Ajker Patrika

১২ জেলায় এখনো সক্রিয় পুরোনো জেএমবি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
১২ জেলায় এখনো সক্রিয় পুরোনো জেএমবি

আজ সেই ১৭ আগস্ট। ২০০৫ সালের এই দিনে দেশব্যাপী একযোগে ৫০০ বোমা ফাটিয়ে মানুষের মনে আতঙ্ক তৈরি করেছিল জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি)। সে সময় তারা প্রচারপত্রে বলেছিল, তারা এ দেশে ‘আল্লাহর আইন’ বাস্তবায়ন করতে চায়। এরপর নানা উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে ১৬ বছর পর নিষিদ্ধ এই সংগঠনটি কিছুটা কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। তবুও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বলছেন, কেউ কেউ সংগঠনটি টিকিয়ে রেখেছেন। আর জঙ্গিবাদ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে সামনে আসা এই জঙ্গি সংগঠন হয়তো এত সহজে পথ ছাড়বে না।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও জেএমবির বিভিন্ন পর্যায়ে গ্রেপ্তার হওয়া জঙ্গিদের জবানবন্দি থেকে জানা যায়, ১৯৯৮ সালে গঠিত শায়খ আবদুর রহমানের গড়া এই জঙ্গি সংগঠনটিতে বর্তমানে কিছু সদস্য রয়েছেন। এই সদস্যরা ১২টি জেলায় অবস্থান করছেন। তাঁদের সম্পৃক্ত জেলাগুলো হলো ময়মনসিংহ, শেরপুর, জামালপুর, কুড়িগ্রাম, রংপুর, বগুড়া, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, নীলফামারী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও খুলনা।

পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) প্রধান আসাদুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেছেন, পুরোনো জেএমবির তেমন কোনো কার্যক্রমই এখন নেই। তবে মাঝে বিভিন্নভাবে মাথাচাড়া দেওয়ার চেষ্টা করে। তাদের একটি অংশ ‘নব্য জেএমবি’ হিসেবে আইএসের অনুসারী হয়ে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করে। একের পর এক অভিযানে তাদের সেই জাল ভেঙে গেছে।

অবশ্য নিরাপত্তা বিশ্লেষক অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আব্দুর রশিদ বলেছেন, জঙ্গি সংগঠনগুলোকে নিয়ে এমন আত্মতুষ্টিতে ভোগার সুযোগ নেই। জেএমবির মতো রাজনৈতিক উদ্দেশে সংগঠিত হওয়া এই সংগঠনের ক্ষেত্রে তো নয়ই। তিনি বলেন, এ ধরনের সংগঠনগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল না হওয়া পর্যন্ত লেগে থাকে। তাদের ছেড়ে দেওয়া ঠিক না। তারা যেকোনো সময় আতঙ্কে পরিণত হয়ে উঠতে পারে। তবে এটা ঠিক, আগের চেয়ে শক্তি ক্ষমতায় দুর্বল হয়েছে এই নিষিদ্ধ সংগঠনটি। 
সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দারা বলছেন, গত এপ্রিলে জেএমবি ভারপ্রাপ্ত আমির রেজাউল হক ওরফে রেজা ওরফে তানভীর মাহমুদ ওরফে শিহাব আহনাফ গ্রেপ্তারের পর সংগঠনটি আরও দুর্বল হয়ে পড়েছে। কেননা এই ভারপ্রাপ্ত আমিরই একাধারে দাওয়া বিভাগের প্রধান, বাইতুল মালের প্রধান, টাকা হিসাব রাখার দায়িত্বের প্রধান ছিলেন। তবে নিষিদ্ধ এই সংগঠনটি এখন কে চালাচ্ছেন সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কারও কাছেই তথ্য নেই। কর্মকর্তারা বলছেন, তবে রেজাউলের আগে জেএমবির ভারপ্রাপ্ত আমির ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার খুরশিদ আলম, যিনি ২০১৮ সালের দিকে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মারা যান।

পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের কর্মকর্তারা বলছেন, জেএমবির অর্থ আসছে ১২ জেলা থেকেই। প্রতি মাসে গড়ে ৭ থেকে ৮ লাখ টাকা সংগঠনের ফান্ডে জমা হচ্ছে। এর মধ্যে উত্তরবঙ্গ থেকে আসছে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা। যে অর্থ সংগ্রহ ও পাঠানোর দায়িত্বে রয়েছেন ছয়জন জঙ্গি। ময়মনসিংহ থেকে আসছে ৩ লাখ টাকা। দায়িত্বে রয়েছেন পাঁচজন। গাজীপুর ও খুলনা থেকে মাসে গড়ে ২০ হাজার টাকার মতো আসে। সিটিটিসি বলছে, আব্দুল্লাহ নামের নারায়ণগঞ্জের এক ব্যক্তি দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকতেন, যিনি এই জেএমবিকে প্রতি মাসে ভালো অর্থ দান করতেন। সম্প্রতি তিনি সেখানেই মারা যাওয়ায় ওই টাকা আর আসছে না।  

র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ২০০৫ সালের বোমা হামলার ঘটনায় ৬৭ জন জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৫০০ জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করেছে। এখন নতুন করে যাঁরা মাথাচাড়া দিতে চান, তাঁরাও র‍্যাবের নজরদারিতে রয়েছেন।

৫৫ মামলার বিচার শেষ হয়নি পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সিরিজ বোমা হামলার ঘটনায় সারা দেশে ১৫৯টি মামলা হয়েছে। সব কটির অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১০৪টি মামলার বিচার সম্পন্ন হয়েছে। এসব রায়ে ৩৪০ জনের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয়েছে। এর মধ্যে ১৫ জনকে দেওয়া হয়েছে মৃত্যুদণ্ড। খালাস দেওয়া হয়েছে ৩৫৮ জনকে, জামিনে রয়েছে ১৩৩ আসামি। মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া আসামিদের মধ্যে ছিলেন বাংলা ভাই ও শায়খ আব্দুর রহমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার প্রয়াণে তারেক রহমানকে মোদির শোকবার্তা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩: ১২
খালেদা জিয়ার প্রয়াণে তারেক রহমানকে মোদির শোকবার্তা

তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্রয়াণে তাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

গতকাল মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) পাঠানো এক শোকবার্তায় নরেন্দ্র মোদি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার প্রয়াণে তিনি গভীরভাবে শোকাহত। এই ব্যক্তিগত ক্ষতির মুহূর্তে তারেক রহমানের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানিয়ে তিনি মরহুমার আত্মার চিরশান্তি কামনা করেন।

শোকবার্তায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী ২০১৫ সালের জুন মাসে ঢাকায় বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ ও আলোচনার কথা স্মরণ করেন। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন দৃঢ়সংকল্প ও প্রত্যয়ের এক বিরল নেত্রী। বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি বিশেষ মর্যাদা অর্জন করেছিলেন। বাংলাদেশের উন্নয়ন এবং ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক জোরদারে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথাও উল্লেখ করেন মোদি।

নরেন্দ্র মোদি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার প্রয়াণে একটি অপূরণীয় শূন্যতার সৃষ্টি হলেও তাঁর দর্শন ও রাজনৈতিক উত্তরাধিকার দীর্ঘদিন ধরে অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি বেগম জিয়ার আদর্শকে এগিয়ে নেবে এবং ভারত ও বাংলাদেশের গভীর ও ঐতিহাসিক অংশীদারত্ব আরও সমৃদ্ধ হবে।

শোকবার্তায় মোদি বাংলাদেশের জনগণের প্রতিও সমবেদনা জানান। তিনি বলেন, ইতিহাসের নানা সংকটে বাংলাদেশি জনগণ যে দৃঢ়তা ও মর্যাদা প্রদর্শন করেছে, তা প্রশংসনীয়। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, ঐতিহ্য ও জাতীয় ঐক্যের শক্তিতে ভর করে বাংলাদেশ শান্তি ও সম্প্রীতির পথে এগিয়ে যাবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

শেষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী তারেক রহমান ও তাঁর পরিবারের জন্য সর্বশক্তিমানের কাছে শক্তি ও ধৈর্য কামনা করেন এবং তারেক রহমানের ভবিষ্যৎ কর্মকাণ্ডের জন্য শুভকামনা জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মির্জা ফখরুলের জন্য মনটা কাল থেকে খুব বিষণ্ন হয়ে আছে: প্রেস সচিব

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৪৬
প্রেস সচিব শফিকুল আলম । ছবি: সংগৃহীত
প্রেস সচিব শফিকুল আলম । ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি আবেগঘন পোস্ট দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেছেন, ‘গতকাল থেকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জন্য আমার মনটা খুব বিষণ্ন হয়ে আছে। অনেক বছর ধরে তিনি আমার অন্যতম রাজনৈতিক আদর্শ। একজন সাংবাদিক হিসেবে আমি খুব কাছ থেকে দেখেছি, তিনি কতটা কষ্ট সহ্য করেছেন। কীভাবে দলের কর্মীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন ঠিক নিজের সন্তান বা নিকটাত্মীয়ের মতো।’

রাজধানীর জিয়া উদ্যানে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে আজ বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দাফন শেষে ফেসবুকে রাত ৮টার দিকে শফিকুল আলম এই পোস্ট দেন।

পোস্টে প্রেস সচিব লিখেছেন, ‘শহীদ বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুর পর থেকে আমার মনে হচ্ছে তিনি (মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর) ভীষণ একা হয়ে পড়েছেন। একত্রে এই দুই নেতা আমাদের রাজনৈতিক ইতিহাসের অন্যতম এক সম্মানিত ও নির্ভরযোগ্য অংশীদারিত্বের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন। সহমর্মিতা এবং নীরবে ধৈর্য ধরার ক্ষমতার জন্য তাঁরা দুজনেই সমধিক পরিচিত ছিলেন। তাঁরা খুব কমই মেজাজ হারাতেন। অহংকার তাঁদের ছুঁতে পারতো না বললেই চলে। কঠিন সময়ে তাঁরা অত্যন্ত যত্ন এবং সংযমের সাথে জনগণকে পথ দেখিয়েছেন।’

বিএনপির মহাসচিবের স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে শফিকুল আলম আরও লেখেন, ‘সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মির্জা ফখরুলের স্বাস্থ্যের অবনতি হয়েছে। তিনি এখন আর সেই চেনা মহাসচিব নেই, যিনি একসময় দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে চষে বেড়াতেন। খালেদা জিয়া যখন তাঁকে মহাসচিব হিসেবে নিয়োগ দেন, তখন তিনি বিএনপির একজন মধ্যম সারির নেতা ছিলেন এবং তাঁর সেন্টার-লেফট আদর্শিক ঝোঁকের জন্য পরিচিত ছিলেন। তবুও সংকটের মুহূর্তে তিনিই সবচেয়ে দক্ষ কাণ্ডারি হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেছেন। শহীদ বেগম খালেদা জিয়ার পাশে থেকে তিনি দলটিকে সুসংগঠিত ও অটল রেখেছিলেন। কিন্তু জুলাই মাস যখন এলো, তখন বড্ড দেরি হয়ে গেছে। খালেদা জিয়া মৃত্যুশয্যায় ছিলেন এবং মির্জা ফখরুল নিজেও তাঁর শরীরের শক্তি অনেকটা হারিয়ে ফেলেছেন। এ এক যুগের অবসান।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদুল হাসান আর নেই

বাসস, ঢাকা  
মেজর জেনারেল (অব.) মাহমুদুল হাসান। ফাইল ছবি
মেজর জেনারেল (অব.) মাহমুদুল হাসান। ফাইল ছবি

টাঙ্গাইল-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মাহমুদুল হাসান মারা গেছেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯০ বছর।

আজ বুধবার বেলা ৩টায় রাজধানীর নিজ বাসভবনে বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব মাহমুদুল হক সানু জানান, রাজধানীতে নিজ বাসায় বর্ষীয়ান এ রাজনীতিকের মৃত্যু হয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার বাদ জোহর টাঙ্গাইল শহরের বিন্দুবাসিনী সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মরহুমের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।

মাহমুদুল হাসানের মৃত্যুতে টাঙ্গাইলে বিএনপির নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম পিন্টু ও প্রচার সম্পাদক ও টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী সুলতান সালাউদ্দিন টুকু।

শোকবার্তায় তাঁরা বলেন, মাহমুদুল হাসান আজীবন আদর্শ টাঙ্গাইল গড়তে নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন। তিনি ছিলেন একজন সমাজসেবক, নিষ্ঠাবান ও দায়িত্বশীল মানুষ। শিক্ষা ও সামাজিক উন্নয়নে তাঁর অবদান ছিল অনস্বীকার্য। তাঁর মৃত্যুতে টাঙ্গাইল সদর একজন অভিভাবক হারাল।

সেই সঙ্গে তিনি মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

মাহমুদুল হাসান ১৯৩৬ সালের ১ মার্চ টাঙ্গাইল সদর উপজেলার মাকোরকোল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি রাষ্ট্রপতি এরশাদের শাসনামলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন।

রাজনৈতিক জীবনে ১৯৮৮ সালে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরে তিনি ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে বিএনপি থেকে নির্বাচিত হন এবং ২০১২ সালের উপনির্বাচনে পুনরায় সংসদ সদস্য হন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

২০২৫ সালে গণপিটুনি বেড়ে দ্বিগুণ: এমএসএফ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
২০২৫ সালে গণপিটুনি বেড়ে দ্বিগুণ: এমএসএফ

সদ্য সমাপ্ত ২০২৫ সালে সারা দেশে অন্তত ৪২৮টি গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে, যা ২০২৪ সালের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি। ২০২৪ সালে গণপিটুনির ১৬৯টি ঘটনায় নিহত হয়েছিল ১৪৬ জন এবং আহত ছিল ১২৬ জন। আর ২০২৫ সালে গণপিটুনিতে ১৬৬ জন নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে ৪৬০ জন। ২২০ জনকে আহতাবস্থায় পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। গণপিটুনির ঘটনায় আহত ৪৬০ জনের মধ্যে ৫৫ জন কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়া দল আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগ সদস্য।

মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের (এমএসএফ) ‘বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ২০২৫’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। আজ বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৫ সালে গণপিটুনি বা মব সন্ত্রাস আশঙ্কাজনক বেড়ে যাওয়ায় জনমনে নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি প্রশ্নাতীতভাবে এগিয়ে রয়েছে। প্রচলিত আইন অবজ্ঞা করে গণপিটুনির ঘটনাগুলোকে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বলে মনে করা হয়। নাগরিকের ভয় ও নিরাপত্তাহীনতার মূল উৎস এক শ্রেণির স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর মব সহিংসতা। নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগ ও সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের কর্মীদের পাওয়ামাত্র গণপিটুনি দিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে সোপর্দ করার লক্ষণীয় প্রভাব থাকায় জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

এমএসএফের সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালে রাজনৈতিক সহিংসতার ৫৯৯টি ঘটনায় শিকার হয়েছে ৫ হাজার ৬০৪ জন। তাদের মধ্যে ৮৬ জন নিহত ও ৫ হাজার ৫১৮ জন আহত হয়। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৬৫ জন বিএনপি, আটজন আওয়ামী লীগ, তিনজন জামায়াতে ইসলামী এবং ১০ জন বিভিন্ন শ্রেণি, পেশা ও বয়সের সাধারণ নাগরিক, যাদের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় পাওয়া যায়নি। ২০২৫ সালে রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের ওপর দুষ্কৃতকারীদের হামলার ১৬৯টি ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় ৪৭ জন নিহত ও ১৮৭ জন আহত হয়েছেন।

এমএসএফের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালে সরকার পতন ও গণ-অভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে ৬৭টি মামলা হয়েছে। মামলায় ৭ হাজার ৭৮০ জনকে সুনির্দিষ্টভাবে আসামি করা হয়েছে এবং ১১ হাজার ১৭৯ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। এই মামলাগুলোর মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে ২৯টি মামলা হয়েছে। সারা দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও সরকার পতন-সংক্রান্ত বিভিন্ন মামলায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের ৩ হাজার ৬৯৫ জন নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার হয়েছেন। দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ও সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনতে যৌথ বাহিনীর সমন্বয়ে ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়া ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’—এর আওতায় গ্রেপ্তার হয়েছেন ২২ হাজার ২৮৪ জন। গ্রেপ্তার ১১ হাজার ৩১৩ জন বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের দলীয় লোকজন।

এমএসএফের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৫ সালে ক্রসফায়ার বা বন্দুকযুদ্ধের কমপক্ষে ১৯টি ঘটনা ঘটেছে। সংঘটিত বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় ২২ জন নিহত হয়েছেন। এ বছর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। কারা হেফাজতে ১১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভয়ে পালাতে গিয়ে আট যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

এমএসএফের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালে ৬৪১ জন সাংবাদিক দেশের বিভিন্ন জেলায় পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় হত্যা, হামলা, হুমকি, আইনি হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ২০২৫ সালে সাইবার নিরাপত্তা আইন ও সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে তিনটি মামলাসহ মোট ২৫টি মামলায় ৫৫ জন অভিযুক্ত ব্যক্তির মধ্যে ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত