন না।
তছনছের কয়েক দিন পর ডিএমপির এক পদস্থ কর্মকর্তার সঙ্গে গেলাম হুমায়ূন আহমেদের বাসায়। তিনি আমার পরিচয় পেয়ে খুব অবাক হয়ে বললেন, জীবনে প্রথম তিনি ক্রাইম রিপোর্টার দেখছেন। এরপর সেই ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন করতেই তিনি উল্টো আমাকে প্রশ্ন করে বললেন, ‘আপনিই বলেন, আপনার কী ধারণা?’ আমি বললাম, স্যার, আমার মনে হয় আপনার সাবেক ও বর্তমান স্ত্রীদের যেকোনো একজন এ কাজ করেছেন। তিনি শুনে কিছু বললেন না। অনেকক্ষণ কথা বলে উঠে আসার সময় বললেন, ‘সাংবাদিক, সাহেব আমারও সেটাই মনে হয়। তবে এটা যেন পাঁচ কান না হয়।’
আমি বললাম, ‘জি স্যার।’
আরও পড়ুন:

হুমায়ূন আহমেদের শোয়ার ঘরটি ছিল দেখার মতো। ইয়া লম্বা একটা ঘর। ভেতরে কিং সাইজের বিছানা আর ঢাউস একটি টিভি ছাড়া আর কিছু নেই। ১৮০০ বর্গফুটের অ্যাপার্টমেন্টের ৫০০ বর্গফুটজুড়ে শুধু একটি শোয়ার ঘর।
আর কোনো ঘর নেই, পুরো বাড়ি ফাঁকা। এক পাশের দেয়ালে কাপড় রাখার একটি কেবিনেট। এ ছাড়া ভেতরের কোথাও কোনো ফার্নিচার নেই। রান্নাঘর আছে, কিন্তু সেখানে বসে খাওয়ার টেবিল পর্যন্ত নেই। মিসির আলি কিংবা হিমুর মতোই তাঁর অ্যাপার্টমেন্টের ভেতরটাও ছিল অদ্ভুতুড়ে।
সেই বাড়িতে ভুতুড়ে কাণ্ডটা ঘটল ২০০৬ সালের আগস্ট মাসে, সম্ভবত ২৫ আগস্টে। সেদিন ছিল শুক্রবার। অফিসে কাজের চাপ খুব কম। হাতেও তেমন কিছু নেই। কী একটা কারণে সন্ধ্যার দিকে ফোন দিলাম রমনা বিভাগের উপকমিশনার সেলিম মোহাম্মদ জাহাঙ্গীরকে। তিনি তখন ধানমন্ডিতে। বললেন, কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ধানমন্ডির বাসায় একটি অদ্ভুত কাণ্ড ঘটেছে। চাইলে দেখে যেতে পারেন। আমি না যাওয়া পর্যন্ত তিনি থাকবেন সেখানে।
আমাকে আর পায় কে, দিলাম দৌড়। এ ঘটনার কয়েক মাস আগে হুমায়ূন আহমেদ তাঁর আগের স্ত্রী গুলতেকিন আহমেদকে তালাক দিয়ে অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওনকে বিয়ে করেছেন। বাজারে তা নিয়ে নানা আলোচনা। লোকে বলাবলি করছে, হুমায়ূন আহমেদ তাঁর মেয়ের বান্ধবীকে বিয়ে করেছেন। সেই বউকে নিয়ে থাকছেন ধানমন্ডির ৩/এ সড়কের এই বাড়িতে। বাড়িটির নাম ‘দখিন হাওয়া’।
বাড়ির গেটে পৌঁছে দেখি ব্যাপক কড়াকড়ি। কাউকে ভেতরে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। তবে পুলিশের রেফারেন্স দিয়ে লাভ হলো। সহজেই ভেতরে যাওয়ার অনুমতি মিলল। উঠে গেলাম হুমায়ূন আহমেদের ফ্ল্যাটে।
দখিন হাওয়ার উত্তর দিকে ছয়তলায় মুখোমুখি দুটি ফ্ল্যাট, একটিতে থাকেন হুমায়ূন আহমেদ, আরেকটিতে থাকেন তাঁর বেশির ভাগ বইয়ের প্রকাশনা সংস্থা ‘অন্যপ্রকাশের’ মালিক মাজহারুল ইসলাম। দেখি, গেটের সামনে মাজহারুল ইসলাম দাঁড়িয়ে আছেন। তিনি পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পরই ভেতরে ঢুকতে দিচ্ছেন। হুমায়ূন আহমেদ তখন বাড়িতে নেই। তাঁর স্ত্রী শাওন দরজার সামনে দাঁড়িয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা বলছেন।
আমি ভেতরে ঢুকে পরিচয় দিতেই শাওন আমাকে নিয়ে গেলেন যা ঘটেছে, তা দেখাতে। ঢুকে দেখি শোয়ার ঘরের সবকিছু তছনছ করা। শতাধিক জামাকাপড় মেঝেতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। বিছানাপত্র উল্টোপাল্টা। কিছু কাপড় শোয়ার ঘরের বাথরুমের ভেতরে ফেলে রাখা। ভাঙা কাচের চুড়ির টুকরো আর ৫০০ টাকার অনেকগুলো নোটের টুকরো মেঝের সর্বত্র ছড়ানো। আর আছে এখানে-ওখানে অসংখ্য সোনার গয়নার টুকরো।
শাওন আমাকে বলেছিলেন, ওই ঘরে ৪০ ভরির মতো সোনার গয়না ছিল। সব গয়না কেবিনেটের তালা ভেঙে বের করে দুমড়ে-মুচড়ে মেঝেতে ফেলে রাখা হয়েছে। যেদিকে তাকাই দেখি সোনার গয়নার টুকরো পড়ে আছে। যেন পুরো ঘরটাই সোনার খনি। বাড়ির একটি গয়নাও আর আস্ত নেই। গয়নাগুলো রাখা ছিল দেয়ালের সঙ্গে লাগানো কাঠের কেবিনেটে। তবে শোয়ার ঘরের টিভি, কম্পিউটার ও সাউন্ড সিস্টেম ঠিক আছে। তাতে কেউ হাত দেয়নি।
আমি যাওয়ার একটু পরে সিআইডির একটি টিম এল। টিমের সদস্যরা ঘর থেকে অপরাধচিহ্ন জোগাড়ের কাজে নেমে পড়লেন। শাওন আমাকে বললেন, এই অ্যাপার্টমেন্টের দুটি চাবির একটি ছিল তাঁর কাছে, অন্যটি মাজহারুল ইসলামের বাসায়। ঘটনার সময় তাঁরা কেউ বাসায় ছিলেন না। নাটকের শুটিংয়ের কাজে হুমায়ূন আহমেদ প্রায় এক মাস ধরে নুহাশ পল্লিতে থাকছিলেন। এ সময় তিনি ছিলেন গুলশানে মায়ের বাড়িতে। তবে মাঝে দুবার তিনি এ বাড়িতে আসেন। সর্বশেষ আসেন এ ঘটনার ১০ দিন আগে, ১৫ আগস্ট। জরুরি একটা কাজে এসে আবার গুলশানে চলে যান। নুহাশ পল্লির কাজ শেষ হওয়ার পর ওই দিনই তাঁরা সবাই বাসায় ফেরেন।
সেদিন ছিল শুক্রবার। বিকেলে হুমায়ূন আহমেদের কর্মচারী মোস্তফা প্রথম বাসায় আসেন। মোস্তফা এসে দরজা খুলে সবকিছু তছনছ দেখে সবাইকে ডাকেন। খবর পেয়ে শাওন আসেন বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে।
শাওনের কাছে জানতে চাইলাম, বাসা থেকে কী কী জিনিস খোয়া গেছে? তিনি বেশ দ্রুততার সঙ্গে বললেন, সবকিছু ওলটপালট হয়েছে, তবে কোনো কিছু কেউ নেয়নি। কাউকে সন্দেহ করেন বা কোনো হুমকি ছিল কিনা?
বললেন, ‘না ভাই, সে রকম সন্দেহ করার মতো কেউ নেই।’ শাওনের কথা শুনে আমার সবকিছু বড় অদ্ভুত লাগছিল। মনে হচ্ছিল তিনি অনেক কিছু জানেন।
ধানমন্ডি থানায় সে সময় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছিলেন মাহবুবুর রহমান। পরদিন তাঁর কাছে এলাম সেই ঘটনার ফলোআপ করতে। তিনি বললেন, ঘর তছনছের ঘটনায় শাওন একটি মামলা করেছেন। কিন্তু তিনি কাউকে সন্দেহ করেননি। পুলিশকে শাওন বলেছেন, কারও বিরুদ্ধে তাঁর কোনো অভিযোগ নেই। তবে ওসি আমাকে বললেন, তাঁর কাছে বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হয়েছে। তিনি মনে করেন, বাইরের কেউ অ্যাপার্টমেন্টের নকল চাবি তৈরি করে দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে সবকিছু তছনছ করেছে। অবশ্য তিনি বাড়ির নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে কথাও বলেছিলেন। তাঁরা জানিয়েছেন, দখিন হাওয়ায় ৩০টি অ্যাপার্টমেন্টের বাসিন্দা ও তাঁদের লোকজন ছাড়া বাইরের কেউ সেখানে আসেনি। পুলিশ এ নিয়ে বেশ কিছুদিন দৌড়ঝাঁপ করল। তাঁরা হুমায়ূন আহমেদের কর্মচারী মোস্তফা, ভবনের নিরাপত্তাকর্মী ও লিফটচালককে জিজ্ঞাসাবাদও করেছিল। তারপর সব চুপ হয়ে গেল।
এই লেখাটা শুরুর আগে গত বৃহস্পতিবার মেহের আফরোজ শাওনকে ফোন দিয়ে সেই ঘটনার শেষ কী হলো জানতে চাইলাম। তিনি বললেন, ‘পুলিশ কোনো কিছুই বের করতে পারেনি। মামলাটাও শেষ হয়ে গেছে।’ ফোন দিলাম অন্য প্রকাশের মালিক মাজহারুল ইসলামকে। তিনিও একই কথা বললেন। তবে শাওন বললেন, হুমায়ূন আহমেদের সেই ফ্ল্যাট এখন আর সে রকম নেই। ২০১০ সালে সেটা ভেঙে নতুন করে তৈরি করেছেন। সেই টিভিটি এখন নুহাশ পল্লিতে।
এত বছর পরে মনে পড়ে গেল ধানমন্ডির ওসি মাহবুবুর রহমানের কথা। ফলোআপ করার সময় একদিন তিনি আমাকে বলেছিলেন, শাওনকে বিয়ে করার পর আগের স্ত্রীর সঙ্গে হুমায়ূন আহমেদের ঝামেলা চলছিল। হুমায়ূন আহমেদ নিজেও এ মামলার তদন্ত হোক, তা চাইছিলেন না।
তছনছের কয়েক দিন পর ডিএমপির এক পদস্থ কর্মকর্তার সঙ্গে গেলাম হুমায়ূন আহমেদের বাসায়। তিনি আমার পরিচয় পেয়ে খুব অবাক হয়ে বললেন, জীবনে প্রথম তিনি ক্রাইম রিপোর্টার দেখছেন। এরপর সেই ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন করতেই তিনি উল্টো আমাকে প্রশ্ন করে বললেন, ‘আপনিই বলেন, আপনার কী ধারণা?’ আমি বললাম, স্যার, আমার মনে হয় আপনার সাবেক ও বর্তমান স্ত্রীদের যেকোনো একজন এ কাজ করেছেন। তিনি শুনে কিছু বললেন না। অনেকক্ষণ কথা বলে উঠে আসার সময় বললেন, ‘সাংবাদিক, সাহেব আমারও সেটাই মনে হয়। তবে এটা যেন পাঁচ কান না হয়।’
আমি বললাম, ‘জি স্যার।’
আরও পড়ুন:
কামরুল হাসান

হুমায়ূন আহমেদের শোয়ার ঘরটি ছিল দেখার মতো। ইয়া লম্বা একটা ঘর। ভেতরে কিং সাইজের বিছানা আর ঢাউস একটি টিভি ছাড়া আর কিছু নেই। ১৮০০ বর্গফুটের অ্যাপার্টমেন্টের ৫০০ বর্গফুটজুড়ে শুধু একটি শোয়ার ঘর।
আর কোনো ঘর নেই, পুরো বাড়ি ফাঁকা। এক পাশের দেয়ালে কাপড় রাখার একটি কেবিনেট। এ ছাড়া ভেতরের কোথাও কোনো ফার্নিচার নেই। রান্নাঘর আছে, কিন্তু সেখানে বসে খাওয়ার টেবিল পর্যন্ত নেই। মিসির আলি কিংবা হিমুর মতোই তাঁর অ্যাপার্টমেন্টের ভেতরটাও ছিল অদ্ভুতুড়ে।
সেই বাড়িতে ভুতুড়ে কাণ্ডটা ঘটল ২০০৬ সালের আগস্ট মাসে, সম্ভবত ২৫ আগস্টে। সেদিন ছিল শুক্রবার। অফিসে কাজের চাপ খুব কম। হাতেও তেমন কিছু নেই। কী একটা কারণে সন্ধ্যার দিকে ফোন দিলাম রমনা বিভাগের উপকমিশনার সেলিম মোহাম্মদ জাহাঙ্গীরকে। তিনি তখন ধানমন্ডিতে। বললেন, কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ধানমন্ডির বাসায় একটি অদ্ভুত কাণ্ড ঘটেছে। চাইলে দেখে যেতে পারেন। আমি না যাওয়া পর্যন্ত তিনি থাকবেন সেখানে।
আমাকে আর পায় কে, দিলাম দৌড়। এ ঘটনার কয়েক মাস আগে হুমায়ূন আহমেদ তাঁর আগের স্ত্রী গুলতেকিন আহমেদকে তালাক দিয়ে অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওনকে বিয়ে করেছেন। বাজারে তা নিয়ে নানা আলোচনা। লোকে বলাবলি করছে, হুমায়ূন আহমেদ তাঁর মেয়ের বান্ধবীকে বিয়ে করেছেন। সেই বউকে নিয়ে থাকছেন ধানমন্ডির ৩/এ সড়কের এই বাড়িতে। বাড়িটির নাম ‘দখিন হাওয়া’।
বাড়ির গেটে পৌঁছে দেখি ব্যাপক কড়াকড়ি। কাউকে ভেতরে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। তবে পুলিশের রেফারেন্স দিয়ে লাভ হলো। সহজেই ভেতরে যাওয়ার অনুমতি মিলল। উঠে গেলাম হুমায়ূন আহমেদের ফ্ল্যাটে।
দখিন হাওয়ার উত্তর দিকে ছয়তলায় মুখোমুখি দুটি ফ্ল্যাট, একটিতে থাকেন হুমায়ূন আহমেদ, আরেকটিতে থাকেন তাঁর বেশির ভাগ বইয়ের প্রকাশনা সংস্থা ‘অন্যপ্রকাশের’ মালিক মাজহারুল ইসলাম। দেখি, গেটের সামনে মাজহারুল ইসলাম দাঁড়িয়ে আছেন। তিনি পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পরই ভেতরে ঢুকতে দিচ্ছেন। হুমায়ূন আহমেদ তখন বাড়িতে নেই। তাঁর স্ত্রী শাওন দরজার সামনে দাঁড়িয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা বলছেন।
আমি ভেতরে ঢুকে পরিচয় দিতেই শাওন আমাকে নিয়ে গেলেন যা ঘটেছে, তা দেখাতে। ঢুকে দেখি শোয়ার ঘরের সবকিছু তছনছ করা। শতাধিক জামাকাপড় মেঝেতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। বিছানাপত্র উল্টোপাল্টা। কিছু কাপড় শোয়ার ঘরের বাথরুমের ভেতরে ফেলে রাখা। ভাঙা কাচের চুড়ির টুকরো আর ৫০০ টাকার অনেকগুলো নোটের টুকরো মেঝের সর্বত্র ছড়ানো। আর আছে এখানে-ওখানে অসংখ্য সোনার গয়নার টুকরো।
শাওন আমাকে বলেছিলেন, ওই ঘরে ৪০ ভরির মতো সোনার গয়না ছিল। সব গয়না কেবিনেটের তালা ভেঙে বের করে দুমড়ে-মুচড়ে মেঝেতে ফেলে রাখা হয়েছে। যেদিকে তাকাই দেখি সোনার গয়নার টুকরো পড়ে আছে। যেন পুরো ঘরটাই সোনার খনি। বাড়ির একটি গয়নাও আর আস্ত নেই। গয়নাগুলো রাখা ছিল দেয়ালের সঙ্গে লাগানো কাঠের কেবিনেটে। তবে শোয়ার ঘরের টিভি, কম্পিউটার ও সাউন্ড সিস্টেম ঠিক আছে। তাতে কেউ হাত দেয়নি।
আমি যাওয়ার একটু পরে সিআইডির একটি টিম এল। টিমের সদস্যরা ঘর থেকে অপরাধচিহ্ন জোগাড়ের কাজে নেমে পড়লেন। শাওন আমাকে বললেন, এই অ্যাপার্টমেন্টের দুটি চাবির একটি ছিল তাঁর কাছে, অন্যটি মাজহারুল ইসলামের বাসায়। ঘটনার সময় তাঁরা কেউ বাসায় ছিলেন না। নাটকের শুটিংয়ের কাজে হুমায়ূন আহমেদ প্রায় এক মাস ধরে নুহাশ পল্লিতে থাকছিলেন। এ সময় তিনি ছিলেন গুলশানে মায়ের বাড়িতে। তবে মাঝে দুবার তিনি এ বাড়িতে আসেন। সর্বশেষ আসেন এ ঘটনার ১০ দিন আগে, ১৫ আগস্ট। জরুরি একটা কাজে এসে আবার গুলশানে চলে যান। নুহাশ পল্লির কাজ শেষ হওয়ার পর ওই দিনই তাঁরা সবাই বাসায় ফেরেন।
সেদিন ছিল শুক্রবার। বিকেলে হুমায়ূন আহমেদের কর্মচারী মোস্তফা প্রথম বাসায় আসেন। মোস্তফা এসে দরজা খুলে সবকিছু তছনছ দেখে সবাইকে ডাকেন। খবর পেয়ে শাওন আসেন বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে।
শাওনের কাছে জানতে চাইলাম, বাসা থেকে কী কী জিনিস খোয়া গেছে? তিনি বেশ দ্রুততার সঙ্গে বললেন, সবকিছু ওলটপালট হয়েছে, তবে কোনো কিছু কেউ নেয়নি। কাউকে সন্দেহ করেন বা কোনো হুমকি ছিল কিনা?
বললেন, ‘না ভাই, সে রকম সন্দেহ করার মতো কেউ নেই।’ শাওনের কথা শুনে আমার সবকিছু বড় অদ্ভুত লাগছিল। মনে হচ্ছিল তিনি অনেক কিছু জানেন।
ধানমন্ডি থানায় সে সময় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছিলেন মাহবুবুর রহমান। পরদিন তাঁর কাছে এলাম সেই ঘটনার ফলোআপ করতে। তিনি বললেন, ঘর তছনছের ঘটনায় শাওন একটি মামলা করেছেন। কিন্তু তিনি কাউকে সন্দেহ করেননি। পুলিশকে শাওন বলেছেন, কারও বিরুদ্ধে তাঁর কোনো অভিযোগ নেই। তবে ওসি আমাকে বললেন, তাঁর কাছে বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হয়েছে। তিনি মনে করেন, বাইরের কেউ অ্যাপার্টমেন্টের নকল চাবি তৈরি করে দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে সবকিছু তছনছ করেছে। অবশ্য তিনি বাড়ির নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে কথাও বলেছিলেন। তাঁরা জানিয়েছেন, দখিন হাওয়ায় ৩০টি অ্যাপার্টমেন্টের বাসিন্দা ও তাঁদের লোকজন ছাড়া বাইরের কেউ সেখানে আসেনি। পুলিশ এ নিয়ে বেশ কিছুদিন দৌড়ঝাঁপ করল। তাঁরা হুমায়ূন আহমেদের কর্মচারী মোস্তফা, ভবনের নিরাপত্তাকর্মী ও লিফটচালককে জিজ্ঞাসাবাদও করেছিল। তারপর সব চুপ হয়ে গেল।
এই লেখাটা শুরুর আগে গত বৃহস্পতিবার মেহের আফরোজ শাওনকে ফোন দিয়ে সেই ঘটনার শেষ কী হলো জানতে চাইলাম। তিনি বললেন, ‘পুলিশ কোনো কিছুই বের করতে পারেনি। মামলাটাও শেষ হয়ে গেছে।’ ফোন দিলাম অন্য প্রকাশের মালিক মাজহারুল ইসলামকে। তিনিও একই কথা বললেন। তবে শাওন বললেন, হুমায়ূন আহমেদের সেই ফ্ল্যাট এখন আর সে রকম নেই। ২০১০ সালে সেটা ভেঙে নতুন করে তৈরি করেছেন। সেই টিভিটি এখন নুহাশ পল্লিতে।
এত বছর পরে মনে পড়ে গেল ধানমন্ডির ওসি মাহবুবুর রহমানের কথা। ফলোআপ করার সময় একদিন তিনি আমাকে বলেছিলেন, শাওনকে বিয়ে করার পর আগের স্ত্রীর সঙ্গে হুমায়ূন আহমেদের ঝামেলা চলছিল। হুমায়ূন আহমেদ নিজেও এ মামলার তদন্ত হোক, তা চাইছিলেন না।
তছনছের কয়েক দিন পর ডিএমপির এক পদস্থ কর্মকর্তার সঙ্গে গেলাম হুমায়ূন আহমেদের বাসায়। তিনি আমার পরিচয় পেয়ে খুব অবাক হয়ে বললেন, জীবনে প্রথম তিনি ক্রাইম রিপোর্টার দেখছেন। এরপর সেই ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন করতেই তিনি উল্টো আমাকে প্রশ্ন করে বললেন, ‘আপনিই বলেন, আপনার কী ধারণা?’ আমি বললাম, স্যার, আমার মনে হয় আপনার সাবেক ও বর্তমান স্ত্রীদের যেকোনো একজন এ কাজ করেছেন। তিনি শুনে কিছু বললেন না। অনেকক্ষণ কথা বলে উঠে আসার সময় বললেন, ‘সাংবাদিক, সাহেব আমারও সেটাই মনে হয়। তবে এটা যেন পাঁচ কান না হয়।’
আমি বললাম, ‘জি স্যার।’
আরও পড়ুন:

হুমায়ূন আহমেদের শোয়ার ঘরটি ছিল দেখার মতো। ইয়া লম্বা একটা ঘর। ভেতরে কিং সাইজের বিছানা আর ঢাউস একটি টিভি ছাড়া আর কিছু নেই। ১৮০০ বর্গফুটের অ্যাপার্টমেন্টের ৫০০ বর্গফুটজুড়ে শুধু একটি শোয়ার ঘর।
আর কোনো ঘর নেই, পুরো বাড়ি ফাঁকা। এক পাশের দেয়ালে কাপড় রাখার একটি কেবিনেট। এ ছাড়া ভেতরের কোথাও কোনো ফার্নিচার নেই। রান্নাঘর আছে, কিন্তু সেখানে বসে খাওয়ার টেবিল পর্যন্ত নেই। মিসির আলি কিংবা হিমুর মতোই তাঁর অ্যাপার্টমেন্টের ভেতরটাও ছিল অদ্ভুতুড়ে।
সেই বাড়িতে ভুতুড়ে কাণ্ডটা ঘটল ২০০৬ সালের আগস্ট মাসে, সম্ভবত ২৫ আগস্টে। সেদিন ছিল শুক্রবার। অফিসে কাজের চাপ খুব কম। হাতেও তেমন কিছু নেই। কী একটা কারণে সন্ধ্যার দিকে ফোন দিলাম রমনা বিভাগের উপকমিশনার সেলিম মোহাম্মদ জাহাঙ্গীরকে। তিনি তখন ধানমন্ডিতে। বললেন, কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ধানমন্ডির বাসায় একটি অদ্ভুত কাণ্ড ঘটেছে। চাইলে দেখে যেতে পারেন। আমি না যাওয়া পর্যন্ত তিনি থাকবেন সেখানে।
আমাকে আর পায় কে, দিলাম দৌড়। এ ঘটনার কয়েক মাস আগে হুমায়ূন আহমেদ তাঁর আগের স্ত্রী গুলতেকিন আহমেদকে তালাক দিয়ে অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওনকে বিয়ে করেছেন। বাজারে তা নিয়ে নানা আলোচনা। লোকে বলাবলি করছে, হুমায়ূন আহমেদ তাঁর মেয়ের বান্ধবীকে বিয়ে করেছেন। সেই বউকে নিয়ে থাকছেন ধানমন্ডির ৩/এ সড়কের এই বাড়িতে। বাড়িটির নাম ‘দখিন হাওয়া’।
বাড়ির গেটে পৌঁছে দেখি ব্যাপক কড়াকড়ি। কাউকে ভেতরে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। তবে পুলিশের রেফারেন্স দিয়ে লাভ হলো। সহজেই ভেতরে যাওয়ার অনুমতি মিলল। উঠে গেলাম হুমায়ূন আহমেদের ফ্ল্যাটে।
দখিন হাওয়ার উত্তর দিকে ছয়তলায় মুখোমুখি দুটি ফ্ল্যাট, একটিতে থাকেন হুমায়ূন আহমেদ, আরেকটিতে থাকেন তাঁর বেশির ভাগ বইয়ের প্রকাশনা সংস্থা ‘অন্যপ্রকাশের’ মালিক মাজহারুল ইসলাম। দেখি, গেটের সামনে মাজহারুল ইসলাম দাঁড়িয়ে আছেন। তিনি পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পরই ভেতরে ঢুকতে দিচ্ছেন। হুমায়ূন আহমেদ তখন বাড়িতে নেই। তাঁর স্ত্রী শাওন দরজার সামনে দাঁড়িয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা বলছেন।
আমি ভেতরে ঢুকে পরিচয় দিতেই শাওন আমাকে নিয়ে গেলেন যা ঘটেছে, তা দেখাতে। ঢুকে দেখি শোয়ার ঘরের সবকিছু তছনছ করা। শতাধিক জামাকাপড় মেঝেতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। বিছানাপত্র উল্টোপাল্টা। কিছু কাপড় শোয়ার ঘরের বাথরুমের ভেতরে ফেলে রাখা। ভাঙা কাচের চুড়ির টুকরো আর ৫০০ টাকার অনেকগুলো নোটের টুকরো মেঝের সর্বত্র ছড়ানো। আর আছে এখানে-ওখানে অসংখ্য সোনার গয়নার টুকরো।
শাওন আমাকে বলেছিলেন, ওই ঘরে ৪০ ভরির মতো সোনার গয়না ছিল। সব গয়না কেবিনেটের তালা ভেঙে বের করে দুমড়ে-মুচড়ে মেঝেতে ফেলে রাখা হয়েছে। যেদিকে তাকাই দেখি সোনার গয়নার টুকরো পড়ে আছে। যেন পুরো ঘরটাই সোনার খনি। বাড়ির একটি গয়নাও আর আস্ত নেই। গয়নাগুলো রাখা ছিল দেয়ালের সঙ্গে লাগানো কাঠের কেবিনেটে। তবে শোয়ার ঘরের টিভি, কম্পিউটার ও সাউন্ড সিস্টেম ঠিক আছে। তাতে কেউ হাত দেয়নি।
আমি যাওয়ার একটু পরে সিআইডির একটি টিম এল। টিমের সদস্যরা ঘর থেকে অপরাধচিহ্ন জোগাড়ের কাজে নেমে পড়লেন। শাওন আমাকে বললেন, এই অ্যাপার্টমেন্টের দুটি চাবির একটি ছিল তাঁর কাছে, অন্যটি মাজহারুল ইসলামের বাসায়। ঘটনার সময় তাঁরা কেউ বাসায় ছিলেন না। নাটকের শুটিংয়ের কাজে হুমায়ূন আহমেদ প্রায় এক মাস ধরে নুহাশ পল্লিতে থাকছিলেন। এ সময় তিনি ছিলেন গুলশানে মায়ের বাড়িতে। তবে মাঝে দুবার তিনি এ বাড়িতে আসেন। সর্বশেষ আসেন এ ঘটনার ১০ দিন আগে, ১৫ আগস্ট। জরুরি একটা কাজে এসে আবার গুলশানে চলে যান। নুহাশ পল্লির কাজ শেষ হওয়ার পর ওই দিনই তাঁরা সবাই বাসায় ফেরেন।
সেদিন ছিল শুক্রবার। বিকেলে হুমায়ূন আহমেদের কর্মচারী মোস্তফা প্রথম বাসায় আসেন। মোস্তফা এসে দরজা খুলে সবকিছু তছনছ দেখে সবাইকে ডাকেন। খবর পেয়ে শাওন আসেন বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে।
শাওনের কাছে জানতে চাইলাম, বাসা থেকে কী কী জিনিস খোয়া গেছে? তিনি বেশ দ্রুততার সঙ্গে বললেন, সবকিছু ওলটপালট হয়েছে, তবে কোনো কিছু কেউ নেয়নি। কাউকে সন্দেহ করেন বা কোনো হুমকি ছিল কিনা?
বললেন, ‘না ভাই, সে রকম সন্দেহ করার মতো কেউ নেই।’ শাওনের কথা শুনে আমার সবকিছু বড় অদ্ভুত লাগছিল। মনে হচ্ছিল তিনি অনেক কিছু জানেন।
ধানমন্ডি থানায় সে সময় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছিলেন মাহবুবুর রহমান। পরদিন তাঁর কাছে এলাম সেই ঘটনার ফলোআপ করতে। তিনি বললেন, ঘর তছনছের ঘটনায় শাওন একটি মামলা করেছেন। কিন্তু তিনি কাউকে সন্দেহ করেননি। পুলিশকে শাওন বলেছেন, কারও বিরুদ্ধে তাঁর কোনো অভিযোগ নেই। তবে ওসি আমাকে বললেন, তাঁর কাছে বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হয়েছে। তিনি মনে করেন, বাইরের কেউ অ্যাপার্টমেন্টের নকল চাবি তৈরি করে দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে সবকিছু তছনছ করেছে। অবশ্য তিনি বাড়ির নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে কথাও বলেছিলেন। তাঁরা জানিয়েছেন, দখিন হাওয়ায় ৩০টি অ্যাপার্টমেন্টের বাসিন্দা ও তাঁদের লোকজন ছাড়া বাইরের কেউ সেখানে আসেনি। পুলিশ এ নিয়ে বেশ কিছুদিন দৌড়ঝাঁপ করল। তাঁরা হুমায়ূন আহমেদের কর্মচারী মোস্তফা, ভবনের নিরাপত্তাকর্মী ও লিফটচালককে জিজ্ঞাসাবাদও করেছিল। তারপর সব চুপ হয়ে গেল।
এই লেখাটা শুরুর আগে গত বৃহস্পতিবার মেহের আফরোজ শাওনকে ফোন দিয়ে সেই ঘটনার শেষ কী হলো জানতে চাইলাম। তিনি বললেন, ‘পুলিশ কোনো কিছুই বের করতে পারেনি। মামলাটাও শেষ হয়ে গেছে।’ ফোন দিলাম অন্য প্রকাশের মালিক মাজহারুল ইসলামকে। তিনিও একই কথা বললেন। তবে শাওন বললেন, হুমায়ূন আহমেদের সেই ফ্ল্যাট এখন আর সে রকম নেই। ২০১০ সালে সেটা ভেঙে নতুন করে তৈরি করেছেন। সেই টিভিটি এখন নুহাশ পল্লিতে।
এত বছর পরে মনে পড়ে গেল ধানমন্ডির ওসি মাহবুবুর রহমানের কথা। ফলোআপ করার সময় একদিন তিনি আমাকে বলেছিলেন, শাওনকে বিয়ে করার পর আগের স্ত্রীর সঙ্গে হুমায়ূন আহমেদের ঝামেলা চলছিল। হুমায়ূন আহমেদ নিজেও এ মামলার তদন্ত হোক, তা চাইছিলেন না।
তছনছের কয়েক দিন পর ডিএমপির এক পদস্থ কর্মকর্তার সঙ্গে গেলাম হুমায়ূন আহমেদের বাসায়। তিনি আমার পরিচয় পেয়ে খুব অবাক হয়ে বললেন, জীবনে প্রথম তিনি ক্রাইম রিপোর্টার দেখছেন। এরপর সেই ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন করতেই তিনি উল্টো আমাকে প্রশ্ন করে বললেন, ‘আপনিই বলেন, আপনার কী ধারণা?’ আমি বললাম, স্যার, আমার মনে হয় আপনার সাবেক ও বর্তমান স্ত্রীদের যেকোনো একজন এ কাজ করেছেন। তিনি শুনে কিছু বললেন না। অনেকক্ষণ কথা বলে উঠে আসার সময় বললেন, ‘সাংবাদিক, সাহেব আমারও সেটাই মনে হয়। তবে এটা যেন পাঁচ কান না হয়।’
আমি বললাম, ‘জি স্যার।’
আরও পড়ুন:

রাজধানীর অপরাধজগতে নতুন পর্দা নামিয়েছেন রনি নামের এক সন্ত্রাসী। দুই লাখ টাকায় খুনি ভাড়া দিয়ে তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করিয়েছেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বলছে, রনি সানজিদুল ইসলাম ইমনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। প্রথমে মুদিদোকানদার, পরে ডিশ ব্যবসায়ী।
৪ দিন আগে
পুলিশ বলছে, হামলার সময় দুজন শুটার পিস্তল চালিয়ে হামলা চালায়। তবে আশপাশে অন্তত দুটি ব্যাকআপ টিম ছিল, ওই টিমের সদস্যদের শনাক্ত করতে পুলিশ কাজ করছে। মামুনকে হত্যার পর হামলাকারীরা দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্ত দিয়ে পালানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়।
৫ দিন আগে
রাজধানীর গুলশান থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলায় ক্যাসিনো-কাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধানকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান এ নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. হারুনুর রশিদ।
১৩ দিন আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর অপরাধজগতে নতুন পর্দা নামিয়েছেন রনি নামের এক সন্ত্রাসী। দুই লাখ টাকায় খুনি ভাড়া দিয়ে তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করিয়েছেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বলছে, রনি সানজিদুল ইসলাম ইমনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। প্রথমে মুদিদোকানদার, পরে ডিশ ব্যবসায়ী। এখন ঢাকার অপরাধজগতের নতুন নিয়ন্ত্রক হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন।
জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার শফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে জানান, রনি মূলত মুদিদোকানি ছিলেন। শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমন কারাগারে থাকাকালে রনির সঙ্গে পরিচয় হয়। ইমন তাঁর মাধ্যমে অপরাধ চক্রের একটি অংশ নিয়ন্ত্রণ করতেন। শুরুতে রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকার ডিশ ব্যবসা দখল, চাঁদাবাজি ও হুমকি দেওয়ার মাধ্যমে অর্থ আদায় করে কারাগারে থাকা ইমনকে পাঠাতেন। পরে সন্ত্রাসী ইমনের শিষ্যদের ব্যবহার করে বড় বড় কাজ করতে থাকেন। মিরপুর এলাকায়ও ব্যবসা বড় করতে থাকেন। এভাবে রনি ধীরে ধীরে ঢাকার অপরাধজগতের পরিচিত মুখে পরিণত হন।
ডিবির সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুনকে হত্যা করার পরিকল্পনা ছিল ইমনের। সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে রনির নির্দেশে ফারুক হোসেন ফয়সাল ও রবিন আহম্মেদ পিয়াস গুলি করেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে দিকনির্দেশনা দিচ্ছিলেন তিনি। পুলিশ বলছে, এখন পর্যন্ত ফারুক রবিন, রুবেল, শামীম আহম্মেদ ও ইউসুফ ওরফে জীবনকে গ্রেপ্তার করতে পারলেও রনির খোঁজ মিলছে না।
ডিবির তথ্য অনুযায়ী, গতকাল মঙ্গলবার রাতে নরসিংদীর ভেলানগর থেকে ফারুক, রবিন, শামীম ও রুবেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। হত্যার পর তাঁরা প্রথমে ঢাকা থেকে সিলেট হয়ে ভারতে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু ব্যর্থ হয়ে সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। গ্রেপ্তার হওয়ার আগে ফারুক ও রবিন ব্যবহৃত অস্ত্র ও অব্যবহৃত গুলি রনির নির্দেশে রুবেলের কাছে রেখে আসেন। পরে রুবেল পেশায় দরজি ইউসুফের কাছে অস্ত্রগুলো হস্তান্তর করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ইউসুফ মোহাম্মদপুরে তাঁর বাসায় অস্ত্র ও গুলি লুকিয়ে রেখেছিলেন। মোটরসাইকেল, অস্ত্র ও নগদ ১ লাখ ৫৩ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। রনি পারিশ্রমিক হিসেবে এই টাকা দুই ভাগে ভাগ করে দুই শুটারকে দেন।
ডিবি পুলিশ জানিয়েছে, জামিনে মুক্তির পর মামুন আবার অপরাধজগতে প্রভাব বিস্তার শুরু করেন। রনিকে পাত্তা না দিয়ে তাঁর এলাকা দখল করতে চান। তখনই শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের সঙ্গে পরার্মশ করে মামুনকে পথ থেকে সরানোর পরিকল্পনা করেন রনি। পরিকল্পনা অনুযায়ী দুই লাখ টাকায় ভাড়াটে খুনি ব্যবহার করেন।
পুলিশ ও ডিবি কর্মকর্তারা বলেন, এই হত্যাকাণ্ড আন্ডারওয়ার্ল্ডের পুরোনো দ্বন্দ্বের ধারাবাহিকতা। মামুন ও ইমন দুজনই ঢাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী, যাঁরা প্রভাব বিস্তার ও এলাকা দখল নিয়ে লড়াই করছিলেন। ইমনের সহযোগী হিসেবে রনি দ্রুত অপরাধজগতে পরিচিত হয়ে ওঠেন। সর্বশেষ মামুন হত্যার পর তিনি এখন ঢাকার অপরাধজগতে নতুন চরিত্র। ডিবি অভিযান চালিয়ে মূল পরিকল্পনাকারী রনি ও তাঁর সহযোগীদের ধরার চেষ্টা করছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড রোধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
পাঁচজন রিমান্ডে
মামুন হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার পাঁচজনকে গতকাল মোহাম্মদপুর থানার অস্ত্র আইনের মামলায় ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে ডিবি পুলিশ। আসামিপক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে শুনানি করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পার্থ ভদ্র প্রত্যেকের চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

রাজধানীর অপরাধজগতে নতুন পর্দা নামিয়েছেন রনি নামের এক সন্ত্রাসী। দুই লাখ টাকায় খুনি ভাড়া দিয়ে তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করিয়েছেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বলছে, রনি সানজিদুল ইসলাম ইমনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। প্রথমে মুদিদোকানদার, পরে ডিশ ব্যবসায়ী। এখন ঢাকার অপরাধজগতের নতুন নিয়ন্ত্রক হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন।
জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার শফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে জানান, রনি মূলত মুদিদোকানি ছিলেন। শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমন কারাগারে থাকাকালে রনির সঙ্গে পরিচয় হয়। ইমন তাঁর মাধ্যমে অপরাধ চক্রের একটি অংশ নিয়ন্ত্রণ করতেন। শুরুতে রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকার ডিশ ব্যবসা দখল, চাঁদাবাজি ও হুমকি দেওয়ার মাধ্যমে অর্থ আদায় করে কারাগারে থাকা ইমনকে পাঠাতেন। পরে সন্ত্রাসী ইমনের শিষ্যদের ব্যবহার করে বড় বড় কাজ করতে থাকেন। মিরপুর এলাকায়ও ব্যবসা বড় করতে থাকেন। এভাবে রনি ধীরে ধীরে ঢাকার অপরাধজগতের পরিচিত মুখে পরিণত হন।
ডিবির সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুনকে হত্যা করার পরিকল্পনা ছিল ইমনের। সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে রনির নির্দেশে ফারুক হোসেন ফয়সাল ও রবিন আহম্মেদ পিয়াস গুলি করেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে দিকনির্দেশনা দিচ্ছিলেন তিনি। পুলিশ বলছে, এখন পর্যন্ত ফারুক রবিন, রুবেল, শামীম আহম্মেদ ও ইউসুফ ওরফে জীবনকে গ্রেপ্তার করতে পারলেও রনির খোঁজ মিলছে না।
ডিবির তথ্য অনুযায়ী, গতকাল মঙ্গলবার রাতে নরসিংদীর ভেলানগর থেকে ফারুক, রবিন, শামীম ও রুবেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। হত্যার পর তাঁরা প্রথমে ঢাকা থেকে সিলেট হয়ে ভারতে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু ব্যর্থ হয়ে সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। গ্রেপ্তার হওয়ার আগে ফারুক ও রবিন ব্যবহৃত অস্ত্র ও অব্যবহৃত গুলি রনির নির্দেশে রুবেলের কাছে রেখে আসেন। পরে রুবেল পেশায় দরজি ইউসুফের কাছে অস্ত্রগুলো হস্তান্তর করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ইউসুফ মোহাম্মদপুরে তাঁর বাসায় অস্ত্র ও গুলি লুকিয়ে রেখেছিলেন। মোটরসাইকেল, অস্ত্র ও নগদ ১ লাখ ৫৩ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। রনি পারিশ্রমিক হিসেবে এই টাকা দুই ভাগে ভাগ করে দুই শুটারকে দেন।
ডিবি পুলিশ জানিয়েছে, জামিনে মুক্তির পর মামুন আবার অপরাধজগতে প্রভাব বিস্তার শুরু করেন। রনিকে পাত্তা না দিয়ে তাঁর এলাকা দখল করতে চান। তখনই শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের সঙ্গে পরার্মশ করে মামুনকে পথ থেকে সরানোর পরিকল্পনা করেন রনি। পরিকল্পনা অনুযায়ী দুই লাখ টাকায় ভাড়াটে খুনি ব্যবহার করেন।
পুলিশ ও ডিবি কর্মকর্তারা বলেন, এই হত্যাকাণ্ড আন্ডারওয়ার্ল্ডের পুরোনো দ্বন্দ্বের ধারাবাহিকতা। মামুন ও ইমন দুজনই ঢাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী, যাঁরা প্রভাব বিস্তার ও এলাকা দখল নিয়ে লড়াই করছিলেন। ইমনের সহযোগী হিসেবে রনি দ্রুত অপরাধজগতে পরিচিত হয়ে ওঠেন। সর্বশেষ মামুন হত্যার পর তিনি এখন ঢাকার অপরাধজগতে নতুন চরিত্র। ডিবি অভিযান চালিয়ে মূল পরিকল্পনাকারী রনি ও তাঁর সহযোগীদের ধরার চেষ্টা করছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড রোধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
পাঁচজন রিমান্ডে
মামুন হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার পাঁচজনকে গতকাল মোহাম্মদপুর থানার অস্ত্র আইনের মামলায় ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে ডিবি পুলিশ। আসামিপক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে শুনানি করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পার্থ ভদ্র প্রত্যেকের চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

হুমায়ূন আহমেদের শোয়ার ঘরটি ছিল দেখার মতো। ইয়া লম্বা একটা ঘর। ভেতরে কিং সাইজের বিছানা আর ঢাউস একটি টিভি ছাড়া আর কিছু নেই। ১৮০০ বর্গফুটের অ্যাপার্টমেন্টের ৫০০ বর্গফুটজুড়ে শুধু একটি শোয়ার ঘর।
২৩ অক্টোবর ২০২১
পুলিশ বলছে, হামলার সময় দুজন শুটার পিস্তল চালিয়ে হামলা চালায়। তবে আশপাশে অন্তত দুটি ব্যাকআপ টিম ছিল, ওই টিমের সদস্যদের শনাক্ত করতে পুলিশ কাজ করছে। মামুনকে হত্যার পর হামলাকারীরা দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্ত দিয়ে পালানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়।
৫ দিন আগে
রাজধানীর গুলশান থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলায় ক্যাসিনো-কাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধানকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান এ নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. হারুনুর রশিদ।
১৩ দিন আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

পুরান ঢাকায় ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ তারিক সাইফ মামুনকে হত্যার ঘটনায় দুই পেশাদার শুটারসহ চারজনকে শনাক্ত করেছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। শুটার দুজনের মধ্যে একজন ধানমন্ডি, আরেকজন তেজগাঁও এলাকার একাধিক মামলার আসামি।
ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছে, যেকোনো সময় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হবে।
গতকাল সোমবার (১০ নভেম্বর) সকালে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতালের ফটকে মামুনকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, হামলার সময় দুজন শুটার পিস্তল চালিয়ে হামলা চালায়, তবে আশপাশে অন্তত দুটি ব্যাকআপ টিম ছিল, ওই টিমের সদস্যদের শনাক্ত করতে পুলিশ কাজ করছে। মামুনকে হত্যার পর হামলাকারীরা দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্ত দিয়ে পালানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। বর্তমানে তারা দেশের ভেতরেই অবস্থান করছে এবং তাদের ধরার জন্য পুলিশ একাধিক টিম অভিযান চালাচ্ছে। এ অবস্থায় সীমান্তে অভিযান জোরদার করা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার মো. মোস্তাক সরকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা দুজনকে শনাক্ত করেছি। তারা দেশেই আছে। তাদের গ্রেপ্তারের খুব কাছাকাছি রয়েছি।’
ডিএমপির অপর এক কর্মকর্তা বলেন, শুটাররা মুখে মাস্ক ও মাথায় টুপি পরিধান করলেও প্রযুক্তির সহায়তায় তাদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। মামুন হত্যার আগে অন্তত একজন তাঁকে অনুসরণ করছিল। হামলার আগে তাদের পরিকল্পনা সূক্ষ্মভাবে ছিল এবং তারা পেশাদারত্বের সঙ্গে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করেছে। তাদের মধ্যে একজনের নাম রুবেল, অপরজন ইব্রাহীম। এ ছাড়া আরও দুটি দল আলাদাভাবে হত্যাকাণ্ডে ব্যাকআপ টিম হিসেবে কাজ করেছে। এতে সোহেল ও কামাল নামে দুই সন্ত্রাসীর নাম এসেছে।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মো. শফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘একাধিক পুলিশের টিম কাজ করছে। শনাক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে। তাদের শিগগিরই গ্রেপ্তার করা হবে।’
মামুনের একসময় ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও বন্ধু ইমনের সঙ্গে পারিবারিক ও চাঁদাবাজি-সংক্রান্ত দ্বন্দ্ব তীব্র ছিল। এ কারণে ইমনের অনুসারীরা একাধিকবার হত্যার পরিকল্পনা করেছিল। ২০১৭ সালে তেজগাঁওয়ে মামুনের ওপর হামলার চেষ্টা হয়েছিল, তখনো তিনি প্রাণে বেঁচে গেলেও মোটরসাইকেল আরোহী ভুবন চন্দ্র শীল নিহত হন।
মামুন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত মামলা হয়নি। পুলিশ জানিয়েছে, মামলা প্রক্রিয়াধীন এবং শুটারদের দ্রুত গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে।
গতকাল ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) লালবাগ বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (লালবাগ বিভাগ) মল্লিক এহসান আহসান সামী জানান, গুলিতে নিহত ব্যক্তিটি শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুন। তিনি কোনো ব্যবসায়ী নন।

পুরান ঢাকায় ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ তারিক সাইফ মামুনকে হত্যার ঘটনায় দুই পেশাদার শুটারসহ চারজনকে শনাক্ত করেছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। শুটার দুজনের মধ্যে একজন ধানমন্ডি, আরেকজন তেজগাঁও এলাকার একাধিক মামলার আসামি।
ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছে, যেকোনো সময় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হবে।
গতকাল সোমবার (১০ নভেম্বর) সকালে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতালের ফটকে মামুনকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, হামলার সময় দুজন শুটার পিস্তল চালিয়ে হামলা চালায়, তবে আশপাশে অন্তত দুটি ব্যাকআপ টিম ছিল, ওই টিমের সদস্যদের শনাক্ত করতে পুলিশ কাজ করছে। মামুনকে হত্যার পর হামলাকারীরা দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্ত দিয়ে পালানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। বর্তমানে তারা দেশের ভেতরেই অবস্থান করছে এবং তাদের ধরার জন্য পুলিশ একাধিক টিম অভিযান চালাচ্ছে। এ অবস্থায় সীমান্তে অভিযান জোরদার করা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার মো. মোস্তাক সরকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা দুজনকে শনাক্ত করেছি। তারা দেশেই আছে। তাদের গ্রেপ্তারের খুব কাছাকাছি রয়েছি।’
ডিএমপির অপর এক কর্মকর্তা বলেন, শুটাররা মুখে মাস্ক ও মাথায় টুপি পরিধান করলেও প্রযুক্তির সহায়তায় তাদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। মামুন হত্যার আগে অন্তত একজন তাঁকে অনুসরণ করছিল। হামলার আগে তাদের পরিকল্পনা সূক্ষ্মভাবে ছিল এবং তারা পেশাদারত্বের সঙ্গে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করেছে। তাদের মধ্যে একজনের নাম রুবেল, অপরজন ইব্রাহীম। এ ছাড়া আরও দুটি দল আলাদাভাবে হত্যাকাণ্ডে ব্যাকআপ টিম হিসেবে কাজ করেছে। এতে সোহেল ও কামাল নামে দুই সন্ত্রাসীর নাম এসেছে।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মো. শফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘একাধিক পুলিশের টিম কাজ করছে। শনাক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে। তাদের শিগগিরই গ্রেপ্তার করা হবে।’
মামুনের একসময় ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও বন্ধু ইমনের সঙ্গে পারিবারিক ও চাঁদাবাজি-সংক্রান্ত দ্বন্দ্ব তীব্র ছিল। এ কারণে ইমনের অনুসারীরা একাধিকবার হত্যার পরিকল্পনা করেছিল। ২০১৭ সালে তেজগাঁওয়ে মামুনের ওপর হামলার চেষ্টা হয়েছিল, তখনো তিনি প্রাণে বেঁচে গেলেও মোটরসাইকেল আরোহী ভুবন চন্দ্র শীল নিহত হন।
মামুন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত মামলা হয়নি। পুলিশ জানিয়েছে, মামলা প্রক্রিয়াধীন এবং শুটারদের দ্রুত গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে।
গতকাল ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) লালবাগ বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (লালবাগ বিভাগ) মল্লিক এহসান আহসান সামী জানান, গুলিতে নিহত ব্যক্তিটি শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুন। তিনি কোনো ব্যবসায়ী নন।

হুমায়ূন আহমেদের শোয়ার ঘরটি ছিল দেখার মতো। ইয়া লম্বা একটা ঘর। ভেতরে কিং সাইজের বিছানা আর ঢাউস একটি টিভি ছাড়া আর কিছু নেই। ১৮০০ বর্গফুটের অ্যাপার্টমেন্টের ৫০০ বর্গফুটজুড়ে শুধু একটি শোয়ার ঘর।
২৩ অক্টোবর ২০২১
রাজধানীর অপরাধজগতে নতুন পর্দা নামিয়েছেন রনি নামের এক সন্ত্রাসী। দুই লাখ টাকায় খুনি ভাড়া দিয়ে তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করিয়েছেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বলছে, রনি সানজিদুল ইসলাম ইমনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। প্রথমে মুদিদোকানদার, পরে ডিশ ব্যবসায়ী।
৪ দিন আগে
রাজধানীর গুলশান থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলায় ক্যাসিনো-কাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধানকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান এ নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. হারুনুর রশিদ।
১৩ দিন আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর গুলশান থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলায় ক্যাসিনো-কাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধানকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ সোমবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান এ নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. হারুনুর রশিদ।
সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ওই মামলায় সেলিম প্রধানকে আজ কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গুলশান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোজাম্মেল হক মামুন ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
গত ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বারিধারার একটি রেস্তোরাঁ থেকে সেলিম প্রধানসহ ৯ জনকে আটক করে পুলিশ। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ৬ দশমিক ৭ কেজি ওজনের সিসা জব্দ করা হয়। এ ছাড়া সাতটি সিসা স্ট্যান্ড ও অন্যান্য সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় মাদক আইনে মামলা করা হয়। পরে সেলিম প্রধানকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আরেক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

রাজধানীর গুলশান থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলায় ক্যাসিনো-কাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধানকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ সোমবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান এ নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. হারুনুর রশিদ।
সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ওই মামলায় সেলিম প্রধানকে আজ কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গুলশান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোজাম্মেল হক মামুন ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
গত ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বারিধারার একটি রেস্তোরাঁ থেকে সেলিম প্রধানসহ ৯ জনকে আটক করে পুলিশ। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ৬ দশমিক ৭ কেজি ওজনের সিসা জব্দ করা হয়। এ ছাড়া সাতটি সিসা স্ট্যান্ড ও অন্যান্য সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় মাদক আইনে মামলা করা হয়। পরে সেলিম প্রধানকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আরেক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

হুমায়ূন আহমেদের শোয়ার ঘরটি ছিল দেখার মতো। ইয়া লম্বা একটা ঘর। ভেতরে কিং সাইজের বিছানা আর ঢাউস একটি টিভি ছাড়া আর কিছু নেই। ১৮০০ বর্গফুটের অ্যাপার্টমেন্টের ৫০০ বর্গফুটজুড়ে শুধু একটি শোয়ার ঘর।
২৩ অক্টোবর ২০২১
রাজধানীর অপরাধজগতে নতুন পর্দা নামিয়েছেন রনি নামের এক সন্ত্রাসী। দুই লাখ টাকায় খুনি ভাড়া দিয়ে তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করিয়েছেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বলছে, রনি সানজিদুল ইসলাম ইমনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। প্রথমে মুদিদোকানদার, পরে ডিশ ব্যবসায়ী।
৪ দিন আগে
পুলিশ বলছে, হামলার সময় দুজন শুটার পিস্তল চালিয়ে হামলা চালায়। তবে আশপাশে অন্তত দুটি ব্যাকআপ টিম ছিল, ওই টিমের সদস্যদের শনাক্ত করতে পুলিশ কাজ করছে। মামুনকে হত্যার পর হামলাকারীরা দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্ত দিয়ে পালানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়।
৫ দিন আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

হুমায়ূন আহমেদের শোয়ার ঘরটি ছিল দেখার মতো। ইয়া লম্বা একটা ঘর। ভেতরে কিং সাইজের বিছানা আর ঢাউস একটি টিভি ছাড়া আর কিছু নেই। ১৮০০ বর্গফুটের অ্যাপার্টমেন্টের ৫০০ বর্গফুটজুড়ে শুধু একটি শোয়ার ঘর।
২৩ অক্টোবর ২০২১
রাজধানীর অপরাধজগতে নতুন পর্দা নামিয়েছেন রনি নামের এক সন্ত্রাসী। দুই লাখ টাকায় খুনি ভাড়া দিয়ে তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করিয়েছেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বলছে, রনি সানজিদুল ইসলাম ইমনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। প্রথমে মুদিদোকানদার, পরে ডিশ ব্যবসায়ী।
৪ দিন আগে
পুলিশ বলছে, হামলার সময় দুজন শুটার পিস্তল চালিয়ে হামলা চালায়। তবে আশপাশে অন্তত দুটি ব্যাকআপ টিম ছিল, ওই টিমের সদস্যদের শনাক্ত করতে পুলিশ কাজ করছে। মামুনকে হত্যার পর হামলাকারীরা দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্ত দিয়ে পালানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়।
৫ দিন আগে
রাজধানীর গুলশান থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলায় ক্যাসিনো-কাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধানকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান এ নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. হারুনুর রশিদ।
১৩ দিন আগে